পেখম মেলা হৃদয়কাব্য - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩৫৫
কবিতা-৩৫৫ : পেখম
মেলা হৃদয়কাব্য
একটি রাখাল হৃদয়ের জন্য আজ
পৃথিবী হাহাকার করছে। হাহাকার করছে আলো ও উষ্ণতার জন্য।
একটি কোমল হৃদয়ের উত্তাপের জন্য।
কিন্তু কোথায় পাবে মানুষ
ওমে ভরা হৃদয়ের উত্তাপ?
মানুষ কি জানে না,
নিরেট অন্ধকারে কোন প্রাণ টেকে
না?
জলহীন প্রান্তরে জন্মে না সবুজ
উদ্ভিদ।
হৃদয়ের জন্য চাই জীবন আর জীবনের
জন্য পর্যাপ্ত আলো। চাই নির্মল বাতাস ও দয়াদ্র জলের নির্যাস।
নিরেট অন্ধকারে কোন গোলাপ জন্মে
না।
এমন কি সামান্য শ্যামল
দুর্বাঘাসও।
বনের পশুও বুঝে প্রতিটি
গাছের পাতার সজীবতার রহস্য।
সবুজের স্পর্শ পায় বলেই
অন্তহীন প্রাণপ্রাচুর্যে মেতে ওঠে বনবীথি।
কিন্তু সবুজের এ মর্ম মানুষ বুঝে
না।
মানুষ আলোর সাম্রাজ্য ছেড়ে কেবলই
অন্ধকারের পেছনে দৌড়ায়। আলো ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ে আলেয়ার বুকে। অমৃত ভেবে পান করে তরল
বিষ।
যেমন পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ে
প্রেমান্ধ অবুঝ বালিকা। কিন্তু কেন? মানুষ কি তবে প্রকৃতই নির্বোধ?
তিতির পাখিও বাস করে ছায়াঘন
বৃক্ষের নীড়ে। কিন্তু মানুষ ঘরের মায়া বুঝে না। সে কি দেখে না হরিণেরা সবুজ অরণ্যে
লুকিয়ে রাখে
নিজের সৌকার্যমন্ডিত লোভনীয়
শরীর।
সামান্য পাখিও দিন শেষে ফেরে আপন
নীড়ে। কবুতরগুলো ঢুকে পড়ে খোপের নিরাপদ আশ্রয়ে।
অথচ দেখো এই যুবতীদের।
তারা ঘরে ফেরার পরিবর্তে অবলীলায়
ঢুকে পড়ে বাঘের খাঁচায়,
সাপের গর্তে।
পান করে নেশার তরল বিষ আর
সাপের ছোবল।
হায়, এরা কতই
না বেকুব। সত্যি মায়া হয় এইসব নির্বোধদের জন্য।
নগরে নাগরিক পাবে, মানুষ
পাবে না।
পাথুরে দালান ঘরে পাবে কতিপয়
নিষ্প্রাণ পাথুরে মূর্তি। বনবীথি পাবে না। ঝর্ণা পাবে না। পাবে না নদীর কলতান ও
পাখির কূজন।
কতিপয় নরনারীর পাশবিক উন্মত্তায়
নমনীয় হৃদয়গুলো যতোই বন্দীত্ব বরণ করছে ততোই প্রতিশ্রুত ধ্বংসযঞ্জের নিকটতর হচ্ছে
ধরনী।
না। যেখানে সবুজ থাকে না, সেখানে
জীবন থাকে না। আর যেখানে জীবন
থাকে না সেখানে পাবে না কোন
পেখম মেলা হৃদয়কাব্য।
২৩/০৬/২০২১ ২টা
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments