আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ২২৫০-২২৮২

 


আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫০

হাটুরাম হাটে যায়

হাটুরাম হাটে যায়

খাটুরাম খাটে

ঘাটুরাম একা একা

বসে থাকে ঘাটে।

নাটুরাম নাট খোঁজে

বাড়ি বাড়ি গিয়ে

বাটুরাম ডেকে কয়

আয় করি বিয়ে।

চাটুরাম চেটে খায়

মালিকের জুতো

ভাটুরাম ডেকে বলে

দেখ চেয়ে ভূতো।

এইসব দেখে যার

লাগে কাতুকুতো

চল যাই গিয়ে দেই

তার পেটে গুতো।

২১ডিসেম্বর ২০১৯;রাত ৯ঃ০০ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫১

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

অলি গুনগুন গায়

এমন সময় তুই দূরে ক্যান

আয়রে কাছে আয়।

একটু পরে ফুটবে আলো

আঁধার হবে দূর

আলোর সাথে আসবে আরো

নতুন একটা ভোর।

একসাথে চল মসজিদে যাই

দিচ্ছে আযান, আয়

নামাজ শেষে ভোরের বাতাস

মাখি নিজের গায়।

ভোরের বাতাস হতাশ মনে

আশার আলো আনে

মনে সুখের বীজ বুনে দেয়

পাখির কলতানে।

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯; ভোর ৫টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫২

টিট ফর টিট ভাই

টিট ফর টিট

হিট ফর হিট ভাই

হিট ফর হিট।

কিট কিট কিট ভাই

কিট কিট কিট

এইটাই বাকী ভাই

এইটাই নীট।

বিট ফর বিট ভাই

বিট ফর বিট

হিট ফর হিট ভাই

হিট ফর হিট।

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৩

আমি মানুষ, শয়তান না

আমি মানুষশয়তান না

ভুল তো আমার হইবেই

ভুল হইলে অন্যেও তো

ভাল মন্দ কইবেই।

যে আমারে ভালোবাসে

আমার ভুল সে ধরবেই

আমি যেন সংশোধন হই

চেষ্টা সে তো করবেই।

ভুল ধরলেই শত্রু হয় না

মিত্রও ভুল ধরবে

আমার ভালোর জন্য সে

ভালবেসেই লড়বে।

তোষামুদে চাটুকার

কবে হইছে বন্ধু কার?

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯; ১টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৪

সব খেলাই নিয়ম আছে

সব খেলারই নিয়ম আছে

নিয়ম মেনে খেলতে হয়

গরু দুইটা আগে দিয়া

লাঙল ধরে ঠেলতে হয়।

খুনী জেনেও সঙ্গে রেখে

মন্ত্রণালয় গড়তে হয়

নইলে দাদা নিজের ভুলেই

বিপদ জালে পড়তে হয়।

কঠিন খেলা রাজনীতিটা

কত কিছু সইতে হয়

শত্রু জেনেও একই সঙ্গে

আলোচনায় বইতে হয়।

সুযোগমত তারেই আবার

গলায় চেপে ধরতে হয়

এটাই খেলার নিয়ম দাদা

ভুল করলে মরতে হয়।

এই জামানায় এতো সরল

মানুষ ধরায় থাকতে নাই

ভালো মানুষ যারা তাদের

মাটির ওপর রাখতে নাই।

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯; ২ট।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৫

যদি দেখো সাপের ছাও

তারে পায়ে পিষে যাও।

যদি দেখো খুনী

তারে পাঠাও আনতে খবর

কোথায় সাগর রুনী।

যারা তোমার বেতন খায়

তাদের বলো, পথে আয়।

যারা খাটে স্বৈরাচারের

আজো লেজুড় কামলা

জনগণের মিছিল দেখলেই

করে বসে হামলা।

তাদের লাগা উল্টো মার

বল, এবারে সামলা।

মারের বদল মার চাই

জানোয়ারের হার চাই।

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯৪টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৬

এতো দিনেও শিখলি না

এতদিনেও শিখলি না

কেমন করে মারতে হয়

কেমন করে ভয়ের চারা

একটু একটু নাড়তে হয়।

অযথা মার খেয়ে গেলি

মিছিলে গান গেয়ে গেলি।

বুঝলি নাতো বরই পাকলে

তারপরে গাছ নাড়তে হয়।

কাঁঠাল পাকলে গাছে উঠে

একটা একটা পাড়তে হয়।

আমরা মাত্র দশ পার্সেন্ট

তারপরেও তো হারি না

আমরা মারি ঠান্ডা মাথায়

এমনি তো আর মারি না।

আগে খেলা জানতে হয়

তারপর কোটে নামতে হয়।

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৭

ম্যাসেঞ্জারে একে একে

ম্যাসেঞ্জারে একে একে

কতো বলবো ভাই

আমার লেখা শেয়ার করো

কোন দাবী নাই।

কপি করো, শেয়ার করো

যা ইচ্ছা তাই করো

গণতন্ত্রের চলছে লড়াই

যেমনে পারো লড়ো।

আমার লেখা যদি কভু

মনে ধরে তবে

দাও ছড়িয়ে বন্ধু সুজন

পড়ুক লেখা সবে।

আমার কোন দাবী নাই

দুধ যে খাবো গাভী নাই।

গান গেয়ে যাও

লেখা ছড়াও

যতো খুশী পড়ো

পারো যদি আমার জন্য

একটু দোয়া করো।

২২শে ডিসেম্বর ২০১৯; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৮

হায় কি শোনলাম

হায় কি শোনলাম,

কওয়া যায়?

নাকি এসব সওয়া যায়?

পঞ্চাশ বছর গবেষণায়

মুক্তি হইলো টিপু, রায়।

রাজাকাররা বসে বসে

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা খায়।

দলীলমূলে যারা আজো

ফাঁসির দড়ি শাস্তি পায়

কেমন করে তারা আজো

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা খায়?

মুক্তিযোদ্ধা নাম ভাঙিয়ে

হায়রে পুরাণ রাজাকার

কারে করলি দোষীরে তুই

হইলো বলতো সাজা কার?

এতো বছর পার করলি

লিস্টি কেনো করলি না

রণাঙ্গণে যাসনি বলে

রাজাকার তুই ধরলি না?

দেখতে হলো এই শেষে

রাজাকার রয় বীর বেশে?

এই দুঃখ কই রাখি

কোন কাপড়ে মুখ ঢাকি?

২৩শে ডিসেম্বর ২০১৯রাত ৩ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৯

নূরু যখন মনে নাই

নূরু যখন মরে নাই

শোক জানাতে যাও

গিয়ে দেখো পাবলিকের

সিম্পেথি নি পাও।

কতবার যে এটেম্প নিলা

ছাগল নাকি সব

ধর, মার বলে যদি উঠে

নয়া রব?

সারা বাংলার ছাত্র সমাজ

যদি ক্ষেপে যায়

বলতে পারো লীগের তবে

কি হবে উপায়?

যেটা খেলতে পারো না

সেটা খেলতে যাও ক্যান

চুপ বেতমিজ, চুপ থাকো

মুখে আবার রাও ক্যান?

মরা ষাঁড়ের দাম নাই

তোদের আমার কাম নাই।

২৩শে ডিসেম্বর ২০১৯;রাত ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬০

থাকতে বললাম, থাকলি না

থাকতে বললাম, থাকলি না

আমার কথা রাখলি না

আম পাকলো, জাম পাকলো

তুই তো তবু পাকলি না

পাখির মত ডাকলি না

পথের পরে পথ বাঁকলো

তুই তো মোটে বাঁকলি না।

স্বপ্ন মনে আঁকলি না।

বাজারে চল, কিন্যা দিমু

তিরিশ টাকার সুখ

পিঁয়াজের দাম আড়াইশো

কে পায় তাতে দুখ?

দিনের পরে দিন চলে যায়

যুগের পরে যুগ

আজকে শুনি নতুন খবর

কেমনে দেখাই মুখ।

যুদ্ধে যারা যায়নি তারা

মুক্তিযোদ্ধা হয়

স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া

মুক্তিযোদ্ধা নয়।

রাজাকার হয় এমপি মন্ত্রী

মুক্তিযোদ্ধা জেলে

হায় ভগবান, কোথায় বসে

কোন খেলা কে খেলে!

দমদমাদম দম

ইন্দুরে খায় গম

গিরস্তে খায় আলু

দেশ যে চালায় তারা নাকি

মুক্তিযোদ্ধার খালু।

২৩শে ডিসেম্বর ২০১৯সকাল ১০টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬১

কারে যে কি কই!

কারে যে কি কই!

কারে যে কি কই!

শরবত ভাইবা খাইতে আছে

হিজলতলীর দই।

রঙহেডেডের তকমা লইয়া

বেডারে কয় সই।

কলাই ক্ষেতে মই দেয় ভাইবা

দেশজুড়ে দেয় মই।

হায়রে,

কারে যে কি কই!

রঙহেডেডের মইয়ের তলে

পাবলিক পড়ে কান্দে

দেশের যত সুখ শান্তি

উড়াল দেয়রে চান্দে।

খুনীরে কয় যা যা বাইরে

হুজুর ধইরা বান্ধে।

খুনখারাবি জোগাড় কইরা

খুনখিচুড়ি রান্ধে।

হায়রে,

রাজাকার হয় মুক্তিযোদ্ধা

মুক্তি পড়ে ফান্দে।

কারে যে কি কই!

অবাক চেয়ে রই।

নায়ের মাঝির ভিজা হাতে

রঙবেরঙের বই।

বাতাস ছাড়াই এখন শুনি

ধর্মের কলটা নড়ে

দেশের যুবক পায় না চাকরী

রাহাজানি করে

বোকারা সব দলে দলে

ঢুকে গুমের ঘরে।

রাজা সম্রাট পেট ফাটিয়া

ক্যাসিনোতে মরে।

হায়রে,

পথেঘাটে ইজ্জত গড়ায়

কান্দে করুণ স্বরে।

অবাক চেয়ে রই

কারে যে কি কই!

আগে খাইতো ডাল ভাত লোকে

এখন ডেবের খই।

কারে যে কি কই!

২৩শে ডিসেম্বর ২০১৯১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬২

মিটিং মিছিল বাদ দে

মিটিং মিছিল বাদ দে

আসল কামে হাত দে

নয় বাঙালী জাত দে

যে চায় তারে রাত দে।

এরে মারবে, তারে মারবে

আর না

মারতে এলে তারেও তুই

মার না।

মার হয়েছে, হার হয়েছে

আর না

এখন শুধু জয় আসবে

হার না।

কুকুর এলে তারে মুগুর

মারতে হয়

ডাল খিচুড়ি রাঁধতে হলে

নাড়তে হয়

কাজে নামলে সেই কাজটা

পাড়তে হয়

মারতে এলে তারেও ধরে

মারতে হয়।

যুদ্ধে মায়া করতে নাই

বোকার মত মরতে নাই।

লড়াই লাগলে লড়তে হয়

নয়তো নিজের মরতে হয়।

২৪শে ডিসেম্বর ২০১৯ভোর ৫ঃ০০ টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৩

গাছের যদি পাতা নড়ে

গাছের যদি পাতা নড়ে

বুঝবি আজো বাতাস বয়

ছাত্রসমাজ মার খায় মানে

সইবে না আর পরাজয়।

ছাত্রের গায়ে হাত দিলে

গদী কারো বাঁচে না

ছাত্র দেখলে আইয়ুব খানের

অস্ত্রও আর নাচে না।

কই গেলরে এনএসএফের

অস্ত্রবাজির সে দিনকাল

মরলো নিজে, সঙ্গে গেল

রক্তেভেজা পিঠের ছাল।

রংবাজি আর করিস না

শখ করে কেউ মরিস না।

২৪শে ডিসেম্বর ২০১৯রাত ৯ঃ০০ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৪

হীম বাতাস আর বক সাদা কুয়াশা

হীম হীম বাতাস আর বক সাদা কুয়াশা

এসো এই ভোরে করি সকলেই সু আশা।

অচিরেই মিশে যাবে দুঃখ, কষ্ট, ক্লেশ

সুশাসনে ভরে যাবে দেশ, মহাদেশ।

কেটে যাবে প্রকৃতির এই দুর্যোগ

ভেসে যাবে মানুষের সব মনরোগ।

ভালোবাসা মমতায় ভরে যাবে ধরা

প্রেম দিয়ে সকলের হবে মন গড়া।

ধনীরাই গরীবের যাবে কুঁড়েঘরে

খেজুরের রস খাবে সবে মন ভরে।

সকলেই আমরা সকলের তরে

এই মনোভাব রবে সকলের স্বরে।

হীম হীম বাতাস আর কুয়াশার ভোর

এ সময় মনে পড়ে তোর কথা, তোর।

২৫শে ডিসেম্বর ২০১৯ভোর ৬ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৫

হায় বিচারের বাণী

হায় বিচারের বাণী

আমার মত তুই কি এতীম?

নাই কি দাদী নানী?

তাই কি টানিস বদমেজাজী

মহাজনের ঘানি?

ঘন্টায় ঘন্টায় তাই কি খাস

ঠান্ডা ঠান্ডা পানি?

অ বিচারের বাণী।

অ বিচারের বাণী

তোদের কথায় উঠতো বসতো

আগে রাজা রানী

কে নামালো বলতো তোদের

ওখান থেকে টানি।

কেন এখন খাওয়া লাগে

ঘন্টায় ঘন্টায় পানি?

অ বিচারের বাণী।

অ বিচারের বাণী

তুইতো এখন সাহেব নোস আর

সবই আমি জানি

কম দুঃখে কি টানিস তুই

মহাজনের ঘানি

কোন কিছু বললে বলিস

আমার চোখে ছানি

কী যে হইছে খালি পড়ে

চক্ষু থেকে পানি।

অ বিচারের বাণী।

অ বিচারের বাণী

অনেক হইছে, ছাড় না এবার

খাওয়া রঙিন পানি।

২৫শে ডিসেম্বর ২০১৯;বিকাল ৪ঃ০০ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৬

একটা খোসা সরিয়ে দিলে

একটা খোসা সরিয়ে দিলে

আরেক খোসা আসবে

এই খোসাও আগের মতই

দন্ত মেলে হাসবে।

পিঁয়াজ বলো, রসুন বলো

খোসায় খোসায় ভরা

পিঁয়াজ রসুনের দেহখানা

খোসা দিয়েই গড়া।

লিচুর মজা খেতে হলে

পিঁয়াজের প্রেম ছাড়ো

সময় মতো পাকা লিচু

নাও না পেড়ে আরো।

যেমন তুমি কর্ম করবে

তেমন পাবে ফল

চোরা গেলে চোরা আসবে

থাকলে চোরের দল।

কর্ম হবে সেটাই যেটার

রাখবে মনে ইচ্ছা

শেষ হলো যে কথা বলা

শেষ হলো সব কিচ্ছা।

২৬শেম ডিসেম্বর ২০১৯; ৫টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৭

ভাবনা আসে মনে

ভাবনা আসে মনে

মানুষ কেন লোকালয়ে

পশু কেন বনে?

আমি কেন পুরুষ মানুষ

লতা কেন কনে?

ভাবনা আসে মনে।

খুবই সঙ্গোপনে।

ভাবনা আসে মনে

জানি না তার জবাব তাই

জিগাই জনে জনে।

মানুষ কেন মানুষ মারে

বৃথাই অকারণে?

কাউকে মারে রণাঙ্গনে

কাউকে সঙ্গোপনে?

ভাবনা আসে মনে

যে লড়ার সে লড়েই যাবে

হাত ধরার যে ধরেই যাবে

গড়ার যারা গড়েই যাবে

ভাগ্যে থাকলে লেখা

তোমার সাথে আমার হবে

জানি আবার দেখা।

ভাগ্যে থাকলে পাইতে হয়

যমের বাড়ি যাইতে হয়।

২৬শে ডিসেম্বর ২০১৯;১০টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৮

সবাই স্বপ্নে দেখি স্বপ্নরাঙা দেশ

চলো সবাই স্বপ্নে দেখি স্বপ্নরাঙা দেশ

চারিদিকে সুখ আনন্দ মুগ্ধ পরিবেশ।

যার মনে যা দুঃখ ছিল সব হয়েছে শেষ

কষ্টরা সব পালিয়ে গেছে সবাই নিরুদ্দেশ।

লোকালয়ের মায়া ছেড়ে মানুষ থাকে বনে

সবাই থাকে পাখির মত কেউ লড়ে না রণে।

কেউ গড়ে না ধনের পাহাড় শুধু অকারণে।

লোভ লালসা খুঁজে দেখ নেই যে কারো মনে।

দলের জন্য লড়ে না কেউ, হয় না বাড়াবাড়ি

ধর্মে ধর্মে হয় না এখন, আর তো মারামারি।

মানুষ এখন প্রেমের টানে করছে জড়াজড়ি

কচুর চেয়ে কমদাম আজ গিনিসোনার ভরি।

চলো সবাই স্বপ্ন দেখি, স্বপ্নরাঙা মনে

আমরা উড়ি নিলাকাশে সাদা মেঘের সনে।

২৬শে ডিসেম্বর ২০১৯;১২টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৯

কে কয় তোমার মরণ নাই

কে কয় তোমার মরণ নাই

পুরান কথা স্মরণ নাই?

মরার কোন গড়ন নাই

এর তো কোন নড়ন নাই

রক্তরাঙা বাংলাদেশে

আর তো কোন বরণ নাই।

জাতির পিতা মারবে ডালিম

মঞ্জু মারবে জিয়া

আল্লাহ দিল জীবন তুমি

খেলো জীবন নিয়া।

তোমার আসে হাসি

নিজামী পায় ফাঁসি

তুমিওতো একদিন হবে

নিজেই কবরবাসী।

কেউ থাকবে না ধরাতে

মরণ সবার বরাতে

কিসের করো গর্ব তুমি

ওগো নগরবাসী

স্বার্থের টানে পাপ করে যাও

পাপ তো সর্বনাশী।

পাপের ফান্দে পড়ো না

মন্দ পথে লড়ো না।

২৬শে ডিসেম্বর ২০১৯;২ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭০

আমরা শিশু আমরা কিশোর

আমরা শিশু আমরা কিশোর

আমরা নবীন বীর

স্রষ্টা ছাড়া কারো কাছে

নোয়াই না এ শির।

আমরা নবীন বীর।

স্রষ্টার করি আরাধনা

গাই স্রষ্টার গান

আমরা জানি তাঁর হাতেই

বাঁধা সবার প্রাণ।

তাঁর কাছেই তো ফিরে যাবো

আমরা সকল বীর।

উঁচু রাখি শির।

এ জীবনের কাজের হিসাব

দিতে হবে তাঁরে

তাই সুপথে চলতে শপথ

করি বারে বারে।

মন্দ এলে দাঁড়াই

মন্দটারে তাড়াই

ভাবি ধরায় আমরা সবাই

অচিন মুসাফির

আমরা নবীন বীর

উঁচু রাখি শির।

২৬শে ডিসেম্বর ২০১৯৩টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭১

খবর বেশী ভালা না

খবর বেশী ভালা না

ওরা, মামা, খালা না।

ওরা সবাই চান্দাবাজ

ভাবলাম

সারবো টাকায় কাজ।

টাকা গেল, হামলা হলো

নূরু তাতে মরলো না

পথের কাঁটা পথেই রইলো

পথের কাঁটা সরলো না।

হাতি ঘোড়া মারা গেল

ইঁদুর তাতে মরলো না

নেট কেটে সে চলে গেল

নেটে সে তো পড়লো না।

কাজ হলো না হামলায়

জড়াও এবার মামলায়

দেখবো আমি নূরু বেটা

কয়দিক একা সামলায়।

হেরে গেল যারা তারা

ছিল সেয়ান চান্দাখোর

এবার দেবো সামনে ঠেলে

যারা এখন বেতন খোর।

তোর থাকুক না জনতা

আমার আছে ক্ষমতা।

দেখি এবার কে পারে

কে জিতে আর কে হারে?

২৭শে ডিসেম্বর ২০১৯;৬ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭২

সই

সই,

আজকে তোরে পরাণ খুলে

মনের কথা কই।

কেউ যদি ভাই কাছে আসে

ভালবাসি কই।

সই,

তোকেই শুধু কই

নিজকে শুধু ভালবাসি

অন্য কাউকে নই।

এই কথাতো যায় না বলা

তাইতো মিছে কই।

রাগ করলি সই?

আমি বোকা বলে দিছি

অন্য কেউ তা বলে না

সবাই চলে সরল পথে

আসলে কেউ চলে না।

সবাই করে ধান্ধাবাজি

বামুন শেখ মোল্লা কাজি।

আসল কথা শোনরে সই

পরাণ খুলে কেউ বলে না।

সবাই চলে স্বার্থ বুঝে

সোজা তো কেউ চলে না।

২৭শে ডিসেম্বর ২০১৯৮টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৩

শীতে হবে জবুথবু

শীতে হয়ে জবুথবু

হীরালাল কি আইলো?

পিটপিটিয়ে ঘোলা চোখে

সে কি সত্যি চাইলো?

বললাম, কি রে, হীরা না তুই?

তোর দশা তো কাহিল রে।

বলল মামা, কী করমু কও,

রাজা হইলে জাহিল রে।

প্রজার দশা এমনটি হয়

দুঃখ কারে কইমু

কপাল ভরা দুঃখ ছিল,

কত দুঃখ সইমু!

হায়রে তোর ত্যাড়া কথা

আজো বুঝি গেলো না

কতো এলো সাপের ছাও

তোর দুঃখ কেউ খেলো না।

মামু,

কার অধীনে ছিলা তুমি

রাজাকার কও কারে?

মুক্তিযোদ্ধার তালিকাতে

মুক্তি কি ডিম পাড়ে?

সরকার আসে সরকার যায়

দোষটা দিমু কারে

ঘুমাইলে সেই ফাঁকে মামা

রোজ কি মুক্তি বাড়ে?

নিজে, মামা, চাচা, ভাই

কে কে ছিলা মুক্তিতে?

গোষ্ঠী শুদ্ধা সনদ নিলা

কওতো কে কোন যুক্তিতে?

রাইফেল হাতে ধরো নাই

সবাই জানে, লড়ো নাই।

কে না জানে সে দিন তুমি

খাইতা পাকি ভাতা

আজকে বলো, মুক্তি আমি

সনদ আমার ছাতা।

ছাতার নিচে থাকি তাই

আজো ঝড়, বৃষ্টি নাই।

২৮শে ডিসেম্বর ২০১৯; ৫টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৪

চতুর শিয়াল বসে বসে

চতুর শিয়াল বসে বসে

কোন খিঁচুড়ি রান্ধে

চুলার ধারে বসে কেনো

বীর বাঙালি কান্দে?

কে কে নাকি আনতে গেছে

তালিকাটা, চান্দে

সেই যে গেছে আর ফিরে না

পড়লো এ কোন ফান্দে!

আজকে শুনি মুক্তি মানে

পাকিদের যে ভাতা খায়

রাজাকার হয় তারা যারা

দেশের জন্যে মরতে যায়।

কী অসাধারণ যুক্তি

রাজাকার হয় মুক্তি।

মুক্তিরা হয় রাজাকার

তালিকার এ কি বাহার।

এই খিঁচুড়ি খাও

আরেক চামুচ নাও।

২৮শে ডিসেম্বর ২০১৯

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৫

মেজর জিয়া রাজাকার হয়

মেজর জিয়া রাজাকার হয়

রাজাকার হয় জলিলও

এই ফর্মুলায় পাল্টে যায়

মুক্তিযোদ্ধার দলিলও।

মজা মারে আলালে

বর্ণচোরা দালালে।

আগে খেতো পাকিভাতা

এখন খায়, লাকী ভাতা।

দেশ ভরেছে বাটপারে

দেখবি,

চল যাই ঘাট পাড়ে।

মাঝি আছে নৌকা নাই

নদীর ওপাড় কেমনে যাই?

২৮ডিসেম্বর ২০১৯৬ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৬

বন্দুক যদি খাঁড়া হয়

বন্দুক যদি খাঁড়া হয়

পিন্ডি ভয়ে যাইতে হয়।

অস্ত্রের মুখে তুমি গেলে

তাতে দোষ হয় না

আমি ভয়ে গদি নিলে

কান্দে বসে ময়না।

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস কি

আমি যুদ্ধ করি নাই?

তুমি ছিলে বন্দী যেদিন

আমি লড়াই লড়ি নাই?

লড়াই করে দেশটা স্বাধীন

করলাম যেদিন আমি

অমনি দেখি ইন্দিরাদি

হইলো তোমার মামী।

মুক্তি এসে মারলো তোমায়

বিশ্বজগত জানে

কে জানে না যুদ্ধের নয় মাস

ছিলাম কে কোনখানে?

তুমি ছিলে পিন্ডিতে আর

আমি ছিলাম দিল্লি

কি লাভ বলো সেসব নিয়ে

করে চিল্লাচিল্লি?

তারপর তুমি জাতির পিতা

আমি রাজাকার

এখন থাকি কবর দেশে

জিত হলো কও কার?

২৮শে ডিসেম্বর ২০১৯১২ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৭

চার কুতুবের কথা কিরে

ভুইলা গেল জাতি

যারা ছিল পিঁপড়া, মশা

তারা এখন হাতি।

স্বাধীনতার পতাকাটা

প্রথম যেজন তুললো

তার কথাটা এ জাতি হায়

কেমন করে ভুললো!

রব সিরাজের কুতুবগিরির

আজকে কোন দাম নাই

স্বাধীনতার নাটকে আজ

তাদের কোন নাম নাই।

বাঘা কাদের মগা হয়

উদাস মনে তাকিয়ে রয়।

চার কুতুবের কথা কিরে

ভুইলা গেল জাতি

যারা ছিল পিঁপড়া, মশা

তারা এখন হাতি।

২৮/১২/১৯।১টা

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৮

নূরু আমায় চিনে নাই

নূরু আমায় চিনে নাই

চিনছে তোদের ইনু ভাই

আর চিনছে মতিয়া দি

তার কি বাড়ি কটিয়াদি?

যারা আমায় চিনে নাই

তারাতো কেউ সীনে নাই।

এমনকি ডাস্টবিনে নাই

সব হয়েছে ফারদাফাই।

মার খেলে কয়, মাগো মা

এবার ছেড়ে দে গো মা।

মারের ওপর অষুধ নাই

তুই মা আমার পেটের ভাই।

হামলা দিলাম, মরলি না

মামলা দিলাম, সরলি না।

তিন মাইল লম্বা মিছিলে

আমার গদির কী ছিলে?

২৮শে ডিসেম্বর ২০১৯; ৪টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৯

সরি দোস্ত, মাফ করে দে

সরি দোস্ত, মাফ করে দে,

আর হবে না,

আর না

পিটন খাইলে সত্যি সত্যি

ব্যথা লাগে

কার না?

তয় মিছিলে কেন যাস?

বার বার ব্যথা কেন পাস?

পারলে তুইও মারের বদল

সমান সমান

মার না।

মিটিং মিছিল কম করিসনি,

নেত্রী গেল

জেলে

মায়ের জন্য কান্দে বসে,

লক্ষ লক্ষ

ছেলে।

কাঁদলে কোন লাভ হয়?

কার সাথে কার ভাব হয়।

স্বৈরাচার বল জনগণের

চোখের জল কি

গেলে?

২৮শে ডিসেম্বর ২০১৯; ৪টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮০

বেলতলাতে কয়বার যায়

বেলতলাতে কয়বার যায়

ন্যাড়া হলে একবার যায়

বোকা হলে বারবার যায়।

নির্বাচনের ধোকা খায়।

দিনের ভোট সব রাতে হয়

তাতে জাতির শিক্ষা হয়?

চলবে এবার ই ভি এম

জিতবে আবার বিবি মেম।

মার খেয়েছে নূরু ভাই

এ নয় মারের শুরু ভাই।

ভয় পেয়েছে স্বৈরাচার

তাই ভয়ে সে দিচ্ছে মার।

ভয়টা পেলে জনগণ

জমতো তীব্র আন্দোলন

যে পায় মনে বেশী ভয়

সে পায় রণে বেশী জয়।

এতো মার মারলো তবু

ভয়তো তুই পেলি না

স্বৈরাচারকে মারতে তুই

সদলবলে গেলি না।

২৯ডিসেম্বর ২০১৯;৮টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮১

চাচার বাড়ি মাচা নাই

চাচার বাড়ি মাচা নাই

মুরগী বন্দীর খাঁচা নাই।

তাই চিলে খায় মুরগী ছাও

তুমি কেন খাইতে চাও?

চাচা খায়রে আলু পোড়া

বসতে দেয় বেতের মোড়া।

চড়তে দেয় নবীন ঘোড়া

সিদ্ধি খায় থোড়া থোড়া।

চাচার বাড়ি খিদিরপুর

সঙ্গে রাখে ঝোলা গুড়

খিদা লাগলে একা খায়

এদিক ওদিক ফিরা চায়।

চাচার নিজের দাড়ি নাই

নিজের বউয়ের শাড়ি নাই।

টাকা কাড়ি কাড়ি নাই

ফিরবে বাড়ি, গাড়ি নাই।

২৯ডিসেম্বর ২০১৯;বিকাল ৬ টা।

 আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮২

যা কিছু ভাই করি আমরা

যা কিছু ভাই করি আমরা

ভালো কিংবা মন্দ

সবই দেখেন মাবুদ আল্লাহ

তিনি তো নন অন্ধ।

তাঁর কাছ থেকে এসেছি ফের

তার কাছেই তো যাবো

তাঁর কাছ থেকেই ভাল-মন্দের

ফলাফলও পাবো।

তাঁর কাছে তো কোন কিছু

গোপন কভু রবে না

বিশ্বের সবাই ভুল করলেও

তাঁর ভুলতো হবে না।

গভীর রাতে একলা ঘরে

করলে গোপন পাপ

নেবে না সে পাপের বোঝা

নিজের আপন বাপ।

নিজের দেহের অঙ্গ সে দিন

কোন পাপই ঢাকবে না

পাপের বোঝা নেয়ার মত

আপন কেহ থাকবে না।

হাশরের সে কঠিন দিনে

নিজের পাপের ভার

বইতে হবে নিজের জেনে

জীবন করো পার।

যা কিছু ভাই করি আমরা

মন্দ ভালো সব

সবই দেখেন এ পৃথিবীর

মালিক, প্রভু, রব।

এসব কথা কম বা বেশী

আমরা সবাই জানি

এসো না সে কথা আমরা

জীবন ভরে মানি।

২৯ শে ডিসেম্বর ২০১৯;১১টা

No comments

Powered by Blogger.