আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ০১-১০০

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০১

কুরআন বলে

কোরআন বলে হিজাব করো

রাষ্ট্র বলে পাপ

মুসলিম প্রধান দেশেই এখন

এমন অভিশাপ।

 

মসজিদ আছে লক্ষ লক্ষ

মুসল্লিতে ভরা

কোরআন ছাড়া রাষ্ট্র চলে

সাগর ভরা খরা।

 

আল্লাহর আইন মানবে কি

এখন বিধর্মীরা

ঘাস কি খাবে মুসলমানে

গরু খাবে চিড়া?

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০২

ভাঙা কলম বুক পকেটে রাখি না

ভাঙা কলম বুক পকেটে রাখি না

ভাঙা ঘরে রাত বিরাতে থাকি না।

ভাঙা কলস লাগে নাতো কাজে

প্রিয় জিনিস ভাঙলে বুকে বাজে।

 

সবাই বলে ইসলাম সেতো

জীবন বিধান পূর্ণ

কেনো তাকে করো তবে

নিজেই তুমি চূর্ণ।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৩

খেলায় হারজিত আছে

খেলার মধ্যে হারজিত আছে

ভুল চালে তো হারবেই

শক্তি থাকলে প্রতিপক্ষ

তোমাকে তো মারবেই।

 

চালের বদল চাল চাই

আটকে দেয়ার জাল চাই।

মাথায় পড়ার তাল চাই

নাস্তানাবুদ হাল চাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৪

নানী আমার নানী

নানী আমার নানী

কিসের কানাকানি

খাও না দানাপানি

চক্ষু ভরা পানি।

 

নানী আমার নানী

লোকে বলে কানি

চোখে পড়ছে ছানি

তবু তোমায় মানি।

 

নানী আমার নানী

শোন নবীর বানী

হোক না কেউ রানী

মরবে সবাই জানি।

 

সবাই হবে লাশ

ঘটবে সর্বনাশ।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৫

কোন খবরটা চাও?

সকাল হলে কোন খবরটা চাও?

শুভ সংবাদ একটা দেবো

অন্যটা তো ফাও

শীতের পিঠা খেতে হলে

নানাবাড়ী যাও।

 

সকাল হলে কোন খবরটা চাও?

বোনের আদর দাদীর সোহাগ

দু হাত পেতে নাও

শুভ সংবাদ একটা দেবো

অন্যটা তো ফাও।

 

সকাল হলে কোন খবরটা চাও?

ভয় পেয়ো না আমার কাছে আও

কেউ না দিক আমি দেবো

তোমার যা চাই তা-ও।

কোন খবরটা চাও?

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৬

যা লিখার তা লিখছি

যা লিখার তা লিখছি

যা শিখার তা শিখছি।

 

কেউবা করে পেয়ার

কেউবা করে শেয়ার।

 

কেউবা বলে ফেয়ার

কেউ টেনে নেয় চেয়ার।

 

নিক না যা তার নেয়ার

করি না তা কেয়ার।

 

যার যা খুশি করুক

যে মরার সে মরুক।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৭

খুশির কিছু নাইরে

কালো বিড়াল মরলে কি?

কইতর তো পায় না ঘি।

ঘি খাবে সব দাঁতাল বিলাই

পারলে ধরে তারে কিলাই।

 

খুশির কিছু নাইরে

ভর্তা দিয়াই খাইরে।

মুরগী তো খায় শিয়ালে

রাম ছাগলে বিয়ালে।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৮

সখিনা বিবি কান্দে

পরিমল যায় চান্দে

বাতেনের মায় কান্দে।

কান্দিস নারে সখিনা

বইবে বাতাস দখিনা।

 

ছেলে গেছে তেপান্তর

করবে আলো আবার ঘর।

ছাওয়াল ফিরা আইবে

দুধমাখা ভাত খাইবে।

 

বাতেন বাতেন বাতেন নাই

কেমনে রে ভাত আমি খাই।

বাতেনের মায় রান্ধে

সখিনা বিবি কান্দে।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-০৯

কোথায় যেতে চাও

বেহেস্ত দোযখ দুটোই আছে

কোথায় যেতে চাও

দুই দরজাই খোলা আছে

যেখানে খুশি যাও।

 

যেতে হলে বেহেস্তে

খোদার বিধান মানো

ব্যক্তি সমাজ রাষ্ট্রে আবার

ইসলামটাকে আনো।

 

যেতে হলে দোযখে

নিজেই বানাও আইন

সেই আইনে মুমীন বান্দায়

করতে থাকো ফাইন।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১০

ভোট দেবে ভোটারে

ভোট দেবে ভোটারে

রেজাল্ট তো দেবে না

আমি যদি খুন হই

দায় কেউ নেবে না।

 

আগে দরকার বাঁচা

ঠিক কই নাই চাচা?

 

বাঁচতে হলে বুদ্ধি চাই

ভোট চাও তুমি? বুদ্ধি নাই?

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১১

যেই লাউ সেই কদু

যেই লাউ সেই কদু

রামপালে খাও মধু।

যেই বউ সেই বধু

যেই হুদা সেই হদু।

 

যেই পরেশ সেই পদু

পাবলিক রাম চদু।

নিজের নিজে খায়

পরের গান গায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২

ব্যাঙ ডাকে বাইরে

ব্যাঙ ডাকে বাইরে

কান্দে বাছুর গাই রে

কোথাও আলো নাইরে

নিকষ কালো রাত।

 

বাইরে এখন পাগলা ঝড়

কাঁপছে আমার ছনের ঘর

আপন লোকও হচ্ছে পর

ছাওয়াল চায় ভাত।

 

ভাত নাই বাপ চিড়া খা

চালে দড়ি বান্ধ

ঝড়ের পরে আবার হাসে

সাজানো বাগান।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৩

মসজিদ আছে লক্ষ লক্ষ

মসজিদ আছে লক্ষ লক্ষ

মুসল্লিও কোটি

রাম ছাগলে লীগের তলে

মারে গুটিশুটি।

 

ইসলাম নিয়ে যতই তারা

করুক মশকরা

ইসলাম ছাড়া জনগণকে

যায় না মোটে  বশ করা।

 

হুজুরদেরে জঙ্গী বলে

নিজেরা যায় মক্কা

ধর্মনিরপেক্ষতা কি

পায়না তখন অক্কা।

 

তাইতো বলি মেনন ইনু

ভন্ডামীটা ছাড়ো

নয় জনতার ধোলাই খেয়ে

ভাঙতে পারে ঘাড়ও।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৪

মেনন ইনু হইছে হাজী

মেনন ইনু হইছে হাজী

তবু লোকে কয় ক্যা পাজি

কারণ কিছু বুঝি না

বলল হেসে রোজিনা।

 

কত লোকই হজে যায়

তারা কিসের বড়ি খায়

কারণটা কেউ খুঁজি না।

আমি কিংবা রোজিনা।

 

যে করার সে করুক ভুল

ফুলের বনে ফুটবে ফুল

পথেঘাটে দেখলে চুল

ফুলও চুলে গুঁজি না।

ঠিক বলি নাই রোজিনা?

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৫

শোনেন দেশের জনগণ

শোনেন দেশের জনগণ

অনেক হইছে, ছাড়েন রণ।

পুলিশ আছে ডাইনে

শাস্তি হবে আইনে।

 

রাজায় করুক রাজনীতি

আপনি  করেন কাজনীতি

জান বাঁচলে বাপের নাম

মরলে আপনার কিসের দাম?

 

কেউ করো না পার্টি

ওসব বড় ডার্টি

নিদান কালে খোদার নাম

ঈমান রক্ষা আসল কাম।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৬

অহংকারই পতনের মূল

অহংকারই পতনের মূল

শাস্ত্রবিধি কয়

অহংকারেi কারণেই তো

আসে পরাজয়।

 

হাতি পড়লে ফান্দে

যখন বসে কান্দে

ইঁদুরই হয় ভরসা

আঁধার রাতের পরেই তো

সকাল আসে ফরসা।

 

এসব কথা কতই বলি, যে বুঝার সে বুঝে না

গাঁয়ের মেয়ে সখিনা খাতুন আরো বলে রোজেনা।

আমি বলি এবার ছাড়ো গর্ব অহংকার

নইলে তোমার ভাগ্যে জুটবে দু:খ বারংবার।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৭

কেমনে হবে নিরপেক্ষ

দলের প্রতি থাকলে সখ্য

কেমনে হবে নিরপেক্ষ

নিরপেক্ষ হতে হলে

দলতো তোমায় ছাড়তে হবে।

 

ধর্মের প্রতি থাকলে সখ্য

কেমনে হবে নিরপেক্ষ

নিরপেক্ষ হতে হলে

ধর্ম তোমায় ছাড়তে হবে।

 

দলে থেকে হয় নাতো কেউ

দল নিরপেক্ষ

ধর্মে থেকে কেমনে হবে

ধর্মনিরপেক্ষ।

 

যদি বলো আমার কোন ধর্ম নাই

তুমি তবে কারো নও, ছাড়া গাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮

দল যদি না থাকে তো

দল যদি না থাকে তো

আসাদ বিন হাফিজ

 

দল যদি না থাকে তো

সে হয় দল নিরপেক্ষ

ধর্ম যদি না থাকে তো

হয় সে ধর্মনিরপেক্ষ।

 

আজকে যেসব মুসলমান

নিরপেক্ষর গাইছ গান

তারা সবাই ভন্ড

পার পাবে না কোন কালে

দু:খ আছে তাহার ভালে

পাবে উচিত দন্ড।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯

ইসলাম আমার ধর্ম

নিজকে বলি মুসলিম আমি

ইসলাম আমার ধর্ম

ইসলাম ছাড়াই চলে আমার

জীবন এবং কর্ম।

 

নামাজ পড়ি, রোজা করি

হয়না তবু হুশ

পরের জিনিস নিজের করি

আরামে খাই ঘুষ।

 

জীবন সমাজ রাষ্ট্রেও নেই

সত্য, সুন্দর, ইসলাম

কোরান হাদিস মতে যে আর

চলে না তো কোন কাম।

 

এমন চালাক আমরা সবাই

আল্লারে দেই ফাঁকি

আকাম কুকাম সবই করি

কোনোটা নেই বাকি।

 

মসজিদ আছে লক্ষ লক্ষ

মুসল্লিতে ভরা

পড়লে কোরআন মায়েরা খায়

জঙ্গী নামে ধরা।

 

এইতো আমার দেশ

ভন্ডের নেইতো শেষ।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০

কি দরকার

লক্ষ লক্ষ মসজিদ ভরা

মুসল্লীর কি দরকার

ইসলাম বিহীন যদি চলে

রাষ্ট্র এবং সরকার।

 

হালাল হারাম নাইরে জানা

কে কয় হারাম সবই মানা

কে আপন, কে, পর কার?

এসব জানার কি দরকার।

লুইটা পুইটা চাইটা খা

জাহান্নামে যাবি যা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২১

আমার নাম জরিনা

আমার নাম জরিনা

কালো মেয়ে, পরী না।

তেমন কিছু করি না

ফালতু কথা ধরি না।

 

দুচোখ মেলে দেখি

হৃদয় খাতায় লেখি

কাউকে কিছু কহি না

যা শুনি সব ছহি না।

 

ছহি কথার নাইরে ভাত

কইলে কথা হয়রে কাত।

দেশটা ভরা আঁধার রাত

জানিনা ক্যান, কার বা হাত।

 

সব জানে মোর খালা

বাড়ে আমার জ্বালা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২

ছেলে চলে রাজার হালে

ছেলে চলে রাজার হালে

বাপের নাভিশ্বাস

ছাগলে চায় পান্তা ইলিশ

গরুতে খায় ঘাস।

 

উল্টা সিধার গোলক ধাধায়

শুধুই সর্বনাশ।

উল্টা সিধা করে রাজার

কাটে বারো মাস।

 

প্রশ্নপত্র হচ্ছে নাকি

গোপনে সব ফাঁস

এসব নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী

করেন উপহাস।

 

আজব এ দেশ গুজব ভরা

করছি সবে বাস

সুযোগ পেলেই একে অন্যে

দিচ্ছি শুধু বাঁশ।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৩

স্বাধীনতা নলের আগায়

স্বাধীনতা নলের আগায়

বিচারপতি যায় ঘরে

জনগণ কেউ কয় না কথা

গুম হওয়ার ডরে।

 

কাউকে কিছু বললে বলে

যা খুশি তুই কর গা

জানিস না তুই কার হাতে এই

স্বাধীনতা বর্গা।

 

বিপদ যদি টানতে চাস

একাই তাতে পড় গা

তোর যদি খুব ইচ্ছে করে

একাই তবে মর গা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪

ট্রাম্পের বাজিমাত

মুসলিম পড়ে কোরআন হাদীস

খৃস্টান পড়ে বাইবেল

বিরোধীদল দেখলে দাগায়

পুলিশগুলো রাইফেল।

 

রাজনীতিবিদ দেখলে বিপদ

মহা খোশে যায় জেল

পাবলিক বুঝে লবডঙ্কা

তেলেসমাতির এই খেল।

 

আজব গণতন্ত্রে হায়

হিলারী হয় কাত

গণতন্ত্রের জোরে হয়

ট্রাম্পের বাজিমাত।

 

গণতন্ত্র এমন তন্ত্র

হয় না রাতে ঘুম

এক বিছানায় বসত করে

হত্যা এবং গুম।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫

কেউবা চালায়

কেউবা চালায় মোটর গাড়ি

কেউবা চালায় সাইকেল

কারো নাম শুকুর আলী

কারো নাম মাইকেল।

 

কেউবা পড়ে কোরআন হাদীস

কেউবা পড়ে বাইবেল

বিরোধীদল দেখলে দাগায়

পুলিশগুলো রাইফেল।

 

কেউ বা খোঁজে দেখলে বিপদ

কোথায় আছে সাব-জেল

পাবলিক বুঝে লবডঙ্কা

তেলেসমাতির এই খেল।

 

হায়রে গণতন্ত্র

সবটাই ষড়যন্ত্র।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬

গণতন্ত্র আজব যন্ত্র

গণতন্ত্র আজব যন্ত্র

ভেলকি খেলার মহামন্ত্র

কারো চোখে ষড়যন্ত্র

ভোট ডাকাতির আসল যন্ত্র।

 

আজব গণতন্ত্রে হায়

হিলারী হয় কাত

গণতন্ত্রের জোরে হয়

ট্রাম্পের বাজিমাত।

 

বঙ্গবাসী হয় উদাসী

মুড়কি মোয়া খায়

গণতন্ত্রে পাল উড়িয়ে

সদর ঘাটে যায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭

ভুল সবই ভুল

ভুল সবই ভুল

বিশ্ববাসী নিজের ভুলে

ছিড়ছে মাথার চুল।

 

গণতন্ত্রের এমন গুণ

হিলারী হয় কুপোকাত

ট্রাম্প হেসেই খুন।

 

এই দুনিয়ার হাল

সভ্য দেশে অসভ্যও

উড়ায় নায়ের পাল।

 

ভাতের থালায় শাক

উল্লুকে তা খাক।

পাবলিক কি বুঝবে বলো

গণতন্ত্রে ফাঁক।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮

পুলিশরা সব ফুলিশ না

পুলিশরা সব ফুলিশ না

বিবেকবানও আছে

বিবেকটা তার যায় হারিয়ে

চাকরী দাতার কাছে।

 

পরের কথায় গুলি চালায়

গোপনে সে কান্দে

নামাজ পড়ে রোজা করে

মুসল্লিও বান্দে।

 

আমরা গরুর পাল

রাজা চলে রাজার মত

আমরা টানি হাল।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৯

টগবগ টগবগ ছুটছে ঘোড়া

টগবগ টগবগ

ছুটছে ঘোড়া

লাফ দেয়,

ঝাঁপ দেয়

হয় না খোঁড়া।

ঘোড়ার গতি অনন্ত

সময় বড় অশান্ত।

 

আসতে পারে তুফান, ঝড়

উড়তে পারে কাগজ, খড়।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০

খুনীর দোসর

মারছে যারা মুসলমান তারা কাফের, খুনী

হোক না তারা মহাজ্ঞানী, হোক না ঋষি মুনি।

এই কথাটা বিশ্ববাসী সকল লোকে জানে

মানবতার চরম লংঘন এটাও সবাই মানে।

 

কিন্তু তাতে খুন হয় না বন্ধ

হয়না খুনী লেংড়া কিম্বা অন্ধ

যতই তুমি মনে মনে বলো ওদের ধিক

ততোই বাড়ে বিশ্বে কিছু আরো মুনাফিক।

 

এই কথাতে দ্বিমত নেই, বিশ্ববাসী জানে

খুনীর দোসর খুনীই হয় জগতে সবখানে।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১

ভাল মাইনষের ছাও

ভাল মাইনষের ছাও

ভুলেও কেউ লাইক দিওনা

আসবে বিপদ ফাও।

 

শেয়ার দেয়াও মানা

এটা করে শ্যামনগরের

লুলা জইল্যা কানা।

 

যারা আছো ভীতু

পাড়লে বুড়ো নানুর পেটে

দিও কাতুকুতু।

 

আমি হদ্দ বোকা

যতই বলি লিখবো না আর

মাথায় লাফায় পোকা।

 

আমায় ভাবো মরা মানুষ

দীঘি ভরা জল

জলের নিচে হিজল গাছ

তাক করে কে নল।

 

বাতাস এলে এমনি নাকি

নড়ে ধর্মের কল

বোশেখ এলে দমকা বায়ে

নামে নাকি ঢল।

 

কালবোশেখীর হাল

বড়ই বেসামাল।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩২

সোনার মেয়ে ময়না

সোনার মেয়ে ময়না

এমন মেয়ে হয় না

রাগ করে আর রয়না

দেবো কিনে গয়না।

 

পড়বে গয়না কর্নে

গয়না হবে স্বর্ণে

সাজবে নানা বর্ণে

তুমি তো নও পর্ণে।

 

তুমি হবে চাঁদ সুলতানা

তুমি বিবি খাওলা

তুমি হবে মা ফাতেমা

খুশি হবেন মাওলা।

 

সোনার মেয়ে ময়না

এমন মেয়ে হয় না।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৩

সুন্দরবনের কটক যাই

সুন্দরবনের কটক যাই

সকাল বিকাল নাটক খাই

গাছের আগায় উড়ছে ধুঁয়া

শাড়ি পিন্দে আমার বুয়া।

 

বুয়ার বাড়ি আক্কেলপুর

কেমনে যাবে অত দূর।

সামনে আছে সমুদ্দুর

মুসা নবীর পাহাড় তুর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৪

আগে ছিল সুন্দরবন

আগে ছিল সুন্দরবন

থাকতো মধুর চাক

এখন হবে কয়লাখনি

থাকবে মাথায় টাক।

 

আসল কথা কহরে

টাক ডুববে নহরে।

চুক্তি করে রাশা

খেলবে নতুন পাশা।

 

দেখবা গায়ে চাম নাই

পাশা খেলার কাম নাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫

ছেলে করবে বিয়া

ছেলে করবে বিয়া

পাগড়ি মাথায় দিয়া

ছেলের চাই ঘোড়া

মেয়ের দুপা খোঁড়া।

 

সামনে অথৈ নদী

কোথায় গেল গদী।

পারলে করো আন্দোলন

নইলে বসে কাইন্দা লন।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬

সুন্দরবনের খুলনা

সুন্দরবনের খুলনা

দাদীর মাথার চুল না

রানীর কানের দুল না

এসব কথা ভুল না।

 

বনে হবে কয়লা খনি

বানিয়ে দেবে সোনামনি

বলছি কথা গুল না

দেখবে না আর, ফুল না।

 

সুন্দরবনের খুলনা

নাইরে তাহার তুলনা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭

বাংলাদেশে সবই আছে

বাংলাদেশে সবই আছে

নৈতিকতা নাই

সুযোগ পেলে আমরা সবাই

পরের জিনিস খাই।

 

রাষ্ট্র সমাজ আইন আদালত

দুর্নীতিতে ভরা

মানুষগুলো পশুর মত

সাগর ভরা চরা।

 

কোথায় গেলে একটুখানি

নৈতিকতা পাই

হৃদয়গুলো শুকিয়ে গেছে

এই কারণে ভাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮

মসজিদ ভরা গরু ছাগল

মসজিদ ভরা গরু ছাগল

মানুষ খুঁজে পাই না

ইসলাম বিহীন মুসল্লীতো

মসজিদে আর চাই না।

 

ঘুষখোর আর সুদখোরে

মসজিদগুলো ভরা

ঈমানদারতো জ্যান্ত লাশ

সবাই যেনো মরা।

 

লাশগুলো ফের জাগবে কবে

ইসলাম আবার কায়েম হবে।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৯

বয়স তো আর কম হলো না

বয়স তো আর কম হলো না

ঘুরলা লাভের পিছু

অন্যে তোমায় দাগা  দিল

নিজে দিলা কিছু।

 

এখন কিছু করার নাই

নিয়তিই সার

আকাশ পাতাল ভেবে ভেবে

করছো জীবন পার।

 

দুদিন বাদে আজরাইল

আসবে তোমার কাছে

তার সাথে যাবে তুমি

সম্বল কিছু আছে?

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪০

মন্দ ভালবাসি না

ঠান্ডা জ্বরে কাশি না

মন্দ ভালবাসি না

দ্বন্দ্ব দেখে হাসি না

আমি এখন চাষী না।

 

চাষী ছিল আমার বাপ

করতো না তো কোন পাপ

উল্টো দিলে তাকে চাপ

তুলতো নাকি বাঁশের খাপ।

 

আমি এখন ব্যারিস্টার

মিথ্যা বলাই আমার সার

আদালতেই সময় পার

কেন যাবো জলার ধার।

 

চাকরী করেন আমার মামা

পকেট ভরা তার পাজামা।

মামার নাকি অনেক হুশ

পকেট ভরা থাকে ঘুষ।

 

নীতির বাড়ি নৈনিতাল

নৈতিকতার এইতো হাল।

কোরান হাদিস পড়ি না

নবীর মত লড়ি না।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪১

সত্য কথা কেউ বলো না

সত্য কথা কেউ বলো না,

সত্য বলা পাপ

জানাযাতে একশো মানুষ

পায়নি জাতির বাপ।

 

এমন কথা বললে পাবে

নিজের গলায় ফাঁসি

সত্য বললে থেমে যাবে

নিজের মুখের হাসি।

 

সত্য কথা কেউ বলো না,

সত্য বলা বারণ

ত্রিশ লাখের তেলেসমাতির

থাকবে না আর কারণ।

 

সত্য ছেড়ে যতো পারো

মিথ্যা বলো ভাই

মিথ্যাবাদীর সুনাম আছে

দোষতো কিছু নাই।

 

বাঁচতে চাইলে মিথ্যা বলো,

মিথ্যা বললে তবে

যায় না বলা, একদিন তুমিই

জাতির পিতা হবে।

 

বাহারিসব আইন হবে,

ওপরে ফিটফাট

বাহাদুরশাহ পার্কের নিচেই

থাকবে সদরঘাট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪২

রাজনীতিবিদ খালু খালা

রাজনীতিবিদ খালু খালা

কালু বানায় জুতার মালা

আন্দোলনে সীল ও গালা

বুকে কুলা পিঠে ছালা।

 

দফায় দফায় বিদ্যুৎ জ্বালা

দেশের মানুষ সবাই ভালা।

কানে লাগায় মস্ত তালা

সবাই যেন বাপের হালা।

 

রাজনীতিবিদ শ্বশুর বাপ

দেখে না সে অগ্নি তাপ

মুখে কায় কফির কাপ

সবই মজা, কোথায় পাপ?

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৩

মাসির দরদ

মায়ের চেয়ে দরদ নাকি মাসির

জেলের চেয়ে পছন্দ তার ফাঁসির

তাতে নাকি জনসংখ্যা কমে

ফাঁসির খেলা চলবে দমে দমে।

 

খেলতে খেলতে খেলোয়াড়

নাইতো এখন দেলোয়ার।

গ্যাড়াকলে পড়লে হাতি

চামচিকা কয় তুই কার নাতি।

 

মায়ের চেয়ে দরদ নাকি মাসির

তারো চেয়ে বেশী দরদ দাসীর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৪

নবী ছিলেন বীর মুজাহিদ

নবী ছিলেন বীর মুজাহিদ

করতেন লড়াই, যুদ্ধ

জীব যার হত্যা মহাপাপ

বলতেন গৌতম বুদ্ধ।

 

তারা যখন মারছে মানুষ

পুড়িয়ে দিচ্ছে ঘর

বুঝতে হবে ধর্ম নয়

টার্গেট তোমার চর।

 

বাঁচার জন্য অস্ত্র নিলে

তারে বলে জঙ্গি

হায়রে মানুষ, মানবতা

এ কোন মনোভঙ্গি।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৫

মুখে বলো মানবতা

মানবতা মানবতা বলে চেচাও তোমরা

উচিত কথা বললে আবার মুখটা করো গোমরা।

মানুষ ছাড়াও জগত জুড়ে লক্ষ প্রাণীর বাস

নেই কি মায়া তাদের তুমি চাও যে সর্বনাশ।

 

অস্ত্র বানাও মানুষ মারো প্রাণী করো খুন

তোমার মাথায় শুধু গজায় নিত্য  নতুন তূণ

পশুপাখি বৃক্ষলতা সবই খোদার দান

সবার বাঁচার জন্য তিনি দিয়েছেন বিধান।

 

মুখে বলো মানবতা, ভিন্ন জনে মারো

মানবতার দোহাই দেয়ার ভন্ডামিটা ছাড়ো।

ইসলাম ছাড়া ইনসাফ নাই, কে দেবে আশ্রয়

আল্লাহ আছেন সবার ওপর বিশ্বজগতময়।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৬

হাঁস মুরগীর ডিম

বুঝিনা হায় মাথায় এসব বুদ্ধি কেন আসে

পেয়ারা খায় চিল শকুনে কাঁঠাল বাঘডাসে।

মনা চোরা লাউ নিয়ে যায়, কানাই নেয় সীম

কেউ জানে না কোথায় যায় হাঁস মুরগীর ডিম।

 

হলমার্কের টাকা যেমন কালা চোরা খায়

ব্যাংক লুটের টাকা নাকি বিদেশ গেলে পায়।

শেয়ার মার্কেট টাকা খায় আম জনতার

ডেসটিনির টাকা কই হচ্ছে পগারপার।

 

এই সব ভেবে ভেবে মাথা হলে গোল

লোকে তার মাথা নয় কয় যে পাগোল।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৭

হাসানুল বান্না

আল্লাহ যারে বাঁচিয়ে রাখেন

তিনি মুছে যান না

বুকের ভেতর বেঁচে আছেন

হাসানুল বান্না।

 

তাকে হত্যা করেছিল

নব্য ফেরাউন

কিন্তু শহীদ হয়নি বিলীন

হয়নি সেতো খুন।

 

ইতিহাসের পাতায় সিরাজ

বাঁচে চিরকাল

প্রতি ভোরেই সূর্য ওঠে

রক্তমাখা লাল।

 

ইতিহাসতো মাপ করে না

ইতিহাসের পাপ

মীরজাফরের গুষ্ঠি কুড়ায়

কেবল অভিশাপ।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৮

আজব বাংলাদেশ

আজব বাংলাদেশ

গুজবের নেই শেষ।

ছাগল দিয়ে চাষ হয়

রাজপথে ঘাস হয়।

 

পদ্মা জলে বাঁশ হয়

কিছু মানুষ দাস হয়

কারো আবার ফাঁস হয়

প্রতারকের চাষ হয়।

 

কারো সর্বনাশ হয়

সবাই মরে লাশ হয়।

 

আজব বাংলাদেশ

হঠাৎ নিরুদ্দেশ।

২০শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৪৯

ছোট্ট পাখি চন্দনা

ছোট্ট পাখি চন্দনা

দেখতে সে তো মন্দ না

চোখ আছে তার অন্ধ না

চায় না লড়াই, দ্বন্দ্ব না।

 

চতুর শিয়াল গন্ধ পায়

কৌশলে যে মারতে চায়

মারার পথ তো বন্ধ না

ধার ধারে না, ছন্দ না।

 

চোট্ট পাখি চন্দনা

সবাই গায় তার বন্দনা

শিয়াল তো আর অন্ধ না

কৌশলে খায় চন্দনা।

২১শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫০

আতা ভাইয়ের খাতা নাই

আতা ভাইয়ের খাতা নাই

হিরন দাসের ছাতা নাই।

ছাতা আনতে কটক যাই

পথে আতার খাতা পাই।

 

খাতা ভরা উপন্যাস

আরো লেখেন গল্প

কবিতাও কিছু কিছু

খুব সামান্য, অল্প।

 

সবার প্রিয় আতা ভাই

ছাতা মার্কায় ভোট চাই।

হাঁসের গোস্ত খেতে ভাল

বই বিলায় মনের আলো।

 

যে যায় ময়নামতি

সে পায় প্রজাপতি

ময়নামতির শালবন

গাছের গোড়ায় বান্ধা মন।

 

মনের সাথে মিললে মন

আর লাগে না শালের বন।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫১

বরাক বাঁশের গুণ

বরাক বাঁশের গুণ

তরকারীতে লাগে না আর

মরিচ এবং  নুন।

 

মানুষ মারতে লাগে না আর

কখনো গুম, খুন

বাঁশের বাড়ি ভেঙে গেলে

খাবো আফলাতুন।

 

 

বরাক বাঁশের গুণ দেখো ভাই

বাঁশ বানাতো ঝুপড়ি

এখন নাকি দালানও হয়

কর্তারা পায় উপরি।

 

রডের বদল লাগছে কাজে বাঁশ

তাতেও যারা দেখছে সর্বনাশ

তাদের জন্য বানানো আছে

কারাগারের খুপড়ি।

১৯ই ফেব্রুয়ারী  ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫২

একাত্তরের স্মৃতি

একাত্তরের স্মৃতি হঠাৎ

উঠলো ভেসে মনে

মৃত্যু ভয়ে পালিয়ে ছিলাম

সবাই সংগোপনে।

 

সেদিন বুকে ঠাঁই দিয়েছে

পড়শি ভারতমাতা

তাইতো আজকে আমার

হাতে প্রিয় স্বাধীনতা।

 

তেমনি করে আজকে আসে

পড়শি রোহিঙ্গারা

খান সেনাদের মতই সেনা

করছে ওদের তাড়া।

 

তাদের আমরা ঠাই না দিয়ে

পাঠাচ্ছি যম ঘরে

কেউ যেন না বাঁচতে পারে,

গুলি খেয়ে মরে।

 

যারা ওদের খুন করছে

তারা যদি খুনী

ওদের মদদ করে তুমি

কেমনে হবে গুণী?

 

পাকসেনাদের হেল্পকারীরা

ছিল রাজাকার

আজ সেনাদের হেল্পকারীরা

কোন সে অভিধার?

১৯ই ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৩

উন্নয়নের লাস্ট সীনে

উন্নয়নের বইছে জোয়ার

বুদ্ধি খাটাও নাও চিনে

খাবার দাবার হচ্ছে জমা

সবই এখন ডাস্টবিনে।

 

আমিও খাই, ডগও খায়

খাবার চমৎকার

উন্নয়নে ভাসছে স্বদেশ

তাতে অমত কার।

 

আর থেকো না ঘরে বসে

কেউ যেয়ো না চাইনিজে

কেউ বলো না খাবার দেন

তিন দিন উপোস খাইনি যে।

 

উন্নয়নের বইছে জোয়ার

খাবার এখন ডাস্টবিনে

মানুষ কুকুর এক সাথে খায়

উন্নয়নের লাস্ট সীনে।

২১শে ফেব্রুয়ারী ২০১৮

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৪

আজব গণতন্ত্রে হায়

আজব গণতন্ত্রে হায়

হিলারী হয় কাত

গণতন্ত্রের জোরে হয়

ট্রাম্পের বাজিমাত।

 

বঙ্গবাসী হয় উদাসী

মুড়কি মোয়া খায়

গণতন্ত্র নায়ের পালে

কোনবা ঘাটে যায়।

 

গণতন্ত্র পাকা কলা

ছিল এবং খাও

গলা ছেড়ে কলা খেয়ে

তাইরে নাইরে গাও।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৫

ভূতের বাচ্চা সোলায়মান

ভূতের বাচ্চা সোলায়মান

আপনি নিজে কি কি খান

খেতেন যদি লেবেনচুস

চলে যেতেন হিন্দুকুশ।

 

হিন্দুকুশের পাহাড়ে

থাকতেন সুখে আহা রে।

ভূতের বাচ্চা সোলায়মান

আপনি কেন চীনে যান।

 

চীনারা খায় সাপ, ব্যাঙ

আপনি কেন খান ল্যাঙ।

২১শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৬

সুত্রাপুরের সুত্রধর

সুত্রাপুরের সুত্রধর

বলল, নতুন সূত্র ধর।

আল্লা-হরি বাদ দিয়ে তুই

নেতা নেত্রীর তসবি কর।

 

নেতা আদি নেতা অন্ত

নেত্রী সবার সার

জয় নেতাজি বলে বলে

জীবন কররে পার।

 

নইলে মরবি ক্রসফায়ারে

নইলে হবি গুম

বুলেট বাবা তোর কপালে

নইলে আঁকবে চুম।

 

সুত্রাপুরের সুত্রধর

তার বুদ্ধি রপ্ত কর।

২২শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৭

আমরা তবে গেলাম

সেলাম বাবু সেলাম

এবার তবে গেলাম।

 

এ্যা, যাবি? রহিম কই?

বাইরে খাঁড়া, দিচ্ছি দই।

 

দই নিয়েছিস? সঙ্গে কি?

মুড়কি মোয়া, খাঁটি ঘি।

 

জামাই বড় মেজাজী।

ঠিক বলেছেন বাবুজি।

 

মিষ্টিও নিস দুই হাড়ি

মেয়ে আনতে নিস গাড়ি।

 

আর কি নিব সাগর কলা

যা নিয়ে যা কর চলা।

 

সেলাম বাবু সেলাম

আমরা তবে গেলাম।

২২শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৮

উন্নয়নের জোয়ারে

না খেয়ে আর মরবে না কেউ

উন্নয়নের জোয়ারে

খাবার পাবে জলদি ঢোকো

নেতার গড়া খোয়াড়ে।

 

তোর মাথাতে কাঁঠাল রেখে

খাবো আমি কোয়ারে

বিদেশ থেকে কিনছি গুলি

লাগলে দেবো গোঁয়ারে।

 

মানুষ মারে আইন আদালত

আমার হাত তো ধোয়া রে

দরকার হলে তোকেও দেবো

ঘাওয়া, ঘি এক পোয়া রে।

 

সবাই জানে এসব কথা

নিউজ করে ভোয়া রে

না খেয়ে মরবে না আর

খেতে দেবো মোয়ারে।

 

বিরোধীরা থাক না ঘুমে

নরম বিছনায় শোয়ারে

দেশেকে আমি ভাসিয়ে দেবো

উন্নয়নের জোয়ারে।

 

উন্নয়নের সরকার

থাকলে ভোট কি দরকার।

২২শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৫৯

আর দিস না আজান রে

বাজান বাজান বাজান রে

আর দিস না আজান রে

ধইরা নিব মাজান রে

শিশু বাচ্চা সঙ্গে

আজব এ দেশ বঙ্গে।

 

বোরকা পরা অঙ্গে

যাইব নাকি জঙ্গে

সবই সম্ভব বঙ্গে।

তুই কি থাকিস রঙে?

 

জেলখানায় কি খায় রে

ডান্ডাবেরি পায় রে

আমার সোনা মায় রে।

 

আই ব কবে ফিরা মায়

সবুজ বরণ সোনার গাঁয়

দেখবো কবে মায় রে।

২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬০

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

গাছের গোড়ায় সাপ

এ সাপ তোমার নিজের গড়া

পাপের অভিশাপ।

 

তওবা করার যায়নি সময়

তওবা করো নিজে

এ ছাড়া পাপ যাবে নাতো

অন্য কোন চিজে।

 

নিজে জ্বলো অন্যে জ্বালাও

ধরনী ছারখার

প্রতারণার পাপের জালে

জ্বলছো তো বারবার।

 

কেয়ামতের নিশান দেখো

নানান উছিলায়

ঈমানদারের রূপ ধরে হায়

মুনাফিকে খায়।

২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬১

খোদার সাথে খোদকারী

খোদার সাথে খোদকারী হায়

আর কতকাল করবি

ঈমানদারের ভেক ধরে হায়

ভন্ডামীও ধরবি।

 

নিজকে এতো চালাক ভাবিস

রবকে ভাবিস বোকা

নিজের মনের পাপ লুকিয়ে

তাকে দিচ্ছিস ধোকা।

 

আল্লাহ তোর সবই জানেন

অন্তর ও বাহির

যা কিছু করছিস গোপন,

যা কিছু জাহির।

 

তওবা কর জলদি বলছি

এখনি ঝটপট

নইলে তুই পড়বি ধরা

হয়ে যাবি কট।

 

মানলে মান, না মানলে নাই

নাকচ কর, নট

ডান্ডাবেড়ির আওয়াজ শোন

বাজছে খটা খট।

২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬২

কিন্তু পাবলিক বুঝে না

গাইত গাইতে গায়ক

নাইতে নাইতে নায়ক

খাইতে খাইতে খায়ক

চাইতে চাইতে চায়ক।

 

বিহার থেকে বিহারী

তিহার থেকে তিহারী

রাজার নীতি রাজনীতি

বাজার নীতি বাজনীতি।

 

ধনের তন্ত্র ধনতন্ত্র

মনের তন্ত্র মনতন্ত্র

বনের তন্ত্র বনতন্ত্র

গণের তন্ত্র গণতন্ত্র।

 

কিন্তু পাবলিক বুঝে না

আসল কিছু খুঁজে না।

২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৩

হাজার রকম বায়না

ওগো,

আর কত ঘুমোবে,

এবার একটু ওঠো না

বাজারের ব্যাগ হাতে

দোকানেতে ছোটো না।

 

জামাই আসবে দুপুরে,

এই নাও লিস্টি

সবকিছু আনা চাই,

আর দই মিষ্টি।

 

সর্ষে ইলিশ, চিংড়ি  মালাই

জামাই ভালবাসে

জামাই তো আর আসে না

প্রতি মাসে মাসে।

 

ছোট ছেলে মুরগী ছাড়া

আর তো কিছু খায় না

গরুর গোশত বাসার সবাই

প্রতিদিন তো পায়না।

 

দুধ এনো চার লিটার

ফিরনী পায়েশ হবে

পোলাও চাল কেজি তিন

তাও কি বলতে হবে।

 

এটা ওটা সাত সকালে

হাজার রকম বায়না

তবু কেন গিন্নী ছাড়া

কেউ  থাকতে চায় না।

২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৪

যে বুঝার সে বুঝে

ফুল থেকে হয় ফুলিস

ভুল থেকে হয় ভুলিস

পুল থেকে হয় পুলিশ

দুল থেকে হয় দুলিস।

 

ফুল এনে দেয় গন্ধ

ভুল এনে দেয় মন্দ

পুল ভেঙে পথ বন্ধ

দুল এনে দেয় দ্বন্দ্ব।

 

যে বুঝার সে বুঝে

খোঁপাতে ফুল গোজে।

ভাঙা পুলে চড়ে না

ভুলের নামতা পড়ে না।

২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৫

হেকমত একমত

হেকমত একমত

সকলের দরকার

সবচেয়ে বেশী তার

যে চালায় সরকার।

 

বিরোধীরা বসে বসে

আঙুল চুষবে

তারপর সময় পেলে

অন্যকে দুষবে।

 

কোরান আর হাদিসের

সব কথা ভাল

সকলেই মনে মনে

হৃদয়ে তা জ্বাল।

 

তারপর মেনে চল

পাবে সুখ শান্তি

থাকবে না জগতে

কোন ভুলভ্রান্তি।

২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৬

না বুঝলে খুবই ভালা

ভালা সবই ভালা

সকাল বেলা বাজার করে

আমার আপন শালা।

 

তারচেয়ে সে ভালা

মেহমান সেজে যে খায় আগে

মাছ গোস্তের ডালা।

 

অন্দরে সে ঢোকে না

তাতে আদর থাকে না।

 

পাড়ার ছেলে সবাই খাবে,

নিজের ছেলে খাবে না

চড়ুই শালিক সবাই গাবে

ময়না ক্যা গান গাবে না।

 

গুণীর কদর খুনীর হাতে

এটাই নাকি আইন রে

বাইরে থাকলে বাড়বে কদর

ঘরে এলে ফাইন রে।

 

না বুঝলে খুবই ভালা,

বুঝলে করবা মাইন্ড রে

এমন লেখায় সহজে কেউ

দিও না কভু সাইন রে।

২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৭

ফরমান এলো সরকারী

ফরমান এলো সরকারী

উন্নয়র খুব দরকারী।

 

থাকা খাওয়ার অভাব দেশে

আর তো কারো থাকবে না

উন্নয়নের সরকার দেশে

অভাব কারো রাখবে না।

 

কায়েস মিয়া আয়েশ করে

জর্দা পায়েশ খায়

নোনতা স্বাদের পায়েশ ভরা

ইটা পাথর পায়।

 

খাওয়া শেষে শশুর বাড়ির

নন্দ ঘরে  রয়

থাকা খাওয়ার বিনিময়ে

মুখের কথা নয়।

 

কইলে কথা ডান্ডাবেরি

নইলে পাবে গুম

নইলে পাবে  চিরতরে

শান্তি সুখের ঘুম।

 

এখন থেকে ভাসবে দেশ

উন্নয়নর জোয়ারে

সকল মানুষ থাকবে সুখে

জমিদারের খোয়ারে।

২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৮

কেমন করে সইবো

এসেছে ফাগুন লেগেছে আগুন মৌবনে

লাগেনি আগুন চেতনার কোষে, যৌবনে।

 

পলাশ শিমুল কৃষ্ণচুড়া হয়েছে

রক্তলাল

ছালাম রফিক বরকতের ভাই

ঘুমে রে বেহাল।

 

রক্ত দিলাম মায়ের ভাষায়

মনের কথা কইবো

তাতে এলে আজো বাঁধা

কেমন করে সইবো।

 

আমার দেহের রক্তের কিরে

নেই রে কিছু দাম

রক্ত না দিস আজকে না হয়

দে একটু ঘাম।

 

পরাণ খুলে মনের কথা

কইতে চাই

এই দাবীতে কোন কালে

আপোস নাই।

২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৬৯

আইন শিখতে মাইন লাগে

আইন কি আবার?

কম্ম কাবার।

আপনার কথাই আইন?

 

বলেন কি, তবেই আমি

করতে পারবো সাইন?

 

অমা, কন কি এসব

এটা কেমন আইন?

কথা শুনলে হয়না কারো

কখনো আর ফাইন?

 

পিচ্ছি ছেলে বলে ওঠে:

বাহবা মজার আইন

এমন আইন শিখতে লাগে

দুই হাতে দুই মাইন।

২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭০

গণতন্ত্র মানে রণতন্ত্র

আমার কথাই আইন

বাজে বকলে  ফাইন।

বোঝনি কথার মাইনে

দেশ চলে কার আইনে?

 

আইনের ধার ধারি না

সুযোগ পেলে ছাড়ি না।

জিততে হলে সাহস চাই

হাল চষে না মরা গাই?

 

পিচ্ছি ছেলে মুছকি হেসে কয়

কারে দেখান ঠুনকো আইনের ভয়।

 

আইনতো শিখায় মাইনে

একটি বুলেট ছুটে এলে

ঠেকাবে কোন আইনে?

 

জোর যার মুলুক তার

দেশ চলে এ আইনে

গণতন্ত্র মানে রণতন্ত্র

যদিও তা চাইনে।

২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭১

এখন নাকি আগের মত

এখন নাকি আগের মত

লেখা ভাল লাগে না

লেখাপড়ে আগের মত

রক্তে আগুন জাগে না।

 

হয়তো লেখা হয়না ভাল

হয়তো রক্তে পানি

হয়তো ভয়ে কওনা কথা

করো কানাকানি।

 

আসাদ নামবে মিছিল নিয়ে

মতিউরের বুক

মেলে দেবে  পাথরগুলোর

ঘুমিয় থাকা চোখ।

২৬শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭২

হিল্লি বিল্লি দিল্লি

হিল্লি বিল্লি দিল্লি

মাঘের শীতে তুই কেনরে

ইলিশ কাটা গিল্লি।

 

চুরির মাছ গিল্লি

করিস চিল্লাচিল্লি

চোরে চোরে মাসতুতু ভাই

তার সাথে ক্যান মিললি।

 

হিল্লি বিল্লি দিল্লি

গরুর চামড়া ছিল্লি

কেমনে সেসব গিললি।

 

হিল্লি বিল্লি দিল্লি

পান খা পাঁচ খিল্লি

খাইসনা গরুর তিললি

সইবে না তা পিললি।

২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৩

কয়টা টোপ গিললি

হিল্লি বিল্লি দিল্লি

পিল্লি ফিল্লি মিললি

পদ্মার ইলিশ মজা করে

কারে নিয়ে গিললি।

 

বিনিময়ে দাদার দেয়া

কয়টা টোপ গিললি।

কতটুকু মেলার কথা

কতটুকু মিললি।

২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৪

কবিতার চেয়ে

কবিতার চেয়ে ছড়া লেখা ভাল

অনেকে দেয় লাইক,শেয়ার

কেউবা আবার গালও।

 

কেউ রূপসী, সুন্দরী

কেউবা আবার কাল।

কেউবা আনে কুমীর

আবার কেউবা কেটে খালও।

 

দেশে এখন আগুন নাই

নিজ অন্তরে জ্বালো।

ফুটবে আবার পলাশ, শিমুল

কৃষ্ণচুড়ার লালও।

২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৫

করতে হবে আন্দোলন

করতে হবে আন্দোলন

এখন বসে কাইন্দা লন।

সামনে আছে ইলেকশন

কাছে পাবেন জনগণ।

 

ভোট হবে চুরি

যতই খাওয়ান মুড়ি।

ভোট খাবে ছাগে

চুরি থামান আগে।

 

কেন্দ্র থেকে রেজাল্ট হবে

ফুল ফুটবে সোনার টবে।

২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৬

আর যামু না চান্দে

আর যামু না চান্দে

জোয়ান ছেলে কান্দে

রশি দিয়ে বান্ধে

পড়ছে বিষম ফান্দে।

 

আসল কথায় কান দে

বাঁচতে হলে জান দে।

২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৭

দিনটা অনেক ভালো

দিনটা অনেক ভালো

ছড়ায় উদার আলো

রাতটা আরো ভালো

যদিও তা কালো।

 

আকাশ ভরা চান্দে

মেজবানি কে রান্ধে।

হাজার তারার মেলা

সেথায় করে খেলা।

 

বুড়ি বলে পান দে

বাঁদর বুড়ির কান্ধে।

বুড়িমা তুই আয়রে

বিপদ প্রতি পায় রে।

 

বিপদের তো নাইরে শেষ

ছেলে ক্যান হয় নিরুদ্দেশ।

২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৮

তোমার পিঠে ব্যথা

তোমার

পিঠে ব্যথা বুকে  ব্যথা

ব্যথা সর্ব অঙ্গে

সেই ব্যথাকে দাও ছড়িয়ে

সারা পূর্ববঙ্গে।

 

তোমার ব্যথায় কাঁদবে পাখি

সাগরের নীল জল

তোমার ব্যথায় কাঁদবে পথর

পাহাড়ি বরকল।

 

সব হৃদয়ে ব্যথার ভারে

করছে টলমল

সেই ব্যথাকে আসবে নিতে

হারানো বীরবল।

২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৭৯

সবাই বলে ঐক্য গড়ো

সবাই বলে ঐক্য গড়ো

ঐক্য সবাই চাই

কিন্তু বলো ঐক্য কিনতে

কোন বাজারে যাই।

 

তিরিশ টাকার  ঐক্য কিনে

বিলিয়ে দেবো মাঠে

সেই ঐক্য খাবে তুমি

বসে নরম খাটে।

 

হীরালালের কথা শুনে

বললাম হীরা শোন

স্বার্থ ছাড়া ঐক্য হয় না

ছোট বড় কোন।

 

জনগণের স্বার্থ কোথায়

আগে খোঁজ তাই

ভন্ডামীটা দাওরে ছেড়ে

ঐক্য পাবে ভাই।

১লা এপ্রিল ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮০

দরকার এখন ডান্ডা

বাড়ছে দেশে পান্ডা

দরকার এখন ডান্ডা

নইলে যাবে জানডা

থাকলো না আর মানডা।

 

পিস্তলসহ ছবি ছাপে

যাদের ভয়ে টেন্ডার কাঁপে

যার কোমরে খাপ

যে জন বাপের বাপ

বড় ভাই সে, বিগ

আমরা সবাই লীগ।

 

যে খায় দাদা র‌্যাবের ডলা

সেই কেবল হয় জঙ্গী পোলা।

 

বললাম হীরা থাম।

রাম, রাম, রাম

মিথ্যেমিথ্যি বলিস না আর

অপরের বদনাাম।।

১লা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮১

জনগণ তো খাবে না

জিততে হলে চিত্তে চাই

সাহস এবং বল

বিপক্ষদের মোকাবেলায়

কৌশল অবিরল।

 

বুঝতে হবে জনগণকে

বুঝতে হবে দেশ

কখন কোনটা করতে হবে

বলবে পরিবেশ।

 

থাকতে হবে ন্যায়ের পথে

অন্যায় করা যাবে না

প্রতারণার রাজনীতি আর

জনগণ তো খাবে না।

২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮২

ছাগল দিয়ে হয় না চাষ

নেতার দরকার চামচা, আর

চামচার দরকার নেতা

শীতের রাতে লেপ  না হলে

অন্তত: চাই খেতা।

 

দলের জন্য দরকার হলো

যোগ্যতম কর্মী

নিদেনপক্ষে দলের জন্য

নিষ্ঠ সহমর্মী।

 

ছাগল দিয়ে হয় না চাষ

অন্তত: চাই গরু

নইলে জমিন পতিত থাকে

নিরেট ঊষর মরু।

 

যোগ্য লোকের যোগ্য কাজ

যদি জোটে ভাগ্যে

সফলতার আশা তখন

করতে পারে, আজ্ঞে।

২৮শে ফেব্রুয়ারী  ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৩

সবার একটাই রুট

কেউবা ছড়ায় নোট

কিনতে নতুন ভোট।

কেউবা পাকায় ঘোট

কেউবা দেখায় চোট।

 

টাকা যার কম সে ফুলায় ঠোঁট

যার টাকা বেশী সে বাঁধে জোট।

 

কেউবা পরে পাঞ্জাবী

কেউবা দেখায় কোট

কেউবা আবার মনে মনে

অযথা পায় চোট।

 

আজরাইলে কয় ডেকে

সবার একটাই রুট

অনেক হইছে সবাই এবার

আপন গোরে ছোট।

২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৪

ভাল যদি থাকতে হয়

ধানের ক্ষেতে পোকা

আমি দাদু বোকা।

 

ক্ষেতে অষুধ দেইনি

পরের ক্ষেতে কাজ করেছি

বিনিময় তো নেইনি।

 

নামটা ছিল খোকা

লোকে ডাকতো বোকা

বোকার স্বর্গে ছিল বাস

তাই হয়েছে সর্বনাশ।

 

ভাল যদি থাকতে হয়

বুদ্ধি কিছু রাখতে হয়।

২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৫

আমি বাড়ির বুয়া

আমি বাড়ির বুয়া

বাড়ির পাশে কুয়া

স্বামী খেলে জুয়া

ঘরের নাইরে টুয়া।

 

খাঁটি মানুষ মইরা গেছে

সবাই এখন ভূয়া

কাঠের চুলায় রান্ধি তাই

চক্ষে লাগে ধূয়া।

 

রাতের বেলা শেয়াল ডাকে

হুক্কা হুয়া হুয়া

জমিদারের বাড়িত থাকি

আমি পুরাণ বুয়া।

 

বাজার থেকে ক্যান আনলি

আমার জন্য গুয়া

তোর মনে কি শয়তান ঢুকছে

ওরে পুংটা পুয়া?

২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৬

আয় ঘুম আয় রে

আয় ঘুম আয় রে

ময়ূরপঙ্খী নায় রে

আয় ঘুম আয় রে

ডাকে তোরে মায় রে।

 

আয় ঘুম আয় রে

ভীরু ভীরু পায় রে

নয়নে তুই চুম দে

সোনাকে তুই ঘুম দে।

 

আয় ঘুম আয় রে

ডাকে তোরে মায় রে।

বাত্তি দেবো মোম রে

শুতে দেবো ফোম রে।

 

ঘুম তুই চলে আয়

সোনা দেখ দুদু খায়

মিষ্টি মিষ্টি মধু খায়

ক্ষণে বন্ধ ক্ষণে চায়

 

আয় ঘুম আয় রে

শান্ত শীতল গায় রে

ওম দিয়ে যা- রে

দুধভাত খা রে।

১লা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৭

স্বাধীনতার চেতনা

হীরালালের মাথায় সেদিন

উঠলো কটক বাই

বলল, মামা, রাতেই চলো

মুজিব নগর যাই।

 

বললাম মামা, সত্যি বলো

এতো কিসের ত্বরা

: ওখান থেকেই ইতিহাস

করবো শুরু পড়া।

 

ভাল, ভাল রাতটা কাটুক

কালকে না হয় যাবে

ওখানে কি ইতিহাসের

আসল খবর পাবে?

 

কাল মহাকাল আম বাগানের

রৌদ্র ছায়ার মাঠ

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র হয়রে

পয়লা পাঠ।

 

স্বাধীনতার চেতনা যারা

বক্ষে ধরতে চাও

ঘোষণাপত্র মুখস্ত করে

সভামঞ্চে যাও।

 

আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্রে

বুড়ো আঙুল দেখালে

রাজাকারের খাতায় বাপু

নিজের নামটা লেখালে।

 

সেখানেতো ইসলাম বিদ্বেষ,

ছিল না সমাজতন্ত্র

কে শেখালো বাংলাদেশে

এমন আজব মন্ত্র।

 

যার জন্য রক্ত দিল

আমার বাপ ও ভাই

ইজ্জত দিল বোনরা

সেথা সমাজতন্ত্র নাই।

১লা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৮

মিয়া বিবির থাকলে মিল

সেলাম বাবু সেলাম

এবার তবে গেলাম।

 

যাবি? যা, কাদের কই

বাইরে খাঁড়া, দিচ্ছি দই।

 

আর কি নিবি? রসের পিঠা

খেজুরের গুড়, বড়ই মিঠা।

 

মা কে আনার নিস গাড়ি

জলদি ফিরিস, তাড়াতাড়ি।

 

জিয়ল মাছও সঙ্গে নিস

বিয়াইনকেও সালাম দিস।

 

আসতে বলিস জামাইকে

সে চাইলে থামায় কে।

 

ওদের বড়ো গর্ব বড়াই

ওসব কি আমরা ডরাই।

 

মিয়া বিবির থাকলে মিল

উড়ুক মেঘে হাজার চিল।

২রা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৮৯

গণঅধিকার কাড়তে নেই

ঢিল দিও না মৌচাকে

ছোট্ট প্রাণী মৌমাছি

বাঁচতে তোমায় দেবে না

যতোই পালাও চৌগাছি।

 

ওরা বড়ই দুঃসাহসী

বেপরোয়া এবং দুর্বার

ওদের চলার গতি থামায়

বলো এমন সাধ্য কার?

 

মৌচাকে দিলে অযথা ঢিল

আমজনতার আসবে কিল

ফুল বাগানে ফোটে ফুল

খাইলে বুঝবে মাছির হুল।

 

মৌচাকে ঢিল মারতে নেই

গণঅধিকার কাড়তে নেই।

৩রা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯০

কলুর বলদ ঘাণি টানে

কলুর বলদ ঘাণি টানে

 হয়রে তাতে তেল

বেলগাছিতে গেলে মাথায়

পড়তে পারে বেল।

 

কেউ খায় না ধরে ধরে

জ্যান্ত তাজা সাপ

তুমি কেন পাপ করেও

আশা করো মাফ।

 

কে কতটা মোনাফেক তা

নিজেই জানি না

মুসলমানের মিথ্যা দাবী

তাও তো ছাড়ি না।

 

খোদার হুকুম আধেক মানি

আধেক মানি না

মসজিদে যাই, নামাজ পড়ি

ঘুষও ছাড়ি না।

 

ভাবি, খোদা আন্ধা কানা

আমায় দেখে না

দুই কাঁধের দুই ফেরেশতা

হিসাব লেখে না।

 

হায়রে আমরা মুসলমান

এর চেয়ে যে নেই নাদান।

৩রা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯১

মরতে ভাল বাসে না

হীরালালকে পাগল বলো,

কথা বলে মন্দ না

তারে নাকি বুদ্ধি জোগায়

বনের পাখি চন্দনা।

 

বললো সেদিন হীরা

বলছি খোদার কিরা।

 

মরার জন্য আসে সবাই

বাঁচার জন্য আসে না

কিন্তু সবাই বাঁচতে চায়

মরতে ভাল বাসে না।

 

যতোই করো

আজরাইলের ভয়

আজরাইলতো

হাসে জগতময়।

৪রা মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯২

কারে আমি দুষি

কারে আমি দুষি

মানুষ মানেই মন্দ চিন্তা

অন্তরেতে পুষি।

 

উচিত ছিল মন্দটারে

জোরসে মারি ঘুষি

তার বদলে বদকামে পাই

বেজায় রকম খুশি।

 

কারে আমি দুষি

মন্দজনকে স্যার, বড় ভাই

নানান ভাবে তুষি।

 

কারে আমি দুষি

সবাই যখন এক তরিকার

লেবেনচুসই চুসি।

 

নইলে এসো মন্দ দেখে

সদলবলে ফুঁসি

হীরালালের ভাষ্যমতে

নইলে খাওগে ভূষি।

৫ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৩

পাপের ভয়ে কাঁপবে

পৃথিবীতো স্টেশন

থাকার জায়গা নয়

ধনী গরীব রাজা প্রজা

সবার যেতে হয়।

 

যতোই তুমি হও না ধনবান

বিত্ত বেসাত থাক না অফুরান

হতে পারো রাজা মহারাজা

রদ হবে না পাওনা তোমার সাজা।

 

তুমি যাবে নিজেও মাটির তল

নয়তো হবে তুমি আগুন ভাজা

লাভ হবে না থাকলে অঢেল বল

রাজা প্রজা সবাই হবে

সেদিন সমতল।

 

গযব ভয়ে কাঁপবে তনু মন

পাপের ভয়ে কাঁপবে সারাক্ষণ।

বলবে, তুমি বাঁচাও রহমান

দয়া করে বাঁচাও এ ঈমান।

৫ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৪

গদীর মায়া বড়ো মায়া

গদীর মায়া বড়ো মায়া

এই মায়া না থাকলে

গদীতে কি বসতে যেতাম

তিনশ লোকে ডাকলে।

 

কষ্টে আছে দেশের লোক

এতো কষ্ট সয় না

তাইতো আমি গদীত বসি

সে কথা কেউ কয় না।

 

দেশের লোকের দুঃখ ব্যথা

সইতে আমি পারি না

কতো কষ্ট গদীত বসা

তবু গদী ছাড়ি না।

 

আমার মত দেশ দরদী

ত্রিভুবনে পাবে না

উন্নয়নের কিসসা কথা

নূরজাহানও গাবে না।

 

হীরালাল কয় উন্নয়নের

জোয়ার এবার থামা না

এর চেয়ে যে ভাল ছিল

আইয়ুব খানের জামানা।

৬ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৫

বোনের নাম মমতা

বোনের নাম মমতা

ভায়ের নাম ক্ষমতা।

 

বোন বলে, বুকে আয়

আদরের ভাই রে

ভাই বলে, সোহাগের

সময় তো নাই রে।

 

আগে চাই ক্ষমতা

তারপর মমতা

তারপর সমতা

চাই রে।

মাঝপথে বাঁধা এলে

বড় ব্যথা পাই রে।

 

শোন বলি ক্ষমতার মন্ত্র

পদে পদে চাই ষড়যন্ত্র।

 

দেশ হয় কুপোকাত

শোষণ আর শাসনে

জনগণ কুপোকাত

তোষণ আর ভাষণে।

 

দেখবি জনগণ ঠান্ডা

আয় খাই ছাগলের আন্ডা।

৬ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৬

বাঁচতে হলে জান দে

কেউ যায় চান্দে

কেউ পড়ে ফান্দে

কেউ বসে কান্দে

কেউ বসে রান্ধে।

 

কাকা কয় রান দে

কাকি কয় পান দে

দাদা কয় নান দে

দাদী কয় গান দে।

 

আসল কথায় কান দে

জিহ্বাতে শান দে

বাঁচতে হলে জান দে

নইলে নিজের মান দে।

৮ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৭

আপনি কি না পারেন

আপনি কি না পারেন

মস্ত বড় বীর বাহাদুর

শাকও রানতে পারেন।

 

অনেক হইছে এবার ওসব

গালগপ্প ছাড়েন

আমি জানি, ইঁদুর নাকি

আপনি হাতী মারেন।

 

দেখতে পাচ্ছেন উঠোনে সাপ

পারলে ওটা মারেন

নইলে রাস্তা ছাড়েন।

 

ওরে বাপরে বাপ

সাপ মারা খুব টাফ

জলদি লাগা ঝাঁপ।

 

ঝাঁপ লাগিয়ে লাভ নেই

ছোবল ঠিকই খাবেন

হাতে নেন শক্ত লাঠি

হয়তো রেহাই পাবেন।

 

যতো করবেন পাপ

বাড়বে কেবল সাপ।

বাড়বে কেবল বিশ্বজুড়ে

অশান্তির উত্তাপ।

৭ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৮

শত্রুর শেষ রাখতে নাই

কে ভাই, হারুন

পথটা ছাড়ুন।

নইলে আপনি

নিজেই মারুন।

 

সাপ না মরলে

ছোবল খাবেন

বসে বসে

কিসব ভাবেন?

 

এতো ভেবে

কাম নাই

আসুন বসে

জাম খাই।

 

খাইতে খাইত বলে যাই

শত্রুর শেষ রাখতে নাই।

৮ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৯৯

সত্যবাবুর ছড়ড়া

সবার ঘরে

ছড়িয়ে দিলাম

সত্যবাবুর ছড়ড়া।

 

গরম গরম

চিতই পিঠা

সে রকমই কড়ড়া।

 

বলল সবাই

মন্দ সময়

সারা দেশে খররা।

 

ভুল খেললে

মাশুল নাকি

গুনতে হয় খুব কড়ড়া।

 

পোলাপানরা

ক্ষ্যাপছে নাকি

ছড়াকে কয় ছড়ড়া।

 

পোলাপান কয়

বুউড়া দাদু

এবার খাবে ধররা।

 

আকাম তো আর

কম করেনি

কখন যাবে মররা।

৯ই মার্চ ২০১৭

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১০০

অনু মরে তনু মরে

অনু মরে তনু মরে

চেতনায় খিল

কোথা গেল শাহবাগী

বেহিসাবী দীল।

 

মানুষ মরলে করে ওরা

উল্লাস এবং নৃত্য

মানবতা আজকে যেন

হায় অসুরের ভৃত্য।

 

চাই নাতো আর কারো

অহেতুক খুন

মানুষের মাঝে চাই

দয়া মায়ার গুণ।

১০ই মার্চ ২০১৭

No comments

Powered by Blogger.