সততার জয় - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০৮২
কবিতা-০৮২ : সততার
জয়
করোনায় মরে মরে
এমন ওতো হতে পারে-
পৃথিবীর তিন ভাগ মানুষের এক ভাগ
নাই
বেঁচে থাকা মানুষেরা কাঁদছে
সবাই।
কেঁদে কেঁদে পেরেশান, চোখে জল
নাই।
আরশ খিলান ধরে বলছে সবাইঃ
স্বজনহীন এ বিশ্বে প্রভু, কেন
দিলে ঠাঁই
পাখিরও স্বজন আছে, আমার
স্বজন কই
একা এই ধরনীতে কেন বেঁচে রই?
একদিন এ বিলাপ হয়ে যাবে শেষ।
পাল্টাবে পৃথিবীর রূপ পরিবেশ।
পাল্টাবে পৃথিবীর দেশ মহাদেশ।
অবাধ্য পৃথিবীর ধ্বংসের পর
বেঁচে আছি কতিপয় নারী আর নর
বেঁচে আছে অভিশপ্ত বিরাণ নগর
বেঁচে আছে মৃতদের অট্টালিকা, ঘর
বেঁচে আছে জনহীন বিজন শহর।
সারি সারি ঘরবাড়ি, মৃত
জনপদ
বেঁচে আছে পৃথিবীর নদী আর নদ
অবাক তাকিয়ে আছে সুশীতল হ্রদ
নীলাকাশ চেয়ে আছে আগের মতো
ধ্যানী বক এক মনে বিলে ধ্যানে রত
আলোকিত হয়ে আছে ফুলের বাগান
পাখিরাও গাছে গাছে গেয়ে যায় গান
মসজিদে নেই শুধু ফজর আযান।
তারপর একদিন বিপন্ন মানুষ
তারও যেনো ফিরে এলো ধীরলয়ে হুঁশ
ফিরে এলো চেতনার হলুদ আকাশ
কানে কানে এ কি কথা বললো বাতাস
নিভে নাই, নিভে
নাই আদমের প্রাণ
মরে নাই, মরে নাই, মানুষের
জান
বেঁচে আছে কতিপয় বিপন্ন নাদান
কারো কারো খুলে গেছে ভয়ার্ত নয়ন
কেউ কেউ কি ঘটেছে করছে স্মরণ।
আড়মোড়া ভেঙ্গে কেউ দাঁড়াল কি
পাশে?
জীবনের রঙ আজো লেগে আছে ঘাসে?
রাতের আকাশে বসে একা চাঁদ হাসে?
তাহলে বাতাসে কার দীর্ঘশ্বাস
ভাসে?
এ কী কোন আদমের জীবনের রঙ
পাল্টে যাওয়া ধরনীর নাকি এ ভড়ং
আবার কি চলে এলো সুহাসিনী ভোর
পৃথিবীতে চলে এলো সততার জোর।
চলো তবে হেঁটে দেখি শূন্য এ নগর
ওই দেখো ফুটে আছে রঙিন টগর
ফুটেছে নানান ফুল, ফুটেছে
বেলী
হাস্নাহেনা ডেকে বলে, তোরাও
এলি?
তারপর পৃঁথিবীর উল্টায় পাতা
ফুটপাতে পড়ে থাকে বণিকের খাতা
ঘরহীন মানুষেরা পায় নয়া ঘর
ভূমিহীন দেশবাসী পায় জমি, চর
সকলেই সকলের কেউ নয় পর
সকলের এক নেতা, এক
পয়গম্বর।
স্বৈরাচারখ্যাত সেই দানবের দল
দ্বারে দ্বারে ঘুরে চায় পিপাসায়
জল
এলাকার রংবাজ মন্টুর ভাই
টুপ করে মরে গেছে করোনায় নাই
কিশোরেরা ডুব দেয় শাপলার বনে
বিয়ের পিঁড়িতে বসে বর আর কনে।
শহুরে বাবুর দল ক্ষেতে করে চাষ
বউ নিয়ে করে ওরা কুঁড়েঘরে বাস।
বুবু যায় নাইওর নৌকায় চড়ে
সুর করে ফুল শিশু আলিফ বা পড়ে।
পরিযায়ী পাখি কেউ করে না শিকার
প্রকৃতিও ফিরে পায় নিজ অধিকার।
নাই আর গাঁয়ে গাঁয়ে যাত্রার নাচ
ইভটিজার করেনাতো কারো গায়ে টাচ।
বাতাসে শীসা নেই, ভিসা
নেই দেশে
যে যেখানে পারে যায়, খুশি
মনে হেসে।
মানুষের মনে নেই রেশারেশী আর
কারো মন হয় নাতো অকারণে ভার।
শব্দের দূষণের নাই কোন ভয়
আল্লাহর জিকিরেই মন খুশি হয়।
করোনায় মরে মরে
এমন ওতো হতে পারে,
হতে পারে সততার আবারো বিজয়
হতে পারে পৃথিবীটা আরো মধুময়।
১৭/০৪/২০২০ ৩টা
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments