আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২৫০১-২৬০০

 


আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০১

ইচ্ছে ঘুড়ি

ইচ্ছে ঘুড়ি যাচ্ছে উড়ি

কষে ধরো হাল

নয়তো ঘুড়ি ঝড়তুফানে

হবে বেসামাল

 

ইচ্ছে মত চলার সুযোগ

যখন তোমার আছে

ভাবছো তখন বসে থাকি

দেবদারুটার গাছে

 

কিন্তু এটা ঠিক না বেঠিক

হিসাব করো আগে

ইচ্ছেটাকে সামলে রাখো

তোমার কুসুম বাগে

 

ইচ্ছেটাকে নিজ বিবেকের

পাল্লাতে দাও তুলে

তোমার ইচ্ছে ভিড়বে তখন

সুখ সাগরের কূলে

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০২

ফাগুন দাও

দাদা।

শোনছো নাকি যুদ্ধ করে

বনে দুদল গাধা

কৃষ্ণের সাথে প্রেম না করে

যুদ্ধ করে রাধা?

 

এ এক আজব ধাঁধাঁ।

সবটাই দাদা, চাঁদা

শক্তি থাকলে পুরোটা নেয়

নয়, ভাগে নেয় আধা

 

হানাহানি মারামারি

সবই ধনের জন্য

ধনের জন্য মানুষ বনে

পশুর অধম বন্য

 

যুদ্ধ হয় না ধর্মে ধর্মে

কিংবা নানান বর্ণে

যদিও এসব কথাই তুমি

শোনো তোমার কর্ণে

 

শক্তিমানের মনে যখন

আসে ধনের ণোভ

দাঙ্গা বলো, যুদ্ধ বলো

তখন লাগে খুব

 

লোভের রানী যুদ্ধ বাঁধায়

ধর্ম, বর্ণ বাহানা

এটা জানে শ্রীমতি

মোল্লাবাড়ির সাহানা

 

লোভ বাবাজি যুদ্ধ বাঁধায়

সম্পদে দেয় টান

দুর্বলের যায় ঘরবাড়ি

সঙ্গে কারো জান

 

লোভে দাদা আগুন দাও

বিশ্বে আবার ফাগুন দাও

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৩

ঘরে ঘরে চাকরি দেবো

বিয়েবাড়ির লাকড়ি দেবো

প্রেম করবার নেটও দেবো

উন্নয়নের বস্তায়

সবাই যেনো খুশী থাকে

কেউ না যেন পস্তায়

 

সে কথা তো ভুলি নাই

গদী পেয়ে ফুলি নাই

খুঁজে দেখি কুলি নাই

তাইতো নিজে বললাম

চাকরি নিয়া ঘুরে বেড়াই

না নিলে , চললাম

 

কী যে বলেন, চাকরি কই?

ঘুরে মরছে আমার সই

তার তো কোন চাকরি নাই

কেমনে একটা চাকরি পাই?

চাকরি কোথায় কন মশাই

 

মহারানী পাপিয়া

ছিল খবর চাপিয়া

বলছি কথা মাপিয়া

সবটা কাউকে বলি নাই

খুঁজতে গেলে দেখবে তুমি

ফাটা কলসির তলি নাই

 

ব্যবসা চলছে মন্দ না

পুরুষ তো আর অন্ধ না

রূপ খোঁজে সব, গন্ধ না

সতেরো পরীর পিছে

নাগর ঘুরে, নন্দ না

 

কাজ পেয়েছে পুরুষ নারী

কাজের কোন অভাব নাই

বলতে পারো, শোনেন ভাবী,

আমার কাজের স্বভাব নাই

 

চাকরি নিয়া বসে আছে

শত শত সম্রাটও

জলসাঘরে পরীর সাথে

হাঁটে জেরি টম রাও

কচি কচি মেয়ের সাথে

কাজে আসে মম রাও

খালা ফুপু মামী চাচী

করে সবাই নাচানাচি

 

যদি লাগে চাকরি কারো

লজ্জা কি ভাই, বলতে পারো

দেশ, বিদেশি, পাহাড়ি

চাকরি মিলবে বাহারি

 

কারা কারা চাকরি চাও

আসো কাছে, কাছে আও

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৪

নেতা কখন টয়লেটে যায়

বা হাত কোথায় দেয়

কী আজব সে খবর নাকি

সাংবাদিকে নেয়

 

নেতার মহান চরিত্র

ফুলের মতন পবিত্র

 

খুশি হয়ে ভক্তি ভরে

কেউ কিছু ভাই দিলে

দোষ কি বলো নেতা সেটা

আদর করে নিলে?

 

পাপিয়ারা খুশি হয়ে

যখন যেটা দেয়

ফেরত দেয় না কাউকে নেতা

দু হাত পেতে নেয়

 

এই জগতের রীতি দাদা

সুখ নিজে খায়, দেয়ও আধা

 

এসব নিয়ে অনেক হইছে

বাড়াবাড়ি নয়

সম্রাট এবং পাপিয়ার

গাওরে বাহে জয়

//২০২০; ১১;০০ টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৫

সবাই শুধু ছি ছি করে

লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা

কোথায় শুনছো লজ্জা শুধু

নরম কোমল শয্যা?

 

নামাজ পড়বা? ইচ্ছা করো

এরেই নিয়ত কয়

ইচ্ছা ছাড়া কেমনে বলো

সুখের মিলন হয়?

 

নিয়ত করো, সম্মতি নাও

রইলো বাঁধা কি আর

ইজাব কবুল হয়ে গেলে

সবই জায়েজ, ফিয়ার

 

তবে কেনো ছি ছি করো

দাও আমারে গালি

এক হাতে কি বাজে বলো

কোন কালে তালি?

 

একটা মানুষ দাও না খুঁজে

যে জন এসব করে না

আমি যদি ধর্ষক হই কও

কে তালিকায় পড়ে না

 

ধর্ষণ করছি, ভালো করছি

বিব্রত তো নই

ধর্ষণ আমি করেই যাবো

যদি নেতা হই

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৬

বাবা

যেই মানুষটা হাজার মনের

ভাঙলো দীলের কাবা

যেই খুনীটা বিশ্ব মুসলিম

বুকে দিল থাবা

সেই মানুষটা মঞ্চে থাকলে

তুমি সেথায় যাবা?

 

বাবা।

তোমার মহান জন্মদিনে

সেই মানুষটা আসুক

দেশের মানুষ তোমায় ভুলে

তার ক্ষোভে সব ভাসুক

সেই মানুষটা ঈর্ষা দিয়ে

সবুজ দেশ চাষুক

জাহান্নামের দরজায় বসে

বদ লোকেরা হাসুক

তুমি কি তা চাবা?

কথা বলো বাবা

 

বাবা।

বাঙালি কি হাবা?

মঞ্চে তোমার পাশে বসুক

ফেরাউনের বাবা

তুমি কি তা চাবা?

 

জানি, জানি বাবা।

শয়তানটাকে পেলে কাছে

চিবিয়ে মাথা খাবা

 

তাকে তুমি সাক্ষী রেখে

জাতীয় সঙ্গীত গাবা?

এই পতাকা তাকে দিলে

আর কি ফেরত পাবা?

কথা বলো বাবা!

কথা বলো বাবা!

কথা বলো বাবা

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৭

পীরে কেবলা কাদেরিয়ার

শুনে নতুন বানী

বেহুশ হইছে আমার নাতির

রূপবতী নানী

 

আকাম করে বিব্রত নয়

কাদেরিয়া কয়

দু কান কাটা খড়ম চোরের

শরম কি আর রয়?

 

ছি ছি তাদের লজ্জা নাই

নেত্রী ডাকেন দুলাভাই

 

গরম টেবলেট খাইলে বলেন

শরীর কি আর সয়?

তবে কেন নানান লোকে

বাজে কথা কয়?

 

শালীর সাথে লীলা করুক

সাধের দুলা ভাই

সুখে থাকুক নারী পুরুষ

এইতো আমরা চাই

 

এর বিরুদ্ধে কথা যদি

মৌলবাদী কয়

বুঝে নেবে তারা কেহ

ধর্ষকবান্ধব নয়

 

পাড়ায় পাড়ায় সেঞ্চুরিয়ান

ধর্ষক আরো চাই

ধর্ষক মানে বাপকা বেটা

তুলনা তার নাই

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৮

এই যে দেখো নদী নালা, বৃক্ষ সারি সারি

উড়াল পাখি পঙ্খী হয়ে দিচ্ছে আকাশ পাড়ি

দুপুর বেলা ফুপুর বাড়ি ডাকছে ঘুঘুর দল

কার বিরহে কাঁদছে ওরা, বলতো দেখি, বল

 

এসব কিছু সত্যি তো নয়, সবই মায়ার খেলা

জীবন মানে স্বপ্নঘোরে কাটাই সারা বেলা

 

এই যে দেখো নীলাকাশে সাদা মেঘের সারি

কোন সুদূরে যাচ্ছে ওরা, দিচ্ছে কোথা পাড়ি

ওদের কেন ফের দেখা যায় সাগর নদীর তল

ওদের নিয়ে কেমনে থাকে মৎস পানির তল?

 

এসব কিছু সত্যি তো নয়, সবই মায়ার খেলা

জীবন মানে স্বপ্নঘোরে কাটাই সারা বেলা

 

খেলতে খেলতে যেমন আমরা মিছে রান্না করি

শিউলি তলে আমরা দুজন মায়ার সংসার গড়ি

ঘাসের ফুলে রান্না করি গরম গরম খানা

সবছে ছিল মিছেমিছি, সবারই তা জানা

 

মিছেমিছির রাজ্যে করি তেমনি দুদিন বাস

আসল কথা আমরা সবাই একই প্রভুর দাস

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০৯

কবি

কবি,

মন আকাশে উঠলে তুমি রক্ত রাঙা রবি

তোমায় দেখে উঠলো হেসে আলোর পাখি, নবী

তোমায় দেখে মন বাগানে ফুটলো প্রেমের ছবি

জগত জুড়ে প্রেম বিলানো কবির সেরা হবি

 

কবি,

তোমায় দেখে হিংসাকাতর ছাড়লো হিংসা সবি

তোমায় দেখে মজলুমানে ভুললো কষ্ট, কবি

তোমায় দেখে গরীব দুখীর কষ্ট গেল, সবি

তোমায় দেখে খুশী হলেন দয়ার সাগর নবী

 

কবি,

মায়ের কোলে উঠলো হেসে আবার বেবী, ববি

বললো কবি তুই কি আমার বন্ধু সুজন হবি

তোমায় দেখলে জোয়ার আসে জলে ভরে নদী

তোমায় দেখলে দুঃশাসনের কেঁপে ওঠে গদি

 

কবি

তোমায় দেখে ফুল পাখিরা করে ভোরের গান

তোমায় দেখে বলে ওঠে, কবি আল্লাহর দান

তোমায় দেখে রাঙা রবি দুচোখ মেলে হাসে

তোমায় দেখে এই ধরনী তোমায় ভালবাসে

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১০

যেই লেখাটা সত্যি ভালো

যাতে আছে চাঁদের আলো

সঙ্গে আছে ছন্দ তালও

যাতে আছে ফুলের হাসি

এসো তারে ভালোবাসি

 

যে লেখা গায় ভোরের গান

যে লেখাতে সুরের তান

সেই লেখাটা প্রভুর দান

যার পাখাতে কান্না হাসি

এসো তারে ভালোবাসি

 

যে লেখা সুর বাজায় মনে

কয় সে কথা পাতার সনে

ভালোবাসে সঙ্গোপনে

পকেট ভরা পাতার বাঁশি

এসো তারে ভালোবাসি

 

ভালোবাসার লেখাটাকে

দে উড়িয়ে আকাশে

ভালোবাসা নিয়ে ফিরুক

নাইবা আনুক টাকা সে

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১১

ঝিলু কাকার নাতি।

ইদানিং সে করছে নাকি

ভীষণ মাতামাতি

 

আগে করতো হাতাহাতি

এখন দেখায় অস্ত্রপাতি

 

সেরা গুন্ডা হয়ে গেছে

হঠাৎ রাতারণতি

ঝিলু কাকার নাতি

 

পুলিশ এখন তাকে ডাকে, স্যার।

পুলিশ তার কানের দুল

তারই গলার হার

ঝিলু কাকার নাতি

এমপি সাহেব এখন তার

রোদ বৃষ্টির ছাতি

 

নাতিগুলো হাতি হয়

যখন নেতার বাতি হয়

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১২

যা মন চায় কইবার পারেন

শতেক বিয়া বইবার পারেন

বাতাস ব্যাগে লইবার পারেন

কিন্তু মাগার পারবেন না

যার মরণ নাই আপনার হাতে

তারে মারবার পারবেন না

 

চাইলে কথা কইতে পারেন

অনেক ব্যথা বইতে পারেন

হাজার রক্ষী লইতে পারেন

কিন্তু মাগার পারবেন না

আজরাইলরে রূপের জালে

বন্দী করতে পারবেন না

 

বাঘের চোখও কিনবার পারেন

আপন-পরও চিনবার পারেন

গদী দখল তিনবার পারেন

কিন্তু মাগার পারবেন না

যমের বড়ি আপনিও গিলবেন

না গিলে যে পারবেন না

বিশ্বজাহান ছাড়তে পারেন

কিন্তু বড়ি ছাড়বেন না

 

অনেক কাড়ছেন মানবজীবন

আর কারোটা কাড়বেন না

সারা জীবন চেষ্টা করেও

শহীদ হইবার পারবেন না

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৩

ফুল ফোটে না সব বনে

প্রেম থাকে না সব মনে

রোদ থাকে না সব লনে

তবু ঘরে থাকতে হয়

সময় মত জাগতে হয়

 

তোমার ইচ্ছায় সব চলে না

তোমার ইচ্ছায় জব চলে না

আন্দোলনে গব চলে না

তবু লড়াই করতে হয়

টুটি চেপে ধরতে হয়

 

ভয়ে যখন মরতে হয়

সাহস তখন করতে হয়

বাঁচার জন্য লড়তে হয়

নতুন সমাজ গড়তে হয়

 

নতুন সমাজ নতুন ভোর

আলোর ভুবন পুষ্প ডোর

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৪

খোদার সাথে কোন কালে

রাজা বাদশাহ পারে না

বারে বারে শয়তান হারে

খোদা কভু হারে না

 

নারে দোস্ত নারে না

দরকার ছাড়া মারে না

কিন্তু যদি আল্লাহ চায়

মোদী আসতে পারে না

 

যা খুশি তাই করবা তুমি

তা কখনো হবে না

যৌবন এলে দেহে দাদা

চিরকাল তা রবে না

 

টাকা পয়সা ক্ষমতার

বাহাদুরি কদিন রয়

জোয়ার মানে আছে দাদা

সামনে তব ভাটার ভয়

 

যতোই বলি বান্দারে তুই

বেশি বড়াই করিস না

মরার আগে তওবা কর,

তওবা ছাড়া মরিস না

 

তবু যে তোর হয় না হুশ

করোনা তো খায় না ঘুষ

কখন যে তুই হবি লাশ

জানিস নাকি চরণদাস?

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৫

আগে ছিলাম বাপের ছেলে,

এখন ছেলের বাপ

করে হবে বুদ্ধি আমার

ছাড়বো আমি পাপ

 

কোথায় ছিলাম, কেন ছিলাম

কেমনে এলাম ভবে

এসব কথা মনে আমার

কবে উদয় হবে?

 

কবে আমি বুঝতে পারবো

আমি তাঁরই দাস

যে দিয়েছে জীবন আমায়

যে বানাবে লাশ

 

ধরায় কেন রয় না মানুষ

সবাই চলে যায়?

চলেই যদি যাবে তবে

আসে কেন হায়

 

এটাই যদি বুঝতে পারি

করবো না আর পাপ

বলবে সবাই ভালো মানুষ

থামবে অভিশাপ

১০//২০২০; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৬

কিসের থেকে কী হলো

আলু পটল ঘি হলো

ক্ষমতা তো আমার হাতে

কেমনে ওদের ভি হলো

 

কত মানুষ দাওয়াত করলাম

শ্রাদ্ধ খাইতে আইয়া

আয়োজন করলাম বেশুমার

পরের ধন পাইয়া

 

ঢেকুর তোলেন ধোঁয়া ছাড়েন

পানি আগুন খাইয়া

সবই দাদা ফরেন মাল

ভাইবেন না সব গাঁইয়া

 

কিন্তু একখান গযব আইলো

গযবের নাম করোনা

বললো আহা জলদি আহো

খাওয়ার পরে মরো না

 

হায়রে মরার ভয়

এই জ্বালা কি সয়!

 

সব মেহমান নিজের ঘরে

খিলি দিয়া রয়

যুদ্ধ ছাড়াই মোল্লার দল

দিচ্ছে শুধু জয়

 

এই ক্ষমতার কাম কি?

এত আলেম মারলাম তবু

মসজিদে যায় রাম কি?

১০//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৭

জিকে শামীম

টিকে গেলো

ফিকে হলো মামলা

কারণ তাহার

সাথে ছিল

বাহিনী আমলা

 

জিকে শামীম

বুঝতো যদি

হবে এমন হামলা

তবে কি আর

রাখতো খুলে

টাকার তিনশ গামলা?

১০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৮

মুদী নাকি আবে না

বাবার শ্রাদ্ধ খাবে না

দিছে করে এলান সে

নেয়না তেলি গ্যালান সে

 

ভয় পেয়েছে চীনের বাদশা

ইসলাম নাকি জ্বীনের বাদশা

করছে অযু, পড়ছে নামাজ

ভাঙছে চীনের পুরাণ সমাজ

 

গুজরাটের অই খুনী রাজ

যার ছিল না ভয় লাজ

তার বুকেও ভয়রে আজ

ঘুরছে ছোট, বড়ো না

নানান রঙের করোনা

 

ছোট্ট একটা ভাইরাসে

এক্কেবারে মাইরাছে

 

বেঈমানের দল অযু কর

সময় থাকতে নামাজ ধর

১০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫১৯

কত করে বললাম আমি

পাপ করো না ভাই

আমার কথা কোনদিনই

কানে তোল নাই

 

অশ্লীলতার শেষ দেখেছি

রাস্তা ঘাটে মলে

পাপ দেখেছি পার্কে, বাসে

পরকিয়ার ছলে

 

ধর্ষণ করা নিজ মেয়েকে

অসভ্যতার শেষ

শিক্ষক করে ছাত্রী ধর্ষণ

আজব বাংলাদেশ

 

পাপিয়া যে বিদেশ থেকে

মেয়ে ভাড়া আনে

করোনা কি খবরটা

অদ্যাবধি জানে?

 

নেতা যখন নেত্রীকে খায়

নারী কর্মী বস

একটা সমাজ ভাঙার জন্য

আর কি লাগে ধ্বস?

 

পাপ করো না যতই বলি

শোন না তা বাপ

করোনা কয় তবে এবার

করো দেখি পাপ

 

সারাদেশে পাপিয়া

সম্রাট দেখি ভরা

বাঁচার পথতো শোন দাদা

জলদি তওবা করা

 

সময় আছে, সময় আছে

জলদি তওবা করো

জঘন্য সব পাপের থেকে

এবার দাদা সরো

১০//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২০

আমার লেখা ভালো বলেন

তাতে আমার লাভ কি

তাতে কি আর কমছে ধরায়

মানুষজনের পাপ কি?

 

রাজা ভাবে রাজকোষ লুটে

কেমনে করবে ফতুর

চোরা ভাবে চুরি করে,

নিজকে  কত চতুর

 

খুনী ডাকাত দেয় না জাকাত

কেবল লুটে খায়

মন্ত্রী এমপি মিছিল করে

ওয়েস্টিনে ক্যান যায়?

 

এতো এতো পাপের গযব

কেমনে জাতি সইবে

সেই কথাটা বয়ান করে

কে আমারে কইবে

 

যদি কিনা ভাঙতে পারো

পাপের সকল আস্তানা

গযব আইলে ডাকাত দরবেশ

কেউতো দাদা বাঁচতানা

১১//২০২০; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২১

শিয়াল রাজা

শোন, সেদিন ঘটলো সেকি ভীষণ রকম ঘটনা

শুনলে বলবে, ধুর এসব কি, সবই তোমার রটনা

নিজের চোখে দেখে এলাম ঘটনা যা সত্যি

শিয়াল দেখে ছুট লাগালো মস্ত বড় দত্যি

 

দত্যির পিছে ছুটলো দেখি, ব্যাঘ্র এবং হাতি

তার পিছনে ছুট লাগালো ফজলু শেখের নাতি

বললাম, ওরে যাস কই তোরা, কীসের এতো ভয়?

দেখ তাকিয়ে পিছনে কি দুষ্ট শিয়াল নয়?

 

ছাগল গরু চরায় মেয়ে, তেলাপোকা ডরায়

ভয়ের বিচার শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েতে গড়ায়

মাতবর বলে, শোন মেয়ে, এতটুকু পোকা

তাদের শুধু ভয় পায় তারা, যারা নিরেট বোকা

 

তেলাপোকা দেয় না কামড়, বিষাক্ত সে নয়

তুমিই বলো, তবে কেন, অযথা পাও ভয়?

 

মামা,

তেলাপোকা ভয়ের নয়, আমিও জানি সেটা

তবে কেনো ভয়ে মরে, ছমির উদ্দির বেটা?

ভূত নাই তবু  মানুষ কেনো ভূতের ভয়ে মরে

রাতের বেলা যায় না মাঠে, সবাই ঢুকে ঘরে?

 

দেশের মানুষ দেশের মালিক যারে বানায় রাজা

সে কেনো দেয় ধরে ধরে, জনগণকে সাজা?

ব্যাঘ্র হাতি দৈত্য যেথা শিয়ালকে পায় ভয়

তেমন দেশেই সিংহ রেখে শিয়াল রাজা হয়

১১//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২২

কাদের ভাইয়ের উক্তি

বিশ্ব সেরা যুক্তি

 

দেশের কাজে ব্যস্ত থাকি

ঘরে যাবার সময় নাই

কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে

পাপিয়াদের ডাকি তাই

 

সেঞ্চুরি যে করে তারে

কইবা কিছু সাহস নাই

খুব তো করো বাহাদুরি

মরা বোনের জেতা ভাই

 

তোমরা করো ঘরে ঘরে

দোষ হয় না তাতে

আমরা না হয় হোটেলে যাই

দিনে কিম্বা রাতে

 

তাতে বলো কার কি ক্ষতি

আমরা হলাম দেশের পতি

 

দেশের সতীর দুঃখ ব্যথা

সইতে আমরা পারি না

নারী জাতির কষ্ট আমরা

হেলা করতে পারি না

১১//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৩

বাঙালিরা এত্তো খারাপ

লক্ষ লোক হয় ওয়াজে

কিন্তু তাদের চরিত্রটা

এক্কেবারে ধোয়া যে

 

হেন আকাম নাই দুনিয়ায়

যেটা তারা করে না

কিন্তু তাদের সবার চেষ্টা

ধরা যেন পড়ে না

 

দল বেঁধে সব মসজিদে যায়

গোপনে যায় পাড়াতে

ঘুষের টাকা লইয়া বলে

অন্ধকারে দাঁড়াতে

 

পরের জিনিস নিজের করে

সুযোগ পাইলে ইমাম সাব

কুমড়া ধরে পাবলিকে কয়

খাবেন নাকি কচি ডাব?

 

ধান্ধাবাজি চান্দাবাজি

খোদা রে দেয় ফাঁকি সে

ভাবটা করে এমন যেনো

সবচে বড় লাকি সে

১১/ /২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৪

তোমার কথা আমি লিখি তাইতো লাগে ভালো

মনের ভেতর অন্ধকার নয়, হাজার তারা জ্বালো

হাজার তারার প্রদীপ জ্বলুক সবার ঘরে ঘরে

হাজার রঙের পুষ্প ফুটুক মনের বাগান ভরে

 

অমানিশা হারাক দিশা আসুক রাঙা ভোর

এই পৃথিবীর আকাশ নদী সবই বন্ধু তোর

বাতাস এলে এলেবেলে জড়িয়ে তারে ধর

সবাই খাবো মিষ্টি ক্ষীর, টাটকা দুধের সর

 

থাকবে পশু দৈত্যদানো হিংস্র পশুর ভয়

তবু মানুষ আনবে ডেকে মানবতার জয়

পশু চালায় পাশবতা, দানব দানবতা

রাত্রি শেষে মানুষ আনে আবার মানবতা

 

মানবতা আছে বলেই পশুরাও খায়, বাঁচে

মানুষ আছে বলেই ওরা লাশের ওপর নাচে

কিন্তু এই বিশ্বটাই তো মানব ফুলের জন্য

মানুষ দেখে হাসবে মানুষ, জীবন করবে ধন্য

১১//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৫

ঘটনা যে কতটা ভয়াবহ সে কথা

বুঝি নাই

ঘরে গিয়ে দেখি ঘরে খালা আর

বুজি নাই

 

গ্রাম থেকে তারা নাকি চলে গেছে

সদরে

এই কথা চুপি চুপি বলে গেছে

বদরে

 

কেন গেছে সেই কথা বদরের

জানা নাই

খেতে গিয়ে দুপুরে, দেখে ঘরে

খানা নাই

 

ছুটে গিয়ে বললাম,ঘটনা কি

আম্মি

মা হাসে, তোর বউ হবে নাকি

মাম্মি

 

তোর বুজি মা হবে, তুই হবি

মাম্মা

সব কথা ঠিকঠাক বলে দিল

আম্মা

১২//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৬

প্রভূ তুমি সবার প্রভূ

প্রভু তুমি সবার প্রভু, মুসলমানের একার না

সকল সৃষ্টি তোমার প্রভু, সৃষ্টি নিজে মেকার না

তুমি মালিক, তুমি মুনীব, সবই তুমি লালন করো

আমরা তোমার অধম বান্দা, প্রভু তুমি রহম করো

 

তোমার হুকুম আমরা প্রভু সত্যি সত্যি মানি নাই

কোরান পড়ে তোমার হুকুম তাওতো সবে জানি নাই

পাপ করেছি মাফ করে দাও, তুমি সবই পারো

তুমিই রহীম তুমিই রহমান, রহম ঢালো আরো?

 

তুমি প্রভু মাফ করে দাও, মানব জাতির ভুল

করোনাকে বানাও প্রভু, অচীন আজব ফুল

বিশ্ব থেকে গযব তোমার, নাও উঠিয়ে নাও

বিম্ববাসী নিঃস্ব সবাই, দাও না রহম দাও

১৩//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৭

ভাল লেখা শেয়ার চাই

ভালো লেখা শেয়ার চাই

সবার মনে পেয়ার চাই

সকল কাজে কেয়ার চাই

পরাণ সবার ফেয়ার চাই

 

দেয়ার জিনিস দেয়ার চাই

নেয়ার জিনিস নেয়ার চাই

চেয়ারম্যানের চেয়ার চাই

মাথায় সোনা হেয়ার চাই

 

কিছু লেখা রেয়ার চাই

ভালো কাজে শেয়ার চাই

পারলে দিয়েন লাইকও

সঙ্গে দিয়েন বাইকও

 

থাকুন ভালোর সঙ্গে

ফুর্তি থাকুক অঙ্গে

ভাসুন স্বপ্ন রঙ্গে

সর্ষে ফুলের বঙ্গে

১৩//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৮

মোমের শহর

বনের জিনিস বনে রাখো

মনের জিনিস মনে

যার মনে যা দুঃখ ব্যথা

রাখো সযতনে

 

ক্ষণের জিনিস ক্ষণে রাখো

কনের জিনিস কনে

কেউ দিও না পিছু টান

পিঠ দিও না রণে

 

ঘরের জিনিস ঘরে রাখো

লনের জিনিস লনে

যারে তারে বসাইও না

ময়ূর সিংহাসনে

 

দামী কথা মামী বলে

আমি বলি ঠিক

নামী দামী মন্ত্রীও খায়

পাপিয়াদের কিক

১৩//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫২৯

নারীর দালাল যেসব দেশে

নারীর দালাল যেসব দেশে

মন্ত্রী এমপি হয়

সেসব দেশে বাস করিতে

মনে লাগে ভয়

 

হাত ইশারায় ডাকে যারা

বলে সোনা করো না

তাদের ডাকে ছুটে এলো

ভাইরাস নাকি করোনা

 

পাপ করে না বাপকে মাপ

পাপী মানে পাপী

হতে পারে সে জন মামা,

চাচা কিংবা বাপী

 

নারীর দালাল থাকলে বসা

সিংহাসন গদীতে

খোদার কি দোষ দিলে তুফান

পাপের শহর, নদীতে?

 

মনে বড় ভয়।

বিশ্বে কিরে পাপ কমানো

আদৌ সম্ভব নয়?

১৩//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩০

টাকার পায়ে

টাকার পায়ে চাকা আছে, বাঁকা হয়ে হাঁটে

আগে থাকতো শহর নগর গঞ্জ এবং ঘাটে

হঠাৎ কী যে হলো আহা, চিন্তায় সময় কাটে

টাকার পা টা কারা যেনো নতুন করে চাটে

 

ব্যাংকের টাকা ট্যাঙ্কে এখন গদীর টাকা নদীতে

কিছু টাকা পাপিয়া খায়, বাকিটা খায় বদীতে

কানা ছেলে পদ্মলোচন, জুয়া চালায় সম্রাটে

নাম দিয়েছে ক্যাসিনো সে রাজ্য জুড়ে যম হাঁটে

 

অস্ত্রধারী রক্ষী থাকে, পক্ষী ভয়ে যায় দূরে

শাহজাদা সব ধনকুবের অন্দরেও যায় ঘুরে

টাকা থাকে খাটের তলে গয়না রাখার সিন্দুকে

দুকান কাটা পায় না শরম, যে যা বলুক নিন্দুকে

 

পাতি নেতার ঘরের ভেতর বস্তায় এখন টাকা

মধ্যবিত্তের ছাইয়ের কপাল উন্নয়নেই ফাঁকা

দেশ চালালে ডাকাত শেয়ার মার্কেট লুটেরা

সবই পারে চোরডাকাতে, থাকলে সঙ্গে বুটেরা

 

টাকার এখন পাখা আছে, বিদেশে যায় উড়িয়া

জনগণ তাই খাচ্ছে এখন মুজিব বর্ষের পুরিয়া

১৩//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩১

সূর্যভানের নাতি

সূর্যভানের নাতি।

হাতিরঝিলে চলে গেছে

কিনতে নয়া হাতি

বাঘ বা ভালুক নয় বলে

আনেনি অস্ত্রপাতি

 

সূর্যভানের নাতি

ঝিলটা ঘুরে বলে ওঠে

কোথায় গেল হাতি?

তিনশ হাতি কালও ছিল

উধাও রাতারাতি?

 

সূর্যভানের নাতি

হাটে গেলে মুর্গী খোঁজে

পাক্কা আড়াই দাঁতি

লোকজনেরা চাইলে তখন

চোখ টিপে কয় নাতি

আপনারা সব পাগল নাকি

দেখেন না এই জাতি

কলাগাছের ডগায় খোঁজে

রাঙা আগরবাতি

 

উল্টাপাল্টা জিন্দাবাদ

পরের বউ বেজায় স্বাদ

বুঝি না এই জাতি আহা

কখন কারে খায়

মধ্যরাতে নেতা কেন

পরের ঘরে যায়

১৪//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩২

ফুলকলিদের মাথা

ফুলকলিদের মাথা সদা ওপর দিকে থাকে

ফুলকলিদের মাথাগুলো আল্লা আল্লা ডাকে

ফুলকলিদের সঙ্গে কোরাস প্রজাপতি গায়

ফুলকলিদের চোখের তারা আরশ পানে চায়

 

একটা মিষ্টি মনের ভেতর হাজার আকাশ রয়

আকাশ থেকে মানুষের মন অনেক উদার হয়

মন মহাজন ঘুরে বেড়ায় আকাশ নীলিমায়

বাতাসগুলো হু হু করে প্রভুরই গুণ গায়

 

ঝর্ণা নদী কলকলিয়ে জিকির করে তাঁর

বিশ্বভুবন গান গেয়ে যায়, তাঁর সে মহিমার

এসো এসো ভাই বোনেরা তাঁর গণগান গাই

তিনিই আদি, তিনিই অন্ত, তাঁর তুলনা নাই

১৪//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৩

আমি নিজে অন্ধ না কি

আমি নিজে অন্ধ না কি

আমার জাতি অন্ধ

আমি আজো বুঝিনি রে

কে ভালো কে মন্দ।

কোরান পড়া মেয়েগুলো

যদি মন্দই হয়

এই সমাজে তবে দাদা

কারে ভালো কয়?

ধর্ষকগুলোই ভালো কিরে

তারাই যখন মন্ত্রী

ধর্ষকগুলো মন্ত্রী হলে

ইমাম ষড়যন্ত্রী।

পতিতারা বুক ফুলিয়ে

সংসদে যে রয়

তারাই তবে এই সমাজে

ভাল মানুষ হয়?

পাতি নেতার ঘরে এখন

বস্তা ভরা টাকা

এই সমাজের মানুষগুলোর

পকেটগুলো ফাঁকা।

চোর ডাকাতে ফুর্তি করে

সাধু জেলে রয়

এই সমাজে চোরই তবে

ভালো মানুষ হয়?

আমি বোকা খোকা নই

এসব কথা কারে কই?

১৪ই মার্চ ২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৪

কোরান পড়া মেয়ে গুলো

কোরান পড়া মেয়েগুলো

পুলিশ গিয়ে ধরে

পতিতারা হোটেল বারে

মহা ফুর্তি করে

 

আইনে আছে ধর্ষণ করা

কোরান পড়া নাই

যে দেশে নাইনটিপার্সেন্ট

মুসলমানের ঠাঁই

 

মেয়েগুলো বক্ষ ঢাকার

ওড়না কেন পরে

সেই দুঃখে নেতা কাবু

বেপর্দা আইন করে

 

সবই আছে মুসলিম দেশে

ইসলাম শুধু নাই

একটুখানি ইসলাম আমি

কোথায় পাবো ভাই?

১৪//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৫

শোনেন কাকা কাকি

শোনেন কাকা কাকি

এমন দেশে থাকি

সাহস হয় না পরাণ খুলে

আল্লাহ আল্লাহ ডাকি

 

মা বোনেরা পর্দা করে

ঘরে বসে কোরান পড়ে

বেআইনী নাকি?

অবাক লাগে কাকি

 

মেয়ে যদি ওড়না পরে

তবে তারে আইনে ধরে

এইটা কেমন দেশ

মেয়ের সাথে বাপের জেনা

সেটাই নাকি বেশ

 

হায়রে আজিব দুনিয়া

দেশ কি চালায় মুনিয়া

নাকি আজিব জানোয়ার

বলতে পারিস আনোয়ার?

 

এই খবিসের বাচ্চাগুলো

দিচ্ছে সবার চোখে ধুলো

বাড়ছে যতো দুর্গতি

বলছে এটাই তোর গতি

 

শোনেন কাকা, কাকি

বলতে পারেন রোজ কেয়ামত

কদিন আছে বাকি?

গযবের পর গযব আসছে

খাচ্ছেে মানুষ ঝাঁকি

তবু মানুষ কেমন করে

দিচ্ছে খোদায় ফাঁকি?

১৫//২০২০; রাত ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৬

প্রভূ কে বলেছে তুমি নাই

প্রভু,

কে বলেছে তুমি নাই

তুমি আছো সকল ঠাঁই

অধম আমি যেদিক চাই

তোমায় শুধু দেখতে পাই

 

তুমি আছো আকাশ নীলে

তুমি আছো আমার দীলে

তুমি আছো চলন বিলে

তুমি আছো তিশি তিলে

 

তুমি আছো সাগর জলে

তুমি আছো আকাশ তলে

তুমি আছো ফুল ফলে

আপনজনের করকমলে

 

তুমি থাকলে ভুবন হয়

তুমি বিহীন ভুবন নয়

তুমি আছো জগতময়

বিশ্বজাহান প্রভুময়

১৫//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৭

আবোল তাবোল মনির খান

 

আবোল তাবোল মনির খান

এই যে ধরেন, পনির খান

আপনি নাকি ফরেন যান?

বলে গেলো সোহাগ চান

 

কে কয় আমায় মনির খান

আমার নাম তো মানিক চান

দিতে পারেন খানিক পান

জর্দা ছাড়া যদি পান

 

এতো পনির কোথায় পান?

পরকে সাধেন, নিজে খান

কেমন আছে সোনাভান?

তার কি গেছে অভিমান?

 

থামেন কাকা মানিক চান

কনতো একি কান্ডখান?

চোখে না হয় কমই দেখি

ভুললো কেমনে আমার কান?

 

দেন না একটু গানে টান

আবার শুনি আপনার গান

 

ওরে আমার সোনার চান

গান কি আর গাই বাজান?

দেয়ালেরও আছে কান

ভুইলা গেছি সুরের টান

 

গাইলে পরে দেশের গান

কেউ মেরে কয় জেলে যান

আদালতে দেয় ফরমান

আমার কি কন দুইটা জান?

 

গান আমি আর গাইনা।

লাত্থি গুতাও খাই না

কাউয়া এখন গায় গান

হায় পাপিয়া, হায় জান

১৫//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৮

করোনাতে মরছে মানুষ

 

করোনাতে মরছে মানুষ, মরছে রাজা উজিরে

মরণ এখন কারো কারো ব্যবসাপাতির পুঁজিরে

আমরা এখন হন্যে হয়ে বাঁচার উপায় খুঁজিরে

ঠেলার নাম যে বাবাজি, এখন সবাই বুুঝিরে

 

কোরানটা যে সব মানুষের এটা আগে বুঝি নাই।

অস্ত্র দিয়ে শান্তি খুঁজছি, কোরান দিয়ে খুঁজি নাই

মানুষ মারছি হাজার হাজার, বিবেকের ধার ধারি নাই

আমরা হলাম পরাশক্তি, লড়াই করে হারি নাই

 

সামান্য এক ভাইরাস এসে বিশ্ব করলো কুপোকাত

দিনদুপুরে বিশ্ব দেখে এখন গভীর  আঁধার রাত

১৫//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৩৯

মনের মত লেখা পেলে

 

মনের মত লেখা পেলে

করছেন শেয়ার যারা

শত সালাম, ভালবাসা

শুভেচ্ছা নিন তারা

 

ভালোর সঙ্গে থাকো সবাই

পুষ্প ফুটুক আরো

ভালোটাকে সঙ্গী করো

যে যতটা পারো

 

প্রাণের সাথে প্রাণ মিলাও

দাও ছড়িয়ে আলো

তোমার আমার চেঁষ্টা মিলে

জগত হোক ভালো

 

দুঃখ রাশি নাশী

এসো ভালোবাসি

১৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪০

হীরারে তুই কেমন আছিস

 

হীরারে তুই কেমন আছিস

অংক পাড়িস কিছু

যদি পারিস তরে দেবো

দিনাজপুরের লিচু

 

দেশের লোকের প্রিয় কারা

ধর্ষক নাকি মোল্লা

হীরা বলে, কঠিন প্রশ্ন

কে পায় ভোটে গোল্লা?

 

যারা প্রিয় তারা জিতে

নেতা তারা হয়

ধর্ষকরাইতো জিতে দাদা

তারাই প্রিয় হয়

 

হুজুর হলে ফাঁসিতে দেয়

গুলি করে মারে

কারণ তারা নির্বাচনে

বারে বারে হারে

 

তারই মানে, দেশের মানুষ

ইসলাম বেশি চায় না

যত মানুষ পাড়াতে যায়

মসজিদে তা যায় না

 

ধর্ষণ করা খারাপ হলে

নেতা কি ভোট পাই তো

নাকি তারা গরম শরবত

রাত বিরাতে খাই তো

 

দেশের মানুষ যেমন হয়

নেতা তাদের তেমন হয়

১৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪১

আমার লেখা অনেক ভালো

 

আমার লেখা অনেক ভালো

এমন লেখা হয় না

কেউ তো সেটা বলেই ফেলে

অনেকে তা কয়

 

আমি জানি আমার লেখা

তুলনা তার হয় না

কেউ বলে না ঈর্ষা করে

কেউ বুঝে না, কয় না

 

নিজের ছেলে মায়ের কাছে

যেমন রাজার পুত্তুর

আমার লেখা তেমন ভালো

বউ বলুক না, ধুত্তুর

 

নিজের লেখা নিয়ে সবার

রকমই ভাবনা

থাকুন তিনি কোলকাতাতে

কিম্বা থাকুন পাবনা

 

লেখক মানে তিনিই রাজা

লেখা তাহার কন্যা

যতো দেখেন ততোই তার

বাড়ে খুশির বন্যা

 

আমার লেখা আমার কাছে

সপ্ত রাজার ধন

আপনি যতোই সে লেখাকে

কালো বামন কন

 

আমার লেখায় যতোই থাকুক

ছন্দ মাত্রায় ভুল

আপনার কাছে আমার লেখা

হোক না ঘাসের ফুল

 

নিজের লেখা আসুন আমরা

সবাই ভালবাসি

যে যা বলার বলুক লোকে

আমি তবু হাসি

১৫//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪২

দেশটা এখন কেস্টা বেটার

 

দেশটা এখন কেস্টা বেটার

শেষটা কি যে হয়

কেস্টা বেটার চেষ্টা দেখে

মনের ভেতর ভয়

আমার মনে বড় ভয়

 

করোনাতে বিশ্বভুবন

যখন শুনি কাত

আকাশ পানে মজলুমানে

যখন তোলে হাত

 

আমার দেশের নেতা তখন

বুক ফুলিয়ে কয়

জননেত্রী থাকলে পাশে

নাই করোনার ভয়

অমা, একি কয়!

 

করোনাতো বড় খারাপ

থাকে এসি ঘরে

গরীব রেখে বেশি বেশি

বড়লোকে ধরে

 

দেশে দেশে রাজা উজির

এমপি কুপোকাত

আমার দেশে মন্ত্রী তখন

দেখায় খুশির দাঁত

 

হাতি ঘোড়া পরাশক্তি

যখন গেল তল

আমার দেশে মন্ত্রীগুলো

দেখায় বাহুবল

 

এই দেমাগের কোথায় শেষ

বলতে পারো বাংলাদেশ?

১৬//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৩

নেতা ছিল বাটপার

নেতা ছিল বাটপার

গিয়ে দেখ ঘাট পাড়

দড়ি দিয়ে বান্ধা

সেকি তার কান্দা

 

এতো দেখি চেয়ারম্যান

ভেবেছি কি ফেয়ার ম্যান

এখন দেখি চাল চোর

পাড়ার বড় ডাল খোর

 

চাউলসহ খাইছে ধরা

মাতবরে কয় কি যে করা

খবর দিল পুলিশে

ঘাটের নয়া কুলি সে

 

খেলা হবে এখনি

গতবারে দেখনি?

যেই লাগাবে দোররা

আসবে টাকার তোড়ড়া

 

মানে আসবে ঘুষ?

দেখবো দারগার হুশ

তুই এবারে বাড়ি যা

বাড়ি গিয়ে নাস্তা খা

১৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৪

বন্ধুরা তো ভালই কয়

বন্ধুরা তো ভালই কয়

প্রকাশক তা কয় না

তার মানেকি সত্যি সত্যি

লেখা ভালো হয় না!

 

বন্ধুরা সব তেল দেয়

স্বৈরাচারে জেল দেয়

 

আমার লেখা পড়ে তবু

হাসে পাড়ার ময়না

পরী শুধু চোখ পাকায়

মুখে কিছু কয় না

 

পাঠকরাও ভালোই কয়

ভক্ত কবির গায়ও জয়

 

আসল কথা রবি, নজরুল

বছর বছর হয় না

ঝড় না এলে জোরে বাতাস

সারা বছর বয় না

 

কবি যখন আদর পায়

তখন সুখের চাদর খায়

১৬//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৫

মুজিববর্ষ

সবখানে সব কইতে নাই

সকল কথা বইতে নাই

দুঃখ ঢেকে রাখতে হয়

স্মৃতি খুলে চাখতে হয়

 

বাবা যখন মারা গেল

কারা মারলো জানিস?

সেই কথাটা স্মৃতি নেড়ে

একটু মনে আনিস

 

দুঃখ কি আর কমু বল

কারা বাবার ঘাতক দল

সেইটা জানে বিশ্বজন

আমার শুধু কান্দে মন

 

বাবার চাকর রাত্রে এসে

বাবার বুকে ঠেকায় নল

ওরাই খায় বাবার ভাতা

দুঃখ কই রাখি বল?

 

আমার দুঃখের সীমা নাই

দুঃখের কোন বীমা নাই

 

তেলাপোকা কপাল খায়

এসব কথা বলা যায়!

বাবার যারা ইয়ার দোস্ত

নতুন করে হাট বসায়

 

সবখানে সব কইতে নাই

সকল দুঃখ লইতে নাই

১৭//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৬

আমার লেখা বলবে তুমি

আমার লেখা বলবে আমি মানুষ নাকি পশু

আমার লেখা বলবে আমি নজরুল নাকি নসু

আমার লেখা তুলবে ধরে আমার পরিচয়

আমি আস্ত শয়তান নাকি মনে খোদার ভয়

 

মুখোশ পরে কাক কখনো হয়না কোকিল ভাই

মানুষ কিনা তার পরিচয় ব্যাবহারেই চাই

হিংসা বিদ্বেষ অহংকারের ফেরি যারা করে

অবশেষে তারাও দেখিস অপঘাতেই মরে

 

লেখায় পাবে শিক্ষা এবং বংশের পরিচয়

মরে গিয়েও সিরাজই পায় ভালবাসার জয়

ঘৃণা কুড়ায় মীরজাফররা আপন কর্মদোষে

প্রেমিক ধরায় প্রেমই ছড়ায় প্রেমভাব মনে পোষে

 

তোমার লেখায় তুমি থাকো আমার লেখায় আমি

আখেরে কে যাবেন টিকে, জানেন অন্তর্যামী

লেখা নিয়ে গর্ব করার, নিজের কিছু নাইরে

সবই খোদার দান মহিমা, তাঁর রহমে পাইরে

১৭//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৭

করোনা

না না দাদা, নড়ো না।

আইছে ভাইরাস, করোনা

ছোট্ট অতি, বড়ো না

তারে ডেকে মরো না

 

না না দাদা, নড়ো না।

বিমানে আর চড়ো না

রঙিন ধোঁকায় পড়ো না

না না দাদা, সরো না

 

তোমার সকল জ্ঞান গরিমা

বিদ্ধা বুদ্ধি ফেল

লাভ হবে না গুরুর পায়ে

মাখলে দু মন তেল

 

কোটি টাকার গোলা বারুদ

অস্ত্র রাশি রাশি

পড়ে রইলো অকেজো সব,

লোহার চরণ দাসী

 

বাঁচার উপায় একটাই প্রভুর

অর্জন করো করুণা

পাপের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে

পূণ্যের পথটা ধরো না

১৭//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৮

মোমের শহর

মেঘ বলেছে যাবি নাকি, মেঘপরীদের দেশে

আদর করে নিয়ে যাবো, তেপান্তরের শেষে

দেখবি সেথায় পরীর নগর

ঝলসানো সে মোমের শহর

সবাই সটান দাঁড়িয়ে আছে মোমপুতুলী বেশে

 

মোমের শহর, মোমের নগর, মোমের বাড়ি ঘর

সেই শহরে মোমের মানুষ, মোমের নারী নর

বৃক্ষ আছে সারি সারি

মোমের রাস্তা মোমের গাড়ি

কিন্তু যেন কেউ কারো নয়, সবাই ভিন্ন, পর

 

শহর নগর সবই আছে, প্রাণ সেখানে নাই

খোদার গযব একনিমিষে সব করেছে ছাই

তুমি যদি দাওরে ছুঁয়ে

আলতো করে একটু নুয়ে

আসবে ফিরে প্রাণের পরশ, জাগবে পরী, ভাই

 

বৃক্ষগুলো সবুজ হবে, হাসবে আরো মায়ের মন

পাখির ডাকে উঠবে জেগে সবুজ কচি সারা বন

ফুল বাগানের প্রজাপতি

করবে আবার মাতামাতি

প্রভুর গানেই মুখর হবে আবার সবাই সারাক্ষণ

 

মেঘপরীদের ডাকে আবার, ভাঙবে তোমার ঘুম

তোমার ছোঁয়ায় উঠবে জেগে প্রকৃতি নিঝঝুম

প্রাণে প্রাণে জাগবে সাড়া

উঠবে জেগে ঘুমের পাড়া

ফুলকলিরা আবার দিবে চাঁদের মুখে রাঙা চুম

১৭//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৪৯

জন্ম দিলে তুমিই প্রভু

জন্ম দিলে তুমিই প্রভু, মরণ তোমার হাতে

ভয় কি সহায় থাকলে তুমি গভীর আঁধার রাতে

সরল সঠিক পূণ্য পথে চলতে যেন পারি

আমার ওপর ঢেলো প্রভু তোমার রহম বারি

আমার আমল আমায় যেন নেয় না অধপাতে

 

বিপদ বাঁধা ভয় গো প্রভু তোমার হাতে বাঁধা

কেউ ধরায় নয় বড়-ছোট, গরীব-শাহাজাদা

তোমার কাছে বেঈনসাফির নাইরে প্রভু ভয়

তাইতো তোমার বিধান প্রভু, বিশ্ব শান্তিময়

যে বিধানটা দিলে প্রভু তোমার নবীর হাতে

 

বিধানেই জগত চলে, আকাশ, সাগর, নদী

এই বিধানেই বাতাস বয়রে ধরায় নিরবধি

যারা মানবে তোমার বিধান শান্তি পাবে তারা

আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো নামবে শান্তিধারা

বিধানের পায়েশ ঢেলে দাও না সবার পাতে

 

ন্যায় ইনসাফের শাসন যদি আবার ধরায় হয়

তবেই মানুষ ফিরে পাবে, মানবতার সে জয়

১৮//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫০

বিশ্বে এলো করোনা

বিশ্বে এলো করোনা

মরতে চাইলে মরো না

 

নইলে এটাই শেষ সুযোগ

কোরান খুলে পড়ো না

আল্লাহর হুকুম ফরজ কাজ

রোজা সবাই করো না

 

নামাজ জলদি ধরো না

যতোই বলি এসব করো

অনেকেই তা করো না

কেমনে যাবে করোনা?

 

বন্ধ করো হোটেল বার

পতিতাদের খোলা দ্বার

নয় পাবে না এবার পার

আসছে গযব, শক্ত মার

 

ছাড়ো সবাই সূর্য স্নান

বারের সকল নগ্ন গান

অশ্লীলতা, চিটিংবাজি

ছাড়ো সবে ধোঁকাবাজি

নয় যাবে না করোনা

পাপ করাটা বড়ো না

 

তওবা করো, তওবা করো

পুতপবিত্র জীবন গড়ো

হারাম ছেড়ে হালাল ধরো

নয় বিপদে পড়বে আরো

 

জীবন ভরে করছো পাপ

কেমন লাগে পাপের তাপ?

পাপের কোন মাপ নাই

করোনারও বাপ নাই

১৮//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫১

বাদাম বুড়ি

বাদাম বুড়ি বাদাম বুড়ি

বয়স কি তোর উনিশ কুঁড়ি?

টোকাস কি তুই পাথরনুড়ি

আজো উড়াস হৃদয় ঘুড়ি?

 

হৃদয় ঘুড়ি কোথায় যায়

সেকি শুধুই বাদাম খায়?

নাকি খায় সে বেতের ফল

অভিমানের কান্নার জল?

 

বাদাম বুড়ি বাদাম বুড়ি

কয়টা নিবি কাঁচের চুড়ি?

খেলবি নাকি ডালিমকুঁড়ি

হবি কি তুই রাইয়ান হুরী?

 

বাদাম বুড়ি, বাদাম বুড়ি

তোর বাড়ি কি সোনাইমুড়ি?

হাতে কি তোর? সাপের ঝুড়ি?

রোজ খেতে চাস ডালের পুরি?

 

ডালের পুরি কম খাও

ভাতের বদল গম খাও

১৮//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫২

ভয় করো না করোনাকে

ভয় করো না করোনাকে

ভয় করো তাঁর মালিককে

ভয় করো না বোমা বারুদ

ভয় করো তাঁর খালিককে

 

তিনি বলেন, মদ্য হারাম

তুমি আস্ত বোতল খাও

নেশার ঘোরে মন থাকে না

নিশি রাইতে কোথায় যাও

 

তোমার ঘরে পাপিয়া

কি হইবে পাপ মাপিয়া

 

করোনা তো নিজের ইচ্ছায়

যায় না শ্বশুর বাড়ি

বন্ধুর বাড়ি যাইতে তাহার

লাগে না প্লেন, গাড়ি

 

যাঁর হুকুমে জগত চলে

তাঁর হুকুমে হাঁটে

যখন তখন যাইতে পারে

তোমার নরম খাটে

 

দলে দলে তওবা করো

নামাজ কালাম রোযা করো

১৮//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৩

করোনাতঙ্কে কাঁপছে যখন

করোনাতঙ্কে কাঁপছে যখন

দেশ মহাদেশ বিশ্ব

এমন সময় তাকিয়ে দেখো

নিজের দেশের দৃশ্য

 

করোনাতঙ্ক যখন শোয়া

হাসপাতালের খাটে

আতশবাজি, রঙের খেলায়

উল্লাসে দেশ ফাটে

 

বিশ্ব বলে, প্রভু বাঁচাও

আর করবো না পাপ

মন্ত্রী বলে ঢোলক বাজাও

বর্ষ শুরুর বাপ

 

ঢোলক বাজাও, বাদ্য বাজাও

নোলক পরো কন্যা

দেশটাতেই বইয়ে দেবো

নগ্ন সুখের বন্যা

 

করোনাতে মরছে মানুষ

কাঁপছে সারা বিশ্ব

এমন সময় ফুর্তি করছে

কার সে বলো শিষ্য?

১৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৪

আমার দুঃখের সীমা নাই

আমার দুঃখের সীমা নাই

হাড্ডি আছে কীমা নাই

তাঁবু কিম্বা খীমা নাই

দুঃখের কোন বীমা নাই

 

সন্তান মারলো পিতাকে

জগতে মিতা কে?

জল্লাদ পরাণ কাড়লো না

সন্তান বাপকে ছাড়লো না

 

জাতির পিতা, নাতির না

বাঘ ভাল্লুক হাতির না

জানাযাতে মানুষ নাই

তাইতো মনে ব্যথা পাই

 

একটা জাতির পিতা সে

নয়তো চুলের ফিতা সে

কোটি কোটি ছেলে তাঁর

লাশটা গেল ফেলে তাঁর?

 

ভাগ্য এতো খারাপ তাঁর

পায়নি দেখা জনতার

 

আসলো শতবর্ষ

তাও এলো না হর্ষ

যেই করেছি ঘোষণা

মন্দের হলো সূচনা

 

চীনে এলো ভাইরাস

হেরে গেল সাইরাস

কে যে করলো ফন্দি

ঘরে হলাম বন্দী

 

মেহমান তো কেউ এলো না

রান্না খাবার খেলো না

বিশ্বে এলো করোনা

বললো, ধোকায় পড়ো না

সব ক্ষমতা তাঁর

তুমি আমি যাঁর

১৮//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৫

স্কুল কলেজ বন্ধ থাকবে

স্কুল কলেজ বন্ধ থাকবে

সিনেমা হল খোলা

মাদ্রাসাতে তাস পেটাবে

পাড়ার সকল পোলা

 

মসজিদে ভিড় করবেন না

নামাজ পড়ার ছলে

যদিও ভাই দিবস রাতে

জুয়ার আসর চলে

 

গার্মেন্টস চলবে সারাদিন

মাস্কের কাপড় দরকার

কেনো ভাবো মাস্ক বানাবে

গণতন্ত্রের সরকার?

 

ওসব চিন্তা বাদ দেন

বর্ষের কাজে হাত দেন

মিলাদ পড়েন মিল্লা

জিলাপি খান গিল্লা

 

জুম্মার নামাজ পড়বেন না

মসজিদের পথ ধরবেন না

 

যারা যারা তাবলিগ করেন

ছাড়েন এবার চিল্লা

নাইটক্লাবে ডিসকো নাচেন

নারী পুরুষ মিল্লা

 

এসব যদি আইন হয়

মনে রাখবেন করোনাও

মাটির তলের মাইন হয়

১৯//২০২০; ভোর ১২:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৬

এবার একটু হাসি থামান

এবার একটু হাসি থামান

সর্দি এবং কাশি থামান

জপুন প্রভুর নাম

ঢের হয়েছে ফাহেশা কাজ

ছাড়েন মন্দ কাম

 

পাপের ভারে ডুবছে শহর

ডুবছে কত গ্রাম

মরছে মানুষ করোনাতে

ডুবছে ধরাধাম

 

মহামারী বিশ্ব জুড়ে

বিশ্ব জুড়ে পাপ

একের পর এক আসছে গযব

করুন অনুতাপ

 

পাপী বান্দা তবু

রহম করো প্রভু

১৯//২০২০; ৪:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৭

সহজ কথা সহজ করে

সহজ কথা সহজ করে

কইতে কেনো পারি না

দোয়া করেন সবাই তবু

রণে যেনো হারি না

 

লেখা পড়ে মানব যেনো

মানুষ হতে পারে

মনের যতো মন্দ চিন্তা

টিপে যেনো মারে

 

হতে পারে উদার, মহত

হোক না বড় আরো সে

সাত আসমান পার হয়ে

যাক না ওড়ে আরশে

 

মানুষ যেনো মানুষ হয়

দোয়া করো সকলে

সভ্যতা ফের উঠুক বেঁচে

মানবতার ধকলে

১৯//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৮

করোনা ও পঙ্গপালে

করোনা পঙ্গপালে

আসলো ধেয়ে মিল্লা

পাপের ধরা ওরা যেনো

খেয়ে ফেলবে গিল্লা

 

যাত্রা করো থানায় থানায়

ফুর্তি করো কাণায় কাণায়

 

আমড়াগুলো খেয়ে ফেলো

গায়ের চামড়া ছিল্লা

সুইমিংপুলে গোসল করো

বউ শ্বশুরে মিল্লা

 

মহামারী কারে যে কয়

বুঝতে যদি পারতে

তবে কিরে লজ্জা শরম

গলা টিপে মারতে

 

করোনা নয় বাঙাল পুলিশ

ঘুষ খাইতে জানে না

এমন কি সে ছোট বড়ো

রাজা উজির মানে না

 

করোনা পঙ্গপাল

দুজনেই যে বেসামাল

১৯//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৫৯

পাপে পাপে যখন ভরে দুনিয়া জাহান

পাপে পাপে যখন ভরে দুনিয়া জাহান

মানুষে নয়, বিশ্ব চালায় পাপিষ্ঠ শয়তান

তখনইতো গযব পাঠান দয়াল সোবহান

তওবা করো তওবা করো, ওহে নাফরমান

বাঁচাও ধরা, বাঁচাও জগত, বিধস্ত ইনসান

 

ফুল পাখি আর শস্যদানা কম কি ছিল কিছু

তবে কেন অধমরে তুই, ছুটলি পাপের পিছু

কী কারণে পরের ধনে, দিলিরে তুই হানা

যে কারণে দুনিয়াতেই হইলি গযব পানা

তোর কাছে কি ছিল নারে কোরানের বিধান

তবে কেনো পাপের পথেই গেলিরে ইনসান?

 

সব ক্ষমতার উৎস যদি এই জনগণ হয়

তবে কেনো মনের কষ্ট ধরায় বেঁচে রয়?

কেন মানুষ জালিম হয়, হয়রে স্বৈরাচার

বান্দার এমন কষ্টে আমি করবোনা বিচার?

রাখবো না তার বাঁচার তরে কোনই বিধান?

তাই ধরায় পাঠিয়ে দিলাম পবিত্র কোরান

 

তওবা করো, তওবা করো, রহম যদি চাও

এখনও যে সময় আছে চোখের পানি দাও

দুহাত তুলে তওবা করো, ওহে নাফরমান

আর যেয়ো না পাপের পথে সুপ্রিয় ইনসান

 

দেখবে তুমি তোমার প্রভু, রহীম রহমান

দেখবে তুমি জগত স্রষ্টা কতো যে মহান

১৯//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬০

বিশ্ব যখন বন করেছে

বিশ্ব যখন বন করেছে

সকল আয়োজন

তখন তোমার শখ চেপেছে

করবে নির্বাচন

 

স্কুল কলেজ মাদ্রাসা বন,

সমাবেশ সব মানা

ওয়াজ মাফিল বন হয়েছে

বন বিবাহের খানা

 

এমন সময় তামশা করার

খুবই প্রয়োজন?

মানুষ মরার মিছিল দেখে

খোশ হয়েছে মন?

 

শোনেন কমিশন

মন খুলে সব কন

কি কারণে লাশের জন্য

এত আয়োজন?

 

এতো এতো তামশা করেও

মার খাননি তাই

ভাবেন নাকি দেশে এখন

জেতা মানুষ নাই?

 

ইভিএমের খেল দেখালেন

দেখলাম ভোটের খেল

সেকি আজব খেলা দাদা

পিসি সরকার ফেল

১৯//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬১

অন্যায় যে কর আর

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সয়

দু'জনেই এক সাথে অপরাধী হয়

এই কথা সকলের জানা আছে, জানি

দোষী হয় জনগণ, পাপ করে রানী

 

সেই পাপে আসে যদি গযবের ঢেউ

দুজনেই ডুবে মরে, বাঁচে নাতো কেউ

সাধুজন, তুমি ভাবো, তুমি নির্দোষ

রুখো নাই পাপ তাই পাও ভাগে রোষ

 

পাপ দেখে যেই জাতি চুপ থাকে ভাই

দুর্যোগ তার কাছেও ঠিক আসে ভাই

কষ্টের নোনাজলে পাপী যদি কাতরায়

সয়ে যাওয়া জাতি তার সাথে সাঁতরায়

 

পাপ করা ছাড়ি আগে, তারপর রুখী

তবেই সে জাতি হয় এক সাথে সুখী

১৯//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬২

কেউবা শুয়ে আরাম করো

কেউবা শুয়ে আরাম করো

কেউবা বসে নামাজ পড়ো

শয়তান যখন মন্দ করে

তার হাত চেপে কে কে ধরো?

 

তুমি মন্দ করো না

শয়তানকেও ধরো না

শয়তান ধরার সময় নাই

তাতে কি পাপ কমে ভাই?

 

পাপী করছে পাপের কাজ

আমি তো পাপ করি নাই

আমি নিরেট ভালো মানুষ

কারো সঙ্গে লড়ি নাই

 

এমন ভালোর কাম নাই

মরা ভালোর দাম নাই

২০//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৩

বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর

বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর

ভিজে সারা দুনিয়া

কে করেনি পাপের কাজ

কে দেখে তা গুনিয়া?

 

এলে তুফান, এলে ঝড়

রেহাই পায় না সাধুর চর

মন্দির ভাঙে, ভাঙে ঘর

কষ্টে পড়ে নারী নর

 

সবাই ঝড়ের ঝাপটা খাই

মোল্লা পুরুত রেহাই নাই

 

তাইতো বলি শোনরে বাপ

সবাই থামা দেশের পাপ

যদি ছুটে পাপের বান

সঙ্গে আসে ঝড় তুফান

 

মাথায় যদি পচন ধরে

ব্যক্তির সাথে জাতি মরে

২০//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৪

মামা-ভাগ্নের আলাপ

খালি গায়ে কই যাস হীরা

তোর কি কোন নিমা নাই?

ছিল মামা, যখন দেখলাম

চিন্তার কোন সীমা নাই

 

চিন্তা আছে ভুরি ভুরি

কিন্তু চিন্তার বীমা নাই

চিন্তা রাখবো বিজন চরে

কিন্তু চরে খীমা নাই

 

তারপর, তারপর?

চরে কোন খীমা নাই

খাইতে দিমু কিমা নাই

তারপর?

 

মানুষ এমন বিচিত্র জাত

তারে নাহি চেনা যায়

সঙ্গে থাকে আজব মন

জানি না সে কই পালায়

 

এই দেখি সে গুলিস্তান

কেমনে যায় সে আমাজান

আসমানের চাঁদ পুকুরে

কোনটা বলি খুকুরে?

 

মামা পেপার পড়ো না!

এই যে এলো করোনা

কী যে ঘটলো ধরাধাম

মাথায় ওঠে পায়ের ঘাম

 

সমাজতান্ত্রিক চীনে মামা

বন্ধ মসজিদ খোলা হয়

দলে দলে চায়নিজগুলো

নতুন মুসলিম পোলা হয়

 

চলে কোরান তেলাওয়াত

চব্বিশ ঘন্টা রাশিয়ায়

মুসলিম দেশে মুসলমানে

তখনো তো ফাঁসি পায়

 

মুসলমানে বন্ধ করে

মক্কাতে পাক কাবাঘর

মুসলিম দেশে জামাত বন্ধ

ঘরে গিয়ে নামাজ পর

 

মক্কার খাদেম কাবা রেখে

হালাল ক্লাবে খেতে যায়

ইরানীরা বিদেশ গেলে

বার বার মুতা বিয়া চায়

 

কত কিছু ঘটছে মামা

আজব অবাক দুনিয়ায়

ভাবছি আমি করোনা কি

এমনি আসে এমনি যায়!

 

রেড এলার্টে চলছে ধরা

বলছে প্রভু মাফ করো

আমার দেশের মুরুব্বী কয়

ক্যান পাপিয়ার পাপ ধরো

 

পাপিয়া সম্রাটেরা

দোষ তো কিছু করে নাই

যারা নাকি দেশ বাঁচাবে

তারা নাকি মরে নাই

 

ভাবছি গযব কাদের পাওনা

মুসলিম নাকি অন্যদের?

নাকি জলের মৎস্য, কুমীর

পশু, পাখি, বন্যদের

 

সেলাম সেলাম সেলাম

মামা-ভাগ্নে গেলাম

যে যার পারে ছিড়ুক কেশ

ভাল থাকুক বাংলাদেশ

২০//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৫

করোনাটা যেই এসেছে

করোনাটা যেই এসেছে

অবরুদ্ধ চীনে

বুঝলো ওরা ভুলটা কোথায়

আসলো ফিরে দ্বীনে

 

খুলে দিল মসজিদ ঘরের

সকল পুরাণ তালা

বললো প্রভু মাফ করে দাও

সরাও বিপদ বালা

 

উইঘুরের সে বন্দীখানায়

জ্বললো আবার আলো

বললো প্রভু আর নেবোনা

গায়ে পাপের কালো

 

তওবা করলাম, প্রভু তুমি

দাও না করে মাফ

দুষিত হৃদয়গুলো

দাও না করে সাফ

 

রহম হলো প্রভুর, তাই

বেঁচে গেল চীন

করোনাকে তাড়িয়ে দিল

আল্লার খালেস দ্বীন

২১//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৬

আদম বড় আদরের ধন

আদম বড় আদরের ধন, মাখলুকাতে সেরা

প্রভুর দয়ায় বাঁচে মানুষ, করে চলাফেরা

কোন কিছু চাইতে হলে, প্রভুর কাছে চায়

শোনেনা সে প্রভুর বারণ, হারাম ঠিকই খায়

 

প্রভুর হুকুম সারা জীবন করে অবহেলা

ভাবে নিজের জীবন, শুধু মজার খেলা

খোদার হুকুম মানে না সে, ইচ্ছে মত চলে

কিন্তু তার মনের কথা, কাউকে কি সে বলে?

 

মুখের সাথে মনের কথার রাখে না সে মিল

নিষ্ঠুরতায় সেরা মানুষ, কঠিন যে তার দীল

ভালবাসার ভাব দেখায়, বলে প্রেমিক আমি

কতটুকু প্রেমিক কে যে, জানেন অন্তর্যামী

 

নামাজ রোযা করে যারা তারাও দেয় ফাঁকি

চোরা যায় চুরি করতে, আল্লা আল্লা ডাকি

আগে মানুষ শপথ করো, ঈমান করো ঠিক

দ্বীনের আলোয় উঠুক ভরে তোমার চতুর্দিক

২১//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৭

করোনাটা বড়ো নাকি

করোনাটা বড়ো নাকি

নির্বাচনটা বড়ো

মরতে যদি হয়ই তবে

ভোটটা দিয়ে মরো

 

ফর্মুলাটা মন্দ না

বলছে হেসে চন্দনা

লড়তে যদি হয়ই তবে

ভোটের সাথে লড়ো

 

ভোট না দেয়ার দুঃখ তখন

কারো মনে থাকবে না

জয়ের জন্য যদিও আমার

কোন ভোটই লাগবে না

 

তবু দাদা গণতন্ত্রের

নিয়ম একটা আছে না

হেঁটে আসবা ভোট দিতে

গাড়ি কিম্বা বাসে না

২১//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৮

আল্লাহু আকবার বলো

আল্লাহু আকবার বলো আল্লাহু আকবার

বিশ্ববাসী দেখলো আবার ক্ষমতা আল্লার

বলো, আল্লাহু আকবার

 

স্পেনে যে উঠলো জেগে ইসলাম পুনর্বার।

ঘরে ঘরে উঠলো ধ্বনি আল্লাহু আকবার

তার পেছনে কারণ কিন্তু গযব করোনার

বলো, আল্লাহু আকবার

 

লাখে লাখে মারছে মানুষ রানী ইসাবেলা

রক্ত নিয়ে খেলছে ওরা নিঠুর হোলি খেলা

আটশ বছর স্পেন জুড়ে ইসলাম রেখে বন্দী

মহান আল্লাহর হতে গেল, তারা প্রতিদ্বন্দ্বী

যখন বুঝলো ভুল করেছে, ওরা গোনাহগার

তখন ওদের ভাগ্যে এলো ছোবল করোনার

বলো, আল্লাহু আকবার

 

যুগে যুগে আসছে গযব, আসতে পারে আরো

গযবটাকে মোকাবেলার সাধ্য নাইতো কারো

আল্লাহরই নাম জপতে খাকো সবাই বারংবার

বলো, আল্লাহু আকবার

২১//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৬৯

বিম্পি জামাত এত্তো খারাপ

বিম্পি জামাত এত্তো খারাপ

আগে দাদা বুঝি নাই

কোনদিনই ওদের দোষ তো

চশমা পরে খুঁজি নাই

 

যেই পড়েছি চশমা দাদা

দেখি দোষের অন্ত নাই

একের বদল পা দুইটা

কিন্তু পায়ে দন্ত নাই

 

এই করোনার পিছে দাদা

ওদের শক্ত হাত আছে

নইলে কেন ওদের ফাইলে

করোনারও খাত আছে

 

বিদেশ থেকে আসছে যারা

গিয়ে দেখো জামাত ভাই

মুজিববর্ষ ভন্ডুল করার

ন্যাক্কারজনক আঘাত ভাই

 

আগে এটা সামাল দেই

দেখবো পরে করোনা

মরতে দাদা হবেই যখন

করোনাতেই মরো না

২১//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭০

করোনার ভয় নাই

বিশ্ব কাঁপছে করোনা ভয়ে, সবই দাদা তামাশা

মন্ত্রী বলে আবোল তাবোল, তার পেটে যে আমাশা?

 

মরছে মানুষ দলে দলে, হাসপাতালে জাগা নাই

কে পড়াবে জানাযা কার, খবর কারো জানা নাই

 

আজব একটা দেশ।

চেপে ধরার আগেই নাকি রোগের ঔষধ শেষ

ডাক্তার নার্সতো চোরের দল, তাই সরঞ্জাম নাই

ইচ্ছে করে সব কটাকেই ফাঁসিতে লটকাই

 

চারশো কোটি টাকায় যদি বাবার শ্রাদ্ধ হয়

সামান্য এক করোনাতে কিসের তবে ভয়

ভয়ের কিছু নাইরে দাদা রসুন বেঁটে খা

সবাই মরবে, ভয় পাবি না, এবার বাড়ি যা

 

মরতে হলে মরবি।

তাই বলে কি করোনার ভয়ে হাটু চেপে ধরবি?

২১//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭১

পঁচা কথা কইতে মন চায়?

পঁচা কথা কইতে মন চায়?

একা একা কও

তোমার কথার সঙ্গে কেন

দেশবাসীরে লও

 

তুমি লুইচ্চা, শরম নাই

এটা বলার দরকার কি

ছবি দেখেই বুঝতে পারি

কে কারে দেয় মণ ঘি

 

বিব্রত না তুমি বুঝলাম

আমি শুনে বিব্রত হই

দেশের যারা মন্ত্রী এমপি

কেমনে তাদের বদমাশ কই?

 

মন্ত্রী হয়ে এসব কথা

কারো কাছে কইতে হয়?

চাপা থাকলেই চাপাবাজের

তকমা কারো লইতে হয়?

 

পাপিয়াদের গোপিনীরা

কোন কোন বনে থাকে

কখন কারে কেমন করে

সেই বনে কু ডাকে

 

এসব কথা কইতে নাই

পাবলিক শুনে শরম পায়

আপনারা যে মন্ত্রী তাই

পিছে পিছে পাবলিক যায়

 

পাবলিক নষ্ট কইরেন না

বেশি বেশি লইড়েন না

২২//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭২

তোমরা করো পালন দাদা

তোমরা করো পালন দাদা

জন্মশত বার্ষিকী

সঙ্গে করো ভাগের ঝগড়া

কার আধা, কার সিকি

 

ভয়ের ওপর ভয় দেখাচ্ছো

আতশবাজির তান্ডবে

মনে হয় দেশটি ভাগ

করছে পঞ্চপান্ডবে

 

আতঙ্কে আজ বিশ্ববাসী

চাচ্ছে প্রভুর মমতা

তুমি দেখাও বাহুর জোর

শক্তি, সাহস, ক্ষমতা

 

ভাবছি একোন দেশে দাদা

বাস করছি আমরা

গন্ডারের চে মোটা নাকি

মন্ত্রীদের চামড়া

 

করোনা তো আছেই দাদা

মরছে মানুষ ভীতিতে

সরকারে চায় বাইইলেকশন,

নির্বাচনে জিতিতে

 

ভোটারও নাই, ভোটও নাই

তবু বিজয় হবে

বিজয় মিছিল করবে যারা

জয়বাংলাও কবে

২২//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৩

চাপাবাজি ঢের হয়েছে

চাপাবাজি ঢের হয়েছে

এবার ওসব ছাড়েন

পাবলিক জানে আপনারা যে

কে কি করতে পারেন

 

চোরের মায়ের বড় গলা

এটা সবাই জানে

রোগ নির্নয়ের একটা মেশিন

বলার কি মানে?

 

কজন আসে বিদেশ থেকে

কে কে সেটা জানেন না

প্যাসেঞ্জারের লিস্টি দেখে

তালিকাটা আনেন না

 

পাঁচ টাকাতে 'করোনা নাই'

সার্টিফিকেট ছাড়েন

মহামারী আটকে দেয়ার

গপ্পো তবু মারেন

 

লীগের পোলা একাই নাকি

করোনারে ঠেকাবে

আমরা তো তার আগেই নাই,

কারে ওসব দেখাবে?

২২//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৪

মাফ করে দে নানী

মাফ করে দে নানী।

পুরান কথা মনে হলে

চোখে আসে পানি

 

আমি তখন ছোট

থাকি মায়ের ঠোঁট

 

হাসতে পারি, খেলতে পারি

মেলতে পারি পাখা

মা চিবাতো শুকনো রুটি

আমার খানা ঢাকা

 

ঢাকনা খুলে দেখতে পাই

তরকারি বা ডালও নাই

ভাতের ওপর শুধু একটা

কাঁচা মরিচ রাখা

 

খেলতে যাবো বাইরে আমি

মা বলতো, না, যাইস না

বাইরে খালি দুঃখ রে মা

দুঃখের বাতাস খাইস না

 

বাড়ির পাশে সড়ক ছিল

তখন দেশে মড়ক ছিল

বাইরে থেকে আসতো ওড়ে

মানুষ পঁচা গন্ধ

দাদা তখন বেঁচে ছিল

যদিও ছিল অন্ধ

 

একদিন দাদা বললো খুকি

বাইরে যাবি, চল

দিনটা ছিল আষাঢ় মাস

বাইরে ছিল জল

 

মা ছিল না ঘরে।

দাদাও একা বের হতো না

আমার মায়ের ডরে

 

দাদার হাতের আঙুল ধরে

পথে যখন নামি

পথের ওপর শোয়া মানুষ

দেখে আমি থামি

 

বললাম, দাদা, ওর কি হলো?

পথে কেন ঘুমায়

বলল দাদা, ঘুমায় নারে

এটা মরা লাশ

 

যখন লোকটার শ্বাস ছিল,

মানুষ ছিল বটে

এখন লাশের গন্ধে মানুষ

কেবল দূরে হটে

 

এখন তাকে আসবে খেতে

কুকুর, কাক চিল

আসবে না কেউ দাফন করতে

মহত মানব দীল

 

সেই মমতা, উদারতা, সামর্থও নাই

চুয়াত্তুরের আকাল দাদু, সব করেছে ছাই

 

নানী,

চুয়াত্তুরের দুঃখগাঁথা

কয়টা আমরা জানি?

সেই সব দিন মনে হলে

আজো আসে পানি

২২//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৫

আটশো বছর পর

আটশো বছর পর

স্পেনে ফের শোনা গেল

আল্লাহু আকবর

 

ঘরে ঘরে উঠলো বেজে

রবের আহবান

নামাজ পড়তে ছুটে এসো

বিশ্ব মুসলমান

 

পাপ করো না, বলেছি যতো

নাওনি কানে তুমি

বন্যা দিলাম, ডেঙ্গু দিলাম

উল্টে দিলাম ভূমি

 

তবু তোমার হুশ হলো না

পাপ বাড়ালে আরো

এখন কেন বলছো মানুষ

করোনায় ক্যান মারো?

 

করোনা আর থাকবে না বাপ

পাপটা যদি ছাড়ো

পাপ তাড়ানোর চেষ্টা তবে

বাড়াও একটু আরো

২২//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৬

করোনা ও কেয়ামত

করোনা থেকে বাঁচতে চাও

পাপ কাজ সব ছেড়ে দাও

 

পাপ না থাকলে দুনিয়ায়

করোনা খাবে মুনিয়ায়

 

বাড়লে বেশি জালিম জন

পোকায় খায় বোকার ধন

 

বাড়লে বেশি দুর্নীতি

বাড়ে দেশে গুম, ভীতি

 

অশ্লীলতা বাড়লে দেশে

বিপদ আসে নানান বেশে

 

অল্প পাপে গযব কন্যা

নামটা থাকে ডেঙ্গু, বন্যা

 

বনে লাগলে অগ্নিতাপ

বুঝবা ওটা পাপের সাপ

 

হারাম যদি ধরো না-

তবে আসে করোনা

 

এটাও যদি দাও সামাল

তবে আসবে পঙ্গপাল

 

শেষ হবে সব নেয়ামত

গিলে খাবে কেয়ামত

২২//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৭

প্রভূ তোমার কুদরত দেখে অবাক আমি হই

প্রভু তোমার কুদরত দেখে অবাক আমি হই

অবাক হয়ে দুচোখ মেলে তাকিয়ে শুধু রই

সে সব কথা বলবো ভাষায় সাধ্য আমার নাই

সে সব কথা আমার ঠোঁটে দাওনা আমি গাই

 

হাতির কেন নাইরে পাখা কেমন করে কই

দুধ পঁচিয়ে মানুষ কেন বানাতে যায় দই

তোমার হুকুম মানে সবাই চন্দ্র, সূর্য, তারা

অবাধ্য হয় কোন সাহসে মানব শিশু যারা?

 

বিশ্বটা ক্যান তৈরি করলে ডিমের মত গোল

দিলে নাতো ডিমের মাঝে মা মা ডাকার বোল

কেউ জানে না ফুলে কেনো সুবাস দিলে তুমি

একই সমান করলে না কেন পাহাড় মরুভূমি

 

মানুষ দেখে পুকুর জলে উল্টানো এক চাঁদ

সত্যি বলো, নীল আকাশটা পৃথিবীর ছাদ?

কিন্তু ছাদ খুঁটি ছাড়াই দাঁড়িয়ে দেখি রয়

আকাশ যদি ভয় পায় তবে, মানুষ কেন নয়?

 

প্রভু আমি বোকা মানব, বুদ্ধি আমায় দাও

অধমের কাছে প্রভু আর কি তুমি চাও?

২৩//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৮

কী অপরাধ তার?

কী অপরাধ তার?

জনপ্রিয়, স্যার

শক্ত করে ধরো

গৃহবন্দী করো

দেখাও গায়ের জোর

দোষ বলে দাও, চোর

চোর পাবে না মাফ

বিচার বড় টাফ

থাকুক কদিন জেলে

বিদেশ থাকুক ছেলে

পপুলারের মানি?

কচুপাতার পানি

আজ আছে কাল নাই

বিজলি চমক ভাই

 

কী অপরাধ তার?

মাহফিল করে, স্যার

কোরান পড়ে সুরে

ঘুরে দেশটা জুড়ে

দোষের তার শেষ নাই

বিশ্ব ঘুরে, দেশ নাই

 

এই কোরানের পাখি?

কোথায় তারে রাখি?

শুনি সুখেন দাস

সব করেছে ফাঁস

পাবলিক সবই জানে

মিথ্যা নেয় না কানে

ঢুকাও লোহার শিকে

যে কয়টা দিন টিকে

ঘোড়ার পিছে হাঁটতে নাই

হুজুর মানুষ, ঘাটতে নাই

 

কী অপরাধ তার?

বিপ্লবী লোক, স্যার

খালি বুলি ঝাড়ে

গুলি মারেন তারে

২৩//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৭৯

ফর্সা আকাশ কালো করে

ফর্সা আকাশ কালো করে

অমঙ্গলের ধ্বজা ধরে

দেওয়ের মত রোষে

তুফান যখন আসে--

 

দেখে না সে কালবোশেখি

কে তারে ভালবাসে

অথবা তারে দেখে কে কে

মিটমিটিয়ে হাসে

কার বাড়িঘর যায় রে ভেঙে

দারুণ সর্বনাশে

 

যার সাথে তার দেখা হয়

তার সাথে সে কথা কয়

ছোট বড় মোল্লা পুরুত

যায় সে সবার পাশে

নিজেই এবার হাসে

 

তাইতো ধরা খাইতে নাই

গযব শখে চাইতে নাই

২৩//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮০

কে যে কিসের ফন্দি করে

কে যে কিসের ফন্দি করে

কে যে কারে বন্দি করে

বুঝা বড় দায়

কে যে কার বাজার করে

কে যে তোলে খাবার ঘরে

কে সে খাবার খায়

বুঝা বড় দায়

 

মানুষ যখন সীমা ছাড়ায়

গযব তখন নামে পাড়ায়

যারা থাকবে অন্ধকারায়

তারা যখন ছড়ি ঘুরায়

কে যে ব্যথা পায়

বুঝা বড় দায়

 

স্রষ্টা দেখে সৃষ্টি তার

কান্দে বসে জারেজার

গুণায় ভাসে গুণাহগার

এসব তো আর সয়না তাঁর

আপন সৈন্য নেন যে তিনি

আস্তে করে ডাকিয়া

তখন কান্দে রাজন বিজন

খোদার দুশমন জাকিয়া

 

কার ফাঁসি কও কে দেয়

কার হাসি কও কে নেয়

কে যায় মামা যমুনা

কোরান পাখি জেলে যায়

এরপর কে যায় কমু না

 

হারাম ছাড়ো বিশ্ববাসী

নইলে দেখো আজব ফাঁসি

কয়টা করছে জালিম গুম?

দেখো গুমের পড়ছে ধুম

 

পাপ না ছাড়লে থামবে না

তালগাছ থেকে নামবে না

খোদার সৈনিক ঘামবে না

 

পারলে তুমি তওবা করো

আবার সুখের স্বপ্ন গড়ো

২৪//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮১

স্বাধীনতার মাসে

স্বাধীনতার মাসে

কোত্থেকে যে এতো বাদুর উড়ে উড়ে আসে?

ধান খুঁটে খায় বাদুরগুলো সবুজ দুর্বাঘাসে

ফাঁকে ফাঁকে কী ভয়ানক অট্টহাসি হাসে

স্বাধীনতার মাসে

 

স্বাধীনতার মাসে

সংসদে বয় চায়ের আসর, বাদুরগুলো হাসে

মুক্তিযুদ্ধের নায়কগুলো অবলীলায় ফাঁসে

স্বাধীন শ্যামল দেশে ওরা ঘৃণা হিংসা চাষে

স্বাধীনতার মাসে

 

স্বাধীনতার মাসে

একাত্তুরের স্মৃতিগুলো আমায় দেখে হাসে

কাকে খুঁজছো? মুক্তিযোদ্ধা? গেছে বনবাসে

স্মৃতিসৌধটা ভরে গেছে শহীদ সেনার লাশে

স্বাধীনতার মাসে

 

স্বাধীনতার মাসে

স্বাধীনতার দলিল খুঁজি ট্রামে, ট্রেনে, বাসে

ছয়টি ঘোড়ায় চড়ে তখন স্বাধীনতা আসে

বলে, ওরে ভাবিস কেনো আমি আছি পাশে

স্বাধীনতার মাসে

 

স্বাধীনতার মাসে

বাদুরগুলো গান শোনায়, বলে, ভালবাসে

ভালবাসার ঠেলায় ভরে দেশটা লাশে লাশে

কোত্থেকে যে এতো বাদুর উড়ে উড়ে আসে?

স্বাধীনতার মাসে, স্বাধীনতার মাসে,

আহা স্বাধীনতার মাসে

২৪//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮২

যারে তুমি ফাঁসি দিলা

যারে তুমি ফাঁসি দিলা

যারে দিলা গুলি

রহম করো বলে দোয়া

করলো দুহাত তুলি

 

তার সে কান্না দেখে যদি

প্রভুর দয়া হয়

তখন যদি ডেকে প্রভু

করোনারে কয়

 

যেথা দেখবি জুলুম শোষণ

যেথা দেখবি পাপ

বলবি তারে তোমার পাপই

ডাকলো অভিশাপ

 

ভালো মানুষ যারা

এবার শোন তারা

পাপ তাড়ানোর আন্দোলনে

দাওনি যখন সাড়া

তোমার ওপর করতে পারে

করোনাও তাড়া

 

আমি নিষেধ করবো না

হাত চেপে তার ধরবো না

এতে তুমি বাঁচতেও পারো

কাউকে আমি মারবো না

 

সবই তোমার কামাই

শোন চালাক জামাই

২৪//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৩

এই পতাকা

এই পতাকার জন্য মানুষ জীবন দিল কতো

রক্ত দিল সাগর সাগর, পরাণ শতো শতো

কত তরুণ হারিয়ে গেল এই পতাকার জন্য

লাল সবুজের পতাকায় কোটি মানুষ ধন্য

 

নিজের দেশের পতাকাটা নিজের চেয়ে দামী

এই পতাকার জন্য আমরা সাগর তলে নামি

কোটি জনের স্বপ্ন আশা এক পতাকায় জমা

এই পতাকার দাবী একটাই, হিংসা শুধু কমা

 

এই পতাকা প্রথম যিনি তুলেছিলেন, তাকে

স্বাধীনতার শুভক্ষণে উৎসবে কেউ ডাকে?

আমরা কজন জানি বলো, মহানের নাম

কজনে দেই পতাকার উত্তোলকের দাম?

 

এসো এসো তাঁকে জানাই সম্মান সালাম

লাল সবুজের পতাকাতে জড়িয়ে যার নাম

২৪//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৪

বিশ্বব্যাপী মন্দ লোকে

বিশ্বব্যাপী মন্দ লোকে

করছে নানা ফন্দি

ভালো মানুষ ধরে ধরে

করছে জেলে বন্দী

 

করছে জুলুম নির্যাতন

দয়ামায়াহীন

ভাল মানুষ ভুলে যাচ্ছে

কোনটা রাত্রদিন

 

মজলুমের সে কান্না যখন

আরশপাকে যায়

গযব তখন এই ধরাতে

ছুটে আসতে চায়

 

আল্লাহ তখন তওবা করার

সময় করেন দান

কারণ তিনি মাবুদ মাওলা

রহীম রহমান

 

এরপর পাপের ধরণ দেখে

গযব ছুটে আসে

মানুষ তখন পাপ সায়রে

ভাসে সর্বনাশে

২৫//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৫

ওঠো ওঠো মুমীন বান্দা

ওঠো ওঠো মুমীন বান্দা ঈমান করো ঠিক

দ্বীনের আলো দাও ছড়িয়ে বিশ্বে চতুর্দিক

মধ্যপন্থী জাতি তুমি, মধ্যিপন্থাই ধরো

চরমপন্থী নরমপন্থী সবাকে এক করো

 

বলো তাদের মানুষ তুমি পশুতো কেউ নও

তবে কেনো পশুর মতোই নিষ্ঠুর তুমি হও?

তোমার মাঝে তবে কেনো দয়া মায়া নাই

একই প্রভুর সৃষ্টি কেন হয়না তোমার ভাই?

 

পৃথিবীর সকল কিছু তোমার প্রভুর দান

আকাশ মাটি, ফুল পাখি নদীর কলতান

হালাল এবং হারামটা কি কোরান খুলে জানো

মানুষ নয়, আল কোরানের হুকুম তুমি মানো

 

মন্দ তুমি দেখবে যেথায়, বন্ধ করবে সেটা

তুলে নেবে বুকে তোমার, ভালো পাবে যেটা

কে করলো সে মন্দ কাজ, দেখার বিষয় নয়

তোমার বুকে থাকবে শুধু এক আল্লাহর ভয়

 

ইসলাম মানে আর কিছু নয়, কোরান হাদিস জানা

ইসলাম মানে পীর, নেতা নয়, কোরান হাদিস মানা

২৫//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৬

হায়রে মানুষ 

হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস

কিসের বড়াই করো

সুপার পাওয়ার, বিশ্ব মোড়ল

তাই কি তুমি বড়ো?

 

তোমার আছে যুদ্ধের অস্ত্র

বিশাল সেনা দল

আছে তোমার অঢেল সম্পদ

এই কি তোমার বল?

 

যুবক বয়স, অঢেল শক্তি

মস্তবড় বীর

একবারও কি হয় না মনে

তুমি মুসাফির?

 

এক করোনা বলে গেল

বিশ্ব জুড়ে ভাই

ক্ষমতা তো আল্লাহ ছাড়া

কারো কাছে নাই

 

হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস

বড়াই করা ছাড়ো

গলা টিপে ঘৃণা বিদ্বেষ

অহংকারকে মারো

২৫//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৭

মরার এতো ভয় কেন

মরার এতো ভয় কেন

মরবা তুমি জানো না

তবে কেন খোদার ভয়ে

খোদার হুকুম মানো না

 

করোনা না আইলে তুমি

আল্লা আল্লা করতা

কিন্তু ঠিকই সময় হলে

বান্দা তুমি মরতা

 

জানোই যদি মরবা তুমি

খোদার পথে আসো

এক খোদাকে ভয় করো

তাকেই ভালোবাসো

 

করোনাকে ভয় কিসের

সে কি খেদার নয়

করোনার যে মালিক, বান্দা,

তারে করো ভয়

২৫//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৮

কঙ্কাবতী লঙ্কাবতী

কঙ্কাবতী লঙ্কাবতী পাহাড়ি দুই বোন

কই যাস তোরা, একটু দাঁড়া,

আমার কথা শোন

 

কি কহিবা কহ গো

সালামখানা লহ গো

 

কার মাথায় যে কটা চুল বলতে পারিস কেউ

গুণতে পারিস রাতের তারা,

মন সায়রের ঢেউ?

বল না পারিস কেউ?

 

ওরা শুধু হাসে।

বললাম ওরে, হাসিস না

ধরবে সর্বনাশে

 

সর্বনাশটা কিরে বাবু

কে আমাগো করবে কাবু?

কেমন করে মোগো সে পাবে তার পাশে?

 

মরণব্যাধি এলো ধরায়

নাম যে তাহার করোনা

সবাই লড়ে লড়ুক তাতে

তোরা কিন্তু লড়িস না

 

নারে বাবুক লায়

কইছে হামাক মায়

ভালোমন্দ খোদার হাতে,

তোরা ধোঁকায় পড়িস না

ভালো ছাড়া মন্দ কিছু নিজের হাতে ধরিস না

 

ঠিক বলেছিস বোন

আসল কথা শোন

সব ক্ষমতার মালিক আল্লাহ, করোনাও তাঁর

খোদার রহম পেলে আসরা চাইনা কিছু আর

২৫//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৮৯

শোনেন শোনেন ময়নার বাপ

শোনেন শোনেন ময়নার বাপ।

আফ্রিকাতে লাগলে আগুন

আপনার গায়ে লাগে তাপ

আপনি চিল্লান গযব গযব

খোদার অভিশাপ

 

টিভি খুলে আপনি দেখেন

ভূমিকম্প জাপানে

কিন্তু আপনার সময় কাটে

গরম গরম চা পানে

 

ইটালিতে মরলে মানুষ

আপনি বসে কাঁদেন

তিনবেলা যে গলায় ঢুকান

আপনি কি তা রাঁধেন?

 

আপনি কাঁদেন বসে বসে

আমার কাঁদার সময় কই

পোলা কবে বাড়ি আসবে

সে চিন্তাতে আমি রই

 

আপনি দেখেন বসে বসে,

কোথায় আসে পঙ্গপাল

মাঝে মাঝে হাঁক মারেন,

পান দিয়া যা রঙ্গলাল

 

আপনার কি ঠিক চাকরি গেছে?

অফিসে ক্যান যান না?

কী হইছে কন? খেতে দিলে

ঠিক মত ক্যান খান না

 

এই করো না, ওই করো না

হুকুমের তো শেষ নাই

আপনার মনে কিসের কষ্ট?

মুখে হাসির লেশ নাই?

 

ময়নার বাপে কয়

এই করোনা সেই করোনা নয়

এই করোনা খোদার গযব, চলছে বিশ্বময়

মরছে মানুষ দেশে দেশে

বিশ্ব আছে বন্দী বেশে

ঘরবন্দী আজ বিশ্বমানব,

কাঁদছে সকল জন

এই গযবে মন ভালো নেই, কাঁদে সকল মন

 

জান।

এই কারণে কষ্টে আছে আমার অবুঝ প্রাণ

কী হবে বল পদ পদবী, অঢেল সম্পদ, ধন

এই কারণে দুঃখে কাঁদে আমার ছোট্ট মন

 

বুঝলাম ময়নার বাপ

পৃথিবীর বিপদ আপদ সব

পাপের অভিশাপ

২৬//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯০

চুমকি দানা

চুমকি দানা চুমকি দানা

ঘটলো সেকি কান্ড খানা

বাড়ির কাছেই ছিল থানা

তবু এলো চোর

সময় ছিল ভোর

 

রুমকি মনির ভুল টুটেছে

বাগান ভরা ফুল ফুটেছে

শান্তা,জয়নব সব জুটেছে

করছে হুলুস্থুল

দেখছে ভোরের ফুল

 

ওর গায়ে লুটিয়ে পড়ে

কেউ থাকে না বদ্ধ ঘরে

ভোর বাতাসে পুষ্প নড়ে

ফুলকলিরা হাসে

চোরটা তখন আসে

 

শীতের চাদর চোরের গায়ে

সে তো আসে আলতো পায়ে

তাকায় এদিক ডাইনে বায়ে

আমরা তখন চুপ

দেখি চোরের রূপ

 

চোরটা কেমন চেনা চেনা

শালটাও তো নতুন কেনা

হাঁটছে যেন লাগছে হেনা

বলি, ওধার কৌন?’

ইদিকে আয়, শোন

 

চোরটা আরো কাছে আসে

হীম কুয়াশায় শরীর ভাসে

তার হাসিতে বাতাস হাসে

যে চির চেনা

আমার সখি হেনা

 

কোথায় গেল চোর?

এক নিমিষে চলে গেল

সবার মনের ঘোর

 

সব অনুমান ঠিক না।

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর

আকাশ কিন্তু লিক না

২৬//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯১

আমার একটা দেশ ছিল

দেশে সুখের রেশ ছিল

শান্তির পরিবেশ ছিল

তেমন একটা দেশ আবার আমি গড়তে চাই

যে দেশেতে থাকবে সুখে আমার সন্তানরাই

 

আমার একটা দেশ ছিল

মায়ের আদর বেশ ছিল

ঝগড়াঝাটির শেষ ছিল

তেমন একটা দেশ আবার আমি ফিরে চাই

যে দেশেতে দেশের মানুষ সুখে থাকবে ভাই

 

আমার একটা দেশ ছিল

স্নেহ মায়ার রেশ ছিল

মিল মোহাব্বত বেশ ছিল

তেমন একটা প্রেমে ভরা দেশ যে আমি চাই

যে দেশেতে শান্তি সুখের কোন অভাব নাই

 

আমার একটা দেশ ছিল

শাপলা শালুক বেশ ছিল

দেশে সুরের রেশ ছিল

সুরে সুরে আমরা মধুর আযান শোনতাম ভাই

গুরুজনে বলতো তখন, চল, নামাজে যাই

 

তেমন সুন্দর দেশটি আমি আবার ফিরে চাই

তেমন দেশের জন্য এসো, সবাই লড়ে যাই

এসো সবাই লড়ে যাই,এসো সবাই লড়ে যাই

২৬//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯২

ভালো মানুষ বন্দী করার ফলটা হলো শেষে

বিশ্ববাসী বন্দী হলো নিজের নিজের দেশে

আহা, নিজের নিজের দেশে

 

দেখা যায় না, এমন ছোট্ট গযব এসে ভাই

বলল মানুষ বিজলি চমক, এই আছে এই নাই

আহা, এই আছে এই নাই

 

করোনাতে বন্দী হলো, রাজা উজির প্রজা

বিশ্বটা যে জিন্দানখানা, বুঝুক সবাই মজা

আহা, বুঝুক সবাই মজা

 

দেশে দেশে আলেমদেরকে ধরে দিল ফাঁসি

তার বদলে পেল তারা লাশ যে রাশি রাশি

আহা, লাশ যে রাশি রাশি

 

করলো জুলুম, মারলো মুসলিম নারী এবং শিশু

বুঝলো না হায় একই স্রষ্টার সৃষ্টি আহমদ যিশু

আহা, সৃষ্টি আহমদ যিশু

 

তারা পেল লাশের সাথে আগুন,পঙ্গপাল

কর্মগুণে পেয়ে যাবে যার যা লাগে কাল

আহা, যার যা লাগে কাল

২৭//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৩

এক করোনার দাপট দেখে

বিশ্বভুবন ঠান্ডা

কোথায় গেল বিশ্বমোড়ল

অস্ত্রবাজ সব পান্ডা

 

বিশাল বিশাল অস্ত্রগুদাম

পাড়ছে বসে আন্ডা

থেমে গেছে স্বৈরাচারের

অবৈধ সব ডান্ডা

 

এটাইতো চাই দুঃশাসনের

ইতি ঘটুক বিশ্বে

দম ফেলাবার সুযোগ পাক

গরীব দুঃখী নিঃস্বে

 

নির্যাতীত বান্দার ওপর

রহম করো প্রভু

যদিও আমরা পাপী বান্দা

রহম করো তবু

২৭//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৪

জাহাজ যখন ঝড়ে পড়ে

খুব তো আল্লাহ ডাকো

ঝড়টা যদি যায় চলে

আল্লাহ কোথায় রাখো?

 

বাড়ি ফিরে খুব সহজে

পরের হকটা মারো

মানুষ বলেই হয়তো তুমি

এতকিছু পারো

 

পরের জিনিস নিজের করো

সুদ ঘুষ সব খাও

দুনম্বরি টাকা দিয়ে

হজ্জেও তো যাও

 

ভাবো তুমি আল্লাহরেতো

ভালোই দিলা ফাঁকি

বেহেস্ত যাবে জিকির করে

আল্লাহ আল্লাহ ডাকি

 

হায়রে নাদান মুসলমান

কই পেলিরে এই ঈমান?

২৭//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৫

তুমি যতোই স্বাধীন হও,

করোনা তো স্বাধীন নয়

তারতো ঠিকই রবের হুকুম

পুরোপুরি মানতে হয়

 

তুমি স্বাধীন হারিয়ে গেছে

তোমার মনের ভয়

তার ভেতরে বিরাজ করে

নিত্য খোদার ভয়

 

যার হুকুমে এলেম ধরায়

তাঁর হুকুমে যাবো

করোনাকে তবে কেনো

অযথা ভয় পাবো?

 

খোদা যদি না চায় তবে

করোনা কি করবে

তার কি কোন সাধ্য আছে

আমায় এসে ধরবে?

২৭//২০২০; ১১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৬

লাভলুঃ হ্যালো, বাবলু আছে, বাবলু?

বাবলুর মাঃ হ্যালো, কেমন আছো, লাভলু?

লাভলুঃ ভালো চাচী, ভালো

আপনারা তো ভালো?

বাবলুর মাঃ হ্যাঁ, বাবু নাও, দিচ্ছি

কথা কও দুই পিচ্ছি

বাবলুঃ   লাভলু আছিস ভালো?

মন খুশি না, কালো?

লাভলুঃ   দারুণ খুশি ভাই

খুশির সীমা নাই

এমন আজব ঘটনা

আরতো দেখি নাই

বাবলুঃ  মনে হচ্ছে দারুণ কিছু?

তুইও যাবি মোগাদিসু?

লাভলুঃ  আরে না না, ওসব না

নাম নাকি তার করোনা

যেই না তিনি আইলেন

বাবা ছুটি পাইলেন

ঘরের বাইরে যাননা তিনি

সারাদিন তার গল্প শুনি

চলে দারুণ আড্ডা

নতুন বাসা? বাড্ডা

বাবলুঃ   আরে রাখ রাখ, বলিস কি?

তার মানে তুই পড়িস না

বইখাতা আর ধরিস না

কুস্তি লড়াই করিস না

রাঙা ঘোড়ায় চড়িস না

লাভলুঃ  ওসব করার সময় কই

কোথায় খাতা, কোথায় বই

আড্ডাবাজি সারাটা দিন

কেউ বলে না ভাড়াটা দিন

চলছে ঘরে ঘরভোজন

মজার রান্নার আয়োজন

বাবলুঃ  আমারও ভাই ইসকুল নাই

বাবার কোন দিসকুল নাই

বাপে বেটাতে ডিশ চালাই

চান্সে মায়ের ফিশ চালাই

এমনতো আর দেখি নাই

চলছে দেশে একি ভাই

লাভলুঃ  ধন্যবাদ ভাই করোনা

এলে যখন নড়ো না

আরো কয়দিন থেকে যাও

কার কি স্বভাব দেখে যাও

ওরে বাবা, কতো খাও?

মানুষ রেখে শয়তান খাও

২৭//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৭

পরীবানু

রাজা মিয়া রিকসা চালায়

বাদশাহ বেঁচে পান

গদীর ওপর বসে থাকে

আম্বর আলী খান

 

গরীব নেওয়াজ ওরস করে

গরু সারি সারি

ডেগের ভেতর ঢুকে পড়ে,

ওটাই ওদের বাড়ি

 

তালুকদারে ভালুক নিয়ে

খেলা দেখায় বাজারে

তানপুরাটা নিয়ে তানসেন

সঙ্গীত শোনায় রাজারে

 

পরীবানুর পা নাই তাই

লেংড়া পরী হয়

নামে কি আর থাকে বলো

সবার পরিচঢ?

২৮//২০২০; ১১০টা

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৮

গুজব ও সত্য

গুজবে কেউ কান দিও না, গুজব বড় পাজি

আমরা ছিলাম বর-কনে, গুজব ছিল কাজি

সাক্ষী ছিল দিল্লী ফেরত জাহাজি এক হাজি

সাক্ষী বলে, মেয়ের মায়ে বলছে সেও রাজি

 

কাজি বলে, বাজান এবার ধরো বিবির হাত

আমি দেখি,ওড়না ঢাকা হাতটা নারীর জাত

 

পালকি যখন চড়ি

হাতটা তখন ধরি

বলি শোন, ঘোমটা খোল দেখি তোমার আঁখি

অমা একি,মেয়ে কোথায়? এযে মেয়ের কাকি!

 

তারপরে যা হয়

সাক্ষী হেসে কয়

মেয়ে রাজি বলিনি তো, রাজি মেয়ের মায়

তাইতো মেয়ের কাকি এখন শ্বশুরবাড়ি যায়

 

সবাই বলে, কও কি তুমিতাই কি কভু হয়!

ক্যান হবে না? সত্য কি আজ জেলে বন্দী নয়?

সত্য যদি বন্দী থাকে গুজব বেড়ায় ঘুরে

গুজব তখন রাজ্য চালায়, সত্য অন্তপুরে

২৮//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫৯৯

ফুলবাগানে বানর শিশু যখন খেলা করে

আমার শিশু ঘুমায় তখন খিলি এঁটে ঘরে

 

ভোরবিহানে কিচিরমিচির প্রভুর গুণ গায় পাখি

আমার সন্তান আমি তখন লেপে ঢেকে রাখি

 

ভোর বাতাসে গোসল করে সকল প্রাণী খোশে

তোর ছেলেটা যায় না পথে, শুধু স্বপ্ন পোষে

 

ফুলকলিরা আলসে ঝেড়ে চক্ষু খুলে চায়

মানব শিশু ঘরে বসেই চিড়ার নাড়ু খায়

 

চাঁদ চলে যায় খেলা শেষে একা আপন ঘরে

মানব শিশু খেলা শেষে এত কি আড্ডা করে?

 

মৌমাছিরা চৌগাছি যায় কিসের আশায় রোজ

তোর ছেলেরা এতো অলস, রাখেনা তার খোঁজ

 

খোদার হুকুম কোরান তারা খুলে পড়ে না।

পাহাড় কেন অটল থাকে, ডাকলে নড়ে না

 

এসব কথা জানার সময় যাদের নাকি নাই

কেমনে ওরা ভুবন জয়ী মানুষ হবে ভাই

২৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৬০০

বুদ্ধির বাজার আসেন সবে

যার যা খুশি লিয়ে যান

দাম লিয়ে কোই ভাববে না

যার যা খুশি দিয়ে যান

 

বিখ্যাত কেউ হতে চান?

শরম খুলে রেখে যান

রুগী এলে ভাববেন না

আদর করে দেখে যান

 

নইলে যান হোন, পাপিয়া

মনের খবর মনে রাখুন

শক্ত করে চাপিয়া

দেখুন তখন কদলি বৃক্ষ

বটগাছ হচ্ছে লাফিয়া

 

সময় মত ঢাকনা খুললে

সবাই যাবে কাঁপিয়া

রাঘব বোয়াল মারা যাবে

চিন্তাতে পেট ফাঁপিয়া

 

মন্ত্রী এমপি থাকবে খোঁপায়

প্রশাসনটা থাকবে চোপায়

কম্পিউটারের হিডেন ঘরে

বুদ্ধি থাকবে ঢাকিয়া

সবাই তখন ফেলবে নিঃশ্বাস

দেখে তোর লাকিয়া

বুঝলি কিছু জাকিয়া?

 

পতিতারা কোটিপতি, কেটিপতি নিঃস্ব

তুই- হবি সম্রাজ্ঞী, দেখবে সারা বিশ্ব

২৯//২০২০; ৫টা

No comments

Powered by Blogger.