আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ৩৮০১-৩৯০০
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০১
গাঁয়ে চলো যাই
অক্সিজেনের কারখানাটা আমার গাঁয়ে থাকে
সবুজ পাতার হাত ইশারায় আমায় কাছে ডাকে।
শহর মানে ইট পাথর আর লোহার বিশাল খাঁচা
পয়সা দিয়ে বাতাস কিনে কদিন বা যায় বাঁচা?
পাখপাখালি ডাকে আমায় মিষ্টি সুরে সুরে
আমরা থাকি মিলেমিশে কেউ থাকি না দূরে।
চাঁদ মামাটা দেয় আমাদের কমলা বরণ আলো
তোমরা তখন ঘরে বাইরে নিয়ন বাতি জ্বালো।
সেই আলোতে যায় না মনের লুকিয়ে থাকা কালো
কিসের আশায় সেই আলোতে গাটের পয়সা ঢালো?
ফ্রিজের পঁচা বাসি খাবার তোমরা নিতি খাও
গাঁও গেরামের টাটকা খাবার তোমরা কি আর পাও?
দূষিত সব হাওয়ায় তোমরা করো উদরপূর্তি
গাঁয়ের বাতাস গাছের ডালে নেচে করে ফূর্তি।
আমার মায়ের পরশমাখা গ্রাম যে আমায় ডাকে
হৃদয় হারা মানুষগুলো লোহার খাঁচায় থাকে।
তাই এ শহর ভাল্লাগে না গাঁয়ে চলো যাই
যেথা গেলে আমরা আবার মায়ের আদর পাই।
২৩শে মার্চ ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০২
অমল ঘোষের নাতি
অমল ঘোষের নাতি
ঢাকা থেকে হেঁটে হেঁটে গেল ঝিনাইগাতি
যেতে যেতে দিন কাবাড়, এসে গেল রাতি।
অমল ঘোষের নাতি
রাত আঁধারে খুঁজলো সে একটা চেরাগ বাতি
তাকিয়ে দেখে বুনছে কাপড় মির্জাপুরের তাঁতি।
তার পিছনে কাটছে জাবর তিনটা তরুণ হাতি।
বললো ওরে হাতি
আমার খুব লাগছে খিদে দিবি কিছু খাতি?
হাতি তখন খুঁজলো খাবার করে আতিপাতি।
দেখতে পেলো গেটের পাশে পড়ে আছে ছাতি
ছাতির নিচে তিরিশ প্যাকেট চায়ের গুড়া পাতি।
বললো, খাবি খা
নইলে বাড়ি যা।
২৩শে মার্চ ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৩
শোকর হাজার বার
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ
শোকর হাজার বার
তোমার দয়াতে পেলাম
সিয়াম আবার।
ক্ষমা করো গুনাহখাতা
ওগো দয়াময়
লাইলাতুল কদর যেন
আমার নসীব হয়।
আখেরে নাজাত আমায়
দিও পরোয়ার।
জেনে না জেনে যতো
করেছি হায় পাপ
তার জন্য মাওলা শত
করছি অনুতাপ।
পাপের থেকে বাঁচার শক্তি
দাওগো পরোয়ার।
সিয়ামের ফজিলতে
শান্তি দাওগো দেশে
সবাই যেন থাকি প্রভু
আমরা মিলেমিশে।
সবাই যেন ভাল চাই
আমরা সবাকার।
এ অধম কারো হক
না যেন গো মারি
সকলের হক আদায়
করতে যেন পারি।
আমার যেন হয়গো মাওলা
তোমার দিদার।
২৩শে মার্চ ২০২৩ : বাদ তারাবী
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৪
রহমের ক্ষণ বয়ে যায়
রহমের ক্ষণ বয়ে যায়
সিয়ামের নদীতে কে ডুব দিবি আয়।
যত আছে মন্দ, যত আছে পাপ
ডুব দিয়ে তুই কর দীল পাকসাফ
উঠ তুই পাপী দীল পূণ্যের নায়।
এ মাসে পাবি তুই কদরের রাত
এই রাতে করজোড়ে তোল দুই হাত
নসীব বুলন্দ জনে এই রাত পায়।
এই মাসে গুনাহখাতা হয়ে যায় মাফ
পূণ্যের লাভাস্রোতে দীল হয় সাফ
এই মাসে মুক্তির চল মোহনায়।
নসীবে থাকলে ফের পাবি এই মাস
নয়তো চলে যাবি ছেড়ে নিঃশ্বাস
এমন অমূল্য ক্ষণ কে হারাতে চায়।
২৪শে মার্চ ২৩ : রাত ৩টা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৫
শ্বশুর বাড়ি
শ্বশুর বাড়ি মসুর ডাল
খেয়েছিলাম গত কাল
আজকে দেখি ডালও ঘরে নাই
কি দিয়ে ভাত খাই।
আছে শুধু আলু ভর্তা
মজা করে খাচ্ছে কর্তা
বললো, বাছা, তুমিও বসে যাও
তাও পেয়েছো আলু ভর্তা,
মজা করে খাও।
কাল পাবে না ভর্তাও
শুধু পাবে লঙ্কা
এরপর দিন লবন ও ভাত
খাবে তুমি, কঙ্কা।
এইতো আমার দেশের হাল
হাওয়া শুকনো লঙ্কা লাল
হাওয়া ভাত ও নুন
সরকার এতো গুলি আনলো
কখন করবে খুন?
এ ছাড়া আর সরকারের
কিইবা আছে গুণ?
২৪শে মার্চ ২০২৩ : বাদ সেহরী
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৬
সিয়ামের মাস এলো
সিয়ামের মাস এলো, কিয়ামের মাস এলো, এলো রমজান
এই মাস কদরের,
এই মাস বদরের,
এই মাসে পরাজয় মানে শয়তান।
এই মাসে শোনা যায় বিজয়ের গান।
এই মাসে বয়ে যায় রহমের নদী
এই মাসে বাতিলের ভেঙে যায় গদী
এই মাসে রহমত
এই মাসে বরকত
এই মাসে নাজাতের খুশী অফুরান।
এই মাসে বেজে ওঠে সাহসী আজান।
এই মাসে মাফ চাও, পাপ করো নাশ
এই মাসে মালিকের হও খাঁটি দাস।
এই মাস সততার
এই মাস একতার
এই মাসে বুকে বাঁধো পবিত্র কোরান।
কোরানের নূর করো জীবন বিধান।
২৪শে মার্চ ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৭
ক্ষুধার কষ্ট করো দূর
কোরান বলো, হাদীস বলো
সব মানুষের জন্য
তাদের সেবা করে তুমি
নিজকে করো ধন্য।
ফুটপাতে যে শুয়ে থাকে
পায় না খেতে ভাত
তাদের কষ্ট দূর করতে
বাড়াও তোমার হাত।
পড়শিজনকে ভুখা রেখে
পেট পুরে যে খায়
হাদীস মতে নবীর উম্মত
থাকে না সে হায়।
এসব হাদীস পড়ো আর
বয়ান করো রোজ
কিন্তু তুমি পড়শি জনের
নাও কি কোন খোঁজ?
কি লাভ হবে নামাজ পড়ে
আগে নবীর উম্মত হও
অনাথ যে জন তাদের কষ্ট
নিজের কাঁধে তুলে লও।
সমাজ থেকে ক্ষুধার কষ্ট
সবার আগে করো দূর
তবেই তুমি পাইতে পারো
দয়াল নবীর অমল নূর।
২৫শে মার্চ ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৮
কোকিলে গান গাবে না
খোদার হুকুম সমাজ থেকে মন্দ করো দূর
তোমার সমাজ তবে কেন মন্দতে ভরপুর।
মুমীন বলে দাবী করো, নামাজ কেন পড়ো না
মন্দটাকে দূর করতে এক হয়ে ক্যান লড়ো না।
খোদার বান্দা, নবীর উম্মত যদি তুমি থাকতে
চাও
মন্দটাকে দূর করতে বীরের মতো লড়ে যাও।
দাবী করবে মুসলমান, সুদ ঘুষ খাওয়া ছাড়বে না
মনের ভেতর শয়তান পুষবে, তাকে তুমি মারবে না।
এসব করা ভন্ডামী যে, জলদি ওসব ছাড়ো
মুসলিম হলে শয়তান যতো ধরে ধরে মারো।
অশ্লীলতা, বেহায়াপনা দূর করে দাও সব
নইলে দেবেন গযব তোমায় মহামহিম রব।
জীবন যাবে দুঃখ কষ্টে, শান্তি কোথাও পাবে না
সুখের জন্য কাঁদবে তবু কোকিলে গান গাবে না।
২৫শে মার্চ ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮০৯
রমজান আসে আর যায়
রমজান আসে আর রমজান যায়
কয়জনে রমজানে গুনা মাফ পায়।
কয়জনে নিতে পারে খাস রহমত
কয়জনে রমজানের পায় বরকত।
রমজান আসে আর রমজান যায়
রোজা রাখে তবু কারা সুদ ঘুষ খায়
কারা রাখে পড়শির হক অনাদায়
কাঁদে কার ভাইবোন আর বাপমায়।
কার আচরণে ব্যথা পায় ভিন জন
কার কাজে খুশি নয় আপন স্বজন।
মানুষকে দিলে ব্যথা,খোদা ব্যথা পায়
তবু কারা মানুষেরে ব্যথা দিয়ে যায়।
রোজা রেখে যারা মারে অপরের হক
তারা সব দাগাবাজ, তারা সব ঠক।
তার রোজা রোজা নয়, হয় উপবাস
কেমনে সে হয় বলো আল্লাহর দাস।
২৫শে মার্চ ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১০
সুখের ঠিকানা
পেয়ে গেছি মায়াভরা পূর্ণিমা রাত
মাঠে বসে এ রাতে আয় শুনি নাত।
আরবের বুকে এলে নবী আলামীন
তাঁর কাছে এসেছিল আল্লাহর দ্বীন।
দুঃখীদের দুনিয়াটা সুখে ভরে যায়
সুখ বলে আল্লাহর দ্বীনে ছুটে আয়।
তাহলেই পেয়ে যাবি শান্তি ও সুখ
যার জন্য ধরা আজো রয় উন্মুখ।
সেই থেকে আরবের বালিময় দেশে
ধরা দিল আরশের সুখটুকু এসে।
আজো সেই শান্তিরা বয় মদীনায়
কারা নিবি সেই সুখ আয় ছুটে আয়।
মধু যেমন জমা রয় আজো মৌচাকে
সুখ তেমনি জমা রয় কোরআনপাকে।
২৫শে মার্চ ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১১
একটি কথা বলি
একটি কথা বলি তোমায়, একটি কথা কই
তুমি আমি সবাই মানুষ, পশুতো আর নই।
লোক সমাজে তবু কেন পশুত্বটা থাকে
কাকে বলবো মানুষ তবে, পশু বলবো কাকে।
গলাগলি ছেড়ে তোমরা দলাদলি করো
পরকে আঘাত করতে গিয়ে নিজেই তুমি মরো।
বিবেকটাকে বন্দী রেখে আর কতদিন চলবে
পশুত্বটা ছেড়ে কবে মানুষ হবে, বলবে?
কোথায় গেল স্নেহ মায়া, কোথায় গেল প্রেম?
চোখ কান নাক মাথা আছে, কোথায় যে প্রব্লেম?
কারে বলে পশু আর মানুষ বলে কারে
এই কথাটা পশুরা কি বুঝতে কভু পারে?
বিবেকটাকে লাগাও কাজে, মানুষ যদি হও
মনে রেখো নইলে তুমি মানুষ কভু নও।
২৬শে মার্চ ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১২
আজব এদেশ বঙ্গ
গান লিখেও গীতিকারে লক্ষ টাকা পায়
যদি সে গান হিট হয় আর সিনেমাতে যায়।
সুর করে কেউ চুরি করে বিনা টাকায়, মাগনা
সে ভাবে না গীতিকারে কয় রাত ছিল জাগনা।
কেউবা আবার সুরকারকে টাকা দিয়ে কয়
দাদা আমার গানের সুরটা যেন ভাল হয়।
হরেক রকম সুরও আছে, হরেক রকম গান
গীতিকার যে গান লিখে সম্মানীও চান।
সবার শ্রমের দাম আছে, গান লেখে কেউ ফাও
কেউবা বলে, অ গীতিকার, মাগনা বাতাস খাও।
আজব এ দেশ বঙ্গ
চলে নানা রঙ্গ।
২৬শে মার্চ ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৩
মিনি ছড়া- তিন
এক।
মিনি ছড়ড়া তিন
আগে সালাম নিন
কাটছে কেমন দিন
কথার জবাব দিন
কেন করছেন ঋণ
বাজবে দুখের বীণ।
দুই।
সেলাম মামা সেলাম
হাঁটতে হাঁটতে এলাম
এলাম বলে পেলাম
মন্ডা মিঠাই খেলাম
সেলাম মামা সেলাম
এবার আমি গেলাম।
তিন।
এসে গেছে রোজার দিন
আপনি মামা সালাম নিন
রোজা এলে জাকাত দিন
মেনে চলুন খোদার দ্বীন।
পাপ ছেড়ে হন মুত্তাকীন।
যেমন ছিলেন আলামীন।
২৮শে মার্চ ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৪
আসলো রোজা, হাসলো চাঁদ
আসলো রোজা, হাসলো চাঁদ
দাও ছড়িয়ে সুসংবাদ
বন্ধ করো পাপের ফাঁদ
শয়তান এখন বন্দী।
বন্ধ করো মন্দ কাজ
শুদ্ধ করো এ সমাজ
বাড়াও একটু শরম লাজ
ছাড়ো পিতলা সন্ধি
মনে রেখো শয়তান তোমার
চির প্রতিদ্বন্দ্বী।
আসলো রোজা, হাসলো চাঁদ
ভেসে গেল পাপের ফাঁদ
ছাড়ো সকল বিসম্বাদ
করো সবাই পরাণ খুলে
প্রভুর রেজামন্দি।
২৮শে মার্চ ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৫
দুপুর বেলা
দুপুর বেলা উপুড় হয়ে
নূপুর বাজায় চন্দনা
সে নূপুরের বাজন আহা
শুনতে লাগে মন্দ না।
ফ্রিজে বসে ইলিশ মাছে
করছে ধ্যান ও বন্দনা
বললো, কে রে শব্দ করে
আমি কিন্তু অন্ধ না।
পাচ্ছি আমি কিসের ঘ্রাণ
এ বিড়ালের গন্ধ না
ইলিশ বসে খাচ্ছে বিড়াল
বলছে খেতে মন্দ না।
দুপুর বেলা উপুড় হয়ে
নূপুর বাজায় চন্দনা
বলে,শোন বাজনা আমার
আমি তো আর নন্দ না।
আমি যখন নূপুর বাজাই
নাচে তখন খঞ্জনা
দুষ্ট মানুষ কুৎসা রটায়
অন্যকে দেয় গঞ্জনা।
মানুষ থেকে পাখি ভালো
বদ মানুষের মনটা কালো।
২৯শে মার্চ ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৬
আদা খায় দাদা
আদা খায় দাদা
সারে গামা পাধা
আরো দেয় চাঁদা
লাল নীল সাদা।
আতি নেতা পাতি নেতা
ওরা চাঁদা খায়
চাঁদা খেয়ে কেউ কেউ
সংসদে যায়।
চাঁদা খেয়ে কেউ হয়
বড় ষড়যন্ত্রী
চাঁদাখোর কেউ হয়
পা চাটা মন্ত্রী।
পুলিশ এসে ওদেরকে
দেয় পাহারা
ধরা খায় চাঁদাটাদা
দেয় যাহারা।
গরীবেরা মার খায়
গুন্ডারা হাসে
গরীবের ভোট ওরা
নেয় অনায়াসে।
আইনত মার দাদা
চাঁদাবাজ পাওনা
পাওনাটা তবে কেন
তুমি তারে দাও না।
২৯শে মার্চ ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৭
রিলিফের মাল
রিলিফের মাল যারা লুটে খায় ভাই
বল দেখি তার পেট, কয়টা নিতাই।
তোর পেট একটা, আমারও তো তাই
চোরদের কয় পেট, করে খাই খাই।
ওরা নাকি মেম্বার, সরকারী লোক
সারাদিনে পানি ওরা খায় কয় ঢোক?
ঘরে বসে হাওয়া খায়,রোদে ওরা নামে না
তবু কেন চোরদের চুরি করা থামে না?
কেউ হয় চেয়ারম্যান,বলে শুধু ভোট দেন
ভোট নেয় তবু কারো,চুরি করা থামে না।
ছাতা ধরে মোশাহেব, তাই ওরা ঘামে না।
দ্বারে বসে শুধু শুধু কেঁদে যায় আমেনা।
চোরদের ধরে যদি দেয়া যেতো কিল
পেটটা না ভরলেও ভরে যেতো দীল।
রিলিফের মাল নিয়ে চোর রয় মত্ত
সবই দেখে করিমন ও হরিপদ দত্ত।
তবু ওরা কাউকে কোনকিছু কয় না
এইসব অবিচার পরানে যে সয় না।
২৯শে মার্চ ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৮
ডাইনী, নাকি চাঁদবুড়ি
বসে বসে ভাবছিল আবদুল গনি
কার ভাগে পড়েছিল চোরের খনি?
কারা যেন গড়েছিল রক্ষীর সেনা?
বাপ মেরে কে শোধে রক্তের দেনা?
সব গেছি ভুলে আমি, রক্ষীর ত্রাস
ভুলে গেছি ফুটপাতে ছিল কত লাশ
ভুলে গেছি লালঘোড়ার অসহ সুদিন
ভুলে গেছি ক্ষমতায় কে ছিল আসীন।
ভুলে গেছি লগি বৈঠা, শত আশ্বাস
ভুলে গেছি তা কেন হয়েছিল ফাঁস
রাষ্ট্রীয় ব্যাংক কারা করেছিল লুট
মিছে কথা কে বলে, কারা বলে ঝুট।
বসে বসে ভাবছিল আবদুল গনি
কার কাছে জমা আছে চোরের খনি।
কারা ভোট করেছিল মাঝরাতে চুরি
সে কি কোন ডাইনী, নাকি চাঁদবুড়ি?
২৯শে মার্চ ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮১৯
সূর্য তবু উঠবেই
আমার লেখা ভাল বললে
পয়সা দিতে হবে
সেই ভয়ে কি ভাল বলা
ছেড়ে দিলে তবে?
নাকি এতোই খারাপ লিখি
যায় না ছাপা পেপারে
বুঝি নাতো কি দোষ হলো
কোন কারণে ক্ষ্যাপারে।
নাকি তোমার মতের সাথে
মত মিলে না তাই
হোক না ভালো তবু তারে
দেও না তুমি লাই।
কিংবা ভোগ ঈর্ষাতে তাই
সে উঠে যাক চাও না
পেটে অসুখ সেই কারণে
হালাল খাবার খাও না।
বুঝি না তো কোন কারণে
হক কথা যাও চেপে
বিবেকটাকে বলো রোজই
রেশন দিবি মেপে।
দুহাতে চোখ যতোই ঢাকো
সূর্য তবু উঠবেই
বানের পানি তীরের মত
সব ভাসিয়ে ছুটবেই।
২৯শে মার্চ ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২০
খারাপ কথা কইতে নাই
ঘরের কথা ঘরে বলো,
বাইরের কথা বাইরে
কোনটা হারাম জানি তবু
হারাম কেন খাইরে।
পকেট কাটছে আপন ছেলে
বাইরে সেটা বলতে নাই
দাড়ি টুপি জুব্বা পড়ে
সিনেমা কি দেখতে যাই?
লুঙ্গি পরে গেঞ্জি গায়ে
বিয়ে খেতে যাই না
তাল গাছে তালই চাই
বেলও কভু চাই না।
হিসাব করে কথা বলো
ঈমান রাখো ঠিক
চুপটি করে বসে থাকলে
মারবে শত্রু কিক।
বলতে হলে বলবে কথা
সকল কথা সইতে নাই
বলতে হবে ভালো কথা
খারাপ কথা কইতে নাই।
৩০শে মার্চ ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২১
হাছা কতা তিতা
মিছা কতা মিডা লাগে,
হাছা কতা তিতা
পদ্মা নদী আগে আছিল
আমার মাতার ফিতা।
ফিতা অইলো হাপের ছাও
অ মিয়ারা দেইখা যাও
ননদী কয় কিতা।
অহন ঘরে বিড়াল থাহে
আগে আছিল চিতা।
চিতা ছিল জিগরি দোস্ত
এক বাসনে খাইতাম
কাডোল গাছের কাডোল খাইয়া
বহুত মজা পাইতাম।
মিছা কতা মিডা লাগে
হাছা কতা তিতা
ভালা মানুষ ঘুমায় হুইয়া
শয়তানে যায় জিতা।
আর ঘুমাইছ না মজির বাপ
তুই এবার হ জাগনা
কষ্ট কইরা জিতন লাগে
জিত আইয়েনা মাগনা।
৩১শে মার্চ ২০২৩ : বাদ জুমুয়া
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২২
আবোল তাবোল
আবোল তাবোল বাবোল গাম
একশো টাকা আলুর দাম।
আলোর ভেতর পোকা
খোকা খায় রে ধোঁকা।
ধোঁকা খায়রে সুবেহ শাম
হারাধন ও বোকারাম।
ধোঁকার বাজার তাই তো গরম
নাই নেতাদের লজ্জা শরম।
ধোঁকার ওপর ধোঁকা দেয়
ঘেন্নার থুতু জিহ্বায় লেয়।
বার বার আমরা ধোঁকা খাই
দশ টাকা সের চালও পাই।
সব পাই নেতার ভাষণে
সিংহ মার্কা আসনে।
১লা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৩
চলছে লড়াই, চলবে
চলছে লড়াই, চলবে
সময় কথা বলবে।
স্বৈরাচারের ছানাদেরকে
বীর জনতা দলবে।
সময় কথা বলবে।
হাসবে বনের সবুজ পাতা
হাসবে নদী, ফুল
কাঁদবে তুমি, বলবে ভায়া
খুব করেছি ভুল।
আর করবো না এমন ভুল
মাফ করে দাও মাফ
কিন্তু তোমার পাপের ময়লা
কে করবে সাফ?
ছুটবে যখন কষ্টগুলো
ছুটবে ঝড়ের মত
সেদিন তোমায় চেপে ধরবে
আমার পিঠের ক্ষত।
স্বৈরাচারের নিকেষ করে
তবে লড়াই থামবে
সেদিন তুমি বাপ বাপ করে
গদী থেকে নামবে।
চলছে লড়াই, চলবে
সময় কথা বলবে
দেশে যদি আগুন জ্বলে
বরফ তখন গলবে।
১লা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৪
জুজুর ভয়
টাকা উড়ায় বাঈজী পাড়া
ফকির কিছু পায় না
তাইতো কোন নাইটক্লাবের
সামনে ফকির যায় না।
টাকা দিয়ে ফুর্তি কিনতে
লোক সিনেমায় যায়
তার সামনে গরীব গিয়ে
ভিক্ষা কিরে পায়?
লাইন ধরে বয় গরীবগুলো
মসজিদ ঘরের পাশে
আল্লার বান্দা মুসল্লীর দান
পায় যদি এই আশে।
খারাপ লোকে গরীব মারে
মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে
তবু তারেই নেতা বানায়
গরীব লোকে গিয়ে।
যেমন কর্ম তেমন ফল
গরীব লোকে পায়
তারাও সুখ পাইতে পারে
যদি গরীব চায়।
ধনী থাকে লেপ তোষকে
গরীব পায় না খেতা
সুখ চাইলে নেতা পাল্টাও
বানাও
ধার্মিক নেতা।
যদি মোমিন হইতো নেতা
কাটতো কষ্টের রাত
গরীবেরাও খেতে পারতো
পেটটা ভরে ভাত।
হুজুরগুলো জুজুর ভয়ে
এসব কথা কয় না
ভন্ড নেতার তান্ডব আর
এই পরাণে সয় না।
২রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৫
জাকাত বিধান
জাকাত বিধান থাকলে কায়েম
দেশে গরীব থাকতো না
দুস্থ, এতীম, অসহায়ের
ভিক্ষা করা লাগতো না।
ধনীর থেকে গরীবের হক
আপসে চলে আসতো
গরীব মানুষ ধনীর মতো
তখন সুখে ভাসতো।
প্রতারণার রাজনীতি
তখন দেশে চলতো না
অসৎ নেতার আশ্বাসে
কারোরই মন গলতো না।
তাই জাকাতের সভা থেকে
আলেম ধরে ভন্ড
জাকাতের লাভ যে বুঝাবে
তারে দেবে দন্ড।
এসব করে আর কতকাল
গরীবের সুখ কাড়বে
ধর্ম নিয়ে গরীব জাগলে
সেদিন ভন্ড হারবে।
জাকাত তাদের বাঁচার জামিন
অভাব করে দূর
দুখের আঁধার দূর হয়ে যায়
আসে নবীন ভোর।
২রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৬
নীল আকাশের তারা
নীল আকাশের তারা
একটুখানি দাঁড়া
বলতে দেখি রোযা রেখে
ঘুষ খায় কারা কারা?
কোনদিন কি তারা আর
যাবে নারে মারা
নামায পড়ে, ঘুষও খায়
বলতো কেমন ধারা?
নীল আকাশের তারা।
দরকার হলে গুন্ডাদেরকে
কারা নেয় রে ভাড়া।
কাদের হাতে গুম খুন হয়
যুবকরা যায় মারা?
নীল আকাশের তারা।
বলতো হুজুর জেলে রেখে
ডাকাত ছাড়ে কারা?
বলতে পারিস কবে যাবে
এই জালিমরা মারা?
বললো তারা হেসে,
যেদিন যুবক নামবে পথে
আবার বীরের বেশে
ক্ষোভের আগুন উঠবে জ্বলে
আবার সারা দেশে।
সেদিন ফুটবে আলো
জগত হবে ভালো।
২রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৭
আঁচলে মুখ ঢাকবি?
মনে হয় মা আমরা এখন
ইসরাইলে আছি
আগে ছিলাম সিংহ শাবক,
এখন মশা মাছি।
নইলে কি মা মসজিদ থেকে
পুলিশে নেয় ধরে
এরচে অনেক ভাল ছিল
যেতাম যদি মরে।
মুসলমানের দেশে থাকি
কেমনে এটা কই
ওরা ভাবে আমরা পোকা,
মানুষ
কিন্তু নই।
এই দেশে কি আসলে মা
নামাজ পড়া মানা?
আর কত কাল চক্ষু বুঁজে
থাকবো সেজে কানা?
স্বাধীন দেশে রোজা রেখে
নামাজ পড়লে দোষ
কোথায় গেল মুসলমানের
বীর্য, সাহস, জোশ?
নিরাপদ নয় বসত বাড়ি,
মাদ্রাসা মসজিদ
আগুন লাগছে নিজের ঘরে,
তোর চোখে মা নিঁদ।
ভেবে পাই না তুই কি তবে
মরার পরে জাগবি
আর কতকাল কথা কইলেই
আঁচলে মুখ ঢাকবি?
২রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৮
দুধু খাওয়া খোকা
ভাইয়েরা আমার!
আপনারা সত্য বলবেন,
সত্য লিখবেন,
আর সত্য পথে চলবেন।
তবে
ইহকালে সফলতার জন্য
যেখানে যাবেন সেখানেই
হুজুরের পা টিপবেন,
গা টিপবেন
হালুয়া পাবেন,
হালুয়া খাবেন।
বেতমিজি করলে
সব হারাবেন।
বুঝলেন কিছু?
বুদ্ধি দিছু
বোকারা যায় মোগাদিছু।
আপনি একটা বোকা
দুধু খাওয়া খোকা।
২রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮২৯
আর যাবো না মসজিদে
মসজিদে মা
আর যাবো না
ভাবছি নামাজ পড়তে
ভয় লাগে মা, যদি আসে
পুলিশ আমায় ধরতে।
ছোট্ট শিশু পায় না রেহাই
নাবালগ তাও জেলে যায়
সঙ্গে ছিল মা জননী
নামাজ পড়ে রিমান্ড পায়।
এমন জুলুম করতো কি মা
কোনো কালে ফেরাউন
গুম করে কি মারতো মানুষ
নিশি রাতে করতো খুন?
রক্ত দিয়ে করলো স্বাধীন
যে দেশ আমার ভাই
নামাজ পড়ার স্বাধীনতা
সে দেশে ক্যান নাই?
সত্যি বলছি,ভাবছি মা তাই
আর যাবো না মসজিদে
যতোদিন মা এদেশ চালায়
ফেরাউন ও নমরুদে।
৩রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩০
সুস্থ আমায় রাখো
আল্লাহ তুমি মেহেরবান
দিলে তুমি দেহ, প্রাণ
করো তুমি শেফা দান
সুস্থ আমায় রাখো।
তোমার রহম চাদর দিয়ে
এ অধমকে ঢাকো।
তোমার দয়ায় সিয়াম পালন
করতে যেন পারি
আমি যেনো দিতে পারি
মন্দ সাথে আড়ি।
আমায় তুমি এই শপথে
অটুট মাওলা রাখো।
আমায় তুমি করো ক্ষমা
করো দয়া দান
সবাই জানে তুমি রহীম
তুমি মেহেরবান।
আল্লাহ তুমি মেহেরবান
সুস্থ আমায় রাখো।
৩রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩১
মোহব্বতের সুর
ইসলাম এমন জীবন বিধান
দারিদ্র্য করে দূর
সমাজ জুড়ে দেয় ছড়িয়ে
মোহব্বতের সুর।
গরীবগুলো রয় না গরীব
জাকাত তারা পায়
এই জাকাতে নিঃস্ব যারা
তারাও ভাত খায়।
সুদ খেয়ে কেউ ফুলে ফেঁপে
হবে আরো ধনী
এমন সুযোগ দূর করে দেন
আল্লাহ কাদের গনি।
এই কথাটা নিঃস্ব জনকে
কে বুঝিয়ে কয়
জাকাত কেমনে দুস্থজনের
অভাব করে ক্ষয়।
মানুষ যদি মানতো ইসলাম
গরীব দেশে থাকতো না
অসৎ পথে অর্থ কামাই
কারো করা লাগতো না।
কোরানের আইন চালু হলে
সুখী হতো সকলে।
দেশটা তখন থাকতো না আর
হারামখোরের দখলে।
৩রা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩২
কথা রেখে করো কাজ
না, না, না হইবে না
যতোই বলো ভাল হও,
কেহ ভালো হইবে না।
তোমার ভালোর লোটা কম্বল
কেহ মাথায় লইবে না
ভালোর বিরাট গাট্টি বোঁচকা
কেহ কাঁধে বইবে না।
যদি ভালো চাও
সবার আগে ভাল কাজে
নিজে লেগে যাও।
সবার আগে ভাল কাজে
যদি লাগো নিজে
ভালোর বৃষ্টি লাগবে গায়ে
সবাই যাবে ভিজে।
ওয়াজ করে আত্মীয়ের হক
আদায় করতে বলো
তোমার ওয়াজ তুমি নিজে
করো কি ভাই ফলো?
তোমার ভালো দেখে কেন
পাড়া ভালো হইলো না
তোমার কোনো দোষ নাই এতে
এমন কথা বইলো না।
নিজে যদি হইতা আতর
সুবাস তবে বইতো
দুর্গন্ধ কি পাড়ার লোকে
সারাটা দিন সইতো?
কথা রেখে করো কাজ
ভাল হবে এই সমাজ।
৪ঠা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৩
যাকাতের ফুল
তোমার পাড়া তুমি সামলাও
আমার পাড়া আমি
এ মহল্লায় থাকতে হলে
চলবে না মাতলামী।
বুড়ি নানী ভাত পায় না
রিকসা কিনে দাও
নানী পাবে জমার টাকা
তুমি ভাড়া খাও।
তুমি বাঁচো নানী বাঁচুক
পেটে পড়ুক ভাত
সুখে কাটুক নানী নাতির
ক্ষুধায় কাতর রাত।
নানী পাবে রিক্সার জমা
তুমি পাবে ভাড়া
এ প্রস্তাবে এ মহল্লায়
রাজি আছো কারা?
রাজি থাকলে যাকাত নিয়ে
বাড়ি ফিরে যাও
তোমার শ্রমে বাঁচবে নানী
তোমার ছাওয়ালটাও।
আমি শুধু রাখবো খবর
নয়তো মোয়াজ্জিন
সেও পাবে জমার টাকা
সাত দিনের এক দিন।
যাকাত করবে অভাব দূর
সমাজ করবে সুখী
আমরা যদি হতে পারি
সবাই যাকাত মুখী।
৪ঠা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৪
চাচা ভাস্তের সংলাপ
ভাস্তেঃ ইফতারিতে মাইক বাজলে
গা জ্বলে কার চাচ্চা?
চাচাঃ নামাজ রোজার ধার ধারে না
যে মুসলমান বাচ্চা।
ভাস্তেঃ সেহরীর সময় ডাকলে কাদের
জ্বলে কাকু চিত্ত?
চাচাঃ ফজর নামাজ না পড়ে যে
ঘুমায় শুয়ে নিত্য।
ভাস্তেঃ মরার খবর মাইকে বাজলে
বক্ষ কাদের জ্বলে?
চাচাঃ যারা ঘুমায় উদোম গায়ে
হাওয়াই ফ্যানের তলে।
ভাস্তেঃ আজান শুনে রোযা ভাঙি
আজান শুনে রাখি
বোযাবিহীন মুসলমানের
বাচ্চারে কি ডাকি?
চাচাঃ ভাস্তে
মুনাফিকের দেশে এসব
বলতে হয় খুব আস্তে।
ভাস্তেঃ নাগো কাকা জোরেই কমু
হাতে রাখুম কাস্তে।
চাচাঃ আস্তে কাকু, আস্তে।
৪ঠা এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৫
কোরআন বুঝে পড়ো
সাড়ে তিন হাত দেহে আগে
কোরআন কায়েম করো
এরপর তুমি আলকোরানের
সমাজটাকে গড়ো।
খোদার হুকুম মানো নিজে
পরকে মানতে বলো
আলকোরানের হুকুম মেনে
নিজে আগে চলো।
ফরজ যেনো যায় না ছুটে
হক মেরো না কারো
নফল নিয়ে বাড়াবাড়ি
বান্দা তুমি ছাড়ো।
হারাম যতো কর্ম আছে
সে সব ছেড়ে দাও
বেছে বেছে বান্দা তুমি
হালাল খাবার খাও।
আল্লাহ বলেন, মুমীন তুমি
মুসলিম হয়ে মরো
মুসলিম হওয়ার জন্য তুমি
কোরআন বুঝে পড়ো।
৬ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৬
হাদীস পড়ো
হাদীস পড়ো সহীহ শুদ্ধ
জয়ীফ হাদীস বাদ দাও
নবীর সুন্নত দ্বীনের জন্য
দরকার হলে দাঁত দাও।
এসব তুমি জানো
যা জানো তা মানো
পাড়াপড়শির পাতে তুমি
পারলে দুটো ভাত দাও।
রুগী যদি সামনে পাও
সেবা করো তার
না হোক সে মুমীন তবু
এ তার অধিকার।
তুমি আল্লাহর খলিফা
বেহেশত তুমি চাও
তবে তুমি তামাম সৃষ্টির
সেবক হয়ে যাও।
মুসলমান তো গরীব দুখীর
বন্ধু, আপনজন
তার সেবাতে দাও ঢেলে দাও
মুমীন তোমার মন।
জান্নাত যাবার এই তো পথ
জান্নাত যদি চাও
নবীর এসব সুন্নত তুমি
সঙ্গী করে নাও।
৬ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৭
কিপ্টা কাহিনী
তোমার চেয়ে আমি কিপ্টা
আমার চেয়ে তুমি
আমার চেয়ে রুমি কিপ্টা
রুমির চেয়ে ভূমি।
সেই ভুূমিতে কেউবা ফলায়
বিষ কাটালির চারা
সোনার ফসল অবহেলায়
যায় অকালে মারা।
আশির দশক বাঁশি বাজায়
মাসি চিড়া খায়
পাড়াপড়শি তাকিয়ে দেখে
কার কি আসে যায়।
৭ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৮
ফুলের চারা ফুল ফোটাবে
পাহাড় কেটে ঘর বানালাম
থাকার ছিল সাধ
সে ঘরে আজ বসত করে
দুরন্ত হার্মাদ।
লাগিয়ে ছিলাম ফুলের চারা
যতন করার লোক নাই
লাগিয়েছিলাম সে সুখ বুকে
অন্তরে তাই শোক নাই।
ফুলের চারা ফুল ফোটাবে
হুল চালাবে পোকা
দুঃখ আমার সে হুল খাবে
এই পরাণের খোকা।
৭ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৩৯
ডুব দিতে কি করছি মানা
ইফতার করলে রেবে ধরে
নামাজ পড়লে পুলিশে
তারা নাকি হুকুমের দাস
বড় কর্তার কুলি সে।
বড় কর্তা কাঁঠাল ভর্তা
খেয়ে উড়ায় খুলি সে
মিছিল এলে চালায় কর্তা
ট্যাক্সে কেনা গুলি সে।
সে গুলিটার ছবি আঁকতে
বিলায় শত তুলি সে
তার নাই কোন লজ্জা শরম
শোনায় মিঠা বুলি সে?
এসব করে ভীতুর ছাও
বুকে শুধু মরার ভয়
ঘুমের মাঝে প্রলাপ বকে
মরে গেলাম শুধু কয়।
এতোই যদি মরার ভয়
কে কয় বসতে গদীতে
ভয় থাকেনা ডুবে মরলে
শীতলক্ষ্যা নদীতে।
ডুব দিতে কি করছি মানা
গাঙ দেখিসনা অন্ধ কানা?
৮ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪০
হক কথা বলি
এই রাত ভোর হবে
সকালটা তোর হবে
ফুটবে তোর মুখে
অমলিন হাসি।
তাইতো তোকে আজও
এতো ভালবাসি।
হাসবে আকাশ, নদী
অমল কিশোর
সেও জানে সেই ভোর
শুধু হবে তোর।
আয় করি গলাগলি
ছেড়ে দেই দলাদলি
হাতে হাত রেখে আয়
একসাথে চলি।
দিন হোক, রাত হোক
হক কথা বলি।
৮ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪১
সে শক্তি নাই কারো
কার হুকুমে মুসল্লীদের
করে ওরা বন্দী
রোজার দিনে কারা করে
হুজুর ধরার ফন্দি।
হুজুর মরে জুজুর ভয়ে
কয় না কথা, চুপ
তবু কেনো তাদের জন্য
খুঁড়ছে অন্ধকূপ?
ঘটনা কি, তারাবীতে
কার কি ক্ষতি হয়
হুজুর ওরা, নামাজ পড়ে
তবু কেনো ভয়।
কোরান পড়লে মা বোন ধরো
নিজে বলো মুসলমান
আলেম রাখো জেলখানাতে
আজব তোমার দ্বীন ঈমান।
অনেক হইছে এবার তুমি
ভন্ডামীটা ছাড়ো
নইলে তোমায় বাঁচাবে যে
সে শক্তি নাই কারো।
৮ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪২
ঈদের খুশী
আকাশ জুড়ে তারার মেলা
পাড়ায় পাড়ায় ধুম
নতুন ঈদের চাঁদ এলো তাই
নাইরে কারো ঘুম।
ঈদের দিনে নিঁদ হারিয়ে
হাসছে বকুল ফুল
হাসনাহেনা বলছে ডেকে
করিস না আর ভুল।
এখন থেকে কাঁধের সাথে
মিলাও সবাই কাঁধ
এ মিলনের গান গাই এসো
বলছে ঈদের চাঁদ।
হাসছে আকাশ হাসছে বাতাস
হাসছে গোলাপ ফুল
ঈদের খুশীর খুশবোতে তাই
দুনিয়া মশগুল।
৯ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৩
কন্যা দন্ত মাজুক
সবুজ বরণ দেশ আমাদের
শ্যামল বরণ দেশ
পঙ্গপালরা খেয়ে ফসল
সবই করছে শেষ।
মাঠ ভরা ধান ছিল
গোলা ভরা চাল
সে গোলাতে হাঁটে এখন
পুরোণো জঞ্জাল।
ঘরে ঘরে হচ্ছে আবার
নতুন করে রান্না
ডেগের ভেতর নাচ জুড়েছে
চুয়াত্তুরের কান্না।
পঁচাত্তুরের মুক্তিযোদ্ধা
ওরা গেল কই?
আমরা কিছু ভীতুর ডিম
ওদিক চেয়ে রই।
ডাকছে তোরে নয়া শহীদ
গুম শিশুদের মায়
পঁচাত্তুরের মতন তোরা
আয়রে ছুটে আয়।
ট্রাকে উঠে নাচুক ইনু
ডুগডুগি ফের বাজুক
কৃষক কন্যা ঘুম ভেঙে
পারলে দন্ত মাজুক।
১১ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৪
আয় পেয়ারে জান
তোমার মত তিনশ গাধার
খোরাক দিলাম খাও
খাওয়া হলে তুলোর বস্তা
পিঠে নিয়ে যাও।
খেলোয়াড়রা করবে খেলা
হুজুর দাওয়াত খাবে
হুজুর কেন রাজনীতিটার
খেলার মাঠে যাবে।
খেলার মাঠে নামবে যারা
তারা খাবে ল্যাঙ
পারলে দেবো ফাঁসি তাদের
নইলে ভাঙবো ঠ্যাঙ।
হুজুরদেরকে চায় না রাজা
সাগরে দেয় পাঠিয়ে
তারপরে সে সাধের জাহাজ
আপসে দেয় তা ফাটিয়ে।
এ ইতিহাস ভুলে গিয়ে
শিন্নি দিলে খায়
বিনিময়ে কেউবা জেলে
কেউবা মরে যায়।
আজকে মারো জামাত শিবির
কালকে মরবে তুমি
কোরবানীর দিন সামনে হুজুর
তাইতো কদম চুমি।
যতো পারো নোটের বস্তা
নিজে তুলে নাও
জামাত মরে মরুক তারা
সেদিক কেন চাও।
আয় পেয়ারে জান
মিষ্টির ভেতর বিষের বড়ি
এবার আপনি খান।
১১ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৫
সদোপদেশ
অহংকারের বোঝা এবার মাথা থেকে নামাও
ফালতু কথার বৃষ্টিধারা এবার তুমি থামাও।
ঘৃণা,
ঈর্ষা, লোভ
লালসা সাগরে দাও ফেলে
বিবেক তোমার কষ্ট পাবে হারাম খাবার খেলে।
শুদ্ধ মানুষ হলে পরে মনে পাবে শান্তি
কোরান পড়ে দূর করে দাও হৃদয়ের সব ভ্রান্তি।
প্রতিদিনই মন্দ ছাড়ো ভালোটাকে ধরো
সবাই যেন বলে ভাল এমন জীবন গড়ো।
তোমায় দেখে চন্দ্রতারা, হেসে
উঠুক ফুল
তোমায় দেখে যাক না ভেঙে সবার মনের ভুল।
১৩ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৬
জবানের দাম
কথা দিয়ে না রাখাটা মস্ত বড় পাপ
এর জন্য পেতে হয় কঠিন অভিশাপ।
কথা দিলে কথা রাখো
ওয়াদা রাখো ঠিক
তোমার সুনাম তাতে করে
ছুটবে চতুর্দিক।
জবান নষ্ট করলে বাড়বে শুধু অনুতাপ।
কথা দিয়ে না রাখাটা মস্ত বড় পাপ।
ওয়াদা খেলাফ করে তারা
ফালতু কথা বলে যারা
তাদের ভাগ্যে জোটে কেবল কষ্ট মনস্তাপ।
কথা দিয়ে না রাখাটা মস্ত বড় পাপ।
যার জবানের নাইরে দাম
খারাপ হয় তার পরিনাম
সে পায় তখন ক্রমাগত লোকের অভিশাপ।
১৩ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৭
আম পড়ে টুপটাপ
আম পড়ে টুপটাপ, তাল পড়ে ধূপ
দেয়ালেরও কান আছে চুপ চুপ চুপ।
কথা কইলে ফাঁসি খাবি নইলে হবি গুম
বুলেট বাবু নইলে তোরে দেবে তাজা ঘুম।
বুলবুলি খায় ধানের ক্ষেত,
শেয়াল করে বিয়া
সেই ফাঁকে মুরগীর ছাও
চিলে যায়রে নিয় নিয়া।
গিরস্ত ঘরে ঘুমায় দিনে
ইঁদুরে খায় ধান
বরাক বাঁশের পাতারে কয়
বরাক বাঁশের পান।
জাকাত নিতে মানুষ মরে
উন্নয়নের জোয়ারে
আলেমগুলো বন্দী থাকে জিন্দানখানার খোঁয়াড়ে।
এমন সময় আইলো ঈদ,
নিঁদ যাবি তুই কত আর
কে বলেছে আগুন নিভে
বাতাস পাইলে ফতোয়ার।
জয় আসে না কোন কালে
রাজপথে না নামলে
জয়তো আসে জোয়ান ছেলের
বুকের পাটা ঘামলে।
১৫ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৮
তাপ ও পাপ
এই তাপ কিছু না, সেই তাপের ছাও
যেই পাপে দুলে ওঠে আগুনের নাও
আগুনের নাও দোলে আঙুরের মতো
দোল খায় গোছা গোছা পাপ শত শত।
শত শত মানুষের বুক ফাটা কান্না
দোযখের ডেক ভরে হবে নাকি রান্না
জানে তবু লোকে পাপ কেন করে হায়
জেনেশুনে সুদ, ঘুষ, কেনো
ওরা খায়।
পাপ আনে অভিশাপ জীবনের তরে
তবু পাপ বাড়ছেই প্রতি ঘরে ঘরে।
শয়তান ধোঁকা দেয়, লোকজন খায়
ধোঁকা খেয়ে ওরা সব কই বলো যায়?
১৬ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৪৯
নিরেট বোকার হদ্দ
তেল না দিলে নাও চলে না
আমিও সেটা জানি
তেল দিতে তাও মানা করছে
আমার দাদী, নানী।
তেল না দিলে উচিত কথা
তেলাপোকাও কয় না
তেল না দিলে উঁকুণ সেও
কারো মাথায় বয় না।
তেল দেই না তবু কেনো
লাইক কমেন্ট দেয় সুজনে
চিন্তা করেও কূল পাই না
মিয়া বিবি দুজনে।
যতোই ভাল লেখো তুমি
লেখা কিছু হয় না
ঈদ সংখ্যায় লেখা দিয়েন
সম্পাদকও কয় না।
দিগন্ত বা সংগ্রাম বলো
কিংবা ফুলের কুঁড়ি
সবাই খোঁজে কোথায় আছে
তাজা ফলের ঝুঁড়ি।
শুনছি এখন লাভ ছাড়া কেউ
মরা সাপও খায় না
দরকার ছাড়া জামাই ওতো
শ্বশুর বাড়ি যায় না।
আগে আমি লিখতাম ভালো
এখন লেখা হয় না
সবাই বলে একই কথা
জরিনা ও ময়না।
ফেসবুকে দেই হাবিজাবি
হয় না ওসব পদ্য
তবু লিখি লোক যে আমি
নিরেট বোকার হদ্দ।
১৬ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫০
কিশোর আলো কিশোর আলো
কিশোর আলো কিশোর আলো
সুখ স্বপনের পিদিম জ্বালো
ভালো লেখা লাগে ভালো
কালো লেখা ছাপে না
লেখা পেলে সোনা বরণ
গজ ফিতাতে মাপে না।
কিশোর আলো কিশোর আলো
খায় সে চিকন, মোটা চালও
ভর্তা, ভাজি, উচ্ছে, ডালও
গাধা, ঘোড়া পালে না
শিশু পেলে চুমোও খায়
প্রজাপতির গালে না।
কিশোর আলো কিশোর আলো
যায় হারিয়ে মহাকালও
যায় হারিয়ে জিয়া খালও
কিছুই টিকে থাকে না
ভুলতে গেলে সব ভুলা যায়
শুধু বাপ ও মাকে না।
১৭ই এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫১
যাবে আমার বাড়ি?
লাল পেড়ে শাড়ি
কিনে দিতে পারি
যদি তুমি যাও ওগো
আমার নয়া বাড়ি।
বাড়ি আছে জবা ফুল
বরই গাছে পাকা কুল
বটবৃক্ষের ছায়া আছে
পরাণ ভরা মায়া আছে
আরো আছে পরাণ পাখি
দই ভরা হাঁড়ি।
যাবে আমার বাড়ি?
গাঁয়ের নামটি বড়গাঁও
যদি জানু বাড়ি যাও
শুনতে পাবে ঘুঘুর ডাক
গাছের ডালে মধুর চাক
দেখবে বিশাল বন
আলতা রাঙা মন
শাপলা ফুলের মালা চাও?
এনে দিতে পারি।
যাবে আমার বাড়ি?
বাসক ফুলের মধু
লুকিয়ে খায় বধু
উড়ে সবুজ টিয়ে
ঘোমটা মুখে দিয়ে
দেখে গাঁয়ের নারী
যাবে আমার বাড়ি?
১৯শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫২
তেতুল গাছের ভূত
তেতুল তলে বসতে মানা
তেতুল গাছে ভূত
ভুলে গিয়ে তেতুল তলে
গেল হীরার পুত।
গিয়ে দেখে তেতুল তলে
দুষ্ট ছেলের দল
বসে বসে খাচ্ছে সবাই
পাকা তেতুল ফল।
বললো ওরা, শোনরে পটু
ভয় পাইলেই ভয়
সাহস করে এগিয়ে গেলে
ভয় হয়ে যায় জয়।
তেতুল খাবি? যা গাছে উঠ
ভয়ের কিছু নাই
ভয় তাড়িয়ে আমরা এখন
পাকা তেতুল খাই।
পটু তখন গাছে চড়ে
তেতুল পেড়ে খায়
ছেলেরা সব নিচে বসে
সাহসের গান গায়।
১৯শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৩
ডাঙ্গুলি
খেলতে গিয়ে ডাঙ্গুলি
পা ভাঙলো গাঙ্গুলি
মা ভাবলো, আঙ্গুলি
গাঙ্গুলি কয়, না
আঙ্গুলি মা ভাঙেনি
ভেঙেছে মা, পা।
ডাক্তার কয়, সেকি রে
পা ভাঙলো কি করে
দৌড় দিছিলাম কাকু
পথে ছিল মাকু
মাকু গেল গড়িয়ে
আমি তখন পড়ে গেলাম
দুহাত পা ছড়িয়ে।
ঠেলাগাড়ি ঠেলতে হয়
চক্ষু খুলে খেলতে হয়।
হুশ হারিয়ে খেলিস না
চোখের পানি ফেলিস না।
অষুধ দিলাম বাড়ি যা
সময় মত টেবলেট খা।
সেই থেকে এই গাঙ্গুলি
খেলে না আর ডাঙ্গুলি।
২১শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জুমুয়া
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৪
দাও দাও, বৃষ্টি
দাও দাও, বৃষ্টি দাও
দাও দাও, বৃষ্টি
পানি চাই, পানি চাই
কাঁদে এই সৃষ্টি।
সব ফেটে চৌচির
পানি নেই পুকুরে
পশু পাখি মারা যায়
কাৎরায় কুকুরে।
খাল, বিল, জলাশয়ে
কাঠফাটা রোদ্দুর
পানি নেই দেশ জুড়ে
দেখি আর কদ্দুর।
দয়া করো দয়াময়
দাও দাও বৃষ্টি
রোদ্দুরে চারদিকে
শুধু অনাসৃষ্টি।
গরমের তাপে প্রভু
প্রাণ বুঝি যায় যায়
রোদে পুড়ে প্রাণীকুল
করে শুধু হায় হায়।
দয়া চাই দয়াময়
দাও মেঘ বৃষ্টি।
দাও দাও আল্লজি
রহমের দৃষ্টি।
তুলেছি দু হাত
করি মোনাজাত
বাঁচাও বাঁচাও প্রভু
বাঁচাও এ কৃষ্টি।
২১শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৫
ভিক্ষা নয় কাজ দিন
ভিক্ষা দিয়ে ভিক্ষুক পালা
বন্ধ যদি না করো
সমাজ দেহ খুঁচিয়ে আরো
সমাজটাকে ঘাঁ করো।
পাড়ায় পাড়ায় লিস্টি করো
গরীব কারা আছে
তাদেরকে দাও ক্ষুদ্র ঋণ
গরীব যেন বাঁচে।
বিধবাকে দাও রিক্সা কিনে
ভাড়া দিয়ে খাও
নইলে যদি পারো তুমি
সেলাই মেশিন নাও।
প্রতি সপ্তায় একদিনের লাভ
পাবে হিসাব রক্ষক পাবে
নইলে তার পুঁজি সবই
কালো বিড়াল খাবে।
হিসাব রক্ষক হতে পারে
ইমাম মোয়াজ্জিন
বলবে তারা সপ্তাহ শেষে
এবার হিসাব দিন।
সবার মুখে ফুটবে হাসি
করতে পারো যদি
সমাজ জুড়ে বইবে সুখ
তবেই নিরবধি।
২৩শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৬
নন্দলালের পুত
রামগড়ুরের ছানা।
একটা ছিল অন্ধ আর
দুইটা ছিল কানা।
বলতে পারিস রানা।
স্বদেশ ছেড়ে ওরা কেন
চলে যেতো ঘানা?
জানি দাদা, জানি
রক্তখেকো ডাইনী ছিল
ওদের বুড়ো নানী।
রক্তের জন্য ওদের ঘরে
পুলিশ দিতো হানা
রক্ত দিবি, চিল্লাবি
না
কথা বলাও মানা।
তোদের যতো রক্ত আছে
সবই নানীর পানা
বুঝলি অন্ধ, কানা?
নানীর ভয়ে নাতি
নিয়ে উড়াল হাতি
রাত দুপুরে পালিয়ে গেল
নিভিয়ে ঘরের বাতি।
ঘানা বসে খবর পেলো
ওদের বুড়ো নানী
সাবাড় করছে খেয়েদেয়ে
দেশের দানাপানি।
ঘুরছে এখন পাড়ায় পাড়ায়
বুভুক্ষ সব ভূত
জিগাইলে কয়, আমরা
সবাই
নন্দলালের পুত।
২৪শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৭
পাতালপুরীর বৌ
বলতে গেলে বলার কথা
মুখ হয়ে যায় বন্ধ
দেখতে গেলে দেখার জিনিস
চোখ হয়ে যায় অন্ধ।
লোকে বলে আমি নাকি
নন্দলালের নন্দ
করিম শেখের নাতি তবু
মনে লাগে সন্দ।
মুখের ভাষা মুখে থাকে
গুমের ভয়ে কান্দি
স্বৈরাচারকে দেখলে তবু
গরম যে হয় চান্দি।
পাচ্ছি তোমায় ভয়।
তাইতো তোমার কপাল ভেঙে
আনবো আমার জয়।
গণজোয়ার এলে হাসে
পাতালপুরীর বৌ
নন্দও ঠিক ক্ষেপে যায়
দেখলে তাজা লৌ।
২১শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৮
অ জিলানী আও
অ জিলানী,
একটু
কাছে আও
অনেক দামী কথা আছে
একটু শুনে যাও।
আমি এখন বুদ্ধি বেঁচি,
তোমায় দেবো ফাও।
তুমি যদি মাগনা খাবার
তিনবেলাতে চাও।
আরো ধরো বিনা পয়সায়
নিরাপত্তা পাও
কেমন হবে বিনা ভাড়ায়
থাকতে যদি পাও?
শুয়ে শুয়ে কল্পনাতে
ময়ূরপঙ্খী নাও
ভাসিয়ে যদি যখন তখন
শ্বশুরবাড়ি যাও?
সবই পাবে অবলীলায়
নিতে তুমি চাও?
গোপন কথা শুনতে হলে
আরো কাছে আও।
উচিত কথা বলে দেবে
মুখ করবে না বন্ধ
টিকটিকিরা তবে তোমার
ঠিকই পাবে গন্ধ।
গন্ধ শুঁকে আসবে ওরা
হাতে নিয়ে লোহার তোড়া
বলবে,
চলেন
জেলে
বাগান জুড়ে পানি দেয়ার
বেহুদা কাজ ফেলে।
থানা থেকে চালানে
যাবে মস্ত দালানে
থাকা খাওয়ার চিন্তা নাই
কেমন হবে কওতো ভাই?
চলো সবে জেলে যাই
তিনবেলাতেই মাগনা খাই।
বুদ্ধি আমার পাকা
নৌকাতে নাই চাকা।
ঠিক বলি নাই কাকা?
অ জিলানী আও
জেলের ভাত খাও।
২৫শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৫৯
স্বপ্ন দেখা
স্বপ্নটা তো ভেঙে গেল
কোথায় এলাম ভাই
এইখানেতো ডান্ডাবেরি
পায়ে শিকল নাই।
মিছিল আছে, গুলি
নাই
ভাড়াটিয়া কুলি নাই
লগি বৈঠার ঝুলি নাই
মানুষ আছে, খুলী
নাই।
কওতো এটা কেমুন দেশ
দেশটা জুড়ে খুশীর রেশ।
কোথায় গেল খুনীর আইন
রাজা কয় না ছয়কে নাইন
সত্য বললে হয় না ফাইন
এ কোন দেশে এলাম ভাই।
দেশে কোন ডাইনী নাই?
আসমান জুড়ে চাঁদ হাসে
শিশিরকণা লাল ঘাসে
বুলবুলি গায় গান
সোনামনি খুশীতে কয়
সালাম চাচাজান।
অমা! একি আজব দেশ
কালো কেনো সাদা কেশ
কোথায় গেল হিংসা দ্বেষ
সুবাস আসে দখিন বায়
খিলখিলিয়ে হাসে আমার
কন্যা,
নাতি, আপন
মায়।
ঘুম ভেঙেছে বাঁচলাম তাই
চল না ঈদের ফিরনী খাই।
পরাণ খুলে চল গান গাই
সত্যি কি দেশ স্বাধীন ভাই?
ঘুমের ঘোরে কি কস তুই
চাপ না একটু, আমিও
শুই।
আসে না ঘুম, মরার
ভয়
কেমনে রে তুই করলি জয়?
২৬শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬০
ফারদাফাই
সর্প ধরা জানতে হয়
নইলে বসে কানতে হয়
কাঁচা কলা রানতে হয়
যুদ্ধে হারে? কারণ, ভয়।
ভয়ে মরে ধান্ধাবাজ
দুশ্চরিত্র শাসকরাজ
ভয়ে মরে ইতর জন
ধরা পড়তে কতক্ষণ?
ধরা পড়লে হাটের মার
শুরু হবে আরেকবার।
বাহাদুরের কিসের ভয়
সেতো করে সাপের ক্ষয়।
সাপের শেষ রাখতে নাই
বিষের বোতল চাখতে নাই।
বুঝলে বোঝো, নইলে
নাই
বোকারা হয় ফারদাফাই।
২৭শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬১
রাম্বুটান
জলদি লাগান রাম্বুটান
নইলে বসে বাম্বু খান।
টিকেট কেটে বোম্বে যান
এতো মাইর কোম্বে খান?
পিটায়া বস্তা করলো তুষ
তবু আপনার হয় না হুশ।
গুম এসে ঘুম করলো শেষ
পোলা এখন নিরুদ্দেশ।
মুখে যখন মারলো তালা
বলেন কালা অনেক ভালা
বাজার জুড়ে রাজার ভাই
আলু কিনতে কোথায় যাই।
বাজার জুড়ে আগুন তাই
বাঁচতে হলে জাগুন ভাই।
২৭শে এপ্রিল ২৩ : মধ্য দুপুর।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬২
আসছে ঢেউ
বাবার টাকা লুঠ করে
যে দেশে নিজ কন্যা
সেখানে ক্যান হবে না কও
খোদার গযব বন্যা।
মায়ে পোলায় আকাম করে
শাশুড়ি জামাই মিল্লা
গযব কেনো খাবে না কও
সে দেশটারে গিল্লা?
বাপের খুনি সন্তানও হয়
ভাইয়ের খুনি ভাই
রাজার চোখে খুনের নেশা
দয়ার নেশা নাই।
পাপের ভারে ডুবছে নাও
তোমরা কেন সঙ্গে যাও?
আর যেয়ো না সঙ্গে কেউ
জোরে জোরে চিল্লা।
২৭শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৩
বয়স আমার চৌদ্দ
বয়স আমার চৌদ্দ
ছড়া লিখলাম সদ্য
সদ্য মানে এখন না
সদ্য মানে অদ্য।
দূরছাই এটা ছড়া না?
তবে কি তা পদ্য?
মামা পড়ে বলেন এটা
নিরেট একটা গদ্য।
আরো বলেন, এমন ছড়া
লেখে বোকার হদ্দ।
তুই কি জানি ছড়া কোনটা
কোনটারে কয় পদ্ম?
বয়স আমার চৌদ্দ
আজো নাকি রয়ে গেছি
আমি বোকার হদ্দ।
বলতে পারেন কবে আমি
হবো সেয়ান মদ্দ?
২৭শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৪
সকলেই মরবেন
শুয়ে থাকি রাতদিন
সপ্তাহে সাত দিন।
নাই কাজকর্ম
থলথলে চর্ম।
ভুলে গেছে লোকজন
শুধু আছে করিমন।
খেয়ো নাকো এইটা
খেয়ো নাকো সেইটা
খেতে গেলে ঘি বারণ
আছে শুধু নিবারণ।
খাই দিনে দেড়কুড়ি
ক্যাপসুল টেবলেট
তবু বাড়ে পেট ভুঁড়ি
বাড়ে নাতো ঘাড় হেট।
খেঁটে যায় কামরুন
রোজ রোজ কষ্ট
শরীরের যন্ত্ররা
খালি হয় নষ্ট।
জল খাই মেপে মেপে
আর খাই পাকা পেঁপে
খেতে নাই ভাজা পোড়া
খেতে দেয় দই চিড়া।
খেতে নেই মিষ্টি
কি যে অনাসৃষ্টি।
কখন যে চলে যাই
সালামটা বলে যাই
দোয়া শুধু করবেন
সকলেই মরবেন।
২৮শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৫
তাইরে নাইরে নাই
তাইরে নাইরে নাই
আয়রে গাঁয়ে যাই
বাড়ি গিয়ে মজা করে
মন্ডা মিঠাই খাই।
তাইরে নাইরে নাই
আয়রে গাঁয়ে যাই
বিলের জলে ডুব দিয়ে
দুঃখটা লুকাই।
তাইরে নাইরে নাই
আয়রে গাঁয়ে যাই
বটের তলে বসে বসে
শীতল বাতাস খাই।
তাইরে নাইরে নাই
আয়রে গাঁয়ে যাই
বৃক্ষ, নদী, বনের
ধারে
অঢেল শান্তি পাই।
তাইরে নাইরে নাই
আয়রে গাঁয়ে যাই
বাড়ি গিয়ে আগের মত
নীল ঘুড়ি উড়াই।
তাইরে নাইরে নাই
আয়রে গাঁয়ে যাই
বাড়ি গিয়ে আবার সবে
ডাঙ্গুলি পিটাই।
২৮শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ জুমুয়া
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৬
আমি তোমার কেউ না
আমি তোমার কেউ না
মন দরিয়ার ঢেউ না
ভুলে গেলে দোষ নাই
মনে কোন রোষ নাই।
পিপীলিকা ছোট অতি
স্বপ্ন আছে তারও
তার সে সুখের স্বপন কি
মুছতে তুমি পারো?
নিজের চরকায় তেল দাও
গাছের পাকা বেল খাও
পরের দোষ খুঁজে কেনো
সময় নষ্ট করো?
সেও একদিন মারা যাবে
তুমিও তো মরো।
পানের সাথে চুন খাও
তেল না মেরে গুণ গাও
তাতে তোমার পূণ্য ঝোলা
হবে আরো বড়ো।
আমি তোমার কেউ না
হৃদ বাতাসের ঢেউ না।
২৮শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৭
কানে কানে কই
কানে কানে কই
বই যে আমার সই
বইয়ের সঙ্গে রই
সারা দুপুর বেলা
ছেড়ে নানান খেলা।
পাতায় পাতায় স্বপ্ন আঁকা
কভু মক্কা, কভু ঢাকা
ঘুরে বেড়ায় মনের চাকা
কখন যে কই যাই
লেখাঝোকা নাই।
ঘুরি আমি বইয়ের পাতায়
যে বই আমার হৃদয় মাতায়।
কভু লেখা টুকি খাতায়
কভু ঘুরি নীল দরিয়ায়
সবাই মিলে বই পড়ি আয়
বই পড়ি যাই পাহাড় চূড়ায়।
আয় পড়ি বই, আয়
সময় বয়ে যায়।
২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৮
আমার বড়গাঁও
আমার সোনার গাঁও
দেখতে যদি চাও
গাজীপুরের বড়গাঁয়ে
সবাই চলে যাও।
আম, কাঁঠাল আর লিচুর বাগান
দেখে ভরবে তোমার পরাণ
পেয়ারা, পেঁপেঁ সবই পাবে
আর কি খেতে চাও?
বরই পাবে, জলপাই পাবে
কালো জামের বৃক্ষ পাবে
কলা, তেতুল সবই আছে
পরাণ ভরে খাও।
তালের গাছে তালও আছে
ডালিম, আতা গাছে গাছে
যেটা লাগে সেটাই তুমি
দুহাত ভরে নাও।
কালীগঞ্জ থানা আমার
ইউপি মুক্তারপুর
রাতের বেলা শুনবে বাঁশি
কি যে সুমধুর।
পাখির ডাকে ঘুমটা ভাঙে
দেখতে যদি চাও
চলো, চলো, বন্ধুরা সব
আমার বড়গাঁও।
৪ঠা মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৬৯
গায়েঁর নামটি বড়গাঁও
বাড়ির পাশে গজারী বন
একটু দূরে নদী
সকাল সন্ধ্যা সেই নদীটা
বইছে নিরববধি।
নদীর পাশে চর পড়েছে
চরের পরে ঘর
নদীতে বয় পালের নাও
দেখতে কি সুন্দর।
পাখিরা কয় কিচির মিচির
বসে গাছের ডালে
তারই সাথে গাছের পাতা
নাচে তালে তালে।
ঘরের পাশে পিচঢালা পথ
কোন সুদূরে ধায়
গাড়ি চড়ে আমার বাড়ি
আয়রে তোরা, আয়।
গায়েঁর নামটি বড়গাঁও
ইউপি মুক্তারপুর
কালিগঞ্জ উপজেলা
জেলা গাজীপুর।
৫ই মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭০
কিল্লাই
কিল্লাই
জানিস না তুই পথে পথে
কেন জোরে চিল্লাই?
কথা বলার স্বাধীনতা
কাইড়া নিলি কিল্লাই?
মিছিল নিয়া নামলে পথে
গুলি করস কিল্লাই
গুলি খেয়ে রাগে আমরা
যখন তোরে ঢিল্লাই
আমারে তুই জঙ্গী কস
বলতো দেহি কিল্লাই?
একলা তো না, হাজার
জনে
নামছি পথে মিল্লাই
গুলি থামা নইলে তোরে
খাইমু আমি গিল্লাই।
কিল্লাই
বুঝিস না তুই কোন কারণে
রোদে পুড়ে চিল্লাই
বলতো দেহি সব জিনিসের
দাম বাড়াইলি কিল্লাই?
ইচ্ছে করে লবণ লাগাই
গায়ের চামড়া ছিল্লাই।
আমার বাড়ছে হাড্ডি আর
তোর বাড়ছে জিল্লাই
তোর এ গদী উল্টে দেবো
হগল জনে মিল্লাই।
৯ই মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭১
হরিপদ দত্ত
হরিপদ দত্ত
ব্যাঙ নাকি ফাল পাড়ে
বিল পাড়ে কত্ত
কথাটা কি সত্য?
আজ্ঞে
এই ছিল হুজুরের
অবশেষে ভাগ্যে।
রিলিফের মাল খায়
গরীবের গাল খায়
জেলেদের জাল খায়
নরাধম,
যাকগে।
আজ্ঞে
এই ছিল হুজুরের ভাগ্যে।
শোন,
যা
যা করবি
চোরদের ধরবি
ব্যাঙগুলো ধরে ধরে
জালে সব ভরবি।
জ্বি,
আচ্ছা, পারবো
ব্যাঙ সব মারবো
মাটিতলে গাড়বো
পারবো,
জ্বি, পারবো।
কেউ পায় সোনার খনি
কেউ পায় চোরের খনি
কেউ পায় ব্যাঙ
মার জোরে ল্যাঙ।
হরিপদ দত্ত
গিয়ে দেখে ব্যাঙ আহা
খায় নারে তত্ত্ব
ব্যাঙ আছে যত্তো
ওরা সব খায় নাকি
বসে আমসত্ব।
হারামের কাজেকামে
ওরা থাকে মত্ত।
হ,
দাদা, সত্য।
৯ই মে ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭২
বাবুই পাখির বাসা
বাবুই পাখির বাসা
দেখতে বড়ই খাসা
সেই পাখিটাও টা টা বলে
গেল উত্তমাশা।
বললো তখন নাসা
কেমনে মিটবে আশা
বিশ্বটাই তো এখন দেখি
মন্দ লোকে ঠাসা।
এদেশ থেকে ওদেশ ঘুরে
যতোই তুমি যাও না দূরে
সকল খানেই পাবে ঘৃণা
নাইরে ভালবাসা।
মন্দটাকে করতে দূর
লাগবে এখন খোদার নূর
এক হয়ে যা দেশের সকল
ছাত্র,
শ্রমিক, চাষা।
আশার নাও ভাসা
মিটবে মনের আশা
লাভ হবে না পালিয়ে গেলে
সুদূর উত্তমাশা।
১০ই মে ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৩
কাঁদে আমার মন
সাগর থেকে তুলবো মানিক,
পাহাড় থেকে সোনা
আমার হৃদয় জুড়ে প্রিয়
প্রেমের ফসল বোনা।
শিশুর মুখে আধো বোল,
মিষ্টি হাসির মউ
সবই আমি রেখে দেবো
তোরই জন্য বউ।
আমার এ দেশ সবুজ বরণ
রঙিন ঠোঁটের টিয়া
তারই জন্য ব্যাকুল থাকে
আমার এ মন, হিয়া।
এ দেশ আমার, তুইও আমার
ভালবাসার ধন
তোদের মুখের হাসি দেখতে
কাঁদে আমার মন।
১০ই মে ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৪
স্বাধীনতা উড়ছিল
একটা দুপুর উপুড় হয়ে ফুপুর সাথে খেলছিল
একটা পাখি স্বাধীনতার জন্য পাখা মেলছিল।
মা জননী বাবার জন্য রুটি তখন বেলছিল
আঁধার ছিল তবু মায়ের কুপির ভেতর তেল ছিল।
পায়রাগুলো বাকুম বাকুম শান্তি বার্তা খুলছিল
স্বৈরাচারে বলছে তখন মানুষ মারা ভুল ছিল।
শান্তিবার্তায় স্বাধীনতার নীতিকথার মূল ছিল।
খামের ভেতর সঙ্গে কিছু সুবাসমাখা ফুল ছিল।
দেশের মানুষ স্বৈরাচারের কবর যখন খুঁড়ছিল
কবুতরের পাখনায় তখন স্বাধীনতা উড়ছিল।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৫
তবু কেনে মতির বাপে
সইতে সইতে ঢের সয়েছি
আরতো জ্বালা সইছে না
তবু কেনে মতির বাপে
কোন কথাই কইছে না।
চাল ডাল আর তেলের দাম
শুনলে গায়ে আসে ঘাম
দামের বোঝা আমার ঘাড়ে
রাজা বোঝা বইছে না।
তবু কেনে মতির বাপে
কোন কথাই কইছে না।
দেশের টাকা বিদেশ যায়
চিল শকুনে টাকা খায়
সেই পাচারের দায় যে রাজা
কোন মতেই লইছে না।
তবু কেনে মতির বাপে
কোন কথাই কইছে না।
গণতন্ত্রের "গ" নাই দেশে
বিলাই নাচে বাঘের বেশে
রাজনীতিবিদ এসব নিয়ে
কেউতো কিছু কইছে না।
তবু কেনে মতির বাপে
কোন কথাই কইছে না।
সইতে সইতে ঢের সয়েছি
আরতো জ্বালা সইছে না
তবু কেনে মতির বাপে
কোন কথাই কইছে না।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৬
বৃষ্টি আসুক
বৃষ্টি আসে, মিষ্টি হেসে, দৃষ্টিকাড়া বায়
বৃষ্টি আসে সৃষ্টি জুড়ে নূপুর পরা পায়।
বৃষ্টি আসে ঝুমুর ঝুমুর অবাক ছন্দ তালে
বৃষ্টি আসে টিনের চালে,গাছের মরা ডালে।
বৃষ্টি এলে মাঠে মাঠে জাগে নতুন ঘাস
বৃষ্টি এলে মনে প্রাণে জাগে স্বপ্ন আশ।
বৃষ্টি এলে ধরা আবার সাজে নতুন সাজে
বৃষ্টি এলে ঝুমঝুমা ঝুম ছন্দ হৃদে বাজে।
বৃষ্টি এলে দূর হয় যতো ধরার আবর্জনা
বৃষ্টি এলে দূর হয়ে যায় ধুলোবালির কণা।
বৃষ্টি এসে ধুয়ে মুছে জগত করে আলো
মাঝে মাঝে হৃদয় মনে বৃষ্টি আসা ভালো।
রিমঝিম ঝিম বৃষ্টিরে তুই আয়রে মনে আয়
মনের যতো মন্দ কালো ধুয়ে যেনো যায়।
ধুলোবালি সাফ হয়ে যাক, হাসুক আবার ধরা
বৃষ্টি আসুক, বৃষ্টি আসুক, হৃদয় আলো করা।
২২শে মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৭
অলসতা কেউ করো না
যে কথা বলার ছিল, হয়নি বলা
যে পথে চলার ছিল, হয়নি চলা
দিন গেলো তালেগোলে
কার খাটে, কার কোলে
উজান নদীর স্রোতে হয়নি চলা
বুঝিনি লাল, নীল কোনটা ধলা।
বুদ্ধিটা কম তাই ফাঁদে পড়ে কান্দি
ভাবলেই গরম হয় অভাগার চান্দি
কত দেখি রাত দিন
বলি হাতে চাঁদ দিন
নয় হাতে রশি দিন চাঁদটারে বান্ধি।
নয় দিন ডেকচি, কেটেকুটে রান্ধি।
কেউ কিছু দেয় না, সকলেই হাসে
বলে,চাঁদ এনে দেবো বৈশাখ মাসে
বৈশাখও চলে যায়
যায় আর বলে যায়
বুদ্ধিটা কাজে লাগা যদি কিছু আসে
আলসেরা চিরকালই অশ্রুতে ভাসে।
অলসতা করে যারা সময় করে নষ্ট
তার ভাগ্যে জোটে শুধু দুঃখ ও কষ্ট।
২৫শে মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৮
ভোলানাথ ভুলে যা
ওরে ভোলানাথ,- যা ভুলে যা
মানুষ দুটো কটু কথা বলেছে,
যা ভুলে যা।
মানুষের স্বভাব এই
কেউ কিছু করলেই
নানা কথা বলবে
বাঁকা হয়ে চলবে
এটা ওটা বলে শুধু
মন ভারী করবে।
যা ভুলে যা
সব ভুলে যা।
তুই কিছু করেছিস
তাই কিছু বলছে
অন্যের ভাল দেখে
মন তার টলছে।
মানুষের স্বভাব এই
ভাল কিছু দেখলেই
চোখ বাঁকা করবে
না না ভুল ধরবে
ভুলে যায় সোনাচান
নিজেও তো মরবে।
এইসব মনে রেখে লাভ নেই
কার মনে স্বপ্ন ও খাব নেই?
পারে না তাই করে না
বাঘের পিঠে চড়ে না
যদি ওরা পারতো
নিজেরাই করতো।
লোকে কিছু বলবেই
বরফটাও গলবেই
তাতে বল তোর কি
কেউ দেয় তেল ঘি?
যে যা বলার বলুক
গাড়ি সামনে চলুক
তুই সব ভুলে যা
ফল পেড়ে বসে খা।
২৫শে মে ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৭৯
মিয়া চাঁনের ছড়া
হুনেন হুনেন মিয়া চাঁন
তাড়াতাড়ি আডে যান
কিন্যা আনবেন গুয়া পান
ঘরে আছে আমন ধান।
মাইয়ারে কন আইতে
গুরি কুটমু রাইতে
জামাই আইবো বাইতে
চিতই পিডা খাইতে।
পিডার লগে মুরগীর রান
খাইবে আমার বাবাজান।
বলবে আল্লাহ মহীয়ান
আয় করি তাঁর গুনগান।
২৬শে মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮০
শোনরে আমার সোনামনি
শোনরে আমার সোনামনি
বড় যেদিন হবি
সবার সাথে হেসে হেসে
সত্য কথা কবি।
করিস নারে মন্দ কাজ
তবে লোকে দেবে লাজ
অন্যে মন্দ করতে গেলে
তারে থামতে কবি।
মিথ্যা কথা বলবি না
অসৎ পথে চলবি না
সত্য পথে চিরটাকাল
অটল হয়ে রবি।
শোনরে আমার সোনামনি
বড় যেদিন হবি
মানুষকে তুই বাসবি ভালো
আঁকবি এমন ছবি।
২৬শে মে ২০২৩ : বাদ জুমুয়া
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮১
ময়লা গায়ে লাগবে
ময়লা যতো ঘাটবে তুমি
ময়লা গায়ে লাগবে
ময়লার কাছে গেলে তবে
ময়লায় গা টা ঢাকবে।
ঘাটাঘাটি করলে ময়লা
দুর্গন্ধটা বাড়বে
ময়লা ঘেটে আর কেউ না
নিজেই শুধৃ হারবে।
তবু মানুষ ময়লা ঘাটে
পরের দোষ গায়
বোকার মত মন্দ ডাকে
বলে কাছে আয়।
এভাবেই তো ময়লা বাড়ে
সমাজে যায় ছড়িয়ে
ময়লা বাড়ার আসল কারণ
দিলাম তোমায় ধরিয়ে।
তবু তুমি ময়লা ঘাটবে
করবে পরনিন্দা?
গায়ে পরে সাদা জামা
সাদা কাপড় পিন্দা?
হায় অভাগা হায়
আর কতকাল মাখবি তুই
ময়লা নিজের গায়?
২৬শে মে ২০২৩ : বাদ আছর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮২
উঁচু রাখো শির
মাথা তোমার উঁচু রাখো,
উঁচু রাখো শির
উঁচু মাথা নিয়েই বাঁচে
সকল মহাবীর।
হুজুর হুজুর করে যারা
জ্বিহুজুরের চাকর তারা
আর কিছু নয়, তাদের দাবী
একটু গরম ক্ষীর।
কোরান আছে, হাদীস আছে,
আর কি বলো চাই
এ জীবনটা সফল করতে
আর কি লাগে ভাই?
কোরান হাদীস রেখে কেন
তোমরা মানো পীর।
আল্লাহ ছাড়া পীরের কাছে
কেন নোয়াও শির?
নবীর ছেলে হয় না নবী,
পীরের ছেলে পীর হয়
জলের ফোঁটা দিয়ে বলো
কখনো কি নীড় হয়?
ইসলাম চায় উঁচু শির
ইসলাম চায় মহাবীর
রক্তচক্ষু দেখে যেনো
না হয় কভু সে অধীর।
২৬শে মে ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৩
ঘুরে দাঁড়াতে শেখো
জুলুমে জালিমে ভরেছে স্বদেশ
নবীন স্বপ্নরা শুধু কাতরায়
কোথায় শান্তি কোনখানে সুখ
নিশীথ আঁধারে শুধু হাতরায়।
মানুষের চোখে ঘুম নেই আজ
আতঙ্ক ও শঙ্কারা হাঁটে ঘরে
দুমুঠো ভাতের বিলাপের সুর
বাজে ক্ষুধিতের অন্তরে।
অসহায় জন, ব্যথাতুর মন
চোখে নিরাশার মেঘ
দুরু দুরু বুকে যন্ত্রণা অথৈ
চারদিকে শুধু উদ্বেগ।
রাত শেষে তবু সূর্য ওঠে
আকাশে ভাসে চাঁদ
বলে যন্ত্রণার নীল বেদনা
সবই হবে বরবাদ।
যদি তুমি ফের দাঁড়াও উঠে,
ঘুরে দাঁড়াতে শেখো
ভয়ভীতি ও কালো সন্ত্রাস
তবে পালাবেই দেখো।
৩১শে মে ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৪
অবাক চেয়ে রই
প্রভু তোমার সৃষ্টি দেখে অবাক চেয়ে রই
বলো আমি কোনটা রেখে কোনটার কথা কই?
পাহাড়, নদী, ঝর্ণাধারা
দেখে যে হই আত্মহারা
আকাশ, সাগর, চন্দ্র দেখে বিমোহিত
হই।
বাগান ভরা বর্ণালী ফুল
তার ঘ্রাণেও হই আকুল
পাখপাখালির গান শুনেও তোমার কথা কই।
মৃদুমন্দ বাতাস দিলে, শাপলা দিলে বিলে
ছোট থেকে আমায় তুমি গড়লে তিলে তিলে
কোথায় ছিলাম, কোথায় আছি, যাবো আবার কই
যতোই ভাবি ততোই প্রভু শুধুই অবাক হই।
ভাবি আহা প্রভু তোমার কত ক্ষমতা
হৃদয় ভরে দিলে তুমি স্নেহ, মমতা।
আরো দিলে সোহাগ, প্রীতি
দিলে দীলে অঢেল স্মৃতি
কোনটা রেখে কোনটার কথা বলো আমি কই?
বৃষ্টি দিলে, সৃষ্টি দিলে, দৃষ্টি অবাক করা
রঙবাহারী রঙে তুমি সাজালে এ ধরা।
তোমার অতুল সৃজন দেখে মুগ্ধ চেয়ে রই
কোনটা রেখে কোনটার কথা বলো প্রভু কই?
৩রা জুন ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৫
সকল দেশের সেরা
সকল দেশের সেরা আমার
সোনার বাংলাদেশ
সারা অঙ্গে রূপ মাধুরী,
রূপের নেইরে শেষ।
আহা বেশ, বেশ, বেশ
আহা বেশ, বেশ, বেশ।
মাঠে মাঠে সোনার ফসল
বিলে ঝিলে মাছ
বনবনানী ভরা কতো
রঙবেরঙের গাছ।
ফুল কিশোরীর মাথা ভরা
ঘন কালো কেশ।
আহা বেশ, বেশ, বেশ
আহা বেশ, বেশ, বেশ।
মাথার ওপর উড়ে বেড়ায়
সাদা মেঘের নাও
তারচে মজা কচি মুখের
আধো আধো রাও।
কতরকম ফলফলাদি
মাটির নিচে গ্যাস।
আহা বেশ, বেশ, বেশ
আহা বেশ, বেশ, বেশ।
ঝর্ণা, নদী, পাখিরা গায়
মিষ্টি সুরে গান
সে গান শুনে আকুল হয়
আমার অধীর প্রাণ।
আমার দেশের রূপ সুষমার
নাইরে কোন শেষ।
আহা বেশ, বেশ, বেশ
আহা বেশ, বেশ, বেশ।
৪ঠা জুন ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৬
বুঝে শুধু রোজিনা
মামা
আমি কিছু বুঝি না।
দুনিয়ার হালচাল
ভাল বুঝে রোজিনা।
চাঁদ কেন বাড়ে কমে
সূর্য তো কমে না
চানাচুর ছাড়া চা
কেন মামা জমে না?
মামা
আমি এসব বুঝি না।
এইসব ভাল বুঝে
ও পাড়ার রোজিনা।
বাঘ আর গরু কেন
এক ঘাটে যায়
মিলে মিশে ওরা কেন
জল পানি খায়।
রাজা কেন বসে বসে
গাঁজা টাজা চায়।
মামা
এসব আমি বুঝি না।
এইসব ভাল বুঝে
জরিনা ও রোজিনা।
হাতি পড়ে ফান্দে
নানী কেন কান্দে
বুড়ি কেনো মিটিমিট
হাসে বসে চান্দে।
মামা আমি এসবের
কোন কিছু বুঝি না
এইসব ভাল বুঝে
ছোট মামী রোজিনা।
দেশ ছেড়ে বৈদেশে
কেন যায় পাবলিক
হুজুরেরা মার খায়
ছাড় পায় তাবলিগ।
এইসব কেন ঘটে
আমি কিছু বুঝি না
খেটে দুটো ভাত খাই
সাবু দানা খুঁজি না।
না না মামা সত্যি
আমি কিছু বুঝি না
কিছু বুঝে মরিয়ম
আর বুঝে রোজিনা।
মন্ত্রীর ছেলে মেয়ে
দেশে কেন থাকে না
এখানে কি ভাত নাই
নাকি ফল পাকে না?
আম জাম রেখে ওরা
হট ডগ খায়
কোন দুঃখে ওরা তবে
বৈদেশ যায়?
না না মামা এইসব
আমি কিছু জানি না
এইসব হাচা কথা
কোনটাই ফানি না।
না না মামা বুঝি না
বুদ্ধিটা মামা আমি
কোনখানে গুঁজি না।
ক্ষমতায় গেলে কেউ
কেয়ারটেকার মানে না?
এইটাই সাচ বাত
শুধু কথা, গানে না।
ভোট হবে রাইতে
কভি নেহি, দিনে না
তারা চায় ভোট তারা
জনগণ চিনে না।
কেন চায় এইসব
আমি মামা বুঝি না।
এইসব ভাল বুঝে
শেখ বাড়ির রোজিনা।
আগে পীর টাকা নিত
এখন টাকা নেয় না
এখন দেখি খালি কয়
ভোট কেন দেয় না।
পানি দেখে খালটায়
মাসলাটা পাল্টায়
খাসলত অদ্ভুত
লোকে কয় বদ ভূত।
কেন কয় আমি মামা
কোন কিছু বুঝি না
দুনিয়ার সব কিছু
বুঝে শুধু রোজিনা।
৫ই জুন ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৭
কে সে মুসলমান
পরের খেয়ে ঘুরে বেড়ায়, করেনা যে দান
ঘুরে ঘুরে মুরীদকে কয়, আরো টাকা আন
সেই টাকাতে নিজে গড়ে বাড়ি আলীশান
কোন কিতাবে লেখা আছে সেও মুসলমান?
আত্মীয়দের হক মারে, নেয়না পড়শির খোঁজ
পরের টাকায় যেজন করে সকাল বিকাল ভোজ
এসি রুমে আরাম করে যেজন চিবায় পান
কোন কিতাবে লেখা আছে সেও মুসলমান?
শোষণ চলে, শাসন চলে, চলে নিপীড়ন
শক্তি থাকতে যে করেনা এসব নিবারণ
জনগণের কষ্ট দেখে, হয় না পেরেশান
কে বলে সে সত্যিকারের মুমীন মুসলমান?
মুসলমানতো তাকেই বলে যার বুকে রয় নূর
নূর দিয়ে সে খোদার বান্দার অভাব করে দূর।
৬ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৮
প্যারোডি
আল্লাহ কারেন্ট দে
আল্লাহ
কারেন্ট দে, মোবাইল দে,
নেট দে রে তুই
বিশ্বভূবন ঘুরবো আমি
খাটের ওপর শুই।
কারেন্ট হইছে ফাটা ফাটা
নেট হইছে ফুটা
বন্ধু আমার কেমন আছে
খবর দিব কেডা।
আল্লাহ কারেন্ট দে।
ঘামে শরীর জুবা জুবা
জিহ্বাতে নাই পানি
এমন সময় কোথায় গেল
সাধের কয়লা রানী।
আল্লাহ কারেন্ট দে।
৭ই জুন ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৮৯
কই গেল বিদ্যুৎ
ধুত্তরি ছাই ধুৎ
কই গেল বিদ্যুৎ।
গরম কেবল গরম
গরমটা যে চরম।
বিদ্যুৎটা কি ভূত
নাকি ভূতের পুত।
ধুত্তরি ছাই ধুৎ
কই গেল বিদ্যুৎ।
গেলে যে আর আসে না
কাউকে ভালো বাসে না
ভুলেও একটু হাসে না
আঁধার রাতেও কাশে না
ধুত্তরি ছাই ধুৎ
কই গেল বিদ্যুৎ।
বিদ্যুৎ আসবে, কয়লা নাই
জীবন করলো ফারদাফাই
কেমনে নিতাই গঞ্জ যাই
কান্দে বসে ঘর জামাই।
অন্ধকারে বসে খেলে
একলা কুতুর কুত
ধুত্তরি ছাই ধুৎ
কই গেল বিদ্যুৎ।
১০ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯০
অদ্ভুতুরে আলী
আলীপুরের আলী।
অদ্ভূতুরে লোক একটা
সয় না তালিবালী।
খানাপিনার খবর নাই
পথে ঘুরে খালি।
তারে যদি গালি দাও
দেয় না ফেরত গালি
নিজের হাতে সে তখন
ঝাড়ে গায়ের বালি।
আলীপুরের আলী।
বলে আমার বাবা ছিল
জমিদারের মালি।
যখন তখন গাছ কেটে
করতো ফালি ফালি।
আলীপুরের আলী।
তার যে ছিল শালী
ঘুমালে সে শালী দিত
গায়ে পানি ঢালি।
আলীপুরের আলী।
রাগ করে সে চলে যেত
নিজেই কুমারখালি।
কভু যেতো পলাশপুর
কভু মহেশখালি।
আলীপুরের আলী।
কাউকে দেখলে বেপর্দা
বলতো পাপের ডালি।
জলদি মুখে কাপড় দে
নইলে দিমু কালি।
অদ্ভুতুড়ে আলী।
লাউয়ের গাছে দিত নাকি
গোবর এবং ছালি।
খাবার দিত পাখি দেখলে
বলতো ওদের পালি।
আলীপুরের আলী।
দোস্তকে সে বলতো ডেকে
শোনরে কদমালি।
পূণ্য যদি নাও পারিস
পাপটা কমা খালি।
সুগন্ধি কেউ না পায় যদি
সরায় মনের কালি
দোযখের পথ বন্ধ তার
লাগারে হাততালি।
অদ্ভুতুরে আলী।
এসব কথা বলে বলে
ঘুরে পথে খালি।
গালির বদল সে কখনো
দেয় না ফেরত গালি।
আলীপুরের আলী।
১২ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯১
হরিদাস পাল
হরিদাস পাল।
দাদা বলে ডাক দিল
হেসে একগাল।
বলে দাদা কই যান
এতো সক্কাল?
আমি বলি হরি।
জ্বরে কাশে মরি
হাটে যাই যদি পাই
সিটামল বড়ি।
হরি বলে যান
আরো বড়ি খান।
তবে দাদা ছেড়ে দেন
সিগারেটে টান।
চলে যাবে কাশি
দাদা আমি আসি।
হরি যায়
পরী যায়
আরো যায় টরি
কাঠ দিয়ে বানানো
সাইকেলে চড়ি।
হরিদাস পাল
চোখ করে লাল
ঘরে বসে একা একা
খায় শুধু মাল।
তবু নাকি হয় না
কখনো মাতাল।
হরিদাস পাল
হলে বেসামাল
তুলি দিয়ে আঁকে শুধু
আঁকাবাঁকা খাল।
সেই খালে ছুঁড়ে মারে
নিজে ঝাঁকি জাল।
হরিদাস পাল
চাঁদ দেখে বলে দেখ
হয়েছে সকাল।
এইবার উঠ তোরা
সরা জঞ্জাল।
তবু কেউ ওঠে না
ফুলকলি ফোটে না।
১২ই জুন ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯২
আমি কিছু বুঝি না
মাথা আমার পুরাই ফাঁকা
লাগাইছিলাম চীনের চাকা
কেমনে হঠাৎ হইলো বাঁকা
এখন যে কি করি কাকা?
বাঁশ চালান দেয় এ্যামেরিকা
পাবলিকে দেয়, ঢিল ফিকা
কেমনে আমি রই টিকা
বলবি কিরে চামচিকা?
পইড়া গেছি ফান্দে
কেমনে রবো চান্দে
হগলে কয় জান দে
মন যে আমার কান্দে।
কি করমু ক রোজিনা
আমি কিছু বুঝি না।
১৪ই জুন ২০২৩ : বাদ মাগরিব
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৩
সাদা মুসাফির
পীর মানে, বীর না
নয়া কুস্তিগীর না।
মাথা উঁচু শির না
পীর মানে, পীর
পীর মানে হাত পাতা
সাদা মুসাফির।
বাড়ি বাড়ি ঘুরে খায়
দূর থেকে দূরে যায়
খায় দধি, ক্ষীর
পীর মানে হাত পাতা
সাদা মুসাফির।
কতো কতো গপ কয়
করো করো জপ কয়
করো করো তপ কয়
পাখি হয়ে ওড়ে যায়
নীড় থেকে নীড়
পীর মানে হাত পাতা
সাদা মুসাফির।
ঘুরে আর টাকা চায়
নজরানা কত পায়
হাতী দেখা লোকগুলো
করে শুধু ভীড়।
পীর মানে গণভাত
খায় মুসাফির।
পীর মানে, বীর না
নয়া কুস্তিগীর না।
মাথা উঁচু শির না
পীর মানে, পীর
পীর মানে হাত পাতা
সাদা মুসাফির।
১৪ই জুন ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৪
তাঁরা ছিল বীর
নবী কোন পীর ছিল না
সাহাবীও পীর ছিল না
তাঁরা ছিল বীর
দরাজকন্ঠে বলতো তারা
নারায়ে তাকবীর।
এই ধ্বনিতে পালিয়ে যেতো
দুশমন কুস্তিগীর
এই ধ্বনিতে ফসকে যেতো
ওদের হাতের তীর।
বীরের মত চলতো তারা
বিপদ এলে দিতো নারা
খোদার প্রেমে পাগলপারা
ছিল মুসাফির
আজকে কেন সে মুসাফির
সাজলো নয়া পীর।
ভাঙতো যারা ভয়ের কারা
তুলতো উঁচু শির
জালিমশাহীর ভেঙে দিত
অসভ্য জিঞ্জির
কওতো দেখি তারা কেনো
হয়ে গেল পীর?
ক্ষমতা সব ছেড়ে দিল
খোদাদ্রোহীর হাতে
ওরা এসে ফুসুর ফাসুর
করে আঁধার রাতে?
যাদের বুকে দুষ্ট লোকে
মারতো ছুঁড়ে তীর
তারা এখন পীর সেজে
খায় মুরীদের ক্ষীর।
কোথায় গেল দ্বীন ইসলাম
কোথায় গেল বীর
ইসলাম নিয়ে ধান্ধাবাজি
করছে কেনো পীর?
১৬ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৫
পাড়ার ছেলে দল বেঁধেছে
ঢের বলেছি তোমায় আমি
মন্দ কাজটা ছাড়ো
তুমি তবু নিচ্ছ না যে
কোন কথা কারো।
তোমার জন্য এ মহল্লার
বদনাম হচ্ছে রোজ
কতজনের কথা শুনি
জানো কি তার খোঁজ?
ফের বলছি মাতলামিটা
এবার তুমি ছাড়ো
ইভটিজিং এর পরিনাম
হয় না ভালো কারো।
ফের যদি কেউ তোমার নামে
নালিশ দিতে আসে
তোমায় আমি আটকে দেবো
ঠিকই ফাঁটা বাঁশে।
সবাই পাড়ার ভাল মানুষ
একলা করো পাপ
সবাই মিলে ধরলে চেপে
কোথায় যাবে বাপ।
সময় থাকতে হওরে ভাল
নইলে খবর আছে
পাড়ার ছেলে দল বেঁধেছে
বাঁধবে তোমায় গাছে।
১৬ই জুন ২০২৩ : বাদ জোহর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৬
অতি বড় অন্যায়
দুপুরে রোদ মাথায় শেফালিরা হেঁটে যায়
তৃষ্ণায় শেফালির বুক যেনো ফেটে যায়।
ক্ষুধা পেটে শেফালিরা দিনভর খেটে যায়
দিন শেষে ওরা শুধু মজুরিটা পেতে চায়।
ঘামে কেনা মজুরি ওরা তবু পায় না
হারামের খানা ওরা কোনদিন খায় না
আর কিছু নয় ওরা, চায় শুধু মায়না
সেই টাকা মেরে খায় মহাজন, হায়না।
শেফালির ঘরবাড়ি ভেসে গেছে বন্যায়
তার দুঃখ বুঝে শুধু তার দুই কন্যায়।
মহাজন বুঝে না গরীবের হক মারা
নিষিদ্ধ ইসলামে, এটা বড় অন্যায়।
১৮ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৭
বাবা আমার বাবা
বাবা আমার বাবা
কোথায় তুমি চলে গেলে
কও না কবে আবা।
কবে আমায় নিয়ে তুমি
মামা বাড়ি যাবা?
বাবা আমার বাবা
কবে আবার জলপুকুরে
সাবান মেখে নাবা।
কবে আবার আমার সাথে
দুধভাত তুমি খাবা।
বাবা আমার বাবা
"ক্ষমা করো মাবুদ আমায়"
কখন তুমি গাবা?
কোলে নিয়ে কখন আবার
গল্প কবে বাবা।
১৮ই জুন ২০২৩ : বাদ এশা
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৮
হালুম
ব্যাঘ্র বলে, হালুম।
দেশের জন্য দরকার হলে
আরো রক্ত ঢালুম।
দরকার হলে সিংহাসনে
আবার আগুন জ্বালুম।
রক্তচোষা মশা আবার
টিপে টিপে গালুম।
বিড়াল বলে কি কস মামা
সত্যি এসব পারবি?
নাকি কিছু হরিণ ছানার
জীবন শুধু কাড়বি?
মশা কিন্তু অনেক মামা
কয়টা টিপে মারবি?
ব্যাঘ্র বলে, হালুম।
বলছি আমি সোজা কথা
হচ্ছে নাকি মালুম।
রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা
আবার কিনে আনুম।
বাবার মত আমিও আবার
তাজা রক্ত ঢালুম।
২০ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৮৯৯
তই, তই, তই
হাঁসগুলি কই গেলি,
তই, তই, তই,
রাজহাঁস কাছে আয়
কানে কানে কই।
দিন বেশি ভালা না,
বেশি দূর যাসনে
জনতার গণ মাইর
শখ করে খাসনে।
পাবলিক ক্ষেপে আছে
কখন কি করে ভয়
ক্ষেপে গেছে জনগণ
বেডাগিরি আর নয়।
ব্যাংক খেলি ঠ্যাং তুলে
র্্যাংক খেলি মাগনা
কে জানতো জনগণ
ভোর রাতে জাগনা।
হাঁসগুলি গেলি কই
ডাকি আয় তই তই
নেমে যামু, মই কই
কেন এতো হই চই।
২১ই জুন ২০২৩ : বাদ ফজর
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩৯০০
জোর কদমে এগিয়ে যাও
জাগো জাগো নওজোয়ান
সামনে হও আগুয়ান
বিপদ বাঁধা তুচ্ছ ভয়
ঐ যে দেখো সামনে জয়।
জয় আনতে সাহস চাই
ঝড় ঝঞ্ঝা আয় মাড়াই
কাটুক ভীতি কাটুক ভয়
ভীতুর জন্য নয় বিজয়।
এগিয়ে যাও দৃপ্ত পায়
পিছন ফিরে কে তাকায়
তারে রেখে এগিয়ে যাও
বীর কদমে সামনে ধাও।
সামনে ধাও, সামনে
ধাও
বীর কদমে এগিয়ে যাও
চাবে না কেউ ডানে বায়
পাথর ভাঙো দৃপ্ত পায়।
ফিরার তরী জ্বালিয়ে দাও
জোর কদমে এগিয়ে যাও
জয়ের নিশান উড়িয়ে দাও
বীর বাহাদুর এগিয়ে যাও।
আসুক বুলেট জলকামান
আমরা গাই,
জয়ের
গান
আমরা মায়ের বীর সন্তান
রাঙা হাতে জয় নিশান।
জাগো জাগো নওজোয়ান
এই নাও হাতে আলকোরান
কন্ঠে তোলো বীরের গান
এগিয়ে ধরো জয় নিশান।
ঈমানদার কেউ হারে না
হারাতে তারা পারে না
মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী
ঈমানদার মরতেও রাজি।
জোর কদমে এগিয়ে যাও
আরো জোরে তাকবীর দাও
বলো আনবো দ্বীনের জয়
আল্লাহ সঙ্গে, নাইরে
ভয়।
৩০শে এপ্রিল ২০২৩ : বাদ আছর
No comments