আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ১৮০১-১৯০০
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০১
খালা আমার
খালা
খালা আমার খালা
আছো নাকি ভালা?
আর রেখো না বুকে
পুষে
অথৈ রকম জ্বালা।
হৃদয় ঘরে দাও লাগিয়ে
শক্ত একটা তালা
তোমায় আমি এনে
দেবো
রঙিন ফুলের ডালা।
খালা আমার খালা
তোমার জন্য এই এনেছি
বকুল ফুলের মালা।
মনকে বলো দুঃখরে
তুই
এবার একটু পালা।
২১/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০২
কখন রাতটা
হবে ভোর
কখন রাতটা হবে ভোর
কাটবে অমা আঁধার
ঘোর।
আলো কখন হাসবে
রাতের আঁধার নাশবে।
কখন জাতির ভাঙবে ঘুম
কখন পাবে আলোর
চুম।
আবার জাতি জাগবে
কষ্টগুলো ভাগবে।
মানুষগুলো মানুষ হবে
আসবে ফিরে সুখ
তেপান্তরে হারিয়ে যাবে
সবার মনের দুখ্।
সেই আশাতে থাকি
আল্লাহ রাসুল ডাকি।
২১/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৩
আমি তখন
যে সব লেখা হারিয়ে গেছে
সে সব লেখা
নাই
তার জন্য কান্না
করলে
দুঃখ শুধু পাই।
তার জন্য লিখি না আর
কাগজ কলমে
সেই ব্যথা তো যাবে
না আর
অষুধ মলমে।
এখন লেখি ফেবুর খাতায়
ইথারে তা ভাসবে
ডাকলে তুমি তোমার
সাথেও
মিটিমিটি হাসবে।
অমর হয়ে কি লাভ বলো
আমি কি আর দেখবো
মাটির নিচে শুয়ে
শুয়ে
আমি কি আর লেখবো?
তোমরা যদি বাহবাটা দাও
সেটা নিও তুমি
আমি তখন থাকবো
শুয়ে
খোদার ভূমি চুমি।
২১/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৪
কারে যে
কি কই
কারে কি যে কই
পড়ার নামে লবডঙ্কা
পোলায় ছিঁড়ে বই।
চারিদিকে নানান গুজব
অযথা হইচই।
দাওয়াত খাইতে গিয়েছিলাম
তালপাতাতে দই।
কারে কি যে কই।
বুঝি না কার
ক্ষেতে কখন
কে দিতেছে মই।
কারে কি যে কই
বুইড়া দাদী ভাত
খায় না
খায় যে খালি
খই।
তসবি জপে সকাল
বিকাল
আয় তই তই তই।
কারে যে কি কই
মুখটা বুজে রই।
যখন যা পাই
দুহাত পেতে
নিজের করে লই।
চিনি না কে শত্রু
আর
কে যে প্রাণের
সই।
দেশটা হেঁটে যাচ্ছে কোথায়
কারে এসব কই
খুন করি নাই
আমি তবে
ভাল মানুষ নই।
কারে যে কি কই
আহা, কারে যে কি কই?
২২/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৫
কিসের বাহাদুরী
ইচিং বিচিং ধিচিং লাল
একটা লোকের কয়টা
গাল?
তিন গালে কেউ
খায় না
পাঁচ গালের নেই
বায়না।
সব গালই হয় দেশী
ধনী পায় না বেশী।
সকলে যায় মারা
কাঁদে সারা পাড়া।
কিসের করো বাহাদুরী
এ জীবনতো পাথর
নুড়ি।
২২/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৬
মিষ্টি মেয়ে
জরিনা
মিষ্টি মেয়ে জরিনা
আস্ত মানুষ পরী
না।
কালাজ্বরের বড়ি না
কিংবা টাকা কড়ি
না।
শরীরটা তার তুলতুলে
নাচে জরি চুল
খুলে।
আগের কথা যায়
ভুলে
নগদ কথা ভুলে
না।
মিষ্টি মেয়ে জরিনা।
হাসতে মানা করি
না
তার সাথে কেউ
লড়ি না
মানুষ ভাল পরী
না।
২২/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৭
মায়ের নরম
কোল
আলু পাতা আলুথালু তালের পাতা গোল
এ দুনিয়ায় সবচে
ভাল মায়ের নরম কোল।
বাতাস যখন বয় ঝিরঝির
কত্তো আরাম পাই
গাছের ছায়ার শান্তি
সুধা অন্য কোথাও নাই।
দেখতে ভাল আঁধার কালো মায়ের মাথার কেশ
এ দুনিয়ায় সবচে
ভালো নিজের আপন দেশ।
মায়ের ভাষায় কথা
বলে কি যে আরাম
পাই
মাতৃভাষার চেয়ে আপন
আর তো কিছু নাই।
ঝর্ণা নদী পাখপাখালির যখন শুনি গান
দুঃখ ব্যথা যায়
পালিয়ে জুড়ায় আমার প্রাণ।
এসব কিছু মহান
প্রভু আল্লাহ তালার দান
এসো সবাই একসাথে
গাই তারই গুণগান।
২৩/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৮
আমার দেশ
সাতের পরে আট
গাঁও গেরামের হাট।
ধান সরিষা পাট
মাঠের পরে মাঠ।
এইতো আমার দেশ
রূপের যে নাই
শেষ।
খাল বিল আর নদী
বইছে নিরবধি।
দুগ্ধ এবং দধি
গাছের পরে গাছ
বিলের জলে মাছ।
এইতো আমার দেশ
রূপের যে নাই
শেষ।
গাঙে পালের নাও
ঘুঘুর বাসায় ছাও
যেদিক পানে চাও
সবুজ শ্যামল গাঁও।
এইতো আমার দেশ
রূপের যে নাই
শেষ।
মুগ মুসুরি ডাল
সবই ছিল কাল
আজকে সবই শেষ
নাইরে সুখের লেশ।
এইতো আমার দেশ
সোনার বাংলাদেশ।
২৩/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮০৯
মায়ের চেয়ে
আপন
আমার কিছু ভাল্লাগেনা, মা যে কাছে নাই
বলতে পারো মায়ের
আদর কোথায় গেলে পাই?
কখন আমি ঘুমিয়ে
থাকি, কখন আমি খাই।
মা-ই শুধু
জানতো আমি কখন যে কি চাই।
সে মা গেছে ফাঁকি দিয়ে না ফিরানোর দেশে
আমি তখন কাঁদছি
বসে একলা এতীম বেশে।
হুজুর বলেন, কাঁদো কেন? তুমি
তো নও বোকা
মায়ের চেয়ে আপন
আছে এই দুনিয়ায় খোকা।
মায়ের চেয়ে আপন আহা, বলুন কে সে তিনি?
আদর করে এই দুনিয়ায়
সৃষ্টি করলেন যিনি।
তিনি তোমার সঙ্গে
আছেন, থাকেন সারাক্ষণ
এই দুনিয়ায় সবার
চাইতে সেই তো আপনজন।
২৩/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১০
ঠিক বলি
নাই কেস্টা
কী যে দারুণ দেশটা
গরম পরিবেশটা
যুবতীরা ধর্ষিতা হয়
লাশ হয়ে যায়
শেষটা।
ঠিক বলি নাই
কেস্টা?
রাজা উজির বাঁচার জন্য
করে কত চেষ্টা
হাজার সৈন্য রয় পাহারায়
রাজা মরে শেষটা।
ঠিক বলি নাই
কেস্টা?
মরার সময় সবার নাকি
পায়রে ভীষণ তেষ্টা
সোনাদানা রয় পড়ে
সব
যায় না সাথে
লেশটা।
ঠিক বলি নাই
কেস্টা?
কীসের তবে বাহাদুরী
কীসের তবে গর্ব
সকল দাপট এক নিমিষে
যায় হয়ে যায়
খর্ব।
২৪/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১১
বৃক্ষ আছে
চারা নাই
তারা মিয়ার তাড়া নাই
ডাকেন কোন সাড়া
নাই
জেতা নাকি নাড়া
নাই
স্বপ্নে জিতে হারা
নাই।
বাড়ি আছে পাড়া নাই
গাড়ি আছে ভাড়া
নাই
শুয়ে আছে খাঁড়া
নাই
বান্ধা আছে ছাড়া
নাই।
জয়ের নিশান গাঁড়া নাই
তাতে তারার তাড়া
নাই।
তারার ভাত বাড়া
নাই
সঙ্গী সাথী যারা
নাই।
মরার কোন মারা নাই
তারা মিয়ার তাড়া
নাই।
গণতন্ত্র ভাড়া নাই
বৃক্ষ আছে চাড়া
নাই।
২৪/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১২
গুম কে করে
জানি না
মামাজান মামাজান
চলে যান আমাজান
বলে যান মামীরে
গদী বড় দামীরে।
গদি গদি করিস না
উল্টাপাল্টা লড়িস
না
বাঁশের লাঠি ধরিস
না
মরার আগে মরিস
না।
শোনরে সাধের ভাগিনা
এমনি কি আর জাগি
না।
জাগলে তুইও হবি
গুম
দিনদুপুরে পাড়বি ঘুম।
গুম কে করে জানি না
এসব কোন বানী
না।
২৪/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৩
উঁচু রাখো
শির
মিথ্যা কথা বলতে নেই
খারাপ পথে চলতে
নেই
সত্য কথা বলো
ন্যায়ের পথে চলো।
ফুলের কলি দলতে
নেই
পরের কান মলতে
নেই
ফুলের মত হও
নিজে ভাল রও।
ভয় তরাসে গলতে নেই
রাগের বশে জ্বলতে
নেই
হও সাহসী বীর
উঁচু রাখো শির।
২৪/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৪
বলনা আমায়
বল
একটা কথা বলি
কে দিয়েছে বাগান
ভরা
এতো ফুলের কলি?
কে দিয়েছে সাগর
ভরা
এতো অথৈ জল?
বল না আমায়
বল।
কে দিয়েছে ভোর বিহানে
আকাশ ভরা লাল
কে দিয়েছে লাল
মরিচে
এত্তো এতো ঝাল?
কে দিয়েছে মিষ্টি
মধুর
এত্তো এতো ফল?
বল না আমায়
বল।
আকাশ ভরা জোসনা দিল
দিনের বেলা আলো
কে ঢেলে দেয়
রাতের বেলা
এমন আঁধার কালো?
কে পাঠায়রে আষাঢ়
মাসে
এমন অঝোর ঢল?
বল না আমায়
বল।
২৪/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৫
চাঁদের কণা
খোকন সোনা চাঁদের কণা কোথায় ছিলি তুই
তোর হাসিতে আলো
হলো আকাশ পাতাল ভুঁই।
তোর এ মুখের
মিষ্টি হাসি আধো আধো
বোল
ভরিয়ে দিল সবার
হৃদয় শূন্য মায়ের কোল।
কোথায় ছিলি ধরায় এলি আবার যাবি কই
আয় না একটু
কাছে খোকন তরে কোলে
লই।
তুই আসাতে আলো
হলো আমার কুঁড়ে ঘর
সুখ সায়রে ভাসলো
খোকন আমার এ অন্তর।
দোয়া করি ভালো থাকিস করিস সবার ভালো
দিস মুছে তুই
সব হৃদয়ের অমা আঁধার
কালো।
আল্লাহ যেনো সহায়
থাকেন সকল কাজে তোর
তোর কারণে আসুক
ধরায় নিত্য নতুন ভোর।
২৪/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৬
তোমার নূরের
জ্যোতি
আল্লাহ আমায় সত্যি সত্যি বাসেন অনেক ভালো
তাই আমাকে দেন
পাঠিয়ে রাতে চাঁদের আলো।
বলেন, আমার নূরের
বাতি নিজ হৃদয়ে জ্বালো
দূর হয়ে যাক
মনের যতো মন্দ আঁধার
কালো।
আল্লাহ আমায় সত্যি সত্যি অনেক ভালোবাসেন
তিনিই আমার খারাপ
এবং মন্দগুলো নাশেন।
বিপদ দেখলে তিনিই
আবার ছুটে কাছে আসেন
আমার ভালো দেখলে
তিনি আপন মনে হাসেন।
তাই আমিও তাঁকেই বাসি অনেক অনেক ভালো
বলি, প্রভু তুমিই
আমায় এই দুনিয়ায় পালো।
তোমার নূরের জ্যোতি
প্রভু এই হৃদয়ে জ্বালো
তোমার অসীম প্রেমগো
প্রভু হৃদয় মনে ঢালো।
২৫/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৭
এমন আমার
রাজা
যারে করি রাজা
সে ধরে দেয়
সাজা
যারা ছিল নাদুস
নুদুস
ছিল তাজা তাজা
তাদের জীবন গরম
তেলে
করে ভাজা ভাজা।
একবার হলে রাজা
পাবলিক যেন ফোঁস
না করে
বিলায় অঢেল গাঁজা।
গাঁজার গুণে নাই
হয়ে যায়
হারাধনের মাজা।
কেউবা যদি ফোঁস
করে
তারে বলে যা যা।
এমন আমার রাজা
মানুষ মেরে হাসতে
পারে
যদিও নয় বাঁজা।
২১/৭/১৯ ।। রাত ১১:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৮
মারা যাবার
কিচ্ছা
কেউ বাঁচে না সবাই মরে
কারো মরা গৌরবের
কারো মরা বীরের
মতো
অযুত ফুলের সৌরভের।
কেউ মারা যায় পরের হাতে
কেউ মারা যায়
গভীর রাতে
কেউ মারা যায়
দিনে
কেউ মরে তো বাঁধা
থাকে
ভালবাসার ঋণে।
মরার ভয়ে কেউবা পালায়
রক্ষী সেনার সিন্ধুকে
তবু নাকি বাঁচে
না সে
এসব বলে নিন্দুকে।
সময় হলে আজরাইলের
সমন চলে আসে
কেউ মারা যায়
বিছানাতে
কেউবা দুর্বাঘাসে।
২৫/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮১৯
ইচ্ছে করে
আমার আবার ইচ্ছে করে ছোট্ট শিশু হই
মায়ের কোলে আধো
বোলে মিষ্টি কথা কই।
সবাই তখন রাখবে
ঢেকে আমায় অনেক আদরে
রাখবে ঢেকে আমায়
তখন ভালবাসার চাদরে।
আমার আবার ইচ্ছে করে ছোট্ট শিশু হই
পড়ার বদল ছিঁড়ি
আমি নিত্য নতুন বই।
আমার মুখে থাকবে
তখন মিষ্টি মধুর হাসি
আমায় ঘিরে থাকবে
শুধু সুখ যে রাশি
রাশি।
আমার আবার ইচ্ছে করে ছোট্ট শিশু হই
সারাটা দিন আমি
শুধু এ ওর কোলে
রই।
ইচ্ছে করে কল্প
কথা পল্প গাথা শুনি
ইচ্ছে করে সাত
সাগরের স্বপ্ন মনে বুনি।
কিন্তু আমার সে দিন তো আর ফিরে আসে না
আমি হাসি কিন্তু
আমার মন তো হাসে
না।
২৬/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২০
লোভ
লোভ করো না পরের মালে
লোভী পড়ে বিপদ
জালে
লোভে শুধু লোভ
বাড়ায়
ইজ্জত সম্মান সব হারায়।
কেউ পড়ো না লোভের জালে
লোভ করো না কোন
কালে
লোভটা অতি মন্দ
জীবন করে অন্ধ।
লোভে লোভে লোভ বাড়ে
জীবন যৌবন সব কাড়ে
লোভ মানে তো ধ্বংস
সে বিপদের অংশ।
লোভ মানে তো পাপ
সর্বনাশের বাপ।
২৬/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২১
ইচ্ছেগুলো
ইচ্ছেগুলো দিচ্ছে নাড়া যেনো উড়াল পাখি
ইচ্ছেগুলো বনের ভেতর
পাতায় ঢেকে রাখি।
ইচ্ছেগুলো তাল সুপারির
বন
ইচ্ছেগুলো সপ্ত রাজার
ধন।
ইচ্ছেগুলো যায় আকাশে উড়ি
ইচ্ছেগুলো নীল আকাশের
ঘুড়ি।
ইচ্ছেগুলো কলাপাতা হলুদ
ফুলের সারি
ইচ্ছেগুলো খাল নদী
বিল সাজানো ঘরবাড়ি।
ইচ্ছেগুলো সর্ষে ফুলের হলুদ বরণ মাঠ
ইচ্ছেগুলো নদীর বাঁকে
চম্পাবরণ ঘাট
ইচ্ছেগুলো জীবন বাঁচায়
আশায় রাখে বুক
ইচ্ছেগুলো থোকা থোকা
সবুজ বরণ সুখ।
ইচ্ছেগুলো নিচ্ছে শুধু নিত্য নতুন বাক
ইচ্ছেগুলো সুখে ছিল
সুখেই ওরা থাক।
২৬/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২২
খুনীও একদিন
মরবে
একটা নদীর দুইটা তীর
নদীর পাড়ে অনেক
ভীড়।
সবার ভয়ে বন্ধ
শ্বাস
নদীর মাঝে এ কার
লাশ?
লাশের বাড়ি অচীনপুর
লাশ ভেসে যায়
সমুদ্দুর।
আহা কার যে আপনজন
সবার দেখি বিষাদ
মন।
চক্ষু মেলো আবার চাও
লাশ হয়েছে এমনি
ফাও।
মরার কোন কারণ
নাই
লোক মারা তো বারণ
নাই।
লাশটা কাছে আসছে
নদীর জলে ভাসছে
এটা নাকি আষাঢ়
মাস
এটা আমার ছেলের
লাশ।
লাশটা হেসে বলছে বাপ
কে করে কার
খুনের মাপ?
খুনীও একদিন মরবে
আজরাইলে ধরবে।
২৬/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৩
মহাকাল
তাল গাছে তাল হয় ডাল গাছে ডাল
তিলে তিলে বয়ে
চলে কাল মহাকাল।
থামে নাতো কোনখানে
সে যে একতিল
চেয়ে দেখে কার
গায়ে কে মেরেছে ঢিল।
বলে না সে কোন কিছু শুধু দেখে যায়
কে যে কারে
ল্যাঙ মারে কে যে ব্যথা
পায়।
রাজা মহারাজারাও জেলে
বসে মরে
কেউ মরে ফাঁসি
কাঠে কেউ শুলে চড়ে।
পৃথিবীর ইতিহাসে কত কি যে ঘটে
সব কিছু লিখে
রাখে মহাকাল পটে।
মহাকাল চিরকাল বড়ো
নির্মম
সকলের কাছে ছুটে
আসে তার যম।
তাল গাছে তাল হয় ডাল গাছে ডাল
সকলেরই তকদির লেখে
মহাকাল।
২৬/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৪
বশির শেখের
নাতি
বশির শেখের নাতি
জ্বালায় মোমের বাতি
রাতদুপুরে ভূতের সাথে
করে হাতাহাতি।
সাহস বীরের বেশী
ভূতটা ছিল দেশী
বলে বাবা দে ছেড়ে
দে
যাবো রাতারাতি।
আমি ঝিনাইগাতি।
বশির শেখের নাতি
খোঁজে আতিপাতি
ভূতটা কোথায় ঘরের
কোণে
তিনটা কালো হাতি।
ঘুমটা রেখে করছে
ওরা
ভীষণ মাতামাতি।
বশির শেখের নাতি
আগে ছিল বেকার
যুবক
এখন নাকি তাঁতী।
২৭/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৫
ভালবাসার
ধন
আল্লাহর অধম বান্দা আমি যেমনি চালান চলি
সব মানুষকে সত্য
ন্যায়ের পথে চলতে বলি।
মন্দ পথে চলে
কোন লাভ নাইরে ভাই
আবার আমরা তাঁরই
কাছে সবাই ফিরে যাই।
এ পৃথিবীর সব মানুষই আমার আপনজন
কারণ সবাই মহান
প্রভুর ভালবাসার ধন।
তাইতো আমি সব মানুষকে
বাসি ভীষণ ভালো
বলে বেড়াই দূর
করে দাও তোমার মনের
কালো।
তখন ঠিকই আসবে ধরায় শান্তি এবং সুখ
থাকবে না আর কারো
মনে কষ্ট এবং দুখ।
সবার আগে করো
ভালো নিজের অবুঝ মন
ভালোবাসায় নাও না কিনে
ভালোবাসার ধন।
২৭/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৬
উল্টো হাঁটি
হীরা
বলতো কেন হাঁটিসরে
তুই
উল্টো দিকে ফিরা?
কান্ড দেখে হেসে
মরে
মীরা এবং নীরা।
তোর ঘাড়ে কি বাঁধলো
বাসা
নতুন কোন পীড়া?
বেশ হেঁটেছিস এবার
না হয়
একটু বসে জিরা।
নানা
তোর দু চোখ
কি কানা?
দিন বদলের মানেটা
কি
হয়নি আজো জানা?
দিন বদলের দিন
এখন থেকে পাহাড়
হবে
ছোট্ট একটা পিন।
দিনটা যদি বদল
করো
উল্টে হবে রাত
মানুষ খাবে ঘাস
বিচালি
গরু খাবে ভাত।
তাইতো উল্টো হাঁটি
রাস্তা জুড়ে দাও
বিছিয়ে
নানা শীতল পাটি।
হীরা
উল্টো করে হাঁটলে
পায়ের
ভাঙতে পারে গিরা।
আবার যাবি হাসপাতালে
খাবি দধি চিড়া।
উল্টো হাঁটলে ফুলে
যাবে
তোরই ঘাড়ের শিরা।
খোদার দেয়া আইনে
চলে
পাহাড় নদী বন
মানুষ হয়ে সে আইন
তুই
ভাঙবি কতক্ষণ?
২৮/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৭
কালকে তোমার
বিয়ে
ইয়ে
তোমার নাকি বিয়ে
কালকে যাবে শ্বশুরবাড়ি
পাগড়ি মাথায় দিয়ে
শ্বশুরবাড়ী যাবে তুমি
বরযাত্রী নিয়ে।
ইয়ে
সেথায় গিয়ে করবে
মজা
শালা শালী নিয়ে
বউ আনবে বাপের
বাড়ি
সোনাদানা দিয়ে।
ইয়ে
কালকে তোমার বিয়ে।
তাইতো নাচে ফিঙে
চড়ুই
এবং সবুজ টিয়ে।
২৮/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৮
ছড়ড়া বুড়ো
হয় না
ছড়া যখন কড়া লিখি ছড়ড়া তখন হয়
ছড়ড়াগুলো ডানপিঠে খুব
পায়না মোটে ভয়।
ভাবখানা এই এক নিমিষে
করবে জগত জয়
বলুন দেখি, এক নিমিষে
সব কিছু কি হয়?
ছড়ড়াগুলো কথার কাজি পারে না সে কিচ্ছু
তবু লোকে ক্যান
যে ভাবে ছড়ড়াগুলো বিচ্ছু।
পৃথিবীটার বয়স বাড়ে
ছড়ড়া বুড়ো হয় না।
ছড়ড়াগুলো ভালবাসে রাম
রহিম ও ময়না।
ছড়ড়াগুলো এখন দাদা ইথার জুড়ে ভাসে
এমন দুষ্ট মন্দ
দেখলে দাঁত কেলিয়ে হাসে।
ছড়ড়াগুলো যায় ছড়িয়ে
বিশ্ব জগতময়
চায় সে ধরায়
মন্দ যতো সব হয়ে
যাক ক্ষয়।
২৮/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮২৯
ইস্টিশানে
বিষ্টি নাই
ইস্টিশনে বিষ্টি নাই
তালগাছে নাই মই
মিষ্টি খেতে ইচ্ছে
করছে
কারে এখন কই?
ইষ্টি যদি আসতো বাড়ি
সঙ্গে আসতো মিষ্টি
হাড়ি
পড়ে যেতো কাড়াকাড়ি
রসগোল্রা, দই
তুমিই বলো দাদা
আমি
কোনটা আগে লই?
কেউতো ভালো বাসেনা
মিষ্টি ঘরে আসে
না
মায়ের ফর্দে লেখা
থাকে
আনিস খোকা কৈ।
ইস্টিশনে বিষ্টি নাই
আমার হাতে বই
এমন সময় মিষ্টি
আনো
কেমনে আমি কই?
২৯/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩০
এমন যদি
হতো
এমন যদি হতো
আসতো উড়ে আবাবিলের
পাখি শতো শতো
আবরাহার সে হাতি
পালাবার পথ কেউ
পেতো না খুঁজে আতিপাতি।
ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতো
আবরাহার সব নাতি।
এমন যদি হতো
মারতো ছুঁড়ে পাথর
ওরা সবাই অবিরত
আবরাহার সে উঁচু
মাথা হয়ে যেতো নত
বুঝতো সে যে কেমন
লাগে পাথর মারার ক্ষত।
এমন যদি হয়
বলতে পারো কে ঠেকাবে
খোদার দ্বীনের জয়।
২৯/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩১
শিশুর মুখের
হাসি
হুম
আকাশ বাতাস চুপ
করেছে
দুনিয়া নিঝঝুম
সোনামনির চোখে তুই
আয়রে সাধের ঘুম।
আমার সোনার চোখে
দে
মিষ্টি একটা চুম।
আমার সোনা চাঁদের কণা
চাঁদ মুখে তার
হাসি
হাসিতো নয় ঝরে
যেনো
মুক্তো রাশি রাশি।
ছোট্ট মুখের হাসি
দেখে
আমরা সুখে ভাসি।
দেশ দুনিয়ার সুখ ভাসে
অই মুখেতে আসি
বলে ওরে ছোট্ট
শিশু
তোকেই ভালবাসি।
৩০/৬/১৯।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩২
মহারাজের
বুলি
সিরাজদৌলা দেখবেন চলেন ঘুরে বাংলাদেশ
আগে চরতো মানুষ
গরু এখন ভেড়া মেষ।
আহা বেশ বেশ
বেশ।
আগে পুরুষ দেশ চালাতো এখন চালায় নারী
ধর্ষণ চলে সারা
দেশে পথে ঘা্টে বাড়ি।
আহা বাড়ি বাড়ি বাড়ি।
আগে মানুষ ভাত খাইতো এখন গুলি খায়
বিপদ নাকি সব মানুষের
পায়েে পায়ে ধায়।
আহা ধায় ধায়
ধায়।
আগে খুনীর হইতো ফাঁসি এখন খুনী হাসে
খুনী বলে তাদের
নাকি কে কে ভালোবাসে।
আহা বাসে বাসে
বাসে।
আগে মানুষ খাইতো নাকি শীতে পিঠাপুলি।
এখন নাকি খায়
সকলে মহারাজের বুলি।
আহা বুলি বুলি
বুলি।
আরো কত খবর আছে কোনটা নবাব বলি
আপনি থাকেন মহা
সুখে আমি তবে চলি।
আহা চলি চলি
চলি।
৩০/৬/১৯।। ভোর ৪টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩৩
বরিশালের
ডাব
শ্বশুর বাড়ি বরিশাল
দেখতে গেলাম নদী
খাল
দেখলাম ধানের মাঠ
নদীর ধারে জমে
গেছে
মস্ত বড় হাট।
হাটুরে যায় হাটে
নৌকা বাঁধা ঘাটে।
হঠাৎ সেকি নামলো
আহা
মুষলধারে বৃষ্টি
নদী ছাড়া দেখিনা
আর
খোদার আজব সৃষ্টি।
বরিশালের পিঠা
খেতে বড় মিঠা।
গৌরনদীর দধি
তুমিও বুঝবে স্বাদটা
কেমন
খেতে পারো যদি।
শালা শালীর দেখি আহা
কত্তো রকম ভাব
বাড়ি গেলেই পেড়ে
খাওয়ায়
গাছের তাজা ডাব।
৩০/৬/১৯।। রাত ৮:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৩৪
কালবৈশাখী
কালবৈশাখী ঝড়
দেশের পক্ষে লড়
দেশকে যারা তছনছ
করে তাদের চেপে ধর।
দুঃশাসনের গদী
করে দে তুই
নদী
সেই নদীতে সাঁতার
কাটুক জালিম নিরবধি।
যে জন জালুমবাজ
ছিনিয়ে নে তার
তাজ
প্রজার ওপর জুলুম
করাই জালিম রাজার কাজ।ৃ
শয়তানের যে চেলা
ছাড়বি তারে কেলা
তারে ধরে টান
মেরে তুই আস্ত ছিঁড়ে
ফেলা।
কালবৈশাখী ঝড়
আয়রে ভয়ংকর
দে গুড়িয়ে আস্তানা
আর পাপের সকল ঘর।
২৬/৭/১৯ ।। রাত ২:০০ টা
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩৫
স্বাধীনতায়
হাত
পাখির ছানা ধরতে মানা
তারতো আছে উড়ার
ডানা
তাই ধরো না পাখির
ছানা কেউ
যায় না বাঁধা
ভীষণ নদীর
উথাল পাথাল ঢেউ।
কেউ ধরো না পাখির ছানা
অযথা কেউ দিয়ো
না ভাই
পাখির বাসায় হানা
পাখির বাসায় করো
না কেউ
অযথা উৎপাত
দিয়ো না ভাই
অন্য কারো
স্বাধীনতায় হাত।
স্বাধীনতা সবার আছে
সবার আছে ধর্ম
তাতে বাঁধা দেয়াতো
নয়
কারো উচিত কর্ম।
১/৭/১৯।। সকাল ৬:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩৬
বৃষ্টি আসে
সবুজ ঘাসে
রিমঝিম ঝিম বৃষ্টি আসে
আষাঢ় মাসে
সবুজ ঘাসে
ঘরের পাশে
দাওয়ায়।
বৃষ্টি আসে
ভালবেসে
পুকুর ঘাটে
হাওয়ায়।
জল থই থই রাস্তাঘাট
জল থই থই পুকুর
মাঠ
জল থই থই বিল
জল থই থই ব্যস্ত
সড়ক
এবং মতিঝিল।
বর্ষা এলে ফর্সা আকাশ
মুখটা করে ভার
টিপটিপাটিপ বৃষ্টি দেখলে
মুখ কালো হয় মা'র।
১/৭/১৯ ।। দুপুর ১:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩৭
তাঁর কথাইতো
খাঁটি
নাহার বলে বাহার ভাই
যাহার পরি যাহার
খাই
তাহার কথা বলি
সারা জীবন আমি
যেন
তাহার পথে চলি।
বাহার বলে নাহার বোন
এ জীবনতো তাহার
লোন
বাঁচায় বলে বাঁচি
রাখছে বলে আছি।
ভাই বোন গায় তাহার গান
যিনি করলেন পাহাড়
দান
যিনি দিলেন মাটি
তাঁর কথাইতো খাঁটি।
২/৭/১৯ ।। রাত ১:৩০।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩৮
নীলের ঢেউ
যেদিক তাকাই দেখতে যে পাই শুধু নীলের ঢেউ
আকাশটাকে উপুড় করে
নীল ঢেলেছে কেউ।
সবুজ বরণ এই দুনিয়ায়
সবুজ কোথাও নাই
যেদিক তাকাই সবখানে
ভাই নীলের ছোঁয়া পাই।
সবুজ বরণ গাঁ দেখি না মস্ত দালান ঘর
জাহাজ থেকে শূন্য
লাগে বিশ্ব চরাচর।
বিশ্ব যেনো বড়সড়
একটা টেনিস বল
তার ভিতরে উড়ছি
যেনো আমরা পোকার দল।
মানুষ গরু প্রাণীর আহা নাইরে কোন চিন
মেঘের ভেলা দেখে
শুধু বুঝি এখন দিন।
চারিদিকে কে ঢেলেছে
এতো নীলের ঢেউ
যাকে শুধাও বলবে
সবে কেউ দেখেনি, কেউ।
২/৭/১৯ ।। বিকাল ৬:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৩৯
কেমন আছো
মিতা
নিম পাতা তিতা তিতা
কেমন তুমি আছো
মিতা
ভাল আছে আমার
পিতা
এবং আমার মায়।
পিচ্ছি বাবু বড় হইছে
স্কুলে রোজ যায়।
কান্দে আমার হিয়া
বোনের হইছে বিয়া
দেখলা নাতো গিয়া
কান্দে আমার মায়
বোনের পথের দিকে
শুধু
ফিরা ফিরা চায়।
আমি এখন ভালই আছি
যেমন থাকে মশা
মাছি
খেলি একা কানামাছি
কেউ নেয় না খোঁজ
তোমার পথের দিকে
আমি
চেয়ে থাকি রোজ।
কেমন আছো মিতা
কেমন তোমার পিতা
কেমন আছে রীতা
বোনের জন্য কিনি
না আর
লাল রঙের ফিতা।
মনে আছে তুমিও
যে
তাকে ফিতা দিতা।
২/৭/১৯ ।। রাত ৮:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪০
পশুরে তুই
তাড়া
পশুগুলো হয় না মানুষ, মানুষ পশু হয়
পশুগুলোই আজকে ঘুরে
বিশ্ব জগতময়।
মানুষ মেরে পশুগুলো
হয়রে বনের রাজা
মানুষ মরে ধুকে
ধুকে পশুরা হয় তাজা।
মানবতা আজ ধরাতে জেলখানাতে বন্দী
পশুর সাথে মানুষ
করে কেমন করে সন্ধি?
মানুষগুলো আজ ধরাতে
হয়রে শুধু লাশ
পশুগুলো আজ ধরাতে
করে রে উল্লাস।
কোথায় মানুষ? বাঁচতে হলে দু পায়ে তুই খাঁড়া
বিশ্ব বাঁচুক, শোনরে মানুষ
পশুরে তুই তাড়া।
২/৭/১৯ ।। রাত ১১:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪১
তিনি পাড়ার
দাদা
তিনি পাড়ার দাদা
মনটা বড়ো সাদা
সকাল বিকাল খেতেন
তিনি
মুড়ির সাথে আদা।
তিনি পাড়ার দাদা
গল্প বলতেন মজার
মজার
ভক্ত গাদা গাদা।
পাড়ার ছেলে তার
কাছে
চাইতো না কেউ
চাঁদা।
তাকে কিছু বললে বলতেন
ওরে বোকা, হাঁদা
কথা বলিস এমন
যেনো
আস্ত একটা গাধা।
তিনি পাড়ার দাদা
মনটা বড়ো সাদা
বৃষ্টি হলে বের
হতেন না
লাগবে পায়ে কাদা।
তিনি পাড়ার দাদা।
৩/৭/১৯ ।। রাত ০:৪৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪২
খবর বড় খাসা
খবর পেলাম খাসা
শহর থেকে আসছে
বাবু পেয়ারা খেতে ডাসা
আর শহরে যাচ্ছে
ছুটে গাঁয়ের যতো চাষা।
খবর ভাসা ভাসা
রাজপথে সব ধান
লাগাবে এমন নাকি আশা
সঙ্গে নিচ্ছে থালাবাটি
পিতল এবং কাসা।
খবর সর্বনাশা।
খবর পেলাম খাসা
কুঁড়েঘরে থাকবে বাবু
দালানে সব চাষা।
ওটাই নাকি হবে
এখন চাষীকুলের বাসা
রাত্রিবেলা খেলবে নাকি
সেই দালানে পাশা।
থমকে গেল হঠাৎ
করে সব বাবুদের হাসা
ধান লাগাতে ঋণটা
দেবে আমরিকা আর রাশা।
রাজপথে কেউ করবা
মিছিল? আর করোনা আশা।
খবর পেলাম ঠিক
যুবকরা সব শাড়ি
পরে ঘুরবে চতুর্দিক।
তাই না দেখে
হাসবে নাকি ইঁদুরে ফিক
ফিক।
দাঁতগুলো তার রোদে
তখন করবে রে ঝিকমিক।
রাজনীতি আর নাই
উল্টো রাজার দেশে
বসে আয় না হাওয়া
খাই।
৩/৭/১৯ ।। ।বিকাল ৪:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৩
চাঁদ মানে
শশী
চাঁদ দিন চাঁদ দিন
বলে কাঁদে রাতদিন
সপ্তাহে সাত দিন
তবু চাঁদ আসে
না
মন খুলে হাসে
না
ভালো চাঁদ বাসে
না।
শুধু তারে মামা কই
তার গায়ে জামা
কই
জোসনায় ঘামা কই
চাঁদ কভু ঘামে
না
একা চলে থামে
না
নিচে কভু নামে
না।
চাঁদ মানে শশী
চাঁদ নয় অসি
আয় কাছে বসি
চাঁদ তবু বয় না
কোন কথা কয় না
এতো জ্বালা সয় না।
৩/৭/১৯ ।। সন্ধ্যা ৬:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৪
সেই সকালটা
তোর
ভাষা নাই আশা আছে
চেয়ে দেখো কদম
গাছে।
থোকায় থোকায় ফুল
একদিন ঠিকই ভেঙে
যাবে
জাতির সকল ভূল।
একদিন ঠিকই ভেঙে যাবে
দুঃশাসনের হাত
একদিন ঠিকই সকাল
হবে
ঘুচবে আঁধার রাত।
সেই সকালটা তোর
হাসবে আবার ভোর।
৪/৭/১৯ ।। ৩:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৫
ভাবনা কিসের
তোর
মনের কথা মনে রাখো বনের কথা বনে
যে কেড়েছে ভাইয়ের
রক্ত কি কথা তার
সনে?
সে যদি হয় খুনী
তার সাথে তোর
গল্প কিসের শুনি?
কে বলেছে হেরে
গেছিস, থামিস নি তো রণে।
হক বাতিলের দ্বন্দ্ব কি আর থামে?
বিজয়টা ফের আসবে
ভেসে রক্তনদীর দামে।
ভাবিস না তুই আর
দুয়ে দুয়ে পাঁচ
হয় না, দুয়ে দুয়ে
চার।
রাত্রি মানেই হয়রে আবার ভোর
রাত্রি যখন হয়েই
গেছে ভাবনা কিসের তোর?
৪/৭/১৯ ।। ৪:৪৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৬
কালো কাক
আম পাকা জাম পাকা, পাকা পেয়ারা
এক সাথে খেতে
বসে তিন বেয়ারা।
উড়ে এসে জুড়ে
বসে কালো এক কাক
বেয়ারারা হেসে মরে
তার মাথা টাক।
বড় বড় পন্ডিত টাক মাথা হয়
কাকটাও পন্ডিত তবে
নিশ্চয়।
এই ভেবে কাকটাকে
খেতে দেয় জাম
কাক বলে আমি
কালো খেয়ে কালো জাম।
তোমরাই জাম খাও আম খাই আমি
ঘুচে যাক কালো
কাক এই বদনামী।
টুকটুকে হয়ে যাবো
আমি তবে লাল
ওরা বলে, তবে তুমি
খাও লাল ঝাল।
লাল ঝাল নয় ভাই সালওয়া ও মান্না
তাই খেয়ে কালো
কাক জুড়ে দেয় কান্না।
৪/৭/১৯ ।। ৬:৫০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৭
কমেন্ট আমার
পাওনা
আমি যদি সালাম দেই, আপনি জবাব লন।
আমি যদি সালাম
না দেই, আপনি জবাব
কন?
আমি যদি লিখি
কিছু, আপনি কমেন্ট
দেন
আমি যদি না লিখি, কমেন্ট
দিবেন ক্যান?
সালাম দিলে জবাব দেয়া ওয়াজিব নাকি হয়
এই কথাইতো দেশ
গেরামে আলেমেরা কয়।
আমার লেখা আপনার
যদি লাগে মন্দ ভালো
হেসে মরেন নয়তে
ফুলান আপনি নিজের গালও।
এই কথাটাই কমেন্ট করে ঋণটা শুধে যান
তবে কেন কমেন্ট
করে আপনি জবাব চান?
দয়া করে লেখকদেরকে
লেখার সময় দেন
জবাব চেয়ে অযথা
ক্যান সময় তাদের নেন?
আম গাছে আম ধরে জাম গাছে জাম
যে যেখানে আছেন
ভাই করেন নিজের কাম
আপনি যখন ভাল
বলেন শরমে হই লাল
প্রশ্ন ছাড়া হয় না জবাব
নিয়ম চিরকাল।
আপনার জন্য লিখি আমি আমার জন্য লিখিনা
এই কথাটার মর্ম
তবে আমরা কেন শিখি
না?
৪/৭/১৯ ।। রাত ৯:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৮
কোন দেশে?
টুনটুনি গো টুনটুনি টুন টুনা টুন টুন
কোন দেশে হয় ক্রসফায়ারে
যুবকগুলো খুন
ধর্ষণ শেষে কোন
দেশে হায় অনু তনু
মরে
কোন দেশেতে সত্য
কথা কয় না মানুষ
ডরে?
নৌকা ডুবে মানুষ মরে এক্সিডেন্টের ভয়
বলতে পারিস কোন
দেশে তা প্রতিদিনই হয়?
কেউবা মরে পথে
ঘাটে সাগর রুনী ঘরে
বিচারবিহীন কোন দেশে
হায় সভ্য মানুষ মরে?
কোন দেশে হায় প্রজার মাথার যায় রে উড়ে খুলি
গানের বদল কোনবা
দেশে বেড়ায় ভেসে বুলি?
সেই দেশটার নাম
নিতে তোর সাহস কিরে
হয়
নাকি তোরও বুক
জুড়ে ভয় বাসা বেঁধে
রয়?
৫/৭/১৯ ।। রাত ৩:৪৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৪৯
ভুলা বড়
দায়
কিশোর বেলার স্বপ্ন আশা
কিশোর বেলার ভালোবাসা
কিশোর বেলার কান্না
হাসা
কোনটা ভুলা যায়
ভুলা বড় দায়।
সেদিনগুলো খাইছে চিলে
নয় ডুবেছে বিলে
ঝিলে
নয় খেয়েছে বোয়াল
গিলে
সেদিনগুলো হায়
ফিরে কি কেউ
পায়?
এখন শুধু জাবর কাটা
অচীন পথে কেবল
হাঁটা
কারো কারো কপাল
ফাটা
সব কি ভুলা
যায়
ভুলা বড় দায়।
৫/৭/১৯ ।। সকাল ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫০
দেশটা এমন
নষ্ট
পিয়াল ভাই গো পিয়াল ভাই
কে বলেছে শিয়াল
খাই
খাইতো অনেক ভালা
বাজার করে দিয়ে
গেছে
আমার আপন শালা।
শালার আহা দোষ কি বলো
বাজার ভরা আগুন
শালা আনছে পুই
শাক আর
লম্বা কালো বাগুন।
মাছ গোস্তের অনেক দাম
ছোঁয়া যায় না।
আমি বলি ছেলে
আমার
গোস্ত খায় না।
দেশটা এখন নষ্ট
মনে বড় কষ্ট।
৫/৭/১৯ ।। ৩:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫১
করবে বিশ্ব
জয়
নিজের গায়ে শক্তি করো নিজের পায়ে হাঁটো
পরের ওপর ভরসা
রেখে নিজেই একটু খাটো।
কেউ থাকে না কর্ম
ছাড়া, দেশের বড়লাটও
তবে কেন শুধু
শুধু পরের পা টা চাটো?
কথাটা খুব সাদামাটা
পরের পায়ে যায়
না হাঁটা
নিজের খানা নিজেই
খেতে হয়
কেউ কখনো দেয়
না এনে নিজের হাতে
জয়।
অলস যারা ভবে
তারা বসেই রবে
পদে পদে তারা
পাবে শুধুই পরাজয়।
কেন তবে শক্তি
তুমি করবে শুধু ক্ষয়?
শক্তি রাখো নিজের গায়
শক্তি রাখো নিজের
পায়
হয়তো তবে করবে
তুমি নিজেই বিশ্ব জয়
খোদা যদি তোমার
ওপর একটু সহায় হয়।
৫/৭/১৯ ।। ৩:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫২
কিশোরবেলার
স্বপ্ন
কিশোরবেলা স্বপ্ন বুনি মনে
ভালো আমি বাসবো
জনে জনে।
কারো মনে দেবো
না আর কষ্ট
এ পৃথিবী হয় না যেনো
নষ্ট।
কিশোরবেলা স্বপ্ন বুনি মনে
জিতবো আমি সকল
যুদ্ধ রণে।
হারবো না আর কোন
রণাঙ্গনে
আমিই হবো সবচে
ভালো জন
আকাশ নদী জয় করবো
ঘুরবো পাহাড় বন।
কিশোরবেলা স্বপ্ন বুনি মনে
পরের ভালো করবো
আমি
অতি সঙ্গোপনে।
স্বপ্নগুলো স্বপ্ন হয়েই
থাকে
এসব কথা বলবো
আমি কাকে?
৫/৭/১৯ ।। ৪:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৩
আমি নেতা
মুখ ফুটে ভাই কেমন করে
মনের কথা কই?
ইচ্ছে করে গদী
পেলে
আমিও তা লই।
নিজের ভাল শুনতে বলেন
কার না ভালো
লাগে?
এমনি কি আর জায়গা
দেইনা
মোশাহেবদের আগে।
আমার মতন চালাক বলেন
কয়টা ধরায় আছে?
আমি বললে তাইতো
আজো
বান্দরেরা নাচে।
কেমন করে নেতা হলাম
কেমনে খুলে কই
জনগণ চায় তাইতো
বলি
আমি নেতা হই।
৬/৭/১৯ ।। রাত ৯:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৪
সেই কথাটা
কই
সেই কথাটা কই?
তুমিও জানো, আমি মানুষ
গরীব সুনিশ্চয়ই।
তুমি খাও পোলাও
কোর্মা, আমি ভেটের খই।
তোমরা থাকো দরদালানে, কুঁড়েঘরে
রই।
আমার চেয়ে তোমরা
দেখতে সুখী সমস্তই।
তোমার আছে জমিদারী
মস্ত বাড়ি, রঙিন গাড়ি
টাকা আছে কাড়িকাড়ি
আছে তোমার অঢেল
নারী
আমি চেয়ে রই
তুমি ভাবো দুঃখী
আমি,
সুখী মোটেও নই।
না না বন্ধু ভুল
দুঃখে আমি ছিঁড়িনাতো
নিজের মাথার চুল।
তুমি বন্ধু সুখী
নওতো আমার সমতুল
সেই কথাটা কই
তুমি আমি এই ধরাতে
অমর তো কেউ নই।
আমার মত একদিন তুমি কবর দেশে যাবে
আমার মতই সাড়ে
তিন হাত জায়গা তুমি
পাবে।
নিজের ভাগ্য সেদিন
তুমি নিজেই দেখতে পাবে।
সেই কথাটা কই
বুঝবে সেদিন তোমার
চেয়ে আমি গরীব নই।
আমার হিসাব সহজ হবে, তোমার হিসাব ভারী।
কি করেছো জীবন
যৌবন সম্পদ জমিদারী।
কেমনে তুমি রেখেছিলে
আপন সন্তান নারী
কড়ায় গন্ডায় দিতে
হবে হিসাব সমস্তই।
সেই কথাটা কই
দেখবো বন্ধু সেদিন
আমরা কার আগে কে রই।
৬/৭/১৯ ।। রাত ১১:৫০।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৫
আমরা টাসকি
খাই
আমিন আমিন বলেন সবে জামিন যেন পায়
বিনা দোষে যে মানুষটা
জেলের ভেতর যায়।
সত্যি সত্যি যে মানুষটার নাইরে কোন দোষ
খোদার ভয়ে মেনেছিল
আল্লাহ নবীর পোষ।
সে পড়ে রয় জেলের ভেতর ইতররা সব বাইরে
এসব দেখে আমজনতা
আমরা টাসকি খাইরে।
পথেঘাটে মারামারি খুনখারাবি করে যেজন ভাই
তারা দিব্বি ঘুরে
বেড়ায়, যায় পেয়ে যায় লাই।
ধর্ষণকারী পায় না সাজা, রাজা বিচার করে না
তারা যেন বীর
বাহাদুর, যে ধরার সে ধরে
না।
আবার যেন দিন পাল্টায়, তাদের বিচার হয়
আবার যেনো মিথ্যা
মরে,
সত্যের হয়রে জয়।
আমিন আমিন বলেন সবে জামিন যেন পায়
বিনা দোষে যে মানুষটা
জেলের ভেতর যায়।
৭/৭/১৯ ।। রাত ৩:৪৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৬
ছড়ায় তাই
ধার নাই
আমার ছড়া গিল্লা খাইছে
শ্বশুর বাড়ির শালারা
তাদের সাথে মিল্লা
খাইছে
ফুপু এবং খালারা।
খাইয়া মজা পাইছে ভাই
লগিবৈঠা বাইছে ভাই
তাইতো পুরান ছড়া
নাই
তাতে কোন দুঃখ
নাই।
খালা শালা মিল্লা
ছড়া খাইছে গিল্লা
আর নাইরে হিল্লা
বিছনায় শুয়ে চিল্লা।
পুরান ছড়া আর নাই
তাইতো ছড়ায় ধার
নাই।
৭/৭/১৯ ।। সকাল ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৭
আমি ভূতের
পুত না
টুপী আছে তলি নাই
নদী আছে গলি
নাই
পুষ্প আছে কলি
নাই
আমি কিছু বলি
নাই।
যা বলেছে রাজার দূত
নাচ জুড়েছে তিনটা
ভূত
কে ধরে তার
কথার খুত
সঙ্গে নাচে ভূতের
পুত।
নাচ চলেছে বাজার বাও
দেখতে হলে মাজার
যাও
ভূতের মাথায় হাজার
পাও
নাচছে দেশে ভূতের
ছাও।
আমি ভূতের পুত না
খেলি ছিকুত কুত
না।
৭/৭/১৯ ।। ১০:৫০ মি।
আসাদ বিন
হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৮
কি অদ্ভুত!
কি অদ্ভুত!
কী অদ্ভুত! কী অদ্ভুত!
যেই দেশে নেই
বাপের পোলা
মায়ের নাইরে পুত
সেই দেশে হায়
লম্পটেরা
খেলেরে কুতকুত।
সেই দেশে হায়
ভাইগুলো সব
মরে হইছে ভূত
কী অদ্ভুত! কী অদ্ভুত!
বাপ মা গেছে মারা ভাইরে
এতীম চালায় দেশ
লজ্জা শরম তাইরে
ঢাকে
কালো মাথার কেশ।
পথেঘাটে ঘুরে এখন
কালো কালো ভূত
কী অদ্ভুত! কী অদ্ভুত!
ছিলা কলা খায়রে বানর
দিনে কিংবা রাতে
তবু কেনো ছিলে
কলা
রূপসী বজ্জাতে।
লম্পটগুলো আশকারা পায়
তাই পেয়ে যায়
জুত
দেশটা জুড়ে ঘুরে
বেড়ায়
সব শয়তানের দূত।
কী অদ্ভুত! কী অদ্ভুত!
৭/৭/১৯ ।। বিকাল ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৫৯
মুখে ফুটুক
আষাঢ় মাসে
বৃষ্টি আসে
সৃষ্টি ভাসে
বন্যায়।
এই বন্যায়
যাক না ভেসে
পাপ অনাচার
অন্যায়।
নদী ডুবে
নালা ডুবে
ডুবে সবুজ
বন
যাক না আবার
ভাল হয়ে
পাপীর পঁচা
মন।
আবার সবার
মুখে ফুটুক
মিষ্টি মধুর
হাসি।
মনের সুখে
বলুক সবাই
তোমায় ভাল
বাসি।
৮/৭/১৯ ।। ১১:৪৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬০
আমার গোলাম
এসো সবাই শপথ করি
চলবো খোদার নির্দেশে
চলবো ধরায় আমরা
সবাই
বিপ্লবী ও বীর
বেশে।
মাঝ নদীতে নাও ভাসাবো
চলবো না আর তীর
ঘেঁষে
এ দুনিয়ার সবই
আমার
সব নোয়াবে শির
এসে।
আমার গোলাম সৃষ্টি জগত
আমি গোলাম তাঁর
এ পৃথিবী আকাশ
বাতাস
সৃষ্টি সবই যাঁর।
৮/৭/১৯ ।। দুপুর ২:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬১
নিয়ম ভাঙার
দেশ
কী চমৎকার দেশরে আমার কী চমৎকার দেশ
নেতার মনে স্বার্থচিন্তা,
নাইরে মায়ার লেষ।
বাবা বসে বুক
চাপড়ায় মায়ে ছিঁড়ে কেশ
কী চমৎকার দেশরে
আমার কী চমৎকার দেশ।
কারো দুঃখ কেউ বুঝে না, দুঃখ সবার মনে
বিশ্বাস না হয় জিজ্ঞেস
করে দেখো জনে জনে।
কেউ মানে না নিয়মনীতি
কেউ মানে না আইন
ধনীরা ভাই নিয়ম
ভাঙে, গরীবে খায় ফাইন।
নিয়ম ভাঙে গুরুজনে, নিয়ম শিখবো কই
নিয়ম ভাঙে তারাই
যারা পড়ে কিতাব বই।
দেশটা যাচ্ছে অধপাতে, কে রাখে
তার খোঁজ
নিয়ম ভাঙা শিখছি
সবে,
প্রতিদিনই রোজ।
কী চমৎকার দেশরে আমার কী চমৎকার দেশ
বাবা বসে বুক
চাপড়ায় মায়ে ছিঁড়ে কেশ।
৮/৭/১৯ ।। বিকাল ৪:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬২
টের পাবে
না
ভুলেও কভু কেউ দিও না মৌচাকে ভাই ঢিল
মনে হবে আসছে
উড়ে গযব আবাবিল।
দিনদুপুরে আবরাহা তো চোখে
দেখে রাত
এক নিমিষে হস্তিরা
সব হয়রে কুপোকাত।
ভুলে যদি দাও কখনো মৌচাকে ভাই ঢিল
রক্ষা তুমি পাবে
না আর ডুবেও চলনবিল।
তেমনি যদি গণজোয়ার
সত্যি সত্যি আসে
টের পাবে না কার
নিয়তি কোথায় বসে হাসে।
ভূমিকম্প যায় না রোখা, যায় না রোখা ঢল
কোথায় যে যায়
অস্ত্রপাতি, কোথায় সেনাদল।
৮/৭/১৯ ।। সন্ধ্যা ৫:৪৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৩
বোকাই
ঘুমের মাঝে আমি যে মা কত্তো দেশে যাই
বিশ্ব ভুবন ঘুরে
আমি অনেক মজা পাই।
এক নিমিষে যাই
পেরিয়ে সাগর মহাদেশ
দেশ দুনিয়া ঘুরতে
আমার সত্যি লাগে বেশ।
লড়াই করে একা মারি রাজার তিনশ সেনা
বিশ্ব ভুবন ঘুরে
দেখি সবাই আমার চেনা।
আমায় দেখে যায়
পালিয়ে বনের সিংহ বাঘ
সবাই নাকি ভয় পেয়ে
যায় দেখে আমার রাগ।
কিন্তু যখন ঘুম ভেঙে যায়, বুঝি সত্যি নয়
তেলাপোকা দেখলে আমার
কি যে লাগে ভয়।
তোর কোলে মা তখন
আমি দৌড়ে গিয়ে লুকাই
আমি কি মা বোকা
ছিলাম, এখনো কি বোকাই?
৮/৭/১৯ ।। রাত ৮:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৪
নীল সাগরের
জোয়ার
আকাশ নীল সাগর নীল, নীল যে তোর শাড়ি
নীল রঙে সাজিয়ে
দেবো সাত মহলা বাড়ি।
আকাশ থেকে আবির এনে সাজিয়ে দেবো তোরে
তিনশো তিনটা গোলাপ
দেবো তোকে প্রতি ভোরে।
চাঁদের থেকে জোসনা এনে পরিয়ে দেবো গায়
সাত গেরামের মানুষ
যেনো ফিরা ফিরা চায়।
তোর খুশিতে অনায়াসে সবই করতে পারি
তুই শুধু বল আর যাবি
না আমায় একা ছাড়ি।
নীল সাগরের জোয়ারে দেখ পাহাড় সমান ঢেউ
আমার মতন আপন
তো তোর ধরাতে নেই
কেউ।
৮/৭/১৯ ।। রাত১১:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৫
রাতের সাথে
দিন
আমায় তুমি মন্দ বলো, পাপ কি তুমি করো নাই
কল্পনাতে মনের ভেতর
খারাপ সৌধ গড়ো নাই?
শয়তানের বদ ফান্দে
তুমি কখনো কি পড়ো
নাই
নিজের বুকে হাত
রেখে কও, মন্দ কিছু
করো নাই?
যারে ভাবি ভাল মানুষ, তার ভেতরও কালো
দূর হয় না মন্দ
তবে কেমন আগুন জ্বালো?
আমায় মন্দ বলার
আগে নিজের দিকে চাও
নিজের ভেতর কয়টা
শয়তান দেখতে তুমি পাও?
পাপী আমি তবু তোমার স্রষ্টা বাসেন ভালো
সেই ভালোটাই বন্ধু
তুমি তোমার মনেও জ্বালো।
খারাপ বলে আমায়
যদি ঘৃণা তুমি করো
সেই ঘৃণা তো তোমার
বুকেই হবে কেবল বড়ো।
ভালোবাসার পরশ পেয়ে ভালো যদি হই
বলবো সেদিন আমিওতো
খারাপ মানুষ নই।
দিনের সাথে রাত্রি
আছে,
রাতের সাথে দিন
ভালো মন্দ নিয়েই
মানুষ বাঁচে চিরদিন।
৯/৭/১৯ ।। ৩:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৬
আইনের ভূত
আইন মানে না আইনের লোক
অন্যকে কয় মানো
আইন মানে না বড় হুজুর
চৌধুরী আর খানও।
গরীব যারা আইন তো শুধু
কেবল তাদের জন্য
বনের পশু তারাও
কয়
ধন্য রে আইন
ধন্য।
ক্ষমতার ভাই দেখলে দাপট
আইনটা পালায় বনে
নয় ক্ষমতার পিছে
আইনটা
ঘুরে অকারণে।
লোকের জন্য আইনটা নাকি
আইনের জন্য জন
সেই কথাটা সবাই
আহা
একটু খুলে কন।
কারো জন্য আইন কিছু না
কারো জন্য ভূত
আইন দিয়ে ভাই
কেউবা খেলে
ছি কুতকুত কুত।
৯/৭/১৯ ।। সন্ধ্যা ৬:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৭
একটা ছড়া
লিখেছিলাম
একটা ছড়া লিখেছিলাম
বলেছিলাম, জাগো
কে তোদেরে বলল
বলতো
ভাগো সবে ভাগো?
লেজ উঁচিয়ে তাইতো দিলি
রাজপথ ছেড়ে ছুট
পালায় যেনো মানুষ
দেখে
আস্ত লিলিপুট।
কুট কুট কুট কুট
রমনা পার্কে বসে
বসে
নেতারা খায় বুট।
হায়রে একি করলি
মরার আগে মরলি।
কবে আসবে বোশেখ মাস
কালবোশেখি ফেলবে শ্বাস।
৯/৭/১৯ ।। রাত ৮:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৮
ছাগলের গান
গাই
মধুপুরের গড়ে
যায় না মানুষ
ডরে
আগে নাকি বাঘ
চরতো
এখন ছাগল চরে।
মধুপুরের গড়ে।
ছাগলগুলো কী সুন্দর
ভ্যা ভ্যা ভ্যা
ডাকে
ঘাসের বদল ভাত
খায়
মুখের বদল নাকে।
সেই কথাটাই এখন নাকি
পেপার জুড়ে থাকে
বুদ্ধিগুলো বন্দী থাকে
চান্দিঅলা টাকে।
তাই তাই তাই
আমরা এখন হাসি
মুখে
ছাগলের গান গাই।
৯/৭/১৯ ।। রাত ৯:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৬৯
গদীর গতি
নদীর মতো
গদীর গতি নদীর মত
জোয়ার ভাটা আছে
আজকে যেজন গাছতলাতে
কালকে উঁচু গাছে।
গদীর গতি নদীর মত
কেউবা ডুবে মরে
কেউবা নায়ের লগিবৈঠা
শক্ত হাতে ধরে।
কেউবা আবার মানুষ মেরে
নিজে সাজে খুনী
কেউ না বুঝুক
এটা বুঝে
বুলবুলি টুনটুনি।
মানুষ মেরে যে পেয়েছে
মস্ত বড় জয়
হায় কি কপাল
তারে মানুষ
শুধুই খুনী কয়।
১০/৭/১৯ ।। রাত ১:১৫ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭০
গরীব লোকের
পোলা
গরীব লোকের পোলা
নাম ছিল তার
ভোলা।
চক্ষু দুইটা বন্ধ
ছিল
মুখটা ছিল খোলা।
সকালবেলা একাই খেত
পোয়াখানেক ছোলা।
গরীব লোকের পোলা
নাম ছিল তার
ভোলা।
লঙ্কা মেখে ভাত
খায় সেজ
খায় না কোকাকোলা।
বড় হয়ে কি হবি
তুই
বললে বলতো ঠোলা।
সারা পাড়া ঘুরতো
সে যে
কাঁধে নিয়ে ঝোলা।
গরীব লোকের পোলা
নাম ছিল তার
ভোলা।
শরীর ছিল লিকলিকে
তার
পাতলা যেনো শোলা।
রাতের বেলা লবণ
খেতো
প্রতিদিন এক তোলা।
গরীব লোকের পোলা
নাম ছিল তার
ভোলা।
১০/৭/১৯ ।। ভোর ৪:০০টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭১
আমার কুটি
মামা
কুটি মামা রুটি খায়
টেংরা এবং পুটি
খায়
ফজলি আম ও গুটি
খায়
দিনে কাঁঠাল দুটি
খায়
গরম কালে ফুটি
খায়
ইলেক্ট্রিকের খুঁটি
খায়
আরো কত বায়না
খেতে খেতে মামা
যায়
দিল্লি থেকে চায়না।
পারলে ধরে জুটি খায়
সোনার ছেলের টুটি
খায়
রোগে জরিবুটি খায়
মাছের কাটাকুটি খায়
আরো কত বায়না
দিল্লি মস্কো সবই
খাবে
শিয়াল এবং হায়না।
খাওয়ার সুযোগ না থাকলে
মামা কোথাও যায়
না।
খাওয়া ছাড়া অন্য
গান
মামা কভু গায়
না।
সেই মামাটা সকাল বিকাল
একা একা কয়
দেশটা খাবো কেস্টা
খাবো
খাবোই জগতময়।
আমার কুটি মামা
খেয়ে নাকি সবুজ
দেশটা
করবে তামা তামা।
১০/৭/১৯ ।। বিকাল ৬:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭২
মনটা কেমন
করে
আগেই আমার মাইন্ডটা ছিল ব্রড
কারো সাথে করি
নাইক্কা ফ্রড।
দিনে দিনে দেখছি
কত কিছু
ঘুরছি এখন নেতার
পিছু পিছু।
কেমন করে টাকা মারে, কেমন করে খুন?
দিনে দিনে বাড়ছে
আমার এসব শত গুণ।
জমি দখল বমি দখল
নিলাম এসব পাঠ
তাইতো আমার দখলে
আজ
বাজার রাস্তাঘাট।
গুম শিখেছি চুম শিখেছি
ধুম ধারাক্কা ধুম
শিখেছি
আমার হাতে অনায়াসে
অনু তনু মরে
পোলাপান আর রা করে
না
দেখলে আমায় ডরে।
তবু আমার মনটা আহা কেমন কেমন করে।
সবার মত আমিও
কি একদিন যাবো মরে?
১০/৭/১৯ ।। সন্ধ্যা ৭:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৩
দূরে দেশে
কে কবর দেবে
ঘুষের টাকায় করলাম বাড়ি
জমি কিনলাম চিতলমারি
তারপর হঠাৎ দিলাম
পাড়ি
জাপানে।
এখন আমার সময়
কাটে
আড্ডা মেরে, চা পানে।
পাড়ায় নাকি মসজিদ হবে
টাকা দিলাম ঢেলে
মোতাওয়াল্লি হয়ে
গেল
আমার লম্পট ছেলে।
হঠাৎ একদিন ধরলো আমায়
ক্যান্সারে
শীত লাগে যে, কে রে আবার
ফ্যান ছাড়ে?
মরে গেলাম একা একা
আত্মীয় কেউ নাই
দূর বিদেশে কে যে আমার
কবর দেবে ভাই?
১০/৭/১৯ ।। রাত ৮:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৪
উচিত কথা
কমু না
দেশের নাম বাংলাদেশ, নদীর নাম যমুনা
যতই দাও পামপট্টি, উচিত
কথা কমু না।
বিরোধীদল হমু না
নির্যাতন আর সমু
না
দেখছি কি তার
নমুনা
সত্যি বলছি আমি
দাদা উচিত কথা কমু
না।
বিরোধীদল হওয়া মানে
দিনদুপুরে যমে টানে
তাই বলছি কানে
কানে
ঘাটের মরা ঘাটে
মরুক, আমি কাঁধে লমু না।
বিরোধীদল হমু না
কাউকে কিছু কমু
না
পরের ক্ষেত চমু
না
যতই দাও পামপট্টি, উচিত
কথা কমু না।
দেশের নাম বাংলাদেশ, নদীর নাম যমুনা
সত্যি বলছি আমি
দাদা বিরোধীদল হমু না।
১১/৭/১৯ ।। রাত ১:২০ মি
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৫
কিস্তিমাত
ছন্দ নিয়ে খেলতে চাই
রুটির মতো বেলতে
চাই
ঠেলাগাড়ি ঠেলতে চাই
পাখা দুটো মেলতে
চাই।
ছন্দ যেনো হাতের তালু
ছন্দ যেনো আপন
খালু
ছন্দ যেনো চরের
বালু
গাড়ির মতো ছন্দ
চালু।
ছন্দ মানে জোসনা রাত
ছন্দ মানে নিজের
পাত
ছন্দ মানে মুখের
দাঁত
ছন্দ মানে আপন
হাত।
মিলের সাথে মিল লাগে
একটু নরম দীল
লাগে
যেনো ঘরের খিল
লাগে
নীল আকাশের নীল
লাগে।
হাতের ওপর আরেক হাত
তবেই ছড়া হয়রে
কাত
হাসতে থাকে সবার
দাঁত
এক নিমিষে কিস্তি
মাত।
১১/৭/১৯ ।। রাত ৩:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৬
আজরাইলের
সঙ্গে
খুব তো আছিস রঙ্গে
নিত্য নতুন ঢঙ্গে।
দেশের মানুষ যেদিক
যায়
যাবি তাদের সঙ্গে।
চলবি সোনার বঙ্গে
সেন্ট মাখবি অঙ্গে
দেশের মানুষ দেশে
থাকবি
যাবি কেনো জঙ্গে?
খুব তো আছিস রঙ্গে
আজব এ দেশ
বঙ্গে
নিরাপদেই আছিস সবে
আজরাইলের সঙ্গে।
১১/৭/১৯ ।। রাত ৪:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৭
আবার কবে
মানুষ আছে, জেতা কই
দেশদরদী নেতা কই
যুবক পোলা চেতা
কই
এমন ঘুমে দেশের
মানুষ
থাকবে কতকাল
কবে আবার পুব
আকাশে
সূর্য উঠবে লাল?
নিজের ভাল ভাববে কবে
রাজপথটা কাঁপবে কবে
আবার সবে জাগবে
কবে
কবে আবার আন্দোলনে
হবে দেশ উত্তাল
কবে আবার ছিন্ন
হবে
এই আঁধারের জাল?
আবার কবে ফুটবে ফুল
আবার কবে ভাঙবে
ভুল
আবার কবে নদীর
কূল
গণজোয়ারে ভাসবে
আবার কবে দেশের
মানুষ
পরাণ খুলে হাসবে?
১১/৭/১৯ ।। সকাল ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৮
আয় না সবে
গড়তে হলে ভাঙতে হয়
মনের ভূবন রাঙতে
হয়
তবেই নতুন সৃষ্টি
হয়
সবাইকে তা বলি
আয় না আবার
এক হয়ে যাই
ছেড়ে দলাদলি
আয় না মিলে
একই সাথে
করি গলাগলি।
সবাই মিলে লড়তে হয়
সমাজটাকে গড়তে হয়
শূন্য কলস ভরতে
হয়
সবাইকে তা বলি
আয় না সবে
পায়ের সাথে
পা মিলিয়ে চলি
আয় না সবে
মিলেমিশে
ফুটাই ফুলের কলি।
১১/৭/১৯ ।। সকাল ৫:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৭৯
চাঁদের বুড়ি
চাঁদের বুড়ি চাঁদের বুড়ি
ফুল নিবি নে, ভরতি
ঝুড়ি।
একটা কথা বল
এক ভাগ কেন
মাটি মোটে
তিন ভাগ কেন
জল?
কোত্থেকে বল আসে
ছুটে
অঝোর ধারায় ঢল?
চাঁদের বুড়ি চাঁদের বুড়ি
বৃষ্টি পড়ে গুড়িগুড়ি
কেমন করে এতো
পানি
মাথার ওপর রয়
কেমন করে দুষ্ট
বাতাস
ঝড়ের মত বয়?
চাঁদের বুড়ি চাঁদের বুড়ি
তুই কি একা, নাইরে
জুড়ি?
বলতে পারিস কেমন
করে
নীল আকাশ হয় লাল
কেমন করে চন্দ্র
সুরুজ
ঘুরছে মহাকাল?
চাঁদের বুড়ি চাঁদের বুড়ি
এমন প্রশ্ন হাজার
কুড়ি।
জানি এসব পারবি
না তুই
আমিই নেবো খুঁজে
আদর করে দিলাম
রে ফুল
মাথায় রাখিস গুঁজে।
১১/৭/১৯ ।। সকাল ৬:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮০
ইচ্ছে করে
আমার কেবল ইচ্ছে করে নীল আকাশে উড়ি
পাখির মত ডানা
মেলে নীল আকাশে ঘুরি।
মেঘপরীদের সাথে মিলে
ছি কুতকুত খেলি
পাখির মত আমিও
আজ ডানা দুটো মেলি।
আমি আবার হই রে পাখি, ছোট্ট আবাবিল
আমায় দেখে কাঁপুক
যত আবরাহার সে দীল।
হাতির বহর মেরে
আমি করে ফেলি ভুষি
তাতে আমার মহান
প্রভু আল্লাহ হবেন খুশি।
আমি আবার মুক্ত স্বাধীন ঈগল ছানা হই
ডানা মেলে দূর
আকাশে মেঘের সাথে রই।
ইচ্ছে করে আমিও
হই বলাকাদের ঝাঁক
ইচ্ছে করে তাকে
ডাকি যিনি আল্লাহপাক।
১১/৭/১৯ ।। সকাল ৮:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮১
আমি হবো
স্বপ্ন দেখি আমি হবো মুসা সালাহদীন
রাখবো না আর মানবতার
দুঃসহ দুর্দিন।
আমি হবো খালিদ
তারিক, বিশ্বে মহাবীর
অবাক হয়ে দেখবে
সবাই আমার উঁচু শির।
বিশ্ব আবার বাসবে ভাল নিঃস্ব আলামীন
দেখবে আবার মানবতা
মহান মুত্তাকীন।
বিশ্বে আবার হাসবে
সকল নিঃস্ব অসহায়
বিশ্ব থেকে জুলুম
শোষণ সব নেবে বিদায়।
স্বপ্ন দেখি মানুষ আবার বাসবে মানুষ ভালো
ধরাধামে ছড়িয়ে যাবে
আলকোরানের আলো।
জ্বরা ব্যাধি দুঃখ
কষ্ট থাকবে না তার
চিন
আবার এসব সবই
হবে বিশ্ব থেকে লীন।
১১/৭/১৯ ।। ৯:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮২
রাজার হাসি
কাঁদতে কেউ পারবে না আর হাসবে জনে জনে
এই কথাটা হঠাৎ
সেদিন পড়লো রাজার মনে।
যেমনি ভাবা তেমনি
সেটা হয়ে গেলো আইন
হাসছে সারা দেশের
লোক,
হাসছে গোপী গাইন।
মার খেয়ে সব ছাত্রগুলো স্কুলে রোজ হাসে
মার খাওয়াকে যেন
সবাই অতি ভালোবাসে।
হাসতে হাসতে কয়েদীরা
জেলে চলে যায়
দেশের মানুষ সবাই
হাসে দুঃখ যখন পায়।
হাসপাতালে রোগীর সে কি পরাণ খোলা হাসি
হাসতে থাকে যখন
কারো হয়রে নতুন ফাঁসি।
গরু ছাগল সবাই
হাসে, হাসে পিপীলিকা
তেলাপোকার হাসি দেখে
হাসে রে চামচিকা।
কেউ কখনো মারা গেলে আত্মীয়রা হাসে
যেনো তারে আপন
জনে কত্তো ভালোবাসে।
তাই দেখে ভাই
হাসতে গেল সেদিন মহারাণী
হাসতে গিয়ে রাজার
চোখে এসে গেলো পানি।
রানী বলে, রাজা তোমার চোখে দেখি কান্না
আজকে থেকে বন্ধ
তবে রাজপ্রাসাদে রান্না।
১১/৭/১৯ ।। দুপুর ২:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮৩
শিশুর জন্য ছড়া
১।
মামা মামা মামা
রে
কোলে নিবি আমারে
গালে দিবি চুমু
বলবি খোকা ঘুমো।
২।
আয়রে পাখি চন্দনা
খোকা আমার মন্দ
না
আমার খোকা ভালো
করবে জগত আলো।
৩।
আমার সোনা চাঁদের
কণা
দুধ ভাত খায়
আমার সোনা আদর
খেতে
নানা বাড়ি যায়।
৪।
আয়রে তুই আয়
খোকা ঘুম যায়
খোকার নাই দাড়ি
যাবে শ্বশুর বাড়ি।
৫।
আমার খোকা বোকা
না
তার দাঁতে পোকা
না
কী সুন্দর হাসে
পরী ছুটে আসে।
৬।
টিকটিকি কয় টিক
টিক
খোকা হাসে ফিক
ফিক
আয়রে তুই এসে
যা
খোকার হাসি দেখে
যা।
৭।
আম পাতা জোড়া
জোড়া
চলবে সোনার কাঠের
ঘোড়া
কোথা খোকা যায়
রে
কান্দে খোকার মায়
রে।
৮।
আমার সোনা কাঁদে
না
দুধ ভাত খায়
হাসতে হাসতে সেই
সোনা
দাদা বাড়ি যায়।
৯।
আমার খোকা হাসে
মা কে ভালোবাসে।
ইষ্টিশানে বৃষ্টি ফুল
ভরে তোলে মায়ের
কোল।
১০।
ধুত্তোর ধুত্তোর ধুত্তোর
ওরে রাজপুত্তোর
সোনা আমার কোলে
দুঃখ ব্যথা ভোলে।
১১।
গাছের ডালে টিয়ে
খোকার হবে বিয়ে
খোকা যাবে শ্বশুরবাড়ি
পাগড়ি মাথায় দিয়ে।
১২।
খোকা আমার ঘরে
ছিল তেপান্তরে
ঘরে আলো ফুটলো
কত মানুষ জুটলো।
১৩।
আম জাম পাকা
ঘরে নাই টাকা
কেমনে আম কিনি
সঙ্গে দুধ চিনি।
১২/৭/১৯ ।। বেলা ১১;০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮৪
শিখি আর
লিখি
যদি বলেন, ভাল লিখি তাতে আমার হাত নাই
খোদার কাছে সবই
সমান দিন কিংবা রাত
নাই।
পাপী মানে পাপ
করে যে তার তো কোন
জাত নাই
আপনার মুখে দন্ত
আছে শিশু বুড়োর দাঁত
নাই।
কারো থালায় বিরিয়ানি, কারো পাতে ভাত নাই
বুড়োর আছে বাতের
ব্যথা শিশুর কোন বাত
নাই।
সবই তাঁহার ইচ্ছা
রে ভাই সবই তাঁহার
ইচ্ছা
তাঁর ইশারায় নাই
হয়ে যায় তোমার আমার
কিচ্ছা।
আপনাতের যে ভালবাসা দোয়া আমি পাই
এটুক শুধু সবার
কাছে আমি অধম চাই।
খোদার রহম আছে
বলে আমি দুটো লিখি
সারা জীবন সবার
কাছে আমি শুধু শিখি।
১২/৭/১৯ ।। বিকাল ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮৫
বলতে পারিস
বুজি,
তোর দোয়া আর খোদার
রহম
এই তো আমার
পুঁজি।
সারা রাত্রি জেগে
আমি
নতুন শব্দ খুঁজি
যদি কভু চোখে
পড়ে
নিজের মাথায় গুজি।
বুজি,
তালবাহানা আর বুঝি
না
চলি সোজাসুজি।
আর ভাবি না কোথা
থেকে
আসবে আমার রুজি।
বুজি,
রুজি যেটুক বরাদ্দ
তা
খেতেই যখন হবে
পেরেশানী করে কি লাভ
বলতে পারো তবে?
তাই করি না ফন্দি
ফিকির
দুদিনের এ ভবে।
বলতে পারিস কদিন
আছি,
চলে যাবো কবে?
১২/৭/১৯ ।। রাত ১০:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮৬
কোন খেলাটা
খেলবি
খেলা আছে অনেক রকম
কোন খেলাটা খেলবি?
আয় না সখি
আমার সাথে
পুকুরে ঢিল ফেলবি।
নিজের দুহাত মেলবি
খাস্তারুটি বেলবি
লাকড়িগুলো চুলার ভেতর
একটুখানি ঠেলবি?
তাতেই হবে রান্না
থামবে শিশুর কান্না
আগে একটু কাজ
কর
তারপর না হয় খেলবি।
বাসায় নাইরে কাজের বুয়া
চুলা থেকে উঠবে
ধোঁয়া
তুই কি তখন
মনের দুখে
চোখের জল ফেলবি?
নাকি তুই ধোঁয়া দেখে
একটুখানি হেলবি?
পরে না হয় খেলবি।
আমার সাথে মিলে
না হয়
পুকুরে ঢিল ফেলবি।
১৩/৭/১৯ ।। রাত ১:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯৮৭
পড়শি বাড়ির
বিড়াল
রান্নাঘরে কান্না করে পান্না লালের বউ
বিড়াল নাকি খেয়ে
গেছে চিতল মাছের মউ।
দুপুরবেলা স্বামীর পাতে
কি দেবে সে খাইতে?
একটু আগে স্বামী
গেছে পুকুর ঘাটে নাইতে।
বিড়াল এখন লোভী বড়, মাছের কাঁটা খায় না
ঝোলসহ মাছ দিতে
হবে,
এই বিড়ালের বায়না।
সাহসও তার বেশ
বেড়েছে, খাবার কভু চায় না
নিজের খাবার নিজে
নেয়,
কারো কাছে যায় না।
এই বিড়ালটা পড়শিবাড়ির, আদর দিলাম যেই
অমনি বিড়াল বন্ধু
হলো,
চড়লো মাথায় সে-ই।
তার জ্বালাতে ঝালাপালা, প্রাণটা
আমার যায়
বিড়াল এখন মাছের
সাথে স্বাধীনতাও খায়।
৯/৮/১৯ ।। রাত ৯:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮৮
সোনামনির ছড়া
১।
বৃষ্টি পড়ে টাপুর
টুপ
সবাই করো একটু
চুপ
খোকা আমার ঘুমাবে
ফুল পরীরা চুমাবে।
আয় রে পরী উড়ে আয়
পাহাড় বন ঘুরে
আয়।
২।
বৃষ্টি পড়ে ঝুমুর
ঝুমুর
বৃষ্টি পড়ে সকাল
দুপুর
সোনামনির চোখে ঘুম
হাজার পরী দিচ্ছে
চুম।
ফেরেশতারা আসে
সোনামনি হাসে।
৩।
সোনামনি কাঁদে না
তুই কোলে মা'র, চাঁদে
না
এইতো আদর করছি
মা'য়
আমার সোনা আর কি চায়?
এনে দেবো সোনা বউ
সোনা খাবে ডালিম
মউ।
৪।
আমার সোনা রাগ
করেছে
দুধ খায়নি কাল
এমন দুধ এনে
দেবো
হাজার টাকার মাল।
খা রে সোনা খা
দাদীর কাছে যা।
৫।
মিটিমিটি হাসে কে রে
পিটিপিটি চায়
কে রে আমার
কথা কয়
বাবা বাবা গায়?
কও না খোদার একি দান?
কথাগুলোই হয়রে গান।
১৩/৭/১৯ ।। দুপুর ২:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৮৯
ময়না পাখি
ফুলি
গাঁয়ের ছোট ময়না পাখি
নামটা নাকি ফুলি
মুখে ছিল মধুর
হাসি
মিষ্টি মিষ্টি বুলি।
করতো পথে খেলাধুলা
মাথার চুল খুলি
ছবি আকতো বাংলাদেশের
হাতে নিয়ে তুলি।
সবার খুবই প্রিয় ছিল
মিষ্টি মেয়ে ফুলি
চুলে পড়তো রঙিন
ফিতা
হাতে পড়তো রুলি।
একদিন ফুলি বড় হলো
যৌবন এলো গায়
পাড়ার ছেলে তার
দিকে যে
ফিরে ফিরে চায়।
একদিন ওকে কারা যেনো
হঠাৎ নিল তুলি
খবর পেয়ে সবার
হৃদয়
উঠলো আহা দুলি।
পথের পাশে লাল হলো যে
সবুজ বরণ ঘাস
ধর্ষণ শেষে পড়ে
আছে
আজকে ফুলির লাশ।
আজ বাতাসে ঘুরে বেড়ায়
তার স্বজনের কান্না
ফুলিরা কি মানুষ
নয়
তাদের জান কি জান
না?
১৩/৭/১৯ ।। বিকাল ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯০
ক-তে কলা
খ-তে খাই
ক-তে কলা খ-তে খাই
আমার কোন দুঃখ
নাই।
স্বাধীন মানুষ স্বাধীন
দেশ
নাইরে দেশে দুঃখের
লেশ।
ক-তে কলা খ-তে খাই
আমার কোন দুঃখ
নাই।
শালী আছে গিন্নী
নাই
ইচ্ছে মতন কলা
খাই।
ক-তে কলা খ-তে খাই
তাইরে নাইরে গানা
গাই
স্বাধীন দেশের স্বাধীন
মানুষ
জলের তলে উড়াই
ফানুস।
ক-তে কলা খ-তে খাই
মানুষ মেরে শান্তি
পাই।
মারতে কোন নিষেধ
নাই
সবাই আমরা স্বাধীন
তাই।
ক-তে কলা খ-তে খাই
আমার কোন দুঃখ
নাই।
খেতে খেতে বাড়ি
যাই
মনের সুখে গানা
গাই।
১৪/৭/১৯ ।। সকাল ১১:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯১
নানার বাড়ি
নানার বাড়ি থানার পাশে
আনার নানা খায়
রানার বাড়ি খানার
দাওয়াত
কানার সাথে যায়।
এই বয়সে নানার খানার
নাইরে মানার শেষ
মিষ্টি খাওয়া মানা
নানার
খায় ছানার সন্দেশ।
নানার ঠিকই জানার কথা
মানার জিনিস কি
তবু নানা দানার
সাথে
খায় রে চিনি
ঘি।
নানার বাড়ি থানার পাশে
আনার নানা খায়
ছানার সন্দেশ খেতে
নানা
শানার পাড়া যায়।
১৪/৭/১৯ ।। রাত ৯:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯২
মেঘপরীদের
কন্যা
মেঘপরীদের কন্যা
মনের দুঃখে কাঁদলো
বলে
আসলো দেশে বন্যা।
তুমিও যদি কাঁদো
ডুবে যাবে তারার
আকাশ
আকাশের ওই চাঁদও।
তোমার দুঃখে মেঘপরীরা
কাঁদছে অনর্গল
তাইতো দিল আকাশ
থেকে
বন্যা এবং ঢল।
মায়ের ছেলে হচ্ছে দেশে গুম।
নিরাপদে সেই স্বদেশে
কেমনে দেবে ঘুম?
আপন শিশুর মিষ্টি
গালে
কেমনে দেবে চুম?
হুম
ধর্ষণ শেষে হত্যা
করার
পড়ছে দেশে ধুম।
তাই পড়ে না মেঘের ফোঁটা
ঝরে দুঃখীর কান্না
স্বৈরাচারের দেশে
শুধু
জুলুমই হয় রান্না।
১৫/৭/১৯ ।। রাত ১:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৩
আমার একটা
মন ছিল
আমার একটা মন ছিল
মনের কিছু পণ ছিল
আপন কিছু জন ছিল
কেমনে হলো পর
আজ মনে হয় এ জীবনটা
শূন্য বালু চর।
বাড়ির পাশে বন ছিল
বনের ভেতর ধন ছিল
ঘরে করিমন ছিল
কেমনে হলো পর
পারলে আবার তাদের
ধরে
বুকের ভেতর ভর।
কিছু জ্বালাতন ছিল
ভাল লাগার ক্ষণ
ছিল
এই জীবনে রণ ছিল
কেমনে হলো পর
বলছি যারে নিজের
বাড়ি
সে কি নিজের
ঘর?
কোথায় আমার আসল
বাড়ি
বল নারে অন্তর।
১৫/৭/১৯ ।। সকাল ৬:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৪
ছড়া লেখার
আগে
যে জানে না ছন্দ ভাই
তার ছড়া হয় অন্ধ
ভাই
লোকে বলে মন্দ
তাই
ছড়া লেখার আগে
ছন্দ শেখা লাগে।
কারে ছড়ার মাত্রা কয়
কখন কখন যাত্রা
হয়
কোন শব্দটা ফাতরা
হয়
সবই জানা লাগে
ছড়া লেখার আগে।
কারে বলে অন্তমিল
কারে বলে কনতো
মিল
কখন ভাঙে দন্তখিল
ছড়া লেখার আগে
সবই শেখা লাগে।
ছড়ায় আবার পর্ব কি
লম্বা চিকন খর্ব
কি
ছড়া লিখে গর্ব
কি
ছড়া লেখার আগে
এসব মানা লাগে।
১৫/৭/১৯ ।। সকাল ৯:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৫
এবার একটু
সাহস করো
এবার একটু সাহস করো, শক্তি রাখো গায়
অলস যারা তাদের
ভাত চিলে কাকে খায়।
কাজ করে না শুয়ে
বসে কুঁড়ের বাদশা হয়
তার ভাগ্যে তো লেখা
থাকে শুধুই পরাজয়।
সাহস রাখো মনে আর শক্তি রাখো গায়
বিবেকবুদ্ধি কাজে
লাগাও, হাঁটো নিজের পায়
পরের পায়ে যায়
না হাঁটা, পরের মুখে
খাওয়াবী
পরের মুখে গান
গাইলে হয় না নিজের
গাওয়া।
পরে করলে আমল তাতে নিজের আমল হয় না
কবর যতোই হোক
না পাকা তাতেও কেউ
রয় না।
নিজের কাজ নিজে
করো,
দূর করে দাও ভয়
সাহসীরাই ছিনিয়ে আনে
এই দুনিয়ায় জয়।
১৫/৭/১৯ ।। বিকাল ৪:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৬
মানুষ হওয়ার
জন্য
হায়রে মায়া স্বপ্ন ছায়া কোথায় গেলি তুই
তোর জন্য হাস্নাহেনা
কাঁদে গোলাপ জুঁই।
পাখির বুকে মায়া
আছে,
স্বপ্ন ভরা বন
তুই যে মানুষ
তোর মায়াটা গেল কি কারণ?
মানুষ শুধু অস্ত্র বানায়, মানুষ মারে রোজ
তুমি মানুষ সেই
মৃত্যুর রাখো কি ভাই
খোঁজ?
মাতাপিতা সন্তান মারে, সন্তান
মাতা পিতা
কেন পড়ো কোরান
বাইবেল কেন পড়ো গীতা?
বনের পশু বনে থাকে, মনের পশু মনে
মানুষ কেন পশুর
অধম হচ্ছে অকারণে?
ধর্মটাকে ছাড়ছে মানুষ
পশু হওয়ার জন্য
ধর্ম বলে সেইতো
মানুষ, প্রেমে যেজন ধন্য।
১৬/৭/১৯ ।। ভোর ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৭
কোন কথাটা
হয়নি বলা
ফুলবাগানে ফুল ফোটে, পাখি ওড়ে বনে
এমন সময় কোন
কথাটা পড়ে তোমার মনে?
কোন কথাটা বলতে
তুমি চাও
কোন কথাটা বলার
জন্য নদীর ঘাটে যাও
কোন কথাটা বুকের
ভেতর খোঁচায় ক্ষণে ক্ষণে।
কোন কথাটা স্বপ্ন হয়ে মেঘের দেশে ওড়
কোন কথাটা সূর্য
হয়ে জাগে নতুন ভোরে
কোন কথাটা বলার
আগে ঠান্ডা পানি খাও
কোন কথাটা বলার
জন্য পুকুর ঘাটে যাও
কোন কথাটা সকাল
বিকাল উতলা করে তোরে?
সেই কথাটা হয়নি বলা, কেবল চোখে হাসি
সেই চোখতো বলে
বেড়ায় তোকে ভালোবাসি।
১৬/৭/১৯ ।। রাত ১০:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৮
আমরা এমন জাতি
আমরা এমন জাতি
সত্যি আত্মঘাতি।
মানুষ ফুলে তালগাছ
হয় অমাবশ্যা রাতি
চামচিকার ল্যাঙ খেয়ে
মরে মস্তবড় হাতি।
আমরা এমন জাতি
হারান শেখের নাতি
বিনা ভোটে চেয়ারম্যান
হয় সেও রাতারাতি
খুনীরাসব ঘুরে বেড়ায়
ফুলিয়ে বুকের ছাতি।
আমরা এমন জাতি
দেখি তেলেসমাতি
হুজুগ পেলে সেই
হুজুগে করি মাতামাতি
ঢাকার বাসে চড়ে
ভাবি যাবো ঝিনাইগাতি।
আমরা এমন জাতি
নিভাই আলোর বাতি
ভাইয়ের সাথে ঝগড়া
করি,
করি হাতাহাতি
নিজেই নিজের খুনী
সাজি আমরা রাতারাতি।
আমরা এমন জাতি
গরু আড়াই দাঁতি
আজকে যারে রাজা
বানাই, কালকে বানাই তাঁতী
কিছুতেই তো বুঝি
না ভাই কাজটা আত্মঘাতি।
১৬/৭/১৯ ।। রাত ১১:৩০ মি।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৮৯৯
রাজা যায়
বাজারে
রাজা যায় বাজারে
পথে থামে মাজারে
রাজা খায় গাঁজা
তাতেই রাজা তাজা।
দেশ চালাতে নেশা খাই
দিনে পড়ি এশা
ভাই
রাত বিরাতে মানুষ
মারি
রাজা হলে সবই
পারি।
চোরকে বলি বাড়ি যাব
শুয়ে শুয়ে তাড়ি
খা
তাড়ি দিয়ে ভরি
দেশ
বলো সাবাস প্রিয়
দেশ।
১৭/৭/১৯ ।। ভোর ৫:০০ টা।
আসাদ
বিন হাফিজ এর ছড়া-১৯০০
আয় আয় চাঁদ
মামা
আয় আয় চাঁদ মামা
দেশ আজ তামা
তামা
শোষণ আর শাসনে
মিথ্যার ভাষণে।
আয় আয় চাঁদ মামা
পড়ে আয় লাল
জামা
চারদিকে অন্যায়
দেশ ভাসে বন্যায়।
তুই আয় জলদি
দেবো তোরে হলদি
কর তুই ধ্বংস
জালিমের বংশ।
১৭/৭/১৯ ।। ভোর ৫:০০ টা।
No comments