বিবর্ণ বাগান - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০৬১

                                                      

কবিতা-০৬১ : বিবর্ণ বাগান

প্রিয়তমা, দেখো, এটা সেই কামিনী গাছ,

যার যৌবন তুমি দেখেছো। দেখেছো কি

সবুজ লেপ্টে ছিল এর সতেজ পাতায়।

সাদা সাদা ফুলে ভরা ছিল সোমত্ত শরীর।

দখিনা বাতাস এসে ঢুকতো ঘরের ভেতর।

সেই সাথে প্রিয়তমার মতো সন্তর্পনে

ঢুকে যেতো কামিনীর সুগন্ধি অতুল।

 

এ গাছে একদিন যৌবন ছিল।

এ গাছে একদিন সবুজ ছিল।

ভরা শরীরে ছিল প্রেমের সুবাস।

পায়ের নিচে মাটি ছিল।

সে মাটি আগলে রেখেছিল টব, যেমন

মানুষকে আগলে রাখে রাষ্ট্র।

 

নিয়মিতই এ বৃক্ষে আমি পানি দিতাম।

তুমি হাসতে, ভালবাসতে।

তোমার সে হাসি দেখে হেসে উঠতো চন্দ্রতারা, নেচে উঠতো লাস্যময়ী বৃক্ষসারি।

পাখি গান গাইতো। তৃপ্ত তুমি

ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে পবিত্র জায়নামাজে।

 

তারপর কি কান্ড দেখো।

কোথা দিয়ে

কী যে হলো কিছুই টের পেলাম না। মাটিগুলো তেমনি পড়ে রইলো একবুক হতাশা বুকে নিয়ে।

টবের অশ্রুভেজা চোখ কিছুই করতে পারলো না।

সবুজ পাতারা বিবর্ণ হয়েও

তাকেই আঁকড়ে রইলো।

যদিও

কতিপয় সবুজ তাকে ছেড়ে চলে গেল

বাঁচার আশায়।

কিন্তু নির্মম নিয়তি তাদেরকে মৃত্যুর স্বাদ বুঝিয়ে দিল তোমার আগেই।

 

তোমার চোখের সামনে হা করে বসে রইলো

গোলা ঘর, চেয়ার টেবিল, খাট, আলমিরা।

সবকিছু থাকার পরও কামিনী বৃক্ষের মত তোমার পত্রপল্লব হয়ে গেলো বিবর্ণ সবুজ আর তুমি হয়ে গেলে প্রাণহীন বিবর্ণ বাগান।

 

আমি তাকিয়ে দেখলাম,

বিবর্ণ কামিনী দেখে কেঁদে উঠলো মেঘের শরীর, সাগরের ঢেউ আর হাসি বন্ধ করে তাকিয়ে রইলো নিস্তব্ধ চন্দ্রতারা।

২৪/১১/২০১৯-৬টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.