আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ১৯০১-২০০০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০১

চোখ ছিল টানা টানা

হাসি ভরা মুখ

মনে ছিল ভালবাসা

বুক ভরা সুখ

 

একদিন এই দেশে

ছিল হাসি খুশী

সেই সুখ খেয়ে ফেলে

চুষে রাক্ষুসী

 

আজ দেশে সুখ কই

দেখি বোবা কান্না

মানুষের জান যেনো

আজ কোন জান না

১৭//২০১৯; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০২

বীরের মত চলতে হয়

সত্য কথা বলতে হয়

আগুন হয়ে জ্বলতে হয়

বরফ হয়ে গলতে হয়

 

পরাণ খুলে হাসতে হয়

পরকে ভালোবাসতে হয়

জমিটারে চাষতে হয়

মন্দটারে নাশতে হয়

 

লেখাপড়া করতে হয়

এ জীবনটা গড়তে হয়

ন্যায়ের পথে লড়তে হয়

জীবন মানে মরতে হয়

১৭//২০১৯; বিকাল ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৩

পরাণ শেখের নাতি

রাত্তির বেলা ঘুরে বেড়ায় মাথায় দিয়ে ছাতি

সুঁইয়ের ফুটোয় ঢুকিয়ে রাখে মস্তবড় হাতি

আরো জানে নানান তেলেসমাতি

 

পরাণ শেখের নাতি

পথের মোড়ে জ্বালিয়ে রাখে তিনটে আগরবাতি

শ্মশানঘাটে বসে কাটায় অমাবস্যা রাতি

একটা ছাগল লাগে যে তার ভোরে নাস্তা খাতি

 

পরাণ শেখের নাতি

বলে, জানিস আমরা ছিলাম মস্ত বীরের জাতি

বিশ্বাস না হয় তাকিয়ে দেখ আমার বুকের ছাতি

সাহস আছে? আমার সাথে করবি হাতাহাতি?

 

পরাণ শেখের নাতি

ডরায় না সে বাঘ সিংহ কিংবা পাগলা হাতি

দৈত্য দানোর সাথে খেলে, করে মাতামাতি

পিঁপড়ে দেখলে পালায় শুধু ফেলে অস্ত্রপাতি

 

তারতো শুধু ভয়

মিছিল করলে আবার যদি গুলিটুলি হয়!

১৭//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৪

জলি

আজ কথাটা বলি

বলতে পারিস কেমন করে

ফোটে ফুলের কলি?

কোথায় আছে নীল সাগরের

মস্তবড় তলি?

 

জলি

বলতে পারিস বরফগুলো

যায় কেন রে গলি?

মনের কালি দূর করা যায়

বলতো কভু ডলি?

 

জলি

কেমন করে বন্যা আনে

আবার নতুন পলি?

তুই না জানলে জানে কিনা

তোর সে সখি মলি?

এসব কিছু জেনে রাখিস

আমি তবে চলি

১৭//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৫

সেই ছেলেটা গরীব ছিল

লেখাপড়া করে নাই

সেই ছেলেটা এতীম ছিল

পিতামাতা ঘরে নাই

 

সেই ছেলেটা বখে গেলহয়ে গেল গুন্ডা

এমপি সাবে কিনে দিল তারে নয়া হুন্ডা

 

সেই ছেলেটার হাতে এখন

অঢেল রকম টাকা

মানি লোককে ডেকে বলে

চান্দা ছাড়েন কাকা

 

সেই ছেলেটা বীর বাহাদুর, শোনেন কথা সাচ্চা

পথে ঘুরে বেকার যুবক, ভদ্রলোকের বাচ্চা

১৭//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৬

ম্যান

খুবতো করেন ফটর ফটর, মিথ্য ভাষণ দেন

বলুন দেখি সারাটা দেশ অরাজক আজ ক্যান?

আদালতের বিচারকে পালিয়ে বাঁচায় জান

নিরাপত্তা নাই মানুষের, আর কি বলুন চান?

 

ম্যান

যুবক মানূষ গুম হয়ে যায় স্বাধীন দেশে ক্যান?

কোথায় যাবে গরীব দেশের রিকসা গাড়ি ভ্যান?

উন্নয়নের বুলি তবে অযথা ক্যান দেন?

 

ম্যান

মাতা ভগ্নি ধর্ষিতা আজ হচ্ছে দেশে ক্যান?

কোথায় গেল বিচার আচার বলুন দেখি ম্যান?

কন্যা শিশু বন্যার মত আজকে ভেসে যায়

এমন শাসন বলুন দেশে আজও কি কেউ চায়?

 

ম্যান

রাখেন আপনার ফটর ফটর, কথার জবাব দেন

১৭//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৭

আম্বর আলী খান

সারাদিন বালি খান

নেতা শুধু গালি খান

মাঝে মাঝে তালি খান

 

আম্বর আলী খান

তরমুজ ফালি খান

কাছে পেলে শালী খান

বাগানের মালি খান

 

আম্বর আলী খান

সারাদিন খালি খান

ডিম তিন হালি খান

আম্বর আলী খান

১৮//২০১৯; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৮

ডাবের গাছে ডাব ছিল

গাবের গাছে গাব ছিল

খোকা বসে ভাবছিল

কী ভাবছে সে বল?

চোখের সামনে দেশটা আহা

যাচ্ছে রসাতল

 

যা করার তা করি না

ভার্সিটিতে পড়ি না

লড়ার কথা লড়ি না

পরের কুৎসা সবাই মিলে

গাচ্ছি অনর্গল

এই সুযোগে দেশটা কেমন

যাচ্ছে রসাতল

 

ভাবছে বসে খোকা

মানুষ কি সব বোকা?

নেতার মাথায় পোকা

কোথায় সবার বুদ্ধি এবং বল?

দেশটা শুধু যাচ্ছে রসাতল

১৮//২০১৯; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০৯

চলার পথে বিঘ্ন বাঁধা, চলার পথে ঝড়

আয় সে সবকে তুচ্ছ করে বাঁধি নতুন ঘর

জীবন মানে পদে পদে বিপদের হাতছানি

তাবলে কি ফুটবে না ফুল, সাজবে না ফুলদানী?

 

জীবন মানে ধরায় আবার ফুটবে নতুন ফুল

শুধরে নিতে হবে তোমার নিজের পুরাণ ভুল

রাতে আসবে জোসনাধারা, দিনে নতুন ভোর

সময়মত আবার শুধু জাগতে হবে তোর

 

দুখের ভেতর সুখের নদী সময় হলে বইবে

সুখতো পাবে তারা যারা দুঃখটাকে সইবে

১৯//২০১৯; রাত : ০০: ২০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১০

টিপটিপ যদি ঝরে সারাদিন বৃষ্টি

ভাল লাগে খুনসুটি, খিচুড়ির কৃষ্টি

খাটে বসে একসাথে এলেবেলে গল্প

টুকটাক হাসাহাসি, চানাচুর অল্প

 

ভাল লাগে টিপটিপ আদরের বৃষ্টি

হুট করে চলে আসা খাসা কোন ইষ্টি

ভাল লাগে শিশুদের হাসি আর কান্না

হাসি নয়, যেন ঝরে হীরা চুনি পান্না

 

ভাল লাগে প্রিয়জন, স্নেহমাখা দৃষ্টি

সবকিছু লাগে আহা মনোরম মিষ্টি

ভাল লাগে মোহময় মায়াভরা বৃষ্টি

ভাল লাগে আল্লাহর নয়া রূপ সৃষ্টি

১৯//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১১

তুমি আমার বন্ধু সুজন ভালোবাসি তাই

ভালোবাসা ছাড়া আমার সঙ্গে কিছু নাই

ভোর বিহানে তোমায় দিলাম ভালবাসা ফুল

ভুলে যেয়ো অতীত দিনের দুঃখ ব্যথা ভুল

 

আমি তোমায় ভালোবাসি, আমায় বাসো তুমি

যেমন আমরা ভালোবাসি আপন জন্মভূমি

যে হৃদয়টা মরুভূমি, শূন্য খা খা মন

তার মত নয় অভাগা আর অন্য কোন জন

 

প্রেম পিরীতি ভালোবাসায় হও না মহীয়ান

ভালোবাসা স্বপ্ন আশা খোদার সেরা দান

১৯//২০১৯; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১২

মেঘের সাথে ঘুরে বেড়ায় মেঘপরীদের দল

তারা যখন কাঁদে তখন নামে অঝোর ঢল

 

রাগে যখন দন্ত পিষে বিজলি চমক হয়

সেই পিষাণীর শব্দ শুনে প্রাণে লাগে ভয়

 

মেঘপরীরা কাঁদে কেন জানিস নাকি ভাই?

এ পৃথিবীর মানুষ এতো দুষ্ট কেনো তাই

 

শক্তি থাকলে মানুষ কেনো দুর্বলেরে কান্দায়

অথচ সব একই মানুষ একই খোদার বান্দাই

 

মানুষ কেন হয়রে পশু পরের বাড়ায় কষ্ট

মানুষগুলো মানুষ কই, সবই দেখে নষ্ট

 

এই দেখাটাই দেয় বাড়িয়ে মেঘপরীদের কান্না

মানুষ এতো দুষ্ট হোক, মেঘপরীরা চান না

২০//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৩

এই যে আমি রাগ করি

হৃদয়টাকে চাক করি

সুখ দুঃখ ভাগ করি

মিলেমিশে পাক করি

তুই কি তাতে খুশী?

তয় দিলি যে ঘুষি?

 

ঘুষি তো না আদর

ঘুষি দিয়েই ঠিক রাখিস

ঘরের পোষা বাঁদর?

তোর জন্য মেলে দিলাম

ভালবাসার চাদর

 

এক চাদরে দু জনে

দিন কাটাবো কূজনে

দেখি হাসি মুখে

দিন কাটাবো সুখে

২১//২০১৯; সকাল ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৪

আমরা 'জন বসেছিলাম

দোকানে

কেউ বললো, কী নেয়া যায়,

খোকা নে

খোকা বলল, সবাই খাবো,

কোকা নে

ফরিদ বললো, চা

মিলেমিশে খা

 

চা- নিলাম আমরা অবশেষে

বললাম, বলতো হচ্ছেটা কি দেশে?

কথায় কথায় গুম খুন, কথায় কথায় ধর্ষণ

সারাদেশে হচ্ছে দেখি শুধু গযব বর্ষণ

 

হবে না?

পাপ করেছিস মাফ নাই

আগুনের কি তাপ নাই?

বিচার শেষে আইন করিস

এ কোন পাপের পথ ধরিস?

 

রাজ ক্ষমতায় দিলি ফাঁসি

দেখলো সারা জগতবাসী

পাপ করে ভাই রাজা

পাবলিকে পায় সাজা

 

রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট

প্রজা কষ্ট পায়

হাজার রকম গযব এসে

প্রজা ধরে খায়

 

যে করেনি খুন ধর্ষণ

তারে দিলি ফাঁসি

দেশের জন্য আনলি ডেকে

গযব রাশি রাশি

 

মিথ্যা দিয়ে সত্য কভু ঢেকে রাখা যায় না

বিশ্বাস না হয় মেলে দেখ ইতিহাসের আয়না

২১//২০১৯; দুপুর ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৫

গরম ভাতে বিলাই বেজার

উচিত কথায় তুই

আমার যত উচিত কথা

কোথায় তবে থুই?

 

একের পরে তিন হয় না

একের পরে দুই

যতোই বলো আকাশ হয় না

সাগর নদী ভূই

 

রাতবিরাতে নীল আকাশে

সূর্য কভু হাসে না

খারাপ লোককে ভয় পায় মানুষ

কিন্তু ভালো বাসে না

 

পানির নিচে আকাশ দেখে

আকাশ নিচে থাকে না

সত্যটারে মিথ্যা বলে

তাতে সত্য ঢাকে না

২১//২০১৯; সন্ধ্যা ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৬

যারে বানাই রাজা

সে হয় মোটা তাজা

যারে বানাই নেতা

সে যে বড় চেতা

 

রাজা খায় ব্যাঙ ভাজা

আমি খাই ডাল

খাই আর বসে বসে

পাড়ি শুধু গাল

 

কোন কালে প্রজাদের

ভাগ্যটা ফেরে না

ময়ূরপঙ্খী নাও এসে

তার ঘাটে ভেড়ে না

 

প্রজা পায় চিরকাল

জুলুম আর কান্না

এই কথা বলে গেছে

হাসান আল বান্না

২১//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৭

যারে করি রাজা

সে ধরে দেয় সাজা

যারা ছিল নাদুস নুদুস

ছিল তাজা তাজা

তাদের জীবন গরম তেলে

করে ভাজা ভাজা

 

একবার হলে রাজা

পাবলিক যেন ফোঁস না করে

বিলায় অঢেল গাঁজা

গাঁজার গুণে নাই হয়ে যায়

হারাধনের মাজা

কেউবা যদি ফোঁস করে

তারে বলে যা যা

 

এমন আমার রাজা

মানুষ মেরে হাসতে পারে

যদিও নয় বাঁজা

২১//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৮

কোথায় নজরুল রবি

আমিও একটা কবি

আমার একটা কতা

গাছের চিকন লতা

 

ফুটা কলসির পানি

তারও একটা বানী

কেবা মুনীব কেবা দাস

আজ যে মানুষ কাল সে লাশ

 

কোথায় আগরতলা

কোথায় সাগরকলা

চাই না এমন আজব মিল

তোরে দিলাম আমার দীল

 

দীলটা রাখিস মনে

ও সুন্দরী কনে

২২//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯১৯

আমরা সবাই কথার রাজা

কথা কইতে জানি

কথায় মারি রাজা উজির

সাহেব বিবি নানী

 

আকাশ মানে আর কিছু নয়

সব সাগরের জল

ভালোবাসি প্রতারক আর

ভালোবাসি খল

 

কালো ছেলের নামটা রাখি

লাল বাহাদুর খাঁ

কথায় মারি কিল কুনি আর

কথায় মারি ঘা

 

আমরা কথায় কম কিসে ভাই

আমরা কথার দূত

কথায় মারি বাঘ সিংহ

হাজার পেত্নির পুত

 

বাড়ি আমার জার্মানি না

তবু কথায় হার মানি না

২২//২০১৯; সকাল ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২০

এমন দেশে থাকি

ভাল কথা বললে তারে যত্নে ঢেকে রাখি

মন্দ যতো বুকের ভেতর সযতনে আঁকি

দুষ্ট লোককে বন্ধু ভাবি, তারে কাছে ডাকি

তাদের বানাই নেতা মন্ত্রী, তারাই এখন লাকি

 

এমন দেশে থাকি

ভাল যতো কর্ম আছে, বন্ধ করে রাখি

মন্দ করি নিজে এবং আপন কাকা কাকী

সবাই কাজে দিচ্ছে আহা, বেজায় রকম ফাঁকি

এখন তারাও মন্দ করে, যারা ছিল বাকি

 

থাকি এমন দেশে

এমন এমন কর্ম করি, সবই সর্বনেশে

বুক ফুলিয়ে মারতে পারি মানুষ হেসে হেসে

জিততে পারি মন্দ কাজে আমরা সকল রেসে

আমরা এখন ভালই থাকি, ভালরা যায় ফেঁসে

২২//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২১

কই না কথা ডরে

মাঝ রাইতে বন্ধু আসেকেন আমার ঘরে?

কইলে কথা আমার লাশ পাবি বিজন চরে

কই না কথা ডরে

 

আমার মাইয়া কলেজে যায়কারা মারে শিস

মাইয়া আমার কাইন্দা কয়দাও না বাবা বিষ

পোলা কাইন্দা কয়

কওতো বাবা এই বয়সে এসব গায়ে সয়?

তবু সইতে হয়

 

কই না কথা ডরে

ছোট পোলা আমার কেন মাদ্রাসাতে পড়ে?

এই কৈফিয়ত কত দিমু আর?

কী আজব কারবার!

আমার পোলা কই পড়বেবলবে কি তা পরে?

 

কত আমার ডর!

বেশী কথা কইলে নাকি জ্বালিয়ে দেবে ঘর

আমায় বলে বুইড়া শালাতুই এবারে মর!

আমার কত ডর

মুখ দেখে আর যায় না চেনাকে আপন কে পর

২৩//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২২

তারিং মারিং লঙ্কা ফড়িং

সবার স্বপ্ন টঙ্কা ধরিং

টঙ্কা পেলে বাড়ি করিং

বাড়ি হলে গাড়ি করিং।

তারিং মারিং লঙ্কা ফড়িং

তারপর একটা নারী ধরিং

সুখের একটা সংসার করিং

ইঁদুর বিড়াল্ খেলা করিং।

তারিং মারিং তারিং মারিং

সুখ বেশীদিন থাকবে নারিং।

একদিন দেখবি ফুড়ুত মরিং

যাওয়ার টিকেট লাগবে নারিং।

২৩/৭/১৯। দুপুর ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৩

আবার ভালো বাসতে হবে

আমার কাছে আসতে হবে

পরাণ খুলে হাসতে হবে

তবেই তোর দুঃখ হবে নাশ

মুখটা তুলে একটুখানি হাস

 

দুখ না এলে সুখটা কি

তারে চেনা যায় না

দুঃখ হলো সুখটা চেনার

সেই পুরাতন আয়না

 

সন্তান ভাল বাসে মায়

কারণ জন্মে ব্যথা পায়

একদিনের সে কষ্ট কি রে

সারা জনম ভুলা যায়?

 

যত ব্যথা তত সুখ

ভাবিস কেন তুই

দুখ না পেলে কেমন করে

সুখটা যাবি ছুঁই?

 

সুখকে যদি ভালবাসিস

দুঃখকে বাস ভালো

তবেই যাবে আঁধার রাত

ফুটবে ভোরের আলো

 

দে হাতে তোর হাত

কাটুক আঁধার রাত

২৩//২০১৯; বিকাল ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৪

ইমাম বসে কিমাম খায়

হুজুর বসে জর্দা

এরই ফাঁকে যায় পালিয়ে

লজ্জা শরম পর্দা

 

তোমরা শুধু যাও হেসে

খোদার বিধান যায় ভেসে

এরই ফাঁকে পরনারীকে

চেপে ধরে বড়দা

 

অশ্লীলতার বন্যা বয়

কারে মাতা কন্যা কয়

সব ভুলে যায় পশু

এই পশুরা আর কেউ নয়

আমীর সুশীল নসু

 

তাই দেশে হয় ধর্ষণ

খোদার গযব বর্ষণ

গালি দিয়ে লাভ কি

কলাগাছে হয় কি কভু

নারকেল আর ডাব কি?

 

আগে মানো খোদার আইন

নইলে দাও ইজ্জত ফাইন

২৩//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৫

পিয়াল বনে শিয়াল নাচে বেতস বনে বাঘ

আমি কিছু বললেই তুইদেখাস শুধু রাগ

 

হায়

এতো রাগ তুই পাস কই

কথা কস নাযাস কই

মনে আছেকাল দিছিলি মাথায় ঢেলে জাগ?

 

থাক,

বলবো না আর কিছু

ঘুরবো পিছু পিছু

জানি না তুই করলি কিদীলে দিলি দাগ

 

হায়

দাগ তো নাদাগা

বলিস কাছে আগা

তুই কি জানিস আমার বুকেজ্বলে কত আগ?

 

বলি

ফুল তো ফোটে বনে

প্রেম তো ফোটে মনে

ভালবাসার দোহাই লাগেকরিস না আর রাগ

২৪//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৬

কাকার বাড়ি টাকার পাহাড়

বলে গেছে শামসুন নাহার

বাহার তাহার ভাই

তবু মনে দুঃখ তাহার

আরো টাকা চাই।

সবাই বলে সোনা কাকা

করে কেবল টাকা টাকা

নইলে হৃদয় লাগে ফাঁকা

দুখের সীমা নাই

যতো টাকা দেখুক বলে

আরো টাকা চাই।

সুখ তো কেনা যায় না টাকায়

শান্তি পাওয়া যায় না ঢাকায়

কে যে এসব বুঝায় কাকায়

বুঝান বড় দায়

যে বুঝেছে এই কথাটা

সেই তো শান্তি পায়।

২৪/৭/১৯। দুপুর ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৭

দাদা নিজে আদা খায়

খাইতে খাইতে নাইতে যায়

পুকুর ঘাটে হাঁসের ছাও

 মিয়ারা দেইখা যাও

 

ধানের ক্ষেতে মাজরা পোকা

দেশের মানুষ সব কি বোকা

শুধু ধোঁকা খায়

আদা হাতে তাইতো দাদা

পুকুর ঘাটে যায়

 

পুকুর ঘাটে যেয়ো না

ধোঁকা দাদা খেয়ো না

ধোঁকা খেয়ে পরাণ ভরা

সত্যি বিষম দায়

বোকা যারা সারা জীবন

ধোঁকা তারা খায়

২৪//২০১৯; দুপুর ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৮

ছড়া আসে গড়িয়ে

দুই হাত পা ছড়িয়ে

লিকলিকে  লড়িয়ে

ন্যায়ের মশাল ধরিয়ে

 

ছড়া উড়াই বাতাসে

যেন গাছের পাতা সে

বাবুর নয়া খাতা সে

দাদী নানী মাতা সে

 

ছড়া পারে গড়তে

ছড়া পারে লড়তে

ছড়া পারে পড়তে

মন্দ ভালো ধরতে

 

ছড়া খেতে মজা ভাই

আয় না সবে ছড়া খাই

২৪//২০১৯; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯২৯

আয় মেঘ উড়ে আয়

জল মাটি ফুঁড়ে আয়

বাঁধা পেলে ঘুরে আয়

সব ভেঙেচুরে আয়

সবুজ  বাংলায়

গরীবের জাংলায়

 

যারে পাবি মন্দ

তারে কর অন্ধ

তার তরে রুষ্ট

যেই লোক দুষ্ট

যেই করে গর্ব

তারে কর খর্ব

 

চড় তার বক্ষে

দুঃখীদের পক্ষে

দেখবি যত অন্যায়

যাক না ভেসে বন্যায়

জালিমের বিষদাঁত

গেড়ে ফেল বিশ হাত

 

আয় মেঘ উড়ে আয়

সব ভেঙেচুরে আয়

২৫//২০১৯; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩০

সুনামগঞ্জের চৌধুরীজমির শেখের নাতি

তারও ছিল একটা বুড়ো আদ্দিকালের হাতি

আজব রকম খেয়ালে সে করতো মাতামাতি

জোসনা রাতে ঘুরতো শুধু মাথায় দিয়ে ছাতি

 

তার খেয়ালের পাড় নাই

বলতো আমার ঘাড় নাই

আজব রকম খেয়ালে

ঠুকতো মাথা দেয়ালে

 

একদিন তারে দেখা গেল রাত দুপুরে বাজারে

বললো আজব খেয়ালে এসেছিলাম মাজারে

পেয়ে গেলাম ইলিশ একটাসত্যি খুব তাজা রে

এখনো দেখ লাফায় কেমননিজে নিজে পা ঝাড়ে

 

জমির শেখের নাতি

সারা বাজার ঘুরে বেড়ায় কিনতে আনাজপাতি

পায় না কোন তরকারী সে খুঁজে আতিপাতি

২৫//২০১৯; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩১

একটা মানুষ কেনা গেলে

একটা জাতি কেনা যায়

কাশ্মিরীদের লড়াই দেখে

শেখ আবদুল্লাহ চেনা যায়

 

এই চেনাটা আগে যদি চিনতো

তবে কি আর অধীনতার

শিকল গলায় পিনতো?

 

যুগ যুগ ধরে করছে লড়াই

কোথায় গেলো জাতের বড়াই

গায়ে যখন উঠছে পিঁপড়া

তখন যদি মারতো

তবে কিরে সহজে কেউ

গোলাম করতে পারতো?

 

কারে আমি এসব কই

কেউ কি খুলে পড়ে বই?

২৫//২০১৯; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩২

সোনার একটা দেশ ছিল

সহায় সম্পদ গ্যাস ছিল

মিল মহব্বত বেশ ছিল

সুখ শান্তির রেশ ছিল

কোথায় প্রাণের মিল

সে সব কি আজ হারিয়ে গেল

সবই হাতিরঝিল?

 

প্রাণের ভেতর প্রাণ ছিল

মনের ভেতর মন ছিল

সবাই আপন জন ছিল

ভালবাসায় মন ছিল

দীলের ভেতর দীল

সে সব কি আজ হারিয়ে গেল

সবই চলন বিল?

 

দিনের পরে রাত ছিল

জাতের সাথে জাত ছিল

সবার জন্য পাত ছিল

ঘরে খাবার ভাত ছিল

সব কি নিল চিল

আজকে কেনো একে অন্যে

মারছে শুধু ঢিল?

 

নিষ্ঠুরতায় বলুন দেখি

কার চেয়ে কে কম?

মানুষ কি কেউ মানুষ আছে

নাকি নরাধম?

২৫//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৩

খোকা বাবু বোকা নয় ধোঁকা সে তো খায় না

কোকাকোলা খেতে তবু ধরে খোকা বায়না

বলি, ওসব খেতে নেই, ক্যামিকেলে ভরা

তার চেয়ে খা ডাবের পানি, খোদার হাতে গড়া

 

সেদিন থেকে ডাবের পানি খোকা বাবু খায়

যদিওবা মাঝে মধ্যে কোকও খেতে চায়

কিন্তু বাবু জেদ ধরে না, বেত ধরে না স্যারে

খোকা না কি প্রতিদিনই নিজের পড়া পারে

 

এসব শুনতে বাপ হিসাবে খুবই ভালো লাগে

মনের ভেতর স্বপ্ন আশা নতুন করে জাগে

আমি যেটা পারিনি বাপ, সেটা করিস তুই

তোর ভেতরে বাপ হিসাবে নিজের স্বপ্ন থুই

২৫//২০১৯; রাত ১১:৪০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৪

কালবৈশাখী ঝড়

দেশের পক্ষে লড়

দেশকে যারা তছনছ করে তাদের চেপে ধর

 

দুঃশাসনের গদী

করে দে তুই নদী

সেই নদীতে সাঁতার কাটুক জালিম নিরবধি

 

যে জন জালুমবাজ

ছিনিয়ে নে তার তাজ

প্রজার ওপর জুলুম করাই জালিম রাজার কাজ

 

শয়তানের যে চেলা

ছাড়বি তারে কেলা

তারে ধরে টান মেরে তুই আস্ত ছিঁড়ে ফেলা

 

কালবৈশাখী ঝড়

আয়রে ভয়ংকর

দে গুড়িয়ে আস্তানা আর পাপের সকল ঘর

২৬//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৫

গুজব যে ভাই এতো মজা

আগে যদি জানতাম

তিরিশ টাকার গুজব তবে

বাজার থেকে আনতাম

 

খেতাম গুজব টমেটো সস মিশিয়ে

লাল মরিচের গুড়ো নিতাম পিষিয়ে

গুজব যদি না পেতাম ভাই

হাত পা মেলে কানতাম

 

বন্ধু এবং আত্মীয়রা মজা করে খাইতো

হাতেরটুকু ফুরিয়ে গেলে নতুন করে চাইতো

গুজব আমি মজা করে

শুটকি দিয়ে রানতাম

 

মজার গুজব ফেরি করে পথে পথে বিলাতো

পাড়াপড়শি ধরে ধরে তাদের গুজব খিলাতো

রসগোল্লার চেয়ে অনেক

মজা গুজব মানতাম

 

গুজব একটা দারুণ অস্ত্র হীরার চেয়ে ধার

গুজব শুনলে শিউরে ওঠে পশমগুলো গা'

দুশমন ঘায়েল করার জন্য

গুজব বুকে হানতাম

 

সত্য যদি থাকে ভাইরে পুকুর জলে ডুবানো

গুজব তখন লেপের তলে কেমনে থাকে ঘুমানো?

তাইতো গুজব পাইকারী দর

চকের থেকে আনতাম

২৬//২০১৯; বিকাল ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৬

আঁধার রাতে দড়ি ভেবে

ধরি যদি সাপকে

সাপে তখন জিগায় না বে,

আসলে তোর বাপ কে?

 

আসল দিয়ে সাপের কোন কাজ নাই

সাপের বিষে মরলে কোন লাজ নাই

অন্ধকার কি ঢেকেছে তোর

পুরাণ কালের পাপ কে?

 

আঁধার কবে ঢেকেছে কার পাপ?

ছেঁড়া কাঁথায় যায় না ঢাকা

আগুনের উত্তাপ

 

সত্য যদি রাখো পুকুর তলে

গুজব তখন নিজেই ওঠে জ্বলে

গুজব মানে আর কিছু না

সত্য ঢাকার পাপ

২৬//২০১৯; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৭

আলো যদি না থাকে ভাই

আঁধার তারে কয়

আঁধার নিজে আসলেতো

কোন কিছু নয়

 

আঁধার মানে আলো নাই

ভীতু মানে সাহস নাই

 

সত্য যেথা নাই সেখানে

গুজব পয়দা হয়

সত্যটা নাই তার মানেতো

গুজব বসে রয়

 

সূর্য আছে তার মানেতো

রাতের আঁধার নাই

সত্যটা দাও বলতে তবে

দেখবে গুজব নাই

 

গুজবে কেউ কান দিও না

আর হবে না বলিতে

ঢুকবে নাতো গুজব তখন

রাজপথে ও গলিতে

২৬//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৮

আহা আহা প্রিয়া সাহা কী টোপ তুই গিল্লি

কাঁটা খাবে আসলে কে, কুকুর নাকি বিল্লী?

 

কার সাথে তুই মিল্লি?

আমরিকা না দিল্লী?

কেমন করে নিজের দেশের চামড়াটা তুই ছিল্লি?

 

আহা আহা প্রিয়া সাহা, করলি কী? আহারে!

নিজের দেশের সম্মানটা, বেঁচে দিলি? বাহারে!

 

ডাকলি আহা কাহারে

বল না প্রিয়া সাহা রে

বলবি না তুই, তবে কেমনে রিসিভ করবো তাহারে?

 

একের সাথে অন্যের মিল

সেই মিলে তুই দিলি ঢিল

আপন ঘরে আগুন দিলি, ফাঁসালি তুই কাহারে?

নাগর নাকি ভাতার আসবে? বল না প্রিয়া সাহারে!

২৭//২০১৯; রাত ২:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৯

আহা,

কারে কি যে বলি!

কেমন করে চলি

তুইতো খুব আপন ছিলি

কেমনে দূরে গেলি

আমায়  একা ফেলি

 

আমারতো খুব কষ্ট হয়

তোর কি কষ্ট হয় না?

কারে পরাই আমার হাতে

বানানো সব গয়না?

 

ঘরের মালা রাখি ঘরে

অতিথি কেউ এলে পরে

জানি না মন কেমন করে

তোর কি কিছু হয় না?

আমার সোনা ময়না

 

আমার মালা বাসতি ভালো

বাহবা দিতি খুশীতে

আজ কেন তুই কস না কিছু

মন কিরে চায় দুষিতে?

 

দুষতে চাইলে দোষ না

কে কয় আমি খোশ না

যা ইচ্ছা তুই বল না

প্রেমিক আমি খল না

২৭//২০১৯; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪০

ভুল করো না ভুল

খুঁজে দেখো কোথায় আছে

ভুলের আসল মূল

 

উপড়ে ফেলো তারে।

যতবার এই ভুলটা আসে

তাড়াও বারে বারে

 

ভুলটারে নাও চিনে।

ভুলের থেকে দূরে থাকো

রাত্র এবং দিনে

 

ভুল করে যে তাকে--

ভুলের থেকে টেনে তোল

শক্তি যদি থাকে

 

কেউ করো না রাগ

কার ভাগে নেই ছোট বড়ো

হাজার ভুলের ভাগ

 

তারেই বাসো ভালো।

ভুল করে যে অনুতাপের

আবার জ্বালে আলো

 

ভুল কে করে নাই?

ভুল করেনি এমন মানুষ

এ জগতে নাই

 

মানুষ ভালো বাসা।

তার মানে, ভুল যে করে

তারেই দেয়া আশা

 

যে করেছে ভুল।

এসো তারে ভালোবাসি

তার হাতে দেই ফুল

২৭//২০১৯; রাত সাড়ে ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪১

শহর

শহর আলী শহর না

ডোবা নালা নহর না

গজ কাপড়ের বহর না

কারে শহর কই?

ইট পাথরের খাঁচা হলে

তারে শহর কই

 

নাইরে সবুজ বনবনানী

আছে রিক্সার ঝনঝনানী

টেক্সি গাড়ির পনপনানী

অবাক চেয়ে রই

ভাতের চেয়ে মজা নাকি

মরণচাঁদের দই

 

শহরে তো মানুষ নাই

মানুষ নামে যন্ত্র পাই

পয়সা দিয়ে পানি খাই

তাইতো অবাক হই

আমরা কেন ইটের খোপে

বন্দী হয়ে রই?

২৮//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪২

এই ছড়াটি পড়েনি তো

দান্তে এবং হোমার

এই ছড়াটি তোমার

 

এই ছড়াটি ভাঙেনি তো

আঘাত খেয়ে বোমার

এই ছড়াটি তোমার

 

এই ছড়াটি চেয়েছিল

ছোট্ট শিশু উমার

দেইনি তাকে কারণ এটি

সত্যি সত্যি তোমার

 

এই ছড়াটি খুব পছন্দ

মিলি এবং সোমার

তাও এটি দেইনি তাদের

কারণ এটি তোমার

 

এই ছড়াটি নাও।

ঘরে গিয়ে বসে বসে

চুষে চুষে খাও

 

লাগলে মজা কও।

এই যে ছড়া আরো আছে

যত খুশী লও

২৮//২০১৯; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৩

এই ছড়াটা লড়াই করে

সাচ্চা বীরের মত

এই ছড়াটা লড়াই করে

তিতুমীরের মত

 

এই ছড়াটা শহীদ মালেক

নোয়ায় না সে শির

এই ছড়াটা একাত্তরের

মুক্তিযোদ্ধা বীর

 

এই ছড়াটা শহীদ আসাদ

মিছিল নিয়ে লড়বে

এই ছড়াটা নয় ভীতু নয়

মরতে হলে মরবে

২৮//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৪

এই ছড়াটির বুকে ব্যথা

পিঠে ব্যথা, হাতে

এই ব্যথাটা আরো বাড়ে

শুতে গেলে রাতে

 

এই ছড়াটি মিছিল করে

সাচ্চা বীরের মত

এই ছড়াটির উঁচু মাথা

হয় না কভু নত

 

যতোই আসুক বিপদ বাঁধা

আসুক জুলুম ভয়

এই ছড়াটি চিরকালই

ছিনিয়ে আনে জয়

২৮//২০১৯; ভোর ৫:৩০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৫

কলাতলী বীচে।

দাঁড়িয়ে ছিলাম ভেজা বালু

ছিল পায়ের নিচে

 

দেখছি সাগর, ঢেউ।

কেউ নেমেছে সেই পানিতে

ঢেউ দেখছে কেউ

 

অবাক করা চোখ।

ঢেউয়ের দোলায় হাসছে যেন

বিস্মিত সব মুখ

 

হাজার হাজার ঢেউ।

আসছে ছুটে তীরের দিকেই

ডাকছে যেনো কেউ

 

শোন সাগরের কান্না।

পানির নিচে লুকিয়ে আছে

হীরা চুনি পান্না

 

কে করে তা চুরি?

সে সব নাকি লুকিয়ে রাখে

আকাশের চাঁদবুড়ি

 

দেখ কী আজব সৃষ্টি।

চোখ ফেরানো যায় না আহা

সে কি অবাক দৃষ্টি

২৮//২০১৯; সকাল ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৬

আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে

গাছের পাতা নড়েচড়ে

নদী নালা খাল বিল ভরে

নামে অঝোর ঢল

সবাই বলে মনের কথা

তুইও নাহয় বল

 

পানির নিচে তেতুল গাছ

পানির নিচে বোয়াল মাছ

পানির নিচে ঘর

চারিদিকে থৈ থৈ পানি

দেখলে লাগে ডর

 

ঘরে কোন খাবার নাই

কই যে যামু যাবার নাই

নতুন কিছু ভাবার নাই

সবাই নিরুদ্দেশ

কোথায় রাখি গরু ছাগল

হাঁস মুরগী মেষ?

 

ঘরে কোন আগুন নাই

চালকুমড়া বাগুন নাই

দুর্গতির নাই শেষ

সবাই করে ইয়া নাফসি

এইটা কেমন দেশ?

২৮//২০১৯; সকাল ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৭

খালু

খালু মানে আলু না

নদী চরের বালু না

পাহাড়িয়া ঢালু না

কারো মাথার তালু না

 

খালু মানে খালু

আমার খালু চালু

 

খালু মানে আলু না

বড় বাড়ির ফালু না

ল্যাংড়া কানা কালু না

নতুন কোন লালু না

 

খালু মানে খালু

আমার খালু চালু

২৯//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৮

চতুর্দিকে জল গো কন্যা চারিদিকে জল

এই দুদিনেই ভেঙে গেছে সবার মনোবল

ধানী ক্ষেতটা ডুবে গেছে, ডুবছে খেলার মাঠ

ডুবে গেছে স্কুল ঘর ও ডুবছে গাঁয়ের হাট

 

গরু বাছুর কই যে রাখি, কোথায় মুরগী হাঁস

পানি তো নয় চারিদিকে, সব যে সর্বনাশ

সবজি আনাজ পানির তলে, ঘরে আগুন নাই

কোথায় পাবো খাদ্য খাবার, বলতে পারো ভাই?

 

চারিদিকে জল গো কন্যা, চতুর্দিকে পানি

বানের জলে ডুবে গেছে শেখফরিদের নানী

কবর দেবে নাইরে মাটি, চারিদিকে জল

ভাবছি বসে, তবে কিরে সবই পাপের ফল?

 

তোমরা ডুব পাপ সাগরে, আমরা ডুবি জলে

গণতান্ত্রিক গযব দাদা এরেই নাকি বলে

আমার ভোটের বদৌলতে করছো তুমি পাপ

তাইতো আমি তোমার পাপের বইছি অভিশাপ

 

রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘরের চালে রই

গণতান্ত্রিক পাপের বোঝা এমনি করে বই

৩০//২০১৯; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৪৯

ঘুমপাড়ানি ছড়া

কান্না কিসের কান্না

আর কাঁদে না, আর না

কান্না কোথায় হাসছে সোনা

ঝরছে হীরা পান্না

 

সোনামনি কাঁদে না

ফেরেশতারা রাঁধে না

আজ কেউ আর সাধে না

সালোয়া ও মান্না

 

সোনামনির চোখে কি তাই

ঝরছে শোকের কান্না

আর কাঁদে না, আর না

কষ্ট মনে কার না

বুবু করছে সোনার জন্য

মিষ্টি পায়েশ রান্না

 

না কাঁদে না, আর না।

৩০//২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫০

একটি সাক্ষাৎকার

প্রশ্নঃ

কেমন আছেন মশা মশাই?

মশাঃ

ধরুন দাদা আগের দশাই

 

আমার কোন দুঃখ নাই

যখন খুশি রক্ত খাই

মনের সুখে গানও গাই

 

প্রশ্নঃ

শুনি,

আপনি অনেক গুণী

মস্তবড় খুনী

আমপাবলিকের বন্ধু  আপনি

মারেন ধরে রাজা

অত্যাচারী স্বৈরশাসক

ওটাই তাদের সাজা

 

মশাঃ

ঠিক বলেছেন, ঠিক

ধিক জালিমকে, ধিক

 

প্রশ্নঃ

তবে কেন পাবলিক মেরে

আপনি আজকে খান?

বলুন তো কি চান?

 

মশাঃ

আগে ছিল রাজার দেশ

পাপ করতো রাজা

পেতো নিজে সাজা

 

এখন দেশটা জনগণের

তারা বানায় রাজা

তাইতো পাবলিক পাওনা হয়

রাজার পাপের সাজা

 

রেহাই পায় না পাবলিকে

যতোই ঘুরুক তাবলিগে

 

প্রশ্নঃ

তবে

এখন কি যে হবে!

জনগণের পোড়া কপাল

এমনি পোড়া রবে?

 

মশাঃ

বিচারতো তাই কয়

মানুষ কেন ভুলে গেছে

আল্লাহ খোদার ভয়?

যেমন পাবলিক তেমন রাজা

এইতো দেশে হয়

সাজা কেন নয়?

 

প্রশ্নঃ

তাই তো!

যার যার কর্মের সাজা সে

আগেও তো পাইতো!

পাপীরা যে পাপ করে

পাবলিকই দেয় লাই তো!

 

মশাঃ

বন্যা মশা কিছু নয়

ধরো এসব খোদার গযব

পাপ করলে সইতে হয়

ছাড়ো যদি পাপ

পেতে পারো মাফ

৩০//২০১৯; বিকাল ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫১

আজ মানুষের নেই মমতা

যেই ক্ষমতা পায়

মুখে আওড়ায় মানবতা

মানুষ ধরে খায়

 

মানুষগুলো মানুষ তো নয়

অমানুষের ভাই

আমরা নিজে কেমন মানুষ

তাদেরই গুণ গাই?

 

নিজের বুকে হাত দিয়ে কন

মানুষ কি কেউ আছি?

নাকি আমরা সবাই এখন

বনের মশা মাছি?

৩১//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫২

শ্বশুর বাড়ি মধুর হাঁড়ি

হোক না সেটা যাত্রাবাড়ি

কিংবা সুদূর চিতলমারি

সবখানেতেই মজা

যেনো চিনির গজা

 

তাইতো গেলাম শ্বশুরবাড়ি

সঙ্গে নিলাম মিষ্টিহাঁড়ি

কতকিছু নিলাম সাথে

আরো নিলাম দই

শরম করে সেসব কথা

কেমনে খুলে কই

শালীর জন্য ওড়না ফ্রক

কিছু গল্পের বই

 

আসলো ছুটে শালাশালী

না না এসব মধুর বচন

কে বলেছে গালাগালি?

শ্বাশুড়ি মা বললো হেসে

এ সবের কী দরকার ছিল

কেউ হাতে নেয় তালের পাখা

কেউ বা খাটে বসতে দিল

 

কেউবা এসে কোলে বসে

কেউবা ওঠে ঘাড়ে

আদরের কি বহর বাবা

যে যেভাবে পারে

এমন কোন সুযোগও নেই

তাদেরকে দেই ফাঁকি

গলা ছেড়ে আমার তখন

কান্না শুধু বাকী

 

এমন কোন সুযোগ নেই

বউকে একা পাই

কেমনে তখন বউয়ের কাছে

একলা বলেন যাই

শালীরা কয় দুলাভাই,

ভাবছেন কবে ভাগবেন?

ভাবাভাবির দরকার নেই

ধরুন, সুখেই থাকবেন

 

হায়রে এমন সুখের ঠ্যালা

পরাণ আমার যায়

সে সব দুঃখ সবাইকে কি

খুলে বলা যায়!

৩১//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৩

দেশে,

সত্য যতো পড়ছে তলে

গুজব উঠছে ভেসে

কে জানে না গুজব জিনিস

খুবই সর্বনেশে

 

গুজব এলে চিল নিয়ে যায় কান

বঙ্গভবন যায় ফলানো বরিশালের ধান

গুজব এলে কলাপাতায়

ঝরে চাঁদের খুন

আহা, গুজবের কি গুণ

 

সত্যটাকে ঢাকলে গুজব তরতরিয়ে আসে

সত্য যেথা নাই সেখানে গুজব বসে হাসে

তবু কেন সত্য চেপে ধরো

এই গুজবের হাতটি ধরে

মারো এবং মরো

 

সত্যটারে দাও মেলতে পাখা

তবেই গুজব পড়বে নিজে ঢাকা

৩১//২০১৯; দুপুর ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৪

আমগো বাড়ির তাইন

দেহায় খালি আইন

বলে, ধরো লাইন

নইলে হবে ফাইন

 

নিজে আইনের ধার ধারে না

উল্টো পথে চলে

আইন তো করি তোদের জন্য

হাসতে হাসতে বলে

 

আইন কে শেখায় তারে?

আইন করে যে সে তো আইন

ভাঙতে নিজে পারে

 

আইনের সে যে বাবা।

নিজে চলবে খুশিমতো

আইন মানবে হাবা

কোথায় তুমি যাবা?

 

আমগো বাড়ির তাইনে।

বায়ে চলার কথা থাকলে

চলে নিজে ডাইনে

উজাড় করে ভরা হাঁড়ি

বলে কিছু খাইনে

 

বলে, বাড়ির কর্তা আমি

কম্বল কেন পাইনে

সারাটা দিন খেটে মরি

কয় টাকা দিস মাইনে?

 

আমগো বাড়ির তাইন

কথায় ফোটায় মাইন

৩১//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৫

ডেঙ্গুরে তুই রেঙ্গুনে যা,

সেথায় পাবি জান্তা

কেন মারিস তাদের যারা,

খেয়ে বাঁচে পান্তা

 

পাপ করেছি মাফ করে দে

খোদার কাছে কান্দি

আমরা পাপী তবু তো তোর

আমরা বান্দা বান্দি

 

চলছে গযব নানা রকম

কেন যে পাপ ছাড়ি না

পাপ ছাড়া কি ভাল পথে

আমরা বাঁচতে পারি না?

 

ডেঙ্গু রে তুই রেঙ্গুনে যা

বন্যারে তুই থাম

নইলে খোদা রহীম রহমান

রইলো কি তার দাম?

//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৬

আমার লেখা বলেন ভালো

নিজে ভালো হন না

কেমনে হবে জগত ভালো

সেই কথাটা কন না?

 

ভালো ভালো কথা মামা

সবাই কইতে পারে

নিজের মনের মন্দটারে

কয়জন বলো মারে?

 

আপনি আমি মিলেই জগত

আসুন নিজে ভালো হই

নিজে ভালো হওয়ার পরে

ভালো ভালো কথা কই

 

ভালো কথার চেয়ে ভালো

করা ভালো কাজ

কথা তো নয়, চরিত্রটা

হোক না ভালো আজ

//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৭

রজব রে।

তরে আগে কই নাই আমি

আইবো দেশে গযব রে?

 

গযব মানি নমরুদ মরে মশার কামড় খাইয়া

ফেরাউন মরে জলে ডুবে নীল দরিয়ায় যাইয়া

 

রজব রজব রজব রে।

দেখ তাকিয়ে আজকে দেশে

চলছে কী সব গযব রে

 

বন্যা ডেঙ্গু কিছুই না, সবই গযব বর্ষণ

বাপের হাতে কন্যা হয় নিজের ঘরে ধর্ষণ

বিনা দোষে মানুষ মরে গণধোলাই খাইয়া

বড়লোকে ফুর্তি করে নাইটক্লাবে যাইয়া

 

রাজার পাপে রাজ্য নষ্ট, প্রজা কষ্ট পায়

বিনা দোষে মানুষ মেরে রাজা মক্কা যায়

দেশের মানুষ চুপটি করে থাকে ঘরে বইয়া

এই অনাচার এমনি এমনি যাবে খোদা সইয়া?

 

চারিদিকে চলছে পাপের বন্যা

কেমনে তবে থামবে গযব আপনিই সেটা কন না?

পাপ না হলে নাশ

থামবে কি কন জাতির ভাগ্যের গযব সর্বনাশ?

//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৮

মনের ভেতর মন ছিল, বনের ভেতর বন

এত বছর পার হলো তাও ছেঁড়েনি বন্ধন

কেমনে অগ্নি লাগলো মনে, পুড়লো অকারণ

দহন জ্বালা সহন না যায়, কহন কি যায় কন?

 

কি দোষ ছিল সেই কথাটা জানা হলো না

আমার নামে অভিযোগও আনা হলো না

শুধু দেখলাম মনের ভেতর তোর মনটা নাই

এক নিমিষে জীবন আমার পুড়ে হলো ছাই

 

তবে কিরে তোর মনে প্রেম আদৌ ছিল না

মনের ভেতর মনতো দূরে, দীলও ছিল না

ভালোবাসার নামে কিরে সবটাই ছিল ভান

প্রেম নয়রে, সবই ছিল নিছক স্বার্থের টান?

//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৫৯

আমরা হবো বীর

আমরা হবো বীর

বুক ফুলিয়ে চলবো সবাই রাখবো উঁচু শির

 

ভয়কে মোরা জয় করবো হেসে

দেশের জন্য প্রাণ দেবো, দেশকে ভালোবেসে

আমরা গড়বো  সবাই মিলে শান্তি সুখের নীড়

 

বিপদবাঁধা ঝঞ্ঝা এলে

পার হবো ভাই হেসেখেলে

করবো তারে মোকাবেলা হাতে রেখে হাত

আনবো টেনে সূর্যটারে তাড়িয়ে আঁধার রাত

 

ঘুমিয়ে অলস রইবো না

মন্দ কিছু সইবো না

আমরা হবো দুঃসাহসী শহীদ তিতুমীর

//২০১৯; সকাল ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬০

মা

মায়ের চেয়ে মাসি ভালো, মাসির চেয়ে দাসী

সে ফেলে না জড়িয়ে ধরে অশ্রু রাশি রাশি

মা টা শুধু কান্না করে, রান্না করে রোজ

আমি কখন কই যে যাই, মা টা রাখে খোঁজ

 

এত্তো এতো খবরদারি, ভাল্লাগে না ছাই

তাইতো আমি সুযোগ পেলেই দাসীর কাছে যাই

মা টা তখন হাত বাড়িয়ে বলে খোকা আয়

চল দুজনে মামার বাড়ি, ময়ূরপঙ্খী নায়

 

আমার তখন খেলার সময়, বন্ধুরা সব আসে

মায়ের কথা শুনে করো গাল ফুলে, কেউ হাসে

আমি বলি, মামার বাড়ি? তুমি যাবে যাও

আমায় আবার সঙ্গে করে কেনো নিতে চাও?

 

মা হেসে কয়, সোনা মানিক, তুই না গেলে হয়!

পথে যদি কভু আমার জাগে ভূতের ভয়?

আমি বলি, কী বোকা মা, ভূত বলে কেউ নাই

ঠিক আছে মা, চল না তবে আমিও সঙ্গে যাই

//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬১

হীরা

হঠাৎ করে কোথা থেকে আসলি আবার ফিরা?

এই নে খা পাকনা কাঁঠাল, কাঁঠাল খেয়ে জিরা

এই কথাতে মুচকি মুচকি হাসলো কেনো হীরা?

 

বললাম,

তুই হাসলি কেনো? কাঁঠাল কি তুই খাস না?

কাঁঠাল খেতে মামাবাড়ি বছর বছর যাস না?

 

হীরা হেসে কয়

ঘটনা তা নয়

হাসলাম কেনো সেই কথাটা কইতে লাগে ভয়

খেলার মাঝে তুমিই বলো, কে চায় পরাজয়?

 

কিসের খেলা, কে হারলো? একটু খুলে বল।

মেঘ করেছে কোথা আর নামলো কোথা ঢল?

 

ভয়ে ভয়ে কই

ডেঙ্গু মশার জন্য নাকি তিনশো কামান সই

সৈন্য নাকি খাঁড়া শয়ে শয়ে

যুদ্ধ বিমান রেডি করছে ভয়ে

আরো শোনেন কই

আজরাইলরে খেতে দেবে বিষ মিশানো দই

 

তাতে মরণ থামবে নাকি, কইছে কাদের খান।

এবার দেখমু কেমনে নেয় আজরাইলে জান

//২০১৯; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬২

রাতের বেলা দাঁতের ব্যথা

দিনে ব্যথা মনে

কেউ জানে না কেমন করে

লাগলো আগুন বনে

 

সেই আগুনে বিশাল বন

পুড়ে হলো শেষ

কারণ ছাড়াই জ্বলতে পারে

সোনার সবুজ দেশ

 

পায়ের নিচে কলার খোসা

তাতেই আছাড় খাও

কারণ ছাড়াই ডুবতে পারে

বিশাল সাধের নাও

 

আলেম মরছে শাপলা চত্বর

ফুলি মরছে রেপে

বলা যায় না কখন আবার

পাবলিক ওঠে ক্ষেপে

 

হাটের কিল বাটে পায় না

ধরা পড়লে বাটপারে

পাবলিকের কিল শুরু হলে

সামলাতে কি লাট পারে?

//২০১৯; সকাল ১১ টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৩

দেশটা নিয়ে কেস্টা ব্যাটা

চেষ্টা তো কম করে নাই

ষড়যন্ত্রের বৃক্ষে নাকি

এখনো ফল ধরে নাই

 

গাছ হয়েছে মোটাতাজা

খেতে যেন বাদাম ভাজা

তাতে তো পেট ভরে নাই

সবই ছিল ঠিকঠাক কিন্তু

জনগণ তো ফরে নাই

 

দেশের মানুষ মরে নাই।

টোপ খেয়েছে অনেক মাছে

কিন্তু ভয় তো সরে নাই

ভাবছে দেবে মরণকামড়

কিন্তু সাহস ঘরে নাই

 

কেস্টা ব্যাটা দেশটা নিয়ে

চেষ্টা তো কম করে নাই

ফন্দি ফিকির সব করেছে

সাহস করে লড়ে নাই

 

আধিপত্যের পেটটা খালি

এখনো তা ভরে নাই

স্বাধীনতার স্বপ্ন নাকি

জনগণের মরে নাই

//২০১৯; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৪

তোর জন্য

তোর জন্য আমি সবই করতে পারি

দৈত্যদানোর সঙ্গে একা লড়তে পারি

তোকে নিয়ে স্বপ্নপ্রাসাদ গড়তে পারি

স্বৈরাচারের টুটি চেপে ধরতে পারি

 

তোর জন্য আমি সবই করতে পারি

দরকার হলে বাঘের পিঠে চড়তে পারি

সিংহপিঠে লাফিয়ে আমি পড়তে পারি

তোর জন্য আমি একাই মরতে পারি

 

তোর জন্য আমি সবই করতে পারি

তোর জন্য আমি নিজে মরতে পারি

//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৫

পুরান দিনের কথা সোনা

কেমনে  রে তুই ভুলিস

কই গেলো সে আগের প্রেম

গায়ে যে হাত তুলিস?

 

তুই ভাবতি আমি আগে

ছিলাম বোকা, ফুলিস

তুই কি এখন রাজার চাকর,

হাল জামানার পুলিশ?

 

আমার ট্যাক্সে বেতন নিবি

মারবি ধরে আমারে

আমি কিরে গরু ছাগল

ঢুকাস রাজার খামারে?

 

পুরান দিনের কথা সোনা

কেমনে  রে তুই ভুলিস

আগে ছিলি আমার সেবক

এখন রাজার পুলিশ

//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৬

তিরিশ টাকার শিরিষ কাগজ

আশি টাকার নুন

সঙ্গে নেবে পোয়া খানেক

সাদা সাদা চুন

 

পানি দিয়ে খেয়ে নেবে

আর তো কিছু লাগবে না

ডেঙ্গু বলো ফেঙ্গু বলো

কোন কিছু থাকবে না

 

পালিয়ে যাবে ডেঙ্গুরা সব

পেঙ্গুইনের বাসায়

এই অসুধটা পাওয়া গেছে

গবেষণায় নাসায়

 

সেই ফর্মুলা নিয়ে গেছে

চুরি করে রাশায়

নিয়ে গেছে আবার কিছু

মানুষ মারার আশায়

//২০১৯; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৭

ক্ষুধা লাগলে খাইতে হয়

খাওয়ার আগে নাইতে হয়

কিছু লাগলে চাইতে হয়

এভাবেই তো পাইতে হয়

 

মধ্য রাতে গাইতে হয়

শ্বশুর বাড়ি যাইতে হয়

পাকা ধান দাইতে হয়

গেলে ফিরে আইতে হয়

 

নদীতে নাও বাইতে হয়

ঘরে আঁধার রাইতে হয়

কোন কিছু চাইতে হলে

তাঁর গুণগান গাইতে হয়

 

খোদার কাছে চাও।

তাঁর গুণ কি গাও?

//২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৮

কোরবানী

বনের পশু বনে থাকে, মনের পশু মনে

সেই পশুকে ঢেকে রাখি মনে সংগোপনে

 

মনে আহা পশু রেখে, মানুষ ভাবি নিজে

দেখতে মানুষ কিন্তু মনে পশু নাচে কি যে

 

মন ছাড়া এই দেহ সেতো আস্ত একটা লাশ

দেহের ভেতর মনের পশু করছে বসবাস

 

সেই পশুকে কোরবানী দাও, মনের পশু মারো

মনের পশু যতোই মারবে, মানুষ হবে আরো

 

ছাড়তে হবে হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা এবং লোভ

ছাড়তে হবে লোক ঠকানো, প্রতারনা, ক্ষোভ

 

এরই নাম কোরবানী ভাই, গোস্ত খাওয়া নয়

মানুষ হতে চাইলে মনে আনো খোদার ভয়

//২০১৯; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৬৯

কাশ্মীর দেখো

দেখো দেখো কাশ্মীর দেখো

তার ইতিহাস মনে রেখো

তারপর নিজের ভাগ্য লেখো

মরবা কখন নিজে?

 

আগে মরলে মরতে পারো

নয়তো মরবা আপনজনের

গরম রক্তে ভিজে

 

স্বাধীনতা সোনার হরিণ

সহজে সে আসে না

বছর বছর রক্ত ঢাললেও

হাসতে বললে হাসে না

 

গোলাম হওয়ার কষ্ট যে কী

বাপ দাদারা জানতো

ইংরেজদেরকে প্রভু মেনে

রক্তে ডুবে কাঁনতো

 

তোমার হিসাব তুমি করো

না কর তো নাই

চলো তবে তামশা দেখি

গোলামীর ভাত খাই

//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭০

জাতি ভাই লড়তে জানে

অস্ত্র হাতে ধরতে জানে

দেশের জন্য মরতে জানে

তবে কিসের ভয়?

স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবে?

এতো সহজ নয়

 

ইংরেজ এসে লড়তে গিয়ে

গুটিয়েছে লেজ

পাকজান্তারা দেখে গেছে

বাঙালিদের তেজ

 

সবাই ভাবে নরম জাতি

গরম যখন হয়

লড়াই করার ভঙ্গি দেখেই

পায় দুশমন ভয়

 

ভয়ে পালায় আগ্রাসী সব

চোখে দেখে রাত

যারা আসে লড়াই করতে

হয়রে কুপোকাত

//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭১

স্বাধীনতা অমূল্য ধন

সবাই তারে চায়

বুকে যার সাহস আছে

সেই তো তারে পায়

 

ঘরের ভেতর ইঁদুর থাকে

স্বাধীনতা কাটে

স্বাধীনতা যায় না পাওয়া

কদমতলির হাটে

 

রক্ত নদী পাড়ি দিয়ে

স্বাধীনতা আসে

বীরের সাথে বসে বসে

স্বাধীনতা হাসে

 

স্বাধীনতা উড়াল পাখি

একবার যদি যায়

তারে নাকি ধরে ধরে

মেঘ ডাকাতে খায়

 

তাইতো বলি ভাইবোনেরা

হাতে ধরো হাত

স্বাধীনতা নয় পালাবে

আসবে আঁধার রাত

//২০১৯; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭২

পাওয়া যায়নি

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৩

ইষ্টিকুটুম মিষ্টিকুটুম

কুটুম আসবে বাড়িতে

কুটুম আসবে হৈ হৈ করে

চড়ে হাওয়াই গাড়িতে

কুটুম আসবে বাড়িতে

 

কুটুম আসবে কুটুম আসবে

মা রাঁধবে হাঁড়িতে

বাবা খাবে মজা করে

হাত বুলাবে দাড়িতে

কুটুম আসবে বাড়িতে

 

কুটুম আসবে কুটুম আসবে

সঙ্গে আনবে মিষ্টি

মজা করে খাবো সবাই

নামবে যখন বিষ্টি

আনবে সঙ্গে মিষ্টি

 

কুটুম আসবে বাড়িতে

আসবে হাওয়াই গাড়িতে

মা রাঁধবে হাঁড়িতে

বাবা খেয়ে মজা করে

হাত বুলাবে দাড়িতে

কুটুম আসবে বাড়িতে

//২০১৯; বিকাল ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৪

ফুল বাগানে কয়টা পাখি?

রুনু বললো, নয়টা পাখি

করছে ওরা ডাকাডাকি

দশটা হতে একটা বাকী

 

দশটা মানে পাঁচ জোড়া

একটা পাখি দেখ খোঁড়া

সেই পাখিটা পাতার তলে

দশটা পাখি একই দলে

 

পাখি ওড়ে ফুলে ফুলে

ফুল গুঁজে দে আমার চুলে

পাখির মতো খেলতে চাই

আরতো কোন দাবী নাই

 

ফুলেরা যায় ফুলবনে

বলে, আমরা নই কনে

আমরা সবাই রঙিন ফুল

খোদার কভু হয় না ভুল

//২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৫

মনের কথা বলবো বলে, বনে এসেছি

সূর্যি মামা হাসে বলে, আমি হেসেছি

 

পাখপাখালির কিচিরমিচির, ঝর্ণার কলতান

শুনলে আমার ইচ্ছে করে আমিও গাই গান

 

বাতাস এসে ভালোবেসে পরশ বুলায় গায়

আমার মনও তখন শুধু ভালোবাসতে চায়

 

রাত্রি এসে বিশ্ব জুড়ে দেয় ছড়িয়ে কালো

চন্দ্রতারা হেসে বলে নিজে আলো জ্বালো

 

ফুল দেখো না পরের তরে গন্ধ বিলায় রোজ

তুমিও তবে নাও না কেন পরের একটু খোঁজ?

 

মন্দ দেখে ভয় পেয়ো না, মন্দ করো দূর

ময়লা যেমন ডুবিয়ে মাবে বিশাল সমুদ্দুর

 

রৌদ্র বলে, পঁচা বাসি দুর্গন্ধ, আমিই করি ক্ষয়

মন্দটারে দাও তাড়িয়ে, ভালোরই হোক জয়

//২০১৯; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৬

জুলুম মানে জুলুম

হিন্দু করুক, মুসলিম করুক

কেমনে তারে ভুলুম

 

স্রষ্টা বানায় সাধের মানুষ

মানুষ তারে মারে

সেই মানুষের একটা চুল

কেউ বানাতে পারে?

 

তবে কেমনে মানুষ মারো

তার কি স্বজন নাই?

তুমি কি ভাই দৈত্য দানব

না মানুষের ভাই?

 

মা কান্দে ভাই কান্দে

কান্দে সোনা বোন

মানুষ হয়ে তবু তুমি

মানুষ করো খুন

 

খুনীরা তো মানুষ নয়

অমানুষের জাত

সব খুনীদের কোমর ভাঙো

ভাঙো তাদের হাত

//২০১৯; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৭

যে মানুষটা জুলুম করে

সে হয়ে যায় জালিম

করুক সেটা গুন্ডা বদমাশ

কিংবা করুক আলিম

 

জুলুমকারীর এক পরিচয়

মানুষ নয় সে জালিম

সে মানুষ হয় যখন পায়

গণধোলাই, তালিম

 

জালিম মোটে নয় সাহসী

ভীতুর একটা রাজা

চারিদিকে তাইতো রাখে

সৈন্য তাজা তাজা

 

তারই কেনা অস্ত্র একদিন

তারে করে শেষ

খুশির চোটে লাফায় তখন

সোনার বাংলাদেশ

//২০১৯; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৮

হায় একাত্তুর হায়!

একাত্তুরের স্মৃতি কিরে

সত্যি ভুলা যায়?

 

মা-বোনদের ইজ্জত যখন

লুঠছে হায়েনা

সারাদেশে ঝড় তুলেছি

শুধু চায়ে না

 

অকাতরে জান দিয়েছি

রক্ত দিছি কত

হায়েনাদের কাছে তবু

করিনি শির নত

 

কেমন করে সেসব কথা ভুলি

কেমন করে হায়েনাদের

স্বপক্ষে সুর তুলি

 

হায় একাত্তুর হায়!

দেশে দেশে আজকে যারা

রক্ত চুষে খায়

কেমন করে বীর বাঙালি

তাদের পক্ষে যায়!

 

কুকুর মানে কুকুর জানি

খুনী মানে খুনী

কে কোন দেশের,

কে কোন জাতের

সে প্রশ্ন ক্যান শুনি?

//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৭৯

ভোট কিনেছি টাকা দিয়ে

সে টাকার কি দাম নাই?

আমি করবো জনসেবা?

আমার কি আর কাম নাই?

 

যে টাকা গেছে ভোটে

সে টাকা নেবো নোটে

চান্দা দিছি জোটে

কে দাঁতে নখ খোটে?

 

লগ্নি টাকার লাভ কই?

পানি কে খাবে, ডাব কই?

গাবের গাছে গাব কই

প্রেম পীরিতের ভাব কই?

 

ঘুষ খাই না, লাভ খাই

ভাদর মাসে গাব খাই

//২০১৯; ভোর ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮০

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে, হুল ফুটেছে মনে

কেন আমায় দুঃখ দিলি, বলতো অকারণে?

কবে আমি লেগেছিলাম তোর সাথে বল রণে

তবে কেন ব্যথা দিলি, বলতো আমার মনে?

 

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে, নাচছে প্রজাপতি

তবু আমি বুঝলাম না হায়, তোর কি মতিগতি

তুইতো আমার মনের মানুষ, তুইতো আমার পতি

তোরে ছাড়া আমার কি আর আছে কোন গতি?

 

বিশ্বাসে তো নিঃশ্বাস বাড়ে, খোদার রহম হয়

প্রেম ছাড়া আর আছে কি বল, বিশ্বজগতময়

এ পৃথিবী, আকাশ বাতাস, সবই খোদার দান

আয়রে দুজন বসে বসে গাই তাহারই গান

//২০১৯; দুপুর ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮১

মনটা মোটে ভাল না, লিখবো কি যে কন

চারিদিকেই যুদ্ধ, লড়াই, চারিদিকেই রণ

 

সবাই ঘুরে খুনের নেশায়

সবাই ঘুরে হত্যা পেশায়

নষ্ট সবার মন

লিখবো কি আর কন?

 

ভালবাসা, স্বপ্ন আশা, কোথায় গেল কন

কেমন করে নষ্ট হলো সব মানুষের মন?

 

দয়া, মায়া, স্নেহ, প্রীতি

কোথায় গেল সত্য নীতি

কোথায় গেল আদর সোহাগ

ভালবাসার মন

লিখবো কি আর কন?

 

মানুষ হলো প্রেমের পাখি, রাখি বেঁধে রয়

হিংস্র পশুর স্বভাব হলে সে কি মানুষ রয়?

//২০১৯; বিকাল ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮২

সব ধর্মের একই বানী, মানুষ বাসো ভালো

তবে কেনো ধর্মে ধর্মে আগুন তুমি জ্বালো?

 

কোন ধর্মে লেখা আছে, মানুষ করো খুন

কোন ধর্মে লেখা আছে, হত্যা মহত গুণ?

 

কিসের বলে ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষ মারো

ধর্ম কি হায় হয় কখনো দুশমন বলো কারো?

 

মানুষ মারো স্বার্থের জন্য, ধর্মরে দাও দোষ

ধর্মের কিছু হয় না তাতে, কমে তোমার রোষ

 

ধর্মই যদি মানো তবে, মানুষ বাসো ভালো

সবার মনে দাও জ্বেলে সত্য প্রেমের আলো

//২০১৯; বিকাল ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৩

খুনীর জন্য ভালোবাসা, মানে, তুমিও খুনী

খুনীর জন্য নইলে কেনো ভালোবাসা শুনি?

 

মনের ভেতর পশু তোমার করছে বসবাস

মানুষ হতে চাইলে তারে আগে করো নাশ

 

ধর্মে শুধু লেখা আছে মানব প্রেমের বাণী

যার যতটা প্রেম আছে, ধার্মিক ততখানি

 

তোমার ধর্ম তুমি মানো, আমার ধর্ম আমি

কে ভুলে, কে সঠিক আছো বুঝবে অন্তর্যামী

 

ধার্মিকেরা ঐক্য গড়ো, অধার্মিকে নয়

তোমার জন্য বসে আছে সফলতা জয়

//২০১৯; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৪

পাড়ার কিছু ছেলে

বলল দুহাত মেলে

মামা কিছু চান্দা দেন

 

চান্দা কেন ইয়াংম্যান?

 

মামা

সব কি খুলে কইতে হয়

গাধার বোঝা বইতে হয়?

চান্দা দিবেন কামে

আমরা নিমু চামে

 

বা বা বাবা, বেশ।

 

আমরা চালাই দেশ।

দেশের কামে চান্দা চাই

আরতো কোন ধান্ধা নাই

সামনে মামা ঈদ

খুশি করেন হৃদ

 

পাড়ার কজন পোলা

চক্ষু ঘোলা ঘোলা

সার্টের বোতাম খোলা

বলল, এতো কথা ক্যান

চান্দা দিলে দিয়ে দেন

 

মামা

শোনেন আমলনামা

চান্দা যদি না পাই তবে

জীবন হবে তামা

 

তাকিয়ে দেখি আমার শরীর

শুরু করছে ঘামা

বললাম, মন্টু চান্দা দে

ওদের এবার থামা

//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৫

রাবিশ

আমাবে কি ভাবিস?

তুই বলবি, খা বিষ

আমি সেটা খাবো?

নরকে কি যাবো?

 

আবে,

নরক না বল, জান্নাতে

পাড়াপড়শির কান্নাতে

নামবে যখন বন্যা

কার গলবে মন না!

 

হৃদয় যখন গলবে

উল্টো ফসল ফলবে

বাসের সাথে তখন দেখবি

নৌকা পথে চলবে

 

রিক্সাগুলো টলবে

গরু কথা বলবে

রাজা তখন প্রজাদেরকে

আচ্ছামত ডলবে

 

বিশতলাতে পুকুর হবে

সবজি সেথা ফলবে

ভোট ছাড়াও গণতন্ত্র

তরতরিয়ে চলবে

//২০১৯; রাত ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৬

একটা মজার গল্প বলি দাদা।

আর কাঁদে না,

এবার তুমি থামাও তোমার কাঁদা

 

নসু শেখের নাতি

গুলিস্তানে কিনতে গেল লাল রঙের হাতি

দোকানদারে বলল, মামা, লাল?

আজ নয় তবে আসুন মামা কাল

সদরঘাটের অই পাড়ে আমার খামার বাড়ি

হাতি ঘোড়া বাঘ আছে, আছে রঙিন হাঁড়ি

 

নসু।

সেকি শরৎবসু?

তার নাতিটা তারই মত বোকা

বললো তবে

আজ যাই, কাল নিয়ে এসো খোকা

এই কথাটা শুনে ফেললো তিনটে গুবরে পোকা

 

তারপর?

তারপর তারা ছুটে গেল ভাঙা খামারবাড়ি

হাতিটাকে বলল তুমি পালাও তাড়াতাড়ি

মুক্তিযুদ্ধের সময় তুমি বন্ধু ছিলে তাই

আঁড়ি পেতে শোনা কথা বলতে এলাম ভাই

 

চলছে মহা ষড়যন্ত্র, ভাঙবে তোমার ঘর

ছাগল এখন খাচ্ছে বসে গরুর দুধের স্বর

দিল্লি গিয়ে বিল্লি এখন খাচ্ছে ঘোড়ার ডিম

কালো কাপড় কিনছে শুধু, নিত্য নতুন সীম

এর কি হাশর হবে বন্ধু, মনে বড় ভয়

বিড়ালের সে পিঠাভাগ আবার কী না হয়!

কার সে ছিলা কলা আহা, না জানি কে খায়

অধীনতার শিকল জানি, পড়ে কার বা পায়!

//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৭

রান্নাঘরে কান্না করে পান্না লালের বউ

বিড়াল নাকি খেয়ে গেছে চিতল মাছের মউ

দুপুরবেলা স্বামীর পাতে কি দেবে সে খাইতে?

একটু আগে স্বামী গেছে পুকুর ঘাটে নাইতে

 

বিড়াল এখন লোভী বড়, মাছের কাঁটা খায় না

ঝোলসহ মাছ দিতে হবে, এই বিড়ালের বায়না

সাহসও তার বেশ বেড়েছে, খাবার কভু চায় না

নিজের খাবার নিজে নেয়, কারো কাছে যায় না

 

এই বিড়ালটা পড়শিবাড়ির, আদর দিলাম যেই

অমনি বিড়াল বন্ধু হলো, চড়লো মাথায় সে-

তার জ্বালাতে ঝালাপালা, প্রাণটা আমার যায়

বিড়াল এখন মাছের সাথে স্বাধীনতাও খায়

//২০১৯; রাত ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৮

সোনা মিয়া চান্দা তোলে সোনাকান্দা গিয়া

চান্দা দিয়ে সোনা মিয়া করবে নাকি বিয়া

মানুষ এখন কানাঘুষা করেন এইসব নিয়া

চান্দার টাকায় বিয়া করা ঠিক হইবে মিয়া?

 

চান্দার টাকায় বিয়া করা ঠিক হবে না কেনো

সোনা মিয়া গরীব ঠিকই, কিন্তু সে তো ম্যানও?

ফতোয়া দেয় ল্যাংড়া হুজুর টেংরা মাছ খাইয়া

জলদি মিয়া করো বিয়া শ্বশুর বাড়ি যাইয়া

 

শতেকখানি পোলাপান বরযাত্রী হয়

শ্বশুর বলে, জামাই মিয়া এইটা ঠিক নয়

এতোগুলো লোককে আমি কেমনে খানা দেই?

এতো লোকরে খাওয়ানোর সাধ্য আমার নেই

 

সাধ্যের ওপর বোঝা দেয়া ঠিক নয় বাবা সোনা

বরযাত্রী আনবা দশজন, একদম হাতে গোণা

১০//২০১৯; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৯

চান্দের গাড়ি চান্দে যায় না,

ফান্দে পড়ে কান্দে

আর্মি এসে চান্দের গাড়ির

ড্রাইভার ধরে বান্ধে

 

ড্রাইভারে কয়,

দোষ কি আমার?

ভাঙা গাড়ি ছিল মামার

আমি এটা নিজে গিয়া আনছি

হয়তো বলজেন ঠিক হয় নাই,

মানছি দাদা মানছি

 

তোর মানাতে লাভ কি হলো?

তিনটা লোকতো মারা গেলো

জীবন যখন যায়

কান্দে পোলার মায়

যে যায় সে তো ফেরে না

অক্কা নাকি পায়

 

সে লাশ যদি কবর না দাও

শিয়াল শকুন খায়

এক্সিডেন্টে মানুষ মরুক

কও কে এমন চায়?

১০//২০১৯; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯০

ম্যান।

কখনো কি যাওনি তুমি

পুরাণ ঢাকার লেন?

গেলে ঠিকই দেখতে পেতে

পথে তেলের ক্যান

ক্যানের পাশে ঘুরে বেড়ায়

চৌধুরীদের হ্যান

 

ম্যান।

পিচ্ছি পোলা ডাকলে বলে

ডাকছেন আমায় ক্যান?

আমার এখন পড়া আছে

পড়ি ক্লাস টেন

 

ম্যান।

ওরা ড্রেনকে বলে ডেন

ব্রেনকে বলে বেন

বলে, মানুষ বাংলা ছেড়ে

ইংরেজী কয় ক্যান?

কিন্তু ওরা নিজে আবার

কলমকে কয় পেন

 

ম্যান।

কখনো কি যাওনি তুমি

ফেকু ওস্তাগার লেন?

গেলে শুনতে ওরা বলে,

চা বি পিবেন?লেন

১০//২০১৯; সকাল ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯১

ঈদের ছড়া

বিশ্ব জুড়ে মরছে মানুষ

জালিম জনের হাতে

কেমনে নেবো ফিরনি পায়েশ

গোশত আমার পাতে?

 

সেমাইগুলো সেমাইতো নয়

সব মানুষের রক্ত

এমন কোন বীরপুরুষ নেই

উড়ায় জালিম তখত?

 

নাই মানুষের আহার খাদ্য

নাই মানুষের নিঁদ

বিশ্ব মুসলিম কেমনে তবে

পালন করে ঈদ?

 

আগে বাঁচাও ভাইবেরাদর

কন্যা এবং মাতা

মানুষ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও

গুটাও নিজের হাতা

 

ঈদের পোষাক খুলে ফেলো

যুদ্ধ পোষাক পরো

মানুষ বাঁচাও  মানুষ বাঁচাও

অস্ত্র হাতে ধরো

১১//২০১৯; সকাল ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯২

হা রে  রে রে  রে রে

রাত দুপুরে ঘরের ভেতর কে রে?

এই না বলে বিড়াল এলো তেড়ে

 

ইঁদুর বলে, চাচা

পড়শি আমরা, হাচা!

খাটের তলে ঘর

আমরা কি আর পর?

 

তা, এখানে কি করিস?

এটা ওটা ধরিস?

জায়গার তো আর অভাব নাই

এখানে ক্যান মরিস?

 

ছি! কি যে কন চাচা!

আপনি ভাবেন বুদ্ধি আমার

বড় বেশী কাঁচা?

রাত দুপুরে ফাঁকা ঘরে

করছি শুরু নাচা?

না রে না, চাচা

 

কানু বাজায় বাঁশি।

এ বাঁশিই সর্বনাশী

বাঁশির সুরে পাগল হয় কানুর মোটা মাসী

বলে কানু আমি যে তোর চিরকালের দাসী

 

কানুর সাথে অভিসারে মাসী যায় বনে

বনের পোকা চামড়ার সাথে

কামড়ায় মাসীর মনে

সে কামড়ের কষ্ট

না খাও যদি কামড় তবে

বুঝবা ক্যামনে পষ্ট?

জানো,

সেই পোকাকে আর কেউ নয়

আমরাই করি নষ্ট

 

রাখ তোর এসব কিচ্ছা।

এমন মার দেবো তোরে

দৌঁড় লাগাবি খিচ্ছা

 

বনের পোকা তুই খেয়েছিস

আমার তাতে কি?

কবে দেখছিস আমি খাই

পান্তা ভাতে ঘি?

 

না না চাচা, কিছু না।

পান্তাভাত তো লিচু না

 

যে খায় বনে পোকার কামড়

সে শোয় খাটের ওপরে

আমরা হাঁটি খালি পায়ে,

সে তো হাঁটে স্যু পরে

 

পড়শির ডাকে বারে বারে

ছুটে আমার আসতে হয়

পাশাপাশি থাকি তাই

তারে ভালো বাসতে হয়

 

বারে বা খুউব ভালো।

আমি দেখলাম পোকার সাথে

খাচ্ছিস তুই ডালও

এই গরমে খাচ্ছিস তুই

পুরাণ কাপড়, শালও

কুমির যেনো ঢুকতে পারে

কাটছিস তুই খালও

 

এই কি বন্ধুর নমুনা?

ভাবছিস তোরে ছেড়ে দিমু

কিছুই আমি কমু না?

 

বাঁশি শুনে মাসী পাগল

আমি পাগল হমু না

তোর চালাকির শিকল আমি

আমার গলে লমু না

১১//২০১৯; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৩

কোথায় আমার বসতবাটি, কোথায় হিজল বন

কোথায় গেল সোনামানিক, কোথায় করিমন?

গরু ছাগল, হাঁস মুরগী কই

কোথায় গেল ডিঙি নাও, কোথায় নায়ের ছই?

চারিদিকে জলের নাচন, জল করে থই থই

 

কোথায় গেল পদ্মদিঘি, কোথায় খাবার পানি?

কোথায় গেল বুড়ো বাপ, কোথায় সাধের নানী?

মন্দির মসজিদ গির্জা গেল কই

কোথায় গেল স্কুলঘর, পন্ডিত স্যারের বই

যেদিক তাকাই শুধু দেখি জল করে থই থই

 

কোথায় গেল মহাজনদের গোপন কানাকানি

কোথায় গেল গুন্ডাগুলোর হাজারো শয়তানী?

মস্তানদের সে দাপট গেল কই

যাদের ভয়ে রই পালিয়ে তারা এখন কই

মরণ ভয়ে ভীতু ছিলাম, সে ভয় গেল কই?

 

কোথায় গেল ধর্মনেতার ভয় দেখানো বানী

গড ভগবান,আল্লা কই, চারদিকে যে পানি

ধর্ম নিয়ে মারামারির পাগলগুলো কই?

বিপদ দেখে যাদের ডাকি তারা এখন কই

আগে তাদের বান্দা ছিলাম, আজ কি বান্দা নই?

 

বন্যা তো নয়, বন্যা তো নয়, খোদার গযব, জানি

খোদার গযব করছে তাড়া তাইতো এতো পানি

আমরা আজও মিথ্যা কই

পাপের পথে যাই হারিয়ে, সুযোগ পেলে ঘুষও লই

এতো পানি দেখলাম তবু নাফরমানি ছাড়লাম কই?

১১//২০১৯; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৪

রাত দুপুরে একলা করে

তেতুলতলা যেয়ো না

শখ করে কেউ তেতুল ভূতের

তাড়া তোমরা খেয়ো না

তেতুলতলা যেয়ো না

 

ভূতটা এমন দুষ্ট যে কেউ

দেখতে গেলে তারে

এমন একটা ভয় দেখাবে

যতটা সে পারে

 

সবাই তখন বলবে বাবা, ছাড়।

ভূত বলবে, না হবে না,

ভাঙবো যে তোর ঘাড়

আমার থেকে ছিনিয়ে  নেবে

এমন সাহস কার?

 

কেউ তো তাই যায় না ভয়ে

ভূতের কাছাকাছি

নাই জিনিসের ভয়ে কাঁপে

দারুণ মশা মাছি

 

এমনি করে স্বৈরাচারও

ভয়ের ভূত নাড়ে

ভয় দেখিয়ে যতটা দিন

টিকে যেতে পারে!

১৩//২০১৯; রাত ৮টি

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৫

রেশারেশী ছেড়ে সবে

মেশামেশী করো

শান্তিতে বাঁচো আর

শান্তিতে মরো

 

স্রষ্টাতো বলেছেন

লোক মারা পাপ

তবে কেন লোক মেরে

পাপ করো বাপ?

 

মুখে মুখে ধার্মিক

কাজ করো উল্টা

বার বার কেন করো

তুমি এই ভুলটা?

 

ভালোবাসো ভালোবাসো

বলে সব ধর্ম

তুমি কেনো পরো তবে

খুনীদের বর্ম?

 

জেনে রেখো খুন করে

গুণী কেউ হয় না

হোক সেটা রাধারানী

হোক সেটা ময়না

১৪//২০১৯; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৬

রত্নগড়ের রত্ন কজন

ভজন বসে গায়

ফাঁকে ফাঁকে ডজন ডজন

আমড়া ছিলে খায়

 

স্বজনরা সব চলার পথে

থমকে ফিরে চায়

যারা শোনে ঠায় দাঁড়িয়ে

তারা মজা পায়

 

রত্নগড়ের রত্ন কজন

ভজন বসে গায়

শুনবি যদি ভজন তবে

রত্নগড়ে আয়

 

পথে পথে বলছে এসব

হেসে কিরীট রায়

গুনে দেখি নজন পোলা

ভজন বসে গায়

 

রত্নগড়ের রত্ন কজন

ভজন বসে গায়

জানি না কী মনে তাদের

ইতিউতি চায়

১৪//২০১৯; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৭

আমার হাল এতো কাহিল

মরবো কখন ঠিক নাই

সবার প্ল্যানে লিক আছে

খোদার প্ল্যানে লিক নাই

 

কায়দা করে বেঁচে যাবো

নাইরে তেমন আশা

কোন কালেই বাঁচেনি কেউ

রাজা ফকির চাষা

 

ডাক্তার ঔষধ রক্ষী দিয়ে

জীবন বাঁচান যায় না

আজরাইলে জান ছাড়া

হাড্ডি গোশত খায় না

 

ঘুষ দিয়ে তো বশ করা যায়

জগত সংসার বিশ্ব

এক পয়সাও ঘুষ খায় না

আজরাইলের শিষ্য

 

সবাই বলে মরণ নিশ্চিত

এতে কোন ভুল নাই

সব নদীরই কূল আছে

মরণ নদীর কূল নাই

১৫//২০১৯; সন্ধ্যা ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৮

কাকা

তুমি এতোই চেনো টাকা?

দুটো টাকা ধার চাইলে

ঠোঁটটা করো বাঁকা

এইডা কেমুন কাকা!

 

পেটটা ভরে খাওনা তুমি

সম্পদ যাবে কমে

কয়দিন বলো বাঁচবা তুমি

ছেড়ে দেবে যমে?

 

পোলা মাইয়া নাই।

মইরা গেলে এ সম্পদ

খাইবো কালা গাই

 

কারুণের ধন পোকায় খায়

কৃপণের ধন বোকায় খায়

১৬//২০১৯; সকাল ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৯৯

খেলতে খেলতে ঠেলতে ঠেলতে

ছড়ড়া হলো বেশ

রাজা উজির মারতে গিয়ে

ছিঁড়লাম কিছু কেশ

আহা, বেশ বেশ বেশ

 

ছড়ড়া লিখলাম নরম নরম

কিছু ছড়ড়া গরম গরম

চরম ছড়ড়া লিখতে গিয়ে

ভয়ে লিখি নাই

আগে কিরে জানতাম আমি

নন্দলালের ভাই!

 

কিছু কথা কইতে গিয়ে

শরম শরম লাগে

জোয়ান কালের কথা শুধু

মনের ভেতর জাগে

 

এন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা

তেলাপোকা ব্যাঙ ধরেঙ্গা

নিশি রাইতে জং করেঙ্গা

বিশ্বজাহান জয় করেঙ্গা

স্বপ্বে রাজা হই

এখন দেখি রাজার বাড়ির

দারোয়ানও নই

 

তারপরেও ছড়ড়া কিন্তু

হয়ে গেল বেশ

পারলে তারে আদর করো

নইলে ছিঁড়ো কেশ

 

নইলে এসো ছড়ড়ার শিন্নি

সবাই মিলে খাই

সেই খুশিতে প্রভুর একটু

গুনগানও গাই

১৬//২০১৯; সন্ধ্যা ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২০০০

ছড়ড়া লেখলাম মন্দ না

কি বলিস তুই চন্দনা?

কিছু আবার ছড়ার নামে

হলো কিশোর কবিতা

ঠিক বলি নাই ববিতা?

 

কিছু গেল হীরার নামে

হীরা নিল চামে চামে

 

আপনাদের যা ছড়ড়া দিলাম

সবই খোদার দান

সঙ্গে আছে আপনাদের

দোয়ার অবদান

 

জীবনভর যা লিখছি ছড়া

এগুলো ভাই তা না

এগুলো ভাই বিছনায় পড়ার

পরের ছড়ার ছানা

 

দু হাজার যে লিখতে পারবো

এমনটা তো ভাবি নাই

ছড়ড়া লেখা থামাবো যে

আমার হাতে চাবি নাই

 

আসুন সবে ছড়ড়ার পায়েশ

মজা করে খাই

যার দয়াতে লিখি ছড়ড়া

তার গুনগান গাই

১৬//২০১৯; রাত ৮টা

No comments

Powered by Blogger.