অজগরের মুখে ডুবন্ত ডাহুক - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৫৯
কবিতা-২৫৯ :
অজগরের মুখে ডুবন্ত ডাহুক
গালে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে সগীর
অতীত দেখে। এখানে একদিন ধানগাছ
ছিল, লকলকে লাউয়ের ডগা ছিল। মাথার
ওপর উড়াউড়ি করতো কাঠফড়িং,
প্রজাপতি। নাম না জানা কত পাখির কিচির মিচির ছিল। জামতলা পড়ে থাকতো পাকা জাম। বেলগাছে বেল। এখনো
তার নাকে লাগে পাকা কাঠালের ঘ্রাণ। মায়াময় দিনগুলোর কথা কি ছগীর ভুলতে পারে?
চোখ মেলে সগীর। ঝাঁপসা চোখে
তাকায় সামনে। দেখে, ইট, লোহা
সিমেন্ট, বালুর সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা এক আজদাহা অজগর সাপ।
যে সাপ খেয়েছে তার বর্তমান, ভবিষ্যত।
তারপর করিমন দোচালা ঘর ভেঙ্গে চলে গেছে নিরুদ্দেশের পথে।
সগীর চেয়ে চেয়ে দেখে। সাপের
পিঠের ওপর দিয়ে ছুটে যায় বড়লোকের গাড়ি। গরীবের নসিমন এ সড়কে চলতে পারে না।
গাড়িগুলো বিজলী ঝিলিকের মত এক পলক দেখতে পায় সগীর। সাপের মতই তীব্রগতি। হুট করে
আসে আর চলে যায়। সগীর দেখে মরা অজগরের মত পড়ে থাকা পীচঢালা রাস্তার ওপর নাচানাচি
করে কতিপয় ব্যাঙ। মানুষ এ ব্যাঙগুলোকে বলে
গাড়ি আর সাপকে বলে মহাসড়ক।
কলাবাগান, ধানের
ক্ষেত গুড়িয়ে দেয়া যদি উন্নয়ন হয়, সে উন্নয়ন সগীর চায় না। নিরন্ন পেটে সে কি এখন আলকাতরা নাকি
মাটি খাবে? সগীর অনাগত সন্তানের মাথায় দেখতে পায় বিরাট ঋণের বোঝা।
সাম্রাজ্যবাদ নয়, বাংলাদেশকে
গিলে ফেলছে আজদাহা উন্নয়ন।
১১/০৩/২০২৩ বাদ ফজর
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments