সুখের সানাই - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১০২
কবিতা-১০২ : সুখের
সানাই
তুমি দুঃখ দিলেই আমাকে তা নিতে
হবে?
তুমি কষ্ট দিলেই আমাকে তা নিতে
হবে?
না, নেবো না?
বাতাস জোর করে ঘরে আবর্জনা দিয়ে
গেলে যেমন ঝাড়ু দিয়ে ফেলে দেই,
তেমনি তোমার দেয়া দুঃখ ও
কষ্টগুলো না ফেলে কখনো আমি ঘুমোতে যাই না।
আমার কি দায় ঠেকেছে তোমার
দেয়া কষ্টগুলো বয়ে বেড়ানোর?
তোমার দেয়া দুঃখ ও কষ্ট নিয়ে
আমি কি করবো?
আমার হৃদয় কি দুঃখ রাখার ভাগার?
তোমার মনে 'অভাব' নামক অসুখ ভর করেছে। তাই তোমার সুখ নাই।
কি ছিল আমার? কিছুই ছিল না।
মরার ডাক এলে মানুষ যেমন খালি
হাতে চলে যায়, কিছুই নেয় না, তেমনি খালি হাতেই এসেছিলাম,
কিছুই নিয়ে আসিনি।
তবে কেন অনাহুত দুঃখ নিয়ে বিভোর
হবো?
দুঃখ কি বেলী বা বকুল ফুলের মালা?
না। তবে কেন খোঁপায় বাঁধবো?
ধুতুরা ফুল দিয়ে কে সাজায় বাসরঘর?
এতো এতো সুখ ও আনন্দ রেখে দুঃখের
নদীতে সাঁতার কাটার সময় কোথায় আমার?
এই যে পূর্ণিমা চাঁদ হাসে আমাকে
দেখে,
সে কি আমাকে দুঃখ দেয়ার জন্য?
বাগানের ফুল কি পাপঁড়ি মেলে
আমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য?
নদী ও ঝর্ণারা গান গায় কার
মনোরঞ্জনের জন্য?
সেকি আমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য?
তুমি কি শোননি, ভোরের পাখির আজান,
সান্ধ্য গজল, রাতে বিরহী কোকিলের কাতর কান্না?
সবাই তৃপ্তির সাথে প্রভুকে ডাকে
আর তোমাকে সুখ দেয়।তুমি কি করো?
সামান্য একটা চকলেট দিলে শিশুও
বলে, থ্যাঙ্কউ।
তুমি কি জানো না, ধন্যবাদের রীতি? তবে, কেন তুমি
সিজদা দিতে ভুলে যাও?
একদিন হাসপাতালে গিয়ে অক্সিজেন
নিয়ে দেখো, কত টাকা লাগে।
এই যে জীবনভর অক্সিজেন নিলে বিনি
পয়সায়, তুমি কি তার শোকর আদায় করেছো?
মানুষ এতো নাদান কেন?
তার প্রভু তাকে আনন্দের এমন কোন
সামগ্রী রয়েছে, যা দেননি?
তবে কেন, না পাওয়ার বেদনা তোমাকে কুড়েকুড়ে খায়?
অবারিত সবুজ ঘাসের দিকে তাকাও।
কুয়াশার চাদর গায়ে দিয়ে সুখের
পাখনা মেলো।
কিসের দুঃখ তোমার? কষ্ট কিসের?
হায়, মানুষ কেন বেদনা খুঁড়ে রক্তাক্ত করে আপন হৃদয়!কেন বুঝে না, মানুষ সৃষ্টির অনুপম আনন্দ-কোকিল।
অন্তহীন সুখের সাগরে বাস করেও
মানুষ কেন বলে না, আহ সুখ,
কোথা দিয়ে ঢুকলে তুমি এ হৃদয়
অন্দরে?
মানুষ কেন বলে না,
আমার বুকের ভেতর সুখের পায়রা
চিরদিন বাকুম বাকুম করে।
বাতাসের মর্মরে বাজে সুখের
সানাই।
০৩/০৬/২০২০ ৭টা
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments