আঁচলে ঢাকা মুখ - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৪৭১

  

কবিতা-৪৭১ : আঁচলে ঢাকা মুখ

কবি নাকি ছবি আঁকে মনের ক্যানভাসে।

তাতে থাকে বাতাসের বিচুর্ণ মর্মর। সূর্য থেকে রোদের চাদর এনে তাতে ঘুমায় কবি।

বন্যাকে তারা বন্যা বলে না, বলে গোসলের মৌসুম। জোসনা সাগরে তারা হাবুডুবু খায়।

গাছের পাতাতে পড়ে নিতে পারে ডারউইনের জংধরা অপার্থিব বানী। পড়তে পারে কসাই কালর্মাক্সের লাল বিপ্লব। শেয়ালের হুক্কাহুয়া প্রাণ মাতানো অর্কেস্টায় তারা থাকে বিভোর।

 

নিরবতা যুদ্ধের চাইতেও বিভীষিকাময় হয়ে যায় তাদের কাছে। কিন্তু আমি সাধারণ নাগরিক। ভোটের জন্য আমার প্রাণ আইঢাই করে।

সর্ষে ক্ষেতে হলুদ শাড়ি পরে নাচে বিশুদ্ধ মৌমাছি। তারা কখন কেলি করে আমি দেখতে পাই না, কবিরা দেখে।

 

কি আর করি, আমি তালগাছের নিচে মাথায় গামছা বিছিয়ে শুয়ে থাকি।

ঐসব কবিরা রাজ মেহমান। দরবারে তাদের অনেক কাজ। রাজার মোসাহেবি করা, উপঢৌকন গ্রহণ করা। আমি এসবের কোন খবর রাখি না।

 

আমি মসজিদে ঢুকে দুরাকাত নামাজ পড়লে যখন জঙ্গী হই, ওরা তখন স্বৈরাচারী রাজার পা টেপায় ব্যস্ত। গেরস্তের বাড়িতে ডাকাত পড়লে ওরা টের পায় না। আমি জঙ্গলে মগডালে বসে থাকি ডাকাতের ভয়ে আর ওরা ডাকাতের পায়ে তেল মালিশ করে।

ঐসব কবিদের আর কি বলবো?

কাকে বলবো এসব কথা।

 

আমার দুজন সঙ্গী দরকার। যারা আঁধারকে বলতে পারবে অন্ধকার। ওদের মত কৃষ্ণ অন্ধকারে কাটা চামচের ঝংকার তুলবে না।

আছো এমন কেউ? থাকলে সাড়া দাও। আমি জনতার হাতে তুলে দেবো রঙিলা ভোর। টকটকে লাল সূর্য।

তুমি মুরগীর খোপ খুলে দেখবে আমি কি করে ভাঙি গোহালের আগল।

 

একটুপর মক্তব থেকে ভেসে আসবে আসমানী কিতাবের ধ্বনি। তুমি হীরামন পাখির হাতে সেপারা তুলে দিয়ে রঙিন আঁচলে মুখ ঢাকবে। আর আমি বিশুদ্ধ নয়নে দেখবো সেই আঁচলে ঢাকা মুখ।

১৩ই জানুয়ারী ২০২৪;  বাদ  আছর।

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.