কাউকে দেবো না - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১০৭

                                                                               

কবিতা-১০৭ : কাউকে দেবো না

ছেলেটি এলো। হাতে ফুলের তোড়া। সাথে জামতলীর বড় বড় রসগোল্লা। নানারকম ফলে সাজানো ছিমছাম একটা ঝুড়ি।

মেয়ে বললো, বাবা, অমুক এসেছে।

আমি ঘোলাটে চোখে পিটপিট করে ওর দিকে তাকালাম। বললাম, কিরে, এতকিছু নিয়ে?

 

আপনি হসপিটালাইজড শুনে স্যার পাঠিয়ে দিলেন। আপনাকে যা ভালবাসেন স্যার। আমি বিছনার একপাশে সরে এলাম। বললাম, বসো।

সে ইমাম সাবের সফেদ পাঞ্জাবীর মত ধবধবে সাদা বেডে সংকোচের সাথে বসলো।

বললো, স্যার অফিসে এসে  শুনেই আমাকে পাঠিয়ে দিলেন।

স্যার, আপনি এতো সুন্দর লেখেন কি করে? স্যার তো আপনার লেখার জন্য পাগল। বলেন, দেখলি, মনে হয় আরেক নজরুল।

 

আপনার শরীরের অবস্থা তো স্যার জানেনই। বললেন, নারে, ভাল ঠেকছে না।  কবি হয়তো আর বেশিদিন নাই। হাসপাতালে আছে। দেখ, টাকা পয়সা কিছু লাগবে কি না। কবিকে বলিস, চিন্তা না করতে।

 

তার কাব্যসমগ্র আমরাই বের করবো। দরকার হলে এক্সট্রা প্রুফরিডার লাগাবো। কবির চলে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বই পেয়ে যাবেন ভাবী।

এরপর আরো কিছু টুকটাক কথা। যাবার সময় ছেলেটি জানালো, স্যার সন্ধ্যায় আপনাকে দেখতে আসবেন। স্যার জানতে চাচ্ছিলেন, কাব্যসমগ্রের চুক্তিপত্রের খসড়া কি সাথে নিয়ে আসবেন, নাকি পরে ভাবীর সাথে করবেন।

আপনি আবার অন্য কাউকে কথা দিয়ে দিয়েন না স্যার। সমগ্রটা আমরাই করবো।

 

আমি ঘোলাটে চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললাম, না, দেবো না। যে সমগ্র আমি দেখে যেতে পারবো না, সে সমগ্র আমি কাউকে দেবো না।

১০/০৬/২০২০ ১১টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.