আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২৮০১-২৯০০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০১

ভন্ডামীটা বাদ দেন

ফালতু কথার মর্ম নাই

টুপীর ভেতর ধর্ম নাই

নেহেরু ক্যাপ দেখেন নাই

সেই ক্যাপে কোন ধর্ম ভাই?

 

কি কন? আপনি চর্মনাই।

আপনার কোন কর্ম নাই?

গায়ে আতর, ঘর্ম নাই

যুদ্ধে যান না, বর্ম নাই?

এইটা কেমন ধর্ম, ভাই?

 

নবী লড়েন বদরে

আপনি থাকেন সদরে

ফরজ তরক করে আপনি,,

নফল পড়েন ক্বদরে,,,, ,

 

নায়েবে নবীর এই কি কাজ?

নাই কি ঘটে একটু লাজ?

 

মিষ্টি খাওয়ার সুন্নত বুঝেন

লড়াই করা বুঝেন না

নাকি আপনি স্বার্থ খোঁজেন

ঈমান ইসলাম খোঁজেন না?

 

পাড় ভন্ডামী বাদ দেন

ধরেন, কামে হাত দেন

৩১//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০২

ফতোয়া

ফতোয়া দেন নজরুল কাফের

রবি কাফের, কন না

সবাই দেখে চন্দ্র সুরুজ

আপনি পাপের বন্যা

 

রবি বাবুর লম্বা দাড়ি

নজরুলের তা নাই

রবি বাবুর মুরিদ হতে

চলেন তবে যাই

 

নেহেরু তো টুপী পড়েন

রবি রাখেন দাড়ি

তাদের দলে নাম লেখাতে

চলেন তাড়াতাড়ি

 

টুপী দাড়ির ইসলাম করি

জিকির করি রোজ

গরু মহিষ জবাই হইছে

ভালই হবে ভোজ

 

গাছ লাগাইছে দ্বীনের নবী

ফল খাওয়াটা আমার হবি

৩১//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৩

ইসলাম তেতুল গাছে

হুজুরগুলো মরার আগে

জুজুর ভয়ে মরে

খালি করে গুজুর গুজুর

কয় না কথা ডরে

 

ওয়াজ করে, জন্ম মৃত্যু

সবই খোদার হাতে

টায়ার ফাটলে তবে কেন

দাঁত লেগে যায় দাঁতে

 

একটুখানি মিলাদ পড়ে

নজর নিয়াজ পায়

তাই তো ওরা ঘরে ঘরে

দাওয়াত খেতে যায়

 

গায় লাগে না রোদ বৃষ্টি

ভিজে না গা ঘামে

খানা দানা যেমন তেমন

নজরানা পায় খামে

 

এরই নাম কি ইসলাম

নাকি আরো কিছু আছে?

বিজু বলে ইসলাম এখন

থাকে তেতুল গাছে

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৪

ওমর আলী

কোমর ব্যথায় ওমর আলী

তিনদিন ধরে কাৎরায়

ওমর বলে, ব্যথা যেনো

কোমর দিয়ে সাঁতরায়

 

চোখের জলে রাত যায়

জলে কি আর বাত যায়?

এমন জায়গায় ব্যথা করে

সেখানে কি হাত যায়?

 

ওমর আলী কাৎরায়

ব্যথায় ব্যথায় রাত যায়

বয়স কালে ওমর আলী

নাচতো নাকি যাত্রায়

 

এখন শুয়ে ওমর আলী

পুরাণ স্মৃতি হাতড়ায়

সুখে ভরা স্মৃতির নদী

সারাটা দিন সাঁতরায়

 

ওমর আলী কাৎরায়

কেঁদে কেঁদে রাত যায়

কান্না শুনে হাসে নাতি

এবং কিছু ফাতরায়

 

ওমর করে হায় হায়

পরের মাখা ভাত খায়

আর পারে না কোন কিছু

এখন শুয়ে নাত গায়

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৫

হাদীস কোরান মানো

কেমন করে ওহাবী হয়, কেমন করে সুন্নী

ওসব কথা হয়নি জানা আজো কিছু মুন্নী

মুসলমান তো মুসলমান, আবার শিয়া সুন্নী কি?

ফেরকাবাদি এরা তবে আসল ইসলাম চুন্নী কি?

 

মাইজভান্ডারী হতে বলো কোন কোরানে কইছে

মুসলমানের দেহে জানতাম জেহাদী খুন বইছে

আহলে সুন্নাত হবে তুমি, কোরআন তবে বাদ?

নামাজ রোজা দ্বীনের খুটি, কই গেলরে ছাদ

 

কয়টা নেকী লাগবে তোমার সে খবর কি জানো

নেকীর হিসাব তবে তুমি সামনে কেনো আনো?

কেমনে হবে আল্লাহ রাজি, নবী থাকবেন খোশ

তোমার মনে থাকুক শুধু সেই ফিকিরর জোশ

 

যার ফেরকা তার থাক ভাই, আমি মুসলমান

আমার হাতে থাকুক শুধু হাদিস ও কোরান

//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৬

উচিত কথন

উচিত কথা কইতে মানা

বউ করে দেয় বন্ধ খানা

আর কে রাগে সবার জানা

তাইতো উচিত কই না

খায়েশ করে পিঠের ওপর

ডান্ডাবাড়ি লই না

 

উচিত কথা কইতো হীরা

মেম্বারে কয় একটু জিরা

নইলে মরবি খোদার কিরা

তাইতো উচিত কই না

বয়স কালে নতুন করে

হাঙ্গা আমি বই না

 

হীরা থাকলে কইতো খুন

এটা শুধু বীরের গুণ

মন্ত্রী বিলায় আফলাতুন

দেশপতি কয় আব্বাস

কে কয় তোরে খুনী তুই

বাপকা বেটা, সাব্বাস

 

খুনী মানে গুণী

খুন যদি না করো তুমি

হবে সাগর রুনী

হাতে মাখো লাল

পরকালটা বরবাদ হোক

বাঁচুক ইহকাল

 

আমার দেশের পতি

দারুণ মহামতি

কারো যেন হয় না ক্ষতি

তাই খুনীরে ক্ষমা করে

করলেন একটা গতি

নইলে তিনি কেমনে হবেন

একটা দেশের পতি

ধন্য মহামতি

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৭

বর্জন করুন মন্দ

মুসলমানের দুটো কাজ

শোনেন খালা খালু

অসৎ কাজ বন্ধ করে

সৎ কাজ করা চালু

 

তাই যদি না করেন তবে

কিসের মুসলমান?

যে মানে না কোরান হাদিস

সে তো নফরমান

 

শোনেন শোনেন কাক্কা।

নিজের ঈমান ঠিক করেন

মুসলমান হোন পাক্কা

 

হারামটাকে বর্জন করুন

হালালটাকে ধরুন

নিজের দেহে নিজে আগে

ইসলাম কায়েম করুন

 

আপনি কি আর অন্ধ?

বর্জন করুন মন্দ

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৮

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

তুই কার শিষ্য

চৌচির খাল বিল

ধরনীটা নিঃস্ব

কার তুই শিষ্য?

 

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

তুই কার শিষ্য

রোদে রোদে কেন তুই

পুড়ে দিস বিশ্ব

তোর তাপে খাল নদী

হয়ে যায় নিঃস্ব

 

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

তুই কার শিষ্য

পথেঘাট শূন্য

সব অস্পৃশ্য

মরো মরো দুনিয়া

তুই কিরে খুনিয়া

পানি নাই হাহাকার

নিদারুণ দৃশ্য

তুই কার শিষ্য?

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮০৯

বর্ষারে বর্ষা

সবকিছু ফর্সা

ধানের ক্ষেতে পানি

কান্দে আমার  নানী

 

চারদিকে সুনসান।

ডুবে গেছে মাঠঘাট

ডুবেছে ফলের বাগান

ডুবে গেছে নীল গাই

গরুর বাথান

 

বর্ষা ও বৃষ্টি।

অপরূপ সৃষ্টি

এতো মিঠে নয়রে

ময়রার মিষ্টি

যত দেখি ভরে যায়

অপলক দৃষ্টি

 

বর্ষারে বর্ষা।

মানুষের মন ধুয়ে

করে দে না ফর্সা

ধুয়ে দেরে বুকে রাখা পাপ

লোকগুলোকে মানুষ বানা

বানা রে নিস্পাপ

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১০

শরৎ বড় তুলতুল

শরৎ বড় তুলতুলে

হাত দিয়ে দেখ কাশফুলে

ফুলকিশোরী চুল খুলে

ওড়না মেলে যায়

কেউ কি তারে দেখলো কিনা

এদিক ওদিক চায়

শরৎ এলে গাঁয়

 

মেঘের ভেলা ভাসতে থাকে

আশার আলো আসতে থাকে

চাঁদের মেয়ে হাসতে থাকে

মা ডাকে বাপ আয়

ছিঁচকাদুনে মেঘের কন্যা

ঘুমোতে কই যায়?

 

ফুরফুরে সে হাওয়ার তালে

সুখ ভেসে যায় শরৎ কালে

পাখিরা গায় ডালে ডালে

নীল আকাশে চায়

শরত এসে জোসনা ধোয়া

বাতাস মাখে গায়

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১১

আয় হেমন্ত আয়

আয় হেমন্ত আয়।

আবিরমাখা সন্ধ্যা এসে

প্রাণটা ছুঁয়ে যায়

নতুন ধানের গন্ধ এসে

গুন গুন কি গায়?

আয় হেমন্ত আয়

 

তুই এলে যে আশা এসে

বাসা বাঁধে মনে

তুই এলে যে খুশীর দোলা

লাগে হৃদয় বনে

দুখের ঘরে সুখ আসে

বেড়ার ফাঁকে মুখ হাসে

নতুন আশার স্বপ্ন বোনে

আঁধার রাতে কনে

সামনের শীতে দেখা হবে

নতুন পাখির সনে

 

আয় হেমন্ত আয়।

ফসল কাটার ধুম লেগেছে

আমার গ্রামবাংলায়

নীল আকাশে তারার মেলা

মনের ভেতর খুশির ভেলা

জোসনা রাতে লুকোচুরি

খেলবি কে কে আয়

এই হেমন্তে আমার এ দেশ

সুখের নাগাল পায়

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১২

শীত এলে গীত গাও

শীত এলে গীত গাও

পিঠা আর পুলি খাও

চলো যাই ঘুরিফিরি পার্কে

দুদিনের এ দুনিয়ায়

কতকিছু শুনি হায়

মরে গেলে কে বলো, কার কে?

 

মনটাকে ঢেকে রাখো আদরে

হীম হীম কুয়াশার চাদরে

খুঁজে নাও লেপ কাঁথা বস্ত্র

এগুলোই শীত মারা অস্ত্র

বিকেলের মিঠে রোদে

মাঠে যাও দল বেঁধে খেলতে

আলস্য গা থেকে সবটুকু সমূলে

অনায়াসে সব ঝেড়ে ফেলতে

 

শীত এলে গীত গাও

ঢেকে রাখো হাত পাও

নয় তুমি কাবু হবে শীতে

হেরে গেলে দোষ নাই

লেগে যদি থাকো ভাই

একদিন তুমি যাবে জিতে

 

শীত এলে গীত গাও

খেজুরের রস খাও

আত্মীয় বাড়ি যাও বেড়াতে

শীতটা তো আসবেই

বুড়ো দাদু কাশবেই

ভাগ্যটা কে কবে

পারে বলো ফেরাতে

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৩

বসন্ত বাহারে

বসন্ত বাহারে-

বন দোলে, মন দোলে

সাথে করিমন দোলে

আরো সখিগণ দোলে

আশা আর স্বপ্নেরা দোল খায় পাহাড়ে

আহারে আহারে আহারে

এই মন দোল খায় বসন্ত বাহারে

 

অলি করে গুন গুন

নূপুরের ঝুনঝুন

ফাগুনের হাওয়া সবে খায়

তারপর কি বিষে, কে যে তড়পায়

কেউ মজে গানে কেউ, গানে ব্যথা পায়

 

বসন্ত বাহারে

আহারে আহারে

কে খোঁজে কাহারে, চায় নিরালায়

কেউ ডুবে দুঃখানলে, কেউ ভেসে যায়

বসন্ত বাহারে, আহারে আহারে,

কেন যে বাঁশি বাজে মরু সাহারায়

কেন যে তুফান ওঠে প্রেম দরিয়ায়

বসন্ত বাহারে

আহারে আহারে

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৪

ছয় ঋতু

দেখ মিতু

ছয় ঋতু

নয় কেউ ভীতুরে

ভয় এলে

সকলেই

ডাক দেয় তিতুরে

 

বলে, সবে বীর

উঁচু রাখি শির

উঁকি দেই সুনীল সে আকাশে

যত মারো তীর

তবু গড়ি নীড়

গড়ে যাই ঝড়ো হাওয়া, বাতাসে

 

ডাক পেলে

ওরা সবে

উঠে যায় সাজানো সে মঞ্চে

তারপর

সেকি ঝড়

মেঘনার ঝড়ে পড়া লঞ্চে

 

নিজ সাজে সজ্জিত

কেউ নয় লজ্জিত

বলে রূপ চেয়ে দেখো ভাইয়া

নানা ঋতু নানা রূপ

সকলেই অপরূপ

আঁখি খুলে দেখো তুমি চাইয়া

//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৫

আসাদ বিন হাফিজ-এর ঋতু ভাবনা।

 

দেখ মিতু ছয় ঋতু

 

দেখ মিতু

ছয় ঋতু

নয় কেউ ভীতুরে

ভয় এলে

সকলেই

ডাক দেয় তিতুরে

 

বলে, সবে বীর

উঁচু রাখি শির

উঁকি দেই সুনীল সে আকাশে

যত মারো তীর

তবু গড়ি নীড়

গড়ে যাই ঝড়ো হাওয়া, বাতাসে

 

ডাক পেলে

ওরা সবে

উঠে যায় সাজানো সে মঞ্চে

তারপর

সেকি ঝড়

মেঘনার ঝড়ে পড়া লঞ্চে

 

নিজ সাজে সজ্জিত

কেউ নয় লজ্জিত

বলে রূপ চেয়ে দেখো ভাইয়া

নানা ঋতু নানা রূপ

সকলেই অপরূপ

আঁখি খুলে দেখো তুমি চাইয়া

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

 

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

তুই কার শিষ্য

চৌচির খাল বিল

ধরনীটা নিঃস্ব

কার তুই শিষ্য?

 

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

তুই কার শিষ্য

রোদে রোদে কেন তুই

পুড়ে দিস বিশ্ব

তোর তাপে খাল নদী

হয়ে যায় নিঃস্ব

 

গ্রীষ্মরে গ্রীষ্ম

তুই কার শিষ্য

পথেঘাট শূন্য

সব অস্পৃশ্য

মরো মরো দুনিয়া

তুই কিরে খুনিয়া

পানি নাই হাহাকার

নিদারুণ দৃশ্য

তুই কার শিষ্য?

বর্ষারে বর্ষা

 

বর্ষারে বর্ষা

সবকিছু ফর্সা

ধানের ক্ষেতে পানি

কান্দে আমার  নানী

 

চারদিকে সুনসান।

ডুবে গেছে মাঠঘাট

ডুবেছে ফলের বাগান

ডুবে গেছে নীল গাই

গরুর বাথান

 

বর্ষা ও বৃষ্টি।

অপরূপ সৃষ্টি

এতো মিঠে নয়রে

ময়রার মিষ্টি

যত দেখি ভরে যায়

অপলক দৃষ্টি

 

বর্ষারে বর্ষা।

মানুষের মন ধুয়ে

করে দে না ফর্সা

ধুয়ে দেরে বুকে রাখা পাপ

লোকগুলোকে মানুষ বানা

বানা রে নিস্পাপ

শরৎ বড় তুলতুলে

 

শরৎ বড় তুলতুলে

হাত দিয়ে দেখ কাশফুলে

ফুলকিশোরী চুল খুলে

ওড়না মেলে যায়

কেউ কি তারে দেখলো কিনা

এদিক ওদিক চায়

শরৎ এলে গাঁয়

 

মেঘের ভেলা ভাসতে থাকে

আশার আলো আসতে থাকে

চাঁদের মেয়ে হাসতে থাকে

মা ডাকে বাপ আয়

ছিঁচকাদুনে মেঘের কন্যা

ঘুমোতে কই যায়?

 

ফুরফুরে সে হাওয়ার তালে

সুখ ভেসে যায় শরৎ কালে

পাখিরা গায় ডালে ডালে

নীল আকাশে চায়

শরত এসে জোসনা ধোয়া

বাতাস মাখে গায়

আয় হেমন্ত আয়

 

আয় হেমন্ত আয়।

আবিরমাখা সন্ধ্যা এসে

প্রাণটা ছুঁয়ে যায়

নতুন ধানের গন্ধ এসে

গুন গুন কি গায়?

আয় হেমন্ত আয়

 

তুই এলে যে আশা এসে

বাসা বাঁধে মনে

তুই এলে যে খুশীর দোলা

লাগে হৃদয় বনে

দুখের ঘরে সুখ আসে

বেড়ার ফাঁকে মুখ হাসে

নতুন আশার স্বপ্ন বোনে

আঁধার রাতে কনে

সামনের শীতে দেখা হবে

নতুন পাখির সনে

 

আয় হেমন্ত আয়।

ফসল কাটার ধুম লেগেছে

আমার গ্রামবাংলায়

নীল আকাশে তারার মেলা

মনের ভেতর খুশির ভেলা

জোসনা রাতে লুকোচুরি

খেলবি কে কে আয়

এই হেমন্তে আমার এ দেশ

সুখের নাগাল পায়

শীত এলে গীত গাও

 

শীত এলে গীত গাও

পিঠা আর পুলি খাও

চলো যাই ঘুরিফিরি পার্কে

দুদিনের এ দুনিয়ায়

কতকিছু শুনি হায়

মরে গেলে কে বলো, কার কে?

 

মনটাকে ঢেকে রাখো আদরে

হীম হীম কুয়াশার চাদরে

খুঁজে নাও লেপ কাঁথা বস্ত্র

এগুলোই শীত মারা অস্ত্র

বিকেলের মিঠে রোদে

মাঠে যাও দল বেঁধে খেলতে

আলস্য গা থেকে সবটুকু সমূলে

অনায়াসে সব ঝেড়ে ফেলতে

 

শীত এলে গীত গাও

ঢেকে রাখো হাত পাও

নয় তুমি কাবু হবে শীতে

হেরে গেলে দোষ নাই

লেগে যদি থাকো ভাই

একদিন তুমি যাবে জিতে

 

শীত এলে গীত গাও

খেজুরের রস খাও

আত্মীয় বাড়ি যাও বেড়াতে

শীতটা তো আসবেই

বুড়ো দাদু কাশবেই

ভাগ্যটা কে কবে

পারে বলো ফেরাতে

বসন্ত বাহারে

 

বসন্ত বাহারে-

বন দোলে, মন দোলে

সাথে করিমন দোলে

আরো সখিগণ দোলে

আশা আর স্বপ্নেরা দোল খায় পাহাড়ে

আহারে আহারে আহারে

এই মন দোল খায় বসন্ত বাহারে

 

অলি করে গুন গুন

নূপুরের ঝুনঝুন

ফাগুনের হাওয়া সবে খায়

তারপর কি বিষে, কে যে তড়পায়

কেউ মজে গানে কেউ, গানে ব্যথা পায়

 

বসন্ত বাহারে

আহারে আহারে

কে খোঁজে কাহারে, চায় নিরালায়

কেউ ডুবে দুঃখানলে, কেউ ভেসে যায়

বসন্ত বাহারে, আহারে আহারে,

কেন যে বাঁশি বাজে মরু সাহারায়

কেন যে তুফান ওঠে প্রেম দরিয়ায়

বসন্ত বাহারে

আহারে আহারে

//২০২০; ১০টা

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৬

দাওগো প্রভু

সকলের আগে নেই আল্লাহর নাম

যার গড়া এ জাহান, সৃষ্টি তামাম

 

জন্ম , মৃত্যু, জীবন, তাঁর হাতে সব।

খালিক, মালিক তিনি জগতের রব

 

ভালবেসে দিয়েছেন পবিত্র কালাম

জীবন বিধান দিলেন, দ্বীন ইসলাম

 

দিলেন দয়াল নবী, নেতা মুহাম্মদ

বুকে যার ভালবাসা, অসীম দরদ

 

বানালে উম্মত তাঁর, আমি মুসলমান

আমাকে দাওগো প্রভু পাক্কা ঈমান

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৭

তাপ ছাড়া মোম গলে না

রুচি যদি নামতে পারে

শরীর যদি ঘামতে পারে

গাড়ি ঘোড়া থামতে পারে

জীবন থামলে দোষ কি

জীবন থামতে কভু বলো

লাগে সাপের ফোঁস কি?

 

হঠাৎ গাড়ি থেমে গেলে

যাত্রী কিছু নেমে গেলে

নতুন কিছু যাত্রী এলে

তারপর ফের গাড়ি চলে

সব গাড়ি তো চলে না

মানব গাড়ি থেমে গেলে

চলতে কেউ তা বলে না

 

তাপ ছাড়া মোম গলে না

গাব গাছে বেল ফলে না

রাতে সুরুজ জ্বলে না

টিমটিম আলো জ্বলে

তাতে গুম খুন চলে

গুমের পেত্নি আস্তে করে

রশি পরায় গলে

 

তুই কি জানিস শ্যাম পিরীতি

কার সঙ্গে কার চলে?

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৮

বৃষ্টির গান

রিমঝিম বৃষ্টি, একটানা সুর

আহা কি মধুর, আহা কি মধুর

 

ঝর ঝর ঝরছে

খাল বিল ভরছে

নদীনালা খাল বিল সব টইটম্বুর

আহা কি মধুর, আহা কি মধুর

 

একটানা গুনগুন নয়াল বধুর

রিমঝিম বৃষ্টিরা বাজায় নূপুর

আহা কি মধুর, আহা কি মধুর

 

কই গেলি কই তোরা,

দিনগুলো সুখ মোড়া

পাখা মেলে চল যাই দূর নীলিমায়

রিমঝিম বৃষ্টিরা ডাকে আয় আয়

 

বৃষ্টির এই দিনে

চল যাই ছাতা বিনে

ভিজে ভিজে চল যাই পুকুরের ঘাটে

কুঁড়েদের বাদশারা শুয়ে থাক খাটে

 

রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টিরা ঝরে

বাতাসের তালে সব বৃক্ষেরা নড়ে

নড়ে নাতো নাচে ওরা বৃষ্টির গানে

ফিসফিস কথা কয় হৃদয়ের কানে

 

বৃষ্টির এই দিনে আয় নাচি গাই

কাদামাখা বৃষ্টিতে গড়াগড়ি যাই

না চাইতেই এইসব দেন রহমত

ধরনীতে অবারিত যার নিয়ামত

 

সুখভরা এইসব দিন তার দান

দয়ার সাগর যিনি প্রভু রহমান

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮১৯

একদিন

একদিন থেমে যাবে সব কোলাহল

একদিন নেমে যাবে এই নোনাজল

একদিন সফরের হয়ে যাবে ইতি

একদিন থেমে যাবে এই গান গীতি

 

নদী তীরে পড়ে রবে ভেজা বালুচর

একদিন খালি হবে সাজানো এ ঘর

একদিন চলে যাবো এই তুমি আমি

পড়ে রবে ঘরদ্বোর সোনাদানা দামী

 

তবু ছুটি সারা দিন, সুখ খুঁজে ফিরি

পাহাড়, সাগর, নদী, মরু আর গিরি

মনে মনে বলি সুখ, গেলি কার ঘর

সুখ বলে, আমি তোর মনের ভেতর

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২০

মায়ের হাসি

মাগো আমার ভাল্লাগে না পড়তে যেতে রোজ

আমার মনের খবর তুমি রাখো কিছু খোঁজ?

 

আমার কেবল ইচ্ছে করে প্রজাপতি ধরি

প্রজাপতির মতন আমি মুক্ত জীবন গড়ি

 

ইচ্ছে করে ধরি আমি ঘুঘু পাখির ছানা

কিন্তু ছানা ধরি তুমি কেবল করো মানা

 

ইচ্ছে করে নীল আকাশে মেঘের মত উড়ি

আমিই নাহয় হলাম কভু আকাশী ঐ ঘুড়ি

 

মা হেসে কয়, বাবা, এখন কিছু খাবা

মন যা চায় তখনি তা আমার কাছে চা বা

 

মা কি জানে মায়ের মুখের একটুখানি হাসি

দেখার জন্য মায়ের কাছে বারেবারে আসি

১০//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২১

আমার হৃদয়ে দাও

আমার হৃদয়ে দাও আল্লাহর ভয়

আর দাও ঈমানের সেই দৃঢ়তা

যে ঈমান ফাঁসির মঞ্চে গায়

তোমার হাতেই প্রভু সব ক্ষমতা

 

দূর করে দাও যত জাগতিক ভয়

তোমাতেই জমা করো সব প্রত্যয়

ভয়ভীতি দূর করে তোমাতেই

জমা করো প্রভু তুমি নির্ভরতা

 

এ দুনিয়ায় কারো কাছে কিছু নেই

ক্ষমতার সবকিছু শুধু তোমাতেই

তোমার যা ইচ্ছা তুমি করতে পারো,

আমার ঈমানে দাও এই দৃঢ়তা

 

যা কিছু মন্দ তুমি দূর করে দাও

অফুরান কল্যাণ দাও প্রভু দাও

আমাদের দাও তুমি প্রেম উদারতা

ধরনীকে শেখাও তুমি দয়া, মানবতা

১০//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২২

ছুটি

আজ করবো না লেখালেখি

আজকে আমার ছুটি

আজকে খাবো টেংরা মাগুর

ডিমঅলা সব পুটি

 

এই শুনে সব সাহেব মেম

হেসে কুটিকুটি

বললাম এমন হাসেন ক্যান

খাইনি তো আর ফুটি

 

জানি আপনি ঘুষখোর তবু

ধরছি চেপে টুটি?

কিছুই কইনি, কারণ জানি

আপনার আছে খুঁটি

 

আপনি খেলেন ক্যাসিনোতে

আমি ষোল গুটি

আমি খাই পান্তাভাত

আপনি শুকনো রুটি

 

আজ করবো না লেখালেখি

আজকে আমার ছুটি

বিকেল বেলা খেলতে যাবো

পাড়ার ছেলে জুটি

 

আপনি যদি যেতে চান

আসেন ছেড়ে জুয়ার দান

১১//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৩

আমাদের গাঁয়ে

আমাদের গাঁয়ে আছে বাঁশঝাড় কত

বাঁশ পাতা শির শির করে অবিরত

বাতাসের তালে তালে বাঁশ পাতা নড়ে

লাউডগা সাপ তাতে উড়ে এসে পড়ে

 

বাঁশঝাড় পার হলে বেত লতার বন

বেতসের বনে থাকে কাঁটা অগনন

তাতে যদি সাপ থাকে যেতে তাই মানা

বেতঝোঁপে যায় না, ভুলে কোন কানা

 

তারচেয়ে চলো যাই নান্দার বিলে

যেখানে পুটিমাছ ঝাঁকঝাঁক মিলে

ডুব দিয়ে তুলে আনি শাপলা ও ফুল

তুলে আনি শালুক যা শাপলার মূল

 

তারপর একসাথে গোসলটা সারি

ভেজা চুলে চলে যাই সকলেই বাড়ি

১১//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৪

ফরজ ও সুন্নত

মানুষের দান কেনো, নাও হাত পেতে?

নবীজি কি বলেনি, কাজ করে খেতে?

সালাতটা হয়ে গেলে রোজগারে যাও

হাত পাতা বাদ দিয়ে কাঠ কেটে খাও?

 

এইসব কথা নবী, বলেছেন তা জানো?

কখনো কি সেকথা নিজ থেকে মানো?

মুরীদের ভক্তিমাখা গরু, ছাগল খাও?

মুখে বলো, পাপীদের পাপ মুছে দাও

 

নবী বলে কাজ করো, তুমি নাও দান

কেন করো নবীজিকে এই অপমান?

কোন্ কোন্ সাহাবীরা পীর ছিল বলো

তবে কেনো ইসলামে পীরপ্রথা এলো?

 

ফরজের মানেটা কি? সেটা তুমি জানো?

তবে কেনো ফরজের, আগে নফল টানো

আগুন লেগেছে ঘরে, চেয়ে চেয়ে দেখো

খুশী মনে বসে বসে, কতো নেকী লেখো

 

ঘর পুড়ে ছাই হলে, খাটে সুখ থাকে না

খাটে বসে বিড়ালও মিঁউ মিঁউ ডাকে না

ঘর পুড়ে ছাই হচ্ছে, নেভানোর নাম নাই

পোড়াঘরে হুজুরের তসবিরও দাম নাই

 

দ্বীনের প্রতিষ্ঠা ফরজ, যদি তুমি জানো

জীবনে, সমাজে, দেশে ইসলাম আনো

আগুন নিভাই এসো দেশ থেকে আগে

তারপর সুন্নতি মিঠাই খাও অনুরাগে

১২//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৫

সুখ যে গেল বাপের বাড়ি

সুখ যে গেল বাপের বাড়ি

আরতো ফিরা আইলো না

যাবার বেলা একবারও তো

পিছন ফিরা চাইলো না

 

নাইতে কইলাম, নাইলো না

খাইতে কইলাম, খাইলো না

শান্তিরে তো যাইতে কইলাম

শান্তি সঙ্গে যাইলো না

 

উন্নয়নের নৌকা দিলাম

রাজপথে সে বাইলো না

ঢোল দিলাম, তবলা দিলাম

কীর্তন তবু গাইলো না

 

খাটের তলে কি যে খুঁজলো

কিছুই খুঁজে পাইলো না

যতই বললাম, একটু দাঁড়া

একবার ফিরে চাইলো না

 

খালি কলস ঢাইলা দিলো

বললাম, এ আর ঢাইলো না

সুখ যে গেল বাপের বাড়ি

আরতো ফিরা আইলো না

১৪//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৬

চুপ

চুপ।

চুপ চুপ চুপ   চুপ

বলতে পারিস কোন পুকুরে

ইলিশ পাড়ে ডুব?

কেমন করে নীল আকাশটা

পাল্টে ফেলে রূপ?

বর্ষাকালে আকাশ কেনো

কান্না করে খুব?

তবু ঠোঁটে আঙুল রেখে

বলে, চুপ চুপ চুপ

চুপ

 

মেয়ে।

কয় না কিছু ড্যাবড্যাব করে

কি দেখে সে চেয়ে?

দাঁত বের করে হাসে শুধু

বকুল মালা পেয়ে?

ভয় পায় কেন আসে যখন

বানের পানি ধেয়ে?

তিরিশ টাকার চীনাবাদাস

একলা ফেলে খেয়ে?

বিলের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা

সেই কিশোরী মেয়ে?

না যুবতী, নয়তো বুড়ি

কিশোরী সেই মেয়ে

মেয়ে মেয়ে মেয়ে

 

চুপ।

কুকুরও নয়, বিড়ালও নয়

কে ডাকে তয়, হুপ?

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে

কে ঢেলে খায় স্যুপ?

কার হুকুমে মেঘের দল

করে হঠাৎ মুভ?

আমি কত কথা বলি

তুই কেনরে চুপ?

চোখ পাকিয়ে কেন বলিস

চুপ চুপ চুপ

চুপ

১৪//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৭

শান্তি

শান্তি ছিল মনে

ছিল সংগোপনে

একদিন তার ইচ্ছে হলো

ঘুরতে যাবে বনে

সংগে যাবে মেঘলামতির

যুবতি তিন কনে

শান্তি ছিল মনে

 

শান্তি ছিল মনে।

ঘুরতে গেল বনে

গিয়ে দেখে মিটিং করে

সিংহ বাঘের সনে

সেই মিটিংয়ের ফর্দ লেখে

কালা হাতির কনে

শান্তি ছিল মনে

 

শান্তি ছিল মনে

বুদ্ধি দিল কনে

বললো সবাই চলো এবার

যাবো রণাঙ্গনে

ওরা গেল রণে

দেখে প্রতি ক্ষণে

একে অন্যে হানছে আঘাত

মরছে জনে জনে

শান্তি ছিল মনে

 

শান্তি ছিল মনে।

বললাম এসে শুয়ে থাক

একা নিরজনে

১৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৮

ইসলাম কই

টুপী দাড়ি জুব্বায় যদি

ইসলাম বেঁচে থাকতো

তয় আরবের কাফেররা কি

মাথায় পাগড়ি রাখতো?

 

জুব্বা পড়তো লম্বা লম্বা

মুখ ঢাকতো চাপ দাড়িতে?

ঘোড়ায় তবে চড়তো না কেউ

চড়তো ঠেলাগাড়িতে

 

গোসল করা সুন্নত যখন

গোসল কি কেউ করতো?

হাত দিয়ে ভাত না খেয়ে

পা দিয়ে মুখ ভরতো

 

আরব দেশের রসম যদি

ইসলাম ঠিকই হইতো

খেজুরটাকেই বিশ্ববাসী

আসল খাবার কইতো

 

ইসলাম যদি দেখতে চাও তো

যাও বদরের মাঠে

ইসলাম খুঁজে পাবে না ভাই

মোল্লাবাড়ির হাটে

১৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮২৯

দিন নাই রাত খা

বউ কয় ভাত দিন

আমি কই রাতদিন

খানাপিনা বাদ দে

নয় তুই জাত দে

মন দিয়ে কথা শোন

আকাশের তারা গোন

গোনা হলে শেষ

শুনিসনি মাছেভাতে

ভরে যাবে দেশ

 

থোকা থোকা পাকা ফল

কত আর খাবি বল

আম জাম কলা

পুলিশের ডলা

সব পাবি মাগনা

খাবি মামা ভাগনা

 

যদি চাস ভাতে নুন

পেয়ে যাবি গুম খুন

আর কবি ভাত দিন?

বল এবার চাঁদ দিন

 

ভাত নয় চাঁদ খা

দিন নাই রাত খা

১৫//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩০

পাখি

পাখি।

তুই যে এতো তুলতুলে বল

কোথায় তোরে রাখি?

তোর সে চোখের মায়ার নদী

কি দিয়ে বল ঢাকি

 

ইচ্ছে করে তোকে আমি

বুকে বেঁধে রাখি

তোর সঙ্গেই সারাটা দিন

খেলায় মেতে থাকি

 

পাখি

তুই যে আমার ভোরের বন্ধু

জাগাস ডাকি ডাকি

রোজ ফজরে যখন ঘরে

ঘুমিয়ে আমি থাকি

 

ইচ্ছে করে তোরই মতো

মালিক মালিক ডাকি

মনের ভেতর মিষ্টি মধুর

হাজার স্বপ্ন আঁকি

 

পাখি

যাসনেরে ভাই ভুলে তুই

আমায় দিয়ে ফাঁকি

আয় দুজনে মিলেমিশে

আল্লাহ আল্লাহ ডাকি

১৫//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩১

পরোয়ানা

জন্ম যেদিন হয়েছিল

মরণ পরোয়ানা

এনেছিলাম সঙ্গে করে

কে তা জানো না?

 

সে পরোয়ানা বুকে নিয়ে

ঘুরি প্রতিদিন

যাই ভুলে সে পুরান কথা

আমি অর্বাচীন

 

কেউ থাকে না এ দুনিয়ায়

রাজা উজির মন্ত্রী

ফকির বাদশা তাও থাকে না

কোনো ষড়যন্ত্রী

 

দুই কান্ধে দুই ফেরেশতারা

কি কর তা দেখে

ভুল করে না কোনকিছু

যা দেখে তা লেখে

 

কি করলে যে কোথায় যাবা

সবই তুমি জানো

তর্ক করে লাভ কি বলো

যা ইচ্ছা তা মানো

১৬//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩২

জন্মদিন

যেদিন পেলাম মৃত্যু পরোয়ানা

সেদিন তোর শখ হলো জন্মদিনটা করার

কি যে আজব নিয়ম কানুন ধরার

মানুষ করে জন্মদিন

যেদিন পেল ফরমান সে মরার

 

জন্ম মানে, মরতে হবে

ধূলির ধরায় কে কয়, রবে

আসলে ধরায়, যেতেই হবে

নেইতো কিছু করার

 

রাজা মরে, প্রজা মরে

পীর বুজুর্গ যায় কবরে

কেউ থাকে না ঘরে

কেউবা আগে, কেউবা পরে মাটির ঘরে যায়

কেউ কি জানে মহারাজা সেখানে কি খায়

পরার জন্য জরির জামা পায়?

মরলে কি কেউ পায় কখনো

সময় জীবন গড়ার

 

পায় কি সময় শুয়ে শুয়ে

কোরআন হাদিস পড়ার?

পায় কি রাজা হাতি ঘোড়া

গরুরগাড়ি চরার

যেদিন পেলাম মৃত্যু পরোয়ানা

সেদিন তোর শখ হলো জন্মদিনটা করার

কি যে আজব নিয়ম কানুন ধরার

১৬//২০২০; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৩

চোরের বয়ান

হি হি আমার হাসি পায়

আমারে কয় চোর

চোরা সর্দার কইতে কিরে

শরম লাগে তোর?

 

ওসব কথা এখন আমার গায়ে লাগে না

আমার শুধু হাসি পায়, রাগও জাগে না

 

ব্যাংকের ভোল্ট সাফা করলাম

শেয়ার মার্কেট লুট

আমি কি আর বামুন বেটা

পিচ্ছি লিলিপুট?

 

সাতটা পোলা খুন করেছি তাই কি বলবি খুনী?

সিংগাপুরের হোটেল জানে, আমি কত গুণী

 

খুন যদি না করতাম তবে

খালাস দিত সরকার?

বিচারক কয় তবে মালিক

আমারে কি দরকার?

 

চোর, বাটপার, খুনী, ডাকাত, যা ইচ্ছা তুই বল

তাই বলে কি ফেলবো আমি রাঙা চোখের জল

 

কারে কয় টন ইলিশ দেবো,

সে চিন্তা কি তোর?

আমার আছে ঠোলা কালা

আরও দাদার জোর

 

গালি দিবি, দে না গালি, ওতে কিছু হয় না

খাচ্ছি সবই লুটেপুটে, কেউতো কিছু কয় না

 

হি হি আমার হাসি পায়,

আমি চোরের সরদার

ইলিশ কেনো, সবই দেবো

যা যা লাগে বড়দার

 

ডাল খিচুড়ি রান্না শেষ

এই শহীদের বাংলাদেশ?

১৬//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৪

ফেসবুকে ঘুরিফিরি

ফেসবুকে ঘুরিফিরি, আমি ভাই পড়ি না

এই কথা আমি জানি, আর জানে জরিনা

আমি কিছু করি না

কারও লেখা ধরি না

কেউ যদি বলে ফুট, তাও আমি সরি না

রাজপথে শুয়ে আমি গড়াগড়ি করি না

 

মিছিলের দিন শেষ, পিন মারে আমেনা

আমি বলি থাম থাম, সে কিন্তু থামে না

ছাউনিতে বসে থাকে, তাই সে ঘামে না

আমি বলি নেমে আয়, কিছুতে সে নামে না

ফেসবুকে ঘুরিফিরি, আমি ভাই পড়ি না

এই কথা আমি জানি, আর জানে জরিনা

 

দিনদিন মানুষের অলসতা বাড়ছে

জনতার বিপ্লব পদে পদে হারছে

পেছনে বসে কেউ কলকাঠি নাড়ছে

যে যেমন পারছে

ফাঁকতালে মারছে

যার যার কাজ সে চুপচাপ সারছে

মোটা মোটা খুঁটি কেউ বসে বসে গাড়ছে

ফেসবুকে ঘুরিফিরি, আমি ভাই পড়ি না

এই কথা আমি জানি, আর জানে জরিনা

 

সত্যের পথে আজ অনেকেই লড়ি না

চোর ঘুরে আশেপাশে তাও কেউ ধরি না

ঐক্যটা গড়ি না

বিধিলিপি পড়ি না

যার যার কর্মটা ঠিকমত করি না

কতশত ভুল দেখি একটাও ধরি না

ফেসবুকে ঘুরিফিরি, আমি ভাই পড়ি না

এই কথা আমি জানি, আর জানে জরিনা

১৭//২০২০; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৫

জনমের শিক্ষা

লাজ নাই মানুষের কাজ নাই কিছু

সারাদিন লেগে থাকে এর ওর পিছু

লুট করে চুরি করে, খায় নানা চান্দা

সারাদিন বদামীর করে নানা ধান্ধা

 

কাম নাই শুনি তাই দাঁত মেলে হাসে

কাজ নাই লাজ নাই বসে রয় ঘাসে

বলে নেতা সোজা হন তুলে নেই পিক

আমারে খাতির করে আম পাবলিক

 

এইসব লোকগুলো খাটাসের ছাও

ঘুষ নিয়ে বলে হটো, বাড়ি ফিরে যাও

আইনের লোক যদি আসে তাকে ধরতে

হেসে কয় এলি কেনো অকালেই মরতে

 

গালি দিয়ে লাভ নেই, ওরা গালি খায়

শেষ হলে গালিখোর আরো গালি চায়

ওরা শুধু ভয় পায়, হাটের সে মারকে

যেই মার খেয়েছিল, খুলনার পার্কে

 

গালি তারে দিও না, দাও কিছু ভিক্ষা

দাও তারে সবে মিলে জনমের শিক্ষা

১৭//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৬

আবা কাবা খাবা

আবা কাবা খাবা

শেখ ফরিদের বাবা

শ্বশুরবাড়ি যাবা?

ডান্ডাবেরি পাবা

নাকি তুমি পালিয়ে থেকে

রক্তগঙ্গায় নাবা?

 

ইসলাম মুসলিম করো

নামাজ কালাম পড়ো

শিবিরের পথ ধরো

গুলি খেয়ে মরো

আল্লাহ হলো জানের মালিক

ভয়টা কিসের করো

যাও হয়ে যাও বাপের বেটা

বীরের মত লড়ো

 

হাত পাতলে ভাত মিলে না

ভুল টোপে মাছ গিলে না

সাহস সব দিন মিলে না

সাহস যদি চাও

হাত বাড়িয়ে দাও

তিরিশ টাকার সাহস দিলাম

চেটে চেট খাও

 

আবা কাবা খাবা

শেখ ফরিদের বাবা

শ্বশুরবাড়ি যাবা?

নাকি তুমি সাহস করে

রক্তগঙ্গায় নাবা?

১৭//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৭

হাল ধরো

রাত প্রায় শেষ ভাই, ভোর হবে নজদিক

আশা ভরা আলোময় হয়ে যাবে দশদিক

 

ফুলগুলো খুশী মনে হাসবে

সুখে ভরা দিনগুলো আসবে

মাঠ ভরা সবুজেরা হাসবেই ফিকফিক

নদী ভরা জলকণা করবেই ঝিকমিক

 

ঘুম ভেঙে সকলেই জাগবে

স্বপ্ন-কাজল চোখে মাখবে

সেই চোখে আশা-বাতি করবেই চিকচিক

বাতাসে দুলবে কুঁড়ি, হেলেদুলে লিকলিক

 

নতুন পৃথিবী হবে শুভ্র বকুল

গুনগুন মৌমাছি, আম্রমুকুল

রাত শেষ ওঠো ভাই, হাল ধরো ঠিক

মানুষেরে দেখে যেনো পালায় মুষিক

১৮//২০২০; রাত ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৮

ভোর

ভোরের কুসুম রোদের ভেতর

হাঁটতে লাগে ভালো

আয়রে মাখি অঙ্গে ভোরের

সেই সোনালী আলো

 

রাত্রিও না, দিবসও না

সকাল মানে ভোর

সেই ভোরটা শরীর মনে

আনে সুখেের ঘোর

 

সেই ভোরটা দিনরজনীর

মধুর সম্মিলন

যখন মহান প্রভু করেন

বহম বিতরণ

 

সেই রহমের লাগলে ছোঁয়া

মন হয়ে যায় ভালো

সেই সোনারোদ অঙ্গে তুমি

যত পারো ঢালো

 

আলসে যারা ভোর দেখেনি

শেখেনি পাখির গান

সে দেখেনি মহান প্রভুর

কুদরত আলীশান

১৮//২০২০; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৩৯

কোরান চলার মূল

কে কয় কোরান বুকে নিয়ে ভাই করেছে ভুল

বুকের তাজা রক্ত কি তাই দিলরে সে মাশুল

আগুন ঝরা ফাগুন মাসে

তোর সে স্মৃতি মনে আসে

বুকে যেদিন জমা হলো, রক্তজবার ফুল

মা যে আমার কেঁদে হলো অশান্ত আকুল

 

এজিদ যদি ক্ষমতায় বয়,সীমার হয় তার বীর

মুসলমানের রক্তে ভাসে ফোরাত নদীর তীর

স্বৈরাচারের ধর্ম তো নাই

তারতো কেবল গদীটা চাই

মুসলিম নিজে দাবী করে, আসলে তা ভুল

সকল জালিম  অভিশপ্ত, বলেছেন রাসূল

 

মুসলিম দেশে মুসলিম শাসক, বানাও ঈমানদার

যে জন নিজকে মনে করে খলিফা আল্লাহর

দূর করে সে পাপ অনাচার

ক্ষমতা তার দায়িত্বের ভার

ফুলবাগানের হয় সে মালি, ফুটায় রঙিন ভুল

কোরান হাদিস হয় যেন তার চলার সঙ্গী, মূল

১৮//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪০

একামতে দ্বীন

একামতে দ্বীন যারা চাও

খুশী মনে ঘাম তারা দাও

আর দাও এক নদী রক্ত

জেনে রাখো দ্বীন কায়েম

অতিশয় শক্ত

 

যদি চান একামতে দ্বীন

জানমাল দিন তবে ঋণ

ভয়টাকে করে দিন দূর

ভয় যাক পিরামিড

নয় কোহেতুর

 

একামতে দিন চান যদি

দিন তবে লহু ভরা নদী

মেনে নিন ক্ষুধা আর কষ্ট

ক্যারিয়ার করে দিন নষ্ট

 

রাজপথ নিয়ে নিন দখলে

একসাথ মিলেমিশে সকলে

তারপর হাক দিন, জুলমাত

চলবে না সকলেই একমত

 

এ জমিন যার

চলবে হুকুম তাঁর

১৯//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪১

খেদমতে দ্বীন

খেদমতে দ্বীনের কাজ করা খুব ভালো

মনে মনে তারাবাতি, জ্বালাই আলো

খেটে খাই চেটেপুটে

চেহারাটা ফুটফুটে

সরাই তো ঘুটঘুটে আঁধারের কালো

খেদমতে দ্বীনী কাজ করা খুব ভালো

 

মাদরাসা, মসজিদে কম দাদা মাইনা

কমরেটে মাহফিলে তাই আমি যাই না

কিতাবাদি ঘেটেঘেটে

রাতভর খেটে খেটে

যেই মজা পাই আমি, যুদ্ধে তা পাই না

কমরেটে মাহফিলে তাই আমি যাই না

 

খেদমতে দ্বীন ভাই, সবে জানে খেটে খাই

আর কোন দাবী নাই, হারামের কানি  নাই

নেকী দিয়ে ভরে ফেলি বস্তা

আজকাল নেকী খুব সস্তা

বস্তার নিচে যার ফুটা আছে,কিন্তু তলি নাই

খোদমতে দ্বীন ভাই, সবে জানে খেটে খাই

 

তাসবিহ ও নফলের চিরচেনা অদ্ভুত রাজ্যে

হালাল ও ফরজের ঠাঁই নাই জীবনে আজ যে

দমে দমে সুদ খাই

নেকি মদে বুঁদ তাই

সারাদিন করি নাতো আর কোন কাজ যে

হালাল ও ফরজের ঠাঁই নাই জীবনে আজ যে

১৯//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪২

স্বভাব

গাল দেয়া যার স্বভাব দাদা

সেইতো গালি দেয়

নিজে খেটে পরের পাপ

নিজের কাঁধে নেয়

 

সত্যি এরা বোকা দাদা

সত্যি এরা বোকা

হোক না সেটা বুড়ো ভাম

কিংবা কচি খোকা

 

মনে রেখো মন্দ লোকে

মন্দ কথা কয়

মন্দ বলে, যার মনে নাই

আল্লাহ নবীর ভয়

 

ইসলাম বলে ভালবাসো

সকল আদম জাত

ঘৃণা এবং দ্বন্দ্ব রেখে

মিলাও হাতে হাত

১৯//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৩

আসুন আবার হাসি

আমি যারে মামা বলি, কেউ তারে কয় বাবা

কেউবা বলে, কাকা বাবু, কখন হাটে যাবা

কারো তিনি স্বামী হন, কারো আবার ছেলে

শুনলাম সেদিন পা ভেঙ্গেছে হাডুডুডু খেলে

 

কেউবা তারে মাষ্টার মশায়, কেউবা ইমাম কয়

মানুষ একজন কতো রকম হয় তার পরিচয়

এই নিয়ে কি এই সমাজে ঝগড়াঝাটি হয়?

তবে কেন মযহাব নিয়ে ঝগড়া বিবাদ রয়?

 

আপনি নিজে শেখ নাকি, মোল্লা, সৈয়দ, খান

ওসব নিয়ে ক্যান যে তবে, হন গো পেরেশান

যা হোন আপনি সবাই জানে সৈয়দ হাতেম আলী

সৈয়দ বাড়ির পোলা বলে দেয়না কাউকে গালি

 

আল্লাহ নবী সবই মানেন, কোরান হাদিস পড়েন

তবে কেনো বড়ো সাহেব ফেরকাবাজি করেন?

আগে বলেন, আপনি মুসলিম, নানা চাচা পরে

এই নিয়ে কেউ বোকা মুমিন, ঝগড়া লড়াই করে?

 

জামাতি কে, দেওবন্দি কে, যান না ওসব ভুলে

ভায়ে ভায়ে ঝগড়া করেন মিথ্যা দেয়াল তুলে

আসুন সবাই, পরাণ খুলে উদার মনে হাসি

দেই জগতে ছড়িয়ে ফের পুষ্প রাশি রাশি

১৯//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৪

স্বপ্নবাজ

আপনি আমার বন্ধু যখন

একটা কথা কই

কমেন্ট করেন আপত্তি নাই

শেয়ার করেন সই

 

আপনি পড়ে মজা পাইছেন

বন্ধুরাও পাক

মজা পান নাই? তবে রাখেন

শেয়ার করা থাক

 

ভাল কাজটা মিলেমিশে

আসুন সবাই করি

সবাই মিলে সমাজটাকে

নতুন করে গড়ি

 

সবাই মিলে করি কাজ

না হয় হলাম স্বপ্নবাজ

১৯//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৫

গাঁইয়া

পাড়াগাঁয়ের ছেলে আমি

বলতে পারেন গাঁইয়া

ছোটবেলা বড় হইছি

কচুঘেচু খাইয়া

 

খুশী হইছি গাছের ডালে

ঘুঘুর ছাও পাইয়া

বিলের থেকে শাপলা তুলছি

তালের নাও বাইয়া

 

বাবা ছিল গেরস্ত

চাচা ছিল নাইয়া

বাবা যখন হাটে যাইত

মা থাকতো চাইয়া

 

ধান পাকলে আনতো ধান

সবাই মিলে দাইয়া

সন্ধ্যাবেলা গরু আনতো

রাখালে গান গাইয়া

 

বৃষ্টির আগেই ছনের ঘর

ছনে দিত ছাইয়া

করাতিরা করাত টানতো

বলতো হাইয়া, হাইয়া

 

ছোট বোনটা বলতো এসে

কুতকুত খেলবি ভাইয়া

আজ সে সবের নাইরে কিছু

দেখো তুমি আইয়া

 

তুমি এলে কাঁদবো আমি

নদীর পাড়ে যাইয়া

এবার বুঝলি তরে কেনো

আইতে কইছি মাইয়া?

২০//২০২০; রাত ১২:৪০মি

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৬

একটাই সাধ

এ জীবন সন্ধ্যায় একটাই সাধ

মাফ করে দাও প্রভু সব অপরাধ

 

জেনে বা না জেনে, সজ্ঞানে, ভুলে

কত যে পাপ আহা করেছি জমা

অসীম দয়ায় তুমি সব করো ক্ষমা

 

ভুল সবই ভুল

পাপে পাপে ডুবে আছে ধুতুরার ফুল

যদিও দেখতে লাগে শুভ্র সফেদ

সাদা মন অকারণ করো না পাপী

খুলে তুমি দিও না, হাবিয়ার ঝাঁপি

কমাও এ দেহের অযাচিত মেদ

আমার কি সাধ্য বলো, হই নির্মেদ

 

তোমাকেই প্রভু মানি জগতের স্বামী

আমাকে করো না তুমি বিপথগামী

আর কিছু নয় প্রভু এই শুধু চাই

তোমার সে মহিমার ছোঁয়া যেন পাই

 

তুমি ছাড়া এ অধমের আর কেহ নাই

সারাদিন এ অধম তোমারেই চাই

আমার এ জীবনের একটাই সাধ

মাফ করে দাও প্রভু সব অপরাধ

২০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৭

গদী আর নদী

গদী আর নদী

ছন্দের মিলটা বেশ হয় যদি

এক সাথে মিলেমিশে থাকে নিরবধি

যদি

দুজনেরই প্রিয় হয় রঙ মাখা দধি

সকালের সূর্যটা প্রিয় হয় যদি

সেই রঙ গায়ে মাখে উর্বশী নদী

 

গদী আর নদী

দুজনেই সুবিশাল হয় জলধি

দুজনেই বেঁচে থাকে মরণ অবধি

প্রভাতে লাল হয় রৌদ্রের নদী

অসময়ে লাল হয় প্রাণমাখা গদী

 

কেউ বাঁচে তিন দিন, কেউ চিরকাল

কেউ থাকে রাজধানী, কেউ বরিশান

গদী আর নদী

বুঝে না ক্ষমতার নিজ পরিধি

নিজেরেই বড় ভাবে অদ্যাবধি

গদী আর নদী

একমনে বেয়ে যায় ক্ষমতার নদী

গান গায় বেসুরে সপ্তপদী

সেই গানে জীবনের হয় সমাধি

২০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৮

বাবুল গাম

আবুল মিয়ার বাবুল গাম

তিনশ টাকা ডিব্বার দাম

এক কেজিতে ডিব্বা ভরে

গাম নিয়া যান পানির দরে

 

তিন ডিব্বাতে অফার আছে

গাম নিয়া দেন ভাবীর কাছে

একশো টাকা কম দেন

সঙ্গে মাগনা গম নেন

 

গামের গুণের শেষ নাই

জাতি ধর্ম দেশ নাই

মনে যদি ফাটল ধরে

গাম থাকলে নিজের ঘরে

দিবেন গাম লাগাইয়া

ভাবী আসবে আগাইয়া

 

বাবুল গামের গুণাগুণ

হইলে দেশে মানুষ খুন

গলা দেহে জোড়াইবেন

মনের ঘৃণা পোড়াইবেন

 

মানুষ হইবে পায়ে খাঁড়া

কেটে যাবে সকল ফাড়া

প্রেমের যদি ঘাটতি হয়

বাবুল গামে জোড়া লয়

 

ঘরে থাকবে ঘরের বউ

আপনি খান ডালিম মৌ

কারও যদি ভাঙে ঘর

হাতে নিয়ে মারেন চড়

 

এক চড়ে ঘর জোড়া লয়

নিজের বউ আপন হয়

গামের গুণের শেষ নাই

কারো মাথায় কেশ নাই

 

মাথায় লাগান বাবুল গাম

উসুল হবে গামের দাম

বাবুল গামের গুণাগুণ

শোনেন সকল ভাই বোন

 

বাবুল গামের ক্ষয় নাই

আপনার কোন ভয় নাই

আপনে আছেন সুখে ভাই

হাসি দেখেই বুঝতে পাই

 

হাসি পাচ্ছে আমারও

হাসছে মেথর চামারও

কুমার এবং কামারও

হাসি পাচ্ছে মামারও

 

কিনেন সবাই বাবুল গাম

হাতে রাখেন গামের দাম

২০//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৪৯

কবি আছে বলে

একজন কবি আহা কত অপরূপ

তার হাতে রূপ পায় সৃষ্টি অরূপ

কবি এসে ডেকে বলে ভালবাস ভাই

পৃথিবীটা প্রেমময় হোক আমি চাই

 

হানাহানি রেখে দাও পশুদের তরে

মনে রেখ পশুরাই হানাহানি করে

ধরনীতে ফুল ফোটে কবি আছে বলে

এত এত মিঠে সুর পাখিদের গলে

 

কবি আছে তাই শোন বেলালী আজান

কবিদের চোখে দেখো দুনিয়া জাহান

অপরূপ রূপ আহা কে করে সৃজন?

মানুষেরে কে সে দেয় প্রেমময় মন?

 

শতমুখে এসো তাঁর গুণগান গাই

তাঁর মত দয়াবান আর কেউ নাই

২১//২০২০; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫০

দেশটা এখন

শহরের চে ভাল রে ভাই এখন শহরতলী

রাজপথে হয় গুলি যখন, ভাল চিপাগলি

কাকে যে কি বলি!

 

সচিব থাকে ভাড়াবাড়ি, ড্রাইভার নিজের ঘরে

সচিব থাকে ভয় তরাসে, কয় না কিছু ডরে

তবু বাতাস নড়ে

 

ড্রাইভার যখন বৌয়ের জন্য বিশটা শাড়ি কিনে

সচিব শুধু কপাল হাতায়, আসলাম এ কোন দিনে?

ডুবলাম কেন ঋণে?

 

ড্রাইভার হাসে, স্যার

এটা হলো ডিজিটাল এ দুনিয়ার সংসার

আমার আছে তিনটা বাড়ি, কোটিখানেক টাকা

দলিল করা দুইটা নারী, শত শত ফাঁকা

 

পৃথিবীটা চোরের স্যার, চোর না হলে যান

টিনের ঘরে বসে বসে আলু ভর্তা খান

২১//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫১

টিকটিকিও হাসে

তুমি খারাপ তাই আমাকে

খারাপ হতে হবে?

এমন কথা কে লিখেছে

কোন কিতাবে, কবে?

 

নিচে তোমার নামতে মন চায়,

একা একা যাও

আমিও নামি তোমার সাথে

সেইটা কেন চাও?

 

গালি দিয়ে সুখ পাও তুমি,

আমি কিন্তু পাই না

হারাম তোমার ভাল লাগে

আমি কিন্তু খাই না

 

পরের হৃদয় আলো করো

নিজের হৃদয় রেখে

টিকটিকিও হাসে তোমার

কীর্তি কান্ড দেখে

২১//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫২

মিষ্টি সুন্নত

দোয়া কবুলের পয়লা শর্ত,

হালাল রুজি জানেন?

এই শর্তটা আপনি হুজুর

কনতো নিজে মানেন?

 

মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন

আতর মেখে অঙ্গে

কেঁদে বলেন নবীর দাঁত

ভেঙ্গেছিল জঙ্গে

 

মাথা ফেটে রক্ত নাকি

নবীর পায়ে এসেছিল?

নাকি নবী মিষ্টি, আতর

শুধু ভাল বেসেছিল?

 

মিষ্টি খাওয়া সুন্নত সত্য

নয় যে মোটে ফান

পেটে পাথর বাঁধার কথা

এড়িয়ে কেন যান?

 

আপনি মানেন মিষ্টি সুন্নত

শিবির খাবে মার

এ কাহিনী কনতো হুজুর

চলবে কতো আর?

২১//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৩

ভাল হওয়া

পাপটা যখন আমি করি

দারুণ মজা লাগে

সেই পাপটা অন্যে করলে

জ্বলে উঠি রাগে

 

এ পৃথিবী ভালো হোক

এইতো আমি চাই

নিজে ভালো হতে বললে

আমি সেথা নাই

 

ভালো হওয়া খুবই ভাল

বিশ্ববাসী জানে

বলতে পারেন সে কথাটা

বিশ্বে কজন মানে?

 

এইতো ভালোর নমুনা

তাই সত্যিটা কমু না

২১//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৪

তুলি

তুলি

দেখবে না মা মুখটি তোমার

চক্ষু দুটি খুলি

করবে না আর বায়না মাগো

ছোট্ট দুহাত তুলি

খেলবে না আর পেয়ারা বনে

দোলনাতে মা দুলি

কেমনে তারে ভুলি?

 

তুলি

ধরবে না আর প্রজাপতি

ধরবে না রং তুলি

ধরবে না সে বায়না খেলার

কখনো ডাংগুলি

ঘুরবে না সে ফুলের বনে

ছিঁড়বে না আর কলি

কেমনে তারে ভুলি?

 

ছোট্ট দুটি নরম হাতে

জড়িয়ে ধরে গলা

বলবে না সে ভাইয়া কখন

যাবি কদম তলা

আমার জন্য আনিস কিনে

ছোট্ট দুটি রুলি

কেমনে তারে ভুলি?

 

মাগো,

যায় কি তারে ভুলা

মিছেমিছি ভাত খাওয়াতো

বানিয়ে বালির চুলা

বলতো দাদা আবার আনিস

পলাশডাঙার তুলা

কেমনে তারে ভুলি

কই গেলো বোন তুলি

 

মা কেঁদে কয় বাবা

কাঁদিস না বাপ, কাঁদলে কিরে

বোনকে ফিরে পাবা

কার ছেলে যে করলো মিছিল

কে যে ছুঁড়লো গুলি

দেখতে গিয়ে হারিয়ে গেলো

আমার পরাণ তুলি

কেমনে তারে ভুলি?

 

হায়

আমার বাবার টেক্সের টাকায়

গুলি আসে দেশে

সেই গুলিতেই আমার বোন

মরলো অবশেষে

বাপের টাকায় ওড়ে বোনের খুলি

কেমনে এসব ভুলি?

 

তুলি

কথা দিলাম কোনদিনই

ভুলবো না আর তোরে

তোরই রক্ত দেখবো আমি

প্রতি রাঙা ভোরে

দেখবো দুচোখ তুলি

নীল আকাশটা ভরে দিছে

বোনের রক্ত, খুলি

 

তুলি

তুই যে আমার আদরের বোন

কেমনে তোরে ভুলি?

২৩//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৫

সহজ

(এনায়েত রাসূল সুহৃদয়েসু)

 

এই ধরধাম সহজ সোনা, সহজ তুমি হও

সবার সাথে মিশতে হলে সহজ কথা কও

 

কঠিন যখন সহজ করে বলো

হৃদয় তখন হয় যে এলোমেলো

সহজ ওরা পায় না খুঁজে ভাই

কঠিন ওরা লিখে যায় তো তাই

 

সহজে পাও নদীর পানি আলো বাতাস তবে

তুমি কেনো সহজ রেখে নিজে কঠিন হবে?

 

সহজে পাই জোসনা চাঁদের

তাইতো আঁধার কাটে রাতের

শুয়ে পড়লে সহজে ঘুম আসে

তাইতো সবাই সহজ ভালবাসে

 

সাগর জলে ডুব দেয়া, নয়তো সহজ কাজ

ডুবতে হবে মনে হলেই কপালে হয় ভাঁজ

 

তাইতো বলি তুমিও সহজ হও

সবার সাথেই সহজ কথা কও

হৃদসাগরে তুমিও ঢেউ তোল

কাঠিন্যতা যতো পারো ভোল

 

ফুলের সুবাস সব হৃদয়ে ফুটুক যদি চাও

আসো করি গলাগলি, সহজে হাত দাও

২৩//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৬

চলো একসাথে

(আবু সালেহ অগ্রজনেষু)

 

এখনো ধরায় থামেনি পাখির গান

এখনো সচল হাত পা চোখ কান

এখনো থামেনি প্রভুর দয়ার দান

তবু বন্ধু তুমি কি হবে পেরেশান?

 

কেনো তবে ধরবে হতাশা ঘিরে

যখন তুমি হাজারো ভক্ত ভীড়ে

তোমার ছড়া এখনো তুমুল হাঁটে

তোমার ছড়া ছড়ানো মাঠে ঘাটে

 

আঁধারের ঘোর যাক না সকল কাটি

তুমি তো জানো মাটিই কেবল খাঁটি

আসলে ধরায় যেতেই যখন হবে

কি লাভ হতাশা পুষে মনে তবে?

 

চলো একসাথে প্রভুর মহিমা গাই

তুমি ছাড়া প্রভু আর কেউতো নাই

২৪//২০২০; ০১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৭

তাঁর তরে

প্রেম জ্বরে মারা গেছি হয়নি দাফন

দেরি করে লাভ কি পড়াও কাফন

চাহিদা তো একটাই

জান্নাত শুধু চাই

দোয়া করো প্রভু প্রেমে রই যে মগন

 

আমি যে সৃষ্টি তার বড় আদরের

তাঁর রহম বারি পেয়েছি যে ঢের

আর কোন দাবী নাই

তাঁর যেনো স্নেহ পাই

এতকাল পেয়েছি, পাই যেন ফের

 

যেদিকে তাকাই তাঁর সৃষ্টিকে পাই

আমি যেন সৃষ্টিকে ভালবেসে যাই

যেদিকেই দৃষ্টি যায়

বলে ওরা আয় আয়

আমি যেন সৃষ্টিতে তাঁর দেখা পাই

 

বাঁচা মরা সবই যেনো তাঁর তরে হয়

আমাকে না ছোঁয় যেন কোন পরাজয়

২৪//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৮

অহংকার

তোমার মাঝে থাকে যদি অহংকারের অনু

জান্নাতে তো যাবে না তোমার দেহ তনু

 

আলেম তুমি কত জানো

এই কথাটা জানো না

তবে কেন আলেম হয়ে

আল্লাহর হুকুম মানো না

 

তবে কেনো মনে করো মুই, কি জানি কি হনু।

তোমার মাঝে থাকে যদি অহংকারের অনু

জান্নাতে তো যাবে না তোমার দেহ তনু

 

তোমার বিদ্যা, তোমার বুদ্ধি,

সম্পদ তাঁহার দান

কি নিয়ে কি গর্ব করো

তুমি হে নাদান

 

দাপট দেখাও কার পোলা, এইডা কেমন মনু

তোমার মাঝে থাকে যদি অহংকারের অনু

জান্নাতে তো যাবে না তোমার দেহ তনু

২৪//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৫৯

বুদ্ধিজীবী

কত রকম বুদ্ধি মাথায় আসে।

 

বুদ্ধি শুনে কেউবা কাঁদে

কেউবা বসে হাসে

কেউবি আবার বুদ্ধি দেখে

খুকুর খুকুর কাশে

 

কেউ তো দেখি বুদ্ধি নিতে

মাসে একবার আসে

যে শুনে ভাই আমার বুদ্ধি

সেই তো ভালবাসে

 

বুদ্ধি বাড়ে যদি তুমি

মন দাও মগজ চাষে

বুদ্ধি তুমি লুকিয়ে রাখো

সবুজ দুর্বাঘাসে

 

যে যে করে বুদ্ধির চাষ

সে জন বুদ্ধিজীবী

তিনশ টাকা বিকাশ কর্

বুদ্ধি যদি নিবি

 

বুদ্ধি খুবই দামী জিনিস

আশি টাকা তোলা

একটা বুদ্ধি ফ্রি দিলাম

খাসনে কোকাকোলা

২৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬০

ভুলে যাও অভিমান

(হাসান আলীম বন্ধুজনেষু)

প্রত্যাশার লাগামটা ধরো নিজে টেনে

এ ধরনী কারো নয়, খুশী হও জেনে

নবীর আমল সে তো নাই আজ কবি

কবিদের বাসতো ভালো আল্লার নবী

 

রবির আলোতে হাসে দুনিয়া জাহান

কোনদিন রবির খোঁজ নেয় কি ইনসান

লোক বোবা হলে তাতে তার কি আসে

সূর্যের সোনারোদ সে দুঃখে কি ভাসে?

 

ফুল তবু ফুটবেই, পাখিও গান গাবে

সুস্বাদু পাকা ফল আদম জাতি খাবে

প্রতিদিন ভোরে পাখি দেবেই আযান

যেনে রেখো কবি এটা খোদার বিধান

 

সূর্যের খোঁজ জানি নেয় নাতো কেউ

পৃথিবী ভাসায় তবু আলোকের ঢেউ

ভুলে যাও অহেতুক-- মান অভিমান

তুমি শুধু ঠিক রাখো তোমার ঈমান

 

পৃথিবীতে অসীমের ঢেলে যাও আলো

আঁধার ভুবনে কবি প্রেমশিখা জ্বালো

২৫//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬১

ভরা পেটে খেতে নেই

তিরিশ দিনে মাস হয়

জেতা মানুষ লাশ হয়

মাটি পাইলে ঘাস হয়

পাথরে ঘাস হয় না

ঠিক কই নাই ময়না?

 

ময়না বলে ঠিক ঠিক

টিকটিকি কয় টিকটিক

ডাইনি হাসে ফিকফিক

হেসে বলে ময়না

কেউতো বেঁচে রয় না

 

রয়না বেঁচে কেউ ভাই

তবু করে চাই চাই

এটা পেলে ওটা চাই

সব চাওয়া কেউ পায় না

তবু হাজার বায়না

 

একদিন বায়না শেষ হয়

মেষের বাচ্চা মেষ হয়

খাইলে পেটে গ্যাস হয়

তাইতো লাশে খায় না

নাইরে লাশের বায়না

 

তাইতো অঢেল চাইতে নাই

পেট ভরলে যে খাইতে নাই

২৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬২

শোধ করো ঋণ

ভাইরাস একটা, ধরা হলো কাত

পরমানু অস্ত্ররা সব কুপোকাত

রাজা মহারাজা হলো এক্কেরে কাবু

হেজাবের মর্মটা বুঝে গেলো বাবু

 

তারপরও বুঝলো না কিছু কমজাত

টানলোনা পাপ থেকে নাদানেরা হাত

তওবার ভেকসিন নিল নাতো তারা

পৃথিবীটা তাই আজো রয় দিশেহারা

 

যত বলি মাফ করো, খোদা বলে কেন

বাঘা বাঘা পাপীদের কতটুকু চেনো?

টাকা দিয়ে পাপ কিনে মাফ কেন চাও

এ দুনিয়া দুদিনেরই, মজা করে নাও

 

তারপর এসে গেলে হিসাবের দিন--

দেখি তুমি কিভাবে শোধ করো ঋণ

২৬//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৩

বাবা ও ছেলে

বললাম খোকা, যাসনে।

খোকা শুনলো, খাসনে

ভাগ্য ভাল সে শোনেনি

খোকা একটা লাশ নে

 

কি বিচ্ছিরি কান্ড হতো

খোকা খেত থতোমতো

বলতো বাবা, কার লাশ

বলতাম কোথায় বাঘডাস

 

হাঁস তো থাকে পুকুরে

বাঘডাস তাড়ায় কুকুরে

খোকা তাও প্রশ্ন করে

কি বলবো, খুকুরে?

 

খুকু ছিল পুকুর পাড়ে

কেউ কি ধাক্কা দিল তারে?

যেই বলেছি, ধাক্কা

সে শুনলো আম পাক্কা

 

বললো, আম খাবো।

এবার বাবা যাবো?

২৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৪

যেমন তেমন

যেমন প্রজা,তেমন রাজা, নইলে কি আর হয়

প্রজা ভালো, রাজা ভালো,দেখবে জগতময়

রাজা যদি খারাপ হয়

বুঝবে প্রজা ভাল নয়

যাদের দলে মানুষ বেশী তাদেরই হয় জয়

 

রাজা যদি মন্দ হয়রে, মন্দ তো হয় প্রজাগণ

রাজার পাপে ঘরে বসে কান্দে তখন জনগণ

রাজার পাপের সীমা নাই

প্রজার জীবন বীমা নাই

চারদিকে যে মাতম করে বৃক্ষলতা অগনণ

 

পাপের সাথে পাপের দোস্তি, সাপের সাথে সাপের

আল্লাহ প্রেমিক দোস্তি করে সঙ্গে অনুতাপের

বলে,আল্লাহ মাফ করে দাও

তোমার রহম ছায়াতে নাও

আমার গায়ে রয়না যেনো ময়লা কোন পাপের

২৬//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৫

নেটটা

আজকাল অনেকেই

ভুলে গেছে আমাকে

সেই কথা ম্যাসেজে

লিখেছিও মামাকে

 

মামা কয় ভাগ্নে

এখনো কি তুই আছিস জাগনে?

কেন বাবা ঘুমা না

বলে গেছে রুমানা

তুই নাকি ঠিকমত খাসনে

স্কুলেও প্রতিদিন যাসনে

 

শোন, আরো বলে গেছে

দিনে রাতে একবারও নাসনে

এইসব ঠিক না

না খেলে যে হবি আরো চিকনা

 

বলি মামা নেটে নেটে

দিন যায় ঘেটে ঘেটে

কখন যে নাই আর কখন যে খাই

কখনো কি আমি মামা ফুসরত পাই?

 

তাহলেই বুঝ তুই

কেউ তোকে ভুলে নাই

বাদলের নানা ভাই

তিনদিন খায় নাই

বললাম কেন ভাই?

বলে আমি ব্যস্ত

যাবো ভাবি ভেস্ত

তাও টাইম পাই না

জান্নাতে যাই না

 

তবে মামা গেটটা

লক করো নেটটা

ওয়াইফাই বলো নাই

চলো তবে খেতে যাই

২৬//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৬

আমার গাজীপুর

রেশমী রুমাল আন্দোলনের দুঃসাহসী বীর

গাজীপুরে এসে একদিন করেছিলো ভীড়

ভাওয়াল রাজ পরগনার আঁধার করে দূর

গড়েছিলো স্বপ্নপুরী  ভাওয়াল গাজীপুর

 

গাজীপুরে উঠল গড়ে বীর গাজীদের বাড়ি

চারিদিকে আম জাম লিচু বনের সেকি সারি

পেয়ারা কাঁঠাল নানা ফলের, কিযে সুন্দর বন

কেড়ে নেয় সে সব মানুষের ভেজা ভেজা মন

 

গাজীপুরের ঘরে ঘরে হয়রে প্রেমের চাষ

শালগজারীর বনে বীর, থাকে বারো মাস

নদী নালা খালে বিলে মাছেরা সব থাকে

ফলফলাদি, মাছের ঝাঁক স্বপ্ন মনে আঁকে

 

গাজীপুর এক স্বপ্নপুরী, সবুজ বনের দেশ

পাখপাখালির গানে মুখর স্নিগ্ধ পরিবেশ

সেথা আমার জন্মভূমি, যেথায় ঘুঘুর বাসা

যে মাটিতে নিত্য ফলে হাজার স্বপ্ন আশা

 

গাজীপুরের যেদিক তাকাও স্নিগ্ধ অপরূপ

ইচ্ছে করে সকাল বিকাল সে রূপে দেই ডুব

(আতা গাছে তোতা পাখি, ডালিম গাছে মউ)

গাজীপুরতো ঘোমটা পরা লাজুক রাঙা বউ

 

বীর ঈশাখা হারিয়ে গেছে, হাজার মুসাফির

স্বপ্ন বোনে মনের ভেতর সাজবে তিতুমীর

গাজীপুরের মাটি থেকেই আসবে একাত্তুর

তারাই গড়বে বিশ্বে আবার প্রেমের সমুদ্দুর

২৭//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৭

ধর্ষণ বিষয়ক

সংবিধানে কি লেখা আছে সোনা কাটা মানা?

বুবুরে তোর মাথার কিলিপ খুর দিয়ে তুই বানা

 

ভার্সিটি কি ধর্ষণখানা, সেঞ্চুরি কে করে?

সেঞ্চুরিয়ান খাসি বানা, নিজেই ধরে ধরে

 

মিছেমিছি ধর্ষকদের তুই বিচার কেন চাস

বিচার দিয়ে এ সমাজে কয়টা বিচার পাস?

 

আর চাবিনা বিচার বোন, খুন করে পায় মাফ

কেনো ভাবিস ধর্ষক ধরা, হবে রে তোর  টাফ

 

সংবিধানে কি লেখা আছে, ভাল করে পড়

এখন থেকে সামাল দিবি নিজে নিজের ঘর

 

যেই দেশে বোন আর্মি মরে রাজপুলিশের হাতে

সেই দেশে বোন চামচিকাও খুনের নেশায় মাতে

 

ইজ্জত দিবি জীবন দিবি সব ঠেকা কি তোর?

ধর্ষক এলে দিস পাঠিয়ে তারেও সিসিমপুর

২৭//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৮

কেমন ছিলেন নবী?

ভাবছি আমি কবি।

কেমন ছিলেন নবী?

একঘন্টা ওয়াজ করে

কয়ডা টাকা পাইতেন?

কার বাড়িতে মিলাদ পড়তে

দাওয়াত দিলেই যাইতেন?

 

ভাবছি আমি কবি।

কেমন ছিলেন নবী?

ইমামতির বিনিময়ে

কতো বেতন পাইতেন?

কখনো কি খানকায় বসে

নজর নিয়াজ চাইতেন?

 

ভাবছি আমি কবি।

কেমন ছিলেন নবী?

শ্রদ্ধাভাজন মানুষ তিনি

কেন যুদ্ধে  যাইতেন?

যুদ্ধ লাগলে তিনিও কি

রক্তগঙ্গায় নাইতেন?

 

ভাবছি আমি কবি।

কেমন ছিলেন নবী?

২৮//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৬৯

যদি লাগে ভালো

যদি লাগে ভালো।

জ্বালো, আলো জ্বালো

দূর হয়ে যাক অমা রাতের

সকল আঁধার কালো

জ্বালো, আলো জ্বালো

যদি লাগে ভালো

 

যদি ভাল লাগে

তারে তুমি বন্ধু বানাও

অন্য সবার আগে

তারে দেখলে তোমার মনে

পুলক যেন জাগে

যদি ভাল লাগে

 

ভালো লাগে যদি

ভালোর সাথে থেকো বন্ধু

তুমি নিরবধি

আলো মনে জ্বালো

যদি লাগে ভালো

দূর হয়ে যাক মনের যতো

মন্দ আঁধার কালো

জ্বালো, আলো জ্বালো

যদি লাগে ভালো

২৯//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭০

কবি কেন হয় না

কবি

শুনেছিলাম, বড় কবি

নজরুল এবং রবি

ফেবুতে কি তারা দিত

নিজের সেলফি,ছবি?

 

কেমন করে বড় হলো

কি মনে হয়? তুমিই বলো

লাইক না পেয়ে তাদের হতো

চক্ষু ছলোছলো?

কমেন্ট পেতে কখনো কি

গড়তে নিজে দলও?

তবে তারা কেমনে বড় হলো?

 

আপনার লেখা আমি ছাপবো

আমার লেখা আপনি

এভাবে কি লেখা ছাপার

দিত নানা চাপ নি?

 

তবে কেমনে কবি হয়

কেমনে নজরুল, রবি হয়

আন্ধার ঘরে বলতে পারো

কেমন করে ছবি হয়?

 

লাইক কমেন্টের বন্যা বয়

কবি কেন হয় না

সাগর কলা খায়নি যেজন

ক্যান যে কবি কয় না?

এর কারণটা আমায় তুই

খুলে কবি ময়না?

২৯//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭১

ছড়ার সঙ্গে

ছড়া কিনতে গিয়েছিলাম মোল্লাহাটে ভাই

গিয়ে দেখি হাটে আহা একটি ছড়াও নাই

ফিরতি পথে ধরলো ছেকে নবীন ছড়াকার

বললো কবি লাগবে ছড়া, দিতে পারি ধার

 

বলি, একটা দাও।

আগে পেঁপেঁ খাও

ছড়া ক্ষেতে ছড়া আছে কয়টা লাগবে নাও

 

বল্লাম ছড়া যায় না চুরি

বলে, দিনে উড়াই ঘুড়ি

রাতে বানাই তারা

আমাদের কি সময় কাটে ছড়ার সঙ্গ ছাড়া

 

ওরা হাসে তারার মত

সুখী হাসি, নাইরে ক্ষত

রাত্রি এলে হয়রে গত

আবার আসে ভোর

ফুল বাগানের ফুলেরা কয় সকল ছড়া তোর

 

আমি হাঁটি, আমার সঙ্গে ছড়াগুলো হাঁটে

আমি ঘুমাই আমার সঙ্গে ছড়া ঘুমায় খাঁটে

ছড়ার আযান শুনে আমি ঘুমের থেকে উঠি

ছড়া ছুটে জামাত ধরতে, আমি সঙ্গে ছুটি

২৯//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭২

ছড়া রাখেন, বাতাস খান

কবিতাটা লেখার জন্য

রাতভর ছিলাম জাগনা

একচুমুকে খেয়ে নিলেন

বিনা পয়সায় মাগনা?

 

সুখের ঢেকুর তুলে বললেন

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- হইছে ভালো

এই যে ভাল বললাম এটার

দামটা এবার ঢালো

 

সারা রাতের আমার কষ্টে

আপনি হইলেন খোশ

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- কেন ভাল হইলো

এইটা আমার দোষ

 

আপনি একটা ঢেকুর তুলে

সেই ঢেকুরের দাম চান

আগে ছাড়েন আমার ছড়ার

সারা রাতের দাম খান

 

রসগোল্লা খেয়ে দাদা

চাইছেন এখন দই

এই পাড়াতে দই নাই

মিষ্টির দামটা কই?

 

বিনা পয়সায় বার বার খান

কমেন্ট করে জবাব চান?

আমার ছড়ার দাম নাই?

তেতুল গাছে আম নাই

 

যে কমেন্টের জবাব চান

ছড়া রাখেন, বাতাস খান

৩০//২০২০; ১ঃ০০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৩

ছড়া লেখা বাদ দিন

ছড়া লেখা বাদ দিন

দেশগড়ায় হাত দিন

কাঁধে কাঁধে কাঁধ দিন

এই হোক সকলের

প্রত্যাশা রাত দিন

হাত দিন, হাত দিন

 

দিন দিন কত প্রাণ হারছে।

দেশে শুধু গুম খুন বাড়ছে

যেভাবে যে পারে প্রাণ কাড়ছে

আজকাল পুলিশেও ধরে ধরে

পথেঘাটে আর্মিরে মারছে

 

পাবলিক বোকারাম হদ্দ

মার খায় মজা করে অদ্য

,ছড়াকার তবু লেখে পদ্য

গাল্পিক লিখে যায় গদ্য

 

শিল্পীরা গান গায়

পাবলিক মার খায়

কারো কারো জান যায়

মান যায় কারো

তবু পথে নামে না

বলে মারো আরো

 

এইসব লেখাটেখা বাদ দিন

দেশগড়ায় সকলে হাত দিন

৩০//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৪

বোকা গাধা

বিয়ার বয়স হয় নাই তবে

বিয়া করতে এলি ক্যান?

কে দিয়েছে এমন বুদ্ধি

শালিক নাকি পেলিক্যান?

 

বিয়া অত সহজ না ভাই

বিয়ার জন্য আইন আছে

আইন না মানলে তার জন্য

জেল জুলুম ও ফাইন আছে

 

কোন বয়সে ধর্ষণ চলে

আইনে ওসব লেখা নাই

আইনী লোকের ধর্ষণ নিয়ে

তাই ভাববার ঠেকা নাই

 

ঠান্ডা মাথায় আইন ভাঙলি

বিয়া করতে এসে

ধর্ষণ করলে সে অপরাধ

উড়িয়ে দিতাম হেসে

 

এখন জেলে চল

বোকা গাধার দল

৩০//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৫

মুরগী ছানা ও নানা

মুরগী ছানা বললো নানা

আসল কথা কইতে মানা

তবু নানা কই

বাঘের বাচ্চা বললো আচ্ছা

যা বলেছি সবই সাচ্চা

দেখবি আমার বই?

 

যেই বলেছি, তবে দেখা

বললো, তবে আসো একা

ওই যে দেখো আফ্রিকার

গহীন কালো বন

ওই বনে এক সাপের আন্ডা

শুনছি তিরিশ মণ

 

শোনা কথার দাম নাই

আমাজানে মাম নাই

আসল কথা জানতে হয়

নবীর কথা মানতে হয়

 

কয় মোরগের ছানা

ঠিক বলেছো নানা

সবার আগে দরকার হলো

আল কোরআনটা জানা

আল্লাহতালা কি বলেছে

জেনে সেটা মানা

 

আমি বললাম, ঠিক।

আল কোরানের আলো আগে

ছড়াও চতুর্দিক

এই আলোটা খাঁটি

যে আলোতে শুদ্ধ হয়

দেশ দুনিয়ার মাটি

 

আল্লাহর কোন মামা নাই

ভাগনের লাল জামা নাই

সবাই আপন তাঁর

তাঁর রহমে মানুষ হয়

অথৈ সাগর পার

 

লাল মোরগের ছানা

বললো হেসে নানা

কোরআন ছাড়া এই দুনিয়ার

সবাই কি তয় কানা?

 

সূর্য এলে বিশ্ব জাগে আলোয় ভুবন ভরে

আল কোরআনের আলোয় মানুষ

নিজের জীবন গড়ে

আহা, নিজের জীবন গড়ে

৩০//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৬

আন্ডা ও পান্ডা

সাগর পাড়ে তাকিয়ে দেখি সি-মোরগের আন্ডা

তাই নিয়ে কি করছে ঝগড়া তিনটি নাদুস পান্ডা

সবার দাবি আন্ডার মালিক পান্ডা নিজে হবে

খেলতে পারো সবাই মিলে আন্ডা তারই রবে

 

ঝগড়া তো আর শেষ হয় না কিচির মিচির করে

সবাই ভাবে আন্ডা নিয়ে ফিরবে নিজের ঘরে

আমি তখন অন্য দিকে একাই হাঁটতে যাই

ফিরতি পথে আন্ডা দেখি, পান্ডারা যে নাই

 

একটু দূরে তাকিয়ে দেখি নীল সায়রের ফেনা

পান্ডার মাথার মুকুট যেনো টাকা দিয়ে কেনা

হাবুডুবু খাচ্ছে সবাই, জীবন সবার যায়

এসময় কি আন্ডা কেউ ফিরে কাছে চায়?

 

ঝগড়া করার ফল হলো এই, পান্ডা গেল মারা

হাত তোল তো দেখি আমি ঝগড়া করো কারা?

৩০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৭

এমন যদি হয়

এমন যদি হয়

বনের থেকে আসলো ছুটে

আজদাহা এক ভয়

পালাতে গিয়ে ধরলে যে ডাল

ওটায় ছিল জয়

 

জয়টা হেসে কয়

আল্লাহ যাদের সহায় তাদের

কিসের আবাব ভয়

তাদের নাগাল পায় না কভু

কোনই পরাজয়

 

যদি এমন হয়

তবে কেমন হয়?

ভয়টা যদি আনে ধরে

সূর্যজাগা জয়

তবে কেমন হয?

/১০/২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৮

হঠকারী

ভালটাকে ভাল বলা মন্দটাকে মন্দ

যাদের বুকে এ সাহস নেই

তারা সবাই অন্ধ

তারাতো ভাই সত্য গোপনকারী

জীবন তাদের শিখায় শুধু

করতে হঠকারী

 

নিজের সাথে নিজেই ওরা করে প্রতারণা

কেমনে তারা বুঝবে বলো পরের যন্ত্রণা

মুখে ওরা যতই বলুক ওরা তিতুর ভাই

ওরা সবাই ভীতু ওদের মুখে মারো ছাই

 

দেখতে সাহেব দেখতে হুজুর ওরা বোবার দল।

ওদের গলায় দাও ঢুকিয়ে তিরিশ কাটার নল

তাতে যদি বোবায় ধরা ওদেরকে যায় ছেড়ে

মেজবানিটা দেবো আমি তিনশ গরু মেরে

/১০/২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৭৯

সই ছাড়া

খৈ খেয়েছি দই ছাড়া

পন্ডিত হইছি বই ছাড়া

এতো বড় ডাঙ্গর হইছি

তাই ভেবেছিস সই ছাড়া, সই ছাড়া

 

ছোটবেলা বালু দিয়া ঘর বানাইছি কতো

সে ঘর ভাঙলি ঠেলা দিয়া হয়নি বুকে ক্ষত

এখন কেন বুকে ক্ষত বানাইলি তুই মই ছাড়া

এতো বড় ডাঙ্গর হইছি ভেবেছিস কি সই ছাড়া, সই ছাড়া

 

সই, বস না একটু কাছে তুই, মনের কথা কই

পানির তলে মাছ ধরলাম, কইনি একটু হৈ

জোঁকের কামড় খাইছি তবু চোখ তো ছিল জল ছাড়া

এতো বড় ডাঙ্গর হইছি ভেবেছিস কি সই ছাড়া, সই ছাড়া

 

সইয়ের কাছে মনের খবর যতো আমি কই

সই শোনে আর কান্দে বসে বলে কি কস সই?

আল্লাহ কেমনে বানায় এমন মানুষ হৃদয় মন ছাড়া

এতো বড় ডাঙ্গর হইছি তুই কি ভাবিস সই ছাড়া, সই ছাড়া

/১০/২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮০

কাউয়া কালা কালা

ওগো আমার খালা

মুখে লাগাও তালা

পিঠে বান্ধো ছালা

নইলে তোমায় ধরতে আসবে

কাউয়া কালা কালা

 

কাউয়ার ঠোকর খাইলে বুঝবা

ঠোকরে কি জ্বালা

তুমি দেখবা লাল টুকটুক

আগুন মাখা মালা

হাতে দেখবা হ্যান্ডকাফ মার্কা

শক্ত লোহার বালা

 

বাঁচতে হলে কানে লাগাও

গরম সীল ও গালা

এমন স্বাধীন হওয়ার চেয়ে

গোলাম হওয়া ভালা

 

স্বাধীন দেশে নইলে বুঝবা

স্বাধীনতার জ্বালা

চোখ খুললেই দেখতে পাবা

কাউয়া কালা কালা

/১০/২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮১

কিসের জমিদারী

সাগর জলে মানিক জ্বলে, মুক্তো সারি সারি

আছে সেথা মুক্তোপাহাড় মানিক কাড়ি কাড়ি

মানুষ যদি মানুষ হতো

সবাই যে তা ভাগে পেতো

বঞ্চিত কেউ হতোনা ভাই পুরুষ কিংবা নারী

 

খোদার ইচ্ছায় উঠতো সেসব সাগর জলে ভেসে

সবাই সেসব পারতো নিতে মিষ্টি মধুর হেসে

কিন্তু এখন মানুষ নাই

সবাই এখন স্বার্থ চাই

পরের জন্য ত্যাগ করেনা কেউতো ভালবেসে

 

ভাবেনা কেউ কখন দেবে জীবননদী পাড়ি

কখন যাবে নিজের এ রুহ দেহ তরী ছাড়ি

মিশে যাবে সাগরের ঢেউ

এ ধরাতে থাকবেনা কেউ

কিসের করো বাহাদুরী, কিসের জমিদারী

/১০/২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮২

ফুলি

ফুলি।

শোনলাম তোর পেটের ছেলে

খাইছে নাকি গুলি?

এই খেলাটা ভালো না

ওড়ে মাথার খুলি

 

গুলি।

সে চিনে না জাতির পিতা

সদরঘাটের কুলি

বলতে পারিস এসব কথা

কেমন করে ভুলি?

 

কষ্টে পরাণ ফাটে।

জিয়া যখন গুলি খায়

নিজামী ঘুমায় খাটে

সাঈদীর ওয়াজ পথেঘাটে

আজো ঘুরে ডাটে

 

কে কারে দেয় জেল?

লকডাউনে আর আসে না

যারা দিত তেল

 

ফুলি।

সব কথাই তো আঁকে বসে

ইতিহাসের তুলি

/১০/২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৩

ইচ্ছে ডানা

ইচ্ছে ডানা

দিচ্ছে হানা

মুরগী ছানা

ধরতে

 

সেও নাকি

যুদ্ধে যাবে

সামনের মাসে

লড়তে

 

মা ডেকে কয়

ওরে সোনা

যাবি যাবি

এখন যা তুই

পড়তে

 

যুদ্ধ আগে

শিখতে হয়

নইলে হয়

মরতে

/১০/২০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৪

শেয়ার দিও

এত বলি কমেন্ট কম

পারলে করো শেয়ার

শেয়ার করে দেখাও তুমি

কারে বলে পেয়ার

 

আমার লেখা লাগলে ভালো

জানাও জনে জনে

বেঁধে রাখো আমার লেখা

হৃদয় এবং মনে

 

ওগো আমার বন্ধু প্রিয়

ভালবাসা সঙ্গে নিও

পারলে একটা শেয়ার দিও

নাও একটু শরবত পিয়ো

/১০/২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৫

না-রে ভাই, না-রে না

না-রে ভাই, না-রে না

সবাইতো সব পারে না

সবার সুর মন কাড়ে না

মনের সাথে মনের গিট্টু

লাগলে সে আর ছাড়ে না

 

না-রে ভাই, না-রে না

সবাইতো সব পারে না

রাতে বিলাই মারে না

সবাই ভাবে অস্ত্র পারে

সব সময় তা পারে না

মজলুম যদি ধরে চেপে

জালিমরে আর ছাড়ে না

 

না-রে ভাই, না-রে না

সবাইতো সব পারে না

কে কয় রাজা হারে না

পাবলিক যদি ক্ষেপে তবে

ইরানের শাহ পারে না

 

না-রে ভাই, না-রে না

সবাইতো সব পারে না

/১০/২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৬

মিছরির ছুরি

মিছরির ছুরি দিয়া আমার

জীবন করলি শেষ

আমি খুঁজি কোথায় আমার

সোনার বাংলাদেশ

 

আমি কোন বা বনে যাই

কার বাড়িতে গেলে আমি

টাকিভর্তা পাই

 

মন চায় খাইতে টাকিভর্তা

পুলিশে দেয় ডাইল

ভর্তা চাইলে দাঁত ভেংচিয়ে

পাড়ে আমায় গাইল

 

গণতন্ত্র বইসা হাসে

গাব গাছের ডালে

কতকিছু দেখবি আরো

ডিজিটালের কালে

 

মিছরির ছুরি খাইতে আসে

পিপীলিকার ঝাঁক

কেমনে পিপড়া গদী পাইল

সেই কাহিনী থাক

/১০/২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৭

শিল্পী ও গীতিকার

গানতো শুনতে ভালই লাগে শিল্পী যখন গায়

এ গানটা কে জন্ম দিছে জানতে কে তা চায়?

সবাই বলে, আহা আহা কি চমৎকার গলা

শিল্পীরে দেয় চা বিস্কিট, সঙ্গে সাগর কলা

 

গানটা যে কে জন্ম দিছে কে তা জানতে চায়

গীতিকারের খোঁজে কি কেউ সোনাডাঙ্গা যায়?

ছেলে মরলে নজরুল পায় না কাফন কেনার টাকা

উপরে সে জাতীয় কবি, পেট থাকে তার ফাঁকা

 

সর্ষে ফুলের হলুদ দ্যাখে গীতিকারের বউ

গীতিকার তো বসে গোনে পদ্মা নদীর ঢেউ

গীতিকারের সন্তান বসে বাবার মেডেল খায়

পত্রিকাতে নাম উঠেছে আর কি তারা চায়?

 

কি গান গেলো শিল্পী আহা ভুলা সেকি যায়

গানের জন্য দান দক্ষিণা সেই তো শুধু পায়

টাইটেলে তার নামও থাকে সঙ্গে রঙিন ছবি

সেই ছবিতেই হাতটি বুলায় উদাস মনে কবি

/১০/২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৮

ধর্ষক বিরোধী শ্লোগান

পাড়ায় পাড়ায় দুর্গ গড়ো

সকাল বিকাল ধর্ষক ধরো

 

পাও যেখানে ধর্ষক লীগ

পাছায় মারো শক্ত কিক

 

ধর্ষকের দুই গালে

ঝাড়ু মারো তালে তালে

 

খুনী ধর্ষক ভাই ভাই

এক দড়িতে ফাঁসি চাই

 

ধর্ষকগুলো বানাও খাসি

ধর্ষকরে দাও এবার ফাঁসি

 

ধর্ষক দেখলে দাও তালি

মুখে মাখো চুন কালি

 

ধর্ষক খুনীর ঠাঁই নাই

সবুজ সোনার বাংলায়

/১০/২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৮৯

আপনি এবার আসেন

মুসলিম আপনার হতেই হবে

এমন কোন দাবী নাই

দেহপিঞ্জর খোলবেন আপনি

হাতে সোনার চাবি নাই

 

আপনার কোন কর্ম নাই

নিজের কোন ধর্ম নাই

মুসলিম হয়ে এসব বলবেন

স্বপ্নেও তা ভাবি নাই

 

কলেজে কি ভর্তি হইছেন?

ছাত্র কেমনে হইবেন?

বন্ধুরা সব ছাত্র বলে

মিছা কতা কইবেন?

 

আপনি কি ভাই মসজিদে যান?

নামাজ পড়েন রোজ?

কেমনে তবে মুসলিম হইবেন

টিফিন করবেন ভোজ?

 

টিফিন মিলে ছাত্র হলে

রাস্তার ছেলে পায় না

পথের ছেলে হাত পেতে কেউ

টিফিন খেতে চায় না

 

পরীক্ষাতো দেননি আপনি

কেমনে করবেন পাশ

যার নাই কোন ধর্ম তার কি

কবরে যায় লাশ?

 

কবরও নাই ম্মশানও নাই

আপনি এবার আসেন

ধর্ম নিরপেক্ষ যখন

গাঙে গিয়া ভাসেন

/১০/২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯০

ছড়ার কথা

কোথা থেকে আসে ছড়া

কোথায় যে ফের যায়

কার বাড়িতে রাতে থাকে

কার ঘরে যে খায়

 

আমি যখন সজাগ থাকি

তখন ওরা আসে

বুড়ো দাদু ওদের নাকি

বেজায় ভালবাসে

 

টাকুর টুকুর গল্প করে

বিলাই আদর চায়

মালা গাঁথা হয়ে গেলে

শূন্যে উড়ে যায়

 

বলি তোরা থাকিস কই

বলে আমরা উড়ি

দমকা হাওয়া পেলে দাদু

উড়াই মেঘের ঘুড়ি

 

তোমার ঘরে জায়গা কম

পথেঘাটে থাকি

বিপদ আপদ সর্বসময়

আল্লা আল্লা ডাকি

/১০/২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯১

প্রজাপতির বিয়ে

একটা ছিল প্রজাপতি

দেখতে বড়ই রূপবতী

বাড়ি ছিল ময়নামতি

স্বভাবেও দারুণ সতী

 

জনপদের কাছে

থাকে ঘরের পাছে

সবুজ কলা গাছে

তিনশ কলা আছে

 

করতো না সে ক্ষতি

চালাক ছিল অতি

একটা ছিল পতি

সাক্ষাৎ ভানুমতি

 

ভানুমতির ভানু

সে ছিল খুব ঝানু

বলতো শোন নানু

মেয়ে ভালো রানু

 

বিয়ে দেবে? দাও

বরই পাতা খাও

বরই পাতায় ঝাল নাই

প্রজাপতির চাল নাই

/১০/২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯২

কেষ্টার রাজনীতি

বাজে লোকে ভরে গেছে দেশটা

তাই নিয়ে খুব পেরেশান কেষ্টা

ভেবে ভেবে হয়রান

কি যে হবে শেষটা?

দেশটাকে ভাল করার

কে করবে চেষ্টা?

 

পথে যদি নামে একা নূরু

মনে হবে যুদ্ধটা হয়ে গেছে শুরু

পথে পথে গুলি হবে, মাথা হবে গুড়ো

তার সাথে কি তিরিশ লক্ষ শহীদ নামবে পুরো

যুবকরা কি নামবে পথে

হাত তুলবে বুড়ো?

কি মনে হয় খুড়ো?

 

শেষটায় কি হবে?

বলতে পারেন কার ভাগ্যে

ভি চিহ্নটা রবে?

 

শিবিরের ছেলেরা কি সত্যি পথে নামবে?

বিজয়টা হাতে নিয়ে তারপর ওরা থামবে?

নাকি ওরা গুলি খেয়ে হয়ে যাবে পঙ্গু?

কি মনে হয় রঙ্গু?

 

মন যে কি বলে ওটা কখনো কি বলা যায়?

এই দেশে মন খুলে কথা বলে চলা যায়?

বলি ওরে কেষ্টা

কথা কম, আয় দেখি কি যে হয় শেষটা

 

দেশবাসী অবশেষে ধর্ষক ধরবে?

নাকি রাগে দুইদিন মিছিলই করবে?

তারপর কেনাবেচা চলবে

শেষ কথা এই শীতে কেউ খুলে বলবে?

 

কেষ্টারে কেষ্টা

বাতাসটা বুঝবার কর আরো চেষ্টা

/১০/২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৩

বিশ্ব ভালবাসো

আমার লেখা আমার কাছে জমা নাই

অমরতার লোভের কোন ক্ষমা নাই

যখন আমি মরে যাবো, চলে যাবো দূরে

ইচ্ছে হলে পড়ো লেখা আমার ছন্দ সুরে

 

এ আশাতে লেখি যেন সবার দোয়া পাই

না, কিছু না সবার কাছে এট্টু দোয়া চাই

লেখা যেন বলে খোদা, এ লোক ছিল কবি

কবির লেখা ভালবাসেন তোমার প্রিয় নবী

 

মুক্ত হাওয়ায় আমার লেখা উড়তে যেন পারে

সে জন্য ছেড়ে দিলাম খোলা হাওয়ায় তারে

লেখা যেন তোমায় ডাকে খোদার পথে আসো

মায়ায় তোমার হৃদয় ভরুক, বিশ্ব ভালবাসো

/১০/২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৪

সুন্দরবন

এক যে ছিল সুন্দরবন

তার ছিল এক সুন্দর মন

বাসতো ভালো পাখি

রাখতো পাতায় ঢাকি

 

বনে ছিল হরিণ ছানা

ধরতে তাদের ছিল মানা

বানর সাথে ভাব ছিল

হরিণ বসে ভাবছিল

 

কেন তারা বাঘের খানা

ছিল না তার কারণ জানা

বাঘ খায় হরিণ গোস্ত

কান্দে বানর, দোস্ত

 

কুমীর থাকে নদীতে

কে বয় সিংহের গদীতে

সবুজ শ্যামল সুন্দরবন

চায় না কোন সিংহাসন

/১০/২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৫

নেটের নেশা

ছবি নেটে ছেড়ে দিলেই

দাঁত কেলিয়ে হাসে

মিষ্টি সব কমেন্ট তখন

আপসে ভেসে আসে

 

আমি বলি দেখো

পাবলিসিটি শেখো

তিরিশ দিনই নেটে চাই

তোমায় প্রতি মাসে

 

সেই যে হলো নেশা

চাপামারা তখন থেকে

হয়ে গেল পেশা

 

-তে লেখা গান আমি

ঘরে বসে গাই

কাল ছটায় দেখা হবে

আবার বলে যাই

 

বারে বারে আসি

নানা ঢংয়ে হাসি

তুমি শুধু বলো সখি

একবার 'ভালবাসি'

 

হায়রে নেটের গুণ

সময় করলি খুন

মনে দিলি নেশা

পড়বো কখন এশা?

/১০/২০২০;৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৬

শোন মিয়া

এই ছড়াটা তোমায নিয়ে।

কদিন হলো করছো বিয়ে?

ছেলে মেয়ে হইছে?

ছেলে বাবা কইছে?

 

বাহ বা বা, বেশ।

দু বছর পর দেখবো মাথায়

কয়ডা থাকে কেশ

 

তোমার বউয়ের মনডা ভালা

নাদুস নুদুস দেখতে কালা?

তাতে কি হয় ভাইরে

রঙ কি গায়ের খাইরে?

 

মিল মোহাব্বত বড় জিনিস

মিলেমিশে থাইকো

আদর করে মাঝে মাঝে

জানু বইলা ডাইকো

 

বউটা নিজের থাকলে খুশি

খুশি সারা দুনিয়া

ভাল করে এই কথাটা

রাখো মিয়া শুনিয়া

/১০/২০২০;১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৭

ঘুচুক সকল জ্বালা

আর্মি মারে পুলিশে আর পুলিশ মারে লীগে

সে খুনীকে মাফ করে রে বাংলাদেশী বীগে

 

খুনীরা হয় সোনার ছেলে, বাংলাদেশী বীর

খুনী এখন খুন করে যায়, আসাদ তিতুমীর

 

খুনী ছাড়া বাংলাদেশে আরো কি কেউ আছে?

খুঁজতে গিয়ে দেখতে পেলাম সকলে গাবগাছে

 

লাঠি রামদা পিস্তল এখন খুনীর হাতে হাতে

সেঞ্চুরিয়ান মানিকরা সব দেশের ক্ষমতাতে

 

আর্মি পুলিশ সরকার সবই আজো তাদের হাতে

মা-বোনদের গায়ের কাপড় ছিঁড়ছে ওরা দাঁতে

 

আমার মাকে নেংটা করে মারছে ওরা কারা?

এই কাহিনী দেখার আগেই যাইনি কেন মারা?

 

ও ভগবান, আল্লাহ, গড, আমায় তুলে নাও

আর পারি না সইতে আহা, মরণ আমায় দাও

নয় করে দাও অন্ধ আমায়, কানে মারো তালা

এই পৃথিবী দোযখ আমার, ঘুচুক সকল জ্বালা

/১০/২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৮

ছড়া হবে

ছড়া হবে কড়া কড়া

ঝাল মেশানো ডালের বড়া

গরম লোহা, যায় না ধরা

হিমালয়ের চূড়ায় চড়া

বীর শহীদের রক্তে গড়া

 

ছড়া হবে শক্ত

ভাঙবে রাজার তখত

ভয় পাবে না রক্ত

হবে প্রেমের ভক্ত

ছড়া হবে শক্ত

 

ছড়া হবে ঢিল

ভয় পাবে না কিল

ভয় পাবে না গুলি

উড়লে মাথার খুলি

মারবে শকুন, চিল

দুষ্ট আজাজিল

মারবে স্বৈরাচার

ছড়া বারংবার

/১০/২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৮৯৯

কেমন আছো বাংলাদেশ?

কেমন আছো বাংলাদেশ?

হইছে দেশে গুমের শেষ?

তোমার কেন খুনির বেশ?

সারা গায়ে রক্তের রেশ?

 

বাপে মরার বদলা নিলা?

ব্রিগেডিয়ার খাইলা গিলা?

ইঁদুর এবং বিলাই মিলা

নুন লাগাবা চামড়া ছিলা?

 

নুন লাগাবা কেন কও?

আগে ফাঁসির দড়ি লও

ফাঁসিতে আর ভয় নাই

বীর শহীদের ক্ষয় নাই

 

যে জন আগে মরতে যায়

বিজয় শুধু তারেই পায়

/১০/২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৯০০

ইলিক ঝিলিক ইস্টিশান

ইলিক ঝিলিক ইস্টিশান

সন্ধ্যাবেলা কোথায় যান?

ওগো আমার রসিক চান

আপনার জন্য মিষ্টি পান

 

পানের সঙ্গে চুন দিমু

ভাতের সঙ্গে নুন দিমু

চাঁদনি রাতে মুন দিমু

আঁধার রাতে খুন দিমু

 

রাতে থাইকেন জাগনা

না না দাদাই, রাগ না

সবই টাটকা, দাগ না

আপনি পাবেন মাগনা

 

ইলিক ঝিলিক ইস্টিশান

সন্ধ্যাবেলা কোথায় যান?

নিশি রাইতে ঘুরতে নাই

মনের দুঃখে পুড়তে নাই

/১০/২০২০; ৮টা

 

No comments

Powered by Blogger.