আসাদ বিন হাফিজ এর ১০০ ছড়াঃ ১২০১-১৩০০

 


আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০১

তবু চাঁদ মামা হয়

চাঁদেও কলঙ্ক থাকে,

তবু চাঁদ মামা হয়

কাপড়টা কাটে তাই

সুন্দর জামা হয়।

 

যন্ত্রটা বাজে তাই

সানেধামা পামা হয়

শিশু আছে তাই মামা

মাঝে মাঝে হামা হয়।

 

নাও ভাঙে খিজিরে

তাই মাঝি নাও পায়

জলে থাকে তবু মীন

নিজ নিজ ছাও পায়।

 

কোন কাজের কি মানি

আমি তার কি জানি?

কে রাজা কে রানী

কে খায় কি পানি।

 

নিজেরই পিঠ আমি

নিজে কভু দেখি না

কত কথা বাদ যায়,

সব কথা লেখি না।

 

কারো দোষ বললে

তাতে কিছু পাপ হয়

মুখে পাপ বললে

বুকে তার তাপ রয়।

 

নিজের কলঙ্ক আগে

নিজে করো খোঁজ

সে পাপের ক্ষমা চাও,

প্রতিদিন, রোজ।

১৭/৬/২০১৮;  ৫:৫০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০২

ভিন্ন মতের কদর

তোমার চোখে লাল ভালো

আমার চোখে সাদা

কোন রঙটা সত্যি ভালো

কও তো দেখি দাদা?

 

সবুজ নীল হলুদ ভালো

ভালো কালো লালও

ফুল পাখি নদী ভালো

সোনামনির গালও।

 

শুকর থাকে কাদাজলে

টিয়া থাকে বনে

কালো মেয়ের ঘর সংসার

ভরা সুখের ধনে।

 

সুন্দরীরা প্রহর গোণে

কোথায় পাবে বর

অনেকের তো জীবন কাটে

পায়না তারা ঘর।

 

ভালোমন্দ লিখছে বসে

কেরামন ও কাতেবীন

তারা কভু ঘুমায় নাতো

আমল লিখে রাত্রিদিন।

 

ভালমন্দ বিচার করার

তুমি আমি কেউ না

পানি খাওয়ার গেলাসের

এটা তো আর ঢেউ না।

 

মন্দ বলা বন্ধ করো

অন্ধ হলে চলবে না

ভিন্ন মতের কদর করো

আগুন তবে জ্বলবে না।

১৭/৬/২০১৮;  ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৩

পূণ্য কাজে হাত দাও

কাজের কথা বলার সময়

খুবতো বেশি নাই

বাজে কথা বলার সময়

কোথায় বন্ধু পাই।

 

পরের দোষ বললে বলো

আমার কি লাভ হবে

মিথ্যা এবং গীবত বলায়

আমারও পাপ হবে।

 

মুসলিম মিল্লাত ডুবছে কোনো

সর্বনাশা বন্যায়

যারে জানতাম ভালো লোক

করছে সেও অন্যায়।

 

অনেক হইছে পাপের কামাই

এবার ওসব বাদ দাও

যে সব কাজে পূণ্য আছে

এবার তাতে হাত দাও।

১৭/৬/২০১৮;  ৫:৩৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৪

তেলাপোকা

মা তুমি কি ভীতু নাকি তুমি মাগো বোকা

মিষ্টি হেসে শুধায় মাকে সোনামনি খোকা।

 

মা হেসে কন, কেনো আমায় বললি ভীতু, বোকা

এমনটা ক্যান মনে হলো, বলতো আমায় খোকা।

 

বাঘ, ভালুক বা সিংহও নয়

হিংস্র কোন প্রাণীও নয়

নিরীহ এক পোকা

তোমায় দিল ধোকা?

 

কিসের কথা বলছিস বাবা?

কেন বলিস আমায় হাবা?

বুঝলাম না তো কিছু।

 

সেটা যদি বলি মাগো

করবে মাথা নিচু।

 

যেই পোকাটা দেয় না কামড়, ফুটায় না যে হুল

তার গায়ে নেই কাঁটা কোন, গা টাও তুলতুল।

তার ভয়ে যে লাফিয়ে তুমি ভাঙলে নিজের খাট

খাট কি মা তোমার আমার ফুটবল খেলার মাঠ?

 

তেলাপোকার কথা বলছিস? ওরে বাপরে বাপ

ওই পোকা তো পোকা নয় রে, জ্যান্ত অভিশাপ।

দেখলে তারে গা ঘিনঘিন, সত্যি পাইরে ভয়

যদিও মানি মশার মতো অসভ্যও সে নয়।

 

তেলাপোকা বোকা প্রাণী, নিরীহও বটে

কোনদিনই সাহস করে যায়নি নদী তটে।

এখন থেকে বাদ দিয়ে দাও তেলাপোকার ভয়

দোয়া করো তোমার ছেলে করবে বিশ্ব জয়।

১৮/৬/২০১৮; রাত সাড়ে ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৫

আমজনতার ঘাড়

ছড়া আছে ছন্দ নাই

পড়া আছে বন্ধ নাই।

 

মরা আছে গন্ধ পাই

জ্বরা আছে অন্ধ নাই।

 

চক্ষু আছে দেখে না

সত্য কথা লেখে না।

 

তাইরে নাইরে নাইরে নাই

মানুষ বাঁচে কদিন ভাই!

 

ভবের হাট কয় দিনের

সাত নাকি ছয় দিনের?

 

তাইরে নাইরে পার করো

ক্ষমতার হাত বার করো।

 

আমজনতার ঘাড় ধরো

হাড্ডি দিয়া সার করো।

১৮/৬/২০১৮;  ৩টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৬

পাপ ছাড়ে না বাপ কে

কিসের মাঝে কি

পান্তা ভাতে ঘি।

 

কারে শাসান আপনি?

আপনি তার বাপ নি?

 

আল্লাহ আজো মরে নাই

আল্লাহ পাপীর ফরে নাই।

 

যার পাপ খাইবো তারে

তুমি কেন পাপের ধারে।

 

পাপ ছাড়ে না বাপ কে

পাপে দেয় তাও ঝাপ কে?

 

আমার পাপের অভাব নাই

নতুন পাপের স্বভাব নাই।

১৮/৬/২০১৮;  ৪:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৭

বান্দারে তুই

বাবা দিবস ডেকে বলে, হাবার মত কি ভাবিস

মাল মুহিতের কথাই ঠিক, এ দুনিয়ার সব রাবিশ।

সাগর আছে ঢেউ নাই

এ দুনিয়ায় কেউ নাই

প্রেমের পাল্লা দিয়ে তুই স্বার্থ সম্পদ কী মাপিস?

 

তোরে যারা জন্ম দিছে, তারা এখন কই রে?

তাদের পূণ্য তাদের সাথে কেউ কি মাথায় লই রে?

তাদের দেহ গলে গেছে

একা একাই চলে গেছে

তারা এখন কেমন আছে সে খবর কেউ লই রে।

 

কবে ধরায় এসেছিলি তুই তো তাও জানোস না

কবে আবার যাবি ফিরে সে খবরটা আনোস না?

জানি আনতে পারবি না

লোভের রশি ছাড়বি না

তবে কিসের বড়াই তোর কোরান কেন মানোস না।

 

বান্দা রে তুই আল্লাহ ধর

থাকবে না রে কোনই ডর।

১৮/৬/২০১৮;  ৬টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৮

ছুমাইয়া গো ছুমাইয়া

ছুমাইয়া গো ছুমাইয়া

বৃষ্টি আইছে ধুমাইয়া

মা তো রইছে ঘুমাইয়া।

 

গরু রইছে বাইরে

বাছুর এবং গাই রে

কারে গরু আনতে কই

তুই ছাড়া কেউ নাইরে সই।

 

চল দুজনে যাই রে

বিষ্টি জলে নাইরে।

গরু বানমু গোয়ালে

শরীর মুছমু তোয়ালে।

 

আমরা গরীব ভাবনা নাই

যা জোটে ভাই তাইতো খাই।

তাতেই করি শোকর গো

দেইনা কাউকে ঠোকর গো।

১৯/৬/২০১৮;  ১২:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২০৯

আয়না বিবি

আয়না বিবি পায় না কিছু খায় না রুটি ভাত

ক্ষুধায় কাটে আয়না বিবির দিবস এবং রাত।

 

একদিন আয়না স্বপ্নে দেখে ডায়না ঘরে তার

নানা রঙের পোশাক এবং খাবার বেশুমার।

 

ডায়না বলে আয় না আয়না একসঙ্গে খাই

সকল নবী বলে গেছেন দেখবে দুঃখ নাই।

 

নবীর উম্মত ভরা বিশ্বে দুঃখ তবু  যায় না

ভেবে ভেবে এর কারণ আয়না খুঁজে পায় না।

 

সময়মত কেনো দেয় না সাহেব বাবু মায়না

সে তো শুধু বেতনই চায় জমিদারী চায় না।

 

ইচ্ছে করে যাই রে চলে এ দেশ থেকে চায়না

খুঁজে দেখি হারাম কে খায় কারা হালাল খায় না।

 

ডায়না বলে আয়না বিবি মায়না নিবি চল

একটু দেখা শক্তি সাহস, খোদার কাছে বল।

 

তিনি পারেন উল্টে দিতে আসামী হয় রাজা

দুই জাহানেই জুটতে পারে তার ভাগ্যে সাজা।

১৯/৬/২০১৮;  ১:১০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১০

জনতার ঢেউ

ঢেউ আছে ভাই অনেক রকম

সাগর নদী পুকুরে

ঢেউ খায় না হীরালাল ও

ছাগল বিড়াল কুকুরে।

 

ঢেউ আছে ভাই বিলে ঝিলে

ডোবা নালার পানিতে

সে ঢেউ বলো কেমনে এলো

রাজপথে ধান ভানিতে।

 

আরো আছে ঢেউয়ের খবর

চেষ্টা করো জানিতে

তাকিয়ে দেখো ঢেউ খেলে যায়

নেতা নেত্রীর বানীতে।

 

কিন্তু যদি জাগে ভাইরে

রাজপথে ঢেউ জনতার

উল্টে নাকি যায়রে আহা

সাধের গদী ক্ষমতার।

১৯/৬/২০১৮; ১:৪০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১১

পাপের বোঝা

আসাদ বিন হাফিজ

 

তুমি আমায় গালি দিলে? দাও।

আরো কিছু পাপের বোঝা

নিজের কাঁধে নাও।

 

কেউ আমাকে গালি দিলে

আমি তারে দেই না

অন্যের করা পাপের বোঝা

নিজের কাঁধে নেই না।

 

তোমার গালি তোমার মুখে

আমার গায়ে লাগে নাই

তোমার জন্য করুণা হয়

মন তো আমার রাগে নাই।

 

ওই ছেলেটার মুখ খারাপ

যে শোনে সে বলে

তোমার গালি শুনেই ওরা

আমায় ভালো বলে।

 

আমার গীবত করে তুমি

কামাও নয়া পাপ

পাপের বোঝা কেউ নেবে না

বউ ছেলে বা বাপ।

 

তোমার পাপ তো তোমার দাদা

নিজের মন ভাই করো সাদা।

কেউ করো না পাপ রে ভাই

অনুতাপের অশ্রু চাই।

১৯/৬/২০১৮; ৮:০০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১২

টুপীর কোন তলী নাই

আমার লেখা দেখলে কমেন্ট

দিতেই হবে বলি নাই

টুপীর শুধু মাথা আছে

টুপীর কোন তলী নাই।

 

জলের নীচের পাথর বলে

আমি কিন্তু গলি নাই

শালা শালীর কান মলে কেউ

বলতে পারে মলি নাই।

 

প্রেমের জ্বালায় জ্বলেও কেউ

বলতে পারে জ্বলি নাই

পটকা মাছও পেট ফুলিয়ে

বলে পায়ে নলি নাই।

 

আসল কথা ভাল লাগা

ভাল যদি না লাগে

এড়িয়ে যান সেসব লেখা

এগিয়ে যান, হাঁ আগে।

 

সময় সুযোগ আপনার হাতে

সময় নষ্ট করবেন না

অন্যে যেদিন মারা যাবে

আপনি সেদিন মরবেন না।

 

আপন মনে শান্তি খোঁজেন

নিজের মতো বানিয়ে

মনে মনে চা কফি খান

দোকান থেকে আনিয়ে।

১৯/৬/২০১৮; ১১:৪৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১৩

তাসের বাড়ি হাঁসের ছাও

শখ করে ভাই গিয়েছিলাম রত্নদ্বীপের হাটে

গিয়ে দেখি ত্রিশ লক্ষ পিঁপড়া সেথা হাঁটে।

 

তিরিশ না সাব এই যে দেখুন হিসাব হাতে নিন

বলেন সরি, ভুল হয়েছে তিরিশ না ভাই তিন।

 

ধুর বোকারাম রাজনীতিতে সত্য বলা পাপ

মিথ্যা হলো রাজনীতিতে সত্য কথার বাপ।

 

হুজুর দেখুন দামাল ছেলে দারুণ খেলছে মাঠে

ইঁদুরগুলো তাস পেটাচ্ছে কলিকাতার খাটে।

 

তাসের বাড়ি হাঁসের ছাও

এই যে দেখো সাপের পাও।

২০/৬/২০১৮; ১:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১৪

ছুটবে ঘোড়া ছুটবে হাতি

আম বাগানে ঘোড়া ছুটে

জাম বাগানে হাতি

ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধে যাবে

জমির শেখের নাতি।

 

হাতির পিঠে চড়বে নাকি

আদম আলী খান

মনের সুখে ধরবে নাকি

জারি সারি গান।

 

মিষ্টি গলার গানের সুর

আনবে ডেকে নতুন ভোর

যুদ্ধমাঠে থাকবে পড়ে

যে ছিল শয়তান।

 

নতুন ভোরে ডাকবে পাখি

বেলালী আজান

উঠরে বাবা পড়বি নামাজ,

ডাকবে রে বাজান।

 

নামাজ পড়ে দেখবে ওড়ে

হেলালী নিশান

ফসল ঘরে আনতে যাবে

নামাজি কিষাণ।

 

ছুটবে ঘোড়া ছুটবে হাতি

উঠবে জেগে আপন জাতি।

২০/৬/২০১৮;  রাত ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১৫

মানারাতের ছেলে

মানারাতে হল্লা করে

ছেলেরা সব বারান্দায়।

 

সে চিৎকার কানে গেলে

অন্য কারো দাঁড়ান দায়।

 

ঘন্টা পড়ার আগে ওদের

সেখান থেকে তাড়ান দায়।

 

সে হল্লাতে বোরহান ছাড়া

বলো তো আর কে হান্দায়?

 

মার খেয়ে যে হাসতে পারে

বলো তারে কে কান্দায়?

 

ওরা সবাই ভালো ছেলে

ছোটদের তা বুঝান দায়।

২০/৬/২০১৮; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৩১৬

ঘটাং ঘটাং ঘট

ঘটাং ঘটাং ঘট

মাথা আমার হট।

কাছে পেলে করতে পারি

যখন তখন কট।

পাগল আমি তাইতো করি

অযথা ফটফট।

 

ঘটাং ঘটাং ঘট

মাথা আমার হট।

নো নেভার নো, নট

কানের কাছে হঠাৎ বাজে

একটা আওয়াজ, খট।

আমার ছেলের ঘাড়টা কারা

ভেঙে করলো, মট।

আঁধার রাতে কারা পালায়

ধুপধাপ ধুপ, পট।

 

 

ঘটাং ঘটাং ঘট

মাথা আমার হট।

রাখতো ব্যাটা তোর ওসব

দামী দামী থট।

না, সহজে খুলবে নারে

আমার মাথার জট।

ডাইনে বায়ে মানুষ নাইরে

খালি দেখি ডট।

 

ঘটাং ঘটাং ঘট

মাথা আমার হট।

পাগলা কুকুর আমায় দেখে

যায় পালিয়ে, চট।

আমিই রাজা, আমিই প্রজা

আমিই বৃক্ষ, বট।

 

নেভার, নেহি, নট

না, মানি না কাউকে আমি

আমার মাথা হট।

ঘটাং ঘটাং ঘট

মাথা আমার হট রে ভাই

মাথা আমার হট।

আমার ছেলের খুনী কোথায়

কর খুনীরে কট।

তারপর কি ঘটবে সেটা

লেখ ডট ডট ডট।

ঘটাং ঘটাং ঘট

মাথা আমার হট।

২৪/৭/২০১৮; ৮:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১৭

জুতা পালিশ

কার কাছে তুই করবি নালিশ

যেটা ধরবি সেটাই বালিশ।

গোপনে হয় জঙ্গি সালিস

সরকারে কয় মালিশ, মালিশ।

 

ক্রসফায়ারটা কমবে এবার

রোড এক্সিডেন্ট বাড়বে

তালিকা ধরে মানুষ এবার

এক্সিডেন্টই মারবে।

 

নেতা এখন চায় না তো আর

বীর বাহাদুর কর্মী

কদর এখন তাদেরই ভাই

যারা চামচাধর্মী।

 

নেতার এখন অনেক বেশী

তেলের নাকি দরকার

তেলের ওপর ভাসছে এখন

রাষ্ট্র এবং সরকার।

 

কার কাছে তুই করবি নালিশ

নেতার দরকার জুতা পালিশ।

২০/৬/২০১৮; দুপুর ১২:৩০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১৮

তারাই করে বিতর্ক

লোকটা একটু ঠোঁটকাটা তো

কেউ বুঝে না প্রেমের তাপ

আমার ওপর রাগ করিস না

ভুল বললে ভাই করিস মাপ।

 

হালাল হারাম বিতর্কে

উস্কানি দিস জড়াতে

আমি ছাড়া নেই কিরে কেউ

বলবে এসব ধরাতে?

 

দেড়টি হাজার বছর গেলো

বিতর্ক তো থামে নাই

তারাই করে বিতর্ক ভাই

যে আসলে কামে নাই।

তোর বয়সও কম হয় নাই

প্রায় ষাটের বুড়ো

বিশ্বজুড়ে খ্যাতিমান তুই

সবাই ডাকে গুরু।

 

সংস্কৃতির কি নীতিমালা

সবাই যখন খুঁজি ভাই

বুদ্ধি আমার কম তো তাই

সে সব আজো বুঝি নাই।

নবী নিজে রোদে জলে

পাহাড়ে মেষ চড়াতেন

নববীতে বসে নবী

কবিতাও পড়াতেন।

 

আমি কবি কাব্য লিখি

নবীর হুকুম তাই

মেষ চড়ানোর সুন্নত কে কে

পালন করো ভাই?

অঙ্গ তোমার জঙ্গে যায় না

রঙ্গ করো খালি

জুব্বা টুপীর কিসের বাহাস

কিসের তালিবালি?

 

রাহমাতুল্লিল আলামীন

শিখিয়েছেন সত্য দ্বীন।

রহমান রহীম হাশরের দিন

পাল্লা নিবেন হাতে

দেখবো সেদিন কি পাস তুই

কি লেখা তোর খাতে।

কে মুমীন ও কে শয়তান

সে দিন পাবি তার প্রমাণ।

২০/৬/২০১৮; ৩:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২১৯

রাজনীতির খেলা

রাজনীতিতে পয়লা সবক মিটিং করতে যাও।

সুযোগ পেলে মিছিল করে লাঠিপেটা খাও।

গরমজল আর টিয়ারগ্যাস এমনি পাবে, ফাও।

আর বেড়ো না অনেক হইছে বাড়ি ফিরে যাও।

 

এরপর করো মারামারি, হাসপাতালে যাও।

প্রতিপক্ষের হাতে এবার নতুন মামলা খাও।

দোসরা সবক পার হলে তো, এবার যাও জেলে

ঠান্ডা মাথায় একা ভাবো নাম করতে চাও খেলে?

 

জামিন পেয়ে বাইরে এসে

না খেললে হও অফ

নইলে চাপার জোরে মারো নির্যাতনের গফ।

নাম ছড়াবে চারিদিকে, তুমিই হবে নেতা

দুঃসাহসী, আপোষহীন খেতাব ফিরায় কে তা?

 

এরপর খেলো পরাণ ভরে লুকোচুরির খেলা

নানা রকম বিপদ আপদ ঝক্কি আসবে মেলা।

অঢেল থাকবে মামলা তোমার তুমি হবে খুনী

এমনি করেই রাজনীতিতে হয়রে সবাই গুণী।

 

এবার তুমি যাওরে জেলে শেখ মুজিবের মত

আগরতলার মিথ্যা মামলা চলবে অবিরত।

বাইরের তীব্র আন্দোলনে শাসক হলে নত

তুমিই তখন রাজা হবে নিয়ম বিধান মত।

 

রাজা যদি না হও তুমি, সাজা পাবে ঢের

অমর শহীদ হবে তুমি ফিরবে নাতো ফের।

২০/৬/২০১৮; ৭:১৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২০

ইচ্ছেগুলো

ইচ্ছেগুলো বলছে হেসে কিচ্ছে কথা বলো

ইচ্ছেগুলো বলছে হেসে বন পথে চলো।

ইচ্ছেগুলো বন পথে ছিঁড়ছে ফুলের কলি

ইচ্ছেগুলো ফুলের সঙ্গে করছে ঢলাঢলি।

 

ইচ্ছেগুলো দিচ্ছে হানা হাসছে পুরাণ দিন

ইচ্ছেগুলো বলছে হেসে জীবন কি রঙিন।

ইচ্ছেগুলো নিচ্ছে টেনে জোসনামাখা রাত

ইচ্ছেগুলো বলছে শোনো হাতে রাখো হাত।

 

ইচ্ছেগুলো ছেলেমেয়ের ঈদের নতুন জামা

ইচ্ছেগুলো প্রজাপতি, ঈদি দিচ্ছে মামা।

ইচ্ছেগুলো সুখ আনন্দ এবং কিছু কান্না

ইচ্ছেগুলো ঈদের দিনে ফিরনি পায়েস রান্না।

 

ইচ্ছেগুলো পড়শিজনের মধুর কোলাকুলি

ইচ্ছেগুলো কাজের মেয়ে ইচ্ছেগুলো ফুলি।

ইচ্ছেগুলো মনের ভেতর স্বপ্নছবি আঁকা

ইচ্ছেগুলো সবাই মিলে একটু ভাল থাকা।

২০/৬/২০১৮; রাত ১০:২০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২১

জানের মায়া বড় মায়া

খুলনাতে যা ঘটেছিল গাজীপুরে ঘটবে না

সিইসিরও আশা তাই জনগণও চটবে না।

 

তার মানে তো খুলনায় কিছু ঘটেছিল

খুলনার মানুষ তাতে কিছু চটেছিল।

আপনি সবই জানতেন

ঠিক না, সেটাও মানতেন

জানের ভয়ে মিথ্যাটাই সত্য বলে রটেছিল?

 

কেমনে বুঝলেন সেই ঘটনা

গাজীপুরে ঘটবে না

একই কায়দায় জনগণতো

একই ভাবে পটবে না!

 

চাইলে দেবেন সেনা

তারা আপনার কেনা

ফেয়ার ভোটই হবে শুধু আপনি দেবেন ঘোষণা

সেই ঘোষণা সত্য হবে তেমন আশা পোষ ণা।

জানের মায়া বড় মায়া আমায় সোনা দোষো না।

২১/৬/২০১৮; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২২

হায় হুজুগে বাঙালি

খেলা নিয়ে খেলি না

বুঝলি কিছু এলিনা?

খেলা খাওয়ার জেলি না

তাইতো পাখা মেলি না।

 

কেউ ব্রাজিল আর কেউ রুশী

ফাটলো মাথা কে দোষী?

গরু নাকি? খাও ভুষি?

আমায় কেনো দাও ঘুষি?

 

দেশে দেখি বিদেশী সব

বাঙালিতো দেশে নাই

দেশটা দখল করে নিছে

কবে জানতে পারি নাই।

 

মরা গরুই শুধু জানি

শকুন ছিঁড়ে খায়রে

নিশি কন্যার ঘরেই শুধু

হাজার পুরুষ যায় রে।

 

তোমার টাকার পতাকাতে

করছে আকাশ ঝলমল

দুঃখে শুধু আমার চোখে

করছে পানি টলমল।

 

হায় হুজুগে বাঙালি

পরের দেশের পতাকাতে

দেশটা কেনো রাঙালি?

২১/৬/২০১৮; ২:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৩

কবিরাজের বড়ি না

কবির কাম তো কাব্য লেখা

রাজনীতি তো করি না।

ফুটবলতো খেলার জিনিস

কবিরাজের বড়ি না।

 

যখন তখন শ্লোগান দিয়ে

রাজপথে তো লড়ি না

ভিন্নমতের কাউকে পেলেই

গলা চেপে ধরি না।

 

শব্দের সাথে শব্দ মিলাই

ছন্দ বানাই রোজ

তোমার মনের মন পাখিরে

দেইতো মনের ভোজ।

 

চোরকে বলি চুরি করা

ভাল নয় তুই জানিস?

গুন্ডা এলে তাকে বলি

চাপাতি ক্যান আনিস?

 

রাজনীতিবিদ ভুল করলে

তারে কিছু কমু না

তয় কি তারে ফিক্কা মারমু

পদ্মা মেঘনা যমুনা?

 

মায়ের পোলা মরলে মায়ের

মন তো শুধু কান্দে

তবু রাজা ধরে ধরে

মায়ের পোলা বান্ধে।

 

যে ছেলেরা শেয়ার মার্কেট

যায় ছুটে রোজ ভোরে

তাদের টাকা মারে নাতো

ছোটখাটো চোরে।

ছোট চোরকে কইতে পারুম

বড় চোরকে কমু না

হোক সে বড় রাজনীতিবিদ

কিছুতেই তা সমু না।

 

এইডারে কি রাজনীতি কয়

কবি যুগের মুয়াজ্জিন

ওঠো ওঠো বীর জনতা

সামনে তোমার শুভ দিন।

২১/৬/২০১৮; ৯:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৪

তাল গাছে ডাব নাই

রাজনীতি দেশটারে কই নেয়?

গোল্লায়

কাজ নাই শুধু দোয়া করে কে?

মোল্লায়।

 

তাতে কোন লাভ নাই

তাল গাছে ডাব নাই।

 

জনগণ নিজ নিজ পিঠ সোজা

করো রে

মুমীনেরা আল্লাহর পথ শুধু

ধরো রে।

 

নিজ কাজে হাত দাও

আর সব বাদ দাও।

 

যার যার মত তার, জোরাজুরি

নাই রে

নানা রঙ ফুল হলে কত সুখ

পাইরে।

মত থাকা ভালো তবে মতভেদ

ভালো না

আলো থাকা ভালো তবে নিশিরঙ

কালো না।

 

এক মাটি এক দেশ এক সাথে

চলো রে

পাথর পাষাণ নয়, মোম হয়ে

গলো রে।

২২/৬/২০১৮; রাত ১২:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৫

মিষ্টি হাতের কিল খাবি

আপনি এতো মোটা ক্যান

কনতো আপনি কী খান

পান্তাভাতে আপনি কি

সকাল বিকাল ঘি খান?

 

বেলুন যেমন বাতাস দিলে

এ্কটু একটু ফুলে রে

আমি শুধু হাওয়াই খাই

প্রতি দমে ভুলে রে।

 

খাওয়ার কথা বললি যখন

শোনরে তবে ভাস্তে

তোর নানীরে জিজ্ঞেস কর

কাছে গিয়ে আস্তে।

 

তোমার নাকি মাথা মোটা

পা দুটো ক্যান লিকলিকে

নানী বলে আয়রে কাছে

হাসে মধুর ফিকফিকে।

 

যেই গিয়েছি কাছে নানীর

দিল পিঠে দুটো কিল

বললো মাথা মোটা আমার

কিন্তু নরম আমার দীল।

 

মিষ্টি হাতের কিল খাবি

বেশী করে দীল পাবি।

খাবি চোখের শাসানি

খাইতো যেমন ভাষানী।

 

সবই খাইস নাতিরে তুই

শুধু গুলি খাইস না

চিমটি খাইস কুটুস কুটুস

মারের কাছে যাইস না।

 

নাতি বলে, নানী

হায়াত থাকতে কেউ মরে না

আমরা সবাই জানি।

২২/৬/২০১৮; ১১:৩৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৬

ভাতের সাথে পোকা খা

খেলারাম খেলে যা

খেলতে খেলতে জেলে যা

বুদ্ধিশুদ্ধি ফেলে যা

একটুখানি হেলে যা।

 

জেলে বসে ধোকা খা

ভাতের সাথে পোকা খা

খুকি এবং খোকা খা

একটু আদর টোকা খা।

 

ভাগ্য হাসে আকাশে

মরণ হাসে বাতাসে

দেখে মাসে খাতা সে

বলে এরপর মাতা সে।

 

নাকদে মশা মাথায় যায়

রাজা জুতার বাড়ি খায়।

এরপর রাজা মারা যায়

দুষ্ট রাজা সাজা পায়।

২৩/৬/২০১৮; ২:৩৩ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৭

সঙ্গে থাকতে চাই

ছড়া লিখি ঘড়া ঘড়া

ছড়া কেন হয় না

কেমন করে ছড়া লেখে

সুন্দরী ও ময়না।

 

তাদের লেখা কদর করে

ছাপায় কত পেপারে

আমি ভাবি সম্পাদকরা

আমার ওপর ক্ষ্যাপা রে।

 

ক্ষ্যাপা ট্যাপা কিছু না ভাই

ছড়াই আমার হয় না

তাইতো ছড়া ছাপার জন্য

সম্পাদকরা লয় না।

 

মফস্বলী লেখক বলে

মফস্বলী পেপারে

আদর করে ছাপে দেখি

সম্পাদকরা যে পারে।

 

কবে আমি লেখক হবো

ভাবনা মোটে নাই

আমি আমার জনগণের

সঙ্গে থাকতে চাই।

২৩/৬/২০১৮; ২:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৮

হায় বাঙালি বুঝলি না

সাপকে যদি দড়ি ভাবেন

সাপের কোন দোষ নাই

সাপ একটু ফোঁস করে

দড়ির কোন ফোঁস নাই।

 

আপনি বড় ভাল মানুষ

আপনার কোন রোষ নাই

সাপের লেজে পাড়া দিয়ে

দেখেন কোন খোশ নাই।

 

বিষে আপনার হুশ নাই

আপনার হাতে ঘুষ নাই।

আজরাইল কয় ভাল ভাল

কবে আমি ঘুষ খাই?

 

তবে একটু জুস খান?

নইলে লেবেনচুস খান?

ফুস মন্তর ফুস খান?

রসে ভরা কুশ খান?

 

একটুখানি করলেন ভুল

কে দেবে কন এর মাশুল?

যার ভুল যদি তারে খায়

সঙ্গে বউয়ের জীবন যায়।

 

এতীম ছেলে কান্দে

পুলিশ তারে বান্ধে।

বাপের মাশুল ছেলে দেয়

স্বাধীনতা ফেলে দেয়।

 

হায় বাঙালি বুঝলি না

কি কই মানে খুঁজলি না।

২৩/৬/২০১৮; ৫:২৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২২৯

ইস্টিশানে মিষ্টি খান

ইস্টিশানে মিষ্টি খান

বিষ্টি ছাড়লে বাড়ি যান।

ইস্টিমারে আইছে খালা

লগে আনছে তিনশ তালা।

 

খালার জন্য নিয়া যান

শতেক খানিক মিষ্টি পান।

দিষ্টি রাইখেন চৌদিকে

সালাম দিয়েন বৌদিকে।

 

বাজার করার লিষ্টি কই

কেনা বাকি মিষ্টি দই।

দই নিয়া যান ফিস্টি দেন

এইতো বয়স ইয়ং ম্যান।

 

যত পারেন ততো খান

খেয়েদেয়ে যুদ্ধে যান।

২৪/৬/২০১৮; ১:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩০

হেঁটে তুমি হও ছড়া

যে ছড়াটা লিখতে চাই সে ছড়াটা

কই গেলো, কই গেলো

লিখতে বসলেই মন বলে হায়

এই এলো ভাই এই এলো।

 

কলমটা তো এতোক্ষণ

কানেই ছিল গোঁজা

তাকে এনে খাতার ওপর

বসিয়ে দিলাম সোজা।

 

বললাম, সোনা হাঁটো হাঁটো

হেঁটে তুমি হও ছড়া

যে ছড়াটার চোখ থাকবে

মাথা গোবর ভরা।

 

যেই ছড়াটা লিখবো ভাবি

সেই ছড়াটা আসে না

কদম গাছের ডালে বসে

সেই ছড়াটা হাসে না।

 

সেই ছড়াটা মনের ভেতর

খুঁজতে গেলাম যেই

দেখি ভোরের রোদ উঠেছে

রাতের আঁধার নেই।

২৪/৬/২০১৮; ১১:৫৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩১

তাইরে নাইরে তাই

তাইরে নাইরে তাই

সুখের সীমা নাই।

ক্রসফায়ারে দেয়নি আমায়

জেলে নিচ্ছে ভাই।

খুশিতে গান গাই।

 

তাইরে নাইরে তাই

সুখের সীমা নাই।

আগে থাকতাম টিনের ঘরে

ইটের দালান ভাই

হইছে আমার ঠাঁই।

খুশিতে গান গাই।

 

তাইরে নাইরে তাই

সুখের সীমা নাই।

আগে খেতাম কিনে রে ভাই

এখন মাগনা পাই

খুশিতে গান গাই।

মিষ্টি পেলে খাই।

 

তাইরে নাইরে নাইরে নাই

চল সকলে জেলে যাই।

থাকা খাওয়ার অভাব নাই

নিরাপত্তার অভাব নাই।

 

দলে দলে চলরে সবে

জেলখানাতেই যাই

পিসি আছে রাখলে টাকা

কাকের কোন অভাব নাই।

অলস টাকা পড়ে থাকবে

টাকার এমন স্বভাব নাই।

২৪/৬/২০১৮; ১:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩২

বীরের সাহস

মনটাকে বড় করো আকাশের মতো

ক্ষমা করে যাও যতো পারো অবিরত।

শুধু তাকে বলে দিও আল্লাহ দেখেন

তার ফেরেশতারা সব হিসাব লেখেন।

 

পরকালে ঠেকে যাও করো না সে কাজ

হাশরের মাঠে তবে পাবে তুমি লাজ।

 

কাজে মন দাও নিজে বাতাসের মতো

থেমোনা থেমোনা, কাজ করো অবিরত।

কাজে যদি লেগে থাকো ঝর্ণার মতো

তোমারই কাছে ধরা হবে অবনত।

 

পাহাড়ের মতো হও অটল অনড়

মানুষ মরলেও বাঁচে বীরের কবর।

তিতুমীর হয়ে যায় বীরের সাহস

কর্মটাই থাকে শুধু, থাকে নাম যশ।

২৫/৬/২০১৮; ৩:৪০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩৩

কারো পৌষ মাস

মস্কোতে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশে ছাতা ধরে

দিল্লীতে ঝড় হলে ঢাকায় নাকি পাতা নড়ে।

 

ইস্তাম্বুলে তুফান হয়

বাংলাদেশে শস্য ক্ষয়

ভায়ে ভায়ে মিলেমিশে কী চমৎকার ঝগড়া করে।

 

ভাই ভাইয়ের গোশত খায়

মিলেমিশে নরক যায়

শিয়ালপন্ডিত সিংহ সেজে বুদ্ধিজীবীর ভান করে।

 

বুদ্ধিও নাই মুরোদও নাই

সাজতে চায় রে ঘর জামাই

আপন যারা দেখলেই তাদের

ধরে ধরে পর করে।

 

মোল্লাবাড়ি লাগছে আগুন

এইতো বন্ধু মজার ফাগুণ

আলু নিয়ায় আরাম করে

দুজন মিলে খাই পুড়ে।

 

কারো জন্য সর্বনাশ

কারো জন্য পৌষ মাস

এ সময়ে খেলতে নেমে

 তুই কেন রে যাস দূরে?

২৫/৬/২০১৮; রাত ৮:০০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩৪

অণু করে বিশ্ব জয়

জঘন্য!

একটা হাতি বললো ইঁদুর

তুই তো খুবই নগন্য।

 

ইঁদুর বলে হাতি ভায়া

তোমার আমার স্রষ্টা এক

তিনিই শুধু অনন্য।

 

এতবড় দেহ দেখে

গর্ব করার কি আছে?

আমার যেটুক দরকার আল্লাহ

সেটুক আমায় দিয়াছে।

ছোট আমি তাই বলে কও

তুচ্ছ বলার কী আছে?

 

নগন্য তাই তুচ্ছ বলি

যাই রে এবার বাদামতলী।

 

যেতে নাই ভাই কও আসি

আমরা সবাই বনবাসী।

শোননি সে কিচ্ছা?

সবই প্রভুর ইচ্ছা।

 

একদল হাতি শিকারী

করলো হাতি শিকারই।

হাতি হলো বন্দী

ইঁদুর করলো ফন্দি।

 

রাতে কাটলো হাতির জাল

হাতির গেলো দুর্দিন কাল।

তুচ্ছ তো নয় মশার হুল

কিম্বা গরুর লেজের চুল।

ছোট মোটেই তুচ্ছ নয়

সবাই করো খোদার ভয়।

অণুই করে বিশ্ব জয়।

২৫/৬/২০১৮; রাত ১১:০০ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৩৩৫

স্বপ্ন ফেরিঅলা

মামা যখন আসে তখন কত্তোকিছু আনে

সেসব দেখলে মন ভরে যায় আনন্দ হয় প্রাণে।

খেলনা গাড়ি, চকলেটবাড়ি

মিষ্টি এবং দইয়ের হাঁড়ি

খুশির একটা ঢেউ বয়ে যায় বাড়ির সকল খানে।

 

বন্ধুরা হয় খেলার সাথী, মনে পড়ে তাদের

বলতে গেলে সারাটাদিন সঙ্গে কাটতো যাদের।

প্রাণের বন্ধু ছিল তারা

বিপদের ভাগ নিত যারা

তাদের চেয়ে আপন মনে হয়তো বলো কাদের?

 

এই জীবনে হয়নি দেখা, দেয়নি মিষ্টি, দই

তবু কেন সারাজীবন তাদের আপন রই?

তাদের কেন আপন মনে হয়

বলতে পারো তাদের পরিচয়

তারা হলো কবি, শিল্পী, তারা লেখে বই।

 

কারণ তারা স্বপ্ন দেখায়, বাঁচতে শেখায় রোজ

পেটের খোরাক দেয় না তবে মিটায় মনের ভোজ।

সুখে দুঃখে সঙ্গী হয়

তাড়ায় মনের সকল ভয়

মনের ভেতর অসুখ হলে দেয় অষুধের ডোজ।

 

কবি হলো স্বপ্নরাজ, স্বপন ফেরিঅলা

মুখের ভেতর দেয় ঢুকিয়ে ভালবাসার নলা।

সবার মুখে দেয় ছড়িয়ে আলতা রঙের হাসি

কবি তোমায় তাইতো আমরা এত্তো ভালবাসি।

২৬/৬/২০১৮; সকাল ৫ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩৬

কবি বিয়ে করো না

শোন মেয়ে, বেঁচে থাকতে কবি বিয়ে করো না

বোকার মতো বুদ্ধি খেয়ে কবির হাতে পড়োনা।

কবির জ্বালা বড়ো জ্বালা

জীবন করে কালা কালা

মনে রেখো জীবন বড়ো প্রেম কখনো বড়ো না।

 

বাজার করতে গিয়ে কবি দুদিন ফিরে আসে না

তুমি ভাসো অথৈ চিন্তায়, কবি কিন্তু ভাসে না।

কি করে তার খেয়াল নাই

কবির ঘরে দেয়াল নাই

কবির কথায় সবাই হাসে কবি কিন্তু হাসে না।

 

পুকুর বিলে শাপলা হাসে নদীতে তো হাসে না

কুমিল্লাতে নার্গিস কাঁদে কবি ফিরে আসে না

রবি পড়ে ভাবির প্রেমে

যায়না বাঁধা কোন ফ্রেমে

প্রেমের জলে ডুবলে কবি ডুবেই থাকে ভাসে না।

 

শোন মেয়ে, বেঁচে থাকতে কবি বিয়ে করো না

প্রেমের টানে পালিয়ে এসে কবির হাত ধরো না।

২৬/৬/২০১৮; ১০টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩৭

কবি বড়োই ভাগ্যবান

কবি বড়োই ভাগ্যবান

আমরা থাকি খাটে শুয়ে

কবি যায়রে আমাজান।

সঙ্গে পানের বাটা খান।

 

ফজর নামাজ পড়েই কবি

দুইটা গেলাস মাঠা খান

ঘন্টাখানেক হাঁটা যান

হাটে বসে চা টা খান।

 

যখন ছিলেন আমাজান

সঙ্গে ছিল মামাজান।

ঘুমের ঘোরে বলতেন নাকি

খেলা এখন তামা, যান।

 

আমাজানে হামা দিয়ে

পান যে ঘোড়ার আন্ডা

তাতই কবি ঠান্ডা

সেই আন্ডা লুটে নেয়

রাজাপুরের পান্ডা।

 

কবি বড় ভাগ্যবান

ভালবাসতেন নবীজান।

বলতেন, নেন না বস্ত্রখান

চালান কাব্য অস্ত্র খান।

 

যুদ্ধ লাগলে যেমনে চালায়

মুজাহিদে অস্ত্র খান

আপনার লেখা কবিতা

মনে করুন তার সমান।

 

আপনি একজন মুজাহিদ

গনীমতটা নিয়া যান।

বোখারীতে লেখা আছে

অসংখ্যবার এই বয়ান।

২৬/৬/২০১৮; ৩:৩৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩৮

কত ফেয়ার নির্বাচন

এমনি তো আর হারি না

খেলতে আমি পারি না।

তাইতো আমি হেরে যাই

বারে বারে ঠোকর খাই।

 

দশ হুন্ডা বিশ গুন্ডা

তত্ত্ব এখন দরকার নাই

আগের রাতেই কাম সারে

সে ছাড়া তো সরকার নাই।

 

কেন্দ্রে যাবি চা টা খাবি

সঙ্গে পাবি বিড়ি

না পোষালের্্যাবের হাতে

ডলা খাবি ফ্রি।

 

কত ফেয়ার নির্বাচন

মরে না আর মায়ের ধন।

২৬/৬/২০১৮; ৬:৩০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৩৯

পাগলা ঘোড়া ডিজিটাল

ডান বাম ডান

আরামবাগে যান

আরামবাগের ব্যারামে

সুখে থাকবেন গেরামে।

 

পুকুরে নাই মীন

নাই সে সুখের দিন।

পাগলা ঘোড়া ডিজিটাল

করছে খোড়া ফিজিক্যাল।

 

উন্নয়নের জোয়ারে

শান্তি গেছে খোয়াড়ে।

হাটবাজারে গভীর রাত

পাগলা টিভি করছে মাত।

 

নাই সে আগের প্রেমিক মন

বাড়ছে গাঁয়েও খুন, ধর্ষণ।

২৭/৬/২০১৮; ২:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪০

রেডি লিডার

কে চায় তোমার সম্মেলন

সবই পারে প্রশাসন

সবই দেখছি জনগণ

কিসের দরকার ইলেকশন।

 

পারলে করো আন্দোলন

বাদ দাও এসব আস্ফালন

নেত্রী থাকবে জেলে

লিডার হবে ছেলে।

 

লিডার থাকবে বিদেশে

আমরা নেতা স্বদেশে

লিডার কয়টা টাকা লন

জরুরী খুব সম্মেলন।

 

ফোনে কত ডাক পারে

যাই না তবু খাল পাড়ে।

ডিনারে যদি না যাই গো

কেমনে ফাঁসি ঠেকাই গো।

 

নেটে কবেন, মরতে যা

মরে নাতো খয়ের খাঁ।

গুলি খাবো আপনে কই

রেডি লিডার সমস্তই।

২৭/৬/২০১৮; ১২:০০ টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪১

মরার আগে মইরো না

গোস্বা তুমি কইরো না

আজরাইলের মোটা পাও

শুধু শুধু ধইরো না।

 

মরণ যখন লেখা আছে

মরণ আইবো তোমার কাছে

মরার জন্য কষ্ট করে

অযথা আর লইড়ো না।

 

খেলায় অপর পক্ষ লাগে

তাইতো মাঠে তোমায় লাগে

খেলতে খেলতে সময় কাটাও

মরার আগে মইরো না।

 

ইচ্ছে হলেই মারতে পারি

সাধের জীবন কাড়তে পারি

ভোটের খেলা ছাইড়ো না

হারার আগে হাইরো না।

 

গোস্বা তুমি কইরো না

মরার আগে মইরো না।

২৭/৬/২০১৮; ৭টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪২

দিন বদলের দিন

ডিজিটালের ইজি চাল

মার লাগাবি ফিজিক্যাল।

আর শোনাবি রাতের গান

ঘুমাও এবার সোনার চান।

 

দিন বদলের দিন

রাতের বেলা চাইনা চাঁদ

সূর্য এনে দিন।

প্রতি ভোরে পাই যেন গো

জোসনামাখা দিন।

 

দিন বদলের দিন

লিপিস্টিকে ঠোঁট রাঙাতেন

এবার রক্ত নিন।

কবে দিবেন ফেরত বলেন

নিলেন যত ঋণ।

 

শীতের দিনে নানীর দেশে

জাম কুড়াতে সুখ

তাজা রক্তের মধুর রসে

রঙিন করি মুখ।

২৮/৬/২০১৮; ৩:২৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৩

পাশ করেছি কেলাস ফোর

নিজের মাথায় আউলা চুল

ধরছে পরের হাজার ভুল।

কোন পক্ষ বা কম যায়

ইচ্ছে করে গাল খায়।

 

হায়রে আমার বুদ্ধিমান

কি বুঝে কও আনেস্টাইন?

আমার বুদ্ধির এতো জোর

পাশ করেছি কেলাস ফোর।

 

মোমিন মরে ময়দানে

ধরছে আমায় শয়তানে।

আমি নিজে মন্দ যে

তাই করছি দ্বন্দ্ব যে।

 

ধরছি পরের হাজার ভুল

কার বুদ্ধি আমার তুল?

তুমি আমার দ্বীনের ভাই

এসো মিলে পাপ কামাই।

 

তোমার চাপা, আমার নাই

কিলের বদল পাটকেল খাই।

এটাই ধ্বংসের রাস্তা ভাই

পরের মন্দ বলি তাই।

২৮/৬/২০১৮; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৪

শপিংমলে বিড়ি নাই

সিরাজদৌলা নবাব ভালো

বাঙালিরও স্বভাব ভালো।

কারো কারো অভাব ভালো

কারো আবার জবাব ভালো।

 

তুমি বাসে, হাত বাইরে ক্যান

মেয়ে মানুষ যায় মাইরে ক্যান

কইলেই কেন নেংটা হয়

এমনি কি আর ধর্ষণ হয়?

 

জেলে বসে মাগনা খাও

ফাঁসি হয়নি আর কি চাও?

কথার কোন ছিরি নাই

শপিংমলে বিড়ি নাই।

 

সিরাজদৌলা নবাব ভালো

বাঙালিরও স্বভাব ভালো।

কয় না কেউ তো আগুন জ্বালো

নাগাল পায় না নিজের গালও।।

২৮/৬/২০১৮; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৫

মিলনের চুক্তি

ভাগ্যিস তুই ছিলি

আয় দুজনে মিলি

ঘরে দিয়ে খিলি

রঙিন পানি গিলি।

 

রঙিন পানি খাই না

কারো ঘরে যাই না

উচিত বিচার পাই না

বার বার ধোকা খাই না।

 

বলিস কি তুই, ধোকা না

তুইতো আর বোকা না

কিম্বা কচি খোকা না

কিম্বা গাছের পোকা না।

 

মিলবো যে ভাই শর্ত কি

আমায় দিবা গর্ত কি

তুমি তো খাও হরতকি

সঙ্গে রাখো নর্তকী।

 

আরে না না ভাবিস না

চুক্তি মানে রাবিশ না।

তোর বাগানও তোর

আমারটাও তোর।

 

তুই বাগানে পানি দিবি

ইচ্ছে হলে গাছও নিবি

আমি নিব লাউ শসা

সাক্ষী রইল এই মশা।

 

আমরা দুজন মিলে গেলাম

যেদিন লাউয়ের পাতা নিলাম

একটু খাবো লাউয়ের শাক

তখনি তুই চাইলি ভাগ।

এইটা কেমন চুক্তি ভাই

এই মিলনের যুক্তি নাই।

২৮/৬/২০১৮; ৮:৪৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৬

এই দেশে

এই দেশে সেইদিন ফের কবে হবে

সকলেই নিজ নিজ ঘরে সুখে রবে।

দল রবে শুধু ভাই দলাদলি হবে না

রাত এলে গুম হবে এই ভয় রবে না।

 

দলে দলে লোকজন বলাবলি করে

এসো ভাই মিলে যাই গলাগলি ধরে।

ঘরে ঘরে স্নেহ প্রেম ভালবাসা রবে

মারামারি বাদ দিয়ে সুখি সবে হবে।

 

স্বামী হাতে বউ খুন,  বউ হাতে স্বামী

থেমে যাবে এইসব যতো পাগলামী।

ছেলেমেয়ে মন দিয়ে লেখাপড়া করে

তাই দেখে স্বজনেরও মনপ্রাণ ভরে।

 

এই দেশে হাসিখুশি সুখ অফুরান

প্রভু তুমি দয়া করে করো করো দান।

২৯ /৬/২০১৮; রাত ১২:২৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৭

বুকটা ভরা বিষে

কেউ না বুঝুক আমি বুঝি এতীমের কী কষ্ট

বাপ না থাকলে গরীবের তো জীবনটাই নষ্ট।

একটামাত্র পোলা আমার মানুষ করা দায়

কাড়ি কাড়ি টাকা পোলা পড়ার খরচ চায়।

 

বিধবা আমি স্বামী নাই কোথায় পাবো টাকা

টাকার জন্য চলে নারে পোলার পড়ার চাকা।

খোদা দিছে মান সম্মান, হাত পাততে পারি না

এতীম বিধবার মরা ভাল, তবু নিজকে মারি না।

 

আমি যদি মরে যাই কও পোলা খাইবো কী

ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকুক নাইবা পেলো ঘি।

কোথায় যায় অরফানেজের এতো এতো টাকা

আমি এতীম কেউ দেখে না শোনেন মোড়ল কাকা।

 

কয়ডা টাকা দিত যদি পোলাডারে পড়াইতাম

সুন্দর একটা মেয়ে দেখে পোলা বিয়া করাইতাম।

দেশের কোন মাইয়া এতীম পোলা বিয়া করে না

তাইতো কাকা আনতে হলো মেয়ে একটা ফরেনা।

 

এবার বুঝেন আমার কষ্ট, বুকটা ভরা বিষে

জীবনে তো কম কষ্ট দেয়নি ধানের শীষে।

২৯/৬/২০১৮; ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৮

রাহেলা গো রাহেলা

রাহেলা গো রাহেলা

টান টান করে বসে কি লাভ

এবার একটু গা হেলা।

 

পায়ে ধরবে ঝিমঝিমানি

পা টা একটু টান কর

মানুষ মরে গুলি খেয়ে

তুইও মরার ভান কর।

 

এতীম পেলে হাতের কাছে

তারে কিছু দান কর

গীজার আবার কী জিনিস

গীজার ছাড়াই চান কর।

 

রাহেলা গো রাহেলা

অত্যাচারী রাজার সামনে

নিজের মাথা না হেলা।

২৯/৬/২০১৮; ৩:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৪৯

দুইটা টাকা দিয়া যান

টাকার জন্য হয় না বিয়া কষ্টে আছে সোনার চান

আমার দয়াল ভাই বোনেরা দুইটা টাকা দিয়া যান।

দুইটা টাকা দিয়া যান ভাই দুইটা টাকা দিয়া যান।

গুন্ডা পোলা ভালো হোক আপনারা ভাই যদি চান

আমার দয়াল ভাই বোনেরা দুইটা টাকা দিয়া যান।

 

মেয়ের বাপে যৌতুক চায় না বিয়ার জন্য টাকা চায়

টাকার জন্য পোলা নষ্ট ঠেকের ব্যবসা করতে যায়।

আমার পোলা শান্ত সুবোধ বয়স এখন তারে খায়

একশ একটা ধর্ষণ করছে মানুষ এসব ক্যান রটায়।

 

আপনার মেয়ের হয় না বিয়া দুইটা টাকা দিয়া যান

মেয়েরে কন বাড়িত বইয়া খাইতে রসের খিলি পান।

দুইটা টাকা দিয়া যান ভাই দুইটা টাকা দিয়া যান।

কথা দিলাম কেড়ে নেবো ছেলের হাতের অস্ত্র খান।

দুইটা টাকা দিয়া যান ভাই দুইটা টাকা দিয়া যান।

 

পোলা আমার ফুর্তি করে মেয়ে যদি রাজি হয়

মানুষ এমন হারামজাদা এই ফুর্তিরে ধর্ষণ কয়।

মেয়েরে ক্যান কোপাইছে? মেয়ে রাজি হয় না ক্যান?

মুখের ওপর না করে, মেয়ের এতো দেমাগ ক্যান?

 

আমার ছেলে ক্ষ্যাপলে তার হুশ থাকে না মোটেও

তিনশ একটা বোমা যেন নিজেই তেমন ফোটে ও।

নেশা করতে টাকা লাগে, আরো নানান দরকারে

টেন্ডারে সে ক' টাকা পায়,' টাকা দেয় সরকারে?

 

ছিনতাই করে সোনার ছেলে, যখন রাতের আন্ধারে

এ তল্লাটে তারে থামায় নাই তো এমন বান্দা রে।

তবু ছেলের হয় না বিয়া, দুইটা টাকা দিয়া যান

বিবাহতে রইলো দাওয়াত, দুই টাকাতে বিয়া খান।

 

আমার দয়াল ভাই বোনেরা দুইটা টাকা দিয়া যান।

দুইটা টাকা দিয়া যান ভাই দুই টাকাতে বিয়া খান।

২৯/৬/২০১৮; ৬:৫০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫০

মিনসে

মিনসে

মুখে করো ফটর ফটর

কাজের বেলা লটর পটর

যতোই করো কটর মটর

আসবে না আর দিন সে।

বুঝলা কিছু মিনসে?

 

মিনসে

বহুদিন তো জ্বালাইছো

তিড়িং বিড়িং ফালাইছো

নতুন পাখি গালাইছো

রাম রাজত্ব চালাইছো

চলে গেছে দিন সে

বুঝলা কিছু মিনসে?

 

মিনসে

ভুলে গেলা দিন সে?

পেটের ওপর খাঁড়াইছো

গলার মাঝে পাড়াইছো

হাতের আঙুল তাড়াইছো

শোধবা কখন ঋণ সে

কথা কও না মিনসে।

 

ও পরাণের মিনসে

কখন শোধবা ঋণ সে

উল্টা করে টানাইছো

শকের চেয়ার বানাইছো

নয়া অস্ত্র আনাইছো

ঋণটা শোধার দিন সে

এসে গেছে মিনসে।

 

মিনসে

এতোদিন যা দিয়েছো

সবই তুমি পাওনা

পাওনা তোমার আদায় হোক

তাও কি তুমি চাও না?

তবে এসো দুহাত পেতে

পাওনাটুকু নাও না।

 

ঋণী আমি থাকি না

নগদ কিনি বাকী না।

৩০/৬/২০১৮; ১:০৩মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫১

জীবন কালা

হিমালয়ে বরফ গলে

সে কেনরে গলে না

যার,

কথা শুনলে গা জ্বলে

সে কেনরে জ্বলে না।

 

কত মানুষ গর্তে পড়ে

সে কেনরে পড়ে না

বজ্রপাতে মানুষ মরে

সে কেনরে মরে না।

 

প্রতিদিনই এক্সিডেন্ট হয়

তার তো কিছু হয় না

মানুষ পরে গলায় ফাঁসি

সে তো ফাঁসি লয় না।

 

তার জ্বালাতে জীবন কালা

এতো জ্বালা সয় না

বল না সখি কি যে করি

বল না টিয়া ময়না।

৩০/৬/২০১৮; ৫:২০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫২

পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে

তাক ধিনা ধিন

আমরা স্বাধীন।

তুমিও স্বাধীন

আমিও স্বাধীন।

 

স্বাধীন চাচা চাচীও

স্বাধীন নাচানাচিও

স্বাধীন মামা মামীও

স্বাধীন বহুগামীও।

 

স্বাধীন বলেই হয় না দোষ

ধোড়া সাপে কয় না ফোঁস।

স্বাধীনভাবে মেরে যাও

যখন তখন তেড়ে যাও।

 

তুমি মারলে হয় না দোষ

আমি মারলে অসন্তোষ।

এইটা উচিত বিচার না

মারের বদল মার পানা।

 

ভাত ছিটাইলে কাক আসে

কান টানলে নাক আসে।

কোটার লাঠি গোটা দেশে

আসছে তেড়ে বীরের বেশে।

 

তোমরা কয়টা ময়লা কাক

আসছে ওরে ঈগল ঝাঁক।

স্বাধীনভাবে ঠোকরাবে।

এবার তুমি কোকঁড়াবে।

 

পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে

মারবে স্বাধীন খেয়ালে।

৩০/৬/২০১৮; ১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৩

স্বৈরাচারের ফাঁসি চাই

অনেক হলো বাড়াবাড়ি

ইচ্ছে মত মারামারি

আর দেবো না ছাড়

দেখ ভাঙে ঘাড় কার।

 

রাজপথ নেবো দখলে

আমরা ছাত্র সকলে।

বাড়লে লাউয়ের ডগা রে

শাক করে খায় মগা রে।

 

তোরতো বাড়ার সীমা নাই

কোথাও একটু কীমা নাই

লগি বৈঠার দিন শেষ

বীর জনতার বাংলাদেশ।

 

রাজপথ আর ছাড়বো না

বীর জনতা হারবো না।

একাত্তুরে হারি নাই

স্বৈরাচারের ফাঁসি চাই।

৩০/৬/২০১৮; ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৪

মনে কি পড়ে

মনে কি পড়ে,

মনে কি পড়ে,   শৈশবে

বৃষ্টি জলে

নাইতে যেতাম    হৈ রবে।

মনে কি পড়ে,

মনে কি পড়ে,   শৈশবে

ভাবতাম বসে

আমিই রাজা  এই ভবে।

 

মনে কি পড়ে,

মনে কি পড়ে,   শৈশবে

স্কুলে যেতাম

হাতে নিতাম    বই সবে।

 

মনে কি পড়ে,

মনে কি পড়ে,   শৈশবে

হাঁস ডাকতাম

আয় তই তই    তই সবে।

 

তারপর যখন বয়স হলো

চলে গেলাম     কৈশোরে

যাত্রা হবে     যাত্রা হবে

শুনে বললাম   কই শো রে।

 

মাঠে গেলাম  তুই বললি

অই চেয়ারে বইসো রে।

বললি চুপ  কর তুই

শুরু হইছে    অই শো রে।

 

তারপর এলো  মনের মাঝে

যুবক যুবক ভাব

তোর সাথেই তো গভীর রাতে

খেয়েছিলাম ডাব।

 

না বলে কাকুর ডাব খেলে কি

সত্যি ওরে পাপ হয়

তবে এমন কথা তোর

বলতো কেনো বাপ কয়?

এখন বুঝি সেই বয়সে

করছি কত পাপ

আল্লাহ তুমি দয়ার সাগর

করে দিও মাপ।

৩০/৬/২০১৮; ৮:২০মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৫

পড়ি কেলাস ফোরে

ভোরে

আমি তখন পড়ি কেলাস ফোরে

জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি

তিন তিনটা চোরে

বাড়ির পাশে ঘোরে।

 

তাকিয়ে দেখি আকাশে মেঘ ওড়ে

দেখতে দেখতে আসলো তুফান

মেঘের সাথে জোরে।

গাছের নিচে ঠাঁই নিল সেই

তিন তিনটা চোরে।

 

বললাম দাদা ওরে

ওরা কারা? কেন ওরা

বাড়ির পাশে ঘোরে?

 

এমন সময় নীল আকাশে

হাজার পাথর তোড়ে

ছুটলো ভীষণ জোরে

তুই দাঁড়িয়েছিলি দ্বোরে

ভয়ে আমি হঠাৎ করে

জড়িয়ে ধরি তোরে।

 

ওরাও ভয় পায়।

এদিক ওদিক চায়।

হঠাৎ ওরা দৌড়ে এলো

বাড়ির দিকে ওরে

ভয় কাঁপানো ঘোরে।

 

চোরের হাতে কাঁচি

চেচাঁয় তখন চাচী।

গাছের নিচে তিনটে কাঁঠাল

কে কেটেছে ওরে।

ফাঁসলো তখন চোরে।

 

এক অপরূপ ভোরে

পড়লো ধরা চোরে

তখন আমি পড়ি কেলাস ফোরে।

১/৭/২০১৮; রাত ১২:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৬

ইতল বিতল চিতল মাছ

ইতল বিতল চিতল মাছ

পানির তলে হিজল গাছ।

গাছে বসা ভূতের ছাও

অ মিয়ারা দেখে যাও।

 

ভূতের ছাও কান্দে

পড়ছে মহা ফান্দে।

হিজল তলে বাঘের বাস

ভূতের ভাগে সর্বনাশ।

 

গাছে থাকার সুখ নাই

আজরাইলের চোখ নাই

কেমনে নামি মাটিতে

বাঘের বাচ্চার বাটিতে।

 

বাঁচার কোন উপায় নাই

তাইতো বাঘের বাচ্চা খাই।

১/৭/২০১৮; দুপুর ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৭

হীরক রাজার দেশে

হীরক রাজার দেশে

আমরা দুজন গিয়েছিলাম

নতুন জামাই বেশে

খবর পেয়ে রাজফটকে এসে

করলো বরণ রাজা একটু হেসে।

আমরা দুজন গিয়েছিলাম

হীরক রাজার দেশে

নতুন জামাই বেশে।

 

বললাম রাজা

আছেন তবে ভালো?

জবাব দেয়ার আগেই রাজার

ফুললো দুটি গালও।

হাসি শুনে রাজপথ হলো

তিনটি পুরাণ খালও।

বললো রাজা সবাই জানে

বলি কথা ভালো।

সেই কথাটাই আইন হলে যে

কেউ বলে এ আইন কালো।

আমি বলি

তার ঘরটায় জলদি আগুন জ্বালো।

 

বললাম রাজা এ কেমন?

রাজা বললো গর্দভ নাকি,

রাজার কথায় আইন চলবে

আইনের কথায় রাজা না

হৃষ্টপুষ্ট গাইকে বলবো

এ গাই মোটে তাজা না।

 

তাই!

তাই।

নারীর ওপর হচ্ছে জুলুম

হচ্ছে নাকি অবিচার

বলছে রাজা বিহীত করেন

করেন একটু সুবিচার।

 

আচ্ছা!

আমার কাছে জুলুম নেই

বিচার হবে সাচ্চা।

এখন থেকে সব পুরুষই

নেবে পেটে বাচ্চা।

করবে বাড়ির সকল কাজ

জারি করো ফরমান আজ।

কালকে থেকে নারীরাসব

অফিস যাবে টাই পরে।

দেশের নিয়ম পাল্টে ফেলো

এক হুকুমে সাঁই করে।

 

নারী এখন কম কিসে?

সকাল বিকাল যম পিষে।

রাষ্ট্র এবং বিরোধীদল

সবই এখন তার হাতে।

বীর্যবান এ নারীরাইতো

সারা দেশে আজ মাতে।

 

পুরুষগুলো বুরুশ হাতে

বাথরুম করবে সাফ।

রাজার হুকুম লঙ্ঘন করলে

কেউ পাবে না মাফ।

 

হীরক রাজার আইন না মানলে

নির্ঘাত হবে ফাঁসি।

বুঝলে জামাই ঘুমাও গে যাও,

আমি এখন আসি।

১/৭/২০১৮; ৫:১৫মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৮

সাপ মারো

মানুষ মারলে পাপ হয়

সাপ মারলে যে হয় না

এ কথাটা জনগণকে

কেউ বুঝিয়ে কয় না।

 

তাইতো সাপের ছোবল খায়

কেউ কেউ তাতে মারা যায়।

কিন্তু সাপটা মেরে ফেললে

ভয়টা যে আর রয় না

কেউ বুঝিয়ে কয় না।

 

পাকা ফল খেতে হয়

সাপ মারতে যেতে হয়

পাকা ফল থাকতে নেই

সাপের শেষ রাখতে নেই।

 

খাবার জিনিস খেতে হয়

বীর হলে কে ঘরে রয়?

তাড়াও সোনা মনের ভয়

ভীতুরা তো পায় না জয়।

 

সাপকে যে মারে না

সে বাঁচতে পারে না।

২/৭/২০১৮; রাত ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৫৯

রাস্তাঘাটে মাচা নাই

বিটকেল ছেলেগুলা মিটমিট হাসে

পিটপিট করে চায় খুক খুক কাশে।

মেয়েগুলো রাস্তায় এলে দেয় শীশ

প্রেম নয় মেয়েদের বুকে দেয় বিষ।

 

দল বেঁধে পথেঘাটে করে হাইজ্যাক

টাকা দে নইলে রে হবি চাক চাক।

ধর্ষণ করে দেয় খিক খিক হাসি

মেয়েরা ওড়নায় দেয় লাজে ফাঁসি।

 

মদ মাগী খেয়ে যদি খুন করে বিশ

সেই পায় নেতাগিরি দল দেয় কিস।

এর কম হলে তার কাজে বেল নাই

এইসব নেতা কয় আয় কোটা খাই।

 

কোটাভোগী এইসব দালালের দল

দেশটারে টেনে আহা নেয় রসাতল।

কোটা অবসান যদি চায় কোন ছাত্র

আগুনের জ্বালা ধরে কোটাধারী গাত্র।

 

ছাত্ররা মার খায় গুন্ডারা মারে

এইটাই ঘটছে দেশে বারে বারে।

আমি বলি এইসব দাবী ছাড়, থাম

নইলে একসাথে রাজপথে নাম।

 

লীগের পোলা ঠেক দেও

ছাত্র সমাজ এক হও।

নইলে কারো বাঁচা নাই

রাস্তাঘাটে মাচা নাই।

৩/৭/২০১৮; ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬০

পারো যদি গরম হও

দশটা হুন্ডা বিশটা গুন্ডা

পানের সঙ্গে যেমন চুন ডা।

আন্দোলন না ঘোড়ার আন্ডা

কোটা ফোটা সকল ঠান্ডা।

 

পান্ডা যাদের সঙ্গে নাই

হাত পা তাদের অঙ্গে নাই।

আমরা যদি জঙ্গে যাই

নরমের ভাত বঙ্গে নাই।

 

পারো যদি গরম হও

চোখ পাকিয়ে কথা কও।

বঙ্গে বাঁশের অভাব নাই

বাঁশের জবাব বাঁশেই চাই।

 

সাহস রেখে গর্তে

থাকো কেন মর্তে?

৩/৭/২০১৮; ১:৪৬মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬১

কোটা খাওয়া ঘরজামাই

শোনেন শোনেন মোটা ভাই

কোটা খাওয়া ঘরজামাই।

 

এবার কোটা ছাইড়া দাও

জোরে দৌড় ঝাইড়া দাও।

 

নইলে পড়বা বিপদে।

তুমি লীগের কী পদে?

 

কোটার দাবী গণ দাবী

একলা আর কত খাবি?

 

এবার খাওয়া ছাইড়া দে

বাঁচতে দৌড় ঝাইড়া দে।

৩/৭/২০১৮; ৩:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬২

বাঙালি সব জানে

একাত্তুরের নয়টি মাস

কার যে কই ছিল বাস

বাঙালি তার সব জানে

কে কে ছিল ময়দানে।

 

কে কে নিছে হাতিয়ার

কে যে ছিল কোলে কার

কে করছে ফ্যাশন আর

কে খাইছে রেশন কার?

 

বাঙালি তো সবই জানে

কে যে ছিল পাকিস্তানে।

কে ছিল কে রণাঙ্গনে

কে যে ছিল কোন রণে।

 

যুদ্ধ মাঠে যায় নি কে?

বুকে গুলি খায় নি কে?

যুদ্ধকালে কে কে ভাই

মুক্তিযুদ্ধ দেখে নাই।

 

বাঙালি তার সব জানে

কার কি ছিল জব জানে

নয় মাসের যে শহীদ ভাই

কেন যে তার লিস্টি নাই।

 

কার নাম লেখে কয়খানে

বাঙালি তার সব জানে।

নয় বছরে নয় মাসের

শহীদ লিস্টি হয় না

এর কারণও সবাই বুঝে

কদম আলী, ময়না।

 

এই লিস্টি শেষ হতে যে

নব্বই বছর লাগবে

ততোদিনে আসল শহীদ

লিস্টি থেকে ভাগবে।

৩/৭/২০১৮;  ৬:৩৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৩

সাধের গদী ছাড়ি যা

জাতি চাইলো বাতিল কোটা

তুমি দিলা শীশার টোটা।

মার লাগালে গোটা গোটা

পাইলাম শুধু রক্ত ফোঁটা।

 

রাস্তায় ফেলে পিটাইলা

মনের ঝাল মিটাইলা।

কাউয়ার ধান ছিটাইলা

বনে দিলা ঘি ঢাইলা।

 

ভিক্ষা চাই না কুত্তা সামাল

ঐ ক্ষেপেছে বাংলার দামাল।

 

হাসপাতালে আমার ভাই

খুনীরে তোর রক্ষা নাই।

সময় থাকতে গদী ছাড়

কোটার দাবী কে চায় আর?

 

তুইতো নিজেই কোটাখোর

সঙ্গীরা সব কম্বল চোর।

নিজেই খুদিস নিজের গোর

তাইতো সামনে আঁধার ঘোর।

 

কোটা রেখে লোটা খা

ফল রেখে তুই বোটা খা

হেঁটে বাপের বাড়ি যা

সাধের গদী ছাড়ি যা।

৪/৭/২০১৮;  দুপুর ১২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৪

ইচ্ছে ঘুড়ি

ইচ্ছে ঘুড়ি উড়তে পারে ঘুরতে পারে আকাশে

ডুব সাঁতারে ডুবতে পারে, ডুবুরিও পাকা সে।

কবুতরের ডানার মতো মেলতে পারে ডানা সে

ইচ্ছে হলে মন্দ কাজে হানতে পারে হানা সে।

 

ইচ্ছে ঘুড়ি হয় না বুড়ি উড়তে পারে জান্নাতে

যায় না তাকে থামানো যে মর্ত্য লোকের কান্নাতে।

ইচ্ছে ঘুড়ি কেউ দেখেছো বেড়ায় ঘুরে চান রাতে

মুরুব্বীদের কাছে যখন যায় রাখে সে পান হাতে।

 

মনের পাখি বলে ডাকি কারে কয় রে জাহান্নাম?

সেটা নাকি দুষ্ট লোকের অষ্টপ্রহর থাকার ধাম?

ইচ্ছে ঘুড়ি খাচ্ছে মুড়ি বলছে শোন রে মন্দ কাম

করিসনে তুই জপিস শুধু আল্লাহ এবং নবীর নাম।

 

তবে যাবি জান্নাতে তুই, দেখবি মধুর নহর বয়

বাতাসগুলো সুবাস ভরা সবকিছু হয় ইচ্ছেময়।

৪/৭/২০১৮;  ২টা

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৫

খাইতে খাইতে সব খাইলি

খাইতে খাইতে খাইতে খাইতে

খাইতে খাইতে সব খাইলি

চাকরী দেয়ার নাম করে

কত লোকের জব খাইলি।

 

রাস্তাঘাটে ছাত্রীগুলোর

অকারণে টপ খাইলি

মনের দুঃখে ফাঁসি নিল

রুমু ঝুমু ও লাইলী।

 

দশ টাকা সের চাল খাওয়াবী

পঞ্চাশ টাকায় পাই না

ছাত্রলীগের লগিবৈঠার

মার খেতে তো চাই না।

 

গুলি খাইলো হাজার ছেলে

এই ওয়াদা ছিল না

যাদের ধরে গুম করলো

তাদের ফেরত দিল না।

 

খাইতে খাইতে সব খাইলি

নোট খাইলি ভোট খাইলি

হাকীম হুকুম সব খাইলি

আদালতের রব খাইলি।

 

ভয়ে মানুষ খালি পায়

ঘুরতে ঘুরতে মরতে যায়

গণতন্ত্র বনে যায়

ছাত্র তবু রণে যায়।

 

কোটার দাবী টোটা খায়

ছাত্রছাত্রীর রক্ত যায়।

গদীর তলে লাগছে ঘুণ

বলবে কথা নূরুর খুন।

৫/৭/২০১৮; ৪:৫০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৬

ভূতে খেলে ছি কুতকুত

শাসক মানে তখত চাই

তখত পেলে ভক্ত চাই

ভক্ত পেলে রক্ত চাই

হিসাব বড় শক্ত ভাই।

 

ভুলের কোন সুযোগ নাই

প্রকৃতিতে হুজুগ নাই।

ভুলে আনে মরণ ভাই

করে দেখো স্মরণ ভাই।

 

ইয়াহিয়া টিক্কা খান

রাজ্য হারা হয়ে যান

গদী ছেড়ে ভেগে যান।

তবে জীবন ভিক্ষা পান।

 

সিরাজ শিকদার খুন হয়

খুনীর রক্ত নুন হয়

তাহের মরে ভূত হয়

খুনী ভূতের পুত হয়

মঞ্জু মরার দূত হয়।

 

চাঁদ চিরকাল মুন হয়

খুনের বদল খুন হয়

মধ্য বছর জুন হয়

গুণের অংক গুণ হয়।

 

জল্লাদ দাদা গল্প কয়

ফাঁসির বদল ফাঁসি হয়।

মরে শত মায়ের পুত

ভূতে খেলে ছি কুতকুত।

৫/৭/২০১৮;  ৯:২৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৭

গাঙে চলে টেক্সি বাস

দিন বদলের দিন এলে রে উল্টে সবই যায়

গরু ছাগল পোলাও কোর্মা মন্ত্রীরা ঘাস খায়।

রাজা মশাই ভিক্ষা করে, চোরে গদী পায়।

খুনী থাকে খোশহালতে, হুজুর জেলে যায়।

 

কোটিপতি গুটি পায়ে শত কোটি করে ঋণ

বিলাত গিয়ে হাত ধোয় চোরে মুছে চুরির চিন।

শরম পেয়ে খড়ম পায়ে হাঁটে মিস্টার বীন।

খেকশিয়ালে তবলা বাজায় তাকধিনাধিন ধিন।

 

পুলিশগুলো চুরি করে ধরে তাদের মাস্তানে

বলে বখরা অর্ধেক দিবি নে খা তরা নাস্তা নে।

গাঙে চলে টেক্সি বাস, রাজপথ ধরে নাও চলে

ঢাকা হলো মফস্বল আর রাজধানীটা বাউফলে।

 

দিন বদলের আজব দিন

দু হাত পাতেন গজব নিন।

৬/৭/২০১৮;  রাত ১:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৮

আগুন জ্বালো নদীতে

আসাদ বিন হাফিজ

 

জ্বালো রে জ্বালো আগুন জ্বালো

আইয়ুব খানের গদীতে

জ্বালো রে জ্বালো আগুন জ্বালো

পদ্মা মেঘনা নদীতে।

 

আগুন জ্বালো আগুন জ্বালো

কথায় কথায় যদিতে

আগুন জ্বালো আগুন জ্বালো

মাছিসহ দধিতে।

 

সংসদে যে কথা দেয়

বাইরে এসে রাখে না

ছাত্র পিটায় ছাত্রী পিটায়

লজ্জা গায়ে মাখে না।

 

কথায় মানে কোটার দাবী

প্রজ্ঞাপনে লেখে না

মাথা ফেটে রক্ত ঝরে

চক্ষু মেলে দেখে না।

 

আগুন জ্বালো আগুন জ্বালো

সবাই মিলে তার ঘরে

অবৈধ যে সরকার হয়

আগুন জ্বালো তার ঘরে।

 

আগুন জ্বালো রাজপথে আর

আগুন জ্বালো নদীতে।

আগুন জ্বালো রক্তখেকোর

রক্তে ভেজা গদীতে।

৬/৭/২০১৮;  ১২:১৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৬৯

স্বপ্ন দেখো

স্বপ্ন দেখো

পাহাড় জয়ের,

জয়ী তুমি হবে

স্বপ্ন ছাড়া জয়ের পথে

কে গিয়েছে, কবে?

 

স্বপ্ন যত

বড় তোমার

মন করো তত বড়ো

স্বপ্নগুলো ধরে ধরে

মনের ব্যাগে ভরো।

 

তারপর সে

স্বপ্ন জয়ের

অভিযানে নামো

বাঁধা এলে মেধাটাকে

 দাও না কিছু কামও।

 

এগিয়ে যাও

দৃঢ় পায়ে,

ফেলো কিছু ঘামও

সবচে বড়ো কথা হলো

সময়ের দাও দামও।

 

কাজের সাথে

দোয়া করো

সফলতা চাও

তুমি পারো সবই প্রভু,

সফলতা দাও।

 

হয়তো তুমিই

সফল হবে,

কীর্তি জগত জোড়া

তোমার জন্যই জয়ের মালা

এবং ফুলের তোড়া।

৬/৭/২০১৮;  বিকাল ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭০

হলুদ শাড়ি পরবে

উচ্ছে ফুলের গুচ্ছে বসে

পুচ্ছ নাচায় ফিঙে

মাচায় দোলে কচি শশা,

লম্বা চিকন ঝিঙে।

 

শালিক এসে বসে থাকে

লাল গরুটার শিঙে

গরুর রাখাল নসু মিয়ার

পা দুটো টিঙটিঙে।

 

বেগুন বলে আগুন নাকি

ফাগুণ এলে জ্বলবে

রাজপথে ফের মিছিল নাকি আবার দেশে চলবে।

 

ফুলকুমারী কুমড়ো ফুলের

হলুদ শাড়ি পরবে

যুবক ছেলে হীরক রাজার

টুটি চেপে ধরবে।

 

এইতো আমার বাংলাদেশ,

সবুজ শ্যামল গ্রাম

শহুরে খায় এসির বাতাস,

কৃষক ফেলে ঘাম।

৬/৭/২০১৮; রাত ১১:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭১

সাংবাদিকের দল

সাংবাদিকের দল।

এদিক ওদিক তাকায় দেখে

আছে কিনা নল।

কেমনে লিখলে আসবে হাতে

ভাবে টাকার কল।

সাংবাদিকের দল।

 

সাংবাদিকের দল

বন্দুকের নল ঠিকই দেখে

ভোলে চোখের জল।

কষ্টে থাকে আইজদ্দিন

এবং পরিমল।

তাদের কথা লিখলে যদি

ওঠে দাবানল

ভয়ে ভয়ে বলে ওরে

এখান থেকে চল।

সাংবাদিকের দল।

 

গুম হয়েছে বছর যায়

সবই ওরা খবর পায়

কয় না করে ছল

সাংবাদিকের দল।

নানা রকম প্যাকেট খেয়ে

হাতটা করে টল।

সাংবাদিকের দল।

 

যখন ওরা লাল পানি খায়

যখন ওরা মালপানি খায়

খেতে কত আরাম

ইসলাম বলে হারাম

তাই ইসলাম দেখলেই ওরা

ছিটায় কাদাজল।

সাংবাদিকের দল।

 

 

কেন ধর্ষণ হয় বেশী

যুবক মাদক লয় বেশী

ব্যাঙ্কের ভোল্টে ক্ষয় বেশী

শেয়ার মানি হাওয়া হয়

জেনেও কারণ মিছা কয়।

বিনিময়ে বখরা লয়

দেশটা নেয় রসাতল

সাংবাদিকের দল।

 

ইসলাম ছাড়া মুক্তি নাই

এর বিপক্ষে যুক্তি নাই

ইসলাম এলে নিজে ভাল

হইতে হয়

তাই ইমলামে এত ভয়।

ঘোলা করে জল

সাংবাদিকের দল।

৭/৭/২০১৮; ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭২

রমিজ মিয়ার কান্ড

রমিজ মিয়ার

তমিজ কম

মুখের ওপর কথা কয়।

কোটার নামে

লুটে খাওয়া

রমিজ এটার পক্ষে নয়।

 

রাজনীতি সে করে না

মরার আগে মরে না

সরতে বললে সরে না।

ধরতে বললে ধরে না।

 

কোটার মিছিল যাচ্ছিলো

লীগের ছেলে মারছিল

হঠাৎ দেখি রমিজ মিয়া ময়দানে

লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে বুকটানে।

 

বললাম, রমিজ একি

কাকা আপনে? সে কি!

 

এই যে কটা গুন্ডা

হাত পা করে টুন্ডা

হালাল করলাম নুন ডা

দেশের পরি, দেশের খাই

নইলে কেমনে বাড়ি যাই।

 

শান্তি আনা জানতে হয়

এমনে শান্তি আনতে হয়।

৭/৭/২০১৮; ৮টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৩

দাওয়াত খান

গিয়েছিলাম দাওয়াতে

মনটা ছিল খাওয়াতে।

বেগুন ভাজি ডালের বড়া

ঝালে খুবই ছিল কড়া।

 

গোশতো ছিল শক্ত

দুপুর বেলার অক্ত।

ডাল ছিল জলের ভাও

যতো পারো ততো খাও।

 

খাওয়ার পরে মিঠাইদানা

ওটাই ছিল আসল খানা।

ধন্যবাদটা খুনীর পাওনা

সবাই মিলে বাহবা দাও না।

 

আসেন বসেন দাওয়াত খান

মরছে দেখে খাবার পান।

জুম্মন খাঁ যদি না মরতো

কে কারে দাওয়াত করতো।

৮/৭/২০১৮;  ৪টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৪

রাজরানী ঝি হইলো

কি হইতে যে কি হইলো

জোয়ান পোলা ঝি হইলো।

 

কাজের বুয়া এসি রুমে

বাড়ির মালিক মগডালে।

ঠিকই দেখছো লাভ হবে না

নিজের দুচোখ রগড়ালে।

 

মানুষগুলো যখন খাচ্ছে

অন্য জনের লাশগুলো

গরু ছাগল তখন খাচ্ছে

তাজা তাজা ঘাসগুলো।

 

মাছগুলো সব উড়াল দিয়ে

খাচ্ছে বনের বাঁশগুলো

পিপঁড়েরা সব দল বেঁধে

নিচ্ছে কেড়ে ফাঁসগুলো।

 

কি হইতে যে কি হইলো

রাজরানীও ঝি হইলো।

৮/৭/২০১৮;  ৯টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৫

রাজা পুরের তাজা খবর

রাজা পুরের তাজা খবর

খাজা সাহেব মুড়ি খায়।

রাজা পুরের রাজা মিয়া

এখন নাকি গাঁজা খায়।

 

একবেলা সে নামাজ পড়ে

চার ওয়াক্ত কাজা যায়।

দিনের বেলা যেমন তেমন

রাতে ইলিশ ভাজা খায়।

 

রাজা মিয়ার যত্ন করে

গিন্নীর নাকি মাজা যায়

গিন্নী গেলে বাপের বাড়ি

রাজা সেদিন সাজা পায়।

 

বাগান থেকে ফল এনে সে

রোজই নাকি তাজা খায়

গাঁজা খাওয়া রাজা মিয়া

সবার সাথে হাজা খায়।

 

গাঁজা খেয়ে রাজা মিয়া

আকাশে যেই উড়তে যায়

রাস্তা থেকে গড়িয়ে পড়ে

শুয়ে থাকে ভাঙা পায়।

 

রাজা পুরের রাজা মিয়া

গাঁজা খেয়ে ভাঙা পায়

পাঁজাকোলে উঠে এখন

কাঁদতে কাঁদতে ঢাকা যায়।

৮/৭/২০১৮; ৯:৩৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৬

পরের পায়ে যায় না হাঁটা

পরের মুখে খাইলে কারো

পেট কখনো ভরে না

পরের মুখে কইলে কথা

নিজের ঠোঁটও নড়ে না।

 

পরের ঘায়ে মলম দিলে

নিজের ঘা তো শুকায় না

শিশুর জামা যুবক ছেলে

নিজের গায়ে ঢুকায় না।

 

কে কি করলো সেটা দেখে

তোমার কোন লাভ নাই

খুঁজে দেখো কাঁঠাল গাছে

একটাও তো ডাব নাই।

 

কর্মগুণেই বন্ধু স্বজন

হবে তোমার পরিচয়

যা যা হয়নি তার জন্য

তুমিই দায়ী অন্যে নয়।

 

পরের পায়ে যায় না হাঁটা

হাঁটলে মেলো নিজের পা টা।

৯/৭/২০১৮;  ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৭

একটা কথা বলতে চাই

একটা কথা বলতে চাই

হাঁসের কান মলতে চাই

হারিকেনে সলতে চাই

বীরের মত চলতে চাই।

 

একটা কথা বলতে চাই

আগুন হয়ে জ্বলতে চাই

অন্যায়টাকে দলতে চাই

পুষ্প হয়ে ফলতে চাই।

 

একটা কথা বলতে চাই

খোদার নূরে গলতে চাই

স্বাধীনভাবে চলতে চাই

এ ব্যাপারে আপোষ নাই।

৯/৭/২০১৮;  ভোর ৫টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৮

যেই কথাটা বলি না

যেই কথাটা বলি না

অন্ধভাবে চলি না।

কথা শুনেই গলি না

সহজে কেউ টলি না।

 

যেই কথাটা বলি না

মন্দ পথে চলি না।

ফুলের সুবাস দলি না

সবাই ফুলের কলি না।

 

যেই কথাটা বলি না

তোর নাম কি ডলি না

তোর নাম কি পলি না

তুই কি পাড়ার জলি না

আপন কেন হলি না।

 

যেই কথাটা বলি না

ইসলাম অন্ধ গলি না

কিম্বা পাপের থলি না

ভাঙা নায়ের তলি না।

 

পায়ের চিকন নলি না

তবু আপন র'লি না।

৯/৭/২০১৮; ৪:৪৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৭৯

হুরমতি

হুরমতি গো হুরমতি

বুঝি নাগো তোর মতি।

কথা তো কস মিডা মিডা

কেমনে কস পিডা পিডা?

 

আইয়ুব খান পিডাইছে

আইয়ুব বেঁচে রইছেনি?

টিক্কাখানের পিডা জাতি

অতীত কালে সইছেনি?

 

জাতি তো আর মরে নাই

ভেসে গেছে টিক্কা খান

স্বৈরশাসক এরশাদ এখন

বাঁচতে দয়া ভিক্ষা চান।

 

হুরমতি গো হুরমতি

বুঝি নাগো তোর মতি।

দেশের মানুষ মারা গেলে

কার লাভ হয় কার ক্ষতি?

 

লাভের আশায় খুন করে

লাভ কি সত্যি পায় খুনী?

নাকি খুনের দায়ে খুনী

ফাঁসির দড়ি পায় শুনি?

 

হুরমতি গো হুরমতি

বুঝি নাগো তোর মতি।

কেন হইলো দুর্মতি

নিজে মারলি তোর পতি?

১০/৭/২০১৮;  রাত ১২:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮০

একটা সবুজ দেশ ছিল

একটা সবুজ দেশ ছিল

স্নিগ্ধ পরিবেশ ছিল

শান্তি সুখের রেশ ছিল

সবাই সুখে বেশ ছিল।

 

গরু ছাগল মেষ ছিল

দুঃখ সুখের শেষ ছিল

দাড়ি কমা ডেস ছিল

জের ও জবর পেশ ছিল।

 

একটা সোনার দেশ ছিল

মাটির তলে গ্যাস ছিল।

মায়ের মাথায় কেশ ছিল।

মানুষগুলো বেশ ছিল।

 

কার সেখানে পড়লো চোখ

বানের মতো আসছে দুখ।

১০/৭/২০১৮; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮১

নানী আমি জানি

নানী।

তুই কি জানিস আমি এখন

অনেক বেশী জানি?

তুই যারে কস মধু তারে

আমি বলি হানি।

 

জানি।

দুই পাতা ইংলিশ পড়ে

হইছো বড় জ্ঞানী।

তুমি যারে ওয়াটার কও

আমি বলি পানি।

তোমার হাতে পটারি আর

আমার ফুলদানি।

ঠিক কইছি নানী?

 

নানী।

এতোকিছু জানো বলেই

তুমি আমার নানী।

পিংকি তার নানীরে কয়

বুড়ি এবং কানি।

আমি কিন্তু তোমারে

অনেক বেশি মানি।

 

জানি।

তুই, টাকারে কস মানি।

তোর কাছে যা ভয়েস তাই

আমার কাছে বাণী।

তুই যারে কস কুইন তারে,

আমি বলি রানী।

 

নানী।

আমিও বাংলা জানি।

কওতো তুমি কখন থাকে

গাছের আগায় পানি?

 

যখন ডাব গাছে থাকে

ডাবে থাকে পানি।

আমি চোখে কম দেখি তাই

ভাবিস চোখে ছানি?

নানী, সবই আমি জানি।

 

মাফ করে দাও নানী।

এমন করে তোমার সাথে

আর করবো না ফানি।

 

জানি।

পড়ে পড়ে আমার নানী

হবে মহাজ্ঞানী।

দেশ দুনিয়ায় সে খবরও

হবে জানাজানি।

মায়ের মুখে ফুটবে হাসি

যাবে পেরেশানী।

 

আয় সকলে বলি, প্রভু

করো মেহেরবনী

বলি, করো মেহেরবানী।

১০/৭/২০১৮;  সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮২

জমাটবাঁধা পানি

নীল আকাশটা আর কিছু নয় জমাটবাঁধা পানি।

আমরা তাকে সবাই মিলে আকাশ বলে জানি।

আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা দেখ তাকিয়ে দেখ

মাথার ওপর উড়ে বেড়ায় হাজার টনি মেঘ।

 

মেঘগুলোতো দিবারাতি তুলোর মতো ভাসে

সেখান থেকে বৃষ্টি হয়ে ধরায় নেমে আসে।

ফোটায় ফোটায় নামে তারা খোদার মেহেরবানী

যাতে সবাই বাঁচতে পারে মানুষ, সকল প্রাণী।

 

নীল আকাশের রহস্যটা মানুষ যেনো বুঝে

তার জন্য দুটো করে মডেল দিলেন খুঁজে।

আকাশ যেমন অর্ধগোলক চোখের মনি তাই

আয়না দিয়ে তাকিয়ে দেখো নিজের মনিটাই।

 

কান্না এলে অঝোর ধারায় ঝরে চোখের পানি

অন্য সময় সেই পানিটা কোথায় থাকে নানী?

চক্ষু ঘুরাও ওলটপালট, পানি ঝরে না

চোখের পানি চোখে থাকে নিচে পড়ে না।

 

বুঝলে এবার আকাশ হলো জমাটবাঁধা পানি

কেউ না বুঝুক এটা বুঝে আমার নানা নানী।

১১/৭/২০১৮; রাত ২:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৩

ভর্তা ভাজি ডালের বড়া

আমার লেখা আমি লিখি

আপনার লেখা আপনি

দড়ি দেখলেই লাফান কেন

বলেন, এটা সাপ নি।

 

ছোটখাট লেখক আমি

গরীবের পেট ভরাই

দিবা রাত্র তাইতো আমি

কাব্য রান্না চড়াই।

 

গরীবেরা মানুষ বেশী

খায়ও বেশী ভাই

ভাল খেলে চাইনিজে যান

আমরা ডাল ভাত খাই।

 

আপনার মোটে সময় নাই

পেটে কাব্য ক্ষুধা নাই।

আপনার রান্না জুদা ভাই

আপনি আসুন আমি যাই।

 

দামী কবি নজরুল রবি

ওদের কাছে যান

যত পারেন ভাল খাবার

ওদের কাছে খান।

 

ভর্তা ভাজি ডালের বড়া

আমরা খাই কাব্য ছড়া।

ঝালও একটু কড়া কড়া

আপনি পাতে নিয়েন না

আমায় বাঁধা দিয়েন না।

১১/৭/২০১৮;  ৬:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৪

প্রেম করি ভাই দ্বন্দ্ব না

মানুষ আমি মন্দ না

জানে রিমি, চন্দনা।

সুবাস বিলাই গন্ধ না

চক্ষু আছে অন্ধ না।

 

চক্ষু দেখে অনেক কিছু

বলি ওসব বলবি না

সাপ যেতে চায় পা ঘেঁষে

বলি পায়ে দলবি না।

 

সবুর করলে মেওয়া ফলে

সবুর কেনো করবি না?

আল্লাহ বলছে ধৈর্য ধরো

তবে কেনো ধরবি না?

 

মানুষ আমি মন্দ না

আমার দুয়ার বন্ধ না

প্রেম করি ভাই দ্বন্দ্ব না

ঠিক বলিনি চন্দনা?

 

দ্বন্দ্ব যারা করতে চাও

তারা নদীর ঘাটে যাও।

১২/৭/২০১৮; ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৫

নন্দিনী

নন্দিনী গো নন্দিনী

আমি কি তোর বন্দী নি?

 

কবুল বলে মাথা নেড়ে

ঘরে এসে নিলি কেড়ে

আমার যা যা সব।

 

কথা ছিল দিবি কিস

এখন শুধু ধমক দিস

অবশেষে নিলি জব।

 

সম্পদ এবং ব্যবসাপাতি

শেষ তো করলি রাতারাতি

ক্যান পাঠালি কালিহাতি

জানিস কয়দিন খাইনি?

তুই হারামখোর ডাইনি।

 

নন্দিনী গো নন্দিনী

আমি কি তোর বন্দি নি?

 

তালাক তালাক তিন তালাক

ঘর তো তবু ছাড়িস না

এখন আমায় বলতে বলিস

নন্দিনী আর মারিস না।

 

হায় কি প্রেমের জ্বালা রে

জীবন করলি কালা রে।

 

ভাত রান্ধার দরকার নাই

সত্যি বলছি, নিস্তার চাই।

১২/৭/২০১৮;  ২টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৬

অজ পাড়াগাঁর ছেলে

আমি  অজ পাড়াগাঁর ছেলে

আমি  অজ পাড়াগাঁর ছেলে।

দিনটা আমার যায় রে কেটে

নানান খেলা খেলে।

আমি  অজ পাড়াগাঁর ছেলে

আমি  অজ পাড়াগাঁর ছেলে।

 

ঘুঘুর ছানা ধরতে যাই

ঝাঁকড়া গাছে চড়ে

তাকিয়ে দেখি ছানাগুলো

ভয়ে কেবল নড়ে।

 

আমি  অজ পাড়াগাঁর ছেলে

আমি  অজ পাড়াগাঁর ছেলে।

আমি বেড়াই হেসে খেলে

ও ভাই বেড়াই হেসে খেলে।

 

তোমরা যখন ইশকুলে যাও

মজার মজার টিফিনও খাও।

স্যারকে বাড়ির পড়াও দাও

স্যারের থেকে বাহবাও পাও।

 

আমরা তখন উড়াই ঘুড়ি

খেলতে টোকাই পাথর নুড়ি।

ভাঙি বুবুর কাঁচের চুড়ি

গুণে বলি উনিশ কুড়ি।

 

তোমরা যখন খেতে বসো

আমরা তখন গিলি

বড়লোকে ভোজন করে

টেবিলে বীফ চিলি।

 

অজ পাড়াগাঁর ছেলে আমি

সুখের সীমা নাই

মহান খোদার শোকর করে

খুশিতে গান গাই।

 

তোমরা তখন শীশার ভারে

নষ্ট বাতাস খাও

যানজট আর গাড়ির ধোঁয়া

সবই তো পাও ফাও।

১২/৭/২০১৮;  ৬:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৭

নাম তার বদরুল

নাম তার বদরুল

পায় শুধু বদ রুল।

ভাল রুল পায় না

তাই ভাল খায় না।

 

বদ রুল কই পায়

তালতলা দই খায়

সেই দইয়ে বদ রুল

তাই খায় বদরুল।

 

সেঞ্চুরীর গল্প

শোনে রোজ অল্প

তাতে জাগে শখ তার

জাগে রোজ বার বার।

 

দোস্তেরা করবে

সে জ্বলে মরবে

না না এটা হয় না

তাই মরে ময়না।

 

তার যারা সঙ্গী

নামে নয় জঙ্গী।

তার রণ ভঙ্গি

ভয় পায় জঙ্গী।

 

তারা লীগ বাহাদুর

তার কাছে সাহা, ধুর

ধর্ষণ ও কান্না

শুনে মজা পান না?

 

বাংলার ললনা

দেখো তার ছলনা

যদি চাও বাঁচতে

'দাও' হাতে চল না।

বাঁধ ভাঙে জোয়ারে

গরু মরে খোঁয়াড়ে।

১২/৭/২০১৮;  ৮:৫০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৮

রুহুল আমিন বাবুলে

রুহুল আমিন বাবুলে

গিয়েছিল কাবুলে

গিয়ে দেখে আবুলে

পানির তলে খায় আম

বাবুলের গায় ঘাম।

 

ঘামে, ভয়ে কাবু যে

রুহুল আমিন বাবু যে

দিন বদলের দিন

দেশে গিয়ে চালান করবে

কাবুল এবং চীন।

 

ডিজিটালের আইনে

বাবুল পাবে মাইনে

কর্মচারী লাভ নেবে

সরকারও টেক্স দেবে।

 

দেখে সামনে পুরুত রে

বাবুল মিয়া ফুড়ুৎ রে।

১৩/৭/২০১৮; ১০:৩৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৮৯

নাই মানুষে জয় পায়

যে কথাতে খুঁত নাই

সে কথাতে জুত নাই

তেতুল গাছে ভূত নাই

কিম্বা ভূতের পুত নাই।

 

ভূত নাই তবু ভূতের ভয়

চষে বেড়ায় জগতময়।

নাই জিনিসের জয় হয়

আছে জিনিস ক্ষয় হয়।

 

শহীদেরা ধরায় নাই

তারা নদীর চরায় নাই

কিন্তু তারা মহাবীর

ভয়ে কাঁপে নদীর তীর।

 

নাই মানুষে জয় পায়

আছে মানুষ লয় পায়।

১৩/৭/২০১৮;  রাত ৪:১৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯০

শোনেন শোনেন কাক্কা

শোনেন শোনেন কাক্কা

আপনি দালাল পাক্কা।

কত পাইছেন টাক্কা।

কয়টা গাড়ির চাক্কা?

 

কারে কি কই ধেত্ রি

বউরে করেন নেত্রী।

আপনি উপদেস্টা

পুরাণ বাড়ির কেস্টা।

 

ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম

করেছিলেন কর্ম

বুঝিনি তার মর্ম

প্রতারণার বর্ম।

 

ছাড়েন বায়ানাক্কা

নইলে খাবেন ধাক্কা

থামবে গাড়ির চাক্কা

হিসাব এটা পাক্কা।

১৩/৭/২০১৮;  ৯:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯১

টিটিং টিটিং

টিটিং টিটিং টিটিং

ছোট শালা নসুর ছিল

বিয়ের একটা মিটিং।

সবাই মিলে গাছতলাতে

করলাম আমরা সিটিং।

 

তারপর যা ঘটলো ভাই

আমার কিছু বলার নাই।

 

কথায় কথায় বাতাসটা ভাই

হলো বেজায় হিটিং

শ্বশুর মশাই রেগে বললো

আমার সাথে চিটিং?

 

মেয়ের বাপে এতো সাহস

কেমনে পেলো ভাই

সবার আগে এই প্রশ্নের

জবাব আমি চাই।

 

মেয়ের বাপকে চিটার বলেন

সাহস দেখি কম না

জানেন মেয়ের মামা এখন

থানার ওসি, রমনা?

 

তারপর যা ঘটলো ভাই

আমার কিছু বলার নাই।

 

দুই পক্ষই অগ্নিশর্মা হিটিং

ভেস্তে গেলো মিটিং

কোথায় গেলো সিটিং।

কথা ছিল কথা শেষে

করবে সবাই ইটিং।

 

কোথায় ইটিং ফিটিং?

সবার হাতে লাঠি এবং

করছে সবাই পিটিং।

চলছে বেজায় বিটিং।

 

টিটিং টিটিং টিটিং

নসু বলে শোন ভাইরা

এই সম্বন্ধ বিটিং

আর করো না হিটিং।

 

টিটিং টিটিং টিটিং

টিটিং টিটিং টিটিং।

১৩/৭/২০১৮; ১১:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯২

পরী ও জরি

নাম কি তোর?

পরী।

জামায় কিরে?

জরি।

তুই কি পড়িস?

পড়ি।

জ্বরে কি খাস?

বড়ি।

 

মামার বাড়ি?

সরি?

নানার বাড়ি?

টড়ি।

বাঘ কি ডরাস?

ডরি।

হাতে কি তোর?

ঘড়ি।

 

জীবন গড়িস?

গড়ি।

কেমন করে?

পড়ি।

নামাজ পড়িস?

পড়ি।

হাত কি ধরিস?

ধরি।

 

তবে কাছে আয়

আলতা রাঙা পায়।

করি গলাগলি

এবার তবে চলি।

১৪/৭/২০১৮;  ৭: ৪৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৩

অভাব তখন ভাগতো

অভাব ছাড়া এদেশে আর

কোন কিছুর অভাব নাই

সবই আছে কিন্তু দেশের

মানুষগুলোর স্বভাব নাই।

 

যারেই জিগাও এই প্রশ্নের

কারো কাছে জবাব নাই

রাজা আছে, রাজ্য আছে,

কিন্তু কোন নবাব নাই।

 

অর্থ যদি চলে যায়,

জৌলুস কমাও বলে যায়

স্বাস্থ্য যদি চলে যায়,

অষুধ খেলে ফিরে পায়।

 

স্বভাব যদি চলে যায়,

সব কিছুইতো চলে যায়

তুমি এখন পশুর অধম,

এই কথাটা বলে যায়।

 

দেশে যদি স্বভাব ভাইরে থাকতো

তবে কি আর কান্নাকাটি লাগতো।

খলিফা ওমর ঘুরতো পথে

অভাব তখন ভাগতো।

১৪/৭/২০১৮;  রাত ১০:৩০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৪

টেবিল ঘড়ি

টেবিল ঘড়ি, টেবিল ঘড়ি

বীরের বেশে আয় না লড়ি।

সবাই মিলে ঐক্য গড়ি

মিলেমিশে দেশটা গড়ি।

 

সিলেট থেকে পাথর যায় সারা দেশে

সিলেট জুড়ে রাস্তা কেন মলিন বেশে?

শাহজালালের পূণ্যভূমি ময়লা ভরা

মাথার ওপর থেকে আগে ময়লা সরা।

 

সিলেট থেকে হোক না জয়ের যাত্রা শুরু

সারাদেশটা মানবে তখন তোকেই গুরু।

 

টেবিল ঘড়ি, টেবিল ঘড়ি

আয় না বাবা ঘোড়ায় চড়ি

আয় না সিলেট রথে চড়ি

জয়ের নিশান হাতে ধরি

টেবিল ঘড়ি, টেবিল ঘড়ি।

 

টেবিল ঘড়ি, টেবিল ঘড়ি

জোটবাঁধো সব নর ও নারী

ভয়ের সাগর দিয়ে পাড়ি

জয়ের নিশান দেবো গাড়ী।

 

সিলেটবাসীর খুশীর রেশ

ছড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।

১৫/৭/২০১৮;  ৯:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৫

যারে বুবু ওড়ে যা

আপুমনি বউ সেজেছে, বউ

ডালিম দানার রাঙা রসের মউ।

 

শহীদ বীরের জামার মত

টুকটুকে লাল শাড়ি

সেই শাড়ি পরে আপু

যাবে শ্বশুর বাড়ি।

 

বুবুর গায়ে মাখছে সবাই

দারুণ কাঁচা হলদি

বিয়ে বাড়ি অনেক কাজ

হাতটা চালাও জলদি।

 

বর আসবে পাগড়ি পরে

চড়ে এসি গাড়ি

বুবু যাবে সেই গাড়িতে

রাঙা শ্বশুর বাড়ি।

 

যারে বুবু ওড়ে যা

মায়া ভেঙেচুরে যা।

১৬/৭/২০১৮;  রাত ১২:২০ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৬

নীতির যদি ইতি ঘটে

নীতির যদি ইতি ঘটে

ক্যারেক্টার হয় লস

তুমিই তবে জাহান্নামে

হবে একটা বস।

 

কিন্তু যদি বেহেস্তে ভাই

হতে পারো মালি

তোমার হাতে থাকতে পারে

রঙিন ফুলের ডালি।

 

মালি নাকি বসই হবে

আগে করো ঠিক

সেই মত ভাই প্রশ্নপত্রে

উত্তরে দাও টিক।

 

যার কোন নীতি নাই

আর খোদাভীতি নাই

মায়াময় গীতি নাই

তার ভাল ইতি নাই।

১৬/৭/২০১৮;  ৬:৪৫ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৭

এই মুহূর্তে গদী ছাড়

বাঙালি এতো বোকা ক্যান

সবাই আজো খোকা ক্যান

বার বার খায় ধোকা ক্যান

আগে প্রশ্নের জবাব দেন।

 

ইট মারলে কী খাইতে হয়

নৌকায় কেনো নাইতে হয়

কখন আলু পুড়তে হয়

রৌদ্রে কেনো ঘুরতে হয়।

 

এসব যদি নাই জানো

বন্ধ রাখো চোখ-কানও

তবে খাবে দেও- দানো

তুমি আঘাত কই হানো!

 

যে পায় কোটায় ক্ষমতা

কোথায় যে তার মমতা

সেইটাও যদি না বুঝো

খড়ের গাদায় সুঁই খুঁজো।

 

তোর মতো নাই বদি আর

এই মুহূর্তে গদী ছাড়

যদি বলতে লজ্জা পাও

তবে পিটান, গুলি খাও।

১৭/৭/২০১৮; রাত ১২:০২ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৮

বেত গাছে বেতফল

বেত গাছে বেতফল, ফেলা গাছে ফেলা

সেই ফল খাওয়াটাই মজার এক খেলা।

বেত কাঁটা পায় বিঁধলে খোলা বড় দায়

ছেলে মেয়ে দল বেঁধে তবু গোটা খায়।

 

ফেলা হলে লালচে টিপে টিপে খাও

ছোট ছোট ভাইবোন এলে নিচে দাও।

এখন আর দেখি নাতো আনহই গোটা

গোদাজাম ভারী মজা খেতে গোটা গোটা।

 

বনে পাও নানা ফল আর পাখি নীড়

চারপাশে করে কতো প্রজাপতি ভীড়।

হিজলের ফুলে ভরা হিজলের তল

বেলীফুলে গড়ে মালা শিশুদের দল।

 

ফুল পাখি নদী আর সবুজের দেশ

ছিল যেথা সুখ আর আরামের রেশ

সেই দেশে আজ কেনো হানাহানি হয়

কোথা গেল প্রেমপ্রীতি, মন মায়াময়?

১৮/৭/২০১৮;  রাত ১২:১৬ মিনিট।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১২৯৯

দেশে কোন বিচার নাই

আমায় তুমি সালাম দিলে সালাম পাওনা হও

আমায় তুমি গালি দিলে গালিই পাওনা হও।

আমার দিকে ইট দিলে পাওনা হওরে ইট

আমার কাছে গুলি নাই তাইতো তুমি হিট।

 

আমি যদি লাঠি ধরি আমায় বলো জঙ্গী

পিস্তল হাতে পোলাপান থাকে তোমার সঙ্গী।

পিস্তল বন্দুক হাতে নিলেও জঙ্গী হয় না তারা

অস্ত্র হাতে নায়ের পক্ষে ভাড়া খাটে যারা।

 

আন্ধার রাইতে গুলি কইরা ঋণী করলি আমায়

কেমনে শোধি এ ঋণ আমি শরীর শুধু ঘামায়।

জনগণ কি জঙ্গীর হাতে দেশটা দিছে ভাড়া?

নাকি এখন দেশ টা চালায় আসল ডাকাত যারা?

 

রাতের বেলা অস্ত্র হাতে ঘরে যে দেয় হানা

সে ডাকাতকে রুখতে কে করে বলো মানা।

 

তুমি খাবে আমার ধান

শখতো বড় সোনার চান।

আমি শুধু ডলা খাবো

গুলি ছাড়া আর কি পাবো?

 

পত্রিকায় এ ফিচার নাই

দেশে কোন বিচার নাই।

১৮/৭/২০১৮;  ১১টা।

আসাদ বিন হাফিজ এর ছড়া-১৩০০

ভানুমতি পান্তা খায়

এ কোন পথে চলেছি?

দেখছি এ কোন পলিসি।

 

রাতে মরে ক্রসফায়ারে

দিনে গাড়ির তলে

যাদের মরার মরছে তারা

খুনীর নানান ছলে।

 

তাও কি কিছু বলেছি।

পায়ে তারে দলেছি?

 

এ কোন পথে চলেছি?

দেখছি এ কোন পলিসি।

 

ভোটের দিনে আগের রাতে

ভোট মিশে যায় পান্তাভাতে।

ভানুমতি পান্তা খেয়ে

ভোটের বাক্সে ঘুমায় যেয়ে।

 

ভানুমতির এই ঢুকাতে

নির্বাচনের কমিশন

নেয় না কোন দমিশন

কয় টাকা খায় কমিশন?

১৮/৭/২০১৮;  ১১:৩০ মিনিট।


No comments

Powered by Blogger.