আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ গানঃ ১০১-২০০

 


আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০১

সবুজ দেশের অবুঝ মেয়ে

 

সবুজ দেশের অবুঝ মেয়ে

এ কি মায়ায় জড়ালে

পায়েশ কোমল দীলের ছোঁয়ায়

আমার এ দীল ভরালে।

 

তোমার চোখের বিজলী ঝিলিক একটু বাণ

কাড়লো আমার অবুঝ হিয়া কঠিন প্রাণ

তোমার হাসির স্রোতের তোড়ে

আমার হৃদয় নড়ালে।

 

সর্ষে ফুলে মধু পেয়ে ভ্রমর করে গান

আমার হৃদয় উথলে উঠে দেখলে অভিমান

অভিমানের ধাক্কা দিয়ে

আমায় কেন সরাালে।

 

তোমার কথা ভাবলে মনে লাগে ভীষণ ভালো

তুমি আমার চোখের জ্যোতি আন্ধার ঘরে আলো

আমার বুকের বিজন চরে

এ কি সুবাস ছড়ালে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০২

এ দেশ আমার এ দেশ তোমার

 

এ দেশ আমার এ দেশ তোমার

আমাদের আছে হাত অগণন

জ্বরা-ব্যধি-অন্যায়

সবুজের বন্যায়

রুখে দিতে এক হও জনগণ।

 

আল্লাহর আইন নেই তাই ভেদাভেদ

মানুষে মানুষে যত বিরোধ বিভেদ

শাষণ আর শোষণের

সুদখোর তোষণের

বিরুদ্ধে এসো রব তুলি সারাক্ষণ।

 

প্রাণে প্রাণে গড়ি প্রেম মৈত্রির বন্ধন

আর নয় দুঃখী আর অভাবীর ক্রন্দন

আল্লাহর গড়া এই বিশ্ব

থাকবে না কেউ আর নিঃস্ব

জাকাতের পথ ধরে চাই সমবন্টন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৩

সাধের কীর্তনখোলা রে

 

সাধের কীর্তনখোলা রে

তুই চিনলি না তারে

যে জন দেশ বিক্রি করে

দেশের সম্পদ লুট করে যে

সখের প্রাসাদ গড়ে

তুই চিনলি না তারে।

 

রিলিফের মাল মারলো যারা

কোটি টাকার মালিক তারা

দামী আসবাব তাদের ঘরে

দামী গাড়ি তারাই চড়ে

যে জন দুর্নীতি করে

তুই চিনলি না তারে।

 

সুদের কারবার যারা করে

যারা ঘুষের টাকা ধরে

যারা গরীব শোষণ করে

যাদের থাবায় গরীব মরে

তুই চিনলি না তারে।

 

আল্লাহ রাসূল চিনে না যে

নিজেই নিজের প্রভু সাজে

খোদার বিধান মানে না রে

ছলচাতুরী করতে পারে

ভয় পায় শুধু ধর্মটারে

তুই চিনলি না তারে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৪

যানজট কোলাহল হৈচৈ রেখে

 

যানজট কোলাহল হৈচৈ রেখে

চলো যাই নিরিবিলি পিকনিক করি

বিশুদ্ধ বাতাসে এই মনপ্রাণ ভরি।

 

নিরিবিলি আছে কত মজার ইভেন্ট

আনন্দ পাবে তাতে সেন্টপার্র্সেন্ট

চলো যাই নিরিবিলি হাতে হাত ধরি।

 

আছে বাঘ হনুমান নানান পাখি

কোনটা দেখবে তুমি কোনটা রাখি

বিশাল তিমির হাড় দেখো চোখ ভরি।

 

যাদু আছে গাড়ি আছে আছে খেলা কত

মুভি আছে বোট আছে চলে অবিরত

রেলের টিকেট কেটে চলো তাতে চড়ি।

 

নিরিবিলি রাাঁধো বাড়ো নিরিবিলি খাও

নিরিবিলি আনমনে গান গেয়ে যাও

স্রষ্টার লীলা দেখো দুটি চোখ ভরি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৫

মেঘ সাদা চুন সাদা-সাদা গাছের ফুল

 

মেঘ সাদা চুন সাদা-সাদা গাছের ফুল

তার চেয়ে অধিক সাদা মানব হৃদয় কুল।

 

তেমন মানুষ হতে যদি পারো

হিংস্র যে জন লাগবে ভাল তারও

তোমায় দেখে আকাশ ভরা হাসবে তারার ফুল।

 

ফুল সাদা বক সাদা-সাদা দাদুর চুল

তার চেয়ে অধিক সাদা মানব হৃদয় কুল।

 

তাদের মত হতে হলে হিংসা বিভেদ ছাড়ো

আপন করে নাও মানুষে যে যতটা পারো।

তোমায় দেখে হাসবে তখন বিশ্ব মানব কুল।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৬

বন্যার তাণ্ডবে ভাসছে মানুষ

 

বন্যার তাণ্ডবে ভাসছে মানুষ-

তাই দেখে কেউ পেয়োনা ভয়

মিলিত ঐক্যে রুখবো সবাই

দুর্যোগ ও সংকট-ধ্বংস প্রলয়।

 

বুক ভরা ভালবাসা ঐক্যের জোর

দূর করে দেবে সব আঁধারের ঘোর

হাতে হাত কাঁধে কাঁধ-

বানভাসি জ্বরা ব্যাধি করবোই জয়।

 

খাল বিল ডুবে গেছে ডুবেছে সড়ক

দেবা না দেবো না হতে তবুও মড়ক

মায়া আর মমতার বন্ধনে

মহামারী মনন্তর করে যাবো ক্ষয়।

 

নাইবা থাকুক বিত্ত-বেসাত বৈভব ধন

সোনারোদে মাখা আছে আমাদের মন

অভাব আর অনটনে দুঃসহ দুর্দিনে

সাথী হবে আমাদের দরদী হৃদয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৭

নূরের নবী তোমার দ্বীনের আলোক আমি চাই

 

নূরের নবী তোমার দ্বীনের আলোক আমি চাই

জ্বালিয়েছিলে যে নূর তুমি আঁধার দুনিয়ায়।

 

চিনিয়েছিলে মাবুদ আল্লা

দেখিয়েছিলে নূরের জাল্লা

আমার বড় সাধ জাগে সে নূর মাখি মোর গায়।

 

ভেঙেছিলে তুমি মানব কুলের ভুল

ফুটিয়েছিলে বুকে প্রেমের ফুল

বন্য স্বভাব মানুষগুলো সভ্য হলো মরু সাহারায়।

আমার বড় ইচ্ছে করে সে নূর মাখি মোর গায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৮

ইয়া আল্লাহ আল্লাহ আল্লাহু

 

ইয়া আল্লাহ আল্লাহ আল্লাহু

তুমি নূর আলা নূর জাল্লাহু

 

তোমার নূরে জগত আলো

তুমি সরাও মনের কালো

পাঠাও রাসূলাল্লাহু।

 

তোমার দয়ার নাই সীমা নাই

তোমায় দেখি যেদিক তাকাই

তোমার রহম আকাশ জমীন

ভরা সোবহানাল্লাহু।

 

তুমি দিলে হে মেহেরবান

জীবন চলার সহজ বিধান

সবার সাথে দিলে বিবেক

হাসবি রাব্বি জাল্লুহু।

 

পথ ভোলা সব মুর্খ ইনসান

তাদের জন্য দিলে কোরআন

তুমি সবার প্রভু মহান

লা-ইলাহা ইল্লাহু।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১০৯

আমি অধম বান্দা তোমার

 

আমি অধম বান্দা তোমার

বাদশা তুমি দীন-দুনিয়ার

এ মোর অহংকার, আমি চাই না কিছু আর।

 

তোমার রহম পাই যেন গো

আমার মনের রাজা

এই গুনাহগার পায় না যেন

পরকালে সাজা

তুমি আমার মালিক মনিব

জপি বারংবার।

 

ধন-গরিমা চাই না খোদা

তোমার দয়া যাচি সদা

তোমার পথে চলতে যেন পারি অনিবার।

 

সকল সময় সকল কাজে

তোমার হুকুম হৃদয় মাঝে

সদা যেন থাকে মনে চাই সে অধিকার।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১০

সবার তুমি প্রভু খোদা আমায় ভুল না

 

সবার তুমি প্রভু খোদা

আমায় ভুল না

আমি জানি তোমার দয়ার

হয় না তুল না।

 

কীটপতঙ্গ পশুপাখি তোমার রহম পায়

তবে কেন করবে নিরাশ অধম এ বান্দায়

সবাই ভুলুক তুমি মওলা

আমায় ভুল না।

 

চাওয়ার আগেই সবার প্রয়োজন

পূরণ করো তুমি

তোমার কাছে তবে কেন

চাইতে যাবো আমি

আমি জানি তোমার দয়ার হয় না তুল না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১১

আকাশের তারাগুলো মিটি মিটি হেসে

 

আকাশের তারাগুলো মিটি মিটি হেসে

কাহারে জানায় বলো অভিনন্দন

সে যে স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সেতুবন্ধন।

 

রাতের ওই মায়া ভরা চাঁদ

বলো না কি বলে সংবাদ

বলে স্রষ্টার প্রেমে ভাসাও ফুলচন্দন।

 

কুল কুল রবে ওই নদী বয়ে যায়

বলো না কি সুর ভাজে; কোন গান গায়

সাথীহারা নদী কেন করে ক্রন্দন।

 

ফুল ফোটে পাখি গায়

গানে গানে সে কি চায়

চায় সে প্রভুর প্রেম চির বন্ধন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১২

রাঙামাটি রাঙামাটি রাঙামাটি রে

 

রাঙামাটি রাঙামাটি রাঙামাটি রে

তোর বুকে যে অরূপ রূপের লীলা দেখি রে।

 

এমন লীলা বিশ্ব জুড়ে আর কি কোথাও আছে?

তোর সে রূপের লীলা দেখে পরাণ আমার নাচে।

পাহাড়ি সব ঝরণা দেখে নয়ন জুড়ায় রে।

 

পাহাড় চেরা নদীগুলোয় জল টলমল জল

কার পাণে যে ছুটছে বেগে ধেয়ে অবিরল

কঠিন শীলার বুকে এমন বন কে বানায় রে।

 

তবলছড়ি মানিকছড়ি হরেক ছড়ির বাহার

যেদিক তাকাই উঁচুনিচু বিচিত্রসব পাহাড়

বন্য টিলা কঠিন শীলা সবুজ দেখি রে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৩

নাচে ঝর্ণা, কলকলকল, দেখবি কে কে আয়

 

নাচে ঝর্ণা, কলকলকল, দেখবি কে কে আয়

ফুল্ল হাসির লহর তুলে রূপের রাণী যায়।

 

তার সে হাসির লহর বাজে কানে

মিষ্টি সুরের আবেশ ছড়ায় প্রাণে

তার সে নাচের ঠমক আহা কী যে নজরকাড়া।

 

দুই পাহাড়ের মাঝে এমন স্বচ্ছ পানির ধারা

কোত্থেকে যে আসছে ছুটে হয়ে পাগলপারা।

 

দুই পাড়ে তার কঠিন পাথর শীলা

তার মাঝে কে দিল প্রাণের লীলা

রাঙামাটির পাহাড় বনে জাগে প্রাণের সাড়া।

 

কোন সে শিল্পী এমন সবুজ আঁকলো পাথর বনে

যতই দেখি আরো দেখার খায়েশ জাগে মনে

পাহাড় চুড়ায় লটকে থাকে নীল আকাশের তারা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৪

আয় না সবে দল বেঁধে আজ রাঙামাটি যাই

 

আয় না সবে দল বেঁধে আজ রাঙামাটি যাই

এমন খাঁটি রূপের ঘাঁটি আর তো কোথা  নাই।

 

ঘুরে দেখি বৌদ্ধবিহার

অপূর্ব সেই ঝুল সেতু আর

চাকমা মুরং উপজাতি তাদের পরশ পাই।

 

পাহাড়কন্যা রাঙামাটি

স্নিগ্ধ শ্যামল শীতলপাটি

সেথায় বসে তাদের সাথে বোম্বে চিকেন খাই।

 

যাই হারিয়ে শুভলং-এর ঘাটে

যেথা চাকমা মেয়ে কাঁচা হলুদ বাটে

মানিকছড়ির মানিক কোথা-খুঁজে ফিরি তাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৫

রাঙামাটির ভাঙা ঘরে আইও বন্ধু আইও

 

রাঙামাটির ভাঙা ঘরে আইও বন্ধু আইও

ভালবাসার নয়ন মেলে আমার দিকে চাইও।

 

পাহাড়িয়া নদীর ঢল

বয়ে চলে ছলাৎছল

সেই নদীরই শীতল জলে বন্ধু তুমি নাইও।

 

বসবে তুমি শীলার ঘাটে

শুতে দেবো সেগুন খাটে

সোহাগ ভরে খেতে দেবো বোম্বে চিকেন খাইও।

 

চরতে দেবো মেঘের ভেলা

পরতে দেবো তারার মেলা

ঝরণা ধারার সুরের সাথে সুর মিলিয়ে গাইও।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৬

রাঙামাটির রাঙা রূপের সেকি অতুল বাহার রে

 

রাঙামাটির রাঙা রূপের সেকি অতুল বাহার রে

মধ্যিখানে লেকের পানি দুই দিকে তার পাহাড় রে।

 

কোথাও পাহাড় রাজ ফটকের মস্ত বড় খিলান রে

কোথাও পাহাড় ডুবে যাওয়া টাইটানিকের মিলান রে

কোথাও পাহাড় মস্ত বড় অন্ধ কারা প্রাচীর রে।

 

মহান কোন  শিল্পী যেন আঁকে হাজার কারুকাজ

কোথাও পাহাড় কঠিন শিলার দেয় যে মেলে হাজার ভাঁজ

সে ভাঁজ দিয়ে অনন্তকাল সুর তুলে বয় ঝর্ণাধারা রে।

 

উতল হাওয়ায় সেই পাহাড়ের সবুজ নাচে রে

আম আনারস কাঠাল বাঁশের সারি কাঁপে রে

শালের বনে কোথাও জুমের ফসল হাসে রে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৭

নানান জাতি নানান বরণ

 

নানান জাতি নানান বরণ চাকমা মোরং খাসিয়া

মিলেমিশে বসত করে জীবন কাটায় হাসিয়া।

 

তোমরা যারা ঝগড়া করো

সকাল দুপুর যুদ্ধ করো

সাংগু নদীর স্বচ্ছ জলে হৃদয়টা ধোও আসিয়া।

 

ঘৃণা এবং হিংসা গুলো

মনের যত মন্দ ধূলো

পাহাড়িয়া ঝর্ণা জলে যাও না সে সব নাশিয়া।

 

সব ভেদাভেদ বিভেদ ভোল

উঁচু-নিচুর দেয়াল তোল

রাঙামাটির পাহাড়-লেকের মিলন ভালবাসিয়া।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৮

আইলে ভবে যাইতে হবে এই কথাটা মিছা না

 

আইলে ভবে যাইতে হবে এই কথাটা মিছা না

ছিলাম মাটি হইবো মাটি মাটি হইবে বিছানা

 

পাঠাইয়াছে যেই মহাজন

তার কথা কি ভুললি রে মন

ফিরবি যখন তার কাছে তুই নাজাত পাইবি না।

 

যেখান থেকে আইলি সেথা

যেতে হবে ভুলিস কি তা

দুনিয়াদারীর মোহে আসল কথা ভুললে চলবে না।

 

সোনার বরণ নধর দেহ

সব মিশে যায় রয় না কেহ

রাজা উজির ফকির দরবেশ কেউ তো ধরায় থাকে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১১৯

কেউ যায় পিকনিকে কেউ বনভোজনে

 

কেউ যায় পিকনিকে কেউ বনভোজনে

খায়-দায় মজা গজা বেড়ে যায় ওজনে।

কেউ বলে চড়–ইভাতি

মানে হল মাতামাতি

খাওয়া-দাওয়া ঘুরাফেরা-চলো যাই সুজনে।

 

পিকনিক হবে ঠিক কত কি যে তোড়জোড়

কেউ দেয় লাফঝাপ-কেউ করে হুল্লোড়।

বনে যাওয়া বনে খাওয়া

গলা ছেড়ে গান গাওয়া

বনে বনে মনে মনে এসো বাঁধি প্রীতিডোর।

 

পিকনিকে কত মজা নাই তার অন্ত

শিশু যুবা বৃদ্ধও -হয় প্রাণবন্ত।

কেউ করে খেলাধুলা

কেউ আনে হাড়ি চুলা

ফুর্র্তিতে কারো কারো দেখা যায় দন্ত।

 

কেউ খায় চানাচুর-কেউ খায় চাটনি

সকলেই মজা করে-কারো বাড়ে খাটনি।

কেউ কিনে লাকড়ি ও গোশ্ত

কেউ পরে জামা জুতো চোস্ত

কেউ করে বাস ভাড়া-কেউ বাটাবাটনি।

 

কেউ খাটে কেউ হাঁটে করে নিজ কাজ যে

ফাঁকি দিলে ভজঘট বাজবে রে আজ যে।

দুনিয়াটা মাঠ বন

নিয়মটা সারাক্ষণ

মেনে নিলে সুখ থাকে আল্লাহর রাজ্যে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২০

ছিলাম মাটি হইবো মাটি

 

ছিলাম মাটি হইবো মাটি খোদার বিধান জগতময়

মাটির শরীর মাটির কায়া তবু কত মায়াময়।

 

এই শরীরের যতন করি

স্বার্র্থ চিন্তায় হৃদয় ভরি

পরের স্বার্থ নষ্ট করি ভুলে নিজের পরিচয়।

 

হায়রে মানুষ হইলা বেহুশ ভাবলা না কেন আইলা ভবে

ঠাকঠমক আর দেমাগ ছেড়ে ডাক এলে যে যেতে হবে।

 

প্রাণ পাখিটা উড়ে গেলে

সবাই যাবে তোমায় ফেলে

মাটির কায়া মাটির সাথে মিশে সবই হবে ক্ষয়।

 

প্রাণ পাখিটাই আসল মানুষ

দেহটা তার রঙিন ফানুস

যা করো সব দেখেন খোদা-করো তারে ভয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২১

চাই না কোন জমিদারী-বাড়ি আলীশান

 

চাই না কোন জমিদারী-বাড়ি আলীশান

আল্লাহ তুমি আমায় এমন রিজিক কর দান।

 

কারো কাছে কোনদিনও হাত না পাততে হয়

অভাব যেন অনায়াসে করতে পারি জয়

শোকরগুজার বান্দা হয়ে দিন করি গুজরান।

 

গরীব দুঃখী এতীম শিশু বৃদ্ধা এবং নারী

খালি হাতে যায় না যেন ছেড়ে আমার বাড়ি

দীনের পথে সাধ্যমত করতে পারি দান।

 

আমার যারা পোষ্য এবং শিষ্য পরিজন

অনায়াসে মিটে যেন তাদের প্রয়োজন

প্রশান্তিতে তারা যেন রয় গো মহীয়ান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২২

বলতে পারো তোমায় মালিক

 

বলতে পারো তোমায় মালিক ডেকে কি লাভ হয়

তুমি মালিক থাকলে যদি আমার অভাব রয়।

 

যার যা কিছু চাওয়ার আছে

সবাই যাচে তোমার কাছে

তুমি সবার মিটাও অভাব প্রভু জগতময়।

 

হাজার রকম পশু পাখি

অভাব মিটায় তোমায় ডাকি

তাই তো সবাই জগত জুড়ে গাহে তোমার জয়।

 

পানির নিচে হাঙর কুমীর

অন্ধ এবং বোবা বধির

তোমার দয়ায় বাঁচে সবাই জানি সুনিশ্চয়।

 

তোমার অধম বান্দা আমি

তোমায় ডাকি দিবসযামী

তোমার নামে আমার সকল অভাব মোচন হয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৩

আল আরাবী দ্বীনের নবী আখেরি রাসূল

 

আল আরাবী দ্বীনের নবী আখেরি রাসূল

তোমার পথে চলতে যেন হয় না কভু ভুল।

 

তার উসিলায় চাই গো নবী

তোমার সাফায়াত

পাই যেন গো খোদার রহম

আখেরি নাজাত

আমার দোয়া হয় যেন গো কবুল ও মকবুল।

 

পাপ করেছি গুনায় ভরা

জীবন জিন্দেগানি

বুঝে এবং না বুঝে সব

করেছি নাফরমানি

ফুটবে কেমনে জীবনে হায় জান্নাতি ফল-ফুল।

 

ইবলিশ যতই মন্ত্রণা দিক

পথ যেন না হারাই

বাতিল মতের পক্ষে যেন

কখনো না দাঁড়াই

তোমার দোয়ায় পার যেন পাই পুলসিরাতের পুল।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৪

মাঠ পেরিয়ে ঘাট পেরিয়ে পেরিয়ে তেপান্তর

 

মাঠ পেরিয়ে ঘাট পেরিয়ে পেরিয়ে তেপান্তর

প্রেমের টানে এলাম যখন ছুটে তোমার ঘর

বললে তুমি আজ যা খুশি আমার কাছে চাও

উজাড় করে ভরে দেবো তোমার সাধের নাও।

 

আমার মনে প্রেমের তুফান চাইবো কি আর বলো

তোমার প্রেমের টানে আমার হৃদয় টলোমলো।

চাইতে হলে তোমাকে চাই-আপন করে নাও

তোমার প্রেমের নজর অধম বান্দারে আজ দাও।

 

আশেক আমি তোমার প্রেমের তাই যেন পাই খুঁজি

এ প্রেম যেন দুই জাহানে হয় গো  আমার পুঁজি।

সাক্ষী থাকুক কাবার গিলাফ মাকাম ইব্রাহীম

তোমার প্রেমের টানে চাই গো সীরাত মুস্তাকীম।

 

জীবন নদী বয় যেন গো তুমি যেমন চাও

তোমার প্রেমের অতুল সুধায় এ বুক ভরে দাও।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৫

ধন গরিমা বিত্ত বেসাত শান্তি এবং সুখ

 

ধন গরিমা বিত্ত বেসাত শান্তি এবং সুখ

কেন হবো এসব নিয়ে অযথা উন্মুখ

আমার অভাব আমার চেয়ে তোমার বেশি জানা

দূর করলে সে কষ্ট অভাব করবে কে আর মানা।

 

প্রেমিক জনের কষ্ট অভাব করতে পারলে দূর

মন কি তোমার হবে না গো আনন্দে ভরপুর

তোমার প্রেমে বিভোর আমায় রেখো আলমপনা।

 

আমার মনে প্রশান্তি দাও রাব্বুল আলামীন

সকল সময় সে প্রশান্তি থাকুক অমলিন

প্রশান্তির সে হাসি থাকুক ছাড়বো যেদিন সরাইখানা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৬

তোমার নবীর রওজা আল্লাহ ছুঁয়েছে এ হাত

 

তোমার নবীর রওজা আল্লাহ ছুঁয়েছে এ হাত

তার উসিলায় দিও গো প্রভু আখেরে নাজাত।

 

দেখেছি এ দু চোখ ভরে জান্নাতুল বাকী

উথলে উঠা আবেগ বলো কেমনে ঢেকে রাখি

তার উসিলায় দাও গো আল্লাহ বেহেশতি আবহায়াত।

 

দ্বীনের জন্য জীবন দিল কত শত প্রাণ

দাঁত হারিয়ে তোমার হাবীব হয়নি পেরেশান

সেই একীনের পরশ দিও আসলে আঁধার রাত।

 

পাপ করেছি ভুল করেছি রাব্বুল আলামীন

জগত জানে ছাড়িনি তো কভু তোমার দ্বীন

তার উসিলায় চাই গো খোদা তোমার মাগফেরাত।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৭

ভাবি নাই কোনদিন নসীব আমার

 

ভাবি নাই কোনদিন নসীব আমার

এতটা বুলন্দ হবে হে দয়াময়

ধরবো কাবার গেলাফ রওজা নবীর

আবেগের জলে ভেসে যাবে এ হৃদয়।

 

ওহোদের পথে হেঁটে চিনেছি যে দ্বীন

শহীদী রওজা যেন আজো কথা কয়

যার বুকে বাসা বাঁধে ঈমানের চিন

বাতিলের রক্তচক্ষু পায় না সে ভয়।

 

অকাতরে দিতে হবে শত শত জান

সয়ে যেতে হবে শত ঝঞ্ঝা প্রলয়

থাকে যদি কারো কাছে অটল ঈমান

বিজয়ের বার্তা সে পাবে নিশ্চয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৮

তোমার নবীর পথের ধূলো মেখেছি এ গায়

 

তোমার নবীর পথের ধূলো মেখেছি এ গায়

তার উসিলায় বান্দা তোমার নাজাত পেতে চায়।

 

তোমার হাবীব আমার প্রিয়

সেই উসিলায় নাজাত দিও

তুমি যদি না করো মাফ হবো নিরূপায়।

 

জমজমের অই পানি দিয়ে গোসল করেছি

তার উসিলায় তোমার কাছে নাজাত চেয়েছি।

 

ছুঁয়েছি যে কাবার গেলাফ

সেই উসিলায় কর গো মাফ

তুমি যদি না করো মাফ কোথায় যাবো হায়।

 

তোমার ঘরের চারধারে যে তাওয়াফ করেছি

সাফা মারওয়া বেকারারে সাঈ করেছি

 

হেঁটেছি যে আরাফাতে

মুজদালিফায় ছিলাম রাতে

মাফ করে দাও আমায় খোদা তার সে উসিলায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১২৯

আমার কি আর সাধ্য ছিল নবীর দেশে যাই

 

আমার কি আর সাধ্য ছিল নবীর দেশে যাই

তোমার নবীর আদরমাখা মাটির পরশ পাই।

 

হে দয়াময় সবই তোমার শান

ধন্য আমি পেয়ে তোমার দান

তাইতো আমি দিন-রজনী তোমারই গান গাই।

 

নবীর পথে নিলে যদি রহমতে অপার

পাপের পথে যাই না যেন এ অভাগা আর

সেই ক্ষমতা শক্তিটুকু তোমার কাছে চাই।

 

মরণ যেন হয়গো খোদা আকড়ে নবীর পথ

জীবনটাভর ঘিরে থাকুক তোমার রহমত

জানি খোদা তোমার দয়ার কুলকিনারা নাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩০

ছেলে বলে বাবা কই

 

ছেলে বলে বাবা কই

মা বলে ছেলে কই

বোন বলে ভাই কই

ওরা আজ কারাগারে বন্দী।

 

ওদের তো অপরাধ একটাই

শুধু বলে আপোষের দিন নাই

বাতাসের গতি দেখে ওরা কেউ

করে না যে সন্ধি।

 

সরকারী টাকা লুট করে না

পরের টাকায় নিজ পকেট তো ভরে না

সন্ত্রাস করে না, টেন্ডার ধরে না

পরনারী দেখলে পায় ওরা লাজ যে

তাই ওরা কারাগারে আজ যে।

 

হক কথা বলে ওরা জনতার পক্ষে

তাই আসে অপবাদ আলেমের বক্ষে

ঈমানের দাবী তাই, আপোষের দিন নাই

সত্য তো বাতিলের  চির প্রতিদ্বন্দ¡ী।

 

জালেমের হাতে থাক অস্ত্র ও জঙ্গী

জনগণ থেকে যাবে আলেমের সঙ্গী

হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ

রুখে দেবে বাতিলের কূটচাল, ফন্দি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩১

আমরা হয়েছি খাঁড়া অযুত সেনা

 

আমরা হয়েছি খাঁড়া অযুত সেনা

বুঝে নেব এইবার জালিমের দেনা।

 

চারদিকে আঁধারের ঘনঘোর রাত্রি

চারদিকে নাগিনীর ঘন বিষ নিঃশ্বাস

চারদিকে অসহায় মানুষের ক্রন্দন

তাই বলে থেমে যাবে জীবন-স্পন্দন

না, না, না, তা -হতে পারে না

আমরা রয়েছি খাঁড়া অযুত সেনা।

 

আঁধারের বুকে চিরে আলোকের যাত্রী

চলো আজ ছুটে চলি মুক্তির ঠিকানায়

হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ, ঐক্যের বন্ধন

লাখো কোটি জনতার আশার প্রদীপ

আমরা রয়েছি খাঁড়া অযুত সেনা।

 

ভয়, ভীতি, সন্ত্রাস-গুম, খুন, হত্যা

তাই দিয়ে জনতার স্রোত রোখা যায় না

দেয়ালে ঠেকলে পিঠ অধিকার বঞ্চিত

জনগণ চুপচাপ কভু বসে রয় না।

আমরা রয়েছি খাঁড়া অযুত সেনা।

 

লাখো কোটি জনতার পায়ের তলায়

পিষে যাবে জালিমের বিষ নিঃশ্বাস

এই কথা বুক জুড়ে রাখো বিশ্বাস

জনতার স্রোত কভু রোখা যায় না।

আমরা রয়েছি খাঁড়া অযুত সেনা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩২

দেশের খেয়ে আজকে যারা ভিনদেশী গীত গায়

 

দেশের খেয়ে আজকে যারা ভিনদেশী গীত গায়

ওদের হাতে দেশটা যে আজ তুলে দিতে চায়।

 

দেশটা যেন বাবার তালুক

খাক না শিয়াল, খাক না ভালুক

এই ভেবে সে নিজেই নিজের মারছে কুড়াল পায়।

 

দেশের স্বার্থ যারাই ভাবে

ওদের ওরা শত্র“ ভাবে

তাই তো ওদের ধরে ধরে পাঠায় জেলখানায়।

 

মিছিল করা আজকে মানা

মানব বন্ধন তাও হবে না

জনসভা করতে গেলে ঠ্যাঙ্গারে পাঠায়।

 

আমজনতার আন্দোলন

রুখতে যতই করুক পণ

এইভাবে কি গণজোয়ার থামানো আর যায়।

 

বাংলাদেশের ছাত্র তরুণ

আনবে ডেকে নবীন অরুণ

ভিনদেশীদের দালাল তখন দেখবি সব পালায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৩

ধনীদের ধনে হক আছে গরীবের

 

ধনীদের ধনে আছে হক গরীবের

আছে হক বঞ্চিত নিঃস্বের ফকিরের

সেই হক আদায়ের নেই নেই চেষ্টা

নেই কোন উদ্যোগ আয়োজন।

 

ধনীরাই আইন করে, পথ রাখে শোষণের

পথ রাখে লুটপাট, শাসন ও পেষণের

ধনীদের ধন বাড়ে, গরীবের বাড়ে শুধু

কষ্ট, অভাব আর অনশন।

 

আজ তাই একটাই দাবী হোক জাকাতের

গরীবের হক যেন হাতে আসে গরীবের

যাতে করে চিরতরে ঘুচে যায়

উঁচু-নিচু জনতার সব ব্যবধান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৪

সংসারে সুখ নাই, প্রতিদিন ঘরে ঘরে

 

সংসারে সুখ নাই, প্রতিদিন ঘরে ঘরে

অভাব আর অনটন

কোরআনের কাছে বলি এর কি কারণ

বলো এর কি কারণ।

 

আল্লাহর আইন নেই রাষ্ট্র জুড়ে

কোরআনের আইন নেই সমাজ জুড়ে

চালু নেই দেশ জুড়ে জাকাত বিধান

আর নেই কাংখিত সমবন্টন।

 

মানুষে মানুষে শুধু হানাহানি সংঘাত

দেশে দেশে বাড়ে শুধু দুষ্টের উৎপাত

স্বার্থের যাঁতাকলে মরে প্রেম-বন্ধন

তাই তো বাড়ে শুধু অভাব অনটন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৫

দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ

 

দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ

জনতাকে ভালবাসা তার অনুসঙ্গ

সেই প্রেম বুকে নিয়ে যারা ছিল মেতে

তাদেরকে কেন বলো হবে জেলে যেতে?

 

দিন মাস বছরটা হয়ে গেল পার

অভিযোগ দিতে তবু পারলো না যার

তাদেরকে বেঁধে রাখে কোন বজ্জাতে?

 

বিচারের নামে একি জংলী আচার

ন্যায়নীতি যুক্তি সকলি নাচার

আলেমকে জেলে নেয় কোন কমজাতে?

 

মানি না, মানি না এ জংলী কানুন

এখনো সময় আছে দেশ-আইন মানুন

নইলে আসামী হবেন গণ আদালতে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৬

ছুঁয়েছে যে হস্ত খোদা রিয়াজুল জান্নাত

 

ছুঁয়েছে যে হস্ত খোদা রিয়াজুল জান্নাত

তার উসিলায় চাই গো খোদা তোমার মাগফেরাত।

 

তোমার হাবীব আমার প্রিয়

তার উসিলায় নাজাত দিও

ভাগ্যে আমার জোটে যেন নবীর শাফায়াত।

 

মাফ করো সব গুনাহখাতা মাফ করো সব পাপ

এখন থেকে এ দীল করো পাক পবিত্র সাফ

ভাগ্যে আমার দাও গো খোদা দ্বীনের আবহায়াত।

 

শত শহীদ শুয়ে আছেন জান্নাতুল বাকী

তাঁদের ত্যাগের ছবি যেন এ হৃদয়ে আঁকি

তাদের মত দাও আমাকে শহীদী বরাত।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৭

জেগেছে ঊর্মি বীর জনতার

 

জেগেছে ঊর্মি বীর জনতার

রুখবে তারে সাধ্য কি আর

দাও না যতই বালির বাঁধ

বীর জনতার কাঁধে কাঁধ

আজকে বাঁধা করবো যে চুরমার

আমরা করবো যে চুরমার।

 

জনতার সুখ স্বপ্ন কাড়ে কোন সে দুরাচার

জনতার পথে দেয় কে বাঁধা কোন সে স্বৈরাচার।

 

স্বৈরাচারের হবে না জায়গা

জায়গা হবে না বাংলাদেশে

জনতা ঊর্মি জেগেছে এবার

আসছে তেড়ে সর্বনেশে।

সকল বাঁধা ছিন্ন করে ছুটবো যে দুর্বার।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৮

জাগো, জাগো অগণন জনগণ জাগো

 

জাগো..... জাগো অগণন জনগণ জাগো

জাগো জাগো জাগো জাগো জাগো।

ভাগো..... ভাগো দুরজন দুশমন ভাগো

ভাগো ভাগো ভাগো ভাগো ভাগো।

 

জাগো অগণন জনগণ দুশমন তাড়াতে

এক হও জোট বাঁধো গাঁও গ্রাম পাড়াতে

এক হও অধিকার আদায়ের দাবীতে। জাগো....

 

যে কথা আজ শুনতে চাই তা শুনবো

যে কথা আজ বলতে চাই তা বলবো

স্বাধীনভাবে চলতে বাধা দিলে তাকে দলবো। ভাগো.....

 

রাইফেল তাক করে আমাদের রোখা যাবে না

বুলেটের ভয় দিয়ে আমাদের রোখা যাবে না

জনতার অধিকার ক্ষমতার দম্ভে রোখা যাবে না। জাগো...

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৩৯

বলতে পারো, পারো কি

 

বলতে পারো, পারো কি?

 

বলতে পার কেবা আমি

ঘরটি আমার কই?

কেবা আমার প্রাণের সখা

কাকে ডাকি সই?

এমন ধারা রূপের বাড়া

পেলাম আমি কই?

কেবা দিল শাপলা-শালুক

পাতিল ভরা দই?

 

বলতে পারো, পারো কি?

 

ধান কাউন আর পান দিল কে

কালো গরুর দুধ দিল কে

কেবা দিল রূপে ভরা

দুনিয়াটা সই?

এত কিছু দিল যে জন

তারেই খোদা কই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪০

ব্যস্ততম জীবন ধারায় একটু স্বস্তি চাই

 

ব্যস্ততম জীবন ধারায় একটু স্বস্তি চাই

তাইতো সবাই দল বেঁধে আজ নৌভ্রমণে যাই

মোরা নৌবিহারে যাই।

নদীর বুকে ঢেউয়ের দোলা

দেখে যে হই আপনভোলা

দুই পাড়ে সব ছবির মত গ্রামের দেখা পাই।

 

দূর নীলিমায় মেঘের ভেলা

গাঙ শালিকের মধুর খেলা

চোখ জুড়ানো এমন মধুর দৃশ্য কোথাও নাই।

পাল তোলা সব নায়ের মাঝি

মনে হয় সব শমসের গাজী

সামনে আছে জীবন যুদ্ধ কিম্বা জোর লড়াই।

 

চরের সবুজ, উদাস আকাশ

ঢেউয়ের দোলা, মুক্ত বাতাস

কি অপরূপ রূপের বাহার যার তুলনা নাই।

শিল্পী কবি গায়ক যারা

রূপ দেখে হয় পাগলপারা

এ রূপ দেখেই আমরা সবাই অসীমের গান গাই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪১

ভয়কে করো জয় রে এবার

 

ভয়কে করো জয় রে এবার বাঁচতে যদি চাও

বাঘের সামনে দাঁড়ায় না তো ছাগল ভেড়ার ছাও।

 

যারা মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী

তাদের কিসের ডর

জানিস, স্বাধীনতা টিকবে মরলে

মীরজাফরের চর

ঈমানের জোর থাকলে এবার যাও, এগিয়ে যাও।

 

সূর্য দেখলে যেমনে পালায়

ছিচকে সিধেল চোর

রক্তচোষা বাদুড় পালায়

আসলে আলোর ভোর

তেমনি ওরা পালিয়ে যাবে বিজয়ের গান গাও।

 

আমরা তো সব আলোর সেনা

আঁধার করি দূর

ন্যায়ের নিশাল উর্ধে ধরি

বুকে হেরার নূর

বন্ধ্যা ধরা হয় রে সবুজ যেথায় পড়ে পা'ও।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪২

সব সওয়া যায়, পতাকায় হাত আর তো সওয়া যায় না

 

সব সওয়া যায়, পতাকায় হাত আর তো সওয়া যায় না

সব সওয়া যায়, সীমান্তে লাশ আর তো সওয়া যায় না।

 

ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলে

কেমনে আমি তারে যাব ভুলে

কেমন করে ভুলব আমি

তার কচি বুক খুবলে খায় শেয়াল, শকুন, হায়না।

 

আমার সোনামানিকের বুক যার গুলিতে ঝাঁঝরা

আমার ক্ষেতের ফসল কাড়ে যেসব জুলুমবাজরা

কেমনে তারে ভুলব আমি

কেমন করে করবো পূরণ তাদের হাজার বায়না।

 

সবুজ ধানের ক্ষেত যে রক্তে লাল

ক্ষেতের ফসল লুটছে পঙ্গপাল

আমার তেল ও আমার গ্যাস তার জন্য তার বায়না

সব সওয়া যায়, এই অনাচার আর তো সওয়া যায় না।

 

এবার মাথায় বাঁধো কাফন রুখবো তাদের আজ

রুখবো সকল রক্তখেকো পাখনা মেলা বাজ।

চারদিকে আজ নজর বুলাও, পার যেন কেউ পায় না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৩

দুষ্ট লোকের মিষ্ট কথায় হয় না কভু ভুলিতে

 

দুষ্ট লোকের মিষ্ট কথায় হয় না কভু ভুলিতে

বুঝিনি তাই আজকে মরি বিএসএফের গুলিতে।

 

নদীর পানি আটকে তুমি বানাও মরুভূমি

বুঝে গেছি আজকে সবই কেমন বন্ধু তুমি

এমনি কি আর বুলেট পাঠাও তুমি আমার খুলিতে।

 

নেবার বেলা আছো তুমি দেবার বেলা নাই

বেরুবাড়ি তুলে দিয়ে তাই তো ধোঁকা খাই

তোমার ছুরি ভালই পারে আমার চামড়া ছুলিতে।

 

আমার ঘরে আগুন লাগাও কান পড়া দাও রোজ

তাই তো তোমার চামচা মারে নিত্য নতুন পোজ

ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া বাঁধাও মিষ্টি মধুর বুলিতে।

 

সর্বনাশের ষোলকলা বাড়ছে ধীরে ধীরে

তোমার লোমশ বাড়ছে থাবা আমার গলা ঘিরে

আমার মরণ আঁকো তুমি তোমার নিপুণ তুলিতে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৪

মাছে আগুন বাসে আগুন

 

মাছে আগুন বাসে আগুন আগুন সারা দেশটায়

গাছে আগুন পাছে আগুন আগুন পরিবেশটায়

 

হাটে আগুন মাঠে আগুন

আগুন নেতার মুখটায়

আগুন ভরা নেতানেত্রীর হিংসা ভরা বুকটায়।

 

রাজনীতিতে লাগলো আগুন

সবাই বলে জাগুন জাগুন

উল্টে ফেলুন ফোমের গদি মরুক খুনি তেষ্টায়।

 

গ্যাসের চুলায় গ্যাস নাই

বিজলি বাতির লেশ নাই

চুলার আগুন বউয়ের মাথায় লাফায় দেখি শেষটায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৫

তাক ধিনা ধিন তাক ধিনা ধিন

তাক ধিনা ধিন তাক ধিনা ধিন, নববর্ষের শুভেচ্ছা নিন।

শুভেচ্ছা নিন ভাল থাকুন, ব্যস্ত থাকুন সুস্থ থাকুন।

শরীর ভাল মনটা ভাল, ঈমান ভাল আমল ভাল

সান ভাল আদব ভাল, চলন ভাল বলন ভাল।

সাঁঝে ভাল সকাল ভাল, দিনে ভাল রাতে ভাল

পরিবেশটা সুস্থ রাখুন, ভাল থাকুন ব্যস্ত থাকুন।

তাক ধিনা ধিন তাক ধিনা ধিন, নববর্ষের শুভেচ্ছা নিন।

 

শুভেচ্ছা নিন ভাল থাকুন খেলায় ভাল মেলায় ভাল

ভীড় ভাট্টা ঠেলায় ভাল লেখায় ভাল পড়ায় ভাল।

কাজে ভাল কর্মে ভাল ঘরে ভাল বাইরে ভাল।

নাইতে ভাল খাইতে ভাল গাইতে ভাল চাইতে ভাল

মনটা সদা তাজা রাখুন সারা বছর ভাল থাকুন।

তাক ধিনা ধিন তাক ধিনা ধিন, নববর্ষের শুভেচ্ছা নিন।

 

শুভেচ্ছা নিন ভাল থাকুন মরনঘাতি নেশা ছাড়ুন

ঘেঁষা এবং ঘেঁষি ছাড়ুন ফটকাবাজি পেশা ছাড়ুন

উপরি খাওয়ার নেশা ছাড়ুন বেপর্দা মেল-মেশা ছাড়ুন

চোরাই মালের ব্যবসা ছাড়ুন হারাম পথে কামাই ছাড়ুন

ব্যস্ত থাকুন সুস্থ থাকুন সারা বছর ভাল থাকুন।

তাক ধিনা ধিন তাক ধিনা ধিন, নববর্ষের শুভেচ্ছা নিন।

 

শুভেচ্ছা নিন ভাল থাকুন, নতুন বছর বরণ করুন

দেশটা গড়ার শপথ করুন, দেশ প্রেমিকের ঐক্য গড়ুন।

দেশের সেবায় মনটা ঢালুন, দেশদ্রোহীদের লিষ্টি করুন

মিরজাফরদের খতম করুন, চক্ষু কর্ণ খোলা রাখুন।

জাগুন ভায়া আবার জাগুন, দেশের কাজে আবার লাগুন

জীবন গড়ি আবার আসুন, সবাইকে আজ ভাল বাসুন।

দেশটা গড়ি সবাই আসুন প্রাণটা খুলে আবার হাসুন

ব্যস্ত থাকুন ভাল থাকুন সারা বছর সুখে থাকুন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৬

ডাক দেয় বৈশাখ, আবিলতা মুছে যাক

 

ডাক দেয় বৈশাখ, আবিলতা মুছে যাক

ঘুচে যাক কষ্ট সময়টা নষ্ট করো নাকো ভাই রে।

 

ভুলে যাও ভেদাভেদ

মুছে ফেলো যত খেদ

বুকে জমা যত ক্লেদ দূর করা চাই রে।

 

মনে জমা রাগ ক্রোধ করো তারে প্রতিরোধ

হিংসা বিভেদ ঘাঁটি করো আজ সব মাটি

ইর্ষা ও দ্বেষ করো নিঃশেষ এ ছাড়া উপায় কিছু নাই রে।

 

বৈশাখি ঝড় যদি অন্তর

করে দেয় সাফ মুছে দেয় পাপ

তাহলেই মাফ বড়-ছোট সকলেই পাই রে।

 

বৈশাখ দেয় ডাক হৃদয়টা করো পাক

স্নেহ-মায়া-মমতা গড়ে তুলি একতা

মিলনের গান এসো গাই রে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৭

বাঁধা দিলে বাঁধবে লড়াই আগুন দেশে জ্বলবে

 

বাঁধা দিলে বাঁধবে লড়াই আগুন দেশে জ্বলবে

ভাদার পোলা আইলে মাঠে গণধোলাই চলবে।

 

লগি-বৈঠা দলবে, ভাদার দু'কান মলবে

ভণ্ডনেতার কাঁচের ঘর থরথরিয়ে টলবে।

গণধোলাই চলবে।

 

অনেক দিনের ক্ষোভের বরফ এবার সবই গলবে

চলছে লড়াই চলবে মিছিল কথা বলবে

গণধোলাই চলবে।

 

রাজনীতির এই বন্ধ্যা মাঠে নতুন ফসল ফলবে

নতুন দিনের নতুন বাতাস পেয়ে ফসল ঢলবে।

 

বাঁধা দিলে বাঁধবে লড়াই চলছে মিছিল চলবে

আমজনতা পায়ে পিষে সন্ত্রাসীদের ডলবে।

গণধোলাই চলবে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৮

বাংলাদেশের বীর জনতা

 

বাংলাদেশের বীর জনতা,

গড়ে তোল ফের একতা

রুখো আগ্রাসন

নিজের দেশের ইঞ্চি জমিন,

পরাণ থাকতে দেয় না মমিন

সামনে কঠিন রণ

রুখো আগ্রাসন।

 

করছে যারা মানুষ হত্যা,

প্রাণের নাইরে নিরাপত্তা

জান বাঁচাতে আজকে তাদের

করো নিয়ন্ত্রণ।

আসলে তুফান ঘুর্ণিঝড়

ওড়বে যেমন শুকনো খড়

ওড়ে সর্বক্ষণ।

 

জাগো জাগো বীর জনতা,

গড়ে তোল ফের একতা

হটাও দুঃশাসন

জালিমশাহী আজকে হটাও,

দুঃশাসনের পতন ঘটাও

গড়ো আন্দোলন

হটাও দুঃশাসন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৪৯

রাত পোহালে ঈদ

 

রাত পোহালে ঈদ

তাড়াও চোখের নিঁদ

খুশীর ছটা বুকে নিয়ে

দূর করে দাও জিদ।

 

আজকে বাসো ভালো

তাড়াও মনের কালো

মিষ্টি চাঁদের হাসি দেখে

হৃদয় করো আলো।

 

নিজকে নিজে গড়ো

বিশ্বটাকে পড়ো

ঈদের খুশীর খুশবু মেখে

হৃদয় কর বড়ো।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫০

ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, আজকে খুশির দিন

 

ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, আজকে খুশির দিন

বুকে বুকে বুক মিলিয়ে বাজাও খুশির বীন।

 

আজকে সবাই হৃদয় খুলে

একটু ভালোবাসো

দুখের সাগর পেরিয়ে তুমি

একটুখানি হাসো

সবার মুখে দাও মাখিয়ে আজকে খুশির চিন।

 

ফিরনি পায়েশ কোর্মা পোলাও

যার যা খুশি খাও

নতুন জামা জুতো পরে

ঈদগাহ মাঠে যাও

নামাজ শেষে আনন্দে আজ লাফাও তাধিন ধিন।

 

আজকে সবাই মেতে ওঠো

আনন্দ আর উল্লাসে

জড়িয়ে ধরো আপন-পর

সবাইকে আজ সোল্লাসে

খুশির ছটায় করো সবার চেহারা রঙিন।

 

ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, আজকে খুশির দিন

জীবন জুড়ে ঈদের খুশি থাকুক অমলিন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫১

খোদা ছাড়া কারো কাছে হয় না যাহার মাথা নত

 

খোদা ছাড়া কারো কাছে হয় না যাহার মাথা নত

তাহার শিরে পুরো ধারা ঝরতে থাকে অবিরত।

 

আসুক যতই ভয় ও ভীতি

গায় সে তবু বিজয় গীতি

উঁচু মাথা উঁচু রাখে, হয় না কারো পদানত।

 

যতই আসুক দস্যু ডাকাত এবং হাজার তস্করে

বুকের জমিন যতই মাড়াক বর্গীসেনার লশকরে।

 

আসুক না হয় ঝড়ো গতি

হোক না যতই ক্ষয় ও ক্ষতি

রাখতে তবু পারে না যে মুমিন বান্দা বশ করে।

 

পদে পদে যে জন মানে-হাজার রকম অধীনতা

তার তরে নয় মুক্ত জীবন, তার তরে নয় স্বাধীনতা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫২

আয় রে খোকন কোলে আয়

 

আয় রে খোকন কোলে আয়

নিয়ে যাবো সোনার গাঁয়

ধরে দেবো টিয়ে পাখি

কইবি কথা নিরালায়

খোকন রে তুই কোলে আয়।

 

চুমোর পরে চুমো দেবো

দুধের বাটি সঙ্গে নেবো

আকাশ ভরা জোসনা রাতে

ডাকবে তোরে ফেরেশতায়

খোকন রে তুই কোলে আয়।

 

আয় রে খোকন কোলে আয়

দুলবি দো দোল দোলনায়

বেহেশ্ত থেকে আসবে হুরী

আদর দিতে রাঙা পায়

খোকন রে তুই কোলে আয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৩

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল

 

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল আনন্দ উৎসব

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল পাখির কলরব।

ঈদ মানে তো সেই সে খুশির দিন

ত্যাগের মহান পথ ধরে যা পেল রে মুমীন।

 

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল ফিরনী পায়েশ খাওয়া

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল মামার বাড়ি যাওয়া

সেই তো পেল পরাণ ভরে ঈদের খুশির চিন

খোদার রঙে নিজের জীবন করলো যে রঙিন।

 

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল নতুন জামা জুতো

ঈদ মানে তো নয়রে কেবল ঘুড়ি, লাটাই, সুতো

সিয়াম থেকে লুটলো যে জন খোদার মহা দান

ঈদ মানে তো তাদের তরেই খুশি অফুরান।

 

থাকবে নাকো যেথায় বিভেদ, দুঃখ, শোক ও তাপ

থাকবে নাকো মিথ্যা, বাতিল, নাফরমানীর পাপ

থাকবে নাকো জালিম হাতের কঠিন দুঃশাসন

সেখানটাতেই থাকবে জেনো ঈদের খুশির ধন।

 

ঈদ মানে তো নয়রে জানিস মোটেও তাদের তরে

নাফরমানীর পথে পথে যে জন সদা লড়ে।

ইবরাহীমের মতই যারা সব করে কোরবান

তাদের তরেই ঈদের খুশি, জীবন জাগার গান।

 

ঈদ মানে তো সুখের নদী বইবে জীবন ভর

ঈদ মানে তো পৃথিবীতে রইবে না কেউ পর।

তারাই কেবল শুনতে পাবে ঈদের খুশির গীত

মুমিন যারা তাদের তরেই আসে খুশির ঈদ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৪

ঈদ এসেছে, ঈদ এসেছে

ঈদ এসেছে, ঈদ এসেছে আজকে খুশীর ঈদ

সেই খুশীতে হারিয়ে গেছে সবার চোখের নিঁদ।

রাঙা বুবু পড়লো চুড়ি

মনের সুখে কুটলো গুড়ি

গুনগুনিয়ে সুরে সুরে গাইলো শত গীত

ঈদ এসেছে, ঈদ এসেছে আজকে খুশীর ঈদ।

 

বিকেল গেলো, সন্ধ্যা হলো নামলো আঁধার রাত

দেশ দুনিয়ার খুশী দেখে দূর আকাশের চাঁদ।

হাট থেকে বাপ সদাইপাতি

আনলো কিনে, জ্বললো বাতি

মাঠ থেকে ভাই ঘরে ফিরে দেখতে গেল চাঁদ

বিকেল গেলো, সন্ধ্যা হলো, নামলো আঁধার রাত।

 

পিঠা হবে, সেমাই হবে, গরম পানির ‘কাই'

বানিয়ে বুবু বসে আছে, ভাবীর দেখা নাই।

একটু পরে আযান হলো

জলদি খাওয়া সারা হলো

ও ঘর থেকে বললো ভাবী, এবার আমি যাই

পিঠা হবে, সেমাই হবে, বুবুর হাতে ‘কাই'

 

কেউবা বানায় ফুলের পিঠা, কেউবা পাকায় ‘লতি'

কেউবা আবার কিস্সা কথার ছড়ায় হিরামোতি।

ব্যস্ত সবাই নানান কাজে

কেউবা ঝুরি, পিঠে ভাজে

পাতার পিঠে, ঝিকিমিকি আরো কত কি যে;

ঘর সাজানোর কাগজ কাটে রুমকি মনি নিজে।

 

জোনাক পোকার ডুব সাঁতার, হিমেল হিমেল হাওয়া

সারা বাড়ি সুখের আমেজ খুশী দিয়ে ছাওয়া।

দাদীর মুখে ছ্যাচা পান

ভাবীর ঠোঁটে মিষ্টি গান

আজকে হবে অনেক মজা, হরেক রকম খাওয়া

সারা বাড়ি সুখের তুফান, খুশী দিয়ে ছাওয়া।

 

পার হবে এ মধু রাত, আসবে নতুন ভোর

সবার সাথে বুক মিলাবো, গড়বো প্রীতি-ডোর।

পড়বো নামাজ জামাত করে

মিলবো গলায় গলা ধরে

ভুলে যাবো সব ভেদাভেদ, দুঃখ অভিমান

ঈদের খুশী, ঈদের হাসি-খোদার সেরা দান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৫

নিশুত রাতে নীল আকাশে পিদিম জ্বালায় কে?

 

নিশুত রাতে নীল আকাশে পিদিম জ্বালায় কে?

রোজ সকালে পূব আকাশে সুরুজ জাগায় কে?

শুকনো মাঠে বর্ষা এলে বৃষ্টি ঝরায় কে?

বলতে পারো শিশুর মুখে হাসি ফোটায় কে?

 

এসব কিছু খোদারই দান অপার রহমত

তামাম জগত জুড়ে শুধু তারই নিয়ামত।

 

বলতে পারো মাঠে ঘাটে ফসল ফলায় কে?

পাখপাখালির গানের সুরে প্রাণটা জুড়ায় কে?

বলতে পারো চলতে গেলে শক্তি যোগায় কে?

গাছগাছালির শীতল ছায়া সদাই পাঠায় কে?

 

এসব কিছু খোদারই দান অপার রহমত

তামাম জগত জুড়ে শুধু তারই নিয়ামত।

 

বলতে পারো তোমার আমার জানের মালিক কে?

ইচ্ছেমত রাখেন মারেন বলতে পারো কে?

বলতে পারো সুখে দুখে সহায় থাকেন কে?

ক্ষুধা পেলে বলতে পারো অন্ন যোগান কে?

 

এসব কিছু খোদারই দান অপার রহমত

তামাম জগত জুড়ে শুধু তারই নিয়ামত।

 

আলশ জুড়ে খোদার রহম নিতুই ডেকে কয়

মাবুদ যিনি তোমার আমায় সেই তো খোদা হয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৬

উড়োজাহাজ উড়ো উড়ো

 

উড়োজাহাজ উড়ো উড়ো

রয় না বিমান বন্দরে

যায় হারিয়ে আকাশ পথে

সে কি চলার ছন্দ রে।

 

যায় হারিয়ে আকাশ কি তাই

হয়রে তাহার ঠিকানা

নয় কভু নয়, সেই কথাটি

নয়রে কারো অজানা।

 

উড়োজাহাজ যতই উড়ুক

তবু তাকে ফিরতে হয়

তোমার জীবন তেমনি ক্ষণিক

সেই কথাটি মিথ্যে নয়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৭

কোন পথ ভালো আর কোন পথ মন্দ

 

কোন পথ ভালো আর কোন পথ মন্দ

এই নিয়ে মনে যদি থাকে দ্বিধাদ্বন্দ¡

পথ চলা বড় দায়

মন কাঁপে শংকায়

চোখ থেকেও মনে হয় আমি বুঝি অন্ধ।

 

কোন পথ ভালো আর কোন পথ মন্দ

কোন পথ সুবাসিত, কোথা দুর্গন্ধ

জানলো না যেই জন

সে তো অভাজন

হতাশায় ভুগে মরে মনে নিয়ে সন্দ।

 

কোন পথ চালু আর কোন পথ বন্ধ

কোন পথ সরল আর কোথা খানাখন্দ

জানলো না যেই জন

ঘুরবে সে অকারণ

তার পথ চলাতে থাকবে না ছন্দ।

 

আল্লাহর পথ ভালো রাসূলের দেখানো

পথ ভালো কোরান আর হাদিসের শেখানো

মানবে না যেই জন

মিশকালো তার মন

সেই হলো পৃথিবীর লোক অতি মন্দ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৮

আজ পিকনিক, হবে ঠিক ঠিক

 

আজ পিকনিক, হবে ঠিক ঠিক

ছাড়ো তন্দ্রা, যাবো চন্দ্রা

ছুটি ইসকুল, খুশি বিলকুল

হাঃ হাঃ।

 

আলো ঝিকমিক, হাসি ফিকফিক

বেলা উঠতেই, বাস ছুটতেই

দেবে নাস্তা, ডিম আস্তা

হাঃ হাঃ।

 

বাস একটা, কাঁধে ব্যাগটা

সবে জুটলাম, যেই উঠলাম

বাস ছুটলো, হাসি ফুটলো

হিঃ হিঃ।

 

পথে মাঠ বন, যায় শনশন

ধরা আল্লাহর, দেখে বার বার

খুশি মন প্রাণ, জুড়ে দিই গান

হোঃ হোঃ।

 

বাস থামতেই, নামি ধেই ধেই

নেই বৃষ্টি, অনাসৃষ্টি

ছুটি দুর্বার, বাঁধা নেই আর

হাঃ হাঃ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৫৯

দেখে দেখে শেখাটাই আসল শেখা

 

দেখে দেখে শেখাটাই আসল শেখা

দেখে দেখে ভাল করি হাতের লেখা।

বাঁকা হয়ে গেলে ‘ব' দেখে ঠিক করি

সময়টা ঠিক করি দেখে নিয়ে ঘড়ি।

 

বাবাকে দেখেই আমি বাবা হয়ে যাই

বড়োরা যা করে দেখি, শিখে ফেলি তাই

গাছ, ফুল, নদী দেখে এঁকে দিতে পারি

দেখে দেখে আঁকা যায় খেলনা ও গাড়ি।

 

বড় হয়ে কার মতো হবো ভাবি রোজ

মানুষের মাঝে সেরা কে সে করি খোঁজ।

ইতিহাস ঘেটে ঘেটে পাই তার দেখা

কোরান হাদিসে সেই প্রিয় নাম লেখা।

 

নবীদের মাঝে সেরা সেই শেষ নবী

মানুষের মাঝে সেরা মানুষের ছবি।

যাঁর নামে নেই কোন কালিমার চিন

জীবনটা ছিল যাঁর সদা অমলিন।

 

তার সে জীবন দেখে এ জীবন গড়ি

সৎ পথে চলি আর ন্যায় পথে লড়ি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬০

আয় ঘুম আয় রে

 

আয় ঘুম আয় রে

ছুটে ছুটে আয় রে

উড়ে উড়ে আয় রে

খোকার চোখে ঘুম আয় চুম দিয়ে যা

যাদুর চোখে আয় ঘুম চুম দিয়ে যা।

 

খোকার মুখে আধো বোল

বসতে দেবো মায়ের কোল

করিস না কেউ গন্ডগোল

সোনামনির চোখে ঘুম চুম দিয়ে যা।

 

খেতে দেবো দুধের থালা

পরতে দেবো তারার মালা

দূর হয়ে যাক বিপদ বালা

আমার যাদুর নয়ন ভরে ঘুম দিয়ে যা।

 

ঘুম কি গেলি তেপান্তর

নাকি পেলি দ্বীপান্তর

ডাকছে ব্যাকুল মা'র অন্তর

আমার মনির আঁখির পাতায় ঘুম দিয়ে যা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬১

এই ঘন বরষায় উতল হাওয়ায়

 

এই ঘন বরষায় উতল হাওয়ায়

কারে বলি এই মন আহা কি যে চায়।

 

ঝড়ো হাওয়া বয় বাইরে তুফান

আমার অঙ্গে আহা ডেকে যায় বান

প্রতি অঙ্গ লাগি কাঁদে প্রতি অঙ্গ হায়।

 

সূর্য হারিয়ে যত আঁধার ঘনায়

আমার এ তনুমন আবেশে জড়ায়।

 

তুমি বারি হলে আমি বৃক্ষ হবো

সারা অঙ্গে তোমাকেই জড়িয়ে নেবো

মিশে যাবো তারা হয়ে আকাশের গায়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬২

শরীরটা বুড়ো হয়, মন বুড়ো হয় না

 

শরীরটা বুড়ো হয়, মন তো বুড়ো হয় না

দেহ থাকে খাটে শুয়ে, মনের তো তা সয় না।

 

মন বলে কানামাছি ভেঁ ভোঁ

যারে পাবি তারে ছো

শরীরটা ঘরে থাকে, মন ঘরে রয় না।

 

শরীরটা বিছানাতে কাৎরায়

মন তবু পুকুরেতে সাঁতরায়

শরীরটা ঘুমায়, মন ধরে কত বায়না।

 

মন যায় হিমালয় বেড়াতে

শরীরটা পড়ে থাকে ডেরাতে

বুড়ো হলে যৌবনও দেহে গান গায় না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৩

ভাব হয়নি সে জানি আমি হইতে কতক্ষণ

 

ভাব হয়নি সে জানি আমি হইতে কতক্ষণ

প্রাণের জন্য প্রাণ কাঁদে রে, মনের জন্য মন।

 

অচেনা হায় ছিল যে জন

কখন যে সে হলো আপন

কোন সে মায়ায় আমায় কাছে ডাকে সারাক্ষণ।

 

যতই দূরে যাই না কেন তারে কাছে পাই

কাছে এলে তাকে আমি আরো কাছে চাই।

 

ধরলে সে যে আমার মুঠি

তার পরশে জেগে উঠি

সে হয়ে যায় চিরকালের ভালবাসার ধন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৪

ডাগর ডাগর চোখের তারায়

 

ডাগর ডাগর চোখের তারায়

কোন কাহিনী থমকে দাঁড়ায়

কোন স্মৃতিরা হঠাৎ এসে সেথায় করে ভীড়

আমি তাকিয়ে দেখি আঁখির কোণে

দৃষ্টি হরিণীর।

 

ঠোঁটের কোণে লটকে থাকে চাঁদ

ভয়ের ডগায় ভীষণ মরণ ফাঁদ

কিশোর বেলার লুকিয়ে দেখা রাজপুত্তুর বীর

আমি তাকিয়ে দেখি লাজুক চোখে

লজ্জা সুগভীর।

 

সেই নয়ন জুড়ে ব্যাকুলতার ছাপ

যেন ছলকে ওঠে মনের গোপন পাপ

এক পলকের একটু দেখা অচিন মুসাফির

আমি তাকিয়ে দেখি নয়নপাতে

মুগ্ধতা নিবীড়।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৫

আমার এ গান শুধু তোমার জন্য

 

আমার এ গান শুধু তোমার জন্য

হে অনন্য

কিছুটা বন্য

কিছুটা ধন্য

লিখে গেলাম এইটুকু গান

অধম নগন্য।

 

যদি পারো তবে দিয়ো এতে সুর

রাত কি দুপুর

বাজিয়ে নূপুর

ঝুমুর ঝুমুর

জানি না ভরা মজলিশে তা

হবে কী না গণ্য।

 

যদি পারো তবে গেয়ো এই গান

ঢেলে মনপ্রাণ

ওগো মহীয়ান

অধমের গান

কারো মনে দাগ কেটে হয়তো

হবে বরেণ্য।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৬

যারা লুটেরা প্রতারক ভন্ড

 

যারা লুটেরা প্রতারক ভন্ড

তাদের না দিয়ে কঠিন দন্ড

দিয়েছি তাদের ফুলের মালা

তাইতো এ বুকে অথৈ জ্বালা।

 

একবার নয় এ ভুল আমরা করেছি বারংবার

বিনিময়ে শুধু বেড়েছে ওদের বজ্জাত কারবার।

 

হয়েছি শোষিত, হয়েছি নিগৃহীত

আমার রক্তে ওরা হয়েছে স্ফীত

বেড়েছে ওদের প্রাসাদ, আমার বিরাণ হয়েছে চালা।

 

মুখে মধু আর অন্তর জুড়ে রেখেছে গোপন বিষ

তবু তাদেরই চিরকাল আমরা করে গেছি কুর্ণিশ।

 

ডাকাতরা হয় নেতা আর ভাল লোক যায় জেলে

চরিত্রবান মার খায় আর লম্পটেরা তেলতেলে

আমারই পাপ আমার অন্তর করে দেয় ফালাফালা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৭

অলি গুনগুন এসেছে ফাগুন

 

অলি গুনগুন

এসেছে ফাগুন

আগুন লেগেছে বনে

আগুন লেগেছে সঙ্গীহারা দুটি

বিরহ কাতর মনে।

 

আবার এসেছে ফিরিয়া কোকিল

তুমি শুধু আসো নাই

তবে কি তুমি কোনদিনই হায়

আমাকে ভাল বাসো নাই।

 

কলি ফুটে ফুটে হয়ে যায় ফুল

আমি কি শুধু করে যাই ভুল

কী ব্যথায় হায় কেঁদে ওঠে মন

গভীর সংগোপনে।

 

প্রতীক্ষার দিন

কবে হবে শেষ

কবে অপেক্ষা

হবে নিঃশেষ

দুই বনে হায় দুই বিরহী

কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৮

সীমের দুটো পাতার ফাঁকে নজরকাড়া ফুল

 

সীমের দুটো পাতার ফাঁকে নজরকাড়া ফুল

তার কাছে যে হার মেনে যায় হীরের নিটোল দুল।

 

আমার সবুজ গাঁয়ে

নিবিড় বনছায়ে

এমন শোভা লুকিয়ে আছে নাইরে তাহার তুল।

 

লাউয়ের ডগায় দোয়েল পাখির গান

দেয় ভুলিয়ে বিটোফেনের তান

কুমড়ো ফুলে ছুটে বেড়ায় মুনিয়া বুলবুল।

 

আমার দেশের অঙ্গ শোভা

আহা কী যে মনোলোভা

সেই রূপেরই রূপ সায়রে হয়েছি বিভোল।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৬৯

তোমার জন্য একটি আকাশ

 

তোমার জন্য একটি আকাশ

বুকের ভেতর রাখতে পারি

তোমার জন্য সাতটি সাগর

চোখের তারায় আঁকতে পারি।

 

ঘুরতে পারি গহীন কনে

উড়তে পারি মেঘের সনে

পাহাড় চূড়ায় বিশাল শহর গড়তে পারি।

 

শুধু তোমার মনটা যদি পাই

অন্য কারো কথায় মারি ছাই

তোমায় নিয়ে একটি নীড় গড়তে পারি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭০

মেঘের কোলে সূর্য হাসে দীপ্তি ছড়িয়ে

 

মেঘের কোলে সূর্য হাসে দীপ্তি ছড়িয়ে

আঁধার শেষে সূর্য হাসে হৃদয় ভরিয়ে।

 

মেঘ দেখে তুই করিস কেন ভয়

আড়ালে তার আছেন জ্যোতির্ময়

নির্ভয়ে তুই জয়ের নিশান দে না উড়িয়ে।

 

যতই আসুক আঁধার করা রাতি

যতই আসুক ঝড়ের মাতামাতি

সবই ক্ষণিক, একটু পরই যাবে হারিয়ে।

 

জাগবে আবার নবীন বসুন্ধরা

হাসবে সবুজ হৃদয় পাগল করা

বীরের পায়ে জয় চুমু খায় এসে গড়িয়ে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭১

বললো হেসে মামী

 

বললো হেসে মামী

সময় বড় দামী

যে বুঝে না তারা করে অযথা কুটনামী।

 

সময়কে যে দেয় না দাম

পুরে না তার মনস্কাম

ঘুচে না তার কোন কালে অযথা বদনামী।

 

খেলার সময় খেলা এবং পড়ার সময় পড়া

সময় মত নাওয়া খাওয়া সাজুগুজু করা

বাদ যাবে না কোন কিছুই মানলে সময় দামী।

 

 

কেউ করো না বেহুদা কাজ

তাতে পাবে অযথা লাজ

ফালতু কাজে সময় দেয়া আসলে পাগলামী।

 

নিজের কাজে দাও রে মন

খুশী হবে সকল জন

সময়টাকে লাগাও কাজে জীবন হবে দামী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭২

একটি ছেলে পথের ধারে কাঁদতে ছিল

একটি ছেলে পথের ধারে কাঁদতে ছিল

সেই পথে যে দয়াল নবী আসতে ছিল

বললো নবী, খোকন তুমি কাঁদছো কেন

বললো ছেলে, আমার পিতা নেই যে কোন।

 

দয়াল নবীর দয়া হলো

ছেলেটিকে কোলে নিল

তাকে নিয়ে এলেন নবী আপন ঘরে

তাঁর কথা যে আজো আমার মনে পড়ে।

 

সেই ছেলেটির দুঃখ ব্যথা রইলো না আর

নবীর স্নেহে ভুললো সে যে দুঃখ পিতার

নবীর মনে এমনি অথৈ মায়া ছিল

অনাথ জনে বটবৃক্ষের ছায়া ছিল।

 

আজকে নবীর অনুসারী

কামায় টাকা কাড়িকাড়ি

তবু পথের ধারে দেখি এতীম কাঁদে

ক্ষুধার জ্বালায় নিজের পেটে পাথর বাঁধে।

 

ধনদৌলত স্রোতের মত

আসে ও যায় অবিরত

তবু কেন বুঝি না হায় তুচ্ছ জীবন

নয় নিজের হায় কিসের এ ধন।

 

আল্লাহ খোঁজেন দরদী মন

নবী তাতে হন খুশি হন

সবার মনে আসুন মায়ার কাজল মাখি

মায়ায় ভরা নতুন দেশের স্বপ্ন আঁকি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৩

মাগো, কে দিয়েছে আকাশ ভরা তারার মেলা

 

ছেলেঃ

মাগো, কে দিয়েছে আকাশ ভরা তারার মেলা

কে দিয়েছে চাঁদ বুড়িকে চাঁদের ভেলা

দিনের বেলা কোথায় ওরা যায়

চাঁদ বুড়ি মা আকাশে কি খায়?

মাঃ

মানিক আমার শোনরে তবে তুই

ওই যে দেখিস গোলাপ, চাঁপা, জুই

ওই যে শুনিস পাখির কলতান

এসব কিছুই আল্লাহ তালার দান।

ছেলেঃ

মাগো, বলতে পারো সাগর ভরা অথৈ পানি

বর্ষা এলে মাঠ ডুবে যায়, ডুবে দুয়ারখানি

অথৈ জলে সড়ক ভাসে, কে দেয় সে জল আনি

কোত্থেকে মা আসে বলো ফুলের সুবাস খানি?

মাঃ

তোর মুখে যে দিল মধুর বোল

তোর জন্য যে দিল মায়ের কোল

ভাই-বোন ও মা-বাপ দিলেন যিনি

এই জাহানের সবই দিলেন তিনি।

তিনিই প্রভু, স্রষ্টা, মেহেরবান

এ পৃথিবীর সব কিছু সে আল্লাহ তালার দান।

দুজনেঃ

এসো তবে মনপ্রাণ খুলে আজ গাই গান

আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান।

তিনিই মালিক, মনিব-প্রভু, তিনিই শুধু রব

তিনিই আদি, তিনিই অন্ত, জগত, জীবন, সব।

আমরা যদি মেনে চলি তাঁর পাঠানো বাণী

তবেই সফল হবে শুধু জীবন জিন্দেগানী।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৪

ধিন ধিনা ধিন ধিনতা

 

ধিন ধিনা ধিন ধিনতা

নাইরে কোন চিন্তা

আজকে ছুটি ইসকুল

তাইতো খুশি বিলকুল। হা-হা-হা-হা-হা

 

মনে বড় ফুর্তি

সবাই যাবো ঘুরতি

আজকে যেন ঈদ

মনে বাজে গীত। হা-হা-হা-হা-হা

 

সবাই বড় খুশি

ভালবাসাবাসি

করছে কোলাকুলি

হৃদয় দুয়ার খুলি। হা-হা-হা-হা-হা

 

শহর ছেড়ে গাঁয়ে

চড়বো সেথা নায়ে

দেখবো সবুজ বন

উদার হবে মন। হা-হা-হা-হা-হা

 

অই যে দেখো ঘুড়ি

যাচ্ছে কেমন উড়ি

ফসল ভরা মাঠ

শান বাঁধানো ঘাট। হা-হা-হা-হা-হা

 

আম কাঁঠালের গাছ

পুকুর ভরা মাছ

কলা পাতার বাঁশি

বৃক্ষ রাশি রাশি। হা-হা-হা-হা-হা

 

আকাশ ভরা মেঘ

দেখ তাকিয়ে দেখ

পাখির কলতান

দিলেন মেহেরবান। হা-হা-হা-হা-হা

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৫

প্রেম যদি নাই দাও ব্যথাটুকু দিও

 

প্রেম যদি নাই দাও, ব্যথাটুকু দিও

বৃঝে নেবো তবু তুমি আছো মোর প্রিয়।

 

আমারে পড়েছে মনে

তাই ব্যথা অকারণে

দিয়ে নিজে কষ্টের বিষটুকু পিয়ো।

 

বিরহে এই বুক খাক হয়ে যাক

আমারে রেখেছো মনে সুখটুকু থাক

প্রণয়ের মেঘটুকু বুকে তুলে নিও।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৬

আমি পাহাড়কে টলাতে চাই

 

আমি পাহাড়কে টলাতে চাই,

পাহাড় তো টলে না

আমি পাথরকে গলাতে চাই,

পাথর তো গলে না।

 

জ্যোৎসনাকে ডাকি কাছে,

সে তো কাছে আসে না

আমি তারে ভালবাসি,

সে তো ভাল বাসে না।

 

হৃদয় তরঙ্গে জাগে সাগরের ঢেউ

আমি কি তবে তোমার নই কেউ।

 

পৃথিবীর সব হাসে,

চাঁদ কেন হাসে না।

আমি তারে ভালবাসি,

সে কি তবে বাসে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৭

আমার ভাইয়ের রক্ত মেখে গোলাপ ফুলের গাল

 

আমার ভাইয়ের রক্ত মেখে গোলাপ ফুলের গাল

রক্তচূড়া, পলাশ, শিমুল লাল হয়েছে লাল।

 

মনে তারা জাগে বারংবার

তারা জাতির গর্ব অহংকার

তাদের ত্যাগের কথা মনে রাখবো চিরকাল।

 

প্রতিদিনই সকাল এবং সাঁেঝ

সেই রক্তে আকাশ দেখো সাজে

সবার মনে দেয় জ্বালিয়ে চেতনা-মশাল।

 

খোদা ছাড়া কারো কাছে নোয়াবে না শির

এই কথাটা ডেকে বলে সকল শহীদ বীর

এই কথারই রেশ বয়ে যায় কাল ও মহাকাল।

 

শহীদী খুন যায় না বৃথা জানি

শহীদী খুন জাগায় জিন্দেগানী

শহীদ স্মৃতি থাকবে মনে তাই অনন্ত কাল।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৮

চুপি চুপি নিরালায় আর ডেকো না

 

চুপি চুপি নিরালায় আর ডেকো না

স্বপ্নের তুলি দিয়ে ছবি এঁকো না।

 

আকাশের তারা যায় না ধরা

শরতের মেঘে যায় না খরা

সাগরের নোনা জলে চিঠি লিখো না।

 

এই কচি বুকে আর আশা দিও না

অবলার নিশি ঘুম কেড়ে নিও না।

 

পূর্ণিমা ছাড়া কভু হয় না জোয়ার

সব জমি নয় কভূ ফসল রোয়ার

অকারণে পথ পানে চেয়ে থেকো না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৭৯

মানব প্রেমের অবাক করা গল্প শোন

 

মানব প্রেমের অবাক করা গল্প শোন

এমন গল্প প্রতিদিনই হয় না কেন।

 

একটি বুড়ি নবীর পথে কাঁটা দিত

সেই কাঁটা যে নবীর পায়ে ফুটে যেতো

একদিন নবী দেখেন পথে কাঁটা যে নেই

গেলেন নবী বুড়ির কাছে সাথে সাথেই।

 

গিয়ে দেখেন বুড়ির তখন অসুখ বড়ো

বুড়ির জীবন সেই অসুখে মরো মরো

দয়াল নবীর দয়া হলো

বুড়ি মায়ের যতœ নিল

অসুধ দিল, পথ্য দিল

উজাড় করা সেবা দিল

সেই বুড়িটা উঠলো সেরে সেই সেবাতেই।

 

দয়াল নবীর বুকটা এমন অথৈ মায়ায় ভরা ছিল

বিশ্ব জাহান তাইতো তখন হাসি খুশি ভরা ছিল।

 

পরশ পাথর পেলে যেমন সব পাথরই সোনা হয়

পাষন্ড আর নিষ্ঠুরেরও নবী করেন অন্তর জয়।

অনাথ এতীম ভাবলো তাকে আপন জন

বৃদ্ধ এবং শিশুর তিনি কাড়েন মন

বিত্তবানের চিত্ত উদার তাইতো দেশে অভাব নেই।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮০

বউ কথা কও ডাকে পাখি, আঁখি খোল না

 

বউ কথা কও ডাকে পাখি, আঁখি খোল না

টগর, বেলী, জুঁই ফুটেছে, কথা বলো না।

 

অভিমানের পর্দা এবার তোল

অ-মানিনী হিয়ার ব্যথা ভোল

ঠোঁটের কোণে একটু হাসি ফুটিয়ে তোল না।

 

হাøাহেনার গন্ধে আকুল মন

মেঘলা আকাশ দেখবো কতক্ষণ

মেঘের ফাঁকে বিজলী ঝিলিক এবার মেলো না।

 

(আহা) তোমার দেখি চক্ষু ছলোছল

(না না) আর ফেলো না আঁখির জল

 

ঝর্ণা হাসে তবু আমার ময়না হাসে না

ভুল হয়েছে বলি তবু কাছে আসে না

পাহাড়, নদী, সাগর দোলে, তুমি দোল না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮১

ঘুম পাড়ানি খালা

 

ঘুম পাড়ানি খালা

দেবো তোমায় মালা

জলদি করে এসো গো

খোকার চোখে বসো গো

আমার খোকন ঘুমুবে

ফেরেশতারা চুমুবে।

 

ঘুম পাড়ানি ফুপিজান

জলদি করে এসে যান

সোহাগ এবং আদরে

ঢাকুন তাকে চাদরে

আমার খোকন ঘুমুবে

ফেরেশতারা চুমুবে।

 

ঘুম পাড়ানি বুবু-চাচী

জলদি এসো নাচি নাচি

খোকার সারা অঙ্গে

ঘুম মেখে দাও রঙ্গে

আমার খোকন ঘুমুবে

ফেরেশতারা চুমুবে।

 

কইগো বাবুর দাদী-নানী

দাও এঁকে ঘুম চোখে আনি

বাবু মনির সময় নাই

জলদি করে ঘুমান চাই

আমার খোকন ঘুমুবে

ফেরেশতারা চুমুবে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮২

কী করেছি আমায় তুমি হানছো আঁখির বাণ

 

কী করেছি আমায় তুমি হানছো আঁখির বাণ

ব্যাধের মত বধ করছো অবুঝ পাখির জান।

 

চোখের তারায় বিজলী ঝিলিক বাজে

কখনোবা মুঁদছো আঁখি লাজে

কখনোবা দৃষ্টিবাণে হানছো আমার প্রাণ।

 

ও সজনী চাঁদ বদনী আঁধার ঘরের বাতি

যেমন ঘুরে পতঙ্গ হায় এলে আঁধার রাতি

তেমনি আমি শুনতে যে পাই জোনাক পোকার গান

কাঁচের চুরির রিনিক ঝিনিক আকুল করা তান।

 

মরার আগে হাজারো বার মরতে আমি চাই

তাতে যদি বারে বারে তোমার দেখা পাই।

কে না বাসে ভাল বলো পাখির কলতান

মরেই যাবো তুমি যদি করো অভিমান।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৩

আমি জানি প্রিয়, জানি জানি

 

আমি জানি প্রিয়, জানি জানি

আনমনে পথ চলতে গেলে

পড়বে মনে এ মুখখানি।

 

দুপুর বেলা ঘুঘুর ডাকে

উদাস হলে কাজের ফাঁকে

এই আমাকেই পড়বে মনে

হৃদয় কোণে একটুখানি।

 

কোথাও গেলে ভীড়ের মাঝে

রাত্রি দুপুর সকাল সাঁঝে

আমার কথা ভাবতে গেলে

বাড়বে বুকে ধুকপুকানি।

 

বুকের মাঝে হায় সারাক্ষণ

আমার জন্য কাঁদবে গো মন

আমার অভাব টের পাবে গো

শুনলে শিরার বিলাপধ্বনি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৪

জিদ করা ভাল নয়, জিদ তেলাপোকা

 

জিদ করা ভাল নয়, জিদ তেলাপোকা

জিদ করে যারা ভাই আসলেই বোকা।

 

জিদ শুধু মনে দেয় কষ্ট

এটা ওটা করে ফেলে নষ্ট

জিদ যেন কিলবিল পঁচা পঁচা পোকা।

 

মানুষের ভাল ভাল গুণ

অকারণে জিদ করে খুন

জিদ যেন পঁচা ফল ধরে থোকা থোকা।

 

জিদ এলে মনে বাড়ে রাগ

কলিজায় পড়ে কালো দাগ

তাই জিদ করে নাতো ভাল কোন খোকা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৫

মিথ্যা কথা কেউ বলো না, মিথ্যা বলা পাপ

 

মিথ্যা কথা কেউ বলো না, মিথ্যা বলা পাপ

মিথ্যা যেন ফণা তোলা কালকেউটের সাপ।

ওরে বাপরে বাপ।

 

মিথ্যা যারা বলে তাদের কেউ বাসে না ভাল

মিথ্যা বলে পড়লে ধরা যায় রে পিঠের ছালও।

মিথ্যা হলো মন্দ কাজের ঢাকনা খোলা ঝাঁপ।

বাপরে বাপরে বাপ।

 

সবাই জানে মিথ্যা হলো খারাপ কাজের মা

সকাল বিকাল ফোটায় সে যে হাজার সাপের ছা

যে ছাড়ে না মিথ্যা তারে ছোবল মারে সাপ।

ওরে বাপরে বাপ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৬

তোমরা কে কোথায় আছো গো

তোমরা কে কোথায় আছো গো

কন্যারে দাও সাজাইয়া

কন্যার গায়ে দাও গো তোমরা

কাঁচা হলুদ মাখাইয়া।

 

গিলা লাগাও, মেথি লাগাও

লাগাও মেন্দি রে

বিয়ের সাজে সাজাও তোমরা

জলদি কন্যারে

আসবে নওশা কন্যারে দাও

গোসল করাইয়া।

 

পায়ে আলতা, গালে রোজ

ঠোঁটে লিপিস্টিক রে

কন্যার শরীর থেকে যেন

জোসনা পড়ে ঠিকরে

কন্যার গায়ে দাওরে সবে

সুবাস মাখাইয়া।

 

হাতে বালা, গলায় হার

কানে পরাও দুল রে

মাথায় টিকলি, বাজুবন্দ

নাকে হীরার ফুল রে

কন্যার গায়ে রাঙা শাড়ি

দাও রে পরাইয়া।

 

কন্যার মুখে মুচকি হাসি

দাও রে ঝুলাইয়া

হাজার ফুলের হাসি ঠোঁটে

দাও রে বুলাইয়া।

 

সোহাগ আদর কন্যার অঙ্গে

দাও রে মাখাইয়া

যে রূপ দেখে চান্দের জোসনা

যায় রে পালাইয়া।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৭

কাক করে কা কা

 

কাক করে কা কা

দুষ্ট ছেলে ধরে খা

পড়াতে যে দেয় না মন

কেড়ে নে তার গোপন ধন।

 

খেলনা গাড়ি এরোপ্লেন

পুতুল রোবট রঙিন ট্রেন

নে লুটে তার ভাঙা গাড়ির চাকা।

 

মায়ের কথা যে শোনে না

খায় না সময় মত

দিস না চুমু তার গালে আর

আদর শত শত

চিপ্স্ চকলেট বিস্কিট আর

দিস না লিচু পাকা।

 

আদর দিবি কারে?

 

মায়ের কথা শোনে যে তারে আদর দিস

বড়োর কথা শোনে যে তারে আদর দিস

স্যারের কথা মানে যে তারে আদর দিস

লেখাপড়া করে যে তারে আদর দিস

নাওয়া-খাওয়া করে যে তারে আদর দিস।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৮

উড়াল পাখি যায় রে ওড়ে

 

উড়াল পাখি যায় রে ওড়ে নীড়ের বাঁধন বোঝে না

গান গেয়ে যায় আপন মনে, নীড় তো পাখি খোঁজে না।

 

তার চোখে হায় কী যে জাদু

কন্ঠ থেকে ঝরে মধু

সেই সুরে হায় পরাণ বধে, পাখি যে তা বোঝে না।

 

আগে যদি জানতাম পাখি সুরে এত জ্বালা

আপন মনে গাথতাম না আর বকুল ফুলের মালা

হৃদয়টাকে রাখতাম বেঁধে, কানে দিতাম তালা।

 

পরাণ পাখি যায় রে ওড়ে

কেমনে আমি থাকি ঘরে

অভাগিনীর দুঃখ কেন উড়াল পাখি বোঝে না।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৮৯

তোমরা যারা দিয়ে গেলে প্রাণ

 

তোমরা যারা দিয়ে গেলে প্রাণ

ভাষার জন্য

হে অনন্য

ধন্য তোমরা, ধন্য, ধন্য

আমার এ গান, আমার দোয়া

শুধু তোমার জন্য।

 

নির্যাতীতের পক্ষে তুমি

সর্বহারার বক্ষে তুমি

জীবন দিলে সত্য-ন্যায়ের জন্য

হে অনন্য

ধন্য তোমরা, ধন্য, ধন্য

আমার এ গান, আমার দোয়া

শুধু তোমার জন্য।

 

চেয়েছিল ন্যায্য অধিকার

পেয়েছিলে ছোবল বারংবার

রক্ত দিয়ে হলে তুমি অশেষ বরেণ্য

হে অনন্য

ধন্য তোমরা, ধন্য, ধন্য

আমার এ গান, আমার দোয়া

শুধু তোমার জন্য।

 

হে শহীদ তোমার রক্তঋণ

শোধ হবে না কোনদিন

Íা তোমার বিনাশহীন

বেহেশত তোমার জন্য

হে অনন্য

ধন্য তোমরা, ধন্য, ধন্য

আমার এ গান, আমার দোয়া

শুধু তোমার জন্য।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯০

ভুলিনি আমরা, ভুলবো না কোনদিন

 

ভুলিনি আমরা, ভুলবো না কোনদিন

যারা দিয়ে গেল অকাতরে প্রাণ

যারা গেয়ে গেল মুক্তির গান

কোনদিন শোধ হবে না তাদের সে ঋণ।

 

ওরা আমাদের জাগ্রত চেতনা

ওরা আমাদের প্রদীপ্ত বাসনা

ওরা আমাদের শাশ্বত সাধনা

ওরা এনেছে মুক্ত উদার আলো ঝলমল দিন

ওদের ত্যাগে হয়েছি আমরা মুক্ত-স্বাধীন।

 

ওরা আমাদের পতাকার লাল সূর্য

ওরা আমাদের সাহসের রণতুর্য

ওরা আমাদের চেতনায় চির থাকবেই অমলিন।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯১

নিলাঞ্জনা, আর চেয়ো না এই আঁখি পাতে

 

নিলাঞ্জনা,

আর চেয়ো না এই আঁখি পাতে

কানে কানে আর বলো না কথা

এই মাধবী রাতে।

 

এসো না বহ্নিশিখা,

মোম গলে গলে যাবে

পতঙ্গের পাখা হায়

পুড়ে পুড়ে যাবে

রেখো না কোমল হাত

ক্ষণিকের হাতে।

 

আমি এক নীড় হারা পাখি

তার সাথে কে বাঁধিবে রাখি

তুমি হবে খুনী যদি

মরি শরাঘাতে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯২

আকাশের ছবি ভাসে সুনীল জলে

 

আকাশের ছবি ভাসে সুনীল জলে

তোমার ছবি এই হৃদয় তলে

হিয়া যেন মিশে যায় হিয়ার সনে

এই লগনে।

 

তুমি বিনা এ জীবন মরুময়

তুমি এলে সুখে মন ভরে রয়

মধুময় মনে হয় এ জীবন

এই লগনে।

 

যতদিন বেঁচে থাকি হায়

তোমাকেই যেন কাছে পাই

প্রাণ যেন এভাবেই মিশে যায় প্রাণে

এই লগনে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৩

স্বাধীনতা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা

 

স্বাধীনতা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা

তুমি জাগ্রত চেতনার

উচ্ছ্বল জনতার

স্বপ্ন আশা

তুমি কোটি হৃদয়ের

আনন্দ উল্লাস,

ভালবাসা।

 

তুমি সাগরের কল্লোল,

শিশুর প্রথম চিৎকার

তুমি যুবকের সুঠাম শরীর,

যুবতীর সুখ-শিৎকার

তুমি ঝর্ণার কলতান,

আনন্দ উচ্চাশা।

 

মুক্ত বিহঙ্গের তুমি কলরব

তুমি জনতার প্রাণ উৎসব

তুমি মায়ের কান্না

অশ্র“ভেজা বোনের চোখে

মুখর হাসা।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৪

তোমরা কে কোথায় আছো গো নওশারে দাও

 

তোমরা কে কোথায় আছো গো

নওশারে দাও সাজাইয়া

বর যাইবো বিয়া করতে টেঙ্খিানা হাকাইয়া।।

 

বরের হাতে তোমরা দাওগো মেন্দি লাগাইয়া

গোলাপজলে বরকে দাওগো গোসল করাইয়া।

বরের গায়ে দাওগো তোমরা আচকান পরাইয়া

বরের মাথায় দাওগো তোমরা পাগড়ি পরাইয়া।।

 

ফুলের ঝালর দিয়া দাওগো গাড়ি সাজাইয়া

বর যাইবো কন্যার বাড়ি টেঙ্খিানা হাকাইয়া

চল চল কন্যার বাড়ি শানাই বাজাইয়া

কন্যার বাড়ির বেবাক মানুষ রইছে তাকাইয়া।।

 

বরের গাড়ি প´খীরাজ, নেয় রে উড়াইয়া

গাড়ির হর্ণে কন্যার মন যায়রে জুড়াইয়া।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৫

সকাল বেলার সুরুজ হইয়া নওশা আঁখি মেলে রে

 

সকাল বেলার সুরুজ হইয়া

নওশা আঁখি মেলে রে

কন্যার গায়ে চাঁদের জোসনা

ঝরঝরাইয়া পড়ে রে।

 

নওশা আসে নওল কুমার প´খীরাজে চড়ে

লজ্জাবতী লতার মত লাজে মরে কন্যা রে।।

 

নওশার বাড়ি খুশীর নহর,

কন্যার বাড়ি কান্দে

বিনি সুতোর মালা দিয়া

দুইটি হৃদয় বান্ধে

সেই হৃদয়ে সুখের স্বপন ইলিক ঝিলিক মারে রে।।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৬

মনের নাগাল যায় না পাওয়া, মন যে সুনীল আকাশ রে

 

মনের নাগাল যায় না পাওয়া, মন যে সুনীল আকাশ রে

সেই আকাশকে ধরতে কেন অযথা হাত বাড়াস রে।

 

মেঘ থমথম আকাশ যখন কাঁদে

তার সাথে এই মনটাও সুর সাধে

হৃদয় ছেঁড়া বজ্রধ্বনি এই বুকে ক্যান পাঠাস রে।

 

জানি নজানি, জোসনা এসে বিশ্ব চরাচর

দেয় ভরিয়ে তৃষিত এই তাপিত অন্তর

পারলে আমার প্রেমের জোসনা তোর হৃদয়ে মাখাস রে।

 

জানি জানি, মনটা যেন উদার আকাশ নীল

যেই আকাশে চন্দ্র তারা করে রে ঝিলমিল

পারলে আমার চাঁদের আলো তোর হৃদয়ে লাগাস রে।

 

আকাশ যখন একলা থাকে, মেঘ থাকে না তলে

হাহাকারের আগুন তখন এই হৃদয়ে জ্বলে

পারলে সেথা একটুখানি বৃষ্টিকণা পাঠাস রে।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৭

নিশি রাতের পাখিরে তুই, নিশি রাতের পাখি

 

নিশি রাতের পাখিরে তুই, নিশি রাতের পাখি

কার বিরহে কান্নাভেজা সুরে উঠিস ডাকি রে তুই

সুরে উঠিস ডাকি।

 

পাখিরে ...........

তোর নাই কি রাতের ঠাঁই

তোর সঙ্গী কেহ নাই

কোন্ পাষাণে অমন করে দিল তোরে ফাঁকিরে হায়

দিল তোরে ফাঁকি।

 

পাখিরে .............

একলা রাতের কষ্টে কি তোর

ঘুম আসে না চোখে, হায়রে, ঘুম আসে না চোখে

অভাগিনীর মতই কি তুই মরিস ধুকে ধুকেরে হায়

মরিস ধুকে ধুকে।

 

পাখিরে..........

লোকে করে কানাকানি

বাতাসে তার ফিসফিসানি

তোর দুঃখে কান্দে তরু আন্ধারে মুখ ঢাকি, হায়রে

আন্ধারে মুখ ঢাকি।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৮

সাধের টিয়া পাখিরে

 

সাধের টিয়া পাখিরে

তোরে কোথায় রাখি রে

তুই কোথায় পেলি নজরকাড়া অমন রূপের বেশ

তুই কি আমার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।

 

তোর শরীরটা কি সবুজ বরণ গ্রাম

তোর ঠোঁটে কি সূর্য আঁকা বাংলাদেশের নাম

তুই কোথায় পেলি নজরকাড়া অমন রূপের বেশ

তুই কি আমার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।

 

তোর লেজটা কিরে বিশাল সুন্দরবন

পিঠটা কিরে ধানের ক্ষেত, ধনের সেরা ধন

পালকগুলো সবুজ পাট, নাইরে রূপের শেষ

তুই কি আমার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।

 

তোর বুকটা যে রে ফসল ভরা মাঠ

চোখ দুটো তোর শান্ত পুকুর ঘাট

অঙ্গ জুড়ে কলাপাতা, দুর্বাঘাসের রেশ

তুই কি আমার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ১৯৯

কলেজ গেটে দেখেছিলাম আগুনের ফুল

 

কলেজ গেটে দেখেছিলাম আগুনের ফুল

তাই দেখে পোড়া চোখে পলক পড়েনি

তাই দেখে বোবা মুখে ভাষা ফোটেনি

এ কি আগুনের ফুল, নাকি চোখের এ ভুল।

 

তাই দেখে বুকে হায় ঝড়ো হাওয়া বয়

এ জীবন লাগে ফঁকা, শুধু মরুময়

হৃদয়ের কোণে কোণে বিঁধে থাকে হুল

বুকে নিয়ে চলি হায় বেদনা মাশুল।

 

তারপর চোখে চোখ, চোরা চাহনী

তারপর ইতিহাস, কত কাহিনী

পরিচয়, জানাজানি, ভালবাসাবাসি

প্রেমের দরিয়া দেখা অথৈ অতুল।

 

তারপর হাতে হাত, নয়নে নয়ন

তারপর পরিণয়, বাসর শয়ন

এতকাল এক খাটে এক ঘরে বাস

জানি এই বুকে কত বিঁধে আছে হুল।

আসাদ বিন হাফিজ এর গানঃ ২০০

ঝমঝম, ঝমঝম, কদম ডালে

 

ঝমঝম, ঝমঝম

কদম ডালে

খুকীর গালে

বাদল ঝরে।

বাদল ঝরে, খুকীর গালে, কদম ডালে।

 

বাজিয়ে মাদল

ঝরে রে বাদল

ঘরের চালে

পুকুর, খালে

বাদল ঝরে।

বাদল ঝরে, পুকুর খালে, ঘরের চালে।

 

পথঘাট পিচ্ছিল

কেঁচো করে কিলবিল

খড়ের গাদায়

উঠোনে কাদায়

বাদল ঝরে।

বাদল ঝরে, উঠোনে কাদায়, খড়ের গাদায়।

 

মেঘলা থমথম

দিনরাত হরদম

শাওন রাতে

অঝোরে মাতে

বাদল ঝরে।

বাদল ঝরে, অঝোরে মাতে, শাওন রাতে

 

নিশির কালে

বেদনা ভালে

মনে যে পড়ে

শুধু তোমারে

বাদল ঝরে।

বাদল ঝরে, শুধু তোমারে, মনে যে পড়ে।

 

No comments

Powered by Blogger.