আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২২০১-২৩০০

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০১

আগে যারা মানুষ ছিল

এখন তারা কই?

এখন তারা জঙ্গী সেনা,

অস্ত্র কোরান বই।

 

পিস্তল এবং রামদা নিয়ে

ছেলেরা যায় কেলাশে

যুবতীদের সঙ্গে করে

রঙ্গরসের খেলা সে।

 

আর কতটা উন্নতি চাস

আর কি লাগবে তোর?

জমাটবাঁধা আঁধার যখন

ভাববি এখন ভোর।

 

মাদ্রাসাতে সুপার হবে

সাধু এবং পন্ডিতে

ইমাম সাবে মসজিদে নয়

থাকবে পূঁজার গন্ডিতে।

 

জানাযাতে ইমাম হবে

পাড়ার বড় বামুনে

শুঁয়োর গোস্ত মিলেমিশে

আমরা সবে খামুনে।

 

উন্নয়নে ভাসবে দেশ

মিথ্যা পাপের দরিয়ায়

আপন ঈমান আমল রেখে

পাপের বস্তা ভরি আয়।

/১২/২০১৯;  ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০২

নবীর শানে মিছিল করলে

গুলি করে যারা

দাদা, দাদা

কেমন মুসলিম তারা?

 

আল কোরানের মাহফিল হবে

শুনলে যাদের জ্বলে

তাদের বলো মুসলিম বলবো

কোন উসিলার বলে?

 

নবীর ওয়ারিশ ধরে ধরে

যারা তাদের মারে

দাদা, দাদা!

কয় মাথা তার ঘাড়ে?

 

ফাঁসী দিয়া হাসি দাও

তুমি রাশি রাশি

এসব কথা কেমনে ভুলবে

কওতো জগৎবাসী?

 

ইসলামটাকে নির্মূল করে

মুসলিম তোমরা বাঁচো

দাদা, দাদা

হিসাব করে বলো দেখি

মুসলিম আজো আছো?

/১২/২০১৯; রাত ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৩

আমিও দাদা মুসলমান

যদিও করি মদ্য পান।

আপনিও কি পাড়ায় যান?

আমিও দাদা যাই

যখন আমি আকাম করি

তখন নেশা খাই।

 

আপনি রোজই মসজিদে যান

আমি কিন্তু যাই না

আমি কিন্তু আপনার মত

ঘুষ প্রতিদিন খাই না।

 

আপনি হলেন হাজী সাহেব

হজ্জ করিনি আমি

আপনি মারেন মুসল্লি ফান্ড

আমি বহুগামী।

 

আমিও হুজুর মুসলমান

ঠেক দেই পেটের দায়ে

আপনি হুজুর ভালই আছেন

ঘুরেন পরের নায়ে।

 

কতো কতো মুরিদ আপনার

কতো কি দেয় খুশিতে

আমাকে তো কামাতে হয়

ছুরি মেরে, ঘুষিতে।

 

আল্লাহ খোদার ভয় দেখিয়ে

আপনি টাকা হাতান

আপনার হুজুর পাপ হয় না

নজর নিয়াজ যা খান।

 

আপনি যদি মুসলিম থাকেন

এতীমের হক মেরে

হাইজাকারও মুসলিম থাকে

পরের টাকা কেড়ে।

 

কাকা,

হিসাবটা কি পাকা?

/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৪

সবাই নাকি বসে থাকে, কবি কবে মরবে

কবি মরলে তার জন্য কত কিছুই করবে।

নানা রকম কমিটি হবে, প্রস্তাব হবে পাশ

জাতীয় শোকসভা হবে, কবি হলে লাশ।

 

পত্রিকাতে ফিচার হবে, থাকবে নিজের ছবিও

লোকে যেনো জানতে পারে, চিনতো তারে কবিও।

জন্ম মৃত্যু দিবস এলে ফুল দেবে কেউ কবরে

সময়টাও জানতে পারবে রেডিও টিভির খবরে।

 

তার পরিবার অসুস্থ, কষ্টে আছে, থাকুক না

তার সন্তানরা পেঁকে গেছে, আরো একটু পাকুক ন।

আপনি যখন কবি হোন, মরতে তবে বাঁধা নাই

কবি ছাড়া ভুবনে আর তো কোন গাধা নাই।

 

কবি যদি মরতো তবে রচনাবলীও ছাপতাম

প্রকাশনা উৎসব করে মঞ্চে উঠে কাঁপতাম।

বলতাম, কবি নজরুল ছিল আসানসোলে হোটেলবয়

আপনিই বলুন, হোটেলবয়ের খবর দেশে কজন লয়?

 

ফররুখ আহমদ মারা গেছে, ছিল দারুণ অভাবে

সবাই বলে, নবাবজাদা ছিলেন নাকি স্বভাবে।

মল্লিক জানতো, রচনাবলী, সে জীবনে লেখে নাই।

ফররুখ আহমদ মারা গেল, সমগ্র সেও দেখে নাই।

 

গোলাম মোহাম্মদ কবি হলো নিজে মরার পর

এতো বড়ো কবি যে সে, জানতো না নিজ ঘর।

আপনি যখন জানতে চান, কেমন আছেন কবি?

তার মানে কি, আপনি মরেন, টানাই আপনার ছবি?

 

আপনি মরলে তুলতে পারি, আরো কিছু চান্দা

কেউ হয়তো এমনতরো, করতে পারেন ধান্ধা।

যদি হতাম খেলোয়াড়, বেতন পেতাম মাসে

কবির কোন বেতন নাই, সবাই ভালবাসে।

/১২/২০১৯; রাত ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৫

হকার যদি বেকার হয়

ক্ষতি কি তার একার হয়?

কূহু এবং কেকার হয়

কেরানীরা মেকার হয়।

 

মধ্যবিত্ত গরীবে

তাহারা কি করিবে?

বাঁচবে নাকি মরিবে?

খালি পেটে লড়িব।

 

তাইতো লড়াই হয় না

কেউতো কিছু কয় না

সরকার বানায় গয়না

কান্দে বসে ময়না।

 

কেন্দে কোনো লাভ নেই

কাঁঠাল গাছে গাব নেই।

মাটির তলে ডাব নেই

তোর সাথে আর ভাব নেই।

/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৬

আসেন আসেন ইসলাম করি

ঘরে ঘরে মাজার গড়ি

সিগারেটে গাঁজা ভরি

তারপর মারি টান

এক টানেতে খাজা বাবার

দরবার চলে যান।

 

জিকির করেন জিকির করেন

তালে তালে নড়েন চড়েন

সুরে সুরে জিকির ধরেন

আল্লাহু আল্লাহু

আল্লাহু আল্লাহু

ঘাইমা গেছেন? জামা খুলেন

জামা দিয়া বাতাস করেন

আল্লাহু আল্লাহু

আল্লাহু আল্লাহু।

 

ফানাফিল্লাহ হইয়া যান

আর কী লাগবো কইয়া যান

খাঁড়াই কেন, বইয়া যান

আল্লাহু আল্লাহু

আল্লাহু আল্লাহু

কারা কারা চইলা যান

তাবারকটা লইয়া যান

ধাক্কাগুতা সইয়া যান

আল্লাহু আল্লাহু

আল্লাহু আল্লাহু।

আগে লইবেন বাবার নাম

পূরণ হইবে মনস্কাম।

 

ইসলাম ধরি ইসলাম খাই

সহজ রাস্তায় মাল কামাই।

/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৭

ধরায় যখন আঁধার আসে

আকাশে চাঁদ হাসে

লক্ষ তারার ঝিলিমিলি

নিকষ আঁধার নাশে।

 

পৃথিবীর জোনাক পোকা

তোমায় ভালবাসে

আঁধারটাকে তাড়িয়ে দিতে

সেও তো ছুটে আসে।

 

যার যতটা সাধ্য আছে

আঁধার করে দূর

মনের আঁধার দূর করতে

লাগে হেরার নূর।

 

আল কোরানের মা'ফিল থেকে

নূর মেখে নাও অঙ্গে

বিপদ বাঁধা যতোই আসুক

কোরান রাখো সঙ্গে।

 

কোরান কারো বাপের না

কিম্বা দুষ্ট সাপের না

কোরান কোন দলের না

কিম্বা কোন খলের না।

 

কোরান সারা বিশ্বের

গরীব এবং নিঃস্বের।

/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৮

আমি কবি, নবী না

নজরুল কিম্বা রবি না

দুর্লভ কোন ছবি না

বড় লোকের হবি না।

 

আমি দাদা মালি

মালা বানাই খালি।

শব্দগুলো জব্দ করে

গড়ি মালা রোজ

রাখেন কি তার খোঁজ?

 

শব্দে শব্দ জোড়া দেই

ময়না এলে তোড়া দেই।

তোড়ায় ফুলের গন্ধ

যখন থাকে ছন্দ।

 

আপনি যদি নিতে চান

ঝগড়া রেখে হীতে চান।

/১২/২০১৯; রাত ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২০৯

কোরান মাহফিল বন্ধ কইরা

কোন মুখে কয় মুসলমান?

কোন মুখে কয় মুসলমান?

না না ওরা মুসলিম নয়

ওরা সবাই নাফরমান

ওরা যে শয়তান।

 

তারা যদি মুসলিম হইতো

তবে কিরে বাঁধা দিতো?

তবে কিরে বাঁধা দিতো?

তাফসিরুল কোরআন।

ওরা সবাই নাফরমান

ওরা যে শয়তান।

 

জুয়া চলে, হাউজি চলে

চলে যাত্রা পালা

কোরান মাহফিল করলে শুধু

বাড়ে ওদের জ্বালা।

ওরাই আবার দাবী করে

ওরা মুসলমান

না না ওরা মুসলিম নয়

ওরা সবাই নাফরমান

ওরা যে শয়তান।

/১২/২০১৯; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১০

আমার গাঁয়ের মত আহা

গ্রাম কি কোথাও আছে

বিল পুকুর ভরা থাকে

চিত্ত ভরা মাছে।

 

গোয়াল ভরা ধেনু থাকে

মাঠে সবুজ ঘাস

তারই পাশে কুঁড়েঘরে

আমরা করি বাস।

কোকিল ময়না গান গেয়ে যায়

মোদের চারি পাশে।

 

লাউয়ের ডগা তাকিয়ে থাকে

বাড়ির কাছে শিয়াল ডাকে

সন্ধ্যা হলে হাস্নাহেনার

সুবাস ভেসে আসে।

 

ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা সুর

লাগে আহা কি যে মধুর

অরুপ রূপের দেশটা আমার

মুগ্ধ চোখে ভাসে।

/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১১

তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে

সোনাদীঘির ঘাট পেরিয়ে

নূপুর পরে পায়

কে আসে গাঁয়?

 

কেন আসে, কে যে আসে

ছাপ রেখে যায় দুর্বাঘাসে

আড়চোখে সে চায়

কে আসে গাঁয়?

 

আসছে ওরে জ্বীনের রানী

বলছে ওরে শোন কাহিনী

স্বৈরাচারের রাজা

পাবে উচিত সাজা।

 

ভাল মানুষ আছো যারা

জেলজুলুমে বাঁচো যারা

নাইরে তাদের ভয়

হবে তাদের জয়।

 

বাঁচলে গাজী মরলে শহীদ

এবার হবে তাদেরই জিত

জ্বীনের রানী কয়--

তাদের কিসের ভয়?

 

তারাই হবে জাহান জয়ী

হোক না লড়াই রক্তক্ষয়ী

জাগবে ঘুমের পাড়া

জিতবে শুধু তারা।

/১২/২০১৯; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১২

নবাব মিয়ার স্বভাব খারাপ

অভাব তাহার যায় না

আগে করতো ধারকর্জ,

এখন ধারও পায় না।

 

মাসের পর মাস বাকি থাকে

দারোয়ানের মায়না

চুপিচুপি একদিন নবাব

পালিয়ে গেলো চায়না।

 

সে দেশে ভাই বেঁটে মানুষ,

তিনবেলা কেউ খায় না

চেংচুং করে কি যে বলে,

বাংলা গান কেউ গায় না।

 

বার বার দেখে চেহারা তার,

হাতে নিয়ে  আয়না

মাসে একদিন গোসল করে,

এর বেশী কেউ নায় না।

 

কাজ ছাড়া কেউ সেই দেশে,

বাঁচার উপায় পায় না

নিজে খাটে ভীষণ রকম,

হাত পেতে কেউ চায় না।

 

বুঝলো নবাব এটাই নিয়ম,

কাজই আনে মায়না

দেখলো সবাই ব্যাঙ সাপ খায়,

নবাব ওসব খায় না।

 

একদিন তাই কষ্টে নবাব

পালায় ছেড়ে চায়না।

বলে, মামু আর যাই হোক,

নবাব হারাম খায় না।

/১২/২০১৯; ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৩

ক্যান যে খোদা বুদ্ধি দিলা

চক্ষু দিলা দেখতে

মনের সাথে বিবেক দিলা

ভালোমন্দ লেখতে।

 

বললাম, দাদা ভালো হও

কেউতো ভালো হয় না

দিনে দিনে পাপই বাড়ে

এসব যে আর সয় না।

 

সমাজ এতো খারাপ কেনো

যতোই বলি ভালো হও

ততোই দেখি পাপের বোঝা

চুপিচুপি কাঁধে লও।

 

নবী দিলো, কোরান দিলো

সব কি গেলো ফাও

তোমরা কি সব মিছিল করে

নরক যেতে চাও?

 

জাহান্নামের কষ্টটা কি

পারবে সবে সইতে?

যেসব কথা লেখা আছে

ধর্মীয় সব বইতে?

 

নাকি ভাবো ধর্মের কথা

সবই হলো ভুল?

কত কিছু ভাবনা আসে

পাই না ভেবে কূল।

/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৪

টু-লেট

দুর্বাঘাসে

বিজয় হাসে

রক্তে ভাসে

দেশ

জোয়ান পোলা

সেই যে গেল

আজও

নিরুদ্দেশ।

 

তোমরা করো

বিজয় বিজয়

আমার বিজয়

কই

আমি কি আজ

পুত্রহারা

মা জননী

নই?

 

পুত্র গেল

স্বামী গেল

তুমি বানাও

টাকা

একাত্তুরে

রক্ত দেয়া

সবই গেল

ফাঁকা?

 

লাউ বিক্রির

টাকা দিয়ে

তুমি কেনো

বুলেট

স্বাধীনতার

ঘরে দেখি

আজকে লেখা

টু-লেট?

/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৫

সব ফরজ কি হচ্ছে পালন?

ঠিকমত তার খবর নাও

আগে করো ফরজ পালন

তারপর সুন্নত মিষ্টি খাও।

 

হারাম কি সব বর্জন করলে?

হালাল সবই মানো?

তবে তুমি নফল নিয়ে

যত ইচ্ছা টানো।

 

ফরজের নাই খবর তোমার

হালাল হারাম মানো না

খুবতো তুমি জিকির করো

ফরজ ওয়াজিব জানো না।

 

ইসলাম করো, মুসলিম তুমি

জিহাদ কি তা জানো না

ইচ্ছেমত ইসলাম বানাও

কোরান হাদিস মানো না।

 

ধর্ম নিয়া ব্যবসা করো

ধর্ম বেঁচে খাও

ভন্ডামীরও সীমা থাকে,

তোমার কি নাই তাও?

/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৬

মাজারগুলো রাজার হালে

রাখো যারা আরামে

জেনে রাখো তারা সবাই

ডুবে আছো হারামে।

 

ধর্মের নামে বানাও মাজার

তাতে আসর বসাও গাঁজার

নবী কি গাঁজা খাইতো?

নাকি মাজার যাইতো?

 

লেংটা থাকলে দরবেশ হয়

কোন কিতাবে এসব কয়?

গোসলাদির নাম নাই

পবিত্রতার কাম নাই।

 

যারা যায়রে মাজারে

হোক না লক্ষ, হাজারে

মরবে যেদিন পাবে তারা

সেদিন উচিত সাজা রে।

 

তাই মাজারে যেতে নেই

ভন্ডের ধোঁকা খেতে নেই।

/১২/২০১৯; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৭

যা কওয়ার তা কইয়া যান

যা লওয়ার তা লইয়া যান

যা সওয়ার তা সইয়া যান

মনে শান্তি পাইবেন।

আরো কিছু মন চাইলে

সাহস করে চাইবেন।

 

আলুভর্তা খাইতে চাইলে

আলুভর্তা খাইবেন

শীতে গোসল করতে চাইলে

পুকুর জলে নাইবেন।

 

গুনগুনিয়ে আপন মনে

ইচ্ছে হলে গাইবেন

শ্বশুরবাড়ি যেতে হলে

পায়ে হেঁটে যাইবেন।

 

রাজনীতিতে আসবেন কিনা

একটুখানি ভাইবেন

বলা যায় না কখন আবার

জেলখানাতে যাইবেন।

/১২/২০১৯; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৮

গণতন্ত্র বন্দী এখন

স্বৈরতন্ত্রের জেলে।

গণতন্ত্র বিদেশ থাকে

মাকে একা ফেলে।

 

গণতন্ত্রের নামে কে রে

মুখোশ পরে আসে

গণতন্ত্রের নাম ভাঙিয়ে

হেলমেট পরে হাসে।

 

স্বৈরতন্ত্রের রানী সাজে

গণতন্ত্রের মাতা

রাতদুপুরে মাথায় ধরে

গণতন্ত্রের ছাতা।

 

সবুজ দেশের অবুঝ মেয়ে

গণতন্ত্র দেখে নাই

এদের ভাগ্যে ভগবান কি

গণতন্ত্র লেখে নাই?

 

গণতন্ত্র ডান্ডা হাতে

হাতির আন্ডা খায়

গণতন্ত্র প্রেমের টানে

পাশের বাড়ি যায়।

 

গণতন্ত্র সকাল বিকাল

জঙ্গী ধরে বান্ধে

গণতন্ত্রের জ্বালায় এখন

গণতন্ত্র কান্দে।

 

গণতন্ত্রের সংজ্ঞা এখন

পাল্টে গেছে ভাই

গণতন্ত্র এখন তো আর

জনগণের নাই।

 

গণতন্ত্রের মুখোশ পরে

স্বৈরতন্ত্র হাঁটে

গণতন্ত্র এখন থাকে

ভোট ডাকাতের খাটে।

 

আয়রে আমার গণতন্ত্র

আয়রে ছুটে আয়

জেলখানাতে আজো বন্দী

গণতন্ত্রের মায়।

/১২/২০১৯; রাত ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২১৯

আজ্ঞে

মানুষ শুধু সেটুক পায়

যা আছে তার ভাগ্যে।

 

চাওয়ার কোন শেষ নাই

কারো মাথায় কেশ নাই

কারো নিজের দেশ নাই

বাঁচার পরিবেশ নাই।

তবু।

 

তবু

হায়াত থাকলে বাঁচতে হয়

ভাগ্যে থাকলে নাচতে হয়।

কারো কাপড় কাচতে হয়

হাঁচি আসলে হাঁচতে হয়।

 

যা চায় মানুষ, পায় না

যা পায় সবই খায় না

সবাই তো গান গায় না

সেটুক শুধু পায়

যেটুক খোদা চায়।

 

ভাগ্যটাকে মানতে হয়

কত কিছু জানতে হয়

পরের বোঝা টানতে হয়

ভাগ্যে থাকলে আনতে হয়।

কারণ।

 

কারণ

ভাগ্যের খানা খাইতে হয়

শ্বশুর বাড়ি যাইতে হয়

ঠান্ডা জলে নাইতে হয়

কষ্ট থাকলে পাইতে হয়।

শুধু।

 

শুধু

ভাগ্যের অধিক চাইতে নাই

ব্যথার জলে নাইতে নাই।

যা ঘটার তা ঘটবে

যা হটার তা হটবে।

 

ভাগ্যটাকে মেনে নাও

যদি মনে শান্তি চাও।

/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২০

কোরআন হলো খোদার বানী

হাদীস বানী নবীর

তোমায় আমি বলি নাতো

কথা মানো কবির।

 

কোরআন হাদীস মানো যদি

মুসলিম তুমি হও

নইলে তুমি মুসলিম কিনা

তুমি নিজেই কও?

 

যে মানে না কোরআন হাদীস

মুসলিম কে কয় তারে?

কোরআন হাদীস না মেনে কেউ

মুসলিম হতে পারে?

 

যে মানে না খোদার হুকুম

তারে বলে নাফরমান

তুমি এবার ভেবে বলো

নাফরমান, না মুসলমান?

১০/১২/২০১৯; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২১

ভাইরে।

বলার কিছু নাইরে।

 

আগে দেশে মানুষ ছিল

এখন তেমন নাইরে।

আমরা এখন মানুষ রেখে

দলের গান গাইরে।

ভাইরে।

 

কেউ বিএনপি, কেউবা লীগ

কেউ লিলিপুট, কেউবা বিগ।

কেউ জামাত, কেউ চর্মনাই

বাকিরা কেউ ঘরজামাই

তাইতো দেশে মানুষ নাই।

মানুষ কোথা পাইরে

ভাইরে।

 

মানুষ নাই তাই দেশে এখন

মানবাধিকার নাইরে

আমরা সবাই সকাল বিকাল

লীগাধিকার খাইরে।

কত মজা পাইরে।

তাইরে নাইরে নাইরে

দলাধিকার চাইরে

ভাইরে।

 

কলাগগাছে কলা ফলে

মজা করে খাইরে

রাজার ঘরে রাজা ফলে

তার জয়গান গাইরে।

তাইরে নাইরে নাইরে

ভাইরে।

১১/১২/২০১৯; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২২

ভোরে

মিলের সাথে বিলও মিলে, মিলের সাথে চিল

ইচ্ছে হলে মিলের সাথে দিতেই পারো কিল।

আলু ক্ষেতে খালু যায়

খালু চরের বালু খায়

মিলি হেসে বলবে ওরে, বল না লিলি চলবে?

এসব কথা শুনে লোকে বলনা কিসব বলবে?

 

পানির তলে নানীজান

ডুব দিয়ে কি পানি খান

এইযে দেখিস বরফ পাহাড়, কার ইশারায় গলবে

কার ইশারায় উতল হাওয়া আপন মনে চলবে?

 

কার হুকুমে সূর্যিমামা হামা দিয়ে আসবে

কার হুকুমে ফুলকলিরা চক্ষু খুলে হাসবে।

কার হুকুমে প্রজাপতি জুড়বে মজার খেলা

কার হুকুমে উড়বে তখন রঙিন মেঘের ভেলা?

 

সেই ভোরে কি একা একা নানা পথে নামবে

চৌরাস্তার মোড়ে গিয়ে একটুখানি থামবে।

পথে পথে সালাম দেবে, হাঁটবে জোরে জোরে

বাড়ি এসে বলবে দাদু, কোরান পড়ো ভোরে।

১২/১২/২০১৯; রাত ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৩

খেতে নেই তবু লোকে, কত কিছু খায়

জানে না কখন কে, কোন বাঁশ খায়।

খেতে নেই তবু কেউ, ট্রাক চাপা খায়

কেউ কেউ সকালে হাওয়া খেতে যায়।

 

খাওয়ার জিনিস নয়, তবু লোকে খায়

কেউ খায় দায়ে পড়ে, কেউ খেতে চায়।

খেতে নেই গোল তবু, খেলোয়াড় খায়

আদরের চিমটিটা, কেউ খেতে চায়।

 

ছাত্ররা মার খায়, কেউ খায় কিল

পুলিশেরা ঠেকে খায় জনতার ঢিল।

রমানাথ গালি খায়, কেউ খায় গুলি

ছবি আঁকা নাম করে কেউ খায় তুলি।

 

হজমলা রেখে কেউ কান মলা খায়

কেউ কেউ গোপনে চোখটিপি খায়।

সবকিছু খেতে নেই, তবু লোকে খায়

কেউ কেউ মার খেয়ে পরপারে যায়।

১২/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৪

ওগো রঙিন প্রজাপতি

কোথায় পেলে রঙিন পাখা

চির চঞ্চলা গতি

ওগো প্রজাপতি।

 

তুমি ঘুরো ফুলে ফুলে

ময়ূর ঘোরে পেখম তুলে

ডাকলে মেঘলামতি

মানুষ কাটায় ভুলে জীবন

জেনেও পরিনতি।

ওগো প্রজাপতি।

 

আকাশ বাতাস সাগর নদী

যাঁর নাম গায় নিরবধি

বনবনানী পশু পাখি

সবাই যাঁরে চায়

তাঁর ইশারায় জীবন কাটায়

পাহাড়, প্রজাপতি।

তিনিই মহামতি।

ওগো প্রজাপতি।

 

সৃষ্টি জগত তারেই ডাকে

ভুবন ডাকে আল্লাহপাকে

ওগো জগতপতি

কেউ ভুলে না, শুধু ভুলে

অধম মানবজাতি।

ওগো প্রজাপতি

বলোতো কে গড়তে পারে

একটি প্রজাপতি।

ওগো প্রজাপতি।

১২/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৫

তোমার দানের নাই সীমা নাই

তাইতো প্রভু তোমার গুণ গাই

আমার বাঁচা আমার মরা

সবই তোমার জন্য

ধন্য আমি ধন্য

ওগো ধন্য আমি ধন্য।

 

যাঁর উছিলায় বেঁচে আছি

যাঁরটা আজো খাই।

যাঁর রহমের কূল কিনারা

ত্রিভুবনে নাই।

তাঁরই গুণগান গাইরে আমি

তাঁর গুণগান গাই।

আমার বাঁচা আমার মরা

সবই তাঁরই জন্য

ধন্য আমি ধন্য

ওগো ধন্য আমি ধন্য।

 

পাহাড় নদী সাগর আকাশ

বনবনানী উতল বাতাস

সবই যাহার দান

আমার সুখের জন্য এসব

পাঠান মহীয়ান।

তাঁরই গুণগান গাইরে আমি

তাঁর গুণগান গাই।

আমার বাঁচা আমার মরা

সবই তাঁরই জন্য

ধন্য আমি ধন্য

ওগো ধন্য আমি ধন্য।

 

তোমার দানের নাই সীমা নাই

তাইতো প্রভু তোমার গুণ গাই

আমার বাঁচা আমার মরা

সবই তোমার জন্য

ধন্য আমি ধন্য

ওগো ধন্য আমি ধন্য।

১২/১২/২০১৯; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৬

দেশতো চালায় আমলা

পাবলিকরা সব কামলা।

কেউ যদি কয় ফোঁস

তখন বাড়ে রোষ।

 

তখন চলবে মামলা

পারলে ঠেলা সামলা।

যদি না হোস কাত

দেখবি আঁধার রাত।

 

চলবে তখন হামলা

রক্তে ভরবে গামলা

বুলেট গড়বে দেশ

সুন্দর বাংলাদেশ।

 

এই ফর্মুলা অনন্য

লোকে বলে, আহ ধন্য।

যে কয় এরে জঘন্য

বান্দা সে যে নগন্য।

১৩/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৭

জঙ্গী কইয়া আলেম ধরলাম

যেনো ওরা শান্তি পায়

সবাই খায় কামাই কইরা

তারা যেনো মাগনা খায়।

 

কুঁড়েঘরের হুজুরগুলো

দালান ঘরে থাকে

কাজকর্ম নাই সারাদিন

বসে আল্লাহ ডাকে।

 

শ্বশুরবাড়ির আদরযত্ন

সবই তারা পায়

কী চমৎকার ডান্ডাবেড়ী

জেওর পরে পা'য়।

 

শীতে গরম কম্বল ওরা

একাই তিনটা পায়

শোকর কি নাই হুজুরগুলোর

আর কি ওরা চায়?

 

চোর ডাকাতের ভয় নাই ওদের

আরামে দেয় ঘুম

দখিন হাওয়া আলতো এসে

আঁকে গায়ে চুম।

 

আমার মনে শান্তি নাই

ভয়ে কাটে রাত

তিরিশ জনে চেখে দেখে

বিষমাখা কি ভাত?

 

রাজা মরে বিষে নয়তো

আপনজনের হাতে

রাজা মরে গুলি খেয়ে

নয়তো অপঘাতে।

 

কেউবা মরে জলে ডুবে

মশার দংশন খেয়ে

কেউ বাঁচে না, রাজা রানী

রাজার ছেলে মেয়ে।

১৫/১২/২০১৯; রাত ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৮

কথাতে কি মাথা ফাটে?

মাথায় বাড়ি দিতে হয়।

ঝগড়াঝাটি কবে শোনছো

ঠান্ডা মাথায় হীতে হয়?

 

ভদ্রলোকের কাম কি দেশে

ভদ্রতা কি খাওয়া যায়?

সাহস নিয়ে ঠেক দিলে ভাই

দুটো টাকা পাওয়া যায়।

 

মেয়ের জন্য বর কি খোঁজ?

জামাই খোঁজ পুলিশে

নয়তো খোঁজ তাগড়া পোলা

হোক না ঘাটের কুলি সে।

 

শীতের দিনে এসির চেয়ে

কম্বল খোঁজে বুদ্ধিমান

ঝগড়া লাগলে ইমামসাব না

খুঁজতে হয় কে শক্তিমান।

১৫/১২/২০১৯; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২২৯

আগের দিনে দেশ চালাতো

জ্ঞানী, গুণী, বুদ্ধিমান

এখন নাকি চালায় দেশ

যারা বেশী সিদ্ধি খান।

 

দেশ দুনিয়া তার

জোর আছে ভাই যার।

হোক না তিনি ঈমানদার

হোক না তিনি স্বৈরাচার।

 

নীতিকথার কাম নাই

ভালো লোকের দাম নাই।

 

ভোট ডাকাতির ডাকাতদল

করলে কায়েম সরকার

নাচবে তখন মস্ত চোরা

এইতো তাদের দরকার।

 

তারা করবে শেয়ার মার্কেট

ব্যাংকের ভোল্টে চুরি

চোর ডাকাতে মিলেমিশে

বাড়াবে নিজ ভুঁড়ি।

 

শোনেন সোনার বাংলাদেশ

চোর ডাকাতে করবে শেষ।

১৫/১২/২০১৯; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩০

একাত্তুরের ষোল

কেমনে এদিন ভোল।

চিন্তা করে দেখোতো ভাই

কে ছিল কার কোল?

 

কে কে ছিল পিন্ডিতে আর

কে কে ছিল দিল্লী

বিজয়ের সে শুভলগ্নে

কে কার সাথে মিললি।

 

মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক

ভাল কে তারে বাসে নাই।

মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি

রেসকোর্সে ক্যান আসে নাই।

 

বিজয়ের খুশীর দিনে

মনে পড়ে তারে

মনে পড়ে তাদের যারা

লড়লো বারে বারে।

১৬/১২/২০১৯;১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩১

বিজয় আসে বিজয় যায়

ছেলের জন্য কান্দে মায়।

ভাইয়ের জন্য বোন কান্দে

গিন্নী বসে শোক রান্ধে।

 

এতটা দিন পার হইলো

হয়নি শহীদ তালিকা

মায়ের দুঃখ মায় বুঝে

কেমনে বুঝবো বালিকা।

 

যাদের রক্তে স্বাধীন দেশ

তার তালিকার খবর নাই

বাংলা মায়ের বর্ণমালার

আজো জের জবর নাই।

 

বিজয় আসে বিজয় যায়

স্মৃতিসৌধে ফুল গড়ায়।

আজো ঝরে মায়ের ঘাম

কোন খাতাতে ছেলের নাম?

১৬/১২/২০১৯; রাত ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩২

আমার বাবা মারা গেছে

তোমার বাবা মরে নাই

তোমার বাবার ছবি ঘরে

আমার বাবার ছবি নাই।

 

বাবা চাচা কে কে শহীদ

তারতো কোন লিষ্টি নাই

তারা এখন চান্দের মেহমান

তাদের কোন ইস্টি নাই।

 

কোন জেলাতে কে কে মরছে

কোন বাড়ির কে শহীদ হইছে

কে বলো তার খবর নেয়

বড় বড় নেতা এখন

স্মৃতিসৌধে পুষ্প দেয়।

 

বাবার রক্তে দেশ হইছে

তুমি বলো বেশ হইছে

শহীদসেনা তিরিশ লাখ

তাদের খবর গোপন থাক।

১৬/১২/২০১৯; ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৩

বাংলাদেশে সবই আজব

আজবের তো অন্ত নাই

রাজাকারের লিস্টি আছ

শহীদ সেনার লিস্টি নাই।

 

মুক্তিযোদ্ধা ফান্দে পড়ে

শহীদেরা চান্দে যায়

গরুতে খায় টেংরা পুটি

তেলাপোকা ইলিশ খায়।

 

স্বাধীন দেশে রাজাকার নয়

প্রথম বন্দী মুক্তি হয়

মেজর জলিল যুদ্ধ করে

জেলখানাতে বন্দী রয়।

 

মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তো খায়

রাজাকারের বাপে

মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করে

যুদ্ধ করার পাপে।

 

স্বাধীনতার ঘোষকের বউ

জেলখানাতে বন্দী রয়

যে দেখে নাই রণাঙ্গন সে

স্বাধীন দেশের নেতা হয়।

 

আজব দেশের আজব বাত

দেশমাতা খায় জেলের ভাত।

১৬/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৪

দাদা আমার ভাল্লাগে না কোনকিছু পড়তে

ভাল্লাগে  না সময়মত সময়ের কাজ করতে।

মন চায় আমার ঘুরতে

পাখির মত উড়তে

মন চায় শুধু মামার নয়া সাইকেলে রোজ চড়তে।

 

ক্যান যে আসে পরীক্ষা মা, তার কি কোন কাম নাই

সবার ইচ্ছার দাম আছে, আমার ইচ্ছার দাম নাই?

পড়ার সাথে লিখতে হয়

কতকিছু শিখতে হয়

এসব শিখে কী হয় মা, শিখার কোন কাম নাই।

 

ছি ছি, এসব কয় না সোনা, মন দিয়ে সব পড়তে হয়

সময়মত সময়ের কাজ মন দিয়ে বাপ করতে হয়।

তবেই জীবন সফল হয়

সবই ফরজ, নফল নয়

সারা জীবন বীরেরমত সাহস নিয়ে লড়তে হয়।

১৬/১২/২০১৯; রাত ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৫

মিঠা মিঠা কথা বললে, মনতো ঠিকই গলবে

আগে যেমন চলতো দাদা, তেমনি এদেশ চলবে।

 

সূর্য উঠলে বরফ পাহাড়

আবারও তো গলবে

মৌসুম এলে গাছে গাছে

আবারও ফল ফলবে।

 

রাজায় প্রজা দলবে

বোবায় কথা বলবে

জুলুম সওয়া প্রজার মনে আবার আগুন জ্বলবে।

 

আবার বাতাস বইবে

আবার সকাল হইবে

পাখপাখালির কলতানে দেশটা মুখর রইবে।

 

পাখিরা গান গাইবে

ইস্টিকুটুম আইবে

নতুন ধানের পিঠা মামা মজা করে খাইবে।

১৬/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৬

আলুগীতি

আলু খায় কালু মিয়া

তালি দেয় লালু মিয়া

ফালু কয় খা

আলু কেনার টাকা কালু

আমি দিমু যা।

 

কালু মিয়া হেসে কয়

আলু ভালোবেসে কয়

আলু খেতে মানা নেই

এর গুণ কি জানা নেই

যত পারিস আনা

আমি কালু বাপের বেটা

নইরে কিপ্টার নানা।

 

আমি কোন মালু না

কারো বাপের খালু না

মৃধা বাড়ির জালু না

যতই ভাবিস, বোকা না

আলুর সাথে খাবো, ফালু

একটুখানি কোক আনা।

 

কথা সত্য, ধোকা না

কালু মিয়া খোকা না

যত আলু পায়

বসে বসে খায়।

সারাদিনই গুনগুনিয়ে

আলুগীতি গায়।

 

কালু মিয়া আলু খায়

খবর গাঁয়ে রটে যায়

ছেলে ছোকরা হটে যায়

ভানুমতি পটে যায়।

বলে, কালু দাদা

এবার থেকে চান্দা চাইলে

দেবো আলু চাঁদা।

 

কালু বলে, ভানু

আলুগীতি শিখেছিল

শেখ পাড়ার রানু।

যেই দেশে ন্যায়নীতি

কোনকিছু নাই

সেই দেশে আয় সবে

গোল আলু খাই

আলু খেয়ে সকলেই

আলুগীতি গাই।

১৭/১২/২০১৯; ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৭

বাংলাবাজার বইয়ের হাট

তার পশেই তো সদরঘাট।

তার সামনে ইসলামপুর

জগন্নাথটা অল্প দূর।

 

কত শত অলিগলি

নিমতলী কসাইটুলি

ঢালকানগর, সুত্রাপুর

গুলিস্তানটা অনেক দূর।

 

গিয়ে দেখ গুলিস্তান

সেখানে আজ কোন বাগান।

চকবাজারে অনেক ভীড়

এখানে থাকে মুক্তাদির।

যাও যদি ভাই লালবাগে

চিত্ত জ্বলবে তাল রাগে।

 

তারচে চলো আজিমপুর

শুনতে পাবে করুণ সুর।

১৭/১২/২০১৯; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৮

কাঁঠাল গাছে যাচ্ছে পাওয়া

পাকা পাকা আম

রাজাকারের তালিকাতে

মুক্তিযোদ্ধার নাম।

 

হায় হরিরাম হায়

ভানুমতি খেলতে খেলতে

কোন বাগানে যায়।

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নাকি

রাজাকারে খায়।

 

বিশ্বজিতও মারা যায়

শিবির নেতা হইয়া

যারে ইচ্ছা তারে মারো

শুধু শিবির কইয়া।

 

খুন হত্যা দোষের কি ভাই

এটা বীরের কাম

যে পারো ভাই সেইতো পাবে

একটা করে খাম।

 

রাজাকার কই ধরে ধরে

মুক্তিযোদ্ধা মারো

মুক্তিযোদ্ধা তোমরা পারলে

রাজাকারও মারো।

 

খুনাখুনি চলুক দেশে

রক্তে ভাসুক দেশ

আহা আহা উন্নয়নের

এইতো বাংলাদেশ।

১৭/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৩৯

জলবায়ুর দূষণে

ভাষণে আর ভূষণে

বিশ্বসেরা বাংলাদেশ

উন্নয়নের নাইরে শেষ।

 

উন্নয়নের নাইরে শেষ

বিশ্বসেরা বাংলাদেশ

আমরা সেরা ধর্ষণে

এবং গযব বর্ষণে।

 

সত্যরে কই গুজব আর

গুজব করি সত্য

আজকে যেজন শেখের বেটা

কালকে সে হয় দত্ত।

১৭/১২/২০১৯; ০১:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪০

আমার কথা শুনবে মানুষ কোন দুখে

এমনি কি আর আছে ওরা কম সুখে?

 

রোজ সকালে সূর্য ঠিকই উঠছে

শ্বাস যে নেবে বাতাসওতো ছুটছে

ঘাসের বনে গরু ছাগল জুটছে

ফুলের বনে ফুলও রোজই ফুটছে।

 

জন্ম নিছে মানুষ যখন, মরবেই

ডাকাত নিজের দলটা বড় করবেই

বাপের বেটা থাকলে দেশে লড়বেই

কপাল মন্দ পাখি ফান্দে পড়বেই।

 

আবার নাহয় সাহস থাকলে একটু দাঁড়াও রুখে

অমানুষ যে বাড়ছে তাকাও, দেখো নিজের চোখে।

১৭/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪১

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

মধ্য রাতে জেগেই ধরেন,

কাব্য লেখার বায়না।

 

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

কাব্য লেখার জন্য তো কেউ

বেতন ভাতা পায় না।

 

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

কবিই শুধু খাইতে জানে,

তার বউ কি খায় না?

 

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করাতো যায় না

কবির মন যে কখন কি চায়

কিছুই বুঝা যায় না।

 

সকাল বেলা বাজারে যায়

ফিরে গভীর রাইতে

বলেন তখন কি তুলে দেই

কবির পাতে খাইতে?

 

কবির সাথে প্রেম করা যায়,

ঘর করা তাই যায় না

মাঝে মাঝে ভাবে পড়লে

ফিরেও কবি চায় না।

১৭/১২/২০১৯; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪২

বঙ্গবন্ধুর খুনের সময় যারা ছিল ক্ষমতায়

তারা আজো মন্ত্রী এমপি পরম আদর মমতায়।

সেই খুনীরাই ঘুরছে আজও চারপাশে

তাদের তুমি রাখছো মন্ত্রী কোন আশে?

প্রশ্নতো করতেই পারে বাঙালি বীর জনতায়।

 

নিরাপত্তার দায়িত্বে কও, সেদিন ছিল কারা?

জাতির পিতা মরলো নিজে, মরেনি তো তারা।

সেই দায়িত্বে অবহেলার বিচার কেন হয় নাই

কে তাদেরে সাহস দিল, তোদের কোন ভয় নাই।

 

এটা জানা আজকে খুবই দরকার

কেন চালায় আজো তারা সরকার

নাকি এসব জানার সময় আজো মামা হয় নাই?

 

প্রশ্ন আছে, জবাব নাই

নেতার কোন অভাব নাই

পিতৃহারা কন্যা বলে, জবাব আজও পাই নাই

সাহস করে কেউ কয় না, কেনো পিতা, ভাই নাই।

১৮/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৩

এত বছর পার করে আজ

মুক্তিরে কয় রাজাকার

বলতে পারো এর জন্য

হওয়া উচিত সাজা কার?

 

মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী আছে

সব কি খাইল বোয়াল মাছে

এতো এতো বেতন ভাতা

কারে দিল সরকার?

 

দেশের জন্য রক্ত দিতে

যে সাহসী এগিয়ে যায়

এতো বছর পরে তারে

কে তুলল কাঠগড়ায়?

 

মুক্তিরে কয় রাজাকার

কে দেয় আজ সাজা তার?

তার অপরাধ ক্ষমাহীন

তারে আগে শাস্তি দিন।

১৮/১২/২০১৯; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৪

কই গেল শহীদের তালিকা?

এই কথা শুনে হাসে

কচি কচি বালিকা।

বলে, কাকা শুনেন।

বসে বসে আসমানের

তারাগুলো গুনেন।

 

বলি মাগো,

বুদ্ধিজীবীর লিস্টি?

বলে কাকা,

ওটাতো ধুয়ে নিছে বৃষ্টি।

 

রাজা আসে, রাজা যায়

সকলেই কেঁদে যায়

বলে, আহা, ওরা ছিল

জাতির ইস্টি।

 

মুক্তিযোদ্ধা তালিকা?

আহা আহা, ওটাতো

নিয়ে গেছে শ্যালিকা।

রেখে গেছে শুধু এক

রাজাকার লিস্টি।

খেয়ে দেখি ভারি মজা

অতিশয় মিষ্টি।

 

আজব এক দেশ ভাই

গুজবের শেষ নাই।

২০/১২/২০১৯; ১১:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৫

আমরা কি আর মানুষ আছি?

আমরা তো ভাই রাজাকার

মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম

এই পেয়েছি পুরস্কার।

 

রাজাকারের তালিকাতে

মন্ত্রী আমার নাম টানায়

চার যুগ পরে এই খবর

দেশবাসীকে সে জানায়?

 

যারা যারা মানুষ ছিল

মারা গেলো ফাঁসিতে

এই খবরে খুশি হইলো

পাড়াপড়শি মাসীতে।

 

দেশের মানুষ গরু খায়

নিজেরে কয় মুসলমান

কথাটা শুনলে যার

চেতনাতে লাগে টান।

 

বানায় সে আজব তত্ত্ব

কাঁঠালে হয় আমসত্ত্ব।

২০/১২/২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৬

বাংলাদেশী মন্ত্রী আপনি

পাকিস্তানী পিঁয়াজ খান

তাই কি মাথায় গন্ডগোল

নিজে বনেন আইয়ুব খান?

 

মুক্তিযোদ্ধা দেখলেই তাতে

রাজাকারের গন্ধ পান

নাকি আপনি স্বপ্নে ভাবেন

এটা আজো পাকিস্তান?

 

মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার

এক তালিকায় নাম লেখেন

রঙিন চশমায় সবাইকে কি

নিজের আপন ভাই দেখেন?

 

গায়ে পরেন মুজিব কোট

মুক্তিরে কন রাজাকার

গাঁঞ্জা ছাড়েন নইলে দেখবেন

বাঙালি দেয় সাজা কার?

২০/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৭

যে করে ভাই ঘৃণার চাষ

তারে ধরে মার দে

প্রেমের গাছে নতুন করে

আবার একটু সার দে।

 

ঘৃণা বাড়লে পাশবতা

বাসা বাঁধে মনে

বাপের হাতে ধর্ষিতা হয়

নিজের আপন কনে।

 

ধরো, মারো, কাটো, খাও

মানুষ কি হয় সাপের ছাও?

ধরো, মারো বাদ দাও

হাতের ওপর হাত দাও।

 

মানুষ হলে প্রেম করো

শান্তি সুখের দেশ গড়ো।

২০/১২/২০১৯; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৮

যার কাছে নেই ভালবাসা

তার কাছে কি প্রেম চাও?

তার তো আছে ঘৃণার পাহাড়

লাগলে কিছু হেম নাও।

 

ঘৃণা এবং মারামারি

গণতন্ত্রের ভাষা নয়

তবু দেশে এই জিনিসের

সবচে বেশী চর্চা হয়।

 

বারে বারে পাওয়ার শিখায়

খুনোখুনির পাঠ

তবু তুমি শিখলে না তার

কোন রাস্তাঘাট।

 

রাস্তায় নামলে তারে ধরে

কেমনে পিটায় দেখো না?

বছর গিয়ে বছর কাটে

কিছু কি তাও শেখো না?

 

মারের বদল মারতে হয়

মারামারি পারতে হয়।

২০/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৯

আমি একজন রাজাকার

তালিকায়ও নাম ছিল

সবাই জানে যুদ্ধদিনে

আমার কি কি কাম ছিল।

 

আর্মি আসার আগে পাড়ায়

আমিই খবর দিছিলাম

আর্মিদেরকে বিলের ধারে

আমিই টেনে নিছিলাম।

 

আমার কামতো পাড়াপড়শি

সবাই জানে কম না

বিপ্লব সাহা নিজেও জানে

আমি তাদের যম না।

 

আমার নামটা কেমন করে

কোন হারামী বাদ দিল

আদি আসল তালিকাতে

কোন হারামী হাত দিল।

 

তালিকাটা নয়ছয় করলো

রহিম হইলো রাম

এমন কইরা চার যুগ খাইল

স্বাধীনতার আম।

 

হায়রে কোন দুনিয়া!

আমার পুকুর দখল করলো

কারা এরা খুনিয়া?

২১/১২/২০১৯; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫০

হাটুরাম হাটে যায়

খাটুরাম খাটে

ঘাটুরাম একা একা

বসে থাকে ঘাটে।

 

নাটুরাম নাট খোঁজে

বাড়ি বাড়ি গিয়ে

বাটুরাম ডেকে কয়

আয় করি বিয়ে।

 

চাটুরাম চেটে খায়

মালিকের জুতো

ভাটুরাম ডেকে বলে

দেখ চেয়ে ভূতো।

 

এইসব দেখে যার

লাগে কাতুকুতো

চল যাই গিয়ে দেই

তার পেটে গুতো।

২১/১২/২০১৯; রাত ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫১

ফুলের বনে ফুল ফুটেছে

অলি গুনগুন গায়

এমন সময় তুই দূরে ক্যান

আয়রে কাছে আয়।

 

একটু পরে ফুটবে আলো

আঁধার হবে দূর

আলোর সাথে আসবে আরো

নতুন একটা ভোর।

 

একসাথে চল মসজিদে যাই

দিচ্ছে আযান, আয়

নামাজ শেষে ভোরের বাতাস

মাখি নিজের গায়।

 

ভোরের বাতাস হতাশ মনে

আশার আলো আনে

মনে সুখের বীজ বুনে দেয়

পাখির কলতানে।

২২/১২/২০১৯; ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫২

টিট ফর টিট ভাই

টিট ফর টিট

হিট ফর হিট ভাই

হিট ফর হিট।

 

কিট কিট কিট ভাই

কিট কিট কিট

এইটাই বাকী ভাই

এইটাই নীট।

 

বিট ফর বিট ভাই

বিট ফর বিট

হিট ফর হিট ভাই

হিট ফর হিট।

২২/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৩

আমি মানুষ, শয়তান না

ভুল তো আমার হইবেই

ভুল হইলে অন্যেও তো

ভাল মন্দ কইবেই।

 

যে আমারে ভালোবাসে

আমার ভুল সে ধরবেই

আমি যেন সংশোধন হই

চেষ্টা সে তো করবেই।

 

ভুল ধরলেই শত্রু হয় না

মিত্রও ভুল ধরবে

আমার ভালোর জন্য সে

ভালবেসেই লড়বে।

 

তোষামুদে চাটুকার

কবে হইছে বন্ধু কার?

২২/১২/২০১৯; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৪

সব খেলারই নিয়ম আছে

নিয়ম মেনে খেলতে হয়

গরু দুইটা আগে দিয়া

লাঙল ধরে ঠেলতে হয়।

 

খুনী জেনেও সঙ্গে রেখে

মন্ত্রণালয় গড়তে হয়

নইলে দাদা নিজের ভুলেই

বিপদ জালে পড়তে হয়।

 

কঠিন খেলা রাজনীতিটা

কত কিছু সইতে হয়

শত্রু জেনেও একই সঙ্গে

আলোচনায় বইতে হয়।

 

সুযোগমত তারেই আবার

গলায় চেপে ধরতে হয়

এটাই খেলার নিয়ম দাদা

ভুল করলে মরতে হয়।

 

এই জামানায় এতো সরল

মানুষ ধরায় থাকতে নাই

ভালো মানুষ যারা তাদের

মাটির ওপর রাখতে নাই।

২২/১২/২০১৯; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৫

যদি দেখো সাপের ছাও

তারে পায়ে পিষে যাও।

 

যদি দেখো খুনী

তারে পাঠাও আনতে খবর

কোথায় সাগর রুনী।

 

যারা তোমার বেতন খায়

তাদের বলো, পথে আয়।

 

যারা খাটে স্বৈরাচারের

আজো লেজুড় কামলা

জনগণের মিছিল দেখলেই

করে বসে হামলা।

তাদের লাগা উল্টো মার

বল, এবারে সামলা।

 

মারের বদল মার চাই

জানোয়ারের হার চাই।

২২/১২/২০১৯; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৬

এতদিনেও শিখলি না

কেমন করে মারতে হয়

কেমন করে ভয়ের চারা

একটু একটু নাড়তে হয়।

 

অযথা মার খেয়ে গেলি

মিছিলে গান গেয়ে গেলি।

 

বুঝলি নাতো বরই পাকলে

তারপরে গাছ নাড়তে হয়।

কাঁঠাল পাকলে গাছে উঠে

একটা একটা পাড়তে হয়।

 

আমরা মাত্র দশ পার্সেন্ট

তারপরেও তো হারি না

আমরা মারি ঠান্ডা মাথায়

এমনি তো আর মারি না।

 

আগে খেলা জানতে হয়

তারপর কোটে নামতে হয়।

২২/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৭

ম্যাসেঞ্জারে একে একে

কতো বলবো ভাই

আমার লেখা শেয়ার করো

কোন দাবী নাই।

 

কপি করো, শেয়ার করো

যা ইচ্ছা তাই করো

গণতন্ত্রের চলছে লড়াই

যেমনে পারো লড়ো।

 

আমার লেখা যদি কভু

মনে ধরে তবে

দাও ছড়িয়ে বন্ধু সুজন

পড়ুক লেখা সবে।

 

আমার কোন দাবী নাই

দুধ যে খাবো গাভী নাই।

 

গান গেয়ে যাও

লেখা ছড়াও

যতো খুশী পড়ো

পারো যদি আমার জন্য

একটু দোয়া করো।

২২/১২/২০১৯; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৮

হায় কি শোনলাম,

কওয়া যায়?

নাকি এসব সওয়া যায়?

পঞ্চাশ বছর গবেষণায়

মুক্তি হইলো টিপু, রায়।

রাজাকাররা বসে বসে

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা খায়।

 

দলীলমূলে যারা আজো

ফাঁসির দড়ি শাস্তি পায়

কেমন করে তারা আজো

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা খায়?

 

মুক্তিযোদ্ধা নাম ভাঙিয়ে

হায়রে পুরাণ রাজাকার

কারে করলি দোষীরে তুই

হইলো বলতো সাজা কার?

 

এতো বছর পার করলি

লিস্টি কেনো করলি না

রণাঙ্গণে যাসনি বলে

রাজাকার তুই ধরলি না?

 

দেখতে হলো এই শেষে

রাজাকার রয় বীর বেশে?

এই দুঃখ কই রাখি

কোন কাপড়ে মুখ ঢাকি?

২৩/১২/২০১৯; রাত ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৫৯

নূরু যখন মরে নাই

শোক জানাতে যাও

গিয়ে দেখো পাবলিকের

সিম্পেথি নি পাও।

 

কতবার যে এটেম্প নিলা

ছাগল নাকি সব

ধর, মার বলে যদি উঠে

নয়া রব?

 

সারা বাংলার ছাত্র সমাজ

যদি ক্ষেপে যায়

বলতে পারো লীগের তবে

কি হবে উপায়?

 

যেটা খেলতে পারো না

সেটা খেলতে যাও ক্যান

চুপ বেতমিজ, চুপ থাকো

মুখে আবার রাও ক্যান?

 

মরা ষাঁড়ের দাম নাই

তোদের আমার কাম নাই।

২৩/১২/২০১৯; রাত ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬০

থাকতে বললাম, থাকলি না

আমার কথা রাখলি না

আম পাকলো, জাম পাকলো

তুই তো তবু পাকলি না

পাখির মত ডাকলি না

পথের পরে পথ বাঁকলো

তুই তো মোটে বাঁকলি না।

স্বপ্ন মনে আঁকলি না।

 

বাজারে চল, কিন্যা দিমু

তিরিশ টাকার সুখ

পিঁয়াজের দাম আড়াইশো

কে পায় তাতে দুখ?

দিনের পরে দিন চলে যায়

যুগের পরে যুগ

আজকে শুনি নতুন খবর

কেমনে দেখাই মুখ।

 

যুদ্ধে যারা যায়নি তারা

মুক্তিযোদ্ধা হয়

স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া

মুক্তিযোদ্ধা নয়।

 

রাজাকার হয় এমপি মন্ত্রী

মুক্তিযোদ্ধা জেলে

হায় ভগবান, কোথায় বসে

কোন খেলা কে খেলে!

 

দমদমাদম দম

ইন্দুরে খায় গম

গিরস্তে খায় আলু

দেশ যে চালায় তারা নাকি

মুক্তিযোদ্ধার খালু।

২৩/১২/২০১৯; সকাল ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬১

কারে যে কি কই!

কারে যে কি কই!

শরবত ভাইবা খাইতে আছে

হিজলতলীর দই।

রঙহেডেডের তকমা লইয়া

বেডারে কয় সই।

কলাই ক্ষেতে মই দেয় ভাইবা

দেশজুড়ে দেয় মই।

হায়রে,

কারে যে কি কই!

 

রঙহেডেডের মইয়ের তলে

পাবলিক পড়ে কান্দে

দেশের যত সুখ শান্তি

উড়াল দেয়রে চান্দে।

খুনীরে কয় যা যা বাইরে

হুজুর ধইরা বান্ধে।

খুনখারাবি জোগাড় কইরা

খুনখিচুড়ি রান্ধে।

হায়রে,

রাজাকার হয় মুক্তিযোদ্ধা

মুক্তি পড়ে ফান্দে।

কারে যে কি কই!

অবাক চেয়ে রই।

নায়ের মাঝির ভিজা হাতে

রঙবেরঙের বই।

 

বাতাস ছাড়াই এখন শুনি

ধর্মের কলটা নড়ে

দেশের যুবক পায় না চাকরী

রাহাজানি করে

বোকারা সব দলে দলে

ঢুকে গুমের ঘরে।

রাজা সম্রাট পেট ফাটিয়া

ক্যাসিনোতে মরে।

হায়রে,

পথেঘাটে ইজ্জত গড়ায়

কান্দে করুণ স্বরে।

অবাক চেয়ে রই

কারে যে কি কই!

আগে খাইতো ডাল ভাত লোকে

এখন ডেবের খই।

কারে যে কি কই!

২৩/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬২

মিটিং মিছিল বাদ দে

আসল কামে হাত দে

নয় বাঙালী জাত দে

যে চায় তারে রাত দে।

 

এরে মারবে, তারে মারবে

আর না

মারতে এলে তারেও তুই

মার না।

মার হয়েছে, হার হয়েছে

আর না

এখন শুধু জয় আসবে

হার না।

 

কুকুর এলে তারে মুগুর

মারতে হয়

ডাল খিচুড়ি রাঁধতে হলে

নাড়তে হয়

কাজে নামলে সেই কাজটা

পাড়তে হয়

মারতে এলে তারেও ধরে

মারতে হয়।

 

যুদ্ধে মায়া করতে নাই

বোকার মত মরতে নাই।

লড়াই লাগলে লড়তে হয়

নয়তো নিজের মরতে হয়।

২৪/১২/২০১৯; ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৩

গাছের যদি পাতা নড়ে

বুঝবি আজো বাতাস বয়

ছাত্রসমাজ মার খায় মানে

সইবে না আর পরাজয়।

 

ছাত্রের গায়ে হাত দিলে

গদী কারো বাঁচে না

ছাত্র দেখলে আইয়ুব খানের

অস্ত্রও আর নাচে না।

 

কই গেলরে এনএসএফের

অস্ত্রবাজির সে দিনকাল

মরলো নিজে, সঙ্গে গেল

রক্তেভেজা পিঠের ছাল।

 

রংবাজি আর করিস না

শখ করে কেউ মরিস না।

২৪/১২/২০১৯; রাত ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৪

হীম হীম বাতাস আর বক সাদা কুয়াশা

এসো এই ভোরে করি সকলেই সু আশা।

অচিরেই মিশে যাবে দুঃখ, কষ্ট, ক্লেশ

সুশাসনে ভরে যাবে দেশ, মহাদেশ।

 

কেটে যাবে প্রকৃতির এই দুর্যোগ

ভেসে যাবে মানুষের সব মনরোগ।

ভালোবাসা মমতায় ভরে যাবে ধরা

প্রেম দিয়ে সকলের হবে মন গড়া।

 

ধনীরাই গরীবের যাবে কুঁড়েঘরে

খেজুরের রস খাবে সবে মন ভরে।

সকলেই আমরা সকলের তরে

এই মনোভাব রবে সকলের স্বরে।

 

হীম হীম বাতাস আর কুয়াশার ভোর

সময় মনে পড়ে তোর কথা, তোর।

২৫/১২/২০১৯; ভোর ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৫

হায় বিচারের বাণী

আমার মত তুই কি এতীম?

নাই কি দাদী নানী?

তাই কি টানিস বদমেজাজী

মহাজনের ঘানি?

ঘন্টায় ঘন্টায় তাই কি খাস

ঠান্ডা ঠান্ডা পানি?

বিচারের বাণী।

 

বিচারের বাণী

তোদের কথায় উঠতো বসতো

আগে রাজা রানী

কে নামালো বলতো তোদের

ওখান থেকে টানি।

কেন এখন খাওয়া লাগে

ঘন্টায় ঘন্টায় পানি?

বিচারের বাণী।

 

বিচারের বাণী

তুইতো এখন সাহেব নোস আর

সবই আমি জানি

কম দুঃখে কি টানিস তুই

মহাজনের ঘানি

কোন কিছু বললে বলিস

আমার চোখে ছানি

কী যে হইছে খালি পড়ে

চক্ষু থেকে পানি।

বিচারের বাণী।

 

বিচারের বাণী

অনেক হইছে, ছাড় না এবার

খাওয়া রঙিন পানি।

২৫/১২/২০১৯; বিকাল ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৬

একটা খোসা সরিয়ে দিলে

আরেক খোসা আসবে

এই খোসাও আগের মতই

দন্ত মেলে হাসবে।

 

পিঁয়াজ বলো, রসুন বলো

খোসায় খোসায় ভরা

পিঁয়াজ রসুনের দেহখানা

খোসা দিয়েই গড়া।

 

লিচুর মজা খেতে হলে

পিঁয়াজের প্রেম ছাড়ো

সময় মতো পাকা লিচু

নাও না পেড়ে আরো।

 

যেমন তুমি কর্ম করবে

তেমন পাবে ফল

চোরা গেলে চোরা আসবে

থাকলে চোরের দল।

 

কর্ম হবে সেটাই যেটার

রাখবে মনে ইচ্ছা

শেষ হলো যে কথা বলা

শেষ হলো সব কিচ্ছা।

২৬/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৭

ভাবনা আসে মনে

মানুষ কেন লোকালয়ে

পশু কেন বনে?

আমি কেন পুরুষ মানুষ

লতা কেন কনে?

ভাবনা আসে মনে।

খুবই সঙ্গোপনে।

 

ভাবনা আসে মনে

জানি না তার জবাব তাই

জিগাই জনে জনে।

মানুষ কেন মানুষ মারে

বৃথাই অকারণে?

কাউকে মারে রণাঙ্গনে

কাউকে সঙ্গোপনে?

 

ভাবনা আসে মনে

যে লড়ার সে লড়েই যাবে

হাত ধরার যে ধরেই যাবে

গড়ার যারা গড়েই যাবে

ভাগ্যে থাকলে লেখা

তোমার সাথে আমার হবে

জানি আবার দেখা।

 

ভাগ্যে থাকলে পাইতে হয়

যমের বাড়ি যাইতে হয়।

২৬/১২/২০১৯; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৮

চলো সবাই স্বপ্নে দেখি স্বপ্নরাঙা দেশ

চারিদিকে সুখ আনন্দ মুগ্ধ পরিবেশ।

যার মনে যা দুঃখ ছিল সব হয়েছে শেষ

কষ্টরা সব পালিয়ে গেছে সবাই নিরুদ্দেশ।

 

লোকালয়ের মায়া ছেড়ে মানুষ থাকে বনে

সবাই থাকে পাখির মত কেউ লড়ে না রণে।

কেউ গড়ে না ধনের পাহাড় শুধু অকারণে।

লোভ লালসা খুঁজে দেখ নেই যে কারো মনে।

 

দলের জন্য লড়ে না কেউ, হয় না বাড়াবাড়ি

ধর্মে ধর্মে হয় না এখন, আর তো মারামারি।

মানুষ এখন প্রেমের টানে করছে জড়াজড়ি

কচুর চেয়ে কমদাম আজ গিনিসোনার ভরি।

 

চলো সবাই স্বপ্ন দেখি, স্বপ্নরাঙা মনে

আমরা উড়ি নিলাকাশে সাদা মেঘের সনে।

২৬/১২/২০১৯; ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৬৯

কে কয় তোমার মরণ নাই

পুরান কথা স্মরণ নাই?

 

মরার কোন গড়ন নাই

এর তো কোন নড়ন নাই

রক্তরাঙা বাংলাদেশে

আর তো কোন বরণ নাই।

 

জাতির পিতা মারবে ডালিম

মঞ্জু মারবে জিয়া

আল্লাহ দিল জীবন তুমি

খেলো জীবন নিয়া।

 

তোমার আসে হাসি

নিজামী পায় ফাঁসি

তুমিওতো একদিন হবে

নিজেই কবরবাসী।

 

কেউ থাকবে না ধরাতে

মরণ সবার বরাতে

কিসের করো গর্ব তুমি

ওগো নগরবাসী

স্বার্থের টানে পাপ করে যাও

পাপ তো সর্বনাশী।

 

পাপের ফান্দে পড়ো না

মন্দ পথে লড়ো না।

২৬/১২/২০১৯; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭০

আমরা শিশু আমরা কিশোর

আমরা নবীন বীর

স্রষ্টা ছাড়া কারো কাছে

নোয়াই না শির।

আমরা নবীন বীর।

 

স্রষ্টার করি আরাধনা

গাই স্রষ্টার গান

আমরা জানি তাঁর হাতেই

বাঁধা সবার প্রাণ।

তাঁর কাছেই তো ফিরে যাবো

আমরা সকল বীর।

উঁচু রাখি শির।

 

জীবনের কাজের হিসাব

দিতে হবে তাঁরে

তাই সুপথে চলতে শপথ

করি বারে বারে।

 

মন্দ এলে দাঁড়াই

মন্দটারে তাড়াই

ভাবি ধরায় আমরা সবাই

অচিন মুসাফির

আমরা নবীন বীর

উঁচু রাখি শির।

২৬/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭১

খবর বেশী ভালা না

ওরা, মামা, খালা না।

ওরা সবাই চান্দাবাজ

ভাবলাম

সারবো টাকায় কাজ।

 

টাকা গেল, হামলা হলো

নূরু তাতে মরলো না

পথের কাঁটা পথেই রইলো

পথের কাঁটা সরলো না।

 

হাতি ঘোড়া মারা গেল

ইঁদুর তাতে মরলো না

নেট কেটে সে চলে গেল

নেটে সে তো পড়লো না।

 

কাজ হলো না হামলায়

জড়াও এবার মামলায়

দেখবো আমি নূরু বেটা

কয়দিক একা সামলায়।

 

হেরে গেল যারা তারা

ছিল সেয়ান চান্দাখোর

এবার দেবো সামনে ঠেলে

যারা এখন বেতন খোর।

 

তোর থাকুক না জনতা

আমার আছে ক্ষমতা।

দেখি এবার কে পারে

কে জিতে আর কে হারে?

২৭/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭২

সই,

আজকে তোরে পরাণ খুলে

মনের কথা কই।

কেউ যদি ভাই কাছে আসে

ভালবাসি কই।

 

সই,

তোকেই শুধু কই

নিজকে শুধু ভালবাসি

অন্য কাউকে নই।

এই কথাতো যায় না বলা

তাইতো মিছে কই।

রাগ করলি সই?

 

আমি বোকা বলে দিছি

অন্য কেউ তা বলে না

সবাই চলে সরল পথে

আসলে কেউ চলে না।

 

সবাই করে ধান্ধাবাজি

বামুন শেখ মোল্লা কাজি।

 

আসল কথা শোনরে সই

পরাণ খুলে কেউ বলে না।

সবাই চলে স্বার্থ বুঝে

সোজা তো কেউ চলে না।

২৭/১২/২০১৯; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৩

শীতে হয়ে জবুথবু

হীরালাল কি আইলো?

পিটপিটিয়ে ঘোলা চোখে

সে কি সত্যি চাইলো?

 

বললাম, কি রে, হীরা না তুই?

তোর দশা তো কাহিল রে।

বলল মামা, কী করমু কও,

রাজা হইলে জাহিল রে।

 

প্রজার দশা এমনটি হয়

দুঃখ কারে কইমু

কপাল ভরা দুঃখ ছিল,

কত দুঃখ সইমু!

 

হায়রে তোর ত্যাড়া কথা

আজো বুঝি গেলো না

কতো এলো সাপের ছাও

তোর দুঃখ কেউ খেলো না।

 

মামু,

কার অধীনে ছিলা তুমি

রাজাকার কও কারে?

মুক্তিযোদ্ধার তালিকাতে

মুক্তি কি ডিম পাড়ে?

 

সরকার আসে সরকার যায়

দোষটা দিমু কারে

ঘুমাইলে সেই ফাঁকে মামা

রোজ কি মুক্তি বাড়ে?

 

নিজে, মামা, চাচা, ভাই

কে কে ছিলা মুক্তিতে?

গোষ্ঠী শুদ্ধা সনদ নিলা

কওতো কে কোন যুক্তিতে?

 

রাইফেল হাতে ধরো নাই

সবাই জানে, লড়ো নাই।

 

কে না জানে সে দিন তুমি

খাইতা পাকি ভাতা

আজকে বলো, মুক্তি আমি

সনদ আমার ছাতা।

 

ছাতার নিচে থাকি তাই

আজো ঝড়, বৃষ্টি নাই।

২৮/১২/২০১৯; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৪

চতুর শিয়াল বসে বসে

কোন খিঁচুড়ি রান্ধে

চুলার ধারে বসে কেনো

বীর বাঙালি কান্দে?

 

কে কে নাকি আনতে গেছে

তালিকাটা, চান্দে

সেই যে গেছে আর ফিরে না

পড়লো কোন ফান্দে!

 

আজকে শুনি মুক্তি মানে

পাকিদের যে ভাতা খায়

রাজাকার হয় তারা যারা

দেশের জন্যে মরতে যায়।

 

কী অসাধারণ যুক্তি

রাজাকার হয় মুক্তি।

মুক্তিরা হয় রাজাকার

তালিকার কি বাহার।

 

এই খিঁচুড়ি খাও

আরেক চামুচ নাও।

২৮/১২/২০১৯

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৫

মেজর জিয়া রাজাকার হয়

রাজাকার হয় জলিলও

এই ফর্মুলায় পাল্টে যায়

মুক্তিযোদ্ধার দলিলও।

 

মজা মারে আলালে

বর্ণচোরা দালালে।

আগে খেতো পাকিভাতা

এখন খায়, লাকী ভাতা।

 

দেশ ভরেছে বাটপারে

দেখবি,

চল যাই ঘাট পাড়ে।

মাঝি আছে নৌকা নাই

নদীর ওপাড় কেমনে যাই?

২৮/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৬

বন্দুক যদি খাঁড়া হয়

পিন্ডি ভয়ে যাইতে হয়।

 

অস্ত্রের মুখে তুমি গেলে

তাতে দোষ হয় না

আমি ভয়ে গদি নিলে

কান্দে বসে ময়না।

 

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস কি

আমি যুদ্ধ করি নাই?

তুমি ছিলে বন্দী যেদিন

আমি লড়াই লড়ি নাই?

 

লড়াই করে দেশটা স্বাধীন

করলাম যেদিন আমি

অমনি দেখি ইন্দিরাদি

হইলো তোমার মামী।

 

মুক্তি এসে মারলো তোমায়

বিশ্বজগত জানে

কে জানে না যুদ্ধের নয় মাস

ছিলাম কে কোনখানে?

 

তুমি ছিলে পিন্ডিতে আর

আমি ছিলাম দিল্লি

কি লাভ বলো সেসব নিয়ে

করে চিল্লাচিল্লি?

 

তারপর তুমি জাতির পিতা

আমি রাজাকার

এখন থাকি কবর দেশে

জিত হলো কও কার?

২৮/১২/২০১৯; ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৭

চার কুতুবের কথা কিরে

ভুইলা গেল জাতি

যারা ছিল পিঁপড়া, মশা

তারা এখন হাতি।

 

স্বাধীনতার পতাকাটা

প্রথম যেজন তুললো

তার কথাটা জাতি হায়

কেমন করে ভুললো!

 

রব সিরাজের কুতুবগিরির

আজকে কোন দাম নাই

স্বাধীনতার নাটকে আজ

তাদের কোন নাম নাই।

 

বাঘা কাদের মগা হয়

উদাস মনে তাকিয়ে রয়।

 

চার কুতুবের কথা কিরে

ভুইলা গেল জাতি

যারা ছিল পিঁপড়া, মশা

তারা এখন হাতি।

২৮/১২/২০১৯; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৮

নূরু আমায় চিনে নাই

চিনছে তোদের ইনু ভাই

আর চিনছে মতিয়া দি

তার কি বাড়ি কটিয়াদি?

 

যারা আমায় চিনে নাই

তারাতো কেউ সীনে নাই।

এমনকি ডাস্টবিনে নাই

সব হয়েছে ফারদাফাই।

 

মার খেলে কয়, মাগো মা

এবার ছেড়ে দে গো মা।

মারের ওপর অষুধ নাই

তুই মা আমার পেটের ভাই।

 

হামলা দিলাম, মরলি না

মামলা দিলাম, সরলি না।

তিন মাইল লম্বা মিছিলে

আমার গদির কী ছিলে?

২৮/১২/২০১৯; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৭৯

সরি দোস্ত, মাফ করে দে,

আর হবে না,

আর না

পিটন খাইলে সত্যি সত্যি

ব্যথা লাগে

কার না?

 

তয় মিছিলে কেন যাস?

বার বার ব্যথা কেন পাস?

পারলে তুইও মারের বদল

সমান সমান

মার না।

 

মিটিং মিছিল কম করিসনি,

নেত্রী গেল

জেলে

মায়ের জন্য কান্দে বসে,

লক্ষ লক্ষ

ছেলে।

 

কাঁদলে কোন লাভ হয়?

কার সাথে কার ভাব হয়।

স্বৈরাচার বল জনগণের

চোখের জল কি

গেলে?

২৮/১২/২০১৯; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮০

বেলতলাতে কয়বার যায়

ন্যাড়া হলে একবার যায়

বোকা হলে বারবার যায়।

নির্বাচনের ধোকা খায়।

 

দিনের ভোট সব রাতে হয়

তাতে জাতির শিক্ষা হয়?

চলবে এবার ভি এম

জিতবে আবার বিবি মেম।

 

মার খেয়েছে নূরু ভাই

নয় মারের শুরু ভাই।

ভয় পেয়েছে স্বৈরাচার

তাই ভয়ে সে দিচ্ছে মার।

 

ভয়টা পেলে জনগণ

জমতো তীব্র আন্দোলন

যে পায় মনে বেশী ভয়

সে পায় রণে বেশী জয়।

 

এতো মার মারলো তবু

ভয়তো তুই পেলি না

স্বৈরাচারকে মারতে তুই

সদলবলে গেলি না।

২৯/১২/২০১৯; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮১

চাচার বাড়ি মাচা নাই

মুরগী বন্দীর খাঁচা নাই।

তাই চিলে খায় মুরগী ছাও

তুমি কেন খাইতে চাও?

 

চাচা খায়রে আলু পোড়া

বসতে দেয় বেতের মোড়া।

চড়তে দেয় নবীন ঘোড়া

সিদ্ধি খায় থোড়া থোড়া।

 

চাচার বাড়ি খিদিরপুর

সঙ্গে রাখে ঝোলা গুড়

খিদা লাগলে একা খায়

এদিক ওদিক ফিরা চায়।

 

চাচার নিজের দাড়ি নাই

নিজের বউয়ের শাড়ি নাই।

টাকা কাড়ি কাড়ি নাই

ফিরবে বাড়ি, গাড়ি নাই।

২৯/১২/২০১৯; বিকাল ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮২

যা কিছু ভাই করি আমরা

ভালো কিংবা মন্দ

সবই দেখেন মাবুদ আল্লাহ

তিনি তো নন অন্ধ।

 

তাঁর কাছ থেকে এসেছি ফের

তার কাছেই তো যাবো

তাঁর কাছ থেকেই ভাল-মন্দের

ফলাফলও পাবো।

 

তাঁর কাছে তো কোন কিছু

গোপন কভু রবে না

বিশ্বের সবাই ভুল করলেও

তাঁর ভুলতো হবে না।

 

গভীর রাতে একলা ঘরে

করলে গোপন পাপ

নেবে না সে পাপের বোঝা

নিজের আপন বাপ।

 

নিজের দেহের অঙ্গ সে দিন

কোন পাপই ঢাকবে না

পাপের বোঝা নেয়ার মত

আপন কেহ থাকবে না।

 

হাশরের সে কঠিন দিনে

নিজের পাপের ভার

বইতে হবে নিজের জেনে

জীবন করো পার।

 

যা কিছু ভাই করি আমরা

মন্দ ভালো সব

সবই দেখেন পৃথিবীর

মালিক, প্রভু, রব।

 

এসব কথা কম বা বেশী

আমরা সবাই জানি

এসো না সে কথা আমরা

জীবন ভরে মানি।

২৯/১২/২০১৯; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৩

কারে যে কি বলি!

কোন পথে যে চলি?

সদর রাস্তায় রক্ত ঝরে

ভরসা অলিগলি।

শহর থেকে অনেক ভাল

এখন শহরতলী।

 

যারে রাখি দারোয়ান সে

চালায় এখন গুলি

দেশটা চালায় এখন নাকি

চোর, ডাকাত কুলি।

ভাত দেয় না, খালি শোনায়

উন্নয়নের বুলি।

 

শোনরে সখি আমেনা

এতেই তো সে থামে না।

যে একবার গদী পায়

সে কখনো নামে না।

যতই বলি, নাম

দেয় এগিয়ে অলংকার সে

ডান্ডাবেরি নাম।

 

কারে যে কি বলি

কোন পথে যে চলি?

কার যে সহায় সম্পদ আর

কে যে ভরে থলি।

বলতে পারিস পলি?

জীবনের নাই নিরাপত্তা

কেমন করে চলি?

৩০/১২/২০১৯; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৪

রাত্রি গভীর নিকষ আঁধার

সূর্য তবু উঠবেই

শীত বসন্তে হীম কুয়াশা

গোলাপ তবু ফুটবেই।

 

ফুলের সুবাস ছুটবেই

ঘুম মানুষের টুটবেই

মিলা শীলা বনভোজনে

আবার এসে জুটবেই।

 

দুঃখের পরে সুখ আসে

রাত্রি শেষে দিন হাসে।

 

এসব সবার জানা

আন্দোলন হোক টানা।

৩০/১২/২০১৯; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৫

বীর বাঙালি ভীতু হও

ভয়ে হাতে লাঠি লও।

না পেলে ভাই -- ভয়

কবে কে পায়  -- জয়?

 

সাপের ছোবল খেতে চাও?

নয় তো হাতে লাঠি নাও।

ভয় না পেলে জয় আসে না

চন্দ্র সূর্য কেউ হাসে না।

যে যত পায় ভয়

সে তত পায় জয়।

 

আবার তিন দিন বসে বসে

মাসুদরানা পড়ো

কেমনে বাঁচে মাসুদরানা

সেই পথটা ধরো।

 

স্বৈরাচারে ভয় পায় বলে

তোমায় ধরে মারে

মারে বলেই গদীতে সে

আজো থাকতে পারে।

 

ভয় না পেলে জয় আসে না

ভয় ছাড়া তো জয় হাসে না।

 

ভয়ের পানি খাও

সামনে দু'পা যাও।

৩০/১২/২০১৯; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৬

ধরণীর রূপ আমি কতটুকু জানি

কয়ভাগ মাটি আর কয়ভাগ পানি?

 

ডাঙায় হাতি, বাঘ, মানুষের বাস

জলে প্রাণী কিভাবে নেয় নিঃশ্বাস?

আমি যদি ডুবে যাই

তবে কেন মরে যাই

মাছেরা তো মরে না, নেয় নিঃশ্বাস।

 

ধরণীর রূপ আমি কতটুকু জানি?

নীল জলে করে বাস মাছেদের নানী?

 

হাঙর, কুমির ওরা পানি শুধু খায়?

পরিযায়ী মাছ আছে, দূর দেশে যায়?

কারা কারা করে বাস

সাগরেই বারো মাস

কারা থাকে কভু জলে কখনো ডাঙায়?

 

ধরণীর রূপ আমি কতটুকু জানি?

তবু ভাবি আমি আহা কত না জ্ঞানী।

৩১/১২/২০১৯; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৭

এই দেশে ভাই হাসি ছিল

তালপাতার এক বাঁশি ছিল

গিরস্ত ঘরে চাষী ছিল

ঘরে চাকর দাসী ছিল

ছিল মায়ের মুখ

সবার প্রাণে সবার মনে

ছিল অঢেল সুখ।

 

এখন সে সব নাই

ধার করে ভাত খাই।

মন কয় বনে যাই

বন যে কোথায় পাই?

 

বনখোরেরা বন খায়

ধনখোরেরা ধন খায়

জনখোরেরা জন খায়

মনখোরেরা মন খায়

খায় না বলো কি?

বিনা পয়সায় জল পাই না

কোথায় পাবো ঘি?

 

আমি চলি ধার করে ভাই

দেশটা চলে ঋণে

কেমনে চালাই সংসার পিঁয়াজ

দুইশো টাকায় কিনে?

৩১/১২/২০১৯; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৮

যখন দিয়েছো প্রভু, কাঁধে বোঝা ভার

তখন বান্দারে দাও সে শক্তি বহিবার।

তোমার গোলাম আমি, আর কিছু নই

আমি যেনো সেই কথা বলি সততঃই।

 

করুণার আঁধার তুমি, অনন্ত অসীম

কিভাবে বয়ান করি, আমি যে সসীম।

আমি তো অধম এক বান্দা তোমার।

তোমার মহিমা প্রভু, অসীম অপার।

 

তোমারে ভালবাসি, তুমি আছো মনে

আমারে রাখিও প্রভু, তুমি সযতনে।

তোমার করুণা শুধু, চাই গোনাগার

আমারে শক্তি দিও বোঝা বহিবার।

৩১/১২/২০১৯; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৮৯

নতুন বছর, নতুন দিন

শুভেচ্ছা সালাম নিন।

সারা বছর ভালো থাকুন

অন্যকেও ভালো রাখুন।

 

ভালো থাকুন, ভালো রাখুন

ভালোর জন্যই বন্ধু ডাকুন।

নিজের মনেও স্বপ্ন আঁকুন

ভালো থাকুন, ভালো থাকুন।

 

নতুন বছর, নতুন দিন

শুভেচ্ছা সালাম নিন।

ভালো থাকুন, মন্দ ঢাকুন

সাহস রাখুন, সাহস রাখুন।

 

আপনি প্রভুর অমূল্য ধন

আপনি বন্ধু ফালতু তো নন।

আপনি প্রভুর নয়ন মনি

নিজকে ভাবুন সুখের খনি।

৩১/১২/২০১৯; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯০

এটা আমার, ওটা আমার

কোনটা তোমার ভাই?

ভেবে দেখো এই দুনিয়ায়

তোমার কিছু নাই।

 

তোমার সন্তান, তোমার বাপ

ঘরবাড়ি আর জমিদারী

বলছো তুমি সত্যি সত্যি

এসব কিছু সব তোমারি?

 

কিন্তু তুমি নিজেও জানো

তোমার প্রাণটা তোমার না

রোমা তোমার মেয়ে যদিও

রোমার প্রাণও রোমার না।

 

তোমার মালিক তুমি হলে

নিজে কভু মরতে না

বিত্ত বৈভব স্বজন ছেড়ে

জীবন থেকে সরতে না।

 

নিজেই আমি আমার না

মা বাপ, চাচা, মামার না।

এসো আমি যার

গুণগান করি তাঁর।

৩১/১২/২০১৯; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯১

সকাল দুপুর আলোর নূপুর

ডেকে ডেকে কয়

খোদার বান্দা খোদার পথে

থাকলে কিসের ভয়?

 

কারে ডরাও? বাঘ, ভাল্লুক

বিষাক্ত সাপ, ভাই

তোমার ক্ষতি করার শক্তি

ওদের কারো নাই।

 

সবাই মানে খোদার হুকুম

তাঁর কথাতেই চলে

তাঁর হুকুমেই নৌকা ভাসে

অথৈ সাগর জলে।

 

খোদার হুকুম ছাড়া জীবন

আজরাইলও কাড়ে না

হুকুম হলে মরতেই হয়

কেউ বাঁচাতে পারে না।

 

ফাঁসির দড়ি বুলেট কারো

মরণ ডেকে আনে না

খোদা যদি না চায় তবে

কেউ কখনো হারে না।

 

কিসের তবে ভয়?

বাঁচতে হলে সারা জীবন

লড়েই যেতে হয়।

৩১/১২/২০১৯; ০৫:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯২

ইনু মেনন মক্কা যায়

তারা কিরে আফিম খায়?

নইলে কেনো মশাল রেখে

তারা এখন নৌকা বায়?

 

মশালের কাম হইছে শেষ?

লাগছে আগুন, পুড়ছে দেশ?

কি কয় এসব নিন্দুকে

দুজনেই চায় ইন্দুকে?

 

নলের আগায় ক্ষমতা

তাই কি পালায় মমতা?

সমাজতন্ত্রের ঠিকাদার

কে দিয়েছে টীকা তার?

 

পুঁজিবাদের বোঝা নিয়ে

জিগাতলার মোড়ে গিয়ে

হঠাৎ নিরুদ্দেশ

বাদের ব্যবসা ফুড়ুৎ করে

হয়ে গেল শেষ।

 

বেশ করেছো দাদা তুমি

বেশ করেছো, বেশ

তুমিই পারবে শেষ করতে

সোনার বাংলাদেশ।

৩১/১২/২০১৯; ০৬:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৩

নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিলাম চাঁদনী পহর রাতে

হঠাৎ দেখি অচিন পুষ্প আমার নবীন হাতে।

 

সুবাস তাহার মিষ্টি মধুর, অধীর উদাস মন

খাটের ওপর ঘুমিয়ে আছে, স্বপ্ন রাঙা বন।

 

বললো আমায়, জাগো সোনা, রাত হয়েছে ভোর

জাগাও জাগাও, কাটাও তুমি সবার ঘুমের ঘোর।

 

পাঠাও খবর, শহর নগর, জাগাও সবুজ গাঁও

রাঙা ভোরের সুবাস তুমি হৃদ মাঝারে পাও?

ভোর হয়েছে, ভোর হয়েছে, আঁধার এখন শেষ

নবীন আলোয় উঠলো জেগে, সোনার বাংলাদেশ।

৩১/১২/২০১৯; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৪

মনপবনের নাও

মনপবনের নাও ভেসে যায় তেপান্তরের মাঠে

সে নাও গিয়ে ভীড়ে যখন তোমার বাড়ির ঘাটে

তখন তুমি নাওয়ের ভেতর কারে দেখতে চাও

আরো দু পা এগিয়ে দেখো, দেখতে তারে পাও?

 

পাও না কারণ, মাওনা তুমি তারে নিয়ে যাওনি।

স্বপনঘোরে মাঠের ডালিম কভু তুমি খাওনি।

অলস দুপুর কাটিয়ে দিলে তারে তুমি চাওনি।

চাওনি বলেই আজো তুমি পান্না মতি পাওনি।

 

পান্না মতি জ্বীনের রাণী তখন খুঁজে পায়।

আল কোরানের বাণী যখন মাখে রাণী গায়।

যখন নবীর হাদিসের ফুল তেপান্তরে ফোটে

তারা সফল যারা সে ফুল দুহাত ভরে লুটে।

 

সোনামনির হাতে হাতে আল কোরাণের ফুল

যে ফুল দিয়ে তাড়ায় ওরা মনের সকল ভুল।

//২০২০; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৫

আপনার কথা আপনি কইবেন

তাতে কোন মানা নাই

আপনার কাছে নিন্দা আমি

পানা আমার জানা নাই।

 

সবারই তো হাত পা আছে

কেউ কি ল্যাংড়া কানা নাই?

এতো এতো হোটেল আছে

তাই বলে কি থানা নাই?

 

আপনি জানেন দামী কথন

হয়তো আমার জানা নাই

আপনি তো খান পাঁচতারাতে

কারো হয়তো খানা নাই।

 

পুটি মাছের ছানা আছে

আপনার হয়তো ছানা নাই

আপনার হয়তো নানা আছে

আমার কিন্তু নানা নাই।

 

প্রজাপতির ডানা আছে

হাতির কিন্তু ডানা নাই

দেশের নামতো চাঁদও আছে

কিন্তু বলেন ঘানা নাই?

 

আপনি যতোই মন্দ বলেন

আমার ওসব জানা নাই

মন্দের জন্য আপনি কি দেন

আমার ঘরে হানা ভাই?

 

আমার কাছে মন্দ নাই

আপনার সাথে দ্বন্দ্ব নাই

আজকে কলেজ বন্ধ ভই

আসেন বসে ছন্দ খাই।

 

ছন্দের ধরেন দাম নাই

রাগারাগির কাম নাই।

০২/০১/২০২০২০; ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৬

চুরি দাদা করি নাই

ডাকাতিও ধরি নাই

কারো সাথে লড়ি নাই

ভালবেসে দিছে--

এই কথা কি মিছে?

 

পকেট দেখি ফাঁকা ভাই

চা খাওয়ামু, টাকা নাই।

ভাবি, একবার ঢাকা যাই

কিন্তু টাকা কোথায় পাই!

 

ভালবেসে দিচ্ছে টাকা

আম এনেছে পাকা পাকা

আপনি করেন মুখটা বাঁকা

ভাবেন আমি ঘুষ খাই।

সত্যি বলছি, সেই টাকাতে

কিনে আমি জুস খাই।

 

কি কন আপনে? পাপ হবে?

সেই পাপ কি সাপ হবে?

ভালবাসার দাম নাই?

তবে টাকার কাম নাই।

 

ঘুষ তো আমি খাই না

নষ্ট পাড়ায় যাই না।

এসব নিষেধ কোরানে

এবং গ্রন্থ পুরাণে।

 

ধর্মটাকে মানো

সমাজে সুখ আনো।

//২০২০২০; ০৫:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৭

অন্য লোককে মন্দ বলি

মন্দ নিজে কম না

ইসলাম সবার সুখের জন্য

ইসলাম কারো যম না।

 

মুখে মুখে ইসলাম বলি

কাজে করি উল্টা

তাতেইতো লুকিয়ে থাকে

অশান্তির মূলটা।

 

নিজের স্বার্থে ইসলামটাকে

নিজের মত বলি

আল কোরানের ইসলাম মত

কজন আমরা চলি?

 

স্বার্থের সাথে আঘাত লাগলে

ইসলাম রাখি দূরে

ইসলাম তখন মাথার ওপর

একা একা উড়ে।

 

ইসলামের কাম নাই

ধান্ধাবাজির দাম নাই

মরলে পরে দেখতে পাবে

গায়ে কোন চাম নাই।

//২০২০; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৮

আমি ভাই বিনিয়োগ নিছি

নিয়মিত লাভও দিছি

সিকিউরিটি-- জমি দিছি

কোনটা আপনি পান নাই?

আপনি কি ভাই বছর বছর

লাভের টাকা খান নাই?

 

আপনার টাকা মারা যাবে,

এমন কোন ভয় নাই।

মর্টগেজ করা জমির দলিল

এই দলিলের ক্ষয় নাই।

 

তবু আপনি মামলা করলেন,

কিস্তির টাকা পান নাই

জমি বেঁচে পাওনা নেবেন,

তাতে কোন ভান নাই।

 

জমি বেঁচার চেষ্টায় আছেন,

আপনি, আমি নিজেও

পারলে জমি বেঁচেন, নয়-

নেন না টাকা লিজেও।

 

তা না করে আপনি কেনো

জালিয়াতি করলেন?

আমার জন্য আপনি কেন

পাপের জালে পড়লেন?

 

আমার চেকে টাকার অংক

কে লিখেছে কনতো?

মাফ করবেন, এই জালিয়াত

আপনি নিজে ননতো?

 

স্বার্থের জন্য মিথ্যা বলা

কেমনে হালাল করলেন?

প্রতারণা, জালিয়াতির

পথও নিজে ধরলেন?

 

উল্টো আপনি জালিয়াতির

মামলা করলেন আমার নামে

শরীয়া বোর্ড জালিয়াতি

হালাল করলো কিসের দামে?

 

মিথ্যা বলা, জালিয়াতি

আপনার জন্য জায়েজ হয়

আমজনতার জন্য এসব

তবে কেনো জায়েজ নয়?

 

নাকি এসব ভন্ডামী সব

ইসলাম মানে ইসলাম নয়

ব্যবসার জন্য ইসলাম ইসলাম

সকাল বিকাল করতে হয়?

 

একটা মোরগ দু'বার জবাই

সবাই করতে পারে না

আপনি জানেন মিথ্যাবাদী

এই সমাজে হারে না।

 

মামলার পরে মামলা করলেন,

টাকা কিন্তু একটাই

কার ইসলাম বিশ্বাস করি

জুব্বা নাকি নেক টাই?

//২০২০; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৯৯

সর্ষে ক্ষেতে হলুদ ফুল

সোনামনির কানে দুল

বাতাসে তার দুল নড়ে

সঙ্গে হলুদ ফুল নড়ে।

 

নড়তে নড়তে লড়ে যায়

মক্তবে রোজ পড়ে যায়।

একটু দূরে সবুজ গাঁও

বসে বসে বাদাম খাও।

 

কাঁচা বাদাম খেতে নেই

অচীন বাড়ি যেতে নেই।

শীতের রোদ মিঠা মিঠা

এখন রোদ তেতে নেই।

 

তেতে নেই তাই মিঠা মিঠা

খেতে মজা ভিজান পিঠা।

দাঁত নাই তবু খেতে চায়

দাদী নানী মাসিমায়।

 

হীম কুয়াশা হীম হীম

ঘুঘু এসে পাড়ে ডিম।

ডিম থেকে হয় দুষ্ট ছানা

দেখতে আসে মিষ্টি নানা।

 

নানার বাড়ি আলিপুর

শীত ভয় পায় বাহাদুর।

আর ভয় পায় রাঙা বু

বুবুর পায়ে ভাঙা স্যু।

 

স্যু পরে সে শো দেখে

সাহেব দেখে 'গো' লেখে।

বাতাস নাড়ায় রাঙা চুল

বুবুর চুলে গোলাপ ফুল।

 

ফুলপাখিদের বাংলাদেশ

আহা কী যে রূপ অশেষ।

রূপের যে নাইরে তুল

কেন করো ভাইরে ভুল।

 

ভুল বন্ধু আর করো না

মন্দ পথ কেউ ধরো না।

//২০২০; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৩০০

হায় সজনী, হায়

হায় সজনী, হায়

ইঁদুর করে কাটুস কুটুস

তাও রজনী যায়।

তেলাপোকা পিঁপড়া বসে

পাকা কাঁঠাল খায়।

হায় সজনী, হায়।

 

জেতা মানুষ চেতা নাই

ঘরে নাকি খেতা নাই

তবু পোলা শুয়ে শুয়ে

অঝোরে ঘুমায়।

শয়তান তারে আদর করে

কত মজা পায়।

হায় সজনী, হায়।

 

আজান হচ্ছে বাইরে সেকি

শুনতে কিছু পায়?

নাকি পোলা স্বপ্নঘোরে

আলু পটল খায়?

নায়ের মাঝি আঁধার রাতে

নৌকা বেয়ে যায়।

হায় সজনী, হায়।

কার ভাত কে খায়!

//২০২০; ১২টা।


No comments

Powered by Blogger.