আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ৩৫১৩-৩৫১৮
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৩
একটা জিনিস নাই
গায়ে আমার শক্তি আছে
মাথায় আমার বুদ্ধি আছে
একটা জিনিস নাই
সেই জিনিসের অভাবে ভাই
লাত্থিগুতা খাই।
কেউ আমারে বাঁচায় কিনা
এদিক ওদিক চাই।
সেই জিনিসটা থাকতো যদি
আমার হাতে থাকতো গদী
বইতো স্রোত নিরবধি
গঙ্গা যমুনায়
সেই জিনিসের থাকলে অভাব
কেমনে গদী পায়।
সে জিনিস না থাকলে সাথে
চান্দা মাছও পায় না পাতে
পুটি মাছে ধরে তখন
ইলিশ বোয়াল খায়
নওয়াব সাহেব ভিক্ষা করতে
ফকির বাড়ি যায়।
বুকে আমার সাহস নাই
বীর পুরুষ তুই না হস নাই
তিনশ টাকার সাহস কিনতে
সিঙ্গাপুরে যাই
বলতে পারিস কোন মার্কেটে
একটু সাহস পাই?
২৮/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৪
আলোর ভেলা
খোকন সোনা চাঁদের কণা
ঘুম যে গেল টুটে
রাত্রি শেষে পূব আকাশে
আলোর রেখা ফোটে।
পাড়ার ছেলে দল বেঁধে সব
বাদামতলা জোটে
সেখান থেকে রিকসা নিয়ে
স্কুলে রোজ ছোটে।
দেখতে সবাই ছেলে মেয়ে
সে কিরে ফুটফুটে
কোথায় গেল হীম রাত্রির
আঁধারটা ঘুটঘুটে।
পড়া যেন মজার খেলা
কেউ হারে কেউ জিতে
কেউ পরেছে শীতের জামা
কেউ কাঁপে এই শীতে।
সূর্যিমামার হাতে তখন
ওমের ডালা ফোটে
সে ওম নিতে কিচির মিচির
পাখপাখালি ছোটে।
জীবন আবার শুরু যে হয়
আসলে নয়া ভোর
আলোয় আলোয় ভরে উঠুক
সারা জীবন তোর।
একটা জীবন পার করে দে
আলোর ভেলায় চড়ে
সে জীবনে মিথ্যা কভু
ভর যেন না করে।
২৯/৬/২২। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৫
বকুল ফুলের মালা
বকুল ফুলের মালা
জাগায় মনে জ্বালা
সে ফুল দিয়েই করলে তুমি
আমায় উতলা।
ওগো রূপের বালা
মনটা ঝালাপালা
এ ফুল দিয়ে আমার মনে
কাটলি প্রেমের নালা।
এ প্রেম তো যায় না রোখা
মেরে হাজার তালা।
বকুল ফুলের মালা
রেখেছিলাম লুকিয়ে তবু
দেখে ফেললো খালা।
বললো আমায় ঠিক করে বল
কে দিয়েছে মালা?
মালাতো নয়, কে দিয়েছে
তোরে প্রেমের ডালা।
বকুল ফুলের মালা
আজো সেসব ভুলিনি তো
স্মৃতি বড় জ্বালা।
কারো কাছে স্মৃতিই আবার
প্রেম কুসুমের মালা।
২৯/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৬
আমিও ঘুষ চাই
বাবা,
লোকে বলে, তুমি ঘুষ খাও,
আমায় কেনো দাও না
তোমার মতো আমি ঘুষ খাই
তুমি কি চাও না?
বাবা বলে, নারে বাবা,
ঘুষ খাবি না তুই
লেপের নিচে জলদি আয়
আমরা এখন শুই।
বাবা,
আমায় কেন করলে তুমি
ঘুষ খাইতে মানা
ঘুমের আগে সেই কথাটা
দরকার খুব জানা।
শোন তবে, ভালো যারা
ঘুষ তো তারা খায় না
মাসের শেষে তারা পায়
আপন কাজের মায়না।
তুমি তবে লোক ভালো না
নাকি মায়না পাও না?
নাকি মায়না ঠিকই পাও
ভালো হতে চাও না?
ঘুষ কি বাবা জুসের মতো
মিষ্টি নাকি ঝাল?
আজকে ঘুমা, তোর এ প্রশ্নের
জবাব দেবো কাল।
কাল না বাবা, জবাব আমি
আজকে রাতেই চাই
নইলে দেখবে কালকে থেকে
আমিও ঘুষ খাই।
৩০/৬/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৭
বেশতো
বেশতো
চোরে চোরে ভরে গেছে
শহর ও গাঁও, দেশতো।
চুরি করছে হাত ও পা
চুরি করছে কেশতো।
বেশতো।
বেশতো
চুরি করে হাসছে মামা
নাই শরমের লেশতো
যে যা পারে করছে চুরি
নাই যে চুরির শেষতো।
বেশতো।
আমার লেখা চুরি করে
কেউ তাতে দেয় সুর
চুরি করা সে সুরেই তো
শিল্পী থাকে চুর।
শিল্পীর ধন প্রডুসার খায়
রয়্যালিটি কই
আমরা সবাই খেতে ওস্তাদ
হরিলুটের দই।
সবই করি দ্বীনের নামে
লুটপাট, চুরি, সব
আরো চুরির দাবীতে
আমরা তুলি রব।
হক মেরে খাই লেখকের
মুছে দেই তার নাম
হক মেরে খাই সুরশিল্পীর
তবু নাই বদনাম।
পরের ধনে পোদ্দারী সব
দ্বীনের নামে করি
দ্বীনের নামে আমরা এক
চোরের সমাজ গড়ি।
বেশতো
কপিরাইট আইন তুলে দিতে
দাবী করি তাই
আমরা সবাই চোর বাবাজীর
মাসতুতু সৎ ভাই।
৩০/৬/২২। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৫১৮
বন্ধু তুমি কান্দো
ব্যবসা করা হালাল বন্ধু
চুরি করা পাপ
এই কথাটা বুঝার বয়স
হয়নি আজো বাপ?
কেমনে তবে চোরের পক্ষে
সাফাই তুমি গাও
হালাল রেখে হারাম তুমি
সাপোর্ট করে যাও?
আবেগ যদি তোমায় বন্ধু
পাপের পথে টানে
বিবেক যেন তখন বন্ধু
তোমায় পথে আনে।
নবী ছাড়া কেউ কখনো
মডেল হতে পারে না
শয়তান যেন তোমার বিবেক
ধরে কভু নাড়ে না।
আবেগটাকে বিবেক দিয়ে
জলদি তুমি বান্ধো
আল্লাহ যেন ক্ষমা করেন
বন্ধু তুমি কান্দো।
৩০/৬/২২। বাদ এশা।
No comments