পা চালাও মৌমিতা - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০৩২
কবিতা-০৩২ : পা চালাও মৌমিতা
মৌমিতা, প্লিজ সোনা আর একটু চলো।
আমরা গন্তব্যের শেষ প্রান্তে চলে
এসেছি প্রায়।
তুমি তোমার চাঁপাফুল আঙুল দিয়ে
চেপে
ধরে আছো নাক। মানুষপোড়া গন্ধে
গুলিয়ে যাচ্ছে তোমার নাভীমূল।
ভয়ার্ত হরিণ শাবকের মত ঘাড়
বাঁকিয়ে তুমি তাকালে আমার দিকে।
চোখে আশা ও অবিশ্বাসের দ্রবন।
বললে, কী করে জানলে তুমি আমরা গন্তব্যের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি?
তোমার ছলনার কথায় ভুলে একটা
জীবনতো পার করে দিলাম।
এখনো আমায় আশার কুহকে ভুলিয়ে
রাখবে?
না সোনা। তিনি তো বলেই দিয়েছেন, এমন একটা সময় আসবে, যখন বাড়ির দারোয়ানের ইচ্ছেমত
চলতে হবে মালিককে। সমাজের নিকৃষ্ট লোকেরা হবে সমাজপতি।
আদর্শ থাকবে মানুষের মুখে।
জীবন পরিপূর্ণ থাকবে প্রতারণার
রেশমী রুমালে।
দেখো আজ তাই হচ্ছে কি না।
মানুষের সমাজ থেকে পালিয়ে গেছে
নীতি নৈতিকতা। নারী তার শরীর থেকে খুলে ফেলেছে লজ্জার হিরন্ময় পরিচ্ছদ। নয় কি?
সমাজতন্ত্র ও বাম আদর্শের চারু
মজুমদার, সিরাজ শিকদাররা গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে
মহানন্দে পুঁজিবাদের জুতা পরিষ্কার করছে।
আর খালিদ বিন ওয়ালিদ, মুসা, তারিক, সুলতান আইঊবীর
বংশধররা নামাজে দাঁড়িয়ে সারাদিনের হিসাব মিলাচ্ছে।
ভাবছে, তার এ জোচ্চুরি খোদা কিছুই টের পাবেন না।
তখন কেয়ামতের আর দেরী কি?
আহ দুর্গন্ধ, কী বিশ্রী দুর্গন্ধ মানুষের পোড়া লাশের!
আমি মৌমিতাকে শান্তনা দিয়ে বলি, যেভাবেই হোক, মানুষতো মরবেই। মানুষের জন্মইতো হয়
মরার জন্য।
হোক সে রাজা, হোক সে ফকির মৃত্যুই তার অবধারিত গন্তব্য।
জন্ম ও মৃত্যুর মাঝখানের কয়েকটা
দিন যার তকদিরে সৌভাগ্য লেখা থাকে সে ভাল কাজ করে, বাকিরা
মন্দ।
পা চালাও মৌমিতা।
শহীদী অরণ্যের ভেতর দিয়ে আমরা
একসময় ঠিকই পৌঁছে যাবো জান্নাতের ফুল্ল কাননে।
মৌমিতা কপট রাগের ভান করে বললো, আবারও আশার কুহক!
আমি হেসে বললাম, আমি অতিশয় কৃতজ্ঞ সেই প্রভুর কাছে, যিনি আমাকে এ
আশাটুকু দিয়েছেন।
আর এ জন্যই কেবল আমি নিজেই
বাঁচিনি, আমার
প্রেমকেও বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছি।
তুমিই বলো, এ জন্য কি আমাদের
কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত নয়?
২১/০৩/২০১৮
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments