আয়না কাহিনী - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩৩৬
কবিতা-৩৩৬ : আয়না
কাহিনী
তোমার চোখের ভেতর আমার চোখ স্থির
হয়ে আছে। যেন পরষ্পর চারটি পাথর আয়না চাঁদের মুগ্ধতা নিয়ে দেখছে একে অন্যকে।
চোখ বলছে, তোমার
সবটুকু রূপ সুষমা চুষে নিতে পারি আমি, এমনকি তুমিও।
কিন্তু ভাবো, মানুষ
কখনো নিজের চোখে নিজেকে দেখতে পারে না।
চোখ কেবল সামনেই দেখতে পায়, পিছনে
দেখে না। আর প্রতিটি মানুষ
নিজে সবসময় চোখের পেছনেই থাকে।
ফলে, মানুষ অন্যকে
দেখতে পায়, নিজেকে
দেখে না।
যেমন আমি আমাকে দেখি না, তুমি
তোমাকে।
মানুষ নিজেকে দেখে না বলেই সে
প্রজাপতি দেখে মুগ্ধ হয়,
আপেল দেখে মুগ্ধ হয়, এমনকি তোমার কালো চুল দেখেও।
মানুষ নিজেকে দেখে না বলেই সে
অপরের ঘৃণা দেখতে পায়, নীচতা
দেখতে পায়, লোভ ও ভন্ডামী দেখতে পায়।
বোকারা সেই ঘৃণা, লোভ ও
নীচতা নিয়ে নিজের বুকে লুকিয়ে রাখে। আর সেগুলো দেখে মানুষ তাকে ছি ছি করে। কিন্তু
তুমিও কি তাই করবে?
তাহলে কলুষিত তো হবে তুমি নিজে।
এ জন্যই কারো মন্দ আমি দেখি না,ফলে
আমার চোখ ও মন দুটোই থাকে পবিত্র।
এই এখন যেমন তুমি পড়ে নিচ্ছো
আমার হিয়ার কাতরতা,
সাহসের ঢেউ, উদারতার বিশালতা ও জিঘাংসার
সিম্ফনি।
আর ভাবছো, কি
অদ্ভুত, তাই না?
নিজেকে দেখার জন্য মানুষকে
অন্যের চক্ষু বা নিদেনপক্ষে
পারদযুক্ত কাঁচের সাহায্য নিতে
হয়।
আয়নাই আমাদের অসঙ্গতি সমূহ
দেখিয়ে দেয়। যেমন তুমি আমাকে শুদ্ধ করো।
আর এ জন্যই রাসূল সা. বলেছেন, এক
মুমীন আরেক মুমীনের আয়না স্বরূপ। মুমীন অন্য মুমীনের অসঙ্গতি সমূহ তুলে ধরে একে
অপরকে শুদ্ধ হতে সাহায্য করতে পারে।
কিন্তু আফসোস।
আমরা এমন মুমীন,
আয়নার দিকে তাকালে আমরা আজকাল
মুমীনতো অনেক পরের কথা,
মানুষই খুঁজে পাই না।
আমাদের অহংকার আমাদের ইবলিশ
বানিয়ে ফেলেছে। আমরা অমানুষের মতো অরণ্যের সন্ধানে পিছন ফিরে কেবলই ছুটতে থাকি।
কেবল ছুটতেই থাকি।
১৬/১০/২০২২ বাদ মাগরিব
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments