অক্ষম গোলামের কান্না - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩৩২
কবিতা-৩৩২ : অক্ষম
গোলামের কান্না
প্রিয়তমা। আল্লাহকে স্বাক্ষী
রেখে
তোমার ভরণ পোষণের দায়িত্ব
স্বেচ্ছায় আমি নিজ কাঁধে তুলে
নিয়েছিলাম।
এখন আমি বুঝতে পারছি,
সেদিন আমি কি ভুল করেছিলাম।
হে প্রভু, মাফ করো
আমায়।
কেবল তুমিই সবার রিজিকদাতা।
তুমিই সবার কিসমতে বরাদ্দ করো
রিজিক।
তুমিই রিজিক পাঠাও পাখি ও
পতঙ্গের।
রিজিক পাঠাও পশু ও বৃক্ষের।
আকাশে ও সমুদ্রের তলদেশ
বিচরণকারী সকল প্রাণীর।
একটা শস্যদানা ফলানোর ক্ষমতাও
যার নেই, সে কি করে রিজিকের দায়িত্ব নিতে পারে?
যে আমি একমুঠো খাবারও নিজে জোগাড়
করার ক্ষমতা রাখি না,
সে কি করে অন্যের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে?
আমাকে মাফ করো মাবুদ।
রিজিকের একমাত্র মালিক তুমি।
কেবলই তুমি।
অতীতেও তুমি ছিলে, এখনো
আছো, ভবিষ্যতেও তুমিই থাকবে।
যে মানুষ এ দায়িত্ব নিজের কাঁধে
তুলে নেয়, তার মত আহাম্মক আর কে হতে পারে?
প্রভু, কখনোই
নিজের বা অন্য কারো রিজিকের দায়িত্ব আমার ছিল না, এ অন্যায় চিন্তার জন্য তুমি
আমাকে মাফ করে দাও।
সত্যি, মানুষ
বড় আহাম্মক।
কেন আমি সম্পদের পাহাড় গড়ার জন্য
স্বপ্নে বিভোর হই?
কেন গড়ে তুলি বিত্তের বৈভব?
কেন ভুলে যাই তুমি ভালবেসে একদিন
খালি হাতে আমাকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলে। এই যে এতটা কাল বেঁচে আছি সে তো কেবল তোমারই
দয়ায়।
তোমার অফুরন্ত নেয়ামতের শোকর
করার সাধ্য কি কোন মানুষের আছে? তুমি না দিলে একফোঁটা তৃষ্ণার জল আমি কোথায় পেতাম প্রভু?
আহাম্মকের দল খালি হাতে এসে খালি
হাতে ফিরে যায়। তবু কেন যে ওরা সারাক্ষণ সম্পদ বৃদ্ধির ধান্ধায় থাকে? কি লাভ
এতে?
একটু সম্পদের লোভে ওরা চুরি করে, ডাকাতি
করে। ছিনতাই, লুটপাট করে। ঘুষ খায়,
সুদ খায়। গরীবকে ঠকায়। এতীমের মাল আত্মস্যাৎ করে। পিতামাতাকে
বঞ্চিত করে।
যে সন্তান ও প্রিয়ার জন্য মানুষ
এসব করে সেই প্রিয়জনরাই প্রভুর ডাক এলে তাকে মাটির গর্তে চাপা দিয়ে রাখে।
তোমার অর্জিত সম্পদ ভোগ করে
স্বজনেরা আর সে সম্পদ আহরণের জন্য যতো অবৈধপন্থা অবলম্বন করছো তার পাপের শাস্তি
বয়ে বেড়াও তুমি।
শুধুই তুমি। আহ, কি
নিদারুণ নিয়তি।
হে প্রিয়তমা।
হে আমার প্রাণপ্রিয় সন্তান ও
স্বজন। মাফ করো আমাকে। আমি আর তোমাদের জন্য কোন পাপের পথ মাড়াতে পারবো না।
হে আল্লাহ, তুমি
আমাকে বাঁচাও। আমাকে অবৈধ উপার্জন থেকে রক্ষা করো। জাহান্নামের অনন্ত আজাব থেকে
বাঁচতে চাই আমি। আমি তো তোমারই এক অক্ষম গোলাম।
অক্ষম গোলামের কান্না তুমি কবুল
করো হে মাবুদ।
২৭/০৬/২০২৩ বাদ মাগরিব
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments