আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২০০১-২১০০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০১

নোয়াব আলী খোয়াব দেখে,

সে হয়েছে রাজা

নোয়াব ভাবে, কেমনে হলাম?

খাইনি মোটে গাঁজা

 

রাজা হলে প্রতিদিনই

তিন মণ গাঁজা খাইতে হয়

প্রতিদিনই সময় করে

বাগান বাড়ি যাইতে হয়

 

সেথায় থাকে অস্পরা

সবাই তারা বশ করা

তাদের নিয়ে পদ্মপুকুর

প্রতিদিনই নাইতে হয়

 

রাজা হওয়ার বিপদ ভারী

রানীরা খায় ভেজাল তাড়ি

সেই তাড়ি ভাই কেনার জন্য

বার বার বিদেশ যাইতে হয়

 

নোয়াব আলী খোয়াব দেখে

তিনশ তিনজন চামচা

বলছে ডেকে পাবলিকেরে

রাজার কাছে রাম চা

 

রাজা করে খামখাম

গাঁজা তাড়ি রাম রাম

১৭//২০১৯; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০২

এমন যদি হতো

আহা, এমন যদি হতো

গুদামঘরের অস্ত্রগুলো

ফুল হয়ে সব যেতো

তবে কেমন হতো?

 

যদি এমন হতো

স্বৈরাচারের ঐরাবত

ইঁদুর হয়ে যেতো

শত্রুরা সব বন্ধু হয়ে

এক পাতে ভাত খেতো

তবে কেমন হতো?

 

ধর্মে ধর্মে দলাদলি

অযথা বিদ্বেষ

বৃষ্টির মত থেমে যেতো

দ্বন্দ্ব হতো শেষ

ঘরে ঘরে ছড়িয়ে যেতো

ঈদের খুশীর রেশ

তবে কেমন হতো?

 

যদি এমন হতো

সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ফেলে

পুষ্প নিয়ে হাতে

বিলিয়ে দিত জনে জনে

দিনে এবং রাতে

হাসপাতালের রোগীরা সব

হাসতো অবিরত

তবে কেমন হতো?

 

বন্যা এসে নিয়ে গেছে

হিংসা ঘৃণা যতো

মানূষগুলো কথায় কথায়

হাসছে শিশুর মতো

তবে কেমন হতো?

আহা, তবে কেমন হতো?

১৭//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৩

ফুলের বনে ফুল ফোটে, মনে কেন ফোটে না

জাহান জুড়ে রোদ ওঠে, মানব মনে ওঠে না

হায়, এমন কেন হয়

মানুষ কেন দেশে দেশে গায়রে পশুর জয়?

 

পশুর মনে তবু কিছু দয়া মায়া আছে

সেই মায়াটুক হৃদয়ে নাই, কেমনে মানুষ বাঁচে?

কেন এমন হয়

মানুষ কেন পায় না মোটে একটু মরার ভয়?

 

মানুষ হয়ে মানুষ মারা, জানোয়ারের কাজ

মানুষ তবু মানুষ মারে, পায় না মোটে লাজ

কেন এমন হয়

দেখতে সে জন মানুষ হলেও সেকি মানুষ রয়?

১৭//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৪

তুমি আমায় দুঃখ দেবে?

----------- নেবো না

তুমি আমায় কষ্ট দেবে?

------------ নেবো না

 

তুমি দিলেই নিতে হবে

আমার নিজের মন নাই?

কষ্ট আছে, দুঃখ আছে

ধরায় সবুজ বন নাই?

 

বাঘে কামড়ায় তাই বলে কি

মানুষ ধরায় বাঁচে না

মরে যাবে জেনেও কি

মানুষ ধরায় নাচে না?

 

তোমার মনে মন্দ ছাড়া

ভালো কিছু নাই

ভালোর এতো অভাব নিয়ে

কেমনে বাঁচো ভাই?

 

তোমার মনটা ময়লা ভরা

তাই করুণা হয়

আমার মনে ফুলের সুবাস

ঘুরবে জগতময়

 

তোমার দেয়া দুঃখ কষ্ট

ভর্তা করে খাবো

দুখের নায়ে চড়ে আমি

সুখের ঘরে যাবো

 

আমার মনের ভালোবাসা

বাতাসে তা উড়বে

ভালোবাসার সুবাস নিয়ে

বিশ্বভুবন ঘুরবে

১৮//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৫

প্রভু

তুমি যদি শান্তি না দাও

শান্তি কোথায় পাবো

তুমি ছাড়া কাছে কও

শান্তি আমি চাবো?

 

আমার কষ্ট আমার চেয়ে

তোমার অধিক জানা

এতো কষ্ট মনে প্রভু

ঢুকতে করো মানা

 

মনের কষ্ট এতো কষ্ট

সহনও না যায়

তুমি ছাড়া কারো কাছে

কহনও না যায়

 

আমার যতো দুঃখ কষ্ট

দাও না করে দূর

প্রভু আমার মনকে বানাও

বিশাল সমুদ্দুর

 

কষ্টগুলো নষ্ট করো

প্রশান্তি দাও বুকে

আর যেন না মরি আমি

কষ্টে ধুকে ধুকে

১৯//২০১৯; রাত ১২:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৬

দেহ পিঞ্জর কেহ না, মানুষ রাখার খাঁচা

উড়ালপাখি থাকলে দেহে তারে বলে বাঁচা

 

উড়ালপাখির দুইটি ডানা, বিবেক এবং মন

তারা ঘুরে আকাশ বাতাস পাহাড় নদী বন

 

মনটা থাকে আশায় আশায়

বিবেক তারে শাসায়

মন ওড়ে যায় স্বপ্ন ডানায়

বিবেক থাকে বাসায়

 

বিবেকটারে যে বাসে না ভালো

মন থেকে তার যায় হারিয়ে সত্য এবং আলো

 

মনের খায়েশ পূরণ করো

বিবেকের রায় মেনে

সে তোমাকে রাখবে সুখে

শান্তি দেবে এনে

 

মনপাখিকে একা ছাড়লে নানা বিপদ হয়

এসব কথা আমি তো নই, শাস্ত্রবিধি কয়

১৯//২০১৯; সকাল ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৭

আলু বাজার

আলু বাজার আলু নাই

ঢালকানগর ঢালু নাই

খালা আছে খালু নাই

যন্ত্র আছে চালু নাই

 

কলা বাগান কলা কই

কাঁঠালবাগান কাঁঠাল কই

গুলবাগের গুল কই

গুলিস্তানের ফুল কই?

 

রাজারবাগে রাজা নাই

টিটিপাড়া টিটি

সোনারগাঁয়ে সোনা নাই

ওটা এখন সিটি

 

রাজা মিয়া ভিক্ষা করে

ফালানি হয় রাজা

সিংহাসনে বসে বসে

খায় সে বাদাম ভাজা

১৯//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৮

নামে কি কেউ মুসলমান হয়

কামে হলে ভিন্ন

নাকি কামেই ফুটে ওঠে

মুসলমানির চিহ্ন?

 

কারবালাতে ইমাম হোসেন

মুসলিম হাতে মরেনি?

তাও এজিদের ক্ষমতার লোভ

হৃদয় থেকে সরেনি

 

মীর সাহেবের নাতিপুতি

জাফর আলী খান

সেওতো নিজে দাবী করতো

পাক্কা মুসলমান

 

গদীর মোহে সে খুনী হয়

গুণী তো কেউ কয় না

কোরআন ছুঁয়ে শপথ করেও

সবাই মুসলিম হয় না

 

ইতিহাসের ঘৃণ্য নায়ক

এজিদ মীরজাফর

নামে মুসলিম কামে তারা

ইবলিশের খাস চর

 

আজও তেমনি নাফরমানে

সিংহাসনে বসা

বিশ্বজুড়ে তাই ইসলামের

আজকে করুণ দশা

 

গদী থেকে নামাও টেনে

এসব নাফরমান

নইলে তোমায় কেমনে বলি

তুমি মুসলমান?

১৯//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০৯

নন্দলালের মন্দ কপাল

বন্ধ ফেরি পারাপার

নন্দ ভাবে ফেরিঘাট নয়

বসে আছে কারাগার

 

তিন ঘন্টা বসে আছে

কোন ভিআইপি আসবে

ভিআইপিদের গাড়ি এলে

ফেরি জলে ভাসবে

 

নন্দলালের মন্দ কপাল

ভিআইপি আর আসে না

ভয়ে সবাই তটস্থ

ভুলেও কেউ হাসে না

 

দেশটা হলো স্বাধীন বাবা

ভিআইপিদের জন্য

বলো সবে জয় হরিবোল

ধন্য স্বদেশ ধন্য

১৯//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১০

কোনটা রেখে কোন কথা যে বলি?

ইচ্ছে করে নিজেই এখন বারুদ হয়ে জ্বলি

অত্যাচারী শাসক শোষক পায়ে পিষে দলি

স্বাধীন দেশে বুক ফুলিয়ে বাপকা বেটা চলি

 

ইচ্ছে করে আমরা ফুটি, যারা ছিলাম কলি

দুষ্ট যতো কীটগুলোকে ইচ্ছে মতো ডলি

কিছুই যখন পারি না হায় রাগে দুকান মলি

এখন দেখি ভয়ের চোটে বরফ হয়ে গলি

 

আমরা ছিলাম বীর বাহাদুর শহীদ তিতুর ভাই

আমরা ছিলাম খানজাহান শাহজালালের ভাই

এখন দেখি, ইঁদুর সমান সাহস আমার নাই

একটুখানি সাহস দাদা কোন বাজারে পাই

২০//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১১

মন্দটাকে ধরে আমার

ইচ্ছে করে চড়াই

এরই নামতো সত্য মিথ্যা

হক বাতিলের লড়াই

 

কিন্তু আমি চড়াই না ক্যান?

আমি কি তয় ডরাই?

তবে কেনো নিজকে মুসলিম

বলে করি বড়াই?

 

ভালো ভালো কথা আমি

কোরআন থেকে পড়াই

কাজে কর্মে যায় না বুঝা

জেতা নাকি মরাই

 

মুখে করি বড়াই

সত্যি বলছি আমিতো ভাই

মুরগী দেখলে ডরাই

২০//২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১২

আতর আলীর গায়ে গন্ধ, লাল মিয়ার রঙ কালো

সবুজ মিয়া সবুজ তো নয়, বদরুল ছেলে ভালো

নামে কিবা আসে যায়

ঘাস কি পুটি মাছে খায়

চিতল মাছ কি চিতই থাকে, উপুড় কভু হয় না

এসব খালি প্রশ্ন করি, জবাব তো কেউ দেয় না

 

হাত তো নাই তার একটাও, তবু সে হয় হাতি

তাঁত নাই তবু বংশ আছে, এখনো সে তাঁতী

রুই মাছ কে রোয় জলে

সাত হস্ত পানির তলে

জামাই বাবু জামা- পরে, লঙ্গি সে কি পরে না

মরণচাঁদ কি একাই মরে, অন্য কেউ কি মরে না?

 

মেঘ না হলে মেঘনা নদী কোথায় পেতো জল

চাঁদপুর হতে কয় চাঁদ লাগে, হিসাব করে বল

ঢাকা কিরে ঢাকাই থাকে

ছবি একাই ছবি আঁকে

শেরপুরে শের কজন আছে, রাজশাহীতে রাজা

যে পারবে না জবাব দিতে, তার কি হবে সাজা?

২১//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৩

বিশ্ব জুড়ে মুসলমানরা খাচ্ছে কেবল মার

তোমার নামে সেজদা করার এই কি পুরস্কার?

 

কাফের মারে তোমার বান্দা, কেমনে তারা পারে?

বিশ্ব জুড়ে কেমন করে তারা মুসলিম মারে?

 

কে দেয় তাদের শক্তি সাহস, কে দেয় তাদের বল?

দেশে দেশে কাফেররা সব মানুষ মারার কল?

 

খোদা বলেন, ওরে নাদান, আমায় ভাবিস বোকা?

নামাজ পড়ে ওরে গোলাম, আমারে দিস ধোঁকা?

 

বলেছিলাম জগত জুড়ে, করবি প্রেমের চাষ

গদীর লোভে আমার বান্দা বানাস না তুই লাশ?

 

কোরানের সব পাখিগুলো জেলখানাতে ভরিস

মুসলমানের বাচ্চা হয়ে কেমনে এসব করিস?

 

মুসলিম দেশে নাফরমানদের শাসক বানায় কারা?

এমন শাসক বানায় যারা, ভাগী কি নয় তারা?

 

আলেম ধরে জালেম শাসক বানায় যখন লাশ

সে সব জুলুম সয়েও তুই, খোদার রহম চাস?

 

কাফেররা তো কাফেরই ধোঁকাবাজি করে না

খোদার নামে লড়ছে বলে, নিজের জন্য লড়ে না

 

আগে কোরআন আঁকড়ে ধর, তারপরে কর দোয়া

দেখবি খোদার ফেরেস্তারা থাকবে না কেউ শোয়া

 

মুসলমানের শাসক বানাও পাক্কা ঈমানদার

বিশ্ব জুড়ে মুসলমানরা খাবে না আর মার

২১//২০১৯; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৪

আতা গাছের পাতা নরম

নরম যে তোর মন

আবেগী গোস্বা করে

থাকবি কতক্ষণ?

 

খোদার ফরজ পালন করে

দেখা পেলাম তোর

তোর কারণে পেলাম আমি

একটা নতুন ভোর

 

বুনবো আবার নতুন ফসল

ফুটবে আবার কুঁড়ি

নতুন দিনে সঙ্গে থাকিস

তুই যে আমার জুড়ি

 

নতুন কুঁড়ির হাসি দেখে

ভুলবো বন্যা ঝড়

আবেগী দেরী কেনো

একটু হাতটা ধর

 

আতা গাছের পাতা নরম

নরম আমার মন

তুই যে আমার ময়না পাখি

আমার বুকের ধন

২২//২০১৯; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৫

সেন, রায়, খান, মীর

কই তোরা যাস বীর?

ভাবখানা লড়ুয়া

কই যাস বড়ুয়া?

কই যাস রোজারিও সঙ্গে

একসাথে চললি কি জঙ্গে?

 

ধর্মটা যার যার কর্মে

ঢেকে রেখে নিরিবিলি বর্মে

মানবতা যেথা আজ বন্দী

চল আজ সবে করি সন্ধি

ছুটে যাই মানবতা বাঁচাতে

যেইখানে মানবতা খাঁচাতে

 

হোক সেটা সিরিয়া বা কাশ্মীর

হোক সেটা গনচীন, বার্মায়

আয় ছুটে পুরোহিত, আর পীর

হোক সেটা উইঘুর, লার্মায়

 

ধর্মতো মানুষের জন্য

ধর্মকে নিয়ে হও ধন্য

মেনে চলো ধর্মটা যার যার

মানুষকে সুখী করা ধর্মের কারবার

 

অতএব এসো ভাই

কাশ্মীর ছুটে যাই

উঁচু করি মানুষের শির

আর নয় কান্না, চোখভরা নীর

বাঁচাবোই বাঁচাবোই ভূস্বর্গ কাশ্মীর

বাঁচাবোই ভূস্বর্গ কাশ্মীর, কাশ্মীর

২২//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৬

আপনি একটা লেখা লিখলেন,

লেখার কোন দাম নাই

তিনি পড়ে সাবাস বললেন

সেই সাবাসের দাম চাই

 

কমেন্টের ক্যান জবাব নাই

এই প্রশ্নের অভাব নাই

আপনি কেনো লিখলেন লেখা,

লেখার কোন কাম নাই

শুনে রাখেন, আপনার লেখার

সত্যি কোন দাম নাই

 

কত রকম আইন দেখলাম

লেখার জন্য ফাইন দেখলাম

লেখাতো হয় হাওয়া থেকে

লিখতে কোন ঘাম নাই

সবার জন্য মাম আছে

আপনার জন্য মাম নাই

 

দিনে লিখবেন একটি লেখা,

বেশী লেখার কাম কি?

লেখকের নাই কাজ কি কোন,

খায় সে গাঁজা রাম কি?

 

আপনি লিখলে পড়তে হয়

সুন্দর, ভালো বলতে হয়

কখন পড়ি, কন তো!

আপনি হলেন লেখক মাত্র

কেউকেটা কেউ নন তো!

 

আরো আছে হরেক আইন

সবই আপনার লেখার ফাইন

একটা আপনি পোস্ট করলে

পড়তে হবে পাঁচটা

তাতে আপনার দিতে হবে

ভালো লাগার আঁচটা

 

আপনার ভালো লাগে নাই

মোটে হৃদয় জাগে নাই

এসব বলা যাবে না

মন্দ বললে সেই লেখক

মনে কষ্ট পাবে না?

 

হুকুম আপনার মানতে হবে

গ্রুপের আইন জানতে হবে

নইলে হবেন দোষী

এবার আপনি খুশী?

২৩//২০১৯; রাত ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৭

কত রকম আইন দেখলাম, কত রঙের বাহানা

আমি শুধু একা দেখলাম, তুই দেখিসনি সাহানা?

 

বাড়ি করছে আলীশান

গেটে রাখছে দারোয়ান

দরজায় কোন পাল্লা নাই

নায়ে যেনো মাল্লা নাই

 

সকাল বিকাল ঘরে ঢুকে মশা, মাছি, চড়ুই, চিল

ঘরের মালিক ঘরে বসে দেখায় শুধু মস্ত  কিল

 

গেটে নোটিশ টানানো

সব মালিকের বানানো

দিনে একবার ঢুকা যাবে, সপ্তাহে যাবে তিন দিন

অবোধ প্রাণী তাও বুঝে না, ঢুকে ওরা রাতদিন

 

ঘরের দুয়ার ফকফকা, সেইটা কোন দোষ না

রাতে কেনো ঘরে ঢুকবে ফাঁকা পেয়ে জোসনা?

এমন আজব আইনে চলে ইন্টারনেটের বাড়ি

লেখক মানেই আসামী, উনি খাবেন তাড়ি

 

এই করো না ওই করো না হাজার রকম মানা

সব হুকুমই গরীব লেখক তার কপালে পানা

কবে লেখক মানুষ হবে, বলবে এসব মানি না

আদৌ তারা বলবে কিনা, তাও আমি জানি না

 

এতো এতো হুকুমনামা, সব লেখকের সইতে হয়

লেখা রেখে হাজার হুকুম লেখকদেরই বইতে হয়

স্বাধীন হবো, স্বাধীন হবো, কল্পনাতে কইতে হয়

পোলাও কোরমা রান্না যেন মরণচাঁদের দইতে হয়!

 

আবার যদি লেখকরা সব স্বাধীন হইতে পারতো

তবে কিরে গোলাম লেখক দেশে এতো বাড়তো!

২৩//২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৮

শরৎ এলো

শরৎ এলো শরৎ এলো

চিত্ত হলো এলোমেলো

উতলা হলো মন

হাসলো কাঁশের বন

 

বাঁশের বনও হাসলো

অপূৃর্ব দিন আসলো

মেঘের তুলো ভাসলো

মানুষ ভালো বাসলো

 

শরৎ এলো শরৎ এলো

ছিঁচকাদুনে বৃষ্টি গেলো

দিন এলোরে ঝলোমলো

বিশ্বভুবন দেখবে চলো

 

দেখবো ঘুরে পাখির বাসা

লালমোরগের স্বপ্ন আশা

মায়ের আদর ভালোবাসা

ফুলবাগানে ফুলের হাসা

 

মেঘরা ওড়ে সাদা সাদা

শরৎ যেনো সাহেবজাদা

প্রেমের টানে চলে

ভালো হতে বলে

২৪//২০১৯; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০১৯

আমার সোনা

আমার সোনা, চাঁদের কণা, কবে হবে সে বড়ো

কৈ গেলে মা, বলবে ডেকে, এবার সোনা পড়ো

 

আমার পড়া যে শেষ হয়েছে, এবার আমি যাই

দেশটা গো মা গড়তে হবে, কাজের অভাব নাই

 

যতো আছে পাপ অনাচার, তার বিরুদ্ধে লড়বে

মন্দ যতো দেখবে দেশে, তারেও নিকেশ করবে

 

স্বাধীন দেশের মানুষ সোনা, স্বাধীনভাবে চলবে

মনের আবেগ প্রাণটা খুলে স্বাধীনভাবে বলবে

 

হিংসা-বিদ্ধেষ, রাগ-অভিমান, করবে সোনা দূর

লোক ঠকানো, ভাওতাবাজি, ফেলবে সমুদ্দুর

 

দুর্নীতি কেউ করবে না আর, কেউ খাবে না ঘুষ

সবাই খাবে টাটকা ফলের হরেক রকম জুস

 

যে জন করবে মা জাতিকে, বিন্দুমাত্র অপমান

মৌমাছিদের হুল খেয়ে সেহারাবে তার জান

 

আমার সোনা, চাঁদের কণা, দানব সনে লড়বে

সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ আমার সোনা গড়বে

২৪//২০১৯; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২০

মানুষ জাতি

ছেলের নাম মতিউর

মা ডাকে 'বাবা'

রান্নাবান্না শেষ হইছে

এখন তুমি খাবা?

 

স্যারে কয় 'গাধা' নাকি

লেখাপড়া পারে না

খেলার মাঠে তাকে দেখি

কোনদিনই হারে না

 

বন্ধুরা কয় 'মইত্যা' তুই

মাছ ধরতে যাবি?

চৌধুরীদের গাছে আছে

পাকা কাঁঠাল, খাবি?

 

পাড়াপড়শি তারে সবাই

'মতি' বলে ডাকে

অর্ধেক নাম ডাকলে বলো

পুরা নাম কি থাকে?

 

মাস্টারি সে করে বলে

'মতিমাস্টার' হয়

তাতে কি তার মুছে যায়

জন্ম পরিচয়?

 

নাম যদিও ভিন্ন হয়

বাপ কি ভিন্ন হয়

মোল্লার ছেলে মোল্লা থাকে

চৌধুরী কে কয়?

 

একই স্রষ্টার সৃষ্টি মানুষ

স্রষ্টা হয় না ভিন্ন

রক্তের দিকে তাকিয়ে দেখো

একই রঙের চিহ্ন

 

ধর্ম বর্ণ ভাষা দেশ

পৃথক যদিও হয়

তুমি মানুষ এটা সত্য

মিথ্যা এটা নয়

 

কারো তুমি বাবা, চাচা

কারো হয়তো খালু

এভাবেই তো ভিন্ন ভিন্ন

পরিচয় হয় চালু

 

তবে কেনো অন্ধের মতো

দ্বন্দ্ব করো ভাই

আমরা সবাই মানুষ জাতি

ভুল তো এতে নাই

২৪//২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২১

বুঝলে হে আনোয়ার?

জান নেয় জানোয়ার

ফর্মুলা সোজা

শুরু করো এইবার জানোয়ার খোঁজা

 

দুই, চার, ছয় পাও - হতে পারে ভিন্ন

সকলের গায়ে পাবে জানোয়ার চিহ্ন

মানুষের বুকে থাকে মমতা

জানোয়ার সাথে রাখে ক্ষমতা

 

যারা মারে পিটিয়ে

তার দেনা সহসাই দিতে হয় মিটিয়ে

 

চাপাতির কোপ দেয় যারা

তার দেনা শোধ মানে, রইবে না খাঁড়া

সেও যাবে পরপারে

যাতে করে আর সে কোপ দিতে না পারে

 

যারা করে খুন

তারে নাকি দিতে হয় কাটা ঘায়ে নুন

মরে গেলে সাথী হয় দোজখী আগুন

 

মানুষকে করে যারা হত্যা

তার দেহে বয়ে যায় পশুদের স্বত্তা

যদিও দেখতে সে মানব

আসলে ওরাই হলো জঘন্য দানব

 

শোন হে আনোয়ার

এইসব জঘন্য দানব জানোয়ার

ঘৃণাতে ওদের কিছু হয় না

মানুষতো তারে কয়, যে এসব সয় না

যার যার ঋণ দেয় মিটিয়ে

হোক সেটা খুন বা মারা হোক পিটিয়ে

 

সাহসের অভাবে যে সয়ে যায় অন্যায়

সেও আর বাঁচে না, ভেসে যায় বন্যায়

/১০/২০১৯; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২২

ভাইরে--

চলে গেছে আবরার

বলে গেছে বারবার

ভাইরে---

তোরা থাক আজ পথে

সব্বাই রাজপথে

আমি চলে যাইরে

ভাইরে

 

চিরকাল দিতে হয় রক্ত

রক্তেই ভেসে যায় জালিমের তখত

খুনরাঙা পথে আসে মুক্তি

মুক্তির সাথে তাই হোক নব চুক্তি

ভাইরে

মুক্তির আর পথ নাইরে

 

চলে গেছে আবরার

বলে গেছে বার বার

ভাইরে---

এইভাবে কেউ কেউ রয়ে যায়

কেউ কেউ এভাবেই ইতিহাস হয়ে যায়

সকলেই মারা যায়, তার ক্ষয় নাইরে

ভাইরে

 

আবরার বলে যায়

আয় সবে ছুটে আয়

রাজপথ জনতার

নাই ভয় নাইরে

ভাইরে

মিলেমিশে আয় সবে

মুক্তির গান শুধু গাইরে

রাজপথে দলে দলে ছুটে আজ

যাইরে

ভাইরে

/১০/২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৩

মাথা ব্যথা

মাথা ব্যথা? চিন্তা নাই,

ব্যথা সেরে যাবে

মাথায় যে একটি বার

খড়গের কোপ খাবে

 

মাথাও নাই, ব্যথাও নাই

দাওয়াই আমার মন্দ না

হিসাব কি কঠিন খুব?

কি বলিস তুই চন্দনা?

 

ছাত্ররা করবে লেখাপড়া

রাজনীতি করার কাম কি

যদু মধু রাজনীতি বুঝে?

রাজনীতি বুঝে শাম কি?

 

রাজনীতি তো রাজার কাজ

সবাই তল্পী গুটাও আজ

নিজের কাজে মন দাও

পশুর জন্য বন দাও

 

কিসের মিছিল কানাকানি

খাও তো খালি দানাপানি

তোমরা করো হানাহানি

রাজ্য চালায় রাজা রাণী

১৫/১০/২০১৯; রাত ১২:০৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৪

হায়রে কি দুনিয়া!

আগে যারা মানুষ ছিল

এখন তারা খুনিয়া

 

ছেলে মরে মায়ের হাতে

ছেলেও যায় অধপাতে

বাপের শিকার মেয়ে হয়

কারা এদের মানুষ কয়?

 

পড়তে গেলে দাস না হলে

লাশ হয়ে যায় ছাত্র

ধর্ষিতা হয় নাবালিকা

কন্যা পায় না পাত্র

 

হায় কি দেশে বসত করি

হায়রে কি দুনিয়া

মানুষগুলো দলে দলে

হচ্ছে কেবল খুনিয়া

 

মদখোর মারে আলেম ধরে

জালেমে দেয় তালি

দেশের মানুষ টাকা দিয়ে

খুনির দলকে পালি

 

আমি তুমি সবাই খুনি

খুনি মহারাজ

ভাবছি সবে খুন করাটা

বড় পূণ্যের কাজ

 

কেউবা মরে ক্রসফায়ারে

সাগর রুনি ঘরে

দেশের মানুষ রাজা বানায়

বড় খুনি ধরে

১৫/১০/২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৫

দুলালপুরের আলাল মিয়া

কানতে কানতে কয়

উচিত কথা ভাল হলেও

প্রাণে নাহি সয়

 

শোন শোন জালাল মিয়া

উচিত কথা কইও না

যারে তারে যখন তখন

বন্ধু কইরা লইও না

 

দেয়ালেরও কান আছে

কথা কইও হুশ করে

নইলে দেখবা সোনা তুমি

মইরা গেছো ভুস করে

 

মরণ এখন অনেক সস্তা

রাস্তাঘাটে পাওয়া যায়

উচিত কথা বললে পরে

রক্তগঙ্গায় নাওয়া যায়

১৬/১০/২০১৯; রাত ১২:১০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৬

একদিন ইস্কুলে যাচ্ছিলাম

হাতে ছিল আইসক্রীম,

মজা করে খাচ্ছিলাম

ফুর্তিতে গুনগুন গান কি গাচ্ছিলাম?

আমি মোটে নাচি নি, স্যার কয় নাচ্ছিলাম

ভাল ছেলে, আমি শুধু ইস্কুলে যাচ্ছিলাম

 

ইস্কুলে যেই গেছি দপ্তরি কয়---

শোন শোন খোকা বাবু, পেয়োনাতো ভয়

হেডস্যাার ডেকেছেন, তাড়াতাড়ি যাও

আর যদি পথে পথে আইসক্রিম খাও!

 

ভাবলাম, আজ খাবো নির্ঘাত মার

কেমনে যে হই খোদা বিপদ পার!

দু রাকাত পড়বো নফল, বাঁচাও প্রভু

এই ভুল আর আমি করবো না কভু

 

ভয়ে ভয়ে গিয়ে বলি-- কাম ইন স্যার?

স্যার কয়-- কাম ইন তুমি আবরার?

ইয়েস স্যার, বলি আমি স্যার কয়, শোন

হেঁটে হেঁটে তিন বার বিশতক গোন

 

গোনা যেই শেষ হয়, স্যার শুধু কয়--

হেঁটে হেঁটে কোন কিছু খাওয়া ভাল নয়

তুমি হবে লেখাপড়া, আদবেও ভালো

তোমরাই জনমনে ছড়াবে আলো

 

সেই কথা ভুলি নাই, আজো মনে আছে

ঋণী তাই রয়ে যাই, স্যারেদের কাছে

১৬/১০/২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৭

লোকটা কিষাণ চন্দ না

নন্দলালের নন্দ না

দেখতে শুনতে মন্দ না

কালা খোঁড়া অন্ধ না

 

লোকটা ঘাটের নাইয়া

লোকে ডাকে ভাইয়া

দুপুর বেলা খাইয়া

গঞ্জের হাটে যায়

নায়ে উঠে ডাকতে থাকে

যাবি কে কে আয়

 

নায়ের মাঝে নাও ঊঠে

দাঁড়িপাল্লা ধান উঠে

লাঙ্গল এবং মই উঠে

বটগাছ বই উঠে

 

ঝগড়াঝাটি নাই

এইতো আমার সোনার দেশ

একদিন ছিল ভাই

 

যে লাগালো ঘৃণার চারা

বাঁচতে হলে তারে তাড়া

১৬/১০/২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৮

সাপকে যদি প্রেম দাও তো

সাপ মেনে যায় বশ

চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে

সেই সাপুড়ের যশ

 

মস্ত হাতি বশ মানে সে

তোমাকে নেয় পিঠে

তোমার সাথে তার প্রেম তো

দেখছি দারুণ মিঠে

 

প্রেম যদি দাও হিংস্র পশু

তারাও বশ মানে

যেদিক তাকাই প্রেমেরই জয়

দেখিতো সবখানে

 

নিজের পোলা নিজে মারে

পোলা মারে বাপকে

তলোয়ার কি নিজে মারে

নিজে থাকার খাপকে?

 

পশুর চেয়ে অধম মানুষ

আমরা তাদের জাত

চারিদিকে নিকষ আঁধার

গভীর কালো রাত

 

বাড়ি গাড়ি দালান কোঠা

সব পশুদের দিয়ে

আমরা চলো এখন থেকে

বনে থাকি গিয়ে

১৭/১০/২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০২৯

লেন্দুপ দর্জি

কি যে হলো মর্জি

জনতার রায় পেয়ে

গেল ক্ষমতায়

 

পাবলিক ভেবে নিল

হৃদয়টা ভরে যাবে

তার মমতায়

 

কী যে হলো ভীমরতি

ঘুরে গেল তার মতি

তলে তলে মহা ছক

আঁকলো

 

একদিন খুশী মনে

সংসদ অধিবেশ

ডাকলো

 

বললো, ভাইসব,

স্বাধীনতা খায় না কি

পিন্দে

ছোট আর গরীবকে

মানুষ তো চিরকাল

নিন্দে

 

পাবলিকে ভোট দিছে

দেশের ভালো কিছু

করতে

লড়াইটা মানে হলো

দল বেঁধে চল যাই

মরতে

 

মরে যদি যাই তবে

জীবনের বলো আহা

থাকে কি?

মুখ দিয়ে ভাত খাই

কখনো কি খাই ভাত

নাকে কি?

 

চল চল স্বাধীনতা

বেঁচে দেই

বড় ভাই বলে তারে

যেচে দেই

 

সংসদে দেশ বেঁচা

বিল হলো

পাশ

এখন ওরা পরাধীন

সকলেই

দাস

১৮/১০/২০১৯; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩০

জুলুম করলে অত্যাচারী

শাসকে

তোমার কেন হাসি আসে

তুমি মুচকি হাসো কে?

 

হাসি দাদা এই ভেবে--

কারে তুমি অত্যাচারী

কও

তার গদী তো তুমিই দিছো

এবার মজা লও

 

দিন রাত কি তার জন্য লড়োনি?

তার জন্য মিটিং মিছিল করোনি?

 

গদী দিলে যারে

আজকে দেখো ধুমছে সে

মানুষ ধরে মারে

 

এটাই মানুষ, স্বার্থ ছাড়া

বুঝে না সে কিচ্ছু

মুখে মুখে মানবতা

আসলে সে বিচ্ছু

 

তাইতো আমি মানুষ নয়

খোদার শাসন চাই

যার সাথে ভাই ঝগড়াঝাটি

দলাদলি নাই

১৮/১০/২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩১

হানি বানি তানি

ওগো আমার রানী

ছাড়ো না গুলতানি

তোমায় আমি এনে দেবো

নয়া শাড়ি মুলতানী

গলায় দেবো সোনার হার

বনেদি সুলতানী

 

তোমার আমার ভালোবাসা

জানি অমর হবে

পাপী তাপী বান্দা যেমন

মাফ করে দেন রবে

 

প্রেম মানেতো ক্ষমা করা

সকল রকম দোষ

দমন করা নিজের মনের

জমা অসন্তোষ

 

আমার প্রেম তো সাগর থেকে

তোলা বিন্দু জল

প্রভুর প্রেম তো নাই সীমানা

নাই সাগরের তল

 

সেই প্রেম তো পাপী বান্দা

তুমিও পেতে পারো

যদি তুমি তাকেই শুধু

ভালোবাসো আরো

২৮//২০১৯; সকাল ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩২

আমার বুবুর খেমটা নাচ

সব হৃদয়ে করে টাচ

বুবু কারো শালী

কারো চোখের বালি

 

বালি হয়ে লাভ নাই

আম গাছে গাব নাই

বুবুর খুঁটি শক্ত

কত যে তার ভক্ত!

 

বুবু আমার বুদ্ধিমান

আপনি বসে কলা খান

বুবুর মাথায় তামার তার

বুবু চিবায় নতুন হাড়

 

চারিদিকে বুবুর যশ

ইঁদুর বাদুড় সবই বশ

তাই সবে গায় বুবুর গান

আপনি কেডা সোনার চান?

 

বুবুর নিত্য বদনাম কন

এই নেন একটা কাফন লন

৩০//২০১৯; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৩

জেলের মত জায়গা নাই

জেলখানাতে যামু

কার কাছে কও দরখাস্তটা

দিতে হবে মামু?

 

কি কস তুই ভাগিনা

সব কথাতে রাগি না

এই কথাতে রাগি

তুই কি কোন চোর ডাকাত

না জামাতের ভাগী?

 

ক্যান তুই জেলে যাবি?

কেনো এমন দাবী?

জেল থেকে তুই বেরোনোর

কোথায় পাবি চাবি?

 

মাগনা সেথায় থাকতে দেয়

মাগনা খাবার খাইতে দেয়

হাগার জন্য লোটা দেয়

শোয়ার জন্য কম্বল দেয়

 

তুমিও না হয় চলো মামু

জেলে চলে যাই

মামা ভাগনা মিলেমিশে

মাগনা খানা খাই

 

জেলে যাবি? খুন কর আগে

বললো মামা ভীষণ রাগে

নইলে জামাত কর

মসজিদে যা, টুপী মাথায়

নামাজ কালাম পড়

 

মুরগী জবাই করি না,

আমি করমু খুন?

মামু আমার এতো সাহস

আমার এতো গুণ?

 

তবে মামু মন্দ কও নাই

জামাত করা ভালো

মামু তোমার তুলনা নাই

পেলাম পথের আলো

 

দোয়া করো মামু

জেলেই আমি যামু

৩০//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৪

গোলামীটা মিশে আছে

আমার সারা রক্তে

কেমনে থাকি স্বাধীন আমি

বসি স্বাধীন তখতে?

 

দুশো বছর গোলাম ছিল

বড়বাপ দাদারা

স্বাধীনতা অনেক কষ্টের

বুঝে নাতো হাঁদা রা

 

মীরজাফরে রাজ্য পায়

সিরাজে হয় খুন

বুঝে দেখো মীরজাফরীর

কি চমৎকার গুণ

 

মরতে খুবই ভয় পাই ভাই

গোলাম হলে দোষ কি

পোষ মেনেছি আমি নিজে

তুমি মানবে পোষ কি?

 

এসো এসো সবাই মিলে

আমরা গোলাম হই

মীরের মতো সাহস করে

রাজ্য বুঝে লই

৩০//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৫

রাবিশ

চার বিয়ার ক্যান অনুমতি

বুঝে কয়টা খাবিস?

 

এক বউ করবে রান্নাবান্না

এক বউ দেখবে ঘর

এক বউ দেখবে পোলাপান

এক বউ দেখবে বর

 

বুড়া কালে করবে যখন

গা গতর পা বিষ

কাকে বলবে বুড়ো তখন

একটু টিপে পা দিস?

 

এরই জন্য চারটা বিয়ার

অনুমতি হইছে

এই কথা এক জবরদস্ত

মস্ত আলেম কইছে

 

এমন মজার মসলা দাদা

জানে বলো কয়জনে?

এক হুজুরে জানে যদি

জানে নাতো নয় জনে

 

রাবিশ

এসব কথা মনে হলে

আমার করে গা বিষ

একজন টিপে পা তখন

অন্যরে কই চা দিস

রাবিশ

৩১//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৬

আলাপ একদিন

একদিন দেখা হলো রাস্তায়

বললাম, যাবি নাকি পাস্তায়?

তাই হোক, কথা হবে নাস্তায়

তার সাথে দেখা হলো রাস্তায়

 

বললাম, কী করিস, চাকরী?

নারে ভাই,

সারাদিন বেঁচি বসে লাকড়ি  .

চাকরীর বাজারটা বড়বেশি মন্দা

এখনো তো পায়নি চাকরীটা ছন্দা

 

তুইতো বেশ আছিস, চার্মে

চাকরী কি হলো সেই ফার্মে?

এখনো কি দেখা করে ববিতা

আর তুই লেখে যাস কবিতা?

 

নারে ভাই, না না

ববিতা তো আজকাল আসে না

প্রাণখোলা সেই হাসি হাসে না

কাউকেই আর ভাল বাসে না

দেখা হয় বছরে, প্রতিদিন, মাসে না

 

এইভাবে কথা বেড়ে চলল

নাস্তার ফাঁকে ফাঁকে দুই দোস্ত

প্রাণ খুলে কত কথা বলল

৩১ //২০১৯; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৭

শের আলী

কয় হালি

ডিম রোজ

খাইতো

 

কয় বার

জলে ডুব

রোজ সে

নাইতো?

 

সে খবর

যদি তুমি

জানতা

 

কাচারিতে

বসে তুমি

কানতা

 

শের আলী

কয় খালি

আমি এক

বীর

 

রোজ মারি

কলা গাছে

তিন হালি

তীর

 

একদিন

রাজপথে

নামবো

 

বিজয়ের

পর আমি

থামবো

৩১//২০১৯; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৮

আমরাই একদিন এই দেশ গড়বো

দানবের সাথে সবে একসাথে লড়বো

 

জন্মেছি এই দেশে, এই দেশে মরবো

একদিন আমরাই এই দেশ গড়বো

 

আমরাই জালিমের করে নিঃশেষ

বাঁচাবোই বাঁচাবো আমাদের দেশ

 

এই হোক আমাদের সুকঠিন পণ

চলো যাই সম্মুখে লড়ি আমরণ

 

ইংরেজ হেরে গেছে, হেরে গেছে পাকিরা

হেরে গেছে আর সব আগ্রাসী বাকিরা

 

প্রভু সেজে এসে কেউ থাকতেতো পারেনি

জনতার মনোবল, কোন দিনই হারেনি

 

কেউ হয় ক্ষুদিরাম, কেউ তিতুমীর,

কেউ হয় বিপ্লবী, কেউ হয় বীর

 

এসো এসো সকলেই হাতে রাখো হাত

চলো যাই নিয়ে আসি আলোর প্রভাত

৩১//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৩৯

 

আয়রে আমার অরুন তরুন নবীন বীরের জাত

আঁধার কেটে আনতে হবে সোনালী প্রভাত

 

তোরাই হবি বীর মুজাহিদ, শহীদ তিতুমীর

তোদের ঘা- পড়বে ভেঙে দুঃসহ জিজ্ঞির

তোদের দেখে পালিয়ে যাবে আঁধার কালো রাত

আঁধার কেটে আনতে হবে সোনালী প্রভাত

 

আমরা একবার নামলে পথে, থামতে জানি না

আল কোরআনের বিধান ছাড়া, বিধান মানি না

শীশা ঢালা প্রাচীর গড়ি, হাতে রাখি হাত

আঁধার কেটে আনতে হবে সোনালী প্রভাত

 

আমরা হবো মুক্ত স্বাধীন, গাজী সালাহদিন

রক্ত ঢেলে শোধ করবো এই পৃথিবীর ঋণ

আঘাত যদি করে কেউ, পাবে প্রতিঘাত

আঁধার কেটে আনতে হবে সোনালী প্রভাত

//২০১৯; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪০

ফেবুতেই রাজা মারি, ফেবুতেই রানী

ফেবুতেই ছেড়ে দেই অমূল্য বানী

বাস্তবে তেলাপোকা, তোষকের তলে

কোনমতে দিন কাটে, ছলে আর বলে

হেই, ছলে আর বলে

 

আমি হই মহাকবি, লেখি বেশুমার

ধারি নাতো কোনদিন ছন্দের ধার

ধারি নাতো তাল লয় কোন মাত্রার

পানিকে তো পাণি কই, নানী হয় নাণী

দুর্জনে এই নিয়ে করে কানাকানি

আহা, করে কানাকানি

 

ভুরি ভুরি লাইক পাই, কমেন্টও কম না

বাইক নিয়ে তাই আমি চলে যাই রমনা

নামে আর বেনামে আইডি তো দশটা

কখনো তা করিমন, কখনো ডি কস্টা

আহা, কখনো ডি কস্টা

 

এক নামে লিখি আর লাইক নয় নামে

ফাঁক তালে মহাকবি হয়ে যাই চামে

কবি যদি হতে চাও, লাইক তবে দাও

বিনিময়ে লাইক পাবে একদম ফাও

আহা, একদম ফাও

 

তুমি কবি, আমি কবি, কবিময় দেশ

মডারেটর, এডমিন কয় বেশ, বেশ

আহা, বেশ, বেশ, বেশ

//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪১

যারে দেখি ভালো

তারে বলি কালো

কালোটাকে ভালো বলি শত মুখে ভাই

দেখলে কোথাও আলোa

বলি আগুন জ্বালো

দুধ বেঁচে তো আমরা ভাই মদ্য কিনে খাই

 

আমরা

হতভাগার জাত

দিনকে বলি রাত

রাত্রি হলো ঝলমলে দিন কোরাস সবে গাই

ভালো মানুষ আমরা ধরে জেলখানা ঢুকাই

 

ভালো হলে অন্ধ বলি

মন্দ সদানন্দ বলি

পরকে বলি আপন আর আপন বলি পর

মাথা গরম হলে ভাঙি নিজেই নিজের ঘর

৩০/১০/২০১৯; ভোর ১২:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪২

রাসূলের সৈনিক

পান খায় দৈনিক

খায় আমসত্ব

জিকিরেই মত্ত

 

রাতদিন আলু খায়

শয়তান হেসে যায়

পাপে দেশ ভেসে যায়

তাতে কি?

পাপ হয় দিনে রাতে

শুধু হয় রাতে কি?

 

হুজুরেরা পান খায়

লুচ্চার দান খায়

মুরগীর রান খায়

দাওয়াতে

খুশি হয় মিলাদে

দশ টাকা পাওয়াতে

 

তারপর সস্তায়

ধর্মটা বস্তায়

ভরে নেয় বাজারে

মুরিদান এসে যায়

শত নয়, হাজারে

 

বাবা কয় গান ধর

দান কর, দান কর

নয় পাবে সাজা রে

টাকা দাও মাহফিলে

টাকা দাও মাজারে

মৌসুমী ফল খেয়ে

হয় বাবা তাজা রে

 

হুজুরেরা সর খায়

মুসলিম তড়পায়

তাতে কি?

হুজুরের চাই তবু

অহরহ পাতে ঘি

৩০/১০/২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৩

লেখক হবেন? ভাবনা কি?

গেছেন কভু পাবনা কি?

চলুন তবে যাই

ভাবনা কিছু নাই

 

আমি কবি, তুমি কবি

কবি কবিরাজ

ক্যাসিনোতে পাওয়া যায়

কবি মহারাজ

 

কবি হবে? তবে খাও

গাঞ্জার বিড়ি

পার হও তাড়াতাড়ি

কাব্যের সিঁড়ি

 

নেশাটাই বড় ভাই

নেশাটাই খাঁটি

নেশা করে চলো যাই

রাজবাড়ি হাঁটি

৩০/১০/২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৪

নতুন কবি শোন

নতুন কবি রঙিন ছবি মনের ভেতর আঁকো

ভালোমন্দ যে যা বলুক চুপটি করে থাকো

ভুলগুলোকে শুধরে নাও আলোচনা থেকে

অন্যজনকে পড়তে দাও আদর করে ডেকে

 

সে যদি হয় সত্যি আপন ভুলটা ধরে দেবে

ভুল ধরে যে তাকে আপন বন্ধু ভেবে নেবে

ভুল রেখো না ভাবনা এবং ছন্দ অন্তমিলে

লেখা হলে যাও না বন্ধু এবার মতিঝিলে

 

তুমি নবীন তাইতো জানি তুমিও কম ভাবো না

বীজে যেমন লুকিয়ে থাকে মহীর সম্ভাবনা

ভাবনাগুলো ধরে এনে শব্দ দিয়ে সাজাও

ছন্দগুলো ধরে এনে ধিতাং ধিতাং বাজাও

 

তুমিই হবে কবি যদি প্রভু এটাই চান

কবি হবার শক্তি সেতো মহাপ্রভুর দান

তাই করোনা অহংকার, শোন নতুন কবি

এখনোতো হওনি তুমি নজরুল কিবা রবি

৩১/১০/২০১৯; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৫

জিতলো কে

হীরালালের ছোট্ট মাথায় বুদ্ধি রাশিরাশি

বলে মামা,শুনছো খবর, মৎস গিলে খাসি

প্রজা গিলে টাটকা খানা, রাজা গিলে বাসি

আমরা শুধু খবর শুনে মুচকি মুচকি হাসি

 

বলে মামা, হাসছো কেন, পাবনা থেকে আসি

আমি এখন পুরাই ভালা, জানে রঞ্জা মাসি

আগে মানুষ, মানুষ ছিল, ছিল খোদার দাসী

এখন মানুষ তামার গড়া, দারুণ সর্বনাশী

 

মানুষ এখন মানুষ মারে, মানুষে দেয় ফাঁসি

মানুষ মেরে ফুর্তি করে, ডিনারে খায় খাসি

নিরো এখন আরাম করে বাজায় কাঁচা বাঁশি

আমি বলি দামী কথা, তোমরা উড়াও হাসি

 

ভীতু যারা তারাই মামা, পাকা খুনী হয়

ভাল মানুষ খুনী হয়, যখন সে পায় ভয়

সাহসীরা হাসতে হাসতে নিজে ফাঁসি লয়

বুঝা বড় কঠিন মামা, কার যে হলো জয়

 

যার হয় ফাঁসি, সে হয় শহীদ, পূণ্য রাশিরাশি

যে দেয় ফাঁসি, সে হয় খুনী, আস্ত দোযখবাসি

তুমিই বলো জিতলো কে, উনি নাকি খুনী

'উনি' বলে চেঁচায় কে রে শালিক না  টুনটুনি?

০১/১১/২০১৯; দুপুর ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৬

ডিজিটালের নতুন আইন

জানেন নাকি কি আজ?

এখন থেকে খাবেন না আর

তরকারীতে পিঁয়াজ

 

কাঁচা পিঁয়াজ মুসলিমে খায়

হিন্দুরাতো খায় না

বিশ্বাস না হয় মেলে দেখো

ইতিহাসের আয়না

 

তরকারিতে মশলাপাতি

খাওয়া বেশী ভালা না

তরকারিতে মশলাপাতি

দেয়া বলো জ্বালা না?

 

বাজার থেকে আনতে গেল

পিঁয়াজ নাকি রিয়াজে

বললাম পিঁয়াজ কেন নিবা

বললো, বাড়ি বিয়া যে

 

দোকানদারে বললো বাবা

পিঁয়াজ রেখে সোনা নাও

এখন থেকে তরকারীতে

তামা কাঁসা সোনা খাও

 

আগের নিয়ম আগে ছিল

এখন নিয়ম ভিন্ন

নেতা মানে তার গায়ে নাই

কোন মারের চিহ্ন

 

নেতা থাকবে লন্ডনে বা

নয়তো থাকবে জার্মানি

দেশ থেকে সে নেবে শুধু

হীরা সোনা আর মানি

 

দেশের নেতা বিদেশ থাকবে

নইলে কিসের নেতা সে

দেশে থাকলেই মরার ভয়

বিদেশ থাকবে জেতা সে

 

পিঁয়াজের দাম বাড়লে বাড়ুক

তাতে তাহার ক্ষতি কি

পিঁয়াজ তাহার কি হয় বলো

সে পিঁয়াজের পতি কি?

০১/১০/২০১৯; রাত ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৭

একটা মজার ছড়ার জন্য

রইছো কি গাল ফুলিয়ে

তাকিয়ে দেখো রাখছে ছড়া

কাটাতারে ঝুলিয়ে

 

বিমানবন্দর করার জন্য

নিচ্ছে জমি কাড়িয়া

দিচ্ছো তুমি সেই খুশিতে

সাথে ব্রাহ্মণ বাড়িয়া

 

তারপরে কি বন্ধু তোমার

আরো ছড়া চাই

তবে দেখো ফেনী নদীর

পানি গাঙে নাই

 

পিঁয়াজের সের দেড়শো টাকা

চালান এখন বন্ধ

আমার প্রেমে বন্ধু আমার

চিরকালই অন্ধ

/১১/২০১৯; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৮

এসো তাঁর গুণগান গাই

ওই নীল আকাশে

কে হাসে, কে হাসে?

ঝিরি ঝিরি বাতাসে

কে হাসে, কে হাসে?

ওই ফুল হেসে যায়

কার ইশারায়?

প্রভুর মায়ায়

এসো তাঁর গুণগান গাই

এসো তাঁর গুণগান গাই

 

পাখিদের গানে গানে

ঝর্ণার কলতানে

ভ্রমরের গুঞ্জরনে

একি সুর বাজে

এসো তাঁর সুর গেয়ে যাই

এসো তাঁর গুণগান গাই

 

চাঁদ হাসে আকাশে তারাদের সাথে

ধরণীতে ভয় এসে কি খেলায় মাতে

আঁধার কি হেসে যায়

চরাচর ভেসে যায়

দিগন্ত রেখায়

পৃথিবীতে সব হয় যার মহিমায়

এসো তাঁর গুণগান গাই

এসো তাঁর গুণগান গাই

/১১/২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৪৯

এখন থেকে মাগো আমি দুষ্টামী আর করবো না

তুমি যা যা নিষেধ করো সে সব আমি ধরবো না

লাফিয়ে নিচে পড়বো না

তোমার ঘাড়ে চড়বো না

মাগো আমি বড় হবো, এখন আমি মরবো না

সবার মত বলবো না, এখন আমি পড়বো না

 

হঠাৎ সোনা এসব কথা কেনো বলছিস, ওরে

কে শেখালো এসব কথা বল না সোনা তোরে?

 

মাগো সেদিন পড়ে অবাক, ভীষণ খবর পেপারে

মায়েরা যে বাচ্চার ওপর ভীষণ রকম ক্ষ্যাপারে

নিজের বাচ্চা করে জবাই

এটাও হজম করে সবাই

মানুষ কেন, এমন কর্ম পশুরা কি করতে পারে?

সন্তান মারে কোন পশুটা জগত সংসারে?

 

একটুও কি দেয়নি রহম আল্লাহ ওদের দীলে?

কেমনে মারে নিজের সন্তান মা কাকুরা মিলে?

তুমিও আমায় বকা দাও

তুমিও আমার মরণ চাও?

ওরে বাবা, মা কখনো সন্তান মারতে পারে?

মায়ের চেয়ে আপন বল, কে আছে সংসারে?

 

তুই যে মায়ের সোনামানিক, আঁচল ছেঁড়া ধন

তোর ক্ষতি কি সইতে পারে মায়ের অবুঝ মন

তবে যে মা করলো জবাই,

এটা কেমনে সইলো সবাই

কেউ করেনি প্রতিবাদ মা, কেনো তবে কন?

মা দেখলেই ভয়ে কাঁপে তাইতো আমার মন

/১১/২০১৯; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫০

রত্নাগড়ের বিলে

দেখলাম সেদিন একটা মাছ

সাপে ফেললো গিলে

ছো মেরে সে সাপটাকে

নিয়ে গেল চিলে

এসব দেখে ব্যথা পেলাম

আমার নরম দীলে

 

কে যে কোথা যায়রে দাদা

কে যে কি সব খায়

মর্জিনার মা খেতে বসেই

কাঁচা লংকা চায়

দাঁত নাই তবু হাড্ডি নিয়ে

অযথা চিবায়

 

কেউ বাঁচে না, মৎস সাপ

ছাগল কিংবা গরু

সময় হলে যায়রে মারা

পাখি, বনের তরু

 

আসলে সবার যাইতে হয়

কী লাভ করে মরার ভয়?

 

দাঁত নাই তবু মর্জিনার মা

কাঁচা লংকা খায়

সময়মতো রাজা প্রজা

উজির মারা যায়

/১১/২০১৯; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫১

কথায় কথায় ট্যাকসো নেও

কথায় কথায় ভ্যাট

আমার যতো শুকায় ততো

তোমার ভরে পেট

 

পুল পেরোতে টোল দিতে হয়

টোল দিতে হয় রাস্তায়

টাকা পাচ্ছো তাই তো ভাবছো

আছো খুবই আস্থায়

 

ট্যাক্স দিয়ে যাই খানা খেতে

সকাল বিকাল নাস্তায়

ট্যাক্স দিয়ে যাই রুটি মাখন

কিনতে গিয়ে পাস্তায়

 

দিনে দিনে হচ্ছি ফতুর

চতুর তুমি তাই

হায়রে আমার বীর সাহসী

বাপ চাচারা নাই

 

মরার সময় যদি সাহস

একটু দিয়া যাইতো

তবে কিরে আমার পোলা

তাজা গুলি খাইতো

//২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫২

কিরে হীরা, কি ভাবছিস?

মনটা কেনো ভার?

  ভাবছি মামা চিন্তার কথা

কপাল খোলে কার?

 

  কিসের হীরা কপাল খোলে

কেউ কি পড়লো ফান্দে?

  এমনটাই তো মনে হচ্ছে

বিনা লাভে কেউ কি মামা

কাউরে তোলে চান্দে?

 

ওপর থেকে ফেলতে হলে

চান্দে তারে তুলতে হয়

চান্দে তোলা হয়ে গেলে

আপসে তারে ভুলতে হয়

 

ইঁদুর মরলে বিড়ালের লাভ

ডিসি মরলে কার?

পোলা বাঁচলে দেশেরও লাভ

সবচে বেশী মা'

 

ডিসির গোপন কক্ষে তবে

কেমনে সিসি যায়?

ডিসিরা কি ভাত না খেয়ে

ডালের বড়া খায়?

 

ডিসির কাজটা অতি মন্দ

সিসি কেনো ছিল অন্ধ?

 

এতদিন ক্যান সিসি সাহেব

চক্ষু খোলে নাই?

এই ডিসিকে ছ্যাক করা কি

আজ জরুরী তাই?

 

কার খেলা কে খেলছে?

কে কে পাখা মেলছে?

খেলার গুটি কে নাড়ে?

সে নাড়ে ভাই যে পারে

//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৩

কী যে বলেন, দাদা!

আপনি আমায় বোকা ভাবেন,

নাকি ভাবেন গাধা?

 

আপনার কয়টা গাড়ি যাবে

তাতে চাবো টোল

ভাবছেন আমি পাগল নাকি

মাথায় গন্ডগোল?

 

একাত্তুরের কথা দাদা

আজও ভুলিনি

পাঁচে লোকের কথা দাদা

কানে তুলিনি

 

আপনি ছিলেন বন্ধু সুজন

বন্ধু হয়েই থাকবেন

আমারেও বন্ধু ভেবে

আপন করে রাখবেন

 

পানি নিবেন? নেন।

দরকার হলে আরো দুটো

ফারাক্কা বাঁধ দেন

 

দেশ লাগবে? গ্যাস লাগবে?

আর কি লাগবে কন?

অস্ত্র নিছেন কইছি কিছু?

আরো লাগলে লন

 

মনে রাইখেন আমরা বন্ধু

মিরজাফরের জাত

গোলামীতে আপত্তি  নাই

পেলে দুটো ভাত

//২০১৯; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৪

মা বুঝে না কিচ্ছু।

আদর করে মাঝে মাঝে

ডাকে আমায় বিচ্ছু

 

বলে, বাবা পড়ো

পড়ে পড়ে তোমায় অনেক

হতে হবে বড়ো

 

আমি বলি, মাগো

এবার একটু চক্ষু খোল

দয়া করে জাগো

 

আমায় কেন পড়তে বলো

ভাল ছেলে হলে

দুঃখ হাঁটে তার জীবনের

প্রতি পলে পলে।।

 

কাসু মিয়ার পোলা এখন

হইছে ভীষণ পান্ডা

অথচ সে পরীক্ষাতে

পাইতো ঘোড়ার আন্ডা

 

গুন্ডা ছেলে হুন্ডা চড়ে

এমপি সাবে দিছে

এমন কথা কত শুনি

এসব কি মা মিছে?

 

শিক্ষিত সব বেকার ছেলে

দেশের তারা বোঝা

সেন্ডেল ছিঁড়ে বাদ দিয়েছে

এখন চাকরী খোঁজা

 

ভাল ছেলের কাম নাই

ভাল মাইনষের দাম নাই

এসো সবে গুন্ডা হই

নেতার দেয়া হুন্ডা লই

//২০১৯; ভোর ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৫

এই হয়েছে শেষটা।

ঈমান আলীর ঈমান নাই

বেঈমান চালায় দেশটা

 

মুসলমানে নিজের মাইয়া

করছে নিজে ধর্ষণ

আর খালি কয়, কেমন খোদা

করছে গযব বর্ষণ

 

ঘুষও খায়, সুদও খায়

ওজনে দেয় কম

খোদার ঘরে বসে খোঁজে

মুসলমানের যম

 

অজু ছাড়া নামাজ পড়ে

খোদারে দেয় ফাঁকি

আকাম কুকাম সবই করে

কোনটা রইলো বাকি

 

এই হয়েছে শেষটা।

আমরা সবাই ভাল মানুষ

উচ্ছন্নে যায় দেশটা

কারো মাঝে দেখি না আজ

ভাল হওয়ার চেষ্টা

//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৬

রাত্রি যদি না হয় তবে

কেমন করে ভোর হবে?

তোর স্বপ্নের শাহজাদা

কেমন করে তোর হবে?

 

সবাই মরে কিন্তু তার, মরনের তো ভয় নাই

এই দুনিয়ায় অদ্যাবধি জন্মটা যার হয় নাই

 

যার আসেনি বিপদ তারে

উদ্ধার করবি কেমনে?

মেম না থাকলে কারে বলবি,

তোর পোলা তুই মেম নে

 

সূর্য ওঠার মানে হলো, এখন আঁধার রাত নাই

ভাগ্য শুধু একজন লেখে, অন্য কারো হাত নাই

 

মরতে চাইলে যায় না মরা,

মরার সময় ঠিক করা

সাধ্য তো নাই সে সময়টা

কারো পক্ষে লিক করা

 

একটা জীবন, একটা মরণ, তাতে কোন ভুল নাই

মরনের যে ভয় করো, সেই ভয়ের তো মূল নাই

//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৭

 

সত্য কথা বলে দেখছি, পাবলিকে তা খায় না

কিসসা বলেন, চিৎকার করে ধরে সবে বায়না

 

তাইতো বলি ফালতু কথা

ছুটাই কথার খই

কেউ কেউ বলে আমি নাকি

মিছা কথা কই

 

মিছা কথা বলে দেখছি, পাবলিকে তা খায়

যত বলি ততই পাবলিক মিছা আরো চায়

 

গণতন্ত্রের নেতা আমি

করবো কি আর কন

আমারওতো বুঝতে হয়

জনগণের মন

 

মিছা কথা কই বলেই তো আমি নেতা হই

কথা কথায় তাইতো আমি মিছা কথা কই

১০//২০১৯; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৮

কিশোর ছেলের কিশোর মনে

স্বপ্ন আসে ক্ষণে ক্ষণে

ঘুরছে কিশোর পাহাড় বনে

যাচ্ছে ওড়ে মেঘের সনে

 

স্বপ্ন দেখে কল্পনাতে, স্বপ্ন দেখে ঘুমে

স্বপ্নে দেখে আস্ত পাহাড় ঢুকে গেছে রুমে

স্বপ্নে দেখে কিশোর ছেলে, যাচ্ছে রণাঙ্গণে

বীরের মতো করছে লড়াই নয়তো সঙ্গোপনে

 

তার ভেতরের বিবেকপাখি

বলছে তারে ডাকি ডাকি

যুদ্ধে এলে কিশোর নাকি

যুদ্ধে কি হয় জানো তা কি?

 

যুদ্ধে থাকে রক্ত ঘাম, শান্তি সেথায় থাকে না।

যুদ্ধে ডাকে অস্ত্র বোমা, টিয়া সেথা ডাকে না

যুদ্ধে যে জন মারা পড়ে, সে কি মানুষ নয়?

মানুষ মেরে তুমি মানুষ, কেমনে খোঁজ জয়?

 

লড়াই করে এই শুধু হয়

কান্না বাড়ে ভবে

লড়াই করে মানবতার

জয় হয়েছে কবে?

 

লড়াই করে যায় না জেতা, করো প্রেমের চাষ

মানুষ তো নয় বনের পশুমানুষ প্রভুর দাস

 

প্রভুর হুকুম মানো

শান্তি ধরায় আনো

১১//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৫৯

আমার ইচ্ছায় আসি নাই

আমার ইচ্ছায় যাবো না

যার ইচ্ছাতে এলাম গেলাম

তাঁর দেখা কি পাবো না

 

তুমিই দিলে জন্ম মৃত্যু

তুমিই দিলে জান

দুদিনের হায়াত প্রভু

তোমারিতো দান

 

আমার প্রাণ আমার না

তোমার হাতে বাঁধা

কথাটাও ভুলে যাই

আমি এমন গাধা

 

তোমার শোকর করার ভাষা

আমার জানা নাই

দোজাহানে প্রভু শুধু

তোমার দয়া চাই

১১//২০১৯; দুপুর ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬০

শরমের কথা কইতে নাই

সব কথাতো বইতে নাই

ঘুষ পাইলেই লইতে নাই

জুলুমবাজি সইতে নাই

 

ডোবার জলে নাইতে নাই

পঁচাবাসি খাইতে নাই

মন্দ জায়গা যাইতে নাই

মন্দ গান গাইতে নাই

 

ন্যায়ের পথে চলতে হয়

সত্য কথা বলতে হয়

মিথ্যা পায়ে দলতে হয়

খোদার কাছে গলতে হয়

 

জন্মিলে যে মরতে হয়

লড়াই হলে লড়তে হয়

পড়ার সময় পড়তে হয়

জীবনটাকে গড়তে হয়

১১//২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬১

সাহস আমার অনেক বেশী

কিছু সাহস বেঁচতে চাই

আমার সাহস আমি বেঁচবো

কিসের আবার ট্যাক্সো ভাই?

 

কেনো?

তোর দাদা কি দাড়ির জন্য

আগে ট্যাক্সো দেয় নাই?

তারা ছিল সাহেব মানুষ,

সাহসের ট্যাক্স নেয় নাই

 

তোর টাকাতে রাস্তা করি

টোল কি তুই দিস না?

মরার জন্য কিনলে বিষ

ভ্যাট কি তুই নিস না?

 

করবো এমন আইন

মরার জন্য হাজার টাকা

দিতে হবে ফাইন

 

সাহস বেঁচার সাহস তুই

কেমন করে পাস?

ভুলে গেলি রাজার তুই

এখনো এক দাস?

 

পাবলিকের সব সাহস এবার

বিক্রি হবে নিলামে

সেই নিলামটা কেমন হবে

তাকিয়ে দেখো ঝিলামে

১১//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬২

আগ্রা থেকে নাগরা জুতা যেদিন কিনেছি

সেদিন থেকে দাদা আমি তোমায় চিনেছি

উমা দিদি মন্দ না

সঙ্গে ছিল চন্দনা

তাদের জন্য কি চমৎকার শাড়ি কিনেছি

সেদিন থেকে দাদা আমি তোমায় চিনেছি

 

শাজাহানের তাজমহল দেখিয়ে কামাও টাকা

সেই টাকাতে বছর বছর ঘুরে বেড়াও ঢাকা

এই ঢাকাটা ধন্য

পদধুলির জন্য

স্বপ্ন দেখো এই ঢাকাটা কবে হবে ফাঁকা

স্বপ্ন দেখো কবে ঘুরবে ইতিহাসের চাকা

 

স্বপ্ন দেখা ভালো দাদা, মানুষ বাঁচে আশায়

কোকিলেও ডিম পাড়ে কালো কাকের বাসায়

বাঙালিরা বোকা

বলে মজা ধোঁকা

সেই ধোঁকা খায় মজা করে যখন তুমি নাসায়

ধোঁকা খায় আর নিজে হাসে, বিশ্ববাসী হাসায়

 

খাও গো দাদা খাও

খাওয়ার জন্য চলে এসো এই পাঠালাম নাও

১১//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৩

আমি রাজার চেলা

একটুখানি টেলা

রাজপথে তাই চালাই আমি

কলাগাছের ভেলা

এটাই আমার খেলা

 

আমার সুখের সীমা নাই

চামচাগিরি করে আমি

রাজার বাড়ি খাই

আমার শ্বশুরবাড়ি নাই

রাতদুপুরে ছাদে বসে

সুখের গানা গাই

 

সুখে যারা থাকতে চাও

চলে এসো ভাই

ছাদে বসে সবাই মিলে

ভাটিয়ালি গাই

তাইরে নাইরে তাই

রাজার দেয়া তামুক আছে

সঙ্গে পান চিবাই

 

স্বাধীন থেকে লাভ কি বলো

ঘরে খাবার নাই

কোন সাহসে রাজার কাছে

খাবার খেতে চাই

নইলে চলো জেলখানাতে,

শ্মশানঘাটে যাই

খিদে লাগলে বেশি বেশি

লাঠি, গুলি খাই

 

আগে ছিলাম মানুষ এখন

চামচা হয়ে যাই

তাইরে নাইরে তাই

মনের ভেতর শেখ ফরিদ

মুখে রামকানাই

চল চল এসব কথা

সবাকে জানাই

১১//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৪

মরার খবর, তবু লেখেন, সুন্দর, চমৎকার

আপনি লেখা পড়েননি, তাতে অমত কার?

 

আমি বলি, সত্য বলো, আপনি বলেন, ঠিক

কিন্তু কমেন্ট পড়ে বুঝি, আপনি মোনাফিক

 

ভুলে ভরা লেখা পড়ে, ভুল না ধরেই কন

আপনার লেখা পড়ে আমার ভরে গেল মন

 

ভুলে ভরা লেখা তবু আপনিও বলেন, ভালো

লেখক ভাবে, তার লেখাতে, শুধু নূরের আলো

 

কেউ লিখলো, জানেন নাকি, মাথার চুলতো গোল

আপনি লিখলেন, ঠিক বলেছেন, হয়নি মোটে ভুল

 

এই যে তারে ভুল শিখালেন, দায় কে নেবে ভাই

সাহিত্যে তো এমন ভুলের কোনই ক্ষমা নাই

 

আমায় একটু খুশি করতে আপনি কামান পাপ

কাল হাশরে কনতো দেখি, পাবেন কি না মাপ

 

কমেন্টগুলো আমরাতো কেউ শরবত করে খাই না

কিংবা কমেন্ট করে তো কেউ নেই না কোন মাইনা

 

ভাল্লাগেনা আমার কথা, পরাণ খুলে কও

বিনিময়ে আমার গোলাপ তুমি বুঝে লও

 

ফেবুতেই তো কমেন্ট করেন, এতো কিসের ভয়

আসুন সবাই আমরা এবার করি ভয়কে জয়

১২//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৫

আতা গাছে পাতা নাই

মুরগী আছে রাতা নাই

চাকরী আছে ভাতা নাই

বৃষ্টি আছে ছাতা নাই

 

তাতে কিবা আসে যায়

আবার সবই হইবে

আতা গাছে কচি পাতা

নতুন করে বইবে

 

রাতা হবে ছাতা হবে

ভাতা হবে সামনে

রক্ত দিলি গুমও হলি

এবার রক্তের দাম নে

 

রাতের পরে দিন আসে

বাগানে ফের ফুল হাসে

কোকিল ডাকে বনে

সময় গেলে শান্তি আসে

আবার দুখীর মনে

 

আবার হাসবে নানা ভাই

কবে হাসবে জানা নাই

কিন্তু জানি হাসবে

আবার সুদিন আসবে

১২//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৬

সাব্বাস

আমার লেখা ভাল্লাগে না?

সাব্বাস

সাহস করে মনের কথা, কইলি তবে?

আব্বাস?

সাহস যখন এতটুকু হইছে

নতুন করে সাহসের কি, তবে বাতাস বইছে?

ভালো ভালো ভালো

এই সাহসের রক্তমশাল সবার বুকে জ্বালো

 

বায়ান্নর সে মিছিল তবে

আবার পথে নামুক

আসাদের সে মিছিল তবে

আসাদ গেটে থামুক

 

আইয়ুব খানের গুলি তারে

গদী থেকে নামাক

ইয়াহিয়া লারকানাতে

খাইতে থাকুক তামাক

 

সঙ্গে যদি রঙিন পানি খায়

তাতে আমার কিবা আসে যায়?

 

টিক্কা খানের ভিক্ষা করা সেনা

চীন আমরিকার অস্ত্র বারুদ কেনা

ছুটে এসে দেখাক যতো ভয়

অস্ত্র কি আর রুখতে পারে

বীর জনতার জয়?

 

আব্বাস।

তুই যে সাহস ফিরে পেলি

তাই তোরে দেই সাব্বাস

এবার পথে নাম

সামনে আছে বিপ্লবীদের

অনেক রকম কাম

১২//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৭

একটা নদীর দুইটা তীর

সেই নদীতে সাঁতার কাটে সুমু কুস্তিগীর

 

তীরে কাঁশের বন

কাঁশের বনে লুকিয়ে থাকে হীরাপাখি মন

 

তিন শিয়ালের পাও

ঝোঁপের ভেতর ঢুকে বলে, কেউ করো না রাও

 

কাঠবিড়ালি কয়

কেন দাদা, কী হয়েছে? কিসের এতো ভয়?

 

শোন, বাঘের ছানা

বাদাবনে ঘুমিয়ে থাকে, সবারই তা জানা

 

দুষ্ট বাঘের ছাও

সারাটা দিন বলে বেড়ায়, হালুম হুলুম খাও

 

ভয়ে তুমি পালিয়ে যাবা?

কে বলেছে এমন সুযোগ তুমি আদৌ পাবা?

 

যদি সেটা পাও

বন পেরিয়ে তবে তুমি আরো সামনে যাও

 

দেখবে ফাঁকা মাঠ

মাঠে আছে মজাপুকুর, পুকুরে নাই ঘাট

 

পুকুরে নাই পানি

সেখানেতো কেউ থাকে না, মামা চাচা নানী

 

সামনে দেখবে পাহাড়

সেই পাহাড়ে বসে তুমি করতে পারো আহার

 

একটু দূরে আমার বাড়ি

যাবে যদি বলো তবে, আনতে বলি গাড়ি

১৩//২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৮

বুদ্ধিজীবী

যাদের বলে বুদ্ধিজীবী, তাদের বুদ্ধি কে কিনে?

বুদ্ধি কি সব রফতানি হয়, আমেরিকা চীনে?

 

বুদ্ধি বেঁচো সকাল বিকাল, রাতে এবং দিনে

তবে কেনো ডুবে থাকে, দেশটা অঢেল ঋণে?

 

এই প্রশ্নের জবাব দিবে, কোন সে নবাব পুত?

এর জবাব কি দেবে শোন, শিমুলতলির ভূত?

 

মাথাপ্রতি ঋণের বোঝা বাড়ছে কেবল বাড়ছে

বাঙালিদের বুদ্ধি কি তয় জাপানীরা কাড়ছে?

 

উন্নয়নের জোয়ার বইছে রাজধানীতে রোজ

বাসের বদল মানুষ এখন নৌকা করে খোঁজ

 

বুদ্ধি দোষে ভারত বেঁচে আমার দেশে জামদানী

বুদ্ধি গুণে আমরা আনি ওদেশ থেকে জলপানি

 

এসব দেখে মুচকি হাসে ইঁদুর এবং চামচিকা

বলে, ওদের পাছায় আঁকো বন্ধু সবে রাম টিকা

 

বুদ্ধিজীবীর বুদ্ধি এখন তেলাপোকা খায়

এসব দুঃখে বুদ্ধিমন্ত্রী ইথিওপিয়া যায়

১৪//২০১৯; সকাল ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৬৯

তেল

তেলা মাথায় তেল সবে দেয়

আমি দিলে দোষ কি

এমন কি কেউ আছে ধরায়

তেলে হয় না খোশ কি?

 

পোষ মানে না মোষের ছাও

তেল যদি দাও তারে

তোমার পায়ে করবে সালাম

মোষও বারে বারে

 

মস্ত নেতা ব্যস্ত মানুষ

ঘুষ খায় না নিজে

তারে যদি তেল দাও তবে

খুশি হয় সে কি যে!

 

তেল দেয়ারও নিয়ম আছ

নিয়ম কানুন জানতে হয়

ব্যক্তি সমাজ রাষ্ট্র বলো

সবখানে হয় তেলের জয়

 

তেল মেরে হয় নেতা কেউ

তেল মেরে হয় রাজা

তেলের গুণে উন্নতি হয়

তেলের গুণেই তাজা

১৪//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭০

স্যারে কেনো ডাকছে দেখেন একটু ছুটে যান না

খানা দেবো? বলবেন স্যারকে হয়নি মায়ের রান্না

 

রান্না কত কষ্টের যদি,

জানতো স্যারে সেটা

তবে কিরে ঘ্যানঘ্যানাইতো

সারাটা দিন বেটা

 

বাজার করাও নিত্য দিন তরকারি সব কাটো

তুমি তখন আরাম করে মর্নিং হাঁটা হাঁটো

 

কাটাকুটি শেষ হলো যেই,

ধোয়া ধুয়ি শুরু

খড়ি এনে ধরাও আগুন,

কাজ কত যে গুরু

 

হলুদ বাটো মরিচ বাটো, মসলা বাটো সব

মা যে কতো কাজে ব্যস্ত, করো অনুভব?

 

শুয়ে বসে তোমরা যতো

মজার খানা খাও

কখনো কি ভেবে দেখছো

কেমনে সে সব পাও?

 

আমরা যারা রাষ্ট্র চালাই, তাদের কষ্ট কে বুঝে?

জনতা খায় রান্নাখানা, মাথায় তাজা ফুল গুঁজে

 

মাসে মাসে আমরা তো দেই

দেশ বিদেশে পাড়ি

এমন একটা দিন পাই না

খেতে যাবো বাড়ি

 

কারো সাথে যুক্তি করি, কারো সাথে চুক্তি

দায়ে পড়ে লালপানি খাই, নাইরে কোন মুক্তি

 

টাকার ওপর গড়াগড়ি

পরাণ জুড়ে ভয়

কখন খোলে জেলের গেট

কখন ফাঁসি হয়?

 

গরীব আছো ভালো আছো রাজা হতে চেয়ো না

রাজা হওয়ার চেষ্টা করে জেলের ভাত খেয়ো না

১৫//২০১৯; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭১

এক যে ছিল বিড়াল ছানা

শুনতো না সে কারো মানা

খাইতো খাঁটি দুধের ছানা

গভীর রাতে গাইতো গানা

 

গাইতো একা তানা না না

খাইতো বসে মটর দানা

জানতো এটা হিরু কানা

তাই করতো না কভু মানা

 

এক যে ছিল বিড়াল ছানা

শুনতো না সে কারো মানা

বাঘের সাথে খাইতো খানা

দুই দোস্তে করতো গানা

 

একদিন দেখি বিড়াল ছানা

বাঘকে ডেকে বলছে, নানা

ন্বাধীনতা আমার পানা

আপনে কেডা করেন মানা?

 

বাঘ বলছে, তবে যা না

আমি কি আর করি মানা

গজায় যদি পিঁপড়ে ডানা

স্বাধীনতায় দেয় কে হানা?

 

বিড়াল গেলো বনে।

হিংস্র পশু বিড়ালটাকে

মারলো সংগোপনে

 

রকমই হয়।

যা ইচ্ছা তা করা মানে

স্বাধীনতা নয়

১৬//২০১৯; ভোর ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭২

আগে লিখতাম কবিতা

পড়তে তুমি, ববিতা

 

লিখলাম কিছু গল্প

পড়লে তুমি অল্প

 

লিখলাম এবার ছড়া

তুমি বললে কড়া

 

বললাম, লিখি প্রবন্ধ?

বললে তুমি লাভ কি তাতে

নিরপেক্ষ কেউ লেখে না

সবাই লেখে

একপেশে আর নিবন্ধ

 

ভাবছি বসে কি লিখি?

বললে তুমি,

লিখ না ক্যান ছড়ড়া

কিছু না হয় রাঘব বোয়াল

আবার পড়ুক ধররা

 

যেই লিখলাম ছড়ড়া।

মিষ্টি হেসে বললে তুমি

কি যে মনোহররা!

 

বললাম,

তোমার ভালো লাগে?

কত নিবে, নাও?

নানা রকম ছড়ড়া দেবো

লবন মেখে খাও

১৬//২০১৯; সন্ধ্যা ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৩

আজকে যেদিন চলে গেল

সে দিন কি আর আসবে?

আজ যেজন বাসলো ভালো

কাল কি ভালো বাসবে?

 

বাগানের ফুলগুলো কি

কালও এমন হাসবে

বিলের জলে শাপলাগুলো

এমন করেই ভাসবে?

 

বাবার জন্য পাগল ছেলে

কদিন পাগল থাকবে

বড় হয়েও আজকের মতো

বাবা বলে ডাকবে?

 

কোলের শিশুর ডাক পড়ে

সব বুড়োকে ডাকে না

কে বলবে কে কদিন বাঁচে

কে যে বেঁচে থাকে না

 

বিদেশ যাবে তাইতো রাতে

ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে হয়

কখন যে কার ডাক পড়ে

তাইতো রেডি থাকতে হয়

 

হায়রে মরণ আসবি কখন

কাউকে কেনো বলিস না

সবাই গলে কথায় শুধু,

তুই কেনরে গলিস না

১৬//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৪

আমার খোশে আমি লিখি

আপনার খোশে পড়বেন

না হলে কন পুকুর দেখলেই

কেন ডুবে মরবেন?

 

কেউ পুকুরে গোসল করে

কেউ চলে যায় পাশ কেটে

কেউ পুকুরে দেয় দুটো ডুব

পাশের বাড়ির লাশ ঘেটে

 

ইচ্ছা না হয় পড়বেন না

ঘোড়ার লাগাম ধরবেন না

 

আমার লেখা উড়তে উড়তে

কখন কোথায় যায়

এতো সময় কার আছে কন

শিকল দেবে পায়?

 

আলাভোলা পাগলা কবি

তারে দেখান ভয়

যেমন তেমন শাড়ি দিলে

বিয়ের কনে লয়?

 

আপনার পথে আপনে থাকেন

আমার পথে আমি

মনে রাখবেন সবার কাছেই

ন্বাধীনতা দামী

১৭//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৫

আপনাকে তো আগেই কইছি

আমার লেখা আমার না

এটাও কইছি শোনেন শোনেন

লেখা চাচা মামার না

 

লেখা হলো তাঁর

চিন্তা ভাবনা, শব্দভান্ডার

সকল কিছু যাঁর

 

আমি যে তার বান্ধা চাকর

আন্ধা হলে চলে না

তাঁর হুকুমেই আগুন জ্বলে

নইলে আগুন জ্বলে না

 

তাঁর হুকুমে শব্দ সাজাই

আপনারা কন কবি

তাঁর হুকুমেই রাত্রি শেষে

হাসে আলোর রবি

 

আমি শুধু শোকর করি

শব্দে শব্দে ছন্দ গড়ি

শোকর করি তাঁর

যিনি দিলেন এতো ছন্দ,

শব্দ বেশুমার

১৭//২০১৯; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৬

মনের যতো দুঃখ ব্যথা, বনে ফেলে আসো

না থেকোনা গোমরা মুখে, এবার একটু হাসো

 

এইতো তুমি হাসতে পারো

আরো কাছে আসতে পারো

 

ভালো যখন বাসতে পারো, আবার ভালোবাসো

কি চমৎকার হাসি তোমার, আরো একটু হাসো

 

তুমি হাসো তাইতো হাসে, সূর্য প্রতি রোজ

রাত্রিবেলা চন্দ্র এসে তোমায় করে খোঁজ

 

তাকিয়ে দেখো দুর্বাঘাসে

কী চমৎকার সবুজ হাসে

 

জগত তোমায় ভালোবাসে, তুমিও না হয় বাসো

কী চমৎকার হাসি তোমার, আবার একটু হাসো

 

মনের যতো দুঃখ ব্যথা, বনে ফেলে আসো

হায় সজনী, দিন রজনী, পরাণ খুলে হাসো

আবার তুমি আগের মত আমায় ভালোবাসো

১৭//২০১৯; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৭

এই দেশে একদিন--

হাঁস ছিল, ঘাস ছিল

পাখিদের বাস ছিল

সুখ বারো মাস

 

এই দেশে আজ হয়

শ্বেত সন্ত্রাস

গুলি হয় দিনে রাতে

শুধু ঠাসঠাস

ধানক্ষেতে পাওয়া যায়

যুবকের লাশ

 

ধর্ষিতা হয় নারী

ভাঙে কেউ ঘরবাড়ি

কেউ যায় দেশ ছাড়ি

ভিটাতে আগুন

 

ঘুমের তো সময় নাই

উঠুন উঠুন ভাই

ভাইবোন সকলে

এখনি জাগুন

 

আগুন আগুন ভাই

জাগুন জাগুন ভাই

অাগুন জাগুন

১৭//২০১৯; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৮

কেমন হলো কন?

কেমন হলো কন?

দুই টাকাতে পেয়ে গেলাম

লাল টুকটুক মন

উড়তে পারে, ঘুরতে পারে

কইতে পারে, লন

পাটি এনে বলতে পারে

এই পাটিতে বন

 

দেখতে তারে ছুটে এলো

পড়শি সকল জন

এতো লোক এলো গেলো

কোথায় করিমন?

লোক পাঠালাম তার বাড়িতে

আসতে কতক্ষণ?

এসে বলে, চাচা মিয়া

করিমন তো গন

 

গনগনাগন কোথায় গেল

মনটা উচাটন

কোথায় গেলে খুঁজে পাবো

পাগলি করিমন?

লোকে বলে কোথায় যাবে?

খোঁজেন সুন্দরবন

পাসপোর্ট থাকলে বলতাম সে

গেছে বৃন্দাবন

 

দুই টাকাতে মন পেয়েছি

ভালবাসার ধন পেয়েছি

বললাম ওরে, থাকবি কতক্ষণ

থাকবো মানে? আছিই তো,

লাগে যতক্ষণ

 

কিসের আবার লাগালাগি

অনেক হইছে ভাগাভাগি

ঐক্যবদ্ধ হন

এখান থেকেই শুরু হবে

আবার আন্দোলন

 

নেতার মনে ভয়ের বাসা

আমার মনে জয়ের আশা

এবার হবে ন্যায় অন্যায়ে

সামনাসামনি রণ

নেতা হলে ভয়ে ভাগেন

থাকেন জনগণ

 

জনগণ তো হারে না।

অস্ত্র বারুদ কোন কালে

জনযুদ্ধ পারে না

 

দুই টাকাতে পেয়েছিলাম

লাল টুকটুক মন

সেই মন ফের ডাক দিয়েছে

করো আন্দোলন

রাজপথে ফের আসো ছুটে

দৃপ্ত জনগণ

এই লড়াইয়ে আপনি নিজে

থাকবেন কী না কন?

১৭//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৭৯

উঁইপোকা ভূঁইপোকা

উঁইপোকা ভুঁইপোকা

তুলতুলে গা

কতকিছু খাস তুই,

বই খাবি? খা

 

একশত লেখকেও

এতো বই লেখে নাই

পন্ডিত স্যারেও

এতো বই দেখে নাই

 

ভুরি ভুরি বই ছিল

র্্যাকে আর বস্তায়

কত টাকা পাইতাম

বেঁচলেও সস্তায়

 

উঁইপোকা ভূঁইপোকা

সব তুই খাইলি

সত্যিটা বল দেখি

কত মজা পাইলি?

 

গোডাউন ভরা ছিল

কত কত বই রে

সেই সব বই আহা

কই গেল, কইরে

 

ঘরভরা বই ছিল

সব দেখি মাটি

বুঝলাম বই নয়

মাটিটাই খাঁটি

 

এতটুকু পেট তোর

সব বই গিললি!

আমারে কি কস তুই

চলে যাই দিল্লি?

 

বই খেলে তাতে কেউ

পন্ডিত হয় না

হাতকড়া হাতে পরে

তবু নয় গয়না

১৭//২০১৯; দুপুর ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮০

টিয়া পাখির বিয়া হয় নাই,

মিয়া সাবে কয়

বিয়া হইলে টিয়ার শরীর

আরো মোটা হয়

 

সবকিছুরই নিয়ম আছে,

সময় আছে খেলার

জল নাই দেশে কী দরকার

কলাগাছের ভেলার?

 

পাখি নাই তো কী দরকার

সবুজ সবুজ বন

মানুষ নাই তো কী দরকার

মিষ্টি মধুর মন?

 

তুমি পড়ো তাইতো বন্ধু

আমি দুটো লেখি

কী চমৎকার পৃথিবী

দুচোখ ভরে দেখি

 

আমার প্রভু রহিম রহমান

জানি পাবো মাফ

পাপ করার পর যদি করি

তওবা অনুতাপ

১৮//২০১৯; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮১

মন চায়

মন চায় ফিরে যাই শৈশব কালে

বসে রই জামগাছে, চড়ে মগডালে

 

এই রোদে দুষ্টটা কই গেলো, হায়

দূর থেকে শুনি মা সে কি চিল্লায়

 

কুটিকুটি হাসি আমি, কালো জাম খাই

বড় আপা বলে মা, ওতো কাছে নাই

 

বন্ধুরা এলে পরে গাছ থেকে নামি

শুরু হয় বিচ্ছুদের নয়া পাগলামী

 

দল বেঁধে পুকুরের জলে দেই ঝাঁপ

নিমিষেই চলে যায়, সব উত্তাপ

 

পেয়ারার গাছ থেকে পেয়ারা পাড়ি

চলে যাই চুপি চুপি যার যার বাড়ি

 

সেই সব দিন আহা ভুলা কি রে যায়

আদরের বকা দিত কোলে নিয়ে মায়

১৮//২০১৯; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮২

সাহসের কাম নাই

ভাই,

সাহসের কাম নাই

মরার কোনো দাম নাই

পানি আছে, মাম নাই

ধনীর হাতে খাম নাই

 

সাহসের কাম নাই

মিলতে যাব, গাম নাই

রহিম আছে, রাম নাই

সুরেহ আছে সাম নাই

 

চাকা আছে, পাম নাই

রক্তের কোন দাম নাই

এসি রুমে ঘাম নাই

জনযুদ্ধে বাম নাই

 

সাহসের কাম নাই

রিক্সা গাড়ির জ্যাম নাই

জ্বরের রোগী, হাম নাই

ড্যাডি আছে ম্যাম নাই

 

কাঁঠাল গাছে আম নাই

তেতুল গাছে জাম নাই

আন্দোলনের নাম নাই

এই সাহসের কাম নাই

১৮//২০১৯; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৩

বুকের ভেতর মরার ভয়

কেমনে বুকে খোদা রয়?

আল্লাহ যদি ভরসা হয়

কেমনে আসে পরাজয়?

 

হারলে দোষটা খোদার হয়

যেনো দোষটা তোমার নয়

খোদার হাতে সৈন্য নাই

নাকি তোমার ভরসা নাই?

 

তোমার খোদা শক্তিহীন

ভয়ে মরে রাত্র দিন

তাইতো তোমার বক্ষে ভয়

কোথায় পাবে তুমি জয়?

 

জিততে তারিক হইতে হয়

ভরসা বুকে লইতে হয়

ফেরার জাহাজ পুড়তে হয়

তবেই না হয় স্পেন জয়

 

জাহাজ পোড়ার খবর নাই

তবে বিজয কেমনে চাই?

১৮//২০১৯; সাড়ে ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৪

লিখলেই লেখা হয়,

শিখলেই শেখা

কোকিলতো ডাকবেই

কুহু আর কেকা

 

কেউ নাই কাছে তাই

লোকে হয় একা

টানলেই রেখা হয়,

দেখলেই দেখা

 

পাখি বড় বন চায়

লোকে বড় মন চায়

মন আরো ধন চায়

ধন জনগণ চায়

 

আমি চাই যারে

তাঁর কাছে ছুটে যাই

আমি বারে বারে

দেখি হায় কতবার

ফিরাতে সে পারে

১৯//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৫

তোর দাদারা চতুর ছিল

তোর দাদারা চতুর ছিল

বলল লতুর মায়

বুদ্ধি থাকলে ন্যাড়া কিরে

বেলতলাতে যায়?

 

তারা রিস্কে যায় নাই

স্বাধীনতা চায় নাই

 

অস্ত্র ছাড়া ক্ষমতা নাই

এই কথাটা বুঝেছিল

মীর সাহেবের বুদ্ধির তলে

সবাই মাথা গুঁজেছিল

 

নবাব সিরাজ মরে গিয়ে

বাঁচলো সবার মনে

লাভ কি হলো বাঁচেনিতো

পলাশীর সে রণে

 

জিতে গেল মীর সাহেব

দালালীর কি গুণ

প্রাণে বাঁচে দালালেরা

নবাবে হয় খুন

 

স্বাধীনতা চাইতে হয় না

নাইতে হয় না খুনে

গোলাম থাকার মজাই ভিন্ন

বাঁচো পরের নুনে

 

আয়রে ছুটে আয়

তোর কি দেখার ঠেকা পড়ছে

কাক- কি কি খায়?

 

দাদা ছিল চতুর তোর

এনেছিল গোলাম ভোর

তার নাতি তুই, যা না

নয়া প্রভু বানা

১৯//২০১৯; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৬

নবাব সাহেব জবাব দেন

যুদ্ধে কেনো পারেন নাই

ফণা তোলা গোখরো সাপ

দেখেও কেনো মারেন নাই?

 

সাপের বাচ্চা বলুক আচ্ছা

তারে বিশ্বাস করতে হয়?

বেঈমানেরে বিশ্বাস করলে

ছোবল খেয়েই মরতে হয়

 

নবাব সাহেব জবাব দেন

অভাব আপনার কি ছিল?

এতো সৈন্য আপনার ছিল

আপনার হাতেই ভি ছিল

 

বিশ্বাসঘাতক বুঝলে তারে

মোটেই বিশ্বাস করতে নাই

বিশ্বাসঘাতক সঙ্গে নিয়ে

যুদ্ধে কভু লড়তে নাই

 

তাইলে যুদ্ধে হারতে হয়

রক্তগঙ্গায় নাইতে হয়

সাপের ছোবল খাইতে হয়

পরপারে যাইতে হয়

 

জীবন দিলেন তারপরও কি

আপনার শিক্ষা হয় নাই?

বাহবা ভালোশিক্ষা হইছে?

তবে আপনার ভয় নাই

১৯//২০১৯; রাত ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৭

সবই জানি কিন্তু দাদা

আমি কিছু কমু না

সবাই মরে মরুকগে

বুকে গুলি লমুনা

 

রাজাকাররা হয়রে তাজা

মেজর জলিল জেলে যায়

এসব দেখে দেশবাসী ক্যান

রাজাকারও টাসকি খায়

 

মুক্তিযোদ্ধার হাতে যখন

মুক্তিযোদ্ধা গুলি খায়

যারা মারলো তারা তখন

রাজাকারের তকমা পায়

 

মোশতাক জিয়া মুক্তি নয়

কারে জানেন মুক্তি কয়?

আর্মির রেশন যে জন লয়

তারে নাকি মুক্তি কয়

 

এসব কথা সবাই জানে

আপনি কি তা জানেন না?

সব কথা তবে কেনো

আপনি মুখে আনেন না?

 

সত্য কইতে ডর লাগে?

ভয়ে গায়ে জ্বর লাগে?

 

রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা

যখন তাদের ফাঁসি হয়

খুশিতে যে হাততালি দেয়

তারেই বঙ্গবাসী কয়

 

কি চমৎকার দেশ।

মুক্তিযোদ্ধা জানের দুশমন

রাজাকার হয় খেশ

সাবাস বাংলাদেশ

২০//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৮

কে যে কখন রাজা হয়

কার যে কখন সাজা হয়

কেউ যদি তা জানতো

খাটে বইয়া কানতো

 

পাবলিক যখন বুলি খায়

রাজা তখন গুলি খায়

আমের ভর্তা ফুলি খায়

ঝারি বকা কুলি খায়

 

ঘাটের মুক্তি, খাটের মুক্তি

দুই মুক্তিতে চুক্তি হয়

খাটের মুক্তি শাসন করবে

ঘাটের মুক্তি আনবে জয়

 

মুক্তি মানেই আচ্ছা হয়

কেউ চাইলে বাচ্চা লয়

কত রকম লড়াই হয়

কষ্ট করলেই আসে জয়

২১//২০১৯; সকাল ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৮৯

মানিক মিয়ার ছেলে

কার ইশারায় বসত করে

বাড়ি রেখে জেলে?

কোন কারণে জেলে বসে

ছি কুত কুত খেলে?

 

বঙ্গবন্ধুর উপাধিটা

যে জন দিল ভাইরে

সিংহাসনের আশেপাশে

সে জন কেনো নাইরে?

 

স্বাধীনতার পতাকাটা

প্রথম যিনি উড়ান

নতুন নেতার আগমনে

এখন তিনি পুরান

 

বাঘা কাদের এখন নাকি

হইছে বিড়াল মেও

তাইতো বলি, মাছ না দাও

তারে কাটা দেও

 

সংগ্রাম যেজন করবে সে

এখনো ভাই সিন্ধুকে

তারে নিয়ে শুধু শুধুই

কথা বলে নিন্দুকে

২১//২০১৯; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯০

ছি ছির কাজ ডিসি করে

ভিসি করলে দোষ নাই

তার ছাত্ররা সবাই গরু

ছাগল কিংবা মোষ নাই

 

পোঁকা ধরছে মাথাতে

পানি ঢালো ছাতাতে

লাগে টাকা আরো নাও

মিলেমিশে পাপ কামাও

 

কাটমানি খায় মন্ত্রীও

দালাল ষড়যন্ত্রীও

লাগলে ঘাস আরো নাও

সিংগাপুরে খেলতে যাও

 

থানার ওসি আঙুল চোষে?

আমায় ধরবা কিসের দোষে?

আমার দোষ কি তোমার নাই?

কথা কওনা  ছোট ভাই

 

পাপ করা কি মজা কন

পাপ তো করে জনগণ

সারাদেশে পাপের জয়

কনতো কেডা ভন্ড নয়?

২১//২০১৯

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯১

পাঁচশো টাকার হিসাব চান?

বলছি হিসাব, লিখে যান

 

একশো নিছে জালালে

তিনশো নিছে দালালে

বাকি আছে একশো

এটুক আমার ট্যাকসো

 

আপনার পাঁচশো টাকা শেষ

শুভংকরের বাংলাদেশ

 

পাবলিকে খায় ডান্ডা বাড়ি

নেতা বসে আন্ডা পাড়ি

তাইতো এতো টাকা হয়

জয় কইতে কি কষ্ট হয়?

 

কই গেলিরে কাদের খান

জমি বেঁচে টাকা আন

সময় হলে চলে যাবো

কখন যাবো, বলে যাবো?

২১//২০১৯; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯২

সবকিছুরই সীমা আছে

এখন দেখি সীমা নাই

নানা রকম বীমা আছে

ক্রসফায়ারের বীমা নাই

 

ভয়ে যতোই হাত গুটাবি

নিস্তার কিন্তু পাবি না

গুলি যখন খাবি ঠিকই

ফাঁকা গুলি খাবি না

 

এখন একটু সময় দে

অস্ত্র আগে কিনি

তারপর সে অস্ত্র বলবে

কে যে কারে চিনি

 

কাঁটা পাইলে বিলাই ঠান্ডা

পাবলিকে চায় শক্ত ডান্ডা

আমিও দেই ঘোড়ার আন্ডা

জোরসে লাগা নিতাই পান্ডা

২১//২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৩

দেশে তখন যুদ্ধ চলছে

লোকের মনে ভয়

তুই বল্লি ভয়টা কিসের?

তোরই হবে জয়

 

হাটে যুদ্ধ, মাঠে যুদ্ধ

যুদ্ধ নদীর ঘাটে

যুদ্ধ চলে দিন রজনী

যুদ্ধ নিজের খাটে

 

মাঠের যুদ্ধ, খাটের যুদ্ধ

যুদ্ধ অবিরাম

যুদ্ধ করে দিন পার হয়

ঝরে গায়ের ঘাম

 

যুদ্ধে যুদ্ধে কেটে গেল

পুরো নয়টি মাস

নদীর জলে ভেসে গেল

কত কত লাশ

 

'মাস পরে আসলো বিজয়

হাসলো নতুন ভোর

নতুন শিশু আসলো কোলে

আলো করে তোর

 

কোথায় গেল দুঃখ কষ্ট

কোথায় গেল ভয়

সবাই দেখে তোরই কোলে

হাসছে নবীন জয়

২১//২০১৯; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৪

আমি একটা পাগলা মানুষ

মামলা করে লাভ নাই

লোকে হাসে? হাসতে পারে

কারো সাথেই ভাব নাই

 

ভুল কি কইছি, কনতো দেহি?

কাঁঠাল গাছে ডাব নাই

গড় পানিতে নাও চলে না

কলাগাছে গাব নাই

 

আপনি বইবেন সিংহাসনে?

এমন কোন খাব নাই

স্বপ্ন  দেখলে দেখতে পারেন

তাতেও কোন লাভ নাই

 

পাগলে কি বলে রে আর

ছাগলে কি খায়

তাতে বলেন চোরাই রাজার

কিবা আসে যায়?

 

ধরতে পারেন, মারতে পারেন

দিতে পারেন থাপড়ও

নিতে পারেন টুপী, জামা

কিম্বা নিচের কাপড়ও

 

তবু লোকে পাগল দেখলে

দাঁত বের করে হাসবেই

মধুমাসে নতুন জামাই

শ্বশুরবাড়ি আসবেই

 

সব হাসা তো প্রেম না

সব মেয়েও মেম না

কেন পাগল ডলা দেন?

পারলে তারে কলা দেন

২২//২০১৯; সকাল ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৫

কথা

বাঁকা কথা, পাকা কথা, ছাকা কথার ছাও।

এক টাকাতেই তিন হালি, নিলে নিয়ে যাও

 

রান্না করে খেতে পারবে

বন্ধু এলে দিতে পারবে

শ্বশুর বাড়ি নিতে পারবে

হারতে চাইলে হারতে পারবে, সঙ্গে নিয়ে যাও

বাঁকা কথা, পাকা কথা, ছাকা কথার ছাও

 

চিড়ে কথায় ভিজে না

মন ভিজে তা জানো?

কথার কিন্তু চক্ষু আছে

আছে কথার কানও

 

কথা নিজেই চলতে পারে

কান কথাও বলতে পারে

মিলতে পারে সবার সাথে, গিলতে পারে বিষ

কথা দিলে কাউরে তুই, বুঝে শুনেই দিস

২২//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৬

ছিনতাই, খুনোখুনি,

চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো--

এইসব যারা করে

তাদেরকে কে চিনো?

 

এই খেলা পুরাতন

অতিশয় বনেদি

এই খেলা খেলতো

মোস্তফা, রনেদি

 

তিনশত বই ঘেঁটে

ঘনারাম পন্ডিত

বললো, এই খেলা

চলবে রে রনজিত

 

এই খেলা বীরদের

সকলেই পারে না

অনেকেই হেরে যায়

সকলেই হারে না

 

উন্নত হলে দেশ

এই খেলা বাড়বে

বার বার খেলে তবু

গরীবেরা হারবে

 

এই খেলা চলে বেশ

চিরকাল চলবে

জয় জয় ক্যাসিনো

সম্রাটও বলবে

২২//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৭

কনে যাত্রী চলছে ধেয়ে, বরের বাড়ি পানে

বর পছন্দ হইছে নাকি শুনে বরের গানে

কনে এখন বাড়ির কর্তা

বর বানাবে আলুর ভর্তা

মুগ্ধ হয়ে কনে থাকবে চেয়ে বরের পানে

এটা হলো দিনবদল ডিজিটালের মানে

 

কনে যাবে হাল বাইতে, বর করবে রান্না

এটা দেখে কাঠবিড়ালী জুড়ে দেবে কান্না

রান্না না হয় করবে বর

বললে পেটে বাচ্চা ধর

কেমনে পেটে ধরবে বাচ্চা ভেবে কিছু পান না

কনে বলবে হুক্কা কই, একটু সেজে আন না

 

শাড়ি পরে বরে ঘুরবে, কনে পরবে টাই

বরকে এট্টু আদর করে বল্বে সোনা যাই

আসতে রাতে হবে দেরী

তোমার সাথে রবে মেরী

আমি যাবো বন্ধুর বাড়ি, ডিনার খেতে, বাই

রাগ করে না সোনাযাদু গেলাম আমি, যাই?

২৩//২০১৯; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৮

চাই

সাদা সাদা মেঘগুলো নীলাকাশে ভাসে

পাখি ডাকে, নদী বয়, চাঁদ-তারা হাসে

মিটিমিটি আলো দেয় জোসনার ঢল

ঝর্ণারা কল কল ছোটে অবিরল

 

এইসব ঘটে বলো কার ইশারায়

সবার জীবন চলে তার মহিমায়

 

কত না প্রাণী ভাসে সাগরের তল

বর্ষায় নেমে আসে মেঘেদের ঢল

ফুলবনে পুষ্পরা কী মধুর হাসে

সকলেই সকলেরে কত ভালবাসে

 

এইসব ঘটে বলো কার ইশারায়

সবার জীবন চলে তার মহিমায়

 

তিনিই জন্ম দেন, তিনিই মারেন

পৃথিবীর কলকাঠি তিনিই নাড়েন

দিনরাত হয় শুধু তাঁরই ইশারায়

ধরনীর সব প্রাণী তারি গুণ গায়

 

এসো এসো আমরাও তাঁর গুণ গাই

জীবনের সব কিছু তাঁর কাছে চাই

২৩//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০৯৯

না হয় একটু হলোই ভুল

তাই বলে ফুল ফুটবে না?

ফুলের মধু অলি এসে

তাই বলে কি লুটবে না?

 

কালো মেয়ের বয়স হলে

তার বর কি জুটবে না?

তার জীবনের দুঃখটা কি

কোন কালেই টুটবে না?

 

ফল পেঁকেছে, পাখি এসে

পাকা ফল কি খুঁটবে না?

খিঁচুড়িটা রান্না করতে

চাল ডাল কি গুটবে না?

 

রাত্রি হবে তাই বলে কি

সূরুজ আবার উঠবে না?

রান্না করবে, তরকারি কি

গাঁয়ের বধু কুটবে না?

 

রাত নিশিতে ভাগ্যাকাশে

চন্দ্র তারা উঠবে না

আমার ভাগ্যে কোন কালে

একটু সুখ কি জুটবে না?

২৪//২০১৯; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২১০০

হাওয়া ভবন খায় না এখন

খাওয়া ভবন খায়

সারা দেশের ময়না, টিয়া

নতুন গান গায়

 

হাওয়া ভবন হাওয়া থেকে

যতটুকু পাইতো

তার বেশি না, হাওয়া ভবন

ততটুকুই খাইতো

 

টিয়া বলে হিয়া নাই

দেশে তারিক জিয়া নাই

তবে সোনা কেডা খায়

দেশের মানুষ জানতে চায়

 

উঁইপোকা খায় বিদ্যা ধন

বইকে করে মাটি

চেটেচুটে খাওয়া ভবন

দেশকে বানায় টাটি

 

পেটুক বলে খাওয়া ভবন

নাম হয়েছে যার

কয়লা ময়লা সবই খায়

কানের সোনা মা'

 

দেশের যত ভোল্ট সে খায়

জমা রাখা গোল্ড সে খায়

রাস্তাঘাটের টোল সে খায়

স্বাধীনতার বোল সে খায়

 

শেয়ার মার্কেট একা একা

খেয়ে করে শেষ

ব্যাংকবীমা সব খেয়েদেয়ে

উজাড় করে দেশ

 

এতো এতো টাকা সে খায়

ঘরে টাকা ধরে না

সেই টাকাতে দেশের পোলা

বিদেশে হয় ফরেনা

 

টাকা ওড়ে পথেঘাটে,

নর্দমাতে, নায়

সারাদেশের সব টাকা আজ

খাওয়া ভবন খায়

২৫//২০১৯; ১টা

No comments

Powered by Blogger.