আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ৩১০১-৩২০০

 

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০১

খেতাব

মুক্তিযোদ্ধা খেতাব যখন

রাজাকারে কাড়ে

তখন বসে মুক্তিযোদ্ধা

ঘোড়ার আন্ডা পাড়ে

 

স্বাধীনতার ঘোষকে হয়

পাকবাহিনীর দালাল

পিন্ডি থেকে বাঙাল এসে

খেতাব করে হালাল

 

আলালে খায় পান্তাভাত,

দালালে খায় আন্ডা

আন্ডা খেয়ে দালাল ঘুরায়

স্বাধীনতার ঝান্ডা

 

মুক্তি থাকে বন্দীশালায়,

রাজাকার হয় মন্ত্রী

বিদেশ থেকে উড়ে আসে

নানান ষড়যন্ত্রী

 

রণাঙ্গনে থেকেও যদি

জিয়ার খেতাব ভুয়া হয়

যে দেখে নাই মুক্তিযুদ্ধ

তার খেতাব কি ভূয়া নয়?

১২//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০২

জিয়ার খেতাব টিয়া খায়

জিয়ার খেতাব টিয়া খায়

তাতে কোন দুঃখ নাই

যারা খেতাব দিয়া খায়

তাদের জন্য চিন্তা ভাই

 

স্বাধীনতার ঘোষক যদি

খেতাব হারা হইয়া যায়

যে দেখে নাই যুদ্ধ, লড়াই

সে খেতাবটা কেমনে পায়?

 

পাই না ভেবে কুল

কী হবে তার যে করেছে

খেতাব দিয়া ভুল?

 

তার হবে কি শূল?

 

নাকি,

যে করেছে খেতাব কেড়ে

মস্তবড় ভুল

সে,ছিঁড়বে বসে বসে

নিজের মাথার চুল?

 

জিয়া খেতাব লড়ে পায়

কেউবা বিমান চড়ে পায়

কেউ খেতাব পায়

পাকির দেয়া হালুয়ারুটি খাইয়া

কেউ খেতাব পায় বিমান চড়ে

লাহোর দিল্লী যাইয়া

 

কেউবা আলু পুড়ে খায়

কারো খেতাব উড়ে যায়

 

কেউবা খেতাব উড়ে গেলে

দেখে চাইয়া চাইয়া

কেউবা কারো খেতাব কাড়ে

রঙিন পানি খাইয়া

১২//২০২১; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৩

ডাক এলে

ডাক এলে ভাই যেতে হবে, বলার সময় পাব না

রাজবাড়িতে দাওয়াত ছিল,সে দাওয়াতও খাবনা

জোসনা রাতে ছাদে বসে মরমী গান গাব না

হঠাৎ করেই চলে যাবো, বলার সময় পাব না

 

না যদি পাই বলার সময়, মাফ করে দিস ভাই

'যাচ্ছি চলে' -এই কথাটাও কেউতো বলে নাই

যাঁর ইচ্ছাতে এসেছিলাম, তাঁর ইচ্ছাতে যাই

দোয়া করিস তাঁর রহমের ছায়া যেনো পাই

 

দুঃখ যদি কেউ কোনদিন পেয়ে থাকিস মনে

সে দুঃখকে পালিস না ভাই দিস পাঠিয়ে বনে

মনে রাখিস আমার মতো তোরও যেতে হবে

জন্ম হলে যেতেই হবে, কেউ রবে না ভবে

 

সময় থাকতে যাবার জন্য পূণ্য জোগাড় কর

আল্লাহর হুকুম মেনে বন্ধু-- নবীর পথটি ধর

১৩//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৪

খাঁটি কথা

খাঁটি কথা আঁটি বেঁধে পাটির নিচে রাখো

খাঁটি কথা রা'টি নয়, ঢাকনা দিয়ে ঢাকো

ইমিটেশন দিয়ে সোনার গয়না গড়ে পরো

যে দেখেনি আসল যুদ্ধ তারে বানাও বড়ো

 

রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা লাঙল ঠেলে খায়

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী হয়, ভয়েতে যে পালায়

মারা যদি যেতো সে, দেশ চালাতো কেডা

যুদ্ধকালে পালায় যে, সেই আসলে বেডা

 

একাত্তুরের মুক্তিযোদ্ধা? হাঁটাহাঁটি করো

খাঁটি যোদ্ধা হলে তুমি ঐক্যটা ফের গড়ো

পাকি রেশন খেকো যে, মুকুট পরাও তারে

তারা অতি চালাক চতুর ধান্ধাবাজি পারে

 

খাঁটি কথা পাটির নিচে, হাঁটো তুমি হাঁটো

মুক্তিযোদ্ধা খাঁটি তবে, আঙুল বসে চাটো

দেশ চালাবে দুয়োরানী, সুয়োরানী জেলে

দেশটা চলে উজান থেকে ঢেলে দেয়া তেলে

 

পাকির চুমু যে খাবে সে রাজার কুমার হবে

হেন করেঙ্গা, তেন করেঙ্গা, কত কথা করে

কেঁচো খুঁড়ে বের করো না কেউ কখনা সাপ

খাঁটি কথা ঘাঁটাঘাঁটি কইরো না কেউ বাপ

১৪//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৫

সোনার চান

কবিরা সব কাকের মতো রইলো আজো বোকা

চতুর কোকিল তাইতো তারে দিল দ্বীনের ধোঁকা

বললো ডেকে, আত্মপ্রচার চাইতে নাইরে ভাই

কবিও হলে নামের কাঙাল, দুঃখের সীমা নাই

 

চুপি চুপি করলে রে দান, সওয়াব বাড়বে তাতে

তার বদলা দিবেন আল্লাহ নিজেই নিজের হাতে

কবরে কারো নাম, যশ, খ্যাতি, কিছুই যাবে না

এপার যারা বদলা নেবে ওপার কিছুই পাবে না

 

তোমার গাছের ফলটা কবি আমি পেড়ে খাই

তোমার পূণ্য আরো বাড়ুক এই তো আমি চাই

না বলে কেউ নিলে কিছু, কে কয় তারে চুরি?

বলেই যদি নেই তবে কও, রয় কি বাহাদুরী?

 

কোকিলরা সব উকিল বাবু, কাকগুলো সব খোকা

কোকিলরা খায় ফলফলারি, কাকেরা খায় ধোঁকা

গানগুলো যায় ইউটিউবে, জানিস নাকি ভোলা

কোন গানটার বাপ আছে, কোনটা জারজ পোলা?

 

গীতিকার নাই, সুরকার নাই, শিল্পীরা গায় গান

যার নাই কোন বাপ-মা সে, সাজে সোনার চান

২১//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৬

ফাগুন এলো

বাঘ দেখেছি খাঁচার ভেতর

রাগ দেখেছি মনে

বাঘ দেখতে যাইনি সোনাই

গভীর সুন্দর বনে

 

দিনে দিনে তাইতো আমি

ভুলছি বাঘের ভয়

আমার পোলা এখনো তাই

গুমের শিকার হয়

 

রাগকে বলি এবার একটু

বাইরে যাবি বাপ

বিশ্ব দেখুক সন্তানহারার

নিঃশ্বাসের উত্তাপ

 

পুড়ুক তাতে জালিম জঙ্গল

পুড়ুক বাঘের চামড়া

হিংস্র জন্তুর হামলা থেকে

বাঁচুক হরিণ, আমরা

 

ফাগুন এলো জাগুন ভাই

রাগুন, চোখে আগুন চাই

২৩//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৭

ফাগুন মাসে

ফাগুন মাসে আগুন নিয়ে খেলিসনা আর রানা

ফাগুন মাসে প্রেমপাখিটা মেলুক আবার ডানা

 

ফাগুন মাসে মিছিল হবে রাজপথে সব যা না

ফাগুন মাসে জুলুমবাজের দূর্গে দে না হানা

 

ফাগুন মাসে সবাই আবার ভৈরবী গান গা না

ফাগুন মাসে দে মিটিয়ে যে যেটা আজ পানা

 

প্রেমিককে দে প্রেমচাহনি, দুর্জন দুরমুজ পানা

চাটুকারে চটকানি খায়, কেউ করে না মানা

 

ফাগুন মাসে বাগুন ক্ষেতে বসে সাহস বানা

উন্নয়নের খিচুড়ি আর খাসনে বসে কানা

 

ফাগুন মাসে আগুন হয়ে সত্য কথা বলিস

ফাগুন মাসে জান্তা এলে পায়ে তারে দলিস

২৩//২০২১; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৮

মনুষত্বের ঘ্রাণ

পেটটা ভরে খাচ্ছো রোজই, মনটা ভরে খাও

মনটা ভরে চাচ্ছো খেতে? ফুল বাগানে যাও

তাকিয়ে দেখো শিরশিরানি পাতার সঞ্চরণ

হাত ইশারায় ডাকছে কাকে মন মহুয়ার বন

 

মনটাকে দাও খাদ্য তুমি, পড়ো অঢেল বই

ফুল পাখি আর নদীনালা, বইকে বানাও সই

চক্ষু ঘুরুক দৃষ্টি সীমায়, মন উড়ে যাক দূরে

চক্ষু দেখুক সবুজ লতা, মনটা ভরুক সুরে

 

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, ঝরণা ছলাৎছল

কলকলিয়ে শিশুর হাসি বইছে অবিরল

কাল কোকিল ডাকলে কেন মন করে আনচান

ময়না টিয়া, দোয়েল তিতির, কারটা সেরা গান?

 

খাইলে পরে দেহ বাঁচে, আত্মা বাঁচে জ্ঞানে

আত্মা মরলে লাশ হয় দেহ, বাঁচেনা কেউ প্রাণে

মনটাকে দাও খাদ্য যদি, বাঁচাতে চাও প্রাণ

নয় পাবে না জেতা লাশে, মনুষত্বের ঘ্রাণ

২৪//২০২১; ভোর সাড়ে ১২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১০৯

কাবার কথা

বাবার কাছে কাবার কথা যত আমি শুনি

সেই কাবাতে যাবার স্বপ্ন এই হৃদয়ে বুনি

 

মন হয়ে যায় উড়ালপাখি, কাবার পানে ধায়

কাবা যেন ডাকতে থাকে আয়রে বাছা আয়

 

দেখতে যাবো হেরার গুহা, ঊষর মরুভূমি

সঙ্গে যাবে মন ভোমরা, যাবে নাকি তুমি?

 

মনে ভাসে মা হাজেরা, ইসমাঈলের ছবি

কেমনে পেলেন 'আলামিন' উপাধিটা নবী

 

আমিও হবো সত্যবাদী, মিছে কথা বলবো না

শপথ নিলাম পাপপথে আমি কভু চলবো না

 

বাবার কাছে কাবার কথা যতই যেতাম শুনি

সেই কাবাতে যাওয়ার স্বপ্ন যেতাম মনে বুনি

২৪//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১০

একটা কথা কই

একটা কথা কই

আমি কিন্তু রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নই

আমি তো নই দরবেশ বাবা

ব্যাংকে আমি দেই না থাবা

আমি মামা মন্ত্রী, এমপি কোন কিছু নই

 

একটা কথা কই

চেয়ারম্যানের চেয়ার চাই না

ভাত খাই আমি, রিলিফ খাই না

দেখতে যাই না রডের বদল কেডা দিল বাঁশ

বিনা দোষে জেলে যায় কে, কেডা পরে ফাঁস

ছাগল গরু কান্দে কেনো, কেডা খাইল ঘাস

সেই কথাটা কই

চেয়ারম্যানের দোসর কোন মেম্বার আমি নই

 

জমিদারের পুকুরের মাছ কোন কোন চোরা খায়

সেটা দেখতে আঁধার রাতে জমিদার কি যায়?

চোরে চোরে মাসতুতৃ ভাই

আমি শুধু ভাত খেতে চাই

দেশটার আমি মালিক মামা, অন্য কিছু নই

মানুষ ছিলাম, মানুষ আছি, সেই কথাটা কই

 

আমি দেশের জনগণ

অতি উদার আমার মন

২৫//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১১

ধুমতি নদীর বাঁকে

ধুমতি নদীর বাঁকে

হিজল পাতার ফাঁকে

ডাহুক বসে ডাকে

কাকে, কাকে, কাকে?

 

তাকে

যে যে স্বপ্ন আঁকে

ডরায় আল্লাহপাকে

পাকপবিত্র থাকে

ভালবাসে মা কে

স্বপ্নভেলায় চড়ে যে যায়

প্রভুর আরশপাকে

তাকে, তাকে, তাকে

 

মহানবী কয়

করো আল্লাহর ভয়

জীবন তোমার নয়

এক আল্লাহর হুকুম চলে

সারা বিশ্বময়

তারেই করো ভয়

আর কাউকে নয়

 

ধুমতি নদীর বাঁকে

আজও ডাহুক ডাকে

২৫//২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১২

কোন প্রাণীটা

কোন প্রাণীটা করছে বলো খাবার গুদামজাত

কোন প্রাণীটা মনের কষ্টে করছে অশ্রুপাত?

কোন প্রাণীটা বিনা দোষে অন্যকে দেয় সাজা

কোন প্রাণীটা দাবী করে নিজকে ধরার রাজা?

 

কোন প্রাণীটা অকারণে পরের ক্ষতি করে

কোন প্রাণীটা শান্তি নাশে অগ্নি জ্বালে ঘরে

কোন প্রাণীটা আপন প্রভুর হুকুম করে রদ

কোন প্রাণীটা ধরার মাঝে সবচে বেশী বদ?

 

সেই প্রাণীটা জীব জানোয়ার বন্যজন্তু নয

সেই প্রাণীটা আদমজাত মানুষ তারে কয়

২৮//২০২১; ১.৩০ মিনিট

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৩

সোজা হয়ে দাঁড়াও

কত কথা বলার ছিল, বলিনি

সত্য পথে চলার ছিল, চলিনি

অগ্নি হয়ে জ্বলার ছিল,জ্বলিনি

দুঃশাসনকে দলার ছিল, দলিনি

 

ভয়রে শুধু ভয়

জীবন করলো ক্ষয়

সবাই মরে, তুমিও মরবে

মনে কি তা রয়?

 

জীবনে যা করার ছিল, করিনি

কোরান বুঝে পড়ার ছিল, পড়িনি

ন্যায়ের পথে লড়ার ছিল, লড়িনি

জীবনটাকে শুদ্ধ করে গড়িনি

 

মন্দ কাজটা বন্ধ কভু করিনি

নবীর হাদীস তাও তো খুলে পড়িনি

হকের রশি আঁকড়ে কভু ধরিনি

মরবো জানি, কিন্তু আজো মরিনি

 

এই যে বাঁচা এই বাঁচা কি

খোদার রহম নয়

মিছেমিছি করছো কেন

তবে মরার ভয়?

 

ভয়কে এবার তাড়াও

সোজা হয়ে দাঁড়াও

২৭//২০২১; বিকাল ৪টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৪

যন্ত্রদানব

মানুষগুলো মানুষ নাই আর, যন্ত্রদানক পাক্কা

এ কথাটাই বলতে ছিল ফজর আলী কাক্কা

সেই কাকাকে কাকী এসে দিল একটা ধাক্কা

কি নাও আনছো কিন্না যে,ঘুরে না এর চাক্কা?

 

আকাশ ঘুরে, বাতাস ঘুরে, ঘুরে দিন ও রাত্রি

প্রশ্ন শুনে কাকীর দিকে তাকায় কাকার ছাত্রী

অবাক চোখে চেয়ে বলে,, একি আজব পাত্রী

কখন থেকে তিনি হলেন পাবনা গামী যাত্রী?

 

কাকার তখন মাথা ঘুরে কি কয় এসব গিন্নী

সেও কি তবে হয়ে গেল ফকির বাড়ির মিন্নী?

নাও নিয়ে সে পড়লো কেন, রান্না রেখে শিন্নী

নায়ের কবে চাক্কা থাকে কি কয় এসব গিন্নী?

 

আজকে হয়নি কালকে হবে, হতে কি আর বাকী

শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায়, বলল হেসে কাকী

খুনীগুলো জেল পুলিশকে কেমনে দিল ফাঁকি

কেমনে তারা বিদেশ গেল, উড়াল দিল নাকি?

 

খুনীর পাযের চাক্কা তাদের ঢাক্কা ছাড়া করে

পাক্কা বাড়ি ছেড়ে মানুষ বনেের রাস্তা ধরে

এর চেয়ে কি নায়ের চাক্কা বড়ো হলো কও

তুমি ওতো যন্ত্রদানব চোখ বুঁজে সব সও

 

মানুষগুলো যন্ত্রদানব, কলের পুতুল সবাই

অমানুষরা যাচ্ছে বেঁচে,মানুষ হচ্ছে জবাই

২৮//২০২১; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৫

মার্চের দিনগুলো

মার্চের দিনগুলো টকটকে লাল

মার্চের দিনগুলো সাগর উত্তাল

 

মার্চের দিনগুলো আগুনের গোলা

মার্চের দিনগুলো ঘাড়ত্যাড়া পোলা

 

মার্চের দিনগুলো ঠুসঠাস গুলি

মার্চের দিনগুলো জয়নুলী তুলি

 

মার্চের দিনগুলো ঝলসানো রুটি

মার্চের দিনগুলো সীমান্তের খুঁটি

 

মার্চের দিনগুলো স্বপ্নরঙিন

মার্চের দিনগুলো মুক্তস্বাধীন

 

মার্চের দিন পাড়ে স্বাধীনতার আন্ডা

মার্চের দিন ওড়ে মুক্তির ঝান্ডা

//২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৬

সুখের কলতান

মন খারাপের নানী

এর দাওয়াইও জানি

ছাড়তে হবে হায় মাতম

বাংলা কানাকানি

 

অমাবশ্যায় খেতে হবে

চন্দ্র ধোয়া পানি

মিঠা মিঠা লাগবে তখন

তিন সতীনের বানী

 

লাগবে না আর তিতা মোটে

কচু বনের হানি

শুকিয়ে যাবে মনের যতো

দুঃখ ব্যথার  পানি

 

মন খারাপের রানী

কোথা থেকে কিনলে এমন

নষ্ট হৃদয়খানি?

যে দেখে না সুখের সাগর

পড়ছে চোখে ছানি?

 

মন খারাপের নানী

মন নিয়েছো নাওনি কেন

মন মালিকের বানী?

 

পড়ে দেখো তার সে বানী

ধরো নিজের ভুল

মন বাগানে ফুটবে তখন

হাজার সুখের ফুল

 

আকাশ দেখো, নদী দেখো

শোন পাখির গান

তোমার মনেই পাবে খুঁজে

সুখের কলতান

//২০২১; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৭

দাও দাও প্রেম দাও

চাই না চাই না প্রভু নাম খ্যাতি যশ

শুধু রেখো আমাকে তব প্রেমে বশ।

তোমাকে না পাই যদি চাই না কিছু

নিওনা নিওনা প্রভু আলেয়ার পিছু।

আমি তো আমার নই বান্দা তোমার

পদে পদে ভুল প্রভু করি বেশুমার।

আমারই পাপে ভরে এ জগত ভুমি

তারপরও মাফ চাই, মাফ করো তুমি

চাই না চাই না প্রভু যশ খ্যাতি মান

তোমার প্রেমে প্রভু রাখো পেরেশান।

আমারে বানাও প্রভু মুমীন ইনসান

এ জীবন বেঁচে থাকা সব তব দান।

দাও দাও প্রেম দাও, ওগো রহমান

ইবলিসী লোভ থেকে বাঁচাও ঈমান।

৬/৩/২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৮

কবিকথা

পুরষ্কারে ভরছে কবির বাড়ি

কবির বউয়ের তবু শূন্য হাঁড়ি।

পরণে তার শতেক ছেঁড়া শাড়ি

ক্রেস্টে শুধু ভরছে কবি বাড়ি।

বাড়ি কোথা? কুঁড়েঘর

সামনে ধূ ধূ বালুর চর

চালের বদল খাচ্ছে খড়

দেখে না তা একাব্বর।

হস্ত বুলায় মস্তকে

কবি থাকে পুস্তকে

নাদুস নুদুস মোটা তাজা

কবি শুধু মনের রাজা।

মানুষ হ তুই কাব্য ছাড়

কাব্যে ভরে পেটটা কার?

১০/৩/২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১১৯

ভাবেন

আজকে শুভ জন্মদিন

দোয়া এবং সালাম নিন

জন্ম যেজন দিলেন তাঁর

শোধ করেছেন জন্মঋণ?

 

ছিলেন কই? কেন এলেন?

কোথায় আবার যাবেন?

জন্মদিনের শুভক্ষণে

এসব একটু ভাবেন

 

দেহ জমিন ভবের চর

কে দিয়েছে নারী, নর

মরে গেলে এসব ভাবার

সময় কি আর পাবেন?

এসব একটু ভাবেন

 

মার উদরে ছিলেন কয় দিন

কেমনে দিবেন মায়ের সে ঋণ

জন্মদিনের শুভক্ষণে

এসব একটু ভাবেন

রইলো হায়াত আর কয়দিন

কবে ফেরত যাবেন

আগে একটু ভাবেন

তারপরে কেক খাবেন

১৮//২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২০

চোরাই ধান্ধা ছাড়ো

গীতিকার হয় গানের মালিক

সুরকার হয় মালী

শিল্পীরা পায় এজেন্সী আর

পাবলিকের হাততালি।

 

প্রযোজক হয় ব্যবসাদার

লাভের অংশ তার

এ নিয়ে ভাই ঝগড়া করার

বলো কি দরকার।

 

নজরুলের গান নজরুল গীতি

সুর দেয় কমল দাস

ফিরোজা বেগম এজেন্সি নেয়

মিটায় মনের আশ।

 

লালনের গান লালন গীতি

অন্য কারো হয় না

ফরিদা বেগম সম্মানী পায়

রয়্যালিটি লয় না।

 

হিজ মাস্টার ব্যবসা করে

লাভ সবই হয় তার

এসব কথা সবাই জানে

জানা নয় কও কার?

 

দ্বীনী খেদমত হুজুর করেন

পয়সা তিনি পান

আপনি কেন পরের ধনে

ব্যবসা করতে যান।

 

শেয়ার করেন পেয়ার করেন

ফেয়ার করেন সব

দ্বীনী খেদমত এরেই বলে

খুশীও হন রব।

 

ডাউনলোডের বাউন্ডুলে

ব্যবসা করা ছাড়েন

গীতিকারের রয়্যালিটি

আপনি কেন মারেন?

 

এসব হচ্ছে চোরাই ধান্ধা

বান্দা এসব ছাড়ো

যার যার হক তারে দাও

হক মেরো না কারো।

০২/০৮/২০২২; বাদ ফজর

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২১

আইলো আর খাইলো

মুরগীটারে গর্দান কেটে কবে যে কে খাইল

সেদিন থেকে শিয়ালবাবু নতুন মজা পাইল

আমবাগানে বসে বসে মুরগী পুরা খাইল

খানা শেষে তানা নানা গানা কত গাইলো

 

শিয়াল দেশে আইলো

মুরগী ধরে খাইলো

ভীষণ মজা পাইলো

আরো খেতে চাইলো

 

গুম পোলাটার রক্ত দিয়া শিয়াল বাবু নাইলো

মুরগী খেয়ে শেয়াল এবার ছাগলছানা চাইলো

মুরগীর মায়ে পুকুরপাড়ে শোকের মাতম গাইলো

হাওয়াই জাহাজ দিয়া শিয়াল উড়ে উড়ে আইলো

 

আইলো বলে খাইলো

ডানে বায়ে চাইলো

ছাগলছানা শেষ হলে

গাধা গরু চাইলো

 

আতুর ঘরের শিশু বাচ্চা করলো চুরি দাইলো

শিয়াল কই? ভূতের নাতি, যমে কদু খাইলো

সঙ্গে খাইলো সিদ্ধ বিচি, কচি লাউয়ের খালটা

মুরগী ছাগল খেয়ে এবার খাবে গরুর পালটা

২৫//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২২

সাচ্চা মুসলমান

শোষকের পর শোষক দেখেছে

শোষণ হযনি শেষ

আলকোরানের রাজ দেখেনি

দুঃখিনি বাংলাদেশ

 

দেখেছে শুধু কাফের বেঈমান,

প্রতারক বার বার

কোরআনী শাসন চাইলে বলো

আল্লাহু আকবার

 

আল্লাহু আকবার বলোরে ভাই

আল্লাহু আকবার

জালিম শুধু ভয় পায় দেখে

আলীর জুলফিকার

 

ভীরু বুজদিল কাপুরুষ হয়

মুনাফিক বেঈমান

এক আল্লাহতে ভরসা রাখে

সাচ্চা মুসলমান

৩০//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৩

মুক্তিযোদ্ধা নানী

যে দেখে নাই মুক্তিযুদ্ধ, যে ছোঁড়ে নাই গুলি

কে বলেছে লড়াই নিয়ে ছাড়তে তারে বুলি?

মুক্তিযুদ্ধের সে কি জানে? পাগলে কি কয়?

পাকবাহিনীর রেশন খেলে পাগল হতে হয়?

 

কি কয় এসব রামছাগলে? পাগলে কি খায়?

স্বাধীনতার ঘোষক খুঁজতে বৈদেশে কে যায়?

পঞ্চাশ বছর গবেষণার ফল শুনে যাও আজ

ঘোষক তিনি যার মুন্ডুতে বান্ধা পিতার তাজ

 

গ্রেনেড নাকি কোয়েল পাখির বড়সড় আন্ডা

আরো কতো গপ্পো ছাড়ে পিন্ডি ফেরত পান্ডা

গাড়ির চাকা ফাটলে বলে, গুলি, গুলি, গুলি

কারণ সে তো দেখেও নাই কেমনে ওড়ে খুলি

 

পাকির রেশন খেয়ে যারা মুক্তিযোদ্ধা হয

রণাঙ্গনের যোদ্ধারে সে রাজাকারও কয়

যে করে নাই যুদ্ধ সেও মুক্তিযোদ্ধা সাজে

এমনিতে কি খালি কলস ঠনঠনিয়ে বাজে?

 

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা করছে বড়াই রোজ

একাত্তুরে কি করেছে দেখ না নিয়ে খোঁজ

বায়োস্কোপে যেমন করে সাপ হয়ে যায় রানী

বয়স বাড়লে বাড়বে আরো মুক্তিযোদ্ধা নানী

৩০//২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৪

আজব দোষ

লোকটা তো বিনয়ী, চোখে চোখে চায় না

অতিশয় ভাল লোক, ঘুষটুস খায় না

হেঁটে হেঁটে গুণগুণ বাজে গান গায় না

যত দাও ধমক তাতে ভয়টয় পায় না

সারাদিন দেখে বউ, বউ দেখে আয়না

 

লোকটাতো সাতপাঁচ ঝামেলাতে যায় না

কারো মাল না বলে সে চুপে চুপে খায় না

ডোবা নালা নর্দমায় এইলোক নায় না

স্বপ্নের নাও নাকি রাজপথে বায় না

পুলিশতো হয়রান, দোষ তার পায় না

 

সোজা পথ পেলে সেতো বাঁকা পথে যায় না

শরবত পান করে, শরাব নাকি খায় না

মক্কাতে হজে যায়,  যায় না সে চায়না

সে দেখে সোনা বউ, বউ দেখে আয়না

তবু পুলিশ তার কোন দোষ খুঁজে পায় না

 

দোষ কেনো করে নাই এই দোষে তার

ফাঁসি হলো লোকটার আর তার মা'

//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৫

কর্ণফুলি

কর্ণফুলি, কর্ণফুলি, জলকিশোরী মেয়ে

ছুটছো কেন অমন করে, যাচ্ছো কোথা ধেয়ে?

নামটা তোমার মিষ্টি ভারী, ফুলি, ফুলি, ফুলি

নাম তো না, এটা যেনো অচিন পাখির বুলি

 

মাকে কিছু না বলে তুই যাচ্ছিলি কই ফুলি?

তাই কি মায়ের বকা খেয়ে ফেললি ছুঁড়ে তুলি?

সবার কাছে বললি কেঁদে, মা ডলেছে কর্ণ

সত্যি বলছি, এর মধ্যে মিথ্যে নেই একবর্ণ

 

সেই থেকে তুই হয়ে গেলি কর্ণফুলি কন্যা

পাহাড়িয়া পরীর মেয়ের চক্ষু ভরা বন্যা

কর্ণফুলি, কর্ণফুলি, টিকাটুলি যাবি?

বুড়িগঙ্গার একটু দূরে ঢাকা তারে পাবি

 

পাহাড়, নদী, সাগর, শহর এইতো আমার দেশ

জলকিশোরীর জল মাখানো সবুজ বাংলাদেশ

টলোমলো জলকে চলো ছলো ছলো আঁখি

কর্ণফুলির কানের দুল কোন পাহাড়ে রাখি

 

কোন পাহাড়ে রাখি বলো ভালবাসার ফুল

যেখানে হয় সৌদিখেজুর, মিষ্টি আপেল কুল

যেথায় ফলে সুরমাদানা, আঙুর ফলের রস

সে অপরূপ রূপে হয় পীর আউলিয়া বশ

 

খোদার লীলা যতোই দেখি প্রাণ ভরে না তবু

কি রেখে যে কিসের শোকর আদায় করি প্রভু!

//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৬

ভালই আছে দেশ

কোথায় বাড়ি, কোথায় দেশ?

খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলাম

আমিই এখন নিরুদ্দেশ

 

আমার চাইতে ভাল আছে

আমার চাকর ও মোখলেস

তাদের মাথায় তেল পড়লেই

গজায় নয়া তাজা কেশ

কতা হাচা, ও মোখলেস?

 

মোখলেস হি হি হাসে

পঙ্গপালরা বিদেশ থেকে

উড়ে উড়ে আসে

ধানক্ষেত সব সাফা করে

নাচে দুর্বাঘাসে

কবে যাবেন? জিগাইলে কয়

মাঘ বা ফাগুন মাসে

 

আমলা মন্ত্রী পাচ্ছে মজা

সবাই তিরিশ তাসে

জনগণতো মানুষ থেকে

প্রজা সেজে হাসে

পঙ্গপাল সব মোটাতাজা

বিদেশ থেকে আসে

 

কোথায় বাড়ি, কোথায় দেশ

কোথায় ছিল ঘর

বললাম, তুই জানিস নাকি

দেশের মাতব্বর?

 

সিংহাসনে বসা ছিল

আস্ত বিড়াল ছানা

বললো, ঘরের দরকার কি

কও তো দেখি নানা?

 

প্রজারা কি ছিঁড়তে পারে

রাজার কোন কেশ

ভাল ছিলাম, ভালই আছি

ভালই আছে দেশ

//২০২১; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৭

ফাঁসির ভাগ্য

থাকবে নাতো তুমি ধরায়, থাকবো নাতো আমি

থাকবে নাতো মাটির ওপর দাদীর আপন স্বামী

থাকবে নাতো হাতি ঘোড়া, ডাইনোসরের জাত

থাকবে নাতো স্বৈরচারের সন্ত্রাস, কালো রাত

 

থাকবে নাতো আবরাহার সে মিথ্যা বাহাদুরী

তোমায় কাবু করবে তখন আবাবিলের নূড়ি

হস্তিগুলোর অস্থিমজ্জা ধুলায় মিশে যাবে

তোমার নাদুস শরীরখানা পোকামাকড় খাবে

 

যে এসেছে কেউ থাকেনি, রাজা কিম্বা কশাই

তবে কেন আপনি আমায় কষ্ট দিচ্ছেন মশাই

আমার মতো আপনিও তো একদিন হবেন লাশ

তবে কেনো করছেন বড়াই, ডাকছেন সর্বসাশ?

 

মিছামিছি ধরে আপনি আমারে দেন ফাঁসি

ফাঁসির ভাগ্য বীরের হয়, পায় না সেবাদাসী

//২০২১; ৭.৩০ মিনিট

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৮

এক্কেবারে চুপ

টাপুর টুপুর টুপ

এক্কেবারে চুপ

জবান রাখবি বন্ধ

চোখ নাই তুই অন্ধ

 

তুই তো কানে কালা

গলায় ফাঁসির মালা

যখন শুনবি, ধুপ

এক্কেবারে চুপ

 

রা করবি না ঠোঁটে

দেখবি শুধু ভোটে

কে জিতে যায় আগে

কার ভয়ে কে ভাগে

 

দেখবি শুধু লেখবি না

যা লেখবি তা দেখবি না

টাপুর টুপুর টুপ

এক্কেবারে চুপ

//২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১২৯

ফুলবাবু

ফুলবাবু ফুল খায়

কাঁচা পাকা কুল খায়

সরিষার মূল খায়

বাসে বসে গুল খায়

আর খায় পানি

ফিসফিস কথা কয়

করে কানাকানি

চান্দের নানী

 

ফুলবাবু ফুল খায়

মাঝে মাঝে ভুল খায়

রমনীর চুল খায়

যুবতীর দুল খায়

দোকানের টুল খায়

আর খায় কুনি

এইসব কথা আমি

লোকমুখে শুনি

 

ফুলবাবু ফুল খায়

বারোমাসি কুল খায়

হাতে নিয়ে ঝুল খায়

অকারণে শূল খায়

হুল খায় ভুলে

ফুলবাবু মারা যায়

কালা কাক ছুলে

//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩০

ফরজ ধরো

আমার যখন বিপদ ছিল তুমি কাছে আসো নাই

ভালোবাসার কথা ছিল, তবু ভালো বাসো নাই

 

উল্টো আরো অপবাদের বিষ দিয়েছো ঢালি

বদলোকদের খুশি করতে কতো দিলে5 গালি

 

এসব কথা বলে বলে সময় করলে নষ্ট

তাতে আহা দুজনেরই বাড়বে শুধু কষ্ট

 

ওসব কথা বাদ দে

ফরজ কামে হাত দে

নইলে তোদের কপাল পুড়বে বলে দিলাম পষ্ট

 

পুরান কথা তুলতে নাই

ওসব কথা ভুলতে চাই

কাদা ঘেটে আধা জীবন করে দিলি পার

কিস্তি নাকি গোলটুপীর বিবাদ এবার ছাড়

 

ফরজ ছাড়লে গুণাহ হয়

আগে করো পাপের ভয়

ফরজ ধরো কায়েম করো ধরায় খোদার রাজ

পুরান দিনের পুরান কথা সবাই ছাড়ো আজ

//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩১

শাহাবাগে যাও

বউকে যদি সাথেই নিবেন

রিসোর্টে ক্যান যাবেন

টাকা দিলে হাজার পরী

যেই রিসোর্টে পাবেন

 

নিজের মা বোন নিরাপদ নয়

যেই পশুদের কাছে

বিদেশ থেকে আনা কতো

টেবলেট ওদের আছে

 

ধর্ষক লীগের রাজ্যে মামা

করবেন আপনি বাস

আপনেরে কি মানুষ ভাবেন

আপনি ওদের দাস

 

সংসদে যায় সোনাভানে

রিসোর্টে যায় মর্দ

কুত্তা ঘুরে রুমে রুমে

হাতে নিয়া ফর্দ

 

স্বাধীনতার জিলাপীর স্বাদ

ঘরে বসে খাও

ফাও যদি চাও খাইতে তবে

শাহাবাগে যাও

//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩২

নৌকা বোঝাই সাপের ছাও

আল্লাহ দিছে সুখ আমারে শুয়ে থাকি খাটে

রান্না ঘরে কাজের বুয়া সুখে হলুদ বাটে

সূর্য তখন পাটে

তেলাপোকা খাটের তলে সুখে একা হাঁটে

এই সুযোগে চাটার দল ক্ষমতার পাা চাটে

 

ঘুণ পোকারা সুখে তখন পালংকের পা কাটে

চাটার দলে চেটে চেটে জাতির বিবেক কাটে

তারাই চলে ডাটে

বিপ্লবীরা আমার মতো ঘুমায় শুয়ে খাটে

এই সুযোগে বিদেশি নাও ভিড়ে এসে ঘাটে

 

নৌকা বোঝাই সাপের ছাও

শেষ খাওয়া কি খাইতে চাও?

//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৩

গালি আর তালি

তুমি আমায় দিচ্ছো গালি

যাতে আমি গালি দেই

গালি দেয়া শিখিনি তো

তাইতো আমি তালি দেই

 

সঙ্গে আন্ডা হালি দেই

লেখার খাতা কালি দেই

 

কয় গালিতে কয় পাপ করলা

নিজে লেইখা রাইখ্খো

কাল হাশরে পাপের বস্তা

নিয়ে খাড়াই থাইককো

 

তুমি যদি না লিখো তাও

লেখা ঠিকই হইবো

নিজের মুখই সত্যটারে

সবার কাছে কইবো

 

মন্দ কাজে মন্দ ফল

বাড়ে সদাই অনর্গল

তুমি দেবে পঁচা গালি

আমি দেব খোশে তালি

 

তোমার তাতে বাড়বে পাপ

যেমন বাড়ে কেউটে সাপ

১০//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৪

সাপের ছাও

দেশটা চলছে কেমন করে

কইতে কাউরে কইছি

কুত্তা দিছে পায়ে কামড়

সেই কামড়ও সইছি

 

বাপের বাড়ি সাপের ছাও

সাপের পিঠে জোড়া পাও

মানুষ মারে জিদে সে

বন্ধু বাড়ায় বিদেশে

 

সবার মাঝে শোকের ঢেউ

সাপের পিছে তিনশ ফেউ

বাড়ছে তবু অন্যায়

শুধু জিদের বন্যায়

 

মামা যদি বাঁচতে চাও

জলদি মারো সাপের ছাও

১০//২০২১; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৫

বলছি কথা গুরু

নূরু

করলি কি তুই শুরু?

কান্ড দেখে সবাই দেখি

মাথায় তোলে ভুরু

দেও খেদানোর দায়িত্ব কি

একাই নিলি পুরো?

 

ডাকসুর নাকি ভিপি হইছোস

ভুইলা গেলি গুরু?

আমায় না হয় ভুলে গেলি

ভুললি কেমনে খুড়ো?

সেওতো তোরে কইতে পারতো

ঘটনাটা পুরো

 

নূরু

লীগের ভিতর বিগও আছে

আছে নাটের গুরু

যা ঘটাবার সেই ঘটাবে

পোলায় মারবে পিতা

বিড়ালে খায় লীগের দুধ

কোথায় লাগে চিতা?

 

যেদিন দেখবি পাপের ঘড়া

হয়ে গেছে পূর্ণ

লীগই খাবে লীগের মগজ

হাড় ও মাথার চূর্ণ

 

লীগের দালাল করবে হালাল

পরাণ বন্ধুর চিত্ত

দিল্লী  থেকে আসবে সাহস

সকাল বিকাল নিত্য

 

ট্রাকের ওপর নাচবে শিয়াল

বাম মোরগের চামচা

লীগের রক্ত লীগে খেয়ে

বলবে দে না রাম চা

 

নূরু

এসব ভাবলে মনটা আমার

হয়রে উড়ো উড়ো

কোথায় হাতি রাতারাতি

ইঁদুরকে কয় গুরু

 

একটু সবুর কর

ডালিমের রস চেটে খাবে

সেঞ্চুরিয়ান বর

১০//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৬

ফুলি ও গুলি

বাতাস বড় গরম মামা, কয় না কথা ফুলি

বস্তির মেয়ে রাজ বাড়িতে করে চুলাচুলি

নবাব বাড়ি ঝগড়া করে সদরঘাটের কুলি

পেঙ্গার মেয়ে ছাড়ে মামা বড়ো বড়ো বুলি

 

মামা তখন আমার দিকে চক্ষু দুটি তুলি

বলল মামা, ঘটনা কি বল না খোলাখুলি

 

মামা, কবির হাতে রঙের ডিব্বা, শিল্পী নাড়ে তুলি

নানী এখন বানায় না আর শীতের পিঠা পুলি

ফুলি আমায় আহাম্মক কয়, দুঃখ কেমনে ভুলি

কে চালাক আর কে কে বোকা বলছে নয়নঢুলি

 

আহ,

আলগা প্যাচাল রেখে বল, ক্যান ক্ষেপেছে ফুলি

ক্যান ক্ষেপেছে ময়না, টিয়া,ক্যান ক্ষ্যাপা বুলবুলি

 

গুলি, মামা, গুলি

সবচে চালাক টিক্কা খানের মেশিনগানের গুলি

সে চিনেছে মিরজাফর ও দেশপ্রেমিকের খুলি

বাঙালিরে খুন করেছে, দালাল রাখছে তুলি

সে জন্যই যায়নি মারা লীগের নেতাগুলি

 

মারা গেছে তিরিশ লক্ষ, কোন এমপি মরে নাই

টিক্কাখানের গুলি কোন নেতার টিকি ধরে নাই

বিদেশ বসে নেতারা সব খাইছে রঙিন কফি

যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধা পাইছে খেতাব এবং টফি

 

যুদ্ধ করছে মুক্তিযোদ্ধা, নেতায় যুদ্ধে লড়ে নাই

কোনরকম খেতাব টফি বীর নেতাদের ঘরে নাই

টিক্কা গেছে হিক্কা তুলে গদীত বইছে আলালে

বাঙালি খায় আজো গুলি, মারে গুলি দালালে

 

আমার যদি বুদ্ধি থাকতো  বাসতো ভালো ফুলি

বুদ্ধি নাই তাই আজো আমি সমানে খাই গুলি

১১//২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৭

উন্নয়নের আন্ডা

রাঙা বুড়ির পান্তা ভাত

চিল খেয়েছে কালকে রাত

সব দেখেছে কোলা ব্যাঙ

গুন্ডা গুলোর আস্ত গ্যাঙ

 

ভাত ছিল যে সরায় ঢাকা

কেমনে দেখলো ব্যাঙে কাকা

ডাল মে কুচ কি কালা হ্যায়?

অলক্ষুণের খালা হ্যায়?

 

না না

ওরা জাতির জ্বালা হ্যায়

মুসিবত ও বালা হ্যায়

নদী এখন নালা হ্যায়

রিসোর্ট ঘরে তালা দেয়

 

সোনার গাঁয়ের সোনার ছেলে

নাচ জুড়ে দেয় হুজুর পেলে

 

হামলা মামলা গামলা ভরা

কে কে খাবি আয়

সঙ্গে আছে কালো চশমা

সময় বয়ে যায়

উন্নয়নের আন্ডা মানুষ

মামলেট করে খায়

১২//২০২১; দুপুর ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৮

রোযার মোনাজাত

রোযা রেখে তোমার কাছে তুলছি দুটো হাত

কবুল করো মহামহীম আমার মোনাজাত

তুমি আল্লাহ সবই পারো, মন্দ করো নাশ

মরার আগে তোমার শাসন দেখার বড় আশ

 

আর সহে না জুলুম শোষণ, তোমার নাফরমানি

জীবন যৌবন পার করলাম, দেখে যে শয়তানি

আলকোরানের শাসন আবার দাওনা মেহেরবান

বিশ্বে আবার হোক না চালু কোরআনি ফরমান

 

কতো শহীদ জীবন দিল, কতো মোমিন খুন

ওগো মালিক বলো শুধু, কুন ও ফাইয়াকুন

ধরার বুকে আসুক আবার ইসলামী সমাজ

বিশ্ব জুড়ে চালাও প্রভু আলকোরানের বাজ

 

মরার আগে তোমার শাসন দেখে মরতে চাই

কে বলে এ দাবী মানার সাধ্য তোমার নাই?

সবই পারো তুমি মাওলা, দিনকে করো রাত

রোযার গুণে কবুল করো আমার মোনাজাত

১৭//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৩৯

ফেরাউনের কাকী

মাদ্রাসাটা বন্ধ রাখো, সিনেমা হল খোলা

এসি রুমে বসে যারা খাচ্ছো কোকাকোলা

তাদের একটু বলি

কে বলেছে আজরাইলের চাকরী গেছে চলি

 

আজরাইল তো মরে নাই

হায়াত কারো ঘরে নাই

হুজুর ধরে নিচ্ছো জেলে, থাকবা বেঁচে কয়দিন

চেয়ে দেখো তোমার খেলা দেখছে বসে ছয় জ্বীন

 

টিকিট তোমার কাটা আছে জাহাজ ঘাটে যাও

একে একে যাচ্ছে ডুবে ভাসান চরের নাও

নাও ডুববে, পাও ডুববে, ছাও ডুবতে বাকি

জলদি এবার রেডি হও ফেরাউনের কাকী

 

কেউ থাকেনি, কেউ থাকে না, যেতে হবে তোমায়ও

ছোটবড় সবাই তো যায়, যে থাকে ভাই কোমায়ও

১৮//২০২১;৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪০

জমছে খেলা জমতে দে

আলেমগুলো নিচ্ছে জেলে,

নিচ্ছে ধরে বীর বাহাদুর

করোনা কয় জানিস নাকি

তোর মরণটা আর কাঁহাদূর

 

আলেমগুলো সেফসাইড নে,

জালিমরা আয় সামনে

জলদি করে লাইনে খাঁড়া,

তোদের কামের দাম নে

 

যমের বাড়ি রঙ্গিন গাড়ি

যাচ্ছে এবং আসছে

সেই গাড়িতে রংমহলের

অনেকেইতো ভাসছে

 

আগে জঙ্গল সাফা করি

পরে হুজুর আসবে

বান্দর নাই তল্লাটে আর

দেখে হুজুর হাসবে

 

জমছে খেলা জমতে দে

ভীরু বুজদিল কমতে দে

১৮//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪১

অদ্ভুত ভূত

কথা কম কাজ বেশি, ঝটপট ঝট

সংসদে কথা কও খুউব পটাপট

বন্দনা গীতি গাও লাভ নেই তাতে

ভূত দেখে ভয় পাও আঁধারের রাতে

 

দিনে কও ভূত নাই, বিজ্ঞান বলে

তবে তুমি ফুল দাও ভয়ে কার গলে?

ঘটনা যা শুনি সব, বড়ো অদ্ভুত

কেউ কয় তুমি ভূত, নয তার পুত

 

পুত নাকি মেয়ে সেটা পরে করো ঠিক

কার দাঁত আঁধারেও করে ঝিকমিক?

কার মুখে লাগে কও ক্ষমতার লালা

কার বুকে ক্ষমতার লেলিহান জ্বালা?

 

যেই ভূতে মাঝ রাতে নিয়ে গেল বাপ

সেই ভূতে কুত কুতে ঘুরে অভিশাপ

নাম তার একরোখা ক্ষমতার লোভ

যত বাড়ে তত বাড়ে জনতার ক্ষোভ

 

লোভ বড় নচ্ছার অদ্ভুত ভূত

তার ভয়ে মন শুধু করে খুঁত খুঁত

১৮//২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪২

ফুলিরে কেমনে ভুলি?

ফুলি

কেমনে তোরে ভুলি?

তুই কি জানিস ক্যান খেয়েছিস

বিএসেফের গুলি?

ক্যান রইলি তুই কাঁটাতারে

অসাড় হয়ে ঝুলি?

ফুলি

বল না খোলাখুলি

 

ফুলি

ক্যান গেলি তুই খালি হাতে

খেলতে গোলাগুলি?

ক্যান চাইলি তুই ওদের দিকে

রক্তচক্ষু তুলি?

চোখ নাচিয়ে কইছিল কি

মিঠা মিঠা বুলি?

ফুলি,

বল না আমায় খুলি

 

ফুলি

চাঁদ সুলতানার তুই যে বহিন

যাসনে সেটা ভুলি

তোর রক্তচক্ষু দিক জ্বালিয়ে

ইতর বদমাসগুলি

যখন দেখি তোরই রক্তে

খেলছে ওরা হোলি

তখন আমার কেমন লাগে

বলতে পারিস ফুলি?

 

ফুলি

আমার একটা বহিন ছিল

নাম ছিল তার ফুলি

কেমনে ওটা ভুলি?

১৮//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৩

তেলাপোকা ও হাতি

বাতির যখন তেল ফুরায়

নিভার যখন সময় হয়

দপ করে সে বাতি জ্বলে

দাদি নানি আজও কয়

 

দপ দপ দপ দফা শেষ

আর জ্বলে না বাতি

ঘটনা যা ঘটার ঘটে

সবই রাতারাতি

 

উত্তরবঙ্গের বাতাস তখন

দক্ষিণবঙ্গে যায়

বনের হাতি মরলে নাকি

তেলাপোকা খায়

 

তেলাপোকা হাতি খাক

মানুষ একটু শান্তি পাক

১৮//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৪

চাওয়া ছাড়লাম না

চাওয়ার মত চাইতে যদি পারিতাম

তবে কি আর বারে বারে হারিতাম

আঙুলটারে খাঁড়া করে নাড়িতাম

চটাস চটাস মশা ধরে মারিতাম

চাওয়ার মত চাইতে যদি পারিতাম

 

চাওয়ার মত চাইতে যদি পারিতাম

এমন করে দীর্ঘশ্বাস কি ছাড়িতাম

ধর্ষকগুলো উঁকুন ভেবে মারিতাম

বিজয়ের হাত উর্ধে তুলে নাড়িতাম

চাওয়ার মত চাইতে যদি পারিতাম

 

চাওয়ার মত চাইতে যদি পারিতাম

গুমকারীকে মাটির তলে গাড়িতাম

বারে বারে তবে কি আর হারিতাম?

চাওয়ার মত চাইতে যদি পারিতাম

 

চাওয়ার মত চেয়েছিল রাবিয়া

তার জন্য হারাম হলো হাবিয়া

চাওয়ার মত চেয়েছিল নবীকুল

আমরা শুধু বারে বারে করি ভুল

 

চাইতে গেলে আগে মুমীন হইতে হয়

দাদাজানরে আগে দাদা কইতে হয়

চাওয়ার মত আজো চাইতে পারলাম না

তবু পাওয়ার আশা আজো ছাড়লাম না

২১//২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৫

ভাঙনের গান

ছড়া লিখি পড়ার জন্য, বসে বসে পড়েন

ছড়া পড়ে ভালমন্দের হিসাব কেন করেন?

বালু দিয়া সাগরপাড়ে প্রাসাদ কেন গড়েন?

মরতে বড় ইচ্ছা করে, তবে নড়েন চড়েন

 

নড়া মানে আন্দোলন, দানবে ভয় পায়

চক্ষু দুটি বন্ধ করে এদিক ওদিক চায়

অস্ত্রধারীর আঙৃল ভয়ে কেঁপে যদি ওঠে

রাজপথ হয় রক্তরাঙা, মাগনা গুলি ছোটে

 

গুলি খেয়ে তখন যদি আপনি মারা যান

তার জন্য কয়ডা টাকা ক্ষতিপূরণ পান?

রোজগার বন্ধ, সন্তানগুলো বাবা বলে কান্দে

তাদের মায়ের গালে হাত, কি দিয়ে কি রান্ধে?

 

মিটিং মিছিল বন্ধ করেন, বাদাম ভাজা খান

হায়াত গেলে পটল তোলে টিক্কা, আইয়ুব খান?

ভয় কি তবে? স্বৈরাচারের পতন হবেই হবে

বলতে পারেন, স্বৈরাচার, বেঁচে ছিল কবে?

 

দেখতে তো আর কম দেখিনি, লিখিনি তা সব

চারিদিকে ভাঙনের গান, জনতার জয় উৎসব

২৫//২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৬

পাতালপুরী

নামাজ পড়া ফরজ ছিল

নামাজ তবু পড়ো নাই

পাপের পথে যাচ্ছে মানুষ

দেখেও তারে ধরো নাই

 

জাকাত ভিত্তিক শোষণ মুক্ত

সমাজ তুমি গড়ো নাই

খোদার রাজ্যে উটকো রাজা

বিদায় করতে লড়ো নাই

 

জীবনটাকে মহৎ করার

চেষ্টা তুমি করো নাই

সময় আছে তওবা করো

এখনো তো মরো নাই

 

মরে গেলে বাহাদুরী

পালাবে রে পাতালপুরী

২৫/ / ২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৭

পাথরঘাটার রানী

সহজ কথা সহজ করে কইতে আমি পারি না

আমি মামা লোক ভাল, কাউকে আমি মারি না।

আমার নাম আবিহা, কিন্তু আমি নারী না

কারো সাথে লাগি না, তাই তো আমি হারি না।

আমার লেখা ঢাউস ঢাউস, অল্পে লিখতে পারি না

উচিত কথা সুযোগ পেলে কইতে আমি ছাড়ি না।

ময়লা নাড়লে গন্ধ বেরোয়, তাইতো ময়লা নাড়ি না

কখন আমি বলছি বলেন, জরিনা হয় জারিনা।

সলিমদ্দি ঢাকা গেলে সেলিম আল দীন হয়

আদম জাতে পাপ করে, পায় না পাপে ভয়।

নারী যখন পাপ করে, সে নারী হয় পাপিয়া

তার সাথে যে মন্ত্রী ছিল সেখবর যায় চাপিয়া।

পঁচা কথা তাই বলি না, নিষেধ করছে নানী

পঁচা কথা কইতে ওস্তাদ পাথর ঘাটার রানী।

২৫/৪/২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৮

মুখের ভাষা

তুমি মন্দ এটা বলায় আমার কোন লাভ নাই

ভালোমন্দের মধ্যিখানে কোনরকম ভাব নাই

ভালো যারা তারা তো আর মন্দ সাথে মেশে না

মন্দের ছোঁয়া লাগবে ভয়ে মন্দ সাথে ঘেঁষে না

 

এ লোক মন্দ, ও লোক মন্দ, এসব যারা বলে

তারা নিজেই মন্দ যে তা, লুকায় নানা ছলে

তার দুটো চোখ মন্দ দেখে, মন্দ শোনে কান

ভাল দেখার সময় কি আর তারা খুঁজে পান?

 

সব মানুষই নিজের ময়লা নিজের হাতে ধোয়

ময়লা পেটে নিয়েই রাজা সোনার খাটে শোয়

অন্যজনকে মন্দ বলে নিজেই কামাও পাপ

নিজে কামাও নিজের জন্য দারুণ অভিশাপ

 

তাইতো বলি, মন্দ মন্দ,  এই তসবি টেপা ছাড়ো

নিজের জন্য পাপ নয় মামা, পূণ্য কামাও আরো

ফুল বাগানে মৌমাছি যায়, কিন্তু মাছি ময়লা খায়

মুখের ভাষা থেকেই ভালো, মন্দ মানুষ চেনা যায়

২৮//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৪৯

কষ্ট লাগে তাই

ধান্ধাবাজি

চান্দাবাজি

লীগ বাবাজি ছাড়ো

মুকীম হাজি

আন্ধা কাজি

ল্যাঙ মারেনি কারো

 

তোমরা দালাল মাফিয়াদের

সঙ্গে রাখো পাপিয়াদের

হুজুর রাখলে গিন্নি

তোমরা বলো মাল দেন হুজুর

আমরা খাবো  শিন্নি

 

ফুলের বাসর

জুয়ার আসর

সবতো করো নিজে

জমির মালিক মুকুন্দরাম

ফসল ফলাও লিজে

 

ঢের হয়েছে আকাম কুকাম

ওসব এবার ছাড়ো

চিরটা কাল পৌষ পার্বণ

যায় না মামা কারো।।

 

রক্ষী থাকলেই রক্ষা হয় না

ধর্ষক থাকলেই যক্ষ্মা হয় না

এমন বিধান নাই

পুরাণ কথা মনে হলে

কষ্ট লাগে তাই

২৮//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫০

ঢাকা ছাড়ো কাকা

কাকা

বিশ্বাস করেন ভাল্লাগে না

অসভ্য এই ঢাকা

টাউনগুলো ডাউন এখন

গাউন পরা সাজ

গরুর মত মুখ বান্ধা

মন্ত্রী, মহারাজ

 

পর্দা করতে শরম লাগে

ঘেঁষাঘেষি করে

লকডাউনে রাস্তা ফাঁকা

বেবাক মানুষ ঘরে

 

ইতরগুলো ভিতর ঘরে

এসির বাতাস খায়

খাটের ওপর বসে বসে

মেসির খেলা চায়

 

ঢাকায় কাকা টাকার গরম

চাকার গরম শেষ

পাকার ওপর বাকার মিয়া

হঠাৎ নিরুদ্দেশ

 

কি তেলেসমাৎ সরকার এখন

ইঁদুর বিড়াল খেলে

জুজুর ভয়ে হুজুরগুলো

ভরছে নিয়ে জেলে

 

করোনায় তো সবচে বেশী

মানুষ মরে ঢাকা

ঢাকার কথা মনে হলেই

দম আটকে যায় কাকা

 

খোদার হুকুম মানো কাকা

গযব খায় না ঘুষের টাকা

গযব ধেয়ে আসছে ঢাকা

গাঁয়ে চলো জলদি কাকা

 

বাঁচতে চাইলে তওবা করো

আপন গাঁয়ের পথটি ধরো

২৮//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫১

বীরের মত লড়ো

মুমীন তুমি মুসলিম হওয়ার সোজা রাস্তা ধরো

ঈমান আনো আমল করো মুসলিম হয়ে মরো

 

আল্লার দেয়া কোরান পড়ো

মুহাম্মদের ( সা) সুন্নাত ধরো

কোরান হাদিস মতে তুমি নিজের জীবন গড়ো

সুদ ঘুষ আর মিথ্যা রেখে মুসলিম হয়ে মরো

 

তাসবিহ তাহলিল সবই করো

নফল কাজের পাহাড় গড়ো

দ্বীন কায়েমের ফরজ পালন তারচেয়েও বড়ো

দরকার হলে সেই জন্য জেহাদ লড়াই করো

 

আগে নিজের শরম ঢাকো

পরে চোখে কাজল আঁকো

উদোম গায়ে জেওর পরে ভন্ডামী ক্যান করো

নফল নফল জিকির রেখে ফরজ সবে ধরো

 

কোরান পড়ো বুঝে বুঝে

হকের পথে লড়ো নিজে

ইসলাম বলে নিজের জীবন কোরান মত গড়ো

অন্যায় এবং জুলুম দেখলে বীরের মত লড়ো

৩০//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫২

ইসলাম এইতো চায়

সব মানুষই সুখে থাকুক ইসলাম এইতো চায়

তোমার মুখের হাসি নিয়ে ঝর্ণা গান শোনায়

হিংসা বিভেদ ভুলে গিয়ে ন্যায়ের পথে চলো

মিথ্যা ও মন্দ বাদ দিয়ে সব সত্য কথা বলো

সুখ ও শান্তির সুবাস যেনো বিশ্বে বয়ে যায়

ইসলাম এইতো চায়

 

হানাহানি ছাড়ো সবাই, ঝগড়াঝাটি ছাড়ো

হাতের ওপর হাত রেখে সবাই আগে বাড়ো

আদম থেকে জন্ম সবার, মিলনের গান গাও

আল্লাহর দেয়া নেয়ামত যত মিলেমিশে খাও

তোমার কথা কাজে যেনো কেউ কষ্ট না পায়

ইসলাম এইতো চায়

 

লোভের লাগাম টেনে ধরো, নিজকে ভালবাসো

দুই হাত ভরে সুখ বিলিয়ে মনের সুখে হাসো

ফৃলের পরাগ গায়ে মেখে সুখেরই গান গাও

বিশ্ব জুড়ে সুখের সৌরভ, দু হাতে বিলাও

তোমার পরশ পেলে যেনো সকলে সুখ পায়

ইসলাম এইতো চায়

//২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৩

নেকীর ফেরিঅলা

হাটে মাঠে ঘুরছে এখন নেকীর ফেরিঅলা

পাগড়ি এবং জুব্বার ভেতর সেকি উঁচু গলা

তবু দেশে বাড়ছে ধর্ষক, ডাকাত, পতিতারা

চলছে ওয়াজ তবু বাড়ে জালিম, সর্বহারা

 

নেকী বেঁচা বন্ধ করেন, জুলুম ঠেকান আগে

নিরোর বাঁশি ভাল্লাগে না আগুন যখন লাগে

ফরজ করার গরজ নাই, খালি খুঁজেন লাভ

শয়তানে দেয় তালি কয়, দেখান হুরীর খাব

 

এই দুনিয়া সুন্দর করবার তরিকাটা ধরেন

শয়তান দমন করার জন্য বীরের মত লড়েন

ফরজ কাজ জেহাদ রেখে নেকীর বয়ান বলেন

তার বদলে ভন্ড এবং বদমাইশ পায়ে দলেন

 

যদি এতে করেন হুজুর কোনও রকম ভুল

চোখে তবে দেখবেন আহা হলুদ সর্ষে ফুল

তওবা করে নেকী বিক্রি জলদি দাদা ছাড়েন

ফরজগুলো করতে কায়েম দৃঢ় পায়ে বাড়েন

//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৪

কদরের রাত

হাজার মাসের সেরা কদরের রাত

তোমার দরবারে প্রভু তুলেছি দুহাত

মাফ করে দাও যতো জীবনের পাপ

কবুল করো মাওলা এই মোনাজাত

 

দূর করে দাও যতো হিংসা বিদ্বেষ

লোভ লালসা প্রভু করো নিঃশেষ

আর যেন কোনদিন মিথ্যা না বলি

ভুল থেকে দয়াময় দাওগো নাজাত

 

আমি যেনো করি তব সৃষ্টির সেবা

সকলে আপন বলো পর আছে কেবা

তোমার সৃষ্টি যেনো বাসি গো ভাল

আমাকে দাও প্রভু সেই কিসমাত

 

হাজার মাসের সেরা কদরের রাত

কবুল করো প্রভু এই মোনাজাত

//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৫

আমি কিছু দেহি নাই

নাগো মামা, না

চক্ষু দুইডা খোলা ছিল

কিন্তু কিছু দেহি নাই

আপনে কাউরে খুন করছেন,

এমুন ম্যাসেজ লেহি নাই

ঠোঁট দুইডা নড়ছিল, তা-,

কাউরে কিছু কহি নাই

 

কত মানুষ দেখলাম মামা,

কোন মানুষ ছহি নাই

ক্যামনে আইবো অহি মামা

নবী নাই তাই অহি নাই

আদালতে পিয়ন ঘোরে

হাতে কোন বহি নাই

বিচারপতি লাত্থি খায়

আপনার কাছেও কহি নাই

 

আপনিই কন, কইছি?

নাকি, সবই সইছি?

 

প্যানপ্যানানি থামা, ভাগনে

কেউ ঘুমায়নি, সবাই জাগনে

শেয়ালেরও জান আছে

দেয়ালেরও কান আছে

কান কাটারও মান আছে

ব্যাঙের মুখেও গান আছে

 

গুম হলে কেউ, কইতে নাই

এসব কথা বইতে নাই

শিংমাছ বুকে লইতে নাই

পুকুর, নদী চইতে নাই

কে কয় বিষ দইতে নাই?

 

দইতে বিষ থাকতে পারে

রাজা যদি প্রজা মারে

বেশী বাড়া বাড়িস না

কারো পরাণ কাড়িস না

//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৬

বিনিময়ে একদিন

একদিন থাকবো না তুমি আমি কেউ

থাকবে না ক্ষমতার ফেনায়িত ঢেউ

থাকবে না দম্ভের এ সুউচ্চ পাহাড়

শীত শেষে এসে যাবে বসন্ত বাহার

 

দম্ভের পাহাড় চূড়া গলে গলে যাবে

জল হয়ে ছুটে যাবে সাগরের পানে

এইসব কথা লিখি কবিতা ও গানে

নধর দেহ পোকা তিলেতিলে খাবে

 

তুমি আজ জালিম ও আমি মজলুম

একদিন দুজনেই চিরতরে দেবো ঘুম

জুলুমের বদলা তো সেই দিন পাবে

যেই দিন হাশরের মাঠ তুমি যাবে

 

একদিন থাকবো না তুমি আমি কেউ

থাকবে না তোমার এই ক্ষমতার ঢেউ

বিনিময়ে পাবে সবাই কর্মের ফল

কেউ যাবে জান্নাতে কেউ রসাতল

//২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৭

ক্ষমা করো প্রভু

পাপ করেছি, ভুল করেছি, মাফ করে দাও প্রভু

দাও সে শক্তি এমন ভুল আর না যেন হয় কভু

এ দেহ প্রাণ তোমারই দান

মাফ করো গো হে মহিয়ান

আমার পাপের নাই সীমা নাই, ক্ষমা করো তবু

 

তুমি মালিক, তুমি খালিক, ওগো দয়াল প্রভু

মায়ামোহের জালে পড়ে তোমায় ভুলি কভু

তোমায় ভুলায় দুষ্ট শয়তান

মন্দ কাজের শোনায় সে গান

তার ছলনায় পড়ে কত পাপ করেছি প্রভু

আমার পাপের নাইরে সীমা, ক্ষমা করো তবু

 

ক্ষমার মালিক তুমিই প্রভু আর তো কেহ নাই্

এই জীবনের সকল পাপের ক্ষমা আমি চাই

ক্ষমা করো, ক্ষমা করো, ওগো রহীম রহমান

তামাম গুণা মাফ করে দাও তুমি মেহেরবান

 

তোমার ইচ্ছায় এলাম ধরায় তোমার ইচ্ছায যাবো

তোমার ইচ্ছাই আসল ইচ্ছা, তবেই শান্তি পাবো

সে ইচ্ছাতে সঁপলাম এ মন ক্ষমা করো প্রভু

আমার পাপের নাইরে সীমা, ক্ষমা করো তবু

//২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৮

মানুষ মানে বনিআদম

বাতাস কভু হতাশ হয় না, থমকে থাকে, চলে

বিপদ এলে পরিস্থিতি, বুঝতে আগে বলে

সময় এবং সুযোগমত বীরের মতো ধায়

ভীরুদেরকে ডেকে বলে, আয়রে ছুটে আয়

 

বাতাস কভু হতাশ হয় না, থমকে থাকে, চলে

মনটা আমার করতে বড়ো গান শুনিয়ে বলে

পুষ্পবনে বাড়ি যে তোর, থাকিস গগন তলে

ফলফসলে ভরা জাহান, খাবার সাগর জলে

 

বনে অঢেল পশুপাখি, ফল ফলে সব গাছে

সাগর ভরা মুক্তোমানিক, পাহারা দেয় মাছে

চাঁদের বুড়ি ডেকে বলে, নিবি তারার ফুল?

কোরান হাদিস এ জাহানে শান্তিসুখের মূল

 

আকাশটা তোর ঘরের ছাদ, সূর্যটা তোর বাতি

সেই বাতি তুই পাবি ওরে, এলে আঁধার রাতি

ভয় পেলে তুই খোদার বাণী গুনগুনিয়ে পড়িস

বিপদ এলে আল্লাহর নামে নবীর রাস্তা ধরিস

 

সৃষ্টির সেরা মানুষ তুই, কিসের অভাব তোর?

আঁধার শেষে ছুটে আসে, রঙিন উষা, ভোর

ঝগড়াঝাটি, মারামারি, ওসব করে শয়তানে

মানুষগুলো মগ্ন থাকে প্রভুর প্রিয় জয়গানে

 

মানুষ মানেই বনিআদম, প্রেম করা তার কাজ

ভালবাসায় ভরিয়ে দেয়া আল্লাহর প্রিয় রাজ

//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৫৯

ঈদির ছড়া

যে শিশুটার মা বাবা নেই ফুটপাতে যে থাকে

ঈদ সকালে চলো একটু ঈদি বিলাই তাকে

ঈদের দিনে তাকে পরাই রঙিন ঈদের জামা

যার কেউ নাই আমি হই তার বন্ধু চাচা মামা

সবার মতো হাসি যেনো তার ঠোঁটেও থাকে

 

যে বুড়িমার কেউ নেই ঘরে পথের পাশে থাকে

যে মানুষটা অন্ধ, পথে, আল্লাহ আল্লাহ ডাকে

স্বজনহারা যে মানুষটার চোখে দুঃখের কান্না

তাকে একটু ঈদি দিয়ে বিলাই খুশীর বন্যা

তাতেই রহম ঢেলে দেবেন মাবুদ আল্লাহপাকে

 

যে মানুষটা লেংড়া, আতুর, ভিক্ষা মেগে খায়

ঈদ সকালে তোর মন যেন তার দিকেও যায়

সেও যেনো সবার মতোই ঈদের খুশী পায়

সেও যেনো হাসি মুখে খুশীরই গান গায়

চল না সবাই ঈদ খুশীতে ভরাই বিশ্বটাকে

১১//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬০

মিষ্টি মুখের হাসি

মিষ্টি মুখের হাসি

সবাই ভালবাসি

এক হাসিতে রাণী বনে

পাতালপুরীর দাসী

হাসি দেখে হেসে ওঠে

কৃষক শ্রমিক চাষী

 

মিষ্টি মুখের হাসি

সবাই ভালবাসি

হাসি তো নয় সুখের ফুল

ঝরছে রাশিরাশি

হাসি দেখে যায় পালিয়ে

কুটনি সর্বনাশী

 

মিষ্টি মুখের হাসি

সবাই ভালবাসি

হাসি দেখে খুশীর আতর

জড়িয়ে ধরে আসি

বলে এসো ভালবেসে

চলি পাশাপাশি

 

মিষ্টি মুখের হাসি

তাইতো ভালবাসি

১২//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬১

ঈদ এলো করোনায়

ঈদ এলো করোনায়

বলল, খুশি হও,

এখনওতো মরো নাই

 

মৃত্যুটা নিশ্চিত, বাঁচাটাই ভুল

জীবনতো ঝরে পড়া তরতাজা ফুল

এ জীবনে পূণ্যতো তুমি মোটে করো নাই

বাঁকা পথে ঘুরেছো, সোজা পথ ধরো নাই

 

তারপরও বেঁচে আছো এইটাই ঢের

বাঁচাটাই মোজেযা এই জগতের

খুশি হও, খুশি হও, ছেড়ে দাও পাপ

মরণটা সামনেই মনে রেখো বাপ

ঈদ এলো খুশী হও, ছাড়ো মারামারি

ছেড়ে দাও যতো আছে সব বাড়াবাড়ি

 

বাড়াবাড়ি ভালো নয়, তাড়াতাড়ি করো

ছেড়ে দাও পাপ সব, সৎ পথ ধরো

কোরানের আলো দিয়ে এ জীবন  গড়ো

ঘৃণা করা ভালো নয়, ভালবাসা বড়ো

 

ঈদ এলো করোনায়

বললো, ডুব দাও,পূণ্যের ঝরোণায়

মরাটাই নিশ্চিত তবু তুমি মরো নাই

তবে কেন বসে আছো, কোরানটা ধরো নাই?

 

করোনার ঈদে এসো সৎ পথ ধরি

আল্লাহর প্রিয় হয়ে তারপর মরি

১২//২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬২

রোজা ও ঈদ

ঈদের খুশী ছড়িয়ে যাক সবার প্রাণে প্রাণে

যার মনে নেই দুঃখকষ্ট সে খুশীর কি জানে

না খাওয়াদের কষ্ট তুমি টের যদি না পাও

তবে তোমার বৃথাই সিয়াম, কষ্টটুকু ফাও

 

না যদি রয় খোদার স্মরণ দিনের সকল কাজে

কষ্ট করে তারাবী পড়া তার কি আদৌ সাজে

লোক দেখানোর জন্য যখন জাকাত তুমি দাও

একবারও কি মনে পড়ে, ক্যান যে হারাম খাও?

 

তোমার রোজা কবুল হবে, কেমনে করো আশা

লোক ঠকানোর ফন্দিতে এ, হৃদয় যখন ঠাসা?

আল্লাহর ভয়ে সারা বছর পাপ যদি না ছাড়ো

মনে রেখো রোজা তবে, হয় না কবুল কারো

 

একটা মাসের সিয়াম যেনো শুদ্ধ করে মন

হিংসা ও লোভ তুমি যেন তাড়াও সারাক্ষণ

হালাল কামাই সারা বছর খেতে যেন পারো

রোজা আসে মনে রাখা শয়তান যেন মারো

 

শুদ্ধ যদি না হও তুমি, তসবিহ, নামাজ ফাও

মিছিল করে শয়তানের দল জাহান্নামে যাও

কিসের তবে ঈদ ও রোজা, কিসের ইবাদাত

ভন্ডরা কি পাইতে পারে আল্লাহর নিয়ামাত?

১৪//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬৩

তওবা করা খুব কি টাফ

আল্লাহ বড়োই মেহেরবান

কে বুঝে কও তাঁহার শান

মরা দেহে দিলেন জান

সঙ্গে দিলেন আলকোরান

 

বললেন, এবার যাও

দিলাম কত ফল ফসল

পরাণ ভরে খাও

খাওয়া শেষে দুহাত তুলে

শুকরিয়া জানাও

যিনি দিলেন খাবার তার

গুনগান সবে গাও

 

বান্দা বড়োই নাফরমান

সে শোনে, কি, কয় শয়তান

সেরা সৃষ্টি, যে ইনসান

সে নিজেই, হয় শয়তান

সেও ভুলে খোদার বিধান

 

ইবলিশের সে ফান্দে পড়ে

হারাম খাবার খায়

খোদার গুনগান রেখে সে

তাইরে নাইরে গায়

কোরান হাদিস বন্ধ রেখে

ডাইনে বায়ে যায়

দুঃখের জীবন সঙ্গী করে

কতো কষ্ট পায়

 

আল্লাহ বড়োই মেহেরবান

দেখো তাঁহার কুদরতি শান

যারা তাঁহার নাফরমান

তিনিই তাদের বাঁচান প্রাণ

তাদের দেখান নীল আসমান

 

বলেন, মুসলিম হও

অনুগত বান্দা হয়ে

সবাই বেঁচে রও

বিপদ দেখলে দুহাত তুলে

আল্লাহ বাঁচাও কও

 

তওবা করো খালেছ দীলে

একা এবং সবাই মিলে

আল্লাহ বড়োই মেহেরবান

থাক না গুনাহ অফুরান

সবই তিনি করবেন মাফ

তওবা করা খুব কি টাফ?

১৬//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬৪

জগত জয়ের চাবি

নেই পরণে ঈদের জামা, নেই গায়ে তার বস্ত্র

একহাতে তার দুধের বোতল অন্য হাতে অস্ত্র

এমন শিশুর বুকেই থাকে জগত জয়ের চাবি

রে দুরাচার, রে সন্ত্রাসী কোথায় তোরা যাবি?

 

ভুলে গেলি বদরের মাঠ, তিন শ তেরো বীর

কোথায় গেল অস্ত্রদাপট, কোথা গেল তীর

হাতি, ঘোড়া, হাজার সেনা, মানলি তবু হার

ঈমানের যে অস্ত্র তাকে, হারায় সাধ্য কার?

 

লক্ষ্য সেনার বিশাল বহর, হারিসনি কি তবু?

সেই সব কথা বলতো দেখি, মনে পড়ে কভু?

মুমীন শুধু জিততে জানে, হারতে জানে না

সামনে যত বিপদ আসুক, কিছুই মানে না

 

পুরাণ দিনের সেসব কথা, একটু মনে কর

বাঁচতে চাইলে তওবা করে নবীর রাস্তা ধর

১৫//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া- ৩১৬৫

কবর খোঁড়া মানুষ

কান্না শুধু কান্না

ঈদের দিনে বিশ্বজুড়ে

হচ্ছে কেবল রান্না

 

টের কি কিছু পান না?

এসব তো হয় যখন আপনি

হালাল কিছু খান না

হারাম দিয়ে ভরলে পেট

খানকায় বসে তসবি টেপে

ক্ষুদিরামের বুড়ো ক্যাট

 

আগে খাইতেন আরাম করে

সালওয়া ও মান্না

বললেন, ওসব চান না

কী আর করা, এখন খান

লবণ ছাড়া কান্না

 

কান্নার ফিরনি, কান্নার সেমাই

লাল টুকটুক দই

খাচ্ছে সবই কুকুর, বিড়াল

মানুষ গেল কই?

 

মানুষ এখন ফানুস হয়ে

ঝড়বাতাসে ওড়ে

মানুষ এখন নিজের কবর

নিজের পাপে খোঁড়ে

১৬//২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬৬

পাচ্ছো বড়ো কষ্ট

তোমরা মরো গুলি খেয়ে, আমরা করি গান

সবাই জানে ত্রিশ কোটি আমরা মুসলমান

অতীত যাদের গৌরবের, যারা বীরের জাত

এখন তারা দু হাত তুলে করছে অশ্রুপাত

 

সমাজ জুড়ে মন্দ চলে, অন্ধ থাকিস তুই

বিশ্বটাকে এসব করে বানাস পাপের ভূঁই

কান্না দিয়ে পান্না লালে, মান্না কবে পায়?

দোয়া দিয়ে কভু কিরে গুলি ঠেকান যায়?

 

গুলি খেয়ে মরছে যারা তারা না তোর ভাই

তার জন্য তোর দীলে কি একটু মায়া নাই?

বিবেক বুদ্ধি দিয়ে যারে করলিরে তুই রাজা

সে দুধে হয় শয়তান নাদুস মস্ত মোটাতাজা?

 

ভ্রাতা মারার হোতা রে তুই, তুই যে বড়ো পাপী

সর্প কেন মাথায় রাখিস, খুলিস সাপের ঝাঁপি

সাপ কি তবে আঙুল চুষবে, নাকি দেবে হানা?

ভোটটা এলে বিবেক বেঁধে, কারা সাজে কানা?

 

ভন্ড দেখে রাজা বানাও, দন্ড কেনো পাবে না?

বিষাক্ত সাপ বড় করলে ছোবল কেন খাবে না

নিজের কামাই নিজে খাচ্ছো, পাচ্ছো বড় কষ্ট

আল কোরআনে আল্লাহ এসব বলেনি কি পষ্ট?

১৭//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬৭

কবুল হবে মোনাজাত

আহো মামা দেহো চাইয়া

কোক ফান্টা পেপসি খাইয়া

নাদুস নুদুস জোয়ান মাইয়া

বন্ধুর সংগে বীচে যাইয়া

হ্যাশট্যাগ মারছে মজা পাইয়া

ইহুদী তাও মরে না

 

হুজুরগুলো হুজরা পাইয়া

জর্দা দিয়া তাম্বুল খাইয়া

উপর দিকে রইছে চাইয়া

করছে দোয়া জিকির গাইয়া

আল্লাহ তুমি বাঁচাও আইয়া

খোদায় কিছু করে না

ইহুদী তাও মরে না

 

ট্যাগে, দোয়ায় হয় না কাম

যুদ্ধ তো নয় ফজলি আম

কাটো এবং খাও

জিততে হলে দোয়া রেখে

যুদ্ধ মাঠে যাও

 

বীরের মতো লড়াই করো

যুদ্ধ করার সুন্নত ধরো

মিষ্টির সুন্নত ছাড়ো

আগে নিজে চেষ্টা করে

দেখো কদ্দুর পারো

 

এবার তুমি তোল হাত

কবুল হবে মোনাজাত

১৯//২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬৮

ধরনী তোমার হবে

মুসলিম শাসকেরা মুনাফেকি ছাড়ো

এ জমিন আল্লাহর, আর নয় কারো

মুসলিম হয়ে আজ ডুবে আছো পাপে

তোমাদের বাঁচাবে, বলো কার বাপে?

 

কত কোটি মুসলমান দুনিয়াতে আছে

সে খবর আছে কও তোমাদের কাছে?

তবু কেন দেশে দেশে মার খায় মুসলিম

পিঁপড়ের ভয়ে কেন হাতি পাড়ে ডিম?

 

এইটুকু যদি তুমি বুঝতে না পারো

ঘুচবে না দুর্দিন দুনিয়ার কারো

পাপে খাবে হাবুডুবু, আর চাবে মাফ

এইভাবে মাফ পাওয়া বড় বেশী টাফ

 

পাপ ছাড়ো তারপর তওবাটা করো

আল্লার রশি জোরে চেপেচুপে ধরো

আমলের জোরে হও মুসলিম তুমি

ধরনী তোমার হবে, এ আকাশ ভূমি

১৯//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৬৯

ধন্য তুমি ধন্য

মরতে যখন ইচ্ছে করছে, আসো তবে, মরো

মারতে এলে মরতে হয়, ধারাপাতটা পড়ো

মামুবাড়ির অস্ত্র পেয়ে, আর কতদিন মারবা

মারামারির এ খেলাতে সেইতো তুমি হারবা

 

অস্ত্রে মুমীন কেবল শোনে জীবন জাগার গান

মিসাইল বোমায় মুমীনরা পায় মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাণ

যুদ্ধে মুমীন কেউ মরেনা, গাজী এবং শহীদ হয়

সব শহীদকে আল্লাহ নিজেই মরণজয়ী কয়

 

বাঁচলে গাজী মরলে শহীদ, মুমীন কভু হারে না

তাই মুমীনের সাথে কভু জালিম জনে পারে না

চুড়ান্ত জয় লেখা থাকে শহীদানদের জন্য

ফেরেশতাকুল হেসে বলে, ধন্য তুমি ধন্য

২০//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭০

কিসের বিয়া

উচিত কথা কইতে নাই

এমন বচন বইতে নাই

বইতে আছে, সইতে নাই

কে কয় উচিত কইতে চাই?

 

বুকের কথা মুখে রাখ

খাতা দিয়া কলম ঢাক

কার টাকা কোন চোরে খায়

তাতে তোর কি আসে যায়?

 

কইছে কথা বাতাসে

অনেক বড় দাতা সে

সে লুটেরা, নয়রে চোর

লোকে বলে হারামখোর

 

হাতিতে খায় ফজলি আম

ফালতু কথার নাইরে দাম

মিডিয়া যা কথা কয়

সে কথা তো সত্যি নয়

 

সত্য বলে ময়না, টিয়া

রাজি থাকলে কিসের বিয়া?

২০//২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭১

কোথায় আমার বাড়ি

একটা করে মিনিট যায়, একটা করে দিন

দিন যত যায় তত বাড়ে আরো একটু ঋণ

পাখির ডাকে জাগি যখন শোকর কি তার করি

জেগেই দেখি কোমল আলো কফোটা তার ধরি?

 

কতোই মধুর লাগে আহা পাখির কলতান

তারচে মধুর লাগে যেন ঝরণা নদীর গান

অক্সিজেনে ডুবে থাকি শোকর কি তার করি

চারপাশে কি সবুজ শ্যামল, আহা মরি মরি

 

খালে বিলে সবাই মিলে মাছ ধরি আর খাই

জোসনা রাতে মিটিমিটি চাঁদের আলো পাই

আমরা কি তার শোকর করে শুদ্ধ জীবন গড়ি

মন্দ কালো দূর করতে কি বীরের মতো লড়ি

 

দিন মাস যায়, বছরও যায়, কত যুগ দেয় পাড়ি

আমি খুঁজি আপন ন্বজন, কোথায় আমার বাড়ি

২১//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭২

জলে ভাসা ভালবাসা

জলে ভাসা ভালবাসা

তারে কেন করো আশা

সে চিরকাল সর্বনাশা

এ ঘাট থেকে ও ঘাটে সে

জীবন নিয়ে যায়

প্রেমকে চেয়ে মানুষ শুধু

কষ্ট ও দুখ পায়

 

জলে ভাসা ভালবাসা

খুঁজে বেড়ায় প্রেমের চাষা

কান্না ছাড়া পায় না হাসা

ওখানে নাই সুখের বাসা

মনের ভেতর ঘৃণা পুষে

প্রেম কি পাওয়া যায়

ভালবাসতে গিয়ে কয়জন

সুখের নাগাল পায়

 

জলে ভাসা ভালবাসা

সোনা খুঁজে পায় সে কাসা

প্রেম না দিয়ে প্রেমের আশা

যে করে সে বোকা চাষা

যে যত প্রেম দিতে পারে

সে তত প্রেম পায়

মরিচীকার পিছে তবু

মানুষ ছুটে যায়

২১//২০২১; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৩

বাবার জন্য কান্না

বাবা নেই বহুদিন, চেয়ারটা সারাদিন একা একা বসে শুধু কাঁদে

আমাদের ছেড়ে বাবা একা কেন গেল চলে আকাশের চাঁদে।

বাবাদের হাত ধরে কত পথ দিয়েছি পাড়ি কেউ কি তা জানে

কতরাত চলে যায় বাবার বুকের ওমে, চুপকথা শুনি শুয়ে কানে।

বাবা নেই আর কেউ সাজে নাতো বাবাঘোড়া কভু আহলাদে।

কই গেলা বাবা ওগো, ঘামঝরা বুক নিয়ে কই গেলা, কই

অকারণে দিন রাত জানালার শিক ধরে কেনো চেয়ে রই

পথ দিয়ে কতলোক আনমনে হেঁটে যায়, বাবা তুমি বাদে।

ওগো বটবৃক্ষ তুমি বৃষ্টির দিনে ছিলে পথিকের দরকারী ছাতা

তুমি ছিলে অধমের মজাদার খেলনা ও কতকিছু খাবার দাতা।

আজো কাঁদে আকাশটা বাবাহারা সন্তানের বোবা আর্তনাদে।

২৭/৫/২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৪

তাকধিনা ধিন, ধিন

তাকধিনা ধিন, ধিন

(ওরে)  তাকধিনা ধিন, ধিন

আর কতদিন দেখবো মোরা

হীরক রাজার সীন

মায়ের পেটের শিশুর ঘাড়ে

হাজার টাকার ঋণ

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

 

তাকধিনা ধিন, ধিন

(ওরে) তাকধিনা ধিন, ধিন

ভোটের দিনে যায় না দেখা

ভোটের কোন চিন

তার বদলে উড়ে আসে

দৈত্য আলাদীন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

 

তাকধিনা ধিন, ধিন

(ওরে) তাকধিনা ধিন  ধিন

বাটপারে সব খেয়ে নিল

ভোটের বাক্স, টিন

যার পাহারায় ছিল খাঁড়া

পড়শি এবং চীন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

 

তাকধিনা ধিন, ধিন

(ওরে) তাকধিনা ধিন, ধিন

সাপের ছোবল বসে বসে

খাবি কতদিন

সবাই মিলে হস্তে তুলে

নে রে বিষের বীণ

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

 

বাজা বাজা জোরসে বাজা

কে প্রজা আর কে সে রাজা

ভাল মানুষ পাচ্ছে সাজা

ডাকাতগুলো খাচ্ছে গাঁজা

বাজা রে বীণ, বাজা বাজা

জোরসে বাজা, আরো জোরে

নতুন কুমার আসবে ভোরে

মহাকাল যে গুণছে বসে

এক দুই আর তিন

ভোর হয়েছে জাগো বাহে

দাও মিটিয়ে হীরক রাজার

পাওনা সকল ঋণ

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

 

জেলের তালা দাও ভেঙ্গে দাও

বীরের মতো যাও ছুটে যাও

কে উঠায় সঙ্গীণ

মাটির সাথে দাও মিশিয়ে

হীরক রাজার চিন

উঠবে সুরুজ, হাসবে আবার

সোনালী সুদিন

 

দিন হাসবে, মীন হাসবে

হাসবে গোলাপ ফুল

হীরক রাজার পতন হবে

ভাঙলে জাতির ভুল

মিথ্যে নয় এক চুল

এই খুশীতে তোমার খোঁপায়

দিলাম বেলী ফুল

আসছে জোয়ার আসছে তুফান

ভেঙ্গে নদীর কূল

তোমার সামনে এখন শুধু

রাঙা খুশীর দিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

(বল) তাকধিনা ধিন, ধিন

২৮//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৫

নন্দর বিদেশ যাত্রা

আপনি বলেন,

আমার লেখা মন্দ না

তবে কেন পাই না খুঁজে

যে মানুষটা নন্দ না

নন্দ নাকি ভয়ে মরে

কবে নন্দ ঘোড়ায় চড়ে?

 

রেল চড়ে না

যায় না পথে

চড়ে না সে গাড়ি

যায় না শ্বশুর বাড়ি

 

নন্দ ঘুমায় কদমতলা

খেয়ে গরম তাড়ি

ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে

দিচ্ছে সাগর পাড়ি

পথে পথে আজরাইলের

বিকট বিকট ফাঁড়ি

সেই ফাঁড়িতে আর্মি পুলিশ

করছে মারামারি

 

খোয়াব দেখে নন্দলাল

ডাইনি বুড়ি কাটছে খাল

খাল ভরা সব সাপের ছাও

বলছে নন্দ কোথায় যাও?

 

সাহস কিনতে বিদেশ যাই

দেশে যে আর শান্তি নাই

২৯//২০২১; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৬

পীর মানুষ

আমার কোনো কর্ম নাই।

লড়াই করবো? বর্ম নাই।

ফতোয়া দিতে ঘর্ম নাই

বুঝো কি তার মর্ম ভাই?

কে কাফের, কে মুসলমান

কে ঈমানদার কে বেঈমান

কে খবিস আর কে ইনসান

কে দানশীল ও কে নাদান

কইতে পারি অনায়াসে

যদি তাতে টঙ্কা আসে।

কে আম লীগ ও কে তাবলীগ

কে আসল আর কে সাব লীগ

কারা পিচ্ছি, আর কারা বিগ

কে বাঘের ছাও কে গিনিপিগ

ফতোয়া চান? দিতে পারি

টাকা এলে কাড়ি কাড়ি।

মুরীদ বানাই, জেফত খাই

মিষ্টি খাওয়ার সুন্নত চাই

লা ইলাহা-- আল্লাহ নাই

জোশে এই জিকির গাই।

তাতেও কারো হয় না হুশ

হাদিয়া দেয়, কয় না ঘুষ

দান দক্ষিণায় মুক্তি ভাই

মুরীদে দেয়, আমি খাই।

আমার কথা পষ্ট ভাই

জিহাদ করা কষ্ট ভাই

তারচে ভাল হারাম খাই

হারাম খেয়ে আরাম পাই।

আমার কোন কর্ম নাই

জুব্বার ভেতর ধর্ম নাই।

ফরজ রেখে নফল জুস

বিলাই আমি পীর মানুষ।

৩/৬/২০২১; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৭

কাঠবিড়ালি খায়

বেল গাছে তো তেল ধরে না

রেল চলে না নদীতে

তবে কেনো কাঠবিড়ালি

বসে নরোম গদীতে।

সে তো থাকবে গাছের ডালে

সবুজ পাতার ফাঁকে

ডাল থেকে সে ডালে ঘুরবে

খুঁজবে নিজের মাকে।

মা গিয়েছে চান্দের দেশে

বাপ গিয়েছে সঙ্গে

কান্না রেখে বিড়াল ছানা

ছড়ি ঘুরায় বঙ্গে।

দেশের যতো ফলফলাদি

একাই সাবাড় করে

কাঠবিড়ালি পেটুক ভীষণ

খাম খাম খালি করে।

বাপ মা এবং ভাই ভাবী

খেয়ে করে শেষ

বলে আহা খেতে মজা

সবুজ বাংলাদেশ।

সময় বয়ে যায়-

কাঠবিড়ালি খায়

মাঝে মাঝে নায়ে চড়ে

খসম বাড়ি যায়।

৫/৬/২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৮

বীর যখন পীর হয়

মুসলমানের ঘরে আগে

জন্ম নিতো বীর

মুমীন মানে থাকে যাদের

সদা  উঁচু শির

 

বীরেরা যেই পীর হলো

এবং তোহফাখোর হলো

ব্যাঘ্র হলো মিঁউ

ঈগল ছানা মুরগি ছানার

ভয়ে বলল, চিউ

 

পীরে এখন বেহেশত পাবার

শিখায় নানান দোয়া

মুমীনরা সব নজরানা দেয়

পীর খায় কাঁঠাল কোয়া

 

বিশ্ব মুসলিম তসবি ধরে

সওয়াব দিয়ে বস্তা ভরে

কাফেরেরা হাসে

মুসলমানের বাচ্চারা সব

রক্তগঙ্গায় ভাসে

 

বাঁচতে চাইলে কোরান পড়ো

নবীর সুন্নাত আঁকড়ে ধরো

//২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৭৯

কু ঝিক ঝিক রেলগাড়ি

কু ঝিক ঝিক রেলগাড়ি

কোন দেশে যাস, কার বাড়ি?

পেরিয়ে মাঠ, পাহাড়, বন

নিয়ে যাস তুই কাহার মন?

কোন উদাসী চেয়ে রয়

কার ইশারায় সকাল হয়?

 

কু ঝিক ঝিক রেলগাড়ি

কয়টা নদী দিস পাড়ি

নদীতে নাই মৎস, জল

কোন কারণে? জানিস বল

কে খায় বসে জল, পানি

সে কার খালা, কার নানী?

 

কু ঝিক ঝিক রেলগাড়ি

কই বোনের সে লালশাড়ি

কে নেয় শাড়ি? কোন চিলে

কে ব্যথা দেয় এই দীলে?

কু ঝিক ঝিক রেলগাড়ি

আর যাবি না চিলমারি?

 

চিলমারিতে চিল নাই

আজ মানুষে মিল নাই

প্রতিশোধের বন্যা

চালায় চতুর কন্যা

//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮০

ও দয়াময়

ও দয়াময়

তোমার রহম আমার ওপর বৃষ্টির মত ঝরে

এত দয়ার শোকর আমি করি কেমন করে?

আলো দিলে, বায়ু দিলে, রিজিক বেশুমার

আরো দিলে ফুলের অঢেল সুবাস উপহার

 

ও দয়াময়

রৌদ্র দিলে ময়লা যেনো সব হয়ে যায় দূর

মনের ময়লা দূর করতে দিলে হেরার নূর

তোমার অঢেল দয়ার কথা শুনি কানে কানে

ঝরণা নদীর কলতানে, ফুলপাখিদের গানে

 

ও দয়াময়

আকাশ জমিন সাগর দিলে, দিলে আরো পানি

কতকিছুই দিলে দয়াল, আমরা কি সব জানি?

কোনটা রেখে কিসের আমি শোকর করি বলো

তোমার রহম যতোই দেখি মন হয় ছলোছলো

 

ও দয়াময়

তোমার রহম রাশি রাশি, অঢেল সারি সারি

সে রহমের হিসাব বলো কজন করতে পারি?

১১//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮১

পাপ ও পাপী

নিজের হাতে কাবাঘরের মূর্তি ভাঙলেন নবী

মসজিদে কে টানায় আজ শুনি নিজের ছবি?

বিশ্বে কি আজ নবীর উম্মত মরেই গেছে সব

ভন্ডেরা আজ খোদার ঘরে করবে রে উৎসব?

 

কতোটা পাপ করলে নমরুদ মশার কামড় খায়

আবাবিলী পাথর কখন লাগে আবরাহার গায়?

খোদার গযব আসতে বলো কতোটা পাপ লাগে

শয়তান নাচে খোদার ঘরে, ভয় কি মনে জাগে?

 

আল্লার কুদরত বুঝার শক্তি অধম বান্দার নাই

তাঁর সে অপার সহ্যের কিরে সীমা সরহদ নাই?

ফেরাউনের পাপ পূর্ণ হতে আর কতদিন বাকী?

কবে আসবে নীল নদে ঢেউ অবাক চেয়ে থাকি

 

করোনা কি, সতর্কতার বার্তা দেয়নি বিশ্বময়?

শয়তান তবু নাচে রঙ্গে, সঙ্গে নাচে শিষ্য কয়

শুঁড়িখানা বুড়ি নাচে, ইবলিসে কয় নফল ধর

এসিসহ মসজিদ নিয়ে দমে দমে জিকির কর

 

এটা যদি সইতে পারিস, বলতো তবে দোষটা কার

নামলে গযব এ বিশ্বময়, আসলে বিপদ ধুন্ধুমার?

আলেম জালেম এক বরাবর, সকলে কি পাপী নয়

যে করে পাপ, বাকী যারা পাপ সয়ে তার শিষ্য হয়?

১১//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮২

শেয়ার করো, পেয়ার করো

কমেন্ট লেখার সময় পান

শেয়ার করার পান না

ভাল লেখা বন্ধু পড়ুক

আপনি কি তা চান না?

 

শেয়ার করুন, পেয়ার করুন

ফেয়ার করুন "ভালো"

এক মশালের আলো দিয়ে

হাজার মশাল জ্বালো

 

ভালো যা পাও দাও ছড়িয়ে

মন্দ করো দূর

সবার মনে দাও ছড়িয়ে

ভালবাসার সুর

 

শেয়ার করো, কেয়ার করো

আমার কথা ভাই

পেয়ার করো, ফেয়ার করো

এইতো আমি চাই

১১//২০২১; ১১.৪০ মিনিট

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৩

সয়না রে ময়না

কত রকম বুদ্ধি লোকের, বুদ্ধি দেখে হাসি

বুদ্ধি নিয়েই বুদ্ধিমানে হয়রে বেহেস্তবাসী

পরের গানে কন্ঠ দিলেও শিল্পী সে জন হয়

যিনি তোলেন সুর তাকে তো সুরকারই কয়

 

গান লিখে হয় কথাকার সে, গীতিকার সে হয় না

কার পেটে রয় এতো বুদ্ধি? বলতে পারিস ময়না?

কবিতা লিখে পুরস্কার পায়, "কলমে" ক্যান কয়

কবিতা লিখেন যাঁরা তাঁরা, কবি কি কেউ নয়?

 

বলতে পারিস এতো বুদ্ধি কোথায় ওরা পায়

ধান্ধাবাজরা সবাই কি রে, হাতির দুধু খায়?

হাতির দেহ বিশাল বলে, বুদ্ধি তাদের বেশী

যেমন ওদের বুদ্ধি তেমন শক্ত তাদের পেশী

 

তাই কবি ও গীতিকার "কথা, কলমে" হয়

কবিরাই কি বুদ্ধু, কেনো সবই তাদের সয়?

১২//২০২১; ৩.৩০ মিনিট

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৪

নড়বে ধর্মের কল

চুন কালি দে মাইখা ওদের, চিল্লা জোরে চিল্রা

জুতা পরে মসজিদ ঢুকলে মাইয়া পুরুষ মিল্লা

 

কে বলে রে ওরা আজও, রইছে মুসলমান?

মুমীন হলে ওরা, কে মুনাফিক, কে বেঈমান?

 

ওরা যদি মুসলিম হয়, কাফের হবে কেডা রে

মুমীন দূরে, মানুষও নয়, এসব বেডি বেডা রে

 

এরা হলো ইবলিস, খবিস, মুনাফিকের ছাও

সবাই মিলে ইবলিস ধরে, জুতার বাড়ি দাও

 

যুবক বুকে, আজ তবে কি, দ্বীনঈমানের লেশ নাই

যে ফাজলামি চলছে দেশে, এরকি কোন শেষ নাই

 

ফরজ রেখে যারা এখন তসবি, জিকির করে

খুঁজে দেখ তুই শয়তান বসা সে হুজুরের ঘরে

 

কে হারামখোর? যারা নিজে গতর বেঁচে খায়

নাকি যারা পাগড়ি পরে, নজর নিয়াজ চায়?

 

ভন্ডদেরকেই দন্ড দে তুই, গন্ডমুর্খের দল

তুই নড়লে নড়বে ঠিকই দেশে ধর্মের কল

১২//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৫

পাবে সুখের খনি

তোমার দোয়া হয় না কবুল

তোমার কিছু ভুল আছে

আটা ময়দা মাখছো ঠিকই

তাতে কিছু চুল আছে

 

পানি ছাড়া ময়দা মাখলে

তাতে কোন ফায়দা নেই

প্রেম না দিয়ে প্রেম পাবার

আর তো কোন কায়দা নেই

 

সাড়ে তিনহাত দেহটাতে

আগে ফরজ ঢুকতে দাও

তার আগেই কেনো তুমি

নেকী নফল শুকতে যাও

 

নিজের মনের লোভ লালসা

আগে করো দূর

মনের ভেতর আগে তুমি

বাজাও প্রেমের সুর

 

তোমার ডাকে সাড়া দেবেন

আল্লাহ কাদেরগনি

যেদিক তুমি হাত বাড়াবে

পাবে সুখের খনি

১২//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৬

মানব সেবায় হাত দেন

যদিও শুনতে খারাপ লাগবে

তবু বলি,  বাদ দেন

ওয়াজ রেখে এবার একটু

মানব সেবায় হাত দেন

 

নিজে ফরজ মেনে চলুন

হারাম সবই বাদ দেন

পরিবারকে গড়ার কাজে

এবার একটু হাত দেন

 

আত্মীয়তার হক দেন

পাড়াপড়শির খবর নেন

সমাজে কি অসৎকর্ম

হচ্ছে সেদিক নজর দেন

 

আলেমগুলো ওয়াজ করে

জালেম চালায় দেশ

আলেমে খায় হাত পেতে

চোরে লুটে ক্যাশ

 

ঘুষখোরেরা মসজিদ বানায়

আপনি তাতে ইমাম হন

এভাবে কি দেশ চলে?

আপনি হুজুর নিজেই কন

১২//২০২১; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৭

কবি ও রবি

কবিরা হয় রবির মতো

বিলায় শুধু আলো

ডেকে বলে, প্রাণ বন্ধু

আকড়ে ধরো ভালো

 

নিজের সাথে বিবেক আছে

বিবেক প্রদীপ জ্বালো

দূর করে দাও মনের যতো

হিংসা, লোভ ও কালো

 

ভালবাসো স্রষ্টা এবং

সৃষ্টি অফুরান

জগত জুড়ে কবিরা গায়

শুদ্ধ প্রেমের গান

১২//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৮

বুঝলি ভোলা?

ভার্সিটি বন্ধ, ক্লাব সব খোলা

কেনো আছে বলতো ভোলা?

সেয়ানা সব মাইয়া পোলা

মদ্যমাখা কোকাকোলা

খাইতে যেন পারে

মধ্যরাতে, বারে

 

বয়স বাড়বে, শিক্ষা না

কি খাবে ক, ভিক্ষা না?

চাকরী করবে চাকরে

দেখবে ওরা হা করে

 

হীরক রাজা হীরা পায়

বোকার দল নৌকা বায়

আইলো দেশে গোলামবাদ

লিখং পড়ং সব বরবাদ

 

বাঁচবে ফেলে গায়ের ঘাম

নয়তো খাবে ডোবার মাম

এই তো পাবে শ্রমের দাম

আমি খাবো ফজলি আম

১৭//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৮৯

অটো পাশ

অটো পাশ এমপি, অটো পাশ ছাত্র

অটো পাশ ধর্ষক ও সেঞ্চুরীর পাত্র

অটো পাশ গুম হওয়া স্বজনের লাশ

আরো কি অটো পাশ বল দেখি চাস?

 

অটো পাশ বিপ্লবী, অটো পাশ বন্দী

অটো পাশ বিরোধী সব প্রতিদ্বন্দ্ধি

অটো পাশ পরিমল, তার যত ফন্দি

অটো পাশ শহীদের সব রেজামন্দি

 

অটো পাশ খুন ও, অটো খুনী বান্দা

অটো পাশ পথেঘাটে ছিনতাই,চান্দা

অটো পাশ চুরি আর, তার সব ধান্ধা

অটো পাশ সবকিছু পঁচা,বাসি,গান্ধা

 

অটো পাশ তিন তাস, অটো পাশ বান্দী

অটো পাশ শুনলেই জ্বলে যায় চান্দি

১৮//২০২১; ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯০

গাজীপুরের গাজী সা'

গাজীপুরের গাজী সা'

গাছে যখন পাকছে গাব

দেখতে থাকুন নয়া খা'

আপনি সে গাব খাইবেন

কিছু গাব সঙ্গে নিয়ে

শ্বশুর বাড়ি যাইবেন

 

সঙ্গে নিবেন মিষ্টির হাঁড়ি

আরো নিবেন পানসুপারি

আদর করবে মা শ্বাশুড়ি

যখন যা চান পাইবেন

মধু মাসে আম কাঁঠাল

মজা করে খাইবেন

 

জাম পেকেছে থোকা থোকা

জামাই ভালো, দেয় না ধোঁকা

চালাক পোলা, নয় রে বোকা

যাবার সময় দাওয়াতও দেয়

বলে, সবাই যাইবেন

হাস্নাহেনা, জুই, চামেলীর

মিষ্টি সুবাস পাইবেন

 

গাজীপুরের গাজী সাব

অযথা যে নেয় না ভাব

১৮//২০২১; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯১

নতুন নাটক

শশুরবাড়ি মধুর হাঁড়ি, ঢোল দিয়া কে যায়?

মধুমাসের জেফত সবাই, চামে চামেই খায়

গাড়ি নিয়া আমি কেনো আত্মগোপন করি

ছিছি সেসব শরম কথা কইতে লাজে মরি

 

শশুরবাড়ি সোনা বউয়ের আদর যখন খায়

কেউ কি তখন নায়ে বসে ভাটিয়ালী গায়?

গোপন কাজটা চুপি চুপি একাই করতে হয়

এ কথা কে বাঙ্গালদের আজ বুঝিয়ে কয়?

 

বাতাস খেয়ে ডাঙর হইলি, বুদ্ধি পাকে নাই

কারণ ছাড়া কেউ কি বসে কাঁচা কলা খাই?

শশুরবাড়ি মধুর হাঁড়ি, মধুর লোভ কি নাই?

ঢোল পিটালে শালার শুধু জ্বালা বাড়ে ভাই

 

দাওয়াত খেলে গুমের ভয়ে মানুষ করে, আহা

কু ঝিক ঝিক রেলগাড়িটা জপে ত্বাহা, ত্বাহা

সেটা ঢাকতেই রাত দুপুরে নাটক বোটে  হয়

এসব কথা বদমাশ ছেলে গুনগুন করে কয়

 

আজব দেশে বারটা সরে, বল ঢুকে না বারে

কাপুরুষদের পিঁপড়া ভেবে দুঃসাহসী মারে

গোলপোস্ট ছুটে বোটে যায়, নয়া নাটক হয়

ভন্ড লোকের দেশেই শুধু ভন্ডামীর হয় জয়

 

দেশের সকল দোস্ত মিলে নরম গোস্ত খায়

তাইতো দেশের সুখ শান্তি চান্দে উড়ে যায়

১৯//২০২১; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯২

গাজীপুরের মাটি

পেয়ার করেন

শেয়ার করেন

লেখা যদি পান

গাজীপুরের মিষ্টি কাঁঠাল

মজা করে খান

 

আম জাম আর পেয়ারা লিচু

খেতে যদি চান

গাজীপুরের ফলবাগানে

সবাই চলে যান

 

আরো পাবেন ভালোবাসা,

শাল গজারীর বন

তারচে ভালো মানুষগুলোর

মুক্ত উদার মন

 

বড়োরা সব চাচা, কাকা

ছোট সোনার চান

দাদীর মুখে পানসুপারী

মাঝির কন্ঠে গান

 

এইতো আমার জন্মভূমি

গাজীপুরের মাটি

পাখপাখালির কিচির মিচির

মানুষগুলো খাঁটি

১৯//২০২১; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৩

জয় পরাজয়

ভোর হতে কত দেরী, কে দেবে আজান

কার ডাকে এ আঁধার, হবে খান খান

কে ভাঙাবে এ জাতির আরামের ঘুম

কার ডাকে দাঁড়াবে রে ফের মজলুম?

 

"হাজির হাজির" বলে কারা দেবে সাড়া

কে জাগাবে ডেকে ফের এ ঘুমের পাড়া

জাগো জাগো বলে কে, উঠবে রে হাঁকি

গাছে গাছে পাখি কবে উঠবে রে ডাকি

 

জানো নাকি? কই আছে সেই মহা বীর

কার ঘরে আরামে সে বসে খায় ক্ষীর

খোদার কুদরত আহা বুঝতে কে পারে

মুসা নবী ফেরাউনের নিজ ঘরে বাড়ে

 

খোদার হুকুমে আহা রে কত কি যে হয়

নবী মুসার হাতে খুনীর হয়রে পরাজয়

২৪//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৪

ভয়ের কিছু নাই

আগের মত সাহস কি আর এ শরীরে আছে?

সাহস সবই খাইছে খুটে টেংরা পুটি মাছে।

যেটুক ছিল সেটুক গিয়ে উঠলো বরই গাছে।

আগে হাঁটে মরগী ছানা, শিয়াল পাছে পাছে।

নিরাপত্তার জন্য আছে আর্মি পুলিশ তাই

মন্ত্রী বলে, আমজনতার ভয়ের কিছু নাই।

ভয় যদি খুব বেশী পাও তালমিছরি খাও

এবার সোনা হেঁটে হেঁটে পুকুর ঘাটে যাও।

তোমার ঘরের দখল নিছে আমার পোলাপান

ফুলের টোকা দেয়নি গাযে এতোই মেহেরবান।

করতে কিছু পারতে তুমি পোলাপানে মিলে

নিতো যদি গায়ের চামড়া একটু করে ছিলে?

কিংবা যদি ইলিয়াসের মতন হতে গুম

হাঁসের ডিমে কুমীর বসে দিত যদি ওম

হাঁসের কিছু করার ছিল, কান্নাকাটি ছাড়া

মরবি সোনা ধীরে মর, এত কিসের তাড়া?

মনটা আমার খুবই নরম, দয়ার শরীর, তাই

যাদের মারি তাদের কারো চক্ষু তুলি নাই।

তাদের লাশ ফেরত দিলে ভয় যদি তুই পাস

তাইতো আমি গুম করে, লুকাই সকল লাশ।

২৪/ ৬/ ২০২১; ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৫

আমার ঘরে আমি নেই

আমার ঘরে আমি তো নেই, যারা এখন আছে

সোনার কাঠি রূপার কাঠি এখন তাদের কাছে

সেই খুশিতে দুই পা তুলে কি যে অদ্ভুত নাচে

নিজের শিশু দুধ পায় না, ছাতু খেয়ে বাঁচে

 

কোলে করে যাকে এদ্দিন করেছিলাম বড়ো

খাটের ওপর দেখলে বলে সরো বাবা সরো

তোমার বউমা বাইরে খাঁড়া, তুমি কেন ঘরে

বসার কি আর পাওনা জায়গা বিশ্বচরাচরে?

 

বয়স হইছে গতর বাড়ছে, বুদ্ধি বাড়ে নাই

সারাটা দিন খামখাম করো কত খানা চাই

এ জীবনে কমতো খাওনি,একটু বাবা থামো

হা করে কি দেখছো বল, জলদি করে নামো

 

এতো মানুষ তুলছে পটল, পটল তুলে খাও

অমা, একি! রাগ করলে, গামছা নিয়ে যাও

২৪//২০২১; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৬

ঘোড়ার আন্ডা খাও

তুই ভীতু না মুই ভীতু বুঝতে মোটে পারি না

রিক্সা করে ঘুরে বেড়াই, বুলেটপ্রুফ গাড়ি না

ভয় যদি না পাইতি তবে মাছ বাজারে আইতি

কুদ্দুস মিয়ার চা দোকানে রঙিলা চা খাইতি

 

ভয় না পেলে রক্ষী নিয়া পথে নামিস কেনো

সবাই কি তোর শত্রু নাকি, কয়টা শত্রু চেনো

রক্ষী সিপাই রাখো কেনো লক্ষ্মী ছেলে হলে

যাও কি একা উর্ধাকাশে কিম্বা পানির তলে

 

কোন শকুনে তোমার সাহস একচুমুকে খেলো

সাহস খেয়ে শকুনটা কি শশুর বাড়ি গেলো?

ভয়ে থাকো সারাটা দিন, রাতেও থাকো ভয়ে

স্বপ্নে তোমায় ছোবল কি দেয় সর্প শয়ে শয়ে?

 

লাউয়ের গাছে লাউ ধরে, সীমের গাছে সীম

রাজা হলেই হয় রে সবাই আস্ত ভীতুর ডিম

রাজারা হয় ভীতুর ডিম, উজির ভূতের ছাও

রাজা উজির বসে বসে ঘোড়ার আন্ডা খাও

২৫//২০২১; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৭

জপো তাঁর নাম

এ আকাশ মাঠ নদী ফুল পাখি বন

সকলি তোমার তরে হয়েছে সৃজন

না চাইতেই এইসব যার থেকে পাও

মিলেমিশে সকলেই তাঁর গুণ গাও

 

তাঁর গুণ গাও যার শস্য দানা খাও

যার থেকে অকাতরে ফুলফল পাও

সীমা পরিসীমা নেই যার দয়া দান

তিনিই শ্রেষ্ঠ বলো, তিনিই মহান

 

তিনিই দিলেন আহা এ জীবন ধন

সুন্দর দেহ দিলেন, সুবাসিত মন

কিছুই হয়নি সৃজন শুধু অকারণ

তিনি দেন রাত আর সূর্য কিরণ

 

বলো তিনি সুমহান, তিনি মহীয়ান

তাঁর দান বেশুমার সবই অফুরান

তাঁর গান গাও সবে তাঁর গুণ গাও

সকলেই শেষমেষ যার কাছে যাও

 

অনন্ত অসীম তিনি করুণার আঁধার

তাঁর নাম জপো মন, জপো বারবার

২৫//২০২১; ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৮

কারে যে কি কই

সই

মনের দুঃখ মনে রাখি

কারে দুঃখ কই

বাপজিগুলো পাবজি খেলে

ইঁদুর ছিঁড়ে বই

 

ছেলেপেলের মুখের দিকে

অবাক চেয়ে রই

কারে কমু লেখাপড়ায়

মন্ত্রীরা দেয় মই?

 

চালের থেকে মুড়ি হয়

ধানের থেকে খৈ

দুধ থেকে কেউ ছানা বানায

কেউবা বানায় দই

 

ধান গাছে কি তক্তা হয়

ছেলে শিখবে কই?

মনের কথা কই না ডরে

চুপ করে বোন রই

 

সই

ইচ্ছে করে নিজেই এবার

মুগুর হাতে লই

২৬//২০২১; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩১৯৯

চতুর্দিকে ফেউ

ভেউ

শিয়াল ডাকে হুক্কা হুয়া

কুকুর ডাকে ঘেউ

বলতে পারিস কেউ

দেশে আছে কয়টা মানুষ

কয়টা আছে ফেউ

 

ইলিশ ছিল মাছের রাজা

এখন রাজা চেউ

আগে দেশে বন্যা হতো

এখন গুমের ঢেউ

 

মানুষ যদি একটা হাঁটে

দশটা হাঁটে ফেউ

কাপুরুষের বন্যা দেশে

পুরুষ আছো কেউ?

 

কয় না কথা কেউ

চতুর্দিকেই ফেউ

২৬//২০২১; ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-৩২০০

নোট কোট ভোট

দীলে বড় চোট

একটা দেশ নষ্ট করলো

কালো টাকার নোট

 

সেই টাকাতে কিনছে কেউ

হাতা কাটা কোট

সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে উড়ে

বুড়িগঙ্গার বোট

 

সেই খুশিতে হাসছে নাকি

রক্তমাখা ঠোঁট

জোটগুলো সব ভাবছে বসে

হাসছে মহাজোট

 

ফোট

কে কয় তোরে জিততে লাগে

জনগণের ভোট

যতো শুনি ততো দীলে

ক্যান যে লাগে চোট

২৬//২০২১; ৭টা।


No comments

Powered by Blogger.