আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২৬০১-২৭০০

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০১

মহারাজ

হীরালালের বুদ্ধি বেশি দোকান দিছে বাজারে

ঢুলির হাতে টাকা দিয়ে বলছে ঢোলক বাজা রে

জানিয়ে দে রে রাজ্য জুড়ে বুদ্ধি বেঁচে হীরালাল

টাকা নেয়না শুধু নেয় এককেজি সে চিড়া লাল

 

কেমনে করে এখবরটা রাজার কানে চলে যায়

রাজাবাবু সমন দিয়ে হীরার কাছে লোক পাঠায়

আমি যাচ্ছি হাঁস শিকারে শিকার যদি পেয়ে যাই

আজকে রাতে হীরার সাথে একসঙ্গে খেতে চাই

 

সমনটা পায় হীরালালে দুপুর বেলা বাজারে

যেতে হবে রাজারবাড়ি বলেছে খোদ রাজা রে

খাবার পরে রাজা বলে, সবই হীরা জানিস ভাই

আমার আছে টাকাকড়ি, ঘটে কোন বুদ্ধি নাই

 

আমায় একটু বুদ্ধি দে, কেমন করে মহান হই

কেমন করে চিরটাকাল মহান আছি, মহান রই

 

এমন বুদ্ধি দেবো রাজা এরচে ভালো বুদ্ধি নাই

নো চিন্তা ডু ফুর্তি রাজা বসুন আগে সিদ্ধি খাই

রাজ্যে যতো ভালো মানুষ নিরীহ আর ভদ্রলোক

সবকটাকে জেলে দেন রাজ্যজুড়ে নামুক শোক

 

সবাই যখন কাঁদবে তখন আপনি যদি দয়ার হাত

মেলে ধরেন তাতেই হবে মহারাজা কিস্তিমাত

লোকে বলবে, আহা আহা কী দয়াবান রাজা

ছয় মাস তরে থেমে গেল অপরাধীর সাজা!

 

এও কি কভু হয়?

আদালত দেয় সাজা, তবুও রাজার দয়া হয়

জয় মহারাজ, জয়, আহা জয় মহারাজ, জয়

 

মিথ্যামিথ্যি শাস্তি দিলেন ওটা কিছু নয়।

বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করলেন ওটা কিছু নয়

বিনা দোষে জেল খাটালেন ওটাও কিছু নয়

এই যে আপনি মুক্তি দিলেন এর তুলনা হয়?

আপনার মতো মহৎ রাজা ধরায় কয়টা রয়?

 

জয় মহারাজ, জয়। জয় মহারাজ, জয়।

৩০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০২

মানবতা

মানবতা লোভী খুব

কারো সুখ চায় না

মনে হয় মাছ গোস্ত

কোন দিন খায় না

 

আরো দাও আরো দাও

এই তার বায়না

নিজে সুখী হলে পরে

আর কিছু চায় না

 

মনে হয় ধরনীতে

পাখি গান গায় না

পুকুরের মাছ যেনো

আর কেউ খায় না

 

পৃথিবীটা শুধু তার

এই তার বায়না

আর কেউ ভাগ নিক

এটাও সে চায় না

 

পৃথিবী কি শুধু তার

আর কারো নয়?

তবে কেন মানুষ এত

ছোটমনা হয়?

 

ভালোবাসো জগত

আকাশ রবি

ভালোবাসো প্রেমময়

আল্লাহ, নবী

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০৩

ক্ষমতা

সব ক্ষমতার মালিক যদি

এই মানুষই হয়

করোনাকে জেলে নিতে

কিসের এতো ভয়?

 

তোর ক্ষমতার এটাই মামা

পেলাম পরিচয়

জেলে ঢুকাস পরের ছেলে

নিজের ছেলে নয়

 

স্বার্থ ছাড়া আর কি কিছু

করতে পারো মামা

আমিও তো পরতে পারি

আমার নিজের জামা

 

কিন্তু মামা চাইলেই তুমি

মরতে পারো না

নতুন একটা পরাণ তুমি

গড়তে পারো না

 

এক ভাইরাসের ভয়ে আজ

বিশ্ব কুপোকাত

বাঁচতে হলে ধুয়ে ফেলো

নিজের পাপের হাত

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০৪

এবার একটু পাপ কমা

আইছে দেশে দারুণ গযব

গযবের নাম করোনা

সেই গযবের সঙ্গে মামা

ভুলেও ভাব করো না

 

তার সঙ্গে কেউ লড়ো না

মানুষ খোদার বড়ো না

পাপের জন্য তওবা করো

পাপের পথ আর ধরো না

 

সাঈদী হুজুর বন্দী জেলে

বন্দী হাজার নিষ্পাপে

তবু কি হায় মন গলে না

গরম পানি দিস কাপে

 

অনেক হইছে পাপ জমা

এবার একটু পাপ কমা

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০৫

এওকি সওয়া যায়

এওকি সওয়া যায়!

পরের মাথায় থালা রেখে

ভন্ডরা ভাত খায়

 

ক্ষমতাটা হাতিয়ে নেয়ার

বুদ্ধি আঁটে মনে

মহত কতো! সব ক্ষমতা

দেয় সে জনগণে

 

বলে, টোকাও বরইতলে

বরই আছে যতো

গাছের বরই সবই তোমার

টোকাও অবিরত

 

আমার কাছে সব ক্ষমতা

রাখবে যখন জমা

তখন থেকেই তুমি আমার

হবে প্রিয়তমা

 

তোমার লাঠি তুমি খাবে

তোমার গুলি তুমি

জীবনটাকে ধন্য করবে

আমার কদম চুমি

 

সব ক্ষমতার মালিক তুমি

আমার হাতে চাবি

এই চাবিটা কোন দিনই

তুই কি আবার পাবি?

 

এওকি সওয়া যায়!

পরের মাথায় হাত বুলিয়ে

ভন্ড মধু খায়

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০৬

বাড়ছে শুধু সর্বনাশ

সব ক্ষমতা তোমার বললে

পাবলিকে হয় খুশি

ইচ্ছে মতো সেই ক্ষমতা

খান না এবার চুষি

 

তাতে কিছু যায় আসে না

ভানুর বউও আর কাশে না

সত্যটাও আর ভাসে না

 

মিথ্যা শুধু হাসে

বলে, সোনা যাও এগিয়ে

আমি আছি পাশে

 

সত্য মরে হচ্ছে লাশ

বাড়ছে শুধু সর্বনাশ

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ২৬০৭

তুমি মানুষ মারো

আমি বানাই মানুষ তুমি ফাঁসি দিয়ে মারো

ভাল মানুষ ধরে নিয়ে জেলের ভেতর ছাড়ো

এইতো তুমি পারো?

 

তুমি কি কি পারো বান্দা সবই আমি জানি

তার ছেলেটা মারা গেল, মরেনি যার নানী

 

সূর্য ওঠে ফুলও ফোটে, পাখিও গায় গান

শুধু মানুষ ঘরে বন্দী ভয়ে পেরেশান

বিশ্বমোড়ল নিঃস্ব আজ পাপ দুনিয়ায় ঝড়

বাঁচার জন্য ছিল তোমার নবী, পয়গম্বর

 

যখন বলছি পাপ করো না নাওনি সেসব কানে

তখন কি কেউ বুঝতে না মরে যাওয়ার মানে?

কোরআনে কি বলি নাই কেনো গযব হয়?

তবে কেন করলে না সে পাপকে তখন ভয়?

 

আমি বানাই মানুষ তুমি নানা কায়দায় মারো

তুমি চাইলে তোমায় গযব দিতে পারি আরো

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০৮

প্রভাতফেরী মন

করোনা তুই এলে দেশে, অনেক দেখি লাভ হয়

ছোট ছোট নারকেল গাছে কচি কচি ডাব হয়

 

ঘুষখোরগুলো ঘুষ খেতে কেউ

অফিসে আর আসে না

দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা

পর ললনা হাসে না

 

মদের আসর জমে না

জামাতে লোক কমে না

ক্যাসিনোতে অন্ধকার,

রঙিন বাত্তি জ্বলে না

 

ধর্ষক পথে হয় না বাহির ভয় ঢুকেছে মনে

পার্কে ঘুরতে আসেনা আর উর্বশী সব কনে

 

দুনিয়াটা পাক পবিত্র, বৃষ্টি ধোয়া বন

অমানুষও হচ্ছে মানুষ প্রভাতফেরি মন

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০৯

পাপের সাজা

বিশ্বে এখন মহামারি

মরছে মানুষ সারিসারি

মরছে ঝাঁকে ঝাঁকে

হাজারে নয়, লাখে

 

বন্ধ বিমান, রাস্তাঘাট

শহর নগর, বাজারহাট

বন্ধ অফিস পাড়া

মানুষ যাচ্ছে মারা

 

গোসল দেয়ার মানুষ নাই

কার জানাযা কে পড়ায়

কষ্টে সবার দিন কাটে

গরীব চাষী, বড় লাটে

 

কোটি টাকার মালিক ছিল

এখন খাবার পানি নাই

বিশ্বমোড়ল আকাশ দেখে

মুখে কোন বাণী নাই

 

চলছে ধরায় মহামারি

কান্না অথৈ বাড়িবাড়ি

 

মিসাইল কামান নিয়ে কান্দে অস্ত্রবাজ রাজা

তবে কি তার পেতেই হবে নিজের পাপের সাজা?

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১০

আল্লাহ বলুন

কেউ যাবেন না বাইরে দাদা, ঘরে থাকুন, ঘরে থাকুন

প্রভু যেন মাফ করে দেন, আল্লা ডাকুন, আল্লা ডাকুন

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন

অন্যকেও মানতে বলুন

যে কাজে হয় মন্দ পাপ, সে সবই আজ এড়িয়ে চলুন

আল্লাহ বলুন, আল্লাহ বলুন

 

বন্ধুরা সব কেমন আছে, নিজেই একটু খবর নিন

এই বিপদে পারলে তারে, সাহস এবং বুদ্ধি দিন

আপন জনের খোঁজ রাখুন

পড়শি জনের খোঁজ রাখুন

কার কি লাগবে জেনে নিয়ে, পারলে ওসব পৌঁছে দিন

 

আত্মীয়ের যে নেয় না খবর, তার মনে কি ভয় নাই

আত্মীয়ের যে হক আছে, শাস্ত্রে কি তা কয় নাই?

আত্মীয়দের খবর নিন

নিজে কেমন খবর দিন

মিলেমিশে থাকলে দেখবেন আত্মীয়তার ক্ষয় নাই

তখন সবাই থাকবে ভালো, দেখবেন কোন ভয় নাই

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১১

হারাম ছাড়ি হালাল খাই

ইল্লিয়ানা! ইল্লিয়ানা!

হারাম কিছু খাইতে মানা

পরের জিনিস ধরতে মানা

এসব কিছুই তোমার জানা?

তবে কেনো খাও?

 

হারাম খেলে কি হয় জানো?

পাপকে তুমি কাছে টানো?

পাপীরা সব দোযখ যায়

আগুন তারে ভেজে খায়

দোযখ তুমি যেতে চাও?

তবে কেন হারাম খাও?

 

হারাম তো খায় সাপের ছাও।

তুমি কেনো হারাম খাও?

তুমি সাপের ছানা না?

হারাম তবে খানা না

 

এসো সবে হালাল খাই

হালাল পথে চলি ভাই

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১২

বীর বাহাদুর

মায়ের পেটে আসার আগে কোথায় তুমি ছিলে?

মায়ের পেটে যদি তোমায় দত্যি খেতো গিলে?

 

দুনিয়ায় যেদিন এলে, সে কাহিনী মনে আছে?

বলতে পারো তোমায় দেখে কে হেসেছে ডালিম গাছে?

 

জন্ম থেকে আজ অবধি পার হলে কও কয়টা নদী

কেন মানুষ মিছিল করে চাচ্ছে কেবল নরম গদী?

 

এই যে থাকো সজাগ তুমি এই যে থাকো ঘুমে

বলতে পারো কোন সে পরী তোমার দু'পা চুমে?

 

ঘুমের মাঝে অচীন দেশে যখন চড়ো ভেলায়

তখনো কি ভীতুর ডিম, মরো ভয়ের ঠেলায়?

 

তবে কেনো পাচ্ছো ভয় মরার কথা শুনে

ওতো শুধু একবার আসে সময় গুণে গুণে

 

মরণ ভেলায় চড়ে সবাই যায়রে আরশ মহল্লায়

যেথায় গেলে মুমীন বান্দা ভালবাসা অঢেল পায়

 

মরতেই যদি হবে তবে কষ্ট কেনো মনে?

বীরের মত যাওনা তবে বীর বাহাদুর রণে

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১৩

যা দেখি সব সত্যি না

দাদা।

হীরালালের সাহস কত

আমারে কয় গাধা

ওরে,

তুই কি বুঝবি যুক্তির কথা

তুই তো বোকা, হাঁদা

তোর মাথায় তো অর্ধেক ঢুকে

বাইরে থাকে আঁধা

 

দাদা।

এবার চেঁচায় হীরা

ওরে শুধু গাধা কইছি

মারি নাই তো দাদা

এবার কিন্তু মার লাগামু

মানবো না আর বাঁধা

 

আরে।

থাম, থাম

ঘটনা কী, শুনি

আমার সামনে করবি নাকি

তোরা খুনোখুনি!

 

দাদা।

আমার কথা ফকফকা,

দুধের মতো সাদা

না দেখে কেউ বিশ্বাস করে,

শোনা কথা, দাদা?

 

তাইতো!

রহস্যের ঘ্রাণ পাইতো

শোনা কথা পুরোপুরি

বিশ্বাস করতে নাইতো

 

দাদা।

কে যে ওরে জন্ম দিছে

কি সেটা দেখেছে?

তবে কেন মায়ের নাম

জুলেখা বেগম লেখেছে?

 

নিজের মাকে চিনতে হয়

পরের কথা শুনিয়া

শোনা কথা বিশ্বাস ছাড়া

চলে না দুনিয়া

 

এই যে দাদা জলের নিচে

আকাশে চাঁদ দেখা যায়

চাঁদ কি দাদা দুটো না কি

নীল আকাশে একটা, হায়

 

যা দেখি সব সত্যি হয় না

নিজের চোখও ভুল দেখে

সে কারণে লেখকরাও

অনেক সময় ভুল লেখে

 

যিনি ছিলেন আল আমিন

মানুন শুধু তাঁরই দ্বীন

মেনে চলুন আল কোরআন

পরম প্রভুর দান মহান

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ২৬১৪

মউত খান

পুরাণ কালের স্বভাব কিরে

জলে ধুইলে যায়

গরীব দুঃখীর ত্রাণের খাবার

চেয়ারম্যানে খায়

 

বাহাত্তুরে যা দেখেছি, আজো দেখি তাই

চুয়াত্তুরের লাশ খেয়ে কি ক্ষুধা মেটে নাই?

 

সারাদেশে তাই পড়েছে

আবার লুটের ধুম

তাই কি নেতার টুটে গেছে

রাতের মজার ঘুম?

 

আবার এলো হারামখোরের লুটে খাবার দিন

চাউল পরে, কাগজে টিপসই একটা দিন

 

সময়মতো সবই পাবেন

আগে পটল তোলেন

মরার আবার কাফন কি?

ওসব কথা ভোলেন

 

খালি গায়ে জন্ম আপনার, খালি গায়ে যান

রিলিফ থাক নেতার ঘরে, আপনি মউত খান

//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১৫

করোনার দোষ

আমার দেশের মন্ত্রীরা কি

মিঠা কথা কয়

তাদের নাকি শক্তি বেশী

করোনা পায় ভয়

 

মানুষ মরে শ্বাসকষ্টে,

করোনাতে নয়

বুদ্ধি দিয়ে করোনাকে

মন্ত্রী করে জয়

 

বুদ্ধিটা খুব সোজা।

বাংলাদেশের করোনা

দিনভর থাকে রোজা

 

দিনে রোজায় খাইতে নাই

করোনার দোষ গাইতে নাই

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১৬

শয়তান নিছে ইজারা

আল্লার আকাশ আল্লার জমিন

শয়তান নিছে ইজারা

তাই এখানে দাপট দেখায়

পাপিয়া লিজা রা

 

করোনা কয়, হায় পাপিয়া

পাপ করেছিস? যা চাপিয়া

 

তওবা করলে করতে পারি

পাপের পাহাড় মাফ

সাজা শুরু হয়ে গেলে

বাঁচাই তখন টাফ

 

রিলিফের মাল করিস চুরি

গযব ডেকে আনিস না

ওগুলো তো রিলিফ না,

করোনা তুই জানিস না?

 

এখনো তুই তওবা কর

নইলে খবিস জলদি মর

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১৭

জীবন মানে

জীবন কি ভাই, জীবন কি ভাই, জীবন কি কেউ জানো?

মন্দ তাড়াও, ভালো বাড়াও, প্রভুর হুকুম মানো

তুমি কি তা মানো?

ভালোটাকে আনো?

মন্দ এলে সম্মুখে ভাই, তারে আঘাত হানো?

 

জীবন মানে সর্বনাশা পদ্মাতে রোজ ভাসা

জীবন মানে রৌদ্র মেঘ কান্না এবং হাসা

তুমি কি তা হাসো?

দেশকে ভালোবাসো?

বিপদ বাঁধা এলে তাকে শক্ত হাতে নাশো?

 

জীবন মানে জীবন থেকে তাড়াও রাতের কালো

জীবন মানে জীবন জুড়ে আলোর প্রদীপ জ্বালো

তুমি কি তা জ্বালো?

ভালো তবে ভালো

হিংসা দ্বেষ, লোভ ঘৃণা, তাড়াও মনের কালো

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১৮

ঘুম পাড়ানি

ঘুম ঘুম ঘুম, ঘুম পাড়ানি, ঘুমের দেশে যাও?

ঘুমে আছে শান্তি সুখ তার দেখা কি পাও?

 

খাটের ওপর শুয়ে শুয়ে, ধরো পাখির ছাও

পুকুরটাকে খাল বানিয়ে সেখানে নাও বাও?

ঘুম কি এসে ঘুমের মাঝে ধরে তোমার পাও?

এতো করে বলছি কথা, পারো না যে রাও

 

তুমিই বলো ঘুমের মাঝে আর কি তুমি চাও?

ঘুমের মাঝে অচীন দেশী বেহেস্তী ফল খাও?

আর কি তুমি চাও?

আর কি তুমি চাও?

মনে আছে ঘুমের মাঝে কোন গানটা গাও?

 

বলতে পারো ঘুমে তুমি কোথায় কোথায় যাও?

ঘুমের মাঝে খেলতে গিয়ে কোথায় ব্যথা পাও?

ঘুমের মাঝে কারে তুমি ভালোবাসা দাও?

ফুলপাখিদের ভালোবাসা টের কি তুমি পাও?

 

মা ডাকছি জলদি ওঠো, চোখটা মেলে চাও

ঘুম হয়েছে অনেক এবার পড়তে তুমি যাও

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬১৯

ওমানে সুলতান

উত্তর পাড়ার সুলতানে

রোজই পোলা গুন টানে

হঠাৎ শুনি সুলতান নাই

শেষ বলেছে, মুলতান যাই

 

পরে শুনি সুলতানে

ঠিকই গেছে মুলতানে

প্লেনে চড়ার টাকা নাই

হেঁটে গেছে মুলতান তাই

 

খোদার লীলা বুঝা ভার

খুলে গেল কপাল তার

নেতা বলল, বোমা নে

সে পালালো ওমানে

 

একদিন গেলো বাজারে

দেখলো তখন রাজারে

রাজা বলে, ঘর কই তোর?

 

যে দেশে হয় রাত্রে ভোর।

 

কি কয় মন্ত্রী, আজনবি

খাইছে শরম লাজ সবই?

 

না মহারাজ, নয়

লোক পাইছে ভয়

তাই লোক উদ্ভটসব

আজব কথা কয়

 

জয় ভোলানাথ জয়

তাই যেনো ঠিক হয়

 

আপনি ভাছেন পাগল আমি,

রংহেড নিয়ে ঘুরি?

তবে কেমনে রাজ্য চালাই

নিজেই করি চুরি?

 

আমার দেশের মানুষ ভালো

পাবলিকে খায় গাঁজা

আইনের লোকে তবলা বাজায়

হাত তালি দেয় রাজা

 

ওমান দেশের রাজা আপনি

আমার নামও সুলতান

এখন থাকি আপনার দেশে

আগে ছিলাম মুলতান

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২০

দ্বীন দুনিয়ার মালিক

সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক, জনগণই হয়

এমন কথা বুঝিনা হায় কোন চালাকে কয়

কবে আমার জন্ম হইছে, কোথায় বাড়িঘর

এসব কথা সবই জানলাম বুদ্ধি হবার পর

 

পাড়াপড়শির মুখে শুনে চিনলাম পিতা মাতা

কবে আমি মারা যাবো পড়লাম না সে খাতা

কেমন করে বেঁচে আছি, রিযিক পেলাম কই

কিছু জানলাম লোকের মুখে, কিছু পড়ে বই

 

এমন অধম বান্দা আমি, নিজের খবর নাই

অবাক হয়ে আকাশ মাটি সাগর দেখি তাই

কে বানালো পাহাড়, নদী, সাগর ভরা জল

কে বানালো তরুলতা, নানান ফুল ফল?

 

যতোই ভাবি এসব কথা, কূলকিনারা নাই

এতো এতো ফলফলাদি কেমন করে পাই?

যার হুকুমে এই পৃথিবীর সকল কিছুই চলে

যার হুকুমে রাত্রিবেলা আকাশপ্রদীপ জ্বলে

 

সবাই করো তাঁর ইবাদাত, তাঁরেই করো ভয়

সব ক্ষমতার তিনিই মালিক, অন্য কেহ নয়

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২১

যাবো?

যেতে বলছিস? যাবো?

আরো একবার ভাবো

 

প্রজার ওপর রাজা কি আর

করবে কোন জুলুম?

পা যে ভাঙা গুলি খেয়ে

সেইটা কেমনে ভুলুম?

 

করোনাটা সরে গেলে

চলবে আবার গুলি

সেই গুলিতে মারা যাবে

মতিউর ফুলি

 

যেতে পারি যদি বলো,

জুলুম ধরায় থামবে

বিশ্ব জুড়ে শান্তি সুখ

আবার এসে নামবে

 

বিশ্ব মোড়ল নিঃস্ব হয়ে

দাউদকান্দির পুলে

ভিক্ষা করবে উস্কোখুস্কো

গায়ের জামা খুলে

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২২

করোনা কয়

এসেছিলাম চলে যাবো,

কিন্তু কেমনে চলে যাই

এখনো তোর হলোনা হুশ

এতো ডলা ডলে যাই

 

বিপদ এলে নাস্তিকও দেখ

আল্লা খোদা ডাকে

ফ্রান্স ইটালির নেংটা পোলা

জোরে আজান হাঁকে

 

তোর দেশের যে নেতাগুলো

রিলিফ চুরি করে

ওদের রেখেই আমারে কস

চলে যেতে ঘরে?

 

চোরকে বানাস নেতা তোরা

তাই বা কেমনে ভুলি

তোদের পাপ কি দেখিনারে

চোখে আমার ঠুলি?

 

নেতা বসে কলা খাক

জনগণে ডলা খাক

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৩

সুখের সতেজ ফুল

আপন জনের ভালোবাসায়

জীবন করো ধন্য

আপনজনকে ভালোবাসো

নিজের সুখের জন্য

 

নারী তুমি শাড়ির তলে

বাড়ির ভেতর থাকো

পর পুরুষের দেখা পেলে

আঁচলে মুখ ঢাকো

 

সন্তান জন্মের কষ্ট যেমন

মুখ দেখে যাও ভুলে

কেউ যদি দেয কষ্ট তারে

জড়াও প্রেমের ফুলে

 

আকাশ বাতাস নরম মাটি

পিউ পাপিয়ার গান

সবতো তোমার সুখের জন্য

দিলেন মেহেরবান

 

দুঃখগুলো দাও তাড়িয়ে

বাতাসে যাক ভেসে

হৃদয়টাকে জাগাও আবার

কলকলিয়ে হেসে

 

ক্ষমার মাঝে জমা থাকে

সুখের সতেজ ফুল

দুঃখানলে দাও পুড়িয়ে

পরের সকল ভুল

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৪

টিকটিকি ডিম পাড়ছে

হায়রে কপাল হায়

গাধা নাকি পানি খেলে

ঘোলা করে খায়

 

বিশ্বব্যাপী নেতৃবৃন্দ করছে পাপের অনুতাপ

অশ্রুরাশি ছেড়ে বলছে প্রভু তুমি করো মাপ

 

চীনে মসজিদ খুলে দিছে,

ফ্রান্সে দিচ্ছে আযানও

রাজ দরবারে থেমে গেছে

নানান বাজনা বাজানো

 

আমরা তখন মোকাবেলার করছি নানা ফন্দি

বলছি ডেকে করোনারে, কয়দিন রাখবি বন্দি

সবাই যখন করছে তওবা, করছে বরণ দ্বীন

আমরা তখন করছি এরেস্ট ইমাম মোয়াজ্জিন

 

ভেবেছিলাম এতো মোমিন

হাত তুলেছে যেখানে

করোনা তার আসল রূপটা

দেখাবে না সেখানে

 

কিন্তু এখন লাগছে মনে ভয়

জামাত বন্ধের অজুহাতে গযব যদি হয়?

 

স্বাস্থবিধি মেনে মরণ কমছে নাকি বাড়ছে

হাতি ঘোড়া গেল তল, টিকটিকি ডিম পাড়ছে

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৫

তওবা ছাড়া গতি নাই

পাপের কোন সীমা নাই

পাপের জীবনবীমা নাই

 

রিলিফ দেয়ার নাম করে

চলছে নাকি ধর্ষণও

বাড়ছে তাতে একটু করে

খোদার গযব বর্ষণও

 

মন্ত্রী করছে বাহাদুরী

চেয়ারম্যানে রিলিফ চুরি

পাপিয়ারা করছে নাকি

পাপের নয়া কর্ষণও

 

হায় মুসলমান করোনা নয়,

তার মালিককে ডড়াও

প্রতিদিন যে মারছে মানুষ

তাকে অঙ্গে জড়াওতও

 

চোর লুচ্চারে তওবা করাও,

নিজেও খোদার পথ ধরো

বাঁচার রাস্তা একটাই আছে

পারলে তওবার পথ ধরো

 

তওবা ছাড়া গতি নাই

তওবা করলে ক্ষতি নাই

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৬

আমার লেখা আমি লিখি

আমার লেখা আমি লিখি

করতে পারি পেয়ারও

ভাল যদি লাগে কিছু

করতে পারি শেয়ারও

 

তার মধ্যেই কিছু লেখা

থাকতে পারে রেয়ারও

বলতে পারে কানে কানে

আমায় করো কেয়ারও

 

লেখাই বলবে, দাদা দাদা

আমায় করো শেয়ারও

একটুখানি আদর করো

করো দাদা পেয়ারও

 

সবই করো ফেয়ারও

নেয়ার এবং দেয়ারও

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৭

ছড়ায় কি থাকে

কী যে লিখি ছাইপাশ, তবু সবই তুই খাস

পড়তো যদি পন্ডিতে, শূলে নিতো দন্ডিতে

ভাগ্য ওরা পড়ে না, আবুলও তাই মরে না

গাছতলাতে থাকে তবু পরের কিছু ধরে না

 

ছড়ায় থাকে ঝর্ণা নদী, নীল পাখিদের কান্না

ছড়ায় থাকে পাথর নুড়ি, চাঁদের বুড়ির রান্না

ছড়া পড়ে হোসনেয়ারা তার ছেলে বন্দনা

বলে, দাদা ভালই লিখে,একেবারে মন্দ না

 

ছড়ায় থাকে টক ঝাল,ছড়ায় থাকে মিষ্টি

ছড়ায় থাকে কড়া রোদ, মোষলধারে বিষ্টি

কখনো সে ছড়া আবার একটুখানি নুন চায়

বলে, ওরে মন্দ নয়, তবে লেখায় গুণ চায়

 

ছড়ায় থাকে ফুলপাখি কাঁচা আমের ভর্তা

ছড়ায় থাকে রাশভারি সে মিয়া বাড়ির কর্তা

ছড়ায় থাকে তুলশীতলা, অমাবশ্যা রাতও

ছড়ায় থাকে দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারের হাতও

১০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৮

মানুষ ও করোনা

এই করোনা সেই করোনা

করোনার তো অভাব নাই

করোনারতো ভাল কিছু

করার কোন স্বভাব নাই

 

করোনার দোষ মানুষ মারে

তোমরা মানুষ মারো নাই?

হিরোশিমা নাগাসাকি

বোম মেরেছে করোনাই?

 

পারমানবিক অস্ত্র বানাও

তোমরা কিসের জন্য?

তোমার চেয়ে করোনা কি

অনেক বেশি বন্য?

 

মানুষ মারার জন্য এতো

কষ্ট করার দরকার কি

পিঁপড়া মারার জন্য এতো

অস্ত্র কিনে সরকার কি?

 

তোমরা যখন করোনা হও

তখন দোষের হয় না

করোনা কি মারছে কোন

পশু পাখি ময়না?

 

তুমি মানুষ এতো নিঠুর

পশু পাখি সব মারো

করোনা তো মারে শুধু

যারা লম্বা গপ মারো

 

মানুষ যতো খারাপ অতো

খারাপ কিন্তু করোনা নয়

করোনাতো চলে যাবে

যদি আদম মানুষ হয়

১০//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬২৯

মরণ ভাবনা

মরণ যখন আসবে তখন মরবে সবাই জানি

মরণ নিয়ে আমার তবে কিসের পেরশানী?

মরবে না কে বলো?

মরতে যখন হবেই তখন সাহস নিয়ে চলো

 

মরবো জানি, কিন্তু কখন, সেটা জানি না।

আমি তুমি মোল্লা পুরুত, কারো নানী না

জানার যখন উপায় নাই

তবে কেন বিপথে, জেনেশুনে পা বাড়াই?

 

মরতে হলে মরে যাবো, কিসের এতো ভয়

ভয়তো শুধু সঙ্গে যদি পাপের বোঝা রয়

এখনো তো মরি নাই

চলো তবে তওবা করে বস্তা খালি করি ভাই

 

রহীম রহমান মাফ করো

আমার দীল সাফ করো

১০//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩০

করোনা তুই

করোনা তুই মাতলি কেনো বিশ্বে মরণ বন্যায়?

বলবি আমায় কি করেছে আদম জাতি অন্যায়?

 

কি করেনি বলো।

আমার সাথে চলো

 

এই যে দেখো এরা সবাই, ভিন্নমতের বন্দী

নেংটা হয়ে ঝুলে আছে, তাও করেনি সন্ধি

এদের সাথে আরো ছিল কেউ পেয়েছে ফাঁসি

গুলি খেয়ে মুছে গেছে কারোর মুখের হাসি

 

ওদের স্বজন কাঁদতে ছিল কাবার গিলাফ ধরে

আমি ভাবি, সেসব খোদা সইলো কেমন করে?

গুমের শিকার ছেলের জন্য মায়ের সেকি কান্না

চোখের জলেই হয়ে যেতো মায়ের সকল রান্না

 

বিশ্বজুড়ে সে হাহাকার, বলছিল, অন্যায়

হুকুম করো জালিম যত ভাসাই প্রভু বন্যায়

 

না, হুকুম তাতে মেলেনি।

খোদার আরশ কাঁপলো তবু

মন তো তাদের গলেনি

 

ভালো লোকে জেল ভরেছে চোর ডাকাতের দল

ভালো লোকে সয়েছে জুলুম, হয়েছে হীনবল

 

জেলের ভেতর মারা গেলেন মুরসি

বললাম প্রভু দেই পাল্টিয়ে কুরসি

বিশ্ব জুড়ে জুলুম শোষণ সইবে অসহায়

আমরা শুধু দেখে যাবো তাকিয়ে নিরূপায়?

 

প্রভু বললেন, তাই তো!

আলেম, ইমাম, হাফেজ ভরা

ওদের কেহ নাই তো!

 

পাপীর যদি হুঁশ না ফেরে, আলেম না পায় মুক্তি।

ওদের ওপর রহম করার থাকে না আর যুক্তি

১০//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩১

পাপের বন্যা থামাও

ধর্ষিতাদের কেউ ছিল না, সহায় কোনখানে

প্রাণ দিয়েছে কজন সেটা কেউকি বলো জানে?

বিশ্বে এমন দেশ পাবে না সয়নি জুলুম নারী

জানতে চায় না বয়স কেউ, কই যে তার বাড়ি

 

এত কিছু ভাবার সময় পায়না জালিম জন

নারীর দেহ পেলেই খুশী, ধর্ষক পশুর মন

 

এসব নারী কাঁদে যখন, খোদার আরশ কাঁপে

বিশ্ব কাঁপে থরথর করে, অশ্লীলতার পাপে

পরকীয়া পতিতাতে ছেয়ে গেছে ধরা

তাকিয়ে দেখো পাপের ভারে ডুবছে বসুন্ধরা

 

অমুসলিমে ধরছে হিজাব, মুসলিম দিচ্ছে ছেড়ে

তুমিই বলো, এদের জীবন নেবো কিনা কেড়ে

খোদার হুকুম পর্দা করা, উঠে গেছে সবই

একটু তাদের খবর নিতে বলে দিলেন রবই

১১//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩২

করোনার লকডাউন

আমার নতুন বর।

নিজের গাল নিজেই দেখি

মারলো দুটো চর

বললাম আমি, একি!

 

বললো হেসে কিছু না

দেখলাম তোমায় ভালবাসি

সত্যি নাকি মেকি!

 

মানে!

 

মানেটা তে আর কিছু নয়

করোনাও জানে

বিশ্ব জুড়ে লকডাউনটা

তাইতো ডেকে আনে

 

কী যে তুমি বলো!

হেয়ালিটা সারা জীবন

সঙ্গে নিয়ে চলো

 

ভাল মানুষ ধরে যখন

জেলখানাতে ভরে

লকডাউনের বুদ্ধি তখন

করোনাও করে

 

অল্প কজন বন্দী রবে,

অন্য সবাই বাইরে

এমন বিধান প্রকৃতিতে

সত্যি সত্যি নাইরে

 

ওরা যখন লকডাউনে

তোমরাও না হয় যাও

লকডাউনের মজা সবাই

ঘরে বসে খাও

 

অসহায়রে বন্দী করা

শক্তিমানের ঠিক না

আজকে তুমি মোটা ঠিকই

কালকে হবে চিকনা

 

কোরান পড়ে আলিম হয়

জুলুম করে জালিম হয়

১১//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৩

যারে যেথা মানায়

আলেম থাকবে জেলখানাতে

চাল চোর থাকবে বাইরে

এমন কোন বিধান দেশের

সংবিধানে নাইরে

 

মিথ্যা মামলায় ফাঁসলে কেহ

যে ফাঁসালো তারে

কী করা যায় তার বিধানটা

পড়ো বারে বারে

 

আইনটা চলুক আইনের মত

আমলারা খাক মামলা

আইনই বলুক ঘুষের টাকা

এবার তোরা সামলা

 

ইমাম থাকুক মসজিদে আর

চাল চোর থাকুক জেলে

ক্রিকেট খেলুক ইমরান খান

ফুটবল খেলুক পেলে

১১//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৪

সবাই যখন চোর

ভাইরে

সবাই চল শত মুখে

চোরের গুণ গাইরে

 

আমিও চোর তুমিও চোর

নেতাও চোর দেশে

তাইতো পথে চোর দেখলে

সালামও দেই হেসে

 

চোরকে বানাই মেম্বার আমরা

চোরকে চেয়ারম্যান

নামাজ পড়ে চোরের নাতি

জলদি জেলে দেন

 

রিলিফের মাল চাই না আমরা

সবই আপনি নেন

তিন পুকুরের মাছ লুটেছি

ওটা ছেড়ে দেন

 

চোরের চামড়া তুলবো আমরা

মিছিল হবে কাল

ছেলেপেলে আবদার করছে

ওরা খাবে ডাল

 

জলদি কয়ডা টাকা দেন

রিলিফ সবই আফনি নেন

 

ভাইরে

সবাই চল শত মুখে

চোরের গুণ গাইরে

১১//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৫

এবার মনের পাপ কমাও

আগের কাজ আগে করো

পরের কাজ পরে

আগে সবাই তওবা করো

পাপ আসবে না ঘরে

 

তারপর বলো আল্লাহ তুমি

করোনা তুলে নাও

এবার দেখো বিশ্বে কোথাও

করোনা খুঁজে পাও?

 

সাবানে হাত ধুইলে শুধু

কাজ হবে না কিছু

যদি পাপের বাচ্চা ঘুরে

মনের পিছু পিছু

 

খোদার সাথে ভাব জমাও।

এবার মনের পাপ কমাও

১২//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৬

বলছে ডেকে করোনা

ঘরে বসে দোয়া চান।

খানা শেষ? মোয়া খান

অযু করেন পাঁচ বার

যদি চান বাঁচবার

 

পর্দা কভু করেন নাই?

এবার একটু করেন ভাই

দূরত্বটা মেনে নেন

ঘেঁষাঘেঁষি ছেড়ে দেন

 

পরের টাকা কাইড়া নেন?

এবার ওসব ছাইড়া দেন

খাইতেন হরেক চান্দা?

ছাড়েন ওসব ধান্ধা

 

বলছে ডেকে করোনা

পরের জিনিস ধরো না

মিছা কথায় পাপ হয়

কবরে পাপ সাপ হয়

 

পরকীয়া বাদ দাও

আপন হাতে হাত দাও

কালো টাকা ধরো না

আলগা প্রেমে পড়ো না

 

শখ করে কেউ মরো না।

বাঁকা রাস্তা ধরো না

ধান্ধাবাজি করো না

পাপের ফান্দে পড়ো না

 

করোনা কি মন্দ কয়?

মানলে তো আর রয়না ভয়

 

রহমের পথ বন্ধ না

তাও মানিস না চন্দনা

১২//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৭

করোনা এলে কমে পাপ

করোনা এলে কমে পাপ

এই কথা কি মিথ্যা বাপ?

 

মদের আখড়া বন্ধ ভাই

ক্যাসিনোতে বাত্তি নাই

নাইটক্লাবে মস্ত তালা

বন্ধ সকল প্রমোদশালা

 

ডেটিং ফেটিং বন্ধ এখন

বন্ধ হোটেল বারও

আর্মির হাতে খাচ্ছে নাকি

সোনার ছেলে মারও

 

সিনেমা হল খোলা নাই

রংবাজ কোন পোলা নাই

মার্কেটে নাই পরীর দল

চোখ মারে না পাপের কল

 

ধর্ষক গর্তে লুকাইছে

ঘুষখোর কিছু শুকাইছে

বয় না বাতাস দখিনা

খদ্দর পায় না সখিনা

 

রাতের রাজা রানী নাই

নেতার তেমন বানী নাই

গুমের খবর শুনি না

দুর্ঘটনা গুনি না

 

তরকারিতে হয়নি নুন

মিছিলে নাই মানুষ খুন

ভোটের ভূয়া মিছিল নাই

রাস্তা হয় না পিছিল ভাই

 

মানুষ মেরে নাস্তা খাই

কয় না কোন রাক্ষস তাই

দেশটা কেমন ঠান্ডা

ঝোঁপের ভেতর পান্ডা

 

এক ভাইরাসের ডরে

সব ভাইরাসে ঘরে

খুনি ডাকাত আস্তানায়

শুকনা রুটি নাস্তা খায়

 

করোনা এলে কমে পাপ

এই কথা কি মিথ্যা বাপ?

১৩//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৮

করোনার জবানবন্দী

করোনাতে অমুসলিমরা

পাপ কিছুটা ছেড়েছে

মুসলমানের পাপ উল্টো

আরো কিছু বেড়েছে

 

পাপ ছেড়েছে পাবলিকে

পাপ ছাড়েনি জালিমে

পাপ ছাড়েনি গুটিকতক

ধামাধরা আলিমে

 

বর্ষাকালের কৈয়ের মত

চোর কি দেশে উজাইছে?

খুনীরা কি নতুন খুনে

শক্তি বাড়ছে বুঝাইছে?

 

পাপ ছাড়ে নাই পাপীর দল

যারাই বসা গদীতে

তারাই যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে

পাপের ভরা নদীতে

 

এমন সময় আমি যদি

এদেশ ছেড়ে চলে যাই

বলবে ওরা করোনাও

ভয় পেয়েছে ভীষণ ভাই

 

শরমে তাই যাই না

যদিও বেশী খাই না

১৩//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৩৯

চোরের খালু চোর

ভোট চোরা কয় চাল চোরাকে

তুই তো একটা চোর

চাল চোরা কয় ভোট চোরাকে

আমি সাগরেদ তোর

 

মুই চোর আর তুই না শুধু

সারা দেশটা চোর

চোরের আকাশ চোরের মাটি

সকাল সন্ধ্যা ভোর

 

চোরের ভোটে মেম্বার আমি

তুই হয়েছিস নেতা

চোরের ভয়ে সবাই কাবু

ভাগ্যে আসে জেতা

 

চাল চোরা কয় ডাল চোরাকে

কেমন আছেন খালু

চোরের ইসকুল পাশ করেছে

আমার পোলা কালু

 

দোয়া করবেন কালু যেনো

চোরের রাজা হয়

আইন হয়েছে সবাই বলেন

জয় বাংলার জয়

১৩//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪০

মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসি হয়

মুক্তিযোদ্ধা মাজেদ রে তুই একাত্তুরের বীর

দেশপ্রেমে তুই ডুবেছিলি, উঁচু রেখে শির

জীবন বাজি রেখে যখন যুদ্ধ তোরা করেছিলি

কে চালাবে এদেশ তখন তুই কি কিছু বুঝেছিলি?

 

 

দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন করলি দেশ

জাতি দিল ফুলের মালা, বিজয় হলো শেষ

যাদের হাতে অস্ত্র দিলি নমাস তারা কই ছিল

ইতিহাসের পাতায় সেসব লেখা সমস্তই ছিল

 

বিদেশ থেকে রিলিফ তখন আসছে ভুরিভুরি

দেশের মানুষ দেখল সেসব করছে কারা চুরি

কারো কিছু বলার নাইরে, লঙ্করখানা খালি

পথেঘাটে লাশের সারি, লোকের মুখে গালি

 

চিত্র যে দেখে নাই, বুঝবে না সে কোন কিছু

লাশের গন্ধে শকুন কেন ছুটে আসে ঘরের পিছু

কবর দেবে কাফন কই, নদীতে লাশ ভাসে

কান্না ভুলে মানুষ তখন পাগল হয়ে হাসে

 

দেশের মানুষ সয়ে গেল, কয় পাগলে সইলি না

মনের কথা জাতির কাছে খুলে তোরা কইলি না

তারপর এলো অন্ধকারের সেই সে কালো রাত

ক্ষুধার জ্বালায় পিতার গায়ে তুললি তোরা হাত

 

যার যেখানে মরণ লেখা, তার সেখানে যেতে হয়

ভাগ্যে থাকলে ফাঁসির দড়ি মুক্তিযোদ্ধার খেতে হয়

 

এটা শুধু তোর একা নয়, সবার বেলায় সত্য

হোক না সেটা সিরাজ শিকদার, হরিপদ দত্ত

মুক্তিযোদ্ধা মাজেদ রে তুই একাত্তুরের সেনা

অবশেষে ফাঁসি দিয়ে শুধলো জাতি দেনা

১৪//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪১

ভালো আছি ভালো থেকো

ভাল আছি, ভাল থেকো

যদি পারো মনে রেখো

লক ডাউনে কেমন আছো

দোয়া করি বেঁচে থাকো

 

কে কদিন বা বাঁচে ভবে

যদি বাঁচি দেখা হবে

না হয় আমায় ভুলে তুমি

প্রভু বাঁচাও বলে ডাকো

 

সবুজ দেশের অবুঝ পাখি

করছে কিনা ডাকাডাকি

সেসব ভুলে বন্ধু তুমি

এখনো কি স্বপ্ন আঁকো?

 

ভাবছো যাবে পাপের জীবন

আসবে নয়া আলোর ভুবন

করবে কিগো একটু দোয়া

যদি সে দিন বেঁচে থাকো

 

ভাল আছি, ভাল থেকো

বেঁচে থাকলে মনে রেখো

করোনার ভয়াল থাবায়

দোয়া করি বেঁচে থাকো

১৫//২০২০; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪২

এমন একটা বিশ্ব চাই

এমন একটা বিশ্ব চাই

যেথা কোন দুঃখ নাই

নাই আঁধারের লেশ

আলো ঝলমল দেশ

 

সবাই ভালোবাসে

পরাণ খুলে হাসে

দেশ ভরে না লাশে

রক্তও নাই ঘাসে

 

এমন একটা বিশ্ব চাই

যেথা কোন দুঃখ নাই

কেউ করে না হিংসা ত্বেষ

হাসি খুশি সবাই বেশ

 

কেউ শুয়ে রয় আয়েশে

কেউ চুমুক দেয় পায়েশে

কেউ সুখে গায় গান

কেউ মুখে দেয় পান

 

পুকুর ভরা মাছে

পাখি ডাকে গাছে

শিশু করে খেলা

সকাল সন্ধ্যা বেলা

 

বুবুর কানে দুল

ফুলের বনে ফুল

ধানের ক্ষেতে চাষী

পিঠা বানায় মাসি

 

এমন একটা বিশ্ব চাই

যেথা কোন দুঃখ নাই

সবাই শুধু হাসে

এবং ভালোবাসে

 

দিনে থাকে আলো

সবার মনই ভালো

জোসনা ভরা রাত

হাতের ওপর হাত

 

কেউ করে না গুলি

মরে না আর ফুলি

শিল্পী আঁকে ছবি

কাব্য লেখে কবি

 

চোর করে না চুরি

তাই বাড়ে না ভুঁড়ি

মারামারি সব বন্ধ

কোরান পড়ে অন্ধ

 

এমন একটা বিশ্ব চাই

যেথা কোন দুঃখ নাই

আছে শুধু শান্তি সুখ

হাসি খুশি সবার মুখ

১৫//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৩

নেতা ছিল বাটপার

নেতা ছিল বাটপার

গিয়ে দেখ ঘাট পাড়

দড়ি দিয়ে বান্ধা

সেকি তার কান্দা

 

এতো দেখি চেয়ারম্যান

ভেবেছি কি ফেয়ার ম্যান

এখন দেখি চাল চোর

পাড়ার বড় ডাল খোর

 

চাউলসহ খাইছে ধরা

মাতবরে কয় কি যে করা

খবর দিল পুলিশে

ঘাটের নয়া কুলি সে

 

খেলা হবে এখনি

গতবারে দেখনি?

যেই লাগাবে দোররা

আসবে টাকার তোড়ড়া

 

মানে আসবে ঘুষ?

দেখবো দারগার হুশ

তুই এবারে বাড়ি যা

বাড়ি গিয়ে নাস্তা খা

১৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৪

লাভের কিচ্ছা

নারকেল গাছে ডাব হয়।

তুই কি জানিস কোন কারণে

কার সাথে কার ভাব হয়?

 

কার ভাবে কার লাভ হয়?

কার লাভে হয় ক্ষতি?

ভাব করে কেউ ফকির হয়

কেউবা মহামতি

 

লাভ তো আছে হরেক রকম

লাভে কারো হৃদয় যখম

কারো লাভ হয় লাল

কে না জানে লাভের জিনিস

শিশুর নরম গাল

 

মাকে আমরা ভালবাসি

লাভের জন্য নেই যে ফাঁসি

দেশের জন্য কখনো কেউ

জীবন করি দান

লাভের জন্য শাহাদাতের

পেয়ালা করি পান

 

মরণ কভু কাউকে বানায়

মস্তবড় খুনী

জীবন দিয়ে কেউ হয়ে যায়

মহৎ এবং গুণী

 

লাভ যে কোথায় বুঝতে হয়

সারাজীবন খুঁজতে হয়

১৬//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৫

কবির কোন দেশ নাই

শেখার কোন শেষ নাই

কবির কোন দেশ নাই

সে গরীবের নিঃস্বের

কবি সারা বিশ্বের

 

লিখছো যারা লিখো

লিখো এবং শিখো

তোমার লেখা তোমার নয়

যার পাতে যায় তারই হয়

 

সত্য লিখো ভদ্র ভাষায়

কেউ থেকোনা মিথ্যে আশায়

কবির কিন্তু কেউ নাই

বাঘের পিছে ফেউ নাই

 

একা একা লিখতে হয়

ছন্দ মাত্রা শিখতে হয়

খাওয়ার কথা মনে নাই

সোনার হরিণ বনে নাই

 

সবাই চেটে কয় ভালো

তার চাটনি? হয় ভালো

কে দিল নুন, মসলা, চিনি

কবির কোন দল নাই

 

পক্ষে গেলে বাহবা কয়

বাহবা কি আর পেটে সয়?

আশা ছাড়া লিখতে হয়

কতকিছু শিখতে হয়!

১৬//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৬

ভালবাসার ঠিকানা

ভালোবাসা যায়না পাওয়া

কোন সুপার মার্কেটে

ভালোবাসা হাঁটে নাতো

সদরঘাটে চার পেটে

 

ভালোবাসা খায় না বেটে

ভালোবাসা খায় না চেটে

 

ভালবাসা যায় না ফেটে

যদি সেটা খাঁটি হয়

ভালোবাসা লুকায় মনে

যদি মন প্রেম ঘাঁটি হয়

 

ভালোবাসা যায় না পাওয়া

ফরেনে

সাত গেরামে ঘুরেও প্রেম

পায় না বোকা হরেনে

 

ভালোবাসা একজনই দেন

সেখান থেকেই নিতে হয়

ভালোবাসা নেয়ার আগেই

ভালোবাসা দিতে হয়

 

পশুপাখির মনেও প্রেম

সত্যি সত্যি আসতে পারে

যদি সে ঠিক প্রভুর প্রেমে

সারা জীবন ভাসতে পারে

১৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৭

কষ্টের কথা

মনের কষ্ট মনে রাখো, হজম হয়ে যাবে

মনের বন্য পশুগুলোই কষ্ট ধরে খাবে

কিন্তু যদি কষ্টগুলো বাইরে যেতে দাও

কষ্টগুলোর আরো কিছু বাড়বে শুদু ছাও

 

কষ্টগুলো মরার বদল বাড়বে আরো বেশী

বাড়বে তোমার মনের কষ্ট, ঢিলা হবে পেশী

কষ্টগুলো নষ্ট করো, কষ্টগুলো পুষতে নাই

কষ্ট ধরে গিলে ফেলো, যেমন বাদাম খাই

 

কষ্ট যখন হজম হবে, স্বাস্থ্য আরো হবে ভালো

চলে যাবে নিশিকালো, ফুটবে মনে আশার আলো

নষ্ট জিনিস পুষতে নাই রাগে কেবল ফুঁসতে নাই

কারো দোষ খুঁজতে নাই, দোষ দেখেও দুষতে নাই

 

যেটা বলবে সেটাই ফলবে ভালো বললে ভালো

তবে কেনো মাখবে তুমি নিজেই গায়ে কালো

১৬//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৮

লকডাউন হক ডাউন

লকডাউনে ঠকটাউনে বেশ আছো

নেট থাকাতে খাচ্ছো বসে গোস্ত মাছও

 

নামতে হয় না পুকুর বিলে

হাসপাতালে অষুধ মিলে

এদিকে দেশ খাচ্ছে গিলে

করোনা, তা জানো?

এলান হলে রাজার হুকুম

সহজেই তা মানো

 

আমি ওসব মানিনা।

মানতে আমি পারি না

 

করোনাও মানুষ মারে

মানুষ মারে খিদে

মানুষ মারে স্বৈরাচারে

কারণ ছাড়াই, জিদে

 

খুনের ভয়ে থাকলে বসে ঘরে

কেউ না মারলেও নিজেই সে যে মরে

 

আমায় তুমি মরতে বলো?

খেয়েই তবে মরি

তাইতো আমি তোমার জন্য

এখনো মাছ ধরি

 

না না দাদা, ত্রাণ পাইনি

সব নিয়েছে চেয়ারম্যান

তিনি খুবই লোক হুশিয়ার

নিজেই নিজের কেয়ার নেন

রিলিফ এলে তিনি কি তা

অন্য কাউকে শেয়ার দেন?

আমরা যদি সালাম দেই

তিনি হেসে পেয়ার দেন

 

আচ্ছা, আচ্ছা, ব্যস্ত আপনি?

ঠিক আছে ভাই রাখি

আমি যদি মরেই যাই

খবর দেবে পাখি

১৬//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৪৯

কি হবে আর লিখে

কি হবে আর লিখে।

লেখা পড়ে বাংলাদেশে

কেউ কিছু কি শিখে?

 

সবাই শিখে দেখে দেখে

কেমনে যে কি করতে হয়

রিলিফের মাল দিয়ে কেমনে

নিজের গুদাম ভরতে হয়

 

বক্স খাটের কী ব্যবহার

দেখে দেখে জানতে হয়

চুপে চুপে তেলের ক্যান

খাটের নিচে আনতে হয়

 

চুরি করা না শিখলে কেউ

নেতা হতে পারে না

ইনভেস্ট করে নেতা হইছে

তাই রিলিফ কেউ ছাড়ে না

 

ভোটের সময় লক্ষ টাকা

জনগণকে দিতে হয়

আগে শেখো সেই টাকাটা

কেমন করে নিতে হয়

 

আগে নিজে চুরি শেখো

ইনভেস্ট করো পরে

নইলে কভু ভাত পাবে না

নেতা নিজের ঘরে

 

চোরের দেশে রাজাও চোর

চোরই এমপি, মন্ত্রী

চোর না হলে কেমনে হবে

দেশের প্রধানমন্ত্রী?

১৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫০

পূণ্য সবাই কিনি

তুমি দেখাও মরার ভয়। কেন?

জন্মের আগে কোথায় ছিলে, যেনো

 

ধরায় এসেই কেঁদেছিলে।

মায়ের উদর ভালো

তীব্র তাপের যন্ত্রণা নেই

তারচে ভালো কালো

 

ঠান্ডাও নেই গরমও নেই

ওম জড়ানো দিন

বোমাও নেই কামানও নেই

নেই কোন সঙ্গীণ

 

নমাস তো ভাই ভালই ছিলাম

ধরায় কেনো এলাম

সূর্য তাপে চৈতি হাওয়ায়

আহা মরে গেলাম

 

সেই পৃথিবী ছাড়তে এখন

কেনো তোমার ভয়

কে বলেছে পরের জীবন

এরচে ভালো নয়?

 

বুঝেছি, তোমার কাছে

পূণ্য মোটে নাই

পরীক্ষাতর ফেল করবে

ভয় পাচ্ছো ভাই

 

তোমার জন্যই তওবা করার

রইলো খোলা দ্বার

তওবা করো, তওবা করো

ভয় পেয়ো না আর

 

যিনি দিলেন জীবন মরণ

পূণ্যও দেন তিনি

চলো চলো তওবা দিয়ে

পূণ্য সবাই কিনি

১৮//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫১

করোনা তুই থেকে যা

বেশ তো আছি ভালো

এখনতো আর কেউ বলে না

জ্বালো আগুন জ্বালো

 

রাজপথে নেই মিছিল টিছিল

করতে হয় না গুলি

সকাল বিকাল কেউ নেয় না

গায়ের চামড়া তুলি

 

ফেলানীরও মরতে হয় না

কাঁটাতারে ঝুলে

নিতে হয় না কাউকে জেলে

নিতে হয় না শূলে

 

পথে শুধু আর্মি পুলিশ

সঙ্গী মুজিব কোট

কেউ বলে না নির্বাচনে

করছি চুরি ভোট

 

ঘোট পাকায় না মোল্লাগুলো

মসজিদ ঘরে বসে

কেউ বলে না আমার মুখোশ

পড়বে এবার খসে

 

ধন্যবাদ দেই করোনা তুই

বছর ভরে থাক

আমার দেয়া রিলিফ খেয়ে

পোলা বেঁচে খাক

১৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫২

জানের দুশমন

রাজনীতিতে ধর্ম চান না

তারা এবার খুশী হন

রাজনীতিতে কনতো দেখি

কারা আপনার শত্রু হন

 

তারা হলেন মোল্লা মুন্সী

জামাত শিবির করে

নইলে এসে দল বেঁধে সব

শাপলা চত্ত্বর ভরে

 

তারা আবার মসজিদে যায়

সবাই নামাজ পড়ে

কেমন হয় কন এই করোনায়

যদি তারা মরে?

 

এক জানাজায় লক্ষ হুজুর

মরবে এবার সবাই

এখন থেকে আর হবে না

করতে ওদের জবাই

 

লাগবে না আর ফাঁসি দেয়া

লাগবে না আর গুলি

করোনাতেই উড়ে যাবে

ওদের মাথার খুলি

 

সরকারের তো বুদ্ধি কম

বড়ো জামাত করতে দে

আল্লাহ ভক্ত নামাজিসব

ওদের এবার মরতে দে

 

আপনার জানের দুশমন শেষ

চাল চোরার হোক বাংলাদেশ

১৮//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৩

দুনিয়াটা নিঝঝুম

দুনিয়াটা নিঝঝুম

পৃথিবীটা দেয় ঘুম

বৃক্ষের পাতাটাও নড়ে না

 

বালকেরা চুপচাপ

কুয়াশার টুপটাপ

বই খুলে কেউ বসে পড়ে না

 

নাই আর তাপটা

শীত শীত ভাবটা

তাই কেউ অকারণে নড়ে না

 

আতা গাছে আতা নাই

বেল গাছে পাতা নাই

সব্বাই চুপচাপ কেউ আর সরে না

 

দুনিয়াটা নিঝঝুম

পৃথিবীটা দেয় ঘুম

বৃক্ষের পাতাটাও নড়ে না

১৮//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৪

জ্বালার ওপর জ্বালা

জ্বালার ওপর জ্বালা আছে, জ্বালার ওপর জ্বালা

জ্বালায় জ্বালায় জীবনটা যে পুরাই কালা কালা

করোনার ভয়ে বন্দী জীবন যেমন তেমন চলছিল

ডাল-ভাতে এই জীবনখানা, কষ্টের কথা বলছিল

 

মিথ্যা কথা বলবো না ভাই, সত্য কথাই কই

আমরা তেমন গরীব না ভাই জীবন চলনসই

তিনদিন ধরে ঘরে কোন ম্যাচের কাঠি নাই

কাঁচা চাউল ঘরে বসে চিবাই আর জল খাই

 

হাঁড়িপাতিল শিকায় তোলা, রান্নাবান্না বন্ধ

পোলাডাতো তাকায় না আর যেন পোলা অন্ধ

মিনসেরে কই যান না একটু আগুন খুঁজে আনেন

নইলে ক্ষুধায় পোলা মরবো আপনি সেটা জানেন?

 

মিনসে গেল আগুন আনতে রাস্তা পুরা ফাঁকা

তারপরে যা ঘটলো কেমনে মুখে বলি কাকা

রিলিফের ট্রাক কোথায় ছিল আল্লামাবুদ জানে

ট্রাকতো না  আজরাইল য্যান, জীবন নেয় এক টানে

 

করোনা ভাই ভয় দেখাইলো, ক্ষুধা করলো ফাইন

জীবন নিল মরার ট্রাকে, থুক্কু দেশের আইন

জ্বালার ওপর জ্বালারে ভাই, জ্বালার ওপর জ্বালা

জ্বালায় জ্বালায় জীবন আমার পুরাই এখন কালা

১৯//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৫

আসল ঠিকানা

থাকতে আসিনি ধরায়

সরাইখানায় কেউ চিরদিন থাকে না

জলে ভাসে যেই মুখ

জলের ওপরে কেউ সেই মুখ আঁকে না

 

আমিও চলেই যাবো সকলের মতো

যেখানে আমার ঘর, আসল ঠিকানা

যেখানে আমার শোয়ার আছে বিছানা

 

পৃথিবী ছাড়তে তবে ভয় কিরে ভাই

আমি তো পৌঁছে যাবো মালিকের ঠাঁই

আমার মালিক যিনি প্রভু দয়াময়

তাইতো মরণে আমার নাই কোন ভয়

 

আগেও ছিলাম না আমি পৃথিবীর কেউ

আমি তো সাগরের আহা একফালি ঢেউ

চলে যাবো ডাক এলে সকলের মতো

প্রাণহীন পড়ে রবে সুন্দর দেহ নিশানা

আমি যাবো যেথা আমার আসল ঠিকানা

১৯//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৬

যেতে হবে নিজের বাড়ি

মায়ার দুনিয়া ছাড়ি

যেতে হবে নিজের বাড়ি

দিতে হবে সাগর পাড়ি

মন তুই রঙ্গে মাতিস না

 

কেউ থাকে না দুনিয়াতে

নেয় না কিছু নিজের হাতে

যাক সে দিনে যাক না রাতে

মন তুই আমল ছাড়িস না

 

পাপের নায়ে উঠলে পরে

সেজন পড়ে ভীষণ ঝড়ে

কেমনে যাবি নিজের ঘরে

পরের হক তুই হাতে ধরিস না

 

তুই পূণ্যবানের নায়ে চড়

কোরান হাদিস বৈঠা ধর

নামাজ রোজায় পকেট ভর

এবার যা তুই ভাবনা করিস না

২০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৭

আমি রান্ধি আমার সুখে

যেখানে যা শব্দ পাই

ধরে ধরে রান্ধি ভাই

ভাল লাগলে খেয়ে যান

কেমন খেলেন বলে যান

 

ফখরুদ্দিনের বিরানী

খেতে আসে ইরানী

পান্তা বুড়ি ভর্তা খায়

ঝাল ভর্তা মজা পায়

 

হরেক রকম রান্না হয়

হরেক লোকে খায়

কারো কাছে ভাল্লাগে না

কেউবা মজা পায়

 

নিজর হাতের আঙৃল কেউ

চেটেপুটে খায়

কেউবা বলে কি য়ে রান্ধে

একদম যাচ্ছেতাই

 

আমি রান্ধি আমার সুখে

আপনার সুখে খান

ভাল লাগলে দুহাত তুলে

দোয়া করে যান

২০//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৮

বীরের মত লড়তে হয়

মরণ এলে ভয় কি দাদা

মরণ এলে মরতে হয়

হায়াত থাকলে পাপ না করে

ভালো কাজই করতে হয়

 

ন্যায়ের পথে লড়তে হয়

ভাল জীবন গড়তে হয়

নিজে ভাল হওয়ার জন্য

ভাল বই- পড়তে হয়

 

নামাজ রোজা করতে হয়

কোরান হাদিস পড়তে হয়

সত্যের পথই ধরতে হয়

বীরের মতো মরতে হয়

২০//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৫৯

বাঁচতে চাইলে

আলগা পীরিত ছাড়েন।

মায়াকান্না অনেক হইছে

এবার আগে বাড়েন

 

হুজুর বলে নরম পাইছেন?

যখন তখন মারেন

সুযোগ পেলে বলেন দেখি

কোন সুযোগটা ছাড়েন?

 

শাপলা চত্ত্বর শিকার করছেন

পুটি মাছের ঝাঁক

হাজার হাজার গুলির খবর

জানে ঢাকার কাক

 

এক জানাযায় পাগল হইছেন

হিসাব কিছু মেলে না

জানাযায় যে লক্ষ মানুষ

কেউ হুজুরের ছেলে না

 

পরের ছেলে মরতে আসে

কিসের টানে জানাযায়

আপনার লাশ মর্গে রেখে

যখন বেটা পালায়?

 

বাপ দেখে না পোলার মুখ

মা দেখে না বাপ

যখন দেশে চলছে এখন

এমন অভিশাপ

 

কারণ আপনি জানেন না

মরণ কোথায় থাকে

আমি জানি আমার মরণ

লেখেন আল্লাহপাকে

 

লক্ষ মানুষ মারা গেল

অদেখা এক করোনায়

আল্লাহর শোকর করো তুমি

এখনো যে মরো নাই

 

ডাক্তার ঔষধ প্রাণ বাঁচায় না

হায়াত যদি না থাকে

বাঁচতে চাইলে তওবা করো

ডাকো শুধু আল্লাহকে

২০//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬০

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

দমে দমে জিকির করো,

পড়ো, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

নূর মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহ

জানের মালিক তুই আল্লাহ

রহম করো, রহম করো

মাফ করে দাও হে আল্লাহ

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

 

যাদের জন্য এই করো না

যাদের জন্য লাশের বন্যা

যাদের জন্য এই লাঞ্ছনা

তুমি তাদের মাফ করো

তওবা করার তৌফিক তুমি

দাওগো মাবুদ, হে আল্লাহ

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

নূর মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহ

 

জানের মালিক তুই আল্লাহ

রহম করো, রহম করো

মাফ করে দাও হে আল্লাহ

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

 

ভাগ্যে যাদের মাফ নাই প্রভু

তাদের তুমি বিচার করো

আমরা মাবুদ পার পাবো না

যদি তুমি হিসাব ধরো

রহম করো, রহম করো

মাফ করে দাও হে আল্লাহ

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

ধংস করো গায়রুল্লাহ

 

দমে দমে জিকির করো,

পড়ো, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

নূর মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহ

জানের মালিক তুই আল্লাহ

রহম করো, রহম করো

মাফ করে দাও হে আল্লাহ

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ

২১//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬১

নাম যে টিয়ার করোনা

আকাশ থেকে নামলো টিয়ে

টিয়ে নামলো উহান গিয়ে

উহান থেকে টিয়ার ছাও

এক উড়ালে জাপান যাও

 

সেখান থেকে ইটালি যাও

জেতা মানুষ ধরে খাও

এবার চলো আমরিকা

ওদের বানাও চামচিকা

 

এবার টিয়া ফ্রান্সে যাও

মুসলিম খুনি ধরে খাও

 

নাইটক্লাবে যায় সৌদিরা

বোরকা খুলে বৌদিরা

ইহুদির সাথে হাত মিলায়

এবার তবে সৌদি আয়

 

বলরে আসল কোরান ধর

ইরান শহর বিরান কর

এরপর কই যাবি শুনি

যেথা পাবি জালিম খুনি

 

বিশ্বটা তুই ঘিরে ধর

যা ইচ্ছে তুই সেটাই কর

টিয়ার পায়ে দড়ি নাই

কয়দিন থাকবি? ঘড়ি নাই

 

সেই টিয়া কেউ ধরোনা

নাম যে টিয়ার করোনা

২১//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬২

ভাষণ খাইতাম

কথায় যদি পেট ভরতো মজা করে খাইতাম

তবে কি আর কষ্ট করে রান্না ঘরে যাইতাম

হাত পেতে কি চাইতাম

ভাত দে গান গাইতাম

দুপুর বেলা সিলিপ নিয়া ঘামে কি আর নাইতাম

 

দরকার হলে মাইকের জন্য চান্দা দিয়াআইতাম।

দরকার হলে রমনা মাঠে পালের নাও বাইতাম

ভাষণ শুধু খাইতাম

কী যে মজা পাইতাম

গাছতলাতে বসে বসে মাইকের ভাষণ খাইতাম

 

কথায় যদি পেট ভরতো মজা করে খাইতাম

কোন দুঃখে শ্বশুর বাড়ি বউরে লইয়া ডাইতাম

রিলিফের মাল চাইতাম?

জয় বাংলা গাইতাম

মধ্যরাতে বস্তা ভরা ভাষণ লইয়া আইতাম

২১//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৩

নিয়ম মানো

অবশেষে তাই ঘটলো।

বলেছিনু যাহা রটলো

বলেছিলাম, ওরে থাম থাম

বাড়াসনে আর পাপ কাম

 

তাহলে গযব চলে আসবে।

অকাতরে সবই নাশবে

মানুষ গযবে ভাসবে

 

অবশেষে তাই ঘটলো।

যে চটার সে চটলো

 

ওরে ভাই বাঁচি আয়

করি মোনাজাত

বিধি মেনে নিয়মিত

ধুয়ে নিই হাত

২১//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৪

বোকার মত হাসি

পাপ করে তো কয়েক জন, মরে গুষ্ঠিশুদ্ধ

কই পাপের ক্ষমা চাবে, করতে নামে যুদ্ধ

মানে, আল্লার ক্ষোভ যেন আরো বেশি বাড়ে

ক্ষমার বদল আরো যেন বেশি জীবন কাড়ে

 

বিশ্ব জুড়ে চলছে তওবা, দলে দলে মুসলমান

হচ্ছে যত আমরা তত হচ্ছি কেন নাফরমান?

ফ্রান্স ইটালি চলে তওবা,কোরান পড়া বাড়ে

মুসলমানের দেশগুলোতে জামাত পড়া ছাড়ে

 

মরার এতো ভয় পাচ্ছো, তাতে মরণ ঠেকবে?

বোমা দেখে আজরাইলে 'মরণ রদ' লেখবে?

ভয় দেখালে আল্লাকে, তাতে রোগ ভাগবে?

নাকি তোমার কান্ড দেখে পরম প্রভূ রাগবে?

 

সতর্কতার দরকার আছে, উট বাঁধতে হয় আগে

হাদিস মতে, একই সাথে ভরসা করাও লাগে

তেলাওয়াত তো বেড়ে গেছে খবর শুনি রাশিযায়

আমরা তখন যুদ্ধ করি, বোকার মত হাসি, আয়

দিনটা যতো যাচ্ছে ততো ভয়টা আমার বাড়ছে

নেতার বাণী আমার মনের শান্তি সুখ কাড়ছে

২২//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৫

পাখি ও মানুষ

মানুষঃ

পাখি, ওরে পাখি

তুই কি আমার ঘুম ভাঙালি সকাল বেলা, ডাকি?

 

তুই তো বড় লাকি

আমি থাকি লকডাউনে তোর ওসব নাই নাকি?

 

পাখিঃ

ঠিক ধরেছিস ভাই

আমি তো আর পরের হক নষ্ট করি নাই

 

তুইতো ভরিস ভূঁড়ি

নিজের খাবার রেখে করিস পরের খাবার চুরি

 

মানুষঃ

তুই তো বড় মুখ পোড়া

মুখের ওপর আমায় তুই বললি কেমনে চোরা?

 

তুই কি জানিস আমি

সবার প্রিয় খান সাহেব, মানুষ বড় দামী

 

পাখিঃ

জানি জানি জানি

গরীবরা হয় গরীব চোর ধনীরা হয় খান্দানী

 

মানুষঃ

আর বলিস না ভাই

সত্য বলিস বলেই কি তোর লকডাউনটা নাই?

 

সত্যি আমরা পাপী

যা নারে ভাই চাপি

২৩//২০২০; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৬

আলোর পাখি

সকাল এসে বললো হেসে ওঠো ওঠো ভাই

জলদি চলো অজু করে মসজিদে সব যাই

 

বেলা ওঠার আগেই চলো সবাই নামাজ পড়ি

আমরা হলাম আলোর পাখি মহৎ জীবন গড়ি

 

নামাজ পড়ে পড়বো কোরান মধুর সুরে সুরে

পাখি উড়ে আসবে জানি কোরান শুনে ওরে

 

কোরান পড়ে আমরা যাবো ফুল বাগানে ভাই

প্রজাপতির সাথে খোদার আয় না গুণ গাই

 

রাঙা সূরুয বলবে হেসে, ওরে নবীন দল

তোরা সবে কেমন আছিস বল না ওরে বল

 

ফুল পাখিদের বন্ধু হবি, সঙ্গী হবি আলোর

বন্ধু হবি দেশ দুনিয়ার, সঙ্গী হবি ভালোর?

 

মিলেমিশে থাকবো সবাই, বন্ধু জগত জন

নীল আকাশের চেয়ে হবে উদার সবার মন

২৩//২০২০; ভোর ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৭

হটেনটট

হটেনটট, হটেনটট

কবে ছাড়বি ধর্ষণ আর

নানারকম লটরপট

সময় থাকতে তওবা কর

জলদি সোনা ঝটরপট

হটেনটট, হটেনটট

 

হটেনটট, হটেনটট

বল করবি আর লটরপট?

পড়লে ধরা পাবলিক কিন্তু

ভাঙবে রে ঘাড় মটারমট

কিল লাগাবে পটারপট

হটেনটট, হটেনটট

 

হটেনটট, হটেনটট

পাবলিকের মন চটারচট

পাপ ছাড়বি বল ঝটারপট

অনেক হইছে মামদোবাজি

ছাড় না মুখের ফটারফট

নো নো নো আর সবে না

হোক না সে যার ডটার নট

হটেনটট, হটেনটট

 

হটেনটট, হটেনটট

কোথায় রাখিস ঘুষের পট

কোথায় রে তোর সুদের ঘট

পাবলিক কিন্তু ক্ষেপে গেছে

করবে তোরে কটার কট

বমাল ধরবে পটারপট

কয়দিন রাখবি চোরাই মাল

খাটের নিচে খটারখট

হটেনটট, হটেনটট

 

ধান্ধাবাজি দে না ছেড়ে

নটার পোলা নটার নট

নাও বেয়েছিস অনেক জলে

দেখবি এবার শক্ত তট

একলা মানুষ মানি হট

বাজারি মার তারচে হট

হটেনটট, হটেনটট

 

হটেনটট, হটেনটট

বাজারি মার যেমন তেমন

খোদার মার তারচে হট

বন্দী থাকো যতোই ঘরে

করোনা তাও করছে কট

হটেনটট, হটেনটট

হটেনটট, হটেনটট

২৩//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৮

ছোট্টবেলার কাহিনি

ছোট্টবেলার কাহিনি

ছিলাম বিচ্ছু বাহিনি

লোকে নাকি দেখে কয়

ছেলে তো বেশ দুষ্ট হয়

 

আদর করতো তবু মায়

বলতো, বাবা কাছে আয়

কোথায় আছে ঘুঘুর ছানা

কে বলে নেই আমার জানা

 

শশা গাছের শশা

খাটের নিচে বসা

রাত্তির বেলা জোনাই এসে

ভাল আছিস? বলে হেসে

 

কতো শত কান্ড ভাই

তারতো কোন হিসাব নাই

এক্কা দোক্কা গোনেন

আমার কথা শোনেন

 

ধান মরিচ খায় মায়

সেদিক ছেলে চায

বলে, একটা দে না মা

মায়ের কথা, জ্বে না মা

 

ছোট্ট, তবে ভীষণ ঝাল

খেলে ফুলবে কচি গাল

 

সেকি আবদার, বায়না

ছেলে দুধভাত খায় না

হায় কপালের লেখা

মা রেগে কয়, নে, খা

 

দিলাম আমি কামড় যেই

মনে হলো আমি নেই

চিল্লায়া কই, মাগো মা

তোর মরিচ তুই, খাগো মা

 

কেন মরিচ ধরলাম মা

ঝালে আমি মরলাম মা

কেন মরিচ চাইছিলাম

কেন মরিচ খাইছিলাম

 

চাইলেই মরিচ দিবি তুই

মরার ঝাল মুই কনে থুই?

তোর কিরে মা বুদ্ধি নাই

এখন আমি কোথা যাই?

 

হায়রে সেকি ঝালরে ঝাল

মারলাম আমি জোরে ফাল

গেলাস ভাঙে ঘটঘটাং

আমি তখন চিৎপটাং

 

তখন আমি জানলাম ভাই

মায়ের কথা ফেলতে নাই

মায়ের কথা মানতে হয়

নইলে বসে কানতে হয়

২৩//২০২০; বিকাল ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৬৯

জানেন?

রূপ পেয়েছো অঢেল তুমি

বিজ্ঞাপনের মডেল তুমি

রূপ যে কার দান

না পারলে কন জানি না

জানলে বলে যান

 

সাজগোজ তো বাহার করেন

দামী দামী আহার করেন

আহার কার দান

না পারলে কন জানি না

জানলে বলে যান

 

জীবন যৌবন কাহার দান

কে করেছেন পাহাড় দান

কাহার দেয়া আহার খান

না পারলে কন জানি না

জানলে বলে যান

 

জানেন?

তাঁর কথা কি মানেন?

 

কোন দলে কন নাম লিখাবেন

নাফরমান না মুসলমান?

নাকি হবেন আস্ত একটা

মোনাফিক শয়তান?

 

দলের নিয়ম জানেন

জানা নিয়ম মানেন

২৪//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭০

ভালোবাসেন যাকে

ভাল লাগার বিষয়টা ভাই রহস্যময় ব্যাপার

কারো প্রিয় গল্পের বই, কারো প্রিয় পেপার

কারো প্রিয় বিরিয়ানি, কারো প্রিয় পান্তা

কারো প্রিয় গণতন্ত্র, কারো প্রিয় জান্তা

 

কটকটা রঙ ভালোবাসে, হালকা বাসে কেউ

কারো প্রিয় পুকুরের জল, কারো নদীর ঢেউ

ভাললাগার বিষয়টাতো, সবটাই নিজের গুণ

কারো প্রিয় আঁধার রাত, কারো রাতের মুন

 

আমার লেখা ভালো লাগে, কারণ আপনি ভালো

সূর্যমুখীর মতোই আপনি ভালোবাসেন আলো

বাকীটুকু আল্লাহর দান, আমার কিছু নাই

আমি

আমি জানি, মানুষ সবাই আমার বোন ভাই

 

তাদের দোয়ায় আল্লাহ আমায় যে যে শব্দ দেন

সেই শব্দের তোড়া বেঁধে, বলি ভাই বোন নেন

খুশি মনে আপনি তা নেন, শেয়ার করেন তাকে

আপনার যারা বন্ধুস্বজন, ভালোবাসেন যাকে

২৪//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭১

বিজ্ঞান ও ধর্ম

যারা হইছে পুরা পাগল, তারে কও কি বলা যায়

সিদ্ধডিম ভেবে যেজন নিজের হাতের ঘড়ি খায়

কোথায় বিজ্ঞান কোথায় ধর্ম

মিল খোঁজে কয় ছাগলে

আসমানে গোল সূর্য দেখে

নাস্তা খায় কয় পাগলে

বিজ্ঞানের কি সাধ্য আছে একজন মানুষ বাঁচায়

তবে তারে ভরে না কেন, চিরঞ্জীব নীল খাঁচায়

 

সভ্যতার সে শুরু থেকেই পাগল ছিল চিরদিন

তবু কি কও আসেনি সে আলোয় ভরা শুভ দিন

পৃথিবীর স্রষ্টা যিনি

কোনটা সৃষ্টি করেন নাই?

বৈজ্ঞানিক কি দাবী করছে

খোদার সৃষ্টি ধরেন নাই?

স্রষ্টা করেন সৃষ্টি সবই, বিজ্ঞান করে আবিষ্কার

সৃষ্টি এবং আবিষ্কার কি পাগল বুঝে মর্ম তার?

 

কোনো কালে কোনো পাগল ধরায় কিন্তু বাঁচেনি

মরার পরে পাগলের লাশ তিড়িং বিড়িং নাচেনি

নাস্তিকগুলো নাচতে থাকুক

পুকুরের চাঁদ ধরে খাক

করোনাতে মরছে মানুষ

না হয় আরো মরতে থাক

কোরান হাদিস ধরিস না, তবু তওবা করিস না

তুইতো আর রহম পাবার তালিকাতে পড়িস না

২৪//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭২

মরার মিছিল

আল্লাহ তুমি হও বললেই সকল কিছু হয়

তোমার জন্য কোন কাজই কঠিন কিছু নয়

তোমার হুকুম সবাই মানে, বিশ্বজগতময়

তোমার আদেশ পেলে রাজা নিজেও বন্দী রয়

 

তোমার হুকুম মানে না এমন নেই যে কেউ

বিশ্বে

তোমার হুকুম পেলে রাজা হয় যে গরীব নিঃস্বে

তুমি আদি তুমি অন্ত, ওগো প্রভু দয়াময়

দুনিয়ায় সকাল সন্ধ্যা সবাই গায় তোমার জয়

 

মানুষ এমন অধম বান্দা তোমার হুকুম ভুলে যায়

শয়তানের সব বুদ্ধি মানুষ নিজের ভেবে গুলে খায়

মানুষ ডুবে পাপ সায়রে, হয় রে ওরা নাফরমান

মানুষ দেখে যায় না বুঝা, কে আদম আর কে শয়তান

 

তখন পাঠাও গযব তুমি, সেই গযবের সীমা নাই

দলে দলে মানুষ মরে, জীবনের তো বীমা নাই

করোনা কি তেমনি গযব? ওগো প্রভু দয়াময়

মৃত্যুর মিছিল চলছে আজও, পরাণে কি এসব সয়?

দয়া করো, দয়া করো, ওগো রহীম রহমান

হতে পারি পাপী বান্দা, তবু দয়া করো দান

২৫//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৩

মায়ের পেটে

মায়ের পেটে আসার আগে

কোথায় ছিলাম কও

সে সব দিনের স্মৃতি বলো

আজ কি মনে লও?

 

মায়ের পেটে কেমন ছিলে

মনে আছে কিছু?

সারাদিন কি ঘুরতে তুমি

মরিয়মের পিছু?

 

তখন কি খুব কষ্টে ছিলে

দুঃখ ভরা মন?

মনে আছে মায়ের পেটে

ছিলে কতক্ষণ?

 

সেখান থেকে ধরায় এসে

দেখলে রোদ বৃষ্টি

তুমিই হলে ধরার বুকে

খোদার সেরা সৃষ্টি

 

এটাও তোমার বাড়ি নয়

কবর দেশে যাবে

ভাবছো কেন সে আঁধারে

কখন যে কি খাবে?

 

তোমার মালিক খুবই ভালো

ভাবনা সবই তাঁর

তোমার কাজ তো তাঁর হুকুমের

হওয়া তাবেদার

২৫//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৪

তখন ঠিকই নাচবা

ঝগড়া করার কাম কি বলো

ঈমান মাফিক চলো

ইচ্ছে হলে যুদ্ধ করো

ইচ্ছে হলে করোনারে দলো

 

করোনা ভয়ে ছাড়তেও পারে

ধরতে পারে রাগে

হয়তো তুমি পেতেও পারো

যা চাও তুমি ভাগে

 

যার যা বিশ্বাস তাই করে সে

তুমি বলার কে

সে কি তোমার খায় না পরে

কামলা খাটে সে?

 

তুমি যখন নামাজ পড়ো

সে তখন তা পড়ে না

তাই বলে সে বেঁচেই থাকে

কখনো কি মরে না?

 

যার হিসাব সে বুঝে নেবে

তোমার নিতে হবে না

যমের কাজ তো যমে করে

সে তো বসে রবে না

 

তোমার ঈমান তোমায় বলে

ঘরে নামাজ পড়তে

আমার ঈমান আমায় বলে

বড় জামাত ধরতে

 

তুমি ঘরে নামাজ পড়ে

কয়দিন বলো বাঁচবা

যমে যখন বলবে, নাচো

তখন ঠিকই নাচবা

২৬//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৫

আমাজান নদী তীরে

আমাজান নদী তীরে

মামাজান থাকে

গুন গুন গান গায়

সারাদিন নাকে

 

নাকি গান পাখি শুনে

ডাকি ডাকি কয়

আহা কি চমৎকার,

নাকি মামা জয়

 

জয় শুনে ভয় পায়

সিংহের ছানা

বলে, কে রে জয় দেয়?

জয় দেয়া মানা

 

এভাবেই বিরোধিরা

লাই পেয়ে যায়

টাইট হলে বাঘশিশু

কাঁচা ঘাস খায়

 

বিরোধিরে কোনঠাসা

রাখতেই হয়

বুকে যেন থাকে তার৮

সদা রাজ ভয়

২৭//২০২০;  ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৬

পাপ কামানো ছাড়ো

মেলামেশা যা করার ভাই

নিজের ঘরে করো

পরের খাট না ভেঙ্গে ভাই

নিজের খাটে লড়ো

 

পথে পথে ঘুরে ঘুরে

পরী দেখা ছাড়ো

মনের মন্দ ইচ্ছেটাকে

গলা টিপে মারো

 

ঘরে নিজের ছেলে মেয়ে

দেখে না তার পিতা

মধ্য রাতে হোটেল বারে

ডাকে রঙিন ফিতা

 

এসব কালচার মানুষের না

ইবলিশে তা করে

রঙিন পানি খেয়ে মানুষ

কম বয়সে মরে

 

করোনা তো দিচ্ছে ট্রেনিং

এসব এবার ছাড়ো

আমি আসি তুমি যেনো

মানুষ হতে পারো

 

পাপ কামানো ছাড়ো

খোদার হুকুম শক্ত করে

ধরো তুমি আরো

২৭//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৭

সাবান দিয়ে হাত ধোও

সাবান দিয়ে হাত ধোও আর কোরান দিয়ে মন

সবাই মিলে হটাও ধরার সকল দুঃসাশন

 

নয় হবে না করোনা দমন,

নয় হবে না করো না দমন

 

শুধু একা হাত ধুইলে মন পরিষ্কার হবে না

মন পরিষ্কার না হলে করোনাও যাবে না

 

হবে না তো করোনা দমন,

হবে না তো করো না দমন

সবাই মিলে হটাও ধরার সকল দুঃসাশন

 

মুখ ঢেকে কও লাভ কি হবে শয়তান থাকলে মনে

মন থেকে সব শয়তান তাড়াও পাঠাও তাদের বনে

 

নয় হবে না করোনা দমন,

নয় হবে না করো না দমন

সবাই মিলে হটাও ধরার সকল দুঃসাশন

 

তিন হাত দূরে থাকো সবাই

পর্দা সবাই করো

ভয় না পেয়ে আপনজনের

হাতটি সবাই ধরো

 

নয় হবে না করোনা দমন,

নয় হবে না করো না দমন

সবাই মিলে হটাও ধরার সকল দুঃসাশন

২৮//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৮

করোনা ও নানা

করোনা এলো নানা।

বললো ছাড়ো হারাম কামাই

হারাম সকল খানা

দাও বুঝিয়ে পরের জিনিস

যার যা আছে পানা

 

বললো আরো নানা

চক্ষু দিলাম বিবেক দিলাম

রইলে তবু কানা

এতো করে নিষেধ করলাম

শুনলে নাতো মানা

 

অজায়গাতে হাত চলে যায়

অজায়গাতে চোখ

অজায়গাতে কান চলে যায়

অজায়গাতে মুখ

 

করোনা এসে নানা

বললো এসব ছাড়তে হবে

পাল্টাও স্বভাবখানা

 

কী আর করা নানা

হঠাৎ দেখি চোখের সামনে

নাই আর পাপের ছানা

এক ধমকে পাপ কি তবে

হলো রে সব কানা?

 

না না।

 

করোনা হাসে, নানা

হঠাৎ করেই পাপ লুকালো

যেনো ইঁদুরছানা

করোনাটা চলে গেলেই

চোখ খুলবে কানা

দুষ্টলোকের স্বভাব আমার

ভাল করেই জানা

২৮//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৭৯

মনের ময়লা দূর করো

মনের যতো ময়লা আগে

সাফ করো ভাই সবে

মনের ময়লা দূর করতেই

করোনা এলো ভবে

 

করোনা বলে, ধরো না আর

পর পুরুষের হাত

আপন জনের সঙ্গে সবাই

কাটাও দিবস রাত

 

নেকাব পড়লে করোনা যায়

অজু করলে করোনা যায়

বৈজ্ঞানিকে কয়

তার মানে কি ইসলাম মানলে

যায় করোনার ভয়?

 

তবে এসো ইসলাম মানি

হাসুক আবার জিন্দেগানী

২৮//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮০

পুষ্প ও প্রজাপতি

প্রজাপতিঃ

রোজ বিহানে সবার আগে তোর কাছে কে আসে?

পুষ্পঃ

রোজ বিহানে সবার আগে তোকে দেখে কে হাসে?

[পুষ্প প্রজাপতির মনোরম হাসি কোলাকুলি]

প্রজাপতিঃ

দুই প্রজাতির হয়েও আমরা বন্ধু হতে পারি

অথচ দেখ মানুষ কেমন? করে মারামারি

পুষ্পঃ

দোষটা ওদের অহংকার গর্ব এবং বড়াই

একজন যেই গর্ব করে অন্যে তখন

বুক ফুলিয়ে বলে, আমি ডরাই?

প্রজাপতিঃ

ঠিক বলেছিস ভাই

ওদের মধ্যে মিল মোহাব্বত বলতে মোটে নাই

পুষ্পঃ

আমরাতো ভাই বন্ধু সবাই পরের কুৎসা গাই না

আমরা সবার ভালোটা চাই, মন্দ কারো চাই না

ওরা করে মারামারি, মানুষ করে খুন

প্রজাপতিঃ

ঠিক বলেছিস,

মানুষ করে খুনোখুনি, ওটাই ওদের গুণকোথায় ওদের মায়া দয়া, সব ধুয়েছে বিলে?

নাকি তাদের স্নেহ প্রেম সব খেয়েছে চিলে?

পুষ্পঃ

তাই তাই তাই

ওদের মত খারাপ প্রাণী আর তো দেখি নাই

প্রজাপতিঃ

যাওযার আগে দুজন মিলে আয় না কোরাস গাই

পুষ্পঃ

কি?

প্রজাপতিঃ

আমরা তাদের সুখের জন্য পাঠাই প্রেমের ঢল

পুষ্পঃ

ওরা তখন বসে বানায় মানুষ মারার কল

দুজন হাত মিলিয়ে গলাগলি ধরে সমস্বরেঃ

আমরা তাদের সুখের জন্য পাঠাই প্রেমের ঢল

ওরা তখন বসে বানায় মানুষ মারার কল

ওরা তখন বসে বানায় মানুষ মারার কল

ওরা তখন বসে বানায় মানুষ মারার কল

২৯//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮১

খান খান সব খান

এই নেন হাসি খান

কাঁচা এবং বাসি খান

গরু পাঠা খাসি খান

মামী চাচী মাসি খান

কেউ চাপরাশি খান

কেউ কেউ দাসী খান

 

খান খান সব খান

কারো কারো জব খান

ছাঁদে রাখা টব খান

পিতলের নব খান

 

নাম তার কাফি খান

ধরলেই মাফি চান

বলে দাদা চেপে যান

অকারণে ক্ষেপে যান

 

কারা যেন ফাঁসি খান

খুক খুক কাশি খান

মানুষের রান খান

লাল লাল পান খান

বেলোয়ারী গান খান

 

আকাশের চান খান

মানিদের মান খান

কৃষকের ধান খাণ

বস্তার ত্রাণ খান

 

রিলিফের চাল খান

খিচুরির ডাল খান

রূপসীর গাল খান

পাকা পাকা তাল খান

 

আলমের ছাতা খান

নেত্রীর মাথা খান

ভিখেরির কাঁথা খান

গরীবের রাতা খান

 

যত পান তত খান

ছাগলের মত খান

পাইলেই মেলা খান

আরো কিছু ঠেলা খান

 

কাঁচা পাকা কলা খান

জনতার ডলা খান

হাটে কানমলা খান

ঘেন্নার দলা খান

২৯//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮২

ভোজ চাই আলীশান

চান ভাই যান ভাই

মিলেমিশে খান ভাই

আমাদের খানা

আকাশেই পানা

 

টন টন চাল ভাই

নেবে সব খান ভাই

তুমি আমি গান গাই

চাল নাই, চাল নাই

 

এভাবেই চলছে

মিডা কথা বলছে

অধিকার দলছে

দয়া যেন গলছে

 

ক্ষেতে ছিল যত ধান

ছবি তুলে বলে ডান

সাথে ছিল পোলাপান

বলে কাকা বাড়ি যান

 

বাড়ি গিয়ে কাকিরে

বলে দেন ডাকিরে

নেতা খাবে দুপুরে

ডুব দেবে পুকুরে

 

তাড়াতাড়ি বাড়ি যান

ভোজ চাই আলিশান

২৯//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৩

সাহরী খান

ছাড়েন ঘুম উঠে যান

সময় হইছে সাহরী খান

যারা ঘুমে ডাকেন

ডেকে তুলতে থাকেন

 

যদি একটু সময় পান

তাহাজ্জুদে যান খাঁড়ান

আল্লাহ আল্লাহ ডাকেন

এবং ডাকতে থাকেন

 

সাহরী দাদা খেতে হয়

গোরের ভেতর যেতে হয়

আল্লাহ ছাড়া সহায় নাই

আল্লাহ আল্লাহ করেন ভাই

 

রোজা রাখেন, সাহরী খান

ঝগড়াঝাটি ভুলে যান

আপনি বড় ভাগ্যবান

ভাগ্যবানই পায় রমজান

৩০//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৪

হাসির ঢেউ

হাসতে তো ভাই মানা নাই

এটা সবার জানা নাই

তাই অনেকে হাসে না

হেসে কাছে আসে না

 

কেউ যদি দেয় গালি ভাই

তারে দিও হাসি ভাই

গালি গায়ে লাগে না

দেহ তাই রাগে না

 

দূর থেকে কেউ এলে ভাই

মুচকি হাসির জুড়ি নাই

তাকে বরণ করতে হয়

এগিয়ে হাত ধরতে হয়

 

কারো যদি জিত হয়

কিম্বা হাসির গীত হয়

হাসি আসে খুশিতে

হয় না তখন ফুঁসিতে

 

পা পিছলে পড়লে কেউ

ছড়িয়ে পড়ে হাসির ঢেউ

কিন্তু এটা ঠিক না ভাই

চেঁচিয়ে বলে চিকনা ভাই

 

মুখে যদি হাসি রয়

সে করে ভাই বিশ্ব জয়

৩০//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৫

মন্ত্রী কাটে ধান

মন্ত্রী এমপি হইছে চাষী

কাটছে ক্ষেতে ধান

বলছে ডেকে চাষী ভাইকে

সংসদে সব যান

 

দিন বদলের দিনে

মন্ত্রীদেরকে ধরলো কিরে

রাম সাগরের জ্বিনে?

 

আরে না না!

কী যে আপনি কন

ভন্ডামীটা মন্ত্রী এমপির

সঙ্গী সারাক্ষণ

 

না না।

আসল খবর জানিস না তুই

খবর একটু ভিন্ন

অযোগ্যসব মন্ত্রী এমপির

থাকবে না আর চিহ্ন

 

মজিব কোট তো লুট হয়েছে, লুটেছে বজ্জাত

চোরের খনির উৎপাতে কোট হয়েছে বেহাত

তাই চোরাদের চাকরী নাকি হয়ে গেছে নট

রিলিফ চুরির দায়ে হইছে মন্ত্রী এমপি কট

 

হায়,

মজিব কোট পরে দেখ রিলিফ চোরা যায়

মন্ত্রী এমপি কাঁচা ধান কেটে এখন খায়

 

কৃষক বসে কান্দে

মজিব বাবা, এই চোরাদের পাঠান এবার চান্দে

নইলে আমার ক্ষেতের ধান ইঁদুর করবে শেষ

চোরের খনি থেকে বাঁচান সোনার বাংলাদেশ

৩০//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৬

নতুন খেলা

জলদি আসেন ভাই বোনেরা

নতুন খেলা দেখে যান

পারলে দুইটা হাত তালি দেন

নইলে ঘৃণা রেখে যান

 

মাঝখানে ভাই মন্ত্রী আছে

এমপি আছে সঙ্গে

কেমন করে কৃষকের ধান

পাড়ায় দেখেন রঙ্গে

 

হেলে দুলে পাড়ায় ধান

রঙ্গিলারা নাচে

ফুর্তি ছাড়া মাইয়া পোলা

কেমন করে বাঁচে?

 

মন্ত্রী এমপি রঙ্গ করে

বঙ্গ দেশে হায়

গোপীনিরা কোমর দুলায়

পীরিতের গান গায়

 

দেখবি কে কে আয়

দেখ তাকিয়ে কৃষকের ধান

রংবাজেরা খায়

পাকা ধানের ক্ষেত মাড়াতে

জুতা খুলে আয়

৩০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৭

ফটো তোলে রঙ্গলাল

ওগো আল্লাহ মেহেরবান

তুমি দিলে পাকা ধান

কিন্তু আমার কপাল মন্দ

ঘরে তুলতে পারলাম না

দেখলাম কয়টা নয়া ইঁদুর

ভয়ে কাউকে মারলাম না

 

শহর থেকে নেতা এলো

সঙ্গে নেতার খেতা এলো

আইলো কতো ক্যামেরা

সঙ্গে আইলো মেমেরা

এরা যে কার বৌ বেটি

কিছুই বুঝতে পারলাম না

 

ধানের ক্ষেতে বঙ্গপাল

ফটো তোলে রঙ্গলাল

কারো এখন পৌষ মাস

কারো কপাল ফাঁটা বাঁশ

 

পায়ের পারায় ধান শেষ

জয় বাংলার বাংলাদেশ

৩০//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৮

সরকারী দল করি

সুযোগ পেলে চুরি করি, সুযোগ পেলে ডাকাতি

দরকার হলে নামাজ পড়ি ফজর চৌদ্দ রাকাতই

যখন যেমন তখন তেমন বনের ভেতর মাছ ধরি

পূর্ণিমা রাত সন্ধ্যা বেলা হিজল বনে গাছ চড়ি

 

পরের জমি দখল করি, লুটেপুটে খাই

ধরা পড়লে যখন তখন শ্বশুর বাড়ি যাই

আমি যদি ঘুষ না খাই, পুশ না করি জল

কেমনে বাড়বে অর্থ বিত্ত শক্তি সাহস বল

 

তুই আমারে গালি দিবি, বলবি হারামখোর

কি যায় আসে আমার তাতে বললে আমি চোর

গালি দিলে মাইন্ড করি না, গুন্ডা বললে খুশি

জীবনে তো একবার দিছি তিরিশ শিক্কা ঘুষি

তাতেই আমি মাস্তান এখন সবাই করে ভয়

আর কিছু না এই ভয়টাই বারবার আনে জয়

 

বুদ্ধি করে সকল সময় সরকারী দল করি।

এক সরকার পাল্টে গেলে অন্য ডালে ধরি

৩০//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৮৯

আশি পয়সার বাঁশি

আশি পয়সার বাঁশি

সেই বাঁশিটা পেলে দিতাম

এত্তোবড় হাসি

সেই হাসিতে ঝরে পড়তো

খুশি রাশিরাশি

 

এত্তোটুকুন হাঁড়ি পাতিল

ছোট্ট ছোট্ট ঘর

ঘরের ভেতর বসিয়ে দিতাম

ওত্তোটুকুন বর

 

বরটা ছিল আমার আর

কন্যা ছিল মলির

সেই বিয়েতে দাওয়াত ছিল

পিলি এবং ডলির

 

সেদিনগুলো কোথায় গেল

কোথায় গেলি তুই

কোথায় গেল শখের সুতা

কোথায় গেল সুঁই

 

এখনো কি কাঁথা সিলাস

মিছেমিছি মিষ্টি বিলাস

সখি গেলি কই

তোরে ছাড়া একলা আমি

কেমন করে রই

৩০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯০

শ্রমের মূল্য

শ্রমিক ভাইরা শ্রমের মূল্য কোথায় তালাশ করো

শ্রমের মূল্য পেতে হলে ইসলাম আঁকড়ে ধরো

 

ঘাম শুকোবার আগেই মূল্য পরিশোধ করতে হয়

যে শোধবে না সেজন মুসলিম কেমন করে হয়?

 

নবীর বানী না মেনে কেউ মুসলিম কভু হয়?

শ্রমিক ভুখার মুক্তিসনদ ইসলামেই তো রয়

 

এসো এসো ইসলামটাকে সবাই আঁকড়ে ধরি

সাম্য মৈত্রীর নতুন সমাজ ইসলাম দিয়ে গড়ি

মে, ২০২০২০; সকাল ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯১

তবে তাই হোক

যদি তুমি হাসতে পারো

আরো ভালবাসতে পারো

নাশতে পারো দুঃখ, ব্যথা, শোক

তবে তাই হোক,

তবে তাই হোক, তবে তাই হোক

 

দুদিন আগে

কোথায় ছিলে কেউতো জানতো না

তুমি বড়ো শিল্পী, কবি  কেউতো মানতো না,

আজকে তুমি খুব মানি লোক বিশ্বধরাধাম

তুমি বড়ো আলেম, নেতা বিশ্ব জুড়ে নাম

কচুপাতার পানি এসব, ভুলবে সকল লোক

তবে তাই হোক,

তবে তাই হোক, তবে তাই হোক

 

নামের বড়াই

করো না ভাই, কমতো দেখি নাই

বিশ্বনেতার জানাযাতে তিনশ মানুষ নাই

তোমার চোখে মন্দ যে জন, জেলখানাতে রয়

তাঁর জানাযায় লক্ষ লক্ষ মানুষ আজো হয়

এইতো রীতি এই পৃথিবীর, বিশ্বভরা শোক

তবে তাই হোক,

তবে তাই হোক, তবে তাই হোক

//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯২

যে চাও সুপ্রভাত

দিনগুলো হয় রাতের মতো

রাতগুলো হয় কালো

যেদিক তাকাই আঁধার দেখি

পাই না কোথাও আলো

 

জায়গা থেকে নড়ো না কেউ

করোনা তয় ধরবে

কেউ যাবে না লাশের কাছে

তুমি যখন মরবে

 

যতোই ভাবি সকাল হবে

সকাল তবু হয় না

করোনার তো একটাই কথা

পাপ কভু সে সয় না

 

পাপ না ছাড়লে যাবে না সে

আগে পাপটা ছাড়তে হবে

মনের ভেতর ইবলিশ শয়তান

ওটা আগে মারতে হবে

 

বাঁচতে যদি চাও

পাপটা ছেড়ে দাও

 

নিজে ছাড়লেই হবে না ভাই

সমাজও চাই সাফ

সমাজ যদি সাফ না করো

কেউ পাবে না মাফ

 

মানুষ সবাই জোট বাঁধো

হাতে ধরো হাত

পাপের আখড়া দাও গুঁড়িয়ে

যে চাও সুপ্রভাত

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৩

জিত

আমারে যে এতো ডরাস

আগে যদি জানিতাম

তোর জন্য কয়েক বোতল

ঠান্ডা পানি আনিতাম

 

ভয়ের চোটে বন্দী করেও

শান্তি নাই তোর মনে

এরচেয়ে কম ভয় পাইতি

থাকলে সুন্দর বনে

 

লেপ কাঁথা নাই, বালিশও নাই

লোহার দরজার ঘর

বন্দী রাখিস সেই ঘরে, তাও

যায় না মনের ডর

 

ভয় থাকে না খাঁচায় বন্দী

করতে পারলে পক্ষী

এরচে বেশী ভয় পাস বলে

রাখিস কারা রক্ষী

 

শোনরে রাজা, শোন

কষ্ট আমার বোন

দুঃখ আমার ভাই

জনগণের দোয়া আমি

তোরচে বেশী পাই

 

আমার কন্ঠে কোরানের সুর

তাই কি ভয় পাস তুই?

ভাবিস না তুই তোর বিনাশের

চারা আমি রুই

 

আমার বিজয় রুখে দেবে

ধরায় আছে কে রে?

ইসলামকে কি শেষ করা যায়

কয়টা আলেম মেরে?

 

আমার ভয়ে হারাস না তুই

জ্ঞানটা হিতাহিত

মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী

দুটোই আমার জিত

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৪

পয়সা দিয়ে কিনে না

রাজা উজির নেতা বন্দী, বন্দী ঘাটের কুলি

কামার কুমার জেলে বন্দী, বন্দী বাড়ির ফুলি

মাঠের খেলা মাঠে নাই

হাটের মানুষ হাটে নাই

বীর বাহাদুর সবাই বন্দী বিশ্ব মোড়ল ডাটে নাই

 

বাপ-মা-ছেলে বন্দী সব কারো স্কুল অফিস নাই

রাস্তাঘাটে সাহেব বাবু কিংবা কোন খবিস নাই

এক দুই মাস বন্দী থেকে সবাই গেছে হাফাইয়া

ভাল্লাগেনা লকডাউনও বাইরে যেতে না পাইয়া

 

চোর ডাকাত না, খুনীও না

তবু জেলে থাকতে হয়

কোরান বন্দী এই অনাচার

মাবুদ বলো কদিন সয়?

 

দশটা বছর জেলে বন্দী আল কোরানের পাখিটা

এখন যদি করোনা কয় লেখবো আমি বাকীটা

আমার দেশে করোনা ক্যান দায়টা দিবো কাহারে

দেশের মানুষ দায় কি তুলতে পারবে পাহাড়ে?

 

জালিম বসে জুলুম করে, নিরীহ লোক মারা যায়

করোনাও তেমনি রাগে, যারে ইচ্ছা ধরে খায়

তুফান শুধু ছুটতে জানে মসজিদ মন্দির চিনে না

যা খাওয়ার সে খেয়ে যায় পয়সা দিয়ে কিনে না

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৫

মিষ্টি কথার থোকা খাই

আমরা যারা চালাক চতুর

দেশ তো চালাই আমরা ভাই

পাবলিকে খায় মিডা কতা

বুঝলে তুলতো চামড়া ভাই

 

আমরা চালাই চাপার জোর

আমরা সবাই হারামখোর

নানান ছলে হারাম খাই

হারাম খেতে পাড়ায় যাই

 

আমরা মানে, চান্দাবাজ

নানা রকম ধান্ধাবাজ

হারাম পথে মাল কামাই

পুলিশ রাখি ঘরজামাই

 

পাবলিক হলো বুদ্দু ভাই

ওদের সাথে যুদ্ধ নাই

ওদের একটা বিড়ি দেন

যতো খুশি ফিরি নেন

 

বীর জনতা ধোকা খায়

মিষ্টি কথার থোকা খায়

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৬

করোনা যুদ্ধ

রাস্তায় পড়ে আছে মানুষের লাশ

এই নিয়ে আমাদের আজ বসবাস

তারপরও মন্ত্রীর সে কি উল্লাস

আতঙ্কের কিছু নেই সাবাস, সাবাস

 

করোনার বিরুদ্ধে শুরু নাকি যুদ্ধ

লাভ নাই করোনার যত হোক ক্রুদ্ধ

মরবে না করোনায় আর দেশে কেউ

কিট নাই মাপা নাই, করো ভেউ ভেউ

 

আমাদের বুদ্ধির তুলনা তো নাই

বেঁচে যাবো যারা জয় দেখবো সবাই

আফসোস একটাই মরে যাবে যারা

আমাদের এই জয় দেখবে না তারা

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৭

করোনার কেরামতি

রমনা পার্কের ডালে বসে দুই পাখি গান গাচ্ছিল

ছোট ছোট নিমের গোটা গানের ফাঁকে খাচ্ছিল

 

শালিক বলে, ময়না

মানুষের কি হলো বলতো, কেউ যে কথা কয় না?

ময়না বলে, শালিক

মানুষগুলোর কান্ড দেখে খুব ক্ষেপেছে মালিক

পলিউশন বাড়লো এতো, বাতাস ভরা শীসা

হাসপাতালে মরছে মানুষ, পায়না বাঁচার দিশা

গাড়ির ধোঁয়ায়  দম আটকে যায়, হয় না কারো হুঁশ

বাড়ছে দেশে দুর্নীতি আর খাচ্ছে সবাই ঘুষ

অবৈধ সব মেলামেশায় ভরে গেছে বিশ্ব

মানুষ চলে পাপের পথে, সব শয়তানের শিষ্য

বাপ জানে না ছেলের খবর, স্বামীর খবর নারী

সারাটা দিন শহর জুড়ে ছুটায় সবাই গাড়ি

 

এ্যায়সা দেশের হাল

কচি কচি পোলারা খায় হেরোইন ডাল

নেশার ঘোরে ছুটছে সবে পুঁজির পাগল সবাই

মানবতার গুণগুলো সব পুঁজির হাতে জবাই

 

পাগলা ঘোড়া ছুটছে যেনো, থামার খবর নাই

তাদের একটু গৃহবন্দীর দরকার হলো তাই

বিশ্বে এলো খোদার গযব, বললো কেউ আর নড়ো না

বিশ্বে যেনো শান্তি আসে, তাই দিলো ভাই করোনা

 

কমে গেছে পাপের সয়লাব, নৌকা, গাড়ি, বিমানে।

কেউ বলে না, কাবাব খাবি? তবে গরুর কীমা নে

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৮

করোনা ঘুষ নেয় না

কোটি টাকা বিলিফ দিলাম

তাও হইলি না খুশি

ইচ্ছে করে তোরে লাগাই

তেরশিক্কা ঘুষি

 

তোর হুকুমে ঈদের বাজার

করতে হবে দেশে?

আমার দশা দেখে তোর

পরাণ ওঠছে হেসে?

 

দাঁড়া, হতচ্ছাড়া।

তোর কাছে কি চাইছিলাম

আমি বিমান ভাড়া?

 

কোলকাতাতে যাইতে মানা?

সিংগাপুরে? তাও!

করোনা তুই যা না সরে

লাগলে দিমু ফাও

 

রিজার্ভ ব্যাংক করছি চুরি

টাকার অভাব নাই

ঘুষ না নিয়ে আমার সাথে

লাগিস কেন ভাই?

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬৯৯

সাহস থাকলে আয়

আমি খাঁটি বাঙালি।

বাড়ি নোয়াখালি

করোনা তুই না গেলে যে

ছুটবে মুখের গালি

 

বিশ্ব মোড়ল ফেল!

আয় না কাছে, দেখবি এবার

বাঙালির  কি খেল

 

কিনছি নয়া হুন্ডা

রেডি আমার গুন্ডা

 

মিছা কথা বিছায় দিবে

তুই পাড়বি আন্ডা

বাঙালিও মিছা খায়

দেখবি সবাই ঠান্ডা

 

আমি চিনি ডান্ডা

ওটা দিয়েই বাঁচাই আমি

আমার দামী জানডা

 

বিডিআর শাপলা চত্ত্বর

কেউতো পারে নাই

জন্যই কি করোনা তুই

পালিয়ে থাকিস ভাই?

 

সাহস থাকলে আয়

এই যে আমি, নায়

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০০

পারবে তুমি?

কাল কি হবে কেউ জানোনা, সাজো বাহাদুর

কওতো দেখি তোমার মরণ আছে কত দূর?

 

বাদুরের পা ওপর দিকে, মাথা কেনো নিচে?

বিড়াল কেন কোলে বসে খরগোশ পালায় খিঁচে

 

ঘোড়া পারে বিলিয়ে দিতে প্রভুর জন্য প্রাণ

তুমি কেনো শরম পাও, গাইতে প্রভুর গান?

 

আগুন লাফায় ওপর দিকে, পানি গড়ায় নিচে

সিংহ কেনো বনে থাকে, মানুষ হাঁটে বীচে

 

তুমি থাকো খাটে শুয়ে, বাঘ মামা তো খাটে না

ঈগল কেন উড়ে বেড়ায়, তোমার মত হাঁটে না?

 

এমন কত প্রশ্ন আছে, জবাব কি তার জানো?

কও তো তুমি তোমার প্রভুর কোন কথাটা মানো?

 

নাকি তোমার প্রভু নাই, তুমি এতীম পোলা

তোমার হাতে এমনি আসে ফান্টা এবং কোলা?

 

এতোই তোমার বিদ্যা-বুদ্ধি বিশ্ব করো জয়

সবই পারো, পারবে তুমি, রুখতে তোমার ক্ষয়?

//২০২০; ৮টা



No comments

Powered by Blogger.