কার পাপে মিশর ডুবে - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১১৩

                                                                                

কবিতা-১১৩ : কার পাপে মিশর ডুবে

পৃথিবীতে এখন বৃষ্টির মত কান্না ঝরছে। কাঁদছে আমাদের মত গরীব দেশের অসহায় বনি আদম।

 

কাঁদছে সেইসব মানুষ, যারা বেহেশতে

যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দুনিয়াকেই গড়ে তুলতে চেয়েছিল কল্পিত জান্নাত।

 

অন্যরা আঙুর পঁচিয়ে শরাবান তাহুরা বানিয়ে পান করছিল। রাতচুক্তি হুরগণ তাদের হাতে তুলে দিচ্ছিল শরাবের নেশা।

তারা দুধের নহরে তৃষ্ণা মিটাতো।

নিজের চোখকে বানিয়ে নিয়েছিল প্রমদোদ্যান।

তারা হাতের তালুতে জমা করেছিল

সব শক্তি ও সম্পদ।

পারমানবিক বোমা বানিয়েছিল আশরাফুল মাখলুকাতকে মারার জন্য।

তাদের কিছুরই অভাব ছিল না।

আজ তারাও অসহায়। কাঁদছে তারাও।

 

কাঁদছে সেইসব বিশ্ব মোড়ল, যাদের দম্ভ দেখে হেসেছিল একদিন করোনা।

 

মসজিদের ভেতর ছবি নিয়ে কাঁদছে

ইরানের আয়াতুল্লাহবৃন্দ।

হালাল পতিতালয়ে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে সৌদি রাজনন্দন।

ইটালি কাঁদছে তোমার দোস্তের ব্যঙ্গকার্টুন এঁকে।

স্পেনের জনগণ শত শত বছর পার করেও নিজের দেয়া আগুনে জ্বলছে।

চীন মুসলমানদের মারতে মারতে এখন নিজের চেহারাটাই চিনতে পারছে না। কাঁদছে সবাই।

 

কাঁদছে সারা দুনিয়া।

লাশের মিছিল দেখে কাঁদছে লাশবাহী ট্রাক।

 

হে প্রভুএ কোন দুনিয়ায় এলাম?

তুমি কি আমাদের কান্নার জন্যই এই

মায়ান্ধ ধরায় পাঠিয়েছো?

আমার চোখের পাতায় নোনা পানি।

স্বজনের লাশ ভিজে যাচ্ছে সে জলে।

তুমি আমাদের মাফ করে দাও।

 

কাঁদছে কাবার ওপর উড়ন্ত পাখির ঝাঁক। তুমি আমাদের মাফ করে দাও।

 

কাঁদছে পেটুক পঙ্গপাল। গাছের পাতা। সাগর, নদী। তুমি আমাদের মাফ করে দাও।

 

হে রাসুল, আমরা পাপী।

কেউ পাপ করে পাপী, কেউ পাপ সয়ে পাপী। আমাদের কারোরই সাহস নেই,

বুকে হাত দিয়ে বলি, আমি পাপী না।

 

কারো পাপ পাহাড় সমান। কারো পাপের জলে ডুবে যায় অথৈ সাগর।

 

তুমি তো তায়েফের জালিমদের জন্যও হাত তুলেছিলে।

যারা তোমার শরীর রক্তাক্ত করেছিল তাদেরও তুমি মারতে দাওনি গযব দিয়ে। আমাদের জন্য কি তুমি হাত তুলবে না?

 

তুমি না বলেছো, আমাদের প্রভু দয়ার সাগর। তাঁর দয়ার কাছে আমাদের পাপ কিছুই না। কই সে দয়া?

 

পাপিয়ারা পাপী। মমতাজরা পাপী।

সম্রাটরা পাপী।  পাপী রক্তচোষা খুনীর দল।

আমি পাপী। আমরা পাপী।  পৃথিবী বিরান হওয়ার আগে আবার একটু হাত তোল আমাদের জন্য।

 

হে রাহমাতুল্লিল আলামীন। নইলে কে দেখবে তোমার রবের এই সুন্দর ভুবন।

চাঁদের মায়াবী আলো কার জন্য হাসবে?

ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে কে বলবে, আলহামদুলিল্লাহ?

কে শুনবে পাখির গান, নদীর কলকলতান?

 

মানুষ, তুমিও দম্ভ ছাড়ো।

তোমার ক্ষমতার দৌড় দেখেছে পানির তলের মৎস্যকুলও।

 

তুমি কি দেখো নাই, নবীপুত্র কেনানও ডুবে যায় চুলার জলে? বড়াই ছাড়ো।

১৮/০৬/২০২০ ৫টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.