প্রসঙ্গঃ আবু তাহের বেলালের সংস্কৃতি ভাবনা : আসাদ বিন হাফিজ
প্রসঙ্গঃ আবু তাহের বেলালের সংস্কৃতি ভাবনা-আসাদ বিন হাফিজ
প্রিয়
আবু তাহের বেলাল। একজন অসম্ভব গুণী মানুষ। বহু গুণের অধিকারী। তার ভেতর আছেে
ভালবাসা ভরা একটা মন। আপনার মত আমিও তার লিরিকের ভক্ত। এতসব গুণ যিনি তাকে দান
করলেন আসুন তাঁর প্রশংসা করি।
অসুন্দর
আছে বলেই সুন্দরের সাধনা করতে হয়। সুন্দরের সাধনা করতে হয় মানে সংস্কৃতির চর্চা
করতে হয়। যারা সংস্কৃতি চর্চা করে তারা মূলত অসুন্দর তাড়ায়। ফলে অসুন্দর নিয়েই
তাদের বসবাস করতে হয়।
আবু
তাহের বেলাল একজন সংস্কৃতিবান মানুষ। আর মানুষ তাকেই বলে,
যে ভুল করে। যার
ভুল করার শক্তি নাই সে হচ্ছে ফেরেশতা। আর যে ভুল থেকে বেরোতে পারেনা সে হচ্ছে শয়তান।
মানুষ হচ্ছে যে বারবার ভুল করে আর বারবার ভুল থেকে ফিরে আসে। সংস্কৃতির কাজ হচ্ছে
মানুষকে ভুল থেকে ফিরে আসার সুযোগ করে দেয়া, অসুন্দর থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করা।
মানুষকে মানুষ বানানো। তাকে আশাবাদী করে তোলা। তার মধ্যে স্বপ্ন বুনে দেয়া।
সংস্কৃতিকর্মীরা এ কাজটিই করে।
আবু
তাহের বেলাল তার সংস্কৃতি ভাবনা তুলে ধরেছেন সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্টে।
অসম্ভব সুন্দর একটি পোস্ট। সারা পোস্ট জুড়ে মাখা তার ভালবাসার সৌরভ। নবীনের জন্য
ভালবাসা, প্রবীনের জন্য ভালবাসা। শুধুই প্রশংসা। তিনি জানেন কিভাবে
কথা বলতে হয়। কিভাবে ভালবাসতে হয়, শ্রদ্ধা করতে হয়। তিনি তার লেখাটিতে কারো প্রতি বিদ্বেষ,
ক্ষোভ,
ঈর্ষা,
অবহেলা প্রদর্শন
করেননি। এটিই তার মহত্ব।
কিন্তু
সব মানুষের গ্রহণ শক্তি সমান নয়। কেউ ফুলের বাগান দেখ বলে,
সুন্দর। কেউ বলে,
বাহ অপূর্ব।
আবার কেউ কিছুই বলেনা। এই যে বাগান দেখেও কেউ কোন প্রশংসা করলোনা,
এ জন্য বাগান
দায়ী না। দায়ী হচ্ছেন যিনি দেখলেন তিনি। কারণ তিনি এর মধ্য থেকে কোন সৌন্দর্য
আবিষ্কার করতে পারেননি।
আবার
কেউ হয়তো বলবেন, এটা কোন বাগান হলো? যত্ন নাই, বেড়া ভাঙা। বাগান করেন চৌধুরী সাহেব। কি
সুন্দর পরিপাটি। বেড়ায় আবার চুনকাম করা। তিনি সুন্দরের মাঝেও অসুন্দর খুঁজে পেলেন।
কারণ তার মনের ভেতর রোগ আছে। কারো ভালো তিনি দেখতে পারেন না।
ইদানিং
আমি কোনকিছু স্পষ্ট দেখতেে পাইনা। শুধু একটা অবয়ব অনুভব করি। তবে জিনিসটি লাল না
সাদা বুঝতে পারি। এখন আমাকে দেখে আপনি মুচকি হাসলেন, চোখের তারায ফুটিয়ে তোললেন একটু আনন্দ
কিন্তু আমি কিছুই দেখলাম না। এই যে আমি আনন্দ দেখা থেকে বঞ্চিত হলাম এ জন্য আপনি
দায়ী নন, দায়ী আমি। দৃষ্টিভঙ্গির কারণে কোন ঘটনা থেকে আপনি
ভুল মেসেজও পেতে পারেন।
আবু
তাহের বেলাল ভাই বিনয় করে কখনো কখনো আমাকে বড় ভাই বলে ডাকে,
তাই মনে করলাম
কথাটা তাকে বলা যায়। না,কথাটা ঠিক তার জন্য নয়, বউয়ের ওপর রাগ করে মেয়ে পেটানোর মত।
লেখাটি
পড়ে আমার কেন যেন মনে হলো কোথাও একটু প্রচ্ছন্ন প্রত্যাশার অভাব। প্রবীণদের
ব্যস্ততা ও বয়স তাকে কিছুটা আশাহত করেছে। এ জন্য প্রবীণের দিকে সময় কম দিয়ে
নবীনদের দিকে দৃষ্টি দিতে বলেছেন তিনি।
নবীনের
দিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য কাউকে বলতে হয় না। মানুষের প্রেম আপনাতেই নবীনকে পেঁচিয়ে
ধরে। তাজা গোলাপ কে না ভালবাসে। মানুষকে বলতে হয়, ভাই, সাবধানে পা ফেলো। খেয়াল রেখো,
তোমার পা যেন
কোন গোলাপের মৃত্যুর কারণ না হয়।
নবীন
গাছে সজীব গোলাপ হবেই। কিন্তু যে গাছ এখনো মরে যায়নি সে,
যেকোন সময় ফুলে
ফুলে ভরে তুলতে পারে তার শরীর। অবহেলা না করে তার গোড়ায়ও সময়মত সার গোবর পানি দিন।
বুড়ো গাছও আপনাকে নিরাশ করবেনা। বরং তার শক্তি, দৃঢ়তা এসব আপনার প্রেরণার কারণ হতে পারে।
সফল চাষীর কাজ সব গাছকেই সজীব রাখা, যেন তিনি বেশী ফলন পেতে পারেন। আল
মাহমুদের একচক্ষু হবিণের চেয়ে যিনি তার দৃষ্টিকে যতদূর মেলে দিতে পারবেন তিনিই
অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
ইসলাম
এসেছে সমাজে ইনসাফ কায়েমের জন্য। আসুন আমরা সর্বস্তরে ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হই।
আল্লাহ সাংস্কৃতিক কর্মীদের কবুল করুন। যোগ্যতা দক্ষতা বাড়িয়ে দিন। সুস্থ
সংস্কৃতির সয়লাবে ভেসে যাক সব আবিলতা। নবীদের হাত ধরে সুখের সূর্য উঠুক।
No comments