আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ৩০০১--৩১০০

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০১

শঙ্খচিলের ছানা

আমি হইতাম যদি শঙ্খচিলের ছানা

ধরে আনতাম শহর গাঁয়ের সকল বোবা কানা

তাদের জন্য মেলে দিতাম আমার দুটি ডানা

এসব দেখে বাহবা দিত রসুলপুরের নানা

 

দুপুর বেলা খাবার দিয়ে বলতাম,ওরে খা না

বলতো খাবো? কেউ আবার করবে নাতো মানা?

আপনার কাছে আমি কিন্তু তিনটা পুটি পানা

আবে, খাসনা আগে পরে করিস তিনটা পুটির গানা

 

ময়না ডেকে বললাম ওরে আরো সালাদ বানা

এমন সময় টিয়ার দল করলো এসে হানা

লুটে পুটে খেয়ে নিলো মিষ্টি করার ছানা

খেয়েদেয়ে বললো, যাই আমি বললাম, যা না

 

নানা বললো, ছানা খেলো, ডেজার্ট কিছু আনা

নইলে কিছু পিঠাপুলি জলদি জলদি বানা

বললাম ওগো নানা

সবই করতাম যদি হইতাম শঙ্খচিলের ছানা

 

মানুষ বড়োই লোভী জাত, মুখে বলে না না

লোভ তাদের কমে না, হোক না আতুর কানা

১২ই নভেম্বর ২০২০ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০২

দাও শাহাদাত

দাও প্রভু, দাও দাও, দাও শাহাদাত

আমার নসীবে দাও, শাহী কিসমাত

 

যার বিনিময়ে পাই আখেরে নাজাত

যার বিনিময়ে পাই নবীর সাফায়াত

যার বিনিময়ে পাই প্রিয় সে জান্নাত

 

শহীদ না করবে যদি, দিলে কেন জান

কেন দিলে আমার দেহে ফুঁকে প্রাণ

আমি যে বান্দা তোমার অধম, নাদান

 

মোমিনের কামনা শুধু প্রিয় শাহাদাত

সে চায় আখেরি নবীর শেষ সাফায়াত

যেমন তোমার করুণায় পাই হেদায়াত

 

দাও প্রভু, দাও দাও, দাও শাহাদাত

আমার নসীবে দাও, শাহী কিসমাত

১৯শে নভেম্বর ২০২০ : ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৩

খাতামুন নাবিয়্যিন

ওগো খাতামুন নাবিয়্যিন,

ওগো খাতামুন নাবিয়্যিন

যাবার আগে দিয়ে গেলে

পরিপূর্ণ দ্বীন

তুমি খাতামুন নাবিয়্যিন

 

আঁধার ধরায় আনলে আলো

বন্ধ হলো মন্দ কালো

জগত জুড়ে আসলো ভালো

ওগো রাহমাতুল্লিল আলামিন

তুমি খাতামুন নাবিয়্যিন

 

সব ভেদাভেদ করলে দূর

মানবতার তুললে সুর

বিশ্বের রহমত হয়ে এলে

রাহমাতুল্লিল আলামিন

ওগো খাতামুন নাবিয়্যিন

 

বলে গেলে কোরআন হাদীস

আঁকড়ে ধরে থাকো

অন্য কোন ফেরকাবন্দী

কভু হয়ো নাকো

 

সবার আগে ভাইবেরাদর

মুসলিম তুমি হও

কোরান হাদীস আঁকড়ে ধরো

আল্লাহ রাসুল কও

 

তোমার দোয়া করবেন কবুল

রাব্বুল আলামীন

ওগো রাহমাতুল্লিল আলামিন

তুমি খাতামুন নাবিয়্যিন

২০শে নভেম্বর ২০২০ : ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৪

যাচ্ছি

যাচ্ছি রে ভাই যাচ্ছি

এই কথাটা বলার মত

সময় কি ভাই পাচ্ছি?

 

আমার কত জরুরী কাজ

খাবার সময় নাই

যম বুঝে না সব কথা

কারে কি বুঝাই

 

যাচ্ছি বলার সময় নাই

সময় হলে যেতে হয়

খাবার কিছু বাকি থাকলে

যাবার আগেই খেতে হয়

 

যম মানে না কোনকিছু

সময় হলে মারে টান

সে মানে না আর্মি পুলিশ

কে পাপী কে বুজর্গান

 

যাচ্ছি রে ভাই যাচ্ছি

এই কথাটা বলার মত

সময় কি কেউ পাচ্ছি?

তবে বলো কোন সাহসে

জেনেও হারাম খাচ্ছি

২০ নভেম্বর ২০২০ : ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৫

মন্দ থামাও

থমকে গেছে হিমেল বাতাস,থমকে গেছে নদী

থমকে গেছে আরব সাগর, ফেরাউনের গদী

কান্না এখন বিশ্ব জুড়ে, কাঁদে সাগর, বন

কান্না করে বারুদ বুড়ি, অস্ত্র যশ, ধন

 

ধ্বংস দানব খোদার গযব, করোনা তার নাম

তাও বলে না বজ্জাতেরা পাপকে ছাড়িলাম

পাপের বাচ্চা করোনা খায় মন্দ ভালো সব

পীর বুজুর্গ চোর বাটপার সব করছে কলরব

 

ক্ষমতার ওই সিংহাসনে বসাও ভালো লোক

নয়তো বসে বুক চাপড়াও, করো বসে শোক

লাগলে আগুন কান্নাতে তো আগুন নেভে না

টক তেতুলের চারা তোমায় আমতো দেবে না

১লা ডিসেম্বর ২০২০ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৬

মোনাফিক

কোরআন হাদীস মসজিদে

আর মূর্তি থাকবে মন্দিরে

কথা কেউ বললে তারে

কে করতে চায় বন্দী রে

 

ধর্ম তারে কামড়ায় নাকি

উচিত কথায় গা জ্বলে

নাকি তারে সারাটা দিন

শয়তান এসে গা ডলে

 

মুসলিমও না হিন্দুও না

তোমার কোন ধর্ম নাই

ধর্মে ধর্মে বিভেদ ছাড়া

আর কি তব কর্ম নাই?

 

কাফেরও না মোমিনও না

তবে তুমি মোনাফিক

কাফেরেরও অধম তুমি

জানলাম শেষে এটাই ঠিক

৫ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৭

ভাস্কর্য বনাম মূর্তি

মৌচাকেতো মৌমাছি নয়, আরো থাকে মধু

তোমার ঘরে বউ থাকেতো আমার ঘরে বধু

আমার বাড়ি গরু থাকে তোমার থাকে কাউ

আমার ঘরে কদু থাকে, তোমার ঘরে লাউ

 

আমি যখন পানি খাই তুমি তো খাও জল

দিয়ে হয় পানি আর দিয়ে হয় জল

পানি জল এক করার কোন মানে হয়?

তবে কেনো ভাস্কর্য আর মূর্তিরে এক কয়?

 

ভাস্কর্য হয় ভাস্কর্য, আর মূর্তি মানে মূর্তি

ফায়সালা হয়ে গেল করো তবে ফুর্তি

মূর্তির পক্ষ নেবে যারা জাহান্নামে যাবে

ভাস্কর্যটার পক্ষ নিলে দোজখ শুধু পাবে

 

মহানবীর উম্মত হলে কোরান হাদিস পড়ো

এটা দিয়েই বন্ধু তুমি নিজের জীবন গড়ো

৬ই ডিসেম্বর ২০২০ : ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৮

রবের বানী

হায়রে কলিকাল

ছাগল চাটে বসে বসে

ব্যাঘ্র মামার গাল

তাই না দেখে তবলা বাজায়

দেশী গরুর পাল

এ্যায়সা কলিকাল

 

লাউ মানে যে কদু আর

কদু মানে লাউ

কাউ মানে যে গরু আর

গরু মানে কাউ

খবর তো সবার জানা

জানে এটা লেংড়া কানা

নিতাই বাবু, লম্বু রানা

জানে সুরেশ পাল

এ্যায়সা কলিকাল

 

ভাস্কর্য কি মূর্তি হয়?

প্রশ্নটা তো সোজা নয়?

 

জুতা আবিষ্কারের মতো এতে

পন্ডিত ঘেমে শেষ

মুচি এসে উদ্ধার করে

রাজা রানী দেশ

 

যাহা লাউ তাহা কদু

যাহা বউ তাহা বধু

যদু মধু জানে

ভাস্কর্য মূর্তি এক

সকলে তা মানে

 

তুমি বলো, ঠিক না এটা

একটা নরম, একটা পেটা

বানালে ঠিক পাবে

তখন মামা দুগ্ধ রেখে

তুমিও দুধ খাবে

৬ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০০৯

ধর্মহীনদের ধর্মচর্চা

পুরুষও না, নারীও না, হিজড়া তারে কয়

হিজড়া কিন্তু নারী পুরুষ কোন কিছু নয়

নারী পুরুষ না হয়েও মানুষ তারাও বটে

হিজড়া বলে তার পরিচয় এসমাজে রটে

 

তেমনি কিছু মানুষ বলে, তাদের ধর্ম নাই

ধর্মীয় সমাজে তাই পায় না ওরা ঠাঁই

ধর্মহীনরা সমাজে হিজড়া লোকের মত

হিন্দুওনা, মুসলিমওনা, সমাজের ক্ষত

 

মুসলিম হলে মসজিদে যাও, হিন্দু হলে মন্দিরে

ধর্মহীনরা লকডাউনে থাকো ঘরেই বন্দী রে

ভাস্কর্য মূর্তি নিয়ে তোমার কথার কাম নাই

বিষয়টা ধর্মীয় তাই তোমার কথার দাম নাই

৬ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১০

মূর্তি প্রেমিক

মূর্তি প্রেমিক মানুষ ছিল, আছে এবং থাকবে

মানুষ স্বাধীন,যার ইচ্ছা সে মূর্তি ঘরে রাখবে

 

মূর্তিপূজা আগেও ছিল আজো আছে থাকবে

মুসলমানরা দিনরাত বসে আল্লাহ বলে ডাকবে

 

তোমার যদি ইচ্ছা করে তুমিও পূজো করো

ইচ্ছে হলে নিজের হাতে তুমিও মূর্তি গড়ো

 

ছোট্ট একটা শর্ত শুধু তোমায় মানতে হবে

মুসলমানের ধর্মটাকে তোমার ছাড়তে হবে

 

হিন্দু তুমি? মূর্তি বানাও? মন্ডপে মন্দিরে.

কেউ দেবেনা বাঁধা বা করবে না কেউ বন্দীরে

৭ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১১

থাকে না ঈমান

মূর্তি গড়া হালাল ঠিকই, যদি আপনি হিন্দু হন

মুসলিম হয়ে কেমন করে মূর্তি গড়া হালাল কন?

 

ভাস্কর্যও হালাল কাকা--- অমুসলিমের জন্য

ধর্ম ছেড়ে অমুসলিম হন করেন জীবন ধন্য

 

আপনার জন্য কোরান হাদিস পাল্টানো যে যাবে না

শেষ নবী তো মারা গেছেন আরতো নবী আবে না

 

ইসলাম পালন কঠিন হলে মুসলমানী ছাড়েন না

মুসলিম হলে কোরানে ভুল বলতে আপনি পারেন না

 

আপনি ধর্ম কোনটা নেবেন সেটা আপনার ইচ্ছা

ভাল লাগলে অমুসলিম হন মিটুক সকল কিচ্ছা

 

যে মানে না কোরান হাদিস আল্লাহ নবীর বানী

কি লাভ বলো দিয়ে তারে শুধুই মুসলমানী

 

ইসলামটা তো আল্লাহর দেয়া কোরআনী বিধান

কোরান হাদীস না মানলে যে থাকে না ঈমান

৭ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১২

অবশেষে

অবশেষে

যা ঘটার তা ঘটলো

যা রটার তা রটলো

যে পটার সে পটলো

যে হটার সে হটলো

যা ঘটার তা ঘটলো

 

অবশেষে

যা দেখার তা দেখলাম

যা শেখার তা শেখলাম

যা লেখার তা লেখলাম

খোদার কুদরত দেখলাম

 

অবশেষে

রাঙা সুরুজ উঠলো

পুষ্প পরাগ ফুটলো

গানের পাখি জুটলো

যে লুটার সে লুটলো

বদ্ধ বাতাস ছুটলো

চাঁদের বুড়ি উঠলো

 

অবশেষে

যা ঘটার তা ঘটলো

যা রটার তা রটলো

৭ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৩

মা

মা কথাটি মধুর অতি

মার সমান নয় মহামতি

মা যে মায়ার মস্ত খনি

এমন খনি দিলেন মাবুদ

আল্লাহ কাদের গনি

 

জন্ম নিলাম মায়ের কোলে

মায়ের আদর পেয়ে

ছোট থেকে বড় হলাম

মায়ের দুগ্ধ খেয়ে

 

শোধ হবে না মা জননীর

ইহকালের ঋণ

মায়ের সেবায় মগ্ন থাকো

সবাই চিরদিন

১০ই ডিসেম্বর ২০২০ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৪

নাড়ির টানে

নাড়ির টানে বাড়ির পানে মন যেতে চায় ছুটে

বাড়ির কথা মনে হলেই লক্ষ গোলাপ ফোটে

মন হয়ে যায় উড়ো উড়ো, উড়াল প্রজাপতি

বাড়ির দিকে পা বাড়ালেই বাড়ে পায়ের গতি

 

জামের রসে আমের রসে চুমুক দিয়ে মন

খেকে থেকে হেঁকে ওঠেঃ কইরে করিমন

একটুখানি নুন মরিচে আমের ভর্তা কর

এইযে কাঁচা আম পেড়েছি জলদি করে ধর

 

জিভে পানি চলে আসে তেতুল কচি লাউ

এরে দিয়ে, ওরে দিয়ে, ভাগে যদি পাও

ক্ষুধার কথা দেয় ভুলিয়ে দধির মত মেঘ

তোরই কাছে ছুটে আসে উড়ে উড়ে দ্যাখ

 

নাড়ির টানে বাড়ির পানে যায়রে ছুটে মন

ডাকছে বসে বরই পাতা তাল সুপারির বন

২০শে ডিসেম্বর ২০২০ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৫

চেয়ারম্যান

আপনি যখন চেয়ার পান

তখন আপনি চেয়ারম্যান

জনগণ চায় তখন আপনি

তাদের একটু কেয়ার নেন

 

তা না করে আপনি যদি

দল দেখে দেন শুধু দধি

পাবলিকেরে কাঁচকলা

উচিত কি কন সে চলা?

 

চেতা যখন নেতা হয়

তাকে নরম হতে হয়

ইনসাফের এই দাবী

সকল ভালোর চাবি

 

বেইনসাফি করতে নেই

নিজের পকেট ভরতে নেই

২১শে ডিসেম্বর ২০২০ : ভোর ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৬

মুমীন হারে না কখনো

সারা ময়দানঘুরে শয়তারদান্দান দেয় নবী

তবু থামেনা যুদ্ধ জেহাদডাকে রাসুলের কবি

জাগো হে মানুষজাগো মানবতানবীজির উম্মত

থামাও প্রলয় যুদ্ধ তুফান পৃথিবীর সব জুলমত।

খোদার সৈনিক জাগো দৈনিকজাগো ঘুমন্ত জাতি

টুটে যাক ঘোরখুলে যাক দ্বোর ঘুচুক আঁধার রাতি

আরো জোরে হাঁকো হায়দরী হাঁক বাজাও নাকাড়া কবি।

তোমার ডাকে জাগুক আবার নীল আকাশের রবি।

বাজুক ডঙ্কা নাইরে শঙ্কা মুমীন হারে না কভু

বাঁচলে গাজীমরলে শহীদ জিত দেন সদা প্রভু।

শহীদের নেই মরণ কখনো চিরঞ্জীব ওরা বীর

কখনো নত হয় না মুমীন তাঁদের সে উঁচু শির।

২১শে ডিসেম্বর ২০২০ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৭

ধর্ম থাকে কর্মে

মুসলিম তোমার হতেই হবে

এমন কোন আইন নাই

অমুসলিমের জন্য দেশে

কারো কোন ফাইন নাই

 

যার যার ধর্ম সে সে মানবে

এমন আইনই চলছে

মুসলমান কি হিন্দুর মূর্তি

ভাঙতে কভু বলছে?

 

মূর্তি থাকবে মন্দিরে গীর্জায়

সেই মূর্তি ভাংতে কিরে পীর যায়?

 

মূর্তির পূজা হিন্দু বৌদ্ধ সবাই করে

মুসলমানে মূর্তি রেখে কোরান পড়ে

 

মূর্তির প্রেমে যদি উথলায় হৃদয় মন

ইসলাম ছেড়ে হও না তুমি হরিজন

মুহাম্মদের উম্মতেরা মূর্তি গড়ে না

খৃস্টানেও গীর্জাতে নামাজ পড়ে না

 

ধর্ম তোমার আছে কি না, তুমি ধর্মহীন

আমল দিয়ে প্রমাণ হবে তব ধর্ম চিন

২১শে ডিসেম্বর ২০২০ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৮

বউয়ের উপদেশ

নামাজ রোজার ধার না ধরে

সুদ ঘুষ আপনি খান

প্রতি রাতেই আপনি কেনো

নন্দীপাড়া যান?

 

ইসলাম যা যা করছে নিষেধ

হারাম জেনেও খান

কনতো তবে কোন সাহসে

আপনি বেহেশত চান?

 

নিজের মনে তিনশ শয়তান

হাডু ডুডু খেলে

আপনি যদি শরাব খান

ওরা মদ্য গেলে

 

আপনে এখন বড় হইছেন

ঘরে তিনটা কন্যা

এবার একটু তওবা করে

ভাল মানুষ হন না

২২শে ডিসেম্বর ২০২০ : ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০১৯

মহি

মহিরে তোর শরীর কেমন

দোয়া করিস ভাই

এই ধরাতে আমরা তো কেউ

থাকতে আসি নাই

 

সবাই যাবে আমি তুই

তকদিরে যা আছে

আমরা যেনো হতে পারি

প্রিয় খোদার কাছে

 

চাই না কিছু কারো কাছে

খোদার মদদ চাই

এটুক যাতে পেতে পারি

দোয়া করিস  ভাই

 

মহি বলে সহি কথা

রহম করো তারে

সবার ওপর ঝরে পড়ুক

রহম বারে বারে

২২শে ডিসেম্বর ২০২০ : ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২০

হায় মোমেনা হায়

হায় মোমেনা হায়

ইলিশ মাছের পেটি দাদা

দিল্লি বসে খায়

পদ্মার ইলিশ ট্রাকে ট্রাকে

দিল্লি উড়ে যায়

 

পুলিশ প্রদীপ সিনহা মারে

কান্দে সিনহার মায়

প্রদীপ কেমনে আর্মি মারার

সাহস খুঁজে পায়?

 

মাগো এসব খুঁটির জোর

খুঁটি বাঁধা দিল্লিতে

তাই ইলিশের কাঁটা খায়

নানা রঙের বিল্লিতে

 

হায় মোমেনা হায়

মরা জাতির বিবেক বসে

ভজন কীর্তন গায়

২২শে ডিসেম্বর ২০২০ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২১

আজ্ঞে

আজ্ঞে

এই কি ছিল ভাগ্যে

শিয়াল চাটে বাঘের গাল

টিকটিকি খায় বালাম চাল

ইলিশ গিলে ফিঙে

বিড়ালগুলো বসে বসে

দুধ রেখে খায় ঝিঙে

 

চাকর শাসায় মালিককে

মশা শাসায় শালিককে

বানর এসে জানতে চায়

কোম্পানীর মালিক কে?

 

আজ্ঞে

এই কি ছিল ভাগ্যে

কাউয়া করে কা কা

বৌ খালি কয় টাকা

টানবাজারের নায়িকারা

এখন থাকে ঢাকা

তাদের বাড়ি পাকা

রাত দুপুরে তাদের গেটে

থামে গাড়ির চাকা

 

আজ্ঞে

মধুর বোতল কদুর তেলে

ভরলে ভরুক, যাকগে

আজ্ঞে

২২শে ডিসেম্বর ২০২০ : রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২২

গরীবের শীত

শীত আসে জিত লয়ে

জিতে যায় গরীবে

বাবু সাব চিত হয়ে

ভাবে সে কি করিবে

 

হীম হীম ঠান্ডায়

কাবু হয় পান্ডায়

কাশ্মীরি শাল গায়ে

হু হু করে কান্দে

 

বাবু পরে জাম্পার

শীত পড়ে বাম্পার

বলে কই যদু মধু

শীতটারে বান দে

 

হু হু একি ঠান্ডা

বরফের আন্ডা

জলদি দে রে বাপ লেপটা

আর দে, পশমী ক্যাপটা

 

গরীবের লেপ নাই

পশমের ক্যাপ নাই

গামছাটা কোমরে পেড়ে আনে রস

বলে তোরা রস খাবি, চুপ করে বস্

 

রস খায়

যশ পায়

জিতে যায় গরীবে

বাবু বলে, দেখবি, এইবার মরিবে

 

ধুর, ওরা মরে না, নেমে যায় কর্মে

ওরা মাঠে কাজ করে, বাবু থাকে ঘর মে

এইসব দেখে শীত মরে যায় শরমে

২৩শে ডিসেম্বর ২০২০ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৩

পেঁয়াজ কাটা

রান্না ঘরে পান্নালালে যেই দিয়েছে উঁকি

দেখে সেথা কান্না করে পান্নালালের খুকি

আদর করে যাকে ডাকে রঙিলা টুকটুকি

সে কেন নেয় শখ করে পেঁয়াজ কাটার ঝুঁকি?

 

তাইতো খুকি কেঁদে সারা, পাড়াপড়শি জানে না

কান্না চাপতে গেলে খুকির চক্ষু সেটা মানে না

দর দর দর পড়ছে পানি পেঁয়াজ কাটার ঝাঁজে

কে জানত পেঁয়াজকাটার কাজটা এমন বাজে

 

পান্নালালে চান  না মোটে খুকি বসে কাঁদুক

মা ঘরে নেই, তাই বলে মেয়ে বসে রাঁধুক

বাবা বলে, আয় মা কাছে, রান্না করা থাক

বাদ দে ওসব রান্নাবান্না, সবই চুলায় যাক

২৩শে ডিসেম্বর ২০২০ : ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৪

জামা দাও ওদের

শীত এসে গীত গায়-

কন কন কন

কই গেলা আমলা ও

সুদী মহাজন।

 

আমলারা ঘুষ খায়,

মহাজনে জুস

বড়লোক চাল পায়

গরীবেরা তুষ।

 

তুমি পরো দাস্তানা,

ক্যাপ, মাফলার

গায়ে দাও কোট,শাল,

নীল জাম্পার।

 

তারপর ঢুকে যাও --

কম্বল ও লেপে

তবু শীত তোমাকেই

ধরে নাকি চেপে।

 

গরীবেরা পাটি পেতে

কাঁথা গায়ে শোয়

জলে নেমে মাছ ধরে,

ক্ষেতে ধান রোয়।

 

নেই তার কোট টাই,

জাম্পার ও দাস্তানা

দালানের দ-ও নাই,

কুঁড়েঘরই আস্তানা।

 

শীতে খাও তাজা তাজা

নানা রঙ সবজি

কুয়াশায় ভিজে শুধু

গরীবের কবজি।

 

ভাবো না ওরাও মানুষ,

কাপড়ের দরকার

ওদেরকে দেখে না কেউ,

না তুমি, সরকার।

 

ঘরে ঘরে পড়ে আছে

কত জামা তোমাদের

আলমারি ভরা জামা

সীমা আর সোমাদের।

 

ওদের তো জামা নেই,

খালি গায়েই থাকে

নিরূপায় হয়ে শুধু

আল্লাহ আল্লাহ ডাকে।

 

বাড়তি জামাটা সোনা

দাও না তাদের

এই শীতে গা ঢাকার

জামা নেই যাদের।

২৪শে ডিসেম্বর ২০২০ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৫

নামটা ধরে ডাকো

আমার একটা নামতো আছেনামটা ধরে ডাকো

বিশেষণের বোঝা দিয়ে নামটা কেনো ঢাকো?

নিজের নামটা ভালবাসে কোকিল এবং কাকও।

চক্ষুটারে চোখই বলোনাকটারে কও নাকও।

এতো এতো বিশেষণ দাওনামটা খুঁজে পাই না

ভালোবাসি ফুলের শোভাকিন্তু ওটা খাই না।

মায়ের আদর কোন কালে মামীর কাছে পাই না।

নামের সাথে বোঝা বাড়াওসত্যি বলছি চাই না।

তুমি আমার শত্রুতো নওমধু বলে দিচ্ছো বিষ

অহংকারের বিষ বিলায় যারে তুমি কও ইবলিশ।

সব প্রশংসা এক প্রভুরআমরা সবাই বান্দা তার

তাঁরই দেয়া যোগ্যতা সবকেন করো অহংকার।

মানুষ আমরা সবাই কিন্তু এক আদমের জাত

দিনের বেলা সবাই দিন পাইরাতের বেলা রাত।

তুমি না হয় নায়ক হইছোআমি না হয় কবি

যে যা হওয়ার তাঁর রহমে হইছো কিন্তু সবই।

নামের সাথে খেতাব সেটুক জুড়তে তুমি পারো

সত্যিকারের ডিগ্রি খেতাবথাকে যদি কারো।

রাজ্য ছাড়া রাজা উজির যে চাটুকার কয়

তারা কিন্তু ইবলিশের খালাতো ভাই হয়।

২৪শে ডিসেম্বর ২০২০ : ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৬

স্বাধীনতা মানে

শোন বাবু শাহররিয়ার

বলছি কথা পরিস্কার

তুমি স্বাধীন, আমিও

মামা এবং মামীও

 

স্বাধীন তুমি ইচ্ছে হলে

চাকরী আমার করবা

ইচ্ছে হলে সালাম দিয়ে

নিজের রাস্তা ধরবা

 

কিন্তু বাপু চাকরী নিলে

সময় মতো আসবা

নইলে নিজের দুঃখে তুমি

চোখের জলে ভাসবা

 

স্বাধীন তুমি ইচ্ছে হলে

ধর্মে ঈমান আনবা

ঈমান আনলে শোন বাপু

নিয়ম কানুন মানবা

 

চাকরী করবা মর্জি মতো

আকাম কুকাম করবা

তাইলে বাপু কপাল মন্দ

জ্বলেপুড়ে মরবা

 

ইচ্ছে হলে মুসলিম হও

নইলে বাপু কাফের রও

২৫শে ডিসেম্বর ২০২০ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৭

বাতাসের গতি

বাতাসের গতি যদি বুঝতে না পারো

দুর্ভোগ তবে শোন যাবে নাতো কারো

দিনে দিনে তার কষ্ট বাড়বেই আরো

বাতাসের গতি বুঝে তাই আগ বাড়ো

 

ঝড় যদি আসে তবে তারে রোখা যায়না

হিংসুটে কোনোদিনই সুখ খুঁজে পায় না

লোভী যদি হও তুমি অভাব তো যাবে না

ঈমানদার হলে তুমি হারাম তো খাবে না

 

বাতাসের গতি যদি বুঝতেই পারো

গতি বুঝে থামো গতি বুঝে বাড়ো

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৮

সত্যের আলো

বছরটা চলে গেল চেয়ে দেখি ভাই

যারা ছিলো বন্ধু অনেকে তার নাই

এইসব ভেবে আমি মনে ব্যথা পাই

বেমালুম এই ব্যথা ফের ভুলে যাই

 

ভুলে যাই পৃথিবীতে কেনো এসেছিনু

ভুলে গিয়ে মানুষেরে কত ব্যথা দিনু

স্রষ্টার যে সব হুকুম অধম শুনেছিনু

ভুলে গিয়ে পাপকাজে মন ঢেলেদিনু

 

যারা গেল তারা গেল ফাইল হল বন্ধ

বেঁচে গিয়ে আমরা তাও করি মন্দ

নফসের কাছে হই পরাজিত আমরা

গায়ে যেনো আমাদের গর্দভ চামড়া

 

জীবনের হালখাতা যেনো হয় ভালো

এসো সবে মনে বুনি সত্যের আলো।।

৩রা জানুয়ারী ২০২১ : ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০২৯

বাদশাহ সোলায়মান

আমাদের বাদশাহ সোলায়মান

কচুবনে একমনে গায় বসে গান

গান নয় যেনো সব কুহু কুহু তান

সেই তানে উতলা হয় মনোপ্রাণ

 

বিশ্বাস না হলে এসে দেখে যান

কচু বনে বসে খায় মুরগীর রান

খানসামা কয় মামা এই নেন পান

যদি কিছু লাগে তবে মন খুলে চান

 

কোতোয়াল তাই দেখে হয় পেরেশান

কই গেল মহারাজের বাড়ি আলীশান

কই গেলো পোষা পাখি হুর গেলেমান

কই গেলো আসমানের হাসিভরা চান

 

রাজা আছে রাজ্য নাই, নাই রাজরানী

মন্ত্রী নাই উজির নাই, আছে গুলতানি

গুলতানি গুলে খান বাদশা সোলেমান

তাঁর লেখা পড়ে তবু কাঁদে নাফরমান

৪ঠা জানুয়ারী ২০২১ : ১:৩০ মি

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩০

শীত বুড়ি

শীত বুড়ি তিন কুড়ি কাঁথা দিয়ে গায়

চরপাড়া গিয়ে ডাকে আয় ওরে আয়

বরফের লেপ কাঁথা দিতে আমি পারি

আরো আছে বরফের জাম্পার শাড়ি

 

আর আছে কুয়াশার মিহিদানা চাদর

আর আছে ওম হীন হিমহিম আদর

বরফের ভাত দেবো, বরফের রুটি

বরফের চকলেট দেবো শত কোটি

 

নগরের মোড়ে মোড়ে বরফের বাতি

থাকবে না এই দেশে আঁধিয়ারা রাতি

ঘোড়াশালে ঘোড়া নাই টিটিপাড়া টিটি

শীত এলে কই যায় এতো গিরগিটি?

 

শীত বুড়ি খায় মুড়ি শুয়ে শুয়ে ভাবে

শীত ছাড়া মজাদার পিঠা কই পাবে

কই পাবে কুয়াশায় ধুয়ে রাখা মুলা

কই পাবে মাছ যাতে ভরে যায় ডুলা

 

শীত বুড়ি সুড়সুড়ি দেয় আর বলে

কই পাবি রস তুই শীত চলে গেলে

৪ঠা জানুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩১

রাজকন্যা

নিজের মেয়ে সবার কাছেই রাজকন্যা হয়

রাজকন্যার মা কখনো রাজার রাণী নয়।

বাপ কখনো হয় না রাজা, মস্ত্রী দুলাভাই

মেয়ের তবুয়ো রাজকন্যা হতে বাঁধা নাই।

 

রাজা চালায় রিকসাভ্যান রাজধানীতে এসে

হাটে গিয়ে কমলা বেঁচে কদম আলী শেষে।

তবুয়ো তাদের মনে হাজার স্বপ্ন বাসা বাঁধে

মেয়ের একটু কষ্ট দেখলে বাপের মন কাঁদে।

 

হোক কন্যার নাক বোঁচা, হোক না সে কালো

তবু কন্যা পিতা মাতার ঘর করে দেয় আলো।

বিশ্ব জুড়ে হীরা মানিক থাক না পড়ে থাক

মধুর চেয়েও মিষ্টি মধুর কন্যা শিশুর ডাক।

 

কন্যা শিশু চিরকাল হয় মা জননীর উপমা

তার মুখে দেখ ছড়িয়ে আছে সকল সুষমা।

৪ঠা জানুয়ারী ২০২১ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩২

খোদার ভয়

হাতেম আলী তালুকদার

কোথায় গেল তালুক তার

নাম আছে তার তালুক নাই

বিল আছে তার শালুক নাই

 

নাম রেখেছে হাতির পুল

কোথায় হাতি কোথায় পুল

লোকের মাথা লোকে খায়

হাঁটতে হাঁটতে পল্টন যায়

 

পল্টন থেকে মতিঝিল

ঝিলের পানি গাঢ় নীল

এখন যেটা দালান ঘর

আগে ছিল খাসের চর

 

রাজা মিয়া রিকসা বায়

রানী একা ফুল টোকায়

ধরেনা যে আল কোরান

সে কয় আমি মুসলমান

 

হায়রে আজব দুনিয়া

কলমা পড়ে মুনিয়া

বিশ্ব মোড়ল খুনিয়া

মানুষ মারে গুনিয়া

 

ভন্ডরাই আজ রাজা হয়

কই গেল রে খোদার ভয়

৪ঠা জানুয়ারী ২০২১ :  ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৩

অহংকারের পরিনতি

তোমার ওয়াজ শুনে আমি ভালো হয়ে গেছি

খ্যাতির লোভ চলে গেছে, কি লাভ হয়ে মেসি?

"মুই কি হনু" ভাবটা আমার চলে গেছে ভাই

অহংকারের ছিটেফোটা এখন আমার নাই

 

আমার গুণের সবটাইতো আল্লাতালার দান

আমার কাজতো শোকর করা রবের অবদান

তাঁর ইচ্ছাতে এলাম ভবে তাঁর ইচ্ছাতে যাবো

তাঁর ইচ্ছার যশ খ্যাতি সব আমি কেন পাবো?

 

আমার গুণের মালিক যিনি যশতো শুধু তাঁর

বান্দার কাজতো বলা শুধু আল্লাহু আকবার

তোমার ওয়াজ শুনে আমি ছাড়ি খ্যাতি-লোভ

খ্যাতির লোভে তুমি এখন পাগলপারা খুব

 

অহংকারের অসুখ যদি মনের ভেতর থাকে

কি লাভ তার তসবি টেপা আল্লা আল্লা ডাকে

তুমি মস্ত আলেম হলে, গর্ব তোমার বুকে

তবে তুমি জাহান্নামী রেখো খাতায় টুকে

৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৪

কে আলেম কে জালেম

ওয়াজ করো সেই বিধানের, যেটা করা ফরজ

ফরজ রেখে তসবির কথা বলার কেন গরজ?

 

ফরজ রেখে করছো বয়ান নফলের কি গুণ

এভাবেই তো ইসলামটারে করছো তুমি খুন

 

ইসলামটারে খুন করছো যেসব পীর আলেম

এধরাতে কে আছে কও, তোমার চেয়ে জালেম?

 

নযর নিয়াজ খাচ্ছো আর দিচ্ছো দানের তালিম

তোমার চেয়ে কওতো কে এতো বড়ো জালিম?

 

কোরান বেঁচে খাচ্ছো যেটা করছে কোরান মানা

ইসলামের হুকুম তোমার হয়নি আজো জানা?

 

ইসলাম মানো কোরান মতো দরগাবাজি ছাড়ো

সবার জন্য খোদার বিধান, নয়তো একা কারো

৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৫

ফরজ পালন

টাখনুর নিচে কাপড় পরা হারাম

তাতে বাড়ে অহংকারের আরাম

 

আপনার লম্বা জুব্বার ওপর

ঝলমল করে জরি

ওই জরিতে অহংকার কি

যায় না গড়াগড়ি?

 

আপনি বড়ো জ্ঞানী এটা এলান করে বলেন

নামের সাথে এত লকব কেমনে নিয়ে চলেন

 

সুদ ঘুষ চলে, মিথ্যা চলে,

হারাম যারা খায়

তারাও কি দোয়ার গুণে

বেহেশত খুঁজে পায়?

 

হালাল রেখে হারাম জানি পরকীয়া হয

ফরজ রেখে নফল ধরা বাড়াবাড়ি নয়?

 

আগে নিজে কোরআন মেনে

হন না মুসলমান

ফরজ মানুন, তবেই শুধু

পাবেন দোয়ার দান

৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৬

মোশাররফ খান

মোশাররফ খান

মুখে রাখে পান

লেখে ছড়া, গান

অতিশয় টনটনে

তার সম্মান

 

মোশাররফ খান

যেখানেই যান

ভক্তরা খেতে দেয়

মোরগের রান

অতিশয় প্রিয় তার

ভক্তের দান

 

মোশাররফ খান

মুখ দেখে বুঝা ভার

আর কি কি চান

হাসিটার আড়ালে

আর কি লুকান

লিখে লিখে তিনি হন

কবি খ্যাতিমান

 

মোশাররফ খান

গদ্যেও তার হাত

চলে অফুরান

আগপাছ ভেবে তিনি

সম্মুখে যান

 

মোশাররফ খান

এই দেখি ঢাকা তিনি

এই আমাজান

তার যতো গুণ সব

আল্লাহর দান

৬ই জানুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৭

চেয়ার

থাকলে চেয়ার কেয়ার করে সবে

চেয়ার গেলে কে খোঁজ নেয় কবে?

ভবে,

এমনটাই ছিল আর এমনটাই হবে

 

থাকলে চেয়ার কেয়ার করে সবে

পেয়ার করে, ফেয়ার করে, ভবে

তবে,

উল্টে গেলে সেই চেয়ারটা কভু

রাজা রয় নিচে আর খাটে রয় গবু

 

থাকলে চেয়ার কেয়ার করে সবে

শেয়ার করে সকল কাজে, জবে

হবে,

গোলাপ ফুলের চারা হবে টবে

হাঁটলে পথে সবাই সালাম কবে

 

চেয়ার যদি উল্টে যায়

পিষে সবাই চটি পা'

৬ই জানুয়ারী ২০২১ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৮

কষ্ট কথা

পষ্ট কথা বলি

নষ্ট করো কষ্ট কথা

দুহাত দিয়ে ডলি

সে জমিনে দাও ছড়িয়ে

শোকর ফুলের কলি

 

শোকর গাছে পানি ঢালো

পড়ুক তাতে পলি

সেই খুশিতে পুষ্পরা সব

করুক ঢলাঢলি

 

কষ্টগুলো নষ্ট করো

স্বস্তি পাবে মনে

সেই খুশিতে হাসবে তুমি

অচীন সুখের বনে

 

অস্টপ্রহর কষ্ট তুমি

জমিয়ে যদি রাখো

কষ্ট তাবে কষ্টই দেবে

সুখ সে দেবে নাকো

 

তুমি আজও বেঁচে আছো

শোকর জানাও তরে

তোমার সাথের সাথী কত

মরে গেছে কবে

 

তকদিরে যা লেখা আছে

পাবে শুধু তাই

কষ্ট ছাড়া কোনটা যে সুখ

জানবে কেমনে ভাই?

৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৩৯

শাশুড়ি মা

তিনশ টাকার মিষ্টি কিনে গেলাম শ্বশুরবাড়ি

গিয়ে দেখি শাশুড়ি মার শূন্য দইয়ের হাঁড়ি

টেবিল জুড়ে শীতের পিঠা কাড়ি কাড়ি বসা

কতক আছে শুকনো আর কতক রসারসা

 

বউ পরেছে লাল টুকটুক বিয়ের দিনের শাড়ি

বলে,তোমার সামনে এটা পরতেও সুখ ভারি

মনের সুখে তাই সেজেছে মায়েের মেয়ে খুব

তার সে রূপের গাঙে যেনো দিতে পারি ডুর

 

শীতের পিঠা মিঠা মিঠা, শাশুড়ি দেন বেড়ে

শালা বলে, তোমার জন্য রস এনেছি পেড়ে

শাশুড়িমা বলেন, বাবা, ভাঁপা পিঠা নাও

রসের পরে ভাঁপা পিঠা গরম গরম খাও

 

আমি বলি, আম্মা আপনার অনেক কষ্ট হলো

আম্মা বলেন, জামাই বাপু কি যে এসব বলো!

ছেলের জন্য মায়ের কষ্ট, কষ্ট তো নয় সুখ

কষ্ট পালায় দেখলে ছেলের সদা হাসি মুখ

৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪০

মানব ফুল

ঝুমুর ঝুমুর ঝুম বাজে

মন ঢেলে দাও নিজ কাজে

সঙ্গে খোদার রহম চাও

সেই রহমে এগিয়ে যাও

 

বন্ধ করো মন্দ কাজ

আর থেকোনা অন্ধ আজ

বক্ষে মাখো হেরার আলো

মানবতার প্রদীপ জ্বালো

 

তুমি সাজো মানব ফুল

দূর করে দাও মনের ভুল

সব মানুষের দোয়া লও

খোদার প্রিয় বান্দা হও

৮ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪১

লাল মোরগের আন্ডা

লাল মোরগের আন্ডা

খায় রে বসে পান্ডা

লাগাও তারে ডান্ডা

দেশটা হবে ঠান্ডা

 

আসবে ঘরে সুখ

মিটবে মনের দুখ

শান্তি পাবে জান ডা

লাল মোরগের আন্ডা

 

লাল মোরগের আন্ডা

পিটাও ধরে পান্ডা

৮ই জানুয়ারী ২০২১ : ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪২

নতুন বছর

নতুন বছর নতুন আশা

দিলাম একটু ভালবাসা

শিশির ধোয়া স্বপ্ন ভাসা

আদর করে নিও

পারো যদি বিনিময়ে

ভালবাসা দিও

 

নতুন বছর শিশুর হাসি

সূর্য বলে আসি আসি

ফুলের হাসি ভালবাসি

দিলাম তোমায় নিও

সঙ্গে নাও জমজম পানি

ভক্তি ভরে পিও

 

নতুন বছর নতুন দিন

মুরুব্বীরা সালাম নিন

শোধ করুন প্রভুর ঋণ

ছোটরা আদর নাও

হারাম রেখে সবাই মিলে

শুধু হালাল খাও

৮ই জানুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৩

বশ ও যশ

কানে দিছি তালা ভাই

ডাকলে ডাকুক হালা

সবাই জানে ধর্ষক তারা

মানুষ যদিও ভালা

 

চোখ করেছি বন্ধ দাদা

আসলে রাতে চোর

বলবো ভায়া ঘুমাও ঘুমাও

হয়নি মোটে ভোর

 

দুই ঠোঁটের গিট্টু দাদা

কেউ খুলিস না আর

করলে করুক ভিন্ন দেশে

দেশের সোনা পার

 

তাতে দাদা তোর কি বল

তুই করিসনি পাপ

পাপ করেছে তারাই যারা

দেশ জনতার বাপ

 

চায়না থেকে মায়না দিয়ে

লবিস্ট এনে তায়

বলবে দেখো আজরাইলে

কিসের শরাব খায়

 

যতো  লাগে শরাব দিয়ে

করবে তারে বশ

অবাক মানবে বিশ্ব দেখে

ভোট চোরাদের যশ

৯ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৪

আহারে

কথা বলো কম কম

চলো যাই দমদম

খাই কিনে চমচম

আহারে

 

'পেটে নাই ডাল ভাত

চেটে খাই দুই হাত'

তুমি বলো এই বাত

বাহারে

 

কষ্টের কথাগুলো

ওড়ে যেন পেঁজাতুলো

চোখ মুখ ফুলোফুলো

বলি দুখ কাহারে?

আহারে আহারে

১০ই জানুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৫

বানকুড়ালি

বানকুড়ালি নেয় উড়িয়ে গাছের শুকনো পাতা

নেয় উড়িয়ে পন্ডিত স্যারের নতুন কেনা ছাতা

নেয় উড়িয়ে সীমা খালার লাল টুকটুক রাতা

বানকুড়ালি নেয় উড়িয়ে ট্যারা ফজলুর খাতা

 

সাঁই সাঁই সাঁই ঘূর্ণিপাকে উড়ায় ধুলোবালি

অবাক হয়ে চেয়ে থাকে রহিমুদ্দির শালী

চিলের ডানা ফানা ফানা মেঘের দেশে যায়

বানকুড়ালি এতো শক্তি কেমন করে পায়?

 

বানকুড়ালির বাউড়ি বাতাস বাঁধা মানে না

উড়ে যে কার পুতুল পরী সেটাও জানে না

অকাতরে নেয় ছিনিয়ে গাছের মরা ডাল

বানকুড়ালি নাস্তানাবুদ করে ঘরের চাল

 

বানকুড়ালি বকুল ফুলের টাটকা মালা না

বানকুড়ালি কারোর দাদা মামা খালা না

১১ই জানুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৬

লড়তে হয়, গড়তে হয়

খাচ্ছিলাম ভাই চানাচুর

যাচ্ছিলাম ভাই লক্ষীপুর

জানিস ওটা কত দূর

ঢাকা থেকে  সিংগাপুর

 

ধুর

তোর আষাঢ়ে গপ  থামা

এই যে দেখিস লাল জামা

এইটা দিছে কাল মামা

মামা তো কয় লক্ষীপুর

যেনো ঢাকা -- ফরিপুর

 

অত কথা জানি না

চক্ষে আমার ছানি না

চাঁদ কাছে না লক্ষীপুর?

বলতো কোনটা বেশী দূর?

 

চাঁদ থাকে দূর আকাশে

হয় না কারো কাকা সে

জমিন থেকে বহুত দূর

কই চাঁদ কই লক্ষীপুর

 

শোন

যায় না দেখা লক্ষীপুর

তাই ভেবেছি অনেক দূর

তাকালে চাঁদ দেখা যায়

তারে কি দূর বলা যায়?

 

দূরের কিছু যায় না দেখা

এমন কথাই বইতে লেখা

তাই ভেবেছি লক্ষীপুর

সে হবে ভাই অনেক দূর

 

সব জানা নয় জানা রে ভাই

সব দেখা নয় দেখা

সব শেখা নয় শেখা রে ভাই

সব লেখা নয় লেখা

 

সত্যটারে জানতে হয়

কোরান হাদিস মানতে হয়

ভুল যদি সে করেই ফেলে

তওবা তাকে করতে হয়

 

ন্যায়ের পথে লড়তে হয়

সুন্দর জীবন গড়তে হয়

১২ই জানুয়ারী ২০২১ : ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৭

দুর্নীতি দূরে নয়

দুর্নীতি দূরে নয় কাছে কাছে থাকে

ইবলিশ বড়ো সাব ইশারায় ডাকে

ঘুষ খায় বড়ো সাব আমি বকশিশ

তুই পাবি যদি বসে হাততালি দিস

 

সুদ খায় একাএকা টের আমি পাই না

বড় মুখে বলি ভাই, আমি সুদ খাই না

প্রজেক্টের টাকা এলে মাঝে মাঝে দেন

বাকিটা তো বড়ো সাব কেরানীরা নেন

 

সাতশ টাকার বালিশ সত্তুর হাজারে

কিনে দিতে বড়সাব কয় বারে বারে

কলাগাছ বেঁচে দেই তাও দশ হাজারে

বলে, যাও, দুইশ দিয়ে আসো মাজারে

 

লাখ টাকা বড়সাব, আমি তার ভাগ

দুইশত টাকা পেয়ে হই না তো রাগ

লিল্লাবোডিংএ দেন মাসে মাসে চাঁদা

ইমামের বেতনের দেন তিনি আঁধা

 

ফাঁক পেলে মাঝে মাঝে দরবারে যান

পীর সাব খুশী মনে বেহেশত বিলান

নযর নিয়াজ নিয়ে হেসে অমায়িক

পীর সাব বলে এতো সুদ খাওয়া ঠিক?

 

এভাবেই সুদ ঘুষ হারামের টাকা

জনেজনে বিলি হয়,শুনে যান কাকা

ধরে নেন, আপনিও তার ভাগ পান

তারপরও আপনি, পাকা মুসলমান

 

দান করে কিনে নেন জান্নাতি হুর

খুশি মনে তাই খান ঝাল চানাচুর

১২ই জানুয়ারী ২০২১ : ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৮

বাপ মরলে

তেতুল লাগে চুকা চুকা মরিচ লাগে ঝাল

রিলিফ চোরা মানুষ না, হনুমানের পাল

বাপ মরেছে ফুর্তি কর বাজা বাদ্যি ঢোল

মুসলিম হলে দোয়া বল, হিন্দু হরিবোল

 

মোড়ে মোড়ে মূর্তি হবে, ফূর্তি হবে জোশ

বাপের ধন পাবে যে, সেইতো হবে খোশ

রাজপুত্তুর রাজা হবে, মালির বেটা মালি

কি যায় বল, চুপেচুপে লোকে দিলে গালি

 

গালি দেবে তালি দেবে শালী দেবে খোশে

শ্রাদ্ধ খেয়ে পাবলিকে নাচবে বন্য জোশে

তেতুল লাগে চুকা চুকা, মরিচ লাগে ঝাল

বাপ মরলেই ফূর্তি করে হনুমানের পাল

১৩ই জানুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৪৯

তুমি তোমার নও

চান করে ঝিক্মিক ঝিক্মিক সূর্যের লাগে তাপ

পরের কথা বিশ্বাস করে ডাকি নিজের বাপ

জন্মের পরে মা চিনি না, শালদুধ তবু খাই

যার উসিলায় শালদুধ খাই তাঁর গুণ কি গাই?

 

মরবো কবে কেউ জানি না, করি বাহাদুরী

আমার লম্ফ দেখে হাসে থুত্থুড়ে চান বুড়ি

একটা ধানের জন্ম দেবার সাধ্য যাদের নাই

জীবন কাটাই যারটা খেয়ে তাঁর গুণ কি গাই?

 

অক্সিজেনের অঢেল চালান মাগনা যিনি দেন

কেউ কি তারে বাদ দিয়ে, একটা নিঃশ্বাস নেন?

রোদবৃষ্টি, মাটি পানি, যাঁর কাছ থেকে পাই

আমরা অধম আদম সন্তান তাঁর গুণ কি গাই?

 

তাঁর সৃষ্টিকে ভালবাসো, শোকরগুজার হও

যতোই করো আমি আমি, তুমি তোমার নও

১৩ই জানুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫০

হটেন টট হটেন টট

আসাদ বিন হাফিজ

হটেন টট হটেন টট

পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট

বাতাসটাও পাল্টে যাচ্ছে

রাজা মশাই পান্তা খাচ্ছে।

পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট

পাল্টে যাচ্ছে টকশো নট

পাল্টে যাচ্ছে ফটার ফট

কারো কারো সাহস বাড়ছে

রামছাগলও মার খাচ্ছে।

হটেন টট হটেন টট

খুলছে ধীরে পুরান জট

মাহফিলে কেউ বাঁধা দিলে

বীর বাহাদুর হচ্ছে কট।

হটেন টট হটেন টট

পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট

পাল্টে যাচ্ছে নাটের নট

শুনছি আওয়াজ খটার খট

বলছে লোকে আপনি নট।

হটেন টট হটেন টট

১৪ই জানুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫১

ভালো হোক

ভাল কাজে হাত দিন

সপ্তাহে সাত দিন

খেটে যান রাতদিন

ভাল ফল ফলবে

সকলেই আপনাকে

ভাল লোক বলবে

 

আর যদি মন্দ

করে দেন বন্ধ

অন্ধও বলবে

লোকটা তো ভালো

আঁধারের রাজ্য

এনে দেয় আলো

 

আপনাকে দেখে লোক

ভালো হোক, ভালো হোক

সকলের কালো মন

আলো হোক আলো হোক

ভালো হোক

১৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫২

তবে কি মুই হারতাম?

যদি পারতাম মারতাম তোরে

পারিনা তাই মারি না

তুই হারাস তাই হারি আমি,

ইচ্ছে করে হারি না

সুযোগ পেলে ছাড়ি না

ভয়ে আগে বাড়ি না

মারতে পারি পিঁপড়া ধরে,

ওসব আমি মারি না

 

তুইও মানুষ আমিও মানুষ,

আছে মনে লোভ

তোর মতোই আমার মনেও

আছে কিছু ক্ষোভ

কিন্তু কুকুর পালি না

আমি হোসেন আলী না

সেই কারণে তোকে আমি

দেই না দায়ের কোপ

 

পারতাম যদি মারতাম

তবে কি মুই হারতাম?

১৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৩

ভাইরে

ভাইরে

এবার আমি যাইরে

তোর চুরিটা সত্যি দাদা

আমি দেখি নাইরে

মনে রাখিস আমি দাদা

ভাগটা যেনো পাইরে

 

ভাইরে

তোর কাছে তো আমি দাদা

কিচ্ছু নাহি চাই রে

কে বলেছে পরের গাছের

কাঁঠাল আমি খাই রে

ঘরে যখন কাঁঠাল খায়

আমি ছিলাম বাইরে

 

ভাইরে

এক হালি ডিম সিদ্ধ ছিল

এখন দেখি নাইরে

ডিম খেয়েছে ইন্দুর ছাও

নাই হয়েছে তাইরে

তাও যদি তুই চোর বলিস

মনে ব্যথা পাইরে

 

ভাইরে

আমরা সবাই সাধু পুরুষ

পরের জিনিস খাইরে

তুই জানিস না আমিও তো

খোদারই গুণ গাইরে

 

ভাইরে

খোদার জিনিস বান্দা খাবে

দোষ তো কিছু নাইরে

কোনকালে কে নিজে নিজের

জিনিস আমরা খাইরে

দুনিয়ার সবই খোদার

তাইতো খেতে পাইরে

 

ভাইরে

চোর হলে তো সবাই চোর

তার বাইরে  কেউ নাইরে

ভাইরে

১৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৪

শীত পড়েছে ধুম

হুম

শীত পড়েছে ধুম

বলতে পারিস কই গেলে

পাবো একটু ওম

 

হুম

শীত পড়েছে ধুম

লেপের নিচে গিয়ে তবে

দে না ডাটে ঘুম

 

হুম

শীত পড়েছে ধুম

বাইরে এলে শীতের বুড়ি

দেবেই দেবে চুম

 

হুম

শীত পড়েছে ধুম

শুকনো পাতায় আগুন জ্বেলে

বল নারে কুম কুম

 

হুম

শীত পড়েছে ধুম

রোদের তাপের আঁচ পেয়ে

হচ্ছে গরম রুম

 

হুম

শীত পড়েছে ধুম

বসন্তটা আসছে ধেয়ে

করতে শীতকে গুম

 

শীতের বুড়ি রোদের তাপ

দেখলে বলে বাপরে বাপ

১৫ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৫

কমেন্ট কাব্য

কমেন্ট দিয়ে ভরলে পকেট

কিম্বা গুদাম ঘর

তাতেকি হায় মিলেরে ভাই

লালচে দুধের স্বর

 

কমেন্ট দিয়ে ঈদের পশু

ক্রয় কি করা যায়

তবে কেন লেখকরা সব

কমেন্ট খালি চায়?

 

কমেন্ট দিয়ে কেউ কি বানায়

বিশাল বালাখানা

তবে কেনো কমেন্ট চেয়ে

হচ্ছো ফানাফানা

 

কমেন্ট দিয়ে যায় না হওয়া

রবীন্দ্র নজরুল

কমেন্ট পেলেই মস্ত কবি

ভুল রে বাবা ভুল

 

ধন্য মানো যদি পাঠক

লেখাটাকে পড়েন

তার গলে দাও ফুলের মালা

যে জন শেয়ার করেন

১৬ই জানুয়ারী ২০২১ : ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৬

বন্ধু

জনগণের বন্ধু দেখি

পাবলিক ধরে পিটায়

মাঝেমধ্যে লাঠি রেখে

ধাতব শীশা ছিটায়

 

এইটা নাকি বন্ধু হওয়ার

ডিজিটালি ধারা

এই ধারাটি রপ্ত করতে

তালিম নিবি কারা?

 

দেরী করে লাভ কি বল

জলদি ছুটে আয়

দেখি বন্ধু পিটা খেতে

কেমন মজা পায়?

 

বন্ধু যদি ভালোবেসে

করে কিছু দান

ঋণী থাকবি যদি তোরা

না দিস প্রতিদান

 

তুমি যদি ফুল দাও বন্ধু

আমিও দেবো ফুল

তবেই বন্ধু আমি হবো

তোমার সমতুল

১৬ই জানুয়ারী ২০২১ : ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৭

মন্ত্রী বানাও খুনি

পলিটিক্যাল খুনি যারা

আগে খোঁজ তাদের

খুনখারাবির রক্ত গায়ে

লেগে আছে যাদের

 

খুন তো করে গদীর লোভে

গদী যদি পায়

খুনি হবে ভেজা বিড়াল

চুমু খাবে পা'

 

খুনী ধরে মন্ত্রী বানাও

ক্ষমতার দাও অংশ

যেন সাহস না পায় কেউ

করতে নিধন বংশ

 

তোমার পুলিশ রাখবে যখন

ওদের গাড়ি ঘিরে

খুনটা করার সাহস খুনী

কেমনে পাবে ফিরে?

 

মন্ত্রী বানাও খুনীদেরকে

বাঁচাও নিজের গদী

নয় বানাবে ওরাই তোমার

জীবন রক্ত নদী

১৬ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৮

কার বাড়ি যাবি

মামা আর মামী চায়

রেশমার স্বামী চায়

আমি আর তুমিও

জয়নাল, সুমিও

 

আর চায় জনগণ

বলি তার বিবরণ

চায় গণতন্ত্র

কোরানের সুশাসন

 

মাহফিলে চিল্লায়

বাঁধা দেয় বিল্লায়

পাবলিক জুতা মারে

কিল্লায়, কিল্লায়

 

মাহফিলে বাঁধা দিলে

কলজেটা খাবে চিলে

মাস্তানী সবখানে চলে না

মুমীন তো শির দেয়, টলে না

 

এইসব দেখি আর ভাবি--

 

মাস্তানী করে আর

কয়দিন খাবি?

শুরু হলে গণ কিল

তুই টের পাবি?

 

কিল খেয়ে অবশেষে

ক্ষমতার চাবি

জনতার হাতে দিয়ে

কার বাড়ি যাবি?

 

গণ কিল কারে কয়

তুই টের পাবি

গণ কিল খেয়ে দিবি

ক্ষমতার চাবি

১৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৫৯

তুই নিবি কার পক্ষ

মনে হচ্ছে দাদা আবার

লাগবে দেশে যুদ্ধ

আস্তিক নাস্তিক দেখ চেয়ে

সবাই কেমন ক্রুদ্ধ

 

একদল বলছে খেলা হবে

আর দল বলছে, আয়

আড়াই বছর কারে কারে

দুধ পিলাইছে মায়

 

আস্তিক বলছে মুমীন কভু

ভয় করে না মরণে

নাস্তিক বলছে ফুলের অর্ঘ্য

দেবোই বাবার চরণে

 

নবীর উম্মত দাবী করে

মূর্তি যারা বানায়

তাদের কিরে নবীর উম্মত

দাবী করা মানায়?

 

যুদ্ধ যদি লাগে দাদা

তুই নিবি কার পক্ষ?

কার পক্ষে পেতে দিবি

নিজের আপন বক্ষ?

১৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬০

সবাই বলো

পড়ুন এবং শেয়ার করুন

যে লেখাটা ভালো

যার লেখা মনে ছড়ায়

আঁধার রাতে আলো

 

যার লেখাটা মনে জাগায়

সাহস উদ্দীপনা

সেই লেখাটা পড়ুক সবাই

বন্ধু, আপনজনা

 

ভালো এবং আলোর মিলন

হোকনা দিনে রাতে

ভালো কাজে সবাই আসো

হাতটা ধরি হাতে

 

সবাই মিলে যদি করি

একটু ভালো কাজ

মনে রেখো সেটাই যাবে

আমলনামায় আজ

 

সবাই আসো কন্ঠে তুলি

আল্লাহ নবীর গান

সবাই বলো এক সাথে

আল্লাহ মহীয়ান

১৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬১

চাকরগুলো খুদ কুড়ায়

দুধকলাতে যতোই পোষো

সাপ কখনো ইষ্টি নয়

সময় হলেই দেখবে তুমি

সাপের বিষের বিষ্টি হয়

 

তোমার শত্রু তুমি নিজে

কেউ তো তোমার শত্রু নয়

পোষা সাপে হানলে ছোবল

সিঁড়িতে লাশ পড়ে রয়

 

নিরাপত্তার রক্ষীগুলো

পক্ষী হয়ে উড়ে যায়

বেতন দেয়া চাকরগুলো

গদীর তলে খুদ কুড়ায়

১৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬২

অ মিয়ারা

মিয়ারা দেইখা যাও

ঝাঁপির ভেতর সাপের ছাও

সাপগুলো সব বিদেশি

তাই সাপের ফি বেশি

 

সাপগুলো সব চাকরী চায়

ওরা মাখা দুধ ভাত খায়

ছুটি পেলে বাড়ি যায়

ওদের প্রিয় গয়না নায়

 

মিয়ারা দেইখা যাও

ঝাঁপির ভেতর সাপের ছাও

বছর বছর দিল্লি যায়

পদ্মার ইলিশ এনাম পায়

 

আসলো দেশে সাপের ছাও

একটা সাপের দুইটা পাও

তারা ঘুরে শহর গাঁও

মিয়ারা দেইখা যাও

১৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৩

জয় নিশান

আমার জবান বন্ধ করতে

চেয়েছিল পাকিস্তান

হয়নি জবান বন্ধ আমার

পেয়েছিল অভ্যুত্থান

 

ভেসেছিল আইয়ুব খান

কসাইখ্যাত টিক্কা খান

জবান বন্ধ করতে এসে

হেরেছিল রাও ফরমান

 

জবান বন্ধ যায় না করা

অস্ত্র গোলা বারুদে

স্বৈরাচারকে দেয় তাড়িয়ে

বীর জনতা ঝাড়ু দে

 

জনমনে ডাকলে বান

উড়ে নয়া জয় নিশান

১৭ই জানুয়ারী ২০২১ : ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৪

অসৎ পথে চলি না

অসৎ পথে চলি না

মিথ্যা কথা বলি না

করি না পাপ কাজ

ওগো মহারাজ

 

ভয় দেখালে ডরি না

লোভে কভু পড়ি না

পাই না কাজে লাজ

ওগো মহারাজ

 

অসৎ পথে লড়ি না

নষ্ট জীবন গড়ি না

হই না ধোঁকাবাজ

আল্লাহ মহারাজ

 

তোমায় শুধু প্রভু বলি

মিথ্যা বাতিল পায়ে দলি

মাথায় জড়াই তাজ

আল্লাহ মহারাজ

 

অসহায়ের সহায় হই

সদা নীতির পক্ষে রই

ধরি সফেদ সাজ

আল্লাহ মহারাজ

১৮ই জানুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৫

হিহি

শীত এলে ভাই

গীত গাই আমি

হিহি হিহি হিহি

গান শুনে ভাই

গীত গায় ঘোড়া

চিহি চিহি চিহি

 

কুয়াশাগুলো

পড়ছে যেনো

চালের গুড়া মিহি

লেপের নিচে

শুয়ে ভাগনে

বলছে মামা হিহি

 

হিহি হিহি হিহি

কুয়াশা পড়ছে মিহি

শীত এসেছে হিহি

হিহি হিহি হিহি

১৮ই জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৬

কোলা ব্যাঙের বিয়ে

ইয়ে

কোলা ব্যাঙের বিয়ে

সেই খুশিতে নাচ জুড়েছে

ঘাসফড়িং টিয়ে

হালিমা নদী খাচ্ছে দধি

মুচকি হাসি দিয়ে

 

বিয়ে বাড়ি গিয়ে দেখি

হচ্ছে খাটে রান্না

মুক্তা নাকি পায়নি দাওয়াত

তাই জুড়েছে কান্না

নদী বলে, কাঁদিস কেনো

তোর জন্য তোলা আছে

সালওয়া মান্না

 

সে সব নিয়ে এক্ষুণি

রওনা দেবে পান্না

একটু আগে সে কথাটা

বলে গেল বান্না

 

ইয়ে

কোলা ব্যাঙের বিয়ে

পোলাও মাংস রান্না হচ্ছে

পুরাণ ঘি দিয়ে

খাওয়া শেষে কে কে যাবি

নয়া বৌকে নিয়ে?

২০শে জানুয়ারী ২০২১ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৭

নূরানী আলো

রাত হয় কালো আর আলোময় দিন

প্রতি ভোরে রাঙা রবি হাসে অমলিন

 

আকাশের ফাঁক দিয়ে মিটি মিটি চায়

বলে ওরে,দ্বোর খুলে আয় সবে আয়

 

বড় মামা ছোট মামা সালাম আগে নিন

সালাম দিয়ে শুরু হোক আমাদের দিন

 

ছোট যারা সালাম দাও বড় দাও আদর

বড়ো যেনো ওম ওম শীতে শাল, চাদর

 

রবি হয় মামা সেতো চোখে দেয় আলো

নবী হন নেতা বলেন, ভালো হও ভালো

 

রবি দেয় চোখে আলোনবী দেন নূর

সে আলোতে চলি পথ, যাই যতো দূর

 

আলো আর নূর যদি সাথে কারো রয়

তার মনে থাকে নাতো আর কোন ভয়

২১শে জানুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৮

হীম বুড়ি

হীম বুড়ি হীম হীম

এই নাও দুটো ডিম

গরম গরম খাও

খেয়ে বাড়ি যাও

 

যাচ্ছো না যে চাচ্ছো কি?

ডিমের মজা পাচ্ছো কি?

তেলের পিঠা তেলের পিঠা

ওটাও খাবে, ঝাল না মিঠা?

 

মায়ের জন্য দুটো দাও

সঙ্গে করে নিয়ে যাই

আর দুটো দাও আমারে

বসে বসে নিজে খাই

 

আমার মা তো কাবু জারে

তাইতো বেশী আসে না

শীতের বুড়ি আসবে শুনলে

ভয়ে কেউ আর হাসে না

 

মাকে রেখে শীতের পিঠা

বলতো একা কেমনে খাই

দে না দুটো ভাঁপা পিঠা

মায়ের জন্য নিয়ে যাই

 

হীম বুড়ি হীম হীম

কখন দিবি দানা সীম?

বিঁচিঅলা সীম চাই

এই নে পিঠা, আর নাই

২৪ জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৬৯

মানুষ ও ঘাস

আকাশে মেঘ ভাসছিল

সুরুজ মামা হাসছিল

দাদা বাড়ি আসছিল

তখন বোশেখ মাস ছিল

ইয়ে

টিয়া বলে দাদা তুমি

করবা নাকি বিয়ে?

 

দাদা তখন কাশছিল

পায়ের নিচে ঘাস ছিল

ঘাসের ভেতর লাশ ছিল

লাশের গলায় ফাঁস ছিল

জানিস ওটা কার ছিল?

লাশটা আলম খাঁর ছিল

ইয়ে

লাশটা দেখ উঠলো কেঁপে

দাদার বুড়ো হিয়ে

 

খাঁর পুতে ক্ষেত চাষ ছিল

ক্ষেতের পাশে বাঁশ ছিল

বাঁশের ঝাড়ে হাঁস ছিল

পাশে অলোক দাস ছিল

ইয়ে

দাদার ডাকে পয়লা সে

দাঁড়ায় পাশে গিয়ে

 

খান সাহেবের তেজ ছিল

যদিও লোকটা ভেজ ছিল

মাথায় টুপী ফেজ ছিল

বুকে একটা ব্যাজ ছিল

ইয়ে

মরার পর খান সাহেবও

লাশই হলো গিয়ে

 

মানুষ মরলে রয় না মানুষ

যায় হয়ে সে লাশ

দুর্বাঘাস তো ঘাসই থাকে

মরেও বরো মাস

ইয়ে

কও না তবে করবো কি ভাই

অঢেল সম্পদ দিয়ে

২৭শে জানুয়ারী ২০২১ : ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭০

মরার আগে

কোটি টাকার

গুটি চালো

পুটি মাছের ছাও

মরার আগে

যতো পারো

হারাম কামাই খাও

 

মরে গেলে নড়বে না হাত

মন বুঝবেনা দিন না রাত

 

মুখ কখনো

সত্য  মিথ্যা

করবে না আর রাও

পা কখনো

বলবে না আর

বাঈজি বাড়ি যাও

 

বলবে সবাই হারামখোর

বলবে ডেকে মাটির গোর

 

কোটি টাকার

গুটি চালো

পুটি মাছের ছাও

মরার আগে

যতো পারো

হারাম কামাই খাও

২৭শে জানুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭১

মেহেরজানের গীত

রাতের বেলা বাতের ব্যথায়

কাতর হয়ে দাদীজান

শীতের রাতে ওমের আশায়

নতুন একটা শাদী চান

এই কথাই তো বলে গেলো

গানে গানে মেহেরজান

আপনারা কি শুনতে পান?

 

তা শোনবেন ক্যান?

 

লেপের তলে শুয়ে যখন

কুটুর কুটুর নাড়ু খান

তখন শুধু বলতে পারেন

দাদী আমার সোনার চান

 

দাদী তখন হি হি করে--

খাদিতে শীত মানে না

শীতটা যেন কুমীরের দাঁত

কোন কিছু মানে না

 

আপনি বলেন, কইগো দাদী,

মোয়া বানাও, খাই

তোমার হাতের মোয়া দাদী

তিলের নাড়ুর ভাই

 

নাড়ু, মোয়া খাইতে মজা

যায় না তাতে শীত

গানে গানে তাই বলে যায়

মেহেরজানের গীত

২৯শে জানুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭২

খুনী

একটা লোকের দুইটা পাও

একটা বাঘের চারটা

পা রেখে সে বাঘটা ভাঙে

লোকের মোটা ঘাড়টা

 

একটা মাত্র ঘাড় ছিল তার

তাও খেয়েছে বাঘে

বাকি ছিল পা দুটো তার

তাও খেয়েছে মাঘে

 

পিঁপড়ে ছিল ছয়পা অলা

তারও ছিল লম্বা গলা

 

গর্তে বসে বাঘকে বলে

বাঘ বাহাদুর আয়

দেখি কত শক্তি আছে

ডোরাকাটা গায়

 

আমার শরীর কালো কিন্তু

খুনী আমি নই

যে যে করে মানুষ খুন

তারেই খুনী কই

 

খুন করে বাঘ খুনী হয়

খুনী তো আর গুণী নয়

৩০শে জানুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৩

এই দেশ সকলের

এই দেশ আমাদের

চাচা আর মামাদের

কৃষকের ছাত্রের মজুরের

এই দেশ সকলের, সকলের, সকলের

 

বহু ত্যাগ রক্তের বিনিময়ে

দুঃসহ বেদনা সয়ে সয়ে

সাহসের পতাকা হাতে লয়ে

পেয়েছি এই দেশ আদরের

এই দেশ সকলের, সকলের, সকলের

 

এই দেশ সকলে গড়বোই

দরকারে হাতে হাত ধরবোই

দেশের জন্য যদি মরতেও হয়

যতক্ষণ প্রাণ আছে লড়বোই

 

এই দেশ আমাদের

চাচা আর মামাদের

কৃষকের ছাত্রের মজুরের

এই দেশ সকলের, সকলের, সকলের

 

এই দেশ নয় কোন জালিমের

নয় নয় এই দেশ নয় কোন বাদুরের

এই দেশ নয় কোন রাজাদের

এই দেশ ফকিরের, গরীবের

এই দেশ পুরুত আর ইমামের

এই দেশ সকলের, সকলের, সকলের

৩১শে জানুয়ারী ২০২১ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৪

শপথ নিলাম

এই নাও আজ হাতে হাত রাখলাম

স্বপ্নের সোনারঙে মন মাখলাম

দ্বীন কায়েমের পথে থাকবো অটুট

হাতে হাত রেখে এই শপথ নিলাম

 

ইসলাম ছাড়া নেই মুক্তির পথ

এই কথা মেনে হই নবীর উম্মত

এই পথে একসাথে রেখে হিম্মত

চলবোই শপথে পা বাড়ালাম

 

হাতে হাত কাঁধে কাঁধ একসাথে চলি

সেই পথে বাঁধা এলে দুপায়ে তা দলি

সারাদিন এসো জপি আল্লাহর নাম

আমাদের দ্বীন হোক শুধু ইসলাম

 

এই নাও আজ হাতে হাত রাখলাম

স্বপ্নের সোনারঙে মন মাখলাম

দ্বীন কায়েমের পথে থাকবো অটুট

হাতে হাত রেখে এই শপথ নিলাম

৩১শে জানুয়ারী ২০২১ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৫

ভালোবাসুন

আসুন আসুন

আস্তে কাশুন

একটু হাসুন

ভালোবাসুন

 

ভালোবাসুন

ঘৃণা নাশুন

আসুন আসুন

মুচকি হাসুন

 

মুচকি হাসুন

ভালোবাসুন

ভালোবাসুন

ভালোবাসুন

১লা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৬

ফাঁকা বুলি, টিকাটুলি

বিড়াল যখন বিল্লি হয়

রাজধানী তার দিল্লি হয়

বিড়াল বলে, মেও

ইলিশ যা পাও, দেও

 

পদ্মার ইলিশ বদ্দা খায়

নায়ের ইলিশ দিল্লি যায়

ইলিশ খাওয়ায় পাক্কা সে

শেখ ফরিদের কাক্কা সে

 

আমরা খাই ফাঁকা বুলি

শুয়ে বসে টিকাটুলি

১লা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৭

ইনু মিনু

ইনু চালায় হিনো গাড়ি

মিনু বসে দেখে

কয়টা পেল নোবেল প্রাইজ

বসে বসে লেখে

 

টিকা কেনায় আরেকটা প্রাইজ

পাওনা হলো দাদা

যে পেয়েছে টেন্ডার সে তো

বখরা দেবে আধা

 

দোস্তের স্টক খালি হলো

করোনার কি গুণ

আলু ভর্তায় আমি দিলাম

একটুখানি নুন

 

এই কারণে আরেকটা প্রাইজ

পাইতে পারি আমি

বোম্বে থেকে এমন খবর

দিল হঠাৎ মামী

১লা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৮

বোম্বে হবে ভোর

পাকু গেল টাকু মাথায়

ভাকু এলো দেশে

নেকড়ে যেন গরু-ঘরে

পরাণ বন্ধুর বেশে

 

বাপ দিয়েছে বাঁধন খুলে

মা দিয়েছে তালি

সখিরে দেখ কান গলা

সবই আমার খালি

 

বাংলাদেশের মাটি সোনা

সোনার চেয়ে দামী

যতো দিবি ততো নেবো

'না' করবো না আমি

 

দিল্লি থেকে বিল্লি আসে

পরাণ বন্ধুর বেশে

দন্ত দেখায় পরাণ খুলে

মিষ্টি মধুর হেসে

 

বলে, ওরে আর ভাবিস না

আমি আছি তোর

করাচিতে সন্ধ্যা নামবে

বোম্বে হবে ভোর

১লা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৭৯

ম থেকে মা হয়

থেকে মা হয়

মা থেকে মামা

থেকে জান্নাত

আর লাল জামা

 

থেকে টিকটিকি

করে টিক টিক

থেকে কোরানের

কথা ঠিক ঠিক

 

থেকে চলো যাই

চাঁদটাকে ধরি

থেকে বীর বেশে

দেশটাকে গড়ি

২রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮০

আলোর প্রভাত

ইয়া আল্লাহ, কবুল করো এই মুনাজাত

আমাদের গাজী করো, দাও শাহাদাত

দাও দাও আমাদের দাও খেলাফাত

আবার দেখাও আল্লাহ মহা কুদরাত

 

আমাদের সাধ্য নেই পিঁপড়াকে মারি

তোমাকেই ভুলে গিয়ে, করি বাহাদুরি

কোরানকে আঁকড়ে ধরি নাই হিম্মত

অথচ দাবী করি প্রিয় নবীর উম্মাত

 

দেশে দেশে মার খাই কোরানকে ছেড়ে

কোরআনের পাতা তবু দেখি না নেড়ে

পথহারা মুসাফির  ঘুমে কাটে রাত

দাও দাও প্রভু দাও আলোর প্রভাত

২রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮১

মন্টু ঝন্টু দুই ভাই

মন্টু ঝন্টু দুই ভাই

তাদের কোন ঘর নাই

থাকে ফুটপাতে

হীম হীম রাতে

 

ঝন্টু বলে মন্টু ভাই

একটা গেটও খোলা নাই

খোলা যদি পাইতাম

সিঁড়ির তলে যাইতাম

 

মন্টু বলে ঝন্টু ভাই

শহরে গাছতলা নাই

গাছতলা যদি যাইতাম

একটু আরাম পাইতাম

 

গাছতলা নাই সিঁড়ি নাই

দেশে আবুল বিড়ি নাই

কই যে এখন যাই

এত কষ্ট পাচ্ছি ভাই

মা মরেছে তাই

 

মা তো এখন চান্দে

বসে বসে কান্দে

চান্দের বুড়ি অবেলায়

বসে বসে মোয়া খায়

 

মায়ের কথা বাদ দে

আমার হাতে হাত দে

জড়িয়ে ধর আমার গা

জারে রে চলে যা

 

কুত্তা যদি হইতি ভাই

সিঁড়ির তলে রইতি ভাই

২রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮২

হাতির ইচ্ছাপূরণ

হীম কুয়াশা হীম হীম

মোরগে খায় ঘোড়ার ডিম

হাতি পিন্দে লালশাড়ি

শীতে যাবে কার বাড়ি?

 

শ্বশুড়বাড়ি যেতে চায়

শীতের পিঠা খেতে চায়

খেজুর তলে কাঁটা

হাতি বলে টা টা

 

হাতির ছেলে তাঁতীর বাড়ি

খাতির করে কয়

একটা চাদর দে বানিয়ে

শীতকে করি জয়

 

নইলে যাবো গহীন বনে

চুপি চুপি সংগোপনে

এই ইরাদা মনে মনে

কে লড়ে ভাই শীতের সনে

২রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৩

মাঝে মাঝে মনে হয়

মাঝে মাঝে মনে হয়

কিছু কথা বলে যাই

দেশ ছেড়ে চলে যাই

মাফিয়ারে ডলে যাই

এয়ারপোর্টে বসে খাই

চিপস আর ফান্টা

বিদেশের বাতাসে

গিয়ে বাঁচাই জানটা

 

মাঝে মাঝে মনে হয়

 

মাঝে মাঝে মনে হয়

কেউ নেই সদাশয়

পৃথিবীটা হোক লয়

গরীবের হোক জয়

আর কোন নাই ভয়

এক হাতে টিপে মারি

দুরাচার জান্তা

যেইভাবে টিপে খাই

মরিচ আর পান্তা

 

মাঝে মাঝে মনে হয়

 

মাঝে মাঝে মনে হয়

আসাদের লাল সার্ট উড়িয়ে

জালিমের গদীটাকে গুড়িয়ে

মিসমার করে ফেলি পুড়িয়ে

এনে দেশটাতে খেলাফত

এনে দেই ইসলামী হুকুমত

দূর করে দেই ভুল ভ্রান্তি

এনে দেই ঘরে ঘরে শান্তি

২রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৪

ফেব্রুয়ারি এলে

ফেব্রুয়ারি এলে

যদি নামে পথে কয়টা দুঃসাহসী ছেলে

স্বৈরাচারে যায় পালিয়ে নিজের গদী ফেলে

 

ফেব্রুয়ারি এলে

শিকল ছিঁড়ে পথে নামে মায়ের দামাল ছেলে

দেশটাতে ফের আনে শান্তি নিজের রক্ত ঢেলে

 

ফেব্রুয়ারি এলে

আবার নামে পথে কয়টা মুক্তিপাগল ছেলে

ভয় তাড়িয়ে ওরা তখন রক্ত খেলা খেলে

 

ফেব্রুয়ারি এলে

কিশোর যুবক পথে নামে রক্ত চক্ষু মেলে

গদীলোভী শেয়াল পালায় মুখের খাবার ফেলে

 

ফেব্রুয়ারি আয়

মায়ের ছেলে মাকে বলে মিছিল করতে যায়

ছেলের পথে তাকিয়ে থাকে উদাস চোখে মায়

৩রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৫

তোর কি তাতে

চুরি করলে আমি করছি

তুইতো চুরি করোস নাই

যে কলেজে আমি পড়ছি

তুইতো তাতে পড়োস নাই

 

চুরির মাল আমি ধরছি

তুইতো সে মাল ধরোস নাই

টাকার পাহাড় আমি গড়ছি

তুইতো পাহাড় গড়োস নাই

 

ফকিন্নির পো তোর কি তাতে

তোরে কইছি কইতে

আমার পাপ আমারই থাক

তোরে কইছি লইতে।।

 

ভালা মাইনষের ছাও

কেনে মরবার চাও

কি লাভ ফিরলে হুশ

যখন শোনবা ঠুস?

৩রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৬

হনুমানের বাচ্চা

এই দেশটা চোর ডাকাতে ভরা

মানুষ খুঁজতে গিয়ে দাদা

খাইছি আমি ধরা

কনতো কি আর করা?

 

মানুষ দেখতে রাজধানীতে

এলাম চড়ে নায়

মিন্টু রোডে কাউয়া বিড়াল

দেখি কোরাস গায়

 

রাবিশ রাবিশ খবিস ভরা

অট্টালিকার সারি

ওসব নাকি উজির নাজির

ভদ্দলোকের বাড়ি

 

ঘরে ঘরে চাইয়া দেখি

চোর ডাকাতে ভরা

যাই পালিয়ে সেখান থেকে

বলেন কি আর করা

 

ক্লাবপাড়াতে শকুনগুলো

উকুন ধরে খায়

খাওয়ার পরে বাতাস খেতে

লেকের পাড়ে যায়

 

ভয়ে ভয়ে আমি তখন

নিজের দিকে চাই

দেখি সেথা হনুমানের

বাচ্চা বসা ভাই

৩রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৭

বাসো হাসো আসো

আমায় যারা ভালো বাসো

সবাই এবার একটু হাসো

আরো একটু কাছে আসো

সমস্যা আর নাই

নতুন করে পেইজ খুলেছি

ঢুকে পড়ো ভাই

 

বাংলা কিম্বা ইংরেজিতে

নাম লিখে নাও খোঁজ

নতুন রান্না ছড়া পাবে

মন ভরে দাও ভোজ

 

ফেবুর ঘরে জায়গা পাওনা

মাওনা চলে যাও

পেজের দুয়ার খোলা আছে

খোশে ঢুকে যাও

 

আরো আছে ভক্ত সুহৃদ

তাদের কিছু ঘর

তারা ডাকে আসো আসো

কেউ নও তো পর

৩রা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৮

এই মাস এই দেশ

এই মাস আগুনের

এই মাস ফাগুনের

এই মাস পলাশ আর কৃষ্ণচুড়ার

এই মাস অধিকার আদায় করার

 

এই মাস অরুণের

এই মাস তরুণের

এই মাস রক্ত দেয়া রক্ত নেয়ার

এই মাস অধিকার আদায় করার

 

শোষণের নাগপাশ দাও দাও গুড়িয়ে

জালিমের তখ্ত দাও দাও পুড়িয়ে

উড়িয়ে দাও যতো জঞ্জাল, ময়লা

আর সব কাজ থাক, এই কাজ পয়লা

 

আমরাতো কেউ নই ভীরু আর বুজদিল

আমরাতো নই কেউ হীনবল আত্মা

আমরা তাড়ারোই যত আছে মুশকিল

ঈমানতো দেয় না অশুভ ভয়ভীতি পাত্তা

 

এই দেশ প্রেম আর মমতার

এই দেশ মজলুম জনতার

এই দেশ অসহায় নিপীড়িত মানুষের

এই দেশ তোমাদের আমাদের সকলের

 

এই দেশ তোমাদের আমাদের সকলের

এই দেশ তোমাদের আমাদের সকলের

৪ঠা ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৮৯

কী যে মজা পাচ্ছিলাম

বিলের ধারে

চিলের সাথে

তিলের নাড়ু খাচ্ছিলাম

কী যে মজা পাচ্ছিলাম

আহা, কী  যে মজা পাচ্ছিলাম

 

দীলের সাথে

দীল মিলিয়ে

মিলের ছড়া গাঁথছিলাম

কী যে মজা পাচ্ছিলাম

আহা, গুনগুন গান গাচ্ছিলাম

 

মনের সুখে

ছড়ার তালে

হাত পা নেড়ে নাচছিলাম

কী যে মজা পাচ্ছিলাম

আহা, সুখে ভেসে যাচ্ছিলাম

 

সবাই দেখুক

সে নাচ কেমন

মনে মনে চাচ্ছিলাম

কী যে মজা পাচ্ছিলাম

আহা, কী  যে মজা পাচ্ছিলাম

তিলের নাড়ু খাচ্ছিলাম

আহা, কী  যে মজা পাচ্ছিলাম

৫ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯০

জীবনটাকে গড়ো

লিখলেই তো লেখা হয়

শিখলেই তো শেখা হয

তবে কেনো শেখো না

পরাণ খুলে লেখো না

 

ধরলেই তো ধরা হয়

পড়লেই তো পড়া হয়

তবে কেনো ধরো না

কোরান বুঝে পড়ো না

 

নড়লেই তো নড়া হয়

গড়লেই তো গড়া হয়

তবে কেনো নড়ো না

জীবনটাকে গড়ো না

 

এসো কোরান পড়ি

জীবনটাকে গড়ি

৫ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯১

আলোর নূপুর

আর কত দূর, আহা, আর কত দূর

আর কত দূরে বলো আলোর নূপুর

কত দূর গেলে পাবো আরশের নূর

এই মন যার স্বপ্নে রয়েছে বিভোর

 

হেঁটে হেঁটে বহু পথ এসেছি মাড়িয়ে

দিয়েছি কত না পাড়ি অজানা সাগর

আঁধারের রাত কত এসেছি মাড়িয়ে

আর কত দূরে আছে সুহাসিনী ভোর

 

যতোই আসুক আঁধার, রাত্রি তিমির

আমরা ছড়াবো পথে আলোর শিশির

নূর দিয়ে মুছে দেবো আঁধারের ঘোর

রাত্রির পর্দা ছিঁড়ে এনে দেবো ভোর

 

মনজিল হোক যতো দূর আরো দূর

আমরাই এনে দেবো আলোর নূপুর

৫ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯২

কী যে অনাসৃষ্টি

কেউ খায় টক-ঝাল

কেউ খায় মিষ্টি

কারো কাছে ভাল লাগে

শীতকালে বৃষ্টি।

কী যে অনাসৃষ্টি।

কেউ হয় দুশমন

কেউ হয় ইষ্টি

কেউ ডাকে আয় বলে

কেউ করে লিষ্টি।

কী যে অনাসৃষ্টি।

কারো চোখ মায়া ভরা

কারো রাগী দৃষ্টি

কেউ করে মারধোর

কেউ দেয় ফিস্টই।

কী যে অনাসৃষ্টি।

৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৩ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৩

সহজ কথা বলি

সহজ কথা বলি

দ্বীনের পথে চলি

ফুটাই হৃদয় কলি

প্রেমের টানে গলি

 

সহজ কথা বলি

সহজ পথে চলি

মন্দ দেখে জ্বলি

পায়ের নিচে ডলি

 

সহজ কথা বলি

পূণ্য পথে চলি

আগুন হয়ে জ্বলি

দেখে পাপের পলি

 

পাপের পথ ছেড়ে দাও

দ্বীনের পথ বেছে নাও

৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৪

নষ্ট জীবন

এক দুই তিন চার

দুনিয়া একাল্লাহর

তার ক্ষমতা সীমাহীন

বুঝে না তা অর্বাচীন

 

দুই তিন চার পাঁচ

জীবন ঠুনকো কাঁচ

রং তামাশায় ডুবে থাকে

তাই করেনা কোরান টাচ

 

তিন চার পাঁচ ছয়

পেত যদি খোদার ভয়

জীবন হতো মধুময়

নষ্ট জীবন সুখের নয়

৭ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৫

খাও খাও

ডিম খাও দধি খাও

শোষকের গদী খাও

লুটেরার নদী খাও

আর খাও যদি পাও

হারামীর বাচ্চা

ভর্তার সাথে খাও

মরিচটা কাচ্চা

 

মামা মামী খেয়ে যাও

বাটপার দামী খাও

প্রতারক নামী খাও

ধরে বদকামী খাও

খেতে যদি চাও বসো

চাচী আর চাচ্চা

যতো পারো খেয়ে যাও

হারামীর বাচ্চা

 

বদলোক ধরে খাও

লড়াইটা করে খাও

নিজেরটা গড়ে খাও

বেশরম নারী খাও

বেশ্যার বাড়ি খাও

যদি পাও তবে খাও

চাটুকার লুচ্চা

ধরে ধরে খেয়ে যাও

হারামীর বাচ্চা

৭ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৬

তারার ফুল

ঝিকমিক ঝিকমিক চান্দের আলো

ঝলমল ঝলমল করে

আহা, ঝলমল ঝলমল করে

চোখ জুড়ানো মন ভুলানো

তারায় আকাশ ভরে

ওমা,তারায় আকাশ ভরে

 

এতো বড়ো আকাশ মাগো

তারায় তারায় ভরা

আমার কেবল ইচ্ছে করে

তারার আকাশ ধরা

তুই মা আমায় সঙ্গে করে

চাঁদে একটু নিবি

নাকি দুটো তারা আমায়

নিজেই পেড়ে দিবি?

দেনা আমায় তারার ফুল

মুঠো মুঠো ভরে

যতো দেখি তারার ফুল

হৃদয় কেমন করে

 

তারা ফুলের বিশাল বাগান

কোন মালি মা গড়ে

ইচ্ছে করে তাঁর কাছে যাই

নিজেই বোরাক চড়ে

চল না তারে বানাই বন্ধু

সারা জীবন ভরে

তাঁর টানে মা মনটা আমার

কেমন কেমন করে

৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৭

তোডরমল

আবদুল আলী জমিদার

তিনবার হলো বমি তার

কারণ কি ভাই কারণ কি

কৌটায় ছিল পুরাণ ঘি

জবর খানা খাইছে রাতে

বমি নাকি হচ্ছে তাতে

 

খাইয়া হজম করতে হয়

নইলে বমির থাকে ভয়

 

লোকটা ছিলো বড়ই বদ

খাইছে নাকি ভেজাল মদ

মদ চেনে না জমিদার

তাতেই হচ্ছে দাস্ত তার

হারাম খেয়ে পগারপাড়

বিষ্ণুপুরের জমিদার

 

উল্টাপাল্টা খাইতে নাই

ভাঙ্গা নাও বাইতে নাই

যেমন কর্ম তেমন ফল

বলে গেছে তোডরমল

১০ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৮

ধন্য জীবন

কবিতা শোনা নবীর সুন্নত

হাদীসে কি পড়ো নাই

নবীর উম্মত দাবী করো

সুন্নত কেনো ধরো নাই?

 

কবি ডেকে নবী কতো

কাব্য আসর করতেন

নবীর ডাকে কবি গিয়ে

নিজের লেখা পড়তেন

 

নবীর একজন কবি ছিল

নবী ভালো বাসতেন

সেই আনন্দে কবির দল

সুখসাগরে ভাসতেন

 

নবীর নায়েব সায়েব বাবু

অত কথা মনে নাই

এক অক্ষরে দশটা নেকী

বসে বসে গোণে তাই

 

কয় ফোটাতে বোতল ভরে

হক্কানী পীর হুজুরদের

কয়টা ফোটা পূণ্য দিয়ে

কলস ভরে বুজর্গের?

 

সাগর পাড়ে বসে গোণে

সোয়াব বড় আল্লামা

কড়ি গোণা সোয়াব দিয়ে

ভরে নিজের পাল্লা মা

 

সারা রাত্রি নফল পড়লে

অনেক বেশী সোয়াব হয়

জ্ঞান সাধনায় থাকলে রত

তার ফজিলত কে বা কয়?

 

শহীদরাতো সবচে দামী

তাদের কোন মৃত্যু নাই

হাদীস মতে জ্ঞান সাধনার

দাম কি কেউ জানো ভাই?

 

জ্বীন মানুষ কেউ আসেনি

সওয়াব গোণার জন্য

কোরান হাদিস মেনে করো

নিজের জীবন ধন্য

১০ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩০৯৯

একটু বাড়াও

অন্তমিলের দন্তগুলো

একটু ধারাও

ভয়ের সাথে ভীতিটাকে

একটু বাড়াও

 

ভয় না পেলে হয় না সাহস

রুখে দেয়ার

ভয় না পেয়ে করলে আঘাত

হয় না ফেয়ার

 

ভয়টা এসে বুকে বুকে

সাহস বাড়ায়

মরার ভয়ে মানুষ তখন

রুখে দাঁড়ায়

 

সাহস যখন যায় ছড়িয়ে

পাড়ায় পাড়ায়

মানুষ তখন এক হয়ে সব

রুখে দাঁড়ায়

 

অন্তমিলের দন্তগুলো একটু ধারাও

ভয়ের সাথে ভীতিটাকে একটু বাড়াও

১১ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০০

তেল ও বেল

তেলের ওপর তেল ঢালো ভাই

তেলের ওপর তেল

এবার তাতে দাও না ছেড়ে

হাজার খানেক বেল

 

বেলের ওপর রেলের গাড়ি

গড়গড়িয়ে চলে

রেলগাড়িতে হাঁসের বাচ্চা

ঘুমায় দলে দলে

 

ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখে

গণতন্ত্রের ঘোড়া

স্বৈরাচারকে দিচ্ছে তুলে

অঢেল ফুলের তোড়া

 

তেলের ওপর তেল

বারে বারে দিচ্ছে ঢেলে

লম্পট রাস্কেল

১২ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : ১টা

No comments

Powered by Blogger.