আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ৩৭০১-৩৮০০
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০১
মেট্রোরেলে চড়বো
মেট্রোরেলে চড়বো
খুশীতে মন ভরবো
গলাগলি ধরে আমরা
নতুন জীবন গড়বো
আমরা মেট্রোরেলে চড়বো।
আমরা গড়বো নতুন বিশ্ব
হাসিখুশি ভরা
আমরা গড়বো নতুন দেশ
জীবন আলো করা
মন্দটাকে দূরে ঢেলে
ভালোটাকে ধরবো
মেট্রোরেলে চড়বো
আনন্দে দেশ ভরবো।
মেট্রোরেলে চড়বো
আমরা স্বদেশ গড়বো
দরকার হলে জীবন দিয়ে
দেশের জন্য লড়বো।
দরকার হলে লড়াই করে
শহীদ হয়ে মরবো।
আমরা গড়বো নতুন জীবন
আলোয় আলোয় ভরা
আমরা গড়বো আমার দেশ
নতুন বসুন্ধরা
সুখের জন্য আমরা সবাই
নতুন করে লড়বো
আমরা মেট্রোরেলে চড়বো।
২৯/১২/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০২
মানুষ নামের ভূত
লাল সূর্য উঠেছে
বাগানে ফুল ফুটেছে
অলিরা সব জুটেছে
আয় রে তোরা আয়
পাখিরা গান গায়
খোদার দুনিয়ায়।
পাহাড় থেকে ঝর্ণাধারা বয়
পাখপাখালি রবের কথা কয়
রাতের আঁধার যায় পালিয়ে যায়
নতুন আলো মাখবি কে রে গায়
আয়রে তোরা আয়রে ছুটে আয়
কর আনন্দ ভোরের শীতল বায়।
উড়ে উড়ে যাচ্ছে পাখি খাবার তালাশে
হোক সে সাদা, হোক না কালা সে
বলছে, নয় ঘুম, হোক না বালা
সে
ছেলে বুড়ো সবাই এবার উঠো
নামাজ পড়ে রবের হুকুম, ছুটো
তালাশ করো রিজিক আর পরাণ ভরে খাও
রবের দেয়া অঢেল রিজিক, যত লাগে নাও
কার কি অভাব আছে সব খোদার কাছে চাও।
পরের ক্ষতি করে যারা, মানুষ নামের ভূত
আরো ভূত, কর্ম রেখে খেলে যে কুতকুত।
আয়রে তোরা আয়
অলসরা সব কর্ম রেখে অযথা ঘুম যায়।
৩১/১২/২২। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৩
গাজীর ছড়া
আগে শোনতাম গাজীর গান
খাইতাম বসে খিলি পান
পান বানাইতো নূরজাহান
গানে গানে বলতো কাদের
আল্লাহ বড়ো মেহেরবান।
আল্লাহ বড়ো মেহেরবান।
তিনি রহীম ও রহমান।
তিনি অসীম দয়াবান
জীবন তিনি করেন দান
ইয়া সোবহান ইয়া সোবহান।
ইয়া সোবহান ইয়া সোবহান।
তিনি রাজ্জাক, মহীয়ান
কোরআন দিলেন আর ঈমান
বললেন, শোন মুসলমান
তিনিই দিলেন পাক জবান।
তিনিই দিলেন পাক জবান
বললেন, শোন জ্বীন ইনসান
মেনে চলো তাঁর ফরমান
সৈয়দ শেখ সব এক সমান
আল্লাহ অতি মেহেরবান।
আল্লাহ অতি মেহেরবান
শোন শোন গাজীর গান
ঠিক রাখো সব নিজ ঈমান
মেনে চলো তাঁর বিধান
দুনিয়ার সব মুসলমান।
৮/১/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৪
হায়রে আমার দেশ
ভয় করো না, ভয়
জীবন করো জয়
সাহস করে এগিয়ে গেলে
জীবন সফল হয়।
ভীতু যারা ভয়ে মরে
প্রাণটা হাতে রাখে ডরে
জীবন জুড়ে তারা শুধু
পায় রে পরাজয়।
জীবন মরণ খোদার হাতে
অন্য কারো নয়
জন্ম মৃত্যু তিনিই দেন
দস্যু ডাকাত নয়।
থাকলে মরণ ছেলের হাতে
বাপ মারা যায় গুলিতে
চেষ্টা করে জাতি তবু
পারে না তা ভুলিতে।
কেউবা মরে ভয়ের চোটে
কেউবা মরে শোকে
মরণ এলে ঠেকায় নাতো
কোন আপন লোকে।
শত্রু করে মিটিং মিছিল
আপন লোকে মারে
শত্রুর মাথায় গুলি করে
বাঁচতে কি কেউ পারে?
চারিদিকে সৈন্য, রক্ষী
রাজা মারা যায়
রাজা মরলে প্রজার দল
মিষ্টি বিলায়, খায়।
হায়রে আমার দেশ
রাজার মনে পাই না খুঁজে
একটু দয়ার লেশ।
৯/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৫
খোদার হুকুম মানো
ফুলের বনে ফুল ভোমরা ফুলের মধু খায়
মধু খেয়ে গুনগুন করে কার গুণ ওরা গায়?
ওরে তোরা শুনবি যদি আয়
ওরে তোরা দেখবি যদি আয়
গুনগুন করে ফুল ভোমরা আল্লার গুণগান গায়।
যেমন গায় কোকিল ছানা আল্লাহু আল্লাহু
শুনতে গিয়ে আমরা শুনি ডাকে কুহু কুহু
তেমনি করে বনের পশু আল্লাহ ডেকে যায়।
নদীর জল ছলাৎ ছল
বলে তোরা আল্লাহ বল
মেঘ গুড়গুড় বলে ওরে খোদার পথে আয়।
আমরা মানুষ রইলাম বেহুশ ডাকতে জানি না
নামাজ রোজা করেও খোদার হুকুম মানি না।
আল্লাহর হক মেরে আমরা দম্ভ করে চলি
সুযোগ পেলেই পরের হক দুপা দিয়ে ডলি
তাইতো নানা দুঃখ কষ্ট জীবন জুড়ে রয়।
নবীর পথে চলো সবাই, খোদার হুকুম মানো
এ দুনিয়ায় শান্তি ও সুখ আবার তুমি আনো
দেখবে তোমার জীবন জুড়ে শান্তি ও সুখ বয়।
১০/১/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৬
তোমার সাথে
তোমার সাথে হাসতে পারি
খাইতে পারি পান
তোমার সাথে গাইতে পারি
মারেফতি গান।
নাইতে পারি, যাইতে পারি
পরাণ শেখের বাড়ি
চড়তে পারি তোমার সাথে
সিন্দাবাদের গাড়ি।
বলতে পারি যখন তখন
তোমার সাথে আড়ি
মিলতে পারি দাও যদি গো
মিষ্টি রসের হাড়ি।
মরতে পারি ধরতে পারি
কুটুম পাখির দাও
একই সাথে চলতে পারি
হাতটা যদি দাও।
তুমি যদি বন্ধু হও
মন্দ করবো দূর
বিশ্ব মাঝে ছড়িয়ে দেবো
হেরার আলো, নূর।
১০/১/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৭
বাবা আমার বাবা
বাবা আমার বাবা
আমার কাছে চকলেট আছে
তুমি কি তা খাবা
আমায় নিয়ে কবে তুমি
রাঙামাটি যাবা?
বাবা আমার বাবা
আমার মত শান্ত ছেলে
কোথায় তুমি পাবা?
রোজই করি লেখাপড়া
খেলি নাতো দাবা।
তবু আমার স্যারে বলে
আমি নাকি হাবা
আমি গাই নাতে রাসুল
তুমি সাথে গাবা?
ওরে আমার খোকা
কে বলে তুই বোকা
যে বলে তার মুখে পড়বে
বিচ্ছিরি সব পোকা।
আয় না কাছে আয়
তোর মত এক সোনামানিক
ক'জন বলো পায়।
তোরে পেয়ে আমরা খুশি
খুশি বাপ ও মায়।
মায়ের কোলে বসে ছেলে
এদিক ওদিক চায়।
১০/১/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৮
তাসলি
ভয়ের রাজ্য পাড়ি দিয়ে কেন কাছে আসলি
হাসা নিষেধ রাজ্য জুড়ে তবু কেন হাসলি।
ভালবাসার নিষেধ ভেঙে কেন ভাল বাসলি
মন কি বাঁধা যায় না তবে এই কি বললি তাসলি?
অবাক হয়ে দেখবি শুধু সারাদেশে উন্নয়ন
তা না দেখে করলি কেন অবশেষে ক্ষুন্নমন।
বললি কেন তোমায় ছাড়া চায়না কিছু আমার মন
ভালবাসলে যেতে হবে পশুর সাথে আবার বন।
সারাটা দেশ ভরে গেছে গুন্ডাপান্ডা শোষকে
কওতো দেখি এদের তোমরা সবাই তবে পোষকে?
কেন মানো যা বলে তাই স্বৈরাচারের ঘোষকে
ভীতুর মত লুকাও কেন লেপের বদল তোষকে।
যা চলে যা খুনের রাজ্যে থাকিস না আর তাসলি
অসময়ে বলতো আমায় কেন ভালবাসলি?
১১/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭০৯
তবু আমি ধন্য
আমার কোন মামা নাই
চাকরীর বাজার তামা তাই
বসে বসে মাটি খাই
তবু আমি ধন্য
এদেশের মাটি আজও
আছে আমার জন্য।
আমার কোন চাচা নাই
মাঠে লাউয়ের মাচা নাই
বন্দি পাখীর খাঁচা নাই
আমার জন্য বাঁচা নাই
ফেরারী সে জন্য
তবু আমি ধন্য।
মামা চাচা খালু নাই
ইটা আছে বালু নাই
মুখের ভেতর তালু নাই
ভরসা করবো ফালু নাই
পানির বদল বাতাস খাই
তবু আমি ধন্য
বাঁচবো দেশের জন্য।
১১/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১০
কী ঘটনা ঘটিল
কী ঘটনা ঘটিল।
বিদেশী এক বুড়োর কথায়
কেমনে মাইয়া পটিল।
সেই সে পটার খবর আবার
দেশ বিদেশে রটিল।
সেই খবরে দেশের মানুষ
ফোস করে ক্যান চটিল
মেয়েরা সব দল বেঁধে
বললো সবাই বটি ল।
কী ঘটনা ঘটিল।
বুড়োর পায়ে চটি ছিল
বললো চটি হাতে ল
যুবক বুড়োর কান্ড দেখে
সুন্দরী কি হটিল
ব্যাপার বড়ো জটিল।
বদির ঘাড়ে গদী ছিল
গদীতে কে আগুন দিল
গদী ছেড়ে সুন্দরী বউ
কোন বাগানে ছুটিল
কী ঘটনা ঘটিল
সুন্দরী যে হটিল।
১১/১/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১১
এক যে ছিল পাগলা রাজা
এক যে ছিল পাগলা রাজা
ফরজ নামাজ করতো কাজা
খাইতো নাকি তিলের খাজা
সঙ্গে খাইতো চিড়া ভাজা।
মুরগী বিলাই দেখলে বলতো
আজা আজা আজা।
তার ডাকে কেউ আসতো না
দেশের মানুষ হাসতো না
বিল্লি মোরগ কাশতো না
সুখে স্বদেশ ভাসতো না।
রাজার নাতির ভাঙা মাজা
তবু খাইতো নেশা গাঁজা
কে কারে দেয় দন্ড, সাজা
জনতা খায় পুইশাক তাজা
যমেরে কয় আজা আজা।
যম বলে থাম, সবুর কর
পাপের থলি ভরতে দে
পাপের থলি ভরা হলে
সময় মত মরতে দে।
১১/১/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১২
রক্ষী সেনার কান্ড
রাস্তাগুলো খোঁড়াখুড়ি চলছে বারোমাস
ধানের ক্ষেত ইট বালুতে হচ্ছে সর্বনাশ।
টেক্সি চলে সে রাস্তাতে রিকসা চলা মানা
দৈত্য এসে ফলবাগানে দিচ্ছে কেবল হানা।
দিনে দিনে ছোট হচ্ছে ম্যানগ্রোভ
সুন্দরবন
পাল্লা দিয়ে ছোট হচ্ছে সব মানুষের মন।
দয়ামায়া বিড়াল খাচ্ছে উড়াল দিচ্ছে সুখ
ঘরে ঘরে বাড়ছে শুধু অসহ্য অসুখ।
আইনী মেরে ডাইনী বাড়ছে শান্তি দিচ্ছে ডুব
ছাগল ভেড়া ডাক ভুলেছে, হয়েছে নিশ্চুপ।
আউলা মায়ের ভুষণ এবং মাথার কালো কেশ
এমন সময় কারা খাচ্ছে রঙিলা সন্দেশ?
ডাইনী মারবি নইলে মরবি দেশের মাইয়া পোলা
ডাইনী কিন্তু স্টক করছে আরো কামান গোলা।
একাত্তুরে অস্ত্র এনে মারলো তিরিশ লাখ
আবার আসছে অস্ত্র, এবার কলজে করবে চাক।
অস্ত্র এবং গোলাবারুদ মাছি মারতে আনে না
কে কিনেছে অস্ত্র কিন্তু সে খবরও জানে না
বেতন খাওয়া রক্ষী সেনা মরণ ডেকে আনে
দেশের মানুষ এই কথাটাই বলছে কানে কানে।
১২/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৩
মরণ আসে উইড়া
মরণ আসে উইড়া।
বাঁচতে কেউ পারে নাতো
শিশু যুবক বুইড়া।
মরার আগে পারলে দেখো
দুনিয়াটা ঘুইড়া
নইলে লোকে বলবে তোমায়
আস্ত একটা কুইড়া।
নিজের ঘরে লাগলে আগুন
যে খায় আলু পুইড়া
লোকে ভাবে লোকটা বোধয়
জন্ম থেকে লুইড়া।
মরার আগে দুনিয়া দেখো
আকাশ দেখো তারা দেখো
ভোরে শেখের পাড়া দেখো
হুজুর ভরা কারা দেখো।
দেখো কেমন জুলুম হয়
এই জুলুম কি দীলে সয়
তখন জালিম ধরতে হয়
না ধরলেও মরতে হয়।
তবে তোমার কিসের ভয়
ভীতু কি আর পায়রে জয়
জিততে হলে লড়তে হয়
জগত জুড়ে বীরের জয়।
১৩/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৪
টুনটুনি গো টুনটুনি
টুনটুনি গো টুনটুনি
কও তো দেখি কে খুনী
কে ধরে দেয় কার ফাঁসি
সে সরকার না সে চাষী?
কে সাহসী কে ভীতু
আয়না বেগম না মিতু
কে পোষে রে বাহিনী
বলনা এসব কাহিনী।
টুনটুনি গো টুনটুনি
কে বোকা বল কে গুণী
কে স্বৈরাচার কে খুনী
রূপসী না ফাল্গুনী।
১৩/১/২৩। বাদ জুম্মা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৫
যমের সাথে লড়তে নাই
পাগলা ঘোড়া ধরতে দে
বাঘের পিঠে চড়তে দে
ফাঁদ পাতে যে তারে একটু
ফাঁদের ভেতর পড়তে দে।
মরতে চাইলে মরতে দে।
ফান্দে পড়ে কান্দে বগা
চান্দের দিকে চায়
নাও ডুবে যায় জেনেও কেন
চড়লাম আমি নায়।
এরশাদ বাঁচলো জেলে যাইয়া
বাপে মরলো গুলি খাইয়া
আমি ভাবছি আমার এখন
কী হবে উপায়।
বাঘের পিঠে চড়তে নাই
মায়রে ডাকি বাপের ভাই
নিজে লইলাম মাথায় ছাই
হায়রে এখন কোথায় যাই।
বাঘের পিঠে চড়তে নাই
যমের সাথে লড়তে নাই।
১৩/১/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৬
গুজব
আজব কিসব ঘটলো দেশে সবই তেলেসমাতি
যা ঘটার সব ঘটেই গেল, ঘটলো রাতারাতি।
পিঁপড়ার পেটে খেলছে লুডু তালুকদারের হাতি
তাই না দেখে দেশের মানুষ জুড়লো মাতামাতি
খবর পেয়ে পগাড়পার জমির শেখের নাতি।
ভয় পেয়ে আরো পালিয়ে গেল টেকের হাটের তাঁতি
ছেলে মেয়ে ভুলে গেল খেলা জোলাভাতি।
পিঁপড়ার পেটে তবু খেলে তালুকদারের হাতি।
অমা, এটা কেমন কথা পিঁপড়ার পেটে হাতি?
খবর পেয়ে নীল সায়রে জ্বললো তারাবাতি।
চেয়ারম্যানের চামচা গেল ফেলে পুরাণ ছাতি
সোনা মিয়া কেঁদে বলে, ওরে বীরের জাতি-
এই খবরে যারা পালায় তারা
আত্মঘাতি
পিঁপড়ার পেটে কেমন করে ঢুকে একটা হাতি?
১৬/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৭
বাবা মানে
বাবা মানে বটবৃক্ষ, বাবা মানে ছাতা
বাবা মানে পিঠা তোলার অগ্নিসহা হাতা।
বাবা মানে তরকারিতে একটুখানি নুন
বাবা মানে ছেলের জন্য হাজারো শখ খুন।
বাবা মানে বাবা।
বাবা মানে আগলে রাখা বিপদ বাঁধার থাবা।
বাবা মানে নির্ভরতা, বাবা মানে সুখ
বাবা মানে ভয়ের রাতে সাহসভরা মুখ।
বাবা মানে বাবা
সাধ্যমত বাবা দেন তার কাছে যা চাবা
বাবা নাইতো ছাতা নাই, বটবৃক্ষের পাতা নাই
বাবা নাইতো কেউ বলেনা, আমি আছি বাবা
এখনো তো মরি নাই, ভয় তবে ক্যান পাবা।
১৭/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৮
দ্বন্দ্ব বিভেদ সব ভুলি
ফুলের বনে ফুলকলি
ডালে নাচে বুলবুলি
খুকী নাচে চুল খুলি
দেখনা তোরা চোখ মেলি।
নিশিকালে জোসনা আসে
হাত ধরি আয় ভালবেসে
গল্প করি হেসে হেসে
আয় পেয়ারা, আয় জলি।
আমরা সবাই আদম জাত
হাতে হাতে মিলাই হাত
দ্বন্দ্ব বিভেদ সব ভুলি
যেমন ভুলে ফুলকলি।
আমরা গাই প্রেমের গান
এ পৃথিবী যাহার দান
তার নামে আয় সুর তুলি
দ্বন্দ্ব বিভেদ আয় ভুলি।
১৭/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭১৯
সুখের বসত
যেই পাখিটা খাদ্য কুড়ায় পদ্মা নদীর বাঁকে
যেই পাখিটা রাত্রি কাটায় ভেজা পাতার ফাঁকে
সেই পাখিরও দিন কেটে যায় হয়না অভাব তার
সেই পাখিও শোকর জানায় কেবল আল্লাহপাকে।
পরের আহার খায় না কেড়ে বিশাল বপু হাতি
তবু তাহার সুখে কাটে প্রতি দিবস রাতি।
হরিণ শিয়াল একই বনে জীবন করে পার
পিঁপড়া সেও একই বনে খেলে জোলাভাতি।
মানুষ করে নাফরমানি অভাব বাড়ে তার
'স্বার্থ স্বার্থ' করে
মানুষ জীবন করে পার
লোভই তাহার জীবনটাকে করে বিষাদময়
সুখের নাগাল পায় না খুঁজে মানুষ দিবস রাতি।
১৮/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২০
আগে ঘরের যত্ন নাও
মেহমান এলে করতে হয় ভোজের নানা আয়োজন
ছেলেমেয়ের মিটাতে হয়, যেটুকু তার প্রয়োজন।
এই নিয়মই সুন্দর এবং স্বাভাবিক
এ নিয়মই ইনসাফের,এ নিয়মই সঠিক।
এ নিয়মটা মানলে হয় সুখী সকল আপনজন।
নিজের ছেলে অসুস্থ,পায় না খেতে ভাত
চিন্তায় কাটে অলস দুপুর দুশ্চিন্তাতে রাত
আগে বাঁচাও নিজ পরিবার
একান্ত স্বজন।
আগে মিটাও প্রয়োজন আর পরে বিলাসিতা
আপন স্বজন কষ্টে থাকলে মন হয়ে যায় তিতা
নিজের লোককে কষ্টে রেখে যারা বিলায় শিরনি
আপন লোকের অভিশাপ তারা টোকায় সারাক্ষণ।
বাড়ির ছেলে কষ্টে পড়ে যায় চলে সে বৃন্দাবন
সে হয়ে যায় বোহেমিয়ান, কেউ থাকে না তার স্বজন
পিতা তখন কান্দে বসে, ছেলে রয় না ঘরে
কান্দে বসে মাতা পিতা 'কোথায় গেল বুকের ধন'।
সে হয় সুখী যেজন নাকি ঘরের লোকের যত্ন নেয়
অসুখ এবং ক্ষুধার পেটে যেজন অসুধ, খাদ্য
দেয়
নইলে শুধু কানতে হয়, রয়না ঘরে আপন মন।
২০/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২১
অপু বাজায় বাঁশি
অপু বাজায় বাঁশি
বাঁশি বাজায় নোয়াখালি
যায় না গয়া কাশি।
বলে আমায় কিন্যা দে
শ্যামসুন্দরী দাসী।
এসব শুনে ঠোঁটের ভেতর
আমারো পায় হাসি
কার কপালে কি লেখেছে
জানে দাসীর রাশি।
হতে পারে জেলও দাসীর
হতে পারে ফাঁসি
দাসী তো নয়, হতে পারে
দাসী সর্বনাশী।
মায়ের চেয়ে দেশে এখন
ভালবাসে মাসি
এর চেয়ে আর যায় না বলা
আমি এবার আসি।
কারণ আমি নিজের জীবন
সবচে ভালবাসি
আমার কিছু যায় না যদি
দাসীরও হয় ফাঁসি।
১৯/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২২
চলছে খেলা
চলছে খেলা রঙের মেলা
চলছে খেলা বেশ
ইঁদুর বিড়াল খেলায় এখন
ভাসছে সারা দেশ।
কার সাথে কে আঁতাত করে
কে কারে দেয় তেল
তেলের বদল কে আটকায়
নিজের ভাগের জেল।
কখন কে কার বুবু হয়
কখন কে কার ভাই
কখন কে হয় বিরোধীদল
এরশাদ যখন নাই।
এসব হিসাব করে কি লাভ
কে বাঘা কে নূর
সবার নজর এখন দেখি
শুধু ফরিদপুর।
বিশ টাকা সের আলু এখন
সবাই আলু খোর
আলাদিনে বসে কেনো
খুঁড়ছে নয়া গোর।
গোর কি সবাই পায়রে দাদা
কেউতো জলে ভাসে
কার নিয়তি এসব দেখে
আড়াল থেকে হাসে।
১৯/১/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৩
দে না নয়া বানী মা
রানী মাগো রানী মা
দেননা নয়া বানী মা
আপনার কাছে জমা আছে
লিচু ফুলের হানি মা।
খাদ্যের যদি অভাব হয়
নাইরে তোদের কোন ভয়
লঙ্করখানা খুলে দিমু
হানি তোদের খাইতে
দিনে করমু লিস্টিফিস্টি
আসল খেলা রাইতে।
লোক যদি হয় কানি মা
টানবে তারা ঘানি মা
পড়লে চোখে ছানি মা
কি করবি তুই জানি মা।
দিবি চোখে সুরমা
খাবি বসে কোরমা।
সময় আছে সাত দিন
বিল্লি হাঁটে রাত দিন
দে না নয়া বানী মা
কে দাসী কে রানী মা।
১৯/১/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৪
বয়কট কর
পাঠ্য বইয়ে কি লিখেছে
অদ্ভুত সব কান্ড
পাতায় পাতায় ভরা দেখি
বিজাতীয় ভান্ড।
মুসলমানের পাঠ্য বইয়ে
আল্লাহ খোদা নাই
কোন মুসলমান গরু রেখে
কাছিম, শুকর খাই?
পাতায় পাতায় ববির কথা
নবীর কথা নাই
গজল রেখে কে কয় আমরা
কীর্তন বসে গাই?
যে বইয়ে নাই নবীর কথা
সে বই আমরা পড়ি না
যেদিন আছে মরণ লেখা
তার আগে কেউ মরি না।
যে লিখেছে এসব বই
তার নাকে মার ছুঁড়ে
আন্দোলনের ডাক দে সবাই
আর থাকিস না দূরে।
বয়কট, বয়কট, বয়কট কর
আন্দোলনের রাস্তা ধর।
২০/১/২৩। জুম্মা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৫
বাপের বাড়ি
বাপের বাড়ি সাপের ছাও
যারা তারে দেখতে চাও
তারা বাপের বাড়ি যাও
দেখবা সাপের দুইটা পাও।
এক পা থাকে বঙ্গে
এক পা থাকে বাইরে
বই কেটে সে তাতে করে
নবীজির নাম নাইরে।
লুট করে নেয় টাকাকড়ি
বিলি করে ইয়াবা বড়ি
লুটের বাহন নাও রে
ইয়াবা বড়ি খাও রে।
খেয়ে যখন হবে টাল
দেশটা হবে বেসামাল
তখন যে কি করবে তা
আমায় বলে নাইরে।
তবে সাপের গন্ধ আমি
বাপের ঘরে পাই রে।
সাপ মারতে লাঠি ধর
নইলে সাপের বিষে মর।
২১/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৬
লোকের স্বভাব
যারে আমার ভাল্লাগে
তার লেখা খুব ভাল
ভাল্লাগে না যারে তার
সব লেখাই কালো।
ভালোটাকে ভালো বলতে
শরম আমি পাই
আমিই শুধু ভাল লিখি
সবাই লেখে ছাই।
দোস্ত আমারে ভাল বলিস
বিরানী তুই পাইবি
আমার টাকার বিরানী তুই
মজা করে খাইবি।
কাউকে যদি বলি ভালো
নাম ছড়াবে তার
আমার চেয়ে নাম ফাটাবে
বেহায়া নচ্ছার।
তাইতো কমেন্ট করি না
পরের লেখায় ভাই
আমি জানি আমিই সেরা
এরচে সেরা নাই।
২১/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৭
নবাব বাড়ি
নবাব বাড়ি অভাব তাই
রাজার বাড়ি যাই
রাজার বাড়ি ভোর সন্ধ্যা
বাজার করে খাই।
রাজার বাড়ি পাহারা দেয়
তেলাপোকার ছাও
বলে, তোমরা ইলিশ রেখে
ফেনসিডিলটা খাও।
আমরা হলাম রাজার চাকর
হুকুম মতো চলি
রাজার কাছে কারা আসে
সাহস নাই তা বলি।
তাইতো আমরা বলি না তা
মুখটা রাখি বন্ধ
রাজা ভাবে আমরা বধির
এবং সাথে অন্ধ।
রাজা সাজে গাঁজাখোর
সুযোগে হয় রিজার্ভ চোর
শয়তান রাখে কান্ধে
আলেম ধরে বান্ধে।
কেন যায় সে যমুনা
সে কথাটা কমু না।
২১/১/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৮
সতিশের চাচ্চা
ভাত খায় তাঁত খায়
আর খায় আন্ডা
লোকটার নাম হলো
বোকারাম পান্ডা।
আর খায় কিল কুনি
নুন মাখা ডান্ডা
কানমলা খেয়ে খেয়ে
লাল করে কানডা।
একদিন তাড়া করে
তাকে নাকি পুলিশে
টপাটপ খেয়ে ফেলে
এক ডজন গুলি সে।
গুলি খায় কুলি খায়
মুলি খায় কাচ্চা
বলে আমি বোকারাম
নিখিলের বাচ্চা।
কথা নয় ঝুটবাত
একদম সাচ্চা
বুঝলেন কথা কিছু
সতিশের চাচ্চা?
২২/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭২৯
আচানক কারবার
ঘোড়াশাল গিয়ে দেখি একটাও ঘোড়া নাই
পোড়া ঘরে গিয়ে দেখি কোন আলু পোড়া নাই।
পথে ঘাটে কত লোক একটাও খোড়া নাই
লোক দেখি বেশুমার দীলে দীল জোড়া নাই।
একতার বন্ধনে কেউ নয় বান্ধা
সকলেরই আছে নাকি নিজ নিজ ধান্ধা।
সাত দল বাদ দল, দল আছে দশ বিশ
রাজপথ রেখে খায় সারাদিন কিসমিশ।
এই ফাঁকে সরকার সুতা কাটে চরকার
মুখে বলে সব দিমু যার যত দরকার।
দরকারে কাউকেই কোন কিছু দেয় না
রাতে ভোট নিয়ে নেয় দিনে ভোট নেয় না।
পাবলিক চায় না তবু জিতে বার বার
জনগণ টাস খায় আচানক কারবার।
২২/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩০
দেশ হতো ঠান্ডা
বদরাগী লোকটা
অদ্ভুত চোখটা
ইতিউতি চায়
হাতে পেলে ললিপপ
টপাটপ খায়।
সেও করে রাজনীতি
কাজ নীতি নাই
দিনমান মেরে কেটে
এটা ওটা খায়।
পাবলিক ভয় পায়
বদরাগী জয় পায়
কেউ তাকে করে নাতো ঠান্ডা
লোকে তাকে গোপনে
আজও ডাকে পান্ডা।
পান্ডার ঘাড়ে কয় পড়লেই ডান্ডা
দেশ হতো শান্তির দেশ হতো ঠান্ডা।
২৭/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩১
আমার মন ছুটে যায়
আমার মন ছুটে যায়
সবুজ শ্যামল গাঁয়
যেথা রাই সরিষা
দোলে হিমেল বায়।
যেথা বটের ছাঁয়ায়
রাখাল শোনায় গান
বনের ছায়া, পাখির মায়া
সবই খোদার দান।
যেথা বাতাস এসে বৃক্ষ শাখে দোলা দিয়ে যায়।
জোসনাধোয়া রাত্রি নামে
কাঁঠাল গাছের ফাঁকে
কিশোর মনে হাজার তারা
নতুন স্বপন আঁকে।
বাউড়ি বাতাস এসে খোদার মহিমা জানায়।
আমার মন ছুটে যায়
মায়ের আঁচল তলে
মন ছুটে যায় মায়ের ছোঁয়ায়
মনটা যখন গলে
ছোট বেলার তিলের নাড়ুর
স্বাদ কি ভুলা যায়।
আয়রে তোরা আয়
আমার সোনার গাঁয়।
২৮/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩২
ভিক্ষা খান
আগে খাইতো টিক্কা খান
এখন খায় ভিক্ষা খান
বাঙালী কয় খাওয়া ছাড়েন
নইলে দিমু ফিক্কা খান।
খোদার হুকুম হইলে পরে
কে বাঁচাইবো আপনের জান
বলতে পারেন সোনার চান
কোথায় যাবে ভিক্ষা খান?
ইতিহাসের শিক্ষা খান
শাহ চাইছিল ভিক্ষা প্রাণ
সেখান থেকে দিক্ষা খান।
ক্ষমতা তো বাঁচায় না
নিজের কিংবা বাপের প্রাণ।
২৯/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৩
আমার সুখের সীমা নাই
আসলে দেশে বিপদ ভাই
আমার কোন দুঃখ নাই
আসবে দেশে রিলিফ তাই
আমি শালা মিল্লা খাই।
ত্রাণের বাজেট বাড়বে আরো
ভাগ তো পাবো আমি তারও
আমার কোন চিন্তা নাই
আগের যতো ঋণ, তা নাই।
আসলে দেশে বিপদ তাই
আমার সুখের সীমা নাই
পাঁচতারাতে ব্যান্ড বাজাই
বিপদ আসুক, তাইতো চাই।
২৯/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৪
তুমি ভাগ্যবতী
সবুজ দেশের কন্যা গো
সবুজ বরণ শাড়ি
কোথায় তোমার ঘর কন্যা
কোথায় তোমার বাড়ি?
যাচ্ছো যেথা যাও না কন্যা
ঘোমটা কেন দাও
লজ্জা যদি পাও রে কন্যা
পিছন কেন চাও?
লজ্জা তোমার ভূষণ কন্যা
পর্দা তোমার ঢাল
তাইতো তুমি আব্রু ফেলে
হও না বেসামাল।
তাইতো তুমি ভাল মেয়ে,
তাইতো তুমি সতী
লোকে তোমায় তাইতো বলে
তুমি ভাগ্যবতী।
২৯/১/২৩।বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৫
যতোই করিস বাহাদুরী
যতোই করিস বাহাদুরী
যতোই করিস সীনাজুরি
যতোই করিস গর্ব অহংকার
চক্ষু দুটি বন্ধ হলে সবই অন্ধকার।
দালানকোঠা থাকবে পড়ে
যেতে হবে মাটির ঘরে
চাঁদ সুরুজ আর দেখবি নারে
থাকবেনারে দাপট ক্ষমতার।
সম্বল যদি থাকে পূণ্য
সেজন হবে শুধু ধন্য
বাকী সবাই হবে গন্য
দুষ্ট দুরাচার।
পাপের বিচার করবেন সেদিন
প্রভু নিরাকার।
সময় থাকতে হও হুশিয়ার
ছাড়ো সকল পাপ অনাচার
একবার গেলে ফিরবে না আর
কোনই দুরাচার।
সাড়ে তিনহাত বাঁশের ঘরই
ঠিকানা তোমার।
৩০/১/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৬
মধুর চেয়ে লাগে মধুর
মধুর চেয়ে লাগে মধুর
নূর নবীজির নাম
পড়ো, সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম।
তাঁর মাধ্যমে পেলাম আমরা
পবিত্র কোরআন
তিনিই দিলেন সবার জন্য
শরয়ী বিধান।
তিনিই দিলেন ভাল হবার
আখেরী কালাম।
তাঁর উসিলায় হলাম আমরা
সবাই মুসলেমীন
তিনিই করবেন শাফায়াত যে
শেষ বিচারের দিন
সেই নবীর ওপর এসো পড়ি
দরুদ ও সালাম।
তিনিই ফোটান সবার মনে
ভালোবাসার ফুল
তাঁর শরীয়ত ধরায় একক
শান্তি সুখের মূল
তাঁরই নামে এসো পড়ি
দরুদ ও সালাম।
৩০/১/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৭
বানর বৃত্তান্ত
যত আছে বানর জাত, তাদের বনে তাড়া
সভ্য সমাজ এবার একটু সোজা হয়ে দাঁড়া।
সমাজটা কর বানর মুক্ত, ওরা জানোয়ার
নাম যদিও নিখিল বাবু কিংবা আনোয়ার।
তাদের গায়ে বানর রক্ত আজো নাকি বয়
সমাজে সব অনাচার তাইতো আজো হয়।
বানরগুলোর জ্বালায় এখন জীবন রাখা দায়
কারা বানর? আজো যারা হারামের সুদ খায়।
হারাম খায় আর করে তারা হারাম যত কাজ
অশ্লীলতায় ডুবে থাকে পায় না ওরা লাজ।
হাটে ঘাটে বানর ঘুরে, মানুষ পাবি কই?
মানুষ তারা যারা পড়ে কোরান হাদীস বই।
কারা আছিস মানুষ আজো, কারা আদম জাত
দে তাড়িয়ে বানরগুলো, হাতে রাখরে হাত।
৪/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৮
আলোর নবী
আলোর নবী আলআমীন
দিল মোদের সত্য দ্বীন
জীবন করলো রূপরঙিন
দূর করলো সব মন কালা
জগত হলো উজালা, উজালা।
ফুটলো ধরায় আলোর ফুল
ভাঙলো সবার মনের ভুল
জীবন হলো রূপ অতুল
মিটলো সবার মন জ্বালা
জগত হলো উজালা, উজালা।
মিথ্যা বাতিল হলো লয়
প্রেমের আবার হলো জয়
ঢুকলো মনে আল্লাহর ভয়
পাপের ঘরে রয় তালা
জগত হলো উজালা, উজালা।
আয়রে বিলাই প্রেমের ফুল
দূর করি সব ময়লা, ঝুল
সাগর বানাই নদীর কূল
ভালবাসার দেই মালা
জগত হলো উজালা, উজালা।
৫/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৩৯
আমার একটা বাঁশি ছিল
আমার একটা বাঁশি ছিল
বাঁশির একটা দাসী ছিল
দাসীর একটা মাসী ছিল
তার জামাইটা চাষী ছিল।
চাষীর একটা খাসি ছিল
সেই খাসিটার কাশি ছিল
দেশটাতে বানভাসি ছিল
রাজাটা সর্বনাশী ছিল।
তার হাতে খুন, ফাঁসী ছিল
আলেম ধরে ফাঁসী দিল।
মুছলো যত হাসি ছিল
দুঃখ অনেক আসি ছিল।
তার ছিল হাজার সং
করতো তারা নানা ঢং
তার হেড ছিল পুরো রং
দেশটা ছিল ভাটির বং।
৬/২/২৩।বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪০
করো অনুভব
যার যত চাওয়ার আছে, তার কাছে চাও সব
যিনি সবার মালিক মনিব, যিনি সবার রব।
তিনিই দেন রোগ ব্যাধি, তিনিই করেন দূর
তিনিই দেন নিকষ রাত, তিনিই করেন ভোর।
তাঁর মহিমা গায় ঝর্ণা সাগর, পাখির কলরব।
শহরকে ধূলি বানান, ধূলিকে শহর
নহরকে পাহাড় বানান, পাহাড়কে নহর।
খরস্রোতা নদী তাতে জেগে ওঠে চর
সেই চরে গড়ে ওঠে কত বসত ঘর
সেই ঘরে জমে ওঠে নানা উৎসব।
তিনিই করেন অভাব দূর, মিটান সবার চাওয়া
মানুষের চাওয়া যত তাঁর কাছে যায় পাওয়া।
তাঁর কুদরতের মহিমা মন, করো অনুভব।
৯/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪১
চিল
চিলকে বলুন, চিল
আকাশ কেন নীল?
ফিঙে কেন নাচে
মানুষ কদিন বাঁচে?
মাছেরা কি খায়
পাখিরা কি গায়?
লাল জামা কে চায়
কে কয় কোলে আয়?
চিলকে বলুন, চিল
পড়লি না তুই ফীল
নরম কাদের দীল
কোথায় ছড়ার মিল।
জানার আছে কতকিছু
কয়টা আমরা জানি
খোদার হুকুম মানতে হয়
আমরা কি তা মানি?
১৩/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪২
ঝিঙে মাচা
ঝিঙে মাচায় ফিঙে নাচে
রিঙে নাচে আলী
দূর করে দাও মন্দ চিন্তা
মনের যতো কালি।
শপথ করো আমরা হবো
বীর সাহাবীর মত
আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে
হবো নাতো নত।
ফুলের মতো গড়বো জীবন
সুবাস ভরা প্রাণ
এই পৃথিবীর সুধা সবই
আল্লাতালার দান।
সবাই যেন হয় গো ভালো
সবাই থাকুক সুখে
মন্দটাকে সবাই মিলে
দিক না এবার রুখে।
১৩/২/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৩
অমূল্য ধন
বউ যদি প্রিয় হয়,
প্রিয় হয় নারী
মন টেকেনা অফিসে
মন চলে যায় বাড়ি।
কী আজব বানাইলা দেহ,
নদী জুড়ে ঢেউ
সবাই শুধু ঢেউ দেখে
মন দেখে না কেউ।
খোদার লীলা বড়ই আজব
হালাল গন্ধম খাও
হারাম গন্ধম খাইলে তুমি
জাহান্নামে যাও।
এই দুনিয়ায় অমূল্য ধন
প্রেমিক একটা মন
ভাগ্যে জুটলে শোকর করে
আল্লাহ আল্লাহ কন।
১৩/২/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৪
আবুদের নানা
আমাদের কাকা বাবু, আবুদের নানা
তার নাকি দুনিয়ার বহু কিছু জানা।
মানুষের জন্মের একটাই লক্ষ্য
আল্লাহর এবাদতে হয় যেন দক্ষ।
পশুপাখি, গাছপালা মানুষের জন্য
মানুষের সেবা করে সকলেই ধন্য।
ধন্য নদীর পানি, সুনীল আকাশ
ধন্য মেঘ, বৃষ্টি, কোমল বাতাস।
সকলেই মেনে চলে আল্লাহর আইন
এটা নাকি জগতের একক বিধান।
মানুষই তো শুধু পায় স্বাধীনতা ফুল
এই ফুল পেয়ে লোকে করে কত ভুল।
এই সব বলে রোজ আবুদের নানা
হালালটা ভোগ কর, হারামটা মানা।
১৩/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৫
আয় গো বুবু আয়
ইষ্টি কুটুম মিষ্টি কুটুম
কুটুম গেল কই?
কুটুম বাড়ি বরই গাছে
চড়তে লাগে মই
গাছে চড়ে কুটুম আসার
পথে চেয়ে রই।
নয়া জামাই আসবে আরো
সঙ্গে আসবে বুবু
সঙ্গে আসবে আরো একজন
নামটি যে তার তুবু
সেই কন্যা একা একাই
হতে পারে উবু।
মেঘ করেছে আকাশে
বুবু তবু আসে না
বুবু কি তয় আমারে
এখন ভাল বাসে না
বুবু নাই তাই বিড়াল ছানা
এখনতো আর হাসে না।
আয় গো বুবু আয়
মা জননী কাজ ফেলে
পথের পানে চায়।
১৫/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৬
কদম আলী কান্দে
কদমপুরে একচালা
ভাঙ্গা একটা ঘর
সেই ঘরে বাস করে
সোহাগী, তার বর।
বরের কোন চাকরী নাই
চাষ করবে জমি নাই
কষ্টে কাটায় দিন।
পারলে তারে সবাই মিলে
একটা চাকরী দিন।
দেশের এমন হাল
আশি টাকা চাল
চাকরী চাইলে বাবু চায়
হাজার টাকা ঘুষ
দোষ কি হবে ঢাললে বাবুর
মাথায় পুরান তুষ?
কদম আলী কান্দে
সোহাগী কি রান্ধে?
১৫/২/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৭
চাইরে পেটে ভাত
গাছে মরা পাতা রে
বসে, মাথা হাতা রে
মাথায় নাই ছাতা রে
নাইরে মামা, চাচা।
গাছের ফল কাঁচা
কষ্টে জীবন বাঁচা।
দয়াল নবী নাইরে
নাইরে কায়েম দ্বীন
দিনে দিনে বাড়ছে শুধু
মাথায় আরো ঋণ।
জাকাত দেশে থাকলে জারী
গরীব দেশে থাকতো না
বাসন্তীও পাতলা জালে
লজ্জা শরম ঢাকতো না।
আমরা আজও বাঁচতে চাই
চাইরে পেটে ভাত
দরকার হলে ভেঙ্গে দেবো
জালিম রাজার হাত।
দয়াল নবীর আইনে চলুক
এবার বাংলাদেশ
গরীব মারার দুষ্ট আইন
আয়রে করি শেষ।
১৫/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৮
ভুলগুলো ফুল হোক
ভুলগুলো ফুল হোক
শিক্ষার মূল হোক
মিথ্যার শূল হোক
তওবার হোক দুলদুল।
সত্যের তরবারি
ভেঙ্গে দিক মিথ্যার
জঞ্জাল, ভুল।
ভুল দেখে সততার
বয়ে যাক নদী কুলকুল।
ভুলগুলো ফুল হোক
প্রেয়সীর চুল হোক
নয় কানে দুল হোক
মাখনের মত হোক
ভুল তুলতুল।
ভুল হোক সততার
শিক্ষার মূল।
১৭/২/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৪৯
নয়ালি প্রভাত
পথে পথে কারা হাঁকে
প্রতি বাঁকে কারা ডাকে
কারা বলে আয় ওরে আয়
মুক্তির পথে আয় তিল তিল পায়।
পথে দিলে ব্যারিকেড, বাঁধার পাহাড়
মুক্তির সেনাদল কর চুরমার
ছুটে চল, ছুটে চল, চল দুর্বার
পথ হোক বন্ধুর, পথ পিচ্ছিল
মুক্তির পথে ছুটে চল তিল তিল।
আমাদের কাফেলা থামে নাই কোনদিন
দেশে দেশে কাফেলা ছুটে অমলিন
যেখানে জুলুম আর আছে অবিচার
সেখানে আঘাত তুই হান বার বার।
জালিমের বিষদাঁত কর চুরমার
ছুটে চল, ছুটে চল, চল দুর্বার।
অন্যায় যেখানে সেখানে আঘাত
ছুটে চল, ছুটে চল, চল দিন রাত
মিথ্যার সেনাদল কর কুপোকাত
নিয়ে আয় তোরা এক নয়ালি প্রভাত।
এই রাত কেটে যাবে, হবে ফের ভোর
সেই ভোর কারো নয়, হবে শুধু তোর।
হাবিল আর কাবিলের চিরায়ত দ্বন্দ্ব
আজো ভাই থামে নাই, হয়নি রে বন্ধ।
থামে নাই দাম্ভিক রাজার বড়াই
আজো চলে পথে পথে সত্য লড়াই
এই পথে ছুটে আয়, আয় রাহাগীর
ছুটে আয় মুজাহিদ, ছুটে আয় বীর।
জালিমের যতদিন না হয় অবসান
থামবে না কাফেলা, সত্যের গান
থামবেনা কোনদিন মুক্তির মিছিল
আমাদের দলে নেই ভীরু বুজদিল।
ছুটে চল, ছুটে চল, তাড়াতে এ
রাত
আমরাই এনে দেবো নয়ালি প্রভাত।
১৮/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫০
মিথ্যা বলা ছাড়ো
মিথ্যা বলা কবিরা গুনাহ
মিথ্যা কেন বলো
আর বলবোনা মিথ্যা কথা
শপথ করি চলো
শপথ করি চলো।
মিথ্যা যারা বলে তারা
মহা পাপী হয়
মিথ্যা কথা কেউ বলে না
থাকলে পাপের ভয়।
পাপের ভয়ে চক্ষু তাহার
হয় যে ছলোছলো।
চলো সবাই শপথ করে
সত্য কথা বলি
এখন থেকে সবাই চলো
ন্যায়ের পথে চলি।
মিথ্যা রেখে সত্য সবাই
সাহস করে বলো।
১৮/২/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫১
স্বপ্ন আঁকো
তুমি মনে স্বপ্ন আঁকো অনেক বড় হবে
তুমি হবে আদর্শবান সেরা মানুষ ভবে
বাসবে ভাল জগতজনে, বাসবে ভাল আলো
আঁধারনাশা তুমি হবে সবার চেয়ে ভালো।
হাসবে আকাশ, হাসবে বাতাস, বাসবে
ভাল লোকে
তুমি দিবে ব্যথার মলম ব্যথিতদের শোকে।
তোমায় দেখে সালাম দেবে ফুল কাননের ফুল
ভেঙে দেবে তুমি যতো মানব মনের ভুল।
বড় যতো হবে তুমি বিনয় ততো বাড়বে
ভালবাসায় তুমি সবার হৃদয় ও মন কাড়বে।
উদার হবে আকাশসম, বায়ুর মতো মন
পরের ভাল করার চিন্তা করবে সারাক্ষণ।
হৃদয় দিয়ে তুমি সবার দুঃখ ব্যথা বুজবে
ধরার যতো সৃষ্টি আছে তোমায় তখন খুঁজবে।
১৯/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫২
এ পৃথিবী আল্লাহর
রাত গিয়ে দিন আসে,
দিন
গিয়ে রাত
আঁধারের অমানিশা দিন করে কাত।
দিন গিয়ে রাত আসে,
রাত
গিয়ে দিন
ঘুম থেকে জেগে ওঠে হাজারো নবীন।
আলো দিয়ে ভরে দেয়,
কালো
হয় দূর
মনটাকে আলো করে কোরানের সুর।
কোরানের বানী তুমি রোজ করো পাঠ
হীরা আর জহরতে ভরো মনের মাঠ।
চৌদিক ভরে যাবে ভালো আর ভালো
যদি বুকে ভরে দাও কোরানের আলো।
বুক ভরে তুমি নাও আল্লাহর নূর
আঁধারের কালিমা করে দাও দূর।
এ পৃথিবী আল্লাহর,
তুমি
তাঁর দাস
মনে রেখ একথা রোজ,
বারো
মাস।
১৯/২/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫৩
মা জননী
আল্লাহ নবীর পরে সবচে
ভালবাসিস কাকে
খোকন সোনা বলল হেসে,
মাকে মাকে মাকে।
মায়ের চেয়ে আপন কেহ
নাইরে দুনিয়ায়
সন্তান ব্যথা পাওয়ার আগে
মায়ে কষ্ট পায়।
মা জননী সোনার খনি
সোনার চেয়ে দামী
মায়ের সমান হয় না কেহ
খালা, ফুপু, মামী।
সেই মাকে যে কষ্ট দেয়
সে যে কপাল পোড়া
মায়ের হাতে সবার আগে
দাও না ফুলের তোড়া।
আমরা সবাই মায়ের আদর
ভালবাসা চাই
মায়ের মত আপন কেহ
এ দুনিয়ায় নাই।
১৯/২/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫৪
আকাশ ভরা তারা
আকাশ ভরা তারা
জাগায় নিঝুম পাড়া।
বলে, দেখো আলো
নিজকে বানাও ভালো
তাড়াও মনের কালো।
কালো করে দূর
এসে হেরার নূর।
ঝাঁপিয়ে পড়ে রণে
সাহস জোগায় মনে।
মনে ফোটে ফুল
ভাঙে মনের ভুল।
আলো আলো আলো
নিজের মনে জ্বালো।
১৯/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫৫
আহা, বেশ বেশ
আহা, বেশ বেশ বেশ
আলো দিয়ে, ভালো দিয়ে
ভরে দেবো দেশ।
মনের বনে ভোর বিহানে
ফুটবে শত ফুল
ফুলের সুবাস ভেঙে দেবে
মনের যতো ভুল।
আমরা হবো আলোর নকীব
কালো করবো দূর
আলোয় আলোয় ভরে দেবো
পাহাড় সমুদ্দুর।
এদেশ আমার এদেশ তোমার
খাটি দেশের মাটি
তরুলতা, বৃক্ষ শাখা
মানুষ হবে খাঁটি।
ভালবাসার বান ছুটবে
ফুটবে মনের ফুল
ফুল কিশোরী হাসবে, খেলবে
এলিয়ে এলো চুল।
১৯/২/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫৬
একুশ আমার
একুশ আমার পলাশ শিমুল
কৃষ্ণচুড়ার ফুল
একুশ আমার শহীদ ভাইয়ের
রক্ত নদীর কূল।
একুশ আমার প্রতিবাদের
বজ্রকঠিন ভাষা
একুশ আমার বেঁচে থাকার
পল্লবিত আশা।
একুশ হলো দুঃশাসনকে
রুখে দেয়ার দিন
একুশ হলো রক্তমাখা
স্মৃতি অমলিন।
২০/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫৮
সাড়ে তিন হাত দেহে
সাড়ে তিন হাত দেহে আমার
কোরআন কায়েম নাই
আমি কেমনে সমাজ রাষ্ট্রে
কোরআন কায়েম চাই।
নামাজ পড়ি, রোযা রাখি
করি হারাম কাজ
সুদ ঘুষ খাই দেদার আমি
হয় না আমার লাজ।
আল্লাহর হকে ভাওতাবাজি
বান্দার হক খাই মেরে
লাভ নাই কোন সন্ধ্যা সকাল
তসবিদানা নেড়ে।
আল কোরআনের হুকুম মানো
পড়শিরে দাও সুখ
দাও না মুছে চেষ্টা করে
আত্মীয়দের দুখ।
পিতা মাতা থাকলে সুখে
সুখে পরিবার
দোজাহানে তার মত নেই
সুখী বান্দা আর।
নিজের দেহে কোরআন কায়েম
যে জন করতে পারে
সে সফল হয় ইহকালে
এবং পরপারে।
২২/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৫৯
আল্লাহ মহান
ফুলকুঁড়ি ফুল হয়ে ফুটবে
আলোর ফোয়ারা ফের ছুটবে
ফুলে ফুলে ভরে যাবে হৃদয় বাগান
ঘুম ভেঙে জেগে যাবে জ্বীন ইনসান।
সুরে সুরে গাইবে কোকিলেরা গান
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
এ পৃথিবী, ঘাস, নদী সব তাঁর দান
তিনি দেন সুবাসিত ফুলের বাগান
সেই ফুলে প্রজাপতি গেয়ে যায় গান
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
তিনি দেন চাঁদ তারা নীল আসমান
তিনি দেন পশু পাখি জীব অফুরান
তিনি তো দয়ার সাগর, তিনি রহমান
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
তিনি দেন ভালবাসা, হৃদয়ের টান
তিনি দেন মানুষেরে সেরা সম্মান
তিনি দয়াবান তিনি মহামহিয়ান
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
আল্লাহ মহান বলো আল্লাহ মহান।
২৩/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬০
বলবো ভালো
ভালোটাকে বলবো ভালো
মন্দটাকে মন্দ
বলবো তুমি জলদি করে
করো এসব বন্ধ।
ভালো ছেলে আলো ছড়ায়
মানুষ পেলে বুকে জড়ায়
কারো সাথে অযথা সে
করে নাতো দ্বন্দ্ব।
সে বলে, তুমি ফুল নেবে ভাই, ফুল
বুদ্ধিমানে বারে বারে করেনা এক ভুল
সুবাস ছড়ায়, অযথা সে ছড়ায় না দুর্গন্ধ।
চাইলে তুমি পাইতে পারো
সুবাস এবং আলো
চাইলে তুমি হতে পারো
ভালোর থেকে ভালো
মনের চক্ষু মেলে দেখো
নও তো তুমি অন্ধ।
২৩/২/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬১
কে গো তুমি?
কে গো তুমি?
বখতিয়ারের সেনা নাকি
তিতুমীরের কেউ
কোথা থেকে আনলে তুমি,
এত আলোর ঢেউ?
হাসে আকাশ, ভাসে বাতাস,
ভাসে হৃদয় মন
সবার সাথে জুড়লে তুমি
কিসের আলাপন?
হেসে হেসে বললে তুমি,
এ কোরআনের নূর
এ আলোতে মনের আঁধার
সব হয়ে যায় দূর।
এ আলোটা রাখলে মনে
ময়লা মনে থাকে না
এ আলোটা থাকলে সাথে
শয়তান কাছে ডাকে না।
প্রতিদিনই এ আলোটা
তাইতো মাখি গায়
শয়তান যেন আর আমারে
নাগাল নাহি পায়।
বাংলাদেশের মানুষ ভালো
পায় খোদারে ভয়
তাই এসেছি মোমিন বান্দার
আনতে নতুন জয়।
২৪/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬২
বসন্ত বাতাসে
ঝিরিঝিরি বাতাসের বসন্ত এ বয়
এই মনে শিহরণ দোলা দিয়ে যায়
ফুলের সুবাসে ভাসে এই তনুমন
কারে যেন এ হৃদয় খোঁজে অনুখন
কার লাগি এ হৃদয় করে হায় হায়।
কোকিলের কূহূতানে
ঢেউ লাগে তনুমনে
ক্ষণে ক্ষণে এই মন সুদূরে হারায়
সাগরের ঢেউ যেন বুকে উছলায়।
এই প্রেম শিহরণ কোথা পেলি তুই
কোথা পেল এ সুবাস বেলি আর জুঁই
বাতাসের শন শন কার গান গায়
তাঁর কথা আয় মন ভাবি নিরালায়।
আয় মন তাঁর কথা ভাবি নিরালায়।
২৪/২/২৩। বাদ জুমা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬৩
বাকুম বাকুম
বাকুম বাকুম কইতরি
আয় না বসে বই পড়ি
মেলায় আছে মেলা বই
আয় না দুটো কিনে ৰই।
বই চিনাবে অচীন দেশ
সঙ্গে আমার বাংলাদেশ।
চলে যাবি আমাজান
শুনতে পাবি পাখির গান।
গানের সুরে ভরবে মন
দেখবি ঘুরে সুন্দরবন।
সবই কিন্তু খোদার দান
সাগর নদী জ্বীন ইনসান।
২৪/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬৪
হতাম যদি নদী
হতাম যদি পদ্মা মেঘনা লক্ষ্যা মধুমতি
হতাম যদি কর্ণফুলি, খরস্রোতা নদী
ভাসিয়ে নিতাম খড়কুটো আর আবর্জনা সব
দাওনাা আমায় এমন সাহস শক্তি মহান রব।
রাখতাম না আর বাংলাদেশে দুরাচারের লেশ
স্বৈরাচারের জুলুম থেকে মুক্ত হতো দেশ।
দূর হতো সব ঘৃণা বিদ্বেষ অহংকারীর দল
ভাসিয়ে নিতাম দুঃশাসনের বাঁধার বিন্দাচল।
ইচ্ঝে করে জ্বলে উঠি অগ্নি মশাল হয়ে
সিন্দাবাদের দৈতঢ আর যাবো কত বয়ে
সইবো কত দুঃশাসনের নিঠুর অথৈ জ্বালা
দুঃশাসনের ঘরে ঘরে ঝুলিয়ে দিতাম তালা।
বাঁচার মত সুখের সমাজ গড়ে দিতাম দেশে
কোলাকুলি করতো মানুষ মনের সুখে হেসে।
২৪/২/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬৫
ঘুমরাজ
ঘুমরাজ ঘুম যায়, চুম দেয় টিয়ে
নানরুটি ভেজে দেয় জমা ঘি দিয়ে
উঠ বাবা, উঠ উঠ, উড়ে উড়ে যা
হিংসুটে যারে পাবি তারে ধরে খা।
তারে খাবি যে ছেলে মিছে কথা কয়
যার মনে নাই মোটে আল্লাহর ভয়।
আর খাবি প্রতারক, ধোকাবাজ ধরে
তারপর চলে যাবি জালিমের ঘরে।
ঘুম ভেঙে জেগে উঠ্ ঘুমরাজ তুই
মরা ঘুমে ভরে গেছে বাংলার ভুঁই।
চারদিকে শকুনের শুধু দাপাদাপি
ধরে ফেল্ সুদখোর, খুনী আর পাপী।
ঘুমরাজ শাহবাজ উঠ্ বাপধন
শুয়ে শুয়ে নিপীড়ন সবি কতক্ষণ।
ঘুম ভেঙে জেগে যাক মাঠ ঘাট বন
ঘুম ভেঙে জেগে যাক মানুষের মন।
২৫/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬৬
কিশোর বেলা
কিশোর বেলার দিনগুলো হায় ভুলা কিরে যায়
লাজুক হাসির মিষ্টি ছেলে ঘুরতো পাড়াগাঁয়।
বাসতো ভালো ফুপু, খালা
মা বলতো, আ মোর জ্বালা
ডানপিঠে এ ছেলে নিয়ে কি করি উপায়।
ধরতাম ঘুরে ঘুঘুর ছানা
খেতাম ভেজে মটরদানা
বর্ষাকালে ঘুরতে যেতাম চড়ে কোষার নায়।
ধঞ্চে ক্ষেতের আলের পাশে
পিয়াজের ফুল মুচকি হাসে
হলুদ বরণ সর্ষে ফুল দুলতো মৃদু বায়।
বকতো স্যারে গাধা বলে
ভরতো পকেট বকুল ফুলে
সেদিন কি আর ফিরে পাবো কোনকালে হায়।
অরুণরাঙা মিষ্টি ভোরে
দেনা আমায় সেদিন ওরে
এ শহরে আমার যে আর মন টেকে না হায়।
কিশোরবেলা এ মন আমার ছুটে যেতে চায়।
২৫/২/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৬৮
মন্দ করা ছাড়ো
কেন তোমরা নামাজ পড়ো
রোযা করো, কও
কোরানের আইন দেশে নাই
এটা কেমনে সও?
দুঃশাসনকে রুখে দেয়া
জানি ফরজ কাজ
সে কাজে নেই মন তোমার
বলোতো ক্যান আজ?
ফরজ রেখে দোয়া তাবিজ
করে কি লাভ বলো
পরের হক মেরে মেরে
স্বার্থ নিয়ে চলো।
লম্বা জোব্বা আবু জেহেল
পরতো জানি রোজ
হাদীস পড়ো, কোরান পড়ো
রাখো কি তার খোঁজ?
আমল মানে কর্ম করা
কর্ম ভালো করো
সুদ, ঘুষ আর মিথ্যা ছেড়ে
হালাল পথটা ধরো।
নফল নিয়ে বাড়াবাড়ি
এবার তুমি ছাড়ো
মন্দ করার ইচ্ছেটাকে
গলা টিপে মারো।
২৫/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭০
ইনসাফ চাই
গান লেখে গীতিকার
খোঁজ নেই তার
সুর করে ধরা খায়
প্রিয় সুরকার।
নাম ফাটে শিল্পীর
শুধু বার বার।
এইভাবে কারো হক
উড়ে উড়ে যায়
এইভাবে কারো হক
কেউ খুঁড়ে খায়
এইভাবে আজো দেখি
চলে অবিচার।
মানুষের হক দিতে
ইসলাম চায়
সেই হক মেরে মেরে
কারা আজ খায়
ভুল পথে হেঁটে হয়
মেকি দ্বীনদার।
সুবিচার চায় যারা
তারা মারে হক
কারা দেয় তাদেরকে
নাহক সবক
কারো হক মারা পাপ
শোন দুরাচার।
আর কিছু নয় শুধু
ইনসাফ চাই
শিল্পীর আগে থাক
সুরকার ভাই
সকলের আগে থাক
নাম গীতিকার।
২৭/২/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭১
অন্যায় দেখলেই
যেখানে দেখবে অন্যায়
প্রতিবাদ সেখানেই
অন্যায় সয়ে যাও
কোরানে তা লেখা নেই।
অন্যায় সও যদি অন্যায় বাড়বে
জীবন আর সম্পদ অন্যায় কাড়বে।
জোট বাঁধো বাঁধা দাও
অন্যায় থামবে
জনপদে জনপদে সুখ
এসে নামবে।
অন্যায়ে সায় দেয়া, সয়ে যাওয়া পাপ
অন্যায় থেমে যাবে যদি দাও চাপ।
নিজ নিজ পাড়া থেকে
পাপ দাও উড়িয়ে
অন্যায় দেখলেই
দাও তারে গুঁড়িয়ে।
ঘরে ঘরে এসে যাবে সুখ আর শান্তি
এই সব কথা ঠিক তুইও তো জানতি।
আয় তবে শুরু করি
আজ থেকে কাজ
গড়ে তুলি ধরনীতে
আল্লাহর রাজ।
২৭/২/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭২
আল্লাহ সর্বশক্তিমান
আল্লাহ সর্বশক্তিমান
তাঁর বানানো দোজাহান
তাঁর বানানো জ্বীন ইনসান
তাঁর বানানো সাত আসমান।
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।
তিনি অতি দয়াবান
কাউকে বানান মুসলমান
কাউকে দেন দ্বীন ঈমান।
জীবন চলার দেন বিধান।
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।
তিনি দিলেন আলকোরান
যাতে আছে তাঁর ফরমান
তবু তো কেউ হয় শয়তান
কেউ হয়ে যায় নাফরমান।
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।
তিনি দিলেন ফুলবাগান
পাখির কন্ঠে দিলেন গান
নদীর দিলেন কলতান
দিলেন তিনি চক্ষু, কান
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।
তিনি মালিক সুমহান
তিনি বড় মেহেরবান
পাপীর ক্ষমা করেন দান
আয় করি তাঁর গুণগান।
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ
সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।
২৮/২/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭৩
আগুনের শিখা হয়ে জ্বলবো
আঁধারের ঘনঘোরে আমরা
আগুনের শিখা হয়ে জ্বলবো
ভয় ভীতি সন্ত্রাস মাড়িয়ে
সাহসের সেনা হয়ে চলবো।
আসুক না বাঁধার পাহাড়
সত্যের কথা তবু বলবো।
সত্যের কথা তবু বলবো।
বাঁধার প্রাচীর দেখে আমরা
যাবো নাতো ভয় পেয়ে চমকে
দুরন্ত দুর্বার গতিবেগে আমরা
চলবোই, যাবো নাতো থমকে।
পথে দিলে বেরিকেড আমরা
সে বাঁধা গুড়িয়ে পথ চলবো।
আমরা, সত্য কথা তবু বলবো।
ঈমানের বলে হয়ে বলীয়ান
আগুনের শিখাসম জ্বলবো
বাতিলের আস্তানা আমরা
দুই পায়ে চিরকাল দলবো।
মোরা সত্য কথা তবু বলবো।
সত্যের পথে তবু চলবো।
থামবোনা কোনকালে আমরা
সত্য ন্যায়ের কথা তবু বলবো।
২/৩/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭৫
ঘুমে ঘুমে
ঘুমে ঘুমে দিন যায়, ঘুমে ঘুমে রাত
কখন সন্ধ্যা নামে, কখন প্রভাত?
কোনকিছু দিশ নাই, শিষ নাই বনে
এই ধারা অসুখ যে এলো কুক্ষণে।
জীবিত না মারা গেছি, দিশ নাই ঘুমে
মেঘ এসে রাতদিন পাহাড়কে চুমে।
স্বপ্নের ঘেরাটোপে কাটে রাত দিন
শুয়ে শুয়ে আমি শুনি মরণের বীন।
তবু আমি এতীমের মাল খাই জোরে
ভুলে যাই সহসাই আমি যাবো গোরে।
মনে মনে পাপ করি, করে সুখ পাই
কবরে যে যেতে হবে তাও ভুলে যাই।
ঘুমে ঘুমে দিন কাটে, ঘুমে ঘুমে রাত
দিশ নেই বিষ খেয়ে করি মৌতাত।
৩/৩/২৩। বাদ জুম্মা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭৬
কুঞ্জবন
এতো সুন্দর দুনিয়া
কি হবে কও শুনিয়া?
এ যে একটা স্টেশন
মানুষ আছে হাজার জন
সবাই পর, কেউ নয় আপন।
শোনরে লোপা,
মারিয়া
যেতে হবে ছাড়িয়া
আসলে গাড়ি স্টেশন
রইবে নারে কেউ আপন
হারিয়ে যাবে সুন্দরবন
হারিয়ে যাবে বান্দরবন
মানুষ কারো নয় আপন।
নিলে জীবন কাড়িয়া
চাঁদের জোসনা ছাড়িয়া
যাইতে হবে ফারিয়া
রাখবে দেহ গাড়িয়া
যারা আছে আপন জন
ঘটবে এটাই বিলক্ষণ
পঁচবে দেহ তনু মন
এতো সুন্দর দুনিয়া
যেতে হবে ছাড়িয়া।
পাহাড়, নদী, কুঞ্জবন
কেউতো কারো নয় আপন।
৩/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭৭
কেউ বুঝে না আমায়
কেউ বুঝে না আমায় আহা
কেউ বুঝে না আমায়
বুঝে না যে বন্ধুবান্ধব,
বান্ধবী ও মামায়।
বুঝে নাতো পোলার মায়
যায় উড়ে সব দখিন বায়
শীতকালেও আমার মাথা
কেন শুধু ঘামায়।
বললে দুটো ভাল কথা,
সে বুঝে রে মন্দ
সবার মত সেও কি তবে
দীল কানা ও অন্ধ।
ডাইনে বললে বায়ে যায়
বুঝি না সে কি যে চায়।
চিরকালই বোকারাম
ভাবে সে আমায়।
কেউ বুঝে না আমায় আহা,
কেউ বুঝে না মন
বাড়ি ছেড়ে ইচ্ছে করে
লুকাই গভীর বন।
হাসলে তবু রাগ করে
লবন ছাড়া পাক করে
বুঝি না সে কখন কি যে
আমার কাছে চায়।
৪/৩/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭৮
আমার কথা
আমার কথা তোমার কি খুব ঝাল লাগে
নাকি আমার কথা তোমার ভাল্লাগে।
ভালো লাগুক, মন্দ লাগুক
কিছু করার নাই
আল্লাহ নারাজ না হোক শুধু
এটুক আমি চাই।
আসো সবাই খুশী করি, মানুষকে নয় আল্লাহকে।
আঁকড়ে ধরি সবাই মিলে সত্যন্যায়ের পাল্লাকে।
তিনি সহায় থাকলে কারো
অন্য সহায় লাগে না
খোদার প্রেমিক কারো কাছে
সহায় সম্পদ মাগে না।
তাঁর দয়াতে সবাই বাঁচে, তাঁরই সহায় চায়
তাঁর পাঠানো নেয়ামতই সব মানুষে খায়।
আগে আল্লাহ, পরে আল্লাহ
আল্লাহ ছাড়া উপায় নাই
আর কিছু না বুঝ তুমি
এই কথাটা বুঝ ভাই।
৫/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৭৯
বুকে রাখো প্রেম
বুক পকেটে টাকা রাখো, বুকে রাখো প্রেম
কওতো দেখি এতে তোমার আছি কি প্রব্লেম?
বুকের যতো হিংসা ও রাগ দাও সাগরে ফেলে
অহংকারের পর্দা টানো, বুকে কভু এলে।
সেখানে দাও ভরে তুমি মায়ার পান্না লাল
ঠোঁটে তোমার কুলুপ আঁটো মুখে এলে গাল।
সজনে ফুলের পরাগ দিয়ে ভরো তোমার মন
এ দুনিয়া দুদিনের ভাই, থাকবে কতক্ষণ?
কিসের তবে হিংসা ও দ্বেষ, কিসের বাহাদুরী
শিশু যুবা সবাই যাবে, বুড়া এবং বুড়ি।
পরকে একটু সুখ দিয়ে নিজেও সুখ নাও
পৃথিবীটা হোক না প্রেমের, খোদার কাছে চাও।
৬/৩/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮০
কাল সকালে ঈদ
নতুন বাঁকা চাঁদ উঠেছে কাল সকালে ঈদ
সেই খুশিতে ভাসছে আমার মনভোমরা, হৃদ।
করবো সবাই কোলাকুলি
মিলবো সবাই গলাগলি
সবার মনে এই মিলনের আশা ও উম্মীদ।
ভুলে যাবো কষ্ট ও রাগ, বাসবো ভাল সবে
ঈদের দিনে কেউ নয় পর সবাই আপন হবে।
দীলকে করবো সফেদ সাদা
পোলাও কোরমা হবে রাঁধা
এক সারিতে বসে খাবো ছেড়ে মনের জিদ।
হাত মিলাবো জনে জনে
সবার ভালো চাইবো মনে
মন্দ ছেড়ে ভালো হবার দেবো যে তাকিদ।
৬/৩/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮১
পড়, বই পড়
দীলদার আলি খান দীল তার বড়
বাড়ি বাড়ি ঘুরে বলে,'পড় বই পড়'।
পড় বই ভাল ভাল, মন হোক ভালো
জ্বেলে দাও হৃদয়, আলা নূর আলো।
বড়দের জীবনীটা পড়ে পড়ে জানো
বড় হতে কী লাগে, জীবনে তা মানো।
আকাশের মতো হও, উদার, মহান
বৃষ্টির মতো তুমি হও মহা মহীয়ান।
কোরান ও হাদীসকে সাথী করো রোজ
অসহায় জনে নাও নিয়মিত খোঁজ।
এভাবেই হয়ে যাও বড় থেকে বড়
দিনভর বেশী বেশী বই তুমি পড়।
হও তুমি সত্যবাদি, হও আলামীন
শোধ করে যাও তুমি পৃথিবীর ঋণ।
৬/৩/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮২
দাও বিলিয়ে
তোমার মনে দিয়েছি যতো
দুঃখ, ব্যথা, কষ্ট
মাফ করে দাও, চাইছি ক্ষমা
হৃদয় থেকে পস্ট।
আর দেবো না ব্যথা কভু
এই করলাম পণ
এই কথাটা রাখবো মনে
আমি সারাক্ষণ।
কারো হকের করলে ক্ষতি
মাফ করবে না প্রভু
পরের হক তবে কেন
নষ্ট করবে তবু।
হক মেরো না কোনদিন
হক মেরো না কারো
তার বদলে দাও বিলিয়ে
প্রেম যতটা পারো।
৬/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৩
সময় বড় দামী
তোমার সময় রেশন করা
এর বেশী তো পাইবা না
দরকার থাকলে হাটে যাইবা
নইলে হাটে যাইবা না।
ক্ষুধা লাগলে খানা খাইবা
নইলে খানা খাইবা না
রিজিক যদি ফুরিয়ে যায়
আর তো রিজিক পাইবা না।
বেহুদা কাজ করে তুমি
সময় নষ্ট কইরো না
ফালতু কাজের ধোঁকায় তুমি
বুদ্ধি থাকলে পইড়ো না।
সময় বড় দামীরে ভাই
সময় বড় দামী
সময়টাকে কাজে লাগাও
করো না ফাজলামী।
৬/৩/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৪
আসুন বসুন
আসুন বসুন হাসুন
একটু ভাল বাসুন
কেমন আছেন কন
ভালে রাখুন মন।
মনটা থাকলে ভালো
জগত হবে আলো।
আপনি থাকবেন নিত্য
খুশী ভরা চিত্ত।
চিত্ত রাখেন খোশ
ভুলেন পরের দোষ
মাফ করে দেন পরকে
সুখী রাখুন ঘরকে।
শান্তি থাকলে ঘরে
সুখ পায় নারী নরে
বাসলে ভালো সবে
জগত সুখী হবে।
৭/৩/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৫
দুঃশাসনের গদী
আমরা তরুণ আমরা যুবক
আমরা দেশের প্রাণ
আমরা গাইবো মুক্ত কন্ঠে
স্বাধীনতার গান।
কইবো কথা হেসে হেসে
চলবো আমরা বীরের বেশে
আমরা করবো স্বৈরাচারের
বিনাশ, অবসান।।
স্বৈরাচারের ধরবো টুটি
তুলবো আবার বজ্র মুঠি
চলবে আবার সারা দেশে
মুক্তি অভিযান।
ছাত্র শ্রমিক কৃষক মজুর
নারী পুরুষ সাহেব হুজুর
এক কাতারে মশাল নিয়ে
হবো আগুয়ান।
হাত ধরবো পরষ্পর
ভেঙ্গে দেবো তাসের ঘর
দুঃশাসনের গদী আমরা
করবো রে খান খান।
৮/৩/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৬
আমরা হবো
আমরা হবো ঝড়ের দাপট
তুফান ভয়ংকর
উড়িয়ে নেবো দুঃশাসন আর
তাদের সকল চর।
ঢের সয়েছি অবিচার
নিপীড়নের ধুন্ধুমার
তাদের চোখে ভাসবে এবার
শুধুই উড়িরচর।
তোরা সবাই আয় ছুটে
অলসতা ঘুম টুটে
বজ্রকন্ঠে তোল আওয়াজ
আল্লাহু আকবর।
আমরা শুধু চলতে জানি
মানি শুধু খোদার বানী
আমরা হবো দৃপ্ত সেনা
অতীব ভয়ংকর।
৮/৩/২৩। বাদ জোহর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৭
পুরান দিনের কথা
লিখতে গেলে মনের কথা
বনে লাগে আগুন
তবু আসে বারে বারে
বসন্ত আর ফাগুণ।
কিশোর বেলা বকুল ফুলের
মালা দিত যে জন
কোন সুদূরে হারিয়ে গেছে
আলতাপরা সে মন।
আমি নাহয় ছিলাম নিঠুর
দিতাম শুধু জ্বালা
তার বদলে তুমি দিতে
বকুল ফুলের মালা।
সেদিনগুলো আর পাবো না
ইরাবতির তীরে
অভিমানের ডালি নিয়ে
আসবে না কেউ ফিরে।
পাল্টে গেছি আমি এখন
পাল্টে গেছো তুমি
পাল্টে গেছে সুবর্ণগ্রাম
পাল্টে গেছে সুমি।
দিন কাটে না এক রকম
আসে জোয়ার ভাটা
এখন হাঁটি সড়ক দিয়ে
হয় না আলে হাঁটা।
পুরান দিনের কথা ভেবে
মন বসে না পাঠে
আমার স্মৃতি হারিয়ে গেছে
তেপান্তরের মাঠে।
৮/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৮
ঘুমাও সোনা, ঘুমো
খোকন সোনা আলতো করে
গালে দিলাম চুমো
এবার একটু ঘুমো।
ঘুমাও সোনা, পঙ্খিরাজ
দেবো তোমায় এনে
হীরা মোতি পান্না দেবো
সালওয়া ও মান্না দেবো
কান্না থামাও, ঘুমো।
এই যে দিলাম চুমো।
চুমো দিলাম, ঘুমাও সোনা
নাও না শিখে স্বপ্ন বোনা
যাও আকাশে উড়ে
মেঘের পিঠে চড়ে।
আসবে পরী, রাজকন্যা
দেখবে ওরা কী অনন্যা।
খেলবে তোমার সনে
রঙিন ফুলের বনে।
ঘুমাও সোনা, ঘুমো
দেবো আরো চুমু।
৮/৩/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৮৯
চুপকথা
রূপকথা নয়, চুপকথা
চলছে দেশে খুব কথা।
আসবে নাকি নতুন ঝড়
বলছে কথা একাব্বর।
বলছে সবই আজব বুলি
নামবে পথে কামার, কুলি
রাজার প্রাসাদ উঠবে দুলি
উড়ে যাবে শীশার গুলি।
বেজে উঠবে নতুন গান
মারা যাবে অমর খান।
উড়বে ধুলো শনন শন
সঙ্গে উড়বে জালিমজন।
চাপাবাজির উন্নয়ন
ঘুরবে শুধু বনর বন
ছিঁড়ে যাবে তামার তার
উড়ে যাবে স্বৈরাচার।
৯/৩/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯০
সময় কারো জন্য বসে রয় না
সময় কারো জন্য বসে রয় না।
সে ওড়ে যায় পাখির মত
যেন মুক্ত ময়না।
যে যা করার করুক সময়
কাউকে কিছু কয় না।
সময় কারো জন্য বসে রয় না।
কারো কাছেই অঢেল সময় নাই
সবার সময় রেশন করা ভাই
একটা মিনিট দেরী করার
সুযোগ কারো হয় না।
সময় কারো জন্য বসে রয় না।
ডাক পড়লেই যেতে হয়
থালাবাটি পড়ে রয়
সঙ্গে করে নেয় না কেউ
সোনা রূপা গয়না।
সময় কারো জন্য বসে রয় না।
কেউ করো না নষ্ট সময়
কষ্ট তাতে বাড়ে
শয়তান এসে ঘাড়ে বসে
কলকাঠি সব নাড়ে
জরুরী কাজ করার সময়
তখন তো আর হয় না।
সময় কারো জন্য বসে রয় না।
কারো কোন দুঃখের দোসর
সময় কভু হয় না।
মন্দ ভালোর ভাগ কখনো
সময় বুঝে লয় না।
সময় কারো জন্য বসে রয় না।
১০/৩/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯১
তোমার মদদ চাই
না চাইতেই এতো দিলা, চাওয়ার কিছু নাই
সারা জনম আমি যেন তোমার মদদ পাই।
শোকর যেন করতে পারি আমি জীবনভর
তোমার প্রেমে থাকুক ডুবে আমার এ অন্তর।
তোমার তসবি আমি যেন জীবনভরে গাই।
শয়তান যেন আমার থেকে থাকে অনেক দূরে
আমার অন্তর ভরা থাকুক তোমার নূরে নূরে।
দোজাহানে আমি যেন তোমার রহম পাই।
ধরায় থাকুক শান্তি ও সুখ, পরকালে ক্ষমা
এই আশাটুক তোমার কাছে রেখে দিলাম জমা
তুমি ছাড়া আমার যে আর আপন কেহ নাই।
১০/৩/২৩। বাদ জুমা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯২
ইচ্ছা করে
লেখালেখি করে কি লাভ
লিখে কিছু হয় না
তবু লিখি মরণ জ্বালা
এত জ্বালা সয়না।
পাগলা ঘোড়া ছুটে বেড়ায়
দ্রব্য মূল্যের বাজারে
এসব কথা বলে কি লাভ
সর্বনাশা রাজারে।
রাজার আছে পাইক পিয়াদা
বাজারে সে যায় না
রোজই খায় পোলাও কোর্মা
ঘোড়ার লাত্থি খায় না।
কেমনে খাবো তয়তরকারি
বাজারে যে আগুন
যেমনি গরম লাউ, শশা
তেমনি গরম বাগুন।
দামের জ্বালায় মাথা গরম
শরম গেছে উইড়া
ইচ্ছা করে খুনী রাজার
ঘরবাড়ি দেই পুইড়া।
১০/৩/২৩। বাদ আছর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৩
এলোরে ফাগুণ
অবশেষে এই দেশে এলোরে ফাগুণ
বলে, কই গেলি তোরা, লাগারে
আগুন।
সুদখোর, ঘুষখোর, যেখানে যা
আছে
ধরে ধরে তুলে দে রে আইনের কাছে।
ধড়িবাজ, প্রতারক যেখানে যা পাবি
তারা যেন জেলে যায় তোল জোর দাবী।
যার মনে প্রেম নাই, নিষ্ঠুর ও খুনী
তার কোন ক্ষমা নাই, মার ধরে কুনি।
চোর আর বাটপার, দাগাবাজ যারা
তাদেরকে সকলেই রুখে আজ দাঁড়া।
বল জোরে, শোন ওরে, জালিম রাজা
এইবার দেবো তোরে, উচিত সাজা।
ফাল্গুণে ফুলে ফুলে দেশ হবে লাল
ফাল্গুণ মন্দ ও দুষ্টের মরনের কাল।
১০/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৪
কার যে কখন আসবে মরণ
কার যে কখন আসবে মরণ
কেউ তো জানে না
তবু লোকজন প্রভুর হুকুম
কেন মানে না।
না মনলে যে হয় রে পাপ
পাপ জীবনের অভিশাপ
পাপ তো কারো জন্য সুখের
খবর আনে না।
পাপ করলে যায় মান ইজ্জত
দিতে হয় তার খেসারত
পাপ তো কভু ভালোর পথে
কাউকে টানে না।
পাপ করলে পায় শাস্তি মরে
তবু পাপ হয় বাইরে,
ঘরে
এসব কথা কারোরই কি
মনে থাকে না।
আসবে মরণ যখন তখন
তাই নাও সবে প্রভুর স্মরণ
মহান প্রভু মাফ না করলে
রেহাই পাবে না।
১০/৩/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৫
মন্দ করা বন্ধ করো
জাকাত তোমার ফরজ তবু
দাওনা জাকাত তুমি
কি লাভ বলো বসে বসে
তসবিদানা চুমি।
ফরজ কামাই করে তুমি
কামাও অঢেল পাপ
কাল হাশরে তসবিদানা
হবে ভয়াল সাপ।
জাকাত ফেতরা সবই দাও
ঘুষ গোপনে নাও
জমা টাকা লগ্নি করে
সুদও তুমি খাও।
লাভ হবে না তাতে দাদা
লাভের বাড়ি শূন্য
আগে ছাড়ো পাপ কামানো
পরে বাড়াও পূণ্য।
নইলে তোমার ভাল আমল
সব হবে বরবাদ
হারামখোরের ভাল আমল
দেয়না সুসংবাদ।
মন্দ করা বন্ধ করো
হারাম খাওয়া ছাড়ো
তারপর করো ভাল কাজ
যে যতোটা পারো।
১৬/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৬
অমলিন হাসি
এত ভাল লাগে এই মায়াবী সকাল
ভাল লাগে ফুলবনে মৃদু সমীরন।
আঁধারের ক্যানভাস হয় লালে লাল
ভাল লাগা ছুঁয়ে যায় এই দেহ মন।
বুকে বাজে রিনঝিন প্রশান্ত বাতাস
হৃদয়ের ক্যানভাসে জাগে শিহরণ।
কারা যেন সুখফুল করে বুকে চাষ
ভাল লাগে পাখিদের সুরেলা কূজন।
এইসব ভাল লাগা যার দানে পাই
তাঁর কাছে সারাদিন ভাল যাক চাই।
জীবনটা করে দাও সুখময় প্রভু
কারো ক্ষতি আমি যেন না করি কভু।
সকলেরে সকলেই ভালো যেন বাসি
সকলের মুখে চাই অমলিন হাসি।
১৭/৩/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৭
স্বপ্নবোনা রাজপুত্তুর
আমার মনের খবরটা কি
নীল আকাশও জানে
উতল হাওয়া সে খবর কি
বললো কানে কানে?
গাঁয়ের ছেলে গাঁয়ে যেতে
ছটফট করে মন
তাই কি তুমি গাছের পাতা
গুনছো সারাক্ষণ?
কালবোশেখী হলে পরে
আম যে সারি সারি
গাছের তলে পড়ে থাকে
কে নেবে তা বাড়ি?
কে গাঁথবে শিউলি কিম্বা
বকুল ফুলের মালা
খান সাহেবকে দেখে কারা
বলবে, পালা, পালা।
বিলের জলে ডুবিয়ে কারা
তুলবে শাপলা ফুল
কে দেখবে মেঘের দেশে
উড়ছে পরীর চুল?
স্বপ্নবোনা রাজপুত্তুর
স্বপ্নে যাবে কই
সে কথাটা জানতে হলে
পড়ো কোরান, বই।
১৮/৩/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৮
ফান্দে পড়ে কান্দে
এ কোন হাওয়া এলো কাশের বনে?
যেন একটা লাজুক লতা
ঘোমটা পরা কনে।
নীল নেকাবের ফাঁক দিয়ে সে
তাকায় ক্ষণে ক্ষণে।
তার চোখে আজ বৃষ্টিধোঁয়া কান্না।
ভাতের থালায় চামচিকারা
বাতাস করে রান্না।
পায় না খেতে কাজুরী আর
পেটের ছেলে বান্না।
ভাষণ কন্যার ভাষণ তবু আসে
ধান আসে না অগ্রহায়ণ মাসে
চীনের পোলা টিনের ঘর
ভেঙ্গে বানায় রাস্তা
আতুরীর মা ভাত পায় না
সাহেবে খায় পাস্তা।
উন্নয়নের জোয়ার এসে
ভাসিয়ে নিল সুখ
চুয়াত্তুরের শকুন আবার
দিচ্ছে ঠোকর, দুখ।
রিকসাঅলা কান্দে
পড়লাম একি ফান্দে।
১৯/৩/২৩। বাদ এশা।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৭৯৯
জুজুর ভয়
জুজুর ভয়ে হুজুর মরে
শয়তান লাফায় বঙ্গে
কোথায় দেবো মলম আমি
ঘা যে সারা অঙ্গে।
মিছিল হলেই গুলি চলে
লাঠি ধরলে জঙ্গী
আইনের নামে বেআইনী কাজ
ক্যায়সা মনোভঙ্গি।
ইট মারলে যে পাটকেল চলে
আইনতো এরে বলে
এ আইন যদি চালু হয়
পড়বা গ্যাড়াকলে।
মারের বদল মার দিতে হয়
চুমার বদল চুমা
এসব কথা ভুললি সবই?
তবে বাঙাল ঘুমা।
২০/৩/২৩। বাদ ফজর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০০
এ দুটি নয়ন
এ দুটি নয়ন আহা, না থাকিতো যদি
কিভাবে দেখতাম এই ফুল পাখি নদী।
কি করে দেখি আহা ভোরের আকাশ
চোখ আছে তাই সবই দেখি নিরবধি।
অনুভুতি আছে বলে টের পাই বাতাস
নাসিকার জন্য পাই বিচিত্র সুবাস?
কানে শুনি কত সুর, মধুর আজান
জল নিয়ে খেলা করে তৃষিত জলধি।
চোখ দিয়ে দেখি আর মুখ দিয়ে খাই
দুই পায়ে হেঁটে হেঁটে কতো পথ যাই
এইসব কার দান তুমি কি তা জানো
তাঁরই দয়া দানে বাঁচো মরণ অবধি।
আহা, এ নয়ন কারো না থাকিত যদি
কি করে চিনতো সে ফুল, পাখি, নদী।
২২/৩/২৩। বাদ মাগরিব।
No comments