আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২৭০১-২৮০০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০১

কাঁচা আমের ভর্তা

কালবোশেখীর এলো ঝড়

উড়লো পাতা, শুকনো খড়

ওড়ে গেলো গুমোট তাপ

উড়লো কিছু জাতির পাপ

 

কালবোশেখীর ঝড় এলো

ঘরে নতুন বর এলো

কন্যা টোকায় কাঁচা আম

জামাই বলে ভর্তা খাম

 

জিভে নতুন জল এলো

গায়ে নতুন বল এলো

জামাই বলে ভর্তা কই?

লবন মরিচ মেখে লই

 

জামাই মেয়ে ভর্তা খায়

সঙ্গে বাড়ির কর্তা খায়

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০২

কালবোশেখী আয়

কালবোশেখী আয় নারে তুই

চড়ে মেঘের নায়

দেখ না খুঁজে কোথায় কারা

আজো হারাম খায়

 

কারা হয় রে স্বৈরাচারী

পাপের রাজা রানী

সমাজটাকে কারা নেয় রে

জাহান্নামে টানি

 

কই গেলিরে কালবৈশাখী

আয় না ছুটে ঝড়

তুই এসে ভাই শক্ত করে

পাপের লাগাম ধর

 

মন্দ যতো নে উড়িয়ে

শুকনো পাতার মতো

হোক না আবার ধরণী

খোদার কাছে নত

 

আয় না ওরে কালবৈশাখী

চড়ে মেঘের নায়

তুই এলে যে ধরণী

নতুন জীবন পায়

//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৩

রোজা আসে চলে যায়

রোজা আসে চলে যায়

রোজা এসে বলে যায়

ওরে মুমীন মুসলমান তুই পাপ করিস না

অন্য কাউকে ঠকিয়ে তুই লাভ করিস না

 

এতীমের মাল ধরিস না

লোভেন জালে পড়িস না

মুমীন তুই খাঁটি মুসলিম না হয়ে মরিস না

 

তওবা করে পূণ্য কর

মন্দ দূরের জন্য লড়

কোরান হাদীস আঁকড়ে ধর, কভু ছাড়িস না

দুর্বল জনকে মাফ করে দে, তাকে মারিস না

 

রোজায় বেশী এবাদত কর

দানশীল এক সমাজ গড়

মহব্বতে পরাণ ভর, জুলুম করিস না

গোপনে পাপ করে তুই, ধরা পড়িস না

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৪

হায়রে মানুষ

হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস

সুঁই ছোয়ালে ঠুস

তবু নিজের স্বার্থ চিন্তায়

সবাই কি বেহুঁশ

 

ভুলে যায় যে মরবে সেও

পরের মরণ ভাবে

কিন্তু সে কি জানে কখন

মরণ ছোবল খাবে?

 

হায়রে মানুষ হায়

পাগলের সুখ মনে মনে

বইসা কলা খায়

১০//২০২০; বিকাল ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৫

বাতাসেও পাপ

আসা যাওয়া জগতের চিরায়ত রীতি

তোমাদের কথা তবু মনে জাগে নিতি

সকলি বিলয় হবে

প্রভু দয়াময়

আমাদের প্রতি তুমি

হওগো সদয়

গুণাখাতা মাফ করো ওগো মহীয়ান

চলে গেল যারা তাদের দাও পরিত্রাণ

 

তোমার বিধান এমন থাকবে না কেউ

পথের ফকির আর মহারাজা, সেও

তবু লোভ এসে দেখো

করে হাসাহাসি

যার ফলে বাতাসেও

পাপ রাশিরাশি

ওগো তুমি মাফ করো, প্রভু দয়াময়

আমাদের প্রতি মালিক হওগো সদয়

১০//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৬

পাপ ছেড়ে সুখ নাও

চীন।

মসজিদে তালা দেয়া

ছিল এতদিন

 

করোনাকে ভয় পেয়ে

খুলে দিল তালা

কমে গেল মৃত্যুর

বিভীষিকা, জ্বালা

 

দলে দলে ইসলামে

ঢুকে গেল চীনা

কমে গেল সেই দেশে

ব্যভিচার, জ্বিনা

 

যতো পাপ ছাড়লো

ততো সুখ বাড়লো

১০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৭

ফ্রান্সে হিজাব

ফ্রান্সে ছিল হিজাব বারণ

করোনা বললো, চলবে

বরফ যতো শক্তই হোক

তাপ পেলে সে গলবে

 

ফ্রান্স বললো, ঠিক, ঠিক, ঠিক

হিজাব এখন বারণ নাই

মুসলিম মানবে পর্দাপ্রথা

নিষেধের তো কারণ নাই

 

ছেড়ে দেবো পাপ গো খোদা

গযব তুলে নাও

ভুল বুঝেছি আরেকটিবার

বাঁচার সুযোগ দাও

 

নেংটা দেশে মুখ ঢাকবার

নামলো একি ঢল

এখানেও কি তবে ইসলাম

ফিরে এলো বল?

১১//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৮

জার্মানে হার মানে

জার্মানে

হার মানে

করোনার কাছে

 

করোনা তো

দেখি না

তবু সে তো আছ

 

আল্লাহ যে আছে মামা তাতে ভুল নাই

আকাশেরও কুল আছে, কার কুল নাই?

 

আযানের

নিষেধাজ্ঞা

উঠে গেল তাই

কে বলে

জার্মানে

ইসলাম নাই?

 

পৃথিবীটা সাফ করে সূর্যের তাপ

করোনাটা সাফ করে চেপে রাখা পাপ

১১//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭০৯

আমার ভাষা

আমার ভাষা বাংলা ভাষা

আমার মায়ের স্বপ্ন আশা

কচি মুখের কান্না হাসা

এই ভাষাতেই কথা বলে

আমার দেশের শ্রমিক চাষা

 

আমার ভাষা বাংলা ভাষা

মিটাই এতে প্রেম পিপানা

এর বুলিতেই মধু ঠাসা

এই ভাষাতে তাড়াই আমরা

সকল বিপদ সর্বনাশা

 

বাংলা ভাষা প্রাণের ভাষা

দিঘীর জলের পদ্ম ভাসা

মিটে এতে প্রাণ পিপাসা

এই ভাষাতেই লেপ্টে থাকে

আমার মনের ভালবাসা

১১//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১০

বড় লোকের বেটি

বড় লোকের বেটি

দেহ করলি ফেটি

মনটা কেন রয়ে গেল

পুটি মাছের পেটি?

 

দেহ বড় করার আগে

মনটা বড় কর

মানুষ সবাই মানুষই হয়

কেবা আপন পর

 

আপন লোকে ব্যথা দেয়

কষ্টও দেয় মনে

আপন লোকের ব্যথায় মন

কান্দে ক্ষণে ক্ষণে

 

পর যদি হয় মনের আপন

পর হয়ে যায় বর

পরের সাথেই সারা জীবন

তাইতো করিস ঘর

 

বড় লোকের বেটি

মনটারে কর পদ্মপুকুর

সেই পুকুরে ডুবে সবাই

করুক লুটোপুটি

 

বড় লোকের বেটি

সে কিরে বল থাকতে পারে

জলের চুনোপুটি?

১১//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১১

স্পেনে ফের

অনেক মসজিদ গীর্জা হইছে

বাকিগুলোয় তালা

ছয়শো বছর স্পেনে

সইছে মুমীন জ্বালা

 

আযান বন্ধ জামাত বন্ধ

বন্ধ মসজিদ ঘর

ধিকিধিকি মুসলমানে

সইছে নিরন্তর

 

করোনা যেই এলো ধরায়

পাল্টে গেলো সব

খুললো মসজিদ, মাইকে আযান

আহ কী মধুর রব

 

স্পেন জুড়ে মুসলিম শাসন

হয়তো আসে নাই

স্পেনে ফের উঠলো জ্বলে

কোরআনী রোশনাই

১২//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১২

আমেরিকা কাত

দেখেন তেলেসমাত দাদা

দেখেন তেলেসমাত

এক করোনার ঠেলায় দেখেন

আমেরিকা কাত

 

যে চায় দিতে মুসলিম বিশ্বে

অবিরত রাত

সেই আমরিকার সংসদে হয়

কোরান তেলওয়াত

 

দেখেন তেলেসমাত দাদা

দেখেন তেলেসমাত

এক জীবানুর ঠেলায় দেখেন

আমেরিকা কাত

 

পারমানবিক বোমা কান্দে

মিসাইল কান্দে বাইরে

বিশ্ব মোড়ল কান্দে কাওলা

কস না কোথায় যাই রে

 

খোদার বিশ্ব ছাড়া ভাই

আরতো কোন জায়গা নাই

১২//২০২০; ভোর ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১৩

চলে যাবে করো না

করোনা গেলো রাশিয়া

গিয়েই দিলো হাসিয়া

 

সে শোনে কোরান দিনরাত

ধর্মরে যে আফিম কয়

তার মানে তো তাদের মনে

ঢুকে গেছে খোদার ভয়

 

মস্কোতে আজ ভেসে বেড়ায়

আল কোরানের সুর

লেলিনগ্রাদে ঝলসে ওঠে

আবার হেরার নূর

 

কি করোনা আইলো ধরায়

নাস্তিকগুলো আস্তিক হয

করোনার তো এটাই দাবী

মানুষ যেনো মানুষ হয

 

চলে যাবে করোনা

ইসলাম আঁকড়ে ধরো না

১২//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১৪

করোনা গেল ইতালি

করোনা গেল ইতালি

ভাবলো করবে মিতালি

 

গিয়ে দেখে মহানবীর

ব্যঙ্গ ছবি গীর্জায়

বান্দররা সব গাছে বসে

মজা করে ক্ষীর খায়

 

ক্ষেপে গেলো করোনা

বললো, কেউ আর নড়ো না

করলো শুরু মহা মার

মারে ছিল সবুজ সার

 

ভাঙলো মানুষ হাতের কাপ

বুঝলো এটা অভিশাপ

করোনা খায় টাটকা জান

করবি নবীর অপমান?

 

মাফ চেয়ে লোক দলে দলে

আসলো ওরা কোরান তলে

১২//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া -২৭১৫

ঢাকার মেয়র

ঢাকার মেয়র, পাকা ভীষণ, চাকা আছে পায়

চাকা আছে দুই মেয়রের পালতোলা দুই নায়

 

কেউ জানে না মেয়র দুজন রাতে কোথায় থাকে

দিনের বেলা দিচ্ছে সাড়া কোন পাপিয়ার ডাকে

 

ঢাকার মেয়র ঢাকা থাকে কখন যে কার চাদরে

মানুষ দূরে, তাদের খুঁজে পায় না কোন বাঁদরে

 

ঢাকার মেয়র ঢাকা

কোন খাঁচাতে কাকা?

বলতে যদি পারো পাবে তিরিশটা আম পাকা

আরো পাবে লম্বাটে বাঁশ, সবই কিন্তু বাঁকা

 

ঢাকার মেয়র ঢাকা

কোন পাতিলে কাকা?

লকডাউনের এই আকালে কই গো তারা কাকা?

কই গেল সে রিলিফ সেবা, কই সে দানের টাকা

 

রাস্তাগুলো ফাঁকা

ওপর দিকে তাকা

বিলবোর্ডে দেখ কাদের ছবি হাসছে আঁকাবাঁকা?

ছবিগুলোই বলছে ডেকে, সাহায্য দেন কাকা

 

চেয়ারম্যান হয় চাল চোরা আর মেম্বাররাও তাই

মেয়রগুলো কি চোরা হয়, বলতে পারেন ভাই?

 

আকাশ দেখি, বৃষ্টি দেখি, মেয়র দেখি না রে

মেয়ররা আজ ব্যস্ত কিসে, কে বলতে তা পারে?

১৩//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১৬

ঢাকার মেয়র ঢাকা

ঢাকার মেয়র

ঢাইকা গেছে

ভুয়া ভোটের ধাক্কায়

 

মার্সিডিসটা

বইসা গেছে

গযব লেগে চাক্কায়

 

তাই নামেনি

রিলিফ নিয়ে

মিছামিছি কাক্কায়

 

মরলে মরুক

বাঁচলে বাচুক

ভুয়া ভোটার ঢাক্কায়

 

আইন মেনেছি

ফাইন দিয়েছি

ঠোলাদেরকে টাক্কায়

 

কিসের জন্য

মরবো আমি

ভেজাল দেয়া পাক্কায়?

 

ঢাকার মেয়র

ঢাকায় এখন

ওরাতো কেউ নাইক্কা

 

ধোলাই খালে

মারছে পুটি

গামছা দিয়া ছাইক্কা

১৪//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১৭

পাঠক লেখক

লাইক কমেন্ট বাদ দিন

শেয়ার করায় হাত দিন

 

আপনি পড়ে মজা পাইছেন

বন্ধু একটু পাক না

বোশেখ মাসে কাঁচা আমের

ভর্তা সবাই খাক না

 

বন্ধু একটু খুশি হইলো

তাতে বলেন ক্ষতি কি

লেখকেরও নাম ছড়ালো

হয়নি তাতে গতি কি?

 

যদি কিছু জানতে চান

স্পষ্ট করে বলে যান

তেল মারাটা বাদ দিন

সপ্তায় মোটে সাত দিন

 

ইচ্ছা করলে পড়বেন

না পড়ে ক্যান বলবেন?

এইটা একটা ভাল কাজ

পাঠক মানে, মহারাজ

 

পাঠক লেখক হাত দাও

ঝগড়াঝাটি বাদ দাও

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১৮

যায়

যায়।

যে আসে সে যায়

সকলেই চলে যায়

কেউ থাকে না ধরায়

 

থাকে না নদী।

থাকে না গদী

 

নদী যায় নদী আসে

চাঁদ যায় চাঁদ হাসে

 

যে যায় সে আসে না ফিরে

ঢেউ এসে মিশে যায় নদীর তীরে

 

যায় যায় সব যায়

থাকে নাতো কব্জায়

 

ভালবাসা তবু শুধু বাঁধতেই চায়।

দিনে দিনে সেই প্রেম তবু চলে যায়

 

সকলেই চলে যায়, যান না তিনি

তুমি আমি সকলের স্রষ্টা যিনি

১৮//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭১৯

চাটে নাকি হাঁটে

খেজুর গাছে ঝাকা দিলে

যদি দেখো জাম পড়ে

বুঝে নিও লোক তবে

ঝাকাঝাঁকির কাম করে

 

লোকটার বাড়ি রামগড়ে

কাম করলেই ঘাম ঝরে

হাটের মাঝে কচু দেখলে

মিছামিছি দাম করে

 

যদি জিগাও, কেমন ভাই?

বলবে, আমি বাড়ি নাই

গিন্নি বলছে কচু কিনতে

সরো দাদা, হাটে যাই

 

সেও নাকি হাঁটে

মনিবের পা চাটে

চাটলে নাকি থাকা যায়

অনেক বেশি ডাটে

১৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২০

করোনায় ঈদ

ধনীদের বালাখানা, গরীবের ঘর

সবখানে ঈদ গেল, বলে, ধর ধর

 

এনেছি খুশির ডালি

চকচকে চাঁদ ফালি

খুশিতে উঠুক হেসে সব অন্তর

 

ইশারাতে কোলাকুলি

নেটে নেটে ঘুরি

দেখি সব ঠোঁটে ঠোঁটে

খুশি ভুরি ভুরি

 

একফালি বাঁকা চাঁদ

ঠোঁটে ঠোঁটে ভাসে

ছেলেবুড়ো সকলেই

প্রাণ খুলে হাসে

 

ঈদে হৃদে হৃদে হোক কোলাকুলি

থেমে যাক দুনিয়ার সব গোলাগুলি

দুনিয়াটা হোক ফের ভালোবাসাময়

ঘরে ঘরে প্রেম যেন বাসা বেঁধে রয়

২৪//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২১

রোজার দিনে

প্রভু,

এমন রোজা আবার তুমি দাও না দেখিবার

যেই রোজাতে হয় না পরের দাপট সহিবার

কাড়ি কাড়ি ইফতারি নেয় বড়লোকে কিনে

হোটেলগুলোয় অপচয়ের বন্যা বহে দিনে

 

প্রভু

রোজা হলো সংযমের মাস, সংযম গেল কই

রোজা এলে আমরা দেখি ভোগেই ডুবে রই

নানা রকম ইফতারিতে উৎসব উৎসব ভাব

সে রোজাতে হয় কি প্রভু আমার কোন লাভ

 

প্রভু

রোজা হচ্ছে গরীবদুখীর দুঃখকষ্ট বুঝার দিন

রোজা হচ্ছে দানেধ্যানে মগ্ন সবার থাকার দিন

রোজার দিনে বেশী করে রিপু দমন করতে হয়

রোজার দিনে বীরের মত সাহস নিয়ে লড়তে হয়

 

রোজার দিনে কোরান পড়ে  ঈমান তাজা করতে হয়।

রোজার দিনে সারা গায়ে তাকওয়ার ড্রেস পড়তে হয

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২২

মনের পশু কোরবানী দাও

মনের পশু কোরবানী দাও, বনের পশু নয়

মনের ভেতর লালন করো আল্লাতালার ভয়

মন্দটাকে কোরবানী দাও, ভালোটাকে রাখো

বিশ্বটাকে ভালো রাখো, নিজে ভালো থাকো

 

সৃষ্টির সেরা মানব তুমি, দানব তো আর নও

মন্দ কাজে জড়ানো কি তোমার সাজে কও,

মনের ভেতর ভালো কিছু করার স্বপ্ন আঁকো

যার উছিলায় এলে ধরায তারে সদা ডাকো

 

যাও ভুলে সব ভেদাভেদ যাও না ভুলে ক্ষোভ

মনের থেকে হিংসা বিভেদ দাও তাড়িয়ে লোভ

অহংকারের দানবটাকে সবাই সামলে রাখো

স্নেহ প্রীতির পরাগ তুমি নিজের অঙ্গে মাখো

 

মনের পশু কোরবানী দাও, বনের পশু নয়

মনের ভেতর লালন করো আল্লাতালার ভয়

২৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৩

ইচ্ছে করলেই যায় না লেখা

ইচ্ছে করলেই যায় না লেখা

যদি খোদা না দেন

মায়ের দুধ সন্তান পায় না

যদি না তিনি কাঁদেন

 

তালেবানে লড়াই করে

সবাই হয় না লাদেন

ডিমের থেকে বাচ্চা হয় না

যদি না তাতে তা দেন

 

হাতির পোলা দুপুর বেলা

কয় না একটু চা দেন

যে যেতে চায় এগিয়ে তার

সামনে কেন পা দেন?

৩১//২০২০; ভোর ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৪

হায় পলাশী হায়

হায় পলাশী হায়, হায় পলাশী হায়

তুই এলে যে স্বাধীনতা পরের হাতে যায়

স্বাধীন জাতি উদাস হয়ে শিকল পরে পায়

হায় পলাশী হায়, হায় পলাশী হায়

 

স্বাধীন মানুষ কবে কে রে গোলাম হতে চায়

দুধ কলাতে পুষলেও সাপ ছোবল হানে হায়

মিরজাফরের মুখের শপথ ময়দানে লুটায়

হায় পলাশী হায়, হায় পলাশী হায়

 

দেশপ্রেমিকের রক্তে ভাসে পলাশীর প্রান্তর

গোলামী কি, মুখের কথায় বুঝে না অন্তর

গোলামী কি টের পায় যখন নিজে ছোবল খায়

হায় পলাশী হায়, হায় পলাশী হায়

 

হায় পলাশী হায়, হায় পলাশী হায়

স্বাধীনতার সূর্যটা দেখ আবার ডুবে যায়

মরা জাতির স্বাধীনতা চিল শকুনে খায়

স্বাধীনতা রাখতে হলে রক্ত দিবি, আয়

//২০২০; রাত সাড়ে ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৫

আর নয় পলাশী

আর নয় পলাশী, আর নয় আম্রকানন

জাগো জাগো মুুজাহিদ, বীর জনগণ

মারো হাঁক হায়দরী, কাঁপুক জাহান

পৃথিবীর হাল ধরো, জাগো ইনসান

 

আল্লাহু আকবার, বলো আল্লাহু আকবার

এসো ভাই শত্রুর বিষদাঁত করি চুরমার

 

জাগো জাগো মা বোনেরা, চাঁদ সুলতানা

রুখে দাও বিদেশীদের অযাচিত হানা

এসো এসো জনগণ, হাতে রাখো হাত

রুখে দাও মীরজাফর, শেঠ, উমিচাঁদ

 

আল্লাহু আকবার, বলো আল্লাহু আকবার

এসো ভাই শত্রুর বিষদাঁত করি চুরমার

 

এই দেশ আমাদের, আমাদেরই থাকবে

আমাদের সন্তান আমাদের সম্মান রাখবে

নির্ভয়ে জনগণ নিজ নিজ স্রষ্টাকে ডাকবে

ছুটে আয়,আয় ছুটে, দেখ ডাকে ময়দান

 

আল্লাহু আকবার, বলো আল্লাহু আকবার

এসো ভাই শত্রুর বিষদাঁত করি চুরমার

 

আর নয় পলাশী, আর নয় আম্রকানন

জাগো জাগো মুুজাহিদ, বীর জনগণ

মারো হাঁক হায়দরী, কাঁপুক জাহান

পৃথিবীর হাল ধরো, জাগো ইনসান

//২০২০; ভোর ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৬

পাখির মতো

পাখির মত আমিও ছিলাম স্বাধীন

আমিও পাখির মত গান গাইতাম

পাখির মত আমিও তো একদিন

জনপদে জনপদে ছুটে যাইতাম

 

কই সে স্বাধীনতা, কই গেল, কই

কার ভয়ে আমি আজ চুপ করে রই?

আমার সে স্বাধীনতা কে করেছে খুন

কি কারণে হৃদয়ে জ্বলছে আগুন?

এইসব কথা আহা যদি জানিতাম

না হয় আমিও কোন পাখি হইতাম

 

স্বাধীনতা বন্দী কেন শুধু সংবিধানে

স্বাধীনতা নাই কেন মানুষের মনে

পাখির মত যদি স্বাধীন হতে পারিতাম

তবে যে প্রেমের বাণী বুকে লইতাম

 

মানুষ না হয়ে যদি পাখি হইতাম

জনপদ ছেড়ে তবে বনে যাইতাম

আমিও ফুলের মত সুখে হাসিতাম

প্রকৃতির রূপরস ভালবাসিতাম

 

মানুষের কারাগারে আজ আমি বন্দী

কি করে মানুষ মানুষের হয় প্রতিদ্বন্দ্বী?

মানুষ কি তবে আজ পাখিরও অধম

কে দেবে জবাব মানুষ, নাকি নরাধম?

 

এতসব কথা যদি জানতে পারিতাম

তোমারে মেনে তবে স্বাধীনই হইতাম

//২০২০; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৭

অ পাখিরে------

পাখিরে------

পাখিরে তুই যাচ্ছিস ওড়ে

ডাল থেকে ডালে

তোর মতোই স্বাধীন ছিলাম

আমিও যে এক কালে

তোরই মতো আমিও গাইতাম গান

দুই বন্ধুতে মিলে দিতাম পবিত্র আজান

 

সুরে সুরে বলতাম আমরা

তুমি যে মহান ওগো

তুমিই মেহেরবান

তোমার গড়া সাগর, নদী, বিশ্ব জাহান

পৃথিবীর সবই প্রভু তোমার দয়ার দান

 

কোথায় গেল সেই সে সুদিন, জোসনামাখা রাত

তুমি এখন স্বাধীন পাখি, আমি জেলে কাত

আজও তুমি মুক্ত পাখি, গাইছো সুখে গান

আমি এখন বন্দী পাখি, কান্দে আমার প্রাণ

 

পাখিরে -------

পাখিরে আজ ভেবে দেখ তুই কত ভাগ্যবান

বন্দী পাখি যায় না উড়ে কোরানের ময়দান

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৮

করোনারে যাইতে দাও

পাপের পথে যাইও না, হারাম কিছু খাইও না

নিজের পুকুর না থাকলে পর পুকুরে নাইও না

করোনাতো পাপের গন্ধ বাতাস থেকে পায়

এসি রুমে পালাও যদি সেখানেও সে যায়

 

পাপ ছেড়ে দাও করোনারে যেতে দাওরে ভাই

পাপ না ছাড়লে এর থেকে যে বাঁচার উপায় নাই

 

হারাম কিছু ধইরো না, পাপের গর্তে পইড়ো না

মরণ কবে না জানলে ফাটে পইড়া মইরো না

করোনাতো মারার হুকুম আকাশ থেকে পায়

সাদা কালো ধনী গরীব সবারেই সে খায়

 

পাপ ছেড়ে দাও করোনারে যেতে দাওরে ভাই

পাপ না ছাড়লে এর থেকে যে বাঁচার উপায় নাই

 

পাপের নায়ে চইড়ো না, ঘুষের টাকা ধইরো না

সুদের টাকা সবটাই হারাম সুদি কারবার কইরো না

করোনারতো বাছবিচার নাই, মানুষ হলেই খায়

এক মূহুর্তে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যায়

 

পাপ ছেড়ে দাও করোনারে যেতে দাওরে ভাই

পাপ না ছাড়লে এর থেকে যে বাঁচার উপায় নাই

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭২৯

প্রেমকাব্য

আঁধার কালো, আঁধার কালো, কৃষ্ণ আঁধার রাত

সকল আঁধার যায় পালিয়ে ধরলে তোমার হাত

 

আমার বুকে তুমি তখন সূর্য হয়ে জ্বলো

ভয়গুলো হয় সাহস যখন ভালবাসি বলো

 

তুমি সূর্য, আমি চন্দ্র, সন্তান তারার দল

আমরা বিলাই বিশ্ব জুড়ে অথৈ প্রেমের ঢল

 

এই দুনিয়া জান্নাতই হয় থাকলে মনের মিল

কেউ না জানুক এটা জানে তোমার আমার দীল

 

দুনিয়াটা বেহেশতখানা, আমি তোমার হুর

বলতে পারো খোদার আরশ আর কতটা দূর

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩০

মামা

মামা

শরীর থেকে খুলে ফেলো

পাপের পুরাণ জামা

নয় করোনা এই দুনিয়া

করবে তামা তামা

 

মামা

সরাও তোমার হাতের ওটা

সহি শয়তান নামা

করোনা তো ভয় করে না

রবিনহুড বা গামা

 

মামা

এসি রুমে বসা আপনি

শরীর কেন ঘামা?

এসি রুমে কোন পথে

করোনা দেয় হামা?

 

মামা

করোনারে দেখায়া দেন

নয়া আমলনামা

কোন সাহসে বলে পারলে

আমারে তুই থামা?

 

মামা

সে দেখে নাই বদরুলরে

কোপা শামসু ফেল

চলেন এবার করোনারে

দেখাই লীগের খেল

 

মামা

আপনি একটা মিনিস্টার

বুঝুক বদের ছাও

আপনি বল্লে ভেঙে ফেলি

করোনার দুই পাও

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩১

হালাল কে যে হারাম করে

হালাল কে যে হারাম করে

হারাম করে হালাল

কে বলে রে দরবেশ তিনি

সে শয়তানের দালাল

 

কোরান পড়ো, হাদিস পড়ো

সে মোতাবেক জীবন গড়ো

 

যে মানে না কোরান হাদিস

মুসলিম তারে কয় না

দাগাবাজরা ভন্ডই থাকে

মুসলিম কভু হয় না

 

মুসলিম যদি হতে চাও

বেদাত করা ছেড়ে দাও

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩২

চুপ তো আছি কই না কথা

চুপ তো আছি কই না কথা

কখনো কি কইছি

টন কে টন চাল গায়েব

ভাগ কি আমি লইছি

 

রিলিফের মাল মামা খায়

মা সে চাল আনতে যায

এই কথা কি মুখ খুলে

কাউরে আমি কইছি?

 

মুখে কইছি বিয়া বমু

তাই কি বিয়া বইছি?

নাকি কারো পাকা ধান

লাঙল দিয়া চইছি?

 

দোষ করিনি তাই চোর

চোরেরা সব বাহাদুর

১৪//২০২০; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৩

তুমি করলে লীলাখেলা

তুমি করলে লীলাখেলা

আমি করলে পাপ

এই তরিকার কথা এবার

ছাড়েন সোনা বাপ

 

দুনিয়াটা খামারবাড়ি

পূণ্য করেন তাড়াতাড়ি

 

যাবেন যখন নিজের বাড়ি

সঙ্গে নিয়ে যান

নইলে দাদা চিন্তায় চিন্তায়

হবেন পেরেশান

 

সময় গেলে হয় না সাধন

লালন ফকির কয়

সময় থাকতে ঢুকাও মনে

আল্লাহতায়ালার ভয়

১৪//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৪

খাটের ওপর কানামাছি

খাটের ওপর কানামাছি

খাটের ওপর গোল্লাছুট

খাটের ওপর হল্লাচিল্লা

বাদাম খাওয়া কুটুরমুট

কুটুরমুট, কুটুরমুট, কুটুরমুট

 

খাটের ওপর বামুন বেটা

খাটের ওপর লিলিপুট

খাটের ওপর খেলনাগাড়ি

যাচ্ছে ছুটে হুটারহুট

হুটারহুট, হুটারহুট, হুটারহুট

 

খাটের ওপর লকডাউন

গা চুলকায় কুটারকুট

খাটের ওপর ছক্কাপাঞ্জা

গল্প বলা পুটুরপুট

পুটুরপুট,পুটুরপুট,পুটুরপুট

 

চলছে দেশে করোনা

মনজাহাজে চড়ো না

কল্পনায় যাই রাজারহাট

কল্পনাতেই বাজারঘাট

১৪//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৫

টাপুর টুপুর

টাপুর টুপুর  টুপ

টাপুর টুপুর  টুপ

ছোট্ট খুকি নাচ দেখাবে

চুপ সকলে চুপ

 

নাচের শেষে নাইতে যাবে

দেবে জলে ডুব

টাপুর টুপুর  টুপ

টাপুর টুপুর  টুপ

 

টাপুর টুপুর  টুপ

নাচের জন্য রাঙা বুড়ি

খুর সেজেছে, খুব

রূপে বুড়ি ঝলমল করে

কী যে অপরূপ

টাপুর টুপুর  টুপ

 

টাপুর টুপুর

পায়ে নূপুর

বুড়ি নাচে

সকাল দুপুর

ফুপুর বাড়ি যায়

পুকুর পাড়ে

সখির সাথে

মোয়া মুড়ি খায়

 

দুই সখি যায়

ফুপুর বাড়ি

নিতে আসে

গরুর গাড়ি

হালকা চালে চলে

তাই মরে না মানুষজন

গড়ির তলে পড়ে

 

ফুপুর বাড়ি রসুলপুর

আরো আছে বহুত দুর

১৫//২০২০; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৬

রিমঝিমঝিম বিষ্টি

রিমঝিমঝিম বিষ্টি

ঘরে আসবে ইষ্টি

আনবে সাথে মিষ্টি দই

দই খেতে চাও? পড়ো বই

 

বিশ্বটাকে জানতে হয়

ভুত নাই কেনো ভুতের ভয়?

এই আষাঢ়ে কাঁঠাল খাও

দলবেঁধে সব কোরাস গাও

 

ধানের ক্ষেতে বানের জল

আবার নামছে অঝোর ঢল

চল, ধরবো উজান কৈ

টেবিলে রাখ পড়ার বই

 

ইষ্টি খাবে মিষ্টি আম

খেয়ে নেবে আল্লাহর নাম

১৫//২০২০; ১০টা

বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৭

তাকেই ভালবাসতে হয়

নূপুর পরে দুপুর বেলা পুকুর ঘাটে যাসনে

ভিজে পথে আছাড় খেয়ে দীলে ব্যথা পাসনে

শিমুলতলা যাসনে

ডুমুর ফল খাসনে

যা লাগে চা খোদার কাছে, অন্যর কাছে চাসনে

 

দুনিয়ার সবই খোদার, তাঁরই কাছে চাইতে হয়

তার কাছ থেকে ভবে এসে তারই কাছে যাইতে হয়

তারই গুণ গাইতে হয়

তাঁরই দয়া পাইতে হয়

তার হুকুমেই জীবন তরী সঠিক পথে বাইতে হয়

 

পৃথিবী আমার নয়, তার হুকুমে আসতে হয়

তার হুকুমে আপন মনে নিজে নিজে হাসতে হয়

মন্দটাকে নাশতে হয়

ভালটাকে চাষতে হয়

যার সৃষ্টি দুনিয়া জাহান তাকেই ভালবাসতে হয়

১৫//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৮

রাঙাবুড়ি

ঘুড়ির মাঝে বুড়ি নাই, বুড়ি গেলো কই

লকডাউনে কই যে বুড়ি ঘুরে রে টই টই

 

কাল দুপুরে খাইছে ভাত, রাতে কিছু খায় নি

বুড়ির মার তিনটা সই, কেউতো চাঁদে যায়নি

 

গায়ে একটু জ্বর ছিল, বর ছিল না বুড়ির

বুড়ি একটু বেশি খায়, দোষ নাই তার চুরির

 

এই করোনায় পায়নি রিলিফ, তাইতে বুড়ি উপোসী

জোয়ানকালে বুড়ি ছিল চান্দের লাহান রূপসী

 

বুড়ি নাকি নিজে দেখছে, তেলের টিন পুকুরে

ফেলছে ছুঁড়ে চেয়ারম্যানের পোষা দুটো কুকুরে

 

সেই কথাটাই গল্পে গল্পে খুকুরে যেই কইছে

সেই রাতেই রাঙাবুড়ি গুমের শিকার হইছে

 

কে করেছে গুমরে তারে,করোনা, না মাইজি

বারে বারে সে কথাটাই জানতে চাচ্ছে ভাইজি

১৯//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৩৯

গ্রাম থেকে চল গাঁয়ে যাই

গ্রাম থেকে চল গাঁয়ে যাই

কলাপাতায় দাওয়াত খাই

বেগুনভাজি, ডালের বড়া

সবই ভাজা কড়া কড়া

 

গোস্ত ভাত, ডাল

পেট ভরে ভর গাল

মিডুরি খা নাক ডুবিয়ে

আরাম করে দাঁত চুবিয়ে

 

গুয়া খয়ের চুন পান

লাগলে আসেন খায়া যান

হপ্তায় হপ্তায় জিয়াফত

আগে খেতো কিয়ামত

২০//২০২০; ৮ঃ ০০ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪০

বিষ্টি আসে

বিষ্টি আসে রুম ঝুমাঝুম

নাচে ময়ুর, ফিঙে

বিষ্টিতে দেখ গোসল করে

কুমড়ো, শশা, ঝিঙে

 

কুমড়ো ফুলের হলুদ বাতি

ঝিলিক মারে জোস্না রাতি

 

বাগানের সব আনাজপাতি

সেই খুশিতে হাসে

সর্ষে ফুলের মধু খেতে

মধুপ্রেমিক আসে

 

বিষ্টি আসে রুম ঝুমাঝুম

আষাঢ় শাওন মাসে

বিষ্টি এলে খিলখিলিয়ে

মেঘলামতি হাসে

২২//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪১

ঋণের মুলা

আসেন আসেন দুলাভাই

সকাল বিকাল মুলা খাই

মুলার মাঝে ভিটামিন

আপনি একটা টিপা দিন

 

আপনার জমি বন্ধক রেখে

ঋণটা নিল মিলটন

ঋণের টাকায় কিনবে এখন

বাড়ি একখান হিলটন

 

বিদেশ থেকে কয় টাকা

ঋণ নিয়েছে সরকার

আপনার কত ঋণের বোঝা

জানা কি খুব দরকার?

 

ওসব জানার কাম নাই

আপনার কোন দাম নাই

২২//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪২

হিজল ফুল

হিজল ফুল হিজল ফুল

জাফরানি তোর রাঙা চুল

যায় না ধরা কি তুলতুল

দুদুল দুল দুদুল দুল

 

দুদুল দুল দুদুল দুল

হীরামতি হিজল ফুল

রাঙা চুলের বেনীতে

কবে ছিলি ফেনীতে?

 

চুলগুলো তোর কিশোরী

কন্যা কি তুই মিশোরী

রূপকুমারী রূপের ঘোর

পায়ের কাছে রাঙা ভোর

 

দুদুল দুল দুদুল দুল

হিজল ফুল হিজল ফুল

পানির তলে গাছের মূল

দুদুল দুল দুদুল দুল

 

আষাঢ়ে কন্যা

ধন্যা তুমি ধন্যা

২২//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪৩

জামের রস

কেউ দিয়েছে আম কাঁঠাল

কেউ দিয়েছে লিচু

মনটা আমার ঘুরে বেড়ায়

কালোজামের পিছু

 

কোকিল মিয়া উকিল হয়

টিয়ে করবে বিয়ে

জামের রসে হুমড়ি খায়

টিয়ের ঠোঁটে গিয়ে

 

টিয়ার সকল স্বজন আসে

হল্লা করে খায়

বুলবুলিরা জামের রস

মাখে তাদের গায়

 

জাম আনতে যে গিয়েছিল

ফিরে এসে কয়

জামের রস টিয়ার ঠোঁটে

কেমনে পরাণ সয়

 

জাম খাওয়া যে হল না

বুঝতো যদি ললনা

২২//২০২০; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪৪

বলে গেছে মুনিয়া

আম খাও জাম খাও

বিগ বস রাম খাও

শিশু হলে মাম খাও

নেতা হলে পাম খাও

 

এসে গেছে চোর মা

তারে দাও গোর মা

হুজুরের বউ এলে

তারে দাও কোরমা

 

খোরমাটা রেখে দাও

রমজানে লাগবে

আমি জানি ভোর হলে

সকলেই জাগবে

 

ভীরু বসে মার খায়

রাজপথ 'কার' খায়

ঘাম খায় কামলা

বিরোধীরা মামলা

 

যারা চায় শুইতে

তারে খাক উইঁতে

খেতে খেতে তাল সে

মারা যাক আলসে

 

ধরনীটা হয় তার

সাহসটা রয় যার

যারা যারা বীর

তোল তোল শির

 

বুঝে নাও দুনিয়া

বলে গেছে মুনিয়া

২৪//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ২৭৪৫

ভুলের ফুল

ভুল সর্বদা খারাপ নয়

ভুলই দীলে জাগায় ভয়

ভয়ের থেকে তওবা হয়

তওবাকারীই শুদ্ধ হয়

 

শুদ্ধ মানে পাপ বিহীন

শুদ্ধ হয় না অর্বাচীন

তওবায় আল্লাহ খুশী হন

এবং খুশি প্রিয়জন

 

ভুল সর্বদা খারাপ নয়

ভুলের থেকেই শিক্ষা হয়

ভুলেই করে মানুষ ভুল

বুঝলে ছিঁড়ে নিজের চুল

 

বুঝতে পারলে একবার ভুল

ভুলকে বানায় সে জন ফুল

সেই ফুলেরই সৌরভে

জীবন চালায় গৌরবে

 

ভুল জেনে ভুল করবো না

নষ্ট জীবন গড়বো না

ভুলের ফাঁদে পড়বো না

অহংকারে মরবো না

৩০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪৬

দুঃখ

দুঃখ আমি খুঁজে দেখলাম

আকাশ পাতাল জঙ্গলে

দুঃখ কোথাও পেলাম নাতো

চন্দ্র কিংবা মঙ্গলে

 

দুঃখটাকে আনতে গেলাম

শিয়ালদহের বনে

দুঃখ কোথা পাবেরে ভাই

দুঃখ থাকে মনে

 

এই কথাটা বললো আমায়

শিয়ালদহের বন

আধেক গেলাস পানি আছে

ভাবো সারাক্ষণ

 

আধেক গেলাস খালি দেখে

কেন তুমি কান্দো

সুখ তো ঘুরে ডানে বায়ে

ধরে ধরে বান্ধো

 

তোমার জীবন ভরবে সুখে

তুমিই হবে সুখী

বনবাসে দাও পাঠিয়ে

কাঁদুক সেথা দুখী

৩০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪৭

এসো

এসো

কোরআনের পথে চলি

কোরআনের কথা বলি

কোরআনের বাণী শুনে

মন্দকে পায়ে দলি

এসো মন্দকে পায়ে দলি

 

এসো

কোরআনের আলোয় আলোকিত হই

কোরআনের আলোয় আলোকিত রই

কোরআনের আলো গায়ে মেখে নিতে

সকলেরে এসো ডেকে ডেকে কই

 

এসো

কোরআনকে সম্মান করি

কোরআনময় জীবন গড়ি

এসো সত্যকে আঁকড়ে ধরি

মিথ্যাকে মুছে দিতে একসাথে লড়ি

৩০//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪৮

সুখের চাষ

কিনতে গেলাম দুঃখ বিলাপ

দোকানী কয় খুঁজে কি লাভ

দুঃখ খোঁজা পাপ

 

দুঃখ শুধু দহন বাড়ায়

কষ্ট ছড়ায় সবুজ পাড়ায়

বাড়ায় কষ্ট তাপ

 

দুঃখ খালি পোড়ায় মন

সে থাকে ভাই অন্দরে

দুঃখ থাকলে দাও বিলিয়ে

থোকা থোকা মণ দরে

 

বাতাস জুড়ে দুঃখ ঘুরুক

থাবা দিয়ে ধরতে নেই

খাওয়া রেখে দুঃখ নদীর

পাগলা ঘোড়া চড়তে নেই

 

ঈদের চাঁদের খুশী ভাসে

মুচকি হাসির আড়ালে

বিনে পয়সায় নিতে পারো

তুমিও হাত বাড়ালে

 

তবে কেন দুঃখ নেবে

বাড়ি ফিরে যাও

সুখই যদি লাগে কারো

আমার কাছে চাও

 

আমি করি সুখের চাষ

তোমার জন্য বারো মাস

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৪৯

আকাশ তো একটাই

আকাশ তো একটাই, একটাই রবি

আমাদেরও ছিল এক শিল্পী কবি

যার সুবাসে ভরা ছিল চারদিক

মল্লিক, মল্লিক, মল্লিক

 

গান লেখা ছিল তার জীবনের হবি

দ্বীনের নকীব ছিল, ছিল প্রেম ছবি

বুকে ছিল বেশুমার খোদার জ্যোতি

সেই জ্যোতি ছড়াতেন তিনি দশদিক

মল্লিক  মল্লিক, মল্লিক

 

ছড়াতেন সুর তিনি গানে আর গানে

ভালবাসা ছড়াতেন প্রাণ থেকে প্রাণে

বুকে তার ভালবাসা ছিল অফুরান

বলতেন, পশু নয় হও মানবিক

মল্লিক  মল্লিক, মল্লিক

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫০

গান শুধু গাইতো

মল্লিক, সে তো এক গানের পাখি

উড়ে উড়ে গান শুধু গাইতো

সমাজ ভালো হোক

মনে মনে এই শুধু চাইতো

গান শুধু গাইতো

 

রাসূলের প্রেমিক ছিল

আল্লাহর ছিল খাঁটি বান্দা

দ্বীনের নকীব ছিল

ছিল নাতো আর কোন ধান্ধা

মানুষেরে ভালবেসে

অবিরাম ভালবাসা পাইতো

গান শুধু গাইতো

 

সবুজ ফসলে সে ভরেছিল চর

গানে গানে ভরেছিল লাখো অন্তর

অবিরত মানুষের কল্যাণ  চাইতো

সে কথা বলতেই গাঁয়ে গাঁয়ে যাইতো

গান শুধু গাইতো

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫১

আমাদের স্বপ্নেরা

আমাদের স্বপ্নেরা মরে নাই

স্বপ্নেরা কোনদিন মরে না

গোলাপের পাপড়িরা ঝরে যায়

স্বপ্নেরা কোনদিন ঝরে না

 

মেঘ  এসে সূর্যকে ঢেকে দেয়

তাই বলে সূ্র্য কি হাসে না

প্রিয়জন যদি দূরে চলে যায়

তাই বলে সেকি ফিরে আসে না

 

চলে যেতে পারি আমি ওপারে

স্বপ্নটা রেখে যাবো বিশ্বে

সাহসের বাঁশি যেন বেজে ওঠে

জেগে ওঠে অসহায়, নিঃশ্বে

 

বাতাসে যেন ভাসে প্রভাতি আজান

বার বার জেগে ওঠে সূর্য

সূর্যের সে আলোয় বাজুক দামামা

সাহসের লাল রণতুর্য়

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫২

জেলে যাবো

নাতিঃ

নানা

চলো এবার ঘেরাও করি

দুর্গাপুরের থানা

কী ভেবেছে সরকারে,

আমরা কি সব কানা?

 

সব বলেছে রানা।

 

মাগনা খাবার জামাত খাবে

আমরা কি নই পানা?

এই অনাচার সইবো না আর

চলো করি হানা

দুর্গাপুরের থানা

চলো চলো, নানা

 

নানাঃ

কি হয়েছে, খুলে বল

কে খেয়েছে গাছের ফল?

কে খেয়েছে ডোবার জল?

জল খেতে কে দিল নল?

কার সাথে কার হলো ভাব?

নাকি নাতি সজাগ থেকেও

দেখিস নানা আজব খাব?

 

নাতিঃ

শোনরে নানা, শোন

দুঃখ আমার বোন

 

রাতবিরাতে হাইজাক করে

সোনার ছেলে খায়

জামাত শিবির মাগনা খেতে

জেলের ভেতর যায়

 

মাগনা খায়মাগনা থাকে

ঘর ভাড়াও লাগে না

এসব দেখে কোন অভাগার

হিংসা বলো জাগে না

 

আমরা এখন সরকার চালাই

মাগনা খাবো আমরা

পুলিশ যদি জামাত ধরে

তুলে নেবো চামড়া

 

নানাঃ

এই বুদ্ধিটা এতটা দিন

কসনি কেনো নাতি

জেলে গিয়ে মশার মত

টিপে মারবো হাতি

 

পাবলিকে আর বলবে না কেউ

রিলিফ চোরার দল

মাগনা খাবো, মজা পাবো,

তাস খেলবো চল

 

নাতিঃ

ঠিক বলেছো নানা

আমরা যাবো জেলের ভেতর

খাবো মাগনা খানা

জামাত শিবির দেখলে বলবো,

যা না, বাইরে যানা

 

কইরে কদমালি

জোরসে লাগা তালি

এখন থেকে আর খাবো না

রিলিফ চোরা গালি

 

জামাত শিবির বিবির বকা

খাক না বাইরে এসে

জেলের ভেতর আমরা যাবো

দলে দলে হেসে

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৩

টাপুর টুপুর

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

বৃষ্টি পড়ে সকাল দুপুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

 

বৃষ্টি পড়ে মিষ্টি মধুর।

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

বৃষ্টি দেখে মিষ্টি নূপুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

 

জলে ভরছে ডোবা পুকুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

কাঁদছে কতক পথের কুকুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

 

কাজের মেয়ে যাচ্ছে ফুপুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

বার বার পথে হচ্ছে উপুড়

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

 

টাপুর টুপুর টুপ রে

চুপ কর সবে চুপ রে

ভিজছে দাদা, ছাতা নাই

চল দাদাকে আনতে যাই

টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে

ভিজে কি লাভ, থাক না ঘরে

ভিজছে পুতুল ছোট্ট খুকুর

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর

 

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর

১০//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৪

স্বপ্নলোকে ডুব

বিষ্টি মাখা মিষ্টি ভোরে ঘুম যে এলো খুব

ঘুমের ঘোরে স্বপ্নলোকে দিয়েছিলাম ডুব

 

অমা একি তাকিয়ে দেখি সোনাবরণ মাছ

দলবেঁধে সব খাচ্ছ ওরা মোমের হিজল গাছ

 

টেংরা পুটি হেসেই কুটি গুট গুটি পায়

বলল খোকা খেলবি নাকি আমার কাছে আয়

 

গায়ে যেন ডিমের কুসুম ঝিলমিল ঝিল করে

বোয়াল মাছের দাড়িগুলো তিরতির তির নড়ে

 

স্বপ্নে দেখি ইরাবতি ডাকছে, খোকন আয়

ঘুমের মাঝে ডাকে তোকে তোর আদরের মায়

 

ইরাবতির ডাকে আবার বাড়ি ফিরে আসি

মায়ের মুখে তাকিয়ে দেখি পদ্মফুলের হাসি

১২//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৫

সবাই মরে

মরার জন্য এলাম ভবে

জানি সবার মরতে হবে

কিন্তু কে যে মরবে কবে

কারো জানা নাই

শুধু জানি ভুবনে

বাঁচাই উপায় নাই

 

হোক না সে জন রাজা উজির

হোক না সে জন পথের ফকির

হোক না সে জন শিশু

কেউ বাঁচেনি খোদার হাবীব

কিংবা মহান যিশু

 

হোক না সে জন নারী নর

হোক না সে জন বধু বর

হোক না সে জন আপন পর

লাভ হবে না তাতে

মরণ এলে মরতেই হবে

দিবস কিম্বা রাতে

 

পাখি মরে, পশু মরে, মরে জলের মাছ

বীর বাহাদুর সবাই মরে, মরে বনের গাছ

১২//২০২০; ভোর ১২:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৬

ছড়া কথা কবে না

শ্রাবণ মাসে বন্যা হয়

বন্যা চোখে কথা কয়

সে সব কথা বুঝি কম

ছড়া লেখে মরিয়ম

 

সেই ছড়া কে মাগনা চাও

আগে ছড়ার বউনি দাও

নইলে ছড়া হাসে না

ডাকলে কাছে আসে না

 

মুফতে যারা ছড়া চাও

সুকুমারের কাছে যাও

কি বললেতিনি নাই?

তবে ফেলো তিরিশ 'পাই'

 

এর চেয়ে কম হবে না

ছড়া কথা কবে না

১২//২০২০; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৭

টার্গেট কি

এই খেলাটার টার্গেট কি

কোথায় যেতে চান

না কি আপনি হালাল হারাম

যা পান সামনে খান?

কন না সোনার চান

 

টার্গেট ছাড়া খেলেন ক্যান?

পুরস্কার কি? জবাব দেন

আমার ছড়া রাখবেন কই?

কে বানাবে ছড়ার বই?

 

আপনি যদি লেখেন ছড়া

খেতে দেবো ডালের বড়া

নইলে খাবেন কড়া মার

কনতো ছড়ার কয়টা ঘাড়?

 

আমার ছড়ার সাথে যদি

আপনি একমত হন

আপনার মনে কি আছে ভাই

সেই কথাটা কন

 

যিনি ছড়ার রাজা

পাঁচটি ছড়া আপনি দেন

এবার তাজা তাজা

১৩//২০২০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৮

বাঘের পিঠে ছড়া

বাঘের পিঠে তুলে দিলাম

ছড়া এবার তোরে

তোর সাথে যে দেখা হবে

শুক্কুরবারে ভোরে

 

বাঘের পিঠে ওঠা সোজা

নামা সহজ নয়

নামলে যাবি বাঘের পেটে

গুণীজনে কয়

 

লাগ ভেলকি লাগরে লাগ

ছড়া পিঠে যাচ্ছে বাঘ

থামার কোন নাম নাই

এমন খেলার কাম নাই

 

সবটা শুনে রবি বাবু

দিলেন ধমক, হায়রে

সেকি ধমক মনে হল

পরাণ আমার যায়রে

১৪//২০২০; ১২:০১ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৫৯

হাদারাম

ছড়াকাররা হাদারাম

ছড়াকার খায় ফজলি আম

আমের ভেতর পোকা

ছড়াকাররা বোকা

 

বোকা বলেই সত্য কয়

লুটপাটে সে মত্ত নয়

ধান্ধাবাজি করে না

পুলিশ মারলে নড়ে না

 

চালাকরা সব লুটে খায়

কেউবা চেটে পুটে খায়

আকাম করে বঙ্গে

মরলে যা যায় সঙ্গে

 

চালাক হওয়ার কাম নাই

ধান্ধাবাজের দাম নাই

লেখালেখি খেলা না

লেখক বদের চেলা না

 

তবে কেন পাম দাও

ছড়া রেখে নাম খাও

১৫//২০২০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬০

আজ কাল

আজ করিনি কালকে নানা ঠিকই আমি করবো

তোমার কথামতোই নানা নামায রোযা ধরবো

সকাল বেলা তোমার সাথে বসে কোরান পড়বো

আবার আমি ভালো পথে জীবন আমার গড়বো

 

খুশি হলাম নানা।

কবে থেকে ভাবো তুমি আমার বুদ্ধি কানা

কালকে কি য়ে করবে তুমি সবই আমার জানা

মা দিয়েছে ভাত আগে খেয়ে আসো খানা

 

খেয়ে এসে বললো নাতি এই যে নানা, সেলাম

তোমার কথা শুনতে নানা আবার ফিরে এলাম

 

নানা বলে নাতি,

মশার মত টিপে কভু যায় না মারা হাতি

দিনের মত পায় না আলো চন্দ্র দিয়ে রাতি

যে করে কাজ তার জন্য কাল বলে কিছু নাই

আজকের খানা কালকে খাবো কেউ কি বলি ভাই

 

নিত্যদিনের কাজটা নানা নিত্যদিনই করতে হয়

খালি হলে উদর তাতো নিত্যদিনই ভরতে হয়

ঈমান আনলে সাথে সাথে এবাদতও করতে হয়

কেউ যদি ভাই মারতে আসে তখন ঠিকই লড়তে হয়

১৭//২০২০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬১

পরীর দেশে

তোমরা যখন ঘুমাও আমি, মেঘের নায়ে চড়ি

মেঘের নায়ে দেখা মেলে হাজার মেঘের পরী

 

পরীরা সব হেসে বলে, ভালো আছিস বাবু?

তোর জন্য বানিয়ে দেবো সাদা মেঘের তাঁবু

 

আমি বলি, ভালো আছি, তোরা কেমন বোন?

চলে এলাম পেলাম যখন তোদের হাওয়াই ফোন

 

পরী বলে, ভালোই হলো, যাচ্ছি পেত্নি বাঁকে।

ভয় দেখানো ভূত পেত্নি, যেথায় ওরা থাকে

 

যেথায় থাকে কুটনা বুড়ি, গীবতকারীর দল

তুফান দিয়ে উড়িয়ে দেবো, যাবি নাকি চল?

 

মিথ্যেবাদী আরো খারাপ, হোক সে নগরপতি

মিথ্যেবাদী সবার মাঝে বিলায় কেবল ক্ষতি

 

সময় এখন ভন্ড বদ দমন করার কাল

দমন করা, পাপের পথে কামায় যে জন মাল

 

এমন সময় এলিরে ভাই, যাচ্ছি অভিযানে

মন্দ ফেলে পুষ্প সুবাস ঢালবো সবার প্রাণে

 

এক পলকে যাবোরে ভাই, এক পলকে আসবো

ফুল বসন্তে পরাণ খুলে রূপ সাগরে ভাসবো

১৯//২০২০; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬২

বরফ গলে

বরফ শুধু গলে যায়

যেত যেতে বলে যায়-

,

আমার মত তোমার হায়াত

কমছে পলে পলে

সময় নষ্ট করলে রে ভাই

সবই যাবে জলে

 

রাতে সুরুজ হাসে না

যে যায় ফিরে আসে না

তার নাম তো উবে যায়

যেমন সুরুজ ডুবে যায়

 

পরদিন আসে নতুন ভোর

আসে নতুন হৃদয় চোর

শিশুর কচি ঠোঁট হাসে

মানুষ ভাসে উল্লাসে,

২০//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৩

তুমি মেহেরবান

আল্লাহু আল্লাহু আল্লাহু।

আল্লাহ,

সবই তোমার মেহেরবানী

তুমিই পাঠাও বৃষ্টির পানি

তুমিই তাড়াও পেরেশানী

করো দয়া দান

ওগো মেহেরবান

 

এই যে সাগর, বনবনানী

এই যে ধরায় হাজার প্রাণী

আল কোরানের অমর বানী

সবই তোমার দান

তোমার রহম নিয়ে বাঁচি

হাজারো ইনসান

 

তোমার মেহেরবানী মাওলা

তোমার মেহেরবানী

তোমার নূরে ধন্য করো

আমার জীবনখানি

পিউ পাপিয়া গান গেয়ে কয়

তুমি রহমান

তুমি মেহেরবান মাওলা

তুমি মেহেরবান

২০//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৪

নাতি

নাতি।

সারাটা দিন কানের কাছে

করে মাতামাতি

হাতে তাহার ফট ফটাফট

খেলনা অস্ত্রপাতি

 

নাতি।

ছোট্ট কিন্তু ভাবটা দেখায়

মস্তবড় হাতি

বুক ফুলিয়ে বলে দেখো

ক্যায়সা বুকের ছাতি

নাতি

আমি বলি তুমিই তবে

কচু বনের হাতি?

২০//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৫

তোমার গুণগান

সবুজ হলো ধূসর পাতা

তোমার দয়া দানে

ফুলপাখিরা ওঠলো মেতে

তোমার  গুণগানে

ইয়া আল্লাহ

আল্লাহু আল্লাহু আল্লাহু

 

এই যে সাগর, এই যে নদী

বাতাস বহমান

এই যে পাহাড়, বনবনানী

সবই তোমার দান

 

নীল আকাশে সূর্য হাসে

তোমার দয়া দানে

ফুলপাখিরা মেতে ওঠে

তোমার  গুণগানে

ইয়া আল্লাহ

আল্লাহু আল্লাহু আল্লাহু

 

ঘাসের ডগায় ঢেউ খেলে যায়

ভ্রমর ওড়ে ফুলে

তোমার নামের তসবি জপে

পুষ্প দুলে দুলে

 

তোমার নামের গান গেয়ে যায়

বাতাস কানে কানে

ফুলপাখিরা মেতে ওঠে

তোমার  গুণগানে

ইয়া আল্লাহ

আল্লাহু আল্লাহু আল্লাহু

২১//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৬

প্রতিদিন

প্রতিদিনই খেতে হয়

কত কষ্ট পেতে হয়

খাবার ঘরে যেতে হয়

খাবার মুখে দেতে হয়

 

আহা কি যে কষ্ট

ঘুমের সময় নষ্ট

চক্ষু দুটো মেলতে হয়

কাঁটা বেছে ফেলতে হয়

 

খাবার আবার গিলতে হয়

কমলাটাও ছিলতে হয়

খেলে বাথরুম যেতে হয়

কত কষ্ট পেতে হয়

 

বাজার সদাই করতে হয়

জীবনযুদ্ধে লড়তে হয়

নইলে দাদা মরতে হয়

প্রতিদিনই খেতে হয়

কত কষ্ট পেতে হয়

২১//২০২০; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৭

গরু বনাম গোরু

গরু কখন গোরু হয়, সে কথা কি জানো?

ঘাস রেখে সে যখন খায় পানি দিয়ে ডানো

 

গরু মারে গুতো আর গোরু মারে ল্যাঙ

গরুর থাকে চার পাও, গোরুর দুই ঠ্যাঙ

 

গরু থাকে গোয়াল ঘরে গোরু এসি রুমে

গরু যায় খোলা মাঠে গোরু যায় জুমে

 

জুমে গিয়ে আড্ডা মেরে সময় করে পার

গরুগুলো বাড্ডা গিয়ে ওলান খোঁজে মার

 

গরু থাকে গাও গেরামে, গোরুগুলো ঢাকাতে

ডানো খাবার চামচ কিনে তারা হাজার টাকাতে

 

গরু দিয়ে কোরবানী হয় গোরু দিয়ে হয় না

গরুরা হয় অবাক যখন গোরু খোঁজে গয়না

২৩//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৮

সীমা নাই

কতকিছু দেখিলাম

কতকিছু লেখিলাম

গেলো সবই উড়িয়া

ঘুরে ফেবু জুড়িয়া

 

ধরতে চাইলে ধরে খাও

পড়তে চাইলে পড়ে যাও

যে দেয় ছড়া, দাতা সে

উড়ুক ছড়া বাতাসে

 

এখন থাকি ঘরে ভাই

যাই না নদীর চরে ভাই

আল্লাহ মালিক খেতে দেন

শোয়ার বিছনা পেতে দেন

 

সুখে আছি, আর কি চাই?

তাঁর রহমের সীমা নাই

২৫//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৬৯

বর্ষা এলে

বর্ষা এলে ফর্সা আকাশ

ঘোলা হয়ে যায়

বর্ষা এলে গাঁয়ের শিশু

শাপলা তুলে খায়

 

বর্ষা এলে কদম কেয়া

ভেজা গায়ে হাসে

বর্ষা এলে গরীব মানুষ

অথৈ জলে ভাসে

 

এসি রুমের সাহেব দেখে

বর্ষা টিভির পর্দায়

বর্ষা এলে শ্বশুরবাড়ি

বেড়াতে যায় বড়দায়

 

বর্ষা এলে তামশা দেখে

মেম সাহেবার ছাও

বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে

ঢাকায় চলে নাও

২৬//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭০

সর্বনাশের কন্যা

ডুবছে বাড়ি ডুবছে ঘর

ডুবছে নদী ডুবছে চর

ভাঙছে গাছ ভাঙছে বন

ভাঙছে হৃদয় ভাঙছে মন

 

চুলাতে নাই রান্না

পেটে ক্ষুধার কান্না

দুরু দুরু বুক

ভয় কাতুরে লুক

 

গরু ছাগল মুরগী নাই

ভেসে গেছে দুধেল গাই

চাল যা ছিল ঘরে

ঢেউয়ে নড়েচড়ে

 

ছাওয়াল কান্দে ডরে

বউটা মরে জ্বরে

বাপ মরেছে মাটি নাই

জলে গেছে ভেসে

আমি বুঝি এই বন্যা

কত সর্বনেশে

 

রিলিফে খায় চেয়ারম্যান

এমপি তোলে ফটো

আমার দুঃখে আমি কান্দি

তুমি কেনো চটো?

 

দেশে আইছে বন্যা

সর্বনাশের কন্যা

রাইতে আহে ছইয়ের নাও

যুবতী কই? রিলিফ নাও

 

রিলিফ দিবা? দাও।

টোটার কামড় খাও

২৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭১

হাবা

না রে ভাইনা রে না

হাবাকে আর মারে না

মারে না ভাই হাবা রে

থাক সে ঢাকা, সাভারে

 

হাবা কাউকে দেয় না ঢুশ

চায় না দামী লেবেনচুস

তবে কেন মারবে তারে

মারহাবা কও বারে বারে

 

না রে ভাইনা রে না

হাবাকে আর মারে না

 

ভাত নিয়া কান্দে হাবার মায়

কই গেলি বাপ আয়রে আয়

ছিটাইলে ভাত কাকে খায়

পেট ভরলে কাক দিল্লি যায়

 

না রে ভাইনা রে না

হাবাকে আর মারে না

৩১//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭২

কোরবানী

কোরবানী দাও কোরবানী

নহে ভাই মোর বানী

খোদার হুকুম পায় নবী

তার মহিমা গায় কবি

 

মনের খাহেশ কোরবানী দাও

নিজে তুমি রোজ

আল্লাহর হুকুম কি কি আছে

নিজেই করো খোঁজ

 

খোদার হৃকুম জানো

আগে নিজে মানো

মন্দ চিন্তা মনে এলে

তারে আঘাত হানো

 

মনের পশু কোরবানী দাও

বনের পশুর সঙ্গে

পশু স্বভাব রেখো না আর

বন্ধু তোমার অঙ্গে

৩১//২০২০; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৩

গোরু কেনা

কিনতে গেল গোরু

তসলিমা আর নোরু

ঘোরলো সারা দিন

কোথায় গোরুর চিন

 

গেরামেতো গোরু নাই

গরু দিয়ে ভোরা

সারাদিন ঘোরে নোরু

খাইল বিষম ধোরা

 

অবশেষে বর্ধমানে

তিনটা গোরু পাইলো

তিনটা গোরুই মরা ছিল

কোরবানীতে খাইলো

 

একাডেমি ঘোরে দেখ

গোরু কিছু পাইলে

বউ কইছে আমের মত

দিব তারে ডাইলে

 

হীরা কইলো শোনেন দাদা

গোরু লাগে যত্তোরে

আগামীতে কিনতে আইয়েন

একাডেমির চত্ত্বরে

 

গেটেই পাবেন বসে আছে

কয়টা বিশেষ অজ্ঞ রে

তাতেই নাকি চলবে দাদা

পোজা পার্বোন যজ্ঞ রে

৩১//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৪

গোরু সমাচার

গোরু কিনবেন? এ্যাম্মে যান

একাডেমি পাইবেন

বসা আছে বিশেষ অজ্ঞ

তাদের কাছে চাইবেন

 

গোরু কাইট্টা ইদের দিন

মজা করে খাইবেন

রাইতের বেলা বসে বসে

লীলার ভজন গাইবেন

 

পার্কের পাশে রঙিলা এক

দেখবেন বাড়ি আলিশান

গেটে আছে নেমপ্লেট তাতে

লেখা আছে বর্ধমান

 

উল্টানো সব বাড়ি আছে

নারি আছে ভিতরে

নানা রকম গোরু বানায়

ফরেন কয়টা ইতরে

 

নতুন আইনে শুনতে পেলাম

নবী নাকি নবি হয়

মডার্ন আইনে তবে দাদা

ছবিটা কি ছবী হয়?

 

পরীরা সব ডায়টিং করে

পরির খাতায় নাম লেখায়

বিশেষ অজ্ঞ বস্তা ভরে

ভূতুড়ে সব কাম শেখায়

৩১//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৫

ঈদ মোবারক

সবাই দেখি ঈদ শুভেচ্ছা মোবারককেই দিল

মোবাররকও মুচকি হেসে যে যা দিল, নিল

মোবারক তো গরীব মানুষ গাঁও গেরামে থাকে

সকাল হলে যেখানে ভাই হাঁস মুরগী ডাকে

 

দেশগেরাম তো বানের জলে

এখন পানির তলে

ঘরের চালের ওপর দিয়া

নৌকা এখন চলে

 

থাকতো যদি ধানের ক্ষেত, ফুটবল খেলার মাঠ

থাকতো যদি হাটের পাশে উজান নদীর ঘাট

শুভেচ্ছাটা রাখা নিয়ে কে করতো ভাই চিন্তা

পাঠিয়ে দিত সারা দেশে কী চমৎকার সীন তা

 

শুভেচ্ছা যে রাখবো এখন

আড়ত কোথায় পাই

দিয়ে দিলাম জলপরীদের

নিয়ে নিও ভাই

 

জলপরী কয়, আচ্ছা হুজুর দিলেন যখন, নিলাম।

যাবার বেলায় হুজুর তবে বিদায় সালাম দিলাম

 

যে বলবে সে মুসলমান, তারেই একটা দিবো

কিন্তু হুজুর সে যে মুসলিম কেমনে খবর নিবো?

যে যায় না রে মসজিদে সে মুসলিম কেমনে হয়

খোদার হুকুম না মানলে কি মুসলিম কেহ রয়?

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৬

নীল আকাশের তারা

নীল আকাশের তারা

জাগাও ঘুমের পাড়া

পাহাড় থেকে নামুক ছুটে

আবার ঝর্ণাধারা

 

বেহেস্ত থেকে আসুক নেমে

স্বপ্ন কবিতারা

মন ভুবনে নাচুক আবার

আশার নতুন চারা

নীল আকাশের তারা

 

নীল আকাশের তারা।

ঘরে ঘরে পড়ে গেছে

কোন নতুন সাড়া

মা বলেছে ঘুমাবে না

সে যে পুত্র হারা

 

কারা যেন বলছে ওরে

বুক ফুলিয়ে দাঁড়া

এই ধারাতে গদীর তলে

জলের ছলাৎ ধারা

 

নীল আকাশের তারা।

বানের তোড়ে গদীর মালিক

আগেও গেছে মারা

কচু ক্ষেতে সাপ ঢুকেছে

সাহস করে দাঁড়া।।

 

বোনের সুখে ফুটুক হাসি

যারা স্বামী হারা

নীল আকাশের তারা

নীল আকাশের তারা

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৭

এমন যদি হতো

এমন যদি হতো

আমি হতাম বাবা আর, বাবা আমার মত

কী যে মজা হতো

কী যে মজা হতো

আহা, কী যে মজা হতো

 

বলতাম খোকা আয় না কাছে

দেবো তোরে চুম

সারাটা রাত খেলবি তুই

কিসের আবার ঘুম?

আধো আধো বোলে আমার

খোকা কথা 'তো

কি যে মজা হতো

 

ছড়াগুলো গান হতো আর

গানগুলো সব ছড়া

গান শুনে সব শিখে যেতো

আমার খোকা পড়া

তবে কি আর পিঠে বইয়ের

বোঝা বইতে হতো?

কি যে মজা হতো

 

আমার সোনা চাঁদের কণা

তারকা যে তার ভাই

মেঘ পাখিদের সঙ্গে খোকার

কোন লড়াই নাই

মেঘের সাথে উড়তো খোকা

মিষ্টি পাখির মতো

কি যে মজা হতো

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৮

জলপাই

চল যাই জলপাই

খাই আর গল্পাই

রাজাবানী একদিন

হয়ে গেল দীনহীন

 

মাছ গোস্ত পায় না

ডালভাত খায় না

রানী করে বায়না

রাজা ধরে আয়না

 

দেখ তুই এখন আর

রাজরানী নেই

যে বানায় রাজরানী

ফকিরও সেই

 

তোর যত চাওয়া রানী

তার কাছে চা

সে দিলে দুধভাত

পেট ভরে খা

 

গাছতলা বসে বসে

চল গল্পাই

বরাতে যা আছে আয়

মিলেমিশে খাই

//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৭৯

রাত্রি শেষে ভোর আসে

রাত্রি শেষে এলো নবীন ভোর।

কে যাবিরে ফুল কুড়াতে

খোলরে এবার দ্বোর

 

আঁধার গিয়ে হাসে নবীন আলো

সঙ্গে পালায় মন্দ কালো

জাগে আবার ভালো

 

আয় কে নিবি সুবাস মাখা ফুল।

ভোরের হাওয়ায় দে উড়িয়ে

মন্দ কালো ভুল

 

রোজ সকালে হাসে সবার মন।

হাসে আকাশ হাসে বাতাস

হাসে সবুজ বন

 

নদী বয় কুলুকুলু পাখি করে গান।

এই যে সাগর পাহাড় নদী

সবই তাহার দান

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮০

অদ্য

গদ্যটা অদ্য লিখলাম

পদ্যটা লিখলাম সদ্য

কারে দেবো কোনটা

ভেবে ভেবে হই আমি হদ্দ

কি হবে লিখে এই পদ্য?

কি হবে লিখে লিখে গদ্য?

 

করেছি কি ভাল কাজ অদ্য?

বলেছি কি সাচ বাত সদ্য

আমার কবিতা পড়ে

কয়জন ছেড়েছে রে মদ্য?

 

তবে কেন লিখি হায়

কেউ কি নামাজে যায়

কেউ কি রে মাখে হাতে

আতরের গন্ধ

তবে কেন খেলি আমি

হাতে নিয়ে ছন্দ?

 

তার চেয়ে চলো সব পাখি হয়ে যাই

ডালে ডালে বসে বসে তাঁর গান গাই

যার গান গেয়ে যায় ঝর্ণাধারা

যার গানে এই মন হয় মাতোয়ারা

 

হৃদয়ের দরজাটা করোনারে বদ্ধ।

অদ্য

এসো ভাই, এসো বোন সদ্য

হৃদয়টা নূরে নূরে করি ঋদ্ধ

সকলের প্রাণে প্রেম করি বিদ্ধ

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮১

জাগবেই

আঁধার চিরদিন রবে না,

একদিন আলো ফের ফুটবেই

আঁধারের ভাঁজ কেটে একদিন

প্রভাতের রাঙা রবি উঠবেই

আঁধারের কালোরাত টুটবেই

একদিন আলো ফের ফুটবেই

 

ঘুম ভেঙে জনগণ জাগবেই

জাগবেই জনগণ অগনণ

অগনণ প্রজাপতি একদিন

আলোর পরশে চোখ মেলবেই

একদিন জৃ,,নগণ জাগবেই

 

পুষ্পের সুরভি প্রাণে ফের লাগবেই

জনগণ অগনণ ঘুম ভেঙে জাগবেই

ফুল, পাখি, নদী, নীড়, জাগবেই

সত্যের সুবাতাস প্রাণে প্রাণে লাগবেই

জাগবেই জনগণ জাগবেই

কেউ কেউ মিছিলে জনতাকে ডাকবেই

ডাকবেই,ডাকবেই, ডাকবেই

শিল্পীরা মুক্তির পথরেখা আঁকবেই

জাগবেই

১৩//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮২

বখতিয়ারের ঘোড়া

বখতিয়ারের ঘোড়া এলো বখতিয়ারের ঘোড়া

আয় না ছুটে সেই ঘোড়াতে চড়বি কে কে তোরা

ঘোড়া যাবে অত্যাচারী রাজার বাড়ির ঘাটে

সেই ঘোড়াতে চড়ে যাবে কিশোর সেনা ডাটে

 

বলবে রাজা মানুষ মারার হুকুম করো রদ

মানুষ হয়ে কেমনে তুমি হলে এমন বদ ?

ধ্বংস করার ফন্দিফিকির এবার তুমি ছাড়ো

ছি ছি তুমি এতো খারাপ, মানুষ ধরে মারো

 

নীল আকাশে তারার মত শিশু যখন হাসে

ভালবাসা গোলাপ হয়ে বানের মত আসে

প্রেমে প্রেমে যায় রে ভেসে পশুপাখির মন

প্রেম দরিয়ায় ডুবে মরে পাহাড়, নদী, বন

 

বখতিয়ারের ঘোড়া এলো বখতিয়ারের ঘোড়া

সেই ঘোড়াতে চড়বি কে কে আয় না ছুট তোরা

প্রেম সুরভি ছড়িয়ে দিবি বিশ্ববাসীর মনে

অস্ত্র রেখে ফুল ছড়াবি সবাই কঠিন রণে

১৩//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮৩

মায়ের আদর

কবে যাবো শহর ছেড়ে সবুজ শ্যামল গাঁয়

কবে দেখবো একলা শিশু ধুলোবালি খায়

বলবো কখন আয় না বাবা আমার কোলে আয়

তোর জন্য যে চোখ কাঁদে না, পরাণ কেঁদে যায়

 

কবে আবার হাসবে গাঁয়ে আদরমাখা বউ

কবে খাবো হেঁটে হেঁটে বাসক ফুলের মউ

বিলের ধারে তিলের ক্ষেতে হাসবে নীলের পরী

কবে আবার পারবো খেতে শান্তি সুখের বড়ি

 

কবে আবার পারবো খেতে মা জননীর রান্না

ভাবতে গেলেই হু হু করে পরাণ করে কান্না

তোমরা যারা গাঁয়ে থাকো আমড়া পেরে খাও

বাবার হাতে হাতটি রেখে মক্তবে রোজ যাও

 

আমরা তখন শহরবাসী কার্টুন দেখে হাসি

খাও না সোনা আরেকটু খাও, বলে বুয়া আসি

হায়রে আমার সবুজ গাঁও, শাপলা বিলের নাও

আবার আমায় একটুখানি মায়ের আদর দাও

১৯//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮৪

কাকি

কাকি।

তুমি বড়ই লাকি

বার বার তুমি বেঁচে যাও

দিয়ে নানান ফাঁকি

এমনি কি আর আমি তোমায়

চালাক চতুর ডাকি

 

কাকি।

দাঁড়াও দাঁড়াও

কই যাও তুমি?

কথা আছে বাকি

কাকায় নাকি ভাঙছে গলা

তোমায় ডাকি ডাকি?

কাকি

তোমার পোলার চাকরি হইছে?

পোষাক পাইছে খাকি?

তাইতো বলি কাকি আমার

ভীষণ রকম লাকি

 

কাকি।

হঠাৎ কেন ঢাকা ছেড়ে

গাঁয়ে এসে থাকি?

লকডাউনে ঢাকায় বসে

বন্দী রবো নাকি?

 

কাকি।

কিসের ছবি আঁকি?

মায়ের ছবি বসে বসে

আপন মনে আঁকি

আর কি করবো কাকি?

নামাজ পড়ে দুহাত তুলে

আল্লাহ আল্লাহ ড়াকি

কাকি

তুমি শুধু দোয়া করো

যেনো ভালো থাকি

১৯//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮৫

সর্বনাশ

প্রভু

পাপ করেছি তবু

তোমার দয়ার আশা আমি ছাড়িনি তো কভু

তুমি থাকতে কও তো প্রভু নিরাশ কেন হবো?

 

কী পারো না তুমি?

দাওনি তুমি উল্টে কভু

পাপের স্বর্গভূমি?

নমরুদ ফেরাউন

বাঁচতে ওরা পারেনি কেউ

মানুষ করে খুন

পানির মত জল হয়ে যায়

পাপীর সকল গুণ

পাপী মানে বর্ষা কালের

বৃষ্টিভেজা নুন

 

তাইতো প্রভু ভক্তি ভরে

দিবানিশি ডাকি

তোমার একটু দয়ার আশায়

করুণ চেয়ে থাকি

আর পারি না সইতে জুলুম

দাও না এবার সাড়া

তোমায় কি আর বলতে হবে

দ্বীনের শত্রু কারা?

 

প্রভু

ফাঁসির দড়ি গলায় নিছি

নিরাশ হইনি তবু

তোমার কুদরত দেখাও তুমি

আরেকটা বার প্রভু

 

তোমার দ্বীনের শত্রু যারা তাদের করো নাশ

চোখের সামনে দেখুক ওরা দারুণ সর্বনাশ

২০ // ২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮৬

ময়না

ময়না।

ছড়া লিখে কোনকিছু হয় না

ছড়াকারও মন খুলে সব কয় না

ভয়ে মরে বললে বলে, না না কোন ভয় না

 

ময়না।

এই জ্বালাতন সয়না

ছড়ার আঘাত যে পায় সে চুপটি বসে রয়না

তলে তলে ফন্দি আঁটে মুখে কিছু কয় না

 

ময়না

ছড়ায় কিছু হয় না

ছড়া লিখে ভাত জোটে না কোথায় পাবো গয়না

বললাম দিমু ইমিটেশন, বউ বলে তা হয় না

নতুন বউয়ের জন্য চাই খাঁটি সোনার গয়না

 

ময়না

ছড়া লিখে সত্যি কিছু হয় না

বিপ্লবীদের জয় হয় শুধু

ছড়াকারের হয় না

বুঝলি কিছু ময়না?

২০//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮৭

কামনা

ভালোর সঙ্গে রাখো প্রভু মন্দ সাথে নয়

মন্দ যেনো আমায় দেখে দূরে দূরে রয়

কেযে মন্দ কেযে ভালো তুমি সবই জানো

মন্দটাকে দূরে রাখো ভালো কাছে আনো

 

দুষ্ট লোকের সঙ্গী হওয়ার ইচ্ছে আমার নাই

ভালোর সঙ্গে থাকার মদদ তোমার কাছে চাই

আমায় তুমি নাইবা কনলে দেশের অধিপতি

আমায় দিয়ে হয় না যেন কারো কোন ক্ষতি

 

পরের ক্ষতি করতে গেলে নিজের ক্ষতি হয়

পরের ক্ষতি করার আগে পাপের করি ভয়

পাপের পথে না যেনো যায় আমার দুটি পা

আমার মন কয় না যেন একটু হারাম খা

 

মনটা আমার দাও না করে নীল আকাশের মত

আমার কাছে এলে যেনো কমে মনের ক্ষত

২১//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৮৮

প্রেম

কতটুকু ভালবাসা এক বুকে রাখি

কতটুকু ভালবাসা তোর বুকে মাখি

কতটুকু প্রেম নেয় নাও, নদী, পাখি

কতটুকু প্রেম দিলে ভরে মন, আঁখি

 

বুকেই আমি সাত আসমান রাখি

বুকেই দুনিয়ার স্বাদ আমি চাখি

বুকেই সাগরের নোনাজল ঢাকি

বুকেই গান গায় হীরামন পাখি

 

প্রেমের দরিয়ায় ভাসে অগনিত সুখ

প্রেমের জোয়ারে নাশে সকল অসুখ

এসো ভাই এসো বোন প্রেম করি চাষ

সুখে আর শান্তিতে থাকি বারো মাস

২১//২০২০; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ২৭৮৯

আসে ভোর

বৈশাখে এলে ঝড়

ডাল ভাঙে কড়কড়

ভাঙে কত বাড়িঘর

কারো ভাঙে অন্তর

সে খবর জানো?

 

তাতে কোন পক্ষী

ভাসায় না অক্ষী

ডাকে না রক্ষী

কাঁদে না মক্ষী

গুন গুন গায় গানও

 

এরে কয় সবর

রাখো সে খবর

জানো নটবর

কতটা জবর

তাদের ঈমানী জোর

 

সবার জীবনে

দেহ কি মনে

প্রতিটি ক্ষণে

জীবনের রণে

বারবার আসে ভোর

২৪//২০২০; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯০

কবির মাহাত্ম

নবীর ঘরে কবির মঞ্চ - ছবিটা রোজ ভাবো

এমন নেতার ভালবাসা আর কি কবি পাবো?

নবীর নায়েব সায়েব বাবু কবির কথা কয় না

কবির এমন কদর নাকি তাদের মনে সয় না

 

কবি থাকবে ঘরে শুয়ে গনীমত ক্যান পাবে

কবি কেন বেহেস্ত যাবার আগাম খবর পাবে

ক্যান যাবে তা নবী জানে, জানে নবীর মালিক

কবির ওপর খুশী থাকেন পরম প্রভু খালিক

 

তাইতো তিনি বাতলে দিলেন কবির কি কি কাজ

আশ শোয়ারায় লেখা আছে, পড়ো আবার আজ

আনতে হবে ঈমান সাথে আমল করাও চাই

জুলুম হলে তার সাথে যে কবির আপোস নাই

 

হোক সে জালেম মস্ত আলেম কিম্বা ঠিকাদার

লিখতে হবে সেই সব কথা, কবি সবাকার

জালিম মানে অন্যায়কারী, পাপী বান্দার দল

বুঝতে হবে কোনটা খাঁটি, কোনটা শুধুই ছল

 

তবেই কবির মৃত্যুদন্ড হয়ে যাবে রদ

কবি হবে ভাল মানুষ, হবে না সে বদ

২৪//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯১

দরকার

নেতার দরকার চামচা এবং

অন্ধ কিছু ভক্ত

স্বৈরাচারের ভেজা বিড়াল

নয় সাহসীর রক্ত

 

নইলে সুখের তখত

কখন যে কে কেড়ে নেয়

সেটা বলা শক্ত

সারাটা দিন সারাটা রাত

শুধু ভয়ের অক্ত

 

পীরের দরকার ধান্ধাবাজ

খাঁটি কয়টা মুরিদান

যার উসিলায় করা যাবে

নরম মাংস,সুরা পান

 

কেউ কিনে খায় ঝাকানাকা

হোটেল থেকে মদ্য

স্বার্থ ছাড়া পা ফেলে না

কোন বেটায় অদ্য

 

ভাল লোকের বাজার নাই

দাম বেড়েছে গাঁজার তাই

২৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯২

বইনে

বইনে,

মনে আছে ছয়টা ঘোড়া

এনেছিল মঈনে?

সেই অপরাধ আমরা কিন্তু

চক্ষু বুঁজে সইনে

 

বইনে

কে বলেছে তাকে আমরা

কোন কিছু কইনে?

কে বলেছে এর প্রতিশোধ

সবাই মিলে লই নে?

 

বইনে

কোথায় আজকে মঈনে?

দেশের মাটি তার কাছ থেকে

আমরা কেড়ে লইনে?

 

বইনে

বলিস ওদের যত পারিস

মিরজাফরের সই নে

তাতেই বেঁচবো স্বাধীনতা

এমন কথা কইনে

 

বইনে

সিরাজ বাঁচে ভালবাসায়

গাদ্দার ভাসে সর্বনাশায়

বুঝলি কিছু? তবে এবার

শিমুল তলার দই নে

২৫//২০২০; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৩

আগে কমেন্ট দাও

লকডাউনে কবিতারা

ক্ষুধায় কাতর, মরে

কয়টা কমেন্ট দেন না দাদা

কাব্য দেবো পরে

 

এতোটা কাল কাব্য পড়ে

কমেন্ট করছেন ভাই

আমরা এখন কমেন্ট পড়ে

কাব্য লেখতে চাই

 

কমেন্ট পড়ে কাব্য লিখবো

আপনার জবাব চাই

কবিরা তো আগের মত

গাছবলদ আর নাই

 

কমেন্টেরও জবাব চাইছেন

কাব্য খাইছেন ফাও

লকডাউনে কমেন্টটা দাও

যদি কাব্য চাও

২৫//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৪

ঝাল

বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়

লঙ্গির চেয়ে গামছা

নদীর চেয়ে নালা বড়

বসের চেয়ে চামচা

 

হায়রে কলি কাল

বিল্লি চাটে বাঘের গাল

 

বাপের চেয়ে পোলা বড়

পোলার চেয়ে নাতি

ইঁদুর নাকি খাচ্ছে ধরে

পাহাড়পুরের হাতি

 

হায়রে কলি কাল

লঙ্কা লাগে মিষ্টি আর

কমলা খেতে ঝাল

২৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৫

আমি মুসলমান

আমি শিয়াও না, সুন্নীও না, আমি মুসলমান

আমার চলার সঙ্গী হলো হাদিস কোরান

আমার নেতা মুহাম্মদ, আমার কিসের ভয়

আমার শুধু জয় আছে ভাই, নাইরে পরাজয়

 

আল্লাহ আমার মালিক মুনীব, বান্দা আমি তাঁর

তিনি অসীম দয়ার সাগর, করুণার আঁধার

আমি জানি তিনি ছাড়া আর সব হবে লয়

তাঁর হলে কেউ বান্দা বলো কিসের আবার ভয়

 

তোমার আছে অস্ত্র বারুদ, গোলা রাশি রাশি

আমার বু    কের গুদাম ঘরে ভালো বাসাবাসি

বাসতে পারি ভালো আমি, নাশতে পারো তুমি

এই পৃথিবীর মানুষ বলো কোনটা নেবে চুমি

 

শিয়াও না, সুন্নীও না, ডাকছি প্রেমের কবি

আঁকড়ে ধরো কোরান হাদিস আল্লাহ এবং নবী

২৯//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৬

স্বার্থের জয়

দূর্নীতি নাই ভাইকাছ নীতি আছে

দূর নীতি ভুত হয়ে থাকে তালগাছে

কাছ নীতি লাগে যদি পাছ পাছ আও

জুস আর ঘুষ নাও, পেট ভরে খাও

 

রাতে যদি যেতে চাও পাপিয়ার বাড়ি

যাও তবে কিনে আনো বেনারসি শাড়ি

পাপগুলো পাপ নয়, মশা আর মাছি

দুই পে'য়ে জন্তুরা আজো বেঁচে আছি

 

চেহারাটা, আমি যেনো মস্ত আলিম

যদিও বুকের ভেতর তিনশ জালিম

পদ্মার ইলিশের খেতে চাও আন্ডা

আগে খাও শরবত, আর কিছু ডান্ডা

 

তালগাছ থেকে নামে মিথ্যার ছাও

তাতে ডুবে নগর,শহর আর গাঁও

আমরাও পাপ জলে হাবুডুবু খাই

সেই সাথে স্বার্থের জয়গান গাই

৩০//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৭

আপোস নয়

ইমাম হোসেন শিখিয়ে গেছেন

দ্বীনের জন্য মরতে হয়

দ্বীনের প্রশ্নে কারো সাথেই

কোনকালে আপোস নয়

 

দরকার হলে লড়তে হয়

টুটি চেপে ধরতে হয়

মরতে হলে মরতে হয়

পথ যতোই কঠিন হোক

বীরের মত লড়তে হয়

 

রক্তে কোন আপোস নাই

পা মুছবি? পাপোশ নাই

সেথায় শুধু লড়তে হয়

বীরের মত মরতে হয়

 

ইমাম হোসেন শিখিয়ে গেছেন

দ্বীনের জন্য মরতে হয়

দ্বীনের প্রশ্নে কারো সাথেই

কোনকালে আপোস নয়

৩০//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৮

ক্ষমতার বিমার

ঘরে ঘরে কারবালা, কান্নার নদী

হত্যার বিনিময়ে তবু চাই গদী

 

দেশে দেশে বাস করে

এজিদ সিমার

সবার মাথাতে পোকা,

ক্ষমতার বিমার

 

কারে বলি ভাল দাদা,

কারে বলি সৎ

ঠেকলে খুনীই দেয়

নিজে দাসখত

 

ইমাম হোসেন শুধু,

উঁচু রাখে শির

ধরা তাই মানে তিনি

মহামতি বীর

 

ঘরে ঘরে কারবালা, কান্নার নদী

জালিমের এক দাবী চাই তবু গদী

৩১//২০২০; ভোর ১২:১০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৭৯৯

গদীর জন্য সবই পারি

বইলে বহুক রক্তনদী

তবু লাগবে শক্ত গদী

কেউ বলবে না - হট

বললেই পাবে - ডট

 

গদীর জন্য কী না পারি

জেতা মানুষ মারতে পারি

পাখির জীবন কাড়তে পারি

আপন মানুষ ছাড়তে পারি

কলকাঠিও নাড়তে পারি

 

গদীর জন্য সবই পারি

দরকারে পাও ধরতে পারি

টাকার পাহাড় গড়তে পারি

বাপের বেটা লড়তে পারি

পাহাড় চূড়ায় চড়তে পারি

 

ছাড়তে পারি বউয়ের মায়া

ছাড়তে পারি লজ্জা হায়া

ছাড়তে পারি  কন্যা জায়া

ছাড়তে পারি বাপের ছায়া

 

বইলে বহুক রক্তনদী

লাগবে আমার তবু গদী

গদী যদি না পাই তবে

মরতে কেন এলাম ভবে?

৩১//২০২০; সকাল ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০০

পটল তুলিস না

পটল তুলিস না রে দাদা, পটল তুলিস না

পুরাণ দিনের কথা দাদা, সবই ভুলিস না

 

কার ভোটে যে রাজা হইলি

ভোল পাল্টে তুই একি কইলি

পুরাণ দিনের পুরাণ কথা সবই ভুলিস না

পটল তুলিস না রে দাদা, পটল তুলিস না

 

কেমনেরে তুই হইলি রাজা,

নাদুস নুদুস মোটা তাজা

সেই সুখে তুই বসে বসে গাঁজা গুলিস না

পটল তুলিস না রে দাদা, পটল তুলিস না

 

কুমড়ো পটাস ফটাস ফটাস

তবে কেনো ভোটার চটাস

কখন যে কি কান্ড ঘটাস, গর্তে পড়িস না

কাল নাগিনী ছোবল হানে, এটা ভুলিস না

 

ভুলের ভেলায় চড়লে দাদা

নীল আকাশও দেখবি সাদা

চাটুকারের চটক কথায় বেশী ফুলিস না

পটল তুলিস না রে দাদা, পটল তুলিস না

 

মায়ের সমান হয় না মাসি

হাসতে হাসতে দেয়রে ফাঁসি

আলগা মাসির মধুর হাসি দেখে ভুলিস না

পটল তুলিস না রে দাদা, পটল তুলিস না

৩১//২০২০; ৪টা।

No comments

Powered by Blogger.