পরিশুদ্ধ প্রসন্ন বিকেল - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৪৬

                                                                                          

কবিতা-১৪৬ : পরিশুদ্ধ প্রসন্ন বিকেল

আপনার কথা আমার খুবই ভাল লাগলো। সতিই তো, সুখ দুঃখ একটি সোনার মোহর ছাড়া কিছু নয়।

অভিন্ন চেহারার দুই যমজ বোনের মতই ওরা একসাথে হাসে, খেলে, একসাথে কান্না করে।

 

আপনি কি দেখেননি, দরিদ্ররা খুব কমই আত্মহত্য করে। দেখেননি, কালো রমনীর চেয়ে সুন্দরীদের দুঃখই বেশী। তারাই সেপারেশনে যায়।

 

আপনি তাকিয়ে দেখুন, জাহান্নামের আগুনে বসে যে পুষ্পের হাসি হাসতে পারে, সেই হয় কবি। মনের আনন্দে কবিতা লিখে সে হয় যশস্বী। আর

তার কবিতা পড়ে মানুষ আনন্দের খুশবু পায়।

 

আপনি খেয়াল করে দেখুন, মানুষ চমৎকার নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। এই যে ছোট মৃত্যু এই মৃত্যুই তাকে সুখী বানায়।

মৃত্যুর ভেতরেই শুয়ে থাকে সুখের কোকিল।

মধুক্ষণের ছোঁয়া না পেলে আফসোস কি জানতেন না আপনি। প্রতিটি মধুক্ষণই যাবার বেলা শুধু বেদনাকে রেখে যায়।

 

যে জন সুখে গড়াগড়ি যায়, বেদনা তাকেই দংশন করে। যে বেদনা কুড়ায়, তার ঘরে জমা হয় থোকা থোকা সুখ।

কে না জানে, কষ্ট ছাড়া কোন ঘাম ঝরে না। আর প্রতি ফোঁটা ঘামে থাকে তৃপ্তির মধু। সন্তান জন্মদানের কষ্ট নিতে রাজি নয় যে নারী,

মা হওয়ার সুখ সে কোথায় পাবে?

 

তাই সত্যটা স্বীকার করাই ভাল, সুখ ও দুঃখ বলে আলাদা কিছু নেইওরা অভিন্ন সোনার মোহর মাত্র।

একগাদা নিরাপত্তাকর্মী তারই লাগে,

ভয় যাকে তাড়া করে।

স্বাধীন ও সুখী মানুষ চিলের ডানার মতই উড়তে পারে সুনীল আকাশে। অতএব, দুঃখের সাতকাহন নিয়ে বিলাপ করার কিছু নেই।

 

যে দুঃখ কুড়াতে জানে, সে সুখী হতে জানে। যে সুখের পিছনে ছুটে বেড়ায় সে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই পায় না।

 

আপনি ঠিকই বলেছেন, জীবন মানে,

অভিন্ন সোনার মোহরের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া।

জীবন মানে, সুখের জাহাজের জন্য

রাতভর নদী তীরে বসে থাকা।

একটি নবজাতকের জন্য মায়ের সুতীব্র প্রতিক্ষা।

জীবন মানে, কষ্টের শরবত পান করে সুখের ঢেকুর তোলা। জীবন মানে,

কষ্টকে আঁকড়ে ধরে সুখের গালে চুমু খাওয়া।

জীবন মানে, ঝড় শেষে পরিশুদ্ধ প্রসন্ন বিকেল।

২৬/০৫/২০২১   ৩টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.