যাও নারী, যাও - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৬০

কবিতা-২৬০ : যাও নারী, যাও

আমি ফুলকে বললাম, তুমি সুন্দর।

ফুলের চন্দ্রানন খুশিতে ঝলমল করে উঠলো।

চাঁদকে বললামতুমি সুন্দর।

চাঁদের উদ্ভাসিত হাসিতে ঝরে পড়লো মুক্তার দানা।

আমি আকাশকে বললাম, তুমি মহান।

আকাশ আমার জন্য পাঠিয়ে দিল মেঘের ছায়া ও শরীর জুড়ানো দখিনা হাওয়া।

আমি নারীকে বললাম, তুমি অনন্যা।

নারী হয়ে গেল সুবাসিত ফুল। চন্দ্রজোস্না। মায়াবতী শালিক। কবুতরের বাকুম বাকুম।

 

এই আনন্দের নাম স্বাধীনতা, এই আনন্দের নাম স্বর্গসুখ।

জীবন সুন্দর হলো, সমাজ সুন্দর হলো, সুখ ও সুন্দরের বন্যায় ভেসে গেল হৃদয় জাজিম।

 

এ স্বর্গসুখ কেড়ে নেয়ার জন্য ছুটে এলো দুষ্ট আজাজিল। নারীর মনে দিল কুবুদ্ধি, মরীচিকা ওয়াসওয়সা। নারীকে বললো, বলো, আমার স্বাধীনতা চাই, সমঅধিকার চাই। আমি মা হতে চাই না। যে মায়ের পায়ের তলে পুরুষের বেহেশত আমি সে বেহেশত ছিঁড়ে ফেলতে চাই।

 

আমার কাছে পুরুষের, সমাজের যে শান্তি ও সুখ, আমি সে শান্তির বেলী ফুলের মালার বন্ধন থেকে মুক্তি চাই। আমি মাতা, ভগ্নি ও জায়ার আসন থেকে নেমে গিয়ে কারখানার শ্রমিক হতে চাই। ক্ষেতের কৃষক হতে চাই। আমি চাই বাসের ড্রাইভার ও রিক্সাচালক হতে।

 

অবশেষে তারা সে অধিকার পেলো। আদমের মত বেহেশত থেকে নারী নেমে এলো মাটির পৃথিবীতে।

হায় স্বাধীনতা, হায় সমঅধিকার।

 

চাইলেই তুমি পারবে কি বীর্য ঢালতে পুরুষ জঠরে? এ আত্মঘাতি অমূলক স্বপ্ন তোমাকে মায়ের আসন থেকে শ্রমিকে রূপান্তরিত করলো।

প্রভূ তোমাকে সৃষ্টি করেছিল মিথুন জোড়েসেখান থেকে তুমি ছিটকে পড়লে। স্বাধীনতার কথা বলে তুমি কিনে নিলে টুকরো টুকরো হাবিয়া।

 

জরায়ুর স্বাধীনতার দাবী তুলে তুমি কি নগরীর মক্ষীরানী হতে চাও? প্রেয়সীর বন্ধন ছিঁড়ে নিশিকন্যা হতে চাও?

 

যাও নারী, যাও। প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করার স্বাধীনতা তোমাকে দেয়া হলো। এবার খুশি তো?

১১/০৩/২০২৩

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.