অন্তর্গত কান্নার বিলাপধ্বনি - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০৬৮

                                                             

কবিতা-০৬৮ : অন্তর্গত কান্নার বিলাপধ্বনি

না, আমি কোন কবিতা লিখতে বসিনি।

বুঝতে চেষ্টা করছি এখন আমি কোথায়?

ছালাম, রফিক, জব্বার এরা তো আমার ভাই ছিল।

তারা মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য

বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল।

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা পেয়েছিল। মায়ের সম্মান রক্ষা পেয়েছিল।

 

আসলে কি তাই?

মায়ের সম্মান কি আদৌ রক্ষা পেয়েছিল?

মায়ের সন্তানরা কি এখন মন খুলে কথা বলতে পারে, পারছে?

ত্রিশলক্ষ রক্তের বিনিময়ে আমরা কি আদৌ স্বাধীনতা পেয়েছি?

তবে কেন, হন্তারক রাতের ভয়ে আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি না?

কেন, আমার বোন ফেলানিকে কাটাতারে ঝুলতে হয়?

কেন রাতের অন্ধকারে খুন হয়ে যায় আমার ভাই?

 

কে বলে আমরা স্বাধীন?

স্বাধীনতার মানে কি ধর্ষকের রাজত্ব?

কেন আজ আমার মা ফাঁসির

দুর্বিসহ হাহাকার নিয়ে বুক চাপড়ায়?

 

এটা কিসের স্বাধীনতা? কার স্বাধীনতা?

 

আমি এখন একা একা নামাজ পড়ি, আর ভাবি, কবে জেলখানা থেকে ফিরে আসবেন আমাদের ইমাম? কবে মুফাসসিরে কোরানকে তাফসির করার জন্য অনুমতি নিতে হবে না? কবে এদেশের মানুষ নির্ভয়ে জানাযার নামাজ পড়তে পারবে?

না, এর কোন জবাব নেই আমার কাছে।

 

 

না, আমি কোন কবিতা লিখতে বসিনি।

আমি আমার অন্তর্গত কান্নার বিলাপধ্বনি তুলে ধরছি আপনাদের কাছে।

আমি সন্তানহারা মায়ের কান্নার তুফানের কথা বলছি।

 

না, প্রভু, না। বিধবার কান্নার স্রোতে তুমি আমাদের ভাসিয়ে দিও না। আমরা তোমার সেই হাবীবের উম্মত, যিনি নিজে রক্তাক্ত হয়েও তায়েফের জনপদ ধ্বংস করতে রাজি হননি। যিনি তোমার কাছে হাত তুলে অনুনয় করে চেয়েছেন শুধুই রহমতের বৃষ্টি।

 

প্রভু হে, আমরা তো তোমার নবীর কাছ থেকেই এসব শিখেছি।

আমি তোমার কাছে কড়জোড়ে মিনতি করছি, তোমার রহমতের বৃষ্টিতে ধুয়ে দাও এ পাপান্ধ জনপদ। আমরা পাপী বলেই তো তোমার রহমত চাই।

তুমি আমাদের ওপর এমন কোন গযব দিও না , যাতে এ শহিদী প্রান্তর ইতিহাসের ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরীতে পরিণত হয়।

২১/০২/২০২০-রাত ১১টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.