আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ৩৫০১-৩৬০০
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০১
তবু আমি কানা
লোকে বলে, ভালো ভালো
আমি বলি, না না
চক্ষু আছে দুইটা আমার
তবু আমি কানা।
হইছি আমি মুসলমান ঠিক
হয়নি কোরান জানা
কোনটা আল্লাহর হুকুম আর
কোনটা আল্লাহর মানা।
লোকে বলে, ভালো ভালো
আমি বলি, না না
চক্ষু আছে দুইটা আমার
তবু আমি কানা।
জানি নাতো কোনটা হালাল
কোনটা হারাম খানা
আত্মীয় ও পরশীরা সব
কোন অধিকার পানা।
লোকে বলে, ভালো ভালো
আমি বলি, না না
চক্ষু আছে দুইটা আমার
তবু আমি কানা।
২১/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০২
গজব আসবে
ঘরবাড়ি সব ভেসে গেছে
সর্বনাশা বন্যায়
ভাসেনি তো লোভ লালসা,
ঘৃণা বিদ্বেষ, অন্যায়।
গরুর পিঠে বুড়ি ভাসে,
চালের ওপর ছুড়ি
সর্বনাশা বন্যায় ভাসে
হিজল গাছের গুড়ি।
ডেগের ভিতর শিশুবাচ্চা
ভাসে বানের জলে
ফসলাদি, ছাগল গরু
সবই পানির তলে।
সর্বনাশা বন্যায় ভাসে
স্বপ্ন আশা সব
তাদের কষ্ট কয়টা মানুষ
করে অনুভব।
একদল যায় রিলিফ নিয়ে
অন্যে করে চিট
সে রিলিফও লুট করে খায়
মানুষ নামের কীট।
নৌকা চড়ে ডাকাত আসে
নৌকা চড়ে যায়
ক্ষুধার্তদের রিলিফ নৌকা
কেড়ে কেড়ে খায়।
স্বভাবটাকে ভালো করো
নইলে গজব আসবে
আগুন লাগবে, পুড়বে মানুষ
বানের জলে ভাসবে।
২২/৬/২২। বাদ
ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৩
তুমি যে কার নানা
তুমি যে কার নানা
সবই আমার জানা
রোজ ডিনারে খাচ্ছো তুমি
কোন পাতিলের খানা।
কেনো তুমি আলেম ঘরে
দিচ্ছো বার বার হানা
দেখছে সবই দেশের মানুষ
তারা তো নয় কানা।
পরের ঘরে খাবাদাবা
কেউ করেনি মানা
অতীত সবাই ভুলে গেছে
বিষয়টাও তা না।
বলছে সবাই ভেঙ্গে দাও
স্বৈরাচারের ডানা
জবাই করে খেয়ে ফেলো
লাল মোরগের ছানা।
মনে হচ্ছে এখন তোমার
গণধোলাই পা'না।
তার জন্য তৈরি হচ্ছে
শ্যামল, শুভ, রানা।
২৩/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৪
বাড়ি যা
অধিকারের কথা বললেই, গা জ্বলে
কিছু বললে বুক ভেসে যায় কাজলে।
পরের জিনিস খাইতে মজা তাই কি
সম্পদ কাড়লি, স্বাধীনতাও চাই কি?
গদী দিলাম, নদী দিলাম, পুকুর কেন চাস?
ফসল নিয়ে তবে তুই আলের ঘাসও খাস?
খাবি খা, আস্তেধীরে, নইলে গলায় বাঁধবে
পাতিলে যে কালি আছে নইলে তাও সাধবে।
গলায় যদি আটকে ভাত, দম হবে রে বন্ধ
সিঁড়ির তলে পড়ে থাকবি, বেরোবে রে গন্ধ।
তুই মরলে যে পঁচাগন্ধ জনগণের সইতে হয়
তাইতো এসব খবর আগে তোরে খুলে কইতে হয়।
দেশ খাবি তুই, গ্যাস খাবি তুই,
শেষ খাবি তুই খা
অনেক হইছে খাওয়া দাওয়া এবার বাড়ি যা।
২৩/৬/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৫
তেলমারা
তেলমারা খুব কামের কাম
আয় না সবাই তেল মারি
তেলমারাতে কাজ না হলে
আয় না তারে ঢিল মারি।
ঢিলেও যদি কাজ না হয়
আয় না তারে কিল মারি
ঢাকা থেকে দেই পাঠিয়ে
একেবারে চিলমারি।
দিনের ভোট পারলে আয়
রাতের বেলা সীল মারি
একটা লোকের খুশীর জন্য
হাজার লোকের দীল মারি।
পদ্মাসেতু উদ্বোধনের
আয় না কিছু বিল মারি
তেলমারা খুব কামের কাম
আয় না কিছু তেল মারি।
২৫/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৬
বাবা আদম
বাপের নাম কালাচান
তেরোটা তার পোলাপান
তিনটা মেয়ে দশটা ছেলে
পাঁচটা আবার থাকে জেলে।
একটা দুষ্টের শিরোমনি
চুরি করে দুধের ননী
একটা আবার মস্ত ধনী
নামটি তার আবদুল গনি।
বাপের কোন কাম নাই
খালি করে খাই খাই
বলে, আমার দুঃখ নাই
সকল মানুষ ভাই ভাই।
বাবা আদম সবার বাপ
কথা কিন্তু খাপের খাপ।
এই কথাটা ভুলতে নাই
পরের কথায় ফুলতে নাই।
২৬/৬/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৭
পদ্মাসেতু আমার সেতু
আমার টাকায় আমার সেতু
টোল লাগবে কিসের হেতু
চলবে আমার গাড়ি
যাবো শ্বশুর বাড়ি।
শালী বলবে দুলাভাই
ঘরে কোন মুলা নাই
জলদি করে হাটে যান
যাইতে কইছে শরীফ খান।
আপনে আইছেন বুবু কই
পাইতা রাখছি মইষের দই
কখন যাইবেন কইয়া যান
বুবুর লাইগা লইয়া যান।
আইতে যাইতে দিবেন টোল
বলবেন জয় হরিবোল।
পদ্মা নদীর মাঝি ভাই
পুলে চলো হাওয়া খাই।
পুল বানাবি নিজের টাকায়
টোল ফি দিবি, যাইবি ঢাকায়।
২৬/৬/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৮
হাসবে আলেম, চাষী
উন্নয়নের জোয়ার হবে
মানুষগুলো রোবট হবে
ভুলবে ভালোবাসা
শহর ছেড়ে গাঁয়ে গিয়ে
কাস্তে কোদাল হাতে নিয়ে
আমি না হয় হয়ে যাবো
দাদার কালের চাষা।
এইতো আমার আশা।
বড় বড় উঠবে দালান
ছাদে হবে ভাতের বাগান
শুনতে লাগে খাসা
ছোট ছোট কইতর খোপ
হবে লোকের বাসা
খোপগুলো সব মানুষ দিয়ে
থাকবে ভরা ঠাসা
বাক্সের ভেতর বসে মানুষ
খেলবে খেলা পাশা।
কোন মানুষটা কেমন আছে
দেখবে বসে নাসা।
আমি তখন পল্লী গাঁয়ে
থাকবো বসে বটের ছায়ে
টাটকা ফল খাবো আমি
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাসা
পাখির মত পাতার ঘরে
থাকবে আমার বাসা।
ভূমিকম্পে অট্টালিকা
হবে গুড়ো গুড়ো
খোদার গজব তখন হবে
চূড়ান্ত ও পুরো।
মরবে মানুষ লাখে লাখে
পুড়বে পাপের নগর
গাঁয়ে তখন ফুটবে গোলাপ
জুঁই, চামেলি, টগর।
সেই আশাতে শহর ছেড়ে
গাঁয়ে চলে যাবো
অভাব হলে বাঁচার জন্য
গাছের পাতা খাবো।
উবে যাবে সবার মুখের
দাঁত কেলানো হাসি
ভুলে যাবে বলতে মানুষ
তোমায় ভালবাসি।
মরে যাবে চালাক চতুর
বাঁচবে বোকা চাষী।
সেদিনটাতো মাথার ওপর
করছে আসি আসি।
আলেম ধরে নাও না জেলে
দাও না যতোই ফাঁসি
শেষ হাসিটা হাসবে আলেম
এবং বোকা চাষী।
২৭/৬/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫০৯
যদি আপনি বাঁচতে চান
কোথায় দেখলে বানের পানি
কোথায় দেখলে আগুন
এর সবইতো খোদার গজব
স্বপ্ন থেকে জাগুন।
তাকিয়ে দেখুন দেশটা জুড়ে
চলছে পাপের বান
তাইতো এতো বিপদ থেকে
পান না পরিত্রাণ।
যেমন কর্ম তেমন ফল
ছোট কালে পড়েন নাই
তবে কেন ভালো পথ
সেদিন থেকে ধরেন নাই?
মন্দ লোকের সরদার কভু
ভালো লোকে হয় না
যারা বুঝে তারাও এসব
সাহস করে কয় না।
রোগই ছড়ায় স্বাস্থ্য কিন্তু
অযুধ ছাড়া যায় না
দেশ ভাল চান? আগে দেখেন
খুুলে নিজের আয়না।
যে করে পাপ তারে ধরেন
পাপ ছেড়ে দেন নিজে
গজবে আর মরবেন না
সকাল বিকাল ভিজে।
আপনি হাত দেন আগুনে
হাত তো আপনার পুড়বেই
আসমান থেকে নিত্য নতুন
গজব খোদা ছুড়বেই।
গজব থেকে বাঁচতে চান?
তবে আগে পাপ কমান।
২৭/৬/২২। দুপুর ১২ঃ০০ টা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১০
স্বপ্নবাড়ি
কোথায় আমার স্বপ্নবাড়ি, কোথায় আমার ঘর
বাপের ভিটায় চাইয়া দেখি শূন্য চরাচর।
মাবাপ হারা এতীম শিশু, উদাস মনে কাঁদে
উথলে ওঠা শোকের জোয়ার কেমন করে বাঁধে?
কোথা থেকে আসলো উড়ে প্রত্নতাত্তিক ঝড়
কোথায় গেল বসতভিটা, ভাঙলো কে অন্তর।
কোথায় আমার লিচুর বাগান, কোথায় বাদাম গাছ
কোথায় আমার বিলের ক্ষেতে কিলবিল করা মাছ।
সবুজ শ্যামল গাঁও যে আমার এখন হৃদয়হীন
মা ফুফুদের আদর ছাড়াই এখন কাটে দিন।
বড়গাঁওয়ের বাপ চাচাদের হৃদয় ছিল বড়ো
এখন সেসব মায়ার বাঁধন সবই নড়বড়।
মুন্সীবাড়ির তমিজ নাই, বাদুরে পা চাটে।
হাহাকারের পেত্নী এখন বাড়ি জুড়ে হাঁটে।
এই আছি তো এই নাই আমি, কিসের বাড়িঘর
আমার দিকে তাকিয়ে আছে অন্ধকার কবর।
সবার কাছে আর কিছু না, একটু দোয়া চাই
পাড়াপড়শি দেশের মানুষ দোয়া করিস ভাই।
২৭/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১১
ঈর্ষা
আপনি এতো ভালো লেখেন
ঈর্ষাতে তাই জ্বলি
আপনি অনেক ভালো লেখেন
কেমন করে বলি?
আপনি লেখেন ভালো লেখা
যদি আমার কইতে হয়
আপনি বুঝেন তবে আমার
কেমন প্যারা সইতে হয়?
সত্যি কথা বলতে কি,
আমি আপনার ভক্ত
এই কথাটা মুখ ফুটে
বলা বড়োই শক্ত।
তাইতো দেই না লাইক কমেন্ট
চুপি চুপি পড়ি
এতো ভালো কেমনে লেখেন
ভেবে ভেবে মরি।
চারিদিকে এমনিতেই
আপনার খালি নাম ফাটে
যতো দেখি ততোই জানেন
আমার খালি বুক টাটে।
আপনার লেখা তাই ছাপি না
আমার পাতায় ভুলেও
আর ছাপবো না যদি চড়ান
আপনি আমায় শূলেও।
নিজের পায়ে কুড়াল মারবো,
আপনে মিয়া ভাবেন কি
তারচে আসুন নাস্তা করি
সঙ্গে চা -ও খাবেন কি?
মৃধা বাড়ির মিয়া চান
চা-টা খেয়ে বাড়ি যান।
২৮/৬/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১২
কান্তার চাচা
কান্তার চাচা হয় শান্তার মামা
তার খুব পছন্দ ডোরাকাটা জামা।
সারাদিন জামা পরে গায় সারেগামা
মাঝে মাঝে হেঁকে বলে, কে বলেরে থামা?
কান্তার চাচা হয় শান্তার মামা
লোকজন যত বলে, থামা গান থামা
মামা কয় দেশটারে করে দেবো তামা।
হাতে হাতে তুলে দেবো সব আমলনামা।
কান্তার চাচা হয় শান্তার মামা
কভু দেয় বুক ডন, কভু দেয় হামা
চুরিদারি সব সই, মালপানি কামা
তারপর চল খাই, খই ধামা ধামা।
খই খায়, গান গায়, কান্তার চাচা
তার জ্বালাতনে হায় যায়নারে বাঁচা।
২৮/৬/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৩
একটা জিনিস নাই
গায়ে আমার শক্তি আছে
মাথায় আমার বুদ্ধি আছে
একটা জিনিস নাই
সেই জিনিসের অভাবে ভাই
লাত্থিগুতা খাই।
কেউ আমারে বাঁচায় কিনা
এদিক ওদিক চাই।
সেই জিনিসটা থাকতো যদি
আমার হাতে থাকতো গদী
বইতো স্রোত নিরবধি
গঙ্গা যমুনায়
সেই জিনিসের থাকলে অভাব
কেমনে গদী পায়।
সে জিনিস না থাকলে সাথে
চান্দা মাছও পায় না পাতে
পুটি মাছে ধরে তখন
ইলিশ বোয়াল খায়
নওয়াব সাহেব ভিক্ষা করতে
ফকির বাড়ি যায়।
বুকে আমার সাহস নাই
বীর পুরুষ তুই না হস নাই
তিনশ টাকার সাহস কিনতে
সিঙ্গাপুরে যাই
বলতে পারিস কোন মার্কেটে
একটু সাহস পাই?
২৮/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৪
আলোর ভেলা
খোকন সোনা চাঁদের কণা
ঘুম যে গেল টুটে
রাত্রি শেষে পূব আকাশে
আলোর রেখা ফোটে।
পাড়ার ছেলে দল বেঁধে সব
বাদামতলা জোটে
সেখান থেকে রিকসা নিয়ে
স্কুলে রোজ ছোটে।
দেখতে সবাই ছেলে মেয়ে
সে কিরে ফুটফুটে
কোথায় গেল হীম রাত্রির
আঁধারটা ঘুটঘুটে।
পড়া যেন মজার খেলা
কেউ হারে কেউ জিতে
কেউ পরেছে শীতের জামা
কেউ কাঁপে এই শীতে।
সূর্যিমামার হাতে তখন
ওমের ডালা ফোটে
সে ওম নিতে কিচির মিচির
পাখপাখালি ছোটে।
জীবন আবার শুরু যে হয়
আসলে নয়া ভোর
আলোয় আলোয় ভরে উঠুক
সারা জীবন তোর।
একটা জীবন পার করে দে
আলোর ভেলায় চড়ে
সে জীবনে মিথ্যা কভু
ভর যেন না করে।
২৯/৬/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৫
বকুল ফুলের মালা
বকুল ফুলের মালা
জাগায় মনে জ্বালা
সে ফুল দিয়েই করলে তুমি
আমায় উতলা।
ওগো রূপের বালা
মনটা ঝালাপালা
এ ফুল দিয়ে আমার মনে
কাটলি প্রেমের নালা।
এ প্রেম তো যায় না রোখা
মেরে হাজার তালা।
বকুল ফুলের মালা
রেখেছিলাম লুকিয়ে তবু
দেখে ফেললো খালা।
বললো আমায় ঠিক করে বল
কে দিয়েছে মালা?
মালাতো নয়, কে দিয়েছে
তোরে প্রেমের ডালা।
বকুল ফুলের মালা
আজো সেসব ভুলিনি তো
স্মৃতি বড় জ্বালা।
কারো কাছে স্মৃতিই আবার
প্রেম কুসুমের মালা।
২৯/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৬
আমিও ঘুষ চাই
বাবা,
লোকে বলে, তুমি ঘুষ খাও,
আমায় কেনো দাও না
তোমার মতো আমি ঘুষ খাই
তুমি কি চাও না?
বাবা বলে, নারে বাবা,
ঘুষ খাবি না তুই
লেপের নিচে জলদি আয়
আমরা এখন শুই।
বাবা,
আমায় কেন করলে তুমি
ঘুষ খাইতে মানা
ঘুমের আগে সেই কথাটা
দরকার খুব জানা।
শোন তবে, ভালো যারা
ঘুষ তো তারা খায় না
মাসের শেষে তারা পায়
আপন কাজের মায়না।
তুমি তবে লোক ভালো না
নাকি মায়না পাও না?
নাকি মায়না ঠিকই পাও
ভালো হতে চাও না?
ঘুষ কি বাবা জুসের মতো
মিষ্টি নাকি ঝাল?
আজকে ঘুমা, তোর এ প্রশ্নের
জবাব দেবো কাল।
কাল না বাবা, জবাব আমি
আজকে রাতেই চাই
নইলে দেখবে কালকে থেকে
আমিও ঘুষ খাই।
৩০/৬/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৭
বেশতো
বেশতো
চোরে চোরে ভরে গেছে
শহর ও গাঁও, দেশতো।
চুরি করছে হাত ও পা
চুরি করছে কেশতো।
বেশতো।
বেশতো
চুরি করে হাসছে মামা
নাই শরমের লেশতো
যে যা পারে করছে চুরি
নাই যে চুরির শেষতো।
বেশতো।
আমার লেখা চুরি করে
কেউ তাতে দেয় সুর
চুরি করা সে সুরেই তো
শিল্পী থাকে চুর।
শিল্পীর ধন প্রডুসার খায়
রয়্যালিটি কই
আমরা সবাই খেতে ওস্তাদ
হরিলুটের দই।
সবই করি দ্বীনের নামে
লুটপাট, চুরি, সব
আরো চুরির দাবীতে
আমরা তুলি রব।
হক মেরে খাই লেখকের
মুছে দেই তার নাম
হক মেরে খাই সুরশিল্পীর
তবু নাই বদনাম।
পরের ধনে পোদ্দারী সব
দ্বীনের নামে করি
দ্বীনের নামে আমরা এক
চোরের সমাজ গড়ি।
বেশতো
কপিরাইট আইন তুলে দিতে
দাবী করি তাই
আমরা সবাই চোর বাবাজীর
মাসতুতু সৎ ভাই।
৩০/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৮
বন্ধু তুমি কান্দো
ব্যবসা করা হালাল বন্ধু
চুরি করা পাপ
এই কথাটা বুঝার বয়স
হয়নি আজো বাপ?
কেমনে তবে চোরের পক্ষে
সাফাই তুমি গাও
হালাল রেখে হারাম তুমি
সাপোর্ট করে যাও?
আবেগ যদি তোমায় বন্ধু
পাপের পথে টানে
বিবেক যেন তখন বন্ধু
তোমায় পথে আনে।
নবী ছাড়া কেউ কখনো
মডেল হতে পারে না
শয়তান যেন তোমার বিবেক
ধরে কভু নাড়ে না।
আবেগটাকে বিবেক দিয়ে
জলদি তুমি বান্ধো
আল্লাহ যেন ক্ষমা করেন
বন্ধু তুমি কান্দো।
৩০/৬/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ৩৫১৯
জলঢাকা বন
নদীটার নাম ছিল জলঢাকা বন
তার ছিল একটা আধাপাকা মন
সেই মনে দুখ ছিল,ছিল শিহরণ
সুখ ছিল পাড়ভাঙা নদীর মতন।
তিরতির ভেসে যেতো ভেজা রাজহাঁস
আর যেত ভেসে ভেসে ভেজা নিঃশ্বাস
ভেসে যেতো ভেজা ভেজা রঙধনু রঙ
ভেসে যেত আমাদের প্রেমের আড়ং।
বিরহী বিলাপ ভাসে দুখিনী ডেরায়
চাপ চাপ সুখ তবু বাতাসে বেড়ায়।
এইভাবে কেটে যায় সফরের দিন
রাতজাগা চাঁদভাসে আকাশ রঙিন।
নদীটার নাম ছিল জলঢাকা বন
যেই বনে ছিল প্রিয় প্রেম শিহরণ।
১/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২০
কাঁচকলা
লালনের গান লালন গীতি
শিল্পীর গীতি হয় না
নজরুলের গান নজরুল গীতি
লালন গীতি কয় না।
যে লেখে গান তার মালিক সে
সুরের মালিক সুরকার
এখন দেখি পাল্টে গেছে
উল্টাপাল্টা সব কারবার।
শিল্পী এখন গানের মালিক
তারচে মালিক প্রডিউসার
গুন্ডাপান্ডা জমির মালিক
তারচে বড় চড়নদার।
গীতিকারের নাম থাকে না
গান চলে যায় নেটে
গান লেখে কি লাভ হয় বলো
সারাটা রাত খেঁটে।
গীতিকার পায় কাঁচকলা
সুরকার পায় ছিলা
যে যেখানে চোর খুঁজে পাস
তারে ধরে কিলা।
১/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২১
আইনের কথা
আইনের কথা বলবে উকিল
জানা কথা আমরা
ভুল বললে ভাই তুইলেন না
আমার নরম চামড়া।
জীবন চুক্তি বারো বছর
এরপরে তা শেষ
আদালতে যতই খুঁজেন
পাবেন না তার লেশ।
লেখার মালিক লেখক জানি
মেধাস্বত্ত্ব তার
লাভের অংশ ঠিকই পাবেন
যিনি ব্যবসাদার।
গীতিকার তো গানের মালিক
মেধাস্বত্ত্ব তার
তাইতো গানের রয়্যালিটি পায়
গানের গীতিকার।
লাভ লস পান ব্যবসাদার
যিনি প্রডিউসার
এটাই ব্যবসার নিয়ম দাদা
শোনেন সমাচার।
কপিরাইটের আইনটা এমন
যতটুকু জানি
ঝগড়া রেখে আসুন সবাই
আইনের কথা মানি।
আইন না মেনে যা করবেন
সবটাই মামা চুরি
মাসয়ালা মামা যতই ঘুরান
যতই বাড়ান ভুঁড়ি।
১/৭/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২২
ঘোড়ার আন্ডা
নাস্তিক যতোই করুক অলীক বায়না
নিজের দাঁতও দেখতে লাগে আয়না।
আয়না ছাড়া দাঁত দেখতে যে পায় না
কোথা পাবে আল্লা দেখার সে আয়না?
ভূত নাই তবু ভূতের ভয়ে যখন তুমি মরো
দৃষ্টিশক্তির বড়াই তবে কেন তুমি করো?
যা দেখি না তা মানি না এসব বলে ভন্ড
এসব বলে মুর্খরা সব, যারা অপোগন্ড।
কে দেখেছে কওতো দেখি, কবে ঘোড়ার আন্ডা?
খোদা আছে প্রমাণ চায়, সে কোন অবুঝ পান্ডা?
এসব নিয়ে তর্ক করে সময় করলে নষ্ট
মনে রেখো তবে তোমার পাপই হবে পষ্ট।
৩/৭/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২৩
বিষন্ন ভাবনা
তোমার ছিল হোমার পড়ার
অদ্ভুত এক বাতিক
দেখা হলেই বলতে তুমি,
হোমার আছে, আতিক?
যদি বলতাম, নাই।
তুমি বলতে, অমা একি!
হোমার পড়ো নাই?
বাইরে গেলেই মাঝে মাঝে
তুমি কিনে আনতে-
কীটস, হোমার, বায়রণ
আরো আনতে দান্তে।
যেবার গেলে তুর্কি
আমার জন্য আনলে কিনে
টলস্টয় ও গোর্কি।
মনে আছে, মা পাঠাতো
আচার ভরা বৈয়াম?
মজা করে খেতে খেতে,
বলতে পড়ো খৈয়াম।
যে বার এলো দাদী-
ইরাণ থেকে আনলে তুমি
জামী, রুমী, সাদী।
বই পড়া যে তোমার ছিল
দারুণ রকম হবি।
বলতে তুমি আগে পড়ো
নজরুল, ফররুখ, রবি।
পড়া ছাড়া তোমার মুখে
আর কি কোন কথা নাই
জাপান থেকে আনতে কিনে
নাওমি শিহাব নাই।
আজ তুমি নাই, জামী, রুমী নাই
পড়ালেখা সব বন্ধ
এ জাতির সব প্রতিভাগুলো কি
অচিরেই হবে অন্ধ?
৩/৭/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২৪
বেদনার বালু
ভালো ছিল ছোটবেলা আলোময় দিন
আলো ছিল মনোরম, অপূর্ব রঙিন।
স্বজনের হাত ছিল আদরের হাত
রাত ছিল তারাভরা আসমানী রাত।
পড়ালেখা, খেলাধুলা, স্মৃতিময় দিন
ভালো ছিল ছোটবেলা, স্বপ্নরঙিন।
বড়ো হবার স্বপ্ন ছিল, হবো মানবিক
প্রেম দিয়ে ভরে দেবো আমি দশদিক।
মুছে দেবো সকলের কান্না আর দুখ্
ঘরে ঘরে এনে দেবো হাসি আর সুখ।
কই গেল সেইসব স্মৃতিমাখা দিন
কই গেল সুখস্মৃতি, স্বপ্ন রঙিন।
কই গেল ভালবাসা, আশা মানবিক
আজ বুকে বেদনার বালু চিকচিক।
৪/৭/২২। বাদ
ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২৫
যে রোগের যা অষুধ
আপনারা যে এত লেখা
কেমন করে পড়েন?
লেখা পড়ে আবার দেখি
ভাল ভাল করেন।
কজনে সে লেখা পড়ে
নিজের জীবন গড়েন?
তাইলে এসব ভাল লেখা
লিখে বলেন লাভ কি?
এসব কথা আমল করবে
শুধু ইমাম সাব কি?
সমাজ ভাল না হলে ভাই
গযব আসা থামবে না
আকাশ থেকে খোদার রহম
অঝোর ধারায় নামবে না।
খালি কথায় চিড়া ভিজলে
পানি কিন্তু লাগতো না
মন্দ কাজে সমাজটা যে
বেহুশ হয়ে থাকতো না।
চোর না শোনে ধর্মকথা,
চুরি বার বার করে
ধর্মের কলতো বাতাস এলে
এমনি এমনি নড়ে।
মারের ওপর অষুধ নাই, শাস্ত্রবিধি কয়
এ অষুধে মন্দ সমাজ ঠিকই ভালো হয়।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২৬
পাপ ছাড়ে না বাপকে
পাপ ছাড়ে না বাপকে মামা
পাপ ছাড়ে না বাপকে
পিঠের চামড়া তুলে নেয় সে
সময় মতো চাবকে।
পাপ ছাড়ে না বাপকে।
রাজার পাপে রাজ্য ডুবে
প্রজার পাপে পাড়া
তোরা যখন পাপ করিস
পাপ বলে তুই খাঁড়া
পাপ বৃক্ষে পাপ পাকতে দে
তখন দেবো নাড়া।
আসবে তুফান আসবে ঝড়
আসবে বান বুড়ির চর
রে পাপী তুই ডুবে মর
সঙ্গী পাবি সহচর।
আমায় দেখে বলিস নারে
কৌন হ্যায় হুজুর, আপ কে
পাপ ছাড়ে না বাপকে।
আসে আগুন আসে পানি
রাজ্য জুড়ে রাহাজানি
ডুবে নদী, ডুবে গদী
সঙ্গে ডুবে পাপী বদি।
দুধ কলাতে তাই পুষতে নাই
কোন কালে সাপকে
পাপ ছাড়ে না বাপকে।
ছাড় দেয় আল্লাহ ছাড়ে না
আল্লাহ কভু হারে না
মশা মাছি মারে না
যে দেখেছে অগ্নিসাগর
সে দেখেছে তাপ কে
পাপ ছাড়ে না বাপকে।
পাপ ছাড়ে না বাপকে মামা
পাপ ছাড়ে না বাপকে
পিঠের চামড়া তুলে নেয় সে
সময় মতো চাবকে।
৫/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২৭
আষাঢ় মাসে বৃষ্টি নাই
আষাঢ় মাসে বৃষ্টি নাই
এদিক জাতির দৃষ্টি নাই
রাজাকারের লিস্টি আছে
শহীদ কারা লিস্টি নাই।
হায় দুর্ভাগা জাতি রে
তোরা যে কার নাতি রে?
যুদ্ধে যারা মারা গেছে
তাদের কিরে ইস্টি নাই?
যারা মরছে যুদ্ধে তাদের
লিস্টি করে লাভ কি?
ভাগ্যে ছিল মরণ তাদের
তারা আমার বাপ কি?
মরা লোকের কিবা কাম
কে দেয় বলো রক্তের দাম।
চাষাভূষার পোলাপান
মাথায় তুলে লাভ কি?
সিংহাসনে পেঁচা নাচে
দেখো তাদের ভাব কি?
কারা থাকে ওপর তালায়?
মীর কি তবে রাষ্ট্র চালায়?
সিংহাসনে বসা যারা
তারা জাতির সাপ কি?
আষাঢ় মাসে বৃষ্টি নাই
এদিক জাতির দৃষ্টি নাই
রাজাকারের লিস্টি আছে
বীর শহীদের লিস্টি নাই।
ইস্টিশানে মিষ্টি নাই
আষাঢ় মাসে বৃষ্টি নাই
শহীদানের লিস্টি নাই
এদিক কারো দৃষ্টি নাই।
৫/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫২৯
দোহাই ওরে সোনা বাপ
আমি যতোই কান্দি মামা
গযব তাতে থামবে না
আমার চোখের কান্না দেখে
বানের পানি নামবে না।
আসবে গযব পুড়বে ঘর
পুড়বে সঙ্গে নারী নর
চকবাজার ও সীতাকুণ্ড
পুড়বে প্রাণীর মাথামুণ্ড।
বলবে এসে করোনা
তোমরা পাপ আর করো না
নইলে--
নয়া গযব আসবে
লাশের মিছিল ভাসবে।
পাপের সয়লাব যত রবে
এসব গযব ততো হবে।
দোহাই ওরে সোনা বাপ
এবার তোরা থামা পাপ।
৬/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩০
তুমি মন্দ ছাড়ো
বলছি তুমি মন্দ ছাড়ো
তবু ছাড়ো না যে
জানতাম তুমি ভাল ছেলে
তুমি এমন বাজে?
কি আর বলবো তোমায়
থাকবে যখন কোমায়
ভাল হতে চাইলেও তা
লাগবে নাতো কাজে।
ভাল হওয়ার সময় বয়ে যায়
ভাল হওয়ার জন্য ছুটে আয়
মন জুড়ে থাক প্রশান্তি তোর
সকল কাজের মাঝে।
জানতাম তুই আসবি ফিরে
বইবে সুবাস তোকে ঘিরে
তোর মত এক ভাল ছেলের
মন্দ থাকা সাজে?
৮/৭/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩১
মিথ্যা মুক্ত সমাজ চাই
মিথ্যা কথা সইতে নাই
পাপের বোঝা লইতে নাই
মিথ্যাবাদী পারে না
এমন পাপ আর নাই।
মিথ্যা হলো পাপের রাজা
ধরা পড়লে পায় সে সাজা
তাই সকলে মিথ্যাবাদীর
বিনাশ আয়রে চাই।
সমাজ থেকে মিথ্যা দূর
যাক হয়ে যাক, ফুটুক নূর
মিথ্যাবাদীর বিনাশ হোক
আয় সকলে গাই।
মিথ্যা মুক্ত সমাজ চাই
এ ব্যাপারে আপস নাই।
৯/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩২
আষাঢ় মাসে
আষাঢ় মাসে বাসার ভেতর
পানি ছল ছল করে
বানের পানি হু হু করে
ঢুকছে থাকার ঘরে।
টেংরা পুটি খাটের ওপর
এঘর থেকে করছে ওঘর
সোনার সংসার থালাবাটি
ভাসছে থরে থরে।
টাকা পয়সা, সোনাদানা
দেয় না তারা পেটের খানা
টিনের চালে বানে ভাসা
মানুষ উপোস করে।
সরকার ওড়ায় রঙিন বাতি
পদ্মা সেতুর উপরে
গাড়ি থেকে নামে তারা
নানা রঙের স্যু পরে।
বাঘা বাঘা নেতারা সব
দাওয়াত খেতে যায়
বানে ভাসা মানুষগুলো
হাবডুবু খায়।
এইতো দেশের হাল অবস্থা
মানবতা কই
মানবতার ফেরিঅলা
খুঁজছে খুলে বই।
হায়রে আজব দুনিয়া
কয়টা মানুষ মারা গেল
কে দেখে তা গুণিয়া।
৯/৭/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৩
বানভাসিদের ঈদ
তোমরা করছো ঈদ।
আমরা ভাসি বানের জলে
নাইরে চোখে নিঁদ।
নাইরে পেটে ভাত।
ক্ষুধায় কাটে রাত।
কোথায় গেল গর্ব আমার
কোথায় গেল জিদ।
কোথায় গেল ব্যবসাপাতি
কোথায় দোকানপাট
ফকিরের চে অধম দেখি
যারা ছিল লাট।
সোনাদানা দেয় না খানা
খাবার পানি নাই
একটুখানি খাবার পানি
কোথা গেলে পাই?
মাবুদ মাওলা রহম করো
আমরা পানাহ চাই
তুমি ছাড়া অধম বান্দার
আরতো কেহ নাই।
তোমরা করছো ঈদ।
আমরা ভাসি বানের জলে
নাইরে চোখে নিঁদ।
১০/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৪
গাছবিড়ালের দেশ
চোখ যে আমার কেন আজো
হলো নারে অন্ধ
কতো দেখবো নিষ্ঠুরতা
কতো দেখবো দ্বন্দ্ব।
কান যে আমার কেন আজো
হলো নারে বধির
কতো শুনবো দাপট আমি
বিকট পাষাণ গদীর।
মরলো কজন আপন স্বজন
ক্রসফায়ারে মরলো কজন
সেই চিন্তায় মন কেন রে
হচ্ছে আজো অধীর।
বিবেক সাহেব রাত দুপুরে
হু হু করে কান্দে
কোথায় আমার সোনামানিক
ফিরবে কবে চান্দে।
নিষ্ঠুরতা দেখবি যদি
আমার দেশে আয়
বাঘের বাচ্চা ধরে ধরে
গাছবিড়ালে খায়।
১২/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৫
আতু লাতু ফাতুর বাপ
আতু লাতু ফাতুর বাপ
চা খায় দিনে তিরিশ কাপ
লাগলে পেটে বেজায় চাপ
পুকুরে দেয় জোরে ঝাপ।
দড়ি রে কয় কেউটে সাপ
চিল্লায় জোরে বাপরে বাপ
তলোয়ার কই, ফাঁকা খাপ
যায় না সওয়া অগ্নি তাপ।
আতু লাতু ফাতুর বাপ
চা খায় দিনে তিরিশ কাপ
ছাড়তে বলে মিথ্যা, পাপ
নিজেও করে অনুতাপ।
১২/৭/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৬
বুঝতে বাকি
ইলিশ এখন জেলপুকুরে
দেশ তো চালায় ঝাটকায়
বন্যার্তদের রিলিফ দিতে
ওরাই তো পথ আটকায়।
ওরা ঘুরে কপ্টার চড়ে
কেমনে মানুষ ভাসে
ডুবন্ত সব মানুষ দেখে
ওরা মিটমিট হাসে।
পানির নিচে ঘরের চাল
এই যখন হয় দেশের হাল
তারা তখন উড়াল দেয়
থাকে না আর পাশে।
পদ্মাসেতু ঘুরতে যায়
সিলেট যখন ভাসে
সেল্ফি তুলে তারা দেখি
গর্বের হাসি হাসে।
পাশে থাকে হুজুরের দল
দেয় বিপদে ভরসা ও বল
তবু তোমার বুঝতে বাকি
কে কারে ভালোবাসে?
বানের জলে দেশ ভাসে
পাষাণ তবু বেশ হাসে।
১৩/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৭
বিপ্লব চলবেই
যুগে যুগে বিপ্লব চলবেই
জনগণ হক কথা বলবেই
রোদ এলে বরফটা গলবেই
যুগে যুগে বিপ্লব চলবেই।
বিপ্লবী সেনাদল আসবেই
রাজপথ লালখুনে ভাসবেই
জালিমের বোকামীতে জনতা
অবশেষে প্রাণ খুলে হাসবেই
বিপ্লবী সেনাদল আসবেই।
জালিমতো পারবে না দমাতে
জনতার বিক্ষোভ কমাতে
জালিমের লালচোখ পারবে না
নিপীড়িত জনতা তো হারবে না।
বুলেট, কামান ছুটে আসবেই
রাজপথ লাল খুনে ভাসবেই
যুবকেরা অন্যায় নাশবেই
মুক্তির পতাকাটা হাসবেই।
হাসবেই, হাসবেই, হাসবেই।
জনগণ প্রাণপন লড়বেই
পথে পথে বেরিকেড গড়বেই
জালিমের টুটি চেপে ধরবেই
লড়বেই, মারবেই, মরবেই।
জনগণ প্রাণপন লড়বেই।
জালিমের বিষদাঁত ভাঙবেই
রণসাজে জনগণ রাঙবেই
যুগে যুগে বিপ্লব আসবেই
শহীদের খুনে দেশ ভাসবেই।
জনতারা আক্রোশে ফুলবেই
জয়ধ্বনি জনগণ তুলবেই
পদভারে রাজপথ দুলবেই
জনতারা আক্রোশে ফুলবেই।
যুগে যুগে বিপ্লব চলবেই
জনগণ হক কথা বলবেই
মুক্তির এ মিছিল চলবেই
চলবেই, চলবেই, চলবেই।
জনগণ হক কথা বলবেই।
১৩/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৮
রাজা রানীর সফর
ইয়ে,
শুনেছিলাম মঙ্গলবারে রাজকুমারের
বিয়ে!
বরযাত্রী সঙ্গে যাবে হাজার খানেক
টিয়ে।
মন্ত্রী যাবে, সেপাই যাবে,
মিষ্টি হাঁড়ি
নিয়ে।
ইয়ে,
দেখবে নাকি
গিয়ে
পিঠা কি সব তেলে ভাজা নাকি ভাজা
ঘিয়ে?
ইয়ে,
আরো শুনি, দই করেছে ভেজা লবণ
দিয়ে।
দেখবি নাকি রাজমহলের পায়েশ একটু
পিয়ে?
বললো হেসে
নফর
বিয়ে নয় গো, ওটা হলো রাজকীয়
সফর।
মন্ত্রী নয়, সঙ্গে যাবে রানীর তিনশো
নফর।
চুল বাঁধবে তিরিশ জন, কান চুলকাবে
বিশ।
রানী বলবে, কে আছিস, পা টা টিপে
দিস।
দাদা,
এই সফরে বোঝা বইবে হাজার খানেক
গাধা।
ভ্যাট না দাদা, তিনশ টাকা প্রতি প্রজার
চাঁদা।
ওই যে দেখো, হাতির পিঠে উড়ছে নিশান
সাদা।
১৫/৭/২২। বাদ জুমা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৩৯
কামাল মিনা
কামাল মিনা
বাজায় বীণা
ধীনাক ধীনা
হুররে।
কন্ঠ বীণায়
কামাল চিনায়
আল্লাতালার
নূর রে।
মনের কোণায়
আরো শোনায়
নবী নামের
সুর রে।
কি চমৎকার
কন্ঠ তাহার
সুরের বাহার
হুররে।
১৫/৭/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪০
তেলমারা ছাড়ো
সব লেখাতে চমৎকার
তেলমারাতে অমৎকার
দোষ বললে কেউ সয়না
তাই কেউ দোষ কয় না।
পাঞ্জাবীটা সাদা
লেগেছিল কাদা
কয়নি সেটা কেউ
সেই ছবিটা দেখে দাদা
উঠলো কেঁদে 'ভেউ'।
তোমরা যারা ভুল ধরলে
সাপের মতো ফোঁস করো
তারাই দেখি যখন তখন
মন্দ বলার দোষ করো।
তেলমারা আর দোষ ধরা
এবার দাদা বাদ দাও
হক কথাটা বলার জন্য
নাও, এবারে হাত দাও।
১৬/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪১
পশুও পায় ভয়
ভেবেছিলাম মানুষ আমি পরে দেখি ভুল
আমার মত গাধার মাথায় আছে বহু চুল।
আমার আছে দুটো পা, মুরগীরও পা দুটো
আমার মত হাঁসেরও নাকটা দেখি ফুটো।
গায়ে কাপড় কেউ পরেনা, কুত্তা বিলাই কেউ
আমারও গায় লেগে গেছে কাপড় ছাড়ার ঢেউ।
পশু যেমন খাবার সময় হালাল হারাম দেখে না
মানুষরাও যা পায় খায়, হালাল খেতে শেখে না।
কাক মরলে দুঃখে করে কাকেরা সব কান্না
মানুষ পায়না দুঃখ মোটে চড়ায় ওরা রান্না।
দয়া মায়া, ভালবাসা, সবাই গেছে বনে
মানুষ আজ সময় দেয় যুদ্ধ এবং রণে।
মানবতা ভোটে হারে পাশবতা পায় জয়
তাইত এখন মানুষ হতে পশুও পায় ভয়।
১৬/৭/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪২
ভাল হতে ইচ্ছে লাগে
ভাল হতে ইচ্ছে লাগে
আর তো কিছু লাগে না
কিন্তু মামা ভাল হওয়ার
ইচ্ছেটাই যে জাগে না।
আমায় বলো ভাল হতে
তুমি হবে কবে?
একলা আমি ভাল হবো
নাকি হবে সবে?
ভাল হতে কপাল লাগে
সব কপালে লাগে না
কতেক মানুষ ভাল হয়
তবে মরার আগে না।
মরার পরে ভাল হলে
তাতে কোন লাভ নাই
মরার পরে রাজা উজির
কারো কোন ভাব নাই।
১৭/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৩
মন্দ থামাও আগে
ভাল কথা শুনতে ভালো
মানতে ভাল লাগে না
ভাল কথা মানার ইচ্ছা
মনের ভেতর জাগে না।
কি লাভ রেখে এমন মন
দাও না তারে নির্বাসন
মন্দ কাজটা দেখে এ মন
কেনো বলো রাগে না।
মন্দটারে জব্দ করতে
বিবেকটারে ডাকো
সারা জীবন মন্দের সাথে
যুদ্ধ করতে থাকো।
লড়াই তুমি থামাও তবে
মন্দ হারার আগে না।
ভাল কাজে মন লাগাও
মন্দটা দাও থামিয়ে
মন গাড়িতে মন্দ থাকলে
দাও না তারে নামিয়ে।
মন্দটারে কেউ নিও না
আস্ত কিম্বা ভাগে না।
১৭/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৪
পর্দা ও জর্দা
পর্দা মানা ফরজ।
জানি, এটা সবাই জানেন
বলেন দেখি কজন মানেন
কজনের হয় এটা মানার,
আমল করার গরজ?
পর্দা মানা ফরজ।
জানেন তবে বলেন দেখি
ক্যান করেন না গরজ?
আমল ছাড়া ঈমানের দাম
বলেন তো তার কি আছে কাম?
আগে সবাই ফরজ ধরেন
পারলে পরে নফল পড়েন।
কোরান বলে পর্দা ফরজ
আপনে বলেন জর্দা ফরজ
জর্দা খাওয়া বাদ দেন
পর্দা করায় হাত দেন।
১৭/৭/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৫
কেয়ামত ও খেলাফত
আকাশটা টলছিল
এ হৃদয় জ্বলছিল
পাহাড়টা গলছিল
সাগরটা চলছিল
পৃথিবীটা কাঁপছিল
বাতাসেও তাপ ছিল
উড়ছিল বাড়িঘর থরথর
মরছিল পাখি ফুল তরতর।
কেয়ামত কেয়ামত কেয়ামত
আসবেই ভুলে গেলে নেয়ামত।
নদীগুলো উড়ছিল
গদীগুলো ঘুরছিল
গাছপালা পুড়ছিল
সিঙ্গার সুর ছিল
আওয়াজটা দূর ছিল
ছেলে কোহেতুর ছিল
তাতে নেই ভ্রুক্ষেপ
তবু আসে কেয়ামত।
কেয়ামত কেয়ামত কেয়ামত
তারা পায় যারা সয় জুলুমত।
মমতারা তাল গাছে
ভালবাসা তার পাছে
স্নেহ খায় শোল মাছে
শ্রদ্ধারা আলগোছে
চলে যায় শূন্যে
পাপ করে লাফালাফি
কাঁদে বসে পূণ্যে।
কেয়ামত কেয়ামত কেয়ামত
উঠে গেছে আল্লাহর রহমত।
সেইদিন আসছে
চোখে সব ভাসছে
শয়তান হাসছে
অট্টহাসি
আমরাতো দুনিয়াকে
তবু ভালবাসি।
কেয়ামত কেয়ামত কেয়ামত
আসবেই যদি ভুলো নেয়ামত
ডিউটিটা করো যদি খেয়ানত
মেনে নাও চুপ করে জুলুমত।
কেয়ামত কেয়ামত কেয়ামত
আজ চাই শুধু তাই খেলাফত।
তবে যদি পাও মামা রক্ষে
কে কে আছো খেলাফত পক্ষে
সাহসের জোশ নাও বক্ষে।
জালিমকে করে দাও উৎখাত
ভেঙে দাও শয়তানি বিষদাঁত।
১৯/৭/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৬
ঘৃণা ও প্রেম
আমায় তুমি ঘৃণা করো
তাতেই আমি খুশী
আমায় শুধু মনে রাখো
এ স্বপ্নটাই পুষি।
ঘৃণা মানেই তুমি আজো
আমায় মনে রাখছো
আজো তুমি আমার ছবি
হৃদয় মনে আঁকছো।
ঘৃণার ছলে আমার স্মৃতি
রাখছো মনে তুলে
আমায় তুমি ভালোবাসো
তাও কি গেছো ভুলে?
নাইবা যদি ভালোবাসো
রাখলে কেন মনে
আমার স্মৃতি দাওনি কেন
ফেলে কুঞ্জবনে?
ঘৃণার ছলে ভালোবাসা
প্রেম মানেতো কান্না হাসা।
২৫/৭/২২;
বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৭
হায় রে কপাল, হায়
বিজলী বাতি ইলিক ঝিলিক
ফুচকি মেরে চায়
কই গেলিরে হারিক্যান দা
জলদি কাছে আয়।
শুনতে পেলাম জবর খবর
খোঁড়া হচ্ছে আমার কবর
দিন আসছে তোর রে দাদা
তোকে কে আর পায়।
নারে না, বিজলী বুবু
তেলের বাজার ডুবু ডুবু
ইলিশ এখন লোকে নাকি
রোদে ভেজে খায়।
লোডশেডিংয়ের জ্বালাতে
এবার হবে পালাতে
শহর ছেড়ে যেতে হবে
আবার পুরান গাঁয়।
হায় রে কপাল, হায়।
২৫শে জুলাই ২০২২; বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৮
পাপ কামানো ছাড়েন-২
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
চেষ্টা করে দেখেন একটু
পারেন কিনা পারেন।
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
চলেন দেখি পাপ হারে না
আপনি নিজে হারেন।
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
চেষ্টা করে দেখেন একটু
হয়তো জিততে পারেন।
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
জিতলে পরে পাপকে ধরে
পায়ের নিচে গাড়েন।
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
ইচ্ছে হলে পাপকে ধরে
গলা টিপে মারেন।
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
পাপ মারবেন না? তবে মামা
রাস্তা একটু ছাড়েন।
পাপ কামানো ছাড়েন মামা
পাপ কামানো ছাড়েন
পাপ করাটা ছেড়ে দিয়ে
পূণ্য কাজে বাড়েন।
২০ জুলাই ২০২২; বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৪৯
ওরে আমার দাদা
(নব্য দাদাকে নিবেদিত)
ওরে আমার দাদা।
বলতে পারিস টিয়ে সবুজ
বকটা কেনো সাদা?
আলুতে নেই ঝাঁঝ কোনো
ঝাঁঝাঁলো ক্যান আদা?
কারে বলে দান খয়রাত
কারে বলে চাঁদা?
দাদু হেসে কয়।
বড় হয়ে আগে করো
জ্ঞানের শহর জয়।
সাহস রাখো মনে তবে
বিশ্ব হবে জয়।
বড় হলে সবই তুমি
জানবে সুনিশ্চয়।
তাড়াও মনের ভয়।
ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে
খোদার রহম হয়।
আল্লাহর ইচ্ছায় এ দুনিয়ার
সকল কিছু হয়।
বুঝলাম দাদা সব
সবই করেন রব।
তিনিই দেন মেঘ বৃষ্টি
পাখির কলরব।
২৯/৭/২২;
বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫০
গীবত কভু করবো না
আপন ভাইয়ের গোশত কি কেউ খায়?
যাহ, এমন কথা ভাবাও কি যায়?
মানুষ হলে পশুর অধম
খেতে পারে সে নরাধম
এমন কাজে বনের পশু সেও লজ্জা পায়।
গীবত করা এমনি খারাপ কাজ
গীবতে পায় শয়তানও লাজ
গীবতকারী একের দোষ অন্যে বলে যায়।
পরের জিনিস ধরতে নেই
গীবত কভু করতে নেই
গীবতকারী পরকালে জাহান্নামই পায়।
গীবত তো কেউ করবো না
পরের দোষ বলবো না
গীবতকারী আপন ভাইয়ের মরা গোশত খায়।
ছি ছি মরা গোশত খায়
জাহান্নামে যায়
পরের বদনাম করলে মানুষ
এমন শাস্তি পায়।
৩০/৭/২২;
বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫১
শয়তান মারো
দাদা খায় শাদাপাতা
দাদী খায় জর্দা
চুপি চুপি সিগারেট
কিনে খায় বড়দা।
তার বউ করে না
কোন কালে পর্দা।
বলে, কেন করবো
করে কোনো মর্দা?
এইভাবে এই দেশে
কত পাপ হয়
পাপ করে নিজে তবু
পায় নারে ভয়।
আমি বলি, ভাবী তুমি
পাপ করা ছাড়ো
নিজ হাতে বুকে বসা
শয়তান মারো।
৩০/৭/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ৩৫৫২
পড়তে আমার ভাল্লাগেনা
পড়তে আমার ভাল্লাগেনা
ইচ্ছে করে ঘুরতে
ইচ্ছে করে পাখি হয়ে
পাখির মত উড়তে।
পাখির ছানা ধরতে মানা
ইচ্ছে করে ধরতে
সবাই বলে ওসব ছাড়ো
পড়তে হবে পড়তে।
আমার তবু মন বসে না পড়ায়
মনটা গিয়ে পড়ে থাকে
কচি ধানের ছড়ায়।
ইচ্ছে করে সারাটা দিন
নানান খেলা খেলতে
ইচ্ছে করে হুতুম পেঁচার
ডানা ছিঁড়ে ফেলতে।
ইচ্ছে করে বিলের থেকে
শাপলা শালুক তুলতে
ইচ্ছে করে গাছের ডালে
মজা করে ঝুলতে।
তবু তোমরা বলছো শুধু,
পড়ো, পড়ো, পড়ো
লিখে পড়ে হতে হবে
তোমার অনেক বড়ো।
তাই করছি লেখাপড়া
শিখছি কত কাজ
কালকের কাজ কাল করবো
আজকের কাজ আজ।
৩০/৭/২২;
বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ৩৫৫৩
আমি হলাম বুড়ো
আমার এখন যাবার পালা
তোমার হলো শুরু
তুমি এখন নওজোয়ান
আমি হলাম বুড়ো।
এই দিনটা সবার সামনে আসবে
তখনো কি আমার ছবি
তোমার চোখে ভাসবে?
নাকি আমার উদাস নয়ন
দেখে তুমি হাসবে?
হাসার কিছু নাইরে ভাই
ঠিক নাই কে যে কখন যাই
এই দুনিয়া লঙ্করখানা
বলবে যখন খানা নাই
তখন সবাই বলবে, যাই।
আমার হলো যাবার সময়
তোমার সবে শুরু
যাবার বেলা দোয়া করি
ভালো থেকো গুরু।
আরতো কোন দাবী নাই
শুধু একটু দোয়া চাই।
৩০/৭/২২;
বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ৩৫৫৪
ইচ্ছে ডানা
আমার কেবল ইচ্ছে করে পাহাড় বনে ঘুরি
আমার কেবল ইচ্ছে করে পাখির মত উড়ি।
আমার কেবল ইচ্ছে করে মেঘের দেশে যাই
আমার কেবল ইচ্ছে করে রবেরই গুণ গাই।
কেমন করে আকাশ জুড়ে ফোটে তারা ফুল
কেমন করে রঙধনু রঙ বানায় রাঙা পুল।
বর্ষা কালে কোথা থেকে আসে এতো পানি
বকের মতো সাদা চুল কেনো রাখে নানী।
এসব কথা জানতে আমার ইচ্ছে জাগে মনে
মানুষ কেনো ঘরে থাকে পশু থাকে বনে।
বৃষ্টিতে যে ভিজে ওরা, জ্বর যদি মা আসে
আমার কথা যতোই শুনে, মা টা কেবল হাসে।
বলে বাবা, আল্লাহর ইচ্ছায় সকল কিছু হয়
খোদার ইচ্ছে মানে যারা, তারাই সুুখে রয়।
৩১-৭-২২;
বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫৫
মন পবনের নাও
মন পবনের নাও
কোথায় তুমি যাও
তোমারও কি ইচ্ছে করে
ধরতে ঘুঘুর ছাও?
মন পবনের নাও
সুখটা কোথায় পাও
সুখ না থাকলে কেন তুমি
গুন গুন গুন গাও।
মন পবনের নাও
চোখটা তুলে চাও
তোমারও কি ইচ্ছে করে
তেতুল আচার খাও?
মন পবনের নাও
আমায় একটু দাও
সবচে মজার সেই খানাটা
যেটা পাচ্ছো ফাও।
মন পবনের নাও
আও না কাছে আও
আদর দেবো সোহাগ দেবো
যখন যেটা চাও।
মন পবনের নাও
বাপের বাড়ি ছেড়ে তুমি
শ্বশুর বাড়ি যাও।
সেখানে কি সত্যি তুমি
মনের মানুষ পাও?
১/৮/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫৬
খোঁচাখুঁচি বাদ দাও
মিছিল করলে ধরবে পুলিশ
নতুন গণতন্ত্র
যার আছে জোর মুল্লুক তার
শোননি এ মন্ত্র?
মিছিল করলে ধরে পুলিশ
তয় মিছিলের কাম কি?
মিছিল করলে কমে কভু
দ্রব্যমূল্যের দাম কি?
শোন।
স্রোতের টানে ভাসে ঘর
গরু, ঘোড়া, গাধাও
জনস্রোত নামলে পথে
ভাসবে বুবু, দাদাও।
পারলে নামাও জনস্রোত
বহাও স্রোতের বন্যা
তবেই ভাসবে খড়কুটো
দুঃশাসনের কন্যা।
সাহস থাকলে লাগো এসে
জোর থাকলে হবে জয়
গণজোয়ার স্বৈরাচারকে
কোন কালে পায় কি ভয়?
খোঁচাখুঁচি বাদ দাও
হাতে হাতে হাত দাও।
১/৮/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫৭
চোরাই ধান্ধা ছাড়ো
গীতিকার হয় গানের মালিক
সুরকার হয় মালী
শিল্পীরা পায় এজেন্সী আর
পাবলিকের হাততালি।
প্রযোজক হয় ব্যবসাদার
লাভের অংশ তার
এ নিয়ে ভাই ঝগড়া করার
বলো কি দরকার।
নজরুলের গান নজরুল গীতি
সুর দেয় কমল দাস
ফিরোজা বেগম এজেন্সি নেয়
মিটায় মনের আশ।
লালনের গান লালন গীতি
অন্য কারো হয় না
ফরিদা বেগম সম্মানী পায়
রয়্যালিটি লয় না।
হিজ মাস্টার ব্যবসা করে
লাভ সবই হয় তার
এসব কথা সবাই জানে
জানা নয় কও কার?
দ্বীনী খেদমত হুজুর করেন
পয়সা তিনি পান
আপনি কেন পরের ধনে
ব্যবসা করতে যান।
শেয়ার করেন পেয়ার করেন
ফেয়ার করেন সব
দ্বীনী খেদমত এরেই বলে
খুশীও হন রব।
ডাউনলোডের বাউন্ডুলে
ব্যবসা করা ছাড়েন
গীতিকারের রয়্যালিটি
আপনি কেন মারেন?
এসব হচ্ছে চোরাই ধান্ধা
বান্দা এসব ছাড়ো
যার যার হক তারে দাও
হক মেরো না কারো।
২/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫৮
খুনীর ভাগ্য
আমায় তুমি খুন করলে, তুমি হবে খুনী
লোকে আমায় খুনী নয়, বলবে ছিল গুণী।
খুন করে যে খুনী হয়
খুন না করে গুণী হয়
খুনী হতে তোমার কি খুব ইচ্ছে করে শুনি?
জাফর আলী খুন করলে মীরজাফর হয় নাম
তার জন্য লোকের থাকে ঘৃণা অবিরাম।
মরেও সিরাজ শ্রদ্ধা পায়
হাজার জনের দোয়া পায়
মিরজাফরের কোন কালে ঘোচে না বদনাম।
আমায় যদি মারো তাতে তোমার মরণ ঠেকবে না
কোন মহল্লার শেঠ ছিলে আজরাইল তা দেখবে না
খুনী হয়ে করলে তুমি পাপ
দুনিয়াতে পেলে অভিশাপ
ফেরেশতারা তোমার নামে ভাল কিছু লেখবে না।
আমি হবো শহীদ আর খোদার কাছে গুণী
তুমি হবে পাপী আর সবার কাছে খুনী।
আমায় মেরে পাবে জাহান্নাম
বলো তবে জীবনের কি দাম
মন্দ কপাল দেখে তোমার হাসবে যে টুনটুনি।
কেন তবে মারবে আমায় বলো দেখি শুনি?
২/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৫৯
হারিকেনে সলতে নাই
আকাশ স্বাধীন বাতাস স্বাধীন
স্বাধীন আমার দেশটা
মন্ত্রী স্বাধীন, রাজা স্বাধীন
স্বাধীন উপদেষ্টা।
গরু স্বাধীন, গাধা স্বাধীন
স্বাধীন রাজার মেষটা
পুলিশ স্বাধীন,র্্যাবও স্বাধীন
স্বাধীন গুমের চেষ্টা।
পড়শি স্বাধীন, বড়শি স্বাধীন
স্বাধীন আরও কেস্টা
পুরুত ঠাকুর, পরেশ স্বাধীন
স্বাধীন ওদের তেষ্টা।
তেষ্টা হয় না নিবারণ
বলতো আর কি বারণ?
ওসব কথা বলতে নাই
হারিকেনে সলতে নাই।
৩/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬০
এসব তো নয় ফানি
ব্যাপারটা খুব ফানি।
তিরিশ টাকা ধার করেছে
বিলাসপুরের রানী।
জানি, সবই জানি।
তারও ছিল একটা বুড়ো
খুকুর খুকুর নানী
তার যে ছিল সম্পদ বলতে
সাকুল্যে এক কানি।
সেই জমিতে ছিল মামা
একটা হাঁটু পানি।
ভাবছি তাতে মরবো ডুবে
সূর্য কেন ওঠে পূবে
গদীতে ক্যান জালিমে
জেলখানাতে আলিমে।
এসব কিরে সওয়া যায়?
নাকি কাউরে কওয়া যায়?
পেট ভরে কি বাণীতে
কান্দি নাতী নানীতে।
কান্না শুনে বগা কয়
জুলুম, সে তো মগা সয়।
সাহস থাকলে জালিমের
জিভটা ছিঁড়ো টানি
ভাল মানুষ ভাল হলে
কে সয় শয়তানী?
বোবা ভালোর দাম নাই
ভীতুর কোন কাম নাই।
বক্তা হলেই খাম চাই
নেতার তেল ও পাম চাই
গুন্ডার হাতে রাম চাই
কবির খালি নাম চাই
কেডা তবে ভালো?
কে জ্বালবে আলো?
যারা নাকি ভীতুর ডিম
তারা কি হয় ভালো?
শক্তি লাগে সাহস লাগে
জ্বালতে নূরের আলো।
তোমার বুকে সাহস নাই
তোমার সঙ্গে কেমনে যাই?
ঈমান আছে যার
সাহস আছে তার
অন্যায় যে রুখে দেয়
সে প্রিয় আল্লাহর।
ইসলাম যদি মানতে হয়
রক্ত দিতে জানতে হয়।
সুরমা আতর ছাড়ো
ইবলিস ধরে মারো।
এসব তো নয় ফানি
এসো কোরান মানি।
সাহস রাখি বুকে
বেঁচে থাকি সুখে।
৩/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬১
তলে তলে
গলায় কলসি বাইন্ধা চলো
জলে ডুইবা মরি
এ জীবন কি রাইখা লাভ
ছড়ি ঘুরায় পরী।
আলিম জালিম এক বরাবর
সবাই সমান পাপী
সবার পিঠেই বান্ধা আছে
পাপের বিশাল ঝাঁপি।
মানুষ মরে ক্ষুধার জ্বালায়
উপোস কাটে রাত
চোরকে বানাই চেয়ারম্যান
যে হারামীর জাত।
দাজ্জাল খাইছে দয়া মায়া
স্নেহ প্রীতি নাই
আমরা করি গীবত চর্চা
ভাইয়ের গোশত খাই।
এইটা এখন কলিকাল
গলি ভরা পাপ
যে মানুষকে এনে দেয়
দোজখের উত্তাপ।
পাপী করে পাপের কাম
আমরা সবই সই
এভাবেই তো পাপের ভাগ
আমরা বুঝে লই।
পাবলিক যদি ভাল হইতো
চোর কি হইতো নেতা
এই কথাটা বুঝে না হায়
কওতো দেহি কে তা?
তার মানে তো তলে তলে
আমরা সবাই চোর
কেউ খোশে কেউ দায় ঠেকে
আমরা হারামখোর।
৪/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬২
এক আদমের সন্তান
তুমি আছো হিন্দু আর আমি মুসলমান
কোরান মতে তুমি আমি এক আদম সন্তান
এ বিশ্বাস না থাকলে আমার থাকে না ঈমান
তার মানেতো আমরা দু ভাই হিন্দু মুসলমান।
কিসের তবে ঝগড়াঝাটি, কিসের ব্যবধান
আমার যেমন আল্লাহ আছে তোমার ভগবান।
মন্দ করলে নরক তোমার আমার জাহান্নাম
তুমি মরবে, আমি মরবো, লাশের আর কি দাম।
তুমি যদি জলপান করো আমি করি পানি
তুমি দাও পাঠা বলী, আমিও কোরবানী।
তুমি যদি মন্দিরে যাও, মসজিদে যাই আমি
রোদে হাঁটলে তুমি আমি একই রকম ঘামি।
তোমার ধর্ম তুমি মানো আমার ধর্ম আমি
কে মন্দ আর কে ভালো তা দেখুক অন্তর্যামী।
একই পাড়ায় থাকি আমরা একই হাটে যাই
একই গাভীর দুধতো আমরা দু ভাই মিলে খাই।
একই প্রভুর গুণগান আমরা গলা ছেড়ে গাই
এক আদমের সন্তান আমরা হিন্দু মুসলিম ভাই।
৫/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৩
ফরজ তুমি ধরো
নফল আমল করার আগে
ফরজ তুমি ধরো
কোরান হাদীস বুঝে মানার
গরজ তুমি করো।
কোনটা ফরজ কোনটা নফল
জানলে তুমি হবে সফল
কোরান হাদীস মতে তুমি
সুখের সমাজ গড়ো।
ফরজ পালন করো নইলে,
পাপ যে হবে সোনা
নফল পালন না করলে,
পাপ হবে না গোণা।
তারপরেও নফল নিয়ে
মাতামাতি করো গিয়ে
তারচে ভালো রোজই একটু
কোরান হাদীস পড়ো।
পাগল মন তুই বুঝলি না
কোনটা আসল সোনা।
তলাবিহীন বস্তায় ভরে
নেকী করলি গোণা।
আসল রেখে নকল ধরলে
ফরজ রেখে নফল করলে
আসল খবর জানতে পারবে
যেদিন তুমি মরো।
৬/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৪
শিকড় কাটো
গাছের যদি শিকড় কাটো
গাছ বাঁচে না, মরে যায়
খুঁটির গোড়ার মাটি সরলে
সেই খুঁটিও পড়ে যায়।
বড় বড় মিছিল করা
পারলে এবার বাদ দাও
বিষবৃক্ষের শিকড় কাটায়
আস্তে করে হাত দাও।
দালাল যদি হালাল হয়
আলাল তবে কান্দে
আটকে পড়লে বাঘের ছাও
লতাই তারে বান্ধে।
খাইলে দালাল হাটের মার
আর হবে না ঘরের বা'র
শিয়াল তখন ঠিকই পড়বে
ইঁদুর মারা ফান্দে।
কোন কথাটা কইলাম আমি
বুঝলা কিছু চান্দে
নিজের বোঝা নিজেই তুমি
এবার তোল কান্ধে।
৬/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৫
দেশ জুড়ে কান্না
এই দেশ আমাদের়
কারো দয়া দান না।
তাপ বাড়ে বাতাসের
টের কিছু পান না?
চারদিকে হাহাকার
এই দেশ আহা কার
ভন্ডরা তবু বলে
এই দেশ জনতার।
জনতার দেশ যদি
কার হাতে নদনদী
কার হাতে দেশগদি
বদী কেন গদি পায়
ক্ষমতার বলে বদি
কেনো দুধ খায়?
দেশ জুড়ে কান্না
কেউ খায় দুধভাত
কেউ খেতে পান না।
রাজা বসে গাঁজা খায়
প্রজাদের দেখতে যে
ছুটে কভু যান না।
দেশ জুড়ে কান্না।
ভোট আসে ভোট যায়
আমলারা টাকা পায়
জনগণ ভোট দেয়ার
সুযোগটাও পান না
অসহায় জনতার
তাই আসে কান্না।
চারদিকে হাহাকার
দেশটা যে আহা কার
হাহুতাশ বাপ ও মা'র
বাড়ে শুধু অনাচার
কেউ খায় দুধভাত
কেউ খেতে পান না।
দেশ জুড়ে কান্না।
ভাত দেন নইলে
গদি ছেড়ে যান না।
এই দেশ আমাদের়
কারো দয়া দান না।
তাপ বাড়ে বাতাসের
টের কিছু পান না?
৬/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৬
তখন কিছু কয় না
চালের দাম বাড়ছে বাড়ুক
তোদের ভয় কি বল না
খাবার দাবার মাগনা চাস?
আমার সাথে চল না।
তোদের জন্য সরকার আছে
আর কিছু কি দরকার আছে?
আরো জোরে সবাই মিলে
জয়বাংলা বল না।
রাজাকারের গোষ্ঠী পেলে
পায়ে পিষে চল না।
উন্নয়ন যার সয় না।
তাদের ধরে শশুরবাড়ি
পাঠিয়ে দেই, ময়না?
সেখানে তো জমা আছে
ডান্ডাবেরির গয়না।
বড় বড় দালান ঘর
ধরে ধরে চালান কর
চালের দাম বাড়লে যাদের
পিত্তি জ্বলে, সয় না
তাদের বলি আর কি লাগবে?
তখন কিছু কয় না।
৬/৮/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৭
আমরা সবাই বাঁচি
আপনারা যে পেয়ার করেন
সে কথা তো জানি
প্রেমের কথা সবাই বুঝে
মূর্খ এবং জ্ঞানী।
প্রেমের টানেই শেয়ার করেন
সে কথাও মানি
কবিরে তো ভালবাসে
দাসী থেকে রাণী।
কোনো কথা কথার কথা
কোনো কথা বাণী
কোনো কথা দামী আবার
কোনো কথা ফানি।
শেয়ার করেন পেয়ার করেন
শুভ সমাজ চাই
শুভ সমাজ গড়ার জন্য
হাতটা মিলান ভাই।
কেউবা বন্ধু কেউবা বোন
কেউবা মামী, চাচী
সবাই আসুন ভালো হই
আমরা সবাই বাঁচি।
৭/৮/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৮
সময়টাকে লাগাও কাজে
ভাগিনাঃ
বলতে পারো মামী
কোন জিনিসটা এ পৃথিবীর
সবচে বড়, দামী?
মামীঃ
সবচে দামী হীরে পান্না
সবচে দামী মোতি
তারচে দামী শিশুর হাসি
চাঁদ সুরুজের জ্যোতি।
ভাগিনাঃ
হয়নি মামী হয়নি।
এমন কথা কোরান হাদীস
কেউতো মামী কয়নি।
কয়নি কোন জ্ঞানী গুণী
কয়নি কোন ঋষি মুনী।
মামীঃ
তবে কি দামী সোনাদানা
নাকি দামী খানাদানা
নাকি দামী মলয় বায়ু
নাকি দামী নিজের আয়ু?
ভাগিনাঃ
তাও জানো না মামী
সময় সবচে দামী
একবার গেলে আর আসে না
সময় কোন কালে।
সময় যেন লটকে থাকে
বিশ্ব মরণ ডালে।
তাই সময়ের কসম খান
আল্লাহ কোরানপাকে।
এই কথাটা মামী যেন
তোমার মানে থাকে।
মামীঃ
ঠিক বলেছিস ভাগিনা
তোর কথায় তাই রাগী না।
সময় যতো যাচ্ছে ততো
আসছে মরণ কাছে
সময় নষ্ট করলে শুধু
পস্তাতে হয় পাছে।
দুজনঃ
ফালতু কাজে সময় নষ্ট
কেউ করো না ভাই
সময়টাকে লাগাও কাজে
আমরা এবার যাই।
৮/৮/২২।বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৬৯
সময়কে যে লাগায় কাজে
সময়কে যে লাগায় সঠিক কাজে
সেই তো সফল হয় দুনিয়া মাঝে।
সময় নিয়ে হেলাফেলা
করলে সময় অবহেলা
সে তো মরে অবশেষে দুঃখ এবং লাজে।
সময়ের চে দামী কিছু নাইরে দুনিয়ায়
সময় যদি যায়রে চলে সে ফিরে না হায়
তবু আমরা করি সময় নষ্ট
জীবন জুড়ে বাড়াই কত কষ্ট
তাইতো সময় নষ্ট করা কারো নাহি সাজে।
সময়ের কাজ সময় মতো করো
ফুলের মতই সুন্দর জীবন গড়ো
বেহুদা কাজ দাওনা ছেড়ে
টা টা বলো দুহাত নেড়ে
ফুলের মত জীবন গড়ো সকাল এবং সাঁঝে।
সময় কারো একমিনিটও বাড়বে না
সময়মতো আজরাইলও ছাড়বে না।
কেন তবে সময় নষ্ট
করে বাড়াও নিজের কষ্ট
সময় কাটুক সব মানুষের
এসো সবাই সময় কাটাই সুন্দর ভালো কাজে।
৮/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭০
মিথ্যা কথা বলবো না
মিথ্যা কথা বলবো না,অসৎ পথে চলবো না
দুষ্ট লোকের মিষ্ট কথায় আর ভুলবো না।
হুকুম মানবো কোরানের
মানবো হুকুম রাসুলের
নবীর দেয়া রাস্তা ছাড়া অন্য রাস্তায় চলবো না।
পারলে করবো ভাল কাজ, মন্দ কিছু করবো না
না বলে কেউ, কক্ষনো, পরের জিনিস ধরবো না।
চোরাই প্রাসাদ গড়বো না
সত্য থেকে নড়বো না
জেনে শুনে বাজে কাজে সময় নষ্ট করবো না।
হারাম কিছু খাবো না
মন্দ জায়গায় যাবো না
যদি যাই তবে আহা আল্লাহর মদদ পাবো না।
৮/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭১
সুখদ স্মৃতি
আমার কেবল ইচ্ছে করে বাড়ি চলে যাই
যে বাড়িতে থাকতো আমার দুখিনী মা ভাই।
গাছতলাতে পাটি পেতে
কী যে মজা হাওয়া খেতে
সেসব সুখের দিনগুলো হায় কোথা গেলে পাই।
ইচ্ছে করে পেয়ারা গাছের ডালে বসে ভাই
ডাসা ডাসা পেয়ারা পেড়ে মজা করে খাই।
ঝুলে থাকা কচি শশা
ফুলে ফুলে ভ্রমর বসা
এসব স্মৃতি পড়লে মনে আজো ব্যথা পাই।
বর্ষার জলে ডুবে ডুবে চক্ষু করে লাল
বাড়ি গিয়ে খেতাম যখন মার আহ্লাদী গাল।
তখনকার সে সুখদ স্মৃতি
আজও বুকে হয়নি ইতি
সেসব স্মৃতি থাকবে বেঁচে হয়তো চিরকাল।
৯/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭২
উন্নয়ন ও ঋণ
উন্নয়নের ঠেলাতে
বাড়ছে মাথায় ঋণের বোঝা
পারছে না কেউ ফেলাতে।
মীরজাফরের সাথে সিরাজ
পারছে নাতো খেলাতে।
ঘষেটিরা চালছে গুটি
স্বাধীনতার নড়ছে খুঁটি
ক্ষমতাতে টেংরা পুটি
দেশটা নাকি ভরে গেছে
হারামখোরের চেলাতে।
তারা এখন ব্যস্ত ভীষণ
জগতশেঠকে তেলাতে।
মধু হই হই দিচ্ছে বিষ
পিতলা চান্দের পেলাতে।
পেয়ালার মাঝে উন্নয়ন
তাও খাচ্ছে না জনগণ
দেশের মানুষ ঋণের হিসাব
পারছে নাতো মেলাতে।
চিপায় পড়ে ক্যা ক্যা করছে
বিশ্বঋণের ঠেলাতে।
ঋণের টাকা ঠাকুর বাড়ি
উঠছে প্রাসাদ বিলাতে
ইচ্ছে করছে নিজকে ধরে
আচ্ছা মত কিলাতে।
উন্নয়নের ঠেলাতে
তুলছে ঢেকুর আকুর পাকুর
মহারাজের চেলাতে।
৯/৮/২২।বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৩
বাড়াও যদি পাপ
ভাল কাজ পারলে করেন
না পারলে পাপ নাই
কিন্তু ফরজ মানতে হবে
এতে আপোস নাই।
যদি করেন মন্দ কাজ
দুনিয়াতে পাবেন লাজ।
আখেরাতে পাপের বোঝা
টানতে হবে ভাই
তাইতো বলি মন্দ ছাড়েন
এর বিকল্প নাই।
মন্দ ছাড়েন, মন্দ ছাড়েন
বন্ধ করেন পাপ
নয়তো জানবেন পেতে হবে
দোযখের উত্তাপ।
তলাবিহীন বস্তায় ভরে
যতই রাখেন ধান
খুলে তাতে ধান পাবেন না
হলেও পেরেশান।
ঘুষ দিয়া কেউ জান্নাত যাবে
এমন কোন কায়দা নাই।
ফরজ রেখে নফল নেকীর
তাইতো কোন ফায়দা নাই।
যতোই বাড়বে পাপ
তোমায় দেখলে দংশন করবে
দোযখের কালসাপ।
১০/৮/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৪
পয়লা দেশের কাজ
দেশপ্রেমের যে দেয় না ডাক
তাদের কথা আজকে থাক
পারলে হারাম ফিরনি খাক
দালালীতে নাম লেখাক।
দেশপ্রেম অনেক বড়ো
দেশের কোন দুর্দিন এলে
এক হয়ে সব লড়ো।
আজ একতা গড়ো।
মারো এবং মরো
দালালের ছাও ধরো
বীরের মত লড়ো
একটা কিছু করো।
ভুলো কে কার ভক্ত
আজ মিলনের অক্ত
দিতে হবে রক্ত
কাজটা যদিও শক্ত।
সবার আগে দেশের কাজ
তারপর সামলাও
দেশের রাজ।
১০/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৫
অলসতা করবো না
অলসতা করে যে ফেলে রাখে কাজ
সেই ছেলে বার বার পায় শুধু লাজ।
সমযের কাজ যতো করো সময় মতো
কারো কাছে লাগবেনা করা মাথা নত।
অলসতা ডেকে আনে ব্যর্থতা, পরাজয়
বার বার পরাজয়ে মন ছোট হয়।
অলসতা করে না যে, সফলতা পায়
অলসতা করে যারা, করে হায় হায়।
অলসতা করবো না এসো করি পণ
তাতে থাকে হাসি খুশি সকলের মন।
তাতে বাড়ে যশ,খ্যাতি, বাড়ে সম্মান
তারা হয় সুখী আর খুশি অফুরান।
১১/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৬
আয় হেমন্ত আয়
আসাদ বিন হাফিজ
আয় হেমন্ত আয়
মিষ্টি মধুর বায়
সাদা মেঘের পালকি চড়ে
উড়ে উড়ে আয়।
সবুজ দেশের অবুঝ শিশুর
বন্ধু হয়ে আয়।
নতুন ধানের পিঠা, পায়েস
ফিরনি রাঁধে মায়
রাখাল ছেলে দাওয়ায় বসে
মায়ের পিঠা খায়।
নতুন বধু মনের সুখে
গুন গুন গান গায়
আয় হেমন্ত আয়
মিষ্টি মধুর বায়।
আয় হেমন্ত আয়
উড়ে উড়ে আয়।
সবাই যেন গরীব দেশে
সুখের দেখা পায়।
১১/৮/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৭
শিয়া ও মিয়া
কবিঃ
টিয়া।
কেমন আছো মিয়া?
কওতো তুমি সত্যি করে
কেমন তোমার হিয়া
এতবড় ডাঙর হইছো
তাও করোনি বিয়া।
শশুরবাড়ি যাওনি আজো
টোপর মাথায় দিয়া
কবে তুমি ফিরবা বলো
নতুন বউ নিয়া।
টিয়াঃ
কওতো তুমি কেমন করে
মুসলমান হয় শিয়া
তারা কি কেউ সেজদা করে
লেলিনগ্রাদে গিয়া?
সবাই যদি মুসলমান হয়
কিসের সুন্নী শিয়া?
দুই মুসলিম ঝগড়া করে
একই হাদিস দিয়া।
ভাইয়ের ওপর আঘাত করে
তাও কাঁপে না হিয়া?
এরা কেমনে মুসলিম হয়
কও তো তুমি মিয়া?
১১/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৮
সব মুমীনের ঐক্য চাই
কে কওমি, কে আলিয়া
একপাতিলে দে ঢালিয়া
এক সাথে হোক রান্না
ঝগড়ার কিছু পান না?
এক আল্লাহ, এক নবী
এক আকাশ, এক রবি
যে মানবে এক কোরআন
সেই তো শুধু মুসলমান।
মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই
নাই ভেদাভেদ নাই নাই
ফেরকা ছেড়ে ঐক্য চাই
আর তো কোন উপায় নাই।
কে কওমি, কে আলিয়া
কে খায় গোস্ত, কালিয়া
কে দেয় দ্বন্দ্বে তালিয়া
পাই বিভেদের গন্ধ
হেদায়েত কি বন্ধ?
এই বিভেদের কাম কি
ইবলিশে দেয় পাম কি
কয় হনুমান, রাম কি
এসব কথার দাম কি?
ছাড়ো এসব রঙ্গ
বৈরিতা আর জঙ্গ
হোক না স্বপ্ন ভঙ্গ
মুসলিম এক অঙ্গ
ঈমান অনুষঙ্গ।
ভাঙলে নবীর দন্ত রে
ব্যথা লাগে অন্তরে
যে জন ব্যথা পায় না
সে তো আস্ত হায়না।
ছাড়ো ওসব দ্বন্দ্ব
মোমিন কি হয় অন্ধ?
সব মুমীনের ঐক্য চাই
আর তো কোন উপায় নাই।
১২/৮/২২। বাদ জুমা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ৩৫৭৯
মুসলিম হয়ে মরো
মাযহাব মানার জন্য কোন
আয়াত নাজিল হয়নি
মাযহাব মানার জন্য নবী
কোন হাদীস কয়নি।
মুসলিম হতে চাইলে তারে
কোরান হাদীস মানতে হয়
কোরান ছেড়ে হাদীস ধরলে
কেমনে তারে মুসলিম কয়?
কোরান হাদীস মানা
মুমীন হওয়ার জন্য শর্ত
শিয়া সুন্নী মুসলমানের
ঐক্য ভাঙার গর্ত।
কোরান হাদীস রেখে যারা
পীর নেতাকে তেল দেয়
তারা সবাই ন্যাড়া মাথায়
ওপর থেকে বেল দেয়।
এসব নানান ফেরকা ছেড়ে
কোরান হাদীস ধরো
আল্লাহর হুকুম মুমীনবান্দা
মুসলিম হয়ে মরো।
১৭/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮০
ভালবাসার দিন নাই
ভালবাসার দিন নাই
জল আছে মীন নাই
একটু সুখের চিন নাই
কোটি টাকা মাইরা খায়
মামুর কোন ঋণ নাই।
পাপের ডোবায় পড়ে থাকে
মনে একটু ঘিন নাই
বডি ধোয়ার সাবান আছে
মন ধোয়ার কি রিন নাই?
ঘোড়ি ঘোরে লাখে লাখে
বশ মানানোর জিন নাই
ঘুমন্ত লোক ঘুমায় সবে
খোঁচা দেয়ার পিন নাই।
নাগিন ঘুরে চারি পাশে
বশ মানানোর বীণ নাই
স্বৈরাচারের চামচা বাড়ে
তাদের কোন লীন নাই।
বীর জনতার ভাগ্যাকাশে
আর কি কোন দিন নাই?
শুভরা সব চলে যায়
কিন্তু শুভর ইন নাই।
১৭/৮/২২। বাদ
মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮১
ভালোটাকে লুফে নাও
পড়া পড়া পড়া
পিঠের ওপর বইয়ের বোঝা
যায় না নড়াচড়া
কী যে এখন করা।
হুজুর বলেন, কোরান পড়ো
স্যারে বলেন, বই
এক্কা দোক্কা খেলতে ডাকে
পশ্চিম বাড়ির সই।
আহা, কারে যে কি কই?
আম্মু বলেন, খাওনা সোনা
এইতো আছে অল্প
আমি বলি, রাখো খাওয়া
আগে শোনাও গল্প।
কোনটা রেখে কোনটা ধরি
উড়তে যাবে? বলে, পরী
মনে হাজার স্বপ্ন গড়ি
কাজ তো কিছু হয় না।
পুতুল বিয়ের সময় হলো
কই গেল তার গয়না
মিটি মিটি হাসে পুতুল
সঙ্গে হাসে ময়না।
হাসি দেখে রাগ পায়
এ রাগের কে ভাগ পায়?
তারচে ভালো পড়তে বসি
ছাড়ো বন্ধু গড়িমসি।
পড়ে শিখবো কোনটা ভালো
কোনটা মন্দ, আঁধার কালো
মন্দগুলো ডুবুক জলে
ভাল হতে কোরান বলে।
এসো সবে ভালো হই
ভালোটাকে লুফে লই।
১৮/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮২
উচিত কথা
আমার লেখা কেমন লাগে উচিত কথা কন।
সব লেখাতেই ভাল কেন বলেন সারাক্ষণ।
কেউ বলেন না কবি সাহেব চাই যে মেঘের নাও
সাত আসমানের ওপর তুমি কি কি দেখতে পাও?
দেশটা জুড়ে অভাব হাঁটে স্বভাব খারাপ তাই
ভাল হওয়ার মন্ত্র আমি কোন পাহাড়ে পাই?
দেশের মানুষ উপোস থাকে গাছ লাগায় না কেনো
অট্টালিকা কারা বানায় ওদের তুমি চেনো?
যতো মানুষ ততো খাবার খোদা ঠিকই দেন
কেউ বেশী পায় কেউ পায় না, এমন হবে ক্যান।
ন্যায় ইনসাফ দেশের মানুষ তবে কি আর পাবে না
অভাবীদের অভাব তবে কোন দিনই যাবে না?
খোদার বান্দা যারা তারা খোদার বিধান মানে না
মানার কি লাভ সে খবরও কেউ কি তবে জানে না?
নাকি সবাই জানে সুখ কোন বাগানে থাকে
নিজের ইচ্ছায় তবু মানুষ কেনো দুঃখ ডাকে।
আমার লেখা কেমন লাগে উচিত কথা কন।
সব লেখাতেই ভাল কেন বলেন সারাক্ষণ।
২২/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮৩
শত্রু ও লোভ
ধর্ম কারো শত্রু হয় না, শত্রু হয় না দেশ
শত্রু তো হয় মনের ভেতর ঝুলন্ত খায়েশ।
এইটা চাই আর ওইটা চাই
মনে চাওয়ার শেষ তো নাই
যত পাই ততই বলি,বেশ তো আহা বেশ।
শত্রু তো হয় মনের ভেতর ঝুলন্ত খায়েশ।
লোভের বড়ি খেলে পরে পড়বে বিপদ জালে
মনে রেখ লোভী সুখী হয়না কোন কালে।
লোভ কখনো করতে নেই
পরের জিনিস ধরতে নেই
লড়তে নেই নাহক পথে মিলে সঙ্গ তালে।
সবার সাথে একটা করে থাকে সবুজ মন
সেই মনকে ভাল কাজে লাগাও সারাক্ষণ।
ভালোর সাথে চলো
ভালো কথা বলো
তবে তোমায় বাসবে ভাল সকল জনগণ।
২৩/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮৪
টুনটুনি
ছোট্টপাখি টুনটুনি
কার গান গাও গুনগুনি
চুপি চুপি কও শুনি
কি গান গাও দিনমনি?
রবের দেয়া রিজিক খাই
সারাদিন তাঁর গুণই গাই
তিনি বড়ই মেহেরবান
এ পৃথিবী তাঁরই দান।
তিনিই পাঠান জ্বীন, ইনসান
চাঁদ সুরুজও তাঁরই দান
তাঁর গুণ গায় মুসলমান
তাঁর গুণ গায় সারেজাহান।
আমি ছোট্ট টুনটুনি
তাঁর গুণ গাই গুনগুনি।
২৩/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮৫
বড়গাঁওয়ের পোলা
ডাহা শহর ডাহা না,
পুরাই দেহি খোলা
আমার বাড়ি গাজীপুর,
বড় গাঁওয়ের পোলা।
হবি মুন্সী বাপের নাম
রহম আলী কাহা
আগে ছিল মাইট্টাঘর
এখন দেহি পাহা।
ইউনিয়নটা মুক্তারপুর
লক্ষ্যা নদীর পাড়
আগে ছিল কুপি বাতি
এহন বিজলী তার।
কালীগঞ্জ উপজেলা
জেলা গাজীপুর
ডাহা থেকে গাজীপুর
নয়তো অনেক দূর।
আমার বাড়ি আইও বন্ধু
আইও গাজীপুর
আমার বাড়ি আইলে হুনবা
আজান সুমধুর।
২২/৭/২২। বাদ জুমা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া -৩৫৮৬
কামলা খাটি তাঁর
কামের মানুষ আমি মামা
কামলা খেটে যাই
যখন যা পাই সামনে আমি
পান্তা বাসি খাই।
আলগা প্রেমের সময় মামা
আমার কাছে নাই
সময় পাইলে ঘুমাই একটু
নইলে লিখে যাই।
আপনি চান আড্ডা মেরে
সময় করি পার
এ সময়টা তার তো মামা
কামলা খাঁটি যার।
কেমনে মামা ফাঁকি দেই
ভয় যে করি তারে
যখন তখন সময়ের দাম
চাইতে সে তো পারে।
বেহুদা কাম করি না তাই
মনে বড় ভয়
বেহুদা কাম করে যদি
শাস্তি পেতে হয়?
আমার শাস্তির ভাগী তখন
কেউ কি হবে ভাই?
ফালতু কাজে সময় দেয়ায়
আমি মামা নাই।
২২/৭/২২;
বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮৭
তাইরে নাইরে গাও
ইচ্ছে ছিল ঘোড়ায় চড়ে
শ্বশুরবাড়ি যাইয়ুম
শ্বাশুড়ি মার তালের পিঠা
মজা করে খাইয়ুম।
ভেতর বাড়ির পুস্কুনিতে
দুজন মিলে নাইয়ুম
স্বৈরাচারের দেশে কি আর
এমুন সুযোগ পাইয়ুম?
হইতি যদি পুরুষ পোলা
শ্বশুরবাড়ি আইতি
হাজার রকম পিডাপুলি
মজা কইরা খাইতি।
আইতি যদি শ্বশুরবাড়ি
পিডা দিতাম কাড়ি কাড়ি
ভইরা দিতাম গরুর গাড়ি
বাড়ি নিয়া যাইতি।
কাপুরুষের ছাও
নড়ে না ক্যান পাও
অহন বাতাস খাও
ডান্ডাবেড়ি ফাও।
আর কি কিছু চাও?
তাইরে নাইরে গাও।
২৪/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ৩৫৮৮
নব প্রভাতের গান
স্বাধীনতা অমূল্য ধন
রক্ত দিয়ে কেনা
বিপদ বাধা ঝঞ্ঝা প্রলয়
সব আমাদের চেনা।
যতোই আসুক বিপদ বাধা
পাহাড় সমান ঢেউ
আমরা তবু এগিয়ে যাবো
থামবো না তো কেউ।
বদর ওহোদ কারবালাতে
থামেনি যে দ্বীন
সে পতাকা আমরা করবো
সমাজে উড্ডীন।
বাধার পাহাড় পথ আটকাবে
সাগর তুলবে ফণা
তবু আমরা এগিয়ে যাবো
দেখিস নিরঞ্জনা।
যতোই আসুক বিপদ বাধা
যতোই আসুক ভয়
আমরা তো সব অকুতোভয়
বিশ্ব করবো জয়।
২৪/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৮৯
জন্মদিনের শুভেচ্ছা
নাম ছিল তার জিলহজ আলী
যশোর জেলায় বাড়ি
অনেক বড় আশা নিয়ে
ঢাকায় দিল পাড়ি।
জিলহজ আলী ঢাকায় এসে
নাসির হেলাল হয়
অনেক বড় লেখক হবার
ইচ্ছা মনে রয়।
চেষ্টা এবং সাধনাতে
কাব্য ছড়া লেখে
কিসে সবচে ভাল সেটা
চেষ্টা করে দেখে।
অবশেষে স্থির হয়
গবেষণায় সেরা
দেখতে দেখতে পার হয়ে যায়
বয়স ষাটের বেড়া।
লিখতে লিখতে লেখক হয়
শতাধিক তার বই
আরো কত গুণ যে তাহার
কোনটা আমি কই।
নাসির হেলাল নিজের গুণে
চাঁদের মতো জ্বলে
শেষ করা কি যাবে তার
গুণের কথা বলে।
জন্মদিনের সালাম এবং
শুভেচ্ছা জানাই
যশোরের সে গুড়ের স্বাদ
সবাই যেন পাই।
২৭/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯০
লোকটা কিন্তু পিনাকী
ভাবছো লোকটা কী না কি
লোকটা কিন্তু পিনাকী
ধরলে কাউকে ছাড়ে না
হেন কাজ নাই পারে না।
স্বভাব খারাপ, সত্য কয়
কজনের গা সত্য সয়?
কথা কয়, যার জবাব নাই
তাই শত্রুর তার অভাব নাই।
শেষে দেয় সে বিদেশ পাড়ি
সত্য তবু যায় না ছাড়ি।
সয় না মিথ্যা রটনা
লেখে সত্য ঘটনা।
লোকটা কিন্তু পিনাকী
তোমরা ভাবো কী না কি?
২৭/৮/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯১
তোমার প্রেমে
একটু না হয় দূরে গেলাম,
একটু একা থাকতে
একটু না হয় দূরে গেলাম,
হৃদয় ব্যথা ঢাকতে।
একটু না হয় দূরে গেলাম,
সুখের ছবি আঁকতে
কে বলেছে দূরে গেলেই
ব্যাকুল হয়ে ডাকতে?
দেহের দূর তো দূর না বন্ধু
মনের দূরই দূর
আমায় তুমি ঢেকে রাখো
তোমার অন্তপুর।
নাইবা মিটুক মনের আশা
নাইবা মিটুক ভালোবাসা।
আমার কানে বাজে যেন
তোমার প্রেমের সুর।
আমায় যেন ডুবিয়ে রাখে
তোমার আলোর নূর।
তোমার দিদার চাইগো মাওলা
চাই না আমি হুর
তোমার প্রেমে ভরা থাকুক
আমার অন্তপুর।
২৭/৮/২২। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯২
তারার আলো
যা লিখি তাই লাগে ভালো
মনে হয় সব চান্দের আলো।
ভালো, সুন্দর, চমৎকার
এই কথাতে অমত কার?
কেউ করে না অমত ভাই
শুধু মনে দেয় না ঠাঁই।
ভালো নিজে হয় না
এসব কিন্তু সয় না।
সবই যদি ভালো তবে
অনাচার ক্যান দেশে
পাপ অনাচার চলছে দেদার
কে দেয় এসব ঠেসে?
ভালো বলার দরকার নাই
নিজে ভালো হন
পাড়াপড়শি বন্ধুদেরকে
ভাল হতে কন।
দেখবেন দেশটা হচ্ছে ভালো
জ্বলছে মনে তারার আলো।
২৮/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৩
ফর্মুলা
আমার লেখা বলেন ভালো
কারণ আপনি মানুষ ভালো।
মন্দ তবে কেডা
কনতো দেহি জেডা?
স্বাধীন দেশে সরকার নাই
চাপা মারার দরকার নাই
স্বাধীনভাবে চলেন
মন্দ দেখলে দলেন।
দেখবেন দেশে মন্দ নাই
মোল্লা মিস্টার দ্বন্দ্ব নাই।
ময়লা পঁচা গন্ধ নাই
স্কুল কলেজ বন্ধ নাই
অন্ধরা আর অন্ধ নাই।
সব হয়েছে ভালো
মামা খালা ফুপুর গায়ে
ঝিলিক মারে আলো।
চৌরাস্তাতে ডান্ডা হাতে বন
মন্দরে সব ভাল হতে কন।
কথায় যদি কাজ না হয়
ডান্ডা করবে মন্দ জয়।
দিয়ে দিলাম ফর্মুলা
খোলেন মাথার পরচুলা।
২৮/৮/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৪
মন্দটাকে বন্ধ করো
মন্দ দেখলে বন্ধ করা হোক মুমীনের ধর্ম
কোরান হাদিস পড়ে আমি এটাই বুঝি মর্ম
এজন্য হোক মেহনত ও ঝরাক মুমীন ঘর্ম
মন্দ দেখলে বন্ধ করা হোক মুমীনের ধর্ম।
শক্তি থাকলে শক্তি দিয়ে মন্দ করো দূর
নইলে সাহস করে চালাও জবান সুমধুর।
তাও যদি না পারো তবে, ঘৃণা করো মন্দ।
মন থেকে চাও বন্ধ হোক ধরার সব মন্দ।
দুর্বল ঈমান যাদের তারা এতটুকু করো
নইলে বান্দা ঈমানহীন হয়েই তুমি মরো।
চলছে মন্দ দেশটা জুড়ে, চলছে মন্দ ঘরে
হুজুর তবু তসবি টেপে,নফল নিয়ে মরে।
মন্দ কাজকে বন্ধ করার চেষ্টাটা যার নাই
হাদিস মতে তারকি বল ঈমান থাকে ভাই।
ঈমান নাই,নফল পড়ে লাভ কি হবে কোন
যা বলেছি চিন্তা করো,মন দিয়ে সব শোন
সবাই মিলে সমাজ থেকে মন্দ করো দূর
তবে তুমি দেখতে পাবে ধরায় প্রভুর নূর।
২৮/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৫
জ্বিনের বাদশাহ
জ্বিনের বাদশাহ চীনে যায়
রাত্রে ঘুমায় দিনে যায়
তিনশ লিচু কিনে যায়
ক্ষিধে পেলে লিচু খায়।
বিমানে নয়, নায়ে যায়
সঙ্গে জ্বিনের ছায়ে যায়
ডাইনে রেখে বায়ে যায়
জ্বিনের মা কয় ফিরে আয়।
জ্বিনটা তবু ফেরে না
নাওটা ঘাটে ভেড়ে না
কাঁচা আপেল ছেঁড়ে না
জ্বিনটা জোয়ান,ধেঁড়ে না।
জ্বিনের বাদশাহ চীনে যায়
গণতন্ত্র কিনে খায়
তাইরে নাইরে গানা গায়
মাগনা খেতে জেলে যায়।
সঙ্গে নিজের ছেলে যায়
দুখিনী মায় ডাকে আয়।
২৯/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৬
সুমাইয়া গো সুমাইয়া
সুমাইয়া গো সুমাইয়া
আর থাকিস না ঘুমাইয়া
উঠরে এবার উঠ
নইলে তোর সবকিছুই
হয়ে যাবে লুঠ।
রাইতে ঘুরে ইতরচন্দ্র
দিনে জব্বর মোল্লা
ওরা কিন্তু মানুষ না
বিষাক্ত সব বোল্লা।
উঠ সুমাইয়া উঠ
দেরী করলে কানবি বসে
দীলে পাবি চোট।
আগে মাগুর লোকে খাইতো
এখন খাবে কোট।
যেমন কইরা আন্ধার রাইতে
শকুনে খায় ভোট।
উঠ সুমাইয়া উঠ।
সুমাইয়া গো সুমাইয়া
আর থাকিস না ঘুমাইয়া।
৩০/৮/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৭
কী আধুনিক হইছো
কী আধুনিক হইছো বাবা,
কী আধুনিক হইছো
বাবা ডাকটি ভুইলা এখন
ড্যডি মাম্মি কইছো।
কী আধুনিক হইছো।
কী আধুনিক হইছো বাবা,
কী আধুনিক হইছো
কোরান হাদীস রাইখা এখন
হাতে লাল বই লইছো
কী আধুনিক হইছো।
কী আধুনিক হইছো বাবা,
কী আধুনিক হইছো
সবুজ ঘাসের মায়া ছেড়ে
লোহা লক্কড় লইছো
কী আধুনিক হইছো।
কী আধুনিক হইছো বাবা,
কী আধুনিক হইছো
লকডাউনের যন্ত্রণাটা
গায়ে মাইখা লইছো
কী আধুনিক হইছো।
৩০/৮/২২। বাদ
আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৮
নাও ডুবলে নদী শেষ
এমন যেন হয় না দাদা
আবারো খায় দাদা আদা
আবার মারে ল্যাঙ
কচুক্ষেতে ব্যাঙ।
বাতাসে বয় ঘূর্ণিবায়ু
শ্বশুর বাড়ি ধীরে যাইও
রাজা খাওয়ার আগে বন্ধু
বাঁচাও তুমি নিজের আয়ু।
ঘোড়া খেলে আড়াই লাফ
খেলা কিন্তু অনেক টাফ।
ভুল চালে নাই কোন মাফ
কথা কিন্তু পুরাই সাফ।
বিজলী বাতির বিশ্বাস নাই
রোজ আসে সে রোজই যায়
এই আন্ধারে কে কারে খায়
পাড়ার ভাবী ধান টোকায়।
চলছে খেলা চলছে বেশ
সাদা হইছে কালো কেশ
নিজে বাঁচো, বাঁচাও দেশ
নাও ডুবলে নদী শেষ।
৩০/৮/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৯৯
শহুরে কিছু মাইয়া
শহুরে কিছু মাইয়া
রাত্রে বারে যাইয়া
মদ্য মজা পাইয়া
ঢকর ঢকর খাইয়া
বলে, দেখ দেখ চাইয়া
কেমনে হাঁটে গাইয়া
মাইয়া তো না, নাইয়া।
ধরবো নাকি যাইয়া?
কে যায় লগি বাইয়া
শহুরে কিছু মাইয়া
দেখে শুধু চাইয়া
ভেজাল মধু খাইয়া।
৩০/৮/২২। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০০
গদী ও গয়না
যদি
নদী হইতো গদী
তবে নিরবধি
গয়না নায়ে হাটে যাইতো
বদিউজ্জামান বদি।
হাটের থেকে আনতো কিনে
গৌরনদীর দধি।
সঙ্গে আনতো কাঁঠাল কিনে
এনে দেখতো রদি।
যদি
নদী হইতো গদী
তবে নিরবধি
গয়না নায়ে হাটে যাইতো
বদিউজ্জামান বদি।
নদীও গদী হয় না
এ দুঃখ আর সয়না
দাওয়ায় বসে তাইতো কাঁদে
মালতী ও ময়না।
আরো যারা স্বপ্ন দেখে
মন খুলে তা কয় না।
গদী পাইলে যাইতো পাওয়া
অঢেল টাকা গয়না।
৩১/৮/২ ২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫৭৬
আয় হেমন্ত আয়
আয় হেমন্ত আয়
মিষ্টি মধুর বায়
সাদা মেঘের পালকি চড়ে
উড়ে উড়ে আয়।
সবুজ দেশের অবুঝ শিশুর
বন্ধু হয়ে আয়।
নতুন ধানের পিঠা, পায়েস
ফিরনি রাঁধে মায়
রাখাল ছেলে দাওয়ায় বসে
মায়ের পিঠা খায়।
নতুন বধু মনের সুখে
গুন গুন গান গায়
আয় হেমন্ত আয়
মিষ্টি মধুর বায়।
আয় হেমন্ত আয়
উড়ে উড়ে আয়।
সবাই যেন গরীব দেশে
সুখের দেখা পায়।
১১/৮/২২। বাদ জোহর।
শিয়া ও মিয়া
টিয়া।
কেমন আছো মিয়া?
কওতো তুমি সত্যি করে
কেমন তোমার হিয়া
এতবড় ডাঙর হইছো
তাও করোনি বিয়া।
শশুরবাড়ি যাওনি আজো
টোপর মাথায় দিয়া
কবে তুমি ফিরবা বলো
নতুন বউ নিয়া।
টিয়াঃ
কওতো তুমি কেমন করে
মুসলমান হয় শিয়া
তারা কি কেউ সেজদা করে
লেলিনগ্রাদে গিয়া?
সবাই যদি মুসলমান হয়
কিসের সুন্নী শিয়া?
দুই মুসলিম ঝগড়া করে
একই হাদিস দিয়া।
ভাইয়ের ওপর আঘাত করে
তাও কাঁপে না হিয়া?
এরা কেমনে মুসলিম হয়
কও তো তুমি মিয়া?
১১/৮/২২। বাদ মাগরিব।
No comments