নান্দনিক অসভ্যতা - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১১০

                                                                               

কবিতা-১১০ : নান্দনিক অসভ্যতা

শহর জুড়ে ছড়িয়েছিল নান্দনিক অসভ্যতা। একদা যেখানে ছিল সোনালী ধান, নিকানো উঠোন, পুকুর জুড়ে অগনিত পোয়াতি মাছ, সবুজ ঘাসের মাঠে চাঁদকপালি হাম্বার লম্ফঝম্ফ সেখানে আজ বহুতল বিশিষ্ট তারকা হোটেল।

বাইরে মৈথুনাবদ্ধ নিয়ন সাইন। ভেতরে........

 

ভেতরে কি আপনি দেখেন না? অসভ্য কোথাকার।

সুরা ইউসুফে পড়েননি জুলেখার নস্টামীর কথা। ছি ছি। নান্দনিক অসভ্যতা, অসভ্যতা।

 

এটা এখন নগর। নাগরে বোঝাই নগর।

কলাবাগানের ভেতরে ভেতরে নাগর।

ধানমন্ডির ধানের ক্ষেতে নাগর।

পেয়ারাবাগে নাগর।

গুলশানে গোলাপ ফুলের পরিবর্তে

মানব ফুল ফুটে আছে থরে থরে।

সেই ফুলের মধু খাচ্ছে নাগর।

অসভ্যতা, অসভ্যতা, নগর জুড়ে নান্দনিক অসভ্যতা।

 

একদা যেটা ছিল ফার্মে ঢুকার গেট,

সেই গেটে এখন বিকিকিনি হয় ননীর পুতুল।

নিউ এলিফ্যান্ট ও হাতিরপুলে এখন কোন হাতি খুঁজে পাবেন না, ওখানে আখড়া গেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের দল।

অসভ্যতা, নগর জুড়ে নান্দনিক অসভ্যতা।

 

মতিঝিল, আরামবাগের ক্যাসিনো হাটে নান্দনিক আরাম সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

কি চাই আপনার? মুখ ফুটে বলার দরকার নেই। শুধু মনে মনে কামনা করুন।

 

শয়তানের বেহেশতে সুখ ও শান্তি ছাড়া সবই পাবেন আপনি।

 

আগে যেটা ফকিরাপুল ছিল ওটা এখন ফকিন্নি বাজার। তোপখানা রোডে তোপের বদলে আপনার জন্যই সাজিয়ে রাখা হয়েছে নান্দনিক পাপ।

আপনার যদি লিপস্টিক দেয়া নান্দনিক সাপ দরকার হয়, চলে আসুন রমনা পার্কে। আহা, সাপের কি সজ্জা। মাথায়, ভুরুতে অপূর্ব কারুকাজ।

 

অসভ্যতা এখন টাকার ভাজে ভাজে শুয়ে থাকে। নিয়নবাতির মতই টাকার ভোল্টেজের সাথে ওঠানামা করে অসভ্যতার জৌলুস।

পৃথিবীর শহরে শহরে অসভ্যতা দিয়েই মানুষকে এখন অভ্যর্থনা জানানো হয়।

নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাস এই অসভ্যতা খেতে খুব পছন্দ করে। আফসোস, এই অসভ্যতার শহরেই আমাকেও বসবাস করতে হয়।

১৬/০৬/২০২০ ৯টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.