কোথায় তোমার ঘর - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১০৩
কবিতা-১০৩ : কোথায়
তোমার ঘর
মানুষ বড়ই আজীব জীব।
সে নিজের অভিজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই
বিশ্বাস করে না।
কেবলি সংশয় ও সন্দেহের দোলায়
দোলে।
অথচ কি অবাক কান্ড দেখো,
তুমি বিশ্বাস করো বা না করো
তাতে সত্যের কিছু আসে যায় না।
সত্য চিরকাল অবিকল সত্যের মতই
থাকে।
মানুষকে শুনে শুনেই অনেক কিছু
বিশ্বাস করতে হয়। এমনকি কারা আমার পিতা মাতা, এটাও মানুষের
কাছ থেকেই জেনেছি আমি।
অতএব, শোনা কথা মানুষকে বিশ্বাস করতেই হয়।
বিশ্বাস কি?
না দেখে কারো ওপর বা কোনকিছুর
ওপর আস্থা অর্জনের নামই বিশ্বাস।
তোমার যদি ডাক্তারের ওপর আস্থা
না থাকে, অসুস্থতার পর যদি তুমি ডাক্তারের কাছে না
যাও, তাতে ডাক্তারের কিছুই হবে না। তোমার রোগই শুধু বাড়বে,
এমনকি সে অসুখে তোমার মৃত্যুও হতে পারে।
ফলে, অজানা বিষয়ে যারা জানেন তাদের ওপর আমাদের আস্থা রাখতেই হয়।
এই আস্থার নামই বিশ্বাস।
তুমি কি বিশ্বাস করবে, না করবে তা একান্তই তোমার নিজস্ব
ব্যাপার।
তুমি নিশ্চয়ই লবন বিক্রেতার কাছে
স্বর্ণ চাইতে যাবে না।
যদি কেউ সৎ ও সত্যবাদী হয় তবে
তাকে সবাই বিশ্বাস করে।
আমাদের সৌভাগ্য, আমরা এমন একজন মানুষ পেয়েছিলাম, যাকে সবাই আল আমীন
বা বিশ্বাসী বলে শ্রদ্ধা করতো।
একজন, মাত্র একজনই এ অনন্য খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন।
তিনি বলেছেন, তিনি খাতামুন্নাবী। আল্লাহর বানীবাহক। আল্লাহর দেয়া কোরআনই মানুষের
জন্য একমাত্র জীবন বিধান।
যদি তুমি এটা বিশ্বাস করো তবে
তুমি আস্তিক, আর যদি না করো তবে নাস্তিক।
তুমি আস্তিক না নাস্তিক হবে সে
বিবেচনা একান্তই তোমার।
সে নিয়ে আমার কোন কথা নেই।
এই বিশ্বাস স্থাপন করা বা না
করার অধিকার দিয়েই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে তোমাকে।
আমি শুধু বলতে চাই, যদি তুমি আল্লাহ মানো, নবী মানো, তবে তোমাকে জীবনযাপন করতে হবে কোরআনের নির্দেশিত পথে। কোরআন যা বাদ দিতে
বলেছে,
তার কিছুই তুমি করতে পারবে না।
যা করতে বলেছে তাই করবে,
যদি সে সামর্থ তোমার থাকে।
যে এভাবে চলে তাকেই মুসলমান বলে।
আল্লাহকে ফাঁকি দিয়ে কেউ মুসলিম
হতে পারে না।
নবী বলেছেন, পড়শিকে অভুক্ত রেখে যে খায় সে মুসলমান হতে পারে না। তাহলে যারা মানুষকে
ক্ষুধার্ত রেখে বিদেশে টাকা জমায় তারা কি মুসলিম? কোন মুসলিম
কি দেশের মানুষকে নিরন্ন রেখে বিদেশে সম্পদ পাচার করতে পারে?
আপনি মুসলমানও হবেন, কবিরা গুণাহও করবেন, এমনটা হতে পারে না। এটা করে
মুনাফিকরা।
সহজ বাংলায় যাদের বলা হয় প্রতারক
ও ভন্ড।
আমি কি ভুল কিছু বললাম?
কোরান হাদিস না মেনেও কি মুসলমান
হওয়া যায়?
শুধু মানুষ নয়, আল্লাহর সৃষ্ট সমস্ত প্রাণী ও বস্তুনিচয়কে ভাল না বেসেও কি মুসলমান হওয়া
যায়?
সরি, মাফ করবেন।
তাহলে বলুনতো কে মুসলমান?
মুসলমান তো আল্লাহর খলিফা।
খলিফা মানে প্রতিনিধি।
আপনি যাকে প্রতিনিধি করে পাঠালেন, তিনি কি আপনার অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে, না নিজকে
নিয়েই ব্যস্ত থাকবে?
আল্লাহর এ অনন্য সৃষ্টিজগত
দেখভালের দায়িত্ব যার ওপর তিনি কি করে এ বিশাল দায়িত্ব ভুলে থাকবেন?
তিনি কি বলতে পারেন, আল্লাহর অমুক অমুক হুকুম আমি মানি, বাকীগুলো মানি না?
তিনি কি আল্লাহর কোন একটি
সৃষ্টিকেও ঘৃণা করার অধিকার রাখেন?
তাহলে? তাহলে অন্য ধর্মের, অন্য জাতির লোককে ঘৃণা করার
অধিকার আপনি কোথায় পেলেন?
প্লিজ, ভুল বুঝবেন না।
বুকে হাত দিয়ে বলুনতো, কোরআনের আলোকে আপনি কি মুসলমান?
আপনার পরিবার পরিজন?
আত্মীয় স্বজন?
পাড়া প্রতিবেশী? কে মুসলমান?
মুসলমান তো সে, যে তামাম জাহানকে নিজের ঘর মনে করবে।
০৫/০৬/২০২০ ৫টা
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments