আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ২২৩৮-২২৪৯

 


আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৮

কাঁঠাল গাছে যাচ্ছে পাওয়া

 কাঁঠাল গাছে যাচ্ছে পাওয়া

পাকা পাকা আম

রাজাকারের তালিকাতে

মুক্তিযোদ্ধার নাম।

হায় হরিরাম হায়

ভানুমতি খেলতে খেলতে

কোন বাগানে যায়।

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নাকি

রাজাকারে খায়।

বিশ্বজিতও মারা যায়

শিবির নেতা হইয়া

যারে ইচ্ছা তারে মারো

শুধু শিবির কইয়া।

খুন হত্যা দোষের কি ভাই

এটা বীরের কাম

যে পারো ভাই সেইতো পাবে

একটা করে খাম।

রাজাকার কই ধরে ধরে

মুক্তিযোদ্ধা মারো

মুক্তিযোদ্ধা তোমরা পারলে

রাজাকারও মারো।

খুনাখুনি চলুক দেশে

রক্তে ভাসুক দেশ

আহা আহা উন্নয়নের

এইতো বাংলাদেশ।

১৭ডিসেম্বর ২০১৯;১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৯

জলবায়ুর দূষণে

জলবায়ুর দূষণে

ভাষণে আর ভূষণে

বিশ্বসেরা বাংলাদেশ

উন্নয়নের নাইরে শেষ।

উন্নয়নের নাইরে শেষ

বিশ্বসেরা বাংলাদেশ

আমরা সেরা ধর্ষণে

এবং গযব বর্ষণে।

সত্যরে কই গুজব আর

গুজব করি সত্য

আজকে যেজন শেখের বেটা

কালকে সে হয় দত্ত।

 ১৭ই ডিসেম্বর ২০১৯; ০১:৩০ মি।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪০

আমার কথা শুনবে মানুষ কোন দুখে

 আমার কথা শুনবে মানুষ কোন দুখে

এমনি কি আর আছে ওরা কম সুখে?

রোজ সকালে সূর্য ঠিকই উঠছে

শ্বাস যে নেবে বাতাসওতো ছুটছে

ঘাসের বনে গরু ছাগল জুটছে

ফুলের বনে ফুলও রোজই ফুটছে।

জন্ম নিছে মানুষ যখন, মরবেই

ডাকাত নিজের দলটা বড় করবেই

বাপের বেটা থাকলে দেশে লড়বেই

কপাল মন্দ পাখি ফান্দে পড়বেই।

আবার নাহয় সাহস থাকলে একটু দাঁড়াও রুখে

অমানুষ যে বাড়ছে তাকাও, দেখো নিজের চোখে।

 ১৭ইডিসেম্বর ২০১৯;৩ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪১

কবির সাথে প্রেম করা যায়

 কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

মধ্য রাতে জেগেই ধরেন,

কাব্য লেখার বায়না।

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

কাব্য লেখার জন্য তো কেউ

বেতন ভাতা পায় না।

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

কবিই শুধু খাইতে জানে,

তার বউ কি খায় না?

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

কবির মন যে কখন কি চায়

কিছুই বুঝা যায় না।

সকাল বেলা বাজারে যায়

ফিরে গভীর রাইতে

বলেন তখন কি তুলে দেই

কবির পাতে খাইতে?

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করা তাই যায় না

মাঝে মাঝে ভাবে পড়লে

ফিরেও কবি চায় না।

১৭ই ডিসেম্বর ২০১৯; ৯টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪২

বঙ্গবন্ধুর খুনের সময় যারা ছিল ক্ষমতায়

বঙ্গবন্ধুর খুনের সময় যারা ছিল ক্ষমতায়

তারা আজো মন্ত্রী এমপি পরম আদর মমতায়।

সেই খুনীরাই ঘুরছে আজও চারপাশে

তাদের তুমি রাখছো মন্ত্রী কোন আশে?

এ প্রশ্নতো করতেই পারে বাঙালি বীর জনতায়।

নিরাপত্তার দায়িত্বে কও, সেদিন ছিল কারা?

জাতির পিতা মরলো নিজে, মরেনি তো তারা।

সেই দায়িত্বে অবহেলার বিচার কেন হয় নাই

কে তাদেরে সাহস দিল, তোদের কোন ভয় নাই।

এটা জানা আজকে খুবই দরকার

কেন চালায় আজো তারা সরকার

নাকি এসব জানার সময় আজো মামা হয় নাই?

প্রশ্ন আছে, জবাব নাই

নেতার কোন অভাব নাই

পিতৃহারা কন্যা বলে, জবাব আজও পাই নাই

সাহস করে কেউ কয় না, কেনো পিতা, ভাই নাই।

১৮ই ডিসেম্বর ২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৩

এত বছর পার করে আজ

 এত বছর পার করে আজ

মুক্তিরে কয় রাজাকার

বলতে পারো এর জন্য

হওয়া উচিত সাজা কার?

মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী আছে

সব কি খাইল বোয়াল মাছে

এতো এতো বেতন ভাতা

কারে দিল এ সরকার?

দেশের জন্য রক্ত দিতে

যে সাহসী এগিয়ে যায়

এতো বছর পরে তারে

কে তুলল কাঠগড়ায়?

মুক্তিরে কয় রাজাকার

কে দেয় আজ সাজা তার?

তার অপরাধ ক্ষমাহীন

তারে আগে শাস্তি দিন।

 ১৮ই ডিসেম্বর ২০১৯; ৮টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৪

কই গেল শহীদের তালিকা?

 কই গেল শহীদের তালিকা?

এই কথা শুনে হাসে

কচি কচি বালিকা।

বলে, কাকা শুনেন।

বসে বসে আসমানের

তারাগুলো গুনেন।

বলি মাগো,

বুদ্ধিজীবীর লিস্টি?

বলে কাকা,

ওটাতো ধুয়ে নিছে বৃষ্টি।

রাজা আসে, রাজা যায়

সকলেই কেঁদে যায়

বলে, আহা, ওরা ছিল

এ জাতির ইস্টি।

মুক্তিযোদ্ধা তালিকা?

আহা আহা, ওটাতো

নিয়ে গেছে শ্যালিকা।

রেখে গেছে শুধু এক

রাজাকার লিস্টি।

খেয়ে দেখি ভারি মজা

অতিশয় মিষ্টি।

আজব এক দেশ ভাই

গুজবের শেষ নাই।

 ২০শে ডিসেম্বর ২০১৯; ১১টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৫

আমরা কি আর মানুষ আছি?

 আমরা কি আর মানুষ আছি?

আমরা তো ভাই রাজাকার

মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম

এই পেয়েছি পুরস্কার।

রাজাকারের তালিকাতে

মন্ত্রী আমার নাম টানায়

চার যুগ পরে এই খবর

দেশবাসীকে সে জানায়?

যারা যারা মানুষ ছিল

মারা গেলো ফাঁসিতে

এই খবরে খুশি হইলো

পাড়াপড়শি মাসীতে।

দেশের মানুষ গরু খায়

নিজেরে কয় মুসলমান

এ কথাটা শুনলে যার

চেতনাতে লাগে টান।

বানায় সে আজব তত্ত্ব

কাঁঠালে হয় আমসত্ত্ব।

 ২০শে ডিসেম্বর ২০১৯; ৫টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৬

বাংলাদেশী মন্ত্রী আপনি

 বাংলাদেশী মন্ত্রী আপনি

পাকিস্তানী পিঁয়াজ খান

তাই কি মাথায় গন্ডগোল

নিজে বনেন আইয়ুব খান?

মুক্তিযোদ্ধা দেখলেই তাতে

রাজাকারের গন্ধ পান

নাকি আপনি স্বপ্নে ভাবেন

এটা আজো পাকিস্তান?

মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার

এক তালিকায় নাম লেখেন

রঙিন চশমায় সবাইকে কি

নিজের আপন ভাই দেখেন?

গায়ে পরেন মুজিব কোট

মুক্তিরে কন রাজাকার

গাঁঞ্জা ছাড়েন নইলে দেখবেন

বাঙালি দেয় সাজা কার?

২০শে ডিসেম্বর ২০১৯;৬ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৭

যে করে ভাই ঘৃণার চাষ

যে করে ভাই ঘৃণার চাষ

তারে ধরে মার দে

প্রেমের গাছে নতুন করে

আবার একটু সার দে।

ঘৃণা বাড়লে পাশবতা

বাসা বাঁধে মনে

বাপের হাতে ধর্ষিতা হয়

নিজের আপন কনে।

ধরো, মারো, কাটো, খাও

মানুষ কি হয় সাপের ছাও?

ধরো, মারো বাদ দাও

হাতের ওপর হাত দাও।

মানুষ হলে প্রেম করো

শান্তি সুখের দেশ গড়ো।

২০শে ডিসেম্বর ২০১৯;৭ঃ০০ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৮

যা কাছে নেই ভালবাসা

যার কাছে নেই ভালবাসা

তার কাছে কি প্রেম চাও?

তার তো আছে ঘৃণার পাহাড়

লাগলে কিছু হেম নাও।

ঘৃণা এবং মারামারি

গণতন্ত্রের ভাষা নয়

তবু দেশে এই জিনিসের

সবচে বেশী চর্চা হয়।

বারে বারে পাওয়ার শিখায়

খুনোখুনির পাঠ

তবু তুমি শিখলে না তার

কোন রাস্তাঘাট।

রাস্তায় নামলে তারে ধরে

কেমনে পিটায় দেখো না?

বছর গিয়ে বছর কাটে

কিছু কি তাও শেখো না?

মারের বদল মারতে হয়

মারামারি পারতে হয়।

২০শে ডিসেম্বর ২০১৯;৩ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৯

আমি একজন রাজাকার

আমি একজন রাজাকার

তালিকায়ও নাম ছিল

সবাই জানে যুদ্ধদিনে

আমার কি কি কাম ছিল।

আর্মি আসার আগে পাড়ায়

আমিই খবর দিছিলাম

আর্মিদেরকে বিলের ধারে

আমিই টেনে নিছিলাম।

আমার কামতো পাড়াপড়শি

সবাই জানে কম না

বিপ্লব সাহা নিজেও জানে

আমি তাদের যম না।

আমার নামটা কেমন করে

কোন হারামী বাদ দিল

আদি আসল তালিকাতে

কোন হারামী হাত দিল।

তালিকাটা নয়ছয় করলো

রহিম হইলো রাম

এমন কইরা চার যুগ খাইল

স্বাধীনতার আম।

হায়রে এ কোন দুনিয়া!

আমার পুকুর দখল করলো

কারা এরা খুনিয়া?

২১ডিসেম্বর ২০১৯;২ টা।

No comments

Powered by Blogger.