ব্যথিত চাঁদের কান্না - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩০৬

         

কবিতা-৩০৬  ব্যথিত চাঁদের কান্না

বিশ্বাস করো, আমরা এমন একটা সময় পার করছি, যখন পতঙ্গও কারো ভালো দেখতে পারে না। এমনকি পাখিও।

 

মঙ্গলের পরিবর্তে অমঙ্গল চিন্তায়

ব্যস্ত থাকে উঠোনের রাজহাঁস।

নীল প্রজাপতি মাথায় কুবুদ্ধি নিয়ে

ঘুরে বেড়ায় পুষ্পোদ্যানে।

কাকে বিশ্বাস করবে তুমি?

 

শত্রুকে এড়িয়ে চলা যায়। কিন্তু

একই বিছনায় শুয়ে যে স্বজন

ছুরিতে শান দেয় তার বিরুদ্ধে

কি করতে পারো তুমি?

যার কাছে ঘরের চাবি, সে যদি

চুরি করে তবে কোথায় রাখবে তুমি বিশ্বাসের ধন?

 

আমার ফসলের জমি দখল করার জন্য ওঁৎ পেতে আছে চক্রবর্তী মশাই।

রাখাল নিজেই গরু চোর।

ছেলেরা আমার মৃত্যু কামনায় প্রতিটি প্রহর পার করছে অসহ্য যন্ত্রণায়।

তাদের একটাই টার্গেট, সিন্ধুকের চাবি। আমি আমার কষ্টার্জিত ধনভান্ডার কার হাতে দিয়ে যাবে?

 

ভেবেছিলাম, অন্তত একজন আমার স্বপক্ষে দাঁড়াবে। সারাজীবন তিলে তিলে গড়ে তুলেছি যে দেহ সত্ত্বা।

আফসোস, সেও আজ পর হয়ে গেছে।

আমার পরিবর্তে সে এখন নফসের তাবেদারি করে।

 

কি বলবো কষ্টের কথা?

আমাকে সে পাঠায় রঙমহলে।

আমাকে দিয়ে করায় এন্তার পাপকর্ম।

অমূল্য সময় আমার বিলিয়ে দেয় অদ্ভুত মায়াজালে। বেহুদা কাজে নিজেই করি সময় ক্ষেপন।

কাকে কি বলবো আমি?

 

ক্ষীয়মান চাঁদের কান্নায় কেঁপে ওঠে ধরনী, মানুষ কাঁদে না।

চাঁদের বিলাপে ফুঁসে ওঠে নদীজল।অঝোরে বৃষ্টি নামে: আহারে আদম সন্তান, জাহান্নামে যাওয়ার জন্য এতো কিসের তরাস তোর?

 

আমাকে যত দেখি ততোই ভাবি,

আমি কি নষ্ট সময়ের নষ্ট গদ্য?

মানুষ কেন কল্পনার জলে ডুবে ভাবে,

তাকে কেউ দেখছে না।

অথচ তার উদোম পীঠের দিকে তাকিয়ে অনবরত কাঁদছে চন্দ্রবুড়ি।

যেয়ো না, যেয়ো না সোনা

ধ্বংসের পথে আর যেয়ো না তুমি।

 

তবু মানুষ ফেরে না। ক্রমেই সে

ছুটে যায় মুসার রেখে যাওয়া পথে,

যেন সে অবাধ্য ফেরাউন।

 

ব্যথিত চাঁদের করুণ কান্না হয়ে

কুয়াশা তবু ঝরতেই থাকে। কুয়াশা

শুধুই ঝরতে থাকে, ঝরতেই থাকে।

১১/০৫/২০২৩ বাদ ফজর

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.