আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ গানঃ ২০১-৩০০

 


আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০১

নীল আকাশটা অর্ধ বেলুন উপুড় করে রাখা

 

নীল আকাশটা অর্ধ বেলুন উপুড় করে রাখা

নিচের জমিন এই পৃথিবী, মধ্যিখানে ফাঁকা

সেই ফাঁকাতে খোকা খুকু উড়ায় রঙিন ঘুড়ি

আমরা সাজি রাজা উজির, করি বাহাদুরী।

করি বাহাদুরী, করি বাহাদুরী।

 

নীল আকাশটা উপুড় করা মস্ত কাঁচের ঝাড়

তার ভেতরে বাঁচা মরা, সাজানো সংসার।

তার ভেতরে মাছের মত স্বপ্ন-ডানায় ঘুরি

তার ভেতরে টোকাই সম্পদ, কত পাথর নুড়ি।

কত পাথর নুড়ি, কত পাথর নুড়ি।

 

নীল আকাশটা উল্টে রাখা অর্ধ কাঁচের বল

তার ভেতরে সাগর, নদী, পাহাড়, সমতল।

তার ভেতরে বৃক্ষলতা, বনবনানীর সারি

তার ভেতরে হাজার প্রাণী জলে ডাঙায় ঘুরি।

জলে ডাঙায় ঘুরি, জলে ডাঙায় ঘুরি।

 

নীল আকাশটা মস্ত বড় স্বচ্ছ কাঁচের তাবু

সেলাইবিহীন নীল চাদোয়া, সেদ্ধ করা সাবু।

সেই আকাশে নামলে আঁধার চন্দ্র তারা ভাসে

সূর্য এলে আঁধার পালায়, এই পৃথিবী হাসে।

 

আকাশের সেই ঘেরাটোপে পতঙ্গ সব ঘুরি

রঙ তামাশার আসর গড়ি, করি বাহাদুরী।

করি বাহাদুরী, করি বাহাদুরী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০২

কতদিন হায় কতদিন, কতদিন মাগো

 

কতদিন হায় কতদিন,

কতদিন মাগো দেখি না তোমার মুখ

শুনি না তোমার হাসি মাগো

দেখি না সেই মায়াভরা চোখ

দুই নয়নে কান্না রাশি রাশি।

 

কতদিন মাগো পাই না তোমার আদর

কেউ তো মাগো করে না শাসন

দেয় না মাগো জড়িয়ে গায়ে

স্নেহের সোহাগ চাদর।

আজ বুঝি মা তোমায় আমি

কত যে ভাল বাসি।

 

তুমি কাছে নেই মাগো, পৃথিবী লাগে ফাঁকা

তোমার আদর বকুনি ছাড়া মা

ঘোরে না আমার চাকা।

দুখের দরিয়ায় আমি অসহায়

কোনমতে চলি ভাসি

এখন বুঝি মা তোমায় আমি

কত যে ভাল বাসি।

 

আমি পড়ে আছি দূর দেশে মাগো

তুমি আজ কত দূরে

মনে নেই সুখ, শান্তির লেশ

অচেনা পাখির কণ্ঠে ব্যথার সুর

তুমি নেই কাছে তাই মাগো আজ

অন্তরে আর বাজে না মোহন বাঁশি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৩

ওগো আমার দুনিয়ার জান্নাত

 

ওগো আমার দুনিয়ার জান্নাত

তুমি যে আমার তৃষ্ণার আবহায়াত

যেখানেই থাকি, যেভাবেই থাকি মন পড়ে রয় সেখানে

আমার আশায় একটি হৃদয় জেগে রয় সদা যেখানে।

 

ওগো আমার হুর, আমার প্রাণের নূর

তোমার কথা ভাবলে মনে জাগে নতুন ভোর

আমার হৃদয় যায় গো ভরে হাজার পাখির গানে।

 

তুমি যে আমার অঙ্গশোভা, ক্লান্তিহরা বিছানা

তুমি যে আমার হতাশ প্রাণে শান্তি সুখের ঠিকানা

আমার মন ছুটে যায় বেলাঅবেলায় সততঃ তোমার পানে

আমারা মনের বীণায় তোমারই গান বাজে সংগোপনে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৪

কোন বাগানের ফুল গো তুমি, কোন কাননের পাখি

 

কোন বাগানের ফুল গো তুমি, কোন কাননের পাখি

কার ইশারায় আমার ঘরে উঠলে হঠাৎ ডাকি।

 

কন্ঠে তোমার সে কি মধু

সাজলে তুমি নতুন বধু

আমার শূন্য ঘরে হায় সজনী তোমায় কোথায় রাখি।

 

আমার ঘরে নামলো রে চাঁদ, স্বপন দেশের কন্যা

আমার গাঁয়ের চন্দ্রদ্বীপে নামলো খুশীর বন্যা।

 

ইলিক ঝিলিক হাসির বহর

বইছে ঘরে সুখের নহর

ইচ্ছে করে সে সুখ আমি সারা অঙ্গে মাখি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৫

কুসুমপুরের কন্যা রে তুই, কুসুম সুবাস গায়

 

কুসুমপুরের কন্যা রে তুই, কুসুম সুবাস গায়

অঙ্গ জুড়ে চন্দ্র তারা লুটোপুটি খায়

 

পায়ে বাজে ঝুমুর ঝুমুর মল

বাঁকা হাসির ঢেউ খেলেরে অঙ্গে ছলাৎছল

পাড়াপড়শি মুগ্ধ চোখে ফিরে ফিরে চায়।

 

কন্যা রে তোর চোখের তারায় বিজলি মারে ঝলক

থমকে থাকে চমকে গিয়ে সবার চোখের পলক

আমার ঘরে রিনিক ঝিনিক আবেশ ছড়ায় গায়।

 

বুঝি না এ স্বপ্ন নাকি সত্যি এলে কন্যা

চারটি চোখের মিলনে হায় এ কি খুশীর বন্যা

কার ইশারায় হিয়ার সনে হিয়া মিশে যায়

আমার ঘর যে মুখর আজি আলতা রাঙা পায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৬

বিপদ যতই আসুক যদি সহায় থাকেন রাব্বানা

 

বিপদ যতই আসুক যদি সহায় থাকেন রাব্বানা

নমরুদের ঐ অগ্নিকুন্ড হয় রে ফুলের বিছানা।

 

সেই আগুনে হাসেন নবী ইবরাহীম খলিল

ইতিহাসের পাতায় পাতায় আছে যে দলিল।

দুনিয়াতেই নাফরমানের ভাগ্যে জোটে লাঞ্ছনা

পরকালে জাহান্নামটা হয় রে তাহার  ঠিকানা।

 

সিন্ধুকে ভরিয়া শিশু মুসা নবী রে

নীলনদের অথৈ জলে ফেলে দিল রে

তবু মুসা রইল বেঁচে ফেরাউন তো বাঁচলো না

পিরামিডের ভেতর শেষে হইল মমির ঠিকানা।

 

অসৎ কামের অপবাদে ইউসুফ নবী রে

জেলে নিল আখেরে তা সত্য প্রমাণ হইল না

জেল থেকে যে সিংহাসনে নিলেন তাকে রাব্বানা

ফেরাউন তো খোদার গজব থেকে নিস্তার পাইল না।

 

দ্বীনের পথে থাকলে অটুট এমনি বিপদ সইতে হয়

অপবাদ ও ফাঁসির মঞ্চে মুমিন কভু পায় না ভয়।

দুঃশাসনের অন্ধকারে জাগে নতুন সূর্যোদয়

নাফরমানের জুলুম সত্ত্বেও মুমিনই পায় শেষ বিজয়

সত্য-ন্যায়ের কাফেলা তো ভয়ে কভু থামে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৭

পিপীলিকার পাখা ওঠে মরিবার তরে

 

[কথাঃ পিপীলিকার পাখা ওঠে কেন? - কেন, কেন, কেন?]

 

পিপীলিকার পাখা ওঠে মরিবার তরে

যে আলোতে জীবন জাগে পিঁপড়ে তাতে মরে।

 

আলো এলে সবাই পায় হাজার উপকার

পিঁপড়ে তাতে পায় রে শুধু পথটি মরিবার

আলো দেখলেই মরার শখ জাগে যে অন্তরে।

 

ক্ষমতায় গেলে যদি ওঠে কারো পাখা রে

উজাড় হয় দেশ-গ্রাম করে শুধু খা খা রে

বুঝে না সে ক্ষমতা বাপের দেয়া জমি না

খোদার সাথে যুদ্ধ করার স্বপ্ন দেখে কমিনা

অহংকারের আগুনে সে জ্বলে পুড়ে মরে।

 

গুম, খুন, হত্যা, সন্ত্রাস চলে রে উৎসব

অনাচার ও অবিচারের চলে মহোৎসব

দেশ যায় রসাতলে, কান্নার রোল ওঠে ঘরে।

 

যারা ভাসে হিংসার খরস্রোতা নদীতে

ধরাকে সরা ভাবে আঁধারের গদীতে

তার তরে চারদিকে প্রতি ঘরে ঘরে

সত্যের আলো জ্বলে প্রতি অন্তরে

যে আলোতে পিঁপড়েরা ঝাঁপ দিয়ে মরে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৮

মুর্খ মানব সূর্যকে কি বন্দী করা যায়

 

মুর্খ মানব সূর্যকে কি বন্দী করা যায়?

কোন আক্কেলে চাস পরাতে শিকল চাঁদের পায়?

জানিস না কি মুসার সাথে লাগতে গেলে শেষে

ফেরাউনই অথৈ সাগর জলেতে যায় ভেসে

অগ্নিকুন্ডে বসে তখন মুসা নবী হাসে

মুমীন কভু কাঁপে নারে হাজারো ভয় ত্রাসে

ফু দিয়ে কি কোরানের নূর নিভিয়ে ফেলা যায়?

 

চামচিকা আর বাদুড় যতই সূর্যকে পায় ভয়

তাই বলে কি রাত্রি শেষে হয় না সুর্যোদয়?

মিথ্যা অপবাদে যতই ইউসুফ নবী রে

কারাগারে পাঠানো হোক টিকে না সে মিথ্যা রে

জনগণের চাপে তাকেই পাঠাতে হয় ক্ষমতায়

এই কথা কি প্রহসনের বিচার দেখে ভুলা যায়?

 

খোদার বাণী করলে প্রচার অপবাদ তো সইতে হয়

জেল-জুলুম আর ফাঁসির মঞ্চে মুমীন কভু পায় না ভয়

কারণ মুমীন জানে এসব পরীক্ষা বৈ কিছু নয়

যুগে যুগে সেই পরীক্ষা মুমীনদেরকে দিতেই হয়

নাফরমানের ভাগ্যে জোটে লাঞ্ছনা আর বিপর্যয়

দুঃশাসনের অন্ধকারে জাগলে ভোরের সূর্যোদয়

জালিমশাহী যায় রে নিপাত, মুমীনই পায় শেষ বিজয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০৯

ভুলো না কেন ভুলতে পারো যদি

 

ভুলো না কেন ভুলতে পারো যদি

ভুলে গেলেই থামবে না তো খরস্রোতা নদী।

 

নদী তো তার আপন বেগে বইবে

ইতিহাস তো সত্য কথা কইবে

বলবে কথা সংগোপনে তবু নিরবধি।

 

কিশোর বেলার দিনগুলো হায়

উড়বে তবু উতল হাওয়ায়

পড়লে মনে উঠবে ভিজে আঁখির যুগল নদী।

 

গহীন রাতে, সাঁঝের বেলা

পড়বে মনে প্রণয় খেলা

ভুলে গেলেই মুছবে নাতো স্মৃতির চতুস্পদী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১০

ঈদ ঈদ ঈদ ঈদ ঈদ

 

ঈদ ঈদ ঈদ ঈদ ঈদ

ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, ঈদ

রোজার শেষে আবার দেশে এলো খুশির ঈদ

তাই আনন্দে উঠলো হেসে সবার রাঙা হৃদ

ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, এলো খুশির ঈদ।

 

যতই থাকুক জ্বরা ব্যাধি অভাব এবং কষ্ট

ঈদের খুশির জোয়ারে সব করো সেসব নষ্ট

নিজের ভালোর জন্য যতই হও না সচেষ্ট

একা ভালো যায় না থাকা জেনে রাখো পষ্ট

তাইতো বলি নিজের সাথে পরের ভালো চাও

ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, আনন্দে গান গাও।

 

হিংসা বিভেদ ভোল এবার গাওরে খুশির গীত

বুকে বুকে বুক মিলাও রে ঈদের এ তাগিদ

ধনী গরীব নাই ভেদাভেদ হও সবার সুহৃদ

ঈদ ডেকে কয় ছাড়ো সবাই সবার মনের জিদ।

 

হাতি পড়লে কঠিন জালে ইঁদুর বাঁচায় তারে

ক্ষুদ্র বলে তবে তুমি ঘৃণা করো কারে

আজ যে রাজা কাল সে ফকির, ধনের বড়াই তাই

কেউ করো না, মনটা খুলে বুকটা মিলাও ভাই

মুখের কথায় হয় না তো কেউ পাক্কা মুসলমান

মনে রেখো খোদার রহম পায় না নাফরমান

তাইতো বলি নাফরমনীর কর্ম এবার ছাড়ো

খোদার খাঁটি বান্দা হলে থাকবে না দুখ্ কারো

নিজের সাথে পারো যদি চাইতে পরের হিত

আকাশ বাতাস মুখর করে বাজবে ঈদের গীত।

 

ঈদুল ফেতর খুশির ভেতর দিনটা কাটাও সবে

সেই খুশিটা সারা বছর চাও যদি গো তবে

পরের ক্ষতি কেউ চেয়ো না কখনো আর ভবে

দেখবে ঈদের খুশি মনে সতেজ সদা রবে।

 

বান্দার মনের গোপন খবর রাখেন আল্লাহু

প্রাণ খুলে তাই গাওরে সবে জাল্লে জাল্লাহু

গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ এবং বসন্ত আর শীত

বুকের ভেতর থাকবে জমা আনন্দের এ ঈদ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১১

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ

 

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ

কৃষকের সুখে দুখে আছে কৃষিবিদ।

 

আর নয় গালে হাত, আর নয় কান্না

কৃষকের ঘরে ঘরে হবে ভাত রান্না

কৃষকের পাশে আজ আছে কৃষিবিদ

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ।

 

অতীতের ব্যথা ভয় যাওগো ভুলে

সম্ভাবনার গেছে দুয়ার খুলে

চারদিকে শোন তার নব সঙ্গীত

কৃষকের পাশে আজ আছে কৃষিবিদ।

 

মান্ধাতা আমলের প্রযুক্তি ভুলে

আধুনিক প্রযুক্তি হাতে নাও তুলে

উন্নত বীজ চাও, দেবে কৃষিবিদ

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ।

 

থাকার যায়গা চাও, শিক্ষার আলো

সাহসের সাথে সব ঘরে ঘরে জ্বালো

সব কাজে তব পাশে আছে কৃষিবিদ

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ।

 

ফল আর ফসলের এসো করি চাষ

টাটকা আনাজ পুষ্টি পাবে বারোমাস

কৃষিবিদ কৃষকের পরম সুহৃদ

কৃষকের পাশে আজ আছে কৃষিবিদ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১২

আমার দেশের চাষী ভাই

 

আমার দেশের চাষী ভাই

আমার দেশের কৃষক ভাই

সবাই মিলে এসো দেশের অভাব তাড়াই।

 

অভাব ছিল ভাল বীজের

উন্নত বীজ কৃষিবিদের

এসো সে বীজ দিয়ে অধিক ফসল ফলাই।

 

এসো গড়ি দুগ্ধ খামার

ঘুচবে অভাব তোমার আমার

ঘুচবে দেশের পুষ্টি অভাব চিন্তা কিছু নাই।

 

কৃষিবিদের টমেটো সীম

পোল্ট্রি ফার্মের মোরগ ও ডিম

মোখরোচক খাবার আমরা পাবো যে সদাই।

 

এসো সবাই অভাব তাড়াই

দেশের সম্পদ সবাই বাড়াই

সুখে দুখে আমরা সবাই একে অন্যের পাশে দাঁড়াই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৩

বাড়ছে মানুষ শহর নগর রাস্তা বাড়ি হাট

 

বাড়ছে মানুষ শহর নগর রাস্তা বাড়ি হাট

বাড়ছে না তো ক্ষেতের জমি ফসল তোলার মাঠ।

 

বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে সাথে অভাব এবং যন্ত্রণা

বাড়ছে বিপদ হাজার রকম, নেইরে বাচাঁর মন্ত্রণা

তাই জেগেছে কৃষিবিদগণ ঘুচাতে ঝঞ্ঝাট।

 

নতুন আশার আলো তারা দিল সবার মনে

বাঁচার নতুন পথ দেখালো হাজার দুখী জনে

সততা আর বুদ্ধি বিবেক করো রে সম্বল

একটা দুটো পশম মিলে হবে রে কম্বল

থাকবে না আর অভাব দেশে

কইবে কথা সবাই হেসে

কৃষিবিদের লিটারেচার করো সবাই পাঠ।

 

ফলবে ফসল থরে থরে

সুখের বার্তা বইবে ঘরে

কৃষিবিদের বুদ্ধি দিয়ে সাজাও যদি হার্ট

বলবে কৃষক থাকাই ভালো, হবো না সম্রাট।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৪

এক ফালি বাঁকা চাঁদ আকাশ কোণে উঠলো ভেসে

 

এক ফালি বাঁকা চাঁদ আকাশ কোণে উঠলো ভেসে

সেই খুশিতে বিশ্বভুবন উঠলো হেসে, উঠলো হেসে

সেই খুশিতে কোটি প্রাণে নাচে খুশির ধারাপাত

আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত।

 

এক ফালি বাঁকা চাঁদ কোটি তনুমনে

খুশির জোয়ার আনে নব শিহরণে

ছোটবড় সকলের হৃদ যমুনায়

খুশির বার্তা বয় উতল হাওয়ায়

আনন্দে ভেসে যায় ধরনীর সব বিভেদ, তফাত

আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত।

 

দুখীর কুঁড়েঘরে, রাজপ্রাসাদে

এক সাথে আনন্দ বয় আহলাদে

সকলের দ্বারে এসে কড়া নাড়ে ঈদ

প্রাণে প্রাণে আনন্দের বাজে সঙ্গীত

খুলে যায় সকলের খোশ কিসমত, ভাগ্য-বরাত

আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৫

ওই ওই ওই ওই যে দেখো

 

ওই ওই ওই ওই যে দেখো

পাতার ফাঁকে মিনার ঘেঁষে

চাঁদ উঠেছে, চাঁদ

ঈদের নয়া চাঁদ

আজ চাঁদ রাত, আজ চাঁদ রাত।

 

এক পলকের একটু দেখা

যায় কি দেখা যায় না

তাতেই দেখো বিশ্ব জুড়ে

ছড়ায় খুশির আয়না

কোটি প্রাণে দেয় সে ঢেলে আনন্দ সওগাত।

 

মনের যত দুঃখ ব্যথা এক নিমিষে

কে আর এমন পারে বলো দিতে মুছে

বিশ্ব জুড়ে খুশির বন্যা আনে চিকন চাঁদ।

 

চাঁদ ওঠে ওই আকাশ কোণে

চাঁদ ওঠে সব হৃদয় বনে

চিকন চাঁদের চমক শোনায় ঈদের সুসংবাদ।

 

পরলে চাঁদের চিকন মালা

জুড়ায় সকল হৃদয় জ্বালা

বুকের সাথে বুক মিলে যায়, হাতের সাথে হাত।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৬

শুভ হোক জন্মদিন, শুভ হোক জন্মদিন

 

শুভ হোক জন্মদিন, শুভ হোক জন্মদিন

এ দিনে যে এসেছিলে ধরাতে

জানতে না কি আছে তব বরাতে

কেঁদেছিলে তুমি, সবাই হেসেছে সেদিন।

 

তারপরে চোখ মেললে ধরায়

কাটলো জীবন আদরে

সবাই তোমায় রাখলো ঢেকে

স্নেহ-প্রেমের চাদরে।

জীবন হলো সুবাসিত, ফুলসম রঙিন।

 

এ পৃথিবীর আলো বাতাস

সাগর নদী উদার আকাশ

সবার স্নেহে হলে তুমি বড়

বললো সবাই জীবনটাকে সোনার মত গড়ো

আকাশ বাতাস সাগর নদীর সবক তুমি পড়ো।

 

হাসতে হাসতে কাটুক কাটুক জীবন

প্রভুর তুমি হও প্রিয়জন

সবার তুমি হওগো আপন

একটি কথা ভুল না এই

প্রেমের বদল প্রেম দিয়ে যে শুধতে হবে সবার ঋণ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৭

আজ শামিলের জন্মদিন কেক মিষ্টি খাও

 

আজ শামিলের জন্মদিন কেক মিষ্টি খাও

আজ শামিলের জন্মদিন আনন্দে গান গাও

তোমরা তালিয়া বাজাও, তোমরা তালিয়া বাজাও

আজ শামিলের জন্মদিন নাচিয়া বেড়াও

আজ শামিলের জন্মদিন তার মঙ্গল চাও।

 

আজকে ছোট কালকে শামিল অনেক বড় হবে

লেখাপড়া করবে শামিল, বাসবে ভাল সবে।

মিথ্যা কথা বলবে না

অসৎ পথে চলবে না

জন্মদিনের এই আসরে সে কথা জানাও

তোমরা আনন্দে গান গাও

তালিয়া বাজাও, তোমরা তালিয়া বাজাও।

 

দেশকে ভাল বাসবে শামিল, থাকবে দুখীর পাশে

তার পরশে কান্না ভুলে সবাই যেন হাসে

এই আশাতে প্রভুর কাছে তার যা খুশি চাও।

জন্মদিনের এই আসরে আনন্দে গান গাও

তোমরা তালিয়া বাজাও, তোমরা তালিয়া বাজাও।

আজ শামিলের জন্মদিন কেক মিষ্টি খাও

আজ শামিলের জন্মদিন বুকেতে জড়াও

আজ শামিলের জন্য সবাই খোদার রহম চাও।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৮

জন্মদিন, জন্মদিন

 

সকলেঃ

জন্মদিন, জন্মদিন,

আজকে তোমার জন্মদিন

তাইতো চোখে খুশির চিন,

সেই খুশিতে মুখ রঙিন

সেই খুশিতে এসো সবাই

নাচি তাধিন ধিন।

ছোটরাঃ

আসলো চাচা, আসলো মামা,

আনলো কিনে খেলনা, জামা

দেখ্ তাকিয়ে দেখ্,

জন্মদিনের কেক

হাসছে টেবিল জুড়ে,

নাচরে ঘুরে ঘুরে,

ধিন ধিনাধিন ধিন

এসো সবাই সেই খুশিতে

নাচি তাধিন ধিন।

যার জন্মদিনঃ

আম্মু দিলেন খাবার,

আদর পেলাম বাবার

আদর দিল ভাইয়া,

দেখ না সবাই চাইয়া

দাদী নানী ফুপি,

প্রেজেন্ট চুপি চুপি

দিলেন তুলে হাতে,

খুশিতে সব মাতে

নাচে তাধিন ধিন,

আজকে খুশির দিন।

তোমরা যারা জন্মদিনে এলে,

খুশি ভরে মিষ্টি ও কেক খেলে

আনলে কিনে খেলনা এবং গাড়ি,

সবার কাছে আমি কি চাইতে কিছু পারি?

সকলেঃ

বলো বলো কি চাও সোনামনি,

সাধ্য থাকলে দেবো যে এক্ষুণি।

যার জন্মদিনঃ

শুনুন তবে দাদী নানী মামী,

আব্বু আম্মু গুরুজনকে সালাম জানাই আমি

খালা ফুপি ভাইয়া এবং বোন,

মামা চাচা সকল বন্ধু জন

সবার কাছে আমি শুধু একটি দোয়া চাই,

মানুষ আছি মানুষ হয়েই মরতে যেন পাই।

আমায় যেন পায় না নাগাল কখনো ভন্ডামী,

সবার কাছে এটুক দোয়াই চাই যে শুধু আমি।

সকলেঃ

বাহবা বাহবা ধন্য ধন্য এই তো সবাই চাই,

সত্য পথে চললে মানিক ভয়ের কিছু নাই

মোদের আশিষ, মোদের দোয়া রইবে তোমায় ঘিরে

জয়ের মুকুট থাকবে মোদের সোনামনির শিরে

বছর হলে পূর্তি, করবো আবার ফুর্তি,

সেই খুশিতে এসো সবাই নাচি তাধিন ধিন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২১৯

হাজার মাসের চাইতে সেরা একটি রজনী

 

হাজার মাসের চাইতে সেরা একটি রজনী

তাই এ রাত ঘুমায় না কেউ শোন সজনী।

একটি মানুষ কয় বছর বা বাঁচে

তাই এ রাত পেলে খোদার কাছে

সারাটি রাত মাগফেরাত চায়, খোদার রহম যাচে।

 

এই রাতের এ কদর কেন শোন

নাই তুলনা এ রাতের আর কোন

এই রাতে যে এসেছিল পবিত্র কোরআন

যেই কোরআনে লেখা আছে খোদায়ী ফরমান

আল্লাহ চাহেন বান্দার জীবন কাটুক এরই ধাঁচে।

 

শবে কদর রাতের গুণে এলো সিয়াম মাস

যার ফজিলত দেবেন খোদা নিজের হাতে খাস

সেই তো সফল যার জীবন রয় এই কোরআনের টাচে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২০

তোমায় দেখলে আমার আকাশ জোসনায় ভরে ভরে যায়

 

তোমায় দেখলে আমার আকাশ জোসনায় ভরে ভরে যায়

তোমায় দেখলে সব আবেগের দ্বার শুধু খুলে খুলে যায়।

 

তোমায় দেখলে চোখে ময়ূর নাচে

তোমায় দেখলে আমার পরাণ বাঁচে

তোমায় দেখলে ফুলের পাপড়িরা চোখ খুলে খুলে চায়।

 

তোমার পরশে মরা গাঙে ডাকে বান

তোমার পরশে বাজে ঝর্ণার কলতান

তোমার পরশে ঘাসের সতেজ মাঠ ভিজে ভিজে যায়।

 

তোমার পরশ মানেই দুরন্ত তুফান

তোমার পরশ মানে ভোরের আজান

তুমি রাখলে হাত পাহাড়ের গায় পাহাড় তো নুয়ে নুয়ে যায়

তোমায় দেখলে আবেগের বানে প্রাণ ভেসে ভেসে যায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২১

আরে ধান্দা কইরা আন্ধা হইলি

 

আরে ধান্দা কইরা আন্ধা হইলি, বান্দা নিজের খবর লইলি না

মনের সাথে মন মিলাইয়া মনের কথা কইলি না।

 

করলি কেবল আমি আমি

চিনলি না রে আপন স্বামী

মানব দেহ করলি ধারণ মানুষ তবু হইলি না।

 

রঙ্গরসে রইলি রে মন

চিনলি নারে মন মহাজন

আসলে ভবে যাইতে হবে, পাড়ের কড়ি লইলি না।

 

নামাজ রোজা করলি না

কোরান হাদিস পড়লি না

ডাইনে বায়ে ঘুরলি শুধু, নবীর পথ তো ধরলি না।

 

চক্ষু দুইটা হইলে বন্ধ

দেহ ছড়ায় পঁচা গন্ধ

নিদান কালের জন্য রে মন কোন কষ্ট সইলি না

পাড়ের কড়ি লইলি না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২২

হুররে, খুশিতে ভরা এই মনটা

 

হুররে, খুশিতে ভরা এই মনটা

পড়েছে টিফিনের ঘন্টা

বন্ধুরা এসো ছুটে ঝটপট

খুলে ফেলো সাথে আনা হটপট

কী মজা, টিফিন সবে খাবো মিলেমিশে।

আমরা খাবো মিলে মিশে।

 

আমার আছে সেন্ডুইচ, মিষ্টি

আরে, আরে, এই দেখ বার্গার, পেস্টি

ফ্রেঞ্জফ্রাই, বিফরোল, পিজা, তেহারী

কাটলেট, আলুচপ, ভুনা খিচুড়ি

সব কিছু বেশি বেশি খাই মিলেমিশে

আহা, খাই মিলেমিশে।

 

এই চল মাঠে যাই, হুররে....

রাখ তোর চিপ্স্, চানাচুররে

কানামাছি ভো ভো

যারে পাবি তারে ছো

আয় গাই গান টরেটক্কা

আর নয় মারি বলে ছক্কা

চট করে চল মাঠে খেলি মিলেমিশে।

 

এক সাথে খেলি আর এক সাথে খাই

এক সাথে মিলেমিশে সবে গান গাই

আনন্দে কেটে যায় টিফিনের ক্ষণটা

আনন্দে ফুরফুরে থাকে এই মনটা

তারপরে যেই পড়ে বেল

থেমে যায় আমাদের খেল

সহসাই চুপসে যায় খুশির বেলুনটা

যাই ছুটে ক্লাসরুমে গান খেলা ফেলি

ছুটে যাই এক সাথে করে ঠেলাঠেলি

টিফিনের মজা আর পাই বলো কিসে?

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৩

জন্মিলে মরিতে হয়

 

জন্মিলে মরিতে হয়

এ কথা অজানা নয়

তবু যে হায় মরার কথা শুনলে মনে লাগে ভয়

হায়রে, তবু তো এই সুন্দর দেহ ঠিকই একদিন হবে লয়।

 

রাত্রি দেখলে বুঝতে পারি সামনে আছে নতুন দিন

জীবন দেখলে বুঝতে পারি বাজবে তারও মরণ বীন

পৃথিবীতে মরণকে হায় পারেনি কেউ করতে জয়।

 

মরণ থেকে যতই পালাও মরণ তোমায় লইবে ঘিরি

যদিও সুদূর আকাশ পাড়ে লুকাও সেথা লাগিয়ে সিঁড়ি

সৃষ্টি মানে হবেই হবে একদিন তার ধ্বংস, লয়।

 

জীবন তো হায় আর কিছু নয়, কচু পাতার পানি

নয়তো জীবন ঘাসের ডগায় ভোরের শিশিরখানি

তাই নিয়ে হায় মুর্খ মানুষ কেমনে গর্ব করে জগতময়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৪

তোমার বিরহ বড় বাজে এই বুকে

 

তোমার বিরহ বড় বাজে এই বুকে

তুমি কই, কই গো

বসন্ত বাতাসে তুমি নাই পাশে

নাই সই সই গো।

 

ইট পাথরের শহর সে তো পাষাণ কারা

সেই শহরে থাকে কে আর বন্দী ছাড়া

এক জনমে এত কষ্ট কেমনে বুকে

আহা বই বই গো।

 

এই শহরে পাগল করা জোসনা নামে না

এই শহরে দোয়েল শ্যামা কোকিল ডাকে না

এই শহরে একলা একা কেমনে হায়

আমি রই রই গো।

 

বিরহের যে ছোবল বুকে যাও গো তুমি হানি

এর চেয়ে যে মরণ ভাল জানি ওগো জানি

বিরহের এই কষ্ট ব্যথা কেমনে আমি

আহা সই সই গো।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৫

যারে ফেরেশতা করেছে সালাম

 

যারে ফেরেশতা করেছে সালাম

যারে বিধাতা দিয়েছে কালাম

যারে বলেছে আশরাফুল মাখলুকাত, সৃষ্টির সেরা জীব

বানিয়েছে খলিফা তারে আল্লাহ চিরঞ্জীব

সেই মানবকুলে জন্ম আমার, আমিই সৃষ্টির সেরা

হায়রে, ভাবো আমার কেমন আচার, কেমন চলাফেরা।

 

প্রকৃতির পানে তাকাই যখন, তাকাই সৃষ্টিকুলে

আল্লাহর হুকুম করে না লঙ্ঘন কখনো তো কেউ ভুলে

আমি অধম খোদার হুকুম মেনে করি কি কারবার

এ কথা মনে শয়নে স্বপনে জাগে শুধু বার বার।

কী দেবো জবাব কাল হাশরে করবেন যখন জেরা।

 

অধম পশু কুকুর সেও মালিকের তরে প্রাণ

দেয় অকাতরে তাই সে হয় না নাদান-নাফরমান

মালিকের বাড়ি দেয় পাহারা জেগে জেগে সারারাত

আমি করি খেয়াল কুকুরের কষ্টের ধারাপাত?

বরং আমি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি

রবের হুকুম মানে না বান্দা, কারো এবাদত মেকি

অনেকেই আবার খোদার হুকুম পদে পদে করে লঙ্ঘন

ভাবে না তাহাতে বিষাক্ত হয় পৃথিবীর অঙ্গন।

 

একটি প্রশ্ন বার বার মনে করে শুধু করাঘাত

মানুষ তাহলে কি করে হয় আশরাফুল মাখলুকাত?

কুকুরের সম প্রভুভক্তিও নাই যার দেহ-মনে

মানব সমাজে তার জন্ম হয়েছিল কোন কুক্ষণে?

তবে কি মানুষ কুকুরের অধম, ভাবে তার আর হবে না ফেরা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৬

আমাদের স্কুল বাস চলে ঘুরে ঘুরে

 

আমাদের স্কুল বাস চলে ঘুরে ঘুরে

না, না, ´খীরাজ চলে উড়ে উড়ে

স্টপে বাস বেশি করে নাতো দেরী

পা চালাও জলদি, চলো তাড়াতাড়ি।

 

পথে পথে চলে বাস, স্টপে থামে

বন্ধুরা দল বেঁধে ওঠে আর নামে

ট্রাক, বেবী, রিকসা সবকিছু ছাড়ি

স্কুল বাস আহা ছুটে তাড়াতাড়ি।

 

বাসে চলে কথা আর গল্প ও গান

বাস ছুটে এঁকেবেঁকে বাম আর ডান

পথে পড়ে যানজট, শত শত গাড়ি

খুশিভরা মনে নামে হতাশা যে ভারী।

 

দুষ্টুমী বেশী হলে স্যার বা ম্যাডাম

হঠাৎ দাঁড়িয়ে বলে, এই তোরা থাম

ড্রাইভার মামা হাসে বের করে মাড়ি

থামে নাতো বাস তবু ছুটে তাড়াতাড়ি।

 

ছুটি হলে বাসে চড়ার পড়ে যায় ধুম

ক্লান্ত শরীরে বাসে কেউ দেয় ঘুম

পেছনে বসে কেউ করে মারামারি

তবু বাস এঁকেবেঁকে ছুটে তাড়াতাড়ি।

 

পরীক্ষা এলে বাসে সব যায় থামি

পড়াটাই তখন তো সবচেয়ে দামী

সবকিছু ভুলে তাই বই খুলে পড়ি

সাবধানে নামি, বাসে সাবধানে চড়ি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৭

কি করে মন্দ বলি তোমাকে

 

কি করে মন্দ বলি তোমাকে  -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

কি করে অধম বলি তোমাকে   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

প্রভুর হুকুম মেনে করো তুমি কাজ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

যে মানে না প্রভুর হুকুম তারে কি বলি আজ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়।

 

প্রভুর বাড়ি দাও পাহারা সারারাত জেগে জেগে   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

প্রভুর ইশারায় সপে দাও প্রাণ সর্বদা নিরুদ্বেগে   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

বুঝতে পারো প্রভুর আদর, প্রভুর রাগ, ক্ষোভ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

যে বুঝে না প্রভুর হুকুম তারে কি বলি আজ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়।

 

প্রভুর নিষেধ তুমি মানো তাই চলো না ইচ্ছামত   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

প্রভুর আদেশ মানতে তুমি করো কঠোর ব্রত   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

এমনকি প্রভুর ইশারায় তুমি ঢেলে দাও নিজ প্রাণ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

এতটুকু যে করে না তাকে কি বলে ডাকি আজ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়।

 

পদে পদে যারা প্রভুর হুকুম করে যায় অবহেলা   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

কি করে হয় মহৎ এবং সৃষ্টিকুলের সেরা    -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

প্রভুর যারা হয় অবাধ্য, নাদান, নাফরমান   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

তাদের চাইতে তুমি যে মহৎ, তুমি যে মহান   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়।

 

মানুষ নামের অমানুষ আজ মানবতা কুরে খায়   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

তাদের প্রতারণা হিংস্রতা দেখে মানুষেরা ভয় পায়   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

মান-অপমান বোধ নেই, নেই হিতাহিত জ্ঞান হুশ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

যে চিনে না নিজের প্রভু কেমনে তারে ডাকি মানুষ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়

পশুরও অধম তারা যদিও দেখতে তারা অবিকল মানুষ   -  সারমেয়, সারমেয়, সারমেয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৮

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ গ্র“প

 

কৃষিবিদ, কৃষিবিদ, কৃষিবিদ গ্র“প

সবুজ স্বপ্নের দেশ গড়ে অপরূপ।

সততা, সাহসে মেলি স্বপ্ন-ডানা

কৃষিবিদ গ্র“প দেয় সুখের ঠিকানা।

 

দেশ গড়ায় তার জুড়ি মেলা ভার

মানুষের কল্যাণে প্রতিভা অপার।

বহুবিদ কাজে তার আছে পরিচয়

কৃষিবিদ গ্র“প পায় সফলতা-জয়।

 

মান্ধাতা আমলের প্রযুক্তি ভুলে

আধুনিক প্রযুক্তি হাতে দিয়েছে তুলে।

নতুন যন্ত্রপাতি, কৃষিবিদ সীড

দিয়েছে অবাক করা কৃষিবিদ ফিড।

কৃষকের হাতে সেরা বীজের দানা

কৃষক পেয়েছে তার আপন ঠিকানা।

 

ফরমালিন বিষে ভরা সবজি আনাজ

ফরমালিন ভরা সব ফল আর মাছ।

হবে না হবে না খেতে আছে নার্সারী

আছে তার ফিসারিজ, আছে হ্যাচারী।

কৃষিবিদ পোল্ট্রির মুরগী ও ডিম

কৃষিবিদ ফার্মের সবজি ও সীম।

কৃষিবিদ মাসরুম খেতে নেই মানা

কৃষিবিদ গ্র“প বাঁচার নতুন ঠিকানা।

 

পুষ্টি ঘাটতি দেশে রাখবে না আর

কৃষিবিদ তাই গড়ে দুগ্ধ খামার।

মাছ চাষে কৃষিবিদ দেয় ফিশ ফিড

ডিম দুধ মাছ গোস্ত সবখানে লীড।

কৃষিবিদ গ্র“প দেয় মিষ্টি ও ছানা

ভেজালের দেশে সব টাটকা খানা।

 

খাওয়াটাই সব নয় মানুষের মন

থাকার জন্য চায় ফ্লাট, আবাসন।

কৃষিবিদ দূর করে দুর্ভাবনা

বাড়ি ফ্লাট গড়ে দূর করে ভাবনা।

কৃষি ফাউন্ডেশন দেয় বৃত্তি পড়ার

শিক্ষার আলো দিয়ে জীবন গড়ার।

কৃষিবিদ গ্র“পের হাতে এসো রাখি হাত

কেটে যাবে দুর্ভাবনা, কষ্টের রাত।

কৃষিবিদ গ্র“পের কাজের নেই সীমানা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২২৯

স্বপনে শুনেন নবী আল্লাহর বাণী

 

স্বপনে শুনেন নবী আল্লাহর বাণী

তোমার যা প্রিয় তুমি করো কোরবানী।

স্বপন দেখিয়া ভাবেন ইবরাহীম খলিল

সবচেয়ে প্রিয় যে মোর পুত্র ইসমাঈল

তবে কি আল্লাহ চান নয়নের মনি

ইসমাঈলকে আল্লাহর পথে করি কোরবানী।

 

একই স্বপ্ন পর পর দেখে তিন রজনী

পুত্রকে শোনান আহা সে স্বপ্ন-কাহিনী।

পুত্র বলে, বাবা এতে ভাবনা কিছু নাই

আল্লাহর হুকুম তো মানে মুমিন সবাই।

আমাকেও পাবেন আপনি দৃঢ়, অবিচল

কাঁদবো না ভয়ে, চোখে আসবে না জল

বরং ধন্য হবে আমার এ জীবনখানি

আল্লাহর হুকুম মেনে করুন কোরবানী।

 

পিতা-পুত্র দু'জনের খুশালিত অন্তর

হাতে হাত রেখে যায় বিজন প্রান্তর

দুজনেই ঈমানের জয়গান গায়

চন্দ্র-সূর্য তরুলতা করে হায় হায়

পুত্রের গলায় নবী হানেন ছুরি,

তাই দেখে কাঁদে হায়রে পাষাণপুরী

ইতিহাস হয় সেই অপূর্ব কাহিনী।

 

দয়াময় আল্লাহর লীলা বুঝা ভার

কাটে না গলা, ছুরির থেমে যায় ধার।

ছেলে বলে, বাবা, তোমার জেগেছে মায়া

উপুড় না করলে আমার কাটবে না কায়া।

পুত্রকে উপুড় করে নবী চক্ষু বাঁধেন

তারপর পুত্রের গলে ফের ছুরি হানেন।

কিন্তু মানুষ কি বুঝে প্রভুর মেহেরবানী

ইসমাঈল নয়, দুম্বা হয় কোরবানী।

 

জবাই হয়েছে দুম্বা, অক্ষত ইসমাঈল

অবাক এ ঘটনা দেখে বিশ্বনিখিল।

এভাবেই পরীক্ষা আল্লাহ করেন মুমীন

পাস করে যারা পোষে অন্তরে একীন।

যাদের অন্তরে থাকে আল্লাহর ভয়

তাদের বাসেন ভাল আল্লাহ দয়াময়।

সেই থেকে শুরু বিশ্বে পশু কোরবানী।

আল্লাহ বাসেন না ভাল নাফরমানী

চান তিনি নিজ ইচ্ছা করে কোরবানী

সবাই সফল করুক নিজ জিন্দেগানী

সে শিক্ষা নিয়ে আজো আসে কোরবানী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩০

ভাল কাজের ভাল ফল, মন্দ কাজের মন্দ

 

ভাল কাজের ভাল ফল, মন্দ কাজের মন্দ

ফুলের থেকে সুবাস আসে ময়লা থেকে গন্ধ।

পাপ ডেকে নেয় পাপের পথে, নেইকো তাতে নিস্তার

পূণ্য কাজে পূণ্য বাড়ে পূণ্যেরই হয় বিস্তার।

 

মিথ্যা আনে বিপদ ডেকে, নেইকো তাতে ভুল

সত্য পথে চলাই জেনো শান্তি সুখের মূল।

হিংসা বিভেদ ঝগড়াঝাটি এবং অহংকার

ধ্বংস আনে, বিপদ আনে, পতন আনে তার।

 

খোদার কালাম বক্ষে ধরো রক্ষে যদি চাও

আর যেয়ো না পাপের পথে এবার শপথ নাও -

বড় হবার, মানুষ হবার, হতে ঈমানদার

পরকালে পূণ্য কাজের পাবে পুরস্কার।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩১

হিংসা দিয়ে হিংসা আরো কিনতে পারো

 

হিংসা দিয়ে হিংসা আরো

কিনতে পারো

ঘৃণা দিয়ে ঘৃণার পাহাড়

জিনতে পারো

 

ঈর্ষা দিলে ঈর্ষা পাবে

সন্দেহ নেই

বিভেদ পেতে বিভেদ ছড়াও

নেই বাঁধা নেই।

 

কিন্তু যদি কাম্য ভাবো

প্রীতির মিনার

ঘর করো না অহংকারী

নদীর কিনার

 

ভালবাসার পুস্প ছড়াও

চতুর্দিকে

ভালবাসার বান ডাকবে

দিকবিদিকে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩২

বাংলাভাষা মাতৃভাষা বাংলা মায়ের কোল

 

বাংলাভাষা মাতৃভাষা বাংলা মায়ের কোল

বাংলা ভাষায় গান গেয়ে সব মধুর ধ্বনি তোল।

 

একুশ এলে ফুল-পাখিদের কাছাকাছি পাই

বাংলায় করি লেখাপড়া বাংলায় গান গাই

বাংলা মায়ের গল্প শুনে খায় শিশুরা দোল।

 

একুশ এলেই চোখে ভাসে বীর শহীদের মুখ

একুশ এলে গর্বে ভরে আমার ছোট্ট বুক।

 

একুশ এলে স্বপ্নে দেখি বরকতেরই ছবি

একুশ এলে হাসতে থাকে পূব আকাশের রবি

একুশ এলে সবার মুখে ফোটে মধুর বোল।.

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৩

ঈদ আনন্দে মাতো সবাই, করো কোরবানী

 

ঈদ আনন্দে মাতো সবাই, করো কোরবানী

ত্যাগের মহান শিক্ষা নিয়ে এলো কোরবানী।

 

আল্লাহর রাহে দাও বিলিয়ে জীবন যৌবন ধন

তোমার ওপর থাকবেন খুশি প্রভু নিরঞ্জন

দুই জাহানে হবে সফল, কোরানের বাণী।

 

সবাই মানুষ, বান্দা খোদার, পর তো কেহ নাই

ধনী-গরীব, সাদা-কালো, সবাই সবার ভাই

বিশ্ব জুড়ে দাও ছড়িয়ে খোদার অমোঘ বাণী।

 

হিংসা, বিভেদ, ঝগড়া ভোল, নিজের খায়েশ ছাড়ো

পৃথিবীটাই ঈদগাহ হবে, খোদার বিধান ধরো

জীবনের সব কাজে মানো বিধান কোরআনী।

 

আজকে শপথ নেয়ার দিন, ছাড়বো নাফরমানী

আল্লাহর হুকুম মতে শুধু চলবে জিন্দেগানী

আল্লাহর রাহে সকল কিছু করবো কোরবানী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৪

শীত সকালে তিলের নাড়ু, আমন ধানের খই

 

শীত সকালে তিলের নাড়ু, আমন ধানের খই

তেলের পিঠা, ভিজা চিতই কোথায় পাবে, কই

সে যে আমার প্রাণের প্রিয় সবুজ শ্যামল গ্রাম

লাল-সবুজের এক পতাকা, বাংলাদেশ তার নাম।

 

খেজুর রসের পায়েশ আরো ভাঁপা পিঠার ঘ্রাণ

পাটিসাপটা, কুলি পিঠায় কোথায় দোলে প্রাণ

সে যে আমার প্রাণের প্রিয় সবুজ শ্যামল গ্রাম

লাল-সবুজের এক পতাকা, বাংলাদেশ তার নাম।

 

মুঠি পিঠা পোড়ে কোথায় নাড়ার আগুনে

কোকিল কোথায় মধুর সুরে ডাকে ফাগুণে।

সে যে আমার প্রাণের প্রিয় সবুজ শ্যামল গ্রাম

লাল-সবুজের এক পতাকা, বাংলাদেশ তার নাম।

 

এমন দেশে জনম আমার নেইকো তাহার জুড়ি

তাইতো মহামহিম তোমার শোকরগুজার করি।

আল্লাহ তুমি এই গরীবের পুরাও মনস্কাম

সবার বুকে দাও ছড়িয়ে বেহেশতী পয়গাম।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৫

মারো হাক হায়দরী হাক

 

মারো হাক হায়দরী হাক

যাক ভেসে যাক

খড়কুটো আর আবর্জনা

সইবো না আর সইবো না

প্রহসনের বিচার আমরা সইবো না।

 

ছেড়ে দে জারিজুরি ছলচাতুরি

ছেড়ে দে মিথ্যা অপবাদের সব টালবাহানা

সইবো না আর সইবো না

প্রহসনের বিচার আমরা সইবো না।

 

শোন ওরে শোন ধাপ্পাবাজ

বজ্রকন্ঠের শোন আওয়াজ

নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার

জালিমের গদি আজ কর চুরমার

চোর-বাটপার এ দেশে আর রাখবো না।

সইবো না আর সইবো না

প্রহসনের বিচার আমরা সইবো না।

 

কোরআনের বাণী নিভাতে এলে

ঘরে বসে থাকবো না

নেতাদেরকে জেলে রেখে

ঘরে আমরা ফিরবো না

সইবো না আর সইবো না

প্রহসনের বিচার আমরা সইবো না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৬

ছোট্টবেলার দিনগুলো হায় মধুর ছিল

 

ছোট্টবেলার দিনগুলো হায় মধুর ছিল

মায়ের বোনের সোহাগ স্নেহ আদর ছিল

সবুজ বনের ছায়ায় অথৈ মায়া ছিল

লোকের বুকে ভালবাসার ছায়া ছিল

পুরোনো সেই দিনের কথা পড়লে মনে উদাস হই

কোথায় তুমি মা জননী, কান্দে পরাণ তুমি কই?

 

মাগো, এখন তো আর পাই না হাতে নাটাই-ঘুড়ি

শহর সে তো ইট পাথরের পাষাণপুরী

বাঁচার জন্য টোকাই শুধু পাথর নুড়ি

কাজের ফাঁকে পড়লে মনে যখন তখন উদাস হই

কোথায় তুমি মা জননী, কান্দে পরাণ তুমি কই?

 

তুমি এখন কোন জগতে জানি না তার কিছু

তোমার ন্যাওটা হয়ে এখন ঘুরি না তো পিছু

পড়লে মনে তোমার কথা মাথা করি নিচু

স্মৃতির নদী সাঁতরে শুধু কষ্টটুকু বুকে লই

কোথায় তুমি মা জননী, কান্দে পরাণ তুমি কই?

 

পথের পানে তাকিয়ে তুমি কান্দো কি মা, খোকন কই

আমি কান্দি দিবস রাতি, উদাস চোখে তাকিয়ে রই

কোথায় তুমি মা জননী, কান্দে পরাণ তুমি কই?

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৭

মা, মাগো, কোন জগতে নিলে তুমি ঠাঁই

 

মা, মাগো, কোন জগতে নিলে তুমি ঠাঁই

তুমি নাই মা, তাইতো আমার আপন কেহ নাই।

 

মায়ের মত হয় নারে কেউ

মায়ের দুঃখে কান্দি ভেউভেউ

হায়রে, মা হারা যে আমি এখন মাকে কোথায় পাই।

আমার মা জননী মায়ার খনি এ জগতে নাই।

 

ঘরের মানুষ পুত্র স্বজন

তোমার মত নয় মা আপন

বলো না মা, তোমায় আমি কোথায় খুঁজে পাই।

তুমি ছাড়া এ দুনিয়ায় আপন কেহ নাই।

 

তোমার শোকে আমি কান্দি

দুঃখে বুকে পাথর বান্ধি

মা হারালে পর হয়ে যায় আপন বোন ও ভাই।

আমার মাকে রহম করো মাবুদ, মওলা, সাঁই।

 

আমায় যেমন করতে আদর

তেমনি ঘিরুক রহম চাদর

খোদার কাছে দু'হাত তুলে এটুক শুধু চাই

আমার মাকে আল্লাহ তুমি বেহেশতে দিও ঠাঁই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৮

স্রষ্টা তুমি দিন-দুনিয়ার, তামাম ধরার আল্লাহু

 

দুই জাহানের মালিক তুমি, লা-শারিক আল্লাহু।

কিছুই ছিল না যখন, তুমি ছিলে হু-আল্লাহু

তামাম মাখলুক গাহে তোমারই নাম আল্লাহু।

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

 

পাপিয়া গায় পিউ পিউ কোকিল ডাকে কুহু

সেই সুরে যে ঝরে শুধু তোমারই নাম আল্লাহু।

ফুল-পাখি গায় তোমারই নাম আল্লাহু, আল্লাহু

আমিও তো ডাকি প্রভু আলহামদুলিল্লাহু।

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

 

তুমি খালিক, তুমি মালিক, তুমি সোবহানাল্লাহু

তুমি আদি, তুমি অন্ত, তুমি আল ফাত্তাহু।

তুমি গাফুর, তুমি গাফফার, তুমি জাল্লে জাল্লাহু

তোমার প্রেমের ডোরে আমার হৃদয় বাঁধা আল্লাহু।

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

 

তোমার নামে বিপদ বালা দূর হয়ে যায় আল্লাহু

অসহায়ের তুমিই শুধু সহায় থাকো আল্লাহু।

সকল প্রাণীর কণ্ঠে কণ্ঠে একই ধ্বনি আল্লাহু

সুখে তুমি, দুঃখে তুমি, বাতাসও গায় মুহূমুহূ

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

 

ইবলিস শয়তান তোমার নামে কাঁপে আল্লাহু

তোমারই পাক নাম শুনে সে কাঁদে উহু উহু।

যে বুকে রয় তোমারই নাম আল্লাহু আল্লাহু

তার তরে হয় দোজখ হারাম আল্লাহু আল্লাহ।

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

 

তোমার পথে চলতে যেন পারি আমি আল্লাহু

যুগে যুগে তার তরে যে পাঠাও নবী আল্লাহু

সীরাত মুস্তাকীমে আমি তাইতো চলি আল্লাহু

শোকর করে তাইতো ডাকি রাব্বি হাসবি জাল্লুহু।

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

 

রাজাধিরাজ তুমি মওলা রহম করো আল্লাহু

দুই জাহানের প্রভু তুমি দয়া করো আল্লাহু।

রহীম তুমি, রহমান তুমি, গাফুর গাফফার আল্লাহ

তোমার প্রেমের পরশ যাচি আর কিছু নয় আল্লাহু।

আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু

হু হু হু আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু, আল্লাহু।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৩৯

দুই জাহানের নেতা তুমি ইয়া রাসূলাল্লাহ

 

রাহমাতুল্লিল আলামীন তুমি ইয়া রাসূলাল্লাহ।

খোদার প্রিয় হাবীব তুমি ইয়া হাবীবাল্লাহ।

 

আনলে তুমি জীবন বিধান

আল্লাহর অমোঘ বিধি-ফরমান

পথ না হারাই আনলে কোরআন

তোমার কাছেই আমরা পেলাম পাক কালামুল্লাহ।

 

ধূলির ধরায় বেহেশতী ফুল

তুমি এলে হে আখেরী রাসূল

দেখিয়ে দিলে পথ নির্ভুল

নবী কুলের সরদার তুমি ইয়া নাবীয়াল্লাহ।

 

আঁধার ধরায় আনলে তুমি ভোর

খুললো সবার হৃদয় কপাট দ্বোর

ছড়িয়ে দিলে বুকে হেরার নূর

পথহারাকে পথের দিশা দিলে রাসূলাল্লাহ।

 

জপে যে জন তোমার ও নাম

তার বুকে রয় খোদার কালাম

তার তরে হয় দোজখ হারাম

পরকালে চাই শাফায়াত ইয়া রাসূলাল্লাহ।

 

পথহারাকে দেখাও সরল পথ

দেখাও কেমনে চলবে হুকুমত

ধন্য আমরা তোমারই উম্মত

দুজাহানেই নাজাত যেন পাই ইয়া রাসূলুল্লাহ।

 

গরীব দুখীর বন্ধু তুমি ইয়া রাসূলাল্লাহ

অসহায়ের সহায় তুমি ইয়া রাসূলাল্লাহ

উম্মতের কান্ডারী তুমি ইয়া রাসূলাল্লাহ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪০

হৈ হৈ হৈ হৈ আমরা ছন্নছাড়া

 

হৈ হৈ হৈ হৈ আমরা ছন্নছাড়া

আমরা ছন্নছাড়া, শোন আমরা ছন্নছাড়া

নিজের জীবন তুচ্ছ করে জাগাই ঘুমের পাড়া

আমরা ছন্নছাড়া, জাগাই স্বপ্ন ঘুমের পাড়া।

 

প্রতিবছর লক্ষ জনে পড়া করে শেষ

বেকার হয়ে ঘুরে বেড়ায়, চাকরী নিরুদ্দেশ

মাথার ওপর ঝুলতে থাকে হাজার রকম খাড়া

সেই বেকারদের ভাই-বন্ধু আমরা ছন্নছাড়া।

 

চাকরী পেলে সেই বেতনে চলে না সংসার

বউয়ের কাছে বকুনী খায়, বাকী শুধু মার

বউ তো নয়, পাগলা কুকুর করে তারে তাড়া

সেই দুঃখীদের ভাই-বন্ধু আমরা ছন্নছাড়া।

 

বাড়তি আয়ের লোভে পড়ে অফিসে খায় ঘুষ

কখনো দেয় কাজে ফাঁকি, বাড়ে অসন্তোষ

দুনীতিতে ডুবে যারা হয়গো দু'কুল হারা

পাপ ছাড়ে না বাপকে বলি, আমরা ছন্নছাড়া।

 

ঘরে বাইরে অশান্তি আর অভাব অনটন

Íহত্যা করতে যাদের কান্দে অবুঝ মন

তাদের বলি শিরদাঁড়াটা সোজা করে দাঁড়া

খোদার রহম দেখবি তখন নাড়বে ঘরের কড়া।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪১

আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহ, রাব্বুল আলামীন

 

আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহ, রাব্বুল আলামীন

তোমার নামের তসবি আমি জপি নিশিদিন।

 

যখন ছিল না কিছুই, শুধু ছিলে তুমি

ছিল না গ্রহ, তারা, তবু ছিলে তুমি

ছিল না চাঁদ, সুরুজ, শুধু ছিলে তুমি

ছিল না মাটি, পানি, তবু ছিলে তুমি।

 

এ আকাশ জমিন প্রভু তোমার প্রেমের দান

তোমার দয়াতে পাই মাটির দেহে প্রাণ

তামাম আলম গায় তোমার গুণগান

আমি শুধু চাই তব প্রেম মহীয়ান।

 

তুমি খালিক, তুমি মালিক, গাফুর ও গাফফার

তুমি রহিম, তুমি রহমান, তুমি যে কাহহার।

তুমি দিলে পুত্র স্বজন, প্রাণে দিলে মুহব্বত

জীবন দিলে করি যেন সদা তোমার ইবাদত।

 

ইবলিশ শয়তান তবু দেয় যে পাপের মন্ত্রণা

তাতে বাড়ে বিশ্ব জুড়ে দুঃখ এবং যন্ত্রণা।

তাইতো দিলে নবী এবং আল কোরআনের বানী

মেনে চললে হয় যে সুখের জীবন জিন্দেগানী।

 

ধন্য তোমার শ্রেষ্ঠ নবীর হয়েছি উম্মত

ধন্য জীবন পেয়েছি সে আল কুরআনের পথ

যেদিক তাকাই দেখি তোমার অসীম নেয়ামত

অবাক মানি দেখে আল্লাহ তোমার কুদরত।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪২

মনের বিজয় চাইতে হলে জ্ঞানের বিজয় চাই

 

জ্ঞান যেখানে বোবা বধির হৃদয় সেথা নাই।

জ্ঞানের ধনে ধনী যারা

সকল কিছুর মালিক তারা

বিশ্ব জুড়ে ভুরি ভুরি তারই প্রমাণ পাই।

 

আমরা যে ভাই জ্ঞানের কাঙাল তাই এত দুঃখ

ঘরে বাইরে তাই তো মোদের সমান দুর্ভিক্ষ।

জ্ঞানে গুণে ধনী হলে

বড় হবে মন তাহলে

এইসব কথা গান বানিয়ে সুর ছড়িয়ে যাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৩

গোলামীর বিরুদ্ধে শোষণের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে

 

গোলামীর বিরুদ্ধে শোষণের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে

এসো জড়ো হই, এসো জড়ো হই, গড়ি প্রতিরোধ।

 

যারা কেড়ে নিতে চায় মায়ের ভাষা

কেড়ে নিতে চায় স্বাধীনতা

তাদের বিরুদ্ধে

এসো জড়ো হই, এসো জড়ো হই, গড়ি প্রতিরোধ।

 

যারা শাসনের নামে করে শোষণ

স্বার্থ লোভে থাকে মগন

তাদের বিরুদ্ধে

এসো জড়ো হই, এসো জড়ো হই, গড়ি প্রতিরোধ।

 

যারা শিক্ষার নামে করে সন্ত্রাস

মায়ের বুকে ফিরে যায় লাশ

তাদের বিরুদ্ধে

এসো জড়ো হই, এসো জড়ো হই, গড়ি প্রতিরোধ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৪

গাঁ শিরশির মৌ ঝিরঝির পবন নদীর ঢেউ

 

গাঁ শিরশির মৌ ঝিরঝির পবন নদীর ঢেউ

সেই নদীতে সুরের মাতম শুনেছো কি কেউ?

 

রাত উজালা তারার মেলা চাঁদের হাসি শেষে

মোয়াজ্জিনের কন্ঠে মধুর আজান এলো ভেসে।

 

মোয়াজ্জিনের আজান বলে রাত হয়েছে ভোর

আয়রে সবুজ, আয়রে অবুঝ, খোলরে এবার দ্বোর।

 

মিনার থেকে ডাক এসেছে, আয়রে ছুটে আয়

মিরাজ হবে খোদার সাথে সময় বয়ে যায়।

 

পাখপাখালির কিচির মিচির ফুলের সুবাস কয়

নামাজ রোজায় মুসলমানের হয় যে পরিচয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৫

হে ঘুমন্ত মানুষ জাগো, ওঠো, দাঁড়াও

 

হে ঘুমন্ত মানুষ জাগো, ওঠো, দাঁড়াও

তারপর সম্মুখে তাকাও

বিপ্লব তোমাকে ডাকে।

 

এ সমাজ যত হয় ধর্মবিহীন

অন্যায় জুলুমের হয় যে অধীন

অনাহার, হাহাকার ক্রমশ বাড়ে

স্বাধীনতা কাঁদে আজ জীর্ণ হাড়ে

তাই মুক্তি চাও, তাই শান্তি চাও

তাই জোট বাঁধো, যাও সামনে যাও

অন্যায় রুখে দাও, সময় হাঁকে।

 

এ কাফেলা হবে জয়ী জেনো নিশ্চিত

আল্লাহ সহায় তার রাসূল যে ভিত

ছোট বড় এইখানে সবাই সমান

স্বাধীনতা, মুক্তি আর সম্মান

মিলবে শোন শোন

দ্বিধা নেই, নেই জেনো

যদি প্রাণ যায় তাতে দুঃখ নেই, নেই কোন

কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত কঠিন বাঁকে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৬

টাট্টু ঘোড়া দুলকি চালে চলে

 

টাট্টু ঘোড়া দুলকি চালে চলে

জলহস্তি ডুব দিল কি জলে

দেখ রে হরিণ ছানার

সে কিরে মায়ার বাহার

ছলো ছলো নয়ন প্রতি পলে।

 

সিংহের কেশর ঝুলে গলে

হস্তি কেন যায় না বরই তলে

জিরাফের লম্বা গলা

হনুমান খায়রে কলা

বানরে নিজের দু'কান মলে।

 

বাঘের খালা বিল্লি ‘মিঁঞা'ও বলে

শজারুর গায়ে কাটা

গন্ডারের চামড়া মোটা

খরগোশেরা দ্রুত তালে চলে।

 

পিঠটা সদা উঁচু থাকে উটের

হাড়গিলেটার বাহার দেখো ঠোঁটের

শেয়ালের হুক্কাহুয়া

হাসে রে কাকাতুয়া

খোদার লীলা দেখো নয়ন মেলে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৭

একদিন ঠিক আসবে বিজয়

 

একদিন ঠিক আসবে বিজয়

বিশ্বাসী জীবনের শাশ্বত চেতনার

জানি নিশ্চয়।

 

সংগ্রামী জনতা জাগবেই

শোষকের বিষদাঁত ভাঙবেই

বঞ্চিত মানুষের কা´িখত বিজয়ের

উজ্জ্বল রাজপথ হবে নির্ণয়।

 

ইসলামী বিপ্লব আসবেই

মুক্তির উল্লাসে হাসবেই

লাঞ্ছিত জনগণ সবহারা অগনন

দুর্বার দুর্জয় হবে নিশ্চয়।

 

জেল জুলুমের ভয় আর নয়

রক্তের দামে জানি আসবে বিজয়

মানুষের চোখে মুখে সেই প্রত্যয়

জয় নিপীড়িত জনতার জয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৮

হায়েনা মেলেছে নখর, বোন ক্ষত-বিক্ষত

 

হায়েনা মেলেছে নখর, বোন ক্ষত-বিক্ষত

থাকবে না বাংলায় কেউ অক্ষত।

জাগো, মায়েরা বোনেরা জাগো

জাগো, জোয়ান ভায়েরা জাগো

অসহায় বুড়ো পিতা, জাগো তুমি জাগো।

 

হায়েনা তাড়াও, হায়েনা তাড়াও, জাগো

সেঞ্চুরি করা হায়েনা তাড়াও, জাগো।

বটি হাতে মায়েরা দাঁড়াও রুখে

শাবল হাতে ভায়েরা দাঁড়াও রুখে

ইজ্জতে হাত দিলে নষ্ট পোলা

তার দিকে মারো ছুঁড়ে ঘৃণার গোলা।

জাগো......

 

জাগো, মায়েরা বোনেরা জাগো

জাগো, জোয়ান ভায়েরা জাগো

অসহায় বুড়ো পিতা, জাগো তুমি জাগো।

 

সইবো না আর কোন অপমান, লাঞ্ছনা

সইবো না বসে বসে অপমান, গঞ্জনা

ইজ্জতে হাত দিলে নষ্ট পোলা

তার দিকে মারো ছুড়ে ঘৃণার গোলা।

 

হায়েনা তাড়াও, হায়েনা তাড়াও, জাগো

সেঞ্চুরি করা হায়েনা তাড়াও, জাগো।

বটি হাতে মায়েরা দাঁড়াও রুখে

শাবল হাতে ভায়েরা দাঁড়াও রুখে

ইজ্জতে হাত দিলে নষ্ট পোলা

তার দিকে মারো ছুঁড়ে ঘৃণার গোলা।

জাগো..........

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৪৯

ঘৃণার বিষ যে ছড়ায় শুধু তারে ঘৃণা করো

 

ঘৃণার বিষ যে ছড়ায় শুধু তারে ঘৃণা করো

আর সকলের জন্য প্রেমের গোলাপ মেলে ধরো।

 

যে জন টানে এই সমাজ নানান বিভেদ রেখা

তারে করো একঘরে ভাই তারে করো একা

আর সবারে ভালবেসে বুকে টেনে ধরো।

 

মানুষ সে তো প্রেমের কোকিল, স্নেহ প্রীতি মায়া

দেয় ছড়িয়ে বুকে বুকে ভালবাসার ছায়া

হিংসা বিভেদ ছড়ায় যে জন তারে ঘৃণা করো।

 

ধর্ম বর্ণ গোত্র জাতে যে জন অহর্নিশ

প্রেমের বদল যায় ছড়িয়ে ঘৃণার গরল বিষ

সবাই মিলে সেই অধমের টুটি চেপে ধরো।

 

দল-উপদল বংশে দেশে ছড়ায় যে বিদ্বেষ

মানবতার শত্রু তারে, পাঠাও নিরুদ্দেশ

নিজের ভেতর পাইলে মানুষ, তারে সালাম করো।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫০

দিনটারে কেউ বদলে দিলে রাত্রি নেমে আসে

 

দিনটারে কেউ বদলে দিলে রাত্রি নেমে আসে

আমজনতা অন্ধকারে সর্বনাশে ভাসে।

 

চোর ডাকাত আর লুটেরাদের বরাত খুলে যায়

শেয়ার মার্কেট, ব্যাংকের টাকা লুটেপুটে খায়।

শিশু বুড়ো জোয়ান ছেলে কাঁপে যে ভয় ত্রাসে।

 

দিনের বদল রাত্রি এলে নামে চোখে ঘুম

হলমার্ক আর পদ্মা সেতুর পড়ে লুটের ধুম

মানুষ ঘুমায় চোরের হাতে অঢেল টাকা আসে।

 

দিনের বদল যখন দেশে নিকষ আঁধার নামে

মা-বোনেরা কাঁপে ডরে, ঘরের কোণে ঘামে

নরপশুরা আনন্দে সব লাফায় রে উল্লাসে।

 

দিনবদলের শ্লোগানে কেউ দিয়ো না আর কান

আগে গেছে সহায় সম্পদ, এবার যাবে জান

মরা মানুষ উঠবে জেগে, জ্যান্ত মানুষ লাশে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫১

ঘৃণা ছড়ায় যে জন তুমি মন দিও না তারে

 

ঘৃণা ছড়ায় যে জন তুমি মন দিও না তারে

বিভেদকারী ভীষণ খারাপ জগত এ সংসারে।

 

বাঁচি সবাই এক আকাশের তলে

প্রাণটা বাঁচাই একই অন্নজলে

কিসের তবে বাহাদুরী এ ভব-সংসারে।

 

এ পৃথিবী মায়ার ভুবন

মাটি দিয়েই সবার সৃজন

কেউ রবে না বেঁচে সবাই যাবে পরপারে।

 

সাদা-কালো, ধনী-গরীব মানুষ সকল জন

একই রকম ক্ষুধা-তৃষ্ণা, সুখ-দুঃখের মন

সবাই মিলেই প্রেমের বাগান বানায় জগতটারে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫২

বুলেট শুধু নিতে পারে প্রাণ, ঈমান নিতে পারে না

 

বুলেট শুধু নিতে পারে প্রাণ, ঈমান নিতে পারে না

রক্ত দিতে জানে যে জন, সে তো কভু হারে না।

 

দ্বীনের জন্য জীবন দেয়ার শপথ নিয়েছি

রাজপথে তাই সাগর সাগর রক্ত দিয়েছি

ন্যায়ের পথে লড়াইকারী কভু হারে না।

 

ভাগ্যে থাকলে শহীদ হবো, নইলে হবো গাজী

খোদার পথে রক্ত দিতে আমরা সবাই রাজি

দ্বীনের জন্য লড়াই করে কেউ তো মরে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৩

গর্জে ওঠো অগ্নিকণা, গর্জে ওঠো বাংলাদেশ

 

গর্জে ওঠো অগ্নিকণা, গর্জে ওঠো বাংলাদেশ

গর্জে ওঠো দুঃসাহসী, ফ্যাসিবাদের চাই নিকেশ।

 

বুলেট বোমা টিয়ারগ্যাসের ভয়

বাংলাদেশের বীর জনতা জয় করেছে, জয়

ফেরাউনের প্রেতাÍাদের করবো রে নিঃশেষ।

 

মারবি যত বীর জনতা ওরে বেসামাল

গণজোয়ার জানিস ততই হবে রে উত্তাল

সেই জোয়ারে ভেসে যাবে স্বৈরাচারের শেষ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৪

ও সজনী, কাল্ রজনী কেন ফিরে আসে

 

ও সজনী, কাল্ রজনী কেন ফিরে আসে

আমার দুই চোখে নেই ঘুমের ছোঁয়া, নানান স্বপ্ন ভাসে।

 

আমার পরাণ কান্দে, মনও কান্দে, কান্দে আমার হিয়া

আমার মাথার বালিশ ভিজে হায়রে কিসের লাগিয়া

ধরল আমায় কোন্ অসুখে, কীসের সর্বনাশে।

 

আমার অঙ্গ জুড়ে এ কোন্ আগুন, এ কোন্ ব্যথার বিষ

রাত্রি যতই বাড়ে আমার, জ্বালা ও ক্যান বাড়ে অহর্ণিশ

আমার দুঃখে কান্দে আকাশ, দেখি, শিশির দুর্বাঘাসে।

 

নিশি রাইতে যায়রে ভিজে গাছের চিরল পাতা

ভিজে যায়রে অভাগিনীর শীতের শীতল কাঁথা

ও সজনী, দিন কি আমার এমনি যাবে দীঘল দীর্ঘশ্বাসে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৫

দেখি নাই দু'নয়নে শয়নে, স্বপনে

 

দেখি নাই দু'নয়নে শয়নে, স্বপনে

তবু জানি তুমি আছো হৃদয়ের কাছে

রেখেছো আমার ঘিরে সম্মুখে, পাছে।

 

বুকের মাঝে তুমি আছো সারাক্ষণ

তুমি আছো তাই জাগে এই তনু মন

তোমার পরশে আজো এ হৃদয় নাচে।

 

যাকে দেখি, যারে দেখি, সব লাগে ভালো

চন্দ্র, সূর্য, পাহাড়, সাগর, হৃদয়ের আলো

কখনো থাকি না একা, তুমি থাকো কাছে।

 

একদিন জগতের সবকিছু হবে লয়

তুমি, শুধু তুমি তবু রবে অক্ষয়

সকলেই তোমার কাছে তাই দয়া যাচে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৬

গুলিতে মানুষ মরে, ঈমান তো মরে না

 

গুলিতে মানুষ মরে, ঈমান তো মরে না

পৃথিবীর সব নড়ে, আল্লাহর হুকুম তো নড়ে না।

 

কোরানের সৈনিক কভু মরে নাই

দিকে দিকে তাই জাগে হামজার ভাই

ঈমানী পরীক্ষায় মুমীন তো কভু ফেল করে না।

 

আসুক না বিপদ বাধা ঝঞ্ঝা প্রলয়

চিরকাল কোরআনই পায় শেষ জয়

বিপদের ঝড়ে মুমীন তো কভু ভেঙে পড়ে না।

 

নমরুদ ফেরাউন কারুনের দম্ভের চূড়া

ঈমানের কাছে সব হয় গুড়া গুড়া

ঈমানের সাথে মুমীন আপোস তো করে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৭

মানুষ বাঁচলে বৃক্ষ বাঁচে, বৃক্ষ বাঁচলে মানুষ

 

মানুষ বাঁচলে বৃক্ষ বাঁচে, বৃক্ষ বাঁচলে মানুষ

বৃক্ষ ছাড়া জীবন অচল, যেন ফুটো ফানুস।

 

বৃক্ষ সবার বন্ধু, সুজন

বৃক্ষ সবার বাঁচায় জীবন

অক্সিজেনের ফ্যাক্টরী গাছ, তাই বাতাসে করে পুশ।

 

গাছ না থাকলে কোথায় মানুষ পেতো নানান ফল

কোথায় পেতো ভাত-রুটি আর নানান খাবার বল?

কোথায় পেতো ফুলের সুবাস, মিষ্টি আপেল জুস?

 

বাঁচতে হলে বৃক্ষ লাগাও, গাছের যতন করো

সবুজ শ্যামল স্বপ্নে জীবন সাজাও থরো থরো

এসব কথা মনে রেখো, হারায়ো না হুশ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৮

পৃথিবী না জানুক, আমিতো জানি

 

পৃথিবী না জানুক, আমিতো জানি, আমি কী পাপ করেছি হায়

আমার পাপের করলে বিচার, বাঁচার আমার নাই উপায়

দয়াময়, তুমি মাফ কর আমায়, তুমি মাফ কর আমায়।

 

জেনে না জেনে কত যে আমি করেছি পাপ

কতবার যে করেছি তওবা, কতবার অনুতাপ

দুদিনেই আবার সব ভুলে আমি মজে গেছি দুনিয়ায়

তুমি মাফ কর আমায়, দয়াময়, তুমি মাফ কর আমায়।

 

আমার পাপের নাই সীমা নাই, তুমি মেহেরবান

তুমি রহীম, তুমি রহমান, তুমি দয়াবান

আমায় তুমি করগো মাফ, এ গুনাহগার এই তো শুধু চায়

তুমি মাফ কর আমায়, দয়াময়, তুমি মাফ কর আমায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৫৯

করবে যদি দলাদলি, এমন হানাহানি

 

করবে যদি দলাদলি, এমন হানাহানি

কী লাভ হলো রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা আনি।

 

বনের পশুর মতই যদি করবে আচরণ

মানুষ নামে ডাকবো কেন তোমায় সারাক্ষণ

হিংস্র পশু তোমার কাছে যায় যে হার মানি।

 

বুকের সাথে বুক মিলিয়ে, হাতের সাথে হাত

বিশ্ব যখন আনছে ডেকে আলোর সুপ্রভাত

তখন তুমি কিসের লোভে করছো হানাহানি।

 

সবাই যখন উন্নতিতে ভরছে আপন দেশ

তখন তুমি কার ইশারায় ছড়াচ্ছো বিদ্বেষ

অধপাতের অতল তলে কে তোমাকে নিচ্ছে শুধু টানি।

 

হিংস্রতা তো পশুর স্বভাব, হিংসা বিদ্বেষ ছাড়ো

মানুষ হলে মানব পেলে বুকে জড়াও আরো

হিংস্রতা নয়, সবার কাছে পাঠাও প্রেমের বাণী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬০

একটা সোনার দেশ ছিল, গোলা ভরা ধান

 

একটা সোনার দেশ ছিল, গোলা ভরা ধান

সেই দেশেতে লাগল যুদ্ধ, ঝরল লক্ষ প্রাণ।

 

দেশের একজন নেতা ছিল, বললো, দেশটা গড়ি

সব ভেদাভেদ বিভেদ ভুলে এসো রে হাত ধরি।

 

সেই দেশে সব হল আপন, রইল না কেউ পর

ধ্বংস হওয়া দেশে তুলল মিলেমিশে ঘর।

 

চল্লিশ বছর পর সেথা উঠল এ কোন ঝড়

ঘৃণার বিষে ভরে গেল সবকটি অন্তর।

 

ভাইয়ে ভাইয়ে লাগল সেথা বিষম হানাহানি

রক্ত নেশায় পাগল হল এ কোন মহারাণী।

 

কোত্থেকে যে আসলো উড়ে হাজার পঙ্গপাল

সোনার সবুজ স্বদেশ তাতে রক্তে হলো লাল।

 

রক্তে কেনা নিশান কে যে ধরলো কষে টানি

সোনার দেশে উঠল মাতম, কান্না এবং গ্লানি।

 

একটা সোনার স্বদেশ ছিল, গোলা ভরা ধান

সেই স্বদেশে এখন অথৈ কান্না অফুরান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬১

নিজের সাথে নিজেই করি যখন তখন ছলনা

 

নিজের সাথে নিজেই করি যখন তখন ছলনা

দ্বিধার পাহাড় কাটবে কবে সখি তুমি বল না।

 

এক মন বলে এটা করো, আরেক মনে না না

করবো কি যে বুঝি না হায়, এমনি আমি কানা

আমার বুকে দ্বিধার পাহাড়, পাহাড় কেন গলে না।

 

ক্ষিধে পেলে খেতে বসি, পেটে সে ভাত নামে না

মনের ক্ষুধা মনেই থাকে, ক্ষুধা তো আর থামে না

কাটবে কবে আমার দ্বিধা সেই কথাটা বল না।

 

ইচ্ছে করে পতঙ্গ হই, আগুনে দেই ঝাপ

মনের ভেতর গুমরে মরে এ কোন অনুতাপ

আমি তো এক অভাগিনী, লজ্জাবতী ললনা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬২

মেরো না, মেরো না তুমি

 

মেরো না, মেরো না তুমি,

মানুষ হলে মানুষকে আর মেরো না

মায়ের বুক আর করো না কেউ খালি

পাখির মত নির্বিচারে করো না আর গুলি

ভাই হারা আর বোনকে তুমি করো না।

 

ঢাকায় বসে করছো গুলি, ছেলে তোমার বরিশাল

তোমার সাথীর গুলি খেয়ে সে যদি হয় রক্তলাল

তখন তোমার লাগবে কেমন

তাই গুলি কেউ করো না।

 

লড়ছে যারা, মরছে যারা, তাদের আছে মা ও বোন

তোমার গুলি কাড়তে পারে তোমার কোন আপনজন

মানুষ হয়ে মানুষ মারার নিষ্ঠুরতা করো না।

 

যারা তোমায় দিচ্ছে হুকুম, তাদের ছেলে বিদেশে

তোমার আমার মরলে ছেলে, তাদের কি আর যায় আসে

পরের কথায় নিজের পায়ে কুড়াল তুমি মেরো না

পরের ছেলে মারতে গিয়ে নিজেই তুমি মরো না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৩

আমার কথা আমার মত বলতে গেলে

 

আমার কথা আমার মত বলতে গেলে

কেউ যদি সে কন্ঠ আমার চেপে ধরে

সে যে ঘৃণ্য স্বৈরাচার, শত্রু স্বাধীনতার

বাঁচতে হলে শক্ত করে টুটি চেপে ধরো তার।

 

আমার পথে স্বাধীনভাবে চলতে গেলে

কেউ যদি সে চলার পথ আটকে ধরে

সে যে ঘৃণ্য স্বৈরাচার, শত্রু স্বাধীনতার

বাঁচতে হলে শক্ত করে টুটি চেপে ধরো তার।

 

আমার কলম আমার কথা লেখতে গেলে

কেউ যদি সে লেখার কলম চেপে ধরে

সে যে ঘৃণ্য স্বৈরাচার, শত্রু স্বাধীনতার

বাঁচতে হলে শক্ত করে টুটি চেপে ধরো তার।

 

আমার কামাই আমিই খরচ করতে গেলে

কেউ যদি হায় সে সম্পদে থাবা মারে

সে যে ঘৃণ্য স্বৈরাচার, শত্রু স্বাধীনতার

বাঁচতে হলে শক্ত করে টুটি চেপে ধরো তার।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৪

এসো সবে স্বাধীনতার বিজয়ের গান গাই

 

এসো সবে স্বাধীনতার বিজয়ের গান গাই

বনের পশু, পাখপাখালি কেউ যা ছাড়ে নাই।

 

আমার কথা আমার মত পরাণ খুলে বলবো

আমার পথে আপন মনে স্বাধীনভাবে চলবো

সকল যুগে, সব মানুষের এটা চির কামনা

দোহাই তোমার এই কামনায় বাধা দিও না

এতে বাঁধা দিয়ে কেউ তো রেহাই পায় নাই।

 

গায়ের জোরে যদি আসো শিকল দিতে পায়

কেউ মানুষের ঠোঁটে যদি লাগাম দিতে চায়

তাতে কেবল বাড়বে বিপদ, ঝর্ণার কলতান

থামাবে না বনের পাখি তার সুরেলা গান

খোদার ওপর খোদকারী তো কভু বাঁচে নাই।

 

আমার মনের কথা আমি পরাণ খুলে লিখবো

বিশ্বভুবন ঘুরে আমি হাজার পড়া শিখবো

বাসবো ভালো আকাশ, নদী, পাখির কলরব

বাসবো ভালো স্রস্টার সৃষ্টি -  ছোট বড় সব

তাতে যদি বাদ সাধো হায়, বাঁচার উপায় নাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৫

স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে চলতে পারি না

 

স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে চলতে পারি না

মনের কথা মুখ ফুটে কেউ বলতে পারি না

কথায় কথায় চালাও তুমি গুলি

সেই গুলিতে অভাগাদের উড়ে মাথার খুলি

এমন করে দেশটা তো আর চলতে পারে না।

 

ক্ষেতের কৃষক ঘরের বধু কেউ নিারপদ নয়

চারিদিকে আতঙ্ক আর শুধুই মৃত্যু ভয়

রক্ষীসেনা পক্ষী ভেবে মারতো মানুষ যেমন

আজ পুলিশের কাজে কথায় দেখছি সবই তেমন

স্বাধীন দেশে এই আচরণ চলতে পারে না।

 

হাজার যুবক পঙ্গু হয়ে কাতরায় বসে ঘরে

মনের কথা লিখলে তারে পাঠাও কারাগারে

বুলেট দিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা করো ভাষা

এমন খেলা খেলছো তুমি, বড়ই সর্বনাশা

এই খেলা আর বেশী দিন তো চলতে পারে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৬

এ কোন স্বাধীনতা, কেমন স্বাধীনতা

 

এ কোন স্বাধীনতা, কেমন স্বাধীনতা

স্বাধীন ভাবে চলতে গেলে আটকে ধরো পথ

গুলি করে মিটাতে চাও সকল ভিন্ন মত

হাজার মায়ের বুক ভেঙেছো

শত যুবক খুন করেছো

মুখ ফুটে আজ কেউ বলে না কথা

এ কোন স্বাধীনতা, কেমন স্বাধীনতা।

 

এ কোন স্বাধীনতা, কেমন স্বাধীনতা

নল ঠেকিয়ে বুকে করো গুলি

বুলেট দিয়ে উড়াও মাথার খুলি

মাফ পেয়ে যায় খুনী ছেলে

ভাল মানুষ বন্দী জেলে

প্রাণের ভয়ে বিচারকও বলে না হক কথা

এ কোন স্বাধীনতা, কেমন স্বাধীনতা।

 

এ কোন স্বাধীনতা, কেমন স্বাধীনতা

নির্বিচারে করো তুমি গুলি

গণতন্ত্রের ছাড়ো তবু বুলি

অবাক লাগে, ঘটনা অদ্ভুত

মাথায় তোমার স্বৈরাচারের ভূত

আমজনতা গর্জে ওঠে ভাঙো নিরবতা

স্বৈরাচারের কবর খুঁড়ে আনো স্বাধীনতা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৭

দুধের স্বাদ যে মিটাই ঘোলে, সেই ঘোলও হায় মেলে না

 

দুধের স্বাদ যে মিটাই ঘোলে, সেই ঘোলও হায় মেলে না

ফুলের বনে অলির সনে ফুলও কেন খেলে না।

 

চাঁদের জোসনায় গাঙে আসে বান

তবু কেন বিরস মনে থাকো সোহাগ চান

দুধের বদল সেই ঘোলই হায় কেন তুমি খেলে না।

 

নিশি এলে শিশির ঝরে, ভেজে দুর্বাঘাস

তোমার মন কি থাকবে হায়রে শুকনো বারো মাস

ঠোঁট ভিজানোর মত জল কি কোথাও তুমি পেলে না।

 

সর্ষে ক্ষেতে অলি যখন করে মধু পান

তখন কি আর মানায় হায়রে মিথ্যা অভিমান

সে গান শুনেও রইলে দূরে একটু কাছে এলে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৮

মিডিয়াতে তিলকে তুমি করো না আর তাল

 

মিডিয়াতে তিলকে তুমি করো না আর তাল

নিজের দেশে কুমীর আনতে কেটো না আর খাল।

সত্য গোপন করো না

ফান্দে তুমি পড়ো না

তোমাকে তো বুঝতে হবে ভিনদেশীদের চাল।

 

দিনকে তুমি করো না হায় ঘন আঁধার রাত

কুচক্রীদের হাতে তুমি রেখো না আর হাত

শাক দিয়ে মাছ ঢেকো না

রঙিন চশমায় দেখো না

লোভে পড়ে পরের মুখে খেয়ো না আর ঝাল।

 

অতি চালাক হলে যে তার গলায় পড়ে দড়ি

মিথ্যাবাদীর ভাগ্যে জোটে লাঞ্ছনা আর ছড়ি

মায়ের ক্ষতি করো না

পরের আঁচল ধরো না

ক্ষেপলে মানুষ তুলতে পারে তোমার পিঠের ছাল।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৬৯

গণহত্যা বন্ধ কর, করতে হবে

 

গণহত্যা বন্ধ কর, করতে হবে

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আজ লড়তে হবে

জাগো----

জাগো জনগণ অগনন, লড়তে হবে।

 

জালিমের হাত আজ দাও গুড়িয়ে

জয়ের নিশান সবে দাও উড়িয়ে

শোষকের টুটি চেপে ধরতে হবে

বাঁচার লড়াই আজ করতে হবে

খুনিদের ক্ষমা নাই, ধরতে হবে

জাগো----

জাগো জনগণ অগনন, লড়তে হবে।

 

চারদিকে বারুদ আর রক্তের ঘ্রাণ

জালিমের গুলি কাড়ে জনতার প্রাণ

দিকে দিকে বেশুমার লাশের সারি

মা-বোনের কান্নায় বাতাস ভারী

বেপরোয়া খুনিদের রুখতে হবে

বাঁচার লড়াই আজ করতে হবে

জাগো----

জাগো জনগণ অগনন, লড়তে হবে।

 

এক দফা, এক দাবী শুধু আজ জনতার

খুনি তুই জলদি গদি ছাড়, গদি ছাড়

চলবে না রক্তের হোলি খেলা আর

চলবে না তো দেশ জুড়ে এমন অনাচার

গণদুশমন স্বৈরাচার আজ রুখতে হবে

বাঁচার জন্য এক সাথে আজ লড়তে হবে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭০

চুপ, চুপ, চুপ খোকন সোনা আর করো না কান্না

 

চুপ, চুপ, চুপ খোকন সোনা আর করো না কান্না

ঘ্যানর ঘ্যানর আর করো না নানা রকম তান্না।

 

জঙ্গী লীগের সঙ্গীরা দেয় টহল দিবস রাতে

শিশুর কান্না শুনলে ছুটে আসবে অকস্মাতে

নরমাংশ ছাড়া ওরা খেয়ে মজা পান না।

 

ওদের আছে রামদা, ছুরি, পিস্তল এবং গুলি

হাতের কাছে পেলে তোমার উড়িয়ে দেবে খুলি

ওদের কাছে কচি গোশতই সালওয়া ও মান্না।

 

জঙ্গী লীগের সঙ্গীরা সব লঙ্গি পরে ঘোরে

ভঙ্গি যেন মঙ্গু ডাকাত, পাঠায় মানুষ গোরে

ঘুমাও খোকন সোনামনি, করো না আর কান্না।

 

টের পেলে যে খোকন ওরা সব নেবে হায় কেড়ে

আসবে তেড়ে জঙ্গীরা সব টঙ্গীপাড়া ছেড়ে

মানুষের জান ওদের কাছে আসলে তো জান না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭১

নীল আকাশে মেঘের পরী উড়াউড়ি করে

 

নীল আকাশে মেঘের পরী উড়াউড়ি করে

আমার পরী আমার ঘরে হাটলে পরাণ ভরে।

পরীর গায়ে জরীর কাজ

তার চোখে কী শরম লাজ

ঠোঁটের ফাঁকে রঙিন শাড়ি তাইতো চাপা পড়ে।

 

চাঁদ এলে হায় নদে আসে বান

পরীর কন্ঠে উথলে উঠে গান

খুশীর খুশবো দেয় ছড়িয়ে হৃদয় তেপান্তরে।

 

মেঘের ফাঁকে হাসে তন্ত্রী চাঁদ

আমার হাতে হাসে পরীর হাত

এ কোন আবেশ ছড়িয়ে পড়ে আমার মনের ঘরে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭২

একদিকে আস্তিক, একদিকে নাস্তিক

 

একদিকে আস্তিক, একদিকে নাস্তিক

তুমি বলো যাবে কার পক্ষে

এইবার বুঝা যাবে ঈমানের তেজ তব

আছে কিনা বক্ষে।

 

আছে কিনা হৃদয়ে আল্লাহর ভয়

ভাল তুমি বাসো কিনা নবী প্রেমময়

চুপচাপ থেকে তুমি পাবে নাতো রক্ষে।

 

অধর্মের পথে নাকি ধর্ম মানো

নাকি তুমি ইসলামে আঘাত হানো

বুঝা যাবে ভাল তুমি বাসো কিনা হককে।

 

ইসলামে গাল দেয় কমবখত নচ্ছার

তুমি তার বিরুদ্ধে আছো কিনা সোচ্চার

ময়দান বলে দেবে হাঁটো কোন লক্ষ্যে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৩

গুলি করে গণজোয়ার রোখা যাবে না

 

গুলি করে গণজোয়ার রোখা যাবে না

না, না, না, রোখা যাবে না

বুলেট দিয়ে আন্দোলন রোখা যাবে না

না, না, না, রোখা যাবে না।

 

জেলের জুলুম আমরা যখন সইতে শিখেছি

সত্য কথা বুক ফুলিয়ে কইতে শিখেছি

ভয়-ভীতি আর অত্যাচারে থেমে যাবো না।

 

মিছিলে মিছিলে আজ দেশ উত্তাল

যত গুম, যত খুন তত হরতাল

রক্তের স্রোতে যাবে ভেসে জঞ্জাল

দিশেহারা খুনী আজ তাই বেসামাল

টিয়ারগ্যাসে গণজোয়ার রোখা যাবে না।

 

সত্য ন্যায়ের পথে সবাই জোট বেঁধে লড়বো

মরতে হয় ন্যায়ের পথে অকাতরে মরবো

জালিমশাহীর পতন ছাড়া ঘরে যাবো না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৪

আয় আয়রে বৈশাখ আয় আয়রে

 

আয় আয়রে বৈশাখ আয় আয়রে

অতীত ভুলে নতুন দিনের খুশি নিয়ে আয়রে

নতুন ভোরের স্বপ্ন নিয়ে আয় বৈশাখ আয়রে।

 

মন্দ যত বন্ধ থাকুক সিন্ধুকে

মন্দ কথা আর যেন না কইতে পারে নিন্দুকে

সুখ শান্তির বার্তা নিয়ে আয় বৈশাখ আয়রে।

 

আমরা যেন মগ্ন থাকি সত্য সুন্দর কল্যাণে

জীবন যেন যায়রে কেটে মহৎ কাজের সন্ধানে

সত্য ন্যায়ের আলো নিয়ে আয় বৈশাখ আয়রে।

 

কাল বোশেখী ঝড়ের মত ছুটে ছুটে আয়রে

জীবন ভরে সফলতার বার্তা নিয়ে আয়রে

বুকের সাথে বুক মিলাবার উৎসবে তুই আয়রে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৫

রাত নিঝঝুম

 

রাত নিঝঝুম

চোখ ঘুম ঘুম

জোনাকীর আলো

লাগে কি যে ভালো

তুমি কাছে ডাকলে।

 

নীল আকাশে

তারারা হাসে

কুয়াশা চাদর

একটু আদর

লাগে কি যে ভালো

তুমি কাছে থাকলে।

 

মহুয়ার ঘ্রাণ

কাড়ে মনপ্রাণ

উতল হাওয়ায়

মন তড়পায়

লাগে কি যে ভালো

হাতে ও হাত রাখলে।

 

চাঁদের কিরণ

একটু পীড়ন

একটু সোহাগ

মৃদু অনুরাগ

লাগে কি যে ভালো

মুগ্ধ আবেশে থাকলে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৬

সুখের লাগিয়া কান্দি আমি

 

সুখের লাগিয়া কান্দি আমি

দুঃখ ভাসায় চর

আমার সুখের নৌকা ডুবায়

এ কোন নষ্ট ঝড়।

 

জল বিহনে দেহতরী

চরে করে গড়াগড়ি

কোথায় তুমি, কোথায় আমি

কোথায় আমার ঘর।

 

খরায় শুকায় ভিজে কাঠ

জল না পেয়ে শুকায় ঘাট

শুক পাখিটা কেঁদে মরে

কান্দে যে অন্তর।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৭

হামলা এবং মামলা করে গদী রাখা যায় না

 

হামলা এবং মামলা করে গদী রাখা যায় না

গণদুশমন সরকারকে দেশের মানুষ চায় না।

 

বজ্রকন্ঠের শোন আওয়াজ

পার পাবি না হামলাবাজ

রুখবে এবার বীর জনতা রক্তচোষা হায়না।

 

খুন হয়েছে আমার ভাই

খুনিদের আজ ক্ষমা নাই

সব খুনিদের ফাঁসি চাই

বুলেট বোমায় বীর বাঙালি ভয় তো আর পায় না।

 

ইতিহাসের এমনি ধারা

রক্তস্রোতে ভাসে তারা

রক্তখেকো খুনি শেষে পালাবার পথ পায় না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৮

আগুন নিয়ে খেলিস না, হাত পুড়ে যাবে

 

আগুন নিয়ে খেলিস না, হাত পুড়ে যাবে

গুলি তুই আর করিস না, খুলি উড়ে যাবে।

 

ফ্যাসিবাদের জায়গা বাংলায় হবে না

স্বৈরাচারী শাসন মানুষ সবে না

সাপ নিয়ে তুই খেলিস না, সাপই তোকে খাবে।

 

জনগণের ভোটে জিতে মারলি জনগণ

গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে করলি দুঃশাসন

বদলা দিবি কেমনে যখন দেশ-জনতা চাবে।

 

আর নাচিস না খ্যামটা পুতুল নাচ

নিজের গায়ে লাগবে তারই আঁচ

আগুন নিয়ে খেলার মজা তখনই টের পাবে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৭৯

মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী

 

মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী

আমরা সবাই মরতে রাজি

দ্বীনের জন্য করবো জীবন দান

সইবো না আর নবীর অসম্মান।

 

সইবো না আর নবীর শানে গালি

সইবো না আর দ্বীনের অপমান

প্রভু তোমার অপার রহম দাওগো এবার ঢালি

হতে যেন পারি সবাই খাঁটি মুসলমান।

 

নাফরমানের মত যেন থাকে না গরমিল

কথায় কাজে হয় না যেন ফারাক একতিল।

প্রতিবাদের শক্তি সাহস দাওগো সোবহান।

 

মাকে যেমন ভালবাসি তারচে অধিক টান

নবীর প্রতি থাকুক অটুট আল্লাহ মেহেরবান

কন্ঠে যেন থাকে খোদা তোমার জয়গান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮০

তোমার আছে বুলেট বোমা এবং তাজা মাইন

 

তোমার আছে বুলেট বোমা এবং তাজা মাইন

আমার আছে বুকের ভেতর তরতাজা ঈমান।

 

অস্ত্র দেখে মুমিন কভু ভয় তো করে না

অস্ত্রাঘাতে দেহ মরে, ঈমান মরে না

ভাগ্যবানরাই শাহাদাতের সুধা করে পান।

 

আল্লাহপ্রেমিক জনকে যে দেয় কষ্ট অপমান

কাফের যদি না হয় সে যে মুর্খ নাফরমান

নাফরমানের ভাগ্যে জোটে শাস্তি অসম্মান।

 

পিতামাতা, স্ত্র-পুত্র তারচে প্রিয় নবী

সেই প্রেমের যে নাই কিনারা, যায় না আঁকা ছবি

সইতে পারি সবই শুধু পারি না তার অপমান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮১

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

 

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

ডাকছে কোকিল টিয়া

ও পাষাণী হৃদয়হীনা

কঠিন যে তোর হিয়া।

 

জ্যৈষ্ঠ মাসে পাকা আম

খায় রে বনের পাখি

আমার যে হায় তাও জুটে না

একটু সে আম চাখি।

আমার অবুঝ মনকে আমি

বুঝ দিব কি দিয়া।

 

খাবার যদি বাসি হয়

পঁচে হয় রে পোকা

ভাল খাবার পঁচায় যে জন

সে তো ভীষণ বোকা

ও পাষাণী লাভ কি হবে

পালিয়ে দূরে গিয়া।

 

জ্যৈষ্ঠ মাসের আমের রস

চৈত্রে শুধু আঁটি

সময় গেলে সোনার অঙ্গ

হয় রে শুকনো কাঠি

তখন তো হায় কাঁদবি বসে

দুঃখ স্মৃতি নিয়া।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮২

বাস চলে হেলেদুলে, পরী বসে বায়

 

বাস চলে হেলেদুলে, পরী বসে বায়

বাসের দোলাতে পরীর ঘুম এসে যায়।

অসময়ে পরী তুই ঘুমাইস না

আমার বুকে পরী ঢলে পরিস না।

 

পরীর চোখ ঢুলুঢুলু, আমি নির্ঘুম

আঁকাবাঁকা পথে বাস নাচে রুমঝুম

রুমঝুম বাস নাচে, তুই নাচিস না

আমার কাঁধে পরী মাথা রাখিস না।

 

পরীর চুল উড়ে এসে চোখেমুখে পড়ে

টের পেয়ে জেগে পরী লজ্জায় মরে

ঠিকঠাক হয়ে বসে লাজে চায় মাফ

ঢাকা থেকে বাস ছুটে যায় টেকনাফ।

 

ভাসা ভাসা দুই চোখ, নয়ন ডাগর

পরীর দুচোখ যেন অথৈ সাগর

সাগরের নোনা জলে ডুব দিস না

নিজেকে শাসাই, তবু জাগে তৃষ্ণা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৩

মিছিলে মিছিলে পড়েছে সাড়া

 

মিছিলে মিছিলে পড়েছে সাড়া

উঠেছে জেগে ঘুমের পাড়া

জয় জনতার, জনতার জয় হবে নিশ্চয়।

 

কায়েমী স্বার্থের পেটুয়া বাহিনী

পালাবে রচিয়া নতুন কাহিনী

এবার হবেই উল্লসিত রঙিন সূর্যোদয়।

 

আল্লাহর নূর নিভাতে চাইছে যারা

শঙ্কা-ত্রাসে তারা সব দিশেহারা

ভাঙছে তাদের তাসের ঘর, সম্মুখে পরাজয়।

 

শ্লোগানে শ্লোগানে বাতাস প্রকম্পিত

রাজপথ ক্রমে হচ্ছে আরো স্ফীত

শোষক শিবিরে ত্রাসের কাঁপন, জেগেছে মৃত্যু ভয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৪

মসজিদে তালা দেয়, দাড়ি ধরে টানে

 

মসজিদে তালা দেয়, দাড়ি ধরে টানে

আল্লাহকে গাল দেয় শুনি নিজ কানে।

তবু যদি ঘরে বসে থাকি চুপচাপ

আল্লাহ কি এই পাপ করবেন মাফ

আল্লাহ কি আমাকে করবেন মাফ।

 

নবীজীও গালি খান, জগত মাতা

গালি খান, পুড়ে হায় কোরান পাতা

দেখি শুনি মনে তবু নেই অনুতাপ

আল্লাহ কি এই পাপ করবেন মাফ

আল্লাহ কি আমাকে করবেন মাফ।

 

আলেমরা বন্দী জেলে, জুলুম দেশে

ঈমান কি বাঁচে হায় এই পরিবেশে

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৫

নবীকে আজ দিচ্ছে গালি, করছে তাঁকে অপমান

 

নবীকে আজ দিচ্ছে গালি, করছে তাঁকে অপমান

কোথায় গেল নবীর প্রেমিক, কোথায় মুমীন মুসলমান।

 

ঈমান আছে যার বুকে

খোদাদ্রোহী দাও রুখে

দাও রুখে আজ মুখোশপরা সকল নাফরমান।

 

বিসমিল্লাহ যে দেয় মুছে

চক্রান্ত তার দাও ঘুচে

আল্লাহ রাসূল নাই যেখানে, মানি না সে সংবিধান।

 

আমরা মানুষ সৃষ্টি সেরা

নইতো বানর, ছাগল, ভেড়া

মুসলমানের সংবিধান তো কেবলমাত্র আল কোরআন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৬

আক্রান্ত আজ ঈমান ইসলাম, মাদ্রাসা মসজিদ

 

আক্রান্ত আজ ঈমান ইসলাম, মাদ্রাসা মসজিদ

আতঙ্কে আজ ঘুম আসে না, নাইরে চোখে নিঁদ।

 

জানি না হায় ঈমান নিয়ে মরতে পারবো কিনা

হাসি মুখে জুলুম কষ্ট সইতে পারবো কিনা

অন্তরে হায় জিহাদ করার জাগে রে তাগিদ।

 

মসজিদে দেয় তালা, দাড়ি ধরে টানে

নবীর নামে শুনি গালি হায়রে পোড়া কানে

তারপরে আর বেঁচে থাকার থাকে না উম্মীদ।

 

দ্বীনকে মোছার ষড়যন্ত্র চলছে দিকে দিকে

জানি না হায় ঈমান আমার থাকবে কয়দিন টিকে

অপমানের চাইতে মুমীন চায় যে হতে শহীদ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৭

পাথরে খোদাই করে নাম লিখা যায়

 

পাথরে খোদাই করে নাম লিখা যায়

তোমার বুকে কেন যায় না

তুমি কি এতই পাষাণ

বোবা মন কখনো কি গান ওগো গায় না।

 

প্রেম সে তো স্বর্গের ফুল

হাত পেতে নিতে তারে পৃথিবী আকুল

পাষাণেও আঁকা যায় ছবি

তোমার মনে কেন যায় না

তোমার মন কি প্রেম কখনোই চায় না।

 

ভালবাসা পেলে সাপ পোষ মেনে যায়

প্রকৃতির সকলেই ভালবাসা চায়

সবকিছু দেখা যায়, প্রেম দেখা যায় না

ভিখ মাগে কতজন, প্রেম তবু পায় না

তোমার মন কি প্রেম কখনোই চায় না।

 

মানব হৃদয় তো এক প্রেমের সাগর

সতত সে মনে ঢেউ বয়ে বয়ে যায়

সারাক্ষণ এক মন অন্য মনের

আর কিছু নয়, শুধু প্রেমটুকু চায়

তোমার পাষাণ পাথর মন

কখনো কি ভালবাসা, প্রেম কিছু চায় না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৮

ধর্ম থেকে নিরপেক্ষ দাবী করে যারা

 

ধর্ম থেকে নিরপেক্ষ দাবী করে যারা

সালাম আদাব দিতে কেন লজ্জা পায় না তারা।

ধর্ম মতে বিয়ে কেন করে

জায়নামাজ বা মূর্তি রাখে ঘরে

এ সবই তো ধর্মীয় কাজ, কেমনে করে তারা।

 

ধর্ম থেকে নিরপেক্ষ যদি দাবী করিস

মসজিদ বা মন্দিরের পথ কেন তবে ধরিস

কেন করিস নামাজ রোজা

কেন করিস মূর্তি পূজা

আল্লাহ ভগবানে কেন ঈমান রাখিস তোরা।

 

ধর্ম নিরপেক্ষবাদী কেন কবর পাবে

ধর্ম নিরপেক্ষবাদীর কেন সৎকার হবে

ধর্মের সুযোগ সে তো পাবে কেবল ধার্মিকেরা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৮৯

কৃপণের ধন পোকায় খায়, লাগে না তা কাজে

 

কৃপণের ধন পোকায় খায়, লাগে না তা কাজে

যতই সে ধন লুকিয়ে রাখো নানান গোপন ভাঁজে।

 

যতই চড়ো এসি করা লিফটে

লোকে তবু বলবে তোমায় কিপটে

ক্ষিধে পেটে মন বসে না ভাল কোন কাজে।

 

আগলে রাখা ধন দৌলত চিরটা কাল থাকে না

পোকায় খাওয়া ধনকে কেউ আলমিরাতে রাখে না

পেট ভরে না রেখে দিলে খাবার ফ্রিজের ভাঁজে।

 

ক্ষিধে পেলে সময় মত খাও

মনের সুখে পরাণ ভরে গাও

অযথা আর মরো নাতো আÍঘাতি লাজে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯০

 

অগ্নি তাপে মোম গলে যায়, তুমি কেন গলো না

 

অগ্নি তাপে মোম গলে যায়, তুমি কেন গলো না

ময়না পাখি বলে কথা, তুমি কেন বলো না

কিসের এত রাগ গো কন্যা, কিসের অভিমান

অভিমানের পর্দা ছিঁড়ে হাসো সোহাগ চান।

 

মেঘ থমথম আকাশ ভরা ঝড়ের আয়োজন

তোমার মুখে ঝড়ের আভাস, কাঁপে আমার মন

আমায় এমন ভয় দেখিয়ে কী সুখ তুমি পাও

বিজন চরে আটকে রাখো সাধের কাঠের নাও

তবু বাতাস থামে নাতো, গায় সে মধুর গান।

 

বনের পাতা দোলায় ছাতা, বলে কন্যা হাসো

পাখপাখালির কিচিরমিচির বলে ভালবাসো

মেঘ কেঁদে কয় কন্যা এবার ভাঙো অভিমান

মেঘ থেকে যে বৃষ্টি নামে শোন তাহার তান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯১

গরীব বলে ওরা কি মানুষ নয়

 

গরীব বলে ওরা কি মানুষ নয়

কেন ওদের তাড়িয়ে বেড়ায় শুধুই মৃত্যু ভয়।

ওরা কাজ করে কলে কারখানায়

ওরা কাজ করে গার্মেন্টস পাড়ায়

জীবন বীমা সবারই হয়, ওদের কেন নয়।

 

কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা ওদের শ্রমে আসে

তবু ওরা সারাটি জীবন কেন দুঃখে ভাসে

সন্তানেরা পায় না কাপড়, শিক্ষা

পঙ্গু হলে করতে হয় যে ভিক্ষা

আগুন লাগা, ভবন ধ্বসে ওরাই মরে, পঙ্গু হয়।

 

শ্রমিকের হক ঘাম শুকোবার আগেই দিতে হয়

কোন অধিকারে তার সে হক তোমার পকেটে রয়

যারা ক্ষুধায় পায় না খেতে ভাত

ওরাও আল্লাহর প্রিয় মাখলুকাত

তাদের পাওনা শোধ করে দাও, আল্লাহকে করো ভয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯২

 

বাতাসে লাশের গন্ধ, এই লাশ গরীবের

 

বাতাসে লাশের গন্ধ, এই লাশ গরীবের

এই লাশ নারীদের, মায়েদের

এই লাশ গার্মেন্টস শ্রমিকের

গার্মেন্টস নয়, এ যে বধ্যভূমি

এ লাশের খুনী শুধুই তুমি।

 

লাশের পরে লাশ শুয়ে আছে সারি সারি

চারিদিকে ক্রন্দন, আহাজারী

ব্যথিতের কান্নায় বাতাস ভারী

গার্মেন্টস নয়, এ যে বধ্যভূমি

এ লাশের খুনী শুধুই তুমি।

 

পুঁজিপতি তুমি তাই বুক ভরা নিদারুণ লোভ

চুষে খাও শ্রমিকের রক্ত ও ঘাম

মানো না আল্লাহর দ্বীন ইসলাম

একদিন এসবের দিতে হবে দাম

থাকবে না এ দাপট, থাকবে না তুমি

এসব লাশের খুনী শুধুই তুমি।

 

জাগো, জাগো দেশবাসী, জাগো মাতা-ভগ্নি

আর নয় ভূমিধ্বস, আর নয় অগ্নি

আর নয় গরীবের সম্পদ জমা

আর নয় শোষকের ভাগ্যে ক্ষমা

আমার হিসসা এবার বুঝে নেব আমি

বাতাসে লাশের গন্ধ, খুনী তার তুমি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৩

চাই ইনসাফ, ইনসাফ চাই, পুঁজিপতিদের আইনে

 

চাই ইনসাফ, ইনসাফ চাই, পুঁজিপতিদের আইনে

শ্রমিক কখনো পায় না হক, ন্যায্য হিস্সা, মাইনে।

 

লোভের আগুন, স্বার্থ চিন্তা, মানুষের ফিতরাত

বিবেক কিংবা মানবতা তখন করে না হৃদয়ে কষাঘাত

ধনী সহায়ক এমন আইন আমরা কখনো চাইনে।

 

আল্লাহর আইন স্বার্থ মুক্ত, নাই তাতে ভেদাভেদ

জুলুম, শোষণের সকল পথ দেয় করে সে উচ্ছেদ

কারো অধিকার হয় না খর্ব আল্লাহর দেয়া আইনে।

 

কিন্তু কায়েমী স্বার্থবাদীরা জুলুম শোষণে মত্ত

আল্লাহর আইন থাকলে শোষণের থাকে না আর পথ তো

তাই শোষকের চক্রান্তে আল্লাহর আইন আমরা কখনো পাইনে।

 

আল্লাহ জানেন সবার প্রয়োজন, তাই সম্পদে ভরপুর

থাকে ধরনী, সকল প্রাণী তাতেই করে অভাব দূর

আমাদের অভাব হয় না দূর, কারণ আমরা সে পথে যাইনে।

 

গরীব দুঃখী নিপীড়িত জনতা, বাঁচতে হলে তোল আওয়াজ

মানুষের গড়া বাদ-মতবাদ, সবাই আসলে ধাপ্পাবাজ

মুক্তিমন্ত্র লেখা আছে শুধু আল্লাহর বিধান, আইনে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৪

ইসলাম আমার জীবন বিধান, কোরআন আমার সংবিধান

 

ইসলাম আমার জীবন বিধান, কোরআন আমার সংবিধান

বিশ্ব জুড়ে তাইতো আমার পরিচয় হয় মুসলমান।

 

যে মানে না খোদার আইন

কেমনে সে হয় মুসলমান

কোরআনে তো তার পরিচয় লেখা আছে নাফরমান।

 

আল্লাহকে না মানলে প্রভু

মুসলমান সে হয় না কভু

নবীকে না মানলে নেতা অবাধ্য যে সে ইনসান।

 

যেই কারণে নামাজ পড়ি

যেই কারণে রোজা করি

সেই কারণে রাষ্ট্র সমাজ সবখানে চাই খোদার আইন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৫

ও আমার আল্লাহরে পাঠাইলা বান্দারে

 

পাঠাইলা নবী ও কালাম

সেই নবীকে হাজারো সালাম।

 

তাঁর উসিলায় চিনলাম রব

পাপ-পূন্য চিনলাম সব

তাঁর উসিলায় চিনিলাম ইসলাম।

 

জানলাম তুমি স্রষ্টা মালিক

বাঁচাও মারো প্রভু খালিক

নবীর কথায় মুনীব চিনিলাম।

 

পাঠাইলা অবুঝ ইনসান

পাঠাইলা জীবন বিধান

তাঁর উসিলায় কোরআন পাইলাম।

 

সেই কোরআনের অমর বাণী

যে ধরে হায় বক্ষে টানি

তাঁর জীবনই কেবল সফলকাম।.

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৬

বদর দেখিনি, ওহোদ দেখিনি, দেখিনি কারবালা

বদর দেখিনি, ওহোদ দেখিনি, দেখিনি কারবালা

শাপলা চত্বরে একি দেখিলাম ওগো আল্লাতালা।

শত শত লাশ রক্ত সাগরে ভাসে

কচি কচি বুকে বুলেট ছুটে আসে

সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজে হায় কান হয় ঝালাপালা।

 

হামজার তাজা কলজে চিবিয়ে খেয়েছিল নাকি হিন্দা

শাপলা চত্বরে দেখলাম সেই ডাইনী রয়েছে জিন্দা

কলিজার রস টসটস করে পড়ে

ট্রাকের লাশ মরেনি তখনো নড়ে

নামাজে দাঁড়ানো মুসল্লির বুক হয়ে যায় ফালাফালা।

 

আল্লাহপ্রেমিক লাখ লাখ লোক রাজপথে ছিল শুয়ে

আল্লাহর ভয়ে জিকিররত মাথাগুলো ছিল নুয়ে

পার হয়ে গেছে মধ্যরাত, হঠাৎ নিভল বাতি

হাজার হাজার গুলি-গ্রেনেডের শুরু হল মাতামাতি

পৃথিবী দেখেনি অকাতরে এমন অঝোরে রক্ত ঢালা।

 

অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র সজ্জিত আর্মডফোর্স দশ হাজার

অন্যদিকে তসবি হাতে নিরস্ত্র লাখো মুমিনের চিৎকার

এমন নৃশংস গণহত্যার নজির দেখেনি কেউ

মতিঝিলের রাজপথে হায় বয় রক্তের ঢেউ

হার মেনে যায় জানিয়ালওয়ালা, হার মানে কারবালা।

 

দেশজুড়ে আজ কান্না মাবুদ, তোমার কুদরতি হাত

বাড়াও এবার, আর পারি না, জালিমের বিষদাঁত

দাও ভেঙে দাও, হাজারো পঙ্গু মানুষের ফরিয়াদ

ঘুচাও লাখো মানুষের চোখের নিকষ আঁধার রাত

পালিয়ে বেড়ানো আলেমের আজ মিটাও বুকের জ্বালা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৭

পোশাক শ্রমিক, গরীব কৃষক আর নিরীহ আলেম যারা

 

পোশাক শ্রমিক, গরীব কৃষক আর নিরীহ আলেম যারা

দেশ জুড়ে হায় আজকে শুধু মার খেয়ে যায় তারা।

 

ক্ষমতায় বসে গরীবের হক করে যারা লুটপাট

তারাই এখন চারদিকে হায় দেখায় শুধু চোটপাট

আমজনতা পথেঘাটে খায় যে শুধু তাড়া।

 

আলেম, শ্রমিক, কৃষক গরীব বাঁচতে যদি চাও

রক্তচোষা জালিম খুনীর বিরুদ্ধে আজ দাঁড়াও

জোট বাঁধো আজ নির্যাতীত, জাগাও ঘুমের পাড়া।

 

বাঁচতে হলে লড়তে হবে বিভেদ করো দূর

এক জামাতে হওরে শামিল ডাকছে আজান, সুর

মুসলমানের নেইতো সহায় এক আল্লাহ ছাড়া।

 

বড়লোকতো গরীবদেরকে ওদের গোলাম ভাবে

চিরকালই গরীবদেরকে তাই দাবাতে চাবে

কিন্তু আমরা নইতো গোলাম এক আল্লাহ ছাড়া।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৮

ফেরারী হৃদয় ভয়ে ভয়ে রয় কখন কি ঘটে যায়

 

ফেরারী হৃদয় ভয়ে ভয়ে রয় কখন কি ঘটে যায়

দুরু দুরু বুক, হৃদয়ে অসুখ, মন কাঁপে শংকায়।

 

কতদিন হায় দেখিনা তোমায়, কোন সুদূরে রও

আমার মতই বিরহ যাতনা তুমিও কি বুকে বও

তোমারও কি হায় রাত কেটে যায় নির্ঘুম নিরালায়।

 

তুমি তো জানো ফেরারী হয়েছি আল্লাহকে বেসে ভালো

কত মানুষের ভেঙেছে বুক, কত ব্যথিতের হারিয়েছে সব আলো

আঁধার রজনী এসেছে নেমে আল্লাহর প্রিয় এই দুনিয়ায়।

 

আল্লাহ প্রেমের অপরাধে হায় মাড়ালাম কত প্রান্তর

ঘুরে বেড়ালাম সঙ্গে নিয়ে বিরহ কাতর অন্তর

বুকের ভেতর কষ্টের স্রোত জানি না কেন ছলকায়।

 

আমি তো জানি আসবেই ভোর, জাগবেই ফের জনতা

বিদ্বেষ আর ঘৃণার জগত জয় করে নেবে মমতা

ফেরারী রাত হবে কুপোকাত সত্যের চির সুষমায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২৯৯

বিড়ালছানা উঠলো ডেকে মিও মিও মিও

 

বিড়ালছানা উঠলো ডেকে মিও মিও মিও

ও ঘরে কে একলা বসে দুধের বাটি পিও

দুধ খেতে নেই আমার মানা

তোমার কি তা নেইরে জানা

তোমার থেকে একটুখানি আমায় খেতে দিও।

 

বাইরে থেকে ডাকলো কুকুর ঘেউ ঘেউ ঘেউ

একলা ঘরে বসে বসে হাড্ডি চিবায় কে ও

হাড্ডি আমার ভীষণ প্রিয়

পারলে আমায় খানিক দিও

খেলার মাঠে না হয় আমায় সঙ্গে করে নিও।

 

উঠোনে হাঁস উঠলো ডেকে প্যাক প্যাক প্যাক

আমায় রেখে মজার মজার খাচ্ছো না হয় কেক

খাবে যখন গরম রুটি

আমায় না হয় দিও দুটি

আমি দেবো আন্ডা তুমি মামলেট করে খেয়ো।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ৩০০

পথেঘাটে হাজার লোক, মানুষ আছে কয় জনা

 

পথেঘাটে হাজার লোক, মানুষ আছে কয় জনা

জন্ম থেকে মানুষ হওয়ার করো রে মন সাধনা।

 

যার নাইরে মানের ভয়, যার নাইরে হুঁশ

চলতে ফিরতে পারলেই সে হয় কিরে মানুষ

মানুষ হওয়া নয়রে সোজা, করতে হয়রে সাধনা।

 

মানুষ ছিলেন দ্বীনের নবী, মানুষ ছিলেন মুহাম্মদ

আজো কিরে মানুষ আছে প্রেমের নবীর সে উম্মত

মানুষ হলে কেমনে তারা মানুষকে দেয় যাতনা।

 

নিজকে নিজে প্রশ্ন করো মানুষ আছো কী না

মানুষতো ভাই যায় না হওয়া প্রেমের পরশ বিনা

সে প্রেম বুকে আছে কী না একটুখানি ভাবো না।

No comments

Powered by Blogger.