আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ২৪০১-২৫০০


আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০১

অদ্য।

আরো একবার প্রমাণ হলো

কে যে বোকার হদ্দ

রাজনীতিবিদ, নাকি যারা

শুয়ে লেখে পদ্য

 

অদ্য।

বলতে পারেন, দরকার কি ভাই

প্যানপ্যানানি পদ্য

এখন দরকার ঠ্যাঙ্গারে মার

বঙ্কিমী ধাঁচ গদ্য

 

অদ্য।

সারাটা দিন কাটিয়ে দিলাম

নাটক দেখে সদ্য

নাটকের নাম, চালাক রাজা

এবং বোকার হদ্দ

 

অদ্য।

টুকে নিলাম কেন্ডিডেটের

ফেলে দেয়া ফর্দ

এবার বুঝেন আমি বোকা,

নাকি আমি মর্দ

 

অদ্য।

চালাক রাজা তালাক দিছে

বোকা জনগণ

হেরে গেছে বাংলাদেশ আর

জিতছে উন্নয়ন

 

তাই আসেনি জনগণ

শুভঙ্করের ভোটে

মরেনি কেউ বীর হায়েনার

অন্ধ মারের চোটে

 

তারাই নাকি জিতে গেছে

ভোট দেয়নি যারা

গণতন্ত্রে তারাই জেতে

বেশী ভোট পায় যারা

 

কত পার্সেন্ট দেয়নি ভোট

সে হিসাবটা দেখো

তারপর বলো, কে বিজয়ী

খাতায় সেটা লেখো

//২০২০; রাত ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০২

নির্বাচনে প্রমাণ হইলো

জনগণ কার ফরে নাই

কাহার ঘরে অস্ত্র আছে

অস্ত্র কাহার ঘরে নাই

 

আম লীগ, জাম লীগ

চামচা, কাম লীগ

ওরা ধরেন দশ পার্সেন্ট

আমলা কামলা হামলা লীগ

চাকরীর ভয়ে দশ পার্সেন্ট

 

বিশ পার্সেন্ট লোক বাদ দিলে

আশি পার্সেন্ট থাকে

আইনের ভাষায় তাদের লোকে

পাবলিক বলে ডাকে

 

এই মেয়রকে দেয়নি ভোট

আশি পার্সেন্ট লোকে

ভোট না দিয়ে বলে দিল

চাই না আমরা তোকে

 

গনতন্ত্রের গোমর ফাঁক

বেশী লোকের মেয়র নয়

পুলিশ এবং কয়টা ডাকাত

অস্ত্র থাকলে মেয়র হয়

 

বিশ পার্সেন্টের সালাম নিন

আশি জনের ধিক্কার

অস্ত্র থাকলে নয় মাস থাকে

ক্ষমতাটা টিক্কার

 

নয় মাস পরে জনতার জয়

জনগণ তো হারবার নয়

//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০৩

শুনতে পেলাম সিইসি সাব

বিয়ের রান্না খান নাই?

খাবেন কেমনে? নিজের ফিঙ্গার

নিজেই খুঁজে পান নাই

 

বিরানী তো ভাতের মাড় না

চুমুক দিয়ে গিলবেন

চেয়ার পেলে আরাম করে

পাবলিক ধরে ছিলবেন

 

পুরোনো সে ফিঙ্গারের

বুড়ো হলে চামড়া

না চিনলে সে ফিঙ্গার বলেন,

কী করবো কন আমরা

 

ঘরে ছিল শুটকি ভর্তা

পান্তা কিছু ভাত

তা খেয়ে যে পার করলেন

উৎসবের রাত

 

নিজের ভোট নিয়ম মতো

ইসি দিতে পারেন নাই

তবু তাহার দাবী থাকবে

তিনি কিন্তু হারেন নাই

 

মেশিন তো ভুল বলে না

নষ্ট হলে চলে না

করবো যখন মেরামত

তখন বুঝবা কেরামত

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০৪

বেসিনে হাত ধোয়ার পরও

মেশিন যদি না চিনে

সেই মেশিনটা দেন না ফেলে

ছুঁড়ে মেরে ডাস্টবিন

 

. কামাল মস্ত জ্ঞানী

সংবিধানের রচয়িতা

তিনি তো নন যেনতেন

ফুলকুমারীর চুলফিতা

 

ইভিএম তারেও চিনে নাই

রাতে নয়, তাও দিনে ভাই

আমরা যারা চুনোপুটি

কয় যদি যাও তোমার ছুটি

 

কামালের ভোট জমিলা দেয়

ইভিএমে কেমনে তা নেয়?

সে ইভিএমের বিশ্বাস কি

নুন ছাড়া সে খায় কি ঘি?

 

গুণীরই তো দাম নাই

সে ইভিএম কাম নাই

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০৫

যার পক্ষে যায় আমার লেখা

তিনিই বলেন, সাব্বাস

এই না হলে বাপের বেটা,

ঠিক বলেছিস আব্বাস

 

একটু যদি বিপক্ষে যায়

শালার বেটা শালা

গালি দিয়ে চেঁচিয়ে কয়

পালা বেটা পালা

 

আপনি এতো গালি যে দেন

আপনার টা কি খাই

নাকি আপনার বাহবা শুনে

বেতন আমি চাই?

 

যেটা আমি সত্য বুঝি

সেটাই দাদা বলি

আপনি চলেন ডানে বায়ে

আমি সোজা চলি

 

লেখক হয় না দলের চাকর

নিজের মতো চলে

সত্যিকারের লেখক শুধু

সত্য কথা বলে

 

যে লেখাতে ঘৃণা থাকে

সেটা লেখা নয়

লেখা শুধু আপন মনে

প্রেমের কথা কয়

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ২৪০৬

এমন ভোট চাননি তবে, করলেন ক্যান?

আপনি শুধু এই কথাটার, জবাব দেন

 

পুলিশ কথা শোনে না

লীগ আপনারে গোনে না

তবু আপনি কোন সাহসে পাতে শুধু

কবাব নেন?

জবাব দেন

 

সিনহা সাহেব খেয়েছিল

হজম করতে পারেন নাই

বাঁচার জন্য অবশেষে

দেশ কি তিনি ছাড়েন নাই?

 

যদিও আপনার নামটি হুদা

তবু কেনো খান বেহুদা?

কোন দেশে কন স্বৈরাচার

অবশেষে হারেন নাই?

 

নিয়ম মতো নিজের ভোটটা

নিজে দিতে পারেন নাই

এমন ভোট যে চাননি আপনি

সেটা বলতে ছাড়েন নাই

 

কন না কেনো, ভোট বাতিল,

হয়নি ভোট ফেয়ারও

মেয়র সাহেব নিজেও হতাশ

ছাড়লাম আমি চেয়ারও

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০৭

আমার বড় নানী।

লোকটা বড় ফানি

আমায় দেখে বললো ডেকে,

কইরে ছোট, রাণী

নাতি আইছে দে রে তারে

ঠান্ডা ঠান্ডা পানি

সঙ্গে দিস লাল লঙ্কা

খেতে পোয়া খানি

 

আমার ছোট নানী।

নামটা তাহার রাণী

মাটির কলসী থেকে দিল,

কুয়োর ঠান্ডা পানি

সঙ্গে দিল মুড়কি মোয়া

আন্দাজ পোয়া খানি

বললো বুড়ি, বয়স হইছে

ছাড় না শয়তানি

আমার ছোট নানী

 

নানা কবেই পটল তুলছে

নানী কিসসার ঝাঁপি খুলছে

কথার সাথে নথও দুলছে

মুখে মধুর হাসি

আমি বললাম, কথা তো নয়

বাজে মোহন বাঁশী

তাই তো নানী আমি তোদের

ভীষণ ভালোবাসি

 

মায়ায় ভরা সে দিনগুলো

কোথায় গেল ভাসি

কে নিল রে সে সুখ কেড়ে,

কোন সে সর্বনাশী

এর নাম কি রে মডার্ণ হওয়া,

মায়া যেথা নাই

কোথায় পাবো স্নেহ, প্রীতি

মায়ার সে দেশ ভাই

//২০২০; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০৮

শত বছর গত হলো

এমন ভোট কেউ দেখে নাই

কেমন করে ভোট নিতে হয়

বিরোধীদল শেখে নাই

 

ধমকে যদি কাজ না হয়

মাথায় বাড়ি দিতে হয়

দরকার হলে দুএকটা প্রাণ

ভোটের সময় নিতে হয়

 

পোলাপান যাতে সাহস পায়

অস্ত্র তাদের দিতে হয়

যে থাকতে চায় ফেসবুকে

তাদের সুযোগ দিতে হয়

 

পোস্টার মিছিল ভোট আনে না

ভোট আনে না টাকায়ও

আবার এটা প্রমাণ হলো

দুই সিটিতে, ঢাকায়ও

 

ভোটের বাক্স ছুঁড়ে মারো, পুকুরে

ভোট খেলাটা শিখতে বল, খুকুরে

//২০২০; দুপুর ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪০৯

ঢাকায় শুনি ভোটের দিনে

ভোট দিতে লোক আসে নাই

আনন্দের শুভ দিনে

আনন্দে কেউ ভাসে নাই

 

তাই নিয়ে কি গবেষণা,

তার তো কোন শেষ নাই

যে জিতেছে তার চোখেও

ঘুমের কোন লেশ নাই

 

বুদ্ধিজীবীর মাথায় হাত

নির্ঘুম সবার কাটে রাত

 

সকাল বেলা ইসি সচিব

মুচকি হেসে কয়

লোকে জানে উন্নয়নের

হবে এবার জয়

 

উন্নয়নের বইছে জোয়ার

সবাই নেটে ভাই

ভোটটা দেয়ার সময় এখন

কারো হাতে নাই

 

খাবার সময় পায় না মানুষ

বউ চেনে না স্বামীকে

স্বামী ভুলে বউকে রেখে

জড়িয়ে ধরে মামীকে

 

উন্নয়নের সুখ সাগরে

দিচ্ছে সবাই ডুব

রাখ তোর ফালতু ভোট

চুপ, সকলে চুপ

 

বলছে সবে আর দেশে

ভোটাভুটি চাই না

আমরা এখন উন্নয়ন খাই

গনতন্ত্র খাই না

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১০

সতেরো কোটির দেশে যদি

সতেরো কমেন্ট পাই

খুশীর ঠেলায় ইচ্ছে করে

নিজেই উড়ে যাই

আমার সুখের সীমা নাই,

আহা, সুখের সীমা নাই

 

আমি কত জনপ্রিয়

গর্বে আহা মরি

নানা রকম ক্রেস্টে আমার

বাসা ওঠে ভরি

ভাবি আমি আমার মত

লেখক দেশে নাই

আহা, লেখক দেশে নাই

 

রবি হলেন বিশ্ব কবি

আমি হলাম নিঃস্ব কবি

তাদের মত অত আমার

শিষ্য হয়তো নাই

আমারওতো শিষ্য আছে

ভুল তো তাতে নাই

 

এই তৃপ্তিই লেখকদের

করে সর্বনাশ

অহংকারটা সব মানুষের

জীবন করে নাশ

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১১

ব্যাঙ চলে লাফ দিয়ে, হাঁস জলে ভেসে

মন থেকে সুখগুলো কেড়ে নিল কে সে?

 

কেড়ে নিল মন থেকে, ভালো বাসাবাসি

কি কারণে কেড়ে নিল, সুখ রাশি রাশি

 

বেড়ে গেল কেন বলো, রাগ, ঘৃণা, ক্ষোভ

কেন এলো মন জুড়ে এতো এতো লোভ?

 

ধর্ম না দেশ জাতি, এর জন্য কও দায়ী কে?

কে নাড়ালো কলকাঠি, হলো ধরাশায়ী কে?

 

কি করে যে হয়ে গেল ভালবাসা শেষ

মন, প্রাণ, দেশ, জাতি, গ্রাম, পরিবেশ

 

আজ দেখি হিংস্রতা, খুনোখুনি চলে

এটাকে কি আধুনিক সভ্যতা বলে?

 

মান নাই, হুশ নাই, তবু সে মানুষ--

ভাই থেকে ভাই খায় ছোটবড় ঘুষ

 

আর নয় নষ্টামী, নয় আর পাপাচার

প্রেমে প্রেমে ভরে যাক, জগত সংসার

 

মানবতা নয় শুধু, নয় দেশ, মহাদেশ

ভালবাসায় ভরে যাক হৃদয় প্রদেশ

 

সকলেরে সকলেই, এসো ভালবাসি

ফুল, পাখি, নদী আর ঝরণার হাসি

//২০২০; ভোর ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১২

বিশ্বে এলো করোনা।

বললো এসে, ওহে মানব,

হারাম কাজ আর করো না

যার যেটা কাজ সেটা করো

উল্টাপাল্টা লড়ো না

প্রভুর গোস্বা সঙ্গে নিয়ে

বিশ্ববাসী মরো না

 

সাবধান তোমায় কম করিনি

কিছুই কেনো ধরো না

পাপের থেকে এবার তুমি

তফাত একটু সরো না

 

মরণব্যাধি এইডস দিয়েছি

তারপর দিলাম ক্যান্সার

ক্যান্সার কেনো হয় আজো

পাওনি খুঁজে এ্যান্সার

 

বাংলায় গোলাম ইসি দিলাম

মিশর দেশে সিসি দিলাম

ভারতবর্ষে ধর্ষণ দিলাম

বুঝুক জগতবাসী

কোরান কভু যায় না রোখা

দিয়ে আলেম ফাঁসি

 

মনুষত্ব উঠিয়ে নিলাম

নিষ্ঠুরতা ধরিয়ে দিলাম

বাসের ভিতর ধর্ষিতা হয়

মামী খালা মাসী

সব অনাচার তাকিয়ে দেখে

বোকা বিশ্ববাসী

মরার কারণ মশা দিলাম

বুঝতে যেনো পারো

হুশ না হলে করুণ দশা

বাড়বে ধরায় আরো

 

সবল তুমি দুর্বল পেলে

অত্যাচার আর করো না

শান্তি সুখের বিশ্ব আবার

সবাই মিলে গড়ো না

কোরান খুলে প্রভুর হুকুম

আবার তুমি পড়ো না

দরকার হলে রকেট রেখে

ঘোড়ায় তুমি চড়ো না

 

তাইতো দিলাম করোনা

ছোট্ট গযব, বড়ো না

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৩

জাতে জাতে লড়াই করো, দেশে দেশে যুদ্ধ

সেই লড়াইতে মানুষ মরে, পশু পাখি শুদ্ধ

তাতে কাঁদে মহামানব, মুহাম্মদ, রাম, বুদ্ধ

মানুষ মেরে তুমি খুশি, তোমার নেতা ক্রুদ্ধ

 

লড়ায়ের কাম কি বলো, লাভটা হবে কার?

কান্না বাড়বে মরলো যেজন, তারই আপন মার

ধ্বংস হবে পাহাড়, সাগর, প্রকৃতি মরুভূমি

ধ্বংসের দায় কে নেবে কও, নেতা নাকি তুমি?

 

পৃথিবী দিলেন মাবুদ, ভোগ দখলের জন্য

সেই পৃথিবী ধ্বংস করেই, তোমরা হলে ধন্য

হায় অভাগা মানব জাতি, আর কতটা নামবে

অনেক হইছে খুনখারাবী, এবার একটু থামবে?

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৪

কবির কথা নবী শোনেন

তার উম্মতে শোনে না

তাঁর উম্মতে পাগল ভাবে

কবিকে কেউ গোণে না

 

কবির কি কাজ সে কথাটা

লেখা আছে কোরানে

নেকির আশায় কোরান পড়ে

কোরান-কথা কে শোনে?

 

নায়েবে নবী ইসলাম বুঝায়

নিজে ইসলাম বুঝে না

অর্ধেক পড়ে কলমা নিজে

বাকী অর্ধেক খুঁজে না

 

লাইলাহা-- আল্লাহ নাই

জিকির করে কয়

নায়েবে নবী নিজেও জানে

এটা সত্য নয়

 

ইল্লাল্লাহ কেউ না বললে

উল্টো মানে হয়

তবু কেন নায়েবে নবী

অর্ধেক কথা কয়?

 

শোয়ারাটা পড়ে দেখো

মুমীন কবির কাজ

সে বাণীটাই প্রচার করো,

সত্য বলো আজ

//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৫

বাবুল গেল কাবুলে

উত্তর পাড়ার বাবুলে

তার দোস্ত আবুলে

উইড়া গেল কাবুলে

সেইখানে দুই দোস্ত

রইয়া গেল গাঁ ভুলে

এমনকি নিজ মা ভুলে

 

আপেল আঙুর খাইয়া

পাহাড় দেখে চাইয়া

পাঠানরে কয় ভাইয়া

তাদের বাড়ি যাইয়া

দেখে দুইটা মাইয়া

ওদের নাগাল পাইয়া

বলে, তুমি নাও হবে

আমি হবো নাইয়া

 

ওরা এখন পাহাড়ি

ফলফলাদি আহারী

ভাত পায় না খাইতে

আকাশ দেখে রাইতে

পাহাড় থেকে পাহাড়ে

ঘুরে বেড়ায়, আহারে

//২০২০; ভোর ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৬

দুর্গম পথের যাত্রী যারা

ফের জেগেছে তারা

আনন্দেরই রব উঠেছে

জাগছে ঘুমের পাড়া

 

সেই খুশিতে চতুর্দিকে

পড়ে গেছে সাড়া

রব উঠেছে সবাই মিলে

মনের তিমির তাড়া

 

কারা, ওরা কারা?

কারা, ওরা কারা?

 

কোরান দিয়ে আজো যারা

জাগায় ঘুমের পাড়া

যারা ভাঙে শক্ত হাতে

অন্ধকারের কারা

 

আবার ওঠে দাঁড়া

উঠুক জেগে মৃত ধরায়

সকল ঘুমের পাড়া

 

ফেব্রুয়ারীর ছয়

বলছে যাদের আল্লাহ সহায়

কিসের তাদের ভয়?

 

চারিদিকের আঁধার তিমির

কাঁপছে ভয়ে আসছে শিবির

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৭

টাকা দে মা, টাকা

কিনবো শহর ঢাকা

এক হুকুমে থামিয়ে দেবো

গাড়ির সকল চাকা

ঢাকা হবে ফাঁকা

 

ঢাকা তখন থাকবে না আর

এতো ঝাঁকানাকা

যারা চাইবে আমার দিকে

চক্ষু করে বাঁকা

তাদের চোখে টানিয়ে দেবো

তিনটা ট্রাকের চাকা

কেমন হবে কাকা?

 

আলু ফলবে বাগুন ক্ষেতে

লিচুর মত পাকা

টাকা দে মা, টাকা

কিনবো শহর ঢাকা

দুর্বাঘাসে ভরে দেবো

দালান কোঠা পাকা

শহর হবে পদ্মা নদী

জাহাজ নাও আঁকা

যে শুনবে না আমার কথা

বলবো, ছাড়ো ঢাকা

 

হাসলো আমার কাকা।

বললো হেসে ওরে বুদ্ধু

আমার দিকে তাকা

 

এই যে দেখিস বিশ্বজগত

আকাশ দিয়ে ঢাকা

পাহাড় নদী ঝর্ণাধারায়

কার নাম বলতো আঁকা?

আমার হুকুম মানবি না যে

কর জগত ফাঁকা

এমন যদি বলেন প্রভু

কেমন হবে কাকা?

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৮

পাখি বলে, ভালো

তাড়াও মন্দ কালো

সূর্য বলে আলো--

সব হৃদয়ে জ্বালো

 

জাগো সকল বীর

জাগো তিতুমীর

মোছো আঁখি নীর

উঁচু করো শির

 

চারদিকে কী সাড়া

ছুটছে ওরা কারা?

আনছে নতুন ভোর?

করছে আঁধার দূর

 

ওরা নাকি শিবির।

আলো দিয়ে দিচ্ছে ঢেকে

দুখের আঁধার তিমির

//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪১৯

বিদায় হজ্জের বানী।

মানতে হবে দুটো জিনিস

কোরআন, নবীর বানী

এর বেশী-কম করতে গেলে

হবে নাফরমানি

 

চিল্লাইয়া কনঠিক কি না।

ইসলামটা কি বাড়বে কমবে

আল্লাহ নবীর হুকুম বিনা?

 

না না হুজুর, না না।

এটুক সবার জানা

 

কোরান এবং সুন্নাহ ছাড়া

ইসলাম কোথায় পাও

আষাঢ়ে সব গল্প বলো,

এসব কোথায় পাও

 

চিল্লাইয়া কনঠিক কি না।

ইসলামটা কি বাড়ে কমে

আল্লাহ নবীর হুকুম বিনা?

 

না না হুজুর, না না।

এটাও সবার জানা

 

কোন কিতাবে লেখা আছে

গাঁজা খেতে হয়

এসব চালাও আল্লাহর নামে

পাও না মোটে ভয়?

 

জিকির করো তালে তালে

লাফিয়ে পড়ো পরের গালে

এসব ছিল অতীত কালে?

তুমি কেনো করো?

ভাবটা দেখাও মস্ত আলেম

তুমি অনেক বড়ো

 

অহংকারটা ছাড়ো।

ভন্ডামীটা দাও তাড়িয়ে

পায়ের নিচে আরো

মিথ্যে বলা বাদ দিয়ে দাও,

দরকার হলে হারো

মনে রেখো তাতেই তোমার

বাড়বে সম্মান আরো

 

চিল্লাইয়া কনঠিক কি না।

ইসলামটা কি বাড়ে কমে

আল্লাহ নবীর হুকুম বিনা?

 

না না হুজুর, না না।

এটাও সবার জানা

//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২০

নেত্রী আহা খোলা মাঠ এসব কিতা কয়

মন্ত্রীর কাছে গেলেই নাকি দেহ দিতে অয়

মন্ত্রী যদি ধর্ষক হয় তো কর্মী কি বাদ রয়

তারা তখন চিল্লিয়ে কয়, জয় মন্ত্রীজি জয়

 

এমন দেশে বাস

নেতা নাকি যায় না হওয়া

ধর্ষণ করলে পাশ

ভালো মানুষ হলেই না কি

হতে হবে লাশ

কী কয়, সর্বনাশ

 

যেমন পাবলিক তেমন নেতা, নেতার কিসের দোষ

উপযুক্ত নেতা পাইছেন, হন না এবার খোশ

আপনারা তো এটাই চান, আলেম ধরে মারেন

কামাইতে তো কম পারেন না, আর কি কি কন পারেন?

 

খুব তো করেন ইসলাম, ইসলাম

ভন্ডামীটা ছাড়েন

নয় ভিতরের ইবলিশ শয়তান

গলা টিপে মারেন

//২০২০; ভোর ১২:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২১

শোনরে সাধের ভাগিনা

তুইতো জানিস কখন রাগি,

কখন আমি রাগি না

 

বিপদ দেখলে ঘুমাই আমি

মরলে মরমু, জাগি না

যদি বুঝি পারমু না

তখন আমি লাগি না

 

তোমায় আমি চিনি মামু।

আমায় দেখলে ঘুমাও তুমি

যখন ভাবো কিছু চামু

সবাই এখন খায় সিগারেট

তুমি আজো খাচ্ছো দামু

মামা বাড়ির আবদার করতে

কইতে পারো কোথায় যামু?

 

মামু।

যদি আসো বোনের বাড়ি

করো খালি খালি খামু খামু

বলতে পারো এতো খাওন

একলা আমি কোথায় পামু?

তুমি যাবা শ্বশুর বাড়ি

সঙ্গে আমি কেমনে যামু?

 

ভাগিনা।

চুরি করি সত্যি আমি

কিন্তু আমি মাগি না

হইতে পারি আসামীও

তবে তেমন দাগী না

আমার পাপের আমি ভাগি

তুই তো পাপের ভাগি না

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২২

সাম্বাদিকের '' বুঝে না

খবর লেখে পেপারে

তাও আবার যে সে বিষয়?

উন্নয়নের ব্যাপারে

তাইতো শুনি মন্ত্রী সাহেব

ওদের ওপর ক্ষ্যাপা রে

 

ঘরে ঘরে চাকরী দেবো,

চাকরীর কোন অভাব নাই

বাঙালি জাত এতো খারাপ

চাকরীর তাদের স্বভাব নাই

 

দেশ হয়েছে উন্নয়ন তাই

চাকরী ওদের লাগে না

সেই আরামে ঘুমায় ওরা

কামান দাগলেও জাগে না

 

বত্রিশ হাজার শ্রমিক বেকার

তথ্য লেখে পেপারে

উন্নয়ন দেয় খাওন ওদের

লেখে না ব্যাপারে

 

বিদেশ থেকে শ্রমিক এখন

হায়ার করে আনতে হয়

দেশের টাকা বিদেশে যায়

সত্য তাই মানতে হয়

 

কোটি কোটি টাকা এখন

পাচার হচ্ছে বিদেশে

রাস্তায় নামলেই জনগণকে

দিতে হচ্ছে ফি দেশে

 

উন্নয়নের টাকা ভাইডি

রোহিঙ্গারাও খাচ্ছে

দেশ ছেড়ে সে টাকা এখন

ভারত চীনও যাচ্ছে

//২০২০; ৪:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৩

ঠিকাছে

দুইশো টাকার প্রিয়জন

কিনতে গেলাম হাটে

পথে দেখি তিনটা পাগলা বসা নদীর ঘাটে

এক পাগলে অন্য জনের ময়লা পাটা চাটে

অন্য পাগল টানছে বিড়ি, ভীষণতর ডাটে

 

হাটে গিয়ে খাটে বসা

দোকানদারকে বলি

দুইশো টাকার প্রিয়জন, তিনটা ফুলের কলি

জলদি দেন, নইলে ঘাটের নৌকা যাবে চলি

নায়ের মাঝে একা আছে সুন্দরী বউ, পলি

 

দোকানদারে হাসে

বসেন আমার পাশে

প্রিয়জনের দাম দিয়ে যান, পৌঁছে দেবো খাটে

নইলে দেখবেন বারান্দাতে আলতো পায়ে হাঁটে

দেখবেন আপনার সময়গুলো খুব আনন্দে কাটে

 

বললাম দাদা ঠিকাছে

টাকায় একটু লিকাছে

চলে যাবে ওরা নিজেই, পা দুটো তো ঠিকাছে

চিনে রাখেন ওদের নিজে, নেটে ওদের পিকাছে

 

ফুলকলি দেন তিনটা

কাটুক ভালো দিনটা

পলি পাবে ফুলের কলি, কেমন হবে সীনটা

দোয়া করবেন যেনো আমার ভালো কাটে দিনটা

//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৪

মাগো,

ফজর নামাজ পড়তে হবে,

তুমিও মা জাগো

 

আজান হচ্ছে, ওঠো মাগো,

বাজানকে ডাক দাও

আমি যাচ্ছি অজু করতে,

তুমিও মা যাও

 

মাগো,

ভোর হয়েছে, আজান হচ্ছে,

ঘুমকে বলো, যাও

পুরোটা রাত ঘুমিয়ে গেলো,

আর কি তুমি চাও?

 

মাগো,

ইবলিশ যদি আদর করে,

ঘুম পাড়াতে চায়

সে যেন মা তোমার থেকে

কঠিন ধমক পায়

 

মোরগ ডাকে কুক কুরু কু

ফুল পাখি কয় আয়

সকাল বেলার মিষ্টি সুবাস

কে লাগাবি গায়

 

মাগো,

যে মাখেনি ভোরের বাতাস

কখনো নিজ অঙ্গে

করেনি মা নামাজ রোজা

যেয়ো না তার সঙ্গে

 

চিরদিন তো তুমিই মাগো

আমাকে রোজ ডাকো

তবে কেনো এই সকালে

ঘুমিয়ে তুমি থাকো?

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৫

আমার সেরা সৃষ্টিরে তুই

করিস অপমান

তারপরে তুই দাবী করিস

কেমনে মুসলমান

 

যেই মানুষের জন্য বানাই

দুনিয়া জাহান

কোন সাহসে তার বদনাম

করিস নাফরমান?

আমার সৃষ্টির বদনাম করার

কোথায় সাহস পাস?

জানিস নারে তুই যে আমার

নাখান্দা এক দাস

 

এক ফোঁটা তুই নাপাক পানি

দাবী করিস রাজা রাণী

তুই যে আজও মানুষ আছিস

সবটাই আমার মেহেরবাণী

//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৬

বাংলা নামে একটা দেশ

হিংসা তারে করলো শেষ

প্রেম পীরিতি নিরুদ্ধেশ

চলছে দেশে ভাষণ বেশ

জয় বাংলা, বাংলাদেশ

 

রাষ্ট্র করে গুম খুন

কাটা ঘায়ে দেয় রে নুন

খায়রে বসে আফলাতুন

পাবলিকে খায় কাঁচা চুন

 

যে রাজা সে টাকা চোর

মাঝরাতে তার হয়রে ভোর

ব্যস্ত সবাই খুঁড়তে গোর

দেশ ছুটে যায় মরণপুর

 

আমি কবি কান্দি

কাফনের গিট বান্ধি

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৭

বিশ টাকাতে বিষ মিলে না

দুইশো টাকা চায়

বিষ কি এখন মায়ে পুতে

মিলেমিশে খায়?

 

তবে কেন বিষের দাম

বাড়লো এতো বেশী

বিষ কি তবে পাচার করে

আজো এলোকেশী?

 

না না মামা বিষতো এখন

উন্নয়নে ভাসে

বিষ দেখা যায় বাসে এবং

মাঠের দুর্বাঘাসে

 

বিষ তো এখন ধর্ষিতাসব

যুবতীরা খায়

আর নাকি খায় গুমের ভয়ে

যুবক ছেলের মায়

 

তাই বেড়েছে বিষের দাম

উন্নয়নের ঠেলাতে

বিষ তো মিলে মার্কেটে

নানা রকম মেলাতে

//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৮

ভালোমন্দ রান্না হলে একলা কি ভাই খান?

নাকি আসুক বন্ধু স্বজন, এটাই মনে চান

আনন্দটা একলা একা কেউ কখনো খাই না

একলা বসে আড্ডাবাজির মজা কিছু পাই না

 

জমিয়ে মারি আড্ডা যদি বন্ধু স্বজন পাই

তবে কেন ভালো লেখা শেয়ার করি নাই

আমি পড়ে পাইছি মজা, বন্ধুরাও তা পাক

এমন একটা ম্বপ্ন বন্ধু তোমার মনেও থাক

 

বেশ লেগেছে এই লেখাটা, পড়ে দেখো ভাই

সত্যি বলছি, এমন লেখা, তুলনা যার নাই

ভাবতে পারো, এটাতো ভাই আমার লেখা নয়

তাতে কি ভাই, যে জিতে যায় গাইতো তারই জয়

 

কোন বাগানে ফুল ফুটেছে তাতে কি যায় আসে

আমি খুশি, চিত্তে আমার ফুলের সুবাস ভাসে

এই খুশিটা সবার মনেই যাক ছড়িয়ে যাক

এই খুশিটা আপনজনের মনে ভেসে থাক

 

নিজে লেখি মজার লেখা নয়তো নিজে পড়ি

ভালো কিছু পেলেই মামা আমি শেয়ার করি

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪২৯

লেখক যারা লেখেন

লেখালেখি শেখেন

লেখা পড়ে কে কি বলল,

ওসব কেন দেখেন?

 

আপনি যা না, তা আপনাকে

চাটুকাররা বলবে

হরিণ শাবক হতে কভু

হাতির শাবক ফলবে?

 

ইর্ষাকারীর কথা শুনে

চিত্ত আপনার জ্বলবে

বাঘের মাসির লাত্থি খেয়ে

বাঘ কি কভু টলবে?

 

আপনার লেখা আপনি লেখেন

আপনার লেখা মন্দ না

জনগণ যা বোঝার বুঝুক

তারা তো আর অন্ধ না

 

ময়রার কাছে গিয়ে যদি

কেউ কখনো আচার চায়

তারা কি আর ময়রার কাছে

টক ঝাল মিষ্টি আচার পায়?

 

আপনি যখন লেখক আপনি

যত খুশি লিখে যান

কে কে দিল ফুলের মালা

কার কি কমেন্ট ভুলে যান

 

কেউ যদি কয় ভাল লেখেন

তারে বলুন, শেয়ার করো

ভাল যদি লেগেই থাকে

সবার কাছে তুলে ধরো

 

সস্তা কমেন্ট চাই না

হারাম কিছু খাই না

//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩০

এন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা

বাহাদুরীর শেষ নাই

দেহের ওপর মাথা আছে

মাথায় কোন কেশ নাই

কী আজব এক বেশ ভাই

 

মাথায় বুদ্ধির লেশ নাই

ভন্ডামীরও শেষ নাই

সবাই বলে বোকা যারা

তাদের কোন খেশ নাই

কী আজব এক দেশ ভাই

 

যা দেখো নাই, মানো না।

কিন্তু নিজের জন্ম হইছে

সে কথাও কি জানো না?

 

কেমনে সে দিন জন্ম হইছে

নিজের চোখে দেখেছো?

কে ছিল বাপ, কে ছিল মা

সেইটা লিখে রেখেছো?

 

তবে, কিসের বড়াই করো?

কার সাথে কি লড়াই করো!

 

নিজকে নিজে ঠকাও তুমি

ভন্ডামীটা ছাড়ো না

নিজে শয়তান সঙ্গে রাখো

তার সাথে কি পারো না?

 

জন্ম মৃত্যুর স্বাদ জানো না

তুমি অতি বুদ্ধিমান

তুমি নাকি মানতে চাও না

আল্লাহ নবী আলকোরান?

১০//২০২০; রাত ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩১

আমায় তুমি দিচ্ছো গালি

করছো গীবত, অপমান

ভাবছো তুমি চালাক অতি

তুমি অতি বুদ্ধিমান

 

নিজে খেঁটে পাপ কামাচ্ছো

দোযখ টানছো কাছে

এতে পাচ্ছি দুঃখ বন্ধু

আর কি বলার আছে

 

শিল্পী পাখি বাবুই হাসে

তোমার বুদ্ধি দেখে

কান্ধে বসে দুই ফেরেস্তা

তোমার কর্ম লেখে

 

দিচ্ছো গালি দিয়ে যাও

যা কামাচ্ছো নিয়ে যাও

তুমি কামাও তোমার পাপ

বইবে তুমি তোমার তাপ

১০//২০২০; রাত ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩২

আমি যারে ভালবাসি

বলতে আমার ভয় নাই

সত্যিকারের ভালবাসার

সত্যি কোন ক্ষয় নাই

 

আমি শুধু হাসি।

নিজের ভেতর লুকায় মানুষ

যারে ভালবাসি

 

ভালবাসার জন্য মানুষ

পাহাড় থেকে লাফায়

ভালবাসার জন্য মানুষ

সাগর জলে ঝাঁপায়

 

ভালবাসার জন্য মানুষ

গলাতে নেয় ফাঁসি

একটা কথাই বলে শুধু

তোমায় ভালবাসি

 

কিন্তু কিছু লেখক কবি

মনের কথা বলে না

বুদ্ধি দিয়ে চলে তারা

মনের কথায় চলে না

 

তারা টোকায় পাথরনুড়ি

দেখে হাসে চাঁদের বুড়ি

 

তাদের লেখায় সবাই হাসে

প্রেম কখনো হাসে না

জনগণও তাদের নাকি

কভু ভাল বাসে না

 

তারাই বন্ধু পড়ে লোভে

কভু কান্দে দারুণ ক্ষোভে

 

বলতো যদি পরাণ খুলে

আমি ভালবাসি

দুঃখ তাকে বলতো কবি

আমি তোমার দাসী

 

চলো সবাই হাসি।

পরাণ খুলে বলতে থাকি

আমিও ভালবাসি

১০//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৩

প্রভু

আমার জন্য তাই করো,

যাতে আমার মঙ্গল হয়

তোমায় ভালো বাসি পারি

তোমায় যেনো করি ভয়

যাতে আমার মঙ্গল হয়

 

আইছি কবে দেখি নাই

যাবো কবে জানি না

তুমি ছাড়া অন্য কারো

হুকুম যেনো মানি না

 

এমন এমন কর্ম করি

যাতে সবার কল্যাণ হয়

আমার আচরণ গো যেনো

করে সবার হৃদয় জয়

 

তোমায় ভালোবাসার নামে

যারা করে অভিনয়

আমার ঈমান আমল যেনো

তাদের মতো নাহি হয়

১১//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৪

ভালবাসা সর্বনাশা

সাবধানে তা খেতে হয়

ভালবেসে মায়ের ছেলে

মায়ের কাছে যেতে হয়

 

ভালবেসে আপন মনে

প্রাণপণে গান গেতে হয়

ভালবাসা দিয়ে তবেই

ভালবাসা পেতে হয়

 

ভালবাসা বানের জল

সব ভাসিয়ে আসে

ভালবাসা ঝর্ণাধারা

কলকলিয়ে হাসে

 

ভালবাসা নীলাকাশের

মেঘলা মেদুর কান্না

ভালবাসা অথৈ জ্বালা

ভাটিয়ালি গান না

 

তবু ভালবাসতে হয়

দুঃখ নিয়েও হাসতে হয়

১১//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৫

উচিত কথার ভাত নাই

উচিত কথার ভাত নাই

উচিত কথা বলে দেখো

দেখবা দুইটা দাঁত নাই

 

নইলে তোমার হাত নাই

উচিত কথায় শত্রু বাড়ে

তার তো দিন রাত নাই

 

উচিত কথা বলে যারা

তার তো চিত কাত নাই

রাগের ধারাপাত নাই

 

উচিত কথার ভাত নাই

উচিত কথা বলে দেখো

দেখবা তোমার দাঁত নাই

১১//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৬

কোন দেশে

গণহারে ধর্ষিতা হয় শিশু নারী কোন দেশে? ভোট চোরা ভোট নেয়রে রাতে কোন দেশে?

আচম্বিতে নাই হয়ে যায় যুবকেরা কোন দেশে?

চোর ডাকাতে পথে পথে ঘুরে বলো কোন দেশে?

 

তুমি তো খুব সত্যবাদী, বলো, আমি জানি না।

শীত রাতে খাই পান্তাভাত, মোটেও মিঠা হানি না

 

চোর ডাকাত লুটেরারা নেতা বনে কোন দেশে?

নিজের দলের নেত্রী ধরে খায় নেতাজি কোন দেশে?

সংসদে গান গায় নেতারা বলতে পারো কোন দেশে?

নারী রাজ্যে নারী কান্দে, বলতে পারো কোন দেশে?

 

তুমি তো খুব সত্যবাদী, বলো, আমি জানি না।

শীত রাতে খাই পান্তাভাত, মোটেও মিঠা হানি না

 

হীরক রাজার হুকুম ছাড়া, যায়না পথে কোন দেশে?

চাপার কাছে হারও মানে, জনগণে কোন দেশে?

স্বাধীনতা লুট করে খায়, লুটেরারা কোন দেশে?

ফেসবুক, নেটে আন্দোলন করে বীরে কোন দেশে?

 

তুমি তো খুব সত্যবাদী, বলো আমি জানি না।

সারা দেশের জনগণ কেউ, কবির কথা মানি না

 

রাজপথ দিয়ে নৌকা চলে, বলো দেখি কোন দেশে?

কারাগারে মাকে রেখে, ছেলে ঘুরে কোন দেশে?

শুভঙ্করের বাজা রানী বাস করে কও কোন দেশে?

জনগণের নাম ভাঙিয়ে এসব চলে কোন দেশে?

 

তুমি তো খুব সত্যবাদী, বলো, আমি জানি না।

শীত রাতে খাই পান্তাভাত, মোটেও মিঠা হানি না

 

সব সয়ে যায় জনগণ

রাজার কেন বদনাম কন?

যেমন পাবলিক তেমন রাজা

আসেন খান বাদাম ভাজা

১২//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৭

বইমেলা

পঁচিশ কোটি বাংলাভাষী

পঁচিশ লাখ তো দূরে

পঁচিশ হাজার বই বিকাইছে

শুনলে মাথা ঘুরে

 

বই যদি যায় পঁচিশ শত

মন খুশিতে ওড়ে

আমার বইটা পঁচিশ শত

লোকের হাতে ঘোরে?

 

নতুন লেখক পঁচিশটা বই

হাতে নিয়ে তার

এক দুই তিনদিন করে

সপ্তাহ করে পার

 

বইটা তাহার বিক্রি হয় না

ময়না তারে কয়

ভাবিস না তুই বিক্রি হবে

আরেকটু তুই বয়

 

টুনটুনিটা টুন টুন করে

মিটিমিটি হাসে

বইপাঠকরা আসবে নাকি

দারুণ ফাগুণ মাসে

 

চলুন সবাই মেলায় যাই

দলে দলে বই টোকাই

১২//২০২০;

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৮

'মুই কি হনু' ভাবখানা এই--

আমি মস্ত কবি

যেমন নাকি কবি ছিলেন

নজরুল এবং রবি

 

এমনতরো অহংকার

গর্ব যারা করো

ইতিহাসের দুইটা পৃষ্ঠা

আবার তুমি পড়ো

 

প্রেম চেয়ে কেউ পায় না প্রেম

শুধুই দিতে হয়

অস্ত্রতে নয়, প্রেমটা দিয়েই

বিশ্ব করো জয়

 

এক আযহারী কোটি হৃদয়

কাড়লো প্রেমের টানে

প্রেম চেয়ে নয়, প্রেমটা দিয়ে

প্রেম সে টেনে আনে

 

লেখায় ছড়াও প্রেমের বানী

প্রেম যদি কেউ চাও

মানুষ, প্রাণী, বৃক্ষ, জলে

প্রেম বিলিয়ে যাও

১২//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৩৯

  আজহারী

হায়রে বদনাম, হায়

উড়ে উড়ে আয়

বদনামের লাভ নানান জনে

নানান রকম পায়

কারো লাভে ক্ষীর হয়ে যায়

কারো পিঁপড়া খায়

কেউবা আবার লাভের খোঁজে

এদিক ওদিক চায়

হায়রে বদনাম, হায়

 

  আজাহারী তরুণ বক্তা, ছিলেন ফুলের কলি

হিংসুকেরা ফোটার আগেই চাইল মারতে ডলি

ছুঁড়ে দিল তারই দিকে বদনামের বিষ বাণ

উৎসুক মানুষ দেখতে এলো অঢেল অফুরাণ

 

অবাক হয়ে দেখলো তারা অনিন্দ্য এক ফুল

এক নিমিষে ভেসে গেল, নিন্দা মিথ্যার ভুল

আসলো ওড়ে ভাসলো নূরে নবীর আশেক কূল

কোটি মনে উঠলো ফুটে প্রেমের কোটি ফুল

 

যারে চিনতো লাখ জনতা, কোটি জনে চিনলো তারে

যুবক বুড়ো আসলো ছুটে, টানলো বুকে বারে বারে

 

বললেন তিনি, ভালোবাসো আল্লাহ রাসূল

আঁকড়ে ধরো কোরান হাদিস, ইসলামের যা মূল

 

কোটি জনের আইডল হলেন নিন্দা মন্দের ফলে

কোটি জনে প্রেমের মালা দিলেন তাহার গলে

 

হায়রে বদনাম, হায়

এই বদনামের ফসল এখন

আজহারী সাব খায়

১২//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪০

আগুন জ্বলে হৃদয় তলে ফাগুন যদি আসে

আমার দুঃখে দারুণ সুখে, সর্বনাশী হাসে

 

কেউবা দেখে মধ্য দুপুর, আমি আঁধার কালো

কি দোষ ছিল আমার বলো, অনল কেনো ঢালো?

 

অনল ঢেলে বাগান পোড়াও, পোড়াও ফুল ফল

সে অনলে পোড়ে আমার আকাশ সুনির্মল

 

আমার সুখ তো নিয়ে গেছে দারুণ সর্বনাশে।

সুখের পাহাড় বানের জলে লাশের মতো ভাসে

 

দুঃশাসনে নিঃস্ব হয়ে বিশ্বে সুখের নাও

বলে সখি এবার বসে দুখের অনল খাও

 

ফাগুন এখন আগুন জ্বলা দুঃসাশনের রাত

ফাগুন মানে জাহান্নামের অগ্নিমোড়া হাত

 

ফাগুন বলে, বীর জনতা হয় না কুপোকাত

ফাগুন মানে আঘাত এলে চালাও প্রতিঘাত

১৪//২০২০; ৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪১

ভেবেছিলাম তোমায় নিয়ে ভাসাবো গো তরী

চারিদিকে তাকিয়ে দেখি বাতাস ভীষণ অরি

 

জলে আছে কুমীর ওগো বাইরে ডাকাত দল

ঝড়ো হাওয়ার তান্ডবে হায় পানি ছলাৎছল

ভীষণ দইরার ঢেউ দেখে গো আমি ডরে মরি

 

চিরকাল ঝড় রবে না, যাবে আঁধার কালো

ভোরের বাতাস হতাশ মনে জ্বালবে আবার আলো

শক্ত হাতে হাল ধরো ভাই, দুর্যোগে যাও লড়ি

 

ইমাম হোসেন শহীদ হলেন, এজিদ ওতো নাই

তবে তোমার কিসের ডর, ভয় কিরে কও ভাই

সবাই মিলে দেশটা আহা, চলো আবার গড়ি

 

ঝড়ের রাতে আমরা কজন চালাই ছোট্ট তরী।

দমে দমে আল্লাজীর নাম, বারে বারে স্মরি

১৫//২০২০; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪২

চলেন এবার ভাই

রাঙামাটি যাই

মটরদানা খাই

তাইরে নাইরে গাই

 

দুনিয়া সর্ষে দানা

তাতেই থাকে মানব ছানা

কাজ শুধু তার -না, যা-না

কি যে আজব কান্ডখানা

 

তার মাঝে কেউ খুনী হয়

কেউবা সাগর-রুনি হয়

কেউ হয়ে যায় জালিম জন

পর হয়ে যায় আপনজন

 

কেউ গোপনে পাপ করে

ভাবে, খুবই লাভ করে

যে যা ভাবার ভাবতে দাও

পারলে হারাম ছেড়ে দাও

১৫//২০২০; ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪৩

মুজিববর্ষ মুজিববর্ষ

হর্ষ করো ভাই

বর্ষ জুড়ে চলো সবাই

কোর্মা পোলাও খাই

 

উন্নয়নের জোয়ার বইবে

হইবে সবাই ধনী

সবাই পাবে একটা করে

আবার সোনার খনি

 

কার কার ঘরে বিদ্যুৎ নাই

কার ঘরে নাই পানি

বিদ্যুৎ পানি সবাই পাবে

একটা করে নানী

 

মুজিববর্ষ মুজিববর্ষ

হর্ষ করো ভাই

উনিশে কি বিশ্ব জয়

বছরে করি নাই?

 

সামনে আছে শুভদিন

ফোঁস যদি না করো

তবে আসো উন্নয়নের

হাতটা চেপে ধরো

 

যে দেয় না ছোবল তারে

কি লাভ বলো মারি

দাসখত দাও, সখি তুমি

যাও না ফিরে বাড়ি

১৫//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪৪

আসো আলো আসো ভালো, যাক আঁধারের ঘোর

যাক পালিয়ে মন্দ কালো, আসো আলোর ভোর

 

খোকা খুকু সবাই মিলে তুলছে নবীন শোর।

আসো ওগো আসো আলো, আসো আলোর ভোর

 

পাখপাখালির কিচির মিচির, ফুলের সুবাস কয়

পাপের আঁধার দূর করে দাও আল্লাহ দয়াময়

 

আয়রে নবীন খোকাখুকু, প্রভুর শোকর কর

মুঠো মুঠো আলোর ফুল, অন্তরে তোর ভর

 

আসে আলো হাসে আকাশ, বাতাস ডেকে কয়

আমার তোমার ক্ষয় আছে, নাইগো প্রভুর ক্ষয়

 

ক্ষয় নাই যার, ভয় নাই তাঁর, তিনিই পাবেন জয়।

তিনি ছাড়া থাকবে না কেউ, সবাই হবে লয়

১৬//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২২৪৫

আমরা কি আর মানুষ আছি?

আমরা তো ভাই রাজাকার

মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম

এই পেয়েছি পুরস্কার

 

রাজাকারের তালিকাতে

মন্ত্রী আমার নাম টানায়

চার যুগ পরে এই খবর

দেশবাসীকে সে জানায়?

 

যারা যারা মানুষ ছিল

মারা গেলো ফাঁসিতে

এই খবরে খুশি হইলো

পাড়াপড়শি মাসীতে

 

দেশের মানুষ গরু খায়

নিজেরে কয় মুসলমান

কথাটা শুনলে যার

চেতনাতে লাগে টান

 

বানায় সে আজব তত্ত্ব

কাঁঠালে হয় আমসত্ত্ব

২০/১২/১৯ ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪৬

একটা ছড়া লেখার জন্য

দশটা ছড়া লিখি

দশটা ছড়া লিখে আমি

ছড়া লেখা শিখি

 

সবাই জানে আমি আজও

ছড়ার নবীন ছাত্র

ছড়ার গাঙে ডুব দিয়াছি

একটু আগে মাত্র

 

ছড়া লিখি, কোথায় ছড়া?

পদ্য হয়ে যায়

খাদকের নাই অভাব তাই

পদ্যও কেউ খায়

 

ছড়ার নামে যদি ওটা

হয়রে কিশোর কবিতা

কে হেসে কয় কবিতা কই,

ওটাতো ভাই গবিতা

 

যাই হোক ভাই আমার তাতে

দোষ তো কিছু নাই

আমি যাহার বান্দা তাঁহার

গুণগান শুধু গাই।।

 

কবিতা হোক, গবিতা হোক

সবই তাঁহার দান

সব কৃতিত্বই মহান প্রভূর

যিনি মেহেরবান

১৬//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪৭

মৌমাছি যে মধু বানায়, তুমি সেটা পারো?

তবে কেন খুনি তুমি পরের জীবন কাড়ো?

 

উড়তে পারো পাখির মতো

ঘুরতে পারো মেঘের মতো?

যা বলি তা করতে গিয়ে, বারে বারেই হারো

কেন তবে খোদার প্রিয় মানুষ ধরে মারো?

 

কেউ যদিগো মারে এসে তোমার পিতা মাতা

কাঁদো কেন মাফি চেয়ে বাবার গুনাহখাতা

 

তোমার মনে কষ্ট লাগে

সুখ থাকেনা কারো ভাগে

পিতা মাতা সব মানুষের রোদ বৃষ্টির ছাতা

পৃথিবীতে একজনই, সুখের যোগানদাতা

 

তুমি অধম, বান্দা খোদার, তুমি নীতির দাস

বাঁচতে হলে ঘৃণা তো নয়, করো প্রেমের চাষ

১৬// ২০২০;১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪৮

শুনছে বয়ান গোপী গাইন

যাচ্ছে বলে বাঘা বাইন

আগে বিচার পরে আইন

আগে ফাঁসি পরে ফাইন

 

উল্টাপাল্টা সিক্সটি নাইন

চলবে দেশে টাটকা আইন

পুরাণ আইন তো বাসি

হয় না তাতে ফাঁসি

যেই আইনে ফাঁসি নাই

সে আইন সর্বনাশী ভাই

 

হাসি আছে, দাসী নাই

পূজা আছে, খাসী নাই

রাশি আছে, মাসী নাই

গয়া আছে, কাঁসি নাই

চাষা আছে, চাষী নাই

সে আইন কি দরকার ভাই?

 

দরকার আছে, দরকার আছে

বুঝবি, তখন সরকার আছে

ইলিশ ঝুলবে নেবুর গাছে

আইন ঘুরবে ফাঁসির পাছে

 

শোনরে চন্দ্রা, মায় কয়

আগে ফাঁসির রায় হয়

রায়ের পরে আইন হয়

ফাঁসির পরে ফাইন হয়

শাহাবাগের সে মিছিলে

কে নাকি কার কী ছিলে

আইনের পরে ফাঁসির দাবি

ঠিক বলেছেন রাঙা ভাবী

 

উল্টাপাল্টা সিক্সটি নাইন

দিনে চলবে রাতের আইন

যাচ্ছে বলে, বাঘা বাইন

শুনছে বসে গোপী গাইন

১৭//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৪৯

জাগুন

ফাগুন এলো ফাগুন

জাগুন ভায়া জাগুন

স্বৈরশাহীর বিরুদ্ধে সব

আগুন হয়ে জাগুন

ডাক দিয়েছে ফাগুন

 

ডাক দিয়েছে ফাগুন

আগুন হয়ে জাগুন

রাজপথে নয় তাজা রক্ত

আগুন শুধু আগুন

এক হয়ে সব জাগুন

 

এক হয়ে সব জাগুন

ডাক দিয়েছে ফাগুন

জাগুন ভায়া জাগুন

জাগুন ভায়া জাগুন

১৮//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫০

ফেব্রুয়ারি মামা বাড়ি

চিতই পিঠা খাও

একটু পরে মিছিল হবে

কোথায় তুমি যাও?

 

ভাই দিয়েছে তাজা রক্ত

মায়ের ভাষার জন্য

স্বাধীনতা আনতে গিয়ে

বাপ হয়েছে ধন্য

 

পালিয়ে গেছে খুনিচক্র

স্বৈরাচারের ভূত

সেখানে ফের মেলছে পাখা

স্বৈরাচারের পুত

 

ভূতের কথা শুনে কে কে

ভয় পেয়েছিস ওরে

যা না বাপুআয় না তুই

পিন্ডি দিল্লী ঘুরে

 

মেজর জিয়াই না হয় দিল

স্বাধীনতার ডাক

স্বৈরাচারের কবল থেকে

দেশটা মুক্তি পাক

 

যুদ্ধ করবে ওসমানি সাব

এবং তাহার বাহিনি

মুক্তিযোদ্ধা পাইবে জেল,

স্বাধীনতার কাহিনি

 

একুশ আবার দিচ্ছে ডাক

সব স্বৈরাচার নিপাত যাক

১৮//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫১

খোদার আজব লীলাখেলা

বুঝা বড় দায়

কষ্ট করে কে মারলো মাছ

কারা বসে খায়

 

জামাত নেতা ফাঁসি দিয়া

জামাত করলো শেষ

এখন দেখি সেই জামাতে

ভরছে সারা দেশ

 

জানাযাতে জায়গা হয় না

নাই দাঁড়াবার ঠাঁই

দেশ বিদেশে জামাত নেতার

ভক্তের অভাব নাই

 

হায় আমি কী দেখিলাম

কোন বাংলাদেশ

ভাড়া করা ভেজাল সিনহা

ছিঁড়লো কাদের কেশ?

 

জামাত কি তয় মরে নাই

পাবলিক আমার ফরে নাই?

১৮//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫২

সই।

কাছে আয় তুই, তোর কাছে

গোপন কথা কই

 

জনপ্রিয় হওয়ার জন্য

চেষ্টা সবাই করে

সারা জীবন ভালবাসার

মানুষ খুঁজে মরে

 

পরষ্পরে পিঠ চুলকানির

চুক্তি করে কেউ

দুইটা কমেন্ট পেলে মনে

ওঠে খুশির ঢেউ

 

গ্রুপগুলোতো কমেন্ট করার

করে কত আইন

বাহবা যেন পায় লেখকে

করে কত লাইন

 

সই।

জনপ্রিয় হওয়ার জন্য

কেউবা লেখে বই

 

কেউবা আবার বাজনা দিয়ে

মিষ্টি সুরে গায়

কেউবা আবার যেচে গিয়ে

চায়ের দাওয়াত খায়

 

তবু নাকি মন ভরে না

মনে অনেক কষ্ট

সাহস করে সেই কথাটা

কয় না কেহ পষ্ট

 

এদিকে দেখ আজাহারীর

কোটি কোটি ভক্ত

যদিও তাঁর দলবল নাই

নাইরে গদী, তখত

 

সই।

এর কারণ কি সেই কথাটা

চুপে চুপে কই

 

ভালবাসা পেতে হলে

আগে ভাল বাসতে হয়

নিজের মনের গর্ব, ঘৃণা

লোভ লালসা নাশতে হয়

 

রাগ দেখালে রাগই পাবি

গালি দিলে গালি

তালি দিলে তালি পাবি

কালি দিলে কালি

 

রান্না যদি মন্দ হয়

ছি ছি লোকে বলবেই

ভাল হলে সেই তারিফ তো

জীবনটাভর চলবেই

 

কমেন্ট করো, ভাইরাল করো

বলতে কাউকে হবে না

প্রেমের টানেই কষ্ট করবে

বিরত কেউ রবে না

 

ভালবাসায় ভয় নাই

ভালবাসার ক্ষয় নাই

১৮//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৩

উন্নয়নের জোয়ারে দেশ

ভেসে যখন যাচ্ছিল

মুজিববর্ষের খানা তখন

মন্ত্রী বসে খাচ্ছিল

 

বাংলাদেশে এখন থেকে

মোগলাই, চায়নিজ চলবে না

কী চমৎকার কচুরিপানা,

পুকুর, বিলে দলবে না

 

ভাতের বদল আলু খাবে

কচুরি ফুলের ভর্তা

সংসদে আইন করেন

গণবান্ধব কর্তা

 

খালের জলে রান্না হইছে

কচুরিপানার স্যুপ

মজা পাইলে চলেন দেবেন

ড্রামের স্যুপে ডুব

 

এই পুষ্টিকর খানা আগে

গরু মহিষ খাইতো

এমনি কি আর দেহে তারা

এতো গোশত পাইতো

 

সুযোগ পাইলে বাঘে খায়

জ্যান্ত মানুষ ধইরা

তাইতো সে এতো শক্তি

রাখে দেহে ভইরা

 

মানুষ খাওয়ার বুদ্ধি যদি

কর্তা আমি পাইতাম

তবে কি আর গরু ছাগল

মুরগি আমি খাইতাম

 

তরতাজা সব কচুরিপানা

মুজিব বর্ষের নতুন খানা

১৮//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৪

একদিন

এই দেশে ফুল পাখি, গাছ নদী থাকবেই

একদিন মানুষেরা ঘুম ভেঙে জাগবেই

পাখি বনে ডাকবেই

শিল্পীরা বসে বসে ফুল লতা আঁকবেই

একদিন এই দেশে মজলুম জাগবেই

 

একদিন পথে পথে জনগণ নামবে

জালিমের শোরগোল তোলপাড় থামবে

পেশীগুলো টানটান, শরীর ঘামবে

একদিন মানুষেরা ফের পথে নামবে

জুলুমের তুফান একদিন থামবে

 

গোলাগুলি চলবেই

কড়া কথা বলবেই

মানুষের অধিকার পশু এসে দলবেই

তারপরও বনে বনে ফুল ফল ফলবেই

কেউ কেউ জনপদে হক কথা বলবেই

জনতার মিছিলও রাজপথে চলবেই

 

শ্লোগানে শ্লোগানে একদিন, জনপদ জাগবে

মিছিলে মিছিলে একদিন, রাজপথ কাঁপবে

যে ভাবার ভাববে

জনতার উত্তাপ কেউ কেউ মাপবে

তারপরও জালিমের ভয়ে বুক কাঁপবে

আক্রোশে বসে বসে শুধু শাপ শাপবে

 

মুক্তির পথ খুঁজে জনগণ মরবে

যুবকেরা বীরবেশে রাজপথে লড়বে

শোষকেরা মিছিলের টুটি চেপে ধরবে

জালিমেরা নিজ হাতে পাতা ফাঁদে পড়বে

যুবকেরা লড়বে

মরতে হয় মরবে

তারপরও জালিমেরে পরাজিত করবে

 

এই দেশে ফুল পাখি, গাছ নদী থাকবেই

মুক্তির মিছিলেও কেউ কেউ ডাকবেই

জনগণ চিরকাল স্বপ্নও আঁকবেই

অবশেষে ডাকাতেরা দলবেঁধে ভাগবেই

পাখিদের গান শুনে জনগণ জাগবেই

 

একদিন এইদেশে সুখ ফিরে আসবে

পুবাকাশে প্রভাতের সূর্যও হাসবে

সুখ ফিরে আসবে

ভাল সবে বাসবে

কোরানের রাজ ফের এদেশেই আসবে

ফুলশিশু ঘরে ঘরে প্রাণ খুলে হাসবে

প্রাণ খুলে হাসবে, প্রাণ খুলে হাসবে

১৮//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৫

এ্যান করেঙ্গা, তেন করেঙ্গা

পিটিয়ে মানুষ ম্যান করেঙ্গা

বলেছিল রিটনে

সেই তো বাবা মানুষ হলি

পুলিশ লীগের পিটনে

 

মা মারা যায় জেলে পঁচে

ভাই পলাতক বিদেশে

জোয়ান পোলা আদালতে

দিচ্ছে নাকি 'ফি' দেশে

 

চলছে আজব আন্দোলন

কোন পাষাণে বান্ধো মন

 

আন্দোলন কি দেখো নাই

অক্টোবরের আটাশে

আর্মি পুলিশ তোমার ছিল

আমার বুকের পাটা সে

 

যদি বুকে সাহস রয়

লগিরৈঠার আসে জয়

ইতিহাস দেখো নাই

তবে কেনো শেখো নাই?

১৯//২০২০; দুপুর ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৬

এই দেশে যে বিএনপি আছে

টেরটা কেনো পাই না

আমি না হয় দল করি না,

ভাত কি আমি খাই না?

জিয়ার জন্য গান যে লিখি

গাওয়ার দেখি মানুষ নাই

আমি তো ভাই লেখার মানুষ

গাওয়ার মানুষ কোথায় পাই?

আন্দোলনের ছড়া কাব্য

লিখি শতো শতো

অনাদরে পড়ে থাকে,

লিখবো বলো কতো?

কেউ করে না আবৃত্তি ও

কেউ করে না শেয়ারও

ওসব দিকে খেয়াল নেই

কেউ করে না কেয়ারও।

বিএনপি যে আছে দেশে

কেমন করে বুঝি ভাই

ভোট দিতে যায় পাবলিকে

গিয়ে দেখে এজেন্ট নাই।

মিছিল হলেই গুলি হয়

গুলি খাওয়ার নেতা কই

নেতা কি সব ঘরজামাই

আনতে গেছে মিষ্টি, দই?

সারাদেশে ভোটার ঘুরে

নেয়ার কোন মানুষ নাই

বলতে পারো কোথায় গেলে

ধানের শীষের নেতা পাই?

মরা ঘোড়া ডিম পাড়ে না

বাচ্চা দেয় না মরা হাঁস

লাভ কি বলো থাকলে বনে

মোটাতাজা বরাক বাঁশ?

১৯/২/২০২০; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৭

লেখা যদি পক্ষে যায়

আপনি সাজেন ভক্ত

যদি যায় তা বিপক্ষে,

আপনিই হন শক্ত

 

ছিলে ফেলেন চামড়া আমার,

পান করতে চান রক্ত

টের পান না কোন ফাঁকে যে

পাল্টে গেছে অক্ত

 

আপনি ছিলেন মজলুম তাই

আমি ছিলাম পক্ষে

আপনি এখন নিজেই জালিম,

প্রভু করো রক্ষে

 

কোন কথা কার পক্ষে যায়

সময় সেটা বলবে

আপনার মত কবিও কি

খোলস পাল্টে চলবে?

 

তাতো দাদা হবার নয়

কবি ন্যায়ের পক্ষে রয়

১৯//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৮

একতাই শক্তি, একতাই বল

একতাই সকলের হোক সম্বল

 

এক প্রভু, এক স্রষ্টা, একাকাশ, মাটি

একতাই সুখ আর শান্তির ঘাঁটি

একতার পথ ধরে চল আগে চল

একতাই শক্তি, একতাই বল

 

হানাহানি, সংঘাত, আর না, আর না

ঝগড়াতে ক্ষতি হয়, কার না, কার না

মারামারি, সংঘাত পায় দল, পায় দল

একতাই শক্তি, একতাই বল

 

দেশে দেশে আর নয় হানাহানি, যুদ্ধ

আর নয় রাগারাগি, মারামারি, ক্রুদ্ধ

আর নয় দেশ, মাটি, ধর্মের কোন্দল

সব শেষে একতাই হোক সম্বল

একতাই শক্তি, একতাই বল

১৯//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৫৯

অমানিশা ভোর হয় পাখিদের গানে

বলাকারা ওড়ে যায় সুদূরের পানে

উড়ে না বন্দী পাখি, মেলে না পাখা

মানবতা আজ তাই আঁধারে ঢাকা

 

আঁধার যাবে না ওগো, প্রভু দয়াময়

কোরআনের পাখি যদি না ডাকে সদয়

দাও দাও মুক্তি দাও কোরানের পাখি

কোটি কোটি জনতার ভেজা যে আঁখি

 

ডেকে ডেকে সব কথা তোমাকেই বলি

কোরানের আলো দাও, নির্ভয়ে চলি

রেখো না বন্দী আর কোরানের পাখি

সাড়া দাও, দাও সাড়া বেকারার ডাকি

 

আমাদের হৃদয়ে দাও, কোরানের আলো

মিটে যাক অমানিশা, আঁধারের কালো

মিটে যাক, যাক মিটে, আমাদের পাপ

মিটে যাক দুর্ভাগা জাতির  অভিশাপ

 

দাও দাও, আলো দাও, ভালো দাও প্রভু

নিয়ো না, নিয়ো না আর আঁধারে কভু

আজানের সুরে সুরে জাগুক জাহান

কোরানের পাখিরে দাও মুক্তি মহান

২০//২০২০; ভোর ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬০

কোরআন নিয়ে কে রে তোরা করিস বাড়াবাড়ি

কোরআন বুকে চেপে ধরতে কর না কাড়াকাড়ি

 

কোরআন কারো একার তো নয়

কোরআন সবার তরে

এই কোরআনকে আগলে রাখিস

সবাই মনের ঘরে

কোরআন দিয়েই ভবসাগর দিতে হবে পাড়ি

 

যে মানে না কোরআন সেও

কোরআনকে ভয় করে

বরকত হবে এই আশাতে

কোরআন রাখে ঘরে

সব মানুষই থাকবে সুখে কোরআন হলে জারি

 

হযরত ওমর কোবআন শুনে

মুসলিম হয়ে যায়

কোরআনের গুণ অমুসলিমও

আপন মনে গায়

ইহ-পরকালে কোরআন সঙ্গী কর নরনারী

২০//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬১

আমি হলাম লুচ্চা, বদমাশ, চক্ষু দিয়া খাই

তুইও যদি হেজাব পড়িস, আমি কোথা যাই

 

কর্ষণ করি, ধর্ষণ করি, বর্ষণ করি বিষ

যদি এসব করতে পারিস, মন্ত্রীত্ব তয় নিস

 

করোনাতে চীনের শহর বিরাণ যখন হয়

আমার দেশের নেতা মন্ত্রী এসব কথা কয়

 

আপনি ভাবেন খোদার গযব

আজো দেশে আসে নাই

চুরি, লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতি

কোনটাতে দেশ ভাসে নাই?

 

ধর্ষনেও সেঞ্চুরী হয়, ভোট ছাড়া হয় সরকার

এসব যদি গযব না হয়, করোনা কি দরকার?

 

আমার বউ-মা, মেয়ের ইজ্জত

লুটতে যারা আসে ভাই

আমরা থাকতে বেঁচে সবাই

কেমনে তারা হাসে ভাই?

 

এই কথাটার জবাব দেন, আপনি যদি মানুষ হন

মা-মেয়েকে ধর্ষণ করে, আপনি কেমনে বেঁচে রন

২০/০২/২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬২

ভালো কথা বলা ভালো

ভালো কাজ করা ভালো

ভালো পথে চলা ভালো

ভালো পথ ধরা ভালো

 

সত্য কথা বলতে হয়

ন্যায়ের পথে চলতে হয়

মিথ্যা পাপ দলতে হয়

অন্যায় হলে জ্বলতে হয়

 

মন্দটাকে ধরতে নাই

মিথ্যা ফাঁদে পড়তে নাই

মন্দ পথে লড়তে নাই

মন্দ কাজ করতে নাই

 

সুন্দর ভালো বাসতে হয়

হাসি দেখলে হাসতে হয়

মন্দ দেখলে নাশতে হয়

জগত ভালো বাসতে হয়

২০/০২/২০২০;৭টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৩

আকাশ বাতাস সাক্ষী থাকুক, সাক্ষী থাকুক চাঁদ

কোরআনের রাজ দেখা মাগো আমার বড় সাধ

 

দয়া মায়া স্নেহ প্রীতি, তাঁর কাছে সব জমা

তিনিই শুধু করতে পারেন অপরাধের ক্ষমা

যায় না তাঁকে বশ করা মা, পেতে হাজার ফাঁদ

 

এই যে পাহাড় বনবনানী, নদীর কলতান

এই যে মেঘের ভেলা মাগো, পাখপাখালির গান

সবই তাহার দান যে মাগো, সবই তাঁহার দান

 

সুখ শান্তি সব উপচে পড়বে, মানুষ হবে ভালো

সবার মনে থাকবে মাগো, আল কোরআনের আলো

বনে বনে গাইবে পাখি, প্রেমের সুসংবাদ

২১//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৪

ছেলে এসে বলল হেসে, লিখছো তুমি কী সব

তারচে বাবা দাও না তুমি আইসক্রিমের শপ

যখন ইচ্ছা তখন বসে আইসক্রিমটা খাবো

খাওয়া হলে খেলতে আমি চাঁদের দেশে যাবো

 

নইলে তুমি আসো

সেই হাসিটা হাসো

যেই হাসিটা তোমায় দিত নিউইয়র্কের বিশপ

একদিন আমায় দেখিয়েছিলে যখন ছিলে টি শপ

 

সত্যি দিলাম হেসে

বললাম একটু কেশে

কাব্য যদি না লিখি তো

কোথায় পাবে প্রেমের কাব্য

খাঁ বাড়ির বউ ঝি সব?

বলছিস তুই কী সব?

 

ছেলে আমার হাসে

রাঙা ফাগুন মাসে

জানি বাবা তুমি কবি, তাইতো তোমায়

দেশের লোকে এত্তো ভালোবাসে

 

আমার ঠোঁটে হাসি

কবি ছাড়া কই পাবি তুই শুদ্ধ প্রেমের চাষী

কে দেবে বল, বিশ্বজুড়ে হাসি রাশিরাশি

তবু জানিস তুই

দুনিয়ায় তোকেই আমি সবচে ভালবাসি

তোর সমান নয়, মামী চাচী, কিম্বা মিষ্টি মাসী

২১//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৫

বইমেলা সইমেলা

বইমেলা না সইমেলা, বুঝা বড়ো দায়

বইয়ের চেয়ে প্রজাপতি মেলাতে দোল খায়

প্রজাপতির রঙিন পাখা, কী অপরূপ রূপ

হাজার রহিম পুকুর পাড়ে, দেয় কিরে কেউ ডুব?

 

ডুবে ডুবে জল খেয়োনা, রোজা ভেঙে যাবে

ইফতারিতে ফলের রস কেমন করে পাবে?

বইমেলা হোক সইমেলা হোক, মেলা দাদা ঠিক

তুমিও ছিলে এই মেলাতে, এই যে দেখো, পিক

 

ভোমর, যদি ইচ্ছে করে, বইমেলাতে যাইও

নানা রঙের বইয়ের দিকে চক্ষু মেলে চাইও

নতুন বইয়ের সুবাস তুমি বিনা টাকায় খাইও

মনের সুখে গুনগুন করে প্রেমের গান গাইও

২১//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৬

অন্যায় দেখলে জ্বলে উঠতে

কোরআনে কি বলি নাই?

তওবা করলে বিশ্বাস করে

কখনো কি গলি নাই

পাপ জনপদ অবশেষে

দরকার হলে ডলি নাই?

 

এসব কিছু না করেই

কবি হইতে চাও

বলবো আমি তবে কবি

জাহান্নামে যাও

 

তোমায় আমি বললাম কবি

আগুন জ্বালো সমাজে

কোথায় বলছি সারাটা দিন

বসে থাকো নমাজে?

 

আমার কোরান তাদের জন্য

যারা ভালো থাকতে চায়

দরকার হলে জেহাদ করে,

মিষ্টির স্বাদও চাখতে চায়

 

জীবন মানেই কান্নাহাসি

বলো, সত্য ভালোবাসি

২২//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৭

আপনার যখন ইচ্ছা করছে

আপনি ওড়না বাদ দেন

কচি কটি মেয়ে ওদের

ওড়নায় কেন হাত দেন

 

আপনার যদি ইচ্ছা করে

টানবাজারে যান না

সেখানে কি পাঁঠা ঘোড়া

কোন কিছু পান না?

 

সরি, সরি, মাইন্ড কইরেন না

আমি ওড়না খুলি নাই

দেখে আপনার উদারতা

কুত্তার কন্ঠে বুলি নাই

 

কাপড় চোপর যা আছে সব

বাথরুমে থোন খুইল্লা

বলেন, আমি মানুষ ছিলাম

কবেই গেছি ভুইল্লা

 

নাম কি তার? আনোয়ার?

যা যা যা, জানোয়ার

মৃধা বাড়ির ডলি

তিনশ বছর আগে ছিল

বকুল ফুলের কলি

 

এখন কেউ আর চায় না

বিড়ালেও খায় না

২২//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৮

কখন একটা ছড়া হয়?

ছড়া দাদা গড়তে হয়

শব্দ করে পড়তে হয়

নড়ার সময় নড়তে হয়

চড়ার সময় চড়তে হয়

 

তখন একটা ছড়া হয়

শিশু কন্ঠে পড়া হয়

 

কখন একটা ছড়া হয়?

 

বাচ্চা যখন মরা হয়

মনের ভেতর চরা হয়

একাই একশ ধরা হয়

চিংড়ি মাছের বড়া হয়

 

তখন একটা ছড়া হয়

মজা করে পড়া হয়

 

কখন একটা ছড়া হয়

যখন রাজা কড়া হয়

শান্তি সুখের খরা হয়

জেতা ছেলে মরা হয়

 

তখন একটা ছড়া হয়

ভয়ে ভয়ে পড়া হয়

২২//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৬৯

নরম কইতে শরম লাগে

মাঘের শীতে গরম লাগে

তাই কথা কই মোটা দাগে

তবু তোমার খোটা লাগে?

 

আমার কিছু করার নাই

বড় সাবরে ধরার নাই

যা আছে ভাই বরাতে

তা হবে ভাই ধরাতে

 

মন্দ করে ভালো চাও

দুধু রেখে জলও খাও

ভোটের জন্য মক্কা যাও

পাপেই যদি মজা পাও

 

পূণ্য করার সময় কই

ব্যস্ত দেখি সমস্তই

জীবন বাড়ছে, বাড়ছে পাপ

নাইরে তবু অনুতাপ

২২//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭০

মাফ করে দেন ভাই

 

মাফ করে দেন ভাই

পাবনা ছিলাম তিন বছর

এখন যদিও নাই

সুযোগ বুঝে সেখান থেকেও

চম্পট দিলাম তাই,

এখন থাকি বনে বনে

কচি পাতা খাই

কচুরিপানা খেতে পারতাম

জঙ্গলে তা নাই

আমার কথায় আপনারা কেউ

দোষ নিয়েন না ভাই

সবার কাছে দুহাত তুলে

ক্ষমা ভিক্ষা চাই

মাফ করে দেন ভাই

মাফ করে দেন ভাই

 

কে বলেছে পাগল হইছি

ভুল কথা সব ভাই

বাপকে কারা ধইরা নিল

মায়ের খবর নাই

স্কুল থেকে ফেরার পথে

ক্যান যে গেল ট্রাকের তলে

ছোট ভাইটা ভাই

আজো বুঝি নাই

 

একদিন দেখি চেয়ারম্যানের

পোলা আইল বাড়িতে

তার লগে যে আরো কয়টা

পোলা বসা গাড়িতে

চেয়ারম্যানের পোলা নিজে

ধরলো আমার দাড়িতে

বললো, পাগলা চল খেলবো

একটু পুলিশ ফাঁড়িতে

কাল থেকে যে তোরে আর

চাই না নিজের বাড়িতে

পালিয়ে যা নিরুদ্দেশ, নয়,

মরবি মহামারীতে

সেদিন রাতেই বেহুশ হলাম

আঁধার রাতে, গাড়িতে

আর ফেরেনি হুঁশ গো দাদা

এখন থাকি তাড়িতে

 

মাফ করে দেন ভাই

আর দেখবেন না কোনদিন

ডালভাত আমি খাই

আর দেখবেন না গনতন্ত্র,

বলি আর গান গাই

আর দেখবেন না কোনদিন

নিজ অধিকার চাই

আর দেখবেন না কোনদিন

মিছিল করতে যাই

কোনদিনই আর দেখবেন না

মসজিদ মন্দির  যাই

কে বলেছে আমি দাদা

বোতল পানি খাই

এখন আমি মহারাজের

ঘোড়ার গুণও গাই

 

আগে আমি মানুষ ছিলাম

এখন মানুষ নাই

আবোল তাবোল কথা বললেই

তিনশ টাকা পাই

আমার কোন সরকারীদল

বিরোধীদল নাই

যে যখন যা ধরিয়ে দেই

তার গান তখন গাই

পাগল হওয়ার মতন সুখ

সংসারে নাই

 

আমার মতন সুখী মানুষ

ত্রিভুবনে নাই

কে কে আছেন, সুখী হবেন

চলে আসেন ভাই

আমরা সবাই পাগল বংশ,

পাগল হয়ে যাই

বাঙ্গাল জাতির মত পাগল

কোথায় পাবেন ভাই

 

আসেন বসে জিকির করি

মাফ করে দেন ভাই

মাফ করে দেন ভাই

মাফ করে দেন ভাই

২২//২০২০;  ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭১

এক যে ছিল রাজা।

রাজার ছিল ছয়টা গরু,

সবই তাজা তাজা

খুশিই ছিল রাজা

 

কিন্তু যদি হতো রাগ,

মারতো ধরে তারে

রাগের সময় রাজা মশাই

সামনে পেতো যারে

 

রাজার কথা বলি।

রাজার ছিল তিনটে রানী

একটা ফুলের কলি

সেই কলিটা রাজবাড়িতে

ছিল শাহাজাদা

শাহাজাদার দাদী ছিল,

ছিল না তার দাদা

দাদা নাকি মারা গেছে

খেয়ে বেশি আদা

বুঝেন কেমন গাধা

 

এক যে ছিল রাজা

গরুর মত রানীও ছিল

সবাই মোটা তাজা

সুখেই ছিল রাজা

 

একদিন হঠাৎ ঘটলো একি!

রাজবাড়িতে চলছে ঢেঁকি

দেখতে গেল সবাই

গিয়ে দেখে শাহাজাদা

ঢেঁকি ঘরে জবাই

 

কে করলো কান্ড!

 

রাজা বলে রানী,

কাজটা মন্দ জানি

 

হঠাৎ আমার উঠলো রাগ

সামনে শাহাজাদা

তাকেই আমি মারলাম কোপ

এমন আমি গাধা

 

রাগের ফল এমনই হয়

রাগের বশে জীবন ক্ষয়

রাগকে যদি কর জয়

জীবন তবে ধন্য হয়

২৩//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭২

বাবা যদি পিতা হয়

তাঁর মেয়ে কি মিতা হয়

নাকি মিতা মাতা হয়

এই মামলাটি নিয়ে

হেগে নাকি হাজির হবে

হরে কৃষ্ণ গিয়ে

 

ইয়ে।

এই কথা কি সত্য নাকি

গুল মেরেছে টিয়ে?

সত্য মিথ্যা যাচাই করবি

ফিঙে রে তুই গিয়ে?

 

নাচতে নাচতে ফিঙে যায়

পথে তিনশ আছাড় খায়

দাঁত ভেঙে যায় একটা

হারায় হাতের ব্যাগ টা

 

মামলা তখন কেঁচে যায়

আসামীরা বেঁচে যায়

তিন সুন্দরি হেসে যায়

বাদী নিজে ফেঁসে যায়

 

বাবা যখন পিতা হয়

মায়ের পেটের বোন কি তখন

মাতা কিম্বা মিতা হয়?

২৩//২০২০; ১০টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৩

আপনার লগে আমি নাই

রাতের বেলা ঘামি নাই

সবার তো আর মামী নাই

সুন্দরবনে থামি নাই

 

গলির মোড়ে মারে ঠেক

আপনে বলেন ছড়া লেখ

যে যা পারিস, করে খা

মাছ খাবি তো ধরে খা

 

আদালতে আদা খায়

দাদা এবং দাদী খায়

হার মেনেছি, আর না

এবার দাদা ছাড় না

 

বলেছি তো লড়মু না

গদীর হাতল ধরমু না

জাতি জাতি করমু না

বিশ্বাস তবু হয় না

ছাড় না এবার ময়না

 

যে পোলা তার বাপ মারে

সে জানে কার খাপ মারে?

আইন দাঁড়ানো লাইনে

এমন আইন তো চাই নে।।

২৩//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৪

হারজিত

মনের ভেতর আগুন জ্বালো

বনের ভেতর নয়

সেই আগুনে যাক পুড়ে সব

তোমার মনের ভয়

 

যে ঘরে ভাই বসত করে

রাঙা ভীতুর ডিম

সে ঘরে তো ভরা থাকে

অথৈ শীতের হীম

 

শীতের কাঁথায় ভয় ঢুকলে

কাঁপে ব্যাঘ্র মামা

শীতে কাঁপে বীর পালোয়ান

সোহরাব রুস্তম গামা

 

যার মনে রয় ভয়ের বাসা

কে ফিরায় তার হার

সে যদি যায় যুদ্ধের মাঠে

হারে বারংবার

২৩//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৫

ভূত জগতে নাইরে ভাই

ভূতের ভয়ে তবু

রাতে ঘরের বাইরে যায়না

হবু এবং গবু

 

ভূতের বাড়ি সাগরদাড়ি,

নগরবাড়ি ঘাটে

ভয়টা গিয়ে বসে থাকে

সোনার পালংখাটে

 

খাট থেকে আর ভয় নামেনা

লেপের ভেতর ঢোকে

ভয়ের বাড়ির মানুষ কাঁদে

নানা রকম শোকে

 

ভয়টা যদি দাও তাড়িয়ে

সাহস এসে কয়

রাজপথে আয় কে কে নিবি

জয় এনেছি, জয়

২৩//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৬

পদক ভাবনা

পদক নিয়ে ভাবুক দুদক

আমার ভেবে কাম কি?

পদকদাতা শুনেছে কভু

এই অধমের নাম কি

 

চুপ থাকেন না কবি মশাই

নইলে খাবেন ধামকি

মোশাহেবেই পদক পাবে

কবির জন্য খাম কি?

 

যারা করে পদক ব্যবসা

ব্যবসা করে হোক বড়

পোলাপানে কই ঘুমাবে

যদি পদক রয় ঘর

 

পদক রাখার জায়গা নাই

বাড়ি তো নাই ঢাকাতে

সবই যখন নিচ্ছে ডাকাত

পদকও নিক ডাকাতে

২৩//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৭

কোথায় ছিল রক্ষীসেনা কোথায় সেনাবাহিনী

কেমন করে ঘটে গেল আচানক কাহিনী

ঘুমের থেকে জেগে শুনি, মা বাবা ভাই নাই

মনে হলো, কী লাভ বেঁচে, আমিও মরে যাই

 

কোথায় ছিল আর্মি পুলিশ রক্ষী সেনার দল?

কারা মারল বাপকে আমার মা-ভাইসহ বল?

বাবার সাথে গল্পগুজব (!) ড্রয়িংরুমে বসে

করতো যারা তাদের হাতে মরল বাবা শেষে!

 

সাঈদী হুজুর বাপ মারেনি, জেনে গেছি পষ্ট

নিজের ছেলে বাপ মেরেছে এটাই বুকে কষ্ট

মানুষ একবার নষ্ট হলে, কি পরিমান হয়

সেটা ভেবেই মনে আমার কষ্ট জেগে রয়

 

বাপের সেনা বাপের অস্ত্র বাপের বুকে মারে

বাপের কেনা গুলি হায়রে বাপের জীবন কাড়ে

তবে কেনো আর্মি পুলিশ টাকা দিয়ে পালবো

ওদের পিছে রাষ্ট্রের টাকা কেন তবে ঢালবো?

 

তাই ভেবছি এখন থেকে আর্মি পুলিশ বাদ বুঝে গেছি আর্মি পুলিশ সবই মরার ফাঁদ।

২৪//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৮

আপনে কেডা, আমার মেয়ের

ওড়নায় কেন হাত দেন?

এতো সাহস পাইলেন কই

দিন দুপুরে রাত দেন?

 

ভাবতো দেখান, চাঁদ দেন

বারে গেলেই ভাত দেন

দেশের মানুষ বুঝে গেছে

দিনে কয়টা ফাঁদ দেন

 

সবকিছুরই সীমা আছে

সীমার বাইরে যাইয়েন না

কালা চোরার মত আপনিও

গণধোলাই খাইয়েন না

 

মনে রাইখেন কচি মেয়ের

বাপ-মা আজো মরে নাই

ভাইবেন না তার যুবক ভাই

বিদেশ গেছে, ঘরে নাই

 

আপনে করেন কোন দল দাদা

সেটা জানার দরকার নাই

ইজ্জত ধরে টান দিলে হায়

দেখবেন দেশে সরকার নাই

 

হাটের কিল আর মাঠের কিল

বুঝবেন তখন একাকার

সময় থাকতে মুখ খোলেন,

বলেন, আইন লেখা কার?

 

গণ ধর্ষণ, বন ধর্ষণ, দেখবেন সবই শেষ

ওড়নাপরা মেয়েগুলো বোরকায় ঢাকে কেশ

২৪//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৭৯

ছড়াপাখি

ছড়াপাখি ছড়াপাখি

যাওরে ওড়ে যাও

হৃদয়হীন শহর থেকে

সোনাতলীর গাঁও

 

গাঁয়ে আমার মা যে থাকে

টুকটুকি এক বোন

গাঁয়ে আছে তাল সুপারি

নাইরে টেলিফোন

 

গাঁয়ের মাঝে পুকুর আছে

আছে কাশের বন

নাই টেলিফোন টিভিও নাই

আছে মায়ের মন

 

সে মন জানে শহরে

আমি কেমন থাকি

ঘুমের মাঝে আমি কেন

মা মা বলে ডাকি

 

ছড়াপাখি ছড়াপাখি

যাওরে ওড়ে যাও

আমার মায়ের সাথে বসে

পান সুপারি খাও

২৫//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮০

আবার এলো ঈদ গো মামা

সবাই দেবে নতুন জামা

খেলনাগাড়ি, মজার পিস্তল কতকিছু দেবে

আমার মনের কষ্ট মামা, কেউ কি একটু নেবে?

 

তোর আবার কি কষ্ট মামা, নতুন জুতো চাই

জুতো না হয় আমিই দেবো, আর কি কি তোর চাই

আমার কাছে মন খুলে বল, কোন জিনিস তোর নাই

 

মামা,পাশের দেশ মিয়ানমারে, কিংবা ফিলিস্তিনে

কত কত এতীম শিশু, ঈদ কি তারা চিনে?

নাই বাবা মা, আপন স্বজন, পথে পথে কাঁদে,

তাদের জন্য ঈদের ক্ষীর, কে মামা কও রাঁধে?

বললে বলে, মা তো গেছে নীল আকাশের চাঁদে

মা-বোন যাদের আকাশ পরী

কেমনে তাদের কোলে চড়ি?

 

মামার মনে কষ্ট তিরতির করে।

কেমনে দেবো ঈদের খুশি

বলতো তাদের ঘরে?

 

মামা, জামা জুতো বাদ দাও এবার, দাও না নতুন বই

যে বই পড়ে আমি আবার সালাউদ্দিন হই

বীর কাসিমের মত যাবো অসহায়ের কাছে

বলবো নেবে? আমার কাছে ভালোবাসা আছে

গরীব দুখীর সহায় হবো, আমি হবো বীর

বলবে, আমার ভাগনে যেন সাচ্চা তিতুমীর

 

হবে মামা, হবে।

আমিই না হয় কিনে দেবো কোরান হাদীস তবে

বইয়ের সেরা বই

আমিই না হয় কিনে দেবো তোরে সমস্তই

২৫//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮১

কাঁচা হলুদ বাটুন

সুস্থ্য থাকতে হাঁটুন

গরীবেরা খেটে মরে

আপনিও একটু খাটুন

 

আপনিতো সেই বিশ্বনেতা

রঙিন ফিতা কাটুন

তারপরেও নিজের ময়লা

নিজেই দাদা ঘাটুন

 

রাতের বেলা খেলার আগে

মুরগীর পা- চাটুন

আমার মত আপনিওতো

রিটার্ণ টিকেট কাটুন

 

যাবো যখন এক ঠিকানায়

একটু জোরে হাঁটুন

হলুদ মেন্দি বাটুন

জন্ম হইছে এখন একটু

মরার জন্য খাটুন

এই নিন একটু গর্বের আচার

বসে বসে চাটুন

২৫//২০২০; ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮২

মশা

মশা।

তোরে দেখলেই যায়রে বুঝা

দেশের কী হাল দশা

যে পারে না খাইতে আহা

এক আঙুলের ঘষা

তারেই দেখি রাজার হালে

নাকের ডগায় বসা

এইতো দেশের দশা

 

মানি লোকের মান কিছু নাই

জ্ঞানী লোকের জ্ঞান

দেশ কি তবে চালায় এখন

ফরমান আলী খান?

নাকি চালায় দেশটা এখন

শুধুই মাছি, মশা

হায় কী করুণ দশা

 

বউয়ের পাশে বসা ছিলাম

সেদিন সন্ধ্যা রাইতে

চোখ পাকিয়ে বললো বউ,

কখন দিলা পারমিশন

আমায় চুমা খাইতে?

 

দিনরাত নাই, চুমায় খালি

তাও থামে না দিলে গালি

যখন তখন চুমো মারে

আমার নরম গালে

ইচ্ছে করে অসভ্যদের

কিলাই তালে তালে

 

হায়রে ফাজিল মশা

এই পীরিতি খসা

দিনে বলতি তোর জন্য

আনতাম কিনে শশা

 

মশা হেসে কয়

শোনেন মহাশয়!

কোন সাহসে আপনে আমায়

দেখান মারের ভয়?

জুতার বাড়ি খেয়ে মরছে

নমরুদ, সত্য নয়?

 

আমার কাছে রাজা উজির

প্রজা বড় নয়

তারেই ধরি, যারে ধরতে

প্রভু আমায় কয়

প্রভুর কথায় কাউকে আমি

অনেক ভালবাসি

প্রভুর কথায় কারো কাছে

যমের মত আসি

 

কিসের এতো দম্ভ দেখাও

কিসের দেখাও ভয়

কখনো কি হয় না বলো

তেলাপোকার জয়?

২৫//২০২০; ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৩

এবার ঈদে

ঈদ মানে যে কী আনন্দ, অথৈ সুখের বন্যা

ঈদ মানে যে মায়ের কোলে নয়া চাঁদের কন্যা

 

ঈদ মানে তো ফুল বাগানের সুবাসমাখা ফুল

ঈদ মানে তো ফুল কিশোরীর বেনী করা চুল

 

এসো এসো ফুলপাখিরা খুশিতে গান গাই

ঈদের দিনে ফুলের বনে যাই হারিয়ে যাই

 

এবার ঈদে শপথ নিলাম জগত ভালো বাসবো

বারে বারে ফুলের বনে ভ্রমর হয়ে আসবো

 

আমরা হবো মৎস্য কন্যা সুখের জলে ভাসবো

আমরা হবো চাঁদের মেলা হাজারো চাঁদ হাসবো

২৬//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৪

ঈদ মানে জিদ নয়, নিঁদ নয় রাতে

ঈদ মানে হাসিখুশি হাত রাখা হাতে

ঈদ মানে কাঁধে কাঁধ, মিলনের গান

ঈদ মানে ভালবাসা প্রাণ থেকে প্রাণ

 

আর নয় জেদাজেদি মারামারি দ্বন্দ্ব

আজ থেকে এইসব একেবারে বন্ধ

ভুলে যাও হানাহানি,কাটাকাটি, সংঘাত

আজ থেকে মুছে যাক দুষ্টের উৎপাত

 

ঈদ বলে প্রাণে প্রাণে বাঁধো প্রীতিডোর

মুছে যাক পাশবতা, আবিলতা ঘোর

ঈদ হোক সুবাসিত, বিকশিত মন

ঈদ হোক প্রেমময় পুষ্প কানন

 

ঈদ মানে আলোকিত সুবাসিত ভোর

ঈদ মানে মিলনের মহা প্রেম ডোর

২৬//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৫

সম্রাট এবং পাপিয়া।

এটুক খবর শুনেই কাকা

উঠলেন কেন কাঁপিয়া?

 

উন্নয়নের খবর কিন্তু

সবই আছে চাপিয়া

তার তল কি পাবে কেউ

এই জনগণ মাপিয়া?

 

ভেবে দেখেন উন্নয়ন

কোথায় বেড়ায় দাপিয়া

এই যে সম্রাট, পাপিয়া

গডফাদারের চাহিদাতে

ওরাই ওঠে হাঁপিয়া

 

হায় উন্নয়ন হায়।

উন্নয়ন যা দেখেন কাকা

সিঙ্গাপুরে যায়

উন্নয়নের মজা তখন

গডফাদারে খায়

 

নেত্রী এবং নেতা বলে

আয় পাপিয়া, আয়

জানলে কেউ বইলেন না

কে কার ঘরে যায়

 

আমার শুধু একটা ভয়

এদের পাপে কখন জানি

দেশটা ডুবে যায়

আমার মত ভয়টা ভাই

আরো কি কেউ পায়?

২৬//২০২০;

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৬

কাকা।

এই যে দেখেন টাকা

টাকার ওপর টাকা

তার ওপরে টাকা

ডানে টাকা, বাঁয়ে টাকা

চারিদিকেই টাকা

আকাশ, নদী, পাহাড়, সাগর

সবই টাকায় ঢাকা

টাকা দেখে ভয় কি পেলেন?

বেহুশ কেন কাকা!

 

হায়রে টাকা, হায়।

তোর জন্য কেঁদে কেঁদে

মরলো আমার মায়

অভাব দেখে ছোট বোনটা

কম দুখে বিষ খায়?

তোমার পোলা স্কুলে যায়,

আমার কারখানায়

হায়রে টাকা হায়

হায়রে টাকা হায়

 

কাকা।

জীবনেও শিখলেন তো না

আঙুল করতে বাঁকা

টাকার পায়ে তাইতো এখন

নানা রকম চাকা

কার পকেটের টাকা এখন

পকেট করে ফাঁকা

যাচ্ছে ওড়ে ঢাকা

হায়রে আমার টাকা

হায়রে আমার টাকা

 

কাকা।

শিখতি যদি আগেই তুই

আঙুল করতে বাঁকা

তবে কি তোর হাসপাতালে

লাগতো আজকে থাকা?

 

কাকা।

টাকার ওপর টাকা কাকা

টাকার ওপর টাকা

তার ওপরে সোনার বার

রাখা চাকা চাকা

বুঝলি এখন কোথায় আছে

তোর আদরের টাকা?

দেশটা কেন ফাঁকা?

২৬//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৭

মসজিদ পোড়ে, মানুষ পোড়ে

যাক না পুড়ে সব

ওগো প্রভু তোমার কুদরত

দেখাও এবার রব

 

কেন করবো কেয়ার প্রভু

দুষ্ট আজাজিল

অতীতেও কি দাওনি তুমি

মশা, আবাবিল

 

তোমার হাতে জীবন মরণ

তোমার হাতে সব

এমন জুলুম আর কতকাল

দেখবো প্রভু, রব?

 

তোমার কুদরত দেখাও প্রভু

ইস্রাফিলকে থামাও

চাইলে তুমি করতে পারো

বিশ্বটাকেই তামাও

 

অতকিছু চাই না প্রভু

বাঁচাও তোমার বান্দা

জানি প্রভু আমরা আজো

পাপের ডোরে বান্ধা

 

নাফরমানকে মুমীন বানাও

করো তাদের মাফ

জীবনকে শুদ্ধ করো

করো জীবন সাফ

২৬//২০২০; ৯টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৮

মুখে বলো আল্লাহ মালিক

কাজের রেলা মানো না

গোলাম যদি অবাধ্য হয়

শাস্তি তার হয় জানো না?

 

তোমরা নামেই মুসলমান

কাজের বেলা নাফরমান

 

তাইতো বান্দা খোদার রহম

ভাগ্যে জোটে না

আধা ফোটা ফুলের কলি

আরতো ফোটে না

 

মানতে যদি খোদার হুকুম

খুশি হতেন প্রভু

সবই বুঝো এই কথাটা

বুঝলে নাতো কভু

 

যদি খোদার হুকুমগুলো

সত্যি তুমি মানতে

তবে কি আর বসে বসে

বিশ্বজুড়ে কানতে

২৭//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৮৯

যদি আমি জানতে পারতাম

জীবনে মরবো না

তবে আমি বলতে পারতাম

মিছিল আমি করবো না

 

বাঁচবোই যখন ঝুটঝামেলায়

জড়িয়ে আমার লাভ কি

সয়ে গেলেই নারকেল হয়

কচি থাকে ডাব কি?

 

মিছিল করে লাভ কি বলো

শুধু শুধু ঝামেলা

তুমি বলো আজিব খাব

কেউ বাঁচে না আমেলা

 

কেউ যদি না বাঁচেই তবে

এতো ভেবে লাভ কি

মরণ এলে ফিরায় বলো

কারো আপন বাপ কি?

 

তবে লেখেন নেতা।

ছেলেকে পাবেন আপনি

সব মিছিলে চেতা

২৭//২০২০; বিকাল ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯০

এই ধরাতে নানান প্রাণী, পশু পাখি সব

থাকবে বলে মানব শিশুর থামবে কলরব?

 

মানুষ যদি না থাকে তো শুধুই পশুর জন্য

কী দরকার ফুলের শোভা, জগত অনন্য

 

চাঁদ মামাটা সিষ্টি হেসে বাসবে ভালো কারে?

মানুষ যদি না থাকে তো জগত সংসারে?

 

একে অন্যে বাসবে ভালো, জড়িয়ে ধরবে গলা

কে খাবে এই ফলফলাদি, আম্র, আপেল, কলা?

 

পৃথিবীর রূপ-মাধুরী, সব মানুষের জন্য

শিশুরই কলকাকলির জন্য জগত ধন্য

 

তবে কেনো মানুষ তুমি, পশুর খোলস পরো

ধর্ম বর্ণের দোহাই দিয়ে মানুষ মারো, মরো?

 

এসো এসো মানুষ হই, মানুষ ভালোবাসি।

এই মানুষের দুখে কাঁদি, সুখে সবে হাসি

২৭//২০২০; ৮টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯১

কবে আমি মারা যাবো

একটু যদি জানিতাম

তবে না হয় বন্ধুবান্ধব

দাওয়াত করে আনিতাম

 

খানাদানার পরে বলতাম

এবার তোরা আরাম কর

হুজুর বলে কিসের আরাম

সবাই বসে দোয়া পড়

 

যম বাবাজি এসে বলতো,

চলেন দাদা কবরে

দেশের মানুষ জেনে যাবে

কাল পেপারে, খবরে

 

মাসেক আগে ভাল হতাম

মন্দ কাজ সব রেখে

এতেকাফে বসে যেতাম

পাকা মসজিদ দেখে

 

কিন্তু এমন কপাল ভাই

মরবো কখন জানা নাই

হুট করে ভাই যাই মরি

মরার আগেও পাপ করি

২৭//২০২০; ১১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯২

সবাই চলেন নেটে।

রিকসায় কিংবা হেঁটে

মায়ের জন্য কান্না করছে

কারা দেখি ঘেঁটে

তারপর সে কান্না চলেন

বিলিয়ে দেই বেঁটে

 

সবাই চলেন নেটে।

দয়া কিছু পান কিনা,

স্বৈরাচারকে চেটে

নেতা সাহেব ঘেমে গেছেন

দলের জন্য খেঁটে

মুখ দেখে কে বলতে পারে

আর কি আছে পেটে

দেখবেন চলেন নেটে

 

তাকিয়ে দেখে নেটে।

তিনটা পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে

নেতার বাড়ির গেটে

একটা পুলিশ লশ্বা মতো

দুইটা পুলিশ বেঁটে

পুলিশ দেখেই কামড় দিল

নেতার নরম পেটে

 

এরই মধ্যে যারা নাকি

বসেছিল নেটে

চিল্লিয়ে কয় দেখরে মাকে

হাসপাতালের গেটে

দরদরিয়ে রক্ত পড়ছে

মায়ের মাথা ফেটে

মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে

মাথা গেছে কেটে

 

দেখছে সবাই নেটে।

মা বলছেন, বাবারা সব

বেশ লড়েছিস খেঁটে

এবার সবাই যা না ফিরে

নিজের বাড়ির গেটে

 

খাটের তলে কলা আছে

দুধভাত খা চেটে

যতোক্ষণ না আন্দোলনের

ক্লান্তি তোদের মেটে

 

দেখেন দেখেন নেটে

মা জননী বলছেন হেঁটে হেঁটে

২৮//২০২০; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৩

হাসি

আমায় দেখে হাসলে তুমি,

লাগলো আমার ভালো

একনিমিষে পালিয়ে গেলো

মনের আঁধার কালো

 

হাসিতে যে লুকিয়ে থাকে

ভালোবাসার আলো

বিশ্বজুড়ে তাইতো সবে

হাসির চেরাগ জ্বালো

 

সোনামনির হাসি দেখে

মায়ের জুড়ায় প্রাণ

তোমার হাসি আমার প্রাণে

আনে খুশীর বান

 

সূর্য যদি হেসে ওঠে

পৃথিবী হাসে

হাসিই বলে, কে কাকে

কখন ভাল বাসে

 

ভালোবাসা স্বপ্নআশা

মায়ার মধুর ফাঁদ

দিনে হাসে সূর্যি মামা

রাতে সোনার চাঁদ

//২০২০; ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৪

এমন যদি হতো

মাছেরা সব ওড়ে যেতো

টিয়াপাখির মতো

হাতিগুলো পেয়ারা খেতো

কাঠবিড়ালির মতো

তবে, কী যে মজা হতো!

 

আহা, যদি এমন হতো

সবাই করবে শিল্পকর্ম

বাবুই পাখির মতো

রোগীর গায়ে হাত দিলেই

সেরে যাবে ক্ষত

আহা, কী যে মজা হতো

 

যদি এমন হতো

মানুষগুলো প্রভুর কাছে

সবাই নত হতো

ঠিক প্রকৃতির মতো

তোমার চোখে তাকালেই

তোমার মনের দুঃখ কষ্ট

সারতো সকল ক্ষত

কি যে মজা হতো

//২০২০; ৬টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৫

ফজর হলো ফজর হলো জলদি ওঠো ভাই

একটু পরেই সূর্য উঠবে, ঘুমের সময় নাই

ডাকছে পাখি কিচিরমিচির ফুলের সুবাস কয়

তুমিই যদি ঘুমিয়ে থাকো কে করবে দেশ জয়?

 

জাগো জাগো কচিকাঁচা, কিশোর যুবক প্রাণ

জলে স্থলে তোমার রিজিক আছে অফুরাণ

সেসব আজকে নাও কুড়িয়ে ভাঙো ঘুমের ঘোর

ওঠো ওঠো বীর বাহাদুর ডাকছে তোমায় ভোর

 

শোকর জানাও যাঁর করুনায় এলে ধরায় ভাই

বলো বলো, তাঁর মহিমার তুলনা আর নাই

ফজর হলো ফজর হলো জলদি ওঠো ভাই

একটু পরেই সূর্য উঠবে, ঘুমের সময় নাই

//২০২০; ৩টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৬

স্বাধীনতার মাসে

স্বাধীনতার মাসে।

স্বাধীনতার ঘোষক মেরে

কোন খুনীরা হাসে?

কেমন করে স্বাধীনতার

খুনী দেশে আসে?

 

স্বাধীনতার মাসে।

কার ইশারায় দেশটা ভাসে

দারুণ সর্বনাশে?

স্বাধীন দেশে কোন সাহসে

খুনীরা সব হাসে?

 

স্বাধীনতার মাসে।

স্বাধীনতার অর্ধেক এখন

থাকে কারাবাসে

তার সন্তান থাকে এখন

বিদেশ, পরবাসে

 

স্বাধীনতার মাসে।

কার কারণে স্বাধীনতা

পালায় বনবাসে?

দেশ কি তবে চালায় এখন

অধীনতার দাসে?

 

স্বাধীনতার মাসে।

স্বাধীনতার রুটি কি খায়

পড়শি বাড়ির দাসে?

নইলে কেন দেশটা ভরে

মুক্তিযোদ্ধার লাশে?

 

স্বাধীনতার মাসে।

স্বাধীনতার খুনী বসে

দাঁত কেলিয়ে হাসে

//২০২০; ভোর ১২:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৭

উন্নয়ন তো অনেক হইছে

আর উন্নয়ন চাই না

রুশ থেকে তো গাই এসেছে

চীনের গাই আর খাই না

 

উন্নয়নের ঠেলায় বাড়ছে

পাড়ায় পাড়ায় পাপিয়া

পাপের ঠেলায় মাঝেমধ্যেই

দেশটা উঠছে কাঁপিয়া

 

ক্যাসিনোতে সম্রাট বাড়ছে

রাজা বাদশাহ কম না

এখন ঘুরে পাঁচ তারাতে

আগে ঘুরতো রমনা

 

উন্নয়নের ঠেলায় উঠছে

টাকার গায়ে পাখনা

দিল্লী প্যারিস যাচ্ছে উড়ে

পারলে আরো যাক না

 

দাম বাড়ছে পেঁয়াজ মরিচ

বিদ্যুৎ পানির মিটারও

তার সাথে পাল্লা দিয়ে

বাড়ছে দেশে চিটারও

 

চিটার এখন গীটার বাজায়

সিংগাপুরে বসিয়া

এমন তরো উন্নয়ন রে

ধর না চেপে কসিয়া

 

ওরে আমার রসিয়া

দেখিস কি তুই বসিয়া

পাপ কয়দিন এমন করে

যাবে রে দেশ চষিয়া

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৮

আসছে জুনে

যাবো মুনে

খাবো কাঁচালঙ্কা

 

হাসছিস তোরা

কপাল পোড়া

বলছিস লবডঙ্কা

 

কেনো মানুষ যায়নি মুনে?

মরছে যারা গুমে খুনে

তারা কোথায় যায়?

 

চাঁদের বুড়ির রান্নাবান্না

কারা ওসব খায়?

 

সবার চেনা

সবার জানা

শহীদ সেনা চাঁদে

 

হাসে খেলে

সঙ্গী পেলে

জোসনার ঘর বাঁধে

 

রক্তরাঙা জামা পরে

লাল টুকটুক লৌ

যেমন পরে বিয়ের দিনে

নওশার নয়া বৌ

//২০২০; ৫টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৪৯৯

আমার এতো বুদ্ধি কম

সহজ কথা বুঝি না

দুইশো টাকার বুদ্ধি শোন

কিনে দিবি  রোজিনা?

 

কাদের চাচার কথা পস্ট

সম্পর্কটা রক্ত দিয়ে বাঁধা

তোমার হলে অর্ধেক রক্ত

আমার বাকি আধা

 

দুইটা রক্ত মিশেই নাকি

জন্ম নতুন দেশ

আগে ছিল পূর্ববাংলা

এখন বাংলাদেশ

 

কার সাথে কে মিললো কখন

রক্ত কখন মিশলো

এই মিল কি পুরান নাকি

জানলে খবর দিস লো

 

মনে থাকলে প্রেমের টান

কে ফিরায় প্রেম কাদের খান?

//২০২০; ১টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-২৫০০

আমার ছড়া পড়ে পড়ে

আপনি ভালো বলেন

কিন্তু ছড়ার চাহিদা কি

আপনি মেনে চলেন?

 

ভোট লাগেনা পাপী নেতা

আপনার পাপে আসে

রাজা থাকে জেলখানাতে

দেশটা চালায় দাসে

 

তাও ছাড়েনা পাপকে জাতি

বাড়ায় আরো পাপ

এমনি কি আর বাড়ে দেশে

বিপদ, অভিশাপ?

 

ধর্ষণ বাড়ে, খুনখারাবি

বাড়ে দুঃশাসন

তবু ভয়ে প্রাণ কাঁপে না

দুষ্ট জনের মন

 

দোহাই লাগে দেশের মানুষ

পাপ অনাচার ছাড়ো

নইলে শত বিপদ তোমায়

ধরবে ঘিরে আরো

//২০২০; ৬টা

 

No comments

Powered by Blogger.