ভন্ডামির তাবিজ - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১০৪
কবিতা-১০৪ :
ভন্ডামির তাবিজ
অন্ধকারের পরও যে অন্ধকার আসবে, ভাবিনি।
নাকি এ অন্ধকারের নামই আলো?
অন্ধকার কি বিশ্বজুড়ে, না আমার চোখে?
যার চোখ অন্ধ, রাত না আসলেও সে অন্ধকারই দেখে।
তার কাছে মনে হয় জগতই অন্ধকার।
এ আমি কি দেখছি! মন্দের ভিতরই কি
ভালো লুকিয়ে থাকে? আমরা কখনো খেয়াল করি না, যতোক্ষণ জামের ওপরটা কালো না হয়, ততোক্ষণ ভেতরটা লাল
হয় না।
মানুষের জন্য সবুজ জামের চেয়ে
কালো জামই ভালো।
পুঁজিবাদের ক্রমাগত শোষণ বিশ্বকে
করে ফেলেছিল ঘোর অন্ধকার।
মানবতার ঘিলু চিবিয়ে খাচ্ছিল সে।
তার সাথে জুটেছিল স্বৈরাচার।
সে সাদ্দামকে চিবিয়ে খেয়ে ফেললো।
বিশ্বের দেশে দেশে দেখলাম জনগণ
কত অসহায়। তারা যাকে প্রেসিডেন্ট করে তিনি
জেলে পঁচে মরেন,
আর স্বৈরাচারের পোষা নেকড়েগুলো
শহরের নিয়নবাতি ধরে ধরে মরা গরুর হাড্ডি
খাওয়ার মত আয়েশ করে চিবিয়ে খায়।
আবার কোথাও দেখলাম, জনগণের ভোট ছাড়াই গনতন্ত্র জিতে
যায়।
সেই গনতন্ত্রকে বগলদাবা করে যারা
খাটের নিচে লুকায়, সেখান থেকেই ভেসে আসে পঁচা আঙুর ফলের
বিশ্রি দুর্গন্ধ।
দেখলাম ঘামে ভেজা অন্ধকার এসে
চাঁদের হাটের মায়াবী জোসনা ভিজিয়ে দেয়।
স্বৈরাচারের জেলখানায় চাঁদগুলো
বন্দী হয়, আর অদৃশ্য গুহা থেকে বেরিয়ে আসে বিকট সব
বাদুড়।
ভাবলাম, এইতো শেষ। কিন্তু না।
ছুটে এলো কালো কালো তুফান। ভেঙে
দিল দোকানপাট, ঘরদোর, জলোচ্ছ্বাসে
ডুবে গেল চিংড়ির ঘের, ফসলের ক্ষেত।
কোথাও আলো নেই, শুধুই আঁধার।
মানুষের ওপর মানুষ কত নির্মম
অত্যাচার করতে পারে তার সাক্ষী হয়ে রইলো জিন্দানখানার পাষাণ দেয়াল।
কিন্তু সমস্যা হলো, আল্লাহতো সর্বদ্রষ্টা।
তিনি দেখে ফেললেন মানুষের
কুকীর্তি।
কেঁপে উঠলো আল্লাহর আরশ।
ছুটে এলো অদৃশ্য অন্ধকার।
শুরু হলো মৃত্যুর মিছিল।
গযব গযবই। সে চোখে দেখে না।
কে ভালো আর কে মন্দ এটা দেখা তার
দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
সে ধ্বংসের মহারাজ। ধ্বংস করাই
তার কাজ।
বাঘ দেখলে যেমন শিয়াল পালায়
তেমনি করোনা দেখে লকডাউনে গেল নেকড়েগুলো।
ভয়ে থরথর কাঁপছে তারা।
তাদের অন্ধকারের পুকুর খেয়ে ফেললো খরস্রোতা আঁধার
নদী।
নদীগুলো হারিয়ে গেল করোনার
মহাসমুদ্রে।
পৃথিবী এখন ডুবে আছে ঘোর
অন্ধকারে।
এ আঁধার কি গিলে খাবে
স্বৈরাচারের যন্ত্রণার পুকুর?
পুঁজিবাদের নদী কি গিলে খাবে
করোনা সাগর?
কি ঘটবে? বেশ্যাখানার ওপর তলায় পীর সাহেবের যে দরবার শরীফ অন্ধকারের তুফান কি সে
দরবারের চাঁদর উড়িয়ে নেবে না?
তোমরা যারা বলছো, এ গযব নয়, তারা পাঁচতারা হোটেলে যেতেই পারো।
ছাদের ওপর থেকে লাফিয়ে পড়ার জন্য
তোমারওতো একটা ছাদ দরকার।
আমি ভাবছি অন্য কথা, বেশ্যা তার দেহ বেঁচে খায়। কিন্তু পীর সাহেব কি বিক্রি করেন?
বেহেশত? দোযখ? নাকি
প্রতারণার পানিপড়া ও ভন্ডামীর
তাবিজ।
০৬/০৬/২০২০ ১১টা
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments