আমি ক্ষমাপ্রার্থী - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৮১

    

কবিতা-২৮১ : আমি ক্ষমাপ্রার্থী

আমি এককালে কবিতা লিখতাম।

ভাবতাম, কবিতা দিয়ে মুছে দেবো সমাজের সব ক্ষত, সব হাহাকার।

তুমি আমার মাঝে জাগিয়ে ছিলে বেহেশতে যাবার লোভ। সেই থেকে আমি পাপের কাছ থেকে দূরে থাকতে শিখেছি। পূণ্যের লাভাস্রোতে ভাসতে শিখেছি।

কিন্তু মালিক, আমি এখন বিপদগ্রস্ত, দ্বিধান্বিত, শংকিত।

 

তুমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছো, মুক্তির জন্য মানুষকে দুটো হক আদায় করতে হবে। এক, আল্লাহর হক। দুই, বান্দার হক।

তুমি আরো জানিয়েছো, আল্লাহর হক যারা নষ্ট করবে, তওবা করলে তুমি তাদের ক্ষমা করে দেয়ার ক্ষমতা রাখো কিন্তু কোন বান্দার হক নষ্ট করলে বান্দা ক্ষমা না করা পর্যন্ত তুমিও তাকে ক্ষমা করবে না।

 

হে মালিক, হে মহামহিম, তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে আমার কোন লজ্জা নেই। কারণ তুমিই আমার মালিক, মুনীব।

আমি তোমার সামান্য এক দাসানুদাস।

 

কিন্তু প্রভু, যে বান্দার হক আমি নষ্ট করবো, সে নিশ্চয় আমার থেকে দুর্বল, তার কাছে ক্ষমা চাইতে আমার যে লজ্জা করবে। আর তুমি সারাক্ষণ আমার সাথেই থাকো, ফলে তোমাকে পেতেও আমার কোন কষ্ট হবে না। কিন্তু বান্দাকে পাওয়া যে বড়ই কষ্টের।

 

একদিন যার হক আমি মেরেছিলাম, জানি না সে এখন কোথায় থাকে।

সে বেঁচে আছে না মরে গেছে তাও আমার জানা নেই।

আমি কি করে তার কাছে ক্ষমা চাইবো?

 

হে মাবুদ, সে ক্ষমা না করলে যদি আমি ক্ষমা না পাই তবে কি করে আমি নির্দোষ প্রমানিত হবো?

তাহলে তো আমার মুক্তির কোন পথই খোলা রইলো না।

আমার কি তবে বেহেশতে যাবার স্বপ্ন পূরণ হবে না?

 

ভাবছি, আমি কি আমার মা-বাপের হক আদায় করেছি, সন্তানের হক, স্ত্রীর হক আদায় করতে পেরেছি? পড়শি ও আত্মীয়ের হক আদায় করেছি?

 

ওগো মাওলা, আমার ক্ষমতা, আমার শক্তি, যোগ্যতা, প্রতিভা, আমার সম্পদ, সবাই আমাকে পাপের পথে টানে। আমার মধ্যে জাগিয়ে তোলে অহংকার ও শ্রেষ্ঠত্বের বোধ। কেউ আমাকে নমিত হতে দেয় না।

 

প্রভু, আমাকে রক্ষা করো, আমাকে আমার অনিষ্ট থেকে বাঁচাও। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। সবাই আল্লাহরওয়াস্তে আমাকে ক্ষমা করে দিন।

৩০/০৩/২০২৩ বাদ জোহর

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.