আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ৩৬০১-৩৭০০

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০১

নাতির ঘরের পুতি

নাতির ঘরের পুতি

ছড়ায় আলোর দ্যুতি

লক্ষ টাকার খুতি

হীরা পান্না মোতি।

উজল করে দুনিয়া

আমার ছোট্ট মুনিয়া।

দেখে অবাক বিশ্ব

কে কার হয় শিষ্য।

তাই পড়েছি চশমা

তুই কি কিছু কস মা?

৩১/৮/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০২

আল কোরানের আয়না

তোমার চোখে অহংকারের

পর্দা লেগে আছে

এ অহংকার ঘেঁষতে দেয়না

তোমায় দ্বীনের কাছে।

তুমি এখন মস্ত আলেম,

এ অহংকার মনে

এ অহংকার মিশতে দেয়না

সাধারনের সনে।

তুমি ভাবোআমি হলাম

রহীম শেখের নাতি

আমার মাথায় ধরবে মানুষ

রৌদ্র মেঘে ছাতি।

গ্লাসে জল ঢেলে তুমি

নিজেই খেতে পারো

তবু তুমি জল ঢালতে

অপেক্ষা করো কারো।

টাখনুর নিচে কাপড় পরা

হারাম তুমি জানো

খোদার বান্দা তুমি খোদার

এ হুকুম কি মানো?

তোমার গায়ে জরির জামা,

পরীর কাপড় নাই

তবু তোমার দাবী তুমি

পরীর ধর্মের ভাই।

পড়শিজনকে ভুখা রেখে

তুমি খাবার খাও

পড়শির খোঁজ নিতে তুমি

কখনো কি যাও?

হায় মুসলমানহায়

তোমার প্রভু তোমার কাছে

এ আচরণ চায়?

কিসের তবে মুসলিম তুমি,

কেমন ঈমানদার

নামাজ রোযার ট্রেনিং নিলা,

কোথায় প্রভাব তার?

স্রষ্টা এবং সৃষ্টির হক

আদায় করো বান্দা

সারাটাক্ষণ কেন করো

নিজের লাভের ধান্ধা?

ধান্ধা করে বান্দা কভু

বেহেশত পাওয়া যায় না

বিশ্বাস না হয় মেলে দেখো

আল কোরানের আয়না।

৩১/৮/২০২২; বাদ আছর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৩

এইতো আছি বেশ

এইতো আছি বেশ।

লুটেপুটে সাত শকুনে

খাক না লুটে দেশ।

আমার পোলা বিদেশ আছে

থাক না নিরুদ্দেশ।

দেশ কি এখন আমার?

খাচ্ছে লুটে চামার

সেই লুটেরা গড়বে বাড়ি

পারলে চাঁদের দেশ।

বেশ বাবাজিবেশ।

এইতো আছি বেশ।

খাচ্ছি আমি কাঁচাকলা

তুমি তো সন্দেশ।

ডায়বেটিসের জ্বালা তুমি

বুঝবে অমলেশ।

পেটের ব্যথায় কেঁদে বলবে

গ্যাস হয়েছেগ্যাস।

এইতো আছি বেশ।

এইতো আছি বেশ।

আজো কেন বেঁচে আছি

জানো তো অমলেশ?

তুমি যেনো বলতে পারো

শেষ করেছিশেষ।

এইতো আছি বেশ।

লুটেপুটে খেয়ে যেদিন

দেশটা করবে শেষ

খালি করবে মায়ের কোল

শিশুরা নিঃশ্বেষ।

সেদিন মুসা বলবে হেসে

একটুখানি গলা কেশে

জালিম তোর জুলুম করার

দিন হয়েছে শেষ

নীল দরিয়ার জলে এবার

হবিরে নিঃশেষ।

এই তো আছি বেশ।

৩১/৮/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৪

মিলগুলো ঝিলমিল

ছড়া দিলাম ছড়িয়ে

এইসব সরিয়ে

নয়া মিল দাও

নয় ছড়া বাদ দিয়ে

বাড়ি চলে যাও।

বাড়ি গিয়ে কাঁচকলা

গলা ভরে খাও

বিলে গিয়ে দল নিয়ে

ভাঙা নাও বাও।

ভাবছি আমিও ঢাকা

ছেড়ে বাড়ি যাবো

মাগুরের ঝোল দিয়ে

কাঁচকলা খাবো।

পাকা পেঁপেঁ চলো

জুস দিয়ে বাদ

জুস খেয়ে পেটগুলো

হলো বরবাদ।

বিল আর চিল যদি

মিল দেই তবে

আগামীতে জনতার

কিল খেতে হবে।

মিল দিলে ঝিলমিল

কলা আর গলা

মনে হয় খেতে হবে

তবে রাম ডলা।

আয় ভাই চলে যাই

সোনামাখা গায়

শহরের ইট রডে

থাক হায় হায়।

১/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৫

ভোট হবে ঠিক ঠিক

দুয়ে দুয়ে চার দাদা

সব সময় হয় না

হিসাবের গড়মিল

ঠিক কথা কয় না।

গড় করা পানি দিয়ে

নৌকা তো যায় না

চর যদি থাকে পথে

নাও পানি পায় না।

ভোট যদি রাতে হয়

ভোট হয় ছিনতাই

ঘটনাটা শুনে খুব

হচ্ছে রে চিন্তাই।

কার ভোট কে দেবে

ঠিক করো আগে

জনতার ভোট দাও

জনতার ভাগে।

চলবে কি এ দেশে

পরিবারতন্ত্র

নাকি ফিরে আসবে

ফের গণতন্ত্র?

এইসব ঠিক করো

ভোট কারা চাও

ভোট যাক গোল্লায়

নোট কারা চাও?

এইসব করো ঠিক

ভোট হবে ঠিক ঠিক।

১/৯/২০২২;বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৬

এই রাত ভোর হবে

এই রাত ভোর হবে

 জমিন তোর হবে

গোর হবে সন্ত্রাসী শক্তির

মোমিনের জয় হবে

জলিমের ক্ষয় হবে

জয় হবে বিনয় ও ভক্তির।

দুষ্ট ও দুরাচার

দূর হবে পাপাচার

দূর হবে জুলুম ও জালিম

রাজদন্ড হাতে নেবে

যখন সে ভোর হবে

সাহসী আলীম।

জয়ের মিছিল নিয়ে

সাহসে ভর দিয়ে

সামনে বাড়ো

আল্লাহ সহায় হবে

জিতবে তুমিই ভবে

যদি লড়তে পারো।

৪/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৭

ফরজ রেখে সুন্নত ধরো

খোদার আইন ভাল্লাগে না

দিনে জ্বালাও কুপি

ফরজ ভেঙ্গে কাছা দাও

মাথায় পরো টুপি।

হায়রে ইসলামহায়

এমন ইসলাম কোন হুজুরে

কোন কিতাবে পায়।

লম্বা দাড়িলম্বা জুব্বা

দেদারসে ঘুষ খায়

পীরের দোয়ায় লঞ্চে চড়ে

জান্নাত তারা যায়।

এমন ইসলাম হুজুর সাহেব

কোন কিতাবে পায়?

ভাইবোনের হক মেরে খায়

সুদের টাকা তাও টোকায়

এমন ইসলাম পীর সাহেবে

কোন কিতাবে পায়?

এসব যদি জিগাও

বলবেইসলাম হিগাও?

নিজে খাবে হারাম আর

বলবেহালাল খাও।

আমি যাবো জাহান্নাম

তুমি জান্নাত যাও।

৪/৯/২০২২; বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৮

হীরালালের চাঁদ মুখ

হীরালালের চাঁদ মুখ আবার

দেখলাম ভোটের আগে

চোখগুলো তার লাল টকটক

চুল সব খাঁড়া রাগে।

তারে দেখলে সত্যি সত্যি

ভয়ের শিহর জাগে

কোন সাহসে খানের নাতি

আবারও ভোট মাগে?

গতবার যে ভোট নিছিল

গভীর আঁধার রাতে

সেই জ্বলাটা আজো দেখো

জ্বলে আঁখিপাতে।

এবার যদি আসে

চেয়ার রেখে বলবো নেতা

বসেন একটু ঘাসে।

তাকান আশেপাশে

কনতো দেহি পাবলিক কেনো

মুচকি মুচকি হাসে?

নেতা নিজেও হাসে

বুঝতে পারছি আমায় এবার

পাইছে সর্বনাশে।

৫/৯/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬০৯

যদি পারো

মনের ভেতর জমলে তোমার কালো

বন্ধু সেসব নীল সায়রে ঢালো।

জমলে কিছু আঁধার অমানিশা

বন্ধু তুমি হারাইওনা দিশা।

মনে যদি বাসা বাঁধে ভয়

গরম জলে ধুইে তারে হয়।

মনে এসে হানা দিলে রাগ

বলোযা তুইএখান থেকে ভাগ।

অলসতা যদি কাছে আসে

ঠাঁই দিও না তারে আশেপাশে।

যদি এসব করতে তুমি পারো

তবে তুমি মহত হবে আরো।

৫/৯/২০২২; বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১০

দাঁড়াও সটান

রাতগুলো কাত হয়ে শুয়ে থাকে খাটে

আমাদের রাতগুলো নির্ঘুম কাটে।

কখন যে গুম হই ভয় পিছু হাঁটে

ভাইহারা বোনেদের বুক যেন ফাটে।

এইভাবে রাত যাবে দাঁত যাবে পড়ে

ভয়ে ভয়ে একদিন ভীতু যাবে মরে

যারা করে গুম তারা থাকবে না কেউ

ভীতুদের সাথে জানি মরে যাবে সেও।

বাঁচার জন্য তবু লড়বে না ভীতু

একদিন লড়েছিল জ্ঞাতি ভাই তিতু

সেই কথা মনে করে জলে দেবে ডুব

ফিসফিস করে ক'বে চুপ চুপ চুপ।

চুপ করে থেকে থেকে মরে যাবে তবু

জালিমের বিরুদ্ধে ভীতু লড়বেনা কভু।

যদি চাও জুলুমের হোক অবসান

সাহসে ভর করে দাঁড়াও সটান।

৬/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১১

ভালো দেশ গড়ো

জানাটাই বড়ো নয়

মানাটাই বড়ো

নিজে মানো পরকে মানাও

সমাজটা গড়ো।

জানার জন্য ভালো বই

খুলে খুলে পড়ো।

বাঁকা পথ রেখে সবে

সোজা পথ ধরো।

ভালো কিছু করতে

আমরণ লড়ো।

মুসলিম হয়ে তুমি

তারপর মরো।

কথাগুলো ছোট ছোট

কাজ কিন্তু বড়ো

মন্দটা দূর করে

ভালো দেশ গড়ো।

৯/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১২

তারা ঝিলমিল

গানগুলো ছড়া হয়ছড়াগুলো গান

তাই দেখে হেসে মরে আতাহার খান।

গোলাম মওলা তবু করে যায় সুর

কও দেখি জান্নাত আর কত দূর?

ওই যে আকাশ দেখো তারা ঝিলমিল

দিনে সেই আকাশটাই হয়ে যায় নীল।

শিশুদের দাড়ি নাইবুড়োদের দাড়ি

কুঁড়েঘরও হয়ে যায় অপরূপ বাড়ি।

তেমনি,গান হয় ছড়া আর ছড়া হয় গান

ছোট বড়ো সব কিছু এক আল্লাহর দান।

মানুষ তাকিয়ে দেখে অবাক জাহান

তাজ্জব হয়ে বলেআল্লাহ মহান।

নদীকে ঝর্ণা বলেরাখো দলাদলি

এসো দুইজনে মিলে করি গলাগলি।

রাগক্ষোভঘৃণা গর্ব ছেড়ে দিয়ে ভয়

প্রেম দিয়ে করি এসো এ জগত জয়।

৯/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৩

আমাদের গ্রাম

দেহ থাকে ঢাকা আর আমি বড়গাঁও

বনে বেড় দিয়ে ধরি ফইট্টার ছাও।

ধানক্ষেতে বাসা করে সজারুর দল

বর্ষায় গাঁয়ে নামে শ্রাবণের ঢল।

ধলি বিল ভরে পানি উঠে আসে টেকে

উজানের কৈ হাঁটে টেকে এঁকেবেঁকে।

চাঁই দিয়ে মাছ ধরিঠেলা জাল বাই

ইচাপুটিটেংরাটাকি মাছও পাই।

জ্যৈষ্ঠ গাছে গাছে পাকে আমজাম

বেড়ে যায় ব্যস্ততা বাড়ে গায়ে ঘাম।

অঘ্রাণে খলা ভরা পাকা পাকা ধান

বাড়ি বাড়ি বয়ে যায় নবান্নের ঘ্রাণ।

হীম হীম শীতবুড়ি পৌষ মাঘে আসে

কুয়াশা ফোটা হয়ে লেগে থাকে ঘাসে।

সূর্যের আলো তাতে করে ঝিলমিল

তাই দেখে খোকাখুকু হাসে খিলখিল।

এই নিয়ে আমাদের সবুজ এক গ্রাম

গাজীপুরে বাড়ি যার বড়গাঁও নাম।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৪

নামাজ পড়ি আয়

ফজর আমায় ডাক দিয়াছে

নামাজ পড়তে আয়

ঘুমের থেকে নামাজ উত্তম

সারা দুনিয়ায়।

ওরেতোরা নামাজ পড়তে আয়।

যায় গড়িয়ে দুপুর বেলা

করিসনে কেউ হেলাখেলা

জোহর নামাজ পড়ার সময়

দ্রুত চলে যায়।

ওরেতোরা আয়

জোহর নামাজ পড়তে সবাই

জলদি করে আয়।

যখন আসে বিকাল বেলা

করিস যখন তোরা খেলা

মোয়াজ্জিনে ডাকে তখন

আছর পড়তে আয়

খেলা ফেলে তখন সবে

আছর পড়তে যায়।

যেই ডুবে যায় সূর্য তখন

ভেসে আসে সুর

মোয়াজ্জিনের কন্ঠে শুনি

আজান সুমধুর।

আয়রে সবে আয়

মাগরিব পড়তে আয়।

তারপর আসে রাত।

এশার নামাজ পড়ে তবে

বিছনাতে হও কাত

পাঞ্জেগানা নামাজের এই

খোদায়ী সওগাত।

আয়রে সবাই আয়

জামাত করে নামাজ পড়ি

আয়রে সবাই আয়।

১০/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৫

হীরালালে চিড়া খায়

হীরালালে চিড়া খায়

সঙ্গে ভাজা জিরা খায়

আস্ত চিড়া ছিঁড়া খায়

মীরার দিকে ফিরা খায়।

যত খায় সে মজা পায়

মনের খোশে গানা গায়

তাইরে নাইরে যায়রে যায়

দেখবি মজার খেলা আয়।

ঢেউয়ের তালে নদী যায়

নদীর সঙ্গে গদী যায়

গদীর চামচা বদি যায়

হীরা ডাকে আয়রে আয়।

তামশা দেখলে চলে আয়

জনগণকে বলে আয়

গরম ভাত রান্ধে মায়

রান্ধা ভাত চিলে খায়।

রাজা রানী মিলে খায়

ঢক করে সব গিলে খায়

মুরগীর ছাও চিলে খায়

কেউবা তিলেতিলে খায়।

বড় স্যারে হারাম খায়

স্যারের বউ আরাম খায়

খাইতে খাইতে নৌকা বায়

পাগলা এসে নাও ডুবায়।

১১/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৬

ছাত্রজীবন

ছাত্রজীবন ফুলের মত

মেঘনা নদীর কূলের মত

পদ্মা চরের পলির মত

শুভংকরের গলির মত।

ছাত্রজীবন অলির মত

মুগ্ধমোহন কলির মত

পড়তে বলে অবিরত

পড়বে যত শিখবে তত।

ছাত্রজীবন ফুলের মত

মেঘনা নদীর কূলের মত

পড়তে যে হয় অবিরত

শিখবে তত পড়বে যত।

১১/৯/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৭

লালপেড়ে শাড়ি

লালপেড়ে শাড়ি

তোমায় বলতে পারি

মরলে যদি বেহেশত পাই

কিনবো একটা গাড়ি।

সেই গাড়িতে তোমায় নিয়ে

যাবো বাপের বাড়ি

দেখবো তখন বাগান জুড়ে

বৃক্ষ সারি সারি।

তখন যদি কেউ বলে

দিলাম তোমায় আড়ি

এক থাপ্পড়ে পাঠিয়ে দেবো

তারে বোয়ালমারি।

লালপেড়ে শাড়ি

তোমায় বলতে পারি

কিনে দেবো তোমায় আমি

জেওর কাড়ি কাড়ি।

আরো দেবো রান্না করার

কিনে নতুন হাঁড়ি

দুজন মিলে সালাম দিতে

যাবো বাড়ি বাড়ি

লালপেড়ে শাড়ি।

১১/৯/২০২২; বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৮

ময়না পাখির সয়না জ্বালা

ময়না পাখির সয়না জ্বালা

মানুষ করে বন্দী

যদিও তারা খেতে দেয়

স্বাধীনতা কেড়ে নেয়

তাইতো ময়না গরাদ ভাঙার

করে নানা ফন্দি।

পারতো যদি জালিমটার

ঠোকর দিতে চক্ষে

তবে না হয় ময়না একটু

শান্তি পেতো বক্ষে।

কই গেলিরে জাতির পাখি

আমার বিপদ তাইতো ডাকি

মার না ঠোকর চক্ষে

এমন ঠোকর দিবি যেনো

পায় না মানুষ রক্ষে।

জাত ভাইরা সব ছুটে আসে

তাতেই জালিম দুঃখে ভাসে।

১৪/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬১৯

ভয় কিরে মামা

ভয় কিরে মামা।

যম গেছে বেড়াতে

সোনাতলালামা।

এই ফাঁকে বসে বসে

চুপচাপ কামা।

কেউ নেই বলবার

লুটপাট থামা।

কেউ নেই বলবার

টেনে ওরে নামা।

কই গেলি বদি রে।

পার হ নদী রে।

মজা বড় গদী রে।

ইয়াবার ঢল।

যত দিবি তত হবি

তুই বড় টল।

মামা।

পড়ো লাল জামা।

দিল্লীটা পাড়ি দিয়ে

চীনে দেই হামা।

চীনামাটি কিনে আনি

ফেলে দিয়ে তামা।

ফিরে এসে যম।

দেখবে এই দেশ

খালি একদম।

ফালু বসে আলু খায়

জনগণ বালু খায়।

সিডনিতে বসে মামা

খায় চমচম।

দিনে খায় রাতে খায়

খায় হরদম।

১৪/৯/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২০

অমঙ্গলের নদী

ফুল যদি পাখি হতোপাখি হতো ফুল

তবে সেটা হয়ে যেতো প্রকৃতির ভুল।

সেরকম আজ ভাই প্রকৃতির ভুলে

পিঁপড়েরা হয়ে গেছে হাতিসম ফুলে।

রাজা আজ গাঁজা খায়,গাঁজাখোর রাজা

প্রজা হয় রাজা আর রাজা হয় প্রজা।

বৃটেনের রানী মরে গোলামেরা কাঁদে

চাঁদবুড়ি বসে থাকে আকাশের চাঁদে।

তোমার কপাল খারাপ গোলামের দেশে

অবশেষে তুমিও যে পড়লে হায় এসে।

তোমারে যে মেরে গেল তার লাগি কাঁদো

মরে গেছে যে ঘোড়া তার লাগি রাঁধো।

জানো দেশ কেন ডুবেহয় রসাতল।

ক্ষমতায় দাও যদি লোভাতুর দল।

প্রতারক ও লোভাতুর গদি পায় যদি

দেশ জুড়ে বয়ে যায় অমঙ্গল নদী।

দোষ কার জনতারনেতা ধরে মারে না

একবার লাগে যদি জনতা তো হারে না।

১৫/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২১

এলে যদি ভবে

এলে যদি ভবে

চলে যেতে হবে

কে রয়েছে কবে

এই কথা কেন মনমনে রাখো না

পাপ থেকে কেন তবে দূরে থাকো না।

এই আছি এই নাই

দেহ হবে মাটি ভাই

সারাদিন খাই খাই

এই চাই ওই চাই বলে আর জপ করো না

যত পাপ করেছি প্রভুমাফ করো না।

আমি অতি গোনাহগার

তুমি অতি দয়াদার

দয়াবান হে অপার

এ অধম বান্দারে তুমি দয়া করো না

পাপ পথে গেলে প্রভু চেপে ধরো না।

এই সঘন গভীর রাতে

আমাকে তোমার হাতে

তুলে দিলাম যাতে

পাপ যেন আমায় আর কাছে পায় না

এ দেহ এ মন যেন আর পাপ চায় না।

১৫/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২২

একদিন লাশ হবে

একদিন লাশ হবে

ফাস হবে মিছে জারিজুরি

মিটে যাবে দুনিয়ার সব বাহাদুরী।

যৌবন চলে যাবে

হয়ে যাবে একদিন থুত্থুরে বুড়ি।

লাশটাও হয়ে যাবে পাথর আর নুড়ি।

তারপর ঘাস হবে

কারো জমি চাষ হবে

কবরেরও থাকবে না মোটে কোন চিহ্ন

তব ঘরে তুমি নও থাকবে কেউ ভিন্ন।

থাকবে না দেহ ভূঁড়ি

তবে কেন করো চুরি

থাকবে তো সাথে শুধু পাপ আর পূণ্য

নাম যশ লোভ খ্যাতি সব হবে শূন্য।

১৬/৯/২০২২; বাদ জুমা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৩

ভাল থেকো সব্বাই

কবি আর ছড়াকার

গান লেখা গীতিকার

সুর করা সুরকার

সকলেই দ্বীনদার

নামাজ আর রোজাও

সকলেই করে

পথে পেলে ষাট টাকা

পকেটেই ভরে।

সুরকার গান পায়

বেলগাছ তলে

শিল্পীরা গান পায়

ডুব দিয়ে জলে

তাই দিয়ে ইসলামী

সংস্কৃতি চলে।

কৃষকের ধান সব

বুলবুলি খায়

খালি পেটে শুয়ে থাকে

কৃষকের মায়

তাতে বলো বুলবুলির

কিবা আসে যায়।

এই হলো ইসলামের

ইনসাফ নীতি

লুটেপুটে খাওয়াটাই

আজ সম্প্রীতি

গীতিকার মরে যাক

লেখে দিয়ে গীতি।

ভাল থেকো সব্বাই

হারামনিরব ভাই

১৬/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৪

ইতিকথা নীতি কথা

১।

মোনাফিক

আমানতের খেয়ানত করে

মিথ্যা কথা কয়

চুক্তি করলে ভঙ্গ করে

মন্দ কথা কয়।

এসব দোষ থাকলে তবে

মোনাফিক সে হয়।

হতে যদি চাও মুসলিম

এ দোষ করো জয়।

২।

গীবত ও মিথ্যা

একের দোষ অন্যে বলা

এরেই গীবত কয়

দোষ নাই তবু বানিয়ে বলা

সে তো মিথ্যা হয়।

গীবতমিথ্যা যারা বলে

তারা মহা পাপী

কেউ বলোনা এসব কথা

মামা খালা বাপী।

৩।

অহংকার

অহংকারটা পতনের মূল

সর্বলোকে কয়

তবু গর্ব অহংকারটা

কেউ করে না জয়।

অহংকারের সঙ্গে বসত

সবাই তবু করে

অহংকারকে সবাই রাখে

তবু নিজের ঘরে।

১৭/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৫

নয়া এক পৃথিবীর জন্য

আমরা লড়ছি পুষ্পিত জীবনের জন্য

লড়ছি সুন্দর নয়া এক পৃথিবীর জন্য।

যেখানে থাকবে না হানাহানি,দ্বন্দ্ব

থাকবে না জুলুম ও অবিচার মন্দ

মানুষ ও মানবতা সুখী হবেহবে ধন্য

আমরা লড়ছি পুষ্পিত জীবনের জন্য।

মানুষ কেউ থাকবে না ক্ষুধাতুরনিরন্ন

মানুষ মানুষের ভাই বলে হয়ে যাবে গন্য।

থাকবে না কোনখানে মিথ্যার লেশ

থাকবে না কোনখানে আর বিদ্বেষ

হিংসা ও বিদ্বেষ হয়ে যাবে চির নিশ্চিহ্ন।

আমরা লড়ছি পুষ্পিত জীবনের জন্য।

মায়াময় বন্ধনে সকলেই হয়ে যাবে ধন্য

প্রেম প্রীতি মমতায় সকলেই হবে অনন্য

হক আর ইনসাফে হবে দেশ পূর্ণ

বর্ণ ও জাতভেদ হয়ে যাবে চূর্ণ

আমরা লড়ছি পুষ্পিত জীবনের জন্য

লড়ছি সুন্দর নয়া এক পৃথিবীর জন্য।

১৭/৯/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৬

বসে থাকার দিন নয় অদ্য

বসে থাকার দিন নয় অদ্য

দিন নয় বসে লিখি পদ্য।

দিন আজ শিখাসম জ্বলবার

দিন আজ হক কথা বলবার।

দিন আজ জনতার ঐক্যের

দিন আজ একটাই লক্ষ্যের

এক হয়ে স্বৈরাচার দলবার

হক কথা মত মুখে বলবার।

বসে থাকার দিন নয় অদ্য

এক হও জোট বাঁধো সদ্য

একসাথে ছাড়ো সবে হুংকার

জালিমের গদী করো চুরমার।

১৮/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৭

রেহাই নাই

কোথায় আমার সোনার ছেলে

জলদি আসো খেলা ফেলে

কোথায় শ্রমিক কৃষক ভাই

আজকে সবার ঐক্য চাই।

বাঁচার লড়াই সামনে

ভ্রাতৃহত্যার দাম নে

জোরসে বল স্বৈরাচার

এই মুহূর্তে গদী ছাড়।

কোথায় আমার মায়ের ধন

কোথায় বোনের হীরামন

মনের অস্ত্রে শান দে

বীরের মত জান দে।

ভোট চোরা তোর রেহাই নাই

খুন হয়েছে আমার ভাই।

১৮/৯/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৮

লাঠি নিয়ে নামেন এবার

ওয়াজ তো হুজুর কম করেননি

পাপ তো তাতে কমে নাই

চোরচোট্টাগুন্ডা বদমাইশ

কেউ তো দেহি দমে নাই।

মন্দ কাজটা বন্ধ করার

হুকুমটা রদ হয় নাই

আপনিও তো মারই খাচ্ছেন

কোথাও দেহি জয় নাই।

লাঠি নিয়ে নামেন এবার

হুজুর আপনার ভয় নাই

যাদের বুকে ঈমান আছে

তাদের কোন ক্ষয় নাই।

১৯/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬২৯

নয়া সুরুজ হাসবে

রাত্রি গেলযাত্রী গেলপাত্রী গেল না

পাত্রী যাবে কেমন করে বর তো এল না।

বর আসবে কেমন করে পাগড়ি পেল না

পাতিল ভরা রান্না হলকেউ তো খেল না।

জামাই আসবে গয়না নায়

মাতম করে কন্যার মায়

শালাশালী কান্দে গেটের পয়সা পেল না।

খুশির বাড়ির খুশি গেল

কন্যার সইমা লুসি গেল

বিয়ে বাড়ির মেহমান এসে ফিরে গেল সব

বাড়ি জুড়ে হাট ভাঙার চলছে কলরব।

খবর পেয়ে মুর্ছা গেল রূপসী সে কন্যা

চক্ষু থেকে নামলো তার অথৈ জলের বন্যা।

কন্যা গো তুমি কাইন্দ নানতুন বর আসবে

আবার একটা সকাল হবে নয়া সুরুজ হাসবে।

২০/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩০

দুই পাগলের হাসি

ক্যান যে তুমি দিবারাতি

ভয় সাগরে ভাসো।

ভয়ে ভয়ে গুটি পায়ে

আস্তে কাছে আসো।

কও না কথা চুপিচুপি

মিটিমিটি হাসো

বলো উনি এলে আসে

সঙ্গে সর্বনাশও।

উনি এলে যায় শুকিয়ে

মাঠের সবুজ ঘাসও।

মরা ঘাসে বসে খেলে

শালিক টিয়া তাসও।

মাটির পরশ পাথর যারা

হয় তাহাদের ফাঁসও

চুলার নিচে গোখরো সাপ

করে বসবাসও।

বোকার জমি পোকায় খায়

দেশ হয়ে যায় খাসও

নতুন করে নাটোর জেলায়

হয় গাঁজারের চাষও।

নেশার দ্রব্য বেঁচাকেনার

যায়রে পাওয়া পাশও

জোয়ান ছেলে যায় হারিয়ে

কেউ হয়ে যায় লাশও।

দেশের মালিক প্রজা হয়

কখনো হয় দাসও

বাঙালেরা হাওয়া খায়

কখনো খায় বাঁশও।

বুজদিল তুমি তাই উনাকে

তুমিও ভালবাসো

মনের দুঃখে তাইতো তুমি

অকারণেই হাসো।

দুই পাগলে কোলাকুলি

করি কাছে আসো

উনি মানে তিনি এলে

আসে সর্বনাশও।

২০/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩১

লাল মোরগের ছানা

লাল মোরগের ছানা

গা রে গান গা না

যে গান শুনে চোখে দেখে

অন্ধ এবং কানা

যে গান শুনে গুন গুন করে

হিজল তলীর নানা।

লাল মোরগের ছানা

গা রে গান গা না

যে গান গাইতে শরিয়তে

নেই রে কোন মানা।

যে গান শুনে মানুষে খায়

সবাই হালাল দানা।

মিথ্যে কথা কেউ বলো না

মিথ্যা বলা মানা

জেনেশুনে খেয়ো না কেউ

কভু হারাম খানা।

লাল মোরগের ছানা

গা রে গান গা না

বলে দে তুই যার যার হক

সেই তো কেবল পানা।

কোরান হাদিস পড়ে জানো

কি কাজ তোমার মানা।

লাল মোরগের ছানা

গা রে গান গা না

পরের ধনে কেউ কখনো

দিও না ভাই হানা।

এসব কাজ সবই মন্দ

মন্দ করা মানা।

লাল মোরগের ছানা

গা রে গান গা না।

২১/৯/২০২২বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩২

ফুলমতি সব কন্যা

মন্দগুলো বন্ধ করার

কাজ কি আমার একার?

কোথায় গেল বঙ্গদেশের

হাজার হাজার বেকার?

কোথায় গেল মানুষ গড়ার

উদ্যমী সব মেকার

মন্দগুলো বন্ধ করার

কোথায় গেল চেকার?

ভালো কাজের বাড়ছে শুধু

অদৃশ্য সব হ্যাকার

মন্দগুলো বন্ধ করার

কাজ কি আমার একার?

আসুন সবাই মন্দ থামাই

চাচা ফুপু মেয়ের জামাই

মামা খালা ছোট্ট বাবাই

আসুন সবাই মন্দ থামাই।

মন্দ যদি না থাকে

বইবে ভালোর বন্যা

ভালবাসার ফুল ছড়াবে

ফুলমতি সব কন্যা।

২১/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৩

ভাল হও

'ভাল হওবলা সহজ,

ভাল হওয়া সোজা না

বাটুল মানে বেঁটে মানুষ,

সব বাটুলই খোজা না।

উপোস করে রোজা রয়,

সব উপোসই রোজা না

আনন্দে যে বোঝা বয়

সে বোঝা তো বোঝা না।

আসুন নিজে ভাল হই

ভাল হতে তারপর কই।

ধান থেকে হয় চাল

আর চাল হয় খই।

গরম দুধই নরম হয়ে

তারপরে হয় দই।

নিজে ভালোর নাম নাই

এমন ভালোর কাম নাই।

২২/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৪

এইতো সুখের মূল

ইচ্ছে ডানা মেলে যেদিন

গেলাম সোনাতলি

গিয়ে দেখি ফুল বাগানে

হাজর ফুলের কলি।

সেই বাগানে যাচ্ছে হেঁটে

সবুজ পরীর দল

বাগান থেকে খাচ্ছে ছিঁড়ে

হরেক রকম ফল।

বললাম আমায় দে না দুটো

আমার পরী বোন

দুটো কেন পেট ভরে খা

একটা কথা শোন।

সালাম দিলে বিনিময়ে

কি পায় মানুষ বল

বিনিময়ে মানুষও পায়

শান্তি শতদল।

গালি দিলে গালি পায়

ঢিল দিলে পায় ঢিল

কিলের বদল পাইতে পারে

নিজেও দুটো কিল।

তুমি যদি মনে মনে

কারো মন্দ চাও

মন্দ এসে বলবে তোমায়

এই এসেছিনাও।

তুমি কি চাও মানুষ তোমায়

ভালোবাসুকতবে

ভালবাসা দাও ছড়িয়ে

তুমিও সারা ভবে।

এই না বলে পরীর দল

দিল আমায় ফুল

বললো সোনা ভাইটি আমার

এইতো সুখের মূল।

২২/৯/২০২২; বাদ জোহর।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৫

ভালো হবে দেশ

মনের মাঝে থাকলে ঘৃণা,

গর্বঅহংকার

সবার আগে এদের তুমি

দাও করে চুরমার।

কারো প্রতি মনের কোণে

রেখো না বিদ্বেষ

এভাবেই সব মনের মন্দ

হবে রে নিঃশেষ।

আমি জানিআমরা সবাই

নিজের ভালো চাই

পরের ভালো চাইলে সবাই

নিজের ভালো পাই।

তাইতো বলি আগে তুমি

পরকে বাসো ভালো

মনের থেকে দূর করে দাও

মনের যত কালো।

তখন দেখোমনটা তোমার

লাগবে ভালো বেশ

ভালো হবে শহরনগর,

ভালো হবে দেশ।

২৩/৯/২০২২; বাদ ফজর।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৬

কুমড়ো ফুল

মিষ্টি কুমড়োর হলুদ ফুল

চাঁদের বুড়ির কানের দুল

দুলতে পারে দোদোল দোল

রূপের রানী রূপ অতুল।

নাচতে পারে হাওয়ার তালে

বসে থাকে সবুজ ডালে

সইতে পারে রোদের তাপ

করে না সে মন্দ পাপ।

ভেজে যদি খাও

জবর মজা পাও।

২৩/৯/২০২২; বাদ জুমা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৭

নজরকাড়া সীমের ফুল

নজরকাড়া সীমের ফুল

দেখে এলাম নদী কূল।

ভোরের শিশির অঙ্গে তার

দেখতে আহা কি বাহার।

গায়ের রঙটা জাফরানী

রাজ মহলের সাফ রানী

চোখ ফেরানো যায়না তাই

কাছে ডাকে আয় না ভাই।

মানুষ সেদিক অবাক চায়

পিঁপড়ে এসে ফুল কি খায়

নাকি চেয়ে দেখে রূপ

সীমের ফুল যে অপরূপ।

২৩/৯/২০২২;বাদ মাগরিব।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৮

শায়েস্তা খাঁর আমলে

চাই না কোন গণতন্ত্র

চাই না কোন মহামন্ত্র

কোথায় গেল টাইম মেশিনটা

কোন কিছু না বলে

আমরা আবার ফিরে যেতে চাই

শায়েস্তা খাঁর আমলে।

উন্নয়নের চাই না জোয়ার

চাই না দেশটা গরুর খোঁয়াড়

মাহজনে যতোই আমায়

বলতে এটা 'নাবলে।

আমরা আবার ফিরে যেতে চাই

শায়েস্তা খাঁর আমলে।

ধানের ক্ষেতে মহাসড়ক

বাড়লে বাড়ে দেশে মড়ক

যতোই নাচুক মহাজনে

ইট পাথর তুই খা বলে।

আমরা আবার ফিরে যেতে চাই

শায়েস্তা খাঁর আমলে।

২৩/৯/২০২২; বাদ এশা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৩৯

জিদ করো না

বিড়াল করে মিউ মিউ

কুকুর করে ঘেউ

কথায় কথায় ছেলে মেয়ে

জিদ করো না কেউ।

অযথা জিদ অনেক সময়

বিপদ ডেকে আনে

শুধু শুধু জিদ করার তো

হয় না কোন মানে।

কোন কথাটা অধিক ভালো

বিবেচনা করো

সেই কথাতে শীশাঢালা

ঐক্য সবাই গড়ো

তাতেই সবার কল্যাণ হবে

বইবে শান্তির ঢেউ।

কমবে তাতে ঝগড়া বিবাদ

বাড়বে মনের মিল

জব্দ হবে মনের অহম

দুষ্ট আজাজিল।

জিদ করে কেউ করো নাতো

অযথা ভেউ ভেউ।

২৪/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪০

গরিবী হটাও

আমাদের দেশ থেকে গরিবী হটাও

দয়াবান প্রভু তুমিদাও দয়া দাও।

কত লোক ফুটপাতে থাকে রাস্তায়

কে রাখে তাদের খোঁজ শীত বর্ষায়

তারাও মানুষ প্রভুতাদের বাঁচাও।

তোমার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আদমের জাত

অসুস্থবৃদ্ধ কত পেটে নাই ভাত।

রহমের দৃষ্টিতে এদিকে তাকাও

দয়াবান প্রভু তুমি দাও দয়া দাও।

মানুষ পায় না খেতেবস্ত্রহীন থাকে

অসহায় ওরা প্রভু তোমাকেই ডাকে

তাদের পেটের অন্ন যারা কেড়ে খায়

সেইসব লুটেরাদের হাত ভেঙ্গে দাও।

শাসক সেবক নয়হয়েছে শোষক

শত কোটি টাকা ওরা বাইরে পাঠায়

নেয় না খবর কোন গরিবে কি খায়

হে প্রভু দয়াময় এই জালিম ঠেকাও।

২৪/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪১

এই দেশ আমাদের

এই দেশ আমাদের

আমাদের আমাদের আমাদের।

আকাশের নীল রঙ আমাদের

মাঠঘাটপ্রান্তর আমাদের

লাউডগালালশাক আমাদের

কোকিলের কুহুডাক আমাদের।

এই দেশ আমাদের

আমাদের আমাদের আমাদের।

ছায়াঘেরা বাংলাটা আমাদের

কুমড়োর জাংলাটা আমাদের

নদীনালাগাছপালা আমাদের

ঝিলমিল খাল বিল আমাদের

লাল পরীনীল পরী আমাদের।

এই দেশ আমাদের

আমাদের আমাদের আমাদের।

শরতের সাদা মেঘ আমাদের

বাঁশঝাড়কচুক্ষেত আমাদের

রোদ আর বৃষ্টিরা আমাদের

অবারিত দৃষ্টিরা আমাদের।

এই দেশ আমাদের

আমাদের আমাদের আমাদের।

ফুলপাখিঝর্ণারা আমাদের

সাগরের বেলাভূমি আমাদের

গারোমরোসাওতাল আমাদের

মিস্টার ও মোল্লারা আমাদের।

এই দেশ আমাদের

আমাদের আমাদের আমাদের।

ধনী আর গরীবেরা আমাদের

কিশোর আর নবীনেরা আমাদের

মাতা আর ভগ্নিরা আমাদের

শিশুদের হাসিগুলো আমাদের।

সবকিছু আমাদেরআমরাতো আল্লাহর

এইদেশ অগণিত মুটে মাঝি মাল্লার

কেউ যদি আসে ছুটে আমাদের ধরতে

মনে রেখো ওরা আসে অকারণ মরতে।

এই দেশ আমাদের

আমাদের আমাদের আমাদের।

এই দেশ আমাদের সকলেরসকলের।

২৫/৯/২০২২; বাদ ফজর। 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪২

আকাশ থেকে নামলো টিয়ে

আকাশ থেকে নামলো টিয়ে

কী যে করি তোকে নিয়ে

দিল্লী যাবি নৌকা দিয়ে?

নাকি যাবি গড়গড়িয়ে

বলবি কথা হড়বড়িয়ে।

এন করেঙ্গাতেন করেঙ্গা

লরি আসার লেন করেঙ্গা

তারপর দাদার ঠ্যাং ধরেঙ্গা

আসমান কিনে নেন

তেমন কিছু চাই না শুধু

মুখ্যমন্ত্রী দেন।

লাড্ডু খাবি ঘিয়ে ভাজা

ইলিশ খাবি তাজা তাজা।

২৫/৯/২০২২; বাদ জোহর।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৩

মানুষ আমি ভীতু

সব কথা কি বলা যায়?

সব কথা কি কই?

চোগলখুরী করবো আমি

এমন মানুষ নই।

কারা পাঠায় বিদেশ টাকা

দুদকের সে লিস্টি

বলছি কাউকেবলতে পারবে

কোন কুটুম ইষ্টি?

যারা যারা সরকারে যায়

রিলিফের মাল তারা যে খায়

সেই কথাটা কাউরে আমি

খোলাখুলি কইছি?

দুচোখে যা দেখছি সেসব

নিজে নিজে সইছি।

কইতো সবই এসব কথা

থাকতো যদি তিতু

কই না কিছু কারণ অতি

মানুষ আমি ভীতু।

২৫/৯/২০২২; বাদ আছর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৪

বাকির চেয়ে নগদ ভালো

আয়েশ করে পায়েশ খাওয়ার

খায়েশ তো তোর

মন্দ না।

চন্দনা।

এর জন্য নিজ শাশুড়ির

কম শোনেনি

গঞ্জনা

অঞ্জনা।

যার যে স্বভাবঅভাব হলেও

কবাব খেতে চায়

চাইলেই কি গাও গেরামে

কবাব নিত্য পায়?

স্বভাব দোষে নবাব মিয়া

রবাব শুনতে চায়

কোন কারণে রাত দুপুরে

বেদের নায়ে যায়।

এসব ভেবে পায় না কূল

বেদের মেয়ে চায় না দুল

হুজুর বলে ওসব ছেড়ে

আয়রে ফিরে আয়

ফুল চন্দন মেখে দেবো

তোর অঙ্গেগায়।

ভাল লোকের দাওয়াত পেলে

মন্দও হয় ভালো

সূর্য উঠলে

যায় পালিয়ে

রাতের আঁধার কালো।

এসো সবে দাওয়াত লই

দলে দলে ভালো হই।

আমি ভালো জগত ভালো

বাকির চেয়ে নগদ ভালো।

২৫/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৫

কে ভালো

তোমার চেয়ে আমি ভাল

আমার চেয়ে তুমি

তোমার আমার চেয়ে ভাল

পড়শি বাড়ির সুমি।

তারও চেয়ে ঢের ভাল

দারুণ ছেলে রুমি

রুমির চেয়ে অনেক ভাল

এ পৃথিবীর ভূমি।

সে করে না প্রতারনা

দেয় না অভিশাপ

মানুষ এতো খারাপ তারা

বুঝেও করে পাপ।

২৫/৯/২০২২; বাদ এশা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৬

ইস্যুর পরে ইস্যু

ইস্যুর পরে ইস্যু আসে

খেলতে মাঠে বিশু আসে

খেলতে খেলতে হিসু আসে

তাই না দেখে মিশু হাসে।

সে চলে যায় বাহিরে

মাঠে কেহ নাহি রে

খেলছে একা সরকারে

খেলছে খেলা দরকারে।

খেলতে খেলতে বছর যায়

সরকার মাঠে গোল টোকায়

তাকিয়ে দেখে তিন বোকায়

কর্মী নেতা তাও কোঁকায়।

আর কত যে দেখবো ইস্যু

বলতে পারিস তুই কি মিশু

এদিকে শোন পাগলা বিশু

রওনা দিছে মোগাদিসু।

ইস্যুর কোন শেষ নাই

দেশে সুখের লেশ নাই

বাঁচার পরিবেশ নাই

রানীর মাথায় কেশ নাই।

২৭/৯/২০২২; বাদ ফজর।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৭

মনের মাঝে মন রেখেছি

মনের মাঝে মন রেখেছি বন বিড়ালের জন্য

তোমার আছে সিংহ হৃদয় আমি তো নগন্য।

মোরগ ডাকলে ঘুম ভাঙ্গে মোরভাবি ফজর হলো

নামাজ পড়ে আর দেরী নয় এবার বিলে চলো।

অল্প জলেই হঠাৎ দেখি ভিজে গেছি আমি

কেউ বলে না সাবাস বেটাপুটি মাছও দামী।

বিলের জলে চিলের থাবাসাবা রানী নাই

আমরা তবু ডুব সাঁতারে শালুক তুলে খাই।

মা জননী চড়াও পানি বাণীর মোহর ইডেনে

জানার জিনিস কেউ জানে না আসল খবর হিডেনে।

মনের মাঝে মন রেখেছিপণ করেছি গোপনে

ময়ূরপঙ্খী নাও ভাসাবো ফলবে ফসল রোপনে।

২৭/৯/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৮

ছড়া লেখেন ক্যান

আমের গাছে আম ধরে

জামের গাছে জাম

পাশে একটা নদী আছে

বলেন কি তার নাম।

নদীর ভেতর পানসী নায়ে

বিবি মরিয়াম

বলেন দেখি মরিয়ামের

কোথায় বাড়িধাম।

মরিয়ামের গায়ে গয়না

হাজার টাকা দাম

গয়নাগুলো স্বামীর দেয়া

স্বামীটার কি নাম।

এসব যদি না জানেন

ছড়া লেখেন ক্যান

পারেন যদি ছড়া দিয়ে

সবাই জবাব দেন।

২৯/৯/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৪৯

মানবতার জয় দিন

খবর রয় না হিডেনে

কি ঘটেছে ইডেনে

দেশের মানুষ হগল খবর

জাইনা ফালাইছে।

ছাত্রীলীগে ছাত্রীলীগরে

ধইরা পিটাইছে।

লীগ মানে যে গুন্ডালীগ

বইলা ফালাইছে।

লীগের মাইয়া লীগের পোলা

দেশটা জ্বালাইছে

লীগ যে কত কুকাম করে

বইলা ফালাইছে।

ছি ছি মামা এসব কথা

শুনতে লাগে ঘেন্না

দেশে অনেক কুত্তা বাড়ছে

মুগুর হাতে নেন না।

কুত্তা কামড়ায় কুত্তি কামড়ায়

তামাশা দেখবেন কয় দিন

মানুষ যারা বাইচা আছেন

এবার ওদের ক্ষয় দিন।

কুত্তা মারেন কুত্তি মারেন

মারতে মারতে আগে বাড়েন

পশু মেরে আবার সবাই

মানবতার জয় দিন।

৩০/৯/২০২২;বাদ জুমা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫০

আয় ন্যায়ের পক্ষে

উৎসর্গঃমানারাত)

আমরা ছোট তাই বলে কি

মারবে নাকি ধরে

এমন নিঠুর কওতো তোমরা

হলে কেমন করে?

ইট সুড়কির শহর এটা

নেইতো খেলার মাঠ

আমরা খেলি স্কুল মাঠে

দেখো কি বিভ্রাট।

পাষাণ বড় ভাইরা সেটা

কাইড়া নিতে চায়

এ অবিচার কওতো তোমরা

কেমনে সওয়া যায়।

আমার ছোট খেলার মাঠে

তোমার কেন লোভ

তাইতো আমরা দলবেঁধে আজ

জানাচ্ছি বিক্ষোভ।

জালিম যদি জুলুম করে

ঠ্যাং ভেঙ্গে দাও তার

ন্যায়নীতি তো এটাই বলে

এটাই প্রতিকার।

বড় ভাইদের লোভ রুখতে

ছোট ভাইরা খাঁড়া

আয় জনতা ন্যায়ের পক্ষে

তোরাও আজ দাঁড়া।

৩০/৯/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫ ১

শিশুর স্বপ্ন

ছোট্ট শিশু মায়ের গালে

আদর করে চুমায়

বলেমাগো দিনের বেলা

কেউ কি এমন ঘুমায়?

অমা একি! মা কি ঘুমে হাসে?

আমার বিশাল বুকে মা যে

ঢুকে অনায়াসে।

মাগো আমি এখন তো আর

ছোট্ট খোকা নই

হুজুর পড়ায় আরবী পড়া,

স্যারে পড়ায় বই।

আমি এখন হয়ে গেছি

অনেক অনেক বড়ো

তবু কেন আজো তুমি

আমায় জাপটে ধরো?

বাবার জুতো অনায়াসে

লাগে আমার পায়

বাবার জামা এই যে দেখো

লাগে আমার গায়।

বোতলে দুধ আর খাবো না,

ওসব তুমি খাও

আমি চললামনীল সায়রে

বাইবো পানসী নাও।

তুমি ঘুমাওফুলদানিতে

ফুল সাজাবো আমি

এখন থেকে আমি মা আর

করবো না ফাজলামী।

আমি একাই যাচ্ছি বকে

মা তো কিছু বলে না

মা ঘুমোলে একা আমার

জীবন যেন চলে না।

তুমি থাকো আমি তবে

খেলার মাঠে যাই

যাবার পথে আল্লা নবীর

শানে গজল গাই।

১/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫২

রাঙা সই

মেঘ গুড়গুড় করে

মন টেকে না ঘরে

ইচ্ছে করে বিশ্ব ঘুরি

মেঘগাড়িতে চড়ে।

মেঘেরগাড়ি হাওয়ায় ভাসে

দাঁত মেলে দেখ বিজলি হাসে

বৃষ্টি হয়ে সে কাছে আসে

মেঘ কি আমায় ভালবাসে?

বলেঘরের বাইরে আয়

লুটিয়ে পড়ি তোর সে গায়

গায়ে যতো ময়লা আছে

দেই ধুয়ে সব অনায়াসে।

খেলবো আমরা লুটোপুটি

করবো আমরা ছুটোছুটি

ধরবো জলে টেংরা পুটি

মন্দ পেলে ধরবো টুটি।

মেঘ গুড় গুড় করে

গাছের পাতা নড়ে

বৃষ্টি টিপটিপ পড়ে

আমার পরাণ ভরে।

মেঘ তো আমার রাঙা সই

তার সাথে কতো গল্প কই।

২/১০/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৩

আদম সন্তান

তোমার স্বভাবে নেই কোমলতা ফুল

তাই দেখে এ হৃদয় হয়েছে ব্যাকুল।

দয়াল নবীর তুমি এ কেমন উম্মত

কাঠিন্য কি করে হয় তব খাসলত?

সকল ইনসানই হয়আদম সন্তান

তুমি কি জানোনা এ খোদার বিধান।

তার মানেমানুষই হয় মানুষের ভাই

মন্দ ভালসাদা কালসকলেই তাই।

কেউবা অসৎ হয়কেউ হয় সৎ

কেউ হয় নিচুমনাকেউবা মহৎ

ভিন্ন হয় ঘর কারোভিন্ন ধর্মমত

সকলে মানুষ ভাই তবু আলবৎ।

সকলেই হইতে পারি চাইলে মহান

আমরাতো সকলেই আদম সন্তান।

৩/১০/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৪

মানুষ মানুষের ভাই

যার মনে বাসা বাঁধে ঘৃণার পাহাড়

অন্তরেও তুচ্ছ ভাব রয়েছে যাহার

ধর্মবর্ণ নিয়ে যারা করে অহংকার

হিংসার অনলে যেজন হয় ছারখার।

সে জন নিকৃষ্ট সৃষ্টি যে হয় বিধাতার

বিধাতার সৃষ্টিকে যে বেসে যায় ভালো

অন্তরে যে গেঁথে নেয় প্রেমের আলো

পরের বিপদে যে জন দুহাত বাড়ায়

শ্রেষ্ঠতম মানুষ সে জন হয় দুনিয়ায়।

মানুষ তো মানুষই হয় মোহন মায়ায়।

কে মন্দ কে ভালোসে বিচারের ভার

কারো নয়সে ভার শুধু এক আল্লাহর

মুসলমান এ জগতে খলিফা বিধাতার

বিধাতার সৃষ্টি প্রেমই কাজ খলিফার।

তার সৃষ্টি ভালবাসার মুমীন তাবেদার।

সবাইকে বাসবে ভালপাখি,নদী,ফুল

সকলেরে দিয়ে যাবে প্রেম সে অতুল।

জগতের সব লোকই মানুষের ভাই

মানুষের প্রেম তাই পেতে আমি চাই

মানুষেরে তাই আমি প্রেম দিয়ে যাই।

৩/১০/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৫

মেহেরবান

আমার লেখা ভালো না,

পড়ার কোন দরকার নাই

আমি চলি আমার মতো

আমার কোন সরকার নাই।

নিজে রান্ধি নিজে খাই

গায়ে মাখি পাতার ছাই

কষ্ট দিলে ব্যথা পাই

তখন পুকুর ঘাটে যাই।

অন্তর দিয়া কান্দি

সুতা ছাড়াই বান্ধি

তখন আমার অবুঝ মন

বলেএকটু শান্ত হন।

রাতে দেয় না সোহাগ কেউ

দিনে দেয় না ভাত

খোদা ছাড়া কারো কাছে

পাতি না তাই হাত।

আল্লাহ বড়ই মেহেরবান

যা পাই তাহাই অফুরান।

৪/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৬

তেলাপোকা নাচছে

আঙুলে আঙুল রাখো

বজ্র করো মুষ্ঠী

ফসল খেতে শুয়োর এলে

তাড়াও তাদের গোষ্ঠী।

বোকার মতো আর চেয়ো না

স্বৈরাচারে তুষ্টি

নিজের খাবার দিয়ে কেনো

বাড়াও পরের পুষ্টি।

সবার খাবার একাই দেখি

স্বৈরাচারে খাচ্ছে

তোমার পেটে দিন দুপুরে

তেলাপোকা নাচছে।

৯/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৭

ফজর আলি তালুকদার

ফজর আলি তালুকদার

তিনটা ছিল তালুক তার

একটা ছিল ভালুক আর

বনের পশু বেশুমার।

তারাই ছিল প্রজা তার

সুন্দর তাদের ব্যবহার

লোকে বলে চমৎকার

দিন যাচ্ছিল সুখে তার।

এখন তাহার তালুক নাই

পানের দোকান বন্ধ ভাই

পান কিনতে কোথায় যাই

ভাবছে বসে দোকানদার।

ভাবতে ভাবতে জীবন শেষ

রাক্ষসে খায় বাংলাদেশ।

৯/১০/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৮

সফল হতে চাও

শান্ত পুকুর জলে

একলা একা চাঁদের বুড়ি

থাকে পানির তলে

তবু বুড়ির চরকা দেখো

আওয়াজ ছাড়াই চলে।

চড়কা বুড়ি বলে

কাজ করে যাও ছেলে মেয়ে

নানান ছলেবলে।

অলস যারা পায় না কভু

জয়ের মালা গলে।

সফল হতে চাও?

আপন মনে একা একা

কর্ম করে যাও।

কর্ম তোমায় নিয়ে যাবে

সফলতার দলে।

বয়স আমার কম হলো না

কাজ তো ছাড়ি নাই

তাইতো আমি জনম জনম

সুখে থাকি ভাই।

সুখে যদি থাকতে চাও?

রোজই তবে কাজ করে যাও।

১০/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৫৯

পানির নিচে চাঁদের বুড়ি

পানির নিচে চাঁদের বুড়ি

ডুব দিয়ে কি করে?

হাবু বলেশোনেন মামা

টেংরা পুটি ধরে।

ফোকলা বুড়ির দাঁত নাই

খাসির গোশত খায় না

কারো কাছে কোন কিছু

হাত পেতে সে চায় না।

বলেওরে পিচ্চির দল

জলে নেমে আয় না

প্রতি ডুবে একটা শালুক

দেবো তোদের মায়না।

খেতে তোদের নাড়ু দেবো

আরো দেবো মোয়া

আরো দেবো আখের গুড়

জিলিপি এক পোয়া।

কচি গালে এঁকে দেবো

আলতো করে চুম

খেয়ে দেয়ে জল বালিশে

শুয়ে দিবি ঘুম

ঘুমের থেকে ওঠে দেখবি

বেলা বেশী নাই

মাগরিবেরই আযান হচ্ছে

চল নামাজে যাই।

১১/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬০

নিয়তি

নিয়তিতে কি আছে তা যায় না বলা

মালিকের কাছে ধরা খায় ছলাকলা।

 

ফট করে বড়লোক, ফট করে নিঃস্ব

ফট করে রাজা ধরা খায় দেখে বিশ্ব।

 

রাজা হবে স্বপ্ন নিয়ে ঘুম গেলে রাতে

সূর্যের দেখা আর পায় না সে প্রাতে।

 

এই খেলা দেখে দেখে দিন করি পার

এই আছে এই নাই জালিম সরকার।

 

কত রাজা আসে যায় নিয়তির খেলা

এইসব ভুলে যায় জালিমের চেলা।

 

অস্ত্র দিয়ে যায় না রোখা নিয়তির নীতি

স্বৈরশাসক মনে তার মরনের ভীতি।

 

চারদিকে তাই তার কত সেনা রক্ষী

তবু রাজা মারা যায় দেখে নাতো পক্ষী।

 

জালিম বলো আলিম বলো কেউ কভু বাঁচে না

মরা লাশ ক্ষমতার দাপটে তো নাচে না।

১৭/১২/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬১

এ দেশের মাটি

বড় ভালবাসি আমি এ দেশের মাটি

এ দেশের মাটিতেই করি হাঁটাহাটি।

সুন্দর এদেশের সাগর নদী

বাতাসে সুর ভাসে সপ্তপদী

এই দেশ অপরূপ, কতো পরিপাটি।

 

দূর দেশে থাকি তবু দেশ থাকে মনে

সাধ জাগে ঘুরি আমি ঘুঘু ডাকা বনে।

এইদেশ সাহসের বান ডাকা যুবাদের ঘাঁটি।

 

এই দেশে চাঁদ নামে জোসনা মেখে

চোখ দুটো ভরে যায় নানারূপ দেখে

মাঠে মাঠে সোনা ধান থাকে আঁটি আঁটি।

 

এই দেশে ফুলে ফুলে প্রজাপতি বসে

প্রেম মাখা মন ভরে খেজুরের রসে।

এ দেশের মাটি যেন সোনার চেয়ে খাঁটি।

১৭/১২/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬২

শিশু

শিশুদের মনগুলো তুলতুলে যাদুময়

চোখগুলো অপরূপ, বড়ো

মায়াময়।

মুখের হাসিগুলো, বলে ভালবাসী

কলিজার ভেতরে বার বার আসি।

 

তুলতুলে হাত ও পা'য় আঁকড়ে ধরে

শিশুদের ছোঁয়া পেলে পরাণ ভরে।

শিশু নয়, ওরা যেন বেহেশতী হুর

দেখলেই এ হৃদয় হয় ভরপুর।

 

যতো দেখি ততো মন প্রাণ ভরে যায়

মন বলে ওরে সোনা আয় কাছে আয়।

শিশুরাতো শিশু নয়, প্রাণ ভোমরা

যার জন্য মন কাঁদে, কাঁদো তোমরা।

 

শিশুগুলো মনে হয় জান্নাতি দূত

আহা কি অপরূপ, অতুল নিঁখুত।

শিশুদের অপরূপ ছোঁয়া যত পাই

মনে হয় এর চেয়ে সুখ কিছু নাই।

১৮/১২/২২। বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৩

ভালোর জন্য লড়বো

ভালোর সাথে থাকবো আমি

ভালো কিছু করবো

ভালো কিছু করার জন্য

আমি সদা লড়বো।


ভালোর পথে ডাকবো

স্বপ্নের ছবি আঁকবো

মন্দ যদি সামনে আসে

টুটি চেপে ধরবো

ভাল কিছু করবো।


বাসবো ভালো দেশের মানুষ

দেশের নদী, ফুল

ভেঙ্গে দেবো মনের ভেতর

পাবো যতো ভুল

ভালোর পথে চলতে গিয়ে

মরতে হলে মরবো।


আমরা হবো শ্বেতবলাকা

সাদা মেঘের দল

আমরা হবো আলোর ঝর্ণা

পুষ্প শতদল

আমরা সবাই মিলেমিশে

নতুন সমাজ গড়বো

মন্দটাকে ছুঁড়ে ফেলে

ভালোটাকে ধরবো।

১৮/১২/২২। বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৪

অভাব দেশে আসবে

আবার দেশে আসবে অভাব

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন

বাবার মতো তিনিও কি

একই পথে চলেছেন?


স্বাধীনতার সুখস্বপ্ন

যতোই মনে এঁকেছি

শহর জুড়ে লাশের মিছিল

চুয়াত্তুরে দেখেছি।


সেই মিছিল কি আবার তবে

সত্যি ফিরে আসবে

দেশটা জুড়ে লাশের মিছিল

আবারও কি ভাসবে?


চোখের জলে বইবে নদী

তবু লাগবে তোমার গদী।


দুর্ভিক্ষের পুরাণ খেলা

নতুন করে খেলবে

দেশের মানুষ অবাক হয়ে

চোখের পানি ফেলবে।


এমন বুবু করো না

বাপের পথ ধরো না

মুক্তিযোদ্ধার গুলি খেয়ে

বাপের মতো মরো না।

১৮/১২/২২। বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৫

বলুন দেখি

শাল গজারীর বনের ভেতরড়

ছোট ছোট ঘর

সেই ঘরটায় বসত করে

সুখী নারী নর।

সেই ঘরটায় বসত করে

জলিল ও জব্বর

সেই ঘরটায় বসত করে

আতু মাতব্বর।


আম কাঁঠাল ও লিচুসহ

নানান ফলের গাছ

বেলাই বিলে বসত করে

নানা রকম মাছ।


মাঠে মাঠে ফলে সেথা

সোনা সোনা ধান

এমন একটা জেলা আপনি

কোথায় গেলে পান।

আরো আছে সেথায় কত

লাল শাপলার বিল

কত রকম পাখি আছে

নাইরে আবাবিল।


কোথায় গেলে পাবেন বলুন

কাঁচা পাকা আম

পারেন যদি বলুন দেখি

সে জেলাটির নাম।

১৯/১২/২২। বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৬

ইঁদুর রান্ধে আমরা খাই

আকুর টাকুর পাকুড় গাছ

তার নিচে কে জুড়লো নাচ

নাচ জুড়েছে ভূতের বউ

বিড়াল ফাঁকে খাচ্ছে মউ।

 

খাচ্ছে রাজা উজিরে

দস্যু কোথায় খুঁজি রে

পার্লামেন্টে দস্যু যায়

সঙ্গে নাচে ভূতের মায়।

 

পন্ডিত মশায় কান্দে

ভূত পেত্নি যায় চান্দে

চান্দে বুড়ির বাড়ি নাই

ইঁদুর রান্ধে, আমরা খাই।

২২/১২/২২। বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৭

হেসেই কুটি কুটি

লাফ দিয়েছে পুটি

তাইনা দেখে রঙহেডেড

হেসেই কুটি কুটি।

 

বোয়াল দিল লাফ

এই বোয়ালকে সামাল দেয়া

অনেক বেশী টাফ।

 

তবু তিনি হেসে বলেন

রঘু ডাকাত আমার মামা

গুন্ডা লীগের পান্ডা

সে পারে তিনশ বোয়াল

একাই করতে ঠান্ড।

 

ঘরের ভিতর ইঁদুর ছিল

তিনি বলেন, হাতি

চামচা কয় আমিও জানি

ইদু শেখের নাতি।

 

দেখলে লাগে ভয়

তারে দেখলে আমার আবার

বদনা দরকার হয়।

 

ভীতু ভীতু আচ্ছা ভীতু

আমি ভীতুর নানা

লগি বৈঠা হেলমেট ছাড়া

তাইতো আমি কানা।

২৩/১২/২২। বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৮

আল্লাহু আকবার বলো

আল্লাহু আকবার বলো, আল্লাহু আকবার

আমরা হবো শান্তির দুত বিশ্ব সভ্যতার।

 

প্রেমের কাছে হিংস্রতার হয় না কভু জয়

প্রেমের গুণে আমরা করবো বিশ্ব প্রেমময়।

আমরা হবো মানবতার আসল রাহাবার।

 

মক্কা বিজয় করে আমরা করে দেবো ক্ষমা

ক্ষমার গুণে মক্কা হবে নগর তিলোত্তমা

কন্ঠে মোদের থাকবে শুধু আল্লাহু আকবার।

 

এই কথাটা মেনে নাও, সত্য বিধান মানো

মিথ্যার আঁধার যেথা পাবে হানো আঘাত হানো

মুহাম্মদকে নাও না মেনে নবী ও সরদার।

 

আজকে তুমি দুশমন আছো কালকে হবে ভাই

সাম্য, ইনসাফ, ন্যায় সততা সবার মাঝে চাই

মন্দটারে সবাই মিলে করবো রে ছারখার।

২৪/১২/২২। বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৬৯

জয় ভোলানাথ জয়

আজব খবর গুজব ছড়ায়

 মানুষ কত মজা পায়

সেই খবরে বিশুর বাজান

খুশিতে শ্বশুর বাড়ি যায়।

 

কাঁঠাল দিয়ে পোলাও খাবে

গোস্ত খাওয়া বাদ

যে খেয়েছে এমন খাবার

সে জানে কি স্বাদ।

 

খেয়েছিল জ্বীনের রাণী

ফরিদপুরের দেও ঘাটে

তিরিশ বছর আগে তবু

আজও রাণী গাল চাটে।

 

ডুগডুগি আর বানর নাচ

থামলে পরে রাণী

এমন খবর গুলিস্তানে

দিল ছেড়ে বাণী।

 

এখন থেকে গোস্তের বদল

কাঁঠাল যারা খাবি

পঞ্চাশ বছর মাগনা খাবার

রাজকোষ থেকে পাবি।

 

এই নিয়ে কি হাসাহাসি

পাবলিক আছে রঙ্গে

এরই ফাঁকে স্বৈরাচারে

আসন গাড়ে বঙ্গে।

 

জয় ভোলানাথ জয়

রাতের ভোটের রাণী আবার

নতুন রাণী হয়।

২৪/১২/২২। বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭০

বাবার ভিটায় ঘুঘু

বাবার ভিটায় চড়ছে ঘুঘু

মরছে শালিকটিয়া

পাড়ার লোকে কানাঘুষা

করছে ওসব নিয়া।

ছেলের নাকি পাখ উঠেছে

বিদেশ দিছে পাড়ি

ছেলে আমার ভালই আছে

চালায় টেক্সি গাড়ি।

দামী দেশের চুরুট ফুঁকে

রঙিন পানি খায়

বাবা মরার মাসেক পরে

মরার খবর পায়।

বাতাস ওড়ে মেঘও ওড়ে

ওড়ে নিজের মন

ভাবছি বসে স্বপ্নে ওড়া

চলবে কতক্ষণ।

বাবার ভিটায় ঘুঘু চড়ে

চড়ুই বাজায় ঢোল

কাফনের কেউ কাপড় দে

নয়রে চান্দা তোল।

মা জানে না ছেলের খবর

ছেলে মায়ের খোঁজ

বড় হওয়ার স্বপ্ন তবু

দেখছি আমরা রোজ।

১৯/১০/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭১

মহত জীবন গড়ি

ইচ্ছে করে লিখি

ইচ্ছে করে লিখতে লিখতে

আরো কিছু শিখি।

কেমন করে মানুষ হয়

রবের প্রিয় বান্দা

কেমন করে পাপী করে

আরো পাপের ধান্ধা।

কেমন করে মানুষগুলো

মহত মানুষ

কেমন করে অন্য হৃদয়

করে মানুষ জয়।

ইচ্ছে করে আমিও তেমন

মহত মানুষ হই

এসব সবাই জানতে পারে

পড়ে মহত বই।

কেমন করে মানুষ ধরে

আল কোরানের পথ

কেমন করে গড়তে হয়

নিজের ভবিষ্যত।

ইচ্ছে করে তাইতো আমি

কোরান হাদীস পড়ি

কেউ না গড়ুক আমি যেনো

মহত জীবন গড়ি।

২১/১০/২০২২; বাদ জুম্মা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭২

সুখের নয়া সমাজ গড়ো

ভেবেছিলাম আমরা কজন

গড়বো নয়া দেশটা

থাকবে না আর ক্ষুধার জ্বালা

থাকবে না আর তেষ্টা।

থাকবে না আর জুলুম শোষণ

ভয়ের পরিবেশটা

করবে না কেউ দুর্নীতি ও

পুকুর চুরির চেষ্টা।

থাকবে না আর এ সমাজে

মন্দ কাজের লেশটা

সবুজ একটা বাগান হবে

আমার সোনার দেশটা।

থাকবে না আর ঘৃণা বিদ্বেষ

হিংসা যাবে ভুলে

পতিত যারা তাদের সবাই

বুকে নেবে তুলে।

যৌবনের সব শক্তি সাহস

দিলাম যাদের জন্য

আমায় এখন কষ্ট দিয়ে

তারাই ভাবে ধন্য।

সবাই এখন পরের ক্ষতির

করে নানা ধান্ধা

নিজের আখের নেয় গুছিয়ে

মুখোশপরা বান্দা।

এ পথে সুখ নাইরে ভাই

আজো সেটাই বলে যাই।

পারো যদি মান্য করো

সুখের নয়া সমাজ গড়ো।

২২/১০/২০২২; বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৩

একটা কথা দামী

একটা দামী কথা কই।

কি লাভ বলো বস্তাপঁচা

পড়ে হাজার বই?

ভালো কিছু পড়ো।

তেমন জীবন গড়ো।

লড়তে হলে স্বার্থ নয়

ন্যায়ের পথে লড়ো।

পড়ে যারা শিখে সাগর চুরি

তাদের চেয়ে ভালো মামা

অশিক্ষিত বুড়ি।

তোমার সাথে কেউ আসেনি

কেউ যাবে না সঙ্গে

কি লাভ বলো এই দুনিয়ায়

মেতে নানা রঙে।

পারলে কিছু পূণ্য করো

পাপ অনাচার ছাড়ো।

নামাজ পড়ে দিনে পাঁচবার

মনের শয়তান মারো।

এই কথাটাই দামী

বলে গেলাম আমি।

২৩/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৪

তিতুমীর

তিতুমীর ছিল বীরবীরদের নেতা

মুমীনের মতো ছিল বড় দৃঢ়চেতা।

মরণ কবুল তবু নোয়াবে না শির

গোলামীর পরবেনা পায়ে জিঞ্জির।

আকাশের মতো ছিল বিরল সাহস

মুছে নাই আজো তাই তার নাম যশ।

ইতিহাসে বেঁচে থাকে বীর খ্যাতিমান

বলে বাঁচোবীরসেনা গাজী শহীদান।

অন্যায় দেখেও যদি চুপ তুমি থাকো

মনে রেখো এটা কভু ঠিক হবে নাকো।

সুখ যদি পেতে চাওমন্দ তাড়াও

ভাল কাজে আগে নিজ হাতটা বাড়াও।

তিতুমীর ছিল বীরআমাদের ভাই

বাতিলের ভ্রুকুটি কি আমরা ডরাই?

২৩/১০/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৫

পদক সমাচার

এতো পদক কই যে রাখি

কেউ সে কথা কয় না

রেখেছিলাম খাটের তলে

ফেলে দিছে ময়না।

করছে আরো গজর গজর

জঞ্জালে ঘর ভরে

জঞ্জাল খেয়ে পাগলা কবির

কেমনে যে পেট ভরে।

আনতো যদি মুলা কলা

তাওতো গলায় ঢুকতো

পদক ডলে তবে পাগল

ছিঁড়তো না আর বুক তো।

চাল ডাল কেনার টাকা দিলে

কোন ভাগাড়ে যায়

কোথায় গেলে নিত্য দিনই

এমন জঞ্জাল পায়।

পদক রেখে এবার গিয়ে

বেগুন মরিচ আনো

রেঁধে দিলে খেতে পারবে

বউয়ের কথা মানো।

২৩/১০/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৬

নবীপ্রেমে কবি পাগল

নবী আর আসবে না বলেছে রাসূল

বলেনিতো আর কভু ফুটবে না ফুল।

অহী নাই আজো আছে তবু এলহাম

এলহাম যে যে পায় দাও তারে দাম।

নবী ছিলেন দয়াময় প্রেমের আকাশ

সেই প্রেম আজো করে কবিরাই চাষ।

নবী নাই আজো তবু কবি প্রেম বিলায়

ভালবাসা বেঁচে আছে সেই উছিলায়।

অহী আসা বন্ধ তবু এলহাম আসে

নবী থাকে মিম্বরে কবি রাখে পাশে।

কবির জন্য নবীর প্রেম,ভালোবাসা

টের পেলে সে কবির যায় হতাশা।

নবীপ্রেমে কবি পাগলকবি প্রেমে নবী

ইতিহাসে লেখা আছে আজো সেই ছবি।

২৪/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৭

ভাল কাজও ভাল নয়

ভাল কাজও ভাল নয় যদি বেশী হয়

ওটাকেই কালামে সীমালঙ্ঘন কয়।

যতটুকু খেতে পারো ততটুকুই খাও

বেশী খেলে বদহজম পেয়ে যাবে ফাও।

যতটুকু করা দরকার ততটুকুই করো

সারাদিন বসে বসে কে বলেছে পড়ো।

ফজরের নামাজ ভাই রাতে পড়লে হয় না

রাত এলে খেতে মানা রোযাতেও কয় না।

বাড়াবাড়ি ভাল নয়কোরানেও মানা

এই কথা তোমারওতো দরকার জানা।

ধর্মের নামে দাদা বাড়াবাড়ি ছাড়ো

জীবনটা সুন্দর হবে তবে আরো।

২৪/১০/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৮

আকুতি

যার যতো মুশকিল তুমি জানো সব

সকল বিপদ তুমিদূর করো রব।

তুমি ছাড়া কেউ নেই বিপদে আমার

মুশকিল যতো আছে সব করো পার।

মরাকে বাঁচাতে পারনিতে পার জান

আগুনের কুন্ডে নবীর বাঁচাও পরাণ।

সাধ্য নাই বান্দা তব করে গুনগান

বিপদে আমায় তুমি করো পরিত্রাণ।

আছি ঘোর বিপদে তুমি জানো সব

এ বিপদে সহায় তুমি হও ওগো রব।

কেউ নেই এ জগতে বিপদ তাড়াবার

আমি শুধু চাই প্রিয়মদদ তোমার।

আমার জীবন মরণ তোমারই হাতে

দয়া করো,চেয়ে দেখ এই আঁখিপাতে।

২৫/১০/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৭৯

চেষ্টা এবার করো

সত্য বলা কঠিন তবু

মুসলিম সত্য কয়

লেবাসধারী মুমীনবান্দা

মুসলমানই নয়।

কাফের সেনার পাগড়ি ছিল

পীরের চেয়ে বড়ো

আবু জেহেলী পাগড়ি কেন

সুন্নত বলে পরো?

তসবি টুপী ছেড়ে তুমি

যুদ্ধে নামো বীর

এলে ছুটে তোমার দিকে

পাল্টা মারো তীর।

পাপ করা সাফ এইতো তব

সত্যি কারের কাজ

অনাচার ও দুর্নীতি থামাও

গড়ো খোদার রাজ।

তসবি জোব্বার ভন্ডামী ও

ধান্ধাবাজী ছাড়ো

ঈমান এনে মুসলিম হওয়ার

চেষ্টা এবার করো।

৪/১১/২০২২; ইবনেসীনা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮০

ইচ্ছে হলে

ইচ্ছে হলে নড়তে পারো

ঘোড়ার পিঠে চড়তে পারো

রাঙা ফড়িং ধরতে পারো

ইচ্ছে হলে কারো ক্ষতি করতে পারো না।

ইচ্ছে হলেই জলে ডুবে মরতে পারো না।

ইচ্ছে হলে আম্র-কাঁঠাল খেতে পারো

ইচ্ছে হলে বন্ধু বাড়ি যেতে পারো।

ইচ্ছে হলে গানও তুমি গেতে পারো

কিন্তু তুমি

ইচ্ছে হলেই সুদের হারাম খেতে পারো না

দশ ও দুই বারোই হয়কভু তেরো না।

ইচ্ছে হলে সত্য পথে চলতে পারো

ইচ্ছে হলে মন্দ তুমি দলতে পারো

ভালো কথা জনে জনে বলতে পারো

বিনয়ে রোজ মোমের মত গলতে পারো

কিন্তু তুমি

ইচ্ছে হলেই পরের জিনিস

জবর দখল করতে পারো না

ঘুষের টাকায় নিজের পকেট

ভরতে পারো না।

কোনটা হক আর কোনটা নাহক

মরুভূমির কোনটা বাহক

এসব তোমার জানতে হবে

জানা হলে মানতে হবে

ইচ্ছে হলেই খোদার আইন ভাঙতে পারো না

আল্লাহ কিন্তু সব মানুষেরএকা কারো না।

৫/১১/২০২২; ইবনে সীনা হাসপাতাল।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮১

পড়া নিয়ে ছড়া

খোকা খুকু ভাই বোন

শোন তোরা শোন শোন

লেখা পড়া করে যা

ভাল দেশ গড়ে যা।

ভাল দেশ গড়তে

যদি হয় লড়তে

বীর বেশে লড়ে যা

লেখা পড়া করে যা।

করিস না অবহেলা

পড়া এক মজা খেলা

পড়ে চীনচাঁদে যা

স্বপ্নের বাসে যা।

ছোট বইবড় বই

কায়দাটা পড়ে লই

তারপর ছিপারা

পড় শিপুনিপারা।

ক-তে কলমকালি চাই

খ-তে একটা খাতা পাই

যা পড়ি তা লিখে যাই

লিখে লিখে শিখে যাই।

এবার পড়ার ছুটি চাই।

অমা! সোনা কয় কি?

এতেই পড়া হয় কি?

আরো পড়ো ইংলিশ

খেতে দেবো কিং ফিস।

কে নবীকে যে রব

সুর করে পড়ো সব

কারে কয় স্রষ্টা ও সৃষ্টি

কার দান ভাদরের বৃষ্টি?

আজকের মত পড়া শেষ

আমার দেশ বাংলাদেশ।

৬/১১/২০২২; ইবনেসীনা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮২

চলছে মিছিলচলবে

চলছে মিছিলচলবে

মিছিল কথা বলবে

দুষ্ট লোকের দুঃশাসন

মিছিল এবার দলবে।

স্বৈরাচারের জমাট বরফ

নতুন করে গলবে।

মিছিল কথা বলবে

চলছে মিছিলচলবে।

নামানি না দুঃশাসন

লড়বো এবার মরণপণ

এক হও সব জনগণ

মিছিল জোরে চলবে

মিছিল কথা বলবে।

দ্বীন কায়েমের আন্দোলন

করবে আমার হীরক মন

জ্বালিয়ে দেবো পাপের বন

নতুন ফসল ফলবে

চলছে মিছিলচলবে।

চলছে মিছিলচলবে

হকের কথা বলবে

চলছে মিছিলচলবে

হকের কথা বলবে।

১০/১১/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৩

ধোকা ও খোকা

খোকা।

ভেবেছিলাম বুদ্ধিমান তুই

তুই ও হলি বোকা?

তুই জানিস না দাঁত না মাজলে

দাঁতে যে হয় পোকা?

জানি, জানি, জানি

এসব কথা সব বলেছে

আমার ছোট নানী।

তবে যে তুই দাঁত না মেজে

ধরলি ফলের থোকা?

লোভ গো দাদা লোভ।

ফল খেতে যে আমার দাদা

ইচ্ছে করছে খুব।

ইচ্ছে করছে, খেতে পারবি

দাঁত মেজে নে আগে

সকালবেলা দাঁত মাজতে

ক মিনিট আর লাগে।

লোভ করাটা ভাল নয়

লোভে শুধু ক্ষতি

দিনে দিনে লোভীর বাড়ে

শুধুই অবনতি।

খোকা।

মাথায় যাদের পোকা

তারাই হয় বোকা

তারা খায় সকাল বিকাল

অবিরত ধোকা।

দাদা

তুমি বলো দেশের মানুষ

সব কি তবে গাধা

ধোকা তো খায় আমপাবলিক

মিনু পিনু রাধা।

তাদের ভুলেই ক্ষমতা পায়

আস্ত হারামজাদা।

চাপার জোরে কমলা হয়

গাছের পাকা তাল

বিড়াল ধরে সা রে গা মা

কুকুর নায়ের হাল।

১৮/১১/২০২২; বাদ জুমা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৪

ভালই আছে দেশ

দেশের মাঝে হচ্ছে হাজার উন্নয়ন

আপনি কেন যোগ করে সব

শূন্য কন?

ক্ষিধে পেলে চলে যাবেন

সরকারী সব দপ্তরে

হাজার রকম ধোকা পাবেন

খেয়ে ফেলুন খপ করে।

আমরা বলি মাগনা খাবার সরকারে কয় ফ্রি

খাওয়ার পরে পাবেন সবাই

মাগনা হাওয়াই বিড়ি।

পাবলিক আমার চেনা আছে

সবাই নিরেট বোকা

তাদের প্রিয় খাবার জানি

হরেক রকম ধোকা।

গরীবে খায় হরে দরে

বড় লোকের খোকা

কত খাবি বস্তায় ভর

বলে, সবাই টোকা।

গুজবে সব ভরে গেছে

উন্নয়নের দেশ

ধোকার ফুলে ভরে গেছে

সুন্দরীদের কেশ।

নাড়া দিলেই থোকা থোকা

পেয়ে যাবেন টাটকা ধোকা

খাবে সবাই চালাক বোকা

উন্নয়নের দেশ

ভালই আছে বেশ।

আহা, ভালই আছে দেশ।

১৮/১১/২০২২; বাদ আছর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৫

যখন আমি লেখক ছিলাম

যখন আমি লেখক ছিলাম

সম্পাদকরা আসতো

তাদের কথায় বুঝতে পারতাম

তারা ভালো বাসতো।

 

হায়রে সেদিন গেল কই

আর পাঠায় না মিষ্টি দই

তখন কাউকে দেখি নাই

কবি দেখলে কাশতো।

 

আগের মানুষ কবি দেখলে

দন্ত মেলে হাসতো

ছেলে বুড়ো নারী পুরুষ

সবাই ভাল বাসতো।

দূরদূরান্ত থেকে লোকে

কবি দেখতে আসতো।

১৯/১১/২০২২; বাদ মাগরিব।

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৬

গুনগুনিয়া পাখি

গুনগুনিয়া পাখিরে তুই

আয় আয় আয়

নাওয়া খাওয়া নাই পাখি

বেলা বয়ে যায়।

সময় হইছে গাড়ি আসার,

গাড়ি চইড়া আয়

পদ্মাসেতু পার হয়ে তুই

বাসে কইরা আয়।

পুরাণ ঢাকার ঘোড়ার গাড়ি,

টমটম চইড়া আয়।

দিল্লির বিড়াল ধরে ধরে

ইলিশের ছাও খায়

দার্জিলিংএর বানর এসে

গাছের আমড়া খায়।

ক্ষেতের ফসল পঙ্গপালে

উজাড় করে যায়।

গুনগুনিয়া পাখিরে তুই

আয় আয় আয়।

দিন দুপুরে গাছের ফল

পাড়ার পিপঁড়া খায়

দস্যু ডাকাত নৌকা চড়ে

মানুষ মাইরা যায়

ময়না, টিয়া, কোকিল ছানার

শিকল পরায় পায়।

চোরের মা শাড়ি পিন্দা

কত কি গান গায়

ঘটি, বাটি, বদনা সব

চোরে লিয়া যায়।

এদের জ্বালায় বাঁচা আজ

হইছে বিষম দায়

গুনগুনিয়া পাখিরে তুই

আয় আয় আয়।

২৩/১১/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৭

সাপ ও বাপের গল্প

স্বাধীনতার দলিল কোথায় দেখতে আমি চাই

দলিল দেখে আমি স্বাধীন বুঝতে যেন পাই।

মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতির নাম কি আছে তাতে?

নাকি তিনি হারিয়ে গেছেন কোন অপঘাতে?

স্বাধীনতার ডিক্লার দিল সই কি আছে তার?

ঘোষক ছাড়াই সভাভঙ্গ করে কোন বাটপার?

দেশের প্রথম রাজবন্দী হয় সেক্টর কমান্ডার

যারা তারে বন্দী করলো কই সে রাজাকার।

স্বাধীনতার দলিল কই, ইন্দুরে কি কাটে

রানী নিজে চাকরানী হয় চাকরানী যায় খাটে?

উল্টে গেছে দাবার গুটি, নাকি খেলার তাস

কে করলো নয় মাস যুদ্ধ, কে সে রান্না খাস?

পিন্ডির মেহমান দিল্লি হয়ে আনলো বয়ে সাপ

সে সাপ বলে, এখন থেকে আমি তোদের বাপ।

ভন্ড বাপের দন্ড জাতি বারে বারে পাচ্ছে

কৌটিল্যের কৌশলে সে ক্ষমতায়ও যাচ্ছে।

স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এক হয়ে আজ দাঁড়া

ক্ষমতার ওই মসনদ থেকে চানক্য চাল তাড়া।

২৫/১১/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৮

নতুন ধাঁধাাঁ

আমরা পেলাম এমন দল

উর্দুতে কয় নিজের নাম

মুখে হরিবল।

পিন্ডি দিল্লী দুই দেশে তার

দুইটা চোষা নল

সবাইরে সে যায় জুগিয়ে

যাতা খাওয়ার কল।

বল, হরিবল, বল।

খেরেস্টানের এংরাজি লীগ

নামের সাথে লাগায় যাতে

নামটাও হয় বিগ।

লড়াই লড়াই লড়াই চাই

লাগলে লড়াই তারা নাই

তারা আসে ফসল তোলার দিন

রূপসীদের মুকুট পরে

তিনশ কাল নাগিন।

তাদের চেনা ভার।

সুযোগ পেলে চেপে ধরে

তারা জাতির ঘাড়।

সবাই বলে উঁচু গলা

থাকে চোরের মার।

এ চোরকে যে চিনতে পারে

তার হয়ে যায় ফাঁসি

পারলে বলো চোরের নাম

কে হয় তার মাসি?

২৭/১১/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৮৯

নীতিকথার ইতি নাই

ভাল কথা বলতে পারে সবাই

ভাল কথা মানতে পারে ক'ভাই?

কজন পারে মিথ্যা কথা ছাড়তে?

কজন পারে ন্যায়ের পথে হারতে?

চুরি করা খারাপ কাজ কে জানে না ভাই?

জেনেশুনে আমরা কভু চোর কি হতে চাই?

তবে কেমনে পরের কলম নিজ পকেটে ঢুকে

কেন তবে পরের লেখা নিচ্ছো খাতায় টুকে।

পরের মন্দ বলতে হয় না, তাতে বাড়ে পাপ

তাতে বাড়ে মাথার ওপর শুধুই অভিশাপ।

পরের ভালো করলে তাতে নিজেরই লাভ হয়

এমন কথা আমার নয়, শাস্ত্রবিধি কয়।

তুমি আমি ভাল হলে জগত ভালো হবে

খোদার দেয়া এ ধরনী সুখ শান্তিতে রবে।

২৯/১১/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯০

ময়না কথা কইবে না

হয়নি এবং হইবে না

কয়নি এবং কইবে না

সয়নি এবং সইবে না

কনতো দাদা কি?

পান্তা ভাতে ঘি।

যতোই পড়েন বই

গদী পাবেন কই?

গদী চাইলে গুন্ডা হন

জিততে দশটা হুন্ডা লন।

ফুটান ফাঁকা গুলি

ভরবে ভোটের ঝুলি।

নইলে দাদা হইবে না

ভোটে কথা কইবে না।

নইলে হাতে ডান্ডা লন

পান্ডা মেরে ঠান্ডা হন।

নইলে কিছু হইবে না

ময়না কথা কইবে না।

৩০/১১/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯১

খেলা হবে

এবার হবে শাপলাচত্বর

ঢাকা শহর পুরোটা

কোথায় যাবে বিম্পি জামাত

নতুন পাগল নূরুটা।

দাঁত কেলিয়ে নল উঁচিয়ে

বলছে এসব ভাদার দল

এমন কথা যে সয়ে যায়

মানুষ নয় সে গাধার দল।

দশ তারিখে খেলা হবে

ঢাকা শহরে

জিতবে ভাদা না জনতা

কাকা কহরে।

মানুষ মেরে যায় না জেতা

ইতিহাসে কয়

খেলা শেষে বীর জনতা

যায়রে পেয়ে জয়।

২/১২/২০২২; বাদ জুমা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯২

বাঁকা কথা আঁকাবাঁকা

বাঁকা কথা আঁকাবাঁকা

ফাঁকা করে মন

বাঁকা কথা শুনলে মনে

বাড়ে জ্বালাতন।

যা বলার তা বলো সোজাসুজি

তবেই তোমার মন যে ভাল বুঝি

তবেই মনের সাথে মনের

বাড়ে আলাপন।

বাঁকা কথা আঁকা বাঁকা

দীল যখম হয় চাকা চাকা

বাঁকা কথা আর বলবো না

করলাম আমি পণ।

বাঁকা কথা বললে পড়ে

সুখ থাকে না আপন ঘরে

বাঁকা কথা বলবো না আর

বলো আমরণ।

৩/১২/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৩

তিরস্কারের পুরস্কার

তিরস্কারের পুরস্কার

কভু ভালো হয় না

তিরস্কার শুনে কেউ

আমিন আমিন কয় না।

তিরস্কার মন বিষিয়ে দেয়

তিরস্কার শান্তি কেড়ে নেয়

বিপাকে না পড়লে কেউ

তিরস্কার সয় না।

কারো মনে তাই দিও না কষ্ট

তিরস্কার আমল করে নষ্ট

তিরস্কারে অন্তর কাঁদে

মুখে কিছু কয় না।

তিরস্কারের জ্বালা

অন্তর করে কালা

সেই কালা দাগ

সহজে ক্ষয় হয় না।

মনের কথা মনে রাখে

মুখে কিছু কয় না।

৪/১২/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৪

গরীবের শীত

শীতের বুড়ি শীতে

এলো কষ্ট দিতে।

হীম হীম হীম ঠাণ্ডা

লড়লে হারে পাণ্ডা।

কোথায় পাবো শীতকাঁথা

কোথায় লেপ তোষক

চারিদিকে গুণ্ডা ঘোরে

চারিদিকে শোষক।

নাই জামা নাই শীতে।

কেউ কি পারিস দিতে?

সূর্যিমামা ঘুমায় কেবল

ভোর হলেও আসে না

ঘোমটাপরা আকাশটাতে

রাঙা সুরুজ হাসে না।

তার ওপরে কুয়াশা নামে

ভেজা ভেজা সব

সত্যি বলছি, মিথ্যে নয়

নয়কো এসব গপ।

তোমরাতো সব মজা করে

গরম পিঠা খাও

পিঠা নয় ভাই, পারলে আমায়

একটা কম্বল দাও।

৪/১২/২০২২; বাদ জোহর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৫

এই মাস বিজয়ের

প্রতিবাদ আর নয় প্রতিরোধ সামনে

এইবার ঢেলে দেয়া রক্তের দাম নে।

একজন গুম হলে জেগে উঠ পাড়া

একজন খুন হলে লক্ষ জন দাঁড়া।

ভয় নেই মজলুম খোদা আছে পক্ষে

সাহসের হাতিয়ার ভরে নে রে বক্ষে।

জালিমের অস্ত্রই কাল্ হবে তার

নিমিষেই গদী তার হবে ছারখার।

রাজপথ জনতার, জনগণ জাগবে

ভীরু নেবে অস্ত্র, মারামারি লাগবে।

অস্ত্র যে হেরে যায়, পাকি তার নমুনা

এই কথা ঠিকঠাক, আর কিছু কমু না।

এই মাস বিজয়ের, এই মাস জনতার

এই মাসে বিজয়ের স্বাদ নে বার বার।

৪/১২/২০২২; বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৬

ভাইরে

শোন সোনা ভাইরে

দেশে কিছু নাইরে

রাতে কি যে খাইরে

ভাইরে,

মন চায় একা একা

শশুরবাড়ি যাইরে

ভাইরে।

ঘরে কোন চাল নাই

বাজারের হাল নাই

পিঠে কারো ছাল নাই

ব্যাংক খালি টাকা নাই

মামা চাচা কাকা নাই

আয় গান গাইরে

ভাইরে।

ভাইরে

আমরা হলাম কলা গাছ

তালপাতার সিপাইরে

উন্নয়নের মজা তাই

কিছু কিছু পাইরে

চল যাই মহাসড়ক

ধরে ধরে খাইরে

ভাইরে।

গাছ আছে ডাল নাই

কারো হাতে মাল নাই

সিপাই আছে ঢাল নাই

বেতাল আছে তাল নাই।

হাড্ডি আছে গাল নাই

মরিচ আছে ঝাল নাই

ফসল করবো জমি নাই

হাট আছে মমি নাই

থালা আছে ভাত নাই

দেহ আছে হাত নাই

কই খানা পাইরে

ভাইরে।

তালপাতার সিপাইরে

আয় লড়ে যাইরে

ভাইরে।

লড়া ছাড়া বাঁচার যে

উপায় আর নাইরে।

ভাইরে।

৫/১২/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৭

আমরা কিশোর

আমরা কিশোর, আমরা তরুণ, আমরা নওজোয়ান

সবাই মিলে গাইবো আমরা সত্য ন্যায়ের গান।

দিকে দিকে ছড়িয়ে দেবো বিপ্লবী আহবান

যে ডাক শুনে মিথ্যা মন্দ হবে রে খান খান।

আমরা কিশোর, আমরা তরুণ, আমরা নওজোয়ান।

চারদিকে যতো আঁধার আছে আমরা করবো দূর

জয় করবো আকাশ, পাতাল, সপ্ত সমুদ্দুর।

কিশোর কন্ঠে গেয়ে যাবো স্বপ্ন বোনার গান।

আমরা কিশোর, আমরা তরুণ, আমরা নওজোয়ান।

ভয় ভীতি ত্রাস, করে দেবো নাশ রাখবো দেশের মান

আমরা চলবো বীরের বেশে সইবো না অপমান।

আমরা হবো শ্রেষ্ঠ মানুষ, মহত, মহীয়ান

প্রেম প্রীতি আর মায়ায় ভরা কামেলে ইনসান।

আমরা কিশোর আমরা তরুণ আমরা নওজোয়ান।

দিকে দিকে ছড়িয়ে দেবো কিশোরকন্ঠের বাণী

যে বাণীতে উঠবে হেসে নতুন জিন্দেগানী।

ভুলে যাবে মানুষরা সব, সকল নাফরমানী।

যে বাণীতে ভরা প্রিয় পবিত্র কোরআন

আমরা কিশোর, আমরা তরুণ, আমরা নওজোয়ান।

৬/১২/২০২২; বাদ মাগরিব।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৮

হাত ভেঙ্গে দাও

প্রধানমন্ত্রীর একটা হুকুম

তোমরা মেনে নাও

মারতে এলে সে সন্ত্রাসীর

হাতটা ভেঙ্গে দাও।

হোক না সে বাঘ ভাল্লুক

কিংবা বিড়াল ছাও

তারে দেখাও খুন্তি, কুড়াল

কিংবা লম্বা দা'ও।

সরকারী বা বিরোধী দল

যে আসবে ভাই মারতে

কোনো খুনী পারে না যেন

কারো জীবন কাড়তে।

বীর জনতা বাঙালীরা

পারে না কেউ হারতে

তারা পারে হাত পা ভেঙ্গে

সন্ত্রাসীকে মারতে।

আবার এটা দাও দেখিয়ে

পিএম হবে খুশী

যায় না বাঁচা কোন কালে

সন্ত্রাসীকে তুষি।

৯/১২/২০২২; বাদ ফজর।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৬৯৯

বাপের মেয়ে বুবু

বাপের মেয়ে বুবু।

আজো দেখি হিংসায় তোর

মনটা টুবুটুবু।

যা ইচ্ছে তাই করছিস

যাকে খুশি ধরছিস

যাকে খুশি জেলখানাতে

ইচ্ছেমতো ভরছিস।

রক্তে তোর হাত দুখানা

ভেজা জুবুজুবু।

কেমন কথা বুবু?

আদালত কয় রং হেডেড

পাবলিকে কয় পাগলী

মানুষ করিস গুম ও খুন

মন তোর এতো আগলী?

গুলি করে মানুষ মারিস

এতো কেন রাগলি?

তবে কি তুই সত্যি সত্যি

হয়ে গেলি পাগলী?

কখনো চিত কখনো তুই

থাকিস হয়ে উবু

কেমন কথা বুবু?

৯/১২/২০২২; বাদ এশা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০০

অদল বদল

ছেলে করে বিএনপি তাই

বাপকে ধরে মারলি

কেমনে এমন নিষ্ঠুরতা

করতে তোরা পারলি?

তোদের ঘরে মা বাপ বা

ভাই বোন কি নাই

কেমন হবে আমি যদি

বদলা নিতে যাই?

দশে মিলে একজন মারলি

বাহাদুরের পোলা

আমি তোরে ধরলে দেখবি

চক্ষে শুধু ঘোলা।

তুই যা করলি তার বদলা

আমি যদি চাই

মানুষ দেখবে তুই সন্ত্রাসী

এই দুনিয়ায় নাই।

১০/১২/২০২২; বাদ ফজর।


No comments

Powered by Blogger.