এক থালা তিলের নাড়ু - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৩০

                                                                                                          

কবিতা-২৩০ : এক থালা তিলের নাড়ু

আজকাল কী যে হয়েছে,

আমার কবিতাকে আমি নিজেই চিনি না।

মনে হয় আমার চোখের সামনে কবিতার নামে বিধ্বস্ত আরাকান, ইহুদী বর্বরতার শিকার জেরুজালেম

কিংবা চীনের উইঘুর মুসলমানদের বিভৎস, ক্ষতবিক্ষত মাথার খুলি নৃত্য করছে।

 

একদিন যে কবিতা লিলুয়া বাতাসে সর্ষে ফুলের ঢেউ তুলে আমার সমানে নাচতো,

সাদা বেলী ফুলের মত শাড়ি পরে নীল আসমানের নিচে মেঘ হয়ে ওড়ে বেড়াতো, তাকে ইদানিং আর দেখতে পাই না।

 

এখন কবিতা আসে স্টেনগানের ঠা ঠা আওয়াজের মত,

দুর্বোধ্য গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের মত,

ফিলিস্তিনের উদ্বাস্তু শিশু হয়ে।

 

আমার কবিতাকে আমি নিজেই চিনতে পারি না। বুঝতে পারি না। দুর্বোধ্য শব্দের অচেনা কবিতা অদৃশ্য আততায়ী হয়ে আমার কাছে আসে আমাকেই গুম করতে।

আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বলি, এই, তুমি কে গো?

 

অন্ধকার থেকে ভেসে আসে আমি কবিতা।

নতুন আধুনিক কবিতা, পরাবাস্তব কবিতা, তাই তুমি আমাকে দেখতে পাও না। তুমি কি কস্তুরীর ঘ্রাণ পাচ্ছো না? এটাই কবিতা, দেখতে পাবে না, চিনতে পারবে না।

 

ইহুদীদের হিংস্রতা ও বিভৎসতার মত আমাদের চেহারায় এখন শুধু দেখতে পাবে প্রলেতারিয়াত কমুনিস্ট জিঘাংসা। যা তোমাকে মোহাবিস্ট করবে, আপন করবে না

মনে করো, তোমাকে ধানক্ষেত থেকে ধরে নিয়ে ফাঁসির বদলে জাবজ্জীবন দেয়া হলে যেমন ভাল লাগে। ভাবো, যাক, প্রাণে তো বাঁচলাম!

 

আজকাল খরস্রোতা নদীগুলো নাব্যতা হারিয়েছে, কবিতাও কামুক পুরুষের হিংস্রতার শিকার হয়ে,

হয়ে গেছে অচেনা প্রমোদবালা।

 

আমি চিৎকার করে বললাম, না, আমি তোমাকে চাই না। তুমি ফিরে যাও নিষ্ঠুর চীন, বর্বর রাশিয়া বা নরমাংশলোভী আমেরিকায়।

 

আমাকে দিয়ে যাও টলটলে জলে শাপলার কোমলতা। ফিরিয়ে দাও কচুশাক, টাকি মাছের ভর্তা ও

মায়ের হাতের মিষ্টি পায়েসের স্বাদ

আর এক থালা তিলের নাড়ু।

২৬/০৯/২০২০২২  বাদ মাগরিব

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.