আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়াঃ ২২২৪-২২৩৬
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৪
ওগো রঙিন প্রজাপতি
ওগো রঙিন প্রজাপতি
কোথায় পেলে রঙিন পাখা
চির চঞ্চলা গতি
ওগো প্রজাপতি।
তুমি ঘুরো ফুলে ফুলে
ময়ূর ঘোরে পেখম তুলে
ডাকলে মেঘলামতি
মানুষ কাটায় ভুলে জীবন
জেনেও পরিনতি।
ওগো প্রজাপতি।
আকাশ বাতাস সাগর নদী
যাঁর নাম গায় নিরবধি
বনবনানী পশু পাখি
সবাই যাঁরে চায়
তাঁর ইশারায় জীবন কাটায়
পাহাড়, প্রজাপতি।
তিনিই মহামতি।
ওগো প্রজাপতি।
সৃষ্টি জগত তারেই ডাকে
ভুবন ডাকে আল্লাহপাকে
ওগো জগতপতি
কেউ ভুলে না, শুধু ভুলে
অধম মানবজাতি।
ওগো প্রজাপতি
বলোতো কে গড়তে পারে
একটি প্রজাপতি।
ওগো প্রজাপতি।
তোমার দানের নাই সীমা নাই
তোমার দানের নাই সীমা নাই
তাইতো প্রভু তোমার গুণ গাই
আমার বাঁচা আমার মরা
সবই তোমার জন্য
ধন্য আমি ধন্য
ওগো ধন্য আমি ধন্য।
যাঁর উছিলায় বেঁচে আছি
যাঁরটা আজো খাই।
যাঁর রহমের কূল কিনারা
ত্রিভুবনে নাই।
তাঁরই গুণগান গাইরে আমি
তাঁর গুণগান গাই।
আমার বাঁচা আমার মরা
সবই তাঁরই জন্য
ধন্য আমি ধন্য
ওগো ধন্য আমি ধন্য।
পাহাড় নদী সাগর আকাশ
বনবনানী উতল বাতাস
সবই যাহার দান
আমার সুখের জন্য এসব
পাঠান মহীয়ান।
তাঁরই গুণগান গাইরে আমি
তাঁর গুণগান গাই।
আমার বাঁচা আমার মরা
সবই তাঁরই জন্য
ধন্য আমি ধন্য
ওগো ধন্য আমি ধন্য।
তোমার দানের নাই সীমা নাই
তাইতো প্রভু তোমার গুণ গাই
আমার বাঁচা আমার মরা
সবই তোমার জন্য
ধন্য আমি ধন্য
ওগো ধন্য আমি ধন্য।
আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৬
দেশতো চালায় আমলা
দেশতো চালায় আমলা
পাবলিকরা সব কামলা।
কেউ যদি কয় ফোঁস
তখন বাড়ে রোষ।
তখন চলবে মামলা
পারলে ঠেলা সামলা।
যদি না হোস কাত
দেখবি আঁধার রাত।
চলবে তখন হামলা
রক্তে ভরবে গামলা
বুলেট গড়বে দেশ
সুন্দর বাংলাদেশ।
এই ফর্মুলা অনন্য
লোকে বলে, আহ ধন্য।
যে কয় এরে জঘন্য
বান্দা সে যে নগন্য।
জঙ্গী কইয়া আলেম ধরলাম
জঙ্গী কইয়া আলেম ধরলাম
যেনো ওরা শান্তি পায়
সবাই খায় কামাই কইরা
তারা যেনো মাগনা খায়।
কুঁড়েঘরের হুজুরগুলো
দালান ঘরে থাকে
কাজকাম নাই সারাদিন
বসে আল্লাহ ডাকে।
শ্বশুরবাড়ির আদরযত্ন
সবই তারা পায়
কী চমৎকার ডান্ডাবেড়ী
জেওর পরে পা'য়।
শীতে গরম তোষক ওরা
একাই তিনটা পায়
শোকর কি নাই হুজুরগুলোর
আর কি ওরা চায়?
চোর ডাকাতের ভয় নাই ওদের
আরামে দেয় ঘুম
দখিন হাওয়া আলতো এসে
আঁকে গায়ে চুম।
আমার মনে শান্তি নাই
ভয়ে কাটে রাত
তিরিশ জনে চেখে দেখে
বিষমাখা কি ভাত?
রাজা মরে বিষে নয়তো
আপনজনের হাতে
রাজা মরে গুলি খেয়ে
নয়তো অপঘাতে।
কেউবা মরে জলে ডুবে
মশার দংশন খেয়ে
কেউ বাঁচে না, রাজা রানী
রাজার ছেলে মেয়ে।
১৫ডিসেম্বর ২০১৯; রাত১টা
কথাতে কি মাথা ফাটে?
কথাতে কি মাথা ফাটে?
মাথায় বাড়ি দিতে হয়।
ঝগড়াঝাটি কবে শোনছো
ঠান্ডা মাথায় হীতে হয়?
ভদ্রলোকের কাম কি দেশে
ভদ্রতা কি খাওয়া যায়?
সাহস নিয়ে ঠেক দিলে ভাই
দুটো টাকা পাওয়া যায়।
মেয়ের জন্য বর কি খোঁজ?
জামাই খোঁজ পুলিশে
নয়তো খোঁজ তাগড়া পোলা
হোক না ঘাটের কুলি সে।
শীতের দিনে এসির চেয়ে
কম্বল খোঁজে বুদ্ধিমান
ঝগড়া লাগলে ইমামসাব না
খুঁজতে হয় কে শক্তিমান।
আগের দিনে দেশ চালাতো
জ্ঞানী, গুণী, বুদ্ধিমান
এখন নাকি চালায় দেশ
যারা বেশী সিদ্ধি খান।
দেশ দুনিয়া তার
জোর আছে ভাই যার।
হোক না তিনি ঈমানদার
হোক না তিনি স্বৈরাচার।
নীতিকথার কাম নাই
ভালো লোকের দাম নাই।
ভোট ডাকাতির ডাকাতদল
করলে কায়েম সরকার
নাচবে তখন মস্ত চোরা
এইতো তাদের দরকার।
তারা করবে শেয়ার মার্কেট
ব্যাংকের ভোল্টে চুরি
চোর ডাকাতে মিলেমিশে
বাড়াবে নিজ ভুঁড়ি।
শোনেন সোনার বাংলাদেশ
চোর ডাকাতে করবে শেষ।
একাত্তুরের ষোল
একাত্তুরের ষোল
কেমনে এদিন ভোল।
চিন্তা করে দেখোতো ভাই
কে ছিল কার কোল?
কে কে ছিল পিন্ডিতে আর
কে কে ছিল দিল্লী
বিজয়ের সে শুভলগ্নে
কে কার সাথে মিললি।
মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক
ভাল কে তারে বাসে নাই।
মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি
রেসকোর্সে ক্যান আসে নাই।
বিজয়ের এ খুশীর দিনে
মনে পড়ে তারে
মনে পড়ে তাদের যারা
লড়লো বারে বারে।
বিজয় আসে বিজয় যায়
বিজয় আসে বিজয় যায়
ছেলের জন্য কান্দে মায়।
ভাইয়ের জন্য বোন কান্দে
গিন্নী বসে শোক রান্ধে।
এতটা দিন পার হইলো
হয়নি শহীদ তালিকা
মায়ের দুঃখ মায় বুঝে
কেমনে বুঝবো বালিকা।
যাদের রক্তে স্বাধীন দেশ
তার তালিকার খবর নাই
বাংলা মায়ের বর্ণমালার
আজো জের জবর নাই।
বিজয় আসে বিজয় যায়
স্মৃতিসৌধে ফুল গড়ায়।
আজো ঝরে মায়ের ঘাম
কোন খাতাতে ছেলের নাম?
আমার বাবা মারা গেছে
আমার বাবা মারা গেছে
তোমার বাবা মরে নাই
তোমার বাবার ছবি ঘরে
আমার বাবার ছবি নাই।
বাবা চাচা কে কে শহীদ
তারতো কোন লিষ্টি নাই
তারা এখন চান্দের মেহমান
তাদের কোন ইস্টি নাই।
কোন জেলাতে কে কে মরছে
কোন বাড়ির কে শহীদ হইছে
কে বলো তার খবর নেয়
বড় বড় নেতা এখন
স্মৃতিসৌধে পুষ্প দেয়।
বাবার রক্তে দেশ হইছে
তুমি বলো বেশ হইছে
শহীদসেনা তিরিশ লাখ
তাদের খবর গোপন থাক।
বাংলাদেশে সবই আজব
বাংলাদেশে সবই আজব
আজবের তো অন্ত নাই
রাজাকারের লিস্টি আছ
শহীদ সেনার লিস্টি নাই।
মুক্তিযোদ্ধা ফান্দে পড়ে
শহীদেরা চান্দে যায়
গরুতে খায় টেংরা পুটি
তেলাপোকা ইলিশ খায়।
স্বাধীন দেশে রাজাকার নয়
প্রথম বন্দী মুক্তি হয়
মেজর জলিল যুদ্ধ করে
জেলখানাতে বন্দী রয়।
মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তো খায়
রাজাকারের বাপে
মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করে
যুদ্ধ করার পাপে।
স্বাধীনতার ঘোষকের বউ
জেলখানাতে বন্দী রয়
যে দেখে নাই রণাঙ্গন সে
স্বাধীন দেশের নেতা হয়।
আজব দেশের আজব বাত
দেশমাতা খায় জেলের ভাত।
১৬ই ডিসেম্বর ২০১৯;৩ টা।
দাদা আমার ভাল্লাগে না কোনকিছু পড়তে
দাদা আমার ভাল্লাগে না কোনকিছু পড়তে
ভাল্লাগে না সময়মত সময়ের কাজ করতে।
মন চায় আমার ঘুরতে
পাখির মত উড়তে
মন চায় শুধু মামার নয়া সাইকেলে রোজ চড়তে।
ক্যান যে আসে পরীক্ষা মা, তার কি কোন কাম নাই
সবার ইচ্ছার দাম আছে, আমার ইচ্ছার দাম নাই?
পড়ার সাথে লিখতে হয়
কতকিছু শিখতে হয়
এসব শিখে কী হয় মা, শিখার কোন কাম নাই।
ছি ছি, এসব কয় না সোনা, মন
দিয়ে সব পড়তে হয়
সময়মত সময়ের কাজ মন দিয়ে বাপ করতে হয়।
তবেই জীবন সফল হয়
সবই ফরজ, নফল নয়
সারা জীবন বীরেরমত সাহস নিয়ে লড়তে হয়।
মিঠা মিঠা কথা বলে
মিঠা মিঠা কথা বললে, মনতো ঠিকই গলবে
আগে যেমন চলতো দাদা, তেমনি এদেশ চলবে।
সূর্য উঠলে বরফ পাহাড়
আবারও তো গলবে
মৌসুম এলে গাছে গাছে
আবারও ফল ফলবে।
রাজায় প্রজা দলবে
বোবায় কথা বলবে
জুলুম সওয়া প্রজার মনে আবার আগুন জ্বলবে।
আবার বাতাস বইবে
আবার সকাল হইবে
পাখপাখালির কলতানে দেশটা মুখর রইবে।
পাখিরা গান গাইবে
ইস্টিকুটুম আইবে
নতুন ধানের পিঠা মামা মজা করে খাইবে।
আলুগীতি
আলুগীতি
আলু খায় কালু মিয়া
তালি দেয় লালু মিয়া
ফালু কয় খা
আলু কেনার টাকা কালু
আমি দিমু যা।
কালু মিয়া হেসে কয়
আলু ভালোবেসে কয়
আলু খেতে মানা নেই
এর গুণ কি জানা নেই
যত পারিস আনা
আমি কালু বাপের বেটা
নইরে কিপ্টার নানা।
আমি কোন মালু না
কারো বাপের খালু না
মৃধা বাড়ির জালু না
যতই ভাবিস, বোকা না
আলুর সাথে খাবো, ফালু
একটুখানি কোক আনা।
কথা সত্য, ধোকা না
কালু মিয়া খোকা না
যত আলু পায়
বসে বসে খায়।
সারাদিনই গুনগুনিয়ে
আলুগীতি গায়।
কালু মিয়া আলু খায়
খবর গাঁয়ে রটে যায়
ছেলে ছোকরা হটে যায়
ভানুমতি পটে যায়।
বলে, কালু দাদা
এবার থেকে চান্দা চাইলে
দেবো আলু চাঁদা।
কালু বলে, ভানু
আলুগীতি শিখেছিল
শেখ পাড়ার রানু।
যেই দেশে ন্যায়নীতি
কোনকিছু নাই
সেই দেশে আয় সবে
গোল আলু খাই
আলু খেয়ে সকলেই
আলুগীতি গাই।
১৭ই ডিসেম্বর ২০১৯;ভোর ৫টা
No comments