অভাবিত মর্যাদা - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৮২
কবিতা-২৮২ :
অভাবিত মর্যাদা
আসুন কবিতার কথা শুনি।
জেনে নিই কবিতার শক্তির কথা।
জানি কবিদের সাথে আচরণের সুন্নতি
আদব।
আপনি নিজেকে যার উম্মত বলে দাবী
করেন, যার অনুসরণ করে নিজেকে ধন্য করতে চান, আসুন
জানি কবিদের সাথে তিনি কি আচরণ করতেন?
মা আয়েশার রা. নামে যে কবি অপবাদ
দিয়ে নবীর ঘরে আগুন লাগিয়েছিলেন, মাসাধিক কাল নবীকে রেখেছিলেন প্রিয়তমা থেকে বিচ্ছিন্ন, জেনে নিই, সে কবিকে কি শাস্তি দিয়েছিলেন নবী?
মুহাম্মদ (পড়ুন, তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) তিনি সেই কবিকে শুধু মাফ করেই ক্ষান্ত হননি,
সেই কবিকে বানিয়েছিলেন শায়েরুন্নবী ( নবীর কবি)। সেখান থেকেই শুরু
হয় কবিদের রাষ্ট্রীয় সম্মান।
এটাই কবিদের সাথে ব্যবহারের
সুন্নত। যদি কোন কবি আপনাকে কষ্ট দিয়ে থাকে, তবে তাকে মাফ
করে দিন আর সাধ্যমত নিজেকে নিয়োজিত করুন সেই কবির সেবায়। দূর করে দিন তার অভাব অনটন। বাড়িয়ে দিন তার সম্মান।
আপনারা কি শোনেননি, মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত কবির দন্ডাদেশ তিনি মওকুফ করে দিয়েছিলেন কবিতা শুনে?
কল্পনা করুন কবিতার শক্তি। কবিতা মৃত্যুদন্ডও মওকুফের ক্ষমতা রাখে।
উপঢৌকন ও উপহার সামগ্রী বিতরণের
রেওয়াজ প্রাচীন কাল থেকেই চালু ছিল। রোম সম্রাটের উপঢৌকনের মধ্যে অন্যান্য
সামগ্রীর সাথে ছিল তিন পরমা সুন্দরী। নবী করীম সা. এদের দুজনকে বিয়ে করে সম্মানিত
করেন আর একজনকে উপহার দেন এক কবিকে। নবীর প্রিয় সাহাবী যারা নবীর পরে রাষ্ট্রীয়
দায়িত্ব পালন করেছিলে তাদের না দিয়ে তিনি সেই পরমা সুন্দরী রমনীকে তুলে দিয়েছিলেন
কবি হাসসান বিন সাবিতের হাতে। এটাও নবীরই সুন্নত।
মনে রাখবেন, আপনি যে উপহার সামগ্রী পান দায়িত্বের কারণে তার মাঝে রয়েছে কবির হিস্যা।
কবিকে সে হিস্যা না দিলে তা হবে সুন্নতের খেলাফ।
আপনি নেতা, আপনি ক্ষমতাবান, আপনার কাজ কবিকে যথোচিত সম্মান করা।
আপনি যার উম্মত, তিনি কবিতা শুনে আপ্লুত হয়ে গায়ের চাঁদর
খুলে কবিকে পরিয়ে দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। আসুন, আমরাও কবিকে
উপহার দিয়ে সে সুন্নতকে আঁকড়ে ধরি।
নবী যেমন মসজিদে নববীতে কবিদের
জন্য আলাদা মিম্বর বানিয়ে বিরল সম্মানের অধিকারী করেছিলেন, তেমনি মসজিদে মসজিদে কবিতার আসর জমানো আজ মসজিদ কমিটির দায়িত্ব।
হাসসান বিন সাবিত সেই কবি, যিনি মঞ্চে বসে কবিতা পড়তেন আর খোলাফায়ে রাশেদার চার খলিফা নিচে নামাযের
কাতারে বসে শুনতেন সেই কবিতা।
আসুন, কবিদের আবার ফিরিয়ে দেই সে অভাবিত মর্যাদা। সুন্নতি সম্মান।
৩১/০৩/২০২৩ বাদ ফজর
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments