একতার গান গাই - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩৭৬
কবিতা-৩৭৬ : একতার
গান গাই
[ আঁখ ক্ষেতের পাশে তিন চোর, কথক ও তার সঙ্গীরা।]
পুরাণ গল্প নতুন করে কই
সঙ্গে আছে মুড়ি চিড়া
পাতিল ভরা দই
যার যা লাগে নিয়ে খা
পরাণ বন্ধু, সই
আমি বলি সেই গল্প
কে, দিল ক্ষেতে মই।
কোরাস : মই মই মই। মই মই মই।
এক দেশে ছিল এক চাষী
তার ছিল গোটাকয় খাসি।
সেই খাসি খুঁজতে চাষী
চরে যখন যায়
আঁখের ক্ষেতে কারা যেন
ঘুরে দেখতে পায়।
কোরাস: পায় পায় পায়। পায় পায়
পায়।
কৃষক তখন তিন চোরকে
কাছে ডেকে কয়
আয়রে কাছে সোনাচান
পাইস না মোটে ভয়।
কোরাস: ভয় ভয় ভয়। ভয় ভয় ভয়।
ভয়ে ভয়ে ওরা আসে
ভরসা পেয়ে মনে
কৃষক বলে বেশ করেছিস
ঢুকে আখের বনে।
ছাগল একটা পাচ্ছিলাম না
ঢুকলো কিনা ক্ষেতে
এ কথাটাই ভাবছিলাম
পথে যেতে যেতে।
কোরাস: যেত যেতে যেতে। যেতে যেতে
যেতে।
আখের ক্ষেতে দেখলি ছাগল?
বল না ওরে বল
রহীম, ভুষণ কাঁপছে তখন
চক্ষু ছলোছল।
ওরে রহীম, ওরে ভূষণ
এক পাড়াতে থাকিস
সামনে পড়লে তোরা দেখি
কাকা বলে ডাকিস।
করছিলি কি আখের ক্ষেতে
বল না ওরে বল,
আখ দেখে কি মুখের ভেতর
এসেছিল জল?
কোরাস: জল জল জল। জল জল জল।
আসতেই পারে, তোরা খাবি
ডাকিস যখন কাকা
ও ছেলেটা কে রে, যার
পা একটা বাঁকা?
কাকা বাবু, ও নরেন
ঠাকুর বাড়ির ছেলে
তারই কথায় এলাম আমরা
খেলাধুলা ফেলে।
তাই ঢুকেছি, ভুল করেছি
মাফ করে দেন কাকু
আর কখনো আঁখের ক্ষেতে
আমরা ঢুকবো নাকো।
কোরাস: নাকো নাকো নাকো। নাকো
নাকো নাকো।
ঠিক আছে যা, মাফ করলাম
নরেন তো মাফ পাবে না
আজকে উচিত শিক্ষা দিলে
ভীন গাঁয়ে ফের আবে না।
এই না বলে নরেনকে দেয়
আচ্ছা মত সাজা
মারের চোটে নরেন বাবুর
ভেঙে গেল মাজা।
কোরাস: মাজা মাজা মাজা। মাজা
মাজা মাজা।
ওরে রহীম তুইও শেখ
আমিও তো তাই
শেখে শেখে মিলে গেলে
বড়ই সুখ পাই।
কোরাস: পাই পাই পাই। পাই পাই
পাই।
কিন্তু ভূষণ হিঁদুর ছেলে
ছোট জাতের পোলা
পিয়াস লাগলে কিনে খাবে
ফান্টা, কোকাকোলা।
কোরাস: কোলা কোলা কোলা। কোলা
কোলা কোলা।
মুসলমানের আঁখের ক্ষেতে
হিন্দু ঢুকবে কেনো
করীম শেখের নাতি আমি
মোরে চান্দু চেনো।
ধর না রহীম ওরে একটু
উত্তম মাধ্যম দেই
খেলার মাঠে ঝগড়া করার
বদলা একটু নেই।
কোরাস: নেই নেই নেই। নেই নেই
নেই।
তারপরে যা হলো--
বলবো কি আর বলো
ভূষণ বাবু কুষণ ফেলে
আচ্ছা মার খেলো।
রহীম তখন একলা একা
বললো কৃষক, বাপ
তুই তো জানিস চুরি করা
ভীষণ রকম পাপ।
কোরাস: পাপ পাপ পাপ। পাপ পাপ
পাপ।
পাপ ছাড়ে না বাপকে কভু
এবার তোমার পালা
লাভ হবে না কাকু মামা
কিম্বা ডেকে খালা।
কোরাস: খালা খালা খালা। খালা
খালা খালা।
তিনটে চোরা পড়ে রইলো
যেনো মরা লাশ
বেকুব যারা এমন করেই
মিটে তাদের আশ।
কোরাস: আশ আশ আশ। আশ আশ আশ।
জয়ের জন্য একতা চাই
নইলে বিপদ ভারী
গল্পে গল্পে এ কথাটাই
করে গেলাম জারি।
কোরাস: জারি জারি জারি। জারি
জারি জারি।
সকলে সমস্বরে:
আয় না সবাই একই সুরে একতার গান
গাই
ঐক্য ছাড়া একা একা বাঁচার উপায় নাই।
১২/০৪/২০২৩ বাদ জোহর
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments