বারুদের গন্ধ পাচ্ছি - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৮৩
কবিতা-২৮৩ :
বারুদের গন্ধ পাচ্ছি
বারুদের গন্ধ পাচ্ছি।
এ গন্ধ পেয়েছিলাম একাত্তুরে।
গন্ধ পেয়েছিলাম চুয়াত্তুরেও, তবে
সে গন্ধ ছিল ভিন্নরকম।
অমন গন্ধ পেলে মাটিতে নেমে আসে
উড়ন্ত শকুন। বেড়ে যায় শিয়াল ও কুকুরের বিরক্তিকর উৎপাত।
মাঝখানে কয়দিন কচি ধানের গন্ধ পেয়েছিলাম।
সাথে পেয়েছিলাম খালে, কাদায় দেশী মাছের ঘ্রাণ।
পেয়েছিলাম গেঞ্জি পরা এক রাখালও।
একাত্তুরে বারুদ হাতে খামছে
ধরেছিল এগারশো মাইল দূর থেকে ছুটে আসা
পয়ষট্টির বিজয়ী বীর, দিল্লীর ত্রাস, বর্বর
টিক্কা খান।
আমরা ভয় পাইনি।
ওদের তাড়িয়ে দিয়েছিলাম খিরকি
দরজার ওপারে।
সেই পুরোনো বারুদের ঘ্রাণ আবারো
পাচ্ছি।
আমি বারুদের গন্ধ পাচ্ছি। মনে হয়,
কপাট খুলে যখন তখন ছুটে আসবে
ভয়ার্ত বারুদ।
ভয়ার্ত বললাম, কারণ বারুদ ভয় পায় বাংলার গজারী ও বাঁশের বনকে। আসাদের সার্ট ও শরীয়ত
উল্লাহর পাঞ্জাবীকে।
না। বাংলার মানুষ কোন বিদেশী
শক্তি ও তার তল্পীবাহকদের বশ্যতা মানে না। দরকার হলে রুখে দাঁড়ায় ডা. মিলন, দেলোয়ার বা বাংলার বারভুঁইয়ার মত।
সংগ্রামী জনতার ঐক্যের কাছে হার
মানে পিন্ডি, দিল্লী এমনকি বৃটিশ বেনিয়ারাও।
আমি স্পষ্ট বারুদের গন্ধ পাচ্ছি।
তোমরাও কি পাচ্ছো?
চারদিক থেকে ছুটে আসছে লাল, নীল, হলুদ বারুদের ঝাঁঝাঁলো ঘ্রাণ।
ডাক দাও বার ভুঁইয়াদের। ডাক দাও
তিতুমীর ও তার সেনাপতি মাসুম
খানকে।
ডা. মিলনকে জেগে উঠতে বলো ঘুম
থেকে।
জেগে ওঠো দেলোয়ার ও স্বৈরাচার
নিপাত যাক শ্লোগান।
আবারও লড়াই হবে।
আমাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে
পিছু হটবে বারুদের বিভীষিকা।
আমাদের সঙ্গ দেবে একাত্তুরের
সাহস। সঙ্গ দেবে সাগরের ভয়ংকর টর্নেডো। সঙ্গ দেবে রহমতের শিলাবৃষ্টি ও জালিমের
আতংক আবাবিল পাখির ঝাঁক।
আমি নিশ্চিত, এ লড়াইয়ে
বরাবরের মত এবারও জিতবে
নির্যাতীত মানুষের ঐক্য।
জিতবে বেলুন ফুটো করা সামান্য
আলপিন।
জিতবে অদৃশ্য থেকে ছুটে আসা
অলৌকিক পাখিফৌজ।
জিতবে আবাবিল পাখির ঝাঁক কুদরতী সবুজ সংকেত।
আল্লাহু আকবর রবে মূখরিত হবে
পদ্মার চর, ভাওয়ালের গজারীবন আর নির্দয়তা ভরা ঢাকাসহ সব শহর।
শিশুরা খুশীতে আবার গেয়ে উঠবে
"তালায়াল বাদরু আলাইনা"।
০৫/০৪/২০২৩ বাদ ফজর
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments