অনিন্দ্য নন্দনে - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৭০

                                                                                              

কবিতা-১৭০ : অনিন্দ্য নন্দনে

মানুষতো দুর্গন্ধপ্রিয় কোন প্রাণী নয়। তার চাই আতরের ঘ্রাণ, হাস্নাহেনার সৌরভ, বেলীফুলের সুবাস আর বকুল ফুলের মালা। প্রিয়ার সৌগন্ধমাখা রুমাল বুকে নিয়ে সে ঘুমুতে যায়।

 

তার আরাধ্য সুন্দর, লাল গোলাপের শুভেচ্ছা আর পবিত্রতার স্পর্শ।

মানুষতো নিজেই দেবদারু হতে চায়। হতে চায় পাহাড়ের ঝলসানো বরফ। কে তার গায়ে আবর্জনা ছিটাতে আসে?

আবর্জনাপ্রিয় কবিদের জন্য এসো এক মিনিট নিরবতা পালন করি।

 

তারা ভাগ্য মানে না কিন্তু অদৃষ্টের দুঃখ কেউ এড়াতে পারে না।

তারা আবর্জনাপ্রিয় জন্তুদের মত জন্ম নেয় আর ড্রেনের পানির মতই হারিয়ে যায় মৃত্যুর গহ্বরে।

তারা মায়াবী পর্দা দুলে উঠলে বা নগরে প্রবেশ করলে বখতিয়ারের ঘোড়া, বলে ওঠে ওই দেখো, অযু করা কবি।

 

তাদের কাছে পবিত্রতা বড়ই অসহ্য। পশুদের মতই তারা কাটাতে পারে দীর্ঘদিন গোসলহীন জীবন।

অযুর মাহাত্ম তারা কি বুঝবে?

তারাতো কখনো মসজিদে ঢুকে না। শুঁড়িখানায় ঢুকতে অযু লাগে না।

তাই তাদের কবিতা কবিতার আসরে জায়গা পায় না।

 

কিন্তু মানুষ পবিত্রতা চায়। তাদের কারো আল্লাহ আছেন, কারো ঈশ্বর, কারো ভগবান।  মানুষের ভাগ্যের মূল চাবিকাঠি যাদের হাতে। মানুষ অযু করে পবিত্র হয়ে প্রভুর দরবারে যায়।

 

তাই সে পায় মানুষের ভালবাসা, পৃথিবীর মহামানবদের সম্রাটের কাছ থেকে উপঢৌকন পায় ইজ্জতের মিনার।

বেঁচে থাকেন হাসসান বিন সাবিত, আবু লায়লা ও কাব ইবনে যুহাইর।

বেঁচে থাকেন ইরানের গোলাপ রুমী, জামী, খৈয়াম, সাদী।

বেঁচে খাকেন ইকবাল ও খোশহান খান খটক। এমনকি বাংলার নজরুল, ফররুখ ও আল মাহমুদরা।

 

পবিত্র না হলে কেউ মানুষের দরবারে বসতে পারে না। আর শুধু মানুষকেই অযু করে পবিত্র হতে হয়। জীব, জন্তু, জানোয়ারের অযু লাগে না।

 

তুমি পবিত্র না হতে পারো, আমি পবিত্র হবোই। কারণ আমাকে কবিতার পবিত্র তোরণ পার হয়ে যেতে হবে প্রভুর অনিন্দ্য নন্দনে।

১২/০৭/২০২১   ৮টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.