না, কিছুই ভুলিনি - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩১৩
কবিতা-৩১৩ : না, কিছুই ভুলিনি
"ভুলে যাও" বললেই কি সব ভুলে যাওয়া যায়!
তুমি পারবে?
বিনা অপরাধে জেলে নিলে, ভুলে
গেলাম।
ডান্ডাবেরি পরালে, ভুলে
গেলাম।
রিমান্ডের নামে মারধোর করলে, ভুলে
গেলাম। কিন্তু--
কিন্তু মা ও স্ত্রীর সামনে যখন
আটজনে মিলে আমাকে পিটালে তখন কি আমি কেঁদেছিলাম? কাঁদিনি। ওটাও ভুলে যেতে পারতাম।
কিন্তু প্রতিটি আঘাতের পর মায়ের আকাশফাটা কান্না আমি কি করে ভুলবো বলো? মনে আছে, মায়ের
অজ্ঞান হওয়া অবধি ঝড়ো মারের কথা? না,
মায়ের সে কান্না আমি ভুলিনি, ভুলতে পারি না।
তুমি কি ভুলতে পারবে পশ্চাদ্দেশ
দিয়ে গরম ডিম ঢুকিয়ে দেয়ার পৈশাচিক যন্ত্রণার কথা? নখের নিচ দিয়ে সুঁই ঢুকানোর কথা?
দুই পায়ে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখার
কথা?
না, এসব
কিছুই ভুলিনি। ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।
আরমানের কথা ভুলে যেতে বললেই কি আরমানের
মা তার সন্তান গুমের কথা ভুলে যাবে?
যে বিধবা প্রথম সন্তান পেটে নিয়ে
স্বামীর লাশ পেলো ধানক্ষেতে সে কি তার স্বামীর কথা ভুলে যাবে?
না, তোমার
অবর্ণনীয় নির্যাতনের কথা কি করে ভুলবে মানুষ?
তুমি তো জানো, কত
মায়ের বুক খালি করেছো তুমি।
দেশের ইমাম, আলেম ও দেশবরেন্য
খতিবরা তোমার কারান্তরালে কিভাবে দিন গুজরান করছে জনগণ তার সবই জানে। অসুস্থ
কোরানের পাখিকে দুঃসহ কারান্তরালে রাখার কথা কি ভুলে যাবে মানুষ?
না, কিছুই
ভুলে না মানুষ।
কাদের মোল্লাকে হত্যা করার জন্য
তোমরা আইন পাল্টে বর্বর আইন বানিয়ে খুন করেছো, এটাও ভুলে যেতে হবে? ভুলে
যেতে হবে দুর্নীতিহীন আলেম মন্ত্রীদের ফাঁসির কথা?
না, এতসব
ঘটনা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। সম্ভব নয় তোমার নির্যাতনের হাজারো দুর্ঘটনার কথা।
"ভুলে যাও" বললেই কি সব ভুলে যাওয়া যায়!
না, যায় না।
গাছের পাতায় লেখা থাকে ইতিহাস।
বাতাসের হু হু বয়ে যাওয়ার শব্দে
থাকে কান্নার রোল।
মজলুমের কান্না যদি এখনো এ দেশের
কবিকে উদ্বেল না করে তবে জেনে রাখো, সে কোনদিন কবি ছিল না।
জালিমের পাইক পেয়াদারা কবি নয়, লুটেরা
ও ডাকাত।
হে জাগ্রত জনতা,
এসো একটা কবিতার জন্য লড়াই করি।
একটি কবিতার জন্য কলম ধরি।
গড়ে তুলি আবারো একটি নতুন কবিতা।
জয় হোক কবিতার
জয় হোক সততার।
জয় হোক নিপীড়িত মজলুম জনতার।
জয় হোক নিপীড়িত মজলুম জনতার।
জয় হোক নিপীড়িত মজলুম জনতার।
১৮/০৫/২০২৩ বাদ জোহর
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments