পীড়নের মত সুখ - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৫৩

                                                                                           

কবিতা-১৫৩ : পীড়নের মত সুখ

নৃত্যরত বৃক্ষপত্র হাত ইশারায় ডাকলো আমাকে। ঘাসের সবুজ জাজিম দেখিয়ে বলল, বসো।

আহ, কী মিষ্টি করে যে ডাকলো।

 

আমি ভরা বর্ষাবিলের দিকে মুখ করে বসলাম। দেখলাম তিনটি পুটিমাছ খেলা করছে বিলের জলে, সদ্য ডোবা সবুজ ঘাসের ওপর।

 

আমাকে দেখেই মাছগুলো হাত পিছনে নিয়ে গেল। বললাম, কি লুকালে?

ওরা কিছুতেই বলতে বা দেখাতে রাজি নয়।

আমার পকেটে সবসময় চকলেট থাকতো। ছোট বাচ্চাদের উপহার দিতাম। তাকিয়ে দেখতাম ওদের সুখ, ওদের আনন্দ।

 

আমি মাছকে বললাম, চকলেট খাবে? ওদের চোখে চকচকে উল্লাস জমা হলো। বললাম, তাহলে দেখাও কি লুকিয়ে রেখেছো?

 

সবচে ছোট যে মাছটা সে হাত সামনে আনলো। তার হাতে একটা কাশফুল। আকাশী রঙের। নরোম, মোলায়েম।

দ্বিতীয় জনের দিকে তাকালাম। সে লাজুক হেসে হাতটা সামনে নিয়ে এলো। দেখলাম, তার হাতে একটা মেঘলা আকাশ। মনে হয় টোকা দিলেই বৃষ্টির ফোটা ছেড়ে দেবে।

 

এবার বড় জনের দিকে তাকালাম। সে বড় ভাবীর মত হেসে দিয়ে বললো, নাও, দেখো।  আমি দেখলাম, কবিরা যে নীল আকাশের গল্প করে সেই নীল আকাশটা এখন ভাবীর হাতে।

 

গল্পটা চমৎকার না?

না, চমৎকার আসলে পুরো বাংলাদেশ।

এমনি মায়াময়, এমনি সতেজ।

 

তুমি আমাকে অবাক করে দিয়ে বললে, আসল কথা হচ্ছে,কবি, তোমার মনটা চমৎকার। সে মন তোমাকে দুটো সুন্দর চোখ জোগাড় করে দিয়েছে। এখন তুমি যেদিকে তাকাও কেবলি সুন্দর দেখো।

 

আমার বুকের ভেতর তাকাও।

চোখের জলের মত এত সুন্দর স্বচ্ছ জল কি কোথাও আছে?

পীড়নের মত সুখ?

অসুখই সব সুখের মূল।

যে সুখ জন্ম দিতে পারে কেবল মায়েরা।

১৮/১০/২০২০ ২টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.